Ajker Patrika

৬২ কিলোমিটার রেলপথে ১২ হাজার ক্লিপ উধাও

  • কর্তৃপক্ষের দাবি, কিছু ক্লিপ ভেঙে গেছে। বাকিগুলো চুরি হয়েছে।
  • স্থানীয়রা বলছে, লাইনে ক্লিপগুলো লাগানোই হয়নি।
  • উধাও ক্লিপগুলোর দাম ৩১ লাখ ২০ হাজার টাকা।
  • ঝুঁকি নিয়ে ট্রেন চলাচল করছে: ট্রেন চালক
রেজা মাহমুদ, সৈয়দপুর (নীলফামারী)
আপডেট : ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৭: ২৬
৬২ কিলোমিটার রেলপথে ১২ হাজার ক্লিপ উধাও

নীলফামারীর সৈয়দপুর-চিলাহাটি রেলপথের দৈর্ঘ্য ৫৯ কিলোমিটার। এই পথের বিভিন্ন স্থানে ফাঁকে ফাঁকে স্লিপারের সঙ্গে রেললাইনের পাত আটকে রাখার ইলাসটিক রেল ক্লিপ (ইআরসি) নেই। একই অবস্থা স্টেশনসংলগ্ন সম্প্রতি বসানো লুপ লাইনগুলোরও, যার দৈর্ঘ্য ৩ কিলোমিটার। লুপ লাইনসহ সৈয়দপুর-চিলাহাটির ৬২ কিলোমিটার রেলপথে প্রায় ১২ হাজার ইআরসি ক্লিপ নেই বলে জানা গেছে রেলওয়ের হিসাবেই। বাস্তবে তা আরও বেশি হতে পারে মনে করছেন রেলওয়ের স্থানীয় কর্মীরা।

রেল কর্তৃপক্ষের দাবি, কিছু ক্লিপ পুরোনো হয়ে ভেঙে গেছে। বাকিগুলো দুর্বৃত্তরা চুরি করে নিয়ে গেছে। তবে স্থানীয় লোকজন বলছে, সংস্কার করা হলেও রেললাইনে ক্লিপগুলো লাগানোই হয়নি। এ অবস্থায় এসব পথে যাত্রী ও মালবাহী ট্রেন ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে বলে জানিয়েছেন চালকেরা।

রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা যায়, কাঠ, লোহা বা সিমেন্টের স্লিপারের সঙ্গে রেললাইনের পাত আটকে রাখতে ক্লিপ ব্যবহার করা হয়। একটি স্লিপারের দুপাশে দুটি ও যেখানে দুই রেললাইনের সংযোগ রয়েছে, সেখানে চারটি করে ক্লিপ থাকে।

২ ফেব্রুয়ারি সরেজমিনে দেখা গেছে, সৈয়দপুর রেলওয়ে স্টেশনের উত্তরে বার্মাসেল, ইসলামবাগ, ঘোড়াঘাট, গোলাহাটসহ প্রায় ৫ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে বিভিন্ন স্থানে রেললাইনে শতাধিক ইআরসি ক্লিপ নেই। এসব জায়গার খানিক পরপর ক্লিপ উধাও।

রেলওয়ের সৈয়দপুর প্রকৌশল (পথ) বিভাগ জানায়, ভৌগোলিক কারণে সৈয়দপুর একটি গুরুত্বপূর্ণ রেলস্টেশন।

সৈয়দপুর থেকে ঢাকা, খুলনা ও রাজশাহী রুটে নিত্যদিন ছয়টি আন্তনগর ও একটি মেইল ট্রেন চলাচল করে। তা ছাড়া ঠাকুরগাঁও, দিনাজপুরের খানসামা, রংপুরের তারাগঞ্জের যাত্রীরা সৈয়দপুর থেকেই যাতায়াত করেন।

প্রকৌশল বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, সৈয়দপুর-চিলাহাটি রেলপথের ৫৯ কিলোমিটারের পাশাপাশি ৪টি লুপ লাইন ৩ কিলোমিটারের। এই রেলপথগুলো সৈয়দপুর প্রকৌশল বিভাগের অধীন। ২০১২ সালে সৈয়দপুর-চিলাহাটি রেলপথটি সংস্কার করে নতুন লাইন বসানো হয়। আর লুপ লাইনগুলো সংস্কার করা হয় সম্প্রতি।

রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, নিয়ম অনুযায়ী প্রতি কিলোমিটার রেলপথে ১ হাজার ৪০০ স্লিপার থাকে। আর প্রতিটি স্লিপারের সঙ্গে রেললাইনের পাত আটকাতে চারটি করে ক্লিপ লাগানো হয়। প্রতিটি ক্লিপের সঙ্গে থাকে লাইনার ও রাবার প্যাড। সেই হিসাবে এসব রেলপথে ৩ লাখ ৩০ হাজার ৪০০ ক্লিপ থাকার কথা। এর মধ্যে ১২ হাজার ক্লিপ নেই। প্রতিটি ইআরসির দাম ২৬০ টাকা হিসাবে চুরি যাওয়া ক্লিপগুলোর দাম প্রায় ৩১ লাখ ২০ হাজার টাকা।

শুরু থেকেই ক্লিপ বসানো হয়নি দাবি করে রেলস্টেশন এলাকার ইসলামবাগ বড় মসজিদ এলাকার ইলিয়াস হোসেন বলেন, ‘নতুন রেললাইন বসানোর পর থেকেই এমনই দেখছি। স্লিপারের সঙ্গে রেললাইনের পাত আটকে রাখার জন্য যে ক্লিপ ব্যবহার করা হয়, তা অনেক জায়গায় লাগানো হয়নি। আর এ অবস্থাতেই এ পথে বছরের পর বছর ঝুঁকি নিয়ে চলছে ট্রেন।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ট্রেনচালক বলেন, ক্লিপ না থাকায় রেললাইন নড়বড়ে হয়ে পড়ে। যেকোনো সময় ট্রেন লাইনচ্যুত হতে পারে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সৈয়দপুর রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন উপসহকারী প্রকৌশলী (পথ) সুলতান মৃধা আজকের পত্রিকাকে বলেন, লাগানোর পরপরই ক্লিপ চুরি করে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। আবার দীর্ঘদিন ধরে ট্রেন চলাচলের কারণে বেশ কিছু ক্লিপ ভেঙে গেছে। হিসাব করে দেখা গেছে, লুপ লাইনসহ সৈয়দপুর-চিলাহাটি রেলপথে প্রায় ১২ হাজার ইআরসি ক্লিপ নেই। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। যেসব জায়গায় ক্লিপ নেই, সেখানে দ্রুত ক্লিপ লাগানোর কাজ চলমান রয়েছে বলে জানান তিনি।

সৈয়দপুর রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদ-উন নবী বলেন, ‘এ কর্মস্থলে আমি নতুন। ক্লিপ চুরির বিষয়টি কিংবা এ ধরনের কোনো অভিযোগ হয়েছে কি না তা আমার জানা নেই। তবে যেহেতু বিষয়টি নজরে এনেছেন, এ বিষয়ে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

এ নিয়ে মোবাইল ফোনে কথা হয় রেলওয়ে পাকশী বিভাগীয় প্রকৌশলী-২ (পথ) বীরবল মণ্ডলের সঙ্গে। তিনি বলেন, রেললাইনের ক্লিপ না থাকার কারণ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ইতিমধ্যে ফিটিংসসহ রেলপথের নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট এলাকার পুলিশ সুপারকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। তবে বর্তমানে রেললাইনের যে ফিটিংস, তাতে ট্রেন চলাচলের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ নয় বলে তিনি দাবি করেন।

ওই প্রকৌশলী আরও বলেন, ‘আমার জানামতে, ক্লিপ লাগানোর পর কিছু ক্লিপ চুরি হয়ে যায়।’ এ ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষকে সচেতন হওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

শেখ হাসিনাকে ফেরত পাঠানোর ব্যাপারে এখনো ইতিবাচক সাড়া দেয়নি ভারত: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

রংপুর প্রতিনিধি
রংপুরে সার্কিট হাউসে সাংবাদিকের সঙ্গে কথা বলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
রংপুরে সার্কিট হাউসে সাংবাদিকের সঙ্গে কথা বলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেছেন, শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরত দেয়ার ব্যাপারে ভারত এখনও ইতিবাচক সাড়া দেয়নি। ট্রাইব্যুনালের রায় নিয়ে তারা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছে, আমরাও তাদের প্রতিক্রিয়ার অপেক্ষায় আছি। আজ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) সকালে রংপুর সার্কিট হাউসে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন তিনি। রংপুর অঞ্চলে চার দিনের সফরে এসেছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা।

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা তো চেয়েছি যে তাকে (শেখ হাসিনাকে) ফেরত পাঠানো হোক। যেহেতু উনি একজন কনভিক্টেড, যেহেতু সর্বোচ্চ বিচারিক সংস্থা তাকে একটি শাস্তি দিয়েছে। কিন্তু আমরা ইতিবাচক কোনো সাড়া এখন পর্যন্ত পাইনি। এটা নিয়ে আমার মনে হয় স্পেকুলেট না করাই ভালো। দেখা যাক কী হয়। আমরা তো চেয়েছি খুব, এ ধরনের ঘটনায় তো ঝট করে একদিনে সাত দিনে কোনো পরিবর্তন ঘটে না। আমরা অপেক্ষা করব, দেখি, ভারতের পক্ষ থেকে কি আসছে রিঅ্যাকশন।’

তৌহিদ হোসেন বলেন, একটা রিঅ্যাকশন আমরা দেখেছি যেটা, সেটা হলো তারা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখছে, এরকম একটা কথা আসছে আমাদের। দেখুক তারা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে।

বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেশে ফেরার বিষয়ে পররাষ্ট্র দপ্তরে কোনো তথ্য নেই বলে উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, "তারেক সাহেব কখন আসবেন এই সম্বন্ধে আমার কাছে কোনো তথ্য নেই। উনার স্ত্রী সম্ভবত আসছেন বা পৌঁছে গেছেন হয়তো ইতিমধ্যে। আজকে সকালে পৌঁছার কথা ছিল। বেগম জিয়াকে আজকে নেওয়া হচ্ছে না, আমি ঢাকা থেকে আজকে সকালে জানলাম যে, আজকে নেওয়া হচ্ছে না। একটু টেকনিক্যাল প্রবলেম দেখা দিয়েছে ওই এয়ারক্রাফট নিয়ে। সেক্ষেত্রে হয়তো এক-আধ দিন দেরি হতে পারে। "

আরাকান আর্মি বাংলাদেশিদের ধরে নিয়ে যাওয়া প্রসঙ্গে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, "আরাকান আর্মির সাথে আমাদের দ্বিপাক্ষিক আলোচনা সম্ভব নয়। তারা একটা নন-স্টেট অ্যাক্টর। আমরা স্টেট হিসেবে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা যেমন মিয়ানমারের কর্তৃপক্ষ, থাইল্যান্ড বা ভারতের সাথে করতে পারি সেটা তাদের সাথে করতে পারি না। তবে আমাদের স্বার্থ যেহেতু আছে, আমাদের দেখতে হবে। এই ঘটনা যাতে কমে বা আদৌ না ঘটে, এটার জন্য পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। "

এছাড়াও নীলফামারীতে প্রস্তাবিত চীনা হাসপাতালের কার্যক্রম অন্তর্বর্তী সরকার দ্রুত শুরু করে যেতে চায় বলেও জানান পররাষ্ট্র উপদেষ্টা। একই সঙ্গে নির্বাচিত সরকার এলে এই কাজ সমাপ্ত করবে বলেও আশা তার। এ সময় পিছিয়ে পড়া রংপুরের প্রত্নতাত্ত্বিকসহ সবক্ষেত্রে নেয়ার ব্যাপারে ইতিবাচক সরকারের সদিচ্ছার কথা জানান তৌহিদ হোসেন।

এরপর পররাষ্ট্র উপদেষ্টা সপরিবারে রংপুর জমিদার বাড়ি তাজহাটে পরিদর্শনে যান। এছাড়াও বিকেলে রংপুর সার্কিট হাউসে চা-চক্রের কথা রয়েছে তৌহিদ হোসেনের। আগামীকাল রংপুরের প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় এবং রংপুরের ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জিলা স্কুল পরিদর্শন করার কথাও রয়েছে তার।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

হাতিয়ায় ৫৬০০ কেজি জাটকা ইলিশ জব্দ, এতিমখানায় বিতরণ

­হাতিয়া (নোয়াখালী) প্রতিনিধি
কোস্ট গার্ডের অভিযানে জব্দ জাটকা ইলিশ। ছবি: আজকের পত্রিকা
কোস্ট গার্ডের অভিযানে জব্দ জাটকা ইলিশ। ছবি: আজকের পত্রিকা

নোয়াখালীর হাতিয়ার জাগলার চর এলাকার মেঘনা নদীতে অভিযান চালিয়েছে কোস্ট গার্ড। এ সময় একটি নৌকা থেকে ৫ হাজার ৬০০ কেজি জাটকা ইলিশ জব্দ করা হয়। এই ঘটনায় আটক কয়েকজন মাঝিমাল্লার কাছ থেকে মুচলেকা নিয়ে তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে কোস্ট গার্ড হাতিয়ার একটি দল এই অভিযান চালায়। জব্দ করা জাটকাগুলোর মূল্য প্রায় ২৮ লাখ টাকা।

কোস্ট গার্ড মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট মো. আবুল কাশেম জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মেঘনা নদীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে কোস্ট গার্ড। অভিযানে মেঘনা নদীর জাগলার চর এলাকায় একটি কাঠের নৌকায় তল্লাশি করা হয়। ওই নৌকা থেকে ৫ হাজার ৬০০ কেজি জাটকা জব্দ করা হয়। এ সময় মাঝিদের মুচলেকা নিয়ে নৌকা ছেড়ে দেওয়া হয়। জব্দ মাছগুলো মৎস্য কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে এতিমখানা ও দুস্থ ব্যক্তিদের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে। মৎস্য সম্পদ রক্ষায় কোস্ট গার্ডের এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানান এই কর্মকর্তা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মাঠে পড়ে ছিল মাছ ব্যবসায়ীর রক্তাক্ত লাশ

ফরিদপুর প্রতিনিধি
ঘটনাস্থলে স্থানীয় বাসিন্দারা জড়ো হন। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঘটনাস্থলে স্থানীয় বাসিন্দারা জড়ো হন। ছবি: আজকের পত্রিকা

ফরিদপুরের সালথায় উৎপল সরকার (৩৫) নামের এক মাছ ব্যবসায়ীর রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ শুক্রবার সকালে উপজেলার আটঘর ইউনিয়নের গৌরদিয়া এলাকার কালীতলা ব্রিজ-সংলগ্ন মাঠ থেকে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ। এই ঘটনায় মাঠ-সংলগ্ন সেতু থেকে চোখ বাঁধা অবস্থায় থাকা ফিরোজ মোল্যা নামের এক ভ্যানচালককে জীবিত উদ্ধার করে স্থানীয় লোকজন।

নিহত উৎপল ফরিদপুর জেলা সদরের কানাইপুর ইউনিয়নের রনকাইল গ্রামের অজয় সরকারের ছেলে। তাঁর স্ত্রী ও আড়াই বছর বয়সী এক শিশুসন্তান রয়েছে।

থানা-পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আজ ভোরে সড়কের পাশে ফাঁকা মাঠে রক্তাক্ত অবস্থায় একটি লাশ দেখতে পায় স্থানীয় লোকজন। পাশেই একটি সেতুর সঙ্গে একই গ্রামের ভ্যানচালক ফিরোজ মোল্যাকে চোখ বাঁধা অবস্থায় বেঁধে রাখা হয়েছিল। পরে স্থানীয় বাসিন্দাদের হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি খুলে বলেন তিনি।

ভ্যানচালকের বরাত দিয়ে রনকাইল গ্রামের বাসিন্দা ও প্রতিবেশী কাজী শাহীন বলেন, উৎপল সরকার ব্যাটারিচালিত ভ্যানে করে গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরে মাছ কিনতে যাচ্ছিলেন। পথে অজ্ঞাতপরিচয় তিন-চার ব্যক্তি দেশীয় অস্ত্রের মুখে ভ্যানচালক ফিরোজ মোল্যাকে গামছা দিয়ে চোখ বেঁধে ব্রিজের রেলিংয়ে বেঁধে ফেলে। তারা উৎপলের সঙ্গে থাকা টাকাপয়সা লুট করে তাঁকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যায়।

বিষয়টি নিশ্চিত করে সালথা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কে এম মারুফ হাসান রাসেল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘দুই থেকে তিনজন দুর্বৃত্ত ঘটনাটি ঘটিয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। তবে এটাকে ডাকাতি বলা যায় না। ঘটনাটি নিয়ে তদন্ত চলমান। তদন্ত শেষে মূল কারণ বলা যাবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বাসার দরজা ভেঙে চবি শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার

চবি প্রতিনিধি 
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ওমর ফারুক সুমন নামের এক শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) রাতে চট্টগ্রাম নগরীর খুলশী এলাকার একটি বাসা থেকে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ।

ওমর ফারুক বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।

স্থানীয় ও পরিবারের সদস্যরা জানান, সুমন খুলশীতে তাঁর মামার বাসায় থাকতেন। তাঁর বড় ভাইও সেখানে থাকেন। দুই দিন আগে সুমনের মামা পুরো পরিবার নিয়ে তুরস্কে বেড়াতে যান। বাসায় সুমন ও তাঁর বড় ভাই ছিলেন। গতকাল বিকেল ৪টার দিকে ভাইয়ের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন সুমন। ফোনে তাঁর বড় ভাই কখন বাসায় ফিরবেন জানতে চান সুমন। বড় ভাই জানান যে তাঁর আসতে একটু দেরি হবে। এর কিছুক্ষণ পর বড় ভাই সুমনকে ফোন করলে তিনি আর ফোন রিসিভ করেননি। পরে বাড়ি থেকে সুমনের মা ফোন দিয়ে যোগাযোগ করতে না পেরে বিষয়টি বড় ভাইকে জানান। এতে উদ্বেগ দেখা দিলে বড় ভাই বিল্ডিংয়ের দারোয়ানকে দিয়ে বাসা চেক করান।

দারোয়ান কলিংবেল বাজিয়েও কোনো সাড়া না পেয়ে বড় ভাইকে জানালে তিনি দ্রুত বাসায় এসে সুমনকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান। খবর পেয়ে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে। ঘটনাস্থলে চিরকুট মিলেছে। এতে লেখা রয়েছে, ‘আমি সুমন, ওমর ফারুক সুমন। আমার কোনো আশা-আকাঙ্ক্ষা নেই। আর আমার কারও প্রতি কোনো অভিযোগ নেই। সবাই ভালো থাকবেন।’ এর আগে ১ ডিসেম্বর লেখা আরেকটি চিরকুট পাওয়া যায়। সেখানে লেখা ছিল—‘আশাই জীবন, আশাই মরণ, ব্যর্থতা হতাশা-অন্ধকারে নিয়ে যায়।’

খুলশী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহীনুর জামান বলেন, ‘সুমন ও তাঁর বড় ভাই একসঙ্গে মামার বাসায় থাকতেন। মামা ও মামি বর্তমানে বিদেশে আছেন। বড় ভাই সন্ধ্যায় বাইরে যান। সে সময় সুমন বাসায় একা ছিলেন। বড় ভাই বাসায় ফিরে এসে বারবার ডাকলেও ফ্ল্যাটের ভেতর থেকে কোনো সাড়া পাননি। পরে দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকলে সুমনের মরদেহ ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। প্রাথমিক তদন্তে এটি আত্মহত্যা মনে হলেও আমরা সব সম্ভাব্য কারণ খতিয়ে দেখছি। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহটি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত