Ajker Patrika

চট্টগ্রামে হামলায় ‘নিরাপত্তাহীন’ পুলিশ

সোহেল মারমা, চট্টগ্রাম 
আপডেট : ০৩ মার্চ ২০২৫, ০৮: ৪৫
চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় দায়িত্ব পালনের সময় পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় গ্রেপ্তার ১০। নগরীর পাঁচলাইশ থানা এলাকায় গত শনিবার রাতে অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় দায়িত্ব পালনের সময় পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় গ্রেপ্তার ১০। নগরীর পাঁচলাইশ থানা এলাকায় গত শনিবার রাতে অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

নগরের হালিশহর এইচ-ব্লক জামে মসজিদ কমিটির সভাপতি প্রফেসর নুরুল আবছার গত শুক্রবার জুমার নামাজের সময় মসজিদে মুসল্লিদের উদ্দেশে তাঁর এক বক্তব্যে এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি রমজান মাস ঘিরে এলাকায় পুলিশের টহল ও নজরদারি চেয়ে নিকটবর্তী থানায় একটি আবেদন করেছিলেন। কিন্তু পুলিশ সেই আবেদন ফিরিয়ে দিয়েছে। তাঁকে জানানো হয়েছিল, বর্তমানে পুলিশ নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত। এলাকাবাসীকে নিজেদের নিরাপত্তা নিজেদের নিতে পরামর্শ দেয় পুলিশ।

ওই এলাকাটির মতো বন্দরনগরী চট্টগ্রামের বেশির ভাগ এলাকায় আইন- শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে জনমনে শঙ্কা বিরাজ করছে। সাধারণের জানমালের নিরাপত্তায় যে পুলিশ বাহিনী নিয়োজিত, তাঁরা নিজেরাই নিরাপত্তাহীনতায় আছে। গত প্রায় দুই মাসে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে পুলিশ সদস্যদের ছুরিকাঘাত, মারধর বা শারীরিকভাবে হেনস্তার অন্তত সাতটি ঘটনা ঘটেছে।

চট্টগ্রাম মহানগরীতে বর্তমানে বেশির ভাগ পুলিশ সদস্য নতুন। ফলে বিশাল এই বন্দরনগরীর অপরাধপ্রবণ এলাকাগুলো সম্পর্কে জানাশোনা কম থাকায় অপরাধ নিয়ন্ত্রণে আনতে তাঁরা হিমশিম খাচ্ছেন। চট্টগ্রাম শহরের একটি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজকের পত্রিকাকে বলেন, তাঁর থানার মাঠপর্যায়ে যেসব এসআই ও এএসআই রয়েছেন, তাঁদের ৯০ শতাংশ চট্টগ্রাম শহরে নতুন। কর্মস্থল, অপরাধ জোন (এলাকা) ও অপরাধীদের বিষয়ে জানাশোনা কম থাকায় তাঁদের কাজে সমস্যা হচ্ছে। সাম্প্রতিক বিভিন্ন ঘটনার পর তাঁদের টহলে পাঠানোও কষ্ট হচ্ছে।

পুলিশের পরিদর্শক পদমর্যাদার একাধিক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, মানুষের মধ্য থেকে পুলিশের ভয় কেটে গেছে বলা যায়। তুচ্ছ কারণেও মানুষ এখন পুলিশের ওপর আক্রমণাত্মক আচরণ করে। এতে দারোগারা (এসআই) টহলে যেতে চান না। দিনের বেলায় স্বাভাবিক থাকলেও বিশেষ করে গভীর রাতে দারোগাদের শাস্তির ভয় দেখিয়েও টহলে পাঠানো যায় না। এ ছাড়া পুলিশের নানা দাবিদাওয়া এখনো পূরণ না হওয়ায় তাঁরা নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত। মামলার তদন্ত ও আসামি গ্রেপ্তার অভিযানে যাওয়ার ঝুঁকি নিতে চাচ্ছেন না তাঁরা। এতে করে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে রুটিন পুলিশিংয়েও। এটার সুযোগ নিচ্ছে অপরাধীদের কয়েকটি চক্র।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত ৬ জানুয়ারি চট্টগ্রাম নগরের পাঁচলাইশে স্কুল থেকে ছেলেকে আনতে গিয়ে স্বেচ্ছাসেবক দলের বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীদের হাতে শারীরিক হেনস্তার শিকার হয়েছেন নগরের কোতোয়ালি থানার সাবেক ওসি নেজাম উদ্দিন।

১৪ জানুয়ারি চট্টগ্রাম নগরের বহদ্দারহাটে চেকপোস্ট বসিয়ে একটি সিএনজি অটোরিকশায় তল্লাশির সময় ওই গাড়িতে থাকা যাত্রীরা দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের ওপর হামলা চালায় ও অস্ত্র ছিনিয়ে নেয়।

৯ ফেব্রুয়ারি দুপুর সাড়ে ১২টায় কোতোয়ালি মোড়ে সড়ক আইনে ট্রাফিক পুলিশের মামলা দেওয়ায় প্রায় এক ঘণ্টা ধরে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন সিএনজি অটোটেম্পোচালকেরা।

১৫ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রামে চান্দগাঁও সড়কে অবৈধ সিএনজিচালিত অটোরিকশা, অটোরিকশা উচ্ছেদ চালাতে গেলে ট্রাফিক পুলিশের দুই সদস্যের ওপর হামলা চালান চালকেরা।

২৫ ফেব্রুয়ারি নগরের ডবলমুরিং থানাধীন বারিক বিল্ডিং মোড়সংলগ্ন ছিনতাইকারীদের আস্তানায় অভিযানে গিয়ে পুলিশের দুই এসআই ছুরিকাঘাতের শিকার হয়েছেন। ২৭ ফেব্রুয়ারি বেলা ২টায় হালিশহর থানাধীন বড়পোল মোড়ে মামলা করায় ব্যাটারি রিকশাচালকেরা মিলে এক ট্রাফিক পুলিশকে মারধর করেন।

সর্বশেষ ২৮ ফেব্রুয়ারি রাত ১১টায় নগরের পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকতের চরপাড়া ঘাটের কাছে গাঁজাসেবনে বাধা দেওয়ার জেরে এক পুলিশ কর্মকর্তাকে পরিকল্পিত ‘মব’ তৈরি করে মারধর করেছে সংঘবদ্ধ একটি অপরাধী চক্র। ওই কর্মকর্তার মোবাইল ফোন, মানিব্যাগ ছাড়াও ছিনিয়ে নেওয়া হয় ওয়্যারলেস সেট।

জানতে চাইলে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত উপকমিশনার মাহমুদা বেগম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ক্ষমতার পটপরিবর্তনের পর পুলিশের মনোবলে কিছুটা সমস্যা হয়েছিল। পরে ঊর্ধ্বতনদের দিকনির্দেশনা ও নানা পদক্ষেপ নেওয়ার ফলে এটা আমরা কাটিয়ে উঠেছি। এখন পুলিশের মনোবলে কোনো সমস্যা নেই। বিভিন্ন জায়গায় পুলিশের টহল জোরদার আছে।’

অতিরিক্ত উপকমিশনার আরও বলেন, ‘কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা থাকবে, এটা স্বাভাবিক। এসব ঘটনায় আমরা তাৎক্ষণিক অ্যাকশনে যাচ্ছি। পতেঙ্গায় পুলিশ সদস্যের ওপর যে হামলার ঘটনা ঘটল, সেখানে কিন্তু পুলিশ দ্রুত ওই হামলায় জড়িতদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় এনেছে। অন্যান্য ঘটনার ক্ষেত্রেও একই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।’ চট্টগ্রাম শহরে অনেকের নতুন কর্মস্থলের বিষয়ে মাহমুদা বেগম বলেন, ‘এটা সত্য। বদলিজনিত কারণে চট্টগ্রাম শহরটি অনেকের কাছে নতুন হওয়ায় নগরের ক্রাইম জোন সম্পর্কে তাঁদের ধারণা কম। এতে অপরাধ নিয়ন্ত্রণে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। আশা করছি, এগুলোও দুই-তিন মাসের মধ্যে কেটে যাবে।’

পতেঙ্গার হামলায় ১০ জন গ্রেপ্তার

পতেঙ্গায় আইনশৃঙ্খলা দায়িত্ব পালনের সময় এসআই মারধরের ঘটনায় আরও ১০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শনিবার রাতভর নগরীর পাঁচলাইশ থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করে পতেঙ্গা থানার পুলিশ। গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন গণপতি (৫৭), হামিদুর রহমান (৩০), রোহান (২০), আরিফ প্রামাণিক (৩৫), রাব্বি (৩৫), শুভ (১৯), জীবন (২৬), রুমেল (৩০), রেজাউল করিম (৪৫) ও সিয়াম শেখ (১৮)।

পতেঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, এরা মাদকসেবন ও ছিনতাইয়ে জড়িত। তারা পতেঙ্গা থানার এসআই ইউসুফ আলীকে দলবদ্ধ হয়ে পরিকল্পিতভাবে মারধর করেছিল।

ওই রাতে স্থানীয় জনতা দুজনকে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। এ ঘটনায় পতেঙ্গা থানায় একটি মামলা করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আড়িয়াল খাঁ নদের তীর থেকে অটোরিকশাচালকের রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার

নরসিংদী প্রতিনিধি
ঘটনাস্থলে স্থানীয়দের ভিড়। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঘটনাস্থলে স্থানীয়দের ভিড়। ছবি: আজকের পত্রিকা

নরসিংদীর বেলাব উপজেলার আড়িয়াল খাঁ নদের তীর থেকে আব্দুর রশিদ (৪০) নামের এক অটোরিকশাচালকের রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) সকালে উপজেলার বিন্নাবাইদ ইউনিয়নের ভাওয়ালেরচর এলাকায় নদীর তীর থেকে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ।

আব্দুর রশিদ কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার লোহাজুরী ইউনিয়নের দক্ষিণ লোহাজুরী গ্রামের বাসিন্দা। পেশায় তিনি ছিলেন অটোরিকশাচালক; তবে নিয়মিত আড়িয়াল খাঁ নদে বড়শি দিয়ে মাছ শিকার করা ছিল তাঁর নেশা।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সকাল ৬টার দিকে ভাওয়ালেরচর এলাকায় নদীর পাড়ে রক্তাক্ত লাশ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয় বাসিন্দারা পুলিশে খবর দেন। লাশের পাশেই মোবাইল ফোন ও অটোরিকশাটি ছিল। পরে স্বজনেরা এসে লাশ শনাক্ত করেন। আব্দুর রশিদের মাথা ও শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। প্রাথমিকভাবে পুলিশ মনে করছে, তিনি দুষ্কৃতকারীর হামলার শিকার হয়েছেন।

নিহত ব্যক্তির ভাই কাজল মিয়া বলেন, ‘প্রতিদিন বিকেল থেকে রাত ১১-১২টা পর্যন্ত অটোরিকশা চালিয়ে তারপর নদীর পাড়ে বসে মাছ শিকার করে বাড়ি ফিরত ভাই। কিন্তু গতকাল রাতে আর বাড়ি ফেরেনি। সকালে খবর পেয়ে নদীর পাড়ে এসে ভাইয়ের মরদেহ দেখতে পাই।’

নিহত ব্যক্তির ছেলে হৃদয় বলেন, ‘রাতে বাড়ি না ফেরায় কল দিলে ফোন বন্ধ পাই। সকালে খবর শুনে নদীর পাড়ে এসে বাবার মরদেহ, মোবাইল ও অটোরিকশা পড়ে থাকতে দেখি।’

বেলাব থানার পরিদর্শক (তদন্ত) নাসির উদ্দিন বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য নরসিংদী সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে। বিষয়টি পিবিআইকে জানানো হয়েছে। ঘটনাটি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করা হচ্ছে। আইনগত প্রক্রিয়া চলমান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

৬৭ বছর পর রামেক হাসপাতালে মানসিক রোগীদের জন্য পূর্ণাঙ্গ ওয়ার্ড

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

অবশেষে ৬৮ বছরে পা দিতে চলা রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে মানসিক রোগীদের জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ মনোরোগ ওয়ার্ড চালু হলো। হাসপাতালটির বহির্বিভাগে প্রতিদিনই উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মানসিক রোগী চিকিৎসা নিতে এলেও ভর্তির সুযোগ ছিল না। গুরুতর রোগীদের কিছু ক্ষেত্রে মেডিসিন বিভাগে রাখা হলেও, পূর্ণাঙ্গ ওয়ার্ডের অভাবে এতদিন অনেককেই ফিরিয়ে দিতে হতো।

হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার ৬৭ বছর পর এই প্রথম ২৫ শয্যার একটি সুসজ্জিত মনোরোগ ওয়ার্ড চালু করা হয়েছে। হাসপাতালটির পুরাতন আইসিইউ ভবনে এই নতুন ওয়ার্ডটি গড়ে তোলা হয়েছে।

এই ওয়ার্ডে রোগী ভর্তির জন্য নির্দিষ্ট বিন্যাস রাখা হয়েছে। এর মধ্যে পুরুষদের জন্য ১০টি, নারীদের জন্য ৭ টি, শিশু-কিশোরদের জন্য ৫টি এবং উচ্চ পর্যবেক্ষণের জন্য ৩টি শয্যা সংরক্ষিত রয়েছে। এ ছাড়া রোগীদের চিকিৎসার সুবিধার জন্য থেরাপি ও কাউন্সেলিং রুমসহ আধুনিক সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ওয়ার্ডের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক মোস্তফা আলী।

এই ওয়ার্ডটি চালুর পেছনে সবচেয়ে বড় কারণ ছিল কলেজের স্বীকৃতি বজায় রাখা। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আগামী মার্চ মাসেই ওয়ার্ল্ড ফেডারেশন ফর মেডিকেল এডুকেশন (ডব্লিউএফএমই) থেকে একটি প্রতিনিধি দল রাজশাহী মেডিকেল কলেজ পরিদর্শনে আসবে। পরিদর্শনকালে মনোরোগ বিভাগের ওয়ার্ড না পেলে কলেজের পয়েন্ট কমে যাওয়ার এবং অ্যাক্রিডিটেশনে বড় ধরনের সমস্যা হওয়ার আশঙ্কা ছিল। এতে করে এই কলেজের শিক্ষার্থীদের দেশের বাইরে উচ্চশিক্ষা বা পড়াশোনা করার সুযোগ কমে যেত। এ ছাড়া এফসিপিএস এবং ডিপ্লোমা কোর্সের শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণের জন্যও এমন একটি ওয়ার্ড জরুরি ছিল।

কলেজ কর্তৃপক্ষের অনুরোধ শুনে সদ্যবিদায়ী পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফএম শামীম আহাম্মদ দ্রুত এই ওয়ার্ড চালুর উদ্যোগ নেন এবং গত বুধবার এটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনের সময় তাঁর সঙ্গে নতুন পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল পি কে এম মাসুদ-উল-ইসলামসহ মনোরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা উপস্থিত ছিলেন।

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফএম শামীম আহাম্মদ এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘উত্তরবঙ্গের সবচেয়ে বড় এই হাসপাতালে যে ৬৭ বছরেও মানসিক রোগীদের জন্য ওয়ার্ড চালু হয়নি, এটি সত্যিই অবাক হওয়ার মতো বিষয়। আমরা প্রয়োজনীয়তা অনুধাবন করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে এটি চালু করেছি। এখন থেকে এ অঞ্চলের মানসিক রোগীরা হাসপাতালে ভর্তি থেকেও উন্নত চিকিৎসা নিতে পারবেন।’

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফএম শামীম আহাম্মদ ২০২৩ সালের ৩১ জানুয়ারি রামেক হাসপাতালের পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তাঁর উদ্যোগেগত ২৩ অক্টোবর শুধু সাপে কাটা রোগীদের জন্য বিশেষায়িত ওয়ার্ড চালু করা হয়।

কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এই বিশেষায়িত ওয়ার্ড চালুর পর থেকে এখন পর্যন্ত রামেক হাসপাতালে একজনও সাপে কাটা রোগীর মৃত্যু হয়নি, যেখানে আগে প্রায় প্রতিদিনই এই রোগে মৃত্যুর ঘটনা ঘটতো। গতকাল বৃহস্পতিবার তিনি নতুন পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল পি কে এম মাসুদ-উল-ইসলামের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করেছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

রাজমিস্ত্রির বাড়ি থেকে অস্ত্র-গুলি উদ্ধার

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি
অভিযানে পাওয়া অস্ত্রসামগ্রী। ছবি: আজকের পত্রিকা
অভিযানে পাওয়া অস্ত্রসামগ্রী। ছবি: আজকের পত্রিকা

কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলায় সোহাগ হোসেন নামের এক রাজমিস্ত্রির বাড়িতে অভিযান চালিয়ে দুটি পিস্তল ও একটি ওয়ান শুটারগান উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে ওসমানপুর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ওসমানপুর কলপাড়া গ্রামে এই অভিযান চালান সেনাসদস্যরা। আজ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় খোকসা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোশাররফ হোসেন আজকের পত্রিকাকে এই তথ্য নিশ্চিত করেন।

জানা গেছে, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ক্যাপ্টেন মেহেদীর নেতৃত্বে কুষ্টিয়া সেনাক্যাম্পের রওশন আরা রেজিমেন্ট আর্টিলারি ইউনিটের একটি দল ওসমানপুর গ্রামের সোহাগ হোসেন নামের এক যুবকের বাড়িতে অভিযান চালায়। এ সময় বাড়ি তল্লাশি করে দুটি পিস্তল, একটি ওয়ান শুটারগান, গুলি, দেশীয় চাকু ও হাঁসুয়া পাওয়া যায়। তবে অভিযানে কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। সোহাগ হোসেন পেশায় একজন রাজমিস্ত্রি। তাঁর বাবার নাম আশরাফ হোসেন।

পুলিশ পরিদর্শক মোশাররফ হোসেন বলেন, সেনাবাহিনীর অভিযানে উদ্ধার করা অস্ত্র থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। এ বিষয়ে মামলার প্রস্তুতি চলছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

চাঁদপুরে নতুন ভোটারদের নিয়ে ‘নির্বাচনী অলিম্পিয়াড’

চাঁদপুর প্রতিনিধি
চাঁদপুর সরকারি কলেজ ক্যাম্পাসে নির্বাচনী অলিম্পিয়াডের আয়োজন করা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
চাঁদপুর সরকারি কলেজ ক্যাম্পাসে নির্বাচনী অলিম্পিয়াডের আয়োজন করা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

‘গণতন্ত্র শক্তিশালীকরণ’ কার্যক্রমের অংশ হিসেবে চাঁদপুরে শতাধিক নতুন ভোটারের অংশগ্রহণে ‘নির্বাচনী অলিম্পিয়াড’ অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) সকালে চাঁদপুর সরকারি কলেজ ক্যাম্পাসে দ্য হাঙ্গার প্রজেক্ট বাংলাদেশের আয়োজনে এবং সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) চাঁদপুর জেলা কমিটির সহযোগিতায় অনুষ্ঠানটি হয়।

আজ সকাল সাড়ে ৯টায় চাঁদপুর সরকারি কলেজ ক্যাম্পাসে জাতীয় সংগীত পরিবেশন ও বেলুন উড়িয়ে নির্বাচনী অলিম্পিয়াড অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন কলেজের উপাধ্যক্ষ প্রফেসর মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান মিয়া। নতুন ভোটারদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘এই অংশগ্রহণের মাধ্যমে নির্বাচনী আচরণবিধি, গণতন্ত্রের মূল্যবোধ, স্বচ্ছতা, জবাবদিহি, সুশাসন ইত্যাদি সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার সুযোগ হয়েছে। সুজনের সহযোগিতায় এই আয়োজন অবশ্যই অংশগ্রহণকারীদের অনেক সমৃদ্ধ করবে এবং সচেতন নাগরিক তৈরি হবে।’

পরে কলেজের অডিটরিয়ামে ৫০টি এমসিকিউ পদ্ধতির প্রশ্নের মাধ্যমে ৩০ মিনিটের পরীক্ষা হয়। অংশগ্রহণকারীদের মধ্য থেকে সর্বোচ্চ নম্বরপ্রাপ্ত ১০ জনকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। তাঁদের মধ্য থেকে প্রথম থেকে তৃতীয় স্থান অর্জনকারী তিনজন জাতীয় নির্বাচনী অলিম্পিয়াডে অংশগ্রহণ করার সুযোগ পাবেন। পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারীদের সনদ দেওয়া হয়।

পরীক্ষা শেষে সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য ও বিজয়ীদের হাতে সনদ তুলে দেন চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. নাজমুল ইসলাম সরকার। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সুজন চাঁদপুরের সভাপতি অধ্যক্ষ মোশারফ হোসেন। সঞ্চালনায় ছিলেন সুজনের আঞ্চলিক সমন্বয়ক নাছির উদ্দিন।

সুজন চাঁদপুর জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক রহিব বাদশা, শিক্ষক ওমর ফারুক, সংগঠক সালাউদ্দিন, কর আইনজীবী আব্দুল্লাহ আল ফারুক, সাংবাদিক আলম পলাশ, জাকির হোসেন, শোভন আল-ইমরান, মোরশেদ আলম রোকন, মো. মাসুদ আলম, শরীফুল ইসলামসহ সুজন জেলা কমিটির সদস্যরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত