Ajker Patrika

সুদানে শান্তিরক্ষা মিশনে নিহত পাকুন্দিয়ার জাহাঙ্গীরের বাড়িতে মাতম

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি
আপডেট : ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬: ৩৮
মৃত্যুর খবর জানার পর থেকে জাহাঙ্গীরের বাড়িতে চলছে মাতম (ইনসেটে জাহাঙ্গীর)। ছবি: আজকের পত্রিকা
মৃত্যুর খবর জানার পর থেকে জাহাঙ্গীরের বাড়িতে চলছে মাতম (ইনসেটে জাহাঙ্গীর)। ছবি: আজকের পত্রিকা

সুদানের আবেই এলাকায় জাতিসংঘ শান্তি রক্ষা মিশনের আওতাধীন কাদুগলি লজিস্টিক বেসে সন্ত্রাসী ড্রোন হামলায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ছয়জন শান্তিরক্ষী শহীদ হয়েছেন এবং আটজন আহত হয়েছেন। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে মেস ওয়েটার মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলমের (৩০) বাড়ি কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার জাঙ্গালিয়া ইউনিয়নের তারাকান্দি গ্রামে। তিনি মো. হজরত আলী রহমানের ছেলে। তিন ভাইয়ের মধ্যে জাহাঙ্গীর দ্বিতীয়। তাঁর বড় ভাই মোস্তফা কামাল সৌদিপ্রবাসী। ছোট ভাই শাহীন আলম গাড়িচালক। সন্ত্রাসীদের হামলায় জাতিসংঘ শান্তি রক্ষা মিশনে দায়িত্বরত সৈনিক জাহাঙ্গীর আলমের মৃত্যুর খবর জানার পর তাঁর গ্রামের বাড়িতে চলছে মাতম।

নিহত জাহাঙ্গীরের পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, ২০১৪ সালের অক্টোবরে জাহাঙ্গীর সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) রাতে সুদানের আবেই এলাকায় জাতিসংঘের ঘাঁটিতে হামলা চালিয়েছে সন্ত্রাসীরা। হামলায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ছয়জন শান্তিরক্ষী নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আটজন। সন্ত্রাসীদের সঙ্গে যুদ্ধ চলমান রয়েছে।

নিহত জাহাঙ্গীরের চাচাতো ভাই আরিফুর ইসলাম বাধন বলেন, ‘গতকাল (শনিবার) রাতে আমার ফুফাতো ভাই ও জাহাঙ্গীরের সহকর্মী মনির হোসেন এবং ভোরে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ইমরান টেলিফোনে ঘটনাটি জানান। এর পর থেকে পরিবারের কান্না থামছে না। বৃদ্ধ বাবা হজরত আলী বাক্‌রুদ্ধ।’

আরিফুর ইসলাম আরও বলেন, ‘জাহাঙ্গীরের স্ত্রী রুবাইয়া আক্তার স্বামীর ছবি ও তিন বছরের ছেলে ইফরানকে বুকে আঁকড়ে ধরে স্তব্ধ হয়ে গেছেন। মাঝেমধ্যে চিৎকার করে কেঁদে উঠছেন।’

নিহত জাহাঙ্গীর আলমের মামা ওয়ালিউল্লাহ বলেন, ‘অফিশিয়ালি রংপুর ক্যান্টনমেন্ট থেকে ক্যাপ্টেন ইমরান আমাদের বিষয়টা জানান। এর আগে গতকাল (শনিবার) রাতে আমাদের আত্মীয়স্বজন জানান যে জাহাঙ্গীর মারা গেছে।’

জাহাঙ্গীর আলমের ছোট ভাই মো. শাহীন বলেন, ‘রাত দেড়টায় বাসায় ফিরে দেখি সবাই কান্নাকাটি করছে। পরে জানতে পারি, আমার ভাই বোমা হামলায় মারা গেছে।’ এ কথা বলেই কান্নায় ভেঙে পড়েন শাহীন।

নিহত জাহাঙ্গীর আলমের বাবা হজরত আলী রহমান বলেন, ‘রাতে আমার এক ভাই ফোন দিয়ে বলছে সুদানে বোমা ফুটছে। পরে আমি বাড়িতে আইসা বলি, জাহাঙ্গীর যেহানো থাহে, ওইহানো বোমা ফুটছে বুলে। পরে শুনছি, বোম ফালাইয়া আমার ছেলেরে মাইরা ফেলছে। আমার ছেলে যেখানে থাকত, এর থেকে একটু দূরে যারা থাকত, তারা রাতে জানাইছে।’

এই খবর আসার পর থেকে জাহাঙ্গীরের পরিবারে চলছে মাতম। জাহাঙ্গীরের পরিবার মরদেহ দ্রুত দেশে ফিরিয়ে আনার দাবি জানিয়েছে।

পাকুন্দিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুপম দাস বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘মরদেহ কীভাবে আনা হবে, এ ব্যাপারে কোনো সরকারি নির্দেশনা এখনো পাইনি। আমরা যোগাযোগ রাখছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...