Ajker Patrika

বান্দরবানে ৪০ সেতু ঝুঁকিপূর্ণ

বদরুল ইসলাম মাসুদ, বান্দরবান
আপডেট : ১১ অক্টোবর ২০২১, ০৯: ১৭
বান্দরবানে ৪০ সেতু ঝুঁকিপূর্ণ

গত কয়েক দশকে সড়কপথ বান্দরবান জেলার যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম। এই সড়কপথগুলোতে চলাচলের জন্য বিভিন্ন স্থানে যে সেতু রয়েছে, তার বেশির ভাগই বেইলি সেতু। সড়ক যোগাযোগের ক্ষেত্রে এসব বেইলি সেতু এখন অনেকটাই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। কয়েক দশক আগে নির্মিত এসব ইস্পাতের ফ্রেম ও পাটাতনে তৈরি সেতু যানবাহন চলাচলের কারণে নড়বড়ে ও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে।

এসব ঝুঁকিপূর্ণ সেতু দিয়ে যানবাহন চলাচলও যে চরম ঝুঁকিপূর্ণ, তা সড়ক ও জনপথ বিভাগের তথ্যেই ফুটে উঠেছে। বান্দরবান সড়কপথে প্রায় প্রতিটি বেইলি সেতুরই দুই পাশে ‘ঝুঁকিপূর্ণ বেইলি সেতু, ৫ টনের অধিক মালামাল বোঝাই ও ভারী যানবাহন চলাচল নিষেধ’—এমন সাইনবোর্ড লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে।

কিন্তু বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় চরম ঝুঁকি নিয়েই পাঁচ টনের বেশি মালামাল নিয়েই পরিবহন পারাপার চলছে। কখনো কখনো ভারী যানবাহন চলাচল করার সময় সেতুর পাটাতন উঠে যায়, ভেঙে যায়, আবারও জোড়াতালি দিয়ে ঠিক করে যানবাহন চলাচলের উপযোগ করা হয়।

বান্দরবান সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ সূত্রে জানা যায়, জেলার ৮টি সড়কে ১৩৩টি বেইলি সেতু ছিল। জেলায় ১৯৮০ সালের দিকে অস্থায়ীভাবে নির্মিত সড়কে এসব বেইলি সেতু রয়েছে। এর মধ্যে নতুন আরসিসি সেতু তৈরি হয়েছে ৮৭টি, বাকি সেতুগুলোর মধ্যে ৪০টি বেশি ঝুঁকিপূর্ণ বিবেচনা করা হয়।

এদিকে সম্প্রতি বান্দরবানের বিভিন্ন সড়ক ঘুরে দেখা গেছে, অনেকগুলো বেইলি সেতুই মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ। এর মধ্যে সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে বান্দরবান-চন্দ্রঘোনা সড়কের বেইলি সেতুগুলো ক্রমেই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। এসব সেতুর কোথাও পাটাতন উঠে গেছে, কোথাও পাটাতন পুরোনো হয়ে ভেঙে বা ছিদ্র হয়ে গেছে। গত সেপ্টেম্বরের শেষ দিকে বান্দরবান-চিম্বুক সড়কের শৈলপ্রপাত এলাকার বেইলি সেতু দিয়ে গাড়ি যাওয়ার সময় পাটাতন উঠে প্রায় চার ঘণ্টা যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিল। পরে সংস্কার করে যানবাহন চলাচলের ব্যবস্থা করা হয়।

তবে গতকাল রোববার বান্দরবান সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মোসলেহ উদ্দিন চৌধুরী আজকের পত্রিকাকে বলেন, বান্দরবানে সড়ক বিভাগের ১৩৩টি সেতুর মধ্যে ৭৭টি সরাসরি সড়ক বিভাগ পরিচালনা করে। বাকি ৫৬টি বেইলি সেতু রাস্তা নির্মাণ ও সংস্কারকাজের জন্য সেনাবাহিনীর প্রকৌশল বিভাগ (ইসিবি) দেখাশোনা করছে।

বান্দরবান-রোয়াংছড়ি, বান্দরবান-রুমা, বান্দরবান-বাগমারা ও বান্দরবান-থানচি সড়কগুলোর অবস্থাও একই। এখানেও বেইলি সেতুগুলো পুরোনো হওয়ায় চরম ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।

স্থানীয় লোকজন বলছেন, এসব বেইলি সেতু যদি অগ্রাধিকার দিয়ে সংস্কার বা মেরামত করা না হয়, তাহলে বেইলি সেতু ভেঙে যেকোনো সময় যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যেতে পারে। এর আগে রাঙামাটি ও খাগড়াছড়ি জেলায় বেইলি সেতু ভেঙে গাড়িসহ দুর্ঘটনায় পড়ার ঘটনা ঘটেছে।

রুমা উপজেলার ঠিকাদার জসিম উদ্দিন, বাদশা মিয়াসহ কয়েকজন বলেন, ঠিকাদারি কাজের জন্য মালামাল ট্রাকে করে নিয়ে যান বিভিন্ন সময়। কিন্তু ঝুঁকিপূর্ণ সেতুর ওপর দিয়ে মালামালসহ ট্রাক পারাপারের সময় তাঁদের মনে ভয় জাগে, যদি সেতু ভেঙে পড়ে যায়।

বান্দরবানে বেড়াতে আসা পর্যটক বশির আহমদ, সাইফুল, নওশাদসহ কয়েকজন বলেন, বিভিন্ন সড়কে অনেকগুলো বেইলি সেতু দেখেছেন যেগুলোর পাটাতন নষ্ট, গাড়ি যাওয়ার সময় নড়বড়ে মনে হয়। এতে তাঁরা কিছুটা ভয়ে থাকেন।

বেইলি সেতুগুলোর পরিবর্তে আরসিসি সেতু নির্মাণ করা জরুরি মনে করেন, এসব সড়কে চলাচলকারী যাত্রী, পরিবহন মালিক-চালক সবাই।

অবশ্য সড়ক বিভাগের দাবি যতটা ঝুঁকিপূর্ণ মনে করা হয়, তেমন ঝুঁকিপূর্ণ নয় সেতুগুলো। সড়ক বিভাগের কর্মীরা সেগুলো সংস্কার করছে। সম্প্রতি বান্দরবানের লামা উপজেলার আজিজনগরে ঝুঁকিপূর্ণ সেতু সংস্কার করা হয়েছে। আগামী দু-তিন মাসের মধ্যে বেইলি সেতুগুলোর সংস্কারকাজ শুরু হবে।

বান্দরবান সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মোসলেহ উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ইতিমধ্যে ১০টি বেইলি সেতু মেরামতের জন্য প্রাক্কলন তৈরি করা হয়েছে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

খুলনায় সকাল থেকেই মনোনয়ন জমা দেওয়া শুরু

খুলনা প্রতিনিধি
মনোনয়নপত্র জমা দিচ্ছেন জামায়াতের সেক্রেটারি জেনা‌রেল মিয়া গোলাম প‌রোয়ার। ছবি: আজকের পত্রিকা
মনোনয়নপত্র জমা দিচ্ছেন জামায়াতের সেক্রেটারি জেনা‌রেল মিয়া গোলাম প‌রোয়ার। ছবি: আজকের পত্রিকা

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন আজ সোমবার। শী‌তের তীব্রতাকে উপেক্ষা ক‌রে এদিন সকাল থেকেই বিভিন্ন দ‌লের প্রার্থীরা তাঁদের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে নি‌য়ে মনোনয়নপত্র জমা দি‌তে ‌রিটা‌র্নিং কর্মকর্তা ও খুলনা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে উপস্থিত হ‌তে থা‌কেন।

এদি‌কে প‌রি‌স্থি‌তি স্বাভা‌বিক রাখতে সকাল থে‌কে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সাম‌নে অতিরিক্ত পু‌লিশ মোতা‌য়েন করা হয়েছে।

সকাল সা‌ড়ে ৯টার দিকে মনোনয়নপত্র জমা দি‌তে জেলা প্রশাসকের কার্যাল‌য়ের নিচে দলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে নি‌য়ে উপস্থিত হন খুলনা-৫ আস‌নের সংসদ সদস‌্য প্রার্থী ও জামায়াতের সেক্রেটারি জেনা‌রেল মিয়া গোলাম প‌রোয়ার। সকাল ৯টা ৫১ মি‌নি‌টের দি‌কে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনা‌রেল মিয়া গোলাম প‌রোয়ার তাঁর ম‌নোনয়নপত্র জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা আ স ম জাম‌সেদ খোন্দকা‌রের হ‌তে তু‌লে দেন।

এরপর মনোনয়নপত্র তু‌লে দেন খুলনা-৬ আস‌নের প্রার্থী বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপ‌রিষদ সদস্য ও খুলনা অঞ্চল সহকারী প‌রিচালক মাওলানা আবুল কালাম আজাদ। তারপ‌রে দেন খুলনা-২ আস‌নের প্রার্থী বাংলা‌দেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরার সদস‌্য ও মহানগরী জামায়া‌তের সেক্রেটারি জেনা‌রেল অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর হুসাইন হেলাল। এরপর পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন দলের প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র জমা দিতে আসছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কুমিল্লা-৪: হাসনাত আবদুল্লাহর সমর্থনে সরে দাঁড়ালেন জামায়াত প্রার্থী

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
হাসনাত আবদুল্লাহ ও সাইফুল ইসলাম (শহিদ)। ছবি: সংগৃহীত
হাসনাত আবদুল্লাহ ও সাইফুল ইসলাম (শহিদ)। ছবি: সংগৃহীত

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুমিল্লা-৪ (দেবীদ্বার) আসনে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহর পক্ষে নিজেদের প্রার্থিতা প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের আলোকে জামায়াত মনোনীত প্রার্থী সাইফুল ইসলাম (শহিদ) নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন।

গতকাল রোববার ঢাকায় এনসিপি, জামায়াতে ইসলামী এবং সমমনা ৮টি দলের মধ্যে একটি নির্বাচনী সমঝোতা ঘোষিত হয়। এই জোটবদ্ধ হয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণের ঘোষণার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই কুমিল্লা-৪ আসনে এই পরিবর্তন আসে। উল্লেখ্য, এই দেবীদ্বার আসনটি এনসিপি নেতা হাসনাত আবদুল্লাহর নিজস্ব এলাকা।

সাইফুল ইসলাম কুমিল্লা উত্তর জেলা জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। দলের কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত মেনে নিয়ে তিনি রোববার রাতে তাঁর ব্যক্তিগত ফেসবুক প্রোফাইলে একটি পোস্টের মাধ্যমে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর কথা জানান। পোস্টে তিনি লেখেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ। কেন্দ্রীয় সংগঠনের সিদ্ধান্ত মেনে নিয়ে নির্বাচন থেকে নিজেকে আড়াল করে নিলাম। আল্লাহ যেন দ্বীন কায়েমের পথে আমৃত্যু টিকে থাকার তৌফিক দান করেন।’

পরে এ প্রসঙ্গে তিনি সংবাদমাধ্যমকে জানান, সংগঠনের সিদ্ধান্তের প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই তিনি এই পদক্ষেপ নিয়েছেন। তিনি আরও বলেন, ‘নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালেও আমি দেবীদ্বারের মানুষের পাশে সব সময় থাকব। হয়তো জনগণের সব প্রত্যাশা পূর্ণাঙ্গভাবে পূরণ করতে পারব না, তবে সংগঠনের এই সিদ্ধান্ত সামগ্রিকভাবে কল্যাণ বয়ে আনবে বলে আমি বিশ্বাস করি।’

গত ২৩ ডিসেম্বর এনসিপির নেতা-কর্মীরা হাসনাত আবদুল্লাহর পক্ষে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন। বিশেষ করে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে মনোনয়নপত্র সংগ্রহের বিষয়টি এলাকায় ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি করে। জামায়াত প্রার্থীর সরে দাঁড়ানোর ফলে হাসনাত আবদুল্লাহর অবস্থান এই আসনে আরও শক্তিশালী হলো বলে মনে করছেন স্থানীয় ভোটররা।

এর আগে এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামকে শুভকামনা জানিয়ে ঢাকা-১১ আসনে জামায়াতে ইসলামীর মনোনীত প্রার্থী আতিকুর রহমান নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। গতকাল রোববার রাতে নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে এক পোস্টে এ কথা জানান ছাত্রশিবিরের সাবেক এই কেন্দ্রীয় সভাপতি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

পটিয়ায় বাস-ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে ট্রাকচালক নিহত, আহত ৪

পটিয়া (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলায় বাস ও ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে ট্রাকচালক নিহত হয়েছেন। এ সময় আরও চারজন আহত হয়েছেন। নিহত ট্রাকচালক মো. সালাম (৫৫) বগুড়া জেলার আকতার মিয়ার ছেলে। আহতরা হলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ইউনুচ মিয়ার ছেলে জাহেদুল ইসলাম (২৬), একই এলাকার জুয়েলের ছেলে জাকির ইসলাম (৩০), সবুর মিয়ার ছেলে সাকিব উল হাসান (১৭) এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া এলাকার নাসরিন সুলতানা (২৯)।

রোববার (২৮ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত সোয়া ২টার দিকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার আরকান সড়কের পটিয়া উপজেলার আমজুরহাট এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

জানা গেছে, রাতে কক্সবাজার থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে আসা হানিফ পরিবহনের একটি বাস আমজুরহাট এলাকায় পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি পণ্যবাহী ট্রাকের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষের সময় ট্রাকচালক মো. সালাম বাস ও ট্রাকের মাঝখানে আটকা পড়েন।

খবর পেয়ে পটিয়া ফায়ার সার্ভিসের একটি দল দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে দীর্ঘ চেষ্টার পর তাঁকে উদ্ধার করে। পরে পটিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

দুর্ঘটনায় আহত চারজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে পটিয়া হাসপাতাল থেকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।

পটিয়া ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার রাজেশ বড়ুয়া জানান, দুর্ঘটনার খবর পেয়ে রাত আড়াইটায় তাঁদের একটি টিম ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনা করে। পরে হাইওয়ে পুলিশ দুর্ঘটনাকবলিত বাস ও ট্রাক উদ্ধার করে তাদের হেফাজতে নেয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সাতকানিয়ায় খালের পাড় কেটে মাটি বিক্রি

সাতকানিয়া (চট্টগ্রাম) সংবাদদাতা
আপডেট : ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২: ২৭
খাল পাড় কেটে মাটি নিয়ে যাওয়ার কারণে পাশের ফসলি জমি হুমকির মুখে পড়েছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
খাল পাড় কেটে মাটি নিয়ে যাওয়ার কারণে পাশের ফসলি জমি হুমকির মুখে পড়েছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলায় খালের পাড় কেটে মাটি বিক্রির অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় এক যুবকের বিরুদ্ধে। উপজেলার মাদার্শা ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ড এলাকায় মাদার্শা খালের পাড় থেকে এ মাটি কাটা হচ্ছে। এতে খালের পার্শ্ববর্তী ফসলি জমি ভেঙে খালে বিলীন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বেশ কিছুদিন ধরে মাদার্শা খালের একপাশের পাড় থেকে মাটি কেটে পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন গ্রামে ঘরের ভিটা ভরাটের জন্য বিক্রি করা হচ্ছে। রাতের আঁধারে ভেকু (এক্সকাভেটর) দিয়ে খালের পাড়ের এ মাটি কাটা হচ্ছে। খাল পাড় কেটে মাটি নিয়ে যাওয়ার কারণে পাশের ফসলি জমি ভেঙে খালে বিলীন হওয়ার পাশাপাশি খালের স্বাভাবিক পানি প্রবাহ ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

স্থানীয় লোকজনের অভিযোগ, নাদিমুল হাসান চৌধুরী নামের পার্শ্ববর্তী এলাকার এক ব্যক্তি তাঁর সহযোগীদের মাধ্যমে খালের পাড় কেটে মাটি বিক্রি করে চলেছেন। এতে আলী হোসেন নামের একজন কৃষকের বাদামখেত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ওই ক্ষতিগ্রস্ত কৃষককে ক্ষতিপূরণ হিসেবে কিছু টাকা দেওয়া হয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দা মোহাম্মদ হোসেন বলেন, অবিলম্বে খালের পাড় কাটা বন্ধ করে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগতভাবে ব্যবস্থা নিতে হবে। আর ক্ষতিগ্রস্ত কৃষককে পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ দেওয়াসহ কেটে নেওয়া খালপাড় স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নিতে হবে। অন্যথায় আগামী বর্ষা মৌসুমে খালটির গতিপথ পরিবর্তন হয়ে আশপাশের এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক আলী হোসেন বলেন, ‘ওই খালের পাড়ঘেঁষে বাদামের চাষ করেছিলাম। খাল পাড় থেকে মাটি কেটে বিক্রি করার কারণে আমার বাদামখেতটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ সময় আমি তাঁদের বাধা দিয়েছিলাম। পরে তাঁরা আমাকে ২০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ হিসেবে দিয়েছেন।’

মাটি বিক্রির সঙ্গে জড়িত নাদিমুল হাসান চৌধুরী বলেন, ‘খালের দুই পাড়েই আমাদের জমি রয়েছে। গত বর্ষা মৌসুমে পাহাড়ি ঢলে খালের একপাশে পলি জমে বিশাল মাটির স্তূপ তৈরি হয়েছিল। এ কারণে খালের অন্যপাশের জমি ভেঙে বিলীন হয়ে যাচ্ছিল। তাই জমির ভাঙন রোধে স্তূপ হয়ে থাকা পাশের কিছু মাটি কেটে অন্য জায়গায় সরিয়ে নিয়েছি।’

সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) খোন্দকার মাহমুদুল হাসান বলেন, ‘ইতিমধ্যে বিষয়টি সম্পর্কে আমরা অবগত হয়েছি। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করার পর খালের পাড়ের মাটি কাটার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগতভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত