Ajker Patrika

ফরিদপুরে ফেস্টুন অপসারণ, বিএনপির তোপের মুখে বৈষম্যবিরোধীরা

ফরিদপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ১৭ মে ২০২৫, ১৭: ২৮
ফরিদপুরে সড়ক থেকে বৈষম্যবিরোধীদের ব্যানার অপসারণ। ছবি: আজকের পত্রিকা
ফরিদপুরে সড়ক থেকে বৈষম্যবিরোধীদের ব্যানার অপসারণ। ছবি: আজকের পত্রিকা

ফরিদপুরে সড়কের ব্যানার-ফেস্টুন অপসারণ করে তোপের মুখে পড়েছেন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা। এ ঘটনার পর বিভিন্ন মাধ্যমে হুমকি-ধমকি দেওয়ার অভিযোগ করেছেন তাঁরা।

তাঁদের এনসিপি আখ্যা দিয়ে বিএনপির দাবি, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যমূলকভাবে খালেদা জিয়া ও শহীদ জিয়ার ছবি-সংবলিত দলের প্রচার-প্রচারণার ব্যানার-ফেস্টুন খুলে ফেলা হয়েছে।

জানা যায়, সৌন্দর্য বৃদ্ধি ও সড়কে লাগানো গাছ সংরক্ষণের লক্ষ্যে গত বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বিভিন্ন সড়কে টানানো রাজনৈতিক দলের ব্যানার-ফেস্টুন উচ্ছেদ করে বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীরা। শহরের ভাঙ্গা রাস্তার মোড়, মেডিকেল সড়ক, নদী গবেষণা সড়ক, রাজবাড়ী রাস্তার মোড়সহ সড়কের ডিভাইডারে রোপণ করা গাছের ওপর ঝুলে থাকা ব্যানার ও ফেস্টুন অপসারণ করা হয়। এতে নেতৃত্ব দেন সংগঠনের জেলা আহ্বায়ক কাজী রিয়াজ, মুখপাত্র কাজী জেবা তাহসিন, সহ-মুখপাত্র উম্মে হাবিবাসহ অন্য সদস্যরা।

এ সময় তাঁরা বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রচার-প্রচারণার ব্যানার-ফেস্টুন ও বিলবোর্ড অপসারণ করেন। এ ঘটনাকে রাজনৈতিকভাবে আখ্যা দিয়ে সমালোচনা করছেন বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা।

ওই দিন রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে স্ট্যাটাস দেন মহানগর যুবদলের সাবেক সভাপতি বেনজির আহমেদ (তাবরিজ)। তিনি লিখেন, ‘শহর পরিষ্কার করার নামে বিএনপির ব্যানার-ফেস্টুনে হাত দেওয়া সহ্য করা হবে না। পাকনামি বেশি হয়ে যাচ্ছে, ফলাফল ভালো হবে না।’ এমন স্ট্যাটাসের পরপরই বিএনপির বিভিন্ন স্তরের নেতা-কর্মীরা ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন।

জানতে চাইলে ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র কাজী জেবা তাহসিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘শহরে যেভাবে ব্যানার-ফেস্টুন লাগানো হচ্ছে, তাতে সৌন্দর্য নষ্ট হচ্ছে। মূলত সৌন্দর্য বজায় রাখতে এবং সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে ব্যানার-ফেস্টুন খোলা হয়েছিল। কোনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্যমূলকভাবে নয়। আমরা বুঝতে পারিনি, এটাকে রাজনৈতিকভাবে নেওয়া হবে। আমাদের এই উচ্ছেদ অভিযানের সঙ্গে এনসিপির কোনো সম্পর্ক নেই।’

কাজী জেবা তাহসিন আরও বলেন, ‘এ ঘটনার পর থেকে বিভিন্নভাবে আমাদের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। সহ-মুখপাত্র উম্মে হাবিবাকে ফোন দিয়ে হুমকি দিয়েছে। বিএনপির লোকজন আমাদের অনেককে মারধরের জন্য খুঁজতেছে। আমরা নিরাপত্তাহীনতায় আছি।’

ব্যানার অপসারণের প্রতিবাদে জেলা যুবদলের মিছিল। ছবি: আজকের পত্রিকা
ব্যানার অপসারণের প্রতিবাদে জেলা যুবদলের মিছিল। ছবি: আজকের পত্রিকা

এদিকে ব্যানার-ফেস্টুন খোলার প্রতিবাদে জেলা যুবদল আজ শনিবার দুপুরে শহরে বিক্ষোভ মিছিল বের করেছে। ফরিদপুর প্রেসক্লাব চত্বর থেকে মিছিল বের করে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে গিয়ে শেষ হয় এবং জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হয়। এ সময় জেলা যুবদলের সভাপতি রাজিব হোসেনসহ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

এ বিষয়ে যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, এনসিপি গঠনের পর থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও সমন্বয়ক বলতে কিছু নেই। দলটির ফরিদপুরে যাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সে আওয়ামী লীগ পরিবারের সদস্য। তাঁরা আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন করতে এক সপ্তাহ ধরে শহরে কিছু ব্যক্তি তাঁদের রাজনৈতিক স্বার্থ উদ্ধারের জন্য বিএনপির ব্যানার-ফেস্টুন খুলে ফেলেছে।

এটা কোনো সাধারণ ঘটনা নয়। এনসিপি রাজনৈতিক সংগঠন হিসেবে আরেকটি সংগঠনের ব্যানার-ফেস্টুন খোলার অধিকার রাখে না। প্রশাসন যদি ব্যবস্থা না নেয়, তাহলে যুবদলের নেতা-কর্মীরা ওদের এই শহরে থাকতে দেবে না।’

অপরদিকে এ ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করে ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সদস্যসচিব সোহেল রানা। তিনি বলেন, ‘এটা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যমূলক ও পরিকল্পিত কিছু না। আমরা চাই, শহর পরিষ্কার থাকুক। তারপরও এটাকে রাজনৈতিকভাবে নেওয়া হলে সংগঠনের পক্ষ থেকে আমি সবার কাছে ক্ষমা চাচ্ছি। আমরা ছোট মানুষ। কোনো ভুল করে থাকলে যেন ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখেন।’

জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোদাররেছ আলী ইছা বলেন, ব্যানার-ফেস্টুন অপসারণ করাতো ওদের কাজ না, এটা পৌরসভার কাজ। তারপরও ওরা কেন এটা করেছে? যদিও ঘটনার পর ওদের অনেকে আমার কাছে দুঃখ প্রকাশ করেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নরসিংদীতে তিন চোখ ও দুই মুখের বাছুরের জন্ম, এলাকায় চাঞ্চল্য

নরসিংদী প্রতিনিধি
পুবেরগাঁও গ্রামের একটি খামারে বাছুরটির জন্ম। ছবি: আজকের পত্রিকা
পুবেরগাঁও গ্রামের একটি খামারে বাছুরটির জন্ম। ছবি: আজকের পত্রিকা

নরসিংদীতে অদ্ভুত আকৃতির বাছুরের জন্ম হয়েছে। বাছুরটির রয়েছে দুটি মুখ, দুটি জিহ্বা, দুটি কান ও তিনটি চোখ। এর মধ্যে একটি চোখ বাছুরের কপালের মাঝখানে। এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

২৩ ডিসেম্বর রাতে শিবপুর উপজেলার চক্রধা ইউনিয়নের পুবেরগাঁও গ্রামে স্থানীয় ইউপি সদস্য কাশেম খানের খামারে বাছুরটির জন্ম।

খামারমালিক কাশেম খান বলেন, বাছুরটি জন্মের পর থেকেই অসুস্থ। স্বাভাবিকভাবে দুধ পান করতে না পারায় ফিডারের মাধ্যমে দুধ খাওয়াতে হচ্ছে।

তিনি জানান, তাঁর খামারের একটি গাভি বাছুরটির জন্ম দিয়েছে। তিনি বলেন, এর আগেও গাভিটির বাছুর হয়েছে। কিন্তু এবারের মতো এমন অদ্ভুদ বাছুর আগে কখনো হয়নি।

ঘটনাটি জানাজানির পর থেকেই বাছুরটিকে একনজর দেখতে আশপাশের কৌতূহলী মানুষ খামারে আসছেন।

স্থানীয় বাসিন্দা আবদুল জলিল বলেন, ‘আমরা ছোটবেলা থেকে গরু-ছাগল দেখছি। কিন্তু তিন চোখ আর দুই মুখের বাছুর এই প্রথম দেখলাম। খবর পেয়ে দূর থেকে এসেছি।’

আরেক স্থানীয় নারী জরিনা বেগম বলেন, ‘বাছুরটা দেখতে অদ্ভুত লাগলেও মায়া হচ্ছে। বাছুরটির স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা। অনেকেই দ্রুত প্রাণিসম্পদ বিভাগের চিকিৎসকের পরামর্শ ও চিকিৎসা নিশ্চিত করার পরামর্শ দিচ্ছেন।’

এর আগে এ ধরনের বাছুর জন্মের বিষয়ে প্রাণী বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, সাধারণত জেনেটিকস ডিফেক্টের কারণে গাভির এমন ত্রুটিপূর্ণ বাচ্চার জন্ম হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

গাজীপুরে ট্রেনে কাটা পড়ে নানি-নাতনিসহ নিহত ৩

গাজীপুর প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

গাজীপুরের কালীগঞ্জে রেললাইন দিয়ে হাঁটার সময় ট্রেনে কাটা পড়ে নানি-নাতনিসহ তিন নারী নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) বিকেলে টঙ্গী-ভৈরব রেলপথের আড়িখোলা রেলস্টেশনসংলগ্ন টেকপাড়া এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত নারীরা হলেন কালীগঞ্জ পৌরসভার দেওয়ালেরটেক গ্রামের মোবারক হোসেনের স্ত্রী সাদিয়া বেগম (২৪), একই এলাকার বাবু মিয়ার মেয়ে অনাদি আক্তার (১৩) এবং নরসিংদীর শিবপুর উপজেলার মরজাল এলাকার বাসিন্দা কমলা বেগম (৫৫)। নিহত কমলা বেগম ও অনাদি আক্তার সম্পর্কে নানি-নাতনি এবং সাদিয়া বেগম তাঁদের প্রতিবেশী ছিলেন।

স্থানীয়রা ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে আড়িখোলা রেলব্রিজ এলাকায় রেললাইনের ওপর দিয়ে তিনজন হেঁটে যাচ্ছিলেন। এ সময় ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা নোয়াখালীগামী ‘উপকূল এক্সপ্রেস’ ট্রেনটি চলে আসে। এ সময় তাঁরা রেলব্রিজের ওপর থাকায় সেখান থেকে দ্রুত সরে যাওয়ার সুযোগ পাননি। পরে ট্রেনটি তাঁদের ওপর দিয়ে চলে যায়। এতে ট্রেনে কাটা পড়ে ঘটনাস্থলেই কমলা বেগম ও সাদিয়া বেগমের মৃত্যু হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় অনাদি আক্তারকে উদ্ধার করে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক জিয়াউর রহমান জানান, অনাদি আক্তারকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছিল।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে কালীগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ওবায়দুল হক জানান, এটি রেলওয়ের আওতাধীন দুর্ঘটনা হওয়ায় রেলওয়ে পুলিশের সঙ্গে সমন্বয় করে লাশগুলো উদ্ধার করা হয়েছে।

রেলওয়ে নরসিংদী পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) দিলীপ চন্দ্র সরকার বলেন, ‘খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশের সুরতহাল সম্পন্ন করেছি। নিহত নারীদের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে। পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এবং ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে বিনা ময়নাতদন্তে লাশগুলো স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আরাকান আর্মিদের জন্য নেওয়া হচ্ছিল ১৫০০ মশারি, আটক ৫

থানচি (বান্দরবান) প্রতিনিধি  
মশারিসহ জব্দ করা মালপত্র। ছবি: আজকের পত্রিকা
মশারিসহ জব্দ করা মালপত্র। ছবি: আজকের পত্রিকা

বান্দরবানের থানচি উপজেলায় দুটি ইঞ্জিনচালিত নৌকা তল্লাশি করে ১ হাজার ৫০০টি মশারি, ১২০টি নৌকার ইঞ্জিনের পাখা উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) বিকেলে তিন্দুমুখ বিজিবি চেকপোস্ট পার হওয়ার সময় নৌকাগুলো তল্লাশি করে এসব জিনিস জব্দ করে বিজিবি। এসব মশারি ও ইঞ্জিনের পাখা বান্দরবানের থানচির বড় মদক সীমান্ত দিয়ে মিয়ানমারে সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মির জন্য নেওয়া হচ্ছিল বলে জানিয়েছে বিজিবি। এ ঘটনায় নৌকা দুটি থেকে পাঁচজনকে আটক করা হয়। আজ বৃহস্পতিবার তাঁদের থানচি থানায় সোপর্দ করা হয়েছে।

এ ঘটনায় আটক ব্যক্তিরা হলেন থোয়াই হ্লা চিং মারমা, উমং সাইং মারমা, হ্লাচিংথোয়াই মারমা, উক্যছাইন মারমা ও মো. ইউনুস।

এসব তথ্য নিশ্চিত করে বিজিবি বলিপাড়া ৩৮ ব্যাটালিয়ানের সহকারী পরিচালক মো. জাকির হোসেনের জানান, নিজস্ব গোয়েন্দা সূত্রে তাঁরা জেনেছেন, দীর্ঘদিন থেকে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ওষুধ, কাপড়, জুতা, মোজা, মশারি, নৌকা ইঞ্জিনের পাখা ও বিভিন্ন যন্ত্রাংশ মিয়ানমারের আরাকান আর্মির কাছে সরবরাহ করছে একটি সিন্ডিকেট চক্র। পাচারকারীদের ধরতে সীমান্তের বিজিবি চৌকিগুলোতে বিজিবি সদস্যরা সতর্ক রয়েছেন।

জাকির হোসেন বলেন, গতকাল বুধবার তিন্দুমুখ বিজিবি চেকপোস্ট অতিক্রম করার সময় মালবাহী তিনটি ইঞ্জিন নৌকা দেখে বিজিবির সদস্যদের সন্দেহ হয়। এ সময় নৌকা থামাতে বললে একটি নৌকা দ্রুত চলে যায়। বাকি দুটি নৌকা তল্লাশি করে ১ হাজার ৫০০টি মশারি, ১২০টি ইঞ্জিন বোটসহ অন্যান্য পণ্য পাওয়া যায়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নলছিটি লঞ্চঘাট ওসমান হাদির নামে নামকরণ

ঝালকাঠি প্রতিনিধি  
নলছিটি লঞ্চঘাট ।  ছবি: আজকের পত্রিকা
নলছিটি লঞ্চঘাট । ছবি: আজকের পত্রিকা

নলছিটি উপজেলার লঞ্চঘাট এখন থেকে শহীদ শরিফ ওসমান হাদির নামে পরিচিত হবে। জন্মস্থান ও শৈশবের স্মৃতিতে গাথা এই লঞ্চঘাট তাঁর নামের সঙ্গে চিরস্থায়ীভাবে যুক্ত হলো।

বরিশাল বিআইডব্লিউটিএর নির্বাহী প্রকৌশলী আমজাদ হোসেন বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় (২৫ ডিসেম্বর) জানান, শহীদ ওসমান হাদির জন্মস্থান নলছিটি। শৈশব, বেড়ে ওঠা এবং জীবনসংগ্রামের সঙ্গে লঞ্চঘাট এলাকার নিবিড় সম্পর্ক থাকার কারণে এটি তাঁর নামে নামকরণ করা হয়েছে। বর্তমানে টার্মিনালের সংস্কার ও রঙের কাজ চলমান রয়েছে।

আগামী শনিবার নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন ঘাটটি পরিদর্শন করবেন বলেও জানান তিনি।

নলছিটি লঞ্চঘাট শহীদ ওসমান হাদির জীবনের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। ঘাট থেকে মাত্র ৫০০ মিটার দূরে তার পৈতৃক বাড়ি। নদীর ধারে দাঁড়িয়ে মানুষের আসা-যাওয়া দেখা এবং লঞ্চের ভিড়ে সময় কাটানো—এই ঘাট ছিল তার বেড়ে ওঠার নীরব সাক্ষী।

ঘাট এলাকার ব্যবসায়ী রব হাওলাদার বলেন, ‘আমরা চাইছিলাম হাদির স্মরণে এমন কিছু হোক, যা প্রজন্মের পর প্রজন্ম মনে রাখবে। তার শৈশবের স্মৃতিবিজড়িত লঞ্চঘাটের নাম তার নামে হওয়া নিঃসন্দেহে স্মরণীয় সিদ্ধান্ত।’

ব্যবসায়ী শাহাদত আলম ফকির যোগ করেন, ‘এই ঘাটে আমরা হাদিকে ছোটবেলা থেকে দেখেছি। সে এখানকারই ছেলে ছিল। আজ তার নামে ঘাটের নামকরণ হওয়ায় আমরা গর্বিত।’

ওসমান হাদির প্রতিবেশী বেলায়েত হোসেন নান্নু বলেন, ‘হাদি এই এলাকার সন্তান। এই ঘাট, এই নদী, এই মানুষ—সবকিছুতেই তার স্মৃতি ছড়িয়ে আছে। লঞ্চঘাটের নাম তার নামে হওয়া মানে, সে এখানেই চিরদিন বেঁচে থাকবে।’

উল্লেখ্য, ১২ ডিসেম্বর হত্যার উদ্দেশ্যে ওসমান হাদিকে গুলি করা হয়। তাঁকে প্রথমে ঢাকায় ভর্তি করা হয় এবং পরে সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৮ ডিসেম্বর মারা যান ওসমান হাদি। পরবর্তীকালে তাঁর মরদেহ দেশে আনা হয় এবং সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় জানাজা শেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে (জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের কবরের পাশে) সমাহিত করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত