Ajker Patrika

কাদের মির্জার বিরুদ্ধে ৪ ব্যবসায়ীকে মারধরের অভিযোগ

নোয়াখালী প্রতিনিধি
আপডেট : ১৪ নভেম্বর ২০২১, ০২: ১১
কাদের মির্জার বিরুদ্ধে ৪ ব্যবসায়ীকে মারধরের অভিযোগ

বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আব্দুল কাদের মির্জার বিরুদ্ধে ৪ ব্যবসায়ীকে মারধর করে লাঞ্ছিত করা এবং এক মার্কেটে তালা দেওয়া এবং ২০টির অধিক মোটর সাইকেল ভাংচুরের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় তাৎক্ষণিক বসুরহাট বাজারের ব্যবসায়ীদের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

মারধরের শিকার ব্যবসায়ীরা হলেন, মোহাম্মদ আলী (৬৮), রহমানিয়া ফার্মেসীর আব্দুর রহমান (৬৪) রহীম উল্যাহ রিটু (৩৪) কেবি সুজ শোরুমের মালিক মফিজুল হক মিন্টু (৫৯)।

একই সময়ে কাদের মির্জার নেতৃত্বে তাঁর অনুসারীরা বসুরহাট বাজারে ২০টির অধিক মোটরসাইকেল ভাংচুর করে এবং বসুরহাট বাজারের জিরো পয়েন্টে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) কর্তৃক পরিচালিত স্কাউট ভবন মার্কেটের সামনে মোটরসাইকেল পার্কিং ও ফল দোকান থাকার অভিযোগে মার্কেটের প্রধান ফটকে তালা দেয়। ওই সময় একই অভিযোগ এনে বসুরহাটের রুপালী চত্বরের পাশে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি এবং বসুরহাট পৌরসভার সাবেক মেয়র কামাল উদ্দিন চৌধুরী ও তাঁর ভাই সফিউল্যাহ চৌধুরীর মালিকানাধীন তানহা কমপ্লেক্স ও চৌধুরী কমপ্লেক্সে নামের দুটি মার্কেটে তালা দেয় । পরে দুপুরের দিকে তানহা কমপ্লেক্স ও চৌধুরী কমপ্লেক্সে মার্কেটের তালা খুলে দেয়া হয় বলে জানা যায়।

শনিবার সকাল ১০টা থেকে ১১টার মধ্যে বসুরহাট বাজারের কলেজ রোড, বঙ্গবন্ধু চত্ত্বর ও বসুরহাট ব্যবসায়ী সমিতির সামনে এসব ঘটনা ঘটে।প্রত্যক্ষদর্শী ও অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, বসুরহাট রোডের ডাচ বাংলা ব্যাংকের সামনে অবস্থিত রহমানিয়া ফার্মেসী। আকস্মিক সকাল ১১টার দিকে ওই ফার্মেসীতে ১০-১৫জন অনুসারীকে নিয়ে উপস্থিত হয় কাদের মির্জা। এ সময় তিনি ওই ফার্মেসীতে উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও বসুরহাট পৌরসভার সাবেক মেয়র কামাল উদ্দিন চৌধুরীসহ বিএনপির কয়েকজন নেতা বসার অভিযোগ তুলে

প্রতিষ্ঠানের মালিক আব্দুর রহমান ও তাঁর ছেলেকে মারধর করেন।

একই সময়ে রহমানিয়া ফার্মেসীর সামনে অবস্থিত কেবি সুজ শোরুমের মালিক মিন্টুকেও মারধর করেন কাদের মির্জা। এ ছাড়াও কাদের মির্জার প্রতিপক্ষ গ্রুপের অনুসারী কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নিজাম উদ্দিন মুন্নার বাবা মোহাম্মদ আলীকে তার দোকানের সামনে দোকানের জিনিসপত্র রাখার অভিযোগ তুলে মারধর করেন কাদের মির্জা। তবে এ বিষয়ে ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীরা ভয়ে নাম প্রকাশ করে গণমাধ্যম কর্মীদের সঙ্গে কথা বলতে অনীহা প্রকাশ করেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নিজাম উদ্দিন মুন্না জানান, আমি এলাকার বাহিরে অবস্থান করছি। আমার বাবার ওপর হামলার বিষয়ে লোক মুখে শুনেছি। বাবার নম্বরে যোগাযোগ করার জন্য বারবার ফোন করলেও ফোন বন্ধ পাচ্ছি। বাবার সঙ্গে কথা বলে পরে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানাবো।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে শনিবার বিকেলে বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আব্দুল কাদের মির্জার ফোনে কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো সাইফুদ্দিন আনোয়ার জানান, মৌখিকভাবে বিষয়টি শুনেছি। লিখিত অভিযোগ পেলে বিষয়টি তদন্ত আইনগত প্রদক্ষেপ নেওয়া হবে।

কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো জিয়াউল হক মীর জানান, স্কাউট ভবন মার্কেটে তালা দেওয়ার বিষয়টি আমি শুনেছি। বিষয়টি আমি দেখতেছি। পরে এ বিষয়ে জানানো হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কর্ণফুলীতে অস্ত্রসহ যুবক আটক

কর্ণফুলী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি 
অস্ত্রসহ আটক যুবক। ছবি: সংগৃহীত
অস্ত্রসহ আটক যুবক। ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রামের কর্ণফুলীতে অস্ত্র, কার্তুজসহ রাশেদ নুর প্রকাশ রাশু (৩৮) নামের এক যুবককে আটক করেছে পুলিশ। শুক্রবার ভোর চারটার দিকে বৈরাগ ইউনিয়নের উত্তর বন্দর এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাঁকে আটক করা হয়।

আটক যুবক ওই এলাকার রাজ্জাক নুর প্রকাশ রজ্জক নুরের ছেলে। এ সময় তাঁর কাছ থেকে দেশীয় তৈরি ১টি এলজি এবং ৩টি কার্তুজ উদ্ধার করে পুলিশ।

বিষয়টি নিশ্চিত করে কর্ণফুলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাহেদুল ইসলাম বলেন, আটক যুবকের বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়েছে। পুলিশ পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নিচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

‘চাঁদা না দিলে এই চরে আর তরমুজ চাষ করতে পারবি না’

দশমিনা (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি 
অভিযুক্ত যুবদল নেতা নজরুল ইসলাম মোল্লা। ছবি: সংগৃহীত
অভিযুক্ত যুবদল নেতা নজরুল ইসলাম মোল্লা। ছবি: সংগৃহীত

পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলায় যুবদলের এক নেতার বিরুদ্ধে চাঁদা দাবি, ঘর ভাঙচুর, টাকা ছিনতাই ও হত্যার হুমকির অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্ত মো. নজরুল ইসলাম মোল্লা উপজেলার বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। ভুক্তভোগী তরমুজ চাষি ফরিদ উদ্দিন হাওলাদার বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের ৬ নম্বর উত্তর বাঁশবাড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, যুবদল নেতা নজরুল বেশ কিছুদিন ধরে তরমুজ চাষি ফরিদ উদ্দিনের কাছে ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করছিলেন। চাঁদা না দেওয়ায় গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে নজরুলসহ ৯-১০ জন চর ফাতেমায় গিয়ে ফরিদ উদ্দিনের তরমুজের ২০ হাজার চারা নষ্ট করে দেন। ফরিদ উদ্দিন চারা নষ্টের বিষয়ে জানতে চাইলে নজরুল বলেন, ‘চাঁদা না দিলে এই চরে আর তরমুজ চাষ করতে পারবি না।’ পরে হত্যার হুমকি দিয়ে নজরুল চলে যান।

এরপর গতকাল রাত ১০টার দিকে নজরুল তাঁর দলবল নিয়ে ফরিদের ঘরে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকেন। একপর্যায়ে ঘরের দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে ফরিদকে মারধর করেন তাঁরা। ডাকচিৎকার শুনে এলাকার লোকজন দৌড়ে এলে নজরুল তাঁর বাহিনী নিয়ে চলে যান।

প্রত্যক্ষদর্শী মোশারেফ চৌকিদার বলেন, ‘আমি ভাত খেয়ে শুইতে যাওয়ার সময় বাড়ির পূর্ব পাশে পিটাপিটির শব্দ পাই। তখন লোকজন নিয়ে এসে দেখি, ১০-১২ জন লোক মুখোশ পরা, প্রত্যেকের হাতে রাম দা। দূরে দাঁড়িয়ে ঘরের মধ্যে চিৎকার শুনি। তখন আমরা কয়েকজন ডাকাত পড়ছে বলে ডাকাডাকি করতে থাকি। এরপর দক্ষিণ দিকে তারা দৌড়ে চলে যায়।’ তাদের পরিচয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি কাউকে চিনি না। তবে যাওয়ার সময় বলেছে, ‘‘চরে তোরে খাইয়া দিমু’’।’

প্রতিবেশী আলেয়া ও সাহিনুর বলেন, ‘রাত ১০টায় ঘর পেটানোর শব্দ পাই। আমরা দৌড়ে আসি ফরিদ হাওলাদারের ঘরের সামনে। দেখি ১০-১২ জন রাম দা নিয়া দাঁড়াইয়া আছে। তাদের হাতে রাম দা দেখে কেউই সামনে যাইনি। পরে আরও লোকজন আসলে নজরুল, আল আমিনসহ তারা সবাই চলে যায়। আমরা ঘরে গিয়ে দেখি, ফরিদ হাওলাদার ঘরের মেঝেতে পড়ে আছে।’

তরমুজ চাষি ফরিদ হাওলাদার বলেন, ‘আমি রাতে আমার ঘেরের ঘরে শুয়ে ছিলাম। রাত ১০টায় আমার ঘরে পেটানোর শব্দ পেয়ে উঠে বসি। দেখি, নজরুল, আল আমিনসহ ৮-৯ জন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে দরজা ভেঙে ঘরে প্রবেশ করে। আমাকে চৌকির ওপর শোয়াইয়া পিটায়, পাড়ায় এবং জবাই করার জন্য গলায় রাম দা রেখে বলে ‘‘টাকা কই? টাকা না দিলে জবাই করব।’’ পরে আমার ঘরের মালামাল ভাঙচুর করে, মালপত্র এলোমেলো করে ফেলে। আমার তোশকের নিচে রাখা দেড় লাখ টাকা নিয়ে যায়। আমার ডাকচিৎকারে এলাকার লোকজন ছুটে আসলে সবাই চলে যায়। আমি থানায় জানিয়েছি। আমি আইনের আশ্রয় নিব।’

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে যুবদল নেতা নজরুল ইসলাম মোল্লা বলেন, ‘আমি গতকাল চর ফাতেমায় গিয়াছিলাম। তবে দিনে তরমুজের চারা নষ্ট ও রাতে ফরিদের ঘরে প্রবেশ করে ভাঙচুর, টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনা মিথ্যা। এর সঙ্গে আমার কোনো সম্পর্ক নাই।’

থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আবদুল আলীম বলেন, ‘ঘটনা সম্পর্কে দুপুরে অবহিত হয়েছি। অভিযোগ পেলে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কৃষকের ঘরে ১২ ফুট লম্বা গাঁজার গাছ, আটক

বিরামপুর (দিনাজপুর) প্রতিনিধি 
দিনাজপুরের বিরামপুরে গাঁজার গাছসহ আটক ব্যক্তি। ছবি: আজকের পত্রিকা
দিনাজপুরের বিরামপুরে গাঁজার গাছসহ আটক ব্যক্তি। ছবি: আজকের পত্রিকা

দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলায় ১২ ফুট উচ্চতার একটি গাঁজার গাছসহ এক কৃষককে আটক করেছে পুলিশ। পরে আজ শুক্রবার তাঁকে আদালতে সোপর্দ করা হয়।

বিরামপুর থানার জ্যেষ্ঠ উপপরিদর্শক (এসআই) সাজিদুল ইসলাম জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার গভীর রাতে জোতবাণী ইউনিয়নের চাকুল গ্রামে অভিযান চালানো হয়। এ সময় মৃত দছির উদ্দিনের ছেলে আজিজার রহমানের (৪৫) বাড়ির একটি পরিত্যক্ত ঘর থেকে গাঁজার গাছটি জব্দ করা হয়।

পরে আজিজার রহমানকে আটক করা হয়। পুলিশ জানায়, গাছটির উচ্চতা প্রায় ১২ ফুট, ওজন ১০ কেজি এবং আনুমানিক মূল্য এক লাখ টাকা।

এ বিষয়ে বিরামপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আতাউর রহমান জানান, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা হয়েছে। আজ আসামিকে দিনাজপুর আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বিস্ফোরক মামলায় আওয়ামী ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা জেলে

চাটমোহর (পাবনা) প্রতিনিধি 
গ্রেপ্তার ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি নবীর উদ্দিন মোল্লা ও উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মনোয়ার হোসেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
গ্রেপ্তার ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি নবীর উদ্দিন মোল্লা ও উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মনোয়ার হোসেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

পাবনার চাটমোহরে আওয়ামী লীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের দুই নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে চাটমোহর থানার পুলিশ। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল ও রাতে পৃথক অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। পরে আজ শুক্রবার দুপুরে বিস্ফোরক আইনে করা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাঁদের আদালতের মাধ্যমে পাবনা জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।

গ্রেপ্তার দুজন হলেন উপজেলার ডিবিগ্রাম ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি নবীর উদ্দিন মোল্লা (৭০) এবং উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক ও পৌর সদরের মধ্য শালিখা মহল্লার বাসিন্দা মনোয়ার হোসেন (৫৪)।

চাটমোহর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনজুরুল আলম গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করে আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল বেলা সাড়ে ৩টার দিকে উপজেলার ডিবিগ্রাম ইউনিয়নের বামনগ্রাম নিজ বাড়ি থেকে আওয়ামী লীগ নেতা নবীর উদ্দিন মোল্লাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

এ ছাড়া একই দিন রাতে মধ্য শালিখা মহল্লার নিজ বাড়ি থেকে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা মনোয়ারকে গ্রেপ্তার করা হয়। এই দুজনের বিরুদ্ধে চাটমোহর থানায় বিস্ফোরক মামলা রয়েছে। আজ সকালে তাঁদের আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত