Ajker Patrika

যশোরে আ.লীগের ১৬৭ নেতা–কর্মীর আত্মসমর্পণ, আদালত চত্বরে স্লোগান

­যশোর প্রতিনিধি
আপডেট : ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৮: ২২
যশোরের আদালতে আ.লীগের ১৬৭ নেতা কর্মীর আত্মসমর্পণ। ছবি: আজকের পত্রিকা
যশোরের আদালতে আ.লীগের ১৬৭ নেতা কর্মীর আত্মসমর্পণ। ছবি: আজকের পত্রিকা

নাশকতার মামলায় যশোরে আওয়ামী লীগের ১৬৭ নেতা–কর্মী আদালতে আত্মসমর্পণ করেছেন। আজ রোববার পৃথক তিন চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তাঁরা আত্মসমর্পণ করলে বিচারক ৪২ জনের জামিন আবেদন মঞ্জুর করে বাকিদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

কারাগারে পাঠানো ব্যক্তিরা হলেন যশোর সদর উপজেলার ২০ জন ও অভয়নগরের ১০৫ জন। আর জামিন মঞ্জুর হয়েছে কেশবপুর উপজেলার ৪২ জনের। এঁদের মধ্যে ইউপি চেয়ারম্যান, মেম্বার, উপজেলা ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ অঙ্গসংগঠনের নেতা–কর্মীরা রয়েছেন।

আদালতের পরিদর্শক রোকসানা খাতুন তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আদালতের নির্দেশে আত্মসমর্পণকারী আসামিদের যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।’

এদিকে আসামিদের কারাগারে নেওয়ার জন্য প্রিজন ভ্যানে ওঠানোর সময় আদালত চত্বরে ‘জয় বাংলা, ‘শেখ হাসিনা ভয় নাই, রাজপথ ছাড়ি নাই’, ‘জাতির পিতা শেখ মুজিব, লও লও লও সালাম’ স্লোগান দিতে দেখা যায় আওয়ামী লীগ নেতা–কর্মীদের।

এই সময় আদালত এলাকায় একধরনের উত্তপ্ত পরিবেশের সৃষ্টি হয়। তবে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। মুহূর্তের মধ্যে এর একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

জানতে চাইলে আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর সাবেরুল হক সাবু আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আদালত চত্বরে স্লোগানে স্লোগানে উত্তাল হওয়া ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এতে জনমনে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরাও অনেক হাজার হাজার মামলার আসামি হয়েছিলাম, আত্মসমর্পণ করেছি। কিন্তু আদালত চত্বরে এ ধরনের ঔদ্ধত্য আচরণ ও আদালতের শৃঙ্খলা ভঙ্গ হয় এমন কোনো কর্মকাণ্ড করেনি। বিষয়টি নিয়ে আমরা আদালত সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলব।’

আদালত সূত্র জানায়, ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর যশোর সদর উপজেলার বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে বোমাবাজির ঘটনায় গত ১৯ নভেম্বর কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন অ্যাডভোকেট মুন্সী মঞ্জুরুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তি। মামলার প্রধান আসামি ছিলেন ফতেপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেনসহ ৯৬ জন।

যশোরের আদালতে আ.লীগের ১৬৭ নেতা কর্মীর আত্মসমর্পণ। ছবি: আজকের পত্রিকা
যশোরের আদালতে আ.লীগের ১৬৭ নেতা কর্মীর আত্মসমর্পণ। ছবি: আজকের পত্রিকা

আজ চেয়ারম্যানসহ ২০ জন এজাহারভুক্ত আসামি আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন জানালে বিচারক সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট গোলাম কিবরিয়া তাঁদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

অপর দিকে অভয়নগরের পৃথক দুটি মামলায় একই দিন ১০৫ জন সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট পলাশ কুমার দালালের আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। আদালত তাঁদের জামিন না মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

আসামিদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন অভয়নগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আনোয়ার হোসেন, কোষাধ্যক্ষ আনিছুর রহমান মিন্টু, সাবেক হুইপ আব্দুল ওহাবের ছেলে শেখ কাফি সম্রাট, কমিশনার বিপুল শেখ, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক শফি কামাল, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক কাজী মামুনসহ প্রমুখ।

যশোরের আদালতে আ.লীগের ১৬৭ নেতা কর্মীর আত্মসমর্পণ। ছবি: আজকের পত্রিকা
যশোরের আদালতে আ.লীগের ১৬৭ নেতা কর্মীর আত্মসমর্পণ। ছবি: আজকের পত্রিকা

এ ছাড়া কেশবপুরের আরেকটি নাশকতার মামলার এজাহারভুক্ত ৪২ আসামি আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন। বিচারক সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রাশেদুর রহমান তাঁদের জামিন মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

আদালতে আসামি পক্ষের আইনজীবী সৈয়দ কবীর হোসেন জনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, মামলার ঘটনার সঙ্গে বাস্তবের কোনো মিল নেই। মনগড়া অভিযোগ দিয়ে মামলা দায়ের করা হয়েছে। আসামিদের পক্ষে তাঁরা জেলা জজ আদালতে জামিন চাইবেন। যা প্রক্রিয়াধীন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

নানা বিতর্কে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন

  • এবারই প্রথম বিজয় দিবসে করা হয়নি আলোকসজ্জা।
  • জাতীয় সংগীতও পরিবেশন করা হয়নি সেদিন সকালে।
  • বুদ্ধিজীবী দিবসের আলোচনায় বেফাঁস মন্তব্য শিক্ষকের।
নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় (ববি) প্রশাসনের বিরুদ্ধে সম্প্রতি নানা অভিযোগ উঠেছে। বিজয় দিবসে আলোকসজ্জা করা হয়নি, পরিবেশন করা হয়নি জাতীয় সংগীত। এর আগে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসের আলোচনায় এক শিক্ষকের বেফাঁস মন্তব্যে সমালোচনার ঝড় উঠেছে।

২০১১ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে প্রতিটি জাতীয় দিবসের ২ থেকে ৩ দিন আগে আলোকসজ্জা করা হতো বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে। এ বছর মহান বিজয় দিবসে অজ্ঞাত কারণে করা হয়নি আলোকসজ্জা। এ নিয়ে শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে বিজয় দিবসে অর্থাৎ গত মঙ্গলবার দুপুরে আলোকসজ্জার কার্যক্রম শুরু হয়। বিজয় দিবসের কর্মসূচিও দায়সারাভাবে পালনের অভিযোগ উঠেছে ববি কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে।

শিক্ষার্থীরা জানান, আগে প্রতিবছর ১৪ থেকে ১৬ ডিসেম্বর ৩ দিন ববি ক্যাম্পাসে থাকত জাঁকজমক আলোকসজ্জা। এবার আলোকসজ্জা না হওয়ায় গত সোমবার বিকেলে তাঁরা উপাচার্যের সঙ্গে দেখা করে প্রতিবাদ জানান। তখন উপাচার্য জানান, আলোকসজ্জার জন্য কমিটি গঠন করে দিয়েছেন। গাফিলতি হয়ে থাকলে কমিটি করেছে। তবে কমিটিতে কারা রয়েছেন, তা জানাতে অস্বীকার করেন তিনি। বিজয় দিবসের সকালে জাতীয় সংগীত পরিবেশন না করারও কারণ জানা যায়নি।

আলোকসজ্জা না হওয়ায় ববি ছাত্রদল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নিন্দা জানিয়ে মঙ্গলবার সকালে বিবৃতি দেয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে সেদিন দুপুরে আলোকসজ্জার কাজ শুরু করে কর্তৃপক্ষ।

ববি ছাত্রদল সভাপতি মোশারফ হোসেন বলেন, শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে পড়ে তড়িঘড়ি করে আলোকসজ্জা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তবে প্রতিবছর মূল ভবনটি লাল-সবুজ রঙের আলোয় সজ্জিত হতো, এবার সেটা হয়নি। এ ছাড়া বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে ববি কর্তৃপক্ষ তেমন প্রচার চালায়নি। ফলে অনুষ্ঠানগুলোয় শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি ছিল খুবই নগণ্য।

এ ছাড়া বুদ্ধিজীবী দিবসের আলোচনায় এক শিক্ষক বেফাঁস মন্তব্য করেন। সভায় উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. তৌফিক আলমের উপস্থিতিতে কোস্টাল স্টাডিজ ও ডিজেস্টার ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. হাফিজ আশরাফুল হক বলেন, ‘বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করেছে পার্শ্ববর্তী ইন্ডিয়ানরা।’

তবে সভার সভাপতি ড. ধীমান কুমার রয় বলেন, আলোচক ড. হাফিজ আশরাফুল হকের বক্তব্য তাঁর ব্যক্তিগত।

এদিকে গত শুক্রবার রাতে শীতকালীন উৎসবের আয়োজন করেছিল বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় চারুকলা সাংস্কৃতিক সংগঠন (ববিচাস)। সেই অনুষ্ঠানেও হামলাচেষ্টার অভিযোগ করেন আয়োজকেরা। তাঁদের দাবি, সাধারণ ছাত্রদের প্রতিরোধে তাঁরা ফিরে যেতে বাধ্য হয়।

এ বিষয়ে ববিচাস সভাপতি সামিউল আলম নির্ঝর বলেন, অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার পর কয়েকজন শিক্ষার্থী রড, লাঠিসোঁটাসহ এসে সেখানে মব সৃষ্টির চেষ্টা করেন। কিন্তু ছাত্রদল কর্মীদের উপস্থিতি বেশি থাকায় তাঁরা চলে যেতে বাধ্য হন। এ বিষয়ে তাঁরা প্রক্টরের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

এ বিষয়ে ববি প্রক্টর ড. রাহাত হোসাইন ফয়সালকে ফোন দেওয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি। তবে উপাচার্য মোহাম্মদ তৌফিক আলম বলেন, কমিটির গাফিলতিতে সঠিক সময়ে আলোকসজ্জা হয়নি। কমিটিকে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখার জন্য শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

বুদ্ধিজীবী দিবসে শিক্ষক হাফিজুল হকের বক্তব্য প্রসঙ্গে উপাচার্য বলেন, তাঁর বক্তব্যের খণ্ডিত অংশ প্রচার করে বিকৃত করা হয়েছে। বিজয় দিবসের কর্মসূচিতে জাতীয় সংগীত পরিবেশন না হওয়ার বিষয়ে উপাচার্য তৌফিক আলম বলেছেন, বিকেলে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে জাতীয় সংগীত পরিবেশন হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

কার্ডিকন চট্টগ্রাম-২০২৫: দেশীয় চিকিৎসার ওপর আস্থা তৈরির তাগিদ

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
৯টি দেশের ৫৫০ জনের বেশি হৃদ্‌রোগ বিশেষজ্ঞের অংশগ্রহণে চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত হয়েছে দুই দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক কার্ডিওভাসকুলার সম্মেলন। ছবি: আজকের পত্রিকা
৯টি দেশের ৫৫০ জনের বেশি হৃদ্‌রোগ বিশেষজ্ঞের অংশগ্রহণে চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত হয়েছে দুই দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক কার্ডিওভাসকুলার সম্মেলন। ছবি: আজকের পত্রিকা

ইউরোপ, আমেরিকা ও এশিয়ার ৯টি দেশের ৫৫০ জনের বেশি হৃদ্‌রোগ বিশেষজ্ঞের অংশগ্রহণে চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত হয়েছে দুই দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক কার্ডিওভাসকুলার সম্মেলন ‘কার্ডিকন চট্টগ্রাম-২০২৫’। চট্টগ্রাম সোসাইটি অব ইন্টারভেনশনাল কার্ডিওলজির (সিএসআইসি) উদ্যোগে ১৫ ও ১৬ ডিসেম্বর নগরের রেডিসন ব্লু চট্টগ্রাম বে ভিউ হোটেলে অনুষ্ঠিত এই সম্মেলনে হৃদ্‌রোগ চিকিৎসার আধুনিক প্রযুক্তি, গবেষণা ও অভিজ্ঞতা বিনিময়ের পাশাপাশি দেশীয় চিকিৎসাব্যবস্থার ওপর আস্থা রাখার গুরুত্ব তুলে ধরা হয়।

‘শ্রেষ্ঠত্বের দিকে পদক্ষেপ’ প্রতিপাদ্যে আয়োজিত সম্মেলনে দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞরা ১০০টির বেশি গবেষণাপত্র উপস্থাপন করেন। কর্মসূচিতে ছিল স্টেট অব দ্য আর্ট লেকচার, প্লেনারি সেশন, হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ, ইকোকার্ডিওগ্রাফি ওয়ার্কশপ, ফেলোস কোর্স, ইসিজি সিম্পোজিয়াম, পোস্টার ও কেস ডিসকাশন (সিডি) উপস্থাপন।

সম্মেলনের সমাপনী ও গালা সেশনে সভাপতিত্ব করেন সিএসআইসি সভাপতি ডা. মোহাম্মদ ইব্রাহিম চৌধুরী। প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ওমর ফারুক ইউসুফ।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে শাহাদাত হোসেন বলেন, দেশের চিকিৎসাব্যবস্থার ওপর আস্থা না থাকায় প্রতিবছর বিপুল সংখ্যক রোগী চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাচ্ছে। ফলে দেশের অর্থনীতি বড় অঙ্কের ক্ষতির মুখে পড়ছে। তিনি বলেন, ‘দেশে এখন এনজিওগ্রাম, এনজিওপ্লাস্টি, স্টেন্টিং, পেসমেকারসহ জটিল হৃদ্‌রোগ চিকিৎসা সফলভাবে হচ্ছে। মৃত্যুর হারও উল্লেখযোগ্য নয়। তারপরও রোগীরা ভারতসহ পার্শ্ববর্তী দেশে যাচ্ছেন, যা আমাদের জন্য উদ্বেগজনক।’

শাহাদাত হোসেন বলেন, রোগীর বিদেশমুখী প্রবণতা বন্ধ করা গেলে দেশে আধুনিক যন্ত্রপাতি, এমআরআই, কালার ডপলার, ক্যাথল্যাবসহ আরও উন্নত চিকিৎসা অবকাঠামো গড়ে তোলা সম্ভব।

সম্মেলনে বাংলাদেশ ছাড়াও পর্তুগাল, ইতালি, যুক্তরাষ্ট্র, মালয়েশিয়া, ভিয়েতনাম, পাকিস্তান, নেপাল ও ভারত—এই ৯টি দেশের খ্যাতনামা হৃদ্‌রোগ বিশেষজ্ঞরা অংশ নেন। আন্তর্জাতিক বক্তাদের মধ্যে ছিলেন পর্তুগালের অধ্যাপক ফুয়াস্তু জে পিন্টো, ইতালির অধ্যাপক অ্যান্থোনিও কলোম্বো, যুক্তরাষ্ট্রের ডা. রফিক আহমেদ ও অধ্যাপক চৌধুরী এইচ আহসান, মালয়েশিয়ার অধ্যাপক সাজলি সাহলান বিন কাসিম, ভিয়েতনামের ডা. ফেম নাত মিনহ, পাকিস্তানের ডা. গোলাম হুসাইন সোমরু, নেপালের ডা. অরুণ মাসকেই এবং ভারতের অধ্যাপক অশোক শেঠসহ আরও অনেকে।

পাশাপাশি দেশের শীর্ষ হৃদ্‌রোগ বিশেষজ্ঞদের মধ্যে গবেষণাপত্র উপস্থাপন করেন ইউনাইটেড হাসপাতালের চিফ কনসালট্যান্ট এন এ এম মোমেনুজ্জামান, ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতালের অধ্যাপক ফজিলা-তুন-নেছা মালিক, ইউনাইটেড হাসপাতালের অধ্যাপক মো. আফজালুর রহমান, এভারকেয়ার হাসপাতালের অধ্যাপক আতাহার আলী, এনআইসিভিডির সাবেক পরিচালক মীর জামাল উদ্দিন ও বর্তমান পরিচালক অধ্যাপক আব্দুল ওয়াদুদ চৌধুরী।

এ ছাড়া স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক নাজমুল হোসাইন, বাংলাদেশ কার্ডিয়াক সোসাইটির সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ শফিউদ্দিন, মেম্বার সেক্রেটারি অধ্যাপক এ এফ খবির উদ্দিন আহমেদ এবং বাংলাদেশ সোসাইটি অব কার্ডিওভাসকুলার ইন্টারভেনশনের সভাপতি অধ্যাপক মো. খালেকুজ্জামান ও সাধারণ সম্পাদক খন্দকার আসাদুজ্জামানসহ দেশের বিভিন্ন মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের প্রতিনিধিরা সম্মেলনে অংশ নেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

পঞ্চগড়ে আট দিন ধরে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ: রাতে কনকনে শীত, দিনে ঝলমলে রোদ

পঞ্চগড় প্রতিনিধি
পঞ্চগড় সদর উপজেলার টুনিরহাট এলাকা থেকে তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা
পঞ্চগড় সদর উপজেলার টুনিরহাট এলাকা থেকে তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা

উত্তরের জনপদ পঞ্চগড়ে আট দিন ধরে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বইছে। রাতে কনকনে হিমেল হাওয়ায় জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়লেও দিনে ঝলমলে রোদের দেখা মিলছে। আজ বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) সকাল ৬টায় জেলার তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৯ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসে আর্দ্রতা ছিল ৯৯ শতাংশ। বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ৮ থেকে ১০ কিলোমিটার থাকায় শীতের অনুভূতি আরও তীব্র হয়ে উঠেছে।

সকালে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, কুয়াশাহীন ভোরে সূর্য উঠেছে ঝলমলে আলো নিয়ে। সূর্যের আলোয় ঝলমল করছে জেলার প্রকৃতি। স্বাভাবিক কর্মচাঞ্চল্য দেখা গেছে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের মধ্যে।

তেঁতুলিয়া আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, এক সপ্তাহ ধরে তাপমাত্রায় কিছুটা ওঠানামা থাকলেও তা ১০ ডিগ্রির নিচেই রয়েছে। বৃহস্পতিবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৯ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগে বুধবার ৯ দশমিক ৭, মঙ্গলবার ৯ দশমিক ৫, সোমবার ৯, রবি ও শনিবার ৯ দশমিক ৩, শুক্রবার ৯ দশমিক ৫ এবং আগের বৃহস্পতিবার ৮ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়। গতকাল বুধবার দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২৭ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের সংজ্ঞা অনুযায়ী, তাপমাত্রা ১০ থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকলে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ, ৮ থেকে ৬ ডিগ্রির মধ্যে হলে মাঝারি এবং ৬ ডিগ্রির নিচে নেমে গেলে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ ধরা হয়। সে হিসেবে বর্তমানে তেঁতুলিয়াসহ পঞ্চগড়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বিরাজ করছে।

সদর উপজেলার টুনিরহাট এলাকার কৃষক আব্দুল হাকিম বলেন, ‘রাতে যে ঠান্ডা পড়ে, তা সহ্য করা মুশকিল। ভোরবেলা ঘর থেকে বের হওয়া যায় না। হাত-পা বরফের মতো হয়ে যায়। তবে দিনে রোদ ঝলমল করে। এই রোদের কারণে মাঠের কাজ কোনোমতে চালিয়ে নেওয়া যাচ্ছে।’

তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিতেন্দ্রনাথ রায় বলেন, ‘গত কয়েক দিনে জেলার তাপমাত্রা ক্রমেই নিম্নমুখী। আজ সর্বনিম্ন ৯ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড হয়েছে, যা মৃদু শৈত্যপ্রবাহের আওতায় পড়ে। বাতাসে আর্দ্রতা বেশি থাকায় শীতের প্রভাব আরও বেশি অনুভূত হচ্ছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

জমিতে পুকুর কাটতে বাধা দেওয়ায় কৃষককে ভেকুচাপায় হত্যার অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

রাজশাহী মোহনপুর উপজেলায় ফসলি জমিতে পুকুর খননে বাধা দেওয়ায় এক কৃষককে ভেকু (এক্সকেভেটর) চাপা দিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। নিহত ব্যক্তির নাম জুবায়ের হোসেন (২৫)। তিনি উপজেলার বড় পালশা গ্রামের বাসিন্দা। ঘটনার পর স্থানীয় জনতা মাটি খননের যন্ত্রটিতে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছেন। পুলিশ ভেকু চালককে আটক করেছে।

নিহতের পরিবারের দাবি, পুকুর খননে বাঁধা দেওয়ায় জুবায়েরকে এক্সকেভেটরের চাকার নিচে ফেলে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় তারা বিচার চান। ঘটনার পরে চালক আবদুল হামিদকে (২৮) আটক করেছে পুলিশ। আটক আবদুল হামিদ টাঙ্গাইল জেলার কাদিমহামজানি উত্তরপাড়ার বাসিন্দা।

রাজশাহীর মাঠে মাঠে বিভিন্ন প্রভাবশালী মহল কৃষককে না জানিয়ে কিংবা অনুমতি না নিয়েই জোর করে পুকুর খনন করে। সেই পুকুর তারা ইজারা দেয় এবং পরবর্তীতে ইজারামূল্যের একটি অংশ কৃষককে দেয়। এতে রাজশাহীতে কৃষিজমি রাতারাতি পুকুর হয়ে যাচ্ছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পালশা গ্রামে পুকুর খনন করা হচ্ছিল। তবে কৃষিজমি রক্ষায় স্থানীয়দের সঙ্গে জুবায়ের বাঁধা দেন। এ সময় ভীমনগর গ্রামের কয়েকজনের সঙ্গে এলাকাবাসীর বাকবিতণ্ডার ঘটনা ঘটে। একপর্যায়ে এক্সকেভেটরের নিচে পড়ে গুরুতর আহত হন জুবায়ের। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে মোহনপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে কর্তব্যরত চিকিৎসক জুবায়েরকে মৃত ঘোষণা করেন। তার মরদেহ পুলিশ হেফাজতে রয়েছে।

এদিকে খবর পেয়ে মোহনপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফাহিমা বিনতে আখতার ঘটনাস্থল ও নিহতের বাড়িতে যান। এসময় তিনি নিহতের পরিবার ও এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলেন।

ইউএনও ফাহিমা বিনতে আখতার বলেন, ‘পুকুর খনন করবে জেনে এলাকাবাসী বাঁধা দেয়। এলাকাবাসী ফসলী জমিতে পুকুর খনন করতে দেবে না। এ নিয়ে কথা-কাটাকাটির এক পর্যায়ে এক্সকেভেটর গাড়ির সঙ্গে ধাক্কা লেগে জুবায়ের আহত হন। পরে তার মৃত্যু হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘আমি এখানে আসার পরে শুনেছি ঘটনার পরে জনতা গাড়িটিতে আগুন দিয়েছে। এছাড়া পুলিশ চালককে আটক করেছে। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

যোগাযোগ করা হলে মোহনপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম মঈনুদ্দীন জানান, তিনি ঘটনাস্থলে আছেন। এ বিষয়ে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত