Ajker Patrika

মেলা যেন বাহারি মানুষের হাট

শরীফ নাসরুল্লাহ, ঢাকা
আপডেট : ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৭: ৩০
প্রিয় লেখকের বই দেখছেন কয়েকজন। গতকাল সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের অমর একুশে বইমেলা প্রাঙ্গণে। ছবি: আজকের পত্রিকা
প্রিয় লেখকের বই দেখছেন কয়েকজন। গতকাল সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের অমর একুশে বইমেলা প্রাঙ্গণে। ছবি: আজকের পত্রিকা

মোহাম্মদ, আব্দুল্লাহ, বায়জিদ, কেফায়াতুল্লাহ—চার তরুণ। রাজধানীর কাকরাইল মসজিদ মাদ্রাসা থেকে তাঁরা এসেছেন। বইমেলায় ঘুরছেন, দেখছেন। বই তখনো কেনেননি। পছন্দ হলে তবে কিনবেন। আব্দুল্লাহ বললেন, ‘আমাদের পরীক্ষা ছিল। এ কারণে এত দিন আসতে পারিনি। আজ শেষ হয়েছে, তাই চলে এলাম।’

মাদ্রাসাশিক্ষার্থী এই তরুণেরা কী ধরনের বই পছন্দ করেন? কথা বলে জানা গেল, সৃজনশীল বইয়ের কাতারে উপন্যাসই তাঁদের পছন্দ। প্রিয় লেখক হুমায়ূন আহমেদ।

বইমেলা মানেই থরে থরে সাজানো বই। পাঠকের জন্য অপেক্ষা। বিক্রয়কর্মীদের তোড়জোড়। নানা প্রান্ত থেকে রকমারি পাঠকের মিলনমেলা। তাঁরা দেখেন, কেনেন, বই নিয়ে চলে আড্ডা। শুধু বই কিনতেই কি আসে সবাই? না, তা নয়। কেউ বাহারি নকশার স্টলের সামনে তোলেন সেলফি, কারও স্রেফ ঘুরতে আসা, কেউ সঙ্গ দেন বইপ্রেমীর; কেউ আঁকে মানুষের মুখ, কেউ বেচে ফুল। বইমেলা তাই হয়ে ওঠে যেন বাহারি মানুষের হাট।

মরিয়ম খাতুন আর তাঁর নাতির বয়সী আঁখি গোলাপ আর টায়রা বিক্রি করে বইমেলায়। ফুল বিক্রি করে চলে তাদের সংসার। বইমেলা তাদের কাছে উপার্জনের এক সুযোগ। তবে এবার বিক্রির কাটতি মন্দের দিকে। মরিয়ম জানান, মেলায় ফুল বিক্রি সুবিধার না। গতকাল বিক্রি করেছেন মোটে ৩০০ টাকা। তাঁর ভাষ্য, ‘মাইনষের কাছে মনে হয় ট্যাকা নাই। তাই কিনতাছে না।’

বইমেলার এক দারুণ অনুষঙ্গ মানুষের মুখের ছবি আঁকা। বাগেরহাটের মোহাম্মদ নিয়াজ তেমন শিল্পী। তিনি বসে আছেন কারও মুখ আঁকার অপেক্ষায়। পেছনে ঝুলছে তাঁরই আঁকা কিছু মানুষের মুখ—সেলেনা গোমেজ, সালমান শাহ, লিওনেল মেসি, এস এম সুলতান, জেমস, ঐশ্বরিয়া রাই, ম্যারাডোনা। খানিক গল্প হয় তাঁর সঙ্গে। ২০০৫ সালের কথা। নিজের ছোট বোন একটি স্টলে কাজ করেন। ছোট বোনকে মেলায় নিয়ে আসেন তিনি। বোন কাজ করেন, এই সুযোগে তিনি ঘুরে দেখেন মেলা। হঠাৎ একদিন চোখ যায় মেলার এক কোণে বসা শিল্পীর দিকে। তিনি মেলায় আসা মানুষের মুখ আঁকছেন। নিয়াজের বেশ পছন্দ হয় কাজটি। আগেই আঁকিবুঁকি করতেন। এবার বাসায় গিয়ে শুরু হলো অনুশীলন। একদিন নিজের বাবার একটি ছবি এঁকে ফেলেন। ব্যস, আত্মবিশ্বাস বেড়ে গেল। বাবার সেই ছবিই ২০০৫ সালে মেলা শেষ হওয়ার ঠিক তিন দিন আগে মেলার এক কোণে টানিয়ে দেন। একজন আসেন তাঁর বাচ্চা মেয়ের ছবি আঁকাতে। নিয়াজ আঁকেন। বেশ ভালো হয় ছবিটি। তার পর থেকে প্রতিবার মেলায় মানুষের মুখ এঁকে যান নিয়াজ।

এমন নানা মানুষ আর পাঠকের এই মেলা ক্রমেই জমে উঠেছে।

নতুন বই

পাঞ্জেরি পাবলিকেশনস নিয়ে এসেছে নির্বাচিত ১৪টি সুইডিশ ছোটগল্প ‘প্যারিসের প্রতিবিম্ব’। সুইডিশ থেকে ভাষান্তর করেছেন লিয়াকত হোসেন।

তালুকদার সারোয়ার জাহান আরেফিন নিয়ে এসেছেন ‘ভাটিবাংলার লোককাহিনি ও লোকসংস্কৃতি’। বইটি নিয়ে জানা গেছে, ভাটিবাংলার প্রত্যন্ত অঞ্চল, হাওর, বাঁওড় এলাকার নদীবিধৌত এক উপদ্বীপ, বর্ষায় চারদিকে শুধু পানি আর পানি, ধারা অঞ্চলের লোককাহিনি আর লোকসংস্কৃতি উঠে এসেছে বইটিতে। বইটি নিয়ে এসেছে বিভাস।

অন্তিক মাহমুদের ক্রাইম থ্রিলার ‘ভুল’ বের করেছে অধ্যয়ন। বইয়ের ফ্ল্যাপে লেখা হয়েছে, উগ্রবাদীদের হাতে জিম্মি থাকা মানুষকে বাঁচাতে এক ডিটেকটিভের কাহিনি নিয়ে বইয়ের আখ্যান।

বাংলা একাডেমি জানিয়েছে, গতকাল নতুন বই এসেছে ৮৪টি। মোট বই এসেছে ৭৩৭টি।

আয়োজন

গতকাল বিকেল ৪টায় বইমেলার মূল মঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় ‘ড. মনিরুজ্জামানের সময়রেখা: ভাষাবিজ্ঞানের ত্রিকালদর্শী পরিব্রাজক’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মাশরুর ইমতিয়াজ। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন সালমা নাসরীন ও মামুন অর রশীদ। সভাপতিত্ব করেন অধ্যাপক মনসুর মুসা।

মাশরুর ইমতিয়াজ বলেন, ড. মনিরুজ্জামান ভাষাবিজ্ঞানের দুরূহ পথে শুধু সরলরৈখিকভাবেই পরিভ্রমণ করেননি, বরং নজর দিয়েছেন অতীতের ভাষিক নিরীক্ষায় এবং ভবিষ্যতের ভাষা-গবেষণার সুলুকসন্ধানে। প্রতিভার মৌলিকত্বে তিনি তাঁর স্বকীয় অবস্থান নিশ্চিত করেছেন।

গতকাল ‘লেখক বলছি’ মঞ্চে নিজেদের নতুন বই নিয়ে আলোচনা করেন কুদরত-ই-হুদা ও হিজল জোবায়ের। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে ছিল মো. আনোয়ার হোসেনের পরিচালনায় সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘আরশিনগর বাউল সংঘ’, সানজিদা আহমেদ লাবণ্যের পরিচালনায় নৃত্যসংগঠন ‘নৃত্য সংসদ’ এবং মজিবুর রহমান বিরহীর পরিচালনায় সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘বিরহী শিল্পীগোষ্ঠী’-এর পরিবেশনা।

আজ মঙ্গলবার। অমর একুশে বইমেলার ১১তম দিন মেলা শুরু হবে বেলা ৩টায় এবং চলবে রাত ৯টা পর্যন্ত।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

রাজবাড়ীতে চাঁদাবাজির সময় গণপিটুনিতে সম্রাট বাহিনীর প্রধান নিহত

রাজবাড়ী প্রতি‌নি‌ধি
সম্রাট বাহিনীর প্রধান অমৃত মন্ডল ওর‌ফে সম্রাট। ছবি: সংগৃহীত
সম্রাট বাহিনীর প্রধান অমৃত মন্ডল ওর‌ফে সম্রাট। ছবি: সংগৃহীত

রাজবাড়ীর পাংশায় চাঁদাবা‌জি করার সময় জনগ‌ণের পিটুনিতে সম্রাট বাহিনীর প্রধান অমৃত মন্ডল ওর‌ফে সম্রাট নিহত হ‌য়েছেন। এ সময় দু‌টি অস্ত্রসহ তাঁর সহ‌যো‌গী সে‌লিম শেখ‌কে আটক ক‌রে পু‌লি‌শে দি‌য়েছে জনতা। বুধবার দিবাগত রাত পৌ‌নে ১১টার দি‌কে উপ‌জেলার ক‌লিমহর ইউনিয়‌নের হো‌সেনডাঙ্গা গ্রা‌মে এই ঘটনা ঘ‌টে। নিহত সম্রাট উপ‌জেলার ক‌লিমহর ইউনিয়‌নের হো‌সেনডাঙ্গার অক্ষয় মন্ড‌লের ছে‌লে। আটক সে‌লিম একই ইউনিয়‌নের বসাকু‌ষ্টিয়া গ্রা‌মের ইসলাম শে‌খের ছে‌লে।

সম্রা‌টের সহ‌যো‌গী‌ সেলিমের কাছ থে‌কে এক‌টি পিস্তল ও এক‌টি ওয়ান শুটারগান জব্দ করে‌ছে পুলিশ। ছবি: আজকের পত্রিকা
সম্রা‌টের সহ‌যো‌গী‌ সেলিমের কাছ থে‌কে এক‌টি পিস্তল ও এক‌টি ওয়ান শুটারগান জব্দ করে‌ছে পুলিশ। ছবি: আজকের পত্রিকা

স্থানীয় বাসিন্দাদের বরা‌ত দিয়ে পাংশা ম‌ডেল থানার ওসি শেখ মঈনুল ইসলাম জানান, সম্রাট নিজের না‌মেই এক‌টি বা‌হিনী গড়ে তু‌লে মানুষ‌কে ভয়ভী‌তি দে‌খি‌য়ে চাঁদাবা‌জি কর‌তেন। দীর্ঘদিন ভার‌তে পা‌লি‌য়ে থাকার পর সম্প্রতি এলাকায়‌ ফি‌রে এসে এক‌টি বাড়িতে চাঁদা দা‌বি ক‌রেন। কিন্তু তারা চাঁদার টাকা দি‌তে অস্বীকৃতি জানা‌য়। গত রা‌তে সম্রাট তাঁর বা‌হিনীর সদস‌্যদের নি‌য়ে ওই বাড়িতে চাঁদার টাকা আন‌তে যান। এ সময় ওই বাড়ির লোকজন ডাকাত ডাকাত ব‌লে চিৎকার দি‌লে আশপা‌শের লোকজন এসে ধ‌রে তাঁকে গণ‌পিটু‌নি দেয়। এতে ঘটনাস্থ‌লেই তাঁর মৃত‌্যু হয়। এ সময় তাঁর অন‌্য সহ‌যো‌গীরা পালি‌য়ে গে‌লেও অস্ত্রসহ ধরা প‌ড়েন সে‌লিম না‌মের একজন।

ওসি শেখ মঈনুল ইসলাম আরও জানান, সম্রা‌টের সহ‌যো‌গী‌ সে‌লিম‌ের কাছ থে‌কে এক‌টি পিস্তল ও এক‌টি ওয়ান শুটারগান জব্দ করা হয়ে‌ছে। নিহত সম্রা‌টের না‌মে হত‌্যা, চাঁদাবা‌জিসহ একা‌ধিক মামলা র‌য়ে‌ছে। সম্রা‌টের মর‌দেহ ময়ন‌াতদন্তের জন‌্য ম‌র্গে পাঠা‌নোর প্রস্তু‌তি চল‌ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

‎টঙ্গীতে যৌথ বাহিনীর অভিযানে জুলাই যোদ্ধা তাহরিমা গ্রেপ্তার

টঙ্গী (গাজীপুর) প্রতিনিধি
আপডেট : ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০: ৪৬
টঙ্গীর মরকুন পূর্বপাড়া চৌরঙ্গীর পাড় এলাকায় নিজ বাসা থেকে গ্রেপ্তার তাহরিমা জান্নাত সুরভী। ছবি: আজকের পত্রিকা
টঙ্গীর মরকুন পূর্বপাড়া চৌরঙ্গীর পাড় এলাকায় নিজ বাসা থেকে গ্রেপ্তার তাহরিমা জান্নাত সুরভী। ছবি: আজকের পত্রিকা

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সরকার, সরকারের একাধিক উপদেষ্টা ও সেনাবাহিনীর প্রধানকে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করায় মামলা দায়েরের পর গ্রেপ্তার করা হয়েছে জুলাই যোদ্ধা তাহরিমা জান্নাত সুরভীকে (২৫)। ‎বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) রাত ১টার দিকে টঙ্গীর মরকুন পূর্বপাড়া চৌরঙ্গীর পাড় এলাকায় তাঁর নিজ বাসায় অভিযান চালিয়ে তাঁকে গ্রেপ্তার করে যৌথ বাহিনী। পরে তাঁকে টঙ্গী পূর্ব থানায় হস্তান্তর করা হয়।

‎জানা যায়, গ্রেপ্তার তাহরিমা জান্নাত সুরভী দীর্ঘদিন ধরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বর্তমান সরকার, সরকারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ উপদেষ্টা এবং সেনাবাহিনীর প্রধানকে নিয়ে অশালীন, কুরুচিপূর্ণ ও রাষ্ট্রবিরোধী মন্তব্য করে আসছিলেন। তাঁর এসব বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়লে জনমনে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।

‎আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি সূত্র জানায়, তাহরিমা জান্নাত সুরভীর বিরুদ্ধে আগে থেকেই ওয়ারেন্ট জারি ছিল। একই সঙ্গে তাঁর অনলাইন কর্মকাণ্ড দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও রাষ্ট্রীয় স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি হতে পারে, এমন আশঙ্কায় গোয়েন্দা নজরদারি জোরদার করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার রাতে যৌথ বাহিনী অভিযান চালিয়ে তাঁকে গ্রেপ্তার করে।‎

‎টঙ্গী পূর্ব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মেহেদী হাসান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘গ্রেপ্তার তাহরিমা জান্নাত সুরভীর বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ রয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে গাজীপুরের কালিয়াকৈর থানায় একটি চাঁদাবাজির মামলা রয়েছে। ওই মামলায় তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। আজ বৃহস্পতিবার সকালে কালিয়াকৈর থানা-পুলিশের কাছে তাহরিমাকে হস্তান্তর করা হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

পঞ্চগড়ে চার দিন ধরে ঘন কুয়াশা ও কনকনে শীত

পঞ্চগড় প্রতিনিধি 
আপডেট : ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১: ০৪
ঘন কুয়াশার কারণে ভোরে হেডলাইট জ্বালিয়ে বাস চলছে। পঞ্চগড়ের তেলিপাড়া এলাকা থেকে তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঘন কুয়াশার কারণে ভোরে হেডলাইট জ্বালিয়ে বাস চলছে। পঞ্চগড়ের তেলিপাড়া এলাকা থেকে তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা

টানা চার দিন ধরে ঘন কুয়াশা ও কনকনে শীতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে উত্তরের জেলা পঞ্চগড়। ভোর থেকেই জেলার সড়ক ও জনপথ ঘন কুয়াশায় ঢেকে থাকছে। কনকনে ঠান্ডা আর কুয়াশার কারণে ব্যাহত হচ্ছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। এর প্রভাব পড়েছে কর্মজীবী মানুষ থেকে শুরু করে হাসপাতালগুলোতে।

বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) সকাল ৬টায় তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ১০০ শতাংশ। ঘন কুয়াশার কারণে ভোর থেকেই যানবাহনগুলোকে হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করতে দেখা গেছে।

ঘন কুয়াশা ও তীব্র শীতে সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন খেটে খাওয়া মানুষেরা। ভোরে অনেকেই কাজে যেতে পারছেন না। শীত নিবারণের জন্য বিভিন্ন এলাকায় মানুষকে খড়কুটো জ্বালিয়ে আগুন পোহাতে দেখা গেছে।

নাইট কোচের চালকেরা জানান, ঘন কুয়াশার কারণে রাস্তায় কিছুই দেখা যায় না। রফিকুল আলী নামের এক চালক বলেন, ‘এত কুয়াশায় সাবধানে গাড়ি চালিয়ে আসতে হয়েছে। শীত এলেই আমাদের এই সমস্যায় পড়তে হয়। কুয়াশায় সামনে কিছুই বোঝা যায় না।’

আরেকজন চালক জানান, কুয়াশার কারণে গতি কমিয়ে গাড়ি চালাতে হয়। একটু অসতর্ক হলেই দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকে।

শীতের প্রভাবে জেলার হাসপাতালগুলোতে বেড়েছে রোগীর ভিড়। সর্দি-কাশি, জ্বর, শ্বাসকষ্ট ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে। সদর হাসপাতালের একজন চিকিৎসক জানান, তাপমাত্রা কমে যাওয়ায় শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তিরা বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন। তিনি এ সময় গরম কাপড় ব্যবহার, উষ্ণ খাবার গ্রহণ এবং প্রয়োজন ছাড়া বাইরে না যাওয়ার পরামর্শ দেন।

তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিতেন্দ্রনাথ রায় জানান, ১১ থেকে ১৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত তেঁতুলিয়ায় মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে গেছে। গত শনিবার তাপমাত্রা কিছুটা বাড়লেও পরবর্তী দিনগুলোতে তা আবার কমে গেছে। বৃহস্পতিবার সকাল ৬টায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে।

জেলা প্রশাসক কাজী সাইমুজ্জামান জানান, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যে প্রায় ১৫ হাজার শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়েছে। আরও শীতবস্ত্রের চাহিদা পাঠানো হয়েছে। প্রাপ্ত শীতবস্ত্রগুলো প্রতিটি উপজেলায় সমানভাবে ভাগ করে শীতার্ত মানুষের মধ্যে বিতরণ করা হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

পিরোজপুর-২ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হচ্ছেন সাবেক ভিপি মাহমুদ হোসেন

নেছারাবাদ (পিরোজপুর) প্রতিনিধি 
মাহমুদ হোসেন। ছবি: সংগৃহীত
মাহমুদ হোসেন। ছবি: সংগৃহীত

পিরোজপুর-২ (কাউখালী, ভান্ডারিয়া ও নেছারাবাদ) আসনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) থেকে দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন সাবেক ভিপি মাহমুদ হোসেন। মোবাইলে আলাপকালে মাহমুদ হোসেন নিজেই বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

মাহমুদ হোসেন ভান্ডারিয়া সরকারি কলেজের সাবেক ভিপি এবং প্রখ্যাত সাংবাদিক তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়ার ভাতিজা। তিনি দীর্ঘদিন ধরে পিরোজপুর-২ আসন থেকে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন। তাঁর নেতৃত্বে এই আসনে বিএনপির একটি শক্তিশালী রাজনৈতিক বলয় গড়ে উঠেছে বলে স্থানীয়ভাবে জানা যায়।

উল্লেখ্য, পিরোজপুর-২ আসনে বিএনপির চূড়ান্ত মনোনয়ন পেয়েছেন আহমদ সোহেল মঞ্জুর সুমন। গত মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) মনোনয়ন চূড়ান্ত হওয়ার পরপরই মাহমুদ হোসেন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।

এ বিষয়ে মাহমুদ হোসেন বলেন, ‘আমি ২০২৩ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে বিএনপিতে যোগ দিলেও ছাত্রজীবন থেকেই বিএনপির আদর্শে বিশ্বাসী। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের চেতনাকে ধারণ করে সব সময় দলের তৃণমূল নেতা-কর্মীদের পাশে থাকার চেষ্টা করেছি।’

মাহমুদ হোসেন আরও বলেন, ‘পিরোজপুর-২ আসনের সাধারণ মানুষ আমাকে এই আসনে নেতৃত্বে দেখতে চান। জনগণের সেই প্রত্যাশাকে প্রাধান্য দিয়েই স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। বিএনপি একটি গণমানুষের দল। সেই গণমানুষের চাওয়াকেই গুরুত্ব দিয়ে সামনে এগোতে চাই।’

মাহমুদ হোসেন জানান, শিগগির তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করবেন এবং আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনী কার্যক্রম শুরু করবেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত