Ajker Patrika

মিরসরাইয়ে পিকআপ ভ্যানের ধাক্কায় মা-ছেলের মৃত্যু

মিরসরাই (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি 
মিরসরাইয়ে পিকআপ ভ্যানের ধাক্কায় মা-ছেলের মৃত্যু। ছবি: আজকের পত্রিকা
মিরসরাইয়ে পিকআপ ভ্যানের ধাক্কায় মা-ছেলের মৃত্যু। ছবি: আজকের পত্রিকা

চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে পিকআপ ভ্যানের ধাক্কায় অটোরিকশা আরোহী মা-ছেলে নিহত হয়েছেন। এই ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও তিনজন। আজ রোববার উপজেলার বারইয়ারহাট-রামগড় সড়কের করেরহাট ফরেস্ট অফিস এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন ফটিকছড়ি উপজেলার মোহাম্মদপুর গ্রামের জাকির হোসেনের স্ত্রী রাবেয়া বেগম (৩৫) ও ছেলে মো. হোসেন (১০)। আর আহতরা হলেন খাগড়াছড়ির রামগড় উপজেলার কৌচিয়া গ্রামের আনজু বেগম (৪৫), তাঁর ছেলে নাহিদুল ইসলাম (৩) ও নোয়াখালীর চরজব্বর থানার রুহুল আমিনের ছেলে রাশেদ (২০)।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বারইয়ারহাট-রামগড় সড়কের করেরহাট ফরেস্ট অফিস এলাকায় দ্রুতগতির একটি পিকআপ ভ্যান বিপরীত দিক থেকে আসা একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশাকে ধাক্কা দিলে ঘটনাস্থলে মা-ছেলে নিহত হন, আহত হন তিনজন। পরে স্থানীয়রা হতাহতদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠান।

বিষয়টি নিশ্চিত করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক বাঁধন দাশ বলেন, সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত দুজনকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছিল। তাঁরা সম্পর্কে মা-ছেলে। আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

জানতে চাইলে জোরারগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম আবদুল হালিম বলেন, নিহতদের মরদেহ বর্তমানে পুলিশের হেফাজতে রয়েছে। আহতদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। পরে তাদের শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। দুর্ঘটনাকবলিত সিএনজি অটোরিকশাটি জব্দ করে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে মরদেহ দুটি পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাদির ইনকিলাব কালচারাল সেন্টার বন্ধ ঘোষণা

সুদানে সন্ত্রাসী হামলায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৬ শান্তিরক্ষী নিহত, যুদ্ধ চলমান: আইএসপিআর

হাদিকে গুলির ঘটনায় সন্দেহভাজন ফয়সাল ওরফে দাউদ কে, মাস্ক পরা ব্যক্তিটিই কি তিনি

আচরণবিধি লঙ্ঘন করায় বিএনপির প্রার্থীকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা

চার গুণ বাড়িয়ে পেঁয়াজ আমদানি দৈনিক ৬ হাজার টন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

দুর্গাপুরে বধ্যভূমিতে শহীদদের স্মরণে শ্রদ্ধা ও মোনাজাত

মিজান মাহী, দুর্গাপুর (রাজশাহী)  
বধ্যভূমিটি ধুয়েমুছে পরিষ্কার করা হচ্ছে। গতকাল তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা
বধ্যভূমিটি ধুয়েমুছে পরিষ্কার করা হচ্ছে। গতকাল তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা

১৯৭১ সালের ২২ অক্টোবর রাতে তৎকালীন পাকিস্তানি সেনাদের সহযোগিতায় রাজাকার, আলবদর, আলশামস ও শান্তি কমিটির সদস্যরা রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম থেকে মুক্তিযোদ্ধা ও সাধারণ মানুষকে ধরে এনে গগণবাড়িয়া গ্রামে বেঁধে রাখে। পরদিন শুক্রবার সন্ধ্যার দিকে তাঁদের গগণবাড়িয়া গ্রামের একটি মাঠে নিয়ে গিয়ে সারবদ্ধভাবে দাঁড় করিয়ে গুলি করে হত্যা করা হয়। এ ছাড়া অনেককে জীবন্ত মাটিচাপা দেওয়া হয়। এই ঘটনায় ১৮৫ জন শহীদ হন।

এই গণহত্যার স্মৃতি ধরে রাখতে এবং শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে গণকবরের পাশে একটি বধ্যভূমি নির্মাণ করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্তকারী কর্মকর্তারা ২০১১ সালের ৬ মার্চ গগণবাড়িয়া গ্রামে নারকীয় এই হত্যাযজ্ঞ ও জীবন্ত মানুষ মাটিচাপা দেওয়ার গণকবর ও বধ্যভূমি পরিদর্শন করলেও এখন পর্যন্ত এই ঘটনার বিচার কার্যক্রম শুরু হয়নি।

আজ রোববার (১৪ ডিসেম্বর) শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলা প্রশাসন ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদের উদ্যোগে গগণবাড়িয়া ঐতিহাসিক গণকবর ও বধ্যভূমিতে গণহত্যায় শহীদদের স্মরণে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হবে।

শনিবার দুপুরে গগণবাড়িয়া গ্রামের শহীদ মিনারে গিয়ে দেখা যায়, ঐতিহাসিক গণকবরের পাশে নির্মিত বধ্যভূমিটি ধুয়েমুছে পরিষ্কার করা হচ্ছে। দাওকান্দি সরকারি কলেজের প্রভাষক আয়নাল হক বলেন, ‘স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের বর্ণনা অনুযায়ী মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে গগণবাড়িয়া গ্রামের ১৮৫ জন মুক্তিযোদ্ধা ও সাধারণ মানুষকে গুলি করে এবং জীবন্ত মাটিচাপা দিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করে রাজাকার, আলবদর, আলশামস ও শান্তি কমিটির সদস্যরা।’

যুগিশো গ্রামের শহীদ মুক্তিযোদ্ধা যদুনাথ সরকারের ভাতিজা এবং প্রাইম ইউনিভার্সিটির উপাচার্য (ভিসি) অধ্যাপক ড. প্রফুল্ল চন্দ্র সরকার বলেন, ‘স্বাধীনতার পর দীর্ঘদিন সরকারি পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে গগণবাড়িয়া গ্রামের গণহত্যার স্থানটি অবহেলিত ছিল। পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন দপ্তর ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে আবেদন জানানো হলে ২০০২ সালে শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে ওই স্থানে গণকবরের পাশে বধ্যভূমি নির্মাণ করা হয়।’

উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ড কাউন্সিলের কমান্ডার মুক্তিযোদ্ধা আনিছুর রহমান বলেন, ‘গগণবাড়িয়া একটি ঐতিহাসিক স্থান। মহান মুক্তিযুদ্ধে সেখানে ভয়াবহ গণহত্যা চালানো হয়েছিল।’

দুর্গাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাশতুরা আমিনা বলেন, শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে ১৪ ডিসেম্বর সকাল ১০টায় গগণবাড়িয়ার গণকবর ও বধ্যভূমিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হবে। এ উপলক্ষে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাদির ইনকিলাব কালচারাল সেন্টার বন্ধ ঘোষণা

সুদানে সন্ত্রাসী হামলায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৬ শান্তিরক্ষী নিহত, যুদ্ধ চলমান: আইএসপিআর

হাদিকে গুলির ঘটনায় সন্দেহভাজন ফয়সাল ওরফে দাউদ কে, মাস্ক পরা ব্যক্তিটিই কি তিনি

আচরণবিধি লঙ্ঘন করায় বিএনপির প্রার্থীকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা

চার গুণ বাড়িয়ে পেঁয়াজ আমদানি দৈনিক ৬ হাজার টন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মোটরসাইকেলের সঙ্গে প্রাইভেট কারের মুখোমুখি সংঘর্ষ, নিহত ১

আদমদীঘি (বগুড়া) প্রতিনিধি
দুমড়েমুচড়ে যাওয়া মোটরসাইকেল। ছবি: আজকের পত্রিকা
দুমড়েমুচড়ে যাওয়া মোটরসাইকেল। ছবি: আজকের পত্রিকা

বগুড়ার আদমদীঘিতে মোটরসাইকেলের সঙ্গে প্রাইভেট কারের মুখোমুখি সংঘর্ষে রিমন হোসেন (১৭) নামের এক মোটরসাইকেল আরোহী নিহত হয়েছেন। গুরুতর আহত হয়েছেন আরও তিনজন। গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় বগুড়া-নওগাঁ মহাসড়কের সান্তাহার পূর্ব ঢাকা রোডে এই দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত রিমন হোসেন উপজেলার কাশিমালা গ্রামের উজ্জ্বল প্রামানিকের ছেলে।

আহত ব্যক্তিরা হলেন একই উপজেলার শিয়ালশন গ্রামের মিলন হোসেনের ছেলে মোস্তাকিম হোসেন (২৩), জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার তিলকপুরের পুনঘরদীঘি গ্রামের জুয়েল রানার ছেলে রাহিম রানা (২০) ও একই গ্রামের লিটন আলীর ছেলে তৌফিক আলী (২২)।

আদমদীঘি থানা-পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, আদমদীঘি উপজেলার সান্তাহার থেকে আদমদীঘি অভিমুখে যাচ্ছিল দুই মোটরসাইকেল। পরে ঘটনাস্থলে পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি প্রাইভেট কারের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ ঘটে দুটি মোটরসাইকেলের। এ সময় দুই মোটরসাইকেলে থাকা চার আরোহী গুরুতর আহত হন। স্থানীয় বাসিন্দারা আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং পরে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। রাত ১১টায় সেখানকার চিকিৎসক রিমন হোসেনকে মৃত ঘোষণা করেন।

এ বিষয়ে আদমদীঘি থানার উপপরিদর্শক বাবুল আকতার জানান, দুর্ঘটনায় দুমড়েমুচড়ে যাওয়া প্রাইভেট কার ও দুই মোটরসাইকেল উদ্ধার করে থানা হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাদির ইনকিলাব কালচারাল সেন্টার বন্ধ ঘোষণা

সুদানে সন্ত্রাসী হামলায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৬ শান্তিরক্ষী নিহত, যুদ্ধ চলমান: আইএসপিআর

হাদিকে গুলির ঘটনায় সন্দেহভাজন ফয়সাল ওরফে দাউদ কে, মাস্ক পরা ব্যক্তিটিই কি তিনি

আচরণবিধি লঙ্ঘন করায় বিএনপির প্রার্থীকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা

চার গুণ বাড়িয়ে পেঁয়াজ আমদানি দৈনিক ৬ হাজার টন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

চাঁদপুর সেচ প্রকল্প: ৩৫৪ কিমি খাল দখল-ভরাট

  • খালের পরিমাণ কাগজে ৭৫৪ কিমি, বাস্তবে ৪০০
  • ভরাট-দখলে নাই হয়ে গেছে প্রকল্পের ৩৫৪ কিমি
  • প্রয়োজনে পানি পাচ্ছেন না কৃষকেরা, অন্য সময়ে পানিতে নষ্ট হচ্ছে ফসল
  • প্রতিবন্ধকতা তৈরি করেন মাছচাষিরা
মুহাম্মদ মাসুদ আলম, চাঁদপুর
সদর উপজেলার বাগাদি ইউনিয়নের নানুপুর গ্রামে খালে বাঁধ দিয়ে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছেন মাছচাষিরা। সম্প্রতি তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা
সদর উপজেলার বাগাদি ইউনিয়নের নানুপুর গ্রামে খালে বাঁধ দিয়ে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছেন মাছচাষিরা। সম্প্রতি তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা

চাঁদপুর সেচ প্রকল্পের আওতাধীন সেকেন্ডারি সেচ খাল ৭৫৪ কিলোমিটার (কিমি) কাগজে থাকলেও বাস্তবে আছে ৪০০ কিমি। খালের বাকি অংশ বিভিন্নভাবে দখল ও ভরাট হয়ে গেছে। কৃষকদের অভিযোগ, নির্দিষ্ট সময়ে সেচের অভাবে ফসল উৎপাদনে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হচ্ছে। এতে অনাবাদি হয়ে পড়ছে কৃষিজমি। তাই জরুরি ভিত্তিতে খাল সংস্কার এবং অবৈধ দখল মুক্ত করতে হবে। পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) জানিয়েছে, সেচ নিশ্চিত করতে খালগুলো সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চাঁদপুর ও লক্ষ্মীপুর জেলার ছয়টি উপজেলার প্রকল্পভুক্ত আবাদযোগ্য জমিতে সেচ, বন্যা নিয়ন্ত্রণ ও নিষ্কাশন ব্যবস্থার মাধ্যমে আধুনিক পদ্ধতিতে কৃষি উৎপাদন বাড়াতে সেচ প্রকল্প তৈরি করা হয়। প্রকল্পভুক্ত ৫৩ হাজার

হেক্টর এলাকা বন্যামুক্ত এবং জলাবদ্ধতার হাত থেকে রক্ষা করে সাড়ে ২৮ হাজার হেক্টর জমিতে সেচ সুবিধা দেওয়ার লক্ষ্যে ১৯৭৮ সালে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হয়।

সরেজমিনে কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সঠিক সময়ে সেচের প্রতিবন্ধকতার বিষয়ে; বিশেষ করে বোরো আবাদের সময় পানি সংকট দেখা দেয় বলে জানিয়েছেন তাঁরা। ২০২৪ সালে সদর উপজেলার বাগাদি ইউনিয়নের ব্রাহ্মণ সাখুয়া গ্রামে পানির অভাবে ৪০ একর জমি অনাবাদি ছিল বলেও তথ্য মিলেছে।

মধ্য বাগাদি গ্রামের কৃষক দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘সামনে বোরো আবাদ শুরু হবে। গেল বছর মৌসুমের শুরুতে একবার পানি দেওয়ার পর সংকট শুরু হয়।

পানির অভাবে আমাদের জমিগুলো ফেটে যায়।’

একই এলাকার আরেক কৃষক কবির ঢালী বলেন, ‘সঠিক সময়ে পানি পাই না। প্রয়োজন শেষ হলে পানি পাওয়া যায়। তখন অতিরিক্ত পানিতে ধানগাছ নষ্ট হয়ে যায়। সেচ প্রকল্প করা হয়েছে ফসল উৎপাদনের জন্য। কিন্তু সেচ খালে মাছচাষিরা প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে রাখেন। তাঁদের পানির প্রয়োজনের কারণে পানি নিষ্কাশন বন্ধ থাকে। এসব সমস্যা দূর করতে হবে।’

পাশের নানুপুর গ্রামের কৃষক ইব্রাহীম গাজী বলেন, ‘বোরো মৌসুমে নদীতেও পানি কম থাকে। যে কারণে সেচ পাম্পগুলো চালিয়ে কোনো লাভ হয় না। পানির অভাবে আমাদের ধানের চারাগুলো নিস্তেজ হয়ে পড়ে।’

সদরের বালিয়া ইউনিয়নের দুর্গাদি গ্রামের কৃষক হান্নান গাজী বলেন, গেল বছর সেচ খালের কিছু অংশ সংস্কার হয়েছে। কিন্তু ওই খাল থেকে জমিগুলোতে পানি আসার জন্য সুরু খাল স্থানীয় লোকজন ভরাট করে রেখেছে। অনেক সময় লোকজন খালে মাছ ধরার জন্য বাঁধ দেয়; পরে সেগুলো অপসারণ না করায় পানি চলাচলে প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়।

একই ইউনিয়নের সাপদী গ্রামের কৃষক লেয়াকত হোসেন খান বলেন, সেচ খাল সংস্কার হলেও প্রধান খালের মুখে হাজার ফুট সংস্কার হয়নি। এ ছাড়া খালের বিভিন্ন অংশ ভরাট হয়ে গেছে, অনেকে বাড়িঘর তৈরি করেছে। সরকারিভাবে উদ্যোগ নিয়ে এসব সমস্যা দূর করতে হবে। ফসল উৎপাদনের জন্য সঠিক সময় পানি যেমন প্রয়োজন, তেমনি বর্ষা মৌসুমে পানি নিষ্কাশন দরকার হয়।

পানি উন্নয়ন বোর্ড চাঁদপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী (যান্ত্রিক) মো. রহুল আমিন বলেন, ‘কৃষকদের সেচ নিশ্চিত করতে আমাদের আন্তরিকতার অভাব নেই। তবে স্থানীয় মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানো প্রয়োজন। কারণ, তারা সেচ খালের বিভিন্ন স্থানে মাছ ধরার জন্য বাঁধ দেয়; পরে সেগুলো অপসারণ করা হয় না। আমরা নির্ধারিত সর্বোচ্চ পন্ড লেভেল (২.৪৪ মি.) পানি দিলেও প্রতিবন্ধকতার কারণে পানি খালে প্রবেশ করতে সমস্যার সৃষ্টি হয়। স্বাভাবিক থাকলে সব খালে পানি পৌঁছে যাওয়ার কথা।’ তিনি আরও বলেন, সেচ প্রকল্প প্রতিষ্ঠার সময় খাল ছিল ৭৫০ কিলোমিটার। এখন প্রায় ৪০০ কিলোমিটার খাল সচল রয়েছে। সেচ প্রকল্পের বাগাদি পাম্পহাউসের মেশিনগুলো প্রায় সাড়ে চার যুগ আগে বসানো। এগুলো এখন কোনোরকমে সংস্কার করে সেচ চালু রাখা হয়। তবে নতুন করে পাম্প মেশিন বসানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’

পানি উন্নয়ন বোর্ড চাঁদপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জহরুল ইসলাম বলেন, ‘প্রতিবছর বোরো আবাদের সময় কৃষকেরা পানি না পেলে অভিযোগ দেয়। তবে আমরা তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ করি। গেল বছর থেকে খাল সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়। ২৫ কিলোমিটার সংস্কার হয়েছে। এ বছর আরও ৩০ কিলোমিটার সংস্কার হবে। জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন ও কৃষি বিভাগের সঙ্গে সমন্বয় করা হয়েছে। জানুয়ারি মাসের মধ্যে পানি দেওয়া শুরু হবে। কোনো এলাকায় সেচসংকট দেখা দিলে ওই এলাকায় আমরা তাৎক্ষণিক পানির ব্যবস্থা করব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাদির ইনকিলাব কালচারাল সেন্টার বন্ধ ঘোষণা

সুদানে সন্ত্রাসী হামলায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৬ শান্তিরক্ষী নিহত, যুদ্ধ চলমান: আইএসপিআর

হাদিকে গুলির ঘটনায় সন্দেহভাজন ফয়সাল ওরফে দাউদ কে, মাস্ক পরা ব্যক্তিটিই কি তিনি

আচরণবিধি লঙ্ঘন করায় বিএনপির প্রার্থীকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা

চার গুণ বাড়িয়ে পেঁয়াজ আমদানি দৈনিক ৬ হাজার টন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

দুদকের জালে এমপি মন্ত্রী আমলা

জাহিদ হাসান, যশোর 
দুদকের জালে এমপি মন্ত্রী আমলা

জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ২০০৮ সালের ৩০ মার্চ যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদারের বিরুদ্ধে মামলা করেন দুদকের তৎকালীন উপপরিচালক মঞ্জুর মোর্শেদ। মামলার এজাহারে বলা হয়, শাহীন চাকলাদার ৩৮ লাখ টাকার সম্পদ গোপন করেছেন। দুদকের তদন্তে তা প্রমাণিতও হয়।

এরপর দলের শীর্ষ ক্ষমতায় থেকে শাহীন চাকলাদার তিনবার উপজেলা চেয়ারম্যান, পরবর্তী সময়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ব্যবসায়ী থেকে রাজনীতিক হয়ে ওঠা শাহীন দীর্ঘ ক্ষমতার আবর্তে হয়ে ওঠেন জেলার একক নিয়ন্ত্রক। ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকার কারণেই দৃশ্যত দুর্নীতির সেই মামলার রায় হয়নি। অবশেষে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর চলতি বছরের ২২ জানুয়ারি সেই মামলায় তাঁকে চার বছরের কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দিয়েছেন যশোরের আদালত। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর আত্মগোপনে চলে যান শাহীন। তাঁর বিরুদ্ধে সাজা ও গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত।

এদিকে ২০০৯-১৭ সাল পর্যন্ত যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য থাকা অধ্যাপক ড. আব্দুস সাত্তারের বিরুদ্ধে নিয়োগ-বাণিজ্য ও সরকারি অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে ২০২৩ সালের ২১ আগস্ট দুদক মামলা করে। অভিযোগে বলা হয়, ইউজিসির অনুমোদন ছাড়া নিয়োগ দিয়ে তিনি ৬১ লাখ ৩১ হাজার ৭৩২ টাকা আত্মসাৎ করেন। তদন্ত শেষে সম্প্রতি তিনিসহ তিনজনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দিয়েছে দুদক। বর্তমানে তিনি যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দী আছেন এবং তাঁর বিরুদ্ধে দুদকের দুটি মামলা বিচারাধীন।

শুধু শাহীন চাকলাদার কিংবা সাবেক ভিসি সাত্তার নয়; গণ-অভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে নড়েচড়ে বসেছেন যশোর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের দুদক কর্মকর্তারা। দুদকের জালে আটকে গেছেন যশোর ও নড়াইলের প্রভাবশালী সাবেক মন্ত্রী, এমপি, সরকারি কর্মকর্তারা। নজরদারিতে রয়েছেন অর্ধশতাধিক সরকারি আমলা ও সাবেক জনপ্রতিনিধি। ধরপাকড়ে স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ ক্রোক ও অবরুদ্ধে যেমন রেকর্ড সাফল্য দেখিয়েছে দুদক, তেমনি মামলা-চার্জশিটেও অপেক্ষাকৃত বেশি আসামিকে অভিযুক্ত করেছে সংস্থাটি।

যশোর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের তথ্যমতে, ২০২৪ সালের আগস্ট থেকে ২০২৫ সালের নভেম্বর পর্যন্ত এনফোর্সমেন্ট ছিল ১৬টি। অনুসন্ধান করেছে ৩৮টি। এরপর মামলা করা হয়েছে ২২টি। চার্জশিট দেওয়া হয়েছে ১৪টির। রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর দুদক সবচেয়ে বেশি অনুসন্ধান চালিয়েছে সাবরেজিস্ট্রি অফিস, কাস্টসম, বিআরটিএ, জেলা ও উপজেলায় সরকারি হাসপাতাল, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী, ভূমি অফিস, পৌরসভা, জেলা পরিষদসহ সরকারি দপ্তরগুলোতে। প্রায় প্রতিটি দপ্তরেই নানা অসংগতি দেখেছে। কয়েকটি জায়গায় মামলা করা হলেও বাকিগুলো তদন্তাধীন বলে জানা গেছে। আদালতের মাধ্যমে দুদক ইতিমধ্যে ছয় সাবেক জনপ্রতিনিধি এবং তাঁদের স্ত্রীদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। এর মধ্যে সাবেক প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য, সাবেক এমপি শাহীন চাকলাদার, সাবেক এমপি রনজিৎ রায়, সাবেক পৌর মেয়র জহিরুল ইসলাম চাকলাদার রেন্টু, সাবেক জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সাইফুজ্জামান পিকুল।

এ ছাড়া আরও তিনজনের জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে অনুসন্ধান চলছে। সর্বশেষ যশোর পৌরসভার সাবেক মেয়র হায়দার গনি খান পলাশ, যশোর-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মনিরুল ইসলামের বিরুদ্ধেও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অনুসন্ধান শুরু করেছে দুদক।

যেসব প্রভাবশালীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে

জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে নড়াইলের সাবেক এমপি কবিরুল হক মুক্তি ও তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধে চার্জশিট দিয়েছে দুদক। এ ছাড়া ক্ষমতার অপব্যবহার করে সঞ্চয় ব্যাংকের ১৭ গ্রাহকের পাস বই ব্যবহার করে সরকারি ১ কোটি ৭৮ লাখ ৫ হাজার টাকা আত্মসাতের মামলায় যশোরের সাবেক পোস্টমাস্টার মো. আব্দুল বাকিসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে দুদক চার্জশিট দিয়েছে।

অন্যদিকে যশোর শিক্ষা বোর্ডে ৭ কোটি টাকার চেক জালিয়াতি ও অর্থ আত্মসাতের প্রমাণ পাওয়ায় বোর্ডের হিসাব সহকারী আব্দুস সালামসহ দুদক ১১ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেছে। এ ছাড়া চলতি বছরের ৭ অক্টোবর আড়াই লাখ টাকা ঘুষসহ যশোরের বেনাপোল কাস্টম হাউসের রাজস্ব কর্মকর্তা শামীমা আক্তার ও সহযোগী হাসিবুর রহমানের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

জানতে চাইলে টিআইবি যশোরের সভাপতি পাভেল চৌধুরী বলেন, ‘বিগত সময়গুলোতে দুদক ক্ষমতাশালীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারেনি, এমন ঘটনা আছে অহরহ। সংস্থাটি বিগত সরকারের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে। এখন অনেকটা স্বাধীন হয়েছে বলেই বিগত সরকারের আমলা ও জনপ্রতিনিধিরা তাদের জালে আটকে যাচ্ছে।’

এ বিষয়ে দুদক যশোরের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে উপপরিচালক মো. সালাহউদ্দিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘দুদক বিগত সময়কালের চেয়ে এখন অনেক বেশি স্বাধীন। দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণে কাজ করছে। অভিযোগ পেলেই আমরা তদন্ত করেছি। তদন্ত শেষে প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়েছে।

তা ছাড়া বিভিন্ন সময় অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বিভিন্নজনকে নজরদারিতে রাখা হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাদির ইনকিলাব কালচারাল সেন্টার বন্ধ ঘোষণা

সুদানে সন্ত্রাসী হামলায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৬ শান্তিরক্ষী নিহত, যুদ্ধ চলমান: আইএসপিআর

হাদিকে গুলির ঘটনায় সন্দেহভাজন ফয়সাল ওরফে দাউদ কে, মাস্ক পরা ব্যক্তিটিই কি তিনি

আচরণবিধি লঙ্ঘন করায় বিএনপির প্রার্থীকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা

চার গুণ বাড়িয়ে পেঁয়াজ আমদানি দৈনিক ৬ হাজার টন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত