Ajker Patrika

পরীক্ষায় প্রথম, ঘুষ না দেওয়ায় ফের বিজ্ঞপ্তি

  • ১০ লাখ ঘুষ চাওয়ার অভিযোগে ডিসি ও অধ্যক্ষসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা।
  • জবাব না দেওয়ায় নিয়োগের ওপর আদালতের নিষেধাজ্ঞা।
গনেশ দাস, বগুড়া 
আপডেট : ১৯ নভেম্বর ২০২৫, ১১: ১১
পরীক্ষায় প্রথম, ঘুষ না দেওয়ায় ফের বিজ্ঞপ্তি

বগুড়ায় একটি মাদ্রাসার গবেষণাগার বা ল্যাব সহকারী পদে চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় প্রথম হওয়ার পরও ঘুষের ১০ লাখ টাকার দাবি পূরণ না করায় এক যুবককে চাকরি থেকে বঞ্চিত করার অভিযোগ উঠেছে। নিয়োগ কমিটির সভাপতি জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেও কোনো সুরাহা না হওয়ায় শেষ পর্যন্ত আদালতে মামলা করেছেন চাকরিবঞ্চিত ওই যুবক। মামলা করার পর আদালত কৈফিয়ত তলব করলেও কোনো জবাব না দেওয়ায় নিয়োগের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।

মামলায় বিবাদী করা হয়েছে বগুড়ার জেলা প্রশাসক (ডিসি), নামুজা এসএসআই ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ, মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকসহ সাতজনকে।

জানা গেছে, বগুড়া শহরের মাটিডালি এলাকার শাহাদত হোসাইন গত ৯ অক্টোবর বগুড়ার প্রথম জ্যেষ্ঠ সহকারী জজ আদালতে মামলা করেন। তিনি নামুজা এসএসআই ফাজিল (ডিগ্রি) মাদ্রাসায় গবেষণাগার বা ল্যাব সহকারী পদে চাকরিপ্রার্থী ছিলেন।

বাদী অভিযোগ করেন, পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেখে তিনি গবেষণাগার বা ল্যাব সহকারী পদে চাকরির আবেদন করেন। গত ১৩ সেপ্টেম্বর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে তিনি লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নেন। পরীক্ষার ফলাফলে তিনি ৩৪ দশমিক ৫০ নম্বর পেয়ে প্রথম স্থান অধিকার করেন এবং তাঁকে নিয়োগ কমিটি স্বাক্ষরিত ফলাফল বিবরণী সরবরাহ করা হয়।

এরপর গত ১৫ সেপ্টেম্বর মাদ্রাসার অধ্যক্ষ রুস্তম আলী মোবাইল ফোনে বাদীকে মাটিডালি মোড়ে একটি হোটেলে ডেকে নেন। সেখানে ব্যবস্থাপনা কমিটির কয়েকজন সদস্যের উপস্থিতিতে নিয়োগপত্র দেওয়ার আগে ১০ লাখ টাকা ঘুষ দাবি করেন তাঁরা। বাদী টাকা দিতে অস্বীকার করায় গত ৬ অক্টোবর স্থানীয় পত্রিকায় আবারও ওই পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। আবারও নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেখে ৬ অক্টোবর বিকেলে জেলা প্রশাসক হোসনা আফরোজার সঙ্গে দেখা করে ঘুষ দাবির বিষয়টি জানান বাদী। এ সময় জেলা প্রশাসক দুর্ব্যবহার করে চাকরিপ্রার্থীকে কক্ষ থেকে বের করে দেন। পরে শাহাদত হোসেন ঘুষ দাবির বিষয়টি লিখিতভাবে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে জমা দিয়ে রিসিভ কপি নেন। এরপর ৯ অক্টোবর আদালতে মামলা করেন।

ঘুষ চাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ রুস্তম আলী বলেন, ‘ঘুষ দাবির বিষয়টি সঠিক নয়। এমনকি ওই চাকরিপ্রার্থীর সঙ্গে আমার দেখা পর্যন্ত হয়নি।’ তিনি আরও বলেন, ‘আগামী তারিখে আদালতে জবাব দাখিল করব।’

জেলা শিক্ষা অফিসার রমজান আলী আকন্দ বলেন, ‘নামুজা এসএসআই ফাজিল ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে। চাকরিপ্রার্থীর কাছে ঘুষ দাবির অভিযোগটি পেয়েছি। নতুন জেলা প্রশাসক যোগদান করেছেন, তাঁর সঙ্গে পরামর্শ করে তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে।’

বাদীপক্ষের আইনজীবী আনোয়ার হোসেন বলেন, আদালত বিবাদীদের সাত দিনের সময় দিয়ে কৈফিয়ত তলব করেছিলেন। কিন্তু বিবাদীরা কোনো জবাব না দেওয়ায় আদালত নিয়োগের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারির আদেশ দিয়েছেন। ২০ নভেম্বর পরবর্তী শুনানির তারিখ রয়েছে।

বগুড়ার তৎকালীন জেলা প্রশাসক হোসনা আফরোজা ১৬ নভেম্বর বদলির কারণে দায়িত্ব হস্তান্তর করেছেন। এ বিষয়ে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। এ বিষয়ে বগুড়া জেলাজজ আদালতের গভর্নমেন্ট প্লিডার (জিপি) শফিকুল ইসলাম টুকু বলেন, ‘মামলার বিষয়ে আমার জানা আছে। ডিসির ব্যক্তিগত নামে মামলা হয়নি। পদের ওপর এ ধরনের অসংখ্য মামলা হয়ে থাকে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বিএনপির আপত্তি তোলা দুই অধ্যাদেশে উপদেষ্টা পরিষদের অনুমোদন

ভারতে পা রাখলেন পুতিন, নিয়ম ভেঙে ‘কোলাকুলি’ করলেন মোদি

মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা—জনসংখ্যার তীব্র সংকটে ইউক্রেন

বাংলাদেশি ও পাকিস্তানি শিক্ষার্থী ভর্তি স্থগিত করেছে যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়

গোপালগঞ্জে শিক্ষকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ, ছাত্রীর আত্মহত্যা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ