Ajker Patrika

মেয়র সাদিকের ‘খলিফা’ জেলে, সেলফি ভাইরালের পর এসআইকে প্রত্যাহার

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল
আপডেট : ১৫ মে ২০২৩, ২৩: ০৯
মেয়র সাদিকের ‘খলিফা’ জেলে, সেলফি ভাইরালের পর এসআইকে প্রত্যাহার

বরিশালে নৌকার মেয়র পদপ্রার্থীর সমর্থকদের ওপর হামলার জেরে বর্তমান সিটি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহর ‘খলিফা’ খ্যাত নগর ছাত্রলীগের আহ্বায়ক রইজ আহমেদ মান্নাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ সোমবার তাঁর হাজতে থাকা অবস্থার একটি ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। আর এ খবর ছড়িয়ে পড়ার পর গা ঢাকা দিয়েছেন সাদিকের ঘনিষ্ঠ অন্য সব ‘খলিফা’।

এদিকে গারদখানায় রাখা আসামিদের ছবি ভাইরাল হওয়ার ঘটনায় কাউনিয়া থানার এসআই সাইদুল ইসলামকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। কাউনিয়া থানার ওসি আব্দুর রহমান মুকুল আজ বিকেলে এ তথ্যের সত্যতা স্বীকার করে বলেছেন, ‘আপনি যা শুনেছেন তা ঠিক।’ সকালে মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. সাইফুল ইসলামের নির্দেশে এসআই সাইদুলকে পুলিশ লাইনে প্রত্যাহার করা হয়েছে বলে জানান ওসি।

এ নিয়ে মোট ১৩ জনকে আজ দুপুরে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। গুঞ্জন রয়েছে, মান্নাসহ তাঁর ১০ সহযোগী গ্রেপ্তার হয় মেয়র সাদিকের বাসভবন থেকে। 

তবে আজ দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রলীগের আহ্বায়ক মান্নার পক্ষে সাফই গেয়েছে নগর আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। তবে নৌকার প্রধান নির্বাচনী এজেন্টের দাবি, নগর আওয়ামী লীগ নৌকা বিরোধীদের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। 

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, রোববার সন্ধ্যায় নগরের মড়কখোলার পুলে ছাত্রলীগ আহ্বায়ক মান্নার হামলায় আহত হন নৌকার মেয়র প্রার্থী খোকনের সমর্থক হালিম শাহ, মনা আহমেদ ও জাহিদ ভূঁইয়া। তাদের শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি করা হলে মেয়র প্রার্থী খোকন ঘটনাস্থলে গিয়ে সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানান। 

গ্রেপ্তারের পর বরিশাল নগর ছাত্রলীগের আহ্বায়ক রইজ আহমেদ মান্নাজানতে চাইলে কাউনিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রহমান মুকুল বলেন, ‘সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে নগরী থেকে মান্না ও তাঁর সহযোগীসহ মোট ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে র‍্যাব আরও ৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। মোট ১৩ জনকেই আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় নৌকার সমর্থক মনা আহমেদ ২০ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ৫০ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছেন।’ 

এর আগে, গত ৬ মে নৌকার দুই কর্মীকে পিস্তল উঁচিয়ে হুমকি দেওয়ায় মান্নার বিরুদ্ধে কাউনিয়া থানায় জিডি হয়।

এ বিষয়ে নৌকার মেয়র প্রার্থী খোকন অনুসারী ছাত্রলীগ নেতা মঈন তুষার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘মহানগর ছাত্রলীগের আহ্বায়ক রইজ আহম্মেদ মান্না মেয়রের আশীর্বাদে নগরের নথুল্লাবাদ বাস টার্মিনালে চাঁদাবাজির নিয়ন্ত্রণ, ইউএনওর বাসায় হামলা, থানা ঘেরাও এবং সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে প্ল্যানের নামে মানুষের বাসা, দোকানপাট বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়ার নেতৃত্ব দিত। তাদের প্রতিহতের ঘোষণা দিয়েছে নেতা-কর্মীরা।’

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, সাদিকের অপর খলিফা, নগর আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক নীরব হোসেন টুটুল, কাউন্সিলর শেখ সাঈদ আহমেদ মান্না, জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি আতিকুল্লাহ মুনিম, সাজ্জাদ সেরনিয়াবাত এবং কাউন্সিলর রাজিব হোসেন গ্রেপ্তার আতঙ্কে গা ঢাকা দিয়েছেন।

দুপুরে মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এ কে এম জাহাঙ্গীর দলীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করে বলেন, ‘যে ঘটনায় মান্নাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, ওই ঘটনার সময় দুই কিলোমিটারের মধ্যেও মান্না ছিল না। এলাকাটি সিসি ক্যামেরার আওতাভুক্ত। ভিডিও ফুটেজ যাচাই করলেই ঘটনার সত্যতা পাওয়া যাবে। ঘটনার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানাচ্ছি।’ এ সময় সাদিকের ‘খলিফাদের’ দেখা যায়নি বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

মান্নাকে গ্রেপ্তারের পর সেলফি তোলেন এসআই সাইদুল ইসলাম। ছবি: সংগৃহীতএ প্রসঙ্গে নগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি এবং নৌকার প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট আফজালুল করিম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘মান্না এর আগেও নৌকার সমর্থকদের উদ্দেশে পিস্তল তাক করেছে। রোববার কুপিয়ে আহত করেছে তিনজনকে। মান্নার অতীত কার্যকলাপ প্রশ্নবিদ্ধ। নৌকার কর্মীদের ওপর যারা হামলা করল, মহানগর আ. লীগের নেতারা সেই দুর্বৃত্তদেরই সাফাই গাইল!’ এটি নৌকার বিরোধী লোকদের পক্ষে সংবাদ সম্মেলন বলে মন্তব্য করেন তিনি। 

এ ব্যাপারে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. সাইফুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘নির্বাচনী কার্যক্রম এখনো শুরু হয়নি। অথচ এসব কর্মকাণ্ড ঘটছে। এতে যারাই জড়িত থাকুক কঠোর হস্তে দমন করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’ 

গারদখানার ছবি ভাইরাল
নগর ছাত্রলীগের আহ্বায়ক রইজ আহমেদ মান্নাকে গ্রেপ্তারের পর কাউনিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সাইদুল মান্নার সঙ্গে সেলফি তোলেন। সেই ছবিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। এ ছাড়া রোববার রাতে মান্না গ্রেপ্তারের পর ভোরে কাউনিয়া থানার গারদখানায় শুয়ে থাকা অবস্থায় মান্না ও তাঁর অনুসারীদের ছবিও ভাইরাল হয়। 

এ প্রসঙ্গে কাউনিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুকুল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের থানার সামনে মনিটরে কেউ এসে হয়তো গারদখানার ছবি তুলছে। তবে আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি।’ তবে গ্রেপ্তারের পর পুলিশ পিকআপে থানার এসআই মান্নার সঙ্গে হেসে যে সেলফি তুলেছেন, সে বিষয়ে কোনো জবাব দেননি ওসি মুকুল। 

তবে বিকেলের দিকে ওসি স্বীকার করেন গারদখানায় রাখা আসামিদের ছবি ভাইরাল হওয়ায় এসআই সাইদুল ইসলামকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ভৈরবে গ্যাসের লিকেজ থেকে আগুন, ১০ শিশুসহ দগ্ধ ১৫

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি ও ভৈরব সংবাদদাতা
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

কিশোরগঞ্জের ভৈরবে গ্যাস সিলিন্ডারের লিকেজ থেকে বিস্ফোরণে ১০ শিশুসহ ১৫ জন দগ্ধ হয়েছে। এর মধ্যে ১২ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে।

বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) দুপুর ১টার দিকে উপজেলার আগানগর ইউনিয়নের লুন্দিয়া চরপাড়া বাজারে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

স্বজন ও হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, দগ্ধদের উদ্ধার করে ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ১২ জনকে ঢাকার জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে পাঠান। বাকি তিনজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বাড়ি পাঠানো হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দোকান মালিক, লুন্দিয়া টুকচানপুর গ্রামের বাসিন্দা জহির মিয়া পুরি ও রুটি ভাজি বিক্রি শেষে সকালে ১০টার দিকে প্রতিদিনের মতো দোকান বন্ধ করে বাড়ি যান। তিনি ভুলে গ্যাস সিলিন্ডারের রেগুলেটরের সুইচ বন্ধ করেননি। দীর্ঘ সময় ধরে দোকানের ভেতর গ্যাস ছড়িয়ে পড়ে। পরে এক পর্যায়ে গ্যাসের বিস্ফোরণে দোকানে আগুন ধরে যায়। এসময় দোকানের সামনে থাকা পথচারী এবং প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা দগ্ধ হন।

আহতরা হলেন—হারুন মিয়া (৪০), সোহাগ মিয়া (১০), ওয়াসিবুল (১০), সামিউল (৯), আল আমিন (৮), শুভ (৮), নিরব (১৫), রাহাত (১২), ফাহিম (১০), আমিন (১০), হেকিম মিয়া (৫৫), সেরাজুল (১০), ছিদ্দিক মিয়া (৫৮), মোর্শিদ মিয়া (৫০) ও নাছির মিয়া (৪০)।

চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে স্বজনেরা জানান, আহতদের মধ্যে হারুন মিয়ার শরীরের প্রায় ৮০ শতাংশ দগ্ধ হওয়ায় তাঁর অবস্থা সংকটজনক।

প্রত্যক্ষদর্শী মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘হঠাৎ রাস্তার ওপর আগুন ছড়িয়ে পড়ে। চোখের সামনে কয়েকজন মানুষ আগুনে পুড়তে দেখি। পরে জানতে পারি গ্যাস সিলিন্ডার থেকেই আগুন ছড়িয়েছে।’

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিবার ও পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. কিশোর কুমার ধর বলেন, ১৫ জন অগ্নিদগ্ধ রোগী হাসপাতালে আসে। একজনের শরীরের ৮০ শতাংশ এবং অন্যদের ২০–৩০ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে। ১২ জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের পর হত্যা, আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি যুবকের

নাসিরনগর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি 
দুলাল মিয়া। ছবি: সংগৃহীত
দুলাল মিয়া। ছবি: সংগৃহীত

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলার একটি গ্রামে তৃতীয় শ্রেণির এক স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তিনি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

গ্রেপ্তার আসামির নাম দুলাল মিয়া (২৮)। তিনি ধর্ষণ ও হত্যার কথা স্বীকার করে গতকাল বৃহস্পতিবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। বিচারক আশরাফুল আলম আসামির জবানবন্দি নথিভুক্ত করেন। পরে আসামিকে কারাগারে পাঠানো হয়।

নাসিরনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাকছুদ আহাম্মদ এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

আসামির জবানবন্দির বরাতে ওসি মাকছুদ আহাম্মদ জানান, গত মঙ্গলবার রাতে দুলাল মিয়া আট বছরের ওই শিশুকে ঘর থেকে ডেকে নেন। এরপর তাকে বাড়ির পাশের একটি পরিত্যক্ত ঘরে নিয়ে ধর্ষণ করেন। এ সময় শিশুটি চিৎকার করলে শ্বাস রোধ করে তাকে হত্যা করেন দুলাল।

মাকছুদ আহাম্মদ জানান, এদিকে ওই রাতেই শিশুকে না পেয়ে তার পরিবার খোঁজাখুঁজি শুরু করে। সে সময় সন্ধান চেয়ে মাইকে প্রচারও করা হয়। তখন দুলাল মিয়াও শিশুটির বাবার সঙ্গে খোঁজাখুঁজিতে যোগ দেন। পরদিন গত বুধবার সকালে বাড়ির পাশে পরিত্যক্ত একটি ঘর থেকে শিশুটির লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ সময় দুলাল মিয়া ভিন্ন ভিন্ন তথ্য দিয়ে পুলিশ সদস্যদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেন।

জবানবন্দির বরাতে ওসি মাকছুদ আহাম্মদ বলেন, ‘লাশ উদ্ধারের সময় দুলাল মিয়ার আচরণে আমাদের সন্দেহ হয়। বিষয়টি নিয়ে পুলিশ সুপার মো. আব্দুর রউফ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. জাহাঙ্গীর আল সরকারের সঙ্গে কথা হয়। পরে বুধবার রাতে শিশুটির বাবা অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে ধর্ষণ ও হত্যা মামলা করেন। মামলার পরই দ্রুত তদন্ত শুরু করে ঘটনাস্থলসংলগ্ন বিভিন্ন আলামত পর্যালোচনা শেষে ওই রাতেই দুলাল মিয়াকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। শিশুটির লাশের ময়নাতদন্ত শেষে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মামলা ষড়যন্ত্রমূলক দাবি করে ভুক্তভোগী পরিবারের সংবাদ সম্মেলন

চাটমোহর (পাবনা) প্রতিনিধি 
পাবনার চাটমোহরে অ্যাসিড অপরাধ দমন আইনের একটি মামলাকে মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক বলে দাবি করে ভুক্তভোগী পরিবারের সংবাদ সম্মেলন। ছবি: আজকের পত্রিকা
পাবনার চাটমোহরে অ্যাসিড অপরাধ দমন আইনের একটি মামলাকে মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক বলে দাবি করে ভুক্তভোগী পরিবারের সংবাদ সম্মেলন। ছবি: আজকের পত্রিকা

পাবনার চাটমোহর উপজেলায় অ্যাসিড অপরাধ দমন আইনের একটি মামলাকে মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক বলে দাবি করেছে ভুক্তভোগী পরিবার। তাঁদের অভিযোগ, মামলায় নির্দোষ ব্যক্তিদের ফাঁসানো হয়েছে। পুনঃতদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত ঘটনা উদ্‌ঘাটন ও অভিযুক্তদের খালাস দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।

আজ শুক্রবার সকালে চাটমোহর প্রেসক্লাব মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে পরিবারের পক্ষে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন মামলার ১ নম্বর বিবাদী, ছাইকোলা ইউনিয়নের কুবড়াগাড়ি গ্রামের শফিকুল ইসলামের স্ত্রী সুমাইয়া খাতুন।

জানা গেছে, গত ৪ জুলাই রাত আড়াইটার দিকে কুবড়াগাড়ি গ্রামের আব্দুর রহিম (৬৫) নিজ ঘরে ঘুমিয়ে ছিলেন। ওই সময় দুর্বৃত্তরা তাঁকে ঘর থেকে বাইরে ডেকে শরীরে দাহ্য পদার্থ ঢেলে দেয়। এতে তিনি দগ্ধ হন। প্রথমে তাঁকে চাটমোহর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং পরে ঢাকায় চিকিৎসার জন্য নেওয়া হয়। এ ঘটনায় আব্দুর রহিমের ভাই আব্দুল আজিজ বাদী হয়ে প্রতিবেশী সাতজনকে বিবাদী করে অ্যাসিড অপরাধ দমন আইনে মামলা করেন। মামলার ছয়জন জামিন পেলেও ১ নম্বর বিবাদী শফিকুল ইসলাম এখনো কারাগারে।

সংবাদ সম্মেলনে সুমাইয়া খাতুন দাবি করেন, ঘটনার দিন ওই সময়ে তাঁর স্বামী চাটমোহরে ছিলেন না। তাঁরা দুজনই সেদিন চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে ছিলেন, যেখানে তাঁরা ফুটপাতে বিরিয়ানি বিক্রি করেন। তা সত্ত্বেও তাঁর স্বামীকে মামলার ১ নম্বর বিবাদী করা হয়েছে। এ ছাড়া শফিকুলের পিতা শহিদ সরদারসহ আরও দুই ভাইকে মামলায় জড়ানো হয়েছে।

সুমাইয়ার ভাষ্য, ‘আমার স্বামী গ্রামে থাকেন না। আমরা তিন সন্তান নিয়ে হাটহাজারীতেই থাকি। প্রতিপক্ষ আমাদের ফাঁসানোর উদ্দেশ্যে মিথ্যা মামলা করেছে। প্রকৃত ঘটনা তদন্ত করা হয়নি। আমরা অন্যায়ের শিকার।’ তিনি অভিযোগ করেন, মামলার তদন্তে গাফিলতি থাকায় তাঁরা দীর্ঘদিন ধরে হয়রানির শিকার। তিন সন্তানসহ মানবেতর জীবন যাপন করছেন বলেও দাবি করেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে মামলাটি পুনঃতদন্ত করে প্রকৃত দোষীদের খুঁজে বের করা এবং আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান পরিবারের সদস্যরা। সেখানে শফিকুল ইসলামের পিতা শহিদ সরদার, তাঁর মা ও অন্যান্য স্বজন উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

গুলশানে ৫৪০ বোতল বিদেশি মদ জব্দ, গ্রেপ্তার ১

উত্তরা-বিমানবন্দর (ঢাকা) প্রতিনিধি 
র‍্যাবের হাতে জব্দ হওয়া ৫৪০ বোতল বিদেশি মদ। ছবি: র‍্যাব
র‍্যাবের হাতে জব্দ হওয়া ৫৪০ বোতল বিদেশি মদ। ছবি: র‍্যাব

রাজধানীর গুলশানে মদের চালানসহ এক মাদক কারবারিকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব। এ সময় তাঁর কাছ থেকে ৫৪০ বোতল বিদেশি মদ ও মাদক পরিবহনে ব্যবহৃত একটি পিকআপ ভ্যান জব্দ করা হয়।

আজ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) সকালে এ ঘটনা ঘটে।

গ্রেপ্তার রবিউল ইসলাম (২১) নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার ভিটি গ্রামের ফারুক হোসেনের ছেলে।

এ বিষয়ে র‍্যাব-১-এর কর্মকর্তা মো. রাকিব হাসান বলেন, গোপন তথ্যের ভিত্তিতে গুলশানে অভিযান চালিয়ে ৫৪০ বোতল বিদেশি মদ, মাদক পরিবহনে ব্যবহৃত পিকআপ ভ্যানসহ রবিউল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে গুলশান থানায় আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত