Ajker Patrika

চকরিয়ায় ব্যক্তিগত হাট: খাজনা যায় হকদের পকেটে

বাপ্পী শাহরিয়ার, চকরিয়া (কক্সবাজার)
চকরিয়ায় ব্যক্তিগত হাট: খাজনা যায় হকদের পকেটে

কক্সবাজারের চকরিয়ার প্রধান বাণিজ্যিক এলাকা পৌরসভার চিরিংগা শহরের কাঁচাবাজার সড়ক। সেখানে প্রায় ১ একর জমিতে বাজার বসিয়েছে পৌরসভার প্রভাবশালী ‘হক সাহেব’ পরিবার। এই বাজারে প্রতিদিন ৩৫০ থেকে ৪০০-এর বেশি দোকান বসে। এসব দোকান থেকে মাসে অন্তত ২০ লাখ টাকার ওপরে খাজনা আদায় করা হয়। তবে তা সরকার পায় না, যারা হাট বসিয়েছেন, তাঁদের পকেটে ঢোকে। 

জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে বাজারটি পরিচালিত হলেও পৌরসভা কর্তৃপক্ষ এটি ইজারা দেয়নি। উপজেলা প্রশাসনও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। 
হাট ও বাজার (স্থাপন ও ব্যবস্থাপনা) আইন, ২০২৩-এর ধারা ৩-এ বলা হয়েছে, ‘কোনো স্থানীয় কর্তৃপক্ষ কর্তৃক কোনো হাট ও বাজার স্থাপন এবং উহার পরিসীমা সম্প্রসারণ ও সংকোচনের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকের পূর্বানুমোদন গ্রহণ করিতে হইবে। (২) উপধারা (১)-এর অধীন স্থাপিত হাট ও বাজারের মালিকানা ভূমি মন্ত্রণালয়ের ওপর ন্যস্ত থাকিবে। এই আইনের বিধান লঙ্ঘন করিয়া কোনো ভূমিতে কোনো হাট ও বাজার স্থাপন করা হইলে উক্ত ভূমিসহ উহাতে স্থিত সমস্ত স্বার্থ বা স্থাপনা সরকার বাজেয়াপ্ত করিতে পারিবে।’ 

বাজারের ব্যবসায়ী ও সংশ্লিষ্টজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চিরিংগা শহরের কাঁচাবাজার সড়কে প্রতিদিন মাছ, মাংস, সবজি, ফলমূল ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য বিক্রি হয়। হক পরিবার নিজেদের জমি ও মার্কেট নির্মাণ করে বাজার বসিয়ে হাসিলের নামে প্রতিদিন টাকা আদায় করছে। বাজারটির একটি অংশের খাজনা তোলেন মুজিবুল হক মনু, অন্য অংশে তোলেন তাঁর ভাই তৌফিকুল হক রিপন। 

দোকানিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চকরিয়া পৌরসভার মৃত আব্দুল হকের (হক সাহেব নামে পরিচিত) দুই ছেলে মুজিবুল হক মনু ও তৌফিকুল হক রিপনের দোতলা নির্মাণাধীন মার্কেট রয়েছে। মার্কেটের নিচতলায় মাছবাজার ও মাংসের (গরু ও ছাগল) ১০০ থেকে ১১০টি গদিঘর (দোকানের জন্য বরাদ্দ জায়গা) রয়েছে। এসব দোকান থেকে শ্রেণিভেদে প্রতিদিন ২৫০ থেকে ৫০০ টাকা খাজনা আদায় করা হয়। এ ছাড়া মাছ ২৫০, মাংস ৩০০ টাকা ও ছাগলের গদিঘর থেকে খাজনা আদায় করা হয় ১০ হাজার টাকা। প্রথম তলায় কাঁচাবাজার, মুরগি, মুদি ও ডিমের ১০০-এর বেশি গদি রয়েছে। এসব ঘর থেকে প্রতিদিন ১০০ থেকে ৪০০ টাকা খাজনা নেওয়া হয়। 

ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, হক মার্কেটের গলিতে রয়েছেও শতাধিক দোকান-গদিঘর। এসব ঘর থেকে হাসিল তোলা হয় ১০০ থেকে 
২৫০ টাকা। খাজনার পাশাপাশি বিদ্যুতের একটি লাইট ২০, জেনারেটর ২০, দারোয়ান ১০ ও ঝাড়ুদারের বেতন আদায় করা হয় ১০ টাকা। দৈনিক খাজনা দেওয়ার পরও এসব ব্যবসায়ীকে এককালীন ২ লাখ থেকে ১৫ লাখ টাকা পর্যন্ত সালামি দিতে হয়েছে। 

হাটের মাছ ব্যবসায়ী মিজানুর রহমান বলেন, ‘আমরা ব্যবসায়ীরা প্রতিদিন খাজনা দিই। জমিদারের ইচ্ছা অনুযায়ী টাকা না দিলে মাছ বিক্রি করতে বসতে দেয় না। আমরা চরম কষ্টে আছি।’ 

সবজি ব্যবসায়ী কালাম উদ্দিন বলেন, ‘৮ থেকে ১০ ফুটের গদিঘর থেকে প্রতিদিন ১৫০ টাকা খাজনা দিতে হয়। হক পরিবারের নিয়োজিত কিছু কর্মচারীর অত্যাচার তো আছেই।’ 

আমিনুল করিম নামের এক ক্রেতা বলেন, ‘এ বাজারের ব্যবস্থাপনা ঠিক নেই। কোনো দোকানে পণ্যের তালিকা নেই। দোকানিরা ইচ্ছেমতো ক্রেতাদের কাছ দাম হাঁকিয়ে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। সিন্ডিকেট করে হক সাহেবের পরিবার বাজারটি চালাচ্ছে। এতে সরকার বছরে কোটি কোটি টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে।’ 

তৌফিকুল হক রিপন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা অংশীদারের জমিতে বাজার করেছি। কিছু লোক রেখে বাজার দেখাশোনা করা হয়। মূলত পুরো বাজারটি আমার বড় ভাই মনু সাহেব দেখেন।’ 

কক্সবাজারের চকরিয়ার প্রধান বাণিজ্যিক এলাকা পৌরসভার চিরিংগা শহরে নিয়মবহির্ভূতভাবে গড়ে তোলা কাঁচাবাজার। ছবি সম্প্রতি তোলা। আজকের পত্রিকা মুজিবুল হক মনু বলেন,‘বাজারের একটি অংশ আমি, অন্য অংশ আমার ভাই রিপন দেখাশোনা করেন। আমি মূলত পৌরসভাকে 
অবগত করে বাজারটি পরিচালনা করছি। আর কীভাবে করছি, সেটা সবাই জানেন।’ তবে খাজনার নামে টাকা আদায়ের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি এড়িয়ে যান। 

চকরিয়া পৌরসভার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মাসউদ মোরশেদ বলেন, মেয়র মহোদয় উমরাহ পালনে সৌদি আবরে গেছেন। তিনি দেশে ফিরলে বাজারের বিষয়ে আলোচনা করা হবে।

চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ফখরুল ইসলাম বলেন, ব্যক্তিমালিকানায় হাট-বাজার থাকার সুযোগ নেই। বাজারটি পৌর এলাকায়। এ বিষয়ে পৌর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলব। ব্যক্তিমালিকানাধীন জমিতে বাজার বসানোর বিষয়ে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

শেখ হাসিনাকে ফেরত পাঠানোর ব্যাপারে এখনো ইতিবাচক সাড়া দেয়নি ভারত: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

রংপুর প্রতিনিধি
রংপুরে সার্কিট হাউসে সাংবাদিকের সঙ্গে কথা বলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
রংপুরে সার্কিট হাউসে সাংবাদিকের সঙ্গে কথা বলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেছেন, শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরত দেয়ার ব্যাপারে ভারত এখনও ইতিবাচক সাড়া দেয়নি। ট্রাইব্যুনালের রায় নিয়ে তারা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছে, আমরাও তাদের প্রতিক্রিয়ার অপেক্ষায় আছি। আজ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) সকালে রংপুর সার্কিট হাউসে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন তিনি। রংপুর অঞ্চলে চার দিনের সফরে এসেছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা।

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা তো চেয়েছি যে তাকে (শেখ হাসিনাকে) ফেরত পাঠানো হোক। যেহেতু উনি একজন কনভিক্টেড, যেহেতু সর্বোচ্চ বিচারিক সংস্থা তাকে একটি শাস্তি দিয়েছে। কিন্তু আমরা ইতিবাচক কোনো সাড়া এখন পর্যন্ত পাইনি। এটা নিয়ে আমার মনে হয় স্পেকুলেট না করাই ভালো। দেখা যাক কী হয়। আমরা তো চেয়েছি খুব, এ ধরনের ঘটনায় তো ঝট করে একদিনে সাত দিনে কোনো পরিবর্তন ঘটে না। আমরা অপেক্ষা করব, দেখি, ভারতের পক্ষ থেকে কি আসছে রিঅ্যাকশন।’

তৌহিদ হোসেন বলেন, একটা রিঅ্যাকশন আমরা দেখেছি যেটা, সেটা হলো তারা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখছে, এরকম একটা কথা আসছে আমাদের। দেখুক তারা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে।

বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেশে ফেরার বিষয়ে পররাষ্ট্র দপ্তরে কোনো তথ্য নেই বলে উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, "তারেক সাহেব কখন আসবেন এই সম্বন্ধে আমার কাছে কোনো তথ্য নেই। উনার স্ত্রী সম্ভবত আসছেন বা পৌঁছে গেছেন হয়তো ইতিমধ্যে। আজকে সকালে পৌঁছার কথা ছিল। বেগম জিয়াকে আজকে নেওয়া হচ্ছে না, আমি ঢাকা থেকে আজকে সকালে জানলাম যে, আজকে নেওয়া হচ্ছে না। একটু টেকনিক্যাল প্রবলেম দেখা দিয়েছে ওই এয়ারক্রাফট নিয়ে। সেক্ষেত্রে হয়তো এক-আধ দিন দেরি হতে পারে। "

আরাকান আর্মি বাংলাদেশিদের ধরে নিয়ে যাওয়া প্রসঙ্গে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, "আরাকান আর্মির সাথে আমাদের দ্বিপাক্ষিক আলোচনা সম্ভব নয়। তারা একটা নন-স্টেট অ্যাক্টর। আমরা স্টেট হিসেবে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা যেমন মিয়ানমারের কর্তৃপক্ষ, থাইল্যান্ড বা ভারতের সাথে করতে পারি সেটা তাদের সাথে করতে পারি না। তবে আমাদের স্বার্থ যেহেতু আছে, আমাদের দেখতে হবে। এই ঘটনা যাতে কমে বা আদৌ না ঘটে, এটার জন্য পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। "

এছাড়াও নীলফামারীতে প্রস্তাবিত চীনা হাসপাতালের কার্যক্রম অন্তর্বর্তী সরকার দ্রুত শুরু করে যেতে চায় বলেও জানান পররাষ্ট্র উপদেষ্টা। একই সঙ্গে নির্বাচিত সরকার এলে এই কাজ সমাপ্ত করবে বলেও আশা তার। এ সময় পিছিয়ে পড়া রংপুরের প্রত্নতাত্ত্বিকসহ সবক্ষেত্রে নেয়ার ব্যাপারে ইতিবাচক সরকারের সদিচ্ছার কথা জানান তৌহিদ হোসেন।

এরপর পররাষ্ট্র উপদেষ্টা সপরিবারে রংপুর জমিদার বাড়ি তাজহাটে পরিদর্শনে যান। এছাড়াও বিকেলে রংপুর সার্কিট হাউসে চা-চক্রের কথা রয়েছে তৌহিদ হোসেনের। আগামীকাল রংপুরের প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় এবং রংপুরের ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জিলা স্কুল পরিদর্শন করার কথাও রয়েছে তার।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

হাতিয়ায় ৫৬০০ কেজি জাটকা ইলিশ জব্দ, এতিমখানায় বিতরণ

­হাতিয়া (নোয়াখালী) প্রতিনিধি
কোস্ট গার্ডের অভিযানে জব্দ জাটকা ইলিশ। ছবি: আজকের পত্রিকা
কোস্ট গার্ডের অভিযানে জব্দ জাটকা ইলিশ। ছবি: আজকের পত্রিকা

নোয়াখালীর হাতিয়ার জাগলার চর এলাকার মেঘনা নদীতে অভিযান চালিয়েছে কোস্ট গার্ড। এ সময় একটি নৌকা থেকে ৫ হাজার ৬০০ কেজি জাটকা ইলিশ জব্দ করা হয়। এই ঘটনায় আটক কয়েকজন মাঝিমাল্লার কাছ থেকে মুচলেকা নিয়ে তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে কোস্ট গার্ড হাতিয়ার একটি দল এই অভিযান চালায়। জব্দ করা জাটকাগুলোর মূল্য প্রায় ২৮ লাখ টাকা।

কোস্ট গার্ড মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট মো. আবুল কাশেম জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মেঘনা নদীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে কোস্ট গার্ড। অভিযানে মেঘনা নদীর জাগলার চর এলাকায় একটি কাঠের নৌকায় তল্লাশি করা হয়। ওই নৌকা থেকে ৫ হাজার ৬০০ কেজি জাটকা জব্দ করা হয়। এ সময় মাঝিদের মুচলেকা নিয়ে নৌকা ছেড়ে দেওয়া হয়। জব্দ মাছগুলো মৎস্য কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে এতিমখানা ও দুস্থ ব্যক্তিদের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে। মৎস্য সম্পদ রক্ষায় কোস্ট গার্ডের এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানান এই কর্মকর্তা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মাঠে পড়ে ছিল মাছ ব্যবসায়ীর রক্তাক্ত লাশ

ফরিদপুর প্রতিনিধি
ঘটনাস্থলে স্থানীয় বাসিন্দারা জড়ো হন। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঘটনাস্থলে স্থানীয় বাসিন্দারা জড়ো হন। ছবি: আজকের পত্রিকা

ফরিদপুরের সালথায় উৎপল সরকার (৩৫) নামের এক মাছ ব্যবসায়ীর রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ শুক্রবার সকালে উপজেলার আটঘর ইউনিয়নের গৌরদিয়া এলাকার কালীতলা ব্রিজ-সংলগ্ন মাঠ থেকে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ। এই ঘটনায় মাঠ-সংলগ্ন সেতু থেকে চোখ বাঁধা অবস্থায় থাকা ফিরোজ মোল্যা নামের এক ভ্যানচালককে জীবিত উদ্ধার করে স্থানীয় লোকজন।

নিহত উৎপল ফরিদপুর জেলা সদরের কানাইপুর ইউনিয়নের রনকাইল গ্রামের অজয় সরকারের ছেলে। তাঁর স্ত্রী ও আড়াই বছর বয়সী এক শিশুসন্তান রয়েছে।

থানা-পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আজ ভোরে সড়কের পাশে ফাঁকা মাঠে রক্তাক্ত অবস্থায় একটি লাশ দেখতে পায় স্থানীয় লোকজন। পাশেই একটি সেতুর সঙ্গে একই গ্রামের ভ্যানচালক ফিরোজ মোল্যাকে চোখ বাঁধা অবস্থায় বেঁধে রাখা হয়েছিল। পরে স্থানীয় বাসিন্দাদের হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি খুলে বলেন তিনি।

ভ্যানচালকের বরাত দিয়ে রনকাইল গ্রামের বাসিন্দা ও প্রতিবেশী কাজী শাহীন বলেন, উৎপল সরকার ব্যাটারিচালিত ভ্যানে করে গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরে মাছ কিনতে যাচ্ছিলেন। পথে অজ্ঞাতপরিচয় তিন-চার ব্যক্তি দেশীয় অস্ত্রের মুখে ভ্যানচালক ফিরোজ মোল্যাকে গামছা দিয়ে চোখ বেঁধে ব্রিজের রেলিংয়ে বেঁধে ফেলে। তারা উৎপলের সঙ্গে থাকা টাকাপয়সা লুট করে তাঁকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যায়।

বিষয়টি নিশ্চিত করে সালথা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কে এম মারুফ হাসান রাসেল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘দুই থেকে তিনজন দুর্বৃত্ত ঘটনাটি ঘটিয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। তবে এটাকে ডাকাতি বলা যায় না। ঘটনাটি নিয়ে তদন্ত চলমান। তদন্ত শেষে মূল কারণ বলা যাবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বাসার দরজা ভেঙে চবি শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার

চবি প্রতিনিধি 
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ওমর ফারুক সুমন নামের এক শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) রাতে চট্টগ্রাম নগরীর খুলশী এলাকার একটি বাসা থেকে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ।

ওমর ফারুক বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।

স্থানীয় ও পরিবারের সদস্যরা জানান, সুমন খুলশীতে তাঁর মামার বাসায় থাকতেন। তাঁর বড় ভাইও সেখানে থাকেন। দুই দিন আগে সুমনের মামা পুরো পরিবার নিয়ে তুরস্কে বেড়াতে যান। বাসায় সুমন ও তাঁর বড় ভাই ছিলেন। গতকাল বিকেল ৪টার দিকে ভাইয়ের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন সুমন। ফোনে তাঁর বড় ভাই কখন বাসায় ফিরবেন জানতে চান সুমন। বড় ভাই জানান যে তাঁর আসতে একটু দেরি হবে। এর কিছুক্ষণ পর বড় ভাই সুমনকে ফোন করলে তিনি আর ফোন রিসিভ করেননি। পরে বাড়ি থেকে সুমনের মা ফোন দিয়ে যোগাযোগ করতে না পেরে বিষয়টি বড় ভাইকে জানান। এতে উদ্বেগ দেখা দিলে বড় ভাই বিল্ডিংয়ের দারোয়ানকে দিয়ে বাসা চেক করান।

দারোয়ান কলিংবেল বাজিয়েও কোনো সাড়া না পেয়ে বড় ভাইকে জানালে তিনি দ্রুত বাসায় এসে সুমনকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান। খবর পেয়ে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে। ঘটনাস্থলে চিরকুট মিলেছে। এতে লেখা রয়েছে, ‘আমি সুমন, ওমর ফারুক সুমন। আমার কোনো আশা-আকাঙ্ক্ষা নেই। আর আমার কারও প্রতি কোনো অভিযোগ নেই। সবাই ভালো থাকবেন।’ এর আগে ১ ডিসেম্বর লেখা আরেকটি চিরকুট পাওয়া যায়। সেখানে লেখা ছিল—‘আশাই জীবন, আশাই মরণ, ব্যর্থতা হতাশা-অন্ধকারে নিয়ে যায়।’

খুলশী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহীনুর জামান বলেন, ‘সুমন ও তাঁর বড় ভাই একসঙ্গে মামার বাসায় থাকতেন। মামা ও মামি বর্তমানে বিদেশে আছেন। বড় ভাই সন্ধ্যায় বাইরে যান। সে সময় সুমন বাসায় একা ছিলেন। বড় ভাই বাসায় ফিরে এসে বারবার ডাকলেও ফ্ল্যাটের ভেতর থেকে কোনো সাড়া পাননি। পরে দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকলে সুমনের মরদেহ ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। প্রাথমিক তদন্তে এটি আত্মহত্যা মনে হলেও আমরা সব সম্ভাব্য কারণ খতিয়ে দেখছি। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহটি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত