Ajker Patrika

বিকৃত লাশ দুটি ৩০ ঘণ্টা ধরে গাড়িতে, একজনের মুখ ছিল থ্যাঁতলানো

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ১২ আগস্ট ২০২৫, ০৯: ১৫
ঘটনাস্থল থেকে আলামত সংগ্রহ করে পুলিশ ও সিআইডির ক্রাইম ইউনিট। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঘটনাস্থল থেকে আলামত সংগ্রহ করে পুলিশ ও সিআইডির ক্রাইম ইউনিট। ছবি: আজকের পত্রিকা

রাজধানীর মৌচাকে ডা. সিরাজুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হসপিটালের পার্কিংয়ে একটি প্রাইভেট কার থেকে যে দুজনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে, তাঁরা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এক রোগীকে এলাকায় নেওয়ার জন্য ঢাকায় এসেছিলেন। পুলিশ ও হাসপাতাল সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

লাশ উদ্ধার হওয়া জাকির ও মিজানের বাড়ি নোয়াখালীর চাটখিলে। দুজনের মধ্যে জাকির গাড়িচালক ছিলেন।

পুলিশ বলছে, নিহত দুজনের মধ্যে একজনের মরদেহ গাড়ির চালকের আসনে এবং অন্যজনের মরদেহ পেছনে যাত্রীর আসনে পাওয়া গেছে। দুটি লাশই বিকৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। যাত্রীর আসনে থাকা মরদেহের মুখ থ্যাঁতলানো অবস্থায় ছিল। গাড়ির সব দরজা খোলা ছিল। তাঁদের মৃত্যুর কারণ নিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে কিছুই জানায়নি পুলিশ।

মৃত্যুর রহস্য নিয়ে ডিএমপির রমনা বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার মাসুদ আলম সাংবাদিকদের বলেন, ৩০ থেকে ৩২ ঘণ্টা লাশ দুটি ওই গাড়ির ভেতরে ছিল। এ কারণে লাশ দুটি অন্যরকম হয়ে গেছে। প্রাথমিকভাবে বলার কিছু নেই। ময়নাতদন্তে চিকিৎসকেরা হয়তো বুঝতে পারবেন, অন্য কোনো ঝামেলা রয়েছে কি না। খালি চোখে বোঝা সম্ভব নয়। অনেক জিজ্ঞাসা রয়েছে। একটু সময় লাগবে। তদন্তে যদি অস্বাভাবিক কিছু থাকে, তা-ও আসবে।

পুলিশ ও হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, গতকাল রোববার (১০ আগস্ট) ভোর ৫টা ৩২ মিনিটে হাসপাতালের রিসেপশনে আসেন গাড়ির মালিক সৌরভ এবং তাঁর সঙ্গে ছিলেন মিজান। আর গাড়ির চালক জাকির চলে যান বেজমেন্টের দিকে গাড়ি পার্কিংয়ের জন্য। রিসেপশনে সৌরভ ও মিজান কথা বলা শেষে মিজান চলে যান গাড়ির কাছে আর সৌরভ চলে যান নোয়াখালী। সৌরভ অন্য একটি কাজে ঢাকায় এসেছিলেন। জাকির ও মিজান হাসপাতালটিতে চিকিৎসাধীন জোবায়ের নামের এক রোগীকে নিয়ে নোয়াখালী যাবেন বলে আসেন।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন শিশু জোবায়েরের বাবা হুমায়ুন কবির আজকের পত্রিকাকে বলেন, গত ২২ জুলাই হাসপাতালটিতে ছেলে জোবায়েরকে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করান। তাঁর বাড়ি নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলায়। গতকাল রোববার জোবায়েরকে হাসপাতাল থেকে রিলিজ দিতে পারে বলে এলাকার মনির নামের একজনের সঙ্গে গাড়ি ভাড়া করার বিষয়ে কথা বলেন তিনি। মনির তাঁকে জাকির নামের একজনের গাড়ি ভাড়া করার কথা জানান।

‎‎হুমায়ুন কবির বলেন, ‘জাকির বিমানবন্দরে ভাড়া নিয়ে আসবে বলে জানান মনির। যাওয়ার সময় আমাদের নিয়ে যাবেন। তখন আমি মনিরকে বলেছি, আমাদের রিলিজ দিলে আসতে বলবেন। গাড়ির লোকজনের সঙ্গে আমার কোনো কথা হয়নি।’ তবে নিহত দুজনের বাড়ি তাঁর এলাকায় বলে জানান হুমায়ুন। আর আজও তাঁরা হাসপাতাল থেকে রিলিজ পাননি বলে জানানো হয়।

পুলিশ জানায়, তাঁরা গাড়ি নিয়ে ভোরে আসায় মনে হয়, ওই সময় রোগীর লোকদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেননি। তাঁরা হয়তো চিন্তা করেছেন, একটু অপেক্ষা করে কথা বলবেন। নিচে নেটওয়ার্কের ঝামেলা থাকায় মালিকও কয়েকবার চেষ্টা করে তাঁদের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করতে পারেননি।

আজ বিকেলে হাসপাতালটিতে গিয়ে দেখা যায়, বেজমেন্টের মুখে প্রায় অর্ধশত মানুষ ভিড় করেছেন। গণমাধ্যমকর্মী ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য ছাড়া কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। লাশের সুরতহাল করছে রমনা থানার পুলিশ। আর যে প্রাইভেট কারটিতে লাশ দুটি পাওয়া গেছে, গাড়িটির নম্বর হলো ঢাকা মেট্রো গ ৩৬-৩৭৪৫।

বেজমেন্টটিতে ঢোকার মুখে সিসিটিভি ক্যামেরা দেখা গেছে। বেজমেন্টের ভেতরও সিসি ক্যামেরা রয়েছে। তবে ওই গাড়ি যেখানে পার্ক করা ছিল, ওই স্থান সিসি ক্যামেরার আওতায় পড়েনি।

সেখানে হাসপাতালটির সিকিউরিটি ইনচার্জ মিজানুর রহমানের সঙ্গে কথা হলে তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আজ বেলা ১১টা ৪৫ মিনিটের দিকে পার্কিংয়ে জায়গা খালি রয়েছে কি না দেখার জন্য বেজমেন্টের তৃতীয় তলায় আসি। এসে দেখি, গাড়ির ভেতরে দুজন আছেন। বাইরে থেকে কয়েকবার ডাকাডাকি করলেও সাড়া না পেয়ে দরজা খুলি। খুলে দেখি, দুজনেই মারা গেছেন। পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে জানালে তারা পুলিশে খবর দেয়।’

ঘটনার দিন আজ সকালে ডা. সিরাজুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বেজমেন্টের তৃতীয় তলায় সিকিউরিটির দায়িত্বে ছিলেন সুবাস বড়ুয়া। আজ বিকেলে তিনি বলেন, ‘ভোর ৫টা ৪০ মিনিটের দিকে গাড়িটি বেজমেন্টে প্রবেশ করে। হাসপাতালে রোগী রয়েছে বলে জানান গাড়ির চালক। তবে কোনো রোগীর নাম বলেননি তিনি। পরে তাঁর গাড়ির নম্বর লিখে নিই।’

‎তিনি আরও বলেন, যাঁরা রোগী নিয়ে আসেন, তাঁরা কখনো ৪-৫ ঘণ্টা, কখনো সকালে এসে বিকেলে রোগী নিয়ে চলে যান। যখন কোনো গাড়ি ১২ ঘণ্টা বা ২৪ ঘণ্টা হওয়ার পরও বের না হলে গাড়িগুলো চেক করা হয়। ওই প্রাইভেট কার যখন ঢোকে, তখন গাড়িতে শুধু চালক ছিলেন।

‎‎সকাল ৮টা পর্যন্ত ডিউটিতে ছিলেন সুবাস। এরপর ডিউটিতে আসেন সিকিউরিটি ইনচার্জ মিজানুর রহমান। এ সময় তিনি গাড়ির হিসাব দিয়ে যান মিজানুর রহমানকে।

হাসপাতালে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা পরিচালক সালমান আহমেদ বলেন, ‘হাসপাতালটিতে নোয়াখালী এলাকা থেকে অনেক রোগী আসে। গাড়ির ওই চালক প্রায়ই রোগী নিয়ে আসেন। ঘটনার দিনও তাঁরা রোগী নিতে আসছিলেন শুনেছি। কিন্তু কীভাবে মারা গেলেন, তা জানা যায়নি।’

ঘটনার বিষয়ে হাসপাতালের উপপরিচালক (প্রশাসন) মো. আব্দুল মালেক মৃধা বলেন, ‘ঘটনাটা হাসপাতালের পার্কিংয়ের বেজমেন্টে। আমরা কিছুই জানি না। নিরাপত্তাকর্মীরা লাশ দেখে জানানোর পর আমরা পুলিশে খবর দিই। পরে তারা লাশ নিয়ে যায়।’

উপপুলিশ কমিশনার মাসুদ আলম বলেন, গাড়ির মালিক সৌরভ নোয়াখালী থেকে ঢাকায় এসেছেন। ঘটনার বিষয়ে আরও জেনে এবং ময়নাতদন্তের পর মামলার বিষয়ে প্রক্রিয়া শুরু হবে।

ঘটনাস্থল থেকে আলামত সংগ্রহ করেছে সিআইডি। লাশের সুরতহাল করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বাসার বাথরুমে পড়ে ছিল নারী প্রভাষকের লাশ, মাথায় আঘাতের চিহ্ন

বগুড়া প্রতিনিধি
ফাবিয়া তাসনিম সিধি। ছবি: সংগৃহীত
ফাবিয়া তাসনিম সিধি। ছবি: সংগৃহীত

বগুড়ার এক বাসা থেকে ফাবিয়া তাসনিম সিধি (২৯) নামের এক প্রভাষকের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে বগুড়া শহরের চক ফরিদ এলাকায় ভাড়া বাসা থেকে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ।

মৃত ফাবিয়া বগুড়ার সরকারি শাহ সুলতান কলেজের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের প্রভাষক। বছর দেড়েক আগে তিনি কলেজটিতে যোগদান করেন।

এই তথ্য নিশ্চিত করে বগুড়া সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মাহফুজার রহমান জানান, ফাবিয়া অবিবাহিত। তিনি বগুড়া শহরের চক ফরিদ এলাকায় ডা. রাশেদুল হাসানের বাড়ির তিনতলায় ভাড়া বাসায় তাঁর মায়ের সঙ্গে থাকতেন। কয়েক দিন আগে তাঁর মা গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহে যান। গতকাল দুপুরের পর থেকে মেয়েকে ফোনে না পাওয়ায় তাঁর মা রাত ১০টার দিকে বগুড়া আসেন। অনেক ডাকাডাকি করে দরজা না খোলায় পুলিশে খবর দেওয়া হয়। পরে পুলিশ সেখানে গিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের উপস্থিতিতে দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে বাসার বাথরুমে ফাবিয়ার লাশ দেখতে পায়।

পুলিশ জানায়, মৃত ব্যক্তির নাক দিয়ে রক্ত ঝরছিল এবং মাথার পেছনে আঘাতের চিহ্ন ছাড়াও জিবে দাঁত দিয়ে কামড় দেওয়া ছিল। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মাহফুজার রহমান বলেন, ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়া গেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

অটোরিকশাকে চাপা দিল বাস, প্রাণ গেল তিনজনের

ফরিদপুর প্রতিনিধি
বাসচাপায় অটোরিকশাটি ভেঙেচুরে গেছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
বাসচাপায় অটোরিকশাটি ভেঙেচুরে গেছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

ফরিদপুরের ভাঙ্গায় বাসের চাপায় একটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার তিন যাত্রী নিহত হয়েছেন। এই ঘটনায় শিশুসহ আরও চারজন আহত হয়। আজ শুক্রবার বেলা পৌনে ১২টার দিকে ফরিদপুর-ভাঙ্গা-বরিশাল মহাসড়কের কৈডুবী সদরদি রেলক্রসিং এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে। ভাঙ্গা হাইওয়ে থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সোহেল মিয়া এই তথ্য নিশ্চিত করেন।

নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে দুজন নারী ও একজন পুরুষ। তাৎক্ষণিকভাবে তাঁদের পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি।

খবর পেয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধার অভিযান চালান। আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে ভাঙ্গা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়েছে।  

হাইওয়ে থানার এসআই সোহেল মিয়া বলেন, অটোরিকশাটি ভাঙ্গা থেকে টেকেরহাটের উদ্দেশে যাচ্ছিল। কৈডুবী সদরদি রেলক্রসিং এলাকায় পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা নিউ মডার্ন পরিবহনের একটি বাস অটোরিকশাটিকে চাপা দেয়। এই ঘটনায় বাসটি আটক করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

হাতিয়ায় ৫৬০০ কেজি জাটকা ইলিশ জব্দ, এতিমখানায় বিতরণ

­হাতিয়া (নোয়াখালী) প্রতিনিধি
কোস্ট গার্ডের অভিযানে জব্দ জাটকা ইলিশ। ছবি: আজকের পত্রিকা
কোস্ট গার্ডের অভিযানে জব্দ জাটকা ইলিশ। ছবি: আজকের পত্রিকা

নোয়াখালীর হাতিয়ার জাগলার চর এলাকার মেঘনা নদীতে অভিযান চালিয়েছে কোস্ট গার্ড। এ সময় একটি নৌকা থেকে ৫ হাজার ৬০০ কেজি জাটকা ইলিশ জব্দ করা হয়। এই ঘটনায় আটক কয়েকজন মাঝিমাল্লার কাছ থেকে মুচলেকা নিয়ে তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে কোস্ট গার্ড হাতিয়ার একটি দল এই অভিযান চালায়। জব্দ করা জাটকাগুলোর মূল্য প্রায় ২৮ লাখ টাকা।

কোস্ট গার্ড মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট মো. আবুল কাশেম জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মেঘনা নদীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে কোস্ট গার্ড। অভিযানে মেঘনা নদীর জাগলার চর এলাকায় একটি কাঠের নৌকায় তল্লাশি করা হয়। ওই নৌকা থেকে ৫ হাজার ৬০০ কেজি জাটকা জব্দ করা হয়। এ সময় মাঝিদের মুচলেকা নিয়ে নৌকা ছেড়ে দেওয়া হয়। জব্দ মাছগুলো মৎস্য কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে এতিমখানা ও দুস্থ ব্যক্তিদের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে। মৎস্য সম্পদ রক্ষায় কোস্ট গার্ডের এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানান এই কর্মকর্তা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মাঠে পড়ে ছিল মাছ ব্যবসায়ীর রক্তাক্ত লাশ

ফরিদপুর প্রতিনিধি
ঘটনাস্থলে স্থানীয় বাসিন্দারা জড়ো হন। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঘটনাস্থলে স্থানীয় বাসিন্দারা জড়ো হন। ছবি: আজকের পত্রিকা

ফরিদপুরের সালথায় উৎপল সরকার (৩৫) নামের এক মাছ ব্যবসায়ীর রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ শুক্রবার সকালে উপজেলার আটঘর ইউনিয়নের গৌরদিয়া এলাকার কালীতলা ব্রিজ-সংলগ্ন মাঠ থেকে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ। এই ঘটনায় মাঠ-সংলগ্ন সেতু থেকে চোখ বাঁধা অবস্থায় থাকা ফিরোজ মোল্যা নামের এক ভ্যানচালককে জীবিত উদ্ধার করে স্থানীয় লোকজন।

নিহত উৎপল ফরিদপুর জেলা সদরের কানাইপুর ইউনিয়নের রনকাইল গ্রামের অজয় সরকারের ছেলে। তাঁর স্ত্রী ও আড়াই বছর বয়সী এক শিশুসন্তান রয়েছে।

থানা-পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আজ ভোরে সড়কের পাশে ফাঁকা মাঠে রক্তাক্ত অবস্থায় একটি লাশ দেখতে পায় স্থানীয় লোকজন। পাশেই একটি সেতুর সঙ্গে একই গ্রামের ভ্যানচালক ফিরোজ মোল্যাকে চোখ বাঁধা অবস্থায় বেঁধে রাখা হয়েছিল। পরে স্থানীয় বাসিন্দাদের হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি খুলে বলেন তিনি।

ভ্যানচালকের বরাত দিয়ে রনকাইল গ্রামের বাসিন্দা ও প্রতিবেশী কাজী শাহীন বলেন, উৎপল সরকার ব্যাটারিচালিত ভ্যানে করে গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরে মাছ কিনতে যাচ্ছিলেন। পথে অজ্ঞাতপরিচয় তিন-চার ব্যক্তি দেশীয় অস্ত্রের মুখে ভ্যানচালক ফিরোজ মোল্যাকে গামছা দিয়ে চোখ বেঁধে ব্রিজের রেলিংয়ে বেঁধে ফেলে। তারা উৎপলের সঙ্গে থাকা টাকাপয়সা লুট করে তাঁকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যায়।

বিষয়টি নিশ্চিত করে সালথা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কে এম মারুফ হাসান রাসেল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘দুই থেকে তিনজন দুর্বৃত্ত ঘটনাটি ঘটিয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। তবে এটাকে ডাকাতি বলা যায় না। ঘটনাটি নিয়ে তদন্ত চলমান। তদন্ত শেষে মূল কারণ বলা যাবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত