Ajker Patrika

‘ওরে বাপরে ভূমি অফিস! ওহানে তো ঘুষ ছাড়া কোনো কামই অয়না’

রুদ্র রুহান, বরগুনা
‘ওরে বাপরে ভূমি অফিস! ওহানে তো ঘুষ ছাড়া কোনো কামই অয়না’

ভূমি অফিসের কথা শুনতেই বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার কালমেঘা ইউনিয়নের আজাদুল ইসলাম বলে ওঠেন, ‘ওরে বাপরে ভূমি অফিস! ওহানে তো ঘুষ ছাড়া কোনো কামই অয়না।’ গত বছরের ডিসেম্বর মাসে ইউনিয়ন ভূমি অফিসে গিয়েছিলেন জমির দাখিলার জন্য। কিন্তু সেখানের এক কর্মচারীর ঘুষের শিকার হতে হয়েছে তাঁকে। 

আজাদুল ইসলাম বলেন, ‘মুই একটা দাহিলা (দাখিলা) আনতে ভূমি অফিসে গেছালাম। তহশিলদারের সহকারী পঙ্কজ চন্দ্র মোরে কয় জমি নদী সিকস্তিতে গ্যাছে। জরিপ কইরা হেইয়ার পর দাহিলা দেওন যাইবে। হেরপর মোরো আড়ালে ডাইক্কা কয় ৫ হাজার টাহা দেলে দাহিলা দেতে পারমু। পরে টাহা গুছাইয়া লইয়া গেছি পর মোরে দাহিলা কাইট্টা দেছে। দাহিলায় ল্যাকছে ৫০০ টাহা।’ 

জেলা রাজস্ব বিভাগের তথ্য মতে, বরগুনা জেলায় মোট ২৪টি ইউনিয়ন ভূমি অফিস, পাঁচটি উপজেলা সাবরেজিস্ট্রার অফিস, ও জেলা রেজিস্ট্রারের কার্যালয় রয়েছে। 

সরেজমিন অনুসন্ধান ও ভুক্তভোগীদের দেওয়া তথ্যে জানা গেছে, ইউনিয়ন ভূমি অফিস থেকে শুরু করে উপজেলা ও জেলা সাবরেজিস্ট্রার কার্যালয় পর্যন্ত কোনো কাজে গেলে ঘুষ ছাড়া সে কাজ হয় না। বরং পর্যায়ক্রমে টাকার অঙ্ক বাড়তে থাকে। তৃণমূল পর্যায়ে ভূমি সংক্রান্ত সেবা পেতে প্রথমেই ইউনিয়ন ভূমি অফিসে দায়িত্বপ্রাপ্ত একজন তহশিলদারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। ইউনিয়ন ভূমি অফিসে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের বাসিন্দাদের বেশির ভাগই সাধারণত জমির খাজনা দিয়ে দাখিলা নিতে আসেন। এ ছাড়া জমি জমা সংক্রান্ত সাধারণ তথ্য খোঁজ করতে ইউনিয়ন ভূমি অফিসে যোগাযোগ করেন। আর এখানে এসেই প্রথম বিড়ম্বনার শিকার হতে হয়, ঘুষ না দিয়ে কেউই কোনো সেবা পান না এমন অভিযোগ ভুক্তভোগীদের। 

বরগুনা সদর ইউনিয়নে হেউলীবুনিয়া এলাকার আবদুস সত্তার গত সোমবার সকালে দাখিলার জন্য গিয়েছিলেন। নিয়মানুযায়ী জমির খাজনা দিতে চাইলেও তার কাছে ১০ হাজার টাকা দাবি করা হয়। অগত্যা বাধ্য হয়ে আট হাজার টাকায় তিনি দাখিলা কাটেন আর দাখিলায় খাজনা জমা দেখানো হয় মাত্র ২২০ টাকা। এ বিষয়ে সাত্তার বলেন, ‘এখানে অতিরিক্ত টাকা বা ঘুষ না দিয়ে কাজ আদায় করতে পেরেছে এমন ভাগ্যবান ব্যক্তির কথা আমার জানা নেই। প্রত্যেক এলাকায় ভূমি অফিসের নির্দিষ্ট দালাল আছে। এই দালালদের মাধ্যমে সব কাজ করতে হয়। নয়তো আপনাকে চরম বিড়ম্বনায় পড়তে হবে।’ 

একই অবস্থার কথা জানিয়েছেন বরগুনার ২৪টি ইউনিয়ন ভূমি অফিসের ভুক্তভোগী সেবা গ্রহীতারা। ইউনিয়ন ভূমি অফিসে দাখিলা, দাগ-খতিয়ান ও মিউটেশনের তথ্য সরবরাহে ঘুষ না দিলে ঘুরতে হয় দিনের পর দিন। অবশেষে ধার্যকৃত টাকা দিয়ে কাজ সম্পন্ন করতে হয়। রোববার সরেজমিনে বরগুনা সদরের ফুলঝুড়ি ভূমি অফিসে গেলে দেখা যায়, ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধ রশিদে শাহজাহান বিশ্বাসের দাখিলায় ৮৮ টাকা লেখা। কিন্তু রাখা হয়েছে ১০০ টাকা। এর আগে সোমবার তারাবানু, রুনু, মাজেদা ও ফারুক প্রত্যেকের কাছ থেকে ২০০ টাকা করে মোট ৮০০ টাকা রাখা হয়েছে। অথচ, দাখিলা রশিদে ২০ টাকা। 

দাখিলা কাটতে আসা ফুলঝুড়ি ইউনিয়নের বাসিন্দা মো. রফিক হাওলাদার বলেন, অনেক আগে থেকেই এখানে ঘুষ বাণিজ্য চলে। আমরা যদি প্রতিবাদ করি তাহলে কোনো কাজ হয় না। তাই ঘুষ দিয়েই কাজ করি। 

এ তো গেল ইউনিয়ন ভূমি অফিসের গল্প। উপজেলা থেকে জেলা যেখানে যাবেন ঘুষ দিতেই হবে। আর ধাপে ধাপে বাড়বে ঘুষের টাকার পরিমাণ। গত রোববার দুপুরে বরগুনা সদর উপজেলার ভূমি অফিসের সামনে অপেক্ষমাণ কয়েকজন ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, উপজেলা সাবরেজিস্ট্রার কার্যালয়ে কোনো কাজের জন্য আসলে অগ্রিম ঘুষ দিতে হয়। আর ঘুষ দিলেই কেবল বালামে হাত দেন সংশ্লিষ্টরা। আর না দিলে নানা বিড়ম্বনার শিকার হতে হয়। 

এমন বিড়ম্বনার শিকার হওয়া কয়েকজনের সঙ্গে রোববার দুপুরে সদর উপজেলা সাবরেজিস্ট্রারের কার্যালয়ের সামনে কথা হয়। সদরের এম বালিয়াতলীর তালতলী এলাকার কৃষক সেন্টু মিয়া বরগুনা সাবরেজিস্ট্রার কার্যালয়ে এসেছেন নষ্ট হয়ে যাওয়া জমির দলিল ওঠানোর জন্য। তার কাছ থেকে দুই হাজার টাকা ঘুষ নিয়েছেন অফিসের একজন সহকারী রেকর্ড কিপার। সদর উপজেলার রায়ভোগ এলাকার ইউনুস মিয়াও এসেছেন দলিল খুঁজতে। তাঁর কাছ থেকে ঘুষ নিয়েছেন এই অফিসের একজন কর্মচারী। ইউনুস বলেন, ‘এখানে পিয়ন–ঝাড়ুদার থেকে শুরু করে সবাই সুযোগ পেলে ঘুষ নেন। আমরা এখানে এসে টাকা ছাড়া কোনো কাজই করতে পারি না। টাকা দিলেই কেবল বালামে হাত দেয়, না দিলে কোনো কাজ হয় না।’ 

পাথরঘাটা উপজেলা সাবরেজিস্ট্রারের কার্যালয়ের সামনে কথা হয় রেজাউল কবির নামের কালমেঘা ইউনিয়নের এক বাসিন্দার সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘এখানে কিছু দলিল লেখকদের সঙ্গে যোগসাজশে অফিসের কর্মকর্তারা ঘুষ নিয়ে থাকেন। দলিলের সরকারি সব খরচার বাইরেও অফিস খরচার নামে ৫ থেকে ২০ হাজার পর্যন্ত ঘুষ নেওয়া হয়। জেলার ছয়টি উপজেলার মধ্যে আমতলীতে কৃষিজমির পরিমাণ বেশি।’ 

ভূমিখাতে সবচেয়ে বেশি ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ বরগুনার আমতলী উপজেলায়। আমতলীর আড়পাঙ্গাশিয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা আফজাল হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এখানে ঘুষ দিয়ে জাল দলিল থেকে শুরু করে সব কাজ করানো সম্ভব। আর ঘুষ না দিয়ে কেউ কোনো কাজ করতেই পারবে না। আমি চ্যালেঞ্জ করে বলতে পারি, এখানে এসে কেউ ঘুষ না দিয়ে কাজ করাতে পেরেছে বুকে হাত দিয়ে বলতে পারবে এমন কেউ নেই। একইরকম চিত্র জেলার বাকি তিনটি সাবরেজিস্ট্রারের কার্যালয়েরও।’ 

এ ছাড়া জেলা রেজিস্ট্রারের কার্যালয়ের চিত্র ঠিক এমনই। শুধুমাত্র পার্থক্য ঘুষের অঙ্কের। সরকারি ফির ধার ধারার সময় নেই কারওই। দলিল রেকর্ড করতে আসলে মোক্তাররা আগেই চুক্তি করে অফিস খরচা বাবদ টাকা রেখে দেয়। দীর্ঘদিন ধরে জমিজমা সংক্রান্ত সিভিল মামলা পরিচালনা করে আসছেন এমন কয়েকজন আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দলিল করার ক্ষেত্রে রেজিস্ট্রারের কার্যালয়ে সরকারি খরচার বাইরে মোক্তারদের মাধ্যমে অফিস খরচা বাবদ দুই থেকে ২৫ হাজার পর্যন্ত ঘুষ নেওয়া হয়। সম্প্রতি দলিল করেছেন এমন কয়েকজন ব্যক্তির সঙ্গে আইনজীবীর দাবির মিল রয়েছে। 

জাকির হোসেন নামের বেতাগী উপজেলার একজন বাসিন্দা বলেন, ‘আমি একজন মোক্তারের মাধ্যমে দলিলের কাজ করিয়েছি। আমার তিনটি দলিলে অতিরিক্ত ১৫ হাজার টাকা দিতে হয়েছে।’ 

বরগুনার জেলা প্রশাসক (ভূমি) পীযূষ কান্তির সঙ্গে এ বিষয়ে কথা হয়। তিনি বলেন, ‘আমরা তৃণমূল থেকে শুরু করে উপজেলা ও জেলায় সেবা নিতে আসা নাগরিকেরা যাতে ভোগান্তি ও বিড়ম্বনার শিকার না হয় সে জন্য নির্দেশনা দিয়েছি। ভূমি অফিসের কোনো কর্মকর্তা কর্মচারী বিরুদ্ধে ঘুষ বাবদ অর্থ নেওয়ার কোনো অভিযোগ থাকলে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে আমরা বিধিমোতাবেক ব্যবস্থা নেব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

চাঁদপুরে নতুন ভোটারদের নিয়ে ‘নির্বাচনী অলিম্পিয়াড’

চাঁদপুর প্রতিনিধি
চাঁদপুর সরকারি কলেজ ক্যাম্পাসে নির্বাচনী অলিম্পিয়াডের আয়োজন করা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
চাঁদপুর সরকারি কলেজ ক্যাম্পাসে নির্বাচনী অলিম্পিয়াডের আয়োজন করা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

‘গণতন্ত্র শক্তিশালীকরণ’ কার্যক্রমের অংশ হিসেবে চাঁদপুরে শতাধিক নতুন ভোটারের অংশগ্রহণে ‘নির্বাচনী অলিম্পিয়াড’ অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) সকালে চাঁদপুর সরকারি কলেজ ক্যাম্পাসে দ্য হাঙ্গার প্রজেক্ট বাংলাদেশের আয়োজনে এবং সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) চাঁদপুর জেলা কমিটির সহযোগিতায় অনুষ্ঠানটি হয়।

আজ সকাল সাড়ে ৯টায় চাঁদপুর সরকারি কলেজ ক্যাম্পাসে জাতীয় সংগীত পরিবেশন ও বেলুন উড়িয়ে নির্বাচনী অলিম্পিয়াড অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন কলেজের উপাধ্যক্ষ প্রফেসর মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান মিয়া। নতুন ভোটারদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘এই অংশগ্রহণের মাধ্যমে নির্বাচনী আচরণবিধি, গণতন্ত্রের মূল্যবোধ, স্বচ্ছতা, জবাবদিহি, সুশাসন ইত্যাদি সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার সুযোগ হয়েছে। সুজনের সহযোগিতায় এই আয়োজন অবশ্যই অংশগ্রহণকারীদের অনেক সমৃদ্ধ করবে এবং সচেতন নাগরিক তৈরি হবে।’

পরে কলেজের অডিটরিয়ামে ৫০টি এমসিকিউ পদ্ধতির প্রশ্নের মাধ্যমে ৩০ মিনিটের পরীক্ষা হয়। অংশগ্রহণকারীদের মধ্য থেকে সর্বোচ্চ নম্বরপ্রাপ্ত ১০ জনকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। তাঁদের মধ্য থেকে প্রথম থেকে তৃতীয় স্থান অর্জনকারী তিনজন জাতীয় নির্বাচনী অলিম্পিয়াডে অংশগ্রহণ করার সুযোগ পাবেন। পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারীদের সনদ দেওয়া হয়।

পরীক্ষা শেষে সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য ও বিজয়ীদের হাতে সনদ তুলে দেন চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. নাজমুল ইসলাম সরকার। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সুজন চাঁদপুরের সভাপতি অধ্যক্ষ মোশারফ হোসেন। সঞ্চালনায় ছিলেন সুজনের আঞ্চলিক সমন্বয়ক নাছির উদ্দিন।

সুজন চাঁদপুর জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক রহিব বাদশা, শিক্ষক ওমর ফারুক, সংগঠক সালাউদ্দিন, কর আইনজীবী আব্দুল্লাহ আল ফারুক, সাংবাদিক আলম পলাশ, জাকির হোসেন, শোভন আল-ইমরান, মোরশেদ আলম রোকন, মো. মাসুদ আলম, শরীফুল ইসলামসহ সুজন জেলা কমিটির সদস্যরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

চায়ের দোকানে চলে একটি বাতি-ফ্যান, বিদ্যুৎ বিল এল সাড়ে ৫৫ হাজার টাকা

টঙ্গিবাড়ী (মুন্সিগঞ্জ) প্রতিনিধি 
বিদ্যুৎ বিলের কাগজ হাতে লিটুখান বাজারের দুই দোকানদার। ছবি: আজকের পত্রিকা
বিদ্যুৎ বিলের কাগজ হাতে লিটুখান বাজারের দুই দোকানদার। ছবি: আজকের পত্রিকা

বাজারে ছোট একটি চায়ের দোকান চালান বাদশা ব্যাপারী। দোকানে কেবল একটি বাতি ও একটি ফ্যান চালানো হয়। সাধারণত তাঁর মাসিক বিল ২০০ থেকে ৩০০ টাকার মধ্যে আসে। কিন্তু চলতি মাসে তাঁর হাতে এসেছে ৫৫ হাজার ৫৫০ টাকার বিদ্যুৎ বিল। বিল হাতে পেয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন তিনি।

মুন্সিগঞ্জের টঙ্গিবাড়ী উপজেলার দিঘিরপাড় ইউনিয়নের লিটুখান বাজারের দোকানদার বাদশা ব্যাপারী। বিদ্যুৎ বিলের ব্যাপারে বাদশা বলেন, ‘এটা অসম্ভব। আমার দোকানে এত বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগই নেই। বিলের নম্বরে ফোন করলে শুধু অফিসে যেতে বলে।’

এমন ‘ভুতুড়ে’ বিদ্যুৎ বিল পেয়েছেন লিটুখান বাজারের আরেক দোকানদার শহীদ খান। বাজারে খাবারের দোকান রয়েছে তাঁর। দোকানে দুটি বাতি, একটি ফ্যান ও একটি ছোট ফ্রিজ ব্যবহার করা হয়। প্রতি মাসে যেখানে ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা বিল দিতেন, সেখানে এবার বিল এসেছে ২৪ হাজার ২১৬ টাকা। শহীদ বলেন, ‘বিলটা দেখে দাঁড়াতেই পারছিলাম না। এমন বিল হলে দোকান চালানোই কঠিন হয়ে যাবে।’

বাজারের অন্য ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করে বলেন, কয়েক মাস ধরে এলাকায় এমন অস্বাভাবিক বিল আসছে। তাঁদের ধারণা, মিটার রিডিং অথবা বিলিং পদ্ধতিতে গুরুতর ত্রুটি রয়েছে। দ্রুত তদন্ত করে সঠিক হিসাব ঠিক করার পাশাপাশি দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।

বিল প্রস্তুতকারী কর্মী সুমি রানী দাস বলেন, সংশ্লিষ্ট গ্রাহকদের অফিসে যোগাযোগের পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। তিনি বলেন, ‘তারা অফিসে এলে আমরা সরেজমিন যাচাই করে বিল পুনরায় বিবেচনা করব।’

টঙ্গিবাড়ী পল্লী বিদ্যুৎ জোনাল অফিসের ডিজিএম মো. আব্দুস ছালাম বলেন, ‘মিটার রিডিং বা বিলিং সিস্টেমে ত্রুটি থাকতে পারে। আমরা সরেজমিন যাচাই করে দ্রুত সমাধানের পদক্ষেপ নেব। ভোক্তাদের অফিসে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বাসার বাথরুমে পড়ে ছিল নারী প্রভাষকের লাশ, মাথায় আঘাতের চিহ্ন

বগুড়া প্রতিনিধি
ফাবিয়া তাসনিম সিধি। ছবি: সংগৃহীত
ফাবিয়া তাসনিম সিধি। ছবি: সংগৃহীত

বগুড়ার এক বাসা থেকে ফাবিয়া তাসনিম সিধি (২৯) নামের এক প্রভাষকের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে বগুড়া শহরের চক ফরিদ এলাকায় ভাড়া বাসা থেকে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ।

মৃত ফাবিয়া বগুড়ার সরকারি শাহ সুলতান কলেজের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের প্রভাষক। বছর দেড়েক আগে তিনি কলেজটিতে যোগদান করেন।

এই তথ্য নিশ্চিত করে বগুড়া সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মাহফুজার রহমান জানান, ফাবিয়া অবিবাহিত। তিনি বগুড়া শহরের চক ফরিদ এলাকায় ডা. রাশেদুল হাসানের বাড়ির তিনতলায় ভাড়া বাসায় তাঁর মায়ের সঙ্গে থাকতেন। কয়েক দিন আগে তাঁর মা গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহে যান। গতকাল দুপুরের পর থেকে মেয়েকে ফোনে না পাওয়ায় তাঁর মা রাত ১০টার দিকে বগুড়া আসেন। অনেক ডাকাডাকি করে দরজা না খোলায় পুলিশে খবর দেওয়া হয়। পরে পুলিশ সেখানে গিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের উপস্থিতিতে দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে বাসার বাথরুমে ফাবিয়ার লাশ দেখতে পায়।

পুলিশ জানায়, মৃত ব্যক্তির নাক দিয়ে রক্ত ঝরছিল এবং মাথার পেছনে আঘাতের চিহ্ন ছাড়াও জিবে দাঁত দিয়ে কামড় দেওয়া ছিল। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মাহফুজার রহমান বলেন, ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়া গেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

অটোরিকশাকে চাপা দিল বাস, প্রাণ গেল শিশুসহ চারজনের

ফরিদপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৫: ১৬
বাসচাপায় অটোরিকশাটি ভেঙেচুরে গেছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
বাসচাপায় অটোরিকশাটি ভেঙেচুরে গেছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

ফরিদপুরের ভাঙ্গায় বাসের চাপায় একটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার চার যাত্রী নিহত হয়েছেন। আজ শুক্রবার বেলা পৌনে ১২টার দিকে ফরিদপুর-ভাঙ্গা-বরিশাল মহাসড়কের কৈডুবী সদরদি রেলক্রসিং এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহতদের মধ্যে দুজন নারী, একজন পুরুষ ও তিন বছর বয়সী এক শিশু রয়েছে। তাৎক্ষণিকভাবে তাঁদের পরিচয় জানা যায়নি।

খবর পেয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধার অভিযান চালান। বাসচাপায় ঘটনাস্থলে তিনজন মারা যান। আহত চারজনকে উদ্ধার করে ভাঙ্গা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এক শিশুর মৃত্যু হয়।

ভাঙ্গা হাইওয়ে থানার এসআই সোহেল মিয়া বলেন, অটোরিকশাটি ভাঙ্গা থেকে টেকেরহাটের উদ্দেশে যাচ্ছিল। কৈডুবী সদরদি রেলক্রসিং এলাকায় পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা নিউ মডার্ন পরিবহনের একটি বাস অটোরিকশাটিকে চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলে তিনজন মারা যান। পরবর্তীতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও একজনের মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেন ভাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আশরাফ হোসেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত