বিশ্ব পর্যটন দিবস আজ
মাইনউদ্দিন শাহেদ, কক্সবাজার

পর্যটন শহর কক্সবাজারের নাজিরারটেক থেকে টেকনাফ পর্যন্ত ১২০ কিলোমিটার সমুদ্রসৈকতকে ১৯৯৯ সালে প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা (ইসিএ) ঘোষণা করে সরকার। এ-সংক্রান্ত আইন অনুযায়ী, সৈকতের জোয়ার-ভাটার স্থান থেকে ৩০০ মিটার পর্যন্ত যেকোনো স্থাপনা নির্মাণ ও উন্নয়ন নিষিদ্ধ। কিন্তু এই আইন কেউ মানছে না। সৈকতে বসছে শত শত দোকান ও স্থাপনা। এতে পরিবেশের ক্ষতির পাশাপাশি সৈকতের সৌন্দর্য ও নির্জনতা ক্ষুণ্ন হচ্ছে।
সাম্প্রতিক সময়ে নতুন করে সৈকতের বালিয়াড়ি দখল ও স্থাপনা নির্মাণের হিড়িক পড়েছে। অভিযোগ উঠেছে, পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে প্রশাসনিক শৈথিল্যের সুযোগে গত এক বছরে এই অবস্থা হয়েছে। এ সময়ে কক্সবাজার শহর-সংলগ্ন নাজিরারটেক, সুগন্ধা, কলাতলী এবং কিছুটা দূরের দরিয়ানগর, হিমছড়ি, সোনারপাড়া, ইনানী, পাটুয়ারটেক ও টেকনাফ সৈকতে দোকানসহ কয়েক শ স্থাপনা তৈরি করা হয়েছে। সৈকতের জনপ্রিয় স্পটগুলোয় বেশি দখলের ঘটনা ঘটছে। মাঝেমধ্যে জেলা প্রশাসন, পুলিশ ও বন বিভাগ অভিযান চালিয়ে অবৈধ স্থাপনা সরালেও অল্প সময়ের মধ্যে সেগুলো পুনরায় স্থাপন করা হচ্ছে।
পর্যটন-সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা বলছেন, শহরের লাবণী থেকে কলাতলী পর্যন্ত ৫ কিলোমিটার সৈকতের বালিয়াড়িতে বসানো দোকানপাট, চেয়ার-ছাতা, ভ্রাম্যমাণ হকারসহ পর্যটন সেবার বিভিন্ন খাতের ব্যবসায় জেলা প্রশাসনের বিচ ম্যানেজমেন্ট কমিটির অনুমতি রয়েছে। একইভাবে দরিয়ানগর, হিমছড়ি, ইনানী, পাটুয়ারটেক ও টেকনাফ সৈকতের পর্যটন-সংশ্লিষ্ট ব্যবসায় উপজেলা প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট সরকারি দপ্তর অনুমতি দিয়ে আসছে।
সরকারি বিভিন্ন দপ্তরও আইন উপেক্ষা করে বালিয়াড়িতে স্থাপনা নির্মাণ করেছে।
এক সপ্তাহ আগে কক্সবাজারের বিদায়ী জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাহউদ্দিনকে পদোন্নতি দিয়ে যুগ্ম সচিব পদে অর্থ মন্ত্রণালয়ে পদায়ন করা হয়। তাঁর বদলির আদেশ আসার পরপরই গত রোববার সুগন্ধা পয়েন্ট সৈকতে শতাধিক টংঘর বসানোর চেষ্টা করা হয়। পাশাপাশি সৈকতের অন্যান্য পয়েন্টেও বসেছে ভ্রাম্যমাণ দোকান। ভ্রাম্যমাণ হিসেবে তৈরি অনেক দোকানের চাকা সৈকতের বালুতে দাবিয়ে দেওয়ায় তা স্থায়ী স্থাপনার রূপ নিয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সৈকতের লাবণী, সিগাল, সুগন্ধা ও কলাতলী পয়েন্টে ১ হাজার ৪০০ চেয়ার-ছাতার (কিটকট) অনুমোদন ছিল। গত তিন মাসে আরও ৬০০ চেয়ার-ছাতার অনুমোদন দিয়েছে জেলা প্রশাসন। একই সময়ে ২০০-এর মতো ভ্রাম্যমাণ দোকানসহ পর্যটন-সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ব্যবসার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এভাবে অনুমতি নিয়ে সৈকতের প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকায় হঠাৎ করে স্থাপনা নির্মাণের ঘটনা বেড়েছে। রোববার থেকে সুগন্ধা পয়েন্ট সৈকতে বসানো একই ধরনের শতাধিক টংঘরের ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
সৈকত দখলের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা শুরু হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে গত মঙ্গলবার পরিবেশ মন্ত্রণালয় থেকে অবৈধ দোকানপাট ও স্থাপনা উচ্ছেদ করতে জেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তরকে নির্দেশনা দেওয়া হয়। চিঠিতে বলা হয়, সাম্প্রতিক সময়ে সমুদ্রসৈকতে শত শত দোকান স্থাপন করা হয়েছে, যা পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যের জন্য মারাত্মক বিপর্যয়কর। জেলা প্রশাসন ইসিএ এলাকা ব্যবস্থাপনা বিধিমালা, ২০১৬ অনুসরণ না করে লাইসেন্স দিয়েছে। এ ক্ষেত্রে পরিবেশ অধিদপ্তরের মতামত গ্রহণ করা হয়নি। চিঠিতে সৈকতে আইন ও বিধিবহির্ভূতভাবে বসানো দোকান উচ্ছেদ ও লাইসেন্স বাতিলের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা দেওয়া হয়।
এর আগে গত জানুয়ারি মাসে উচ্চ আদালতের নির্দেশে জেলা প্রশাসন সৈকতের সুগন্ধা পয়েন্টের বালিয়াড়িতে থাকা দুই শতাধিক অবৈধ দোকান ও স্থাপনা উচ্ছেদ করে। বছরে দু-একবার এই ধরনের অভিযান হলেও নতুন নতুন কৌশলে দখলদারেরা সৈকতে দোকানপাট বসায়। সর্বশেষ রোববার সুগন্ধা পয়েন্টের উত্তর পাশে বালিয়াড়ি ও ঝাউবন দখল করে বেশ কিছু দোকান বসানোর চেষ্টা করা হয়। জেলা প্রশাসন ও ট্যুরিস্ট পুলিশ এতে বাধা দেয়।
ইসিএ এলাকায় দোকানপাটের বিষয়ে জেলা প্রশাসনের পর্যটন শাখার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. আজিম খান বলেন, সৈকতের বালিয়াড়িতে দোকানপাট বসানোর সুযোগ নেই। এ নিয়ে উচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞাও রয়েছে। জেলা প্রশাসনের অনুমতিপত্রে সৈকতের বালিয়াড়ি এবং জীববৈচিত্র্য ও পরিবেশ নষ্ট হয়, এমন জায়গায় দোকান না বসানোর শর্ত রয়েছে।
ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার অঞ্চলের প্রধান ও অতিরিক্ত ডিআইজি আপেল মাহমুদ বলেন, বালিয়াড়িতে বসানোর জন্য আনা টংদোকানগুলো মালিকদের নিজ উদোগে সরিয়ে ফেলার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। অন্যথায় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পরিবেশবাদীদের দাবি
সমুদ্রসৈকতের ইসিএ এলাকা দখলমুক্ত করতে দুই সচিবসহ সরকারি আট কর্মকর্তাকে আইনি নোটিশ পাঠিয়েছে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা)। আট কর্মকর্তা হলেন পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের সচিব, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব, পর্যটন করপোরেশনের চেয়ারম্যান, কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক, কক্সবাজার পুলিশ সুপার এবং পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজার জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক।
সৈকতের ইসিএ এলাকায় গড়ে তোলা সব ধরনের স্থাপনা অবিলম্বে সরানোর দাবি জানিয়েছে পরিবেশবিষয়ক বিভিন্ন সংগঠন। শিগগির প্রশাসন এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে কঠোর আন্দোলনে নামার ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা), আমরা কক্সবাজারবাসী, কক্সবাজার সোসাইটি ও কক্সবাজার উন্নয়ন সংগ্রাম পরিষদ।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন কক্সবাজার জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক কলিম উল্লাহ বলেন, ‘ইসিএ আইন ও হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী সৈকতের বালিয়াড়ি দখলমুক্ত করে প্রাকৃতিক পরিবেশ তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হোক। না হয় পরিবেশ বিপর্যয়ের মুখে পড়ে পর্যটনশিল্প মুখ থুবড়ে পড়বে।’
আরও খবর পড়ুন:

পর্যটন শহর কক্সবাজারের নাজিরারটেক থেকে টেকনাফ পর্যন্ত ১২০ কিলোমিটার সমুদ্রসৈকতকে ১৯৯৯ সালে প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা (ইসিএ) ঘোষণা করে সরকার। এ-সংক্রান্ত আইন অনুযায়ী, সৈকতের জোয়ার-ভাটার স্থান থেকে ৩০০ মিটার পর্যন্ত যেকোনো স্থাপনা নির্মাণ ও উন্নয়ন নিষিদ্ধ। কিন্তু এই আইন কেউ মানছে না। সৈকতে বসছে শত শত দোকান ও স্থাপনা। এতে পরিবেশের ক্ষতির পাশাপাশি সৈকতের সৌন্দর্য ও নির্জনতা ক্ষুণ্ন হচ্ছে।
সাম্প্রতিক সময়ে নতুন করে সৈকতের বালিয়াড়ি দখল ও স্থাপনা নির্মাণের হিড়িক পড়েছে। অভিযোগ উঠেছে, পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে প্রশাসনিক শৈথিল্যের সুযোগে গত এক বছরে এই অবস্থা হয়েছে। এ সময়ে কক্সবাজার শহর-সংলগ্ন নাজিরারটেক, সুগন্ধা, কলাতলী এবং কিছুটা দূরের দরিয়ানগর, হিমছড়ি, সোনারপাড়া, ইনানী, পাটুয়ারটেক ও টেকনাফ সৈকতে দোকানসহ কয়েক শ স্থাপনা তৈরি করা হয়েছে। সৈকতের জনপ্রিয় স্পটগুলোয় বেশি দখলের ঘটনা ঘটছে। মাঝেমধ্যে জেলা প্রশাসন, পুলিশ ও বন বিভাগ অভিযান চালিয়ে অবৈধ স্থাপনা সরালেও অল্প সময়ের মধ্যে সেগুলো পুনরায় স্থাপন করা হচ্ছে।
পর্যটন-সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা বলছেন, শহরের লাবণী থেকে কলাতলী পর্যন্ত ৫ কিলোমিটার সৈকতের বালিয়াড়িতে বসানো দোকানপাট, চেয়ার-ছাতা, ভ্রাম্যমাণ হকারসহ পর্যটন সেবার বিভিন্ন খাতের ব্যবসায় জেলা প্রশাসনের বিচ ম্যানেজমেন্ট কমিটির অনুমতি রয়েছে। একইভাবে দরিয়ানগর, হিমছড়ি, ইনানী, পাটুয়ারটেক ও টেকনাফ সৈকতের পর্যটন-সংশ্লিষ্ট ব্যবসায় উপজেলা প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট সরকারি দপ্তর অনুমতি দিয়ে আসছে।
সরকারি বিভিন্ন দপ্তরও আইন উপেক্ষা করে বালিয়াড়িতে স্থাপনা নির্মাণ করেছে।
এক সপ্তাহ আগে কক্সবাজারের বিদায়ী জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাহউদ্দিনকে পদোন্নতি দিয়ে যুগ্ম সচিব পদে অর্থ মন্ত্রণালয়ে পদায়ন করা হয়। তাঁর বদলির আদেশ আসার পরপরই গত রোববার সুগন্ধা পয়েন্ট সৈকতে শতাধিক টংঘর বসানোর চেষ্টা করা হয়। পাশাপাশি সৈকতের অন্যান্য পয়েন্টেও বসেছে ভ্রাম্যমাণ দোকান। ভ্রাম্যমাণ হিসেবে তৈরি অনেক দোকানের চাকা সৈকতের বালুতে দাবিয়ে দেওয়ায় তা স্থায়ী স্থাপনার রূপ নিয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সৈকতের লাবণী, সিগাল, সুগন্ধা ও কলাতলী পয়েন্টে ১ হাজার ৪০০ চেয়ার-ছাতার (কিটকট) অনুমোদন ছিল। গত তিন মাসে আরও ৬০০ চেয়ার-ছাতার অনুমোদন দিয়েছে জেলা প্রশাসন। একই সময়ে ২০০-এর মতো ভ্রাম্যমাণ দোকানসহ পর্যটন-সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ব্যবসার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এভাবে অনুমতি নিয়ে সৈকতের প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকায় হঠাৎ করে স্থাপনা নির্মাণের ঘটনা বেড়েছে। রোববার থেকে সুগন্ধা পয়েন্ট সৈকতে বসানো একই ধরনের শতাধিক টংঘরের ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
সৈকত দখলের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা শুরু হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে গত মঙ্গলবার পরিবেশ মন্ত্রণালয় থেকে অবৈধ দোকানপাট ও স্থাপনা উচ্ছেদ করতে জেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তরকে নির্দেশনা দেওয়া হয়। চিঠিতে বলা হয়, সাম্প্রতিক সময়ে সমুদ্রসৈকতে শত শত দোকান স্থাপন করা হয়েছে, যা পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যের জন্য মারাত্মক বিপর্যয়কর। জেলা প্রশাসন ইসিএ এলাকা ব্যবস্থাপনা বিধিমালা, ২০১৬ অনুসরণ না করে লাইসেন্স দিয়েছে। এ ক্ষেত্রে পরিবেশ অধিদপ্তরের মতামত গ্রহণ করা হয়নি। চিঠিতে সৈকতে আইন ও বিধিবহির্ভূতভাবে বসানো দোকান উচ্ছেদ ও লাইসেন্স বাতিলের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা দেওয়া হয়।
এর আগে গত জানুয়ারি মাসে উচ্চ আদালতের নির্দেশে জেলা প্রশাসন সৈকতের সুগন্ধা পয়েন্টের বালিয়াড়িতে থাকা দুই শতাধিক অবৈধ দোকান ও স্থাপনা উচ্ছেদ করে। বছরে দু-একবার এই ধরনের অভিযান হলেও নতুন নতুন কৌশলে দখলদারেরা সৈকতে দোকানপাট বসায়। সর্বশেষ রোববার সুগন্ধা পয়েন্টের উত্তর পাশে বালিয়াড়ি ও ঝাউবন দখল করে বেশ কিছু দোকান বসানোর চেষ্টা করা হয়। জেলা প্রশাসন ও ট্যুরিস্ট পুলিশ এতে বাধা দেয়।
ইসিএ এলাকায় দোকানপাটের বিষয়ে জেলা প্রশাসনের পর্যটন শাখার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. আজিম খান বলেন, সৈকতের বালিয়াড়িতে দোকানপাট বসানোর সুযোগ নেই। এ নিয়ে উচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞাও রয়েছে। জেলা প্রশাসনের অনুমতিপত্রে সৈকতের বালিয়াড়ি এবং জীববৈচিত্র্য ও পরিবেশ নষ্ট হয়, এমন জায়গায় দোকান না বসানোর শর্ত রয়েছে।
ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার অঞ্চলের প্রধান ও অতিরিক্ত ডিআইজি আপেল মাহমুদ বলেন, বালিয়াড়িতে বসানোর জন্য আনা টংদোকানগুলো মালিকদের নিজ উদোগে সরিয়ে ফেলার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। অন্যথায় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পরিবেশবাদীদের দাবি
সমুদ্রসৈকতের ইসিএ এলাকা দখলমুক্ত করতে দুই সচিবসহ সরকারি আট কর্মকর্তাকে আইনি নোটিশ পাঠিয়েছে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা)। আট কর্মকর্তা হলেন পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের সচিব, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব, পর্যটন করপোরেশনের চেয়ারম্যান, কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক, কক্সবাজার পুলিশ সুপার এবং পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজার জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক।
সৈকতের ইসিএ এলাকায় গড়ে তোলা সব ধরনের স্থাপনা অবিলম্বে সরানোর দাবি জানিয়েছে পরিবেশবিষয়ক বিভিন্ন সংগঠন। শিগগির প্রশাসন এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে কঠোর আন্দোলনে নামার ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা), আমরা কক্সবাজারবাসী, কক্সবাজার সোসাইটি ও কক্সবাজার উন্নয়ন সংগ্রাম পরিষদ।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন কক্সবাজার জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক কলিম উল্লাহ বলেন, ‘ইসিএ আইন ও হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী সৈকতের বালিয়াড়ি দখলমুক্ত করে প্রাকৃতিক পরিবেশ তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হোক। না হয় পরিবেশ বিপর্যয়ের মুখে পড়ে পর্যটনশিল্প মুখ থুবড়ে পড়বে।’
আরও খবর পড়ুন:
বিশ্ব পর্যটন দিবস আজ
মাইনউদ্দিন শাহেদ, কক্সবাজার

পর্যটন শহর কক্সবাজারের নাজিরারটেক থেকে টেকনাফ পর্যন্ত ১২০ কিলোমিটার সমুদ্রসৈকতকে ১৯৯৯ সালে প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা (ইসিএ) ঘোষণা করে সরকার। এ-সংক্রান্ত আইন অনুযায়ী, সৈকতের জোয়ার-ভাটার স্থান থেকে ৩০০ মিটার পর্যন্ত যেকোনো স্থাপনা নির্মাণ ও উন্নয়ন নিষিদ্ধ। কিন্তু এই আইন কেউ মানছে না। সৈকতে বসছে শত শত দোকান ও স্থাপনা। এতে পরিবেশের ক্ষতির পাশাপাশি সৈকতের সৌন্দর্য ও নির্জনতা ক্ষুণ্ন হচ্ছে।
সাম্প্রতিক সময়ে নতুন করে সৈকতের বালিয়াড়ি দখল ও স্থাপনা নির্মাণের হিড়িক পড়েছে। অভিযোগ উঠেছে, পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে প্রশাসনিক শৈথিল্যের সুযোগে গত এক বছরে এই অবস্থা হয়েছে। এ সময়ে কক্সবাজার শহর-সংলগ্ন নাজিরারটেক, সুগন্ধা, কলাতলী এবং কিছুটা দূরের দরিয়ানগর, হিমছড়ি, সোনারপাড়া, ইনানী, পাটুয়ারটেক ও টেকনাফ সৈকতে দোকানসহ কয়েক শ স্থাপনা তৈরি করা হয়েছে। সৈকতের জনপ্রিয় স্পটগুলোয় বেশি দখলের ঘটনা ঘটছে। মাঝেমধ্যে জেলা প্রশাসন, পুলিশ ও বন বিভাগ অভিযান চালিয়ে অবৈধ স্থাপনা সরালেও অল্প সময়ের মধ্যে সেগুলো পুনরায় স্থাপন করা হচ্ছে।
পর্যটন-সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা বলছেন, শহরের লাবণী থেকে কলাতলী পর্যন্ত ৫ কিলোমিটার সৈকতের বালিয়াড়িতে বসানো দোকানপাট, চেয়ার-ছাতা, ভ্রাম্যমাণ হকারসহ পর্যটন সেবার বিভিন্ন খাতের ব্যবসায় জেলা প্রশাসনের বিচ ম্যানেজমেন্ট কমিটির অনুমতি রয়েছে। একইভাবে দরিয়ানগর, হিমছড়ি, ইনানী, পাটুয়ারটেক ও টেকনাফ সৈকতের পর্যটন-সংশ্লিষ্ট ব্যবসায় উপজেলা প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট সরকারি দপ্তর অনুমতি দিয়ে আসছে।
সরকারি বিভিন্ন দপ্তরও আইন উপেক্ষা করে বালিয়াড়িতে স্থাপনা নির্মাণ করেছে।
এক সপ্তাহ আগে কক্সবাজারের বিদায়ী জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাহউদ্দিনকে পদোন্নতি দিয়ে যুগ্ম সচিব পদে অর্থ মন্ত্রণালয়ে পদায়ন করা হয়। তাঁর বদলির আদেশ আসার পরপরই গত রোববার সুগন্ধা পয়েন্ট সৈকতে শতাধিক টংঘর বসানোর চেষ্টা করা হয়। পাশাপাশি সৈকতের অন্যান্য পয়েন্টেও বসেছে ভ্রাম্যমাণ দোকান। ভ্রাম্যমাণ হিসেবে তৈরি অনেক দোকানের চাকা সৈকতের বালুতে দাবিয়ে দেওয়ায় তা স্থায়ী স্থাপনার রূপ নিয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সৈকতের লাবণী, সিগাল, সুগন্ধা ও কলাতলী পয়েন্টে ১ হাজার ৪০০ চেয়ার-ছাতার (কিটকট) অনুমোদন ছিল। গত তিন মাসে আরও ৬০০ চেয়ার-ছাতার অনুমোদন দিয়েছে জেলা প্রশাসন। একই সময়ে ২০০-এর মতো ভ্রাম্যমাণ দোকানসহ পর্যটন-সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ব্যবসার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এভাবে অনুমতি নিয়ে সৈকতের প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকায় হঠাৎ করে স্থাপনা নির্মাণের ঘটনা বেড়েছে। রোববার থেকে সুগন্ধা পয়েন্ট সৈকতে বসানো একই ধরনের শতাধিক টংঘরের ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
সৈকত দখলের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা শুরু হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে গত মঙ্গলবার পরিবেশ মন্ত্রণালয় থেকে অবৈধ দোকানপাট ও স্থাপনা উচ্ছেদ করতে জেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তরকে নির্দেশনা দেওয়া হয়। চিঠিতে বলা হয়, সাম্প্রতিক সময়ে সমুদ্রসৈকতে শত শত দোকান স্থাপন করা হয়েছে, যা পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যের জন্য মারাত্মক বিপর্যয়কর। জেলা প্রশাসন ইসিএ এলাকা ব্যবস্থাপনা বিধিমালা, ২০১৬ অনুসরণ না করে লাইসেন্স দিয়েছে। এ ক্ষেত্রে পরিবেশ অধিদপ্তরের মতামত গ্রহণ করা হয়নি। চিঠিতে সৈকতে আইন ও বিধিবহির্ভূতভাবে বসানো দোকান উচ্ছেদ ও লাইসেন্স বাতিলের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা দেওয়া হয়।
এর আগে গত জানুয়ারি মাসে উচ্চ আদালতের নির্দেশে জেলা প্রশাসন সৈকতের সুগন্ধা পয়েন্টের বালিয়াড়িতে থাকা দুই শতাধিক অবৈধ দোকান ও স্থাপনা উচ্ছেদ করে। বছরে দু-একবার এই ধরনের অভিযান হলেও নতুন নতুন কৌশলে দখলদারেরা সৈকতে দোকানপাট বসায়। সর্বশেষ রোববার সুগন্ধা পয়েন্টের উত্তর পাশে বালিয়াড়ি ও ঝাউবন দখল করে বেশ কিছু দোকান বসানোর চেষ্টা করা হয়। জেলা প্রশাসন ও ট্যুরিস্ট পুলিশ এতে বাধা দেয়।
ইসিএ এলাকায় দোকানপাটের বিষয়ে জেলা প্রশাসনের পর্যটন শাখার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. আজিম খান বলেন, সৈকতের বালিয়াড়িতে দোকানপাট বসানোর সুযোগ নেই। এ নিয়ে উচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞাও রয়েছে। জেলা প্রশাসনের অনুমতিপত্রে সৈকতের বালিয়াড়ি এবং জীববৈচিত্র্য ও পরিবেশ নষ্ট হয়, এমন জায়গায় দোকান না বসানোর শর্ত রয়েছে।
ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার অঞ্চলের প্রধান ও অতিরিক্ত ডিআইজি আপেল মাহমুদ বলেন, বালিয়াড়িতে বসানোর জন্য আনা টংদোকানগুলো মালিকদের নিজ উদোগে সরিয়ে ফেলার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। অন্যথায় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পরিবেশবাদীদের দাবি
সমুদ্রসৈকতের ইসিএ এলাকা দখলমুক্ত করতে দুই সচিবসহ সরকারি আট কর্মকর্তাকে আইনি নোটিশ পাঠিয়েছে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা)। আট কর্মকর্তা হলেন পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের সচিব, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব, পর্যটন করপোরেশনের চেয়ারম্যান, কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক, কক্সবাজার পুলিশ সুপার এবং পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজার জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক।
সৈকতের ইসিএ এলাকায় গড়ে তোলা সব ধরনের স্থাপনা অবিলম্বে সরানোর দাবি জানিয়েছে পরিবেশবিষয়ক বিভিন্ন সংগঠন। শিগগির প্রশাসন এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে কঠোর আন্দোলনে নামার ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা), আমরা কক্সবাজারবাসী, কক্সবাজার সোসাইটি ও কক্সবাজার উন্নয়ন সংগ্রাম পরিষদ।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন কক্সবাজার জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক কলিম উল্লাহ বলেন, ‘ইসিএ আইন ও হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী সৈকতের বালিয়াড়ি দখলমুক্ত করে প্রাকৃতিক পরিবেশ তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হোক। না হয় পরিবেশ বিপর্যয়ের মুখে পড়ে পর্যটনশিল্প মুখ থুবড়ে পড়বে।’
আরও খবর পড়ুন:

পর্যটন শহর কক্সবাজারের নাজিরারটেক থেকে টেকনাফ পর্যন্ত ১২০ কিলোমিটার সমুদ্রসৈকতকে ১৯৯৯ সালে প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা (ইসিএ) ঘোষণা করে সরকার। এ-সংক্রান্ত আইন অনুযায়ী, সৈকতের জোয়ার-ভাটার স্থান থেকে ৩০০ মিটার পর্যন্ত যেকোনো স্থাপনা নির্মাণ ও উন্নয়ন নিষিদ্ধ। কিন্তু এই আইন কেউ মানছে না। সৈকতে বসছে শত শত দোকান ও স্থাপনা। এতে পরিবেশের ক্ষতির পাশাপাশি সৈকতের সৌন্দর্য ও নির্জনতা ক্ষুণ্ন হচ্ছে।
সাম্প্রতিক সময়ে নতুন করে সৈকতের বালিয়াড়ি দখল ও স্থাপনা নির্মাণের হিড়িক পড়েছে। অভিযোগ উঠেছে, পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে প্রশাসনিক শৈথিল্যের সুযোগে গত এক বছরে এই অবস্থা হয়েছে। এ সময়ে কক্সবাজার শহর-সংলগ্ন নাজিরারটেক, সুগন্ধা, কলাতলী এবং কিছুটা দূরের দরিয়ানগর, হিমছড়ি, সোনারপাড়া, ইনানী, পাটুয়ারটেক ও টেকনাফ সৈকতে দোকানসহ কয়েক শ স্থাপনা তৈরি করা হয়েছে। সৈকতের জনপ্রিয় স্পটগুলোয় বেশি দখলের ঘটনা ঘটছে। মাঝেমধ্যে জেলা প্রশাসন, পুলিশ ও বন বিভাগ অভিযান চালিয়ে অবৈধ স্থাপনা সরালেও অল্প সময়ের মধ্যে সেগুলো পুনরায় স্থাপন করা হচ্ছে।
পর্যটন-সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা বলছেন, শহরের লাবণী থেকে কলাতলী পর্যন্ত ৫ কিলোমিটার সৈকতের বালিয়াড়িতে বসানো দোকানপাট, চেয়ার-ছাতা, ভ্রাম্যমাণ হকারসহ পর্যটন সেবার বিভিন্ন খাতের ব্যবসায় জেলা প্রশাসনের বিচ ম্যানেজমেন্ট কমিটির অনুমতি রয়েছে। একইভাবে দরিয়ানগর, হিমছড়ি, ইনানী, পাটুয়ারটেক ও টেকনাফ সৈকতের পর্যটন-সংশ্লিষ্ট ব্যবসায় উপজেলা প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট সরকারি দপ্তর অনুমতি দিয়ে আসছে।
সরকারি বিভিন্ন দপ্তরও আইন উপেক্ষা করে বালিয়াড়িতে স্থাপনা নির্মাণ করেছে।
এক সপ্তাহ আগে কক্সবাজারের বিদায়ী জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাহউদ্দিনকে পদোন্নতি দিয়ে যুগ্ম সচিব পদে অর্থ মন্ত্রণালয়ে পদায়ন করা হয়। তাঁর বদলির আদেশ আসার পরপরই গত রোববার সুগন্ধা পয়েন্ট সৈকতে শতাধিক টংঘর বসানোর চেষ্টা করা হয়। পাশাপাশি সৈকতের অন্যান্য পয়েন্টেও বসেছে ভ্রাম্যমাণ দোকান। ভ্রাম্যমাণ হিসেবে তৈরি অনেক দোকানের চাকা সৈকতের বালুতে দাবিয়ে দেওয়ায় তা স্থায়ী স্থাপনার রূপ নিয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সৈকতের লাবণী, সিগাল, সুগন্ধা ও কলাতলী পয়েন্টে ১ হাজার ৪০০ চেয়ার-ছাতার (কিটকট) অনুমোদন ছিল। গত তিন মাসে আরও ৬০০ চেয়ার-ছাতার অনুমোদন দিয়েছে জেলা প্রশাসন। একই সময়ে ২০০-এর মতো ভ্রাম্যমাণ দোকানসহ পর্যটন-সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ব্যবসার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এভাবে অনুমতি নিয়ে সৈকতের প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকায় হঠাৎ করে স্থাপনা নির্মাণের ঘটনা বেড়েছে। রোববার থেকে সুগন্ধা পয়েন্ট সৈকতে বসানো একই ধরনের শতাধিক টংঘরের ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
সৈকত দখলের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা শুরু হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে গত মঙ্গলবার পরিবেশ মন্ত্রণালয় থেকে অবৈধ দোকানপাট ও স্থাপনা উচ্ছেদ করতে জেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তরকে নির্দেশনা দেওয়া হয়। চিঠিতে বলা হয়, সাম্প্রতিক সময়ে সমুদ্রসৈকতে শত শত দোকান স্থাপন করা হয়েছে, যা পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যের জন্য মারাত্মক বিপর্যয়কর। জেলা প্রশাসন ইসিএ এলাকা ব্যবস্থাপনা বিধিমালা, ২০১৬ অনুসরণ না করে লাইসেন্স দিয়েছে। এ ক্ষেত্রে পরিবেশ অধিদপ্তরের মতামত গ্রহণ করা হয়নি। চিঠিতে সৈকতে আইন ও বিধিবহির্ভূতভাবে বসানো দোকান উচ্ছেদ ও লাইসেন্স বাতিলের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা দেওয়া হয়।
এর আগে গত জানুয়ারি মাসে উচ্চ আদালতের নির্দেশে জেলা প্রশাসন সৈকতের সুগন্ধা পয়েন্টের বালিয়াড়িতে থাকা দুই শতাধিক অবৈধ দোকান ও স্থাপনা উচ্ছেদ করে। বছরে দু-একবার এই ধরনের অভিযান হলেও নতুন নতুন কৌশলে দখলদারেরা সৈকতে দোকানপাট বসায়। সর্বশেষ রোববার সুগন্ধা পয়েন্টের উত্তর পাশে বালিয়াড়ি ও ঝাউবন দখল করে বেশ কিছু দোকান বসানোর চেষ্টা করা হয়। জেলা প্রশাসন ও ট্যুরিস্ট পুলিশ এতে বাধা দেয়।
ইসিএ এলাকায় দোকানপাটের বিষয়ে জেলা প্রশাসনের পর্যটন শাখার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. আজিম খান বলেন, সৈকতের বালিয়াড়িতে দোকানপাট বসানোর সুযোগ নেই। এ নিয়ে উচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞাও রয়েছে। জেলা প্রশাসনের অনুমতিপত্রে সৈকতের বালিয়াড়ি এবং জীববৈচিত্র্য ও পরিবেশ নষ্ট হয়, এমন জায়গায় দোকান না বসানোর শর্ত রয়েছে।
ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার অঞ্চলের প্রধান ও অতিরিক্ত ডিআইজি আপেল মাহমুদ বলেন, বালিয়াড়িতে বসানোর জন্য আনা টংদোকানগুলো মালিকদের নিজ উদোগে সরিয়ে ফেলার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। অন্যথায় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পরিবেশবাদীদের দাবি
সমুদ্রসৈকতের ইসিএ এলাকা দখলমুক্ত করতে দুই সচিবসহ সরকারি আট কর্মকর্তাকে আইনি নোটিশ পাঠিয়েছে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা)। আট কর্মকর্তা হলেন পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের সচিব, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব, পর্যটন করপোরেশনের চেয়ারম্যান, কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক, কক্সবাজার পুলিশ সুপার এবং পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজার জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক।
সৈকতের ইসিএ এলাকায় গড়ে তোলা সব ধরনের স্থাপনা অবিলম্বে সরানোর দাবি জানিয়েছে পরিবেশবিষয়ক বিভিন্ন সংগঠন। শিগগির প্রশাসন এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে কঠোর আন্দোলনে নামার ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা), আমরা কক্সবাজারবাসী, কক্সবাজার সোসাইটি ও কক্সবাজার উন্নয়ন সংগ্রাম পরিষদ।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন কক্সবাজার জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক কলিম উল্লাহ বলেন, ‘ইসিএ আইন ও হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী সৈকতের বালিয়াড়ি দখলমুক্ত করে প্রাকৃতিক পরিবেশ তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হোক। না হয় পরিবেশ বিপর্যয়ের মুখে পড়ে পর্যটনশিল্প মুখ থুবড়ে পড়বে।’
আরও খবর পড়ুন:

গোপালগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় দুই মোটরসাইকেল আরোহী নিহত হয়েছেন। গতকাল রোববার রাত পৌনে ১০টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন-মোটরসাইকেল চালক সদর উপজেলার ডালনিয়া গ্রামের ত্রিনাথ বিশ্বাসের ছেলে বিজয় বিশ্বাস (২২) এবং আরোহী একই গ্রামের সতীশ ভট্টাচার্যের ছেলে সরোজ ভট্টাচার্য (৫০)।
২২ মিনিট আগে
চওড়া সড়কের মাঝ পর্যন্ত একটি রেস্তোরাঁ। মোতালেব রেস্টুরেন্ট নামের ওই রেস্তোরাঁর পাশেই বাকরখানির দোকানটি যেন সড়কের গলা চেপে ধরেছে। উচ্ছেদ অভিযানের পর ৫০ ফুট চওড়া হওয়া ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মুগদা-মান্ডা সড়কটি দখলের ফলে আবার সরু হয়ে গেছে। এই সড়কের উভয় পাশে অর্ধডজন দোকান বসেছে। এগুলো যান চলাচলেও প্
৫ ঘণ্টা আগে
সুনামগঞ্জে দুস্থ নারীদের জন্য পরিচালিত ভিডব্লিউবি কর্মসূচির উপকারভোগীদের তালিকা তৈরিতে অনিয়ম এবং জমা করা টাকা ফেরত না দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। জানা গেছে, চলতি মেয়াদে উপকারভোগীর নাম অন্তর্ভুক্তির ক্ষেত্রে আর্থিক লেনদেনসহ নানা অনিয়ম-দুর্নীতি হয়েছে। এ ছাড়া গত মেয়াদে বিভিন্ন ইউনিয়নে উপকারভোগীর জমা করা টাকা
৫ ঘণ্টা আগে
বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী ঘোষণার পর উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে রাজশাহীর বাগমারা উপজেলা। ৩ নভেম্বর দলের সম্ভাব্য প্রার্থী ঘোষণার পর থেকে এ উপজেলায় রাজনৈতিক সহিংসতা শুরু হয়েছে। সর্বশেষ গত শনিবার দিবাগত রাতেও ককটেল হামলা এবং তিনটি পুকুরে বিষপ্রয়োগের ঘটনা ঘটেছে। রাজশাহী-৪ (বাগমারা) আসনে প্রাথমিকভাবে মনোনয়ন পেয়েছ
৫ ঘণ্টা আগেগোপালগঞ্জ প্রতিনিধি

গোপালগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় দুই মোটরসাইকেল আরোহী নিহত হয়েছেন। গতকাল রোববার রাত পৌনে ১০টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন-মোটরসাইকেল চালক সদর উপজেলার ডালনিয়া গ্রামের ত্রিনাথ বিশ্বাসের ছেলে বিজয় বিশ্বাস (২২) এবং আরোহী একই গ্রামের সতীশ ভট্টাচার্যের ছেলে সরোজ ভট্টাচার্য (৫০)।
গোপালগঞ্জ বৌলতলী পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক আফজাল হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, গোপালগঞ্জ-টেকেরহাট আঞ্চলিক মহাসড়কে রাত পৌনে ১০টার দিকে তারা মোটরসাইকেলে করে গ্রামের বাড়ির দিকে যাবার সময় এই দুর্ঘটনা ঘটে।
তিনি আরো জানান, চালক ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে থাকা গ্যাস ভর্তি একটি ট্রাকের পেছনে সজোরে ধাক্কা দিলে ঘটনাস্থলেই বিজয় বিশ্বাস নিহত হয়। আরোহী সরোজ ভট্টাচার্যকে একটি ক্লিনিকে নিয়ে গেলে সেখানকার চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

গোপালগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় দুই মোটরসাইকেল আরোহী নিহত হয়েছেন। গতকাল রোববার রাত পৌনে ১০টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন-মোটরসাইকেল চালক সদর উপজেলার ডালনিয়া গ্রামের ত্রিনাথ বিশ্বাসের ছেলে বিজয় বিশ্বাস (২২) এবং আরোহী একই গ্রামের সতীশ ভট্টাচার্যের ছেলে সরোজ ভট্টাচার্য (৫০)।
গোপালগঞ্জ বৌলতলী পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক আফজাল হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, গোপালগঞ্জ-টেকেরহাট আঞ্চলিক মহাসড়কে রাত পৌনে ১০টার দিকে তারা মোটরসাইকেলে করে গ্রামের বাড়ির দিকে যাবার সময় এই দুর্ঘটনা ঘটে।
তিনি আরো জানান, চালক ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে থাকা গ্যাস ভর্তি একটি ট্রাকের পেছনে সজোরে ধাক্কা দিলে ঘটনাস্থলেই বিজয় বিশ্বাস নিহত হয়। আরোহী সরোজ ভট্টাচার্যকে একটি ক্লিনিকে নিয়ে গেলে সেখানকার চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

পর্যটন শহর কক্সবাজারের নাজিরারটেক থেকে টেকনাফ পর্যন্ত ১২০ কিলোমিটার সমুদ্রসৈকতকে ১৯৯৯ সালে প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা (ইসিএ) ঘোষণা করে সরকার। এ-সংক্রান্ত আইন অনুযায়ী, সৈকতের জোয়ার-ভাটার স্থান থেকে ৩০০ মিটার পর্যন্ত যেকোনো স্থাপনা নির্মাণ ও উন্নয়ন নিষিদ্ধ।
২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫
চওড়া সড়কের মাঝ পর্যন্ত একটি রেস্তোরাঁ। মোতালেব রেস্টুরেন্ট নামের ওই রেস্তোরাঁর পাশেই বাকরখানির দোকানটি যেন সড়কের গলা চেপে ধরেছে। উচ্ছেদ অভিযানের পর ৫০ ফুট চওড়া হওয়া ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মুগদা-মান্ডা সড়কটি দখলের ফলে আবার সরু হয়ে গেছে। এই সড়কের উভয় পাশে অর্ধডজন দোকান বসেছে। এগুলো যান চলাচলেও প্
৫ ঘণ্টা আগে
সুনামগঞ্জে দুস্থ নারীদের জন্য পরিচালিত ভিডব্লিউবি কর্মসূচির উপকারভোগীদের তালিকা তৈরিতে অনিয়ম এবং জমা করা টাকা ফেরত না দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। জানা গেছে, চলতি মেয়াদে উপকারভোগীর নাম অন্তর্ভুক্তির ক্ষেত্রে আর্থিক লেনদেনসহ নানা অনিয়ম-দুর্নীতি হয়েছে। এ ছাড়া গত মেয়াদে বিভিন্ন ইউনিয়নে উপকারভোগীর জমা করা টাকা
৫ ঘণ্টা আগে
বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী ঘোষণার পর উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে রাজশাহীর বাগমারা উপজেলা। ৩ নভেম্বর দলের সম্ভাব্য প্রার্থী ঘোষণার পর থেকে এ উপজেলায় রাজনৈতিক সহিংসতা শুরু হয়েছে। সর্বশেষ গত শনিবার দিবাগত রাতেও ককটেল হামলা এবং তিনটি পুকুরে বিষপ্রয়োগের ঘটনা ঘটেছে। রাজশাহী-৪ (বাগমারা) আসনে প্রাথমিকভাবে মনোনয়ন পেয়েছ
৫ ঘণ্টা আগেসৈয়দ ঋয়াদ, ঢাকা

চওড়া সড়কের মাঝ পর্যন্ত একটি রেস্তোরাঁ। মোতালেব রেস্টুরেন্ট নামের ওই রেস্তোরাঁর পাশেই বাকরখানির দোকানটি যেন সড়কের গলা চেপে ধরেছে। উচ্ছেদ অভিযানের পর ৫০ ফুট চওড়া হওয়া ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মুগদা-মান্ডা সড়কটি দখলের ফলে আবার সরু হয়ে গেছে। এই সড়কের উভয় পাশে অর্ধডজন দোকান বসেছে। এগুলো যান চলাচলেও প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে।
এ বিষয়ে সিটি করপোরেশনে কেউ অভিযোগ না দেওয়ায় সড়কটি নতুন করে দখলমুক্ত করার উদ্যোগ নেয়নি কর্তৃপক্ষ। নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি না থাকায় সড়কটির সংস্কারকাজ এগিয়ে নিতে নিজেদের অসহায়ত্বের কথা জানিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) কর্মকর্তারা।
ডিএসসিসির ৬, ৭১ ও ৭২ ওয়ার্ডের ওপর দিয়ে গেছে মুগদা-মান্ডা সড়ক। সরু এই সড়কে প্রতিনিয়ত যানজট হতো। জনভোগান্তি কমাতে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) রাজধানীর বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনায় এই সড়ককে ৫০ ফুটে প্রশস্ত করা হয়। এরপর সড়কটির উন্নয়ন ও সংস্কারের পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ২০২৪ সালে মুগদা বিশ্বরোড থেকে মান্ডা হায়দার আলী উচ্চবিদ্যালয় পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার সড়কের দুই পাশের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে ডিএসসিসি-রাজউক। এরপর সড়কের সংস্কারকাজ করার কথা ছিল। কিন্তু গণ-অভ্যুত্থানে সরকার পতনের পর সংস্কারকাজ থামকে যায়। এই সুযোগে সড়কটির অর্ধেকের বেশি আবার দখল হয়ে গেছে। ৫০ ফুট চওড়া সড়কটি এখন অর্ধেকে ঠেকেছে।
মুগদা এলাকার ব্যাটারিচালিত রিকশাচালক নুরুল হক বলেন, ‘দেট্টা (দেড়) বছর ধইরা রাস্তাডা জ্বালাইতাছে। যখন মনে চায় কাম (কাজ) করে, যখন মনে চায় কাম বন্ধ রাখে। সবই এরার মনমর্জি। মর্জি হইলে করে, না হইলে করে না। কোনো নিয়মকানুন নাই।’
মুগদা বিশ্বরোড ধরে মান্ডার দিকে এগোলে দেখা যায়, মুগদা বড় মসজিদের কাছে দুই পাশ থেকেই সড়কটি দখল হয়ে গেছে। উত্তরপাশে হাজী এন্টারপ্রাইজ নামের একটি মুদি ও তেলের দোকান সড়কের ওপর ছাউনি দিয়ে বারান্দা তৈরি করেছে। মসজিদ লাগোয়া দোকানগুলো এর আগে উচ্ছেদ করা হলেও পুনরায় নির্মাণ করা হয়েছে। ফলে ওই জায়গায় সড়কের অর্ধেক অংশ দখল হয়ে গেছে।
সড়কের ওপর ছাউনি দিয়ে
দখল করার বিষয়ে জানতে চাইলে হাজী এন্টারপ্রাইজের মো. নাজমুল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এটা তো বাড়ির মালিকের জায়গা, সিটি করপোরেশন থেকে তিনি কোনো টাকা পান নাই। তাই তিনি তাঁর জায়গা নিয়ে নিয়েছেন।’
মুগদা ওয়াপদা গলির বাসিন্দা মোশাররফ হোসেন বলেন, ঢাকার অন্যতম ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা মুগদা ও মান্ডা। কয়েক লাখ লোক এখানে বসবাস করে। গত সরকার এই সড়কের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে সড়কটি ৫০ ফুট করে দেয়। কিন্তু এখন কেউ দেখে না। সড়কটি ঠিক করতে করতেই অর্ধেক রাস্তা আবার দখল হয়ে গেছে।
এ বিষয়ে ডিএসসিসির প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা হাছিবা খান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সড়কটি দখলের কোনো অভিযোগ আমাদের কাছে আসেনি। যদি কোথাও সরকারি সড়ক বা সম্পত্তি দখলের অভিযোগ আসে, আমরা তা উদ্ধারের জন্য যা যা করা দরকার, তার সবই করব।’
সড়কটির সংস্কারকাজের ধীরগতির জন্য দেশের অস্থিতিশীল অবস্থাকে দায়ী করেছেন ডিএসসিসির প্রধান প্রকৌশলী নূর আজিজুর রহমান। তিনি বলেন, ‘আগে যাঁরা কাজ করেছিলেন (সাবেক মেয়র ফজলে নূর তাপস) তাঁদের পক্ষে যা করা সম্ভব, বর্তমান প্রশাসনের পক্ষে সেটি করা একটু কঠিন। বর্তমান প্রশাসনের সেই সক্ষমতা নেই। সরকার পতনের পর আগের ঠিকাদার কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন। আমরা নানাভাবে কাজটা করার চেষ্টা করছি।’
সড়কের কোনো অংশ দখল হলে তা উদ্ধার করা হবে জানিয়ে নূর আজিজুর রহমান বলেন, ‘আমরা আমাদের পক্ষ থেকে সর্বাত্মক চেষ্টা করব। আমি খোঁজ নিয়ে যা যা করা যায়, তা করব।’

চওড়া সড়কের মাঝ পর্যন্ত একটি রেস্তোরাঁ। মোতালেব রেস্টুরেন্ট নামের ওই রেস্তোরাঁর পাশেই বাকরখানির দোকানটি যেন সড়কের গলা চেপে ধরেছে। উচ্ছেদ অভিযানের পর ৫০ ফুট চওড়া হওয়া ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মুগদা-মান্ডা সড়কটি দখলের ফলে আবার সরু হয়ে গেছে। এই সড়কের উভয় পাশে অর্ধডজন দোকান বসেছে। এগুলো যান চলাচলেও প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে।
এ বিষয়ে সিটি করপোরেশনে কেউ অভিযোগ না দেওয়ায় সড়কটি নতুন করে দখলমুক্ত করার উদ্যোগ নেয়নি কর্তৃপক্ষ। নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি না থাকায় সড়কটির সংস্কারকাজ এগিয়ে নিতে নিজেদের অসহায়ত্বের কথা জানিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) কর্মকর্তারা।
ডিএসসিসির ৬, ৭১ ও ৭২ ওয়ার্ডের ওপর দিয়ে গেছে মুগদা-মান্ডা সড়ক। সরু এই সড়কে প্রতিনিয়ত যানজট হতো। জনভোগান্তি কমাতে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) রাজধানীর বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনায় এই সড়ককে ৫০ ফুটে প্রশস্ত করা হয়। এরপর সড়কটির উন্নয়ন ও সংস্কারের পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ২০২৪ সালে মুগদা বিশ্বরোড থেকে মান্ডা হায়দার আলী উচ্চবিদ্যালয় পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার সড়কের দুই পাশের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে ডিএসসিসি-রাজউক। এরপর সড়কের সংস্কারকাজ করার কথা ছিল। কিন্তু গণ-অভ্যুত্থানে সরকার পতনের পর সংস্কারকাজ থামকে যায়। এই সুযোগে সড়কটির অর্ধেকের বেশি আবার দখল হয়ে গেছে। ৫০ ফুট চওড়া সড়কটি এখন অর্ধেকে ঠেকেছে।
মুগদা এলাকার ব্যাটারিচালিত রিকশাচালক নুরুল হক বলেন, ‘দেট্টা (দেড়) বছর ধইরা রাস্তাডা জ্বালাইতাছে। যখন মনে চায় কাম (কাজ) করে, যখন মনে চায় কাম বন্ধ রাখে। সবই এরার মনমর্জি। মর্জি হইলে করে, না হইলে করে না। কোনো নিয়মকানুন নাই।’
মুগদা বিশ্বরোড ধরে মান্ডার দিকে এগোলে দেখা যায়, মুগদা বড় মসজিদের কাছে দুই পাশ থেকেই সড়কটি দখল হয়ে গেছে। উত্তরপাশে হাজী এন্টারপ্রাইজ নামের একটি মুদি ও তেলের দোকান সড়কের ওপর ছাউনি দিয়ে বারান্দা তৈরি করেছে। মসজিদ লাগোয়া দোকানগুলো এর আগে উচ্ছেদ করা হলেও পুনরায় নির্মাণ করা হয়েছে। ফলে ওই জায়গায় সড়কের অর্ধেক অংশ দখল হয়ে গেছে।
সড়কের ওপর ছাউনি দিয়ে
দখল করার বিষয়ে জানতে চাইলে হাজী এন্টারপ্রাইজের মো. নাজমুল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এটা তো বাড়ির মালিকের জায়গা, সিটি করপোরেশন থেকে তিনি কোনো টাকা পান নাই। তাই তিনি তাঁর জায়গা নিয়ে নিয়েছেন।’
মুগদা ওয়াপদা গলির বাসিন্দা মোশাররফ হোসেন বলেন, ঢাকার অন্যতম ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা মুগদা ও মান্ডা। কয়েক লাখ লোক এখানে বসবাস করে। গত সরকার এই সড়কের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে সড়কটি ৫০ ফুট করে দেয়। কিন্তু এখন কেউ দেখে না। সড়কটি ঠিক করতে করতেই অর্ধেক রাস্তা আবার দখল হয়ে গেছে।
এ বিষয়ে ডিএসসিসির প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা হাছিবা খান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সড়কটি দখলের কোনো অভিযোগ আমাদের কাছে আসেনি। যদি কোথাও সরকারি সড়ক বা সম্পত্তি দখলের অভিযোগ আসে, আমরা তা উদ্ধারের জন্য যা যা করা দরকার, তার সবই করব।’
সড়কটির সংস্কারকাজের ধীরগতির জন্য দেশের অস্থিতিশীল অবস্থাকে দায়ী করেছেন ডিএসসিসির প্রধান প্রকৌশলী নূর আজিজুর রহমান। তিনি বলেন, ‘আগে যাঁরা কাজ করেছিলেন (সাবেক মেয়র ফজলে নূর তাপস) তাঁদের পক্ষে যা করা সম্ভব, বর্তমান প্রশাসনের পক্ষে সেটি করা একটু কঠিন। বর্তমান প্রশাসনের সেই সক্ষমতা নেই। সরকার পতনের পর আগের ঠিকাদার কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন। আমরা নানাভাবে কাজটা করার চেষ্টা করছি।’
সড়কের কোনো অংশ দখল হলে তা উদ্ধার করা হবে জানিয়ে নূর আজিজুর রহমান বলেন, ‘আমরা আমাদের পক্ষ থেকে সর্বাত্মক চেষ্টা করব। আমি খোঁজ নিয়ে যা যা করা যায়, তা করব।’

পর্যটন শহর কক্সবাজারের নাজিরারটেক থেকে টেকনাফ পর্যন্ত ১২০ কিলোমিটার সমুদ্রসৈকতকে ১৯৯৯ সালে প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা (ইসিএ) ঘোষণা করে সরকার। এ-সংক্রান্ত আইন অনুযায়ী, সৈকতের জোয়ার-ভাটার স্থান থেকে ৩০০ মিটার পর্যন্ত যেকোনো স্থাপনা নির্মাণ ও উন্নয়ন নিষিদ্ধ।
২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫
গোপালগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় দুই মোটরসাইকেল আরোহী নিহত হয়েছেন। গতকাল রোববার রাত পৌনে ১০টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন-মোটরসাইকেল চালক সদর উপজেলার ডালনিয়া গ্রামের ত্রিনাথ বিশ্বাসের ছেলে বিজয় বিশ্বাস (২২) এবং আরোহী একই গ্রামের সতীশ ভট্টাচার্যের ছেলে সরোজ ভট্টাচার্য (৫০)।
২২ মিনিট আগে
সুনামগঞ্জে দুস্থ নারীদের জন্য পরিচালিত ভিডব্লিউবি কর্মসূচির উপকারভোগীদের তালিকা তৈরিতে অনিয়ম এবং জমা করা টাকা ফেরত না দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। জানা গেছে, চলতি মেয়াদে উপকারভোগীর নাম অন্তর্ভুক্তির ক্ষেত্রে আর্থিক লেনদেনসহ নানা অনিয়ম-দুর্নীতি হয়েছে। এ ছাড়া গত মেয়াদে বিভিন্ন ইউনিয়নে উপকারভোগীর জমা করা টাকা
৫ ঘণ্টা আগে
বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী ঘোষণার পর উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে রাজশাহীর বাগমারা উপজেলা। ৩ নভেম্বর দলের সম্ভাব্য প্রার্থী ঘোষণার পর থেকে এ উপজেলায় রাজনৈতিক সহিংসতা শুরু হয়েছে। সর্বশেষ গত শনিবার দিবাগত রাতেও ককটেল হামলা এবং তিনটি পুকুরে বিষপ্রয়োগের ঘটনা ঘটেছে। রাজশাহী-৪ (বাগমারা) আসনে প্রাথমিকভাবে মনোনয়ন পেয়েছ
৫ ঘণ্টা আগেবিশ্বজিত রায়, সুনামগঞ্জ

সুনামগঞ্জে দুস্থ নারীদের জন্য পরিচালিত ভিডব্লিউবি কর্মসূচির উপকারভোগীদের তালিকা তৈরিতে অনিয়ম এবং জমা করা টাকা ফেরত না দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। জানা গেছে, চলতি মেয়াদে উপকারভোগীর নাম অন্তর্ভুক্তির ক্ষেত্রে আর্থিক লেনদেনসহ নানা অনিয়ম-দুর্নীতি হয়েছে। এ ছাড়া গত মেয়াদে বিভিন্ন ইউনিয়নে উপকারভোগীর জমা করা টাকা ফেরত না দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে।
মহিলা অধিদপ্তর পরিচালিত ভিডব্লিউবির উদ্দেশ্য হলো, গ্রামীণ দরিদ্র নারীদের আর্থসামাজিক উন্নয়ন, পুষ্টি ও খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত করা। তবে এই জেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে দরিদ্রের বদলে সচ্ছলদের নাম যুক্ত করা হয়েছে তালিকায়। সংশ্লিষ্ট দপ্তর, চেয়ারম্যান ও প্রশাসনিক কর্মকর্তার যোগসাজশে ইউনিয়ন পরিষদের কিছু লোক জড়িত—বলছেন খোদ কর্মকর্তা, ইউপি সদস্যসহ অনেকেই। তথ্যানুসন্ধানেও এর সত্যতা পাওয়া গেছে।
ভিডব্লিউবি কার্ড বিতরণে অনৈতিক অর্থ লেনেদেন-সংক্রান্ত একটি অডিও রেকর্ড এ প্রতিবেদকের হাতে এসেছে। তাতে বলতে শোনা যায়, ‘হ্যালো, আফাই ভাই। হেরা চারজনে দেড় হাজার কইরা দিছে না?’ অপর প্রান্ত থেকে আফাই মিয়া—‘হ্যাঁ, হ্যাঁ।’ ‘আমার টেকাডা (দেড় হাজার টাকা) দেওয়ন (দেওয়া) লাগে। নাইলে আমার নামডা বাদ যাইব। আমি গরীব মানুষ।’ পাল্টা ধমকের সুরে আফাই মিয়া বলেন, ‘আপনারা তো পণ্ডিত মানুষ। পণ্ডিতি কইরা মেম্বারের কাছে গেছিলেন... তর্ক ধইরেন না। এত দিন ফোন দিলেন না। আজকে ফোন দিছেন কিসের জন্য।’
‘ফোন দিছি টেকা দেওয়ার লাগি। আপনার বিকাশ নাম্বারটা দেইন (দেন)?’ আফাই মিয়া—‘তুলেন... পার্সোনাল।’
টাকা পাঠানোর পর—‘হ্যালো, টেকা পাঠাইছি। লাস্টে তেত্রিশ। দেখইন গেছেনি।’ আফাই মিয়া—‘আচ্ছা, ওকে।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জামালগঞ্জের বেহেলী ইউনিয়নের এক ইউপি সদস্য জানিয়েছেন, তাঁর ইউনিয়নে অধিকাংশ নামই টাকায় বিক্রি হয়েছে। প্রশাসনিক কর্মকর্তা, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তাদের নিজস্ব লোক দিয়ে নামগুলো বিক্রি করেছেন। ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘গণশুনানির দিন কেউ আসেনি, তাই আমার ওয়ার্ডের সব নাম বাদ পড়েছে। যোগাযোগ করলে বলা হয়, সব নাম চূড়ান্ত হয়ে গেছে। আবার যে পাঁচজন টাকা দিয়েছে, জরুরি ভিত্তিতে গণশুনানির দিন তাদের আনা হয়েছে। তাদের কাছে আফাই মিয়ার তরফ থেকে প্রথমে ৩ হাজার দাবি করা হলেও পরে দেড় হাজার টাকা করে নেওয়া হয়েছে।’
আফাই মিয়াকে টাকা প্রদানকারী আশরাফুল (ছদ্মনাম) বলেন, ‘টাকা দিলেও আমার বউয়ের (স্ত্রী) নাম বাতিল কইরা দিছে। ইউনিয়ন অফিসে গেলে তারা কইছে পরবর্তীতে নাম দিয়া দিব। আমরার গ্রামের জাকির হোসেন, আবুল হোসেন, বুলবুল, আমিরুল, আল-আমিন এই পাঁচজনে টেকা (টাকা) দিছে। হেরার নাম হইছে; কিন্তু আমার নাম নাই।’
তবে বেহেলী ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীন, প্রশাসনিক কর্মকর্তা সুজন দাস ও উদ্যোক্তা আফাই মিয়া এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘গণশুনানির মাধ্যমে সবকিছু যাচাই-বাছাই হয়েছে। আমরা এর সঙ্গে জড়িত নই।’
সুনামগঞ্জ মহিলা অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, ২০২৫-২৬ মেয়াদে জেলার ২৩ হাজার ৬১৫ জন উপকারভোগী ভিডব্লিউবি কর্মসূচির আওতায় খাদ্যসহায়তা পাচ্ছেন। এর মধ্যে সদর উপজেলায় ২ হাজার ১৩৩, বিশ্বম্ভরপুরে ২ হাজার ২৬৩, ছাতকে ২ হাজার ১৪৫, দিরাইয়ে ২ হাজার ৭৮, ধর্মপাশায় ২ হাজার ১৬৮, দোয়ারাবাজারে ২ হাজার ২০৭, জগন্নাথপুরে ২ হাজার ৭৩, জামালগঞ্জে ২ হাজার ২১৩, শাল্লায় ২ হাজার ১৬২, শান্তিগঞ্জে ১ হাজার ৯৮৩ ও তাহিরপুরে ২ হাজার ১৯০ জন।
জামালগঞ্জ উত্তর ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য শাহজাহান সিরাজ বলেন, ‘আমি যতটুকু জানি ভিডব্লিউবির উপকারভোগী নির্বাচনে মতামত নেওয়া হয়নি। গণশুনানির নিয়ম রক্ষার কার্যক্রম দেখা ছাড়া কোনো সম্পৃক্ততা ছিল না আমাদের। বঞ্চিত ব্যক্তিরা এ সম্পর্কে আমাদের কাছে জানতে চায়। কিন্তু আমরা কোনো সদুত্তর দিতে পারি না। এর মাধ্যমে আমাদেরকে ছোট করা হয়েছে।’
গত মেয়াদে অনিয়ম-দুর্নীতি হয়েছে জানিয়ে শাল্লা উপজেলার বাহাড়া ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য সহদেব চন্দ্র দাস বলেন, ‘আমাদের ভিডব্লিউবির তালিকা প্রস্তুতের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। এক ইউপি সদস্য আর্থিক লেনদেনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তবে তিনি এখন পরিষদে নেই।’
এদিকে তাহিরপুরের উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন মোবাইল ফোনে বলেন, গত মেয়াদে ৪০০ উপকারভোগী প্রতি মাসে সঞ্চয় বাবদ প্রায় ১৯ লাখ টাকা জমা দিয়েছিলেন, সেটা ফেরত দেওয়া হয়নি। চেয়ারম্যান সাহেব গুরুতর অসুস্থ হওয়ায় সময় চেয়েছেন। তবে নতুন মেয়াদে কারও কাছ থেকে কোনো ধরনের টাকা নেওয়া হয়নি।
সুনামগঞ্জ মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তরের উপপরিচালক এ জে এম রেজাউল আলম অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগের কথা স্বীকার করে বলেন, ‘জামালগঞ্জ, তাহিরপুর, দোয়ারাবাজার, জগন্নাথপুর—এই চার উপজেলার খবর আমি জানি না। এই উপজেলাগুলোতে অনেক টাকা আত্মসাতের মৌখিক অভিযোগ আছে। এ ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে লিখেও কোনো ফল পাওয়া যায় না।’ এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সঞ্চয়ের টাকা উপকারভোগীর
নিজ নিজ অ্যাকাউন্টে রাখার কথা। কিন্তু এগুলো কিছু কিছু ইউনিয়নে আত্মসাৎ করা হয়েছে। এতে চেয়ারম্যানরা জড়িত।

সুনামগঞ্জে দুস্থ নারীদের জন্য পরিচালিত ভিডব্লিউবি কর্মসূচির উপকারভোগীদের তালিকা তৈরিতে অনিয়ম এবং জমা করা টাকা ফেরত না দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। জানা গেছে, চলতি মেয়াদে উপকারভোগীর নাম অন্তর্ভুক্তির ক্ষেত্রে আর্থিক লেনদেনসহ নানা অনিয়ম-দুর্নীতি হয়েছে। এ ছাড়া গত মেয়াদে বিভিন্ন ইউনিয়নে উপকারভোগীর জমা করা টাকা ফেরত না দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে।
মহিলা অধিদপ্তর পরিচালিত ভিডব্লিউবির উদ্দেশ্য হলো, গ্রামীণ দরিদ্র নারীদের আর্থসামাজিক উন্নয়ন, পুষ্টি ও খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত করা। তবে এই জেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে দরিদ্রের বদলে সচ্ছলদের নাম যুক্ত করা হয়েছে তালিকায়। সংশ্লিষ্ট দপ্তর, চেয়ারম্যান ও প্রশাসনিক কর্মকর্তার যোগসাজশে ইউনিয়ন পরিষদের কিছু লোক জড়িত—বলছেন খোদ কর্মকর্তা, ইউপি সদস্যসহ অনেকেই। তথ্যানুসন্ধানেও এর সত্যতা পাওয়া গেছে।
ভিডব্লিউবি কার্ড বিতরণে অনৈতিক অর্থ লেনেদেন-সংক্রান্ত একটি অডিও রেকর্ড এ প্রতিবেদকের হাতে এসেছে। তাতে বলতে শোনা যায়, ‘হ্যালো, আফাই ভাই। হেরা চারজনে দেড় হাজার কইরা দিছে না?’ অপর প্রান্ত থেকে আফাই মিয়া—‘হ্যাঁ, হ্যাঁ।’ ‘আমার টেকাডা (দেড় হাজার টাকা) দেওয়ন (দেওয়া) লাগে। নাইলে আমার নামডা বাদ যাইব। আমি গরীব মানুষ।’ পাল্টা ধমকের সুরে আফাই মিয়া বলেন, ‘আপনারা তো পণ্ডিত মানুষ। পণ্ডিতি কইরা মেম্বারের কাছে গেছিলেন... তর্ক ধইরেন না। এত দিন ফোন দিলেন না। আজকে ফোন দিছেন কিসের জন্য।’
‘ফোন দিছি টেকা দেওয়ার লাগি। আপনার বিকাশ নাম্বারটা দেইন (দেন)?’ আফাই মিয়া—‘তুলেন... পার্সোনাল।’
টাকা পাঠানোর পর—‘হ্যালো, টেকা পাঠাইছি। লাস্টে তেত্রিশ। দেখইন গেছেনি।’ আফাই মিয়া—‘আচ্ছা, ওকে।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জামালগঞ্জের বেহেলী ইউনিয়নের এক ইউপি সদস্য জানিয়েছেন, তাঁর ইউনিয়নে অধিকাংশ নামই টাকায় বিক্রি হয়েছে। প্রশাসনিক কর্মকর্তা, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তাদের নিজস্ব লোক দিয়ে নামগুলো বিক্রি করেছেন। ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘গণশুনানির দিন কেউ আসেনি, তাই আমার ওয়ার্ডের সব নাম বাদ পড়েছে। যোগাযোগ করলে বলা হয়, সব নাম চূড়ান্ত হয়ে গেছে। আবার যে পাঁচজন টাকা দিয়েছে, জরুরি ভিত্তিতে গণশুনানির দিন তাদের আনা হয়েছে। তাদের কাছে আফাই মিয়ার তরফ থেকে প্রথমে ৩ হাজার দাবি করা হলেও পরে দেড় হাজার টাকা করে নেওয়া হয়েছে।’
আফাই মিয়াকে টাকা প্রদানকারী আশরাফুল (ছদ্মনাম) বলেন, ‘টাকা দিলেও আমার বউয়ের (স্ত্রী) নাম বাতিল কইরা দিছে। ইউনিয়ন অফিসে গেলে তারা কইছে পরবর্তীতে নাম দিয়া দিব। আমরার গ্রামের জাকির হোসেন, আবুল হোসেন, বুলবুল, আমিরুল, আল-আমিন এই পাঁচজনে টেকা (টাকা) দিছে। হেরার নাম হইছে; কিন্তু আমার নাম নাই।’
তবে বেহেলী ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীন, প্রশাসনিক কর্মকর্তা সুজন দাস ও উদ্যোক্তা আফাই মিয়া এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘গণশুনানির মাধ্যমে সবকিছু যাচাই-বাছাই হয়েছে। আমরা এর সঙ্গে জড়িত নই।’
সুনামগঞ্জ মহিলা অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, ২০২৫-২৬ মেয়াদে জেলার ২৩ হাজার ৬১৫ জন উপকারভোগী ভিডব্লিউবি কর্মসূচির আওতায় খাদ্যসহায়তা পাচ্ছেন। এর মধ্যে সদর উপজেলায় ২ হাজার ১৩৩, বিশ্বম্ভরপুরে ২ হাজার ২৬৩, ছাতকে ২ হাজার ১৪৫, দিরাইয়ে ২ হাজার ৭৮, ধর্মপাশায় ২ হাজার ১৬৮, দোয়ারাবাজারে ২ হাজার ২০৭, জগন্নাথপুরে ২ হাজার ৭৩, জামালগঞ্জে ২ হাজার ২১৩, শাল্লায় ২ হাজার ১৬২, শান্তিগঞ্জে ১ হাজার ৯৮৩ ও তাহিরপুরে ২ হাজার ১৯০ জন।
জামালগঞ্জ উত্তর ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য শাহজাহান সিরাজ বলেন, ‘আমি যতটুকু জানি ভিডব্লিউবির উপকারভোগী নির্বাচনে মতামত নেওয়া হয়নি। গণশুনানির নিয়ম রক্ষার কার্যক্রম দেখা ছাড়া কোনো সম্পৃক্ততা ছিল না আমাদের। বঞ্চিত ব্যক্তিরা এ সম্পর্কে আমাদের কাছে জানতে চায়। কিন্তু আমরা কোনো সদুত্তর দিতে পারি না। এর মাধ্যমে আমাদেরকে ছোট করা হয়েছে।’
গত মেয়াদে অনিয়ম-দুর্নীতি হয়েছে জানিয়ে শাল্লা উপজেলার বাহাড়া ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য সহদেব চন্দ্র দাস বলেন, ‘আমাদের ভিডব্লিউবির তালিকা প্রস্তুতের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। এক ইউপি সদস্য আর্থিক লেনদেনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তবে তিনি এখন পরিষদে নেই।’
এদিকে তাহিরপুরের উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন মোবাইল ফোনে বলেন, গত মেয়াদে ৪০০ উপকারভোগী প্রতি মাসে সঞ্চয় বাবদ প্রায় ১৯ লাখ টাকা জমা দিয়েছিলেন, সেটা ফেরত দেওয়া হয়নি। চেয়ারম্যান সাহেব গুরুতর অসুস্থ হওয়ায় সময় চেয়েছেন। তবে নতুন মেয়াদে কারও কাছ থেকে কোনো ধরনের টাকা নেওয়া হয়নি।
সুনামগঞ্জ মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তরের উপপরিচালক এ জে এম রেজাউল আলম অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগের কথা স্বীকার করে বলেন, ‘জামালগঞ্জ, তাহিরপুর, দোয়ারাবাজার, জগন্নাথপুর—এই চার উপজেলার খবর আমি জানি না। এই উপজেলাগুলোতে অনেক টাকা আত্মসাতের মৌখিক অভিযোগ আছে। এ ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে লিখেও কোনো ফল পাওয়া যায় না।’ এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সঞ্চয়ের টাকা উপকারভোগীর
নিজ নিজ অ্যাকাউন্টে রাখার কথা। কিন্তু এগুলো কিছু কিছু ইউনিয়নে আত্মসাৎ করা হয়েছে। এতে চেয়ারম্যানরা জড়িত।

পর্যটন শহর কক্সবাজারের নাজিরারটেক থেকে টেকনাফ পর্যন্ত ১২০ কিলোমিটার সমুদ্রসৈকতকে ১৯৯৯ সালে প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা (ইসিএ) ঘোষণা করে সরকার। এ-সংক্রান্ত আইন অনুযায়ী, সৈকতের জোয়ার-ভাটার স্থান থেকে ৩০০ মিটার পর্যন্ত যেকোনো স্থাপনা নির্মাণ ও উন্নয়ন নিষিদ্ধ।
২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫
গোপালগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় দুই মোটরসাইকেল আরোহী নিহত হয়েছেন। গতকাল রোববার রাত পৌনে ১০টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন-মোটরসাইকেল চালক সদর উপজেলার ডালনিয়া গ্রামের ত্রিনাথ বিশ্বাসের ছেলে বিজয় বিশ্বাস (২২) এবং আরোহী একই গ্রামের সতীশ ভট্টাচার্যের ছেলে সরোজ ভট্টাচার্য (৫০)।
২২ মিনিট আগে
চওড়া সড়কের মাঝ পর্যন্ত একটি রেস্তোরাঁ। মোতালেব রেস্টুরেন্ট নামের ওই রেস্তোরাঁর পাশেই বাকরখানির দোকানটি যেন সড়কের গলা চেপে ধরেছে। উচ্ছেদ অভিযানের পর ৫০ ফুট চওড়া হওয়া ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মুগদা-মান্ডা সড়কটি দখলের ফলে আবার সরু হয়ে গেছে। এই সড়কের উভয় পাশে অর্ধডজন দোকান বসেছে। এগুলো যান চলাচলেও প্
৫ ঘণ্টা আগে
বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী ঘোষণার পর উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে রাজশাহীর বাগমারা উপজেলা। ৩ নভেম্বর দলের সম্ভাব্য প্রার্থী ঘোষণার পর থেকে এ উপজেলায় রাজনৈতিক সহিংসতা শুরু হয়েছে। সর্বশেষ গত শনিবার দিবাগত রাতেও ককটেল হামলা এবং তিনটি পুকুরে বিষপ্রয়োগের ঘটনা ঘটেছে। রাজশাহী-৪ (বাগমারা) আসনে প্রাথমিকভাবে মনোনয়ন পেয়েছ
৫ ঘণ্টা আগেরিমন রহমান, রাজশাহী

বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী ঘোষণার পর উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে রাজশাহীর বাগমারা উপজেলা। ৩ নভেম্বর দলের সম্ভাব্য প্রার্থী ঘোষণার পর থেকে এ উপজেলায় রাজনৈতিক সহিংসতা শুরু হয়েছে। সর্বশেষ গত শনিবার দিবাগত রাতেও ককটেল হামলা এবং তিনটি পুকুরে বিষপ্রয়োগের ঘটনা ঘটেছে। রাজশাহী-৪ (বাগমারা) আসনে প্রাথমিকভাবে মনোনয়ন পেয়েছেন উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ডি এম জিয়াউর রহমান জিয়া।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, জিয়ার কর্মীরা এসব ঘটাচ্ছেন। বেশি প্রতিহিংসার শিকার হচ্ছেন এ আসনের আরেক মনোনয়নপ্রত্যাশী উপজেলা বিএনপির সদস্যসচিব অধ্যাপক কামাল হোসেনের অনুসারীরা। সম্ভাব্য প্রার্থী ঘোষণার পর ওই রাতেই বাইগাছা গ্রামের এমরান আলী নামের এক ব্যক্তির সাড়ে ৬ শতক জায়গা দখলে নিতে প্রাচীর ভেঙে গাছ কেটে ফেলা হয়। এমরানের অভিযোগ, বিএনপির প্রার্থী ডি এম জিয়ার লোকজন এ ঘটনা ঘটিয়েছেন। এ নিয়ে সেদিনই থানায় তিনি একটি মামলা করেছেন।
শনিবার দিবাগত রাতে দুবিলা মধ্য দৌলতপুর বিলে অধ্যাপক কামাল হোসেনের চাচা ও উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক উপাধ্যক্ষ আব্দুস সোবহানের ইজারা নেওয়া তিনটি পুকুরে বিষপ্রয়োগ করা হয়েছে। এতে ৬০ বিঘার পুকুর তিনটিতে প্রায় ২ কোটি টাকার মাছ মারা গেছে।

এ আসনে মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন জেলা যুবদলের সদস্যসচিব রেজাউল করিম টুটুলও। শনিবার রাতে টুটুল ও তাঁর শ্বশুর আবদুস সামাদের বাড়িতে ককটেল হামলা করা হয়। টুটুলের বাড়িতে ফেলে রাখা ককটেলগুলো বিস্ফোরিত হয়নি। তবে তাঁর শ্বশুর অবসরপ্রাপ্ত স্কুলশিক্ষক আব্দুস সামাদের বাড়িতে একটি ককটেল বিস্ফোরিত হয়েছে। পুলিশ আলামত উদ্ধার করেছে। টুটুলের বাড়ি বাগমারার বুজরুককৌড় গ্রামে। আর তাঁর শ্বশুরবাড়ি শান্তিপাড়া গ্রামে।
ভুক্তভোগী আব্দুস সোবহান বলেন, ‘এই পুকুরগুলো আগে চাষ করতেন ডি এম জিয়াউর রহমান। তিনি জমির মালিকদের ঠিকমতো টাকা দিতেন না। পরে জমির মালিক আমাকে পুকুরগুলো দেন। আমি নিয়মিত টাকা দিয়ে মাছ চাষ করছি। এখানে শতাধিক পুকুর। বেছে বেছে আমার পুকুরগুলোতে বিষ দেওয়া হয়েছে। এটা রাজনৈতিক প্রতিহিংসা।’
যুবদল নেতা টুটুল বলেন, ‘মনোনয়ন ঘোষণার পর আমরা সবাই নিজেদের মতো কাজ করেছি। দ্বন্দ্ব-বিভেদ হয়নি। সম্ভাব্য প্রার্থী ঘোষণার পর এখন এসব ঘটনা ঘটছে। আমার শ্বশুর কোনো রাজনীতি করেন না। তিনি অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক। তাঁর বাড়িতে ককটেল হামলা করা হয়েছে। আমার বাড়িতেও ককটেল ছোড়া হয়েছে। সেটা বিস্ফোরিত হয়নি। সেগুলো আমরা দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দিয়ে উদ্ধার করিয়েছি।’
সরেজমিনে বাগমারা: বাইগাছা গ্রামের এমরান আলী রাজনীতি করেন না। তাঁর জমির প্রাচীর ভেঙে গাছপালা কেটে ফেলা হয়েছে। গত শুক্রবার সকালে বাইগাছা গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, পাকা রাস্তার পাশেই ওই জমিটি। ইটের প্রাচীর ভাঙা। আম, মেহগনি, নারিকেল ও কলাগাছগুলো কাটা।
এমরানের স্ত্রী কাজলী আক্তার বলেন, ‘বাইর হোলিই মাইরবে বলে হুমকি দিছে। আমরা তাদের শক্তির সাথে পারিচ্চি না। কেস করার কারণে হাত-পা কাইটি দিবে বলে হুমকি দিছে।’
৩ নভেম্বর দিবাগত রাতে বোয়ালিয়া বিলে গোবিন্দপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমানের ইজারা নেওয়া ৫৫ বিঘা দিঘিতে বিষপ্রয়োগ করা হয়। আর বিলশনি গ্রামে পল্লি চিকিৎসক বীরেন্দ্রনাথ প্রামাণিকের বাড়িতে আগুন দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। দুজনেই স্থানীয় বিএনপির নেতা এবং কামাল হোসেনের পক্ষের লোক। শুক্রবার সকালে দিঘির পাড়ে পাওয়া যায় চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমানকে। দিঘির পাড়ে দেখা যায়, বড় বড় অনেক মাছ পচে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। পানিতেও কিছু মাছ ভাসছে।
হাবিবুর রহমান বলেন, ‘আমি কামালের মঞ্চে ছিলাম, কিন্তু সব সময় বলেছি যে যিনি ধানের শীষ পাবেন, তাঁর পক্ষেই আমরা কাজ করব। কিন্তু ৩ তারিখে জিয়া মনোনয়ন পাওয়ার পর তাঁর কর্মীরা আমাকে হুমকি দেয়। রাতেই দিঘিতে বিষ দিয়ে প্রায় ২ কোটি টাকার মাছ মেরে ফেলে।’

বাগমারা থানার ওসি তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ‘এমরানের প্রাচীর ভাঙা ও গাছ কাটার ঘটনাটা প্রকাশ্যে ঘটেছিল। তাই মামলা নেওয়া হয়েছে। রোববার সকালে আব্দুস সামাদের বাড়ির সামনে ককটেল বিস্ফোরণের আলামত পাওয়া গেছে। সেগুলো উদ্ধার করা হয়েছে। টুটুলের বাড়ির সামনেও অবিস্ফোরিত দুটি ককটেল পাওয়া গেছে। এসব ঘটনার তদন্ত চলছে।’
ওসি আরও বলেন, হাবিবুর রহমান ও আব্দুস সোবহানের পুকুরগুলোতেও বিষপ্রয়োগের ঘটনা ঘটে রাতে। প্রত্যক্ষদর্শী নেই। তাই সরাসরি মামলা নেওয়া যায়নি। পুলিশ গিয়ে সরেজমিনে দেখে এসেছে। অভিযোগের ব্যাপারে তদন্ত চলছে।
জানতে চাইলে ডি এম জিয়াউর রহমান জিয়া বলেন, ‘বাগমারায় ধানের শীষের জোয়ার চলছে। কে বলছে আমার লোক এসব ঘটনা ঘটাচ্ছে? বাগমারার প্রতিটি লোকই তো আমার লোক। আসলে কারা ঘটাচ্ছে, সে বিষয়ে তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। প্রশাসন তদন্ত করে ব্যবস্থা নিক।’

বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী ঘোষণার পর উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে রাজশাহীর বাগমারা উপজেলা। ৩ নভেম্বর দলের সম্ভাব্য প্রার্থী ঘোষণার পর থেকে এ উপজেলায় রাজনৈতিক সহিংসতা শুরু হয়েছে। সর্বশেষ গত শনিবার দিবাগত রাতেও ককটেল হামলা এবং তিনটি পুকুরে বিষপ্রয়োগের ঘটনা ঘটেছে। রাজশাহী-৪ (বাগমারা) আসনে প্রাথমিকভাবে মনোনয়ন পেয়েছেন উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ডি এম জিয়াউর রহমান জিয়া।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, জিয়ার কর্মীরা এসব ঘটাচ্ছেন। বেশি প্রতিহিংসার শিকার হচ্ছেন এ আসনের আরেক মনোনয়নপ্রত্যাশী উপজেলা বিএনপির সদস্যসচিব অধ্যাপক কামাল হোসেনের অনুসারীরা। সম্ভাব্য প্রার্থী ঘোষণার পর ওই রাতেই বাইগাছা গ্রামের এমরান আলী নামের এক ব্যক্তির সাড়ে ৬ শতক জায়গা দখলে নিতে প্রাচীর ভেঙে গাছ কেটে ফেলা হয়। এমরানের অভিযোগ, বিএনপির প্রার্থী ডি এম জিয়ার লোকজন এ ঘটনা ঘটিয়েছেন। এ নিয়ে সেদিনই থানায় তিনি একটি মামলা করেছেন।
শনিবার দিবাগত রাতে দুবিলা মধ্য দৌলতপুর বিলে অধ্যাপক কামাল হোসেনের চাচা ও উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক উপাধ্যক্ষ আব্দুস সোবহানের ইজারা নেওয়া তিনটি পুকুরে বিষপ্রয়োগ করা হয়েছে। এতে ৬০ বিঘার পুকুর তিনটিতে প্রায় ২ কোটি টাকার মাছ মারা গেছে।

এ আসনে মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন জেলা যুবদলের সদস্যসচিব রেজাউল করিম টুটুলও। শনিবার রাতে টুটুল ও তাঁর শ্বশুর আবদুস সামাদের বাড়িতে ককটেল হামলা করা হয়। টুটুলের বাড়িতে ফেলে রাখা ককটেলগুলো বিস্ফোরিত হয়নি। তবে তাঁর শ্বশুর অবসরপ্রাপ্ত স্কুলশিক্ষক আব্দুস সামাদের বাড়িতে একটি ককটেল বিস্ফোরিত হয়েছে। পুলিশ আলামত উদ্ধার করেছে। টুটুলের বাড়ি বাগমারার বুজরুককৌড় গ্রামে। আর তাঁর শ্বশুরবাড়ি শান্তিপাড়া গ্রামে।
ভুক্তভোগী আব্দুস সোবহান বলেন, ‘এই পুকুরগুলো আগে চাষ করতেন ডি এম জিয়াউর রহমান। তিনি জমির মালিকদের ঠিকমতো টাকা দিতেন না। পরে জমির মালিক আমাকে পুকুরগুলো দেন। আমি নিয়মিত টাকা দিয়ে মাছ চাষ করছি। এখানে শতাধিক পুকুর। বেছে বেছে আমার পুকুরগুলোতে বিষ দেওয়া হয়েছে। এটা রাজনৈতিক প্রতিহিংসা।’
যুবদল নেতা টুটুল বলেন, ‘মনোনয়ন ঘোষণার পর আমরা সবাই নিজেদের মতো কাজ করেছি। দ্বন্দ্ব-বিভেদ হয়নি। সম্ভাব্য প্রার্থী ঘোষণার পর এখন এসব ঘটনা ঘটছে। আমার শ্বশুর কোনো রাজনীতি করেন না। তিনি অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক। তাঁর বাড়িতে ককটেল হামলা করা হয়েছে। আমার বাড়িতেও ককটেল ছোড়া হয়েছে। সেটা বিস্ফোরিত হয়নি। সেগুলো আমরা দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দিয়ে উদ্ধার করিয়েছি।’
সরেজমিনে বাগমারা: বাইগাছা গ্রামের এমরান আলী রাজনীতি করেন না। তাঁর জমির প্রাচীর ভেঙে গাছপালা কেটে ফেলা হয়েছে। গত শুক্রবার সকালে বাইগাছা গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, পাকা রাস্তার পাশেই ওই জমিটি। ইটের প্রাচীর ভাঙা। আম, মেহগনি, নারিকেল ও কলাগাছগুলো কাটা।
এমরানের স্ত্রী কাজলী আক্তার বলেন, ‘বাইর হোলিই মাইরবে বলে হুমকি দিছে। আমরা তাদের শক্তির সাথে পারিচ্চি না। কেস করার কারণে হাত-পা কাইটি দিবে বলে হুমকি দিছে।’
৩ নভেম্বর দিবাগত রাতে বোয়ালিয়া বিলে গোবিন্দপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমানের ইজারা নেওয়া ৫৫ বিঘা দিঘিতে বিষপ্রয়োগ করা হয়। আর বিলশনি গ্রামে পল্লি চিকিৎসক বীরেন্দ্রনাথ প্রামাণিকের বাড়িতে আগুন দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। দুজনেই স্থানীয় বিএনপির নেতা এবং কামাল হোসেনের পক্ষের লোক। শুক্রবার সকালে দিঘির পাড়ে পাওয়া যায় চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমানকে। দিঘির পাড়ে দেখা যায়, বড় বড় অনেক মাছ পচে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। পানিতেও কিছু মাছ ভাসছে।
হাবিবুর রহমান বলেন, ‘আমি কামালের মঞ্চে ছিলাম, কিন্তু সব সময় বলেছি যে যিনি ধানের শীষ পাবেন, তাঁর পক্ষেই আমরা কাজ করব। কিন্তু ৩ তারিখে জিয়া মনোনয়ন পাওয়ার পর তাঁর কর্মীরা আমাকে হুমকি দেয়। রাতেই দিঘিতে বিষ দিয়ে প্রায় ২ কোটি টাকার মাছ মেরে ফেলে।’

বাগমারা থানার ওসি তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ‘এমরানের প্রাচীর ভাঙা ও গাছ কাটার ঘটনাটা প্রকাশ্যে ঘটেছিল। তাই মামলা নেওয়া হয়েছে। রোববার সকালে আব্দুস সামাদের বাড়ির সামনে ককটেল বিস্ফোরণের আলামত পাওয়া গেছে। সেগুলো উদ্ধার করা হয়েছে। টুটুলের বাড়ির সামনেও অবিস্ফোরিত দুটি ককটেল পাওয়া গেছে। এসব ঘটনার তদন্ত চলছে।’
ওসি আরও বলেন, হাবিবুর রহমান ও আব্দুস সোবহানের পুকুরগুলোতেও বিষপ্রয়োগের ঘটনা ঘটে রাতে। প্রত্যক্ষদর্শী নেই। তাই সরাসরি মামলা নেওয়া যায়নি। পুলিশ গিয়ে সরেজমিনে দেখে এসেছে। অভিযোগের ব্যাপারে তদন্ত চলছে।
জানতে চাইলে ডি এম জিয়াউর রহমান জিয়া বলেন, ‘বাগমারায় ধানের শীষের জোয়ার চলছে। কে বলছে আমার লোক এসব ঘটনা ঘটাচ্ছে? বাগমারার প্রতিটি লোকই তো আমার লোক। আসলে কারা ঘটাচ্ছে, সে বিষয়ে তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। প্রশাসন তদন্ত করে ব্যবস্থা নিক।’

পর্যটন শহর কক্সবাজারের নাজিরারটেক থেকে টেকনাফ পর্যন্ত ১২০ কিলোমিটার সমুদ্রসৈকতকে ১৯৯৯ সালে প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা (ইসিএ) ঘোষণা করে সরকার। এ-সংক্রান্ত আইন অনুযায়ী, সৈকতের জোয়ার-ভাটার স্থান থেকে ৩০০ মিটার পর্যন্ত যেকোনো স্থাপনা নির্মাণ ও উন্নয়ন নিষিদ্ধ।
২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫
গোপালগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় দুই মোটরসাইকেল আরোহী নিহত হয়েছেন। গতকাল রোববার রাত পৌনে ১০টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন-মোটরসাইকেল চালক সদর উপজেলার ডালনিয়া গ্রামের ত্রিনাথ বিশ্বাসের ছেলে বিজয় বিশ্বাস (২২) এবং আরোহী একই গ্রামের সতীশ ভট্টাচার্যের ছেলে সরোজ ভট্টাচার্য (৫০)।
২২ মিনিট আগে
চওড়া সড়কের মাঝ পর্যন্ত একটি রেস্তোরাঁ। মোতালেব রেস্টুরেন্ট নামের ওই রেস্তোরাঁর পাশেই বাকরখানির দোকানটি যেন সড়কের গলা চেপে ধরেছে। উচ্ছেদ অভিযানের পর ৫০ ফুট চওড়া হওয়া ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মুগদা-মান্ডা সড়কটি দখলের ফলে আবার সরু হয়ে গেছে। এই সড়কের উভয় পাশে অর্ধডজন দোকান বসেছে। এগুলো যান চলাচলেও প্
৫ ঘণ্টা আগে
সুনামগঞ্জে দুস্থ নারীদের জন্য পরিচালিত ভিডব্লিউবি কর্মসূচির উপকারভোগীদের তালিকা তৈরিতে অনিয়ম এবং জমা করা টাকা ফেরত না দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। জানা গেছে, চলতি মেয়াদে উপকারভোগীর নাম অন্তর্ভুক্তির ক্ষেত্রে আর্থিক লেনদেনসহ নানা অনিয়ম-দুর্নীতি হয়েছে। এ ছাড়া গত মেয়াদে বিভিন্ন ইউনিয়নে উপকারভোগীর জমা করা টাকা
৫ ঘণ্টা আগে