Ajker Patrika

মুলাদীতে সাত বছর আগের খুনের জেরে দুজনকে কুপিয়ে হত্যা

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল ও মুলাদী প্রতিনিধি
মুলাদীতে সাত বছর আগের খুনের জেরে দুজনকে কুপিয়ে হত্যা

বরিশালের মুলাদী, মাদারীপুরের কালকিনি ও শরিয়তপুরের ঘোসাইরহাট সীমান্ত এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুজনকে কুপিয়ে হত্যা করেছে প্রতিপক্ষরা। গতকাল সোমবার রাত ৮টার দিকে উপজেলার সফিপুর ইউনিয়নের উত্তর পশ্চিম বালিয়াতলী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় পুলিশসহ ১০ জন আহত হয়েছেন। হামলার পর থেকে নিখোঁজ রয়েছেন আরও দুজন। এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। পরবর্তী সংঘর্ষ এড়াতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

নিহতরা হলেন সফিপুর ইউনিয়নের উত্তর পশ্চিম বালিয়াতলী গ্রামের আলমগীর কবিরাজ (৫০) এবং বাটামারা ইউনিয়নের পূর্ব তয়কা গ্রামের হেলাল ব্যাপারী (৩২)। পুলিশের উপস্থিতিতে প্রতিপক্ষের লোকজন তাঁদের হত্যা করেছে বলে পরিবারের লোকজন দাবি করেছেন।

এদিকে এই হত্যাকাণ্ডের পর হেলাল ব্যাপারীর ভাই কামাল ব্যাপারী এবং তয়কা গ্রামের মোতালেব হোসেনের ছেলে মমিন হোসেন নিখোঁজ রয়েছেন বলে জানিয়েছেন তাদের স্বজনেরা।

বরিশালের মুলাদীতে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে হামলায় নিহতদের স্বজনদের আহাজারিখোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ৭ বছর আগে সংঘটিত হত্যার জেরে সোমবার রাতে এই জোড়া খুনের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। মুলাদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তুষার কুমার মণ্ডল বলেন, হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ইউপি সদস্য আলম ব্যাপারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আরও পাঁচজনকে আটক করা হয়েছে।

সরেজমিনে মঙ্গলবার সকালে ঘটনাস্থল উত্তর পশ্চিম বালিয়াতলী পরিদর্শন করে দেখা গেছে, নিহত আলমগীর পরিবারের স্বজনেরা বিলাপ করছেন। আশপাশের প্রতিবেশীরা অবস্থান করছিলেন। গোটা এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছিল। একই সময় মুলাদী থানা-পুলিশ পাশের জাগরিন বাজারে অবস্থান করেন। 

নিহত আলমগীরের স্ত্রী রাবেয়া বেগম জানান, ২০১৬ সালে একটি হত্যা মামলার আসামি হওয়ার পরে আলমগীর কবিরাজ এলাকা ছেড়ে চলে যান। গত মার্চে তিনি এলাকায় ফেরেন। এরপর থেকে উত্তর বালিয়াতলী গ্রামের দাদন হাওলাদার ও তাঁদের লোকজন বিভিন্ন হুমকি দেন। এর মধ্যে কয়েক দিন আগে পাশের তয়কা-টুমচর গ্রামের আকন গ্রুপ ও হাজি গ্রুপের মধ্যে প্রকাশ্যে দ্বন্দ্ব শুরু হয়। আলমগীর কবিরাজ আকন গ্রুপের পক্ষে অবস্থান নেওয়ায় হাজি গ্রুপের আলম ব্যাপারী ও তাদের লোকজন ক্ষিপ্ত হন।

রাবেয়া বেগম আরও জানান, আলম ব্যাপারী সোমবার ২-৩টি ট্রলারে করে বহিরাগত লোক নিয়ে তয়কা-টুমচর এলাকায় আসেন। তাদের সঙ্গে উত্তর বালিয়াতলী গ্রামের দাদন হাওলাদারের লোকজন যুক্ত হয়। সংঘর্ষের আশঙ্কায় বিষয়টি থানা-পুলিশকে জানানো হয়। সোমবার রাত ৮টার দিকে পুলিশের উপস্থিতিতে আলম ব্যাপারী, দাদন হাওলাদারে ছেলে কাজল, ইয়াকুব, মৃত আনিচ হাওলাদারের ছেলে নয়ন, সজল, আলমগীর হাওলাদারের ছেলে মিলন ও রবিনসহ অর্ধশত লোক দেশীয় অস্ত্র ও হাতবোমা নিয়ে আলমগীর কবিরাজ, কামাল ব্যাপারী ও হেলাল ব্যাপারীদের ওপর হামলা চালায়।

বরিশালের মুলাদীতে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে হামলায় দুজন নিহত হওয়ার পর পুলিশের অবস্থানপ্রাণভয়ে আলমগীর কবিরাজ দৌড়ে নিজের বাড়িতে পাশের সমীর কবিরাজের লাকড়ির ঘরে খড়ের গাঁদায় লুকান এবং হেলাল ব্যাপারী সমীর কবিরাজের ঘরের মধ্যে আশ্রয় নেন। হামলাকারীরা সেখানে পৌঁছালে সমীর কবিরাজের স্ত্রী হেলাল ব্যাপারীকে বের করে দিলে তাঁকে রামদা দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে প্রতিপক্ষরা। এ ছাড়া লাকড়ির ঘরের খড়ের গাঁদার মধ্যে আলমগীর কবিরাজকে টেটা ও রামদা দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে। এ সময় পুলিশ আশপাশেই অবস্থান করছিল। পরে মঙ্গলবার ভোরে পুলিশ আলমগীর এবং হেলালের লাশ উদ্ধার করেছে।

এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন ঘটনার পর জাগরনী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে একটি অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প স্থাপন করা হয়েছে। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে এ তথ্য জানিয়েছেন পুলিশ সুপার মো. ওয়াহিদুল ইসলাম। তিনি বলেন, ঘটনার পর অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এ ছাড়া থানা-পুলিশ, ফাঁড়ি পুলিশের পাশাপাশি গোয়েন্দা পুলিশ এলাকায় অবস্থান করছেন।

পুলিশ সুপার আরও বলেন, ‘আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে তয়কা-টুমচর ও বালিয়াতলী এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। এলাকায় শান্তি-শৃঙ্খলার জন্য একাধিকবার বৈঠক করা হয়েছিল। সোমবারের ঘটনায় পুলিশসহ বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে। পুলিশের বিরুদ্ধ অভিযোগ থাকলে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। নিহতের পরিবারের অভিযোগ পেলে মামলা এবং দ্রুত আসামিদের গ্রেপ্তার করা হবে।’ 

যে কারণে হত্যাকাণ্ড
এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ২০১৬ সালের ৯ সেপ্টেম্বর দিনদুপুরে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে উত্তর বালিয়াতলী গ্রামের আনিচ হাওলাদারকে হত্যা করা হয়। ওই হত্যাকাণ্ডে আলমগীর কবিরাজ ও তাঁর লোকজন নেতৃত্ব দিয়েছিল বলে অভিযোগ রয়েছে। ওই ঘটনায় আনিচ হাওলাদারের ভাই দাদন হাওলাদার বাদী হয়ে আলমগীর কবিরাজ, হেলাল ব্যাপারী, কামাল ব্যাপারীসহ ৫০ জনকে আসামি করে মামলা করে। মামলার পর থেকে আসামিরা দীর্ঘদিন ধরে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে ছিলেন।

চলতি বছর মার্চে আলমগীর কবিরাজ লোকজন নিয়ে এলাকায় ফিরে আসলে উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। এ ছাড়া তয়কা-টুমচর এলাকায় আকন ও হাজি গ্রুপের মধ্যে দ্বন্দ্বে একাধিকবার হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে আলমগীর কবিরাজ আকন গ্রুপের পক্ষে অবস্থান নিয়ে হাজি গ্রুপের আলম ব্যাপারী এবং রুবেল শাহর বাড়িতে হামলা করেছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে। ২০১৬ সালে হত্যাকাণ্ডের প্রতিশোধ নিতে এবং এলাকায় আধিপত্য বিস্তার করতে এই হত্যার ঘটনা ঘটেছে বলে দাবি স্থানীয়দের।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ভোলায় ট্রাকচাপায় প্রাণ গেল তরুণীসহ ৩ অটোযাত্রীর

বোরহানউদ্দিন (ভোলা) প্রতিনিধি 
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

ভোলার বোরহানউদ্দিনে ট্রাকচাপায় সিএনজিচালিত অটোরিকশার তিন যাত্রী নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন আরও তিনজন। আজ রোববার উপজেলার মানিকার হাটবাজারসংলগ্ন এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত ব্যক্তিরা হলেন মো. মিজান (৩৬), রিয়াজ উদ্দিন ও আজমিরী আমরিন (২০)। এর মধ্যে মো. মিজান ও রিয়াজ উদ্দিন ঘটনাস্থলেই মারা যান। গুরুতর আহত অবস্থায় আজমিরী আমরিনকে ভোলার ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, দুপুরে লালমোহন থেকে চালকসহ পাঁচ যাত্রী নিয়ে একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা ভোলার দিকে যাচ্ছিল। পথে মানিকার হাটবাজার এলাকায় পৌঁছালে দ্রুতগতির একটি ট্রাক অটোরিকশাটিকে চাপা দেয়। এতে সেটি দুমড়েমুচড়ে যায় এবং ঘটনাস্থলেই দুই যাত্রীর মৃত্যু হয়।

দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত অটোরিকশাচালকসহ তিন যাত্রীকে উদ্ধার করে স্থানীয় বাসিন্দারা হাসপাতালে ভর্তি করেন। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও একজনের মৃত্যু হয়।

এ বিষয়ে জেলা পুলিশ সুপার শহীদুল্লাহ কাওসার জানান, পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে দুজনের মরদেহ উদ্ধার করেছে। এ ছাড়া গুরুতর আহত অবস্থায় চারজনকে হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও একজনের মৃত্যু হয়। দুর্ঘটনার বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নওগাঁ-৫: নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালেন এনসিপি নেত্রী মনিরা শারমীন

নওগাঁ সংবাদদাতা
এনসিপি নেত্রী মনিরা শারমীন। ছবি: সংগৃহীত
এনসিপি নেত্রী মনিরা শারমীন। ছবি: সংগৃহীত

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করেছেন নওগাঁ-৫ আসনে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মনোনীত প্রার্থী মনিরা শারমীন। আজ রোববার বিকেল ৫টা ৪৫ মিনিটে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দীর্ঘ এক পোস্ট দিয়ে তিনি এই ঘোষণা দেন।

মনিরা শারমীন লিখেছেন, ‘নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের আকাঙ্ক্ষায় গড়া দল জাতীয় নাগরিক পার্টি গণ-অভ্যুত্থান পরবর্তী একমাত্র মধ্যপন্থী রাজনীতির ভরসাস্থল ছিল। এই দল থেকে ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচনে নওগাঁ-৫ থেকে আমি মনোনীত প্রার্থী। তবে মনোনয়ন পাওয়ার আগে আমি জানতাম না, এই দল জামায়াতের সঙ্গে ৩০ সিটের আসন সমঝোতা করবে। আমি জানতাম, ৩০০ আসনে প্রার্থী দিয়ে একক নির্বাচনের সিদ্ধান্ত ছিল। যেহেতু এখন দলের পজিশন পরিবর্তন হয়েছে, তাই আমি নিজেকে নির্বাচন থেকে প্রত্যাহার করছি। নির্বাচনে আমি অংশগ্রহণ করছি না।’

মনিরা শারমীন আরও বলেছেন, ‘আমি এনসিপির স্বতন্ত্র শক্তিতে বিশ্বাসী। দলের প্রতি আমার কমিটমেন্ট আমি ভাঙি নাই। কিন্তু এই মুহূর্তে দলের প্রতি কমিটমেন্টের চেয়ে আমার গণ অভ্যুত্থানের প্রতি কমিটমেন্ট ও দেশের মানুষের প্রতি কমিটমেন্ট বড় হয়ে দাঁড়িয়েছে।’

মনিরা শারমীন আরও লেখেন, ‘আমি দল থেকে পদত্যাগ করার ব্যাপারে কোন সিদ্ধান্ত নিই নাই। এনসিপি কারও একার সম্পত্তি না। এনসিপি যতখানি শীর্ষ নেতৃত্বের, তার থেকে অনেক বেশি আমার। আজ পর্যন্ত এমন কিছু বলি নাই বা করি নাই যাতে দল বিতর্কিত হয়। তবে নিজের নৈতিকতা বিক্রি করে রাজনীতি করতে চাই না, ক্ষমতায় যেতে চাই না।’

উল্লেখ্য, ১০ ডিসেম্বর নওগাঁ-৫ (সদর) আসনে দলটির কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক মনিরা শারমীনকে মনোনয়ন দেওয়া হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

‎হাদি হত্যার বিচারের দাবিতে টঙ্গীতে মহাসড়ক অবরোধ, বিক্ষোভ

টঙ্গী (গাজীপুর) প্রতিনিধি
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে আজ রোববার গাজীপুরের টঙ্গীতে মহাসড়ক অবরোধ। ছবি: আজকের পত্রিকা
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে আজ রোববার গাজীপুরের টঙ্গীতে মহাসড়ক অবরোধ। ছবি: আজকের পত্রিকা

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে গাজীপুরের টঙ্গীতে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে ছাত্র-জনতা।

অবরোধের কারণে প্রায় দুই ঘণ্টা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের যান চলাচল বন্ধ থাকে। ভোগান্তিতে পড়ে এই মহাসড়কে চলাচলকারী যাত্রীরা। ‎

আজ রোববার (২৮ ডিসেম্বর) বিকেল পৌনে ৪টা থেকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের টঙ্গী কলেজ গেট এলাকায় এই অবরোধ কর্মসূচি পালন করা হয়।

সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে মহাসড়কে মাগরিবের নামাজ আদায় শেষে পুলিশের অনুরোধে বিক্ষুব্ধরা মহাসড়ক ছেড়ে চলে যান। ‎ছাত্র-জনতার ব্যানারে পালিত কর্মসূচিতে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরাও অংশ নেয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

‘তোর পুরস্কার গুলিতে মৃত্যু, দাফন-কাফনের জন্য তৈরি হ’

বাগেরহাট প্রতিনিধি
সায়মন শমিত জিয়ন । ছবি: সংগৃহীত
সায়মন শমিত জিয়ন । ছবি: সংগৃহীত

জাতীয় ছাত্রশক্তি বাগেরহাট জেলার আহ্বায়ক সায়মন শমিত জিয়নকে গুলি করে হত্যার হুমকি দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। গত মঙ্গলবার গভীর রাতে জেলার মোরেলগঞ্জ পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডে জিয়নের বাড়ির গেটে রেখা যাওয়া একটি চিরকুটে এই হুমকি দেওয়া হয়।

এ ঘটনায় পরদিন থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন ভুক্তভোগী।

এদিকে আজ রোববার হুমকির চিরকুটটি জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখ্য সংগঠক শেখ বাদশা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট দিলে বিষয়টি জানাজানি হয়।

জানতে চাইলে সায়মন শমিত জিয়ন বলেন, ২৩ ডিসেম্বর রাত আনুমানিক ১১টা ২৫ মিনিটে প্রতিদিনের মতো বাড়িতে ফেরার সময় তিনি বাড়ির মূল গেটের সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখা একটি চিরকুট দেখতে পান। কাগজটি খুলে দেখতে পান, সেখানে লেখা ছিল—‘সায়মন জিয়ন। তোর পুরস্কার গুলিতে মৃত্যু। দাফন-কাফনের জন্য তৈরি হ। জুলাই... জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু।’

চিরকুটের ভাষা ও হুমকির ধরন দেখে তাঁর ধারণা, তাঁকে পরিকল্পিতভাবে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে।

সায়মন শমিত জিয়ন বলেন, ‘আমরা জুলাইয়ে রাজপথে ছিলাম, গুলির মুখোমুখি হয়েই স্বৈরাচার পতনের আন্দোলন করেছি। এসব হুমকি-ধমকিতে আমরা ভয় পাই না। মৃত্যুর ভয় দেখিয়ে আমাদের থামানো যাবে না। দেশের জন্য আমরা যে কাজ করেছি এবং ভবিষ্যতেও যে কাজ করব, তা অব্যাহত থাকবে।

‘কিছুদিন আগে জুলাই আন্দোলনের সম্মুখসারির যোদ্ধা শরিফ ওসমান হাদি ভাইকে মাথায় গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। তিনি আজ জাতির কাছে একজন শহীদ। তিনি জুলাইকে ধারণ করেই শহীদ হয়েছেন, জুলাইকে বিক্রি করেননি। আমরাও সেই পথেই হাঁটতে চাই।’

সায়মন শমিত জিয়ন আরও বলেন, ‘হুমকির বিষয়টি আমি কিছু মনে না করলেও পরিবারের সবাই খুবই আতঙ্কে আছে।’

এ বিষয়ে মোরেলগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাহমুদুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, চিরকুটের মাধ্যমে হত্যার হুমকি দেওয়ার ঘটনায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। তার ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে এবং ছাত্রদের নিরাপত্তার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত