Ajker Patrika

হাসপাতালে রোগী বাড়লে দিন ভালো যায় সাদিয়াদের

সুপ্রিয় সিকদার
আপডেট : ২৬ জুলাই ২০২১, ২৩: ০৩
হাসপাতালে রোগী বাড়লে দিন ভালো যায় সাদিয়াদের

হাসপাতালগুলোয় করোনা রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি নিয়ে যখন সবাইকে আশঙ্কায় ফেলছে, তখন এটিই আশার কারণ হচ্ছে কোনো কোনো মানুষের জন্য। রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নিউরোসায়েন্স হাসপাতালের সামনে ভ্যানে করে আটার রুটি ও ভাত বিক্রি করা সাদিয়া এমনই একজন।

হাসপাতালে রোগী বাড়লে, বাড়ে তাঁদের সঙ্গে আসা স্বজনের সংখ্যা। আর হাসপাতালে আসা মানুষেরাই সাদিয়ার রুটি-ভাতের ক্রেতা। ফলে এই লকডাউনের সময়ে নানা কায়দা করে ব্যবসা চালানো সাদিয়ার পক্ষে পুঁজি তুলে কিছুটা লাভের মুখ দেখা সম্ভব হয়; জোটে ভাত।

করোনা পরিস্থিতি দিন দিন বাজে আকার ধারণ করছে। বেশ কিছু দিন ধরে করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা দুই শ বা তার আশপাশে থাকছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আরোপ হয়েছে কঠোর বিধিনিষেধ। হাসপাতালগুলোয় করোনা রোগীর ক্রমবর্ধমান চাপ নিয়ে চলছে নানা আলোচনা। শঙ্কা প্রকাশ করছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু এই রোগীর বাড়তি সংখ্যাই সাদিয়ার মতো দিন এনে দিন খাওয়া মানুষদের ভাত জোটার অন্যতম উপায়। শুনতে যেমনই লাগুক—এটাই সত্য।

নিউরোসায়েন্স হাসপাতালের সামনে একটি ভ্যানের চারপাশে পাটাতন দিয়ে সাদিয়া নিজের মতো করে বানিয়েছেন দোকান। সেখানেই কোনো রকমে চলে তাঁর বেচাবিক্রি। লকডাউনের মধ্যে এই কোনো রকম চলাও থমকে যাওয়ার জোগাড়। একে তো স্বাস্থ্য সতর্কতার অংশ হিসেবে কড়াকড়ি। জরুরি সেবা, কাঁচাবাজারসহ গুটিকয় বিষয় ছাড়া সব বন্ধ। এ অবস্থায় বড় বড় প্রতিষ্ঠানই হিমশিম খাচ্ছে। সাদিয়াদের অবস্থা তো সে ক্ষেত্রে বলার অপেক্ষা রাখে না।

আগে রাস্তায় পিঠা আর ডাব বিক্রি করতেন সাদিয়া। চলছিল ভালোই। তবে লকডাউনের শুরুতে লোকসানের মুখ দেখে পেশা পাল্টে ফেলেছেন। এখন বিক্রি করেন সেদ্ধ আটার রুটি ও ভাত। এই দিয়ে কোনো রকমে ছেলেমেয়ে আর স্বামীকে নিয়ে সংসার চলছে সাদিয়ার। বললেন, ‘লকডাউন আসার আগে ব্যবসা ভালো ছিল। প্রতিদিন যা ইনকাম করতাম, তাই দিয়ে সংসার খুব ভালো করে চলে যেত। তবে এখন প্রতিদিন সকাল ৭টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত হাসপাতালের সামনে রুটি আর ভাত বিক্রি করি। তা দিয়ে দিন যায় না বললেই চলে।’

ছেলেকে মাদ্রাসায় ভর্তি করেছেন, মেয়ের পড়াশোনা বন্ধ। স্বামী বাড়িতে বসে আটার রুটি, ভাত, তরকারি রান্না করে দেন। তা সারা দিন বিক্রি করেন সাদিয়া। কোনো কোনো দিন লাভের মুখ দেখেন না জানিয়ে সাদিয়া বলেন, ‘হাসপাতালে রোগীর চাপ থাকলে মোটামুটি ভালোই বেচাবিক্রি হয়। তবে যেদিন রোগীর চাপ থাকে না, সেদিন বসেই থাকতে হয়। লকডাউনের কারণে আরও বেচাবিক্রি কমেছে। মানুষ বাইরের খাবার খাইতে চায় কম। যা ইনকাম হয়, তা দিয়ে সংসার চালানো কষ্ট।’ 

করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বারবারই আসছে লকডাউনের ঘোষণা। এ অবস্থায় ঘোর অনিশ্চয়তায় পড়েছেন নিম্ন ও মধ্যম আয়ের মানুষেরা। অনেকেই করেছেন পেশা বদল। তারপরও যেন জীবন চলে না। এমনই একজনের সঙ্গে দেখা হলো আগারগাঁও পাসপোর্ট অফিসের সামনে। চা বিক্রি করেন তিনি। কথা বলতে চাইলেন না। কারণ, তিনি যে চা বিক্রি করেন, তা তাঁর পরিবার জানে না। ভয়, আলাপের সূত্র ধরে যদি তাঁর বর্তমান পেশা সম্পর্কে পরিচিতজনেরা জেনে যান! 

গত বছরের মার্চে প্রথম চলাচলে কঠোর বিধিনিষেধ বা লকডাউন আরোপ হয়েছিল দেশে। এর প্রভাব অর্থনীতির ওপর ভয়াবহভাবে পড়েছে। বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির দাবি, করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব মোকাবিলায় লকডাউনের প্রথম ৬৬ দিনে বাংলাদেশের প্রায় ৬ কোটি মানুষ নতুন করে গরিব হয়েছে। সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. আবুল বারকাত বলেছিলেন, লকডাউনে নতুন দরিদ্র ও অতিদরিদ্র সৃষ্টি হয়েছে ৫ কোটি ৯৫ লাখ বা প্রায় ৬ কোটি। শ্রেণিকাঠামোর ব্যাপক পরিবর্তন হয়েছে। তবে অতি ধনী শ্রেণির ওপর এর কোনো প্রভাব পড়েনি। 

এ তো জানা কথাই যে, যেকোনো দুর্যোগের প্রথম ধকলটি যায় দরিদ্র শ্রেণির ওপর দিয়ে। করোনার কারণে সৃষ্ট সার্বিক দুর্যোগেও এর অন্যথা হয়নি। গত বছর শুরু হওয়া সেই লকডাউন থেমে থেমে এখনো চলছে। করোনা সংক্রমণ রোধে দেশজুড়ে এখনো চলছে কঠোর লকডাউন, বন্ধ রয়েছে সব প্রতিষ্ঠান। রাস্তায় বের হতে পারছেন না খেটে খাওয়া মানুষ। সরকারি সহায়তার কথা বলা হলেও তা ছুঁতে পারেনি অনেক গরিবকে; বরং কর্মহীন হয়ে তাঁরা মানবেতর জীবনযাপন করছেন বললেও কম বলা হবে।

গণপরিবহন বন্ধ, পথচলতি মানুষও নেই, বিক্রির জন্য রাখা পত্রিকা নিজেই পড়ছেন আরিফ চৌধুরী

এমনই একজন আরিফ চৌধুরী। তাঁর সঙ্গে দেখা হলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকায়। আগে রাজধানীর বাসে বাসে ঘুরে পত্রিকা বিক্রি করতেন। কিন্তু এখন তো গণপরিবহন বন্ধ। ফলে পত্রিকা বিক্রি দিয়ে আর চলছে না। অন্যদের মতো পারেননি পেশা বদলাতেও। বললেন, ‘লকডাউনে আগের মতো প্রতিদিন পত্রিকা বিক্রি হয় না। প্রতিদিন ১০-১৫ কপি পত্রিকা বিক্রি করতে পারি, যা দিয়ে ভাতের পয়সাও হয় না। বাড়ি তো যেতেই পারি না, বৃদ্ধ বাবা-মায়ের জন্যও টাকা পাঠাতে পারি না। শাহবাগে যাত্রীছাউনিতে থাকার ঘরটুকুও কেড়ে নিয়েছে প্রশাসন, থাকি রাস্তায় রাস্তায়।’

কুষ্টিয়া থেকে ঢাকায় আসা আরিফ পাঁচ-সাত বছর ধরে ঢাকায় পত্রিকা বিক্রি করেন। ভালোই চলছিল সবকিছু। কখনো শাহবাগ, কখনো মতিঝিল, কখনোবা গুলিস্তান বা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় ‘পত্রিকা নেবেন, পত্রিকা’—হাঁক ছেড়ে সরব রাখতেন চারপাশ। এখন সব নিঝুম। নিঝুম হয়ে থাকেন তিনিও। স্বাভাবিক সময়ে প্রতিদিন ২০০-৩০০ কপি পত্রিকা বিক্রি করতেন। যা আয় হতো, তা দিয়ে নিজের জীবন যেমন চলত, তেমনি বাড়িতে বয়স্ক মা-বাবা ও ভাইবোনেরও দেখভাল করতে পারতেন। কিন্তু বারবার আসা লকডাউন বাসের সঙ্গে সঙ্গে, নাগরিক চলাচলের সঙ্গে সঙ্গে থামিয়ে দিয়েছে আরিফের জীবনও।

কথা বলতে বলতে কেঁদে ফেলেন আরিফ। বললেন, শাহবাগ মোড়ে বারডেম হাসপাতালের পাশের যাত্রীছাউনিতে কিছু জিনিসপত্র নিয়ে থাকতেন তিনি। তবে সম্প্রতি নিরাপত্তাজনিত কারণে তাঁর সে আবাসস্থল হারিয়েছেন। এখন যেখানে রাত হয়, সেখানেই একটু শুয়ে ঘুমিয়ে নেন। টাকাপয়সা না থাকায় বাড়িও যেতে পারছেন না। নিজে হার্নিয়ার রোগী। শারীরিক জটিলতার কারণে অন্য কোনো পেশাতেও নিজেকে জড়াতে পারেন না।

তারপরও আশাবাদী আরিফ—সুদিন ফিরবে; আবার পত্রিকা বিক্রি বাড়বে। জীবন স্বাভাবিক হবেই। 

আরিফের চোখের এই আশা-নিরাশার ছায়া ভুলতে না ভুলতেই পথ আগলে দাঁড়ান আশরাফুল ইসলাম। আগারগাঁও এলাকাতেই দেখা তাঁর সঙ্গে। ফুটবলপ্রেমী আশরাফুল খেলোয়াড় হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে বেড়ে উঠেছেন জয়পুরহাটে। বিভিন্ন জায়গায় ভাড়ায় খেলতেও যেতেন। কিন্তু ওটুকুই। আর এগোয়নি। ১৯৯৯ সালে এসএসসি পাস করে বিয়ে করেন। সম্প্রতি কাজকর্ম না থাকায় ঢাকায় এসেছেন। কাজ বলতে আর কিছু খুঁজে পাননি। যাত্রাবাড়ী এলাকার এক রিকশা গ্যারেজ থেকে রিকশা নিয়ে দিন চুক্তিতে চালান এখন। তবে লকডাউনের কারণে আয় কমেছে।

যাত্রাবাড়ী এলাকার এক রিকশা গ্যারেজ থেকে রিকশা নিয়ে দিন চুক্তিতে চালান আশরাফ
আশরাফুল বলেন, লকডাউনের আগে অর্ধেক বেলা রিকশা চালালে যে আয় হতো, এখন সারা দিন চালিয়েও সে আয় হয় না। যাত্রীর দেখা মেলে না বললেই চলে।

সাদিয়া, আরিফ বা আশরাফুলদের ভরসা এখন জরুরি প্রয়োজনে সড়কে বের হওয়া মানুষেরা। সাদিয়া যেমন নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে রোগীর চাপ বাড়ার দিকে তাকিয়ে থাকেন, তেমনি আরিফ রাজধানীর শাহবাগ বা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এলাকার আশপাশে ঘোরেন পত্রিকা নিয়ে। রোগীর সঙ্গে আসা স্বজনেরা তাঁদের কাছ থেকে রুটি বা ভাত কিনে খান, চাইলে পত্রিকা কিনে পড়েন। আর আশরাফুলের মতো রিকশাচালকদের জন্য রোগী বা রোগীর স্বজনদের বহন করাই এই কড়াকড়ির সময়ে তুলনামূলক সহজ। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের প্রশ্নের একটা জবাব অন্তত তখন তাঁদের কাছে থাকে। হাসপাতালগুলোতে রোগীর চাপ বাড়ায় দরজায় খিল এঁটে যারা শঙ্কায় ভুগছেন, তাঁদের থেকে এই পথবাসী মানুষদের জীবন একেবারে আলাদা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

৭ ঘণ্টা পর ঝালকাঠির অবরোধ প্রত্যাহার, যান চলাচল স্বাভাবিক

ঝালকাঠি প্রতিনিধি  
বরিশাল–খুলনা আঞ্চলিক মহাসড়কের ঝালকাঠি অংশে অবরোধ সাত ঘণ্টা পর প্রত্যাহার করে নিলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
বরিশাল–খুলনা আঞ্চলিক মহাসড়কের ঝালকাঠি অংশে অবরোধ সাত ঘণ্টা পর প্রত্যাহার করে নিলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

ইনকিলাব মঞ্চের প্রতিষ্ঠাতা ও মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদিকে হত্যার প্রতিবাদে এবং খুনিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে তাঁর নিজ জেলা ঝালকাঠিতে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে ছাত্র-জনতা। সাত ঘণ্টা পর পুলিশের অনুরোধে আজ শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ৯টার দিকে অবরোধ প্রত্যাহার করা হলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

আজ জুমার নামাজ শেষে বেলা আড়াইটার দিকে বরিশাল–খুলনা আঞ্চলিক মহাসড়কের ঝালকাঠি কলেজ মোড় এলাকায় অবরোধ শুরু করেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ। অবরোধ চলাকালে মহাসড়কের উভয় পাশে বিপুলসংখ্যক যানবাহন আটকে পড়ে। ফলে যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। তবে রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্স, ফায়ার সার্ভিস, জরুরি ওষুধ ও নিত্যপ্রয়োজনীয় কাঁচামাল বহনকারী যান চলাচলের সুযোগ দেওয়া হয়।

অবরোধ কর্মসূচিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, এনসিপি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, গণঅধিকার পরিষদের নেতা-কর্মীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেন। এ সময় মহাসড়কে টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করা হয়।

বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য দেন এনসিপির ঝালকাঠি জেলা আহ্বায়ক মাইনুল ইসলাম মান্না, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঝালকাঠি জেলা আহ্বায়ক আল তৌফিক লিখন, যুগ্ম আহ্বায়ক ইয়াসিন ফেরদৌস ইফতি, সদস্যসচিব রাইয়ান বিন কামাল, গণঅধিকার পরিষদ ঝালকাঠি জেলা যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ঝালকাঠি-২ আসনের মনোনীত প্রার্থী মাহমুদুল ইসলাম সাগরসহ অন্য নেতারা।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঝালকাঠি জেলা কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক ইয়াসিন ফেরদৌস ইফতি বলেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের একজন গুরুত্বপূর্ণ সহযোদ্ধাকে দুর্বৃত্তরা গুলি করে হত্যা করেছে। তিনি সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন। হামলাকারীদের ইন্টারপোলের মাধ্যমে দ্রুত গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। তা না হলে আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

ঝালকাঠি সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) বেলায়েত হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, বেলা আড়াইটায় অবরোধ শুরু হওয়ায় বরিশাল–খুলনা আঞ্চলিক মহাসড়কে ব্যাপক যানজট সৃষ্টি হয়। আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনা করে পরিস্থিতি শান্ত করা হলে তাঁরা রাত সাড়ে ৯টার দিকে অবরোধ প্রত্যাহারে সম্মত হন। পরে সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সাবেক নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ ও সাবেক মেয়রের বাড়িতে আগুন

দিনাজপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ২২: ৪৪
সাবেক প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ও সেতাবগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র আসলাম হোসেনের বোচাগঞ্জের বাড়িতে আগুন দিয়েছেন একদল লোক। ছবি: আজকের পত্রিকা
সাবেক প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ও সেতাবগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র আসলাম হোসেনের বোচাগঞ্জের বাড়িতে আগুন দিয়েছেন একদল লোক। ছবি: আজকের পত্রিকা

সাবেক নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ও সেতাবগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র আসলাম হোসেনের বোচাগঞ্জের বাড়িতে আগুন দিয়েছে একদল লোক। আজ শুক্রবার রাতে দুজনের বাড়িতে আগুন লাগার সংবাদ পেয়ে বোচাগঞ্জ থানা-পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা সেখানে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

স্থানীয় জনতা ও বোচাগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা গেছে, আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ও সেতাবগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র আসলাম হোসেনের বাড়িতে আগুন দেওয়া হয়। তবে কারা আগুন দিয়েছে, এ বিষয়ে বিস্তারিত জানা যায়নি।

বোচাগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের সাব-অফিসার শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘রাত সোয়া ৮টার দিকে সাবেক মেয়র আসলামের বাড়িতে আগুন লাগার খবর পেয়ে আমরা সেখানে পৌঁছাই। বর্তমানে আগুন নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসা হয়েছে।’

এ ছাড়া খালিদ মাহমুদের বাড়ির আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে বলে জানা গেছে।

এ বিষয়ে জানার জন্য বোচাগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও কোনো সাড়া মেলেনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ময়মনসিংহে যুবককে পিটিয়ে হত্যা: অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে মামলা

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
আপডেট : ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ২২: ১৮
দিপু চন্দ্র দাস। ছবি: সংগৃহীত
দিপু চন্দ্র দাস। ছবি: সংগৃহীত

ময়মনসিংহের ভালুকায় দিপু চন্দ্র দাস (২৮) নামের এক যুবককে পিটিয়ে হত্যা ও মরদেহে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। আজ শুক্রবার নিহত দিপুর ছোট ভাই অপু চন্দ্র দাস বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে থানায় অভিযোগ দিয়েছেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে ভালুকা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহেদুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, বিক্ষুব্ধ জনতার হাতে নিহত হন দিপু চন্দ্র দাস। এ ঘটনায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে মামলা হয়েছে।

এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার ডুবালিয়াপাড়া এলাকার পাইওনিয়ার নিট কম্পোজিট কারখানা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত দিপু চন্দ্র দাস জেলার তারাকান্দা উপজেলার মোকামিয়া কান্দা গ্রামের রবি চন্দ্র দাসের ছেলে। তিনি ওই কোম্পানির শ্রমিক ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার পত্রিকা অফিসে হামলায় র‍্যাকের নিন্দা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার পত্রিকা অফিসে হামলায় র‍্যাকের নিন্দা

কতিপয় উচ্ছৃঙ্খল ব্যক্তি দৈনিক প্রথম আলো ও দ্য ডেইলি স্টার পত্রিকা অফিসে যে হামলা চালিয়েছে, তার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে রিপোর্টার্স অ্যাগেইনস্ট করাপশন (র‍্যাক)।

অন্যদিকে, দুই গণমাধ্যমে আটকে পড়া সাংবাদিকদের উদ্ধার করতে গিয়ে নাজেহাল ও হেনস্তার শিকার হয়েছেন ইংরেজি দৈনিক দ্য নিউ এজের সম্পাদক প্রবীণ সাংবাদিক নূরুল কবীর। এ ঘটনারও তীব্র নিন্দা ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে র‍্যাক। অবিলম্বে এসব ঘটনার সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও দ্রুত তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার জোর দাবি জানিয়েছে র‍্যাক।

শুক্রবার এক বিবৃতিতে সভাপতি আলাউদ্দিন আরিফ ও সাধারণ সম্পাদক তাবারুল হক বলেন, সংবাদমাধ্যম রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের অন্যতম প্রধান ভিত্তি। গণমাধ্যমের কণ্ঠ রুদ্ধ করতে সহিংসতা, ভয়ভীতি প্রদর্শন, হামলা কিংবা হেনস্তা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এ ধরনের কর্মকাণ্ড গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, মতপ্রকাশের সাংবিধানিক অধিকার এবং আইনের শাসনের সম্পূর্ণ পরিপন্থী।

১৮ ডিসেম্বর (বৃহস্পতিবার) রাত ১২টার দিকে উচ্ছৃঙ্খল কতিপয় ব্যক্তি প্রথমে দৈনিক প্রথম আলো, তারপর দ্য ডেইলি স্টার পত্রিকা অফিসে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে। এ সময় পত্রিকা দুটির অনেক সাংবাদিক ভবনের ভেতরে আটকা পড়েছিলেন। খবর পেয়ে সেনা, পুলিশ ও বিজিবি সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসে হামলাকারীদের সরিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে ভবনের ভেতরে আটকে পড়া সাংবাদিকদের উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস।

পত্রিকা দুটির শীর্ষ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, রাতে আকস্মিক হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনার পর কর্মীদের সবাইকে দ্রুত অফিস ত্যাগ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ফলে শুক্রবার ছাপা পত্রিকা বের করা সম্ভব হয়নি।

র‍্যাক নেতারা বলেন, মনে হচ্ছে একটি গোষ্ঠী অত্যন্ত সচেতনভাবে প্রতিপক্ষ বানাতে গণমাধ্যমকে টার্গেট করে হামলা চালিয়েছে। এটা খুবই দুঃখজনক ও মর্মান্তিক। স্বাধীন সাংবাদিকতায় বিশ্বাসী বর্তমান সরকারের সময় এমন ঘটনা ন্যক্কারজনক। ডিআরইউ মনে করে, ওসমান হাদি একজন দেশপ্রেমিক জুলাই যোদ্ধা ছিলেন। শহীদ ওসমান হাদিসহ ছাত্র-জনতার ত্যাগের কারণে তৎকালীন ফ্যাসিস্ট সরকার দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছে।

হাদির মৃত্যুকে পুঁজি করে যারা গণমাধ্যমের ওপর হামলা করেছে, তারা হাদির অনুসারী নয়, এটা স্পষ্ট। কতিপয় মহল হাদির মৃত্যুকে ব্যবহার করে নিজেদের কদর্য চেহারা প্রকাশ করেছে। অবিলম্বে এসব ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে দৃস্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান নেতারা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত