আজকের পত্রিকা ডেস্ক

ইরানের সঙ্গে যুদ্ধ শুরুর পর থেকে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মধ্যপ্রাচ্যকে নতুনভাবে গড়ে তোলার পরিকল্পনার পরবর্তী পদক্ষেপ হিসেবে ইসরায়েল ও আরব দেশগুলোর মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়নের বিষয়টি বারবার সামনে আনছেন।
কিছুদিন আগেই নেতানিয়াহু বলেছেন, ‘সৌদি আরব ও অন্যদের সঙ্গে কীভাবে শান্তিচুক্তি করব, সেটা আমাকেই দেখতে দিন।’ ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলা এবং গাজায় যুদ্ধের আগে রিয়াদের সঙ্গে ঐতিহাসিক সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গিয়েছিল ইসরায়েল। গত সপ্তাহে স্থানীয় গণমাধ্যমে নেতানিয়াহু বলেন, ‘বিশ্বাস করুন, শুধু ভাবিনি, এখনো ভাবছি।’
কিন্তু অন্তত সৌদি আরবের ক্ষেত্রে এখন এটা আর স্পষ্ট নয়। ৭ অক্টোবরের পর থেকে সৌদি আরবের হিসাব-নিকাশ নাটকীয়ভাবে বদলে গেছে। গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধের প্রতি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া এবং ঐতিহাসিক প্রতিদ্বন্দ্বী ইরানের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের তৎপরতা এই পরিবর্তনের অন্যতম কারণ।
পর্যবেক্ষকেরা বলছেন, ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের সামরিক পদক্ষেপ সৌদি আরবকে আরও বেশি সতর্ক করে তুলেছে। দেশটি এখন ইসরায়েলকে ক্রমবর্ধমানভাবে যুদ্ধবাজ ও অস্থিতিশীলতা সৃষ্টিকারী শক্তি হিসেবে দেখছে। যুদ্ধ শুরুর পর থেকে সৌদি আরব প্রকাশ্যে তেহরানের সঙ্গে সম্পর্ক দৃঢ় করার পদক্ষেপ নিয়েছে।
সৌদি সরকারের চিন্তাভাবনা সম্পর্কে অবগত এক ব্যক্তি নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, ‘পারস্য উপসাগরের দেশগুলো ইরানের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক উন্নয়নের পথ ধরে রাখবে। এটা সবচেয়ে বড় প্রতিবেশীর সঙ্গে সম্পর্কের জন্য বুদ্ধিমানের কাজ। কিন্তু এর ফলে ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করা আরও কঠিন হয়ে পড়েছে এবং সৌদি আরব ফিলিস্তিনি ইস্যুতে তাদের দাবির ব্যাপারে আরও বেশি দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।’
বাহরাইনের ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের মধ্যপ্রাচ্য নীতির জ্যেষ্ঠ গবেষক হাসান আল-হাসান বলেন, ‘ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার কারণে সৌদি আরবের যে ভাব-মর্যাদাগত ক্ষতি হবে, তা এখন অনেক বেশি। দেশটির অভ্যন্তরীণ রাজনীতির দিক থেকে এবং তাদের আঞ্চলিক ও ইসলামি নেতৃত্বের অবস্থানের জন্যও।’
বিশ্লেষকেরা বলছেন, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের আগে যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান যে পরিকল্পনা করেছিলেন, তাতে ইসরায়েলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার বিনিময়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে প্রতিরক্ষা চুক্তি করার কথা ছিল। এটা বাস্তবায়িত হলে মধ্যপ্রাচ্যের রাজনৈতিক বিন্যাসে এক ঐতিহাসিক পরিবর্তন আসত।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রথম প্রেসিডেন্ট থাকার সময়, ২০২০ সালে সংযুক্ত আরব আমিরাত ও বাহরাইন ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করে, যা ‘আব্রাহাম অ্যাকর্ডস’ নামে পরিচিত। কিন্তু সৌদি আরবের সঙ্গে এমন চুক্তি হলে সেটা হতো ইসরায়েলের জন্য আরও বড় কূটনৈতিক সাফল্য। কারণ, সৌদি আরব শুধু ইসলামি বিশ্বের শীর্ষ নেতৃত্বের দেশ নয়, বরং বহুদিন ধরে ফিলিস্তিনিদের পক্ষে অবস্থান নিয়ে আসছে।
কিন্তু ৭ অক্টোবরের পর সবকিছু বদলে যায়। যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান বারবার গাজায় ইসরায়েলের ক্ষুব্ধ আক্রমণকে ‘গণহত্যা’ বলে আখ্যা দিয়েছেন। উপসাগরীয় অঞ্চলের কর্মকর্তারা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন, এই ধ্বংসযজ্ঞের ছবি নতুন প্রজন্মকে আরও বেশি উগ্রপন্থার দিকে ঠেলে দেবে। এই যুদ্ধ সৌদি আরবের যুবসমাজের মধ্যে ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার বিষয়টি অত্যন্ত অজনপ্রিয় করে তুলেছে। অথচ যুবসমাজকে কেন্দ্র করেই ক্রাউন প্রিন্স তার অর্থনৈতিক পরিবর্তনের পরিকল্পনা সাজিয়েছেন। তাই তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে হলে যুদ্ধবিরতি এবং ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার দিকে দৃশ্যমান অগ্রগতি থাকতে হবে।
মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে যুদ্ধের উত্তাপ ছড়িয়ে পড়ায় সৌদি আরব ইরানের সঙ্গে সম্পর্ক আরও জোরদার করেছে। সুন্নি-অধ্যুষিত সৌদি আরব ও শিয়া-অধ্যুষিত ইরানের মধ্যে বছরের পর বছর ধরে বৈরিতা বজায় ছিল। ইয়েমেন ও লেবাননের মতো দেশে ইরানের মদদপুষ্ট সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর উপস্থিতিকে সৌদি আরব বরাবরই বড় নিরাপত্তা হুমকি হিসেবে দেখে এসেছে।
কিন্তু ২০১৯ সালে পারস্য উপসাগরের জ্বালানি স্থাপনার ওপর হামলার সময় যুক্তরাষ্ট্রের ‘মিশ্র প্রতিক্রিয়া’ দেখে সৌদি আরব কৌশল বদলানোর সিদ্ধান্ত নেয়। ওই হামলার জন্য তেহরানকে দায়ী করেছিল রিয়াদ। এরপর ২০২৩ সালের মার্চে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক পুনঃস্থাপিত হয়।
এরপর থেকে মোহাম্মদ বিন সালমান এবং ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান নিয়মিত ফোনে কথা বলছেন। অন্য উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তারাও নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন। কারণ, সৌদি আরব আশঙ্কা করছে, বৃহত্তর আঞ্চলিক সংঘাতে তারা জড়িয়ে পড়বে।
ইসরায়েলের আক্রমণের নিন্দা জানিয়েছে সৌদি আরব। দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী প্রিন্স খালিদ বিন সালমান গত রোববার নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত ইরানি সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান আব্দুলরহিম মুসাভির সঙ্গে ফোনে কথা বলেন। তাঁরা ‘নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা রক্ষার প্রচেষ্টা’ নিয়ে আলোচনা করেন। সৌদি আরবের জন্য ইসরায়েলের হাতে ইরান এবং তাদের আঞ্চলিক প্রক্সি গোষ্ঠী; যেমন হিজবুল্লাহ, দুর্বল হলে তেহরান থেকে আসা হুমকি কিছুটা কমে যায়। তবে এ নিয়ে শঙ্কাও আছে। কারণ, এতে ইরান আগের চেয়ে আরও বেশি পরমাণু অস্ত্র অর্জনের চেষ্টা করতে পারে।
ওয়াশিংটনের মধ্যপ্রাচ্য ইনস্টিটিউটের গবেষক গ্রেগরি গাউস বলেন, ‘২০২২ সালের ইরান আর ২০২৫ সালের ইরান এক নয়। ২০২৫ সালের “বিজয়ী ইসরায়েল” এখন আঞ্চলিক রাজনীতির জন্য আরও বেশি অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করছে।’
ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করা সৌদি আরবের জন্য ওয়াশিংটনের রাজনৈতিক আনুকূল্য অর্জনের পথ খুলে দেবে। আর ট্রাম্প আগেই পরিষ্কার করেছেন; তিনি চান, সৌদি আরব আব্রাহাম অ্যাকর্ডসে যোগ দিক। মে মাসে রিয়াদ সফরে গিয়ে তিনি বলেন, ‘এটা হবে একটা বিশেষ ব্যাপার।’
যুদ্ধের পর ফক্স নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট (ট্রাম্প) বলেছেন, তিনি বিশ্বাস করেন, আরও দেশ আব্রাহাম অ্যাকর্ডসে যোগ দিতে পারে। তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি, আমরা এটা নিয়ে এগিয়ে যাব। কারণ, আসল সমস্যা ছিল ইরান।’
তবে ইসরায়েলি কর্মকর্তারা মনে করেন, সৌদি আরবের মতো দেশগুলোর সঙ্গে পূর্ণাঙ্গ সম্পর্ক স্বাভাবিককরণের চেয়ে অপেক্ষাকৃত সহজ এবং দ্রুত বাস্তবায়নযোগ্য পদক্ষেপ হতে পারে একটি সীমিত ‘অসহযোগিতা পরিহার’ বা নিরাপত্তা চুক্তি। এমন চুক্তির লক্ষ্য হতে পারে ইসরায়েলের প্রতিবেশী সিরিয়া, যেখানে আহমেদ আল-শারার নেতৃত্বে নতুন সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
অনেক বিশ্লেষক মনে করেন, ট্রাম্পকে খুশি রাখতে সৌদি আরব ও অন্য উপসাগরীয় দেশগুলো আরেকটি পথ বেছে নিয়েছে—অর্থ। মে মাসে ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য সফরের সময় উপসাগরীয় দেশগুলো বহু ট্রিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। তাদের আশা, এর মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি এবং উন্নত অস্ত্রের প্রবেশাধিকার পাওয়া যাবে।
আল-হাসান বলেন, ‘ট্রাম্পের মতো সৌদি আরবের ওপর এতটা সময়ের চাপ নেই চুক্তি করতে। তাদের কিছু উদ্বেগ থাকলেও তারা এতটাই আরামদায়ক ভূরাজনৈতিক অবস্থানে আছে যে, যা তারা করতে চায় না, সেটা করার জন্য তাদের কোনো চাপ নেই।’
অনুবাদ করেছেন আজকের পত্রিকার সহসম্পাদক আব্দুর রহমান

ইরানের সঙ্গে যুদ্ধ শুরুর পর থেকে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মধ্যপ্রাচ্যকে নতুনভাবে গড়ে তোলার পরিকল্পনার পরবর্তী পদক্ষেপ হিসেবে ইসরায়েল ও আরব দেশগুলোর মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়নের বিষয়টি বারবার সামনে আনছেন।
কিছুদিন আগেই নেতানিয়াহু বলেছেন, ‘সৌদি আরব ও অন্যদের সঙ্গে কীভাবে শান্তিচুক্তি করব, সেটা আমাকেই দেখতে দিন।’ ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলা এবং গাজায় যুদ্ধের আগে রিয়াদের সঙ্গে ঐতিহাসিক সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গিয়েছিল ইসরায়েল। গত সপ্তাহে স্থানীয় গণমাধ্যমে নেতানিয়াহু বলেন, ‘বিশ্বাস করুন, শুধু ভাবিনি, এখনো ভাবছি।’
কিন্তু অন্তত সৌদি আরবের ক্ষেত্রে এখন এটা আর স্পষ্ট নয়। ৭ অক্টোবরের পর থেকে সৌদি আরবের হিসাব-নিকাশ নাটকীয়ভাবে বদলে গেছে। গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধের প্রতি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া এবং ঐতিহাসিক প্রতিদ্বন্দ্বী ইরানের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের তৎপরতা এই পরিবর্তনের অন্যতম কারণ।
পর্যবেক্ষকেরা বলছেন, ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের সামরিক পদক্ষেপ সৌদি আরবকে আরও বেশি সতর্ক করে তুলেছে। দেশটি এখন ইসরায়েলকে ক্রমবর্ধমানভাবে যুদ্ধবাজ ও অস্থিতিশীলতা সৃষ্টিকারী শক্তি হিসেবে দেখছে। যুদ্ধ শুরুর পর থেকে সৌদি আরব প্রকাশ্যে তেহরানের সঙ্গে সম্পর্ক দৃঢ় করার পদক্ষেপ নিয়েছে।
সৌদি সরকারের চিন্তাভাবনা সম্পর্কে অবগত এক ব্যক্তি নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, ‘পারস্য উপসাগরের দেশগুলো ইরানের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক উন্নয়নের পথ ধরে রাখবে। এটা সবচেয়ে বড় প্রতিবেশীর সঙ্গে সম্পর্কের জন্য বুদ্ধিমানের কাজ। কিন্তু এর ফলে ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করা আরও কঠিন হয়ে পড়েছে এবং সৌদি আরব ফিলিস্তিনি ইস্যুতে তাদের দাবির ব্যাপারে আরও বেশি দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।’
বাহরাইনের ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের মধ্যপ্রাচ্য নীতির জ্যেষ্ঠ গবেষক হাসান আল-হাসান বলেন, ‘ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার কারণে সৌদি আরবের যে ভাব-মর্যাদাগত ক্ষতি হবে, তা এখন অনেক বেশি। দেশটির অভ্যন্তরীণ রাজনীতির দিক থেকে এবং তাদের আঞ্চলিক ও ইসলামি নেতৃত্বের অবস্থানের জন্যও।’
বিশ্লেষকেরা বলছেন, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের আগে যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান যে পরিকল্পনা করেছিলেন, তাতে ইসরায়েলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার বিনিময়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে প্রতিরক্ষা চুক্তি করার কথা ছিল। এটা বাস্তবায়িত হলে মধ্যপ্রাচ্যের রাজনৈতিক বিন্যাসে এক ঐতিহাসিক পরিবর্তন আসত।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রথম প্রেসিডেন্ট থাকার সময়, ২০২০ সালে সংযুক্ত আরব আমিরাত ও বাহরাইন ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করে, যা ‘আব্রাহাম অ্যাকর্ডস’ নামে পরিচিত। কিন্তু সৌদি আরবের সঙ্গে এমন চুক্তি হলে সেটা হতো ইসরায়েলের জন্য আরও বড় কূটনৈতিক সাফল্য। কারণ, সৌদি আরব শুধু ইসলামি বিশ্বের শীর্ষ নেতৃত্বের দেশ নয়, বরং বহুদিন ধরে ফিলিস্তিনিদের পক্ষে অবস্থান নিয়ে আসছে।
কিন্তু ৭ অক্টোবরের পর সবকিছু বদলে যায়। যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান বারবার গাজায় ইসরায়েলের ক্ষুব্ধ আক্রমণকে ‘গণহত্যা’ বলে আখ্যা দিয়েছেন। উপসাগরীয় অঞ্চলের কর্মকর্তারা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন, এই ধ্বংসযজ্ঞের ছবি নতুন প্রজন্মকে আরও বেশি উগ্রপন্থার দিকে ঠেলে দেবে। এই যুদ্ধ সৌদি আরবের যুবসমাজের মধ্যে ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার বিষয়টি অত্যন্ত অজনপ্রিয় করে তুলেছে। অথচ যুবসমাজকে কেন্দ্র করেই ক্রাউন প্রিন্স তার অর্থনৈতিক পরিবর্তনের পরিকল্পনা সাজিয়েছেন। তাই তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে হলে যুদ্ধবিরতি এবং ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার দিকে দৃশ্যমান অগ্রগতি থাকতে হবে।
মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে যুদ্ধের উত্তাপ ছড়িয়ে পড়ায় সৌদি আরব ইরানের সঙ্গে সম্পর্ক আরও জোরদার করেছে। সুন্নি-অধ্যুষিত সৌদি আরব ও শিয়া-অধ্যুষিত ইরানের মধ্যে বছরের পর বছর ধরে বৈরিতা বজায় ছিল। ইয়েমেন ও লেবাননের মতো দেশে ইরানের মদদপুষ্ট সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর উপস্থিতিকে সৌদি আরব বরাবরই বড় নিরাপত্তা হুমকি হিসেবে দেখে এসেছে।
কিন্তু ২০১৯ সালে পারস্য উপসাগরের জ্বালানি স্থাপনার ওপর হামলার সময় যুক্তরাষ্ট্রের ‘মিশ্র প্রতিক্রিয়া’ দেখে সৌদি আরব কৌশল বদলানোর সিদ্ধান্ত নেয়। ওই হামলার জন্য তেহরানকে দায়ী করেছিল রিয়াদ। এরপর ২০২৩ সালের মার্চে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক পুনঃস্থাপিত হয়।
এরপর থেকে মোহাম্মদ বিন সালমান এবং ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান নিয়মিত ফোনে কথা বলছেন। অন্য উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তারাও নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন। কারণ, সৌদি আরব আশঙ্কা করছে, বৃহত্তর আঞ্চলিক সংঘাতে তারা জড়িয়ে পড়বে।
ইসরায়েলের আক্রমণের নিন্দা জানিয়েছে সৌদি আরব। দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী প্রিন্স খালিদ বিন সালমান গত রোববার নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত ইরানি সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান আব্দুলরহিম মুসাভির সঙ্গে ফোনে কথা বলেন। তাঁরা ‘নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা রক্ষার প্রচেষ্টা’ নিয়ে আলোচনা করেন। সৌদি আরবের জন্য ইসরায়েলের হাতে ইরান এবং তাদের আঞ্চলিক প্রক্সি গোষ্ঠী; যেমন হিজবুল্লাহ, দুর্বল হলে তেহরান থেকে আসা হুমকি কিছুটা কমে যায়। তবে এ নিয়ে শঙ্কাও আছে। কারণ, এতে ইরান আগের চেয়ে আরও বেশি পরমাণু অস্ত্র অর্জনের চেষ্টা করতে পারে।
ওয়াশিংটনের মধ্যপ্রাচ্য ইনস্টিটিউটের গবেষক গ্রেগরি গাউস বলেন, ‘২০২২ সালের ইরান আর ২০২৫ সালের ইরান এক নয়। ২০২৫ সালের “বিজয়ী ইসরায়েল” এখন আঞ্চলিক রাজনীতির জন্য আরও বেশি অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করছে।’
ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করা সৌদি আরবের জন্য ওয়াশিংটনের রাজনৈতিক আনুকূল্য অর্জনের পথ খুলে দেবে। আর ট্রাম্প আগেই পরিষ্কার করেছেন; তিনি চান, সৌদি আরব আব্রাহাম অ্যাকর্ডসে যোগ দিক। মে মাসে রিয়াদ সফরে গিয়ে তিনি বলেন, ‘এটা হবে একটা বিশেষ ব্যাপার।’
যুদ্ধের পর ফক্স নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট (ট্রাম্প) বলেছেন, তিনি বিশ্বাস করেন, আরও দেশ আব্রাহাম অ্যাকর্ডসে যোগ দিতে পারে। তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি, আমরা এটা নিয়ে এগিয়ে যাব। কারণ, আসল সমস্যা ছিল ইরান।’
তবে ইসরায়েলি কর্মকর্তারা মনে করেন, সৌদি আরবের মতো দেশগুলোর সঙ্গে পূর্ণাঙ্গ সম্পর্ক স্বাভাবিককরণের চেয়ে অপেক্ষাকৃত সহজ এবং দ্রুত বাস্তবায়নযোগ্য পদক্ষেপ হতে পারে একটি সীমিত ‘অসহযোগিতা পরিহার’ বা নিরাপত্তা চুক্তি। এমন চুক্তির লক্ষ্য হতে পারে ইসরায়েলের প্রতিবেশী সিরিয়া, যেখানে আহমেদ আল-শারার নেতৃত্বে নতুন সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
অনেক বিশ্লেষক মনে করেন, ট্রাম্পকে খুশি রাখতে সৌদি আরব ও অন্য উপসাগরীয় দেশগুলো আরেকটি পথ বেছে নিয়েছে—অর্থ। মে মাসে ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য সফরের সময় উপসাগরীয় দেশগুলো বহু ট্রিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। তাদের আশা, এর মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি এবং উন্নত অস্ত্রের প্রবেশাধিকার পাওয়া যাবে।
আল-হাসান বলেন, ‘ট্রাম্পের মতো সৌদি আরবের ওপর এতটা সময়ের চাপ নেই চুক্তি করতে। তাদের কিছু উদ্বেগ থাকলেও তারা এতটাই আরামদায়ক ভূরাজনৈতিক অবস্থানে আছে যে, যা তারা করতে চায় না, সেটা করার জন্য তাদের কোনো চাপ নেই।’
অনুবাদ করেছেন আজকের পত্রিকার সহসম্পাদক আব্দুর রহমান
আজকের পত্রিকা ডেস্ক

ইরানের সঙ্গে যুদ্ধ শুরুর পর থেকে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মধ্যপ্রাচ্যকে নতুনভাবে গড়ে তোলার পরিকল্পনার পরবর্তী পদক্ষেপ হিসেবে ইসরায়েল ও আরব দেশগুলোর মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়নের বিষয়টি বারবার সামনে আনছেন।
কিছুদিন আগেই নেতানিয়াহু বলেছেন, ‘সৌদি আরব ও অন্যদের সঙ্গে কীভাবে শান্তিচুক্তি করব, সেটা আমাকেই দেখতে দিন।’ ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলা এবং গাজায় যুদ্ধের আগে রিয়াদের সঙ্গে ঐতিহাসিক সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গিয়েছিল ইসরায়েল। গত সপ্তাহে স্থানীয় গণমাধ্যমে নেতানিয়াহু বলেন, ‘বিশ্বাস করুন, শুধু ভাবিনি, এখনো ভাবছি।’
কিন্তু অন্তত সৌদি আরবের ক্ষেত্রে এখন এটা আর স্পষ্ট নয়। ৭ অক্টোবরের পর থেকে সৌদি আরবের হিসাব-নিকাশ নাটকীয়ভাবে বদলে গেছে। গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধের প্রতি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া এবং ঐতিহাসিক প্রতিদ্বন্দ্বী ইরানের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের তৎপরতা এই পরিবর্তনের অন্যতম কারণ।
পর্যবেক্ষকেরা বলছেন, ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের সামরিক পদক্ষেপ সৌদি আরবকে আরও বেশি সতর্ক করে তুলেছে। দেশটি এখন ইসরায়েলকে ক্রমবর্ধমানভাবে যুদ্ধবাজ ও অস্থিতিশীলতা সৃষ্টিকারী শক্তি হিসেবে দেখছে। যুদ্ধ শুরুর পর থেকে সৌদি আরব প্রকাশ্যে তেহরানের সঙ্গে সম্পর্ক দৃঢ় করার পদক্ষেপ নিয়েছে।
সৌদি সরকারের চিন্তাভাবনা সম্পর্কে অবগত এক ব্যক্তি নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, ‘পারস্য উপসাগরের দেশগুলো ইরানের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক উন্নয়নের পথ ধরে রাখবে। এটা সবচেয়ে বড় প্রতিবেশীর সঙ্গে সম্পর্কের জন্য বুদ্ধিমানের কাজ। কিন্তু এর ফলে ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করা আরও কঠিন হয়ে পড়েছে এবং সৌদি আরব ফিলিস্তিনি ইস্যুতে তাদের দাবির ব্যাপারে আরও বেশি দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।’
বাহরাইনের ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের মধ্যপ্রাচ্য নীতির জ্যেষ্ঠ গবেষক হাসান আল-হাসান বলেন, ‘ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার কারণে সৌদি আরবের যে ভাব-মর্যাদাগত ক্ষতি হবে, তা এখন অনেক বেশি। দেশটির অভ্যন্তরীণ রাজনীতির দিক থেকে এবং তাদের আঞ্চলিক ও ইসলামি নেতৃত্বের অবস্থানের জন্যও।’
বিশ্লেষকেরা বলছেন, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের আগে যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান যে পরিকল্পনা করেছিলেন, তাতে ইসরায়েলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার বিনিময়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে প্রতিরক্ষা চুক্তি করার কথা ছিল। এটা বাস্তবায়িত হলে মধ্যপ্রাচ্যের রাজনৈতিক বিন্যাসে এক ঐতিহাসিক পরিবর্তন আসত।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রথম প্রেসিডেন্ট থাকার সময়, ২০২০ সালে সংযুক্ত আরব আমিরাত ও বাহরাইন ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করে, যা ‘আব্রাহাম অ্যাকর্ডস’ নামে পরিচিত। কিন্তু সৌদি আরবের সঙ্গে এমন চুক্তি হলে সেটা হতো ইসরায়েলের জন্য আরও বড় কূটনৈতিক সাফল্য। কারণ, সৌদি আরব শুধু ইসলামি বিশ্বের শীর্ষ নেতৃত্বের দেশ নয়, বরং বহুদিন ধরে ফিলিস্তিনিদের পক্ষে অবস্থান নিয়ে আসছে।
কিন্তু ৭ অক্টোবরের পর সবকিছু বদলে যায়। যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান বারবার গাজায় ইসরায়েলের ক্ষুব্ধ আক্রমণকে ‘গণহত্যা’ বলে আখ্যা দিয়েছেন। উপসাগরীয় অঞ্চলের কর্মকর্তারা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন, এই ধ্বংসযজ্ঞের ছবি নতুন প্রজন্মকে আরও বেশি উগ্রপন্থার দিকে ঠেলে দেবে। এই যুদ্ধ সৌদি আরবের যুবসমাজের মধ্যে ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার বিষয়টি অত্যন্ত অজনপ্রিয় করে তুলেছে। অথচ যুবসমাজকে কেন্দ্র করেই ক্রাউন প্রিন্স তার অর্থনৈতিক পরিবর্তনের পরিকল্পনা সাজিয়েছেন। তাই তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে হলে যুদ্ধবিরতি এবং ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার দিকে দৃশ্যমান অগ্রগতি থাকতে হবে।
মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে যুদ্ধের উত্তাপ ছড়িয়ে পড়ায় সৌদি আরব ইরানের সঙ্গে সম্পর্ক আরও জোরদার করেছে। সুন্নি-অধ্যুষিত সৌদি আরব ও শিয়া-অধ্যুষিত ইরানের মধ্যে বছরের পর বছর ধরে বৈরিতা বজায় ছিল। ইয়েমেন ও লেবাননের মতো দেশে ইরানের মদদপুষ্ট সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর উপস্থিতিকে সৌদি আরব বরাবরই বড় নিরাপত্তা হুমকি হিসেবে দেখে এসেছে।
কিন্তু ২০১৯ সালে পারস্য উপসাগরের জ্বালানি স্থাপনার ওপর হামলার সময় যুক্তরাষ্ট্রের ‘মিশ্র প্রতিক্রিয়া’ দেখে সৌদি আরব কৌশল বদলানোর সিদ্ধান্ত নেয়। ওই হামলার জন্য তেহরানকে দায়ী করেছিল রিয়াদ। এরপর ২০২৩ সালের মার্চে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক পুনঃস্থাপিত হয়।
এরপর থেকে মোহাম্মদ বিন সালমান এবং ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান নিয়মিত ফোনে কথা বলছেন। অন্য উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তারাও নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন। কারণ, সৌদি আরব আশঙ্কা করছে, বৃহত্তর আঞ্চলিক সংঘাতে তারা জড়িয়ে পড়বে।
ইসরায়েলের আক্রমণের নিন্দা জানিয়েছে সৌদি আরব। দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী প্রিন্স খালিদ বিন সালমান গত রোববার নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত ইরানি সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান আব্দুলরহিম মুসাভির সঙ্গে ফোনে কথা বলেন। তাঁরা ‘নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা রক্ষার প্রচেষ্টা’ নিয়ে আলোচনা করেন। সৌদি আরবের জন্য ইসরায়েলের হাতে ইরান এবং তাদের আঞ্চলিক প্রক্সি গোষ্ঠী; যেমন হিজবুল্লাহ, দুর্বল হলে তেহরান থেকে আসা হুমকি কিছুটা কমে যায়। তবে এ নিয়ে শঙ্কাও আছে। কারণ, এতে ইরান আগের চেয়ে আরও বেশি পরমাণু অস্ত্র অর্জনের চেষ্টা করতে পারে।
ওয়াশিংটনের মধ্যপ্রাচ্য ইনস্টিটিউটের গবেষক গ্রেগরি গাউস বলেন, ‘২০২২ সালের ইরান আর ২০২৫ সালের ইরান এক নয়। ২০২৫ সালের “বিজয়ী ইসরায়েল” এখন আঞ্চলিক রাজনীতির জন্য আরও বেশি অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করছে।’
ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করা সৌদি আরবের জন্য ওয়াশিংটনের রাজনৈতিক আনুকূল্য অর্জনের পথ খুলে দেবে। আর ট্রাম্প আগেই পরিষ্কার করেছেন; তিনি চান, সৌদি আরব আব্রাহাম অ্যাকর্ডসে যোগ দিক। মে মাসে রিয়াদ সফরে গিয়ে তিনি বলেন, ‘এটা হবে একটা বিশেষ ব্যাপার।’
যুদ্ধের পর ফক্স নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট (ট্রাম্প) বলেছেন, তিনি বিশ্বাস করেন, আরও দেশ আব্রাহাম অ্যাকর্ডসে যোগ দিতে পারে। তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি, আমরা এটা নিয়ে এগিয়ে যাব। কারণ, আসল সমস্যা ছিল ইরান।’
তবে ইসরায়েলি কর্মকর্তারা মনে করেন, সৌদি আরবের মতো দেশগুলোর সঙ্গে পূর্ণাঙ্গ সম্পর্ক স্বাভাবিককরণের চেয়ে অপেক্ষাকৃত সহজ এবং দ্রুত বাস্তবায়নযোগ্য পদক্ষেপ হতে পারে একটি সীমিত ‘অসহযোগিতা পরিহার’ বা নিরাপত্তা চুক্তি। এমন চুক্তির লক্ষ্য হতে পারে ইসরায়েলের প্রতিবেশী সিরিয়া, যেখানে আহমেদ আল-শারার নেতৃত্বে নতুন সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
অনেক বিশ্লেষক মনে করেন, ট্রাম্পকে খুশি রাখতে সৌদি আরব ও অন্য উপসাগরীয় দেশগুলো আরেকটি পথ বেছে নিয়েছে—অর্থ। মে মাসে ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য সফরের সময় উপসাগরীয় দেশগুলো বহু ট্রিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। তাদের আশা, এর মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি এবং উন্নত অস্ত্রের প্রবেশাধিকার পাওয়া যাবে।
আল-হাসান বলেন, ‘ট্রাম্পের মতো সৌদি আরবের ওপর এতটা সময়ের চাপ নেই চুক্তি করতে। তাদের কিছু উদ্বেগ থাকলেও তারা এতটাই আরামদায়ক ভূরাজনৈতিক অবস্থানে আছে যে, যা তারা করতে চায় না, সেটা করার জন্য তাদের কোনো চাপ নেই।’
অনুবাদ করেছেন আজকের পত্রিকার সহসম্পাদক আব্দুর রহমান

ইরানের সঙ্গে যুদ্ধ শুরুর পর থেকে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মধ্যপ্রাচ্যকে নতুনভাবে গড়ে তোলার পরিকল্পনার পরবর্তী পদক্ষেপ হিসেবে ইসরায়েল ও আরব দেশগুলোর মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়নের বিষয়টি বারবার সামনে আনছেন।
কিছুদিন আগেই নেতানিয়াহু বলেছেন, ‘সৌদি আরব ও অন্যদের সঙ্গে কীভাবে শান্তিচুক্তি করব, সেটা আমাকেই দেখতে দিন।’ ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলা এবং গাজায় যুদ্ধের আগে রিয়াদের সঙ্গে ঐতিহাসিক সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গিয়েছিল ইসরায়েল। গত সপ্তাহে স্থানীয় গণমাধ্যমে নেতানিয়াহু বলেন, ‘বিশ্বাস করুন, শুধু ভাবিনি, এখনো ভাবছি।’
কিন্তু অন্তত সৌদি আরবের ক্ষেত্রে এখন এটা আর স্পষ্ট নয়। ৭ অক্টোবরের পর থেকে সৌদি আরবের হিসাব-নিকাশ নাটকীয়ভাবে বদলে গেছে। গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধের প্রতি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া এবং ঐতিহাসিক প্রতিদ্বন্দ্বী ইরানের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের তৎপরতা এই পরিবর্তনের অন্যতম কারণ।
পর্যবেক্ষকেরা বলছেন, ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের সামরিক পদক্ষেপ সৌদি আরবকে আরও বেশি সতর্ক করে তুলেছে। দেশটি এখন ইসরায়েলকে ক্রমবর্ধমানভাবে যুদ্ধবাজ ও অস্থিতিশীলতা সৃষ্টিকারী শক্তি হিসেবে দেখছে। যুদ্ধ শুরুর পর থেকে সৌদি আরব প্রকাশ্যে তেহরানের সঙ্গে সম্পর্ক দৃঢ় করার পদক্ষেপ নিয়েছে।
সৌদি সরকারের চিন্তাভাবনা সম্পর্কে অবগত এক ব্যক্তি নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, ‘পারস্য উপসাগরের দেশগুলো ইরানের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক উন্নয়নের পথ ধরে রাখবে। এটা সবচেয়ে বড় প্রতিবেশীর সঙ্গে সম্পর্কের জন্য বুদ্ধিমানের কাজ। কিন্তু এর ফলে ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করা আরও কঠিন হয়ে পড়েছে এবং সৌদি আরব ফিলিস্তিনি ইস্যুতে তাদের দাবির ব্যাপারে আরও বেশি দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।’
বাহরাইনের ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের মধ্যপ্রাচ্য নীতির জ্যেষ্ঠ গবেষক হাসান আল-হাসান বলেন, ‘ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার কারণে সৌদি আরবের যে ভাব-মর্যাদাগত ক্ষতি হবে, তা এখন অনেক বেশি। দেশটির অভ্যন্তরীণ রাজনীতির দিক থেকে এবং তাদের আঞ্চলিক ও ইসলামি নেতৃত্বের অবস্থানের জন্যও।’
বিশ্লেষকেরা বলছেন, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের আগে যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান যে পরিকল্পনা করেছিলেন, তাতে ইসরায়েলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার বিনিময়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে প্রতিরক্ষা চুক্তি করার কথা ছিল। এটা বাস্তবায়িত হলে মধ্যপ্রাচ্যের রাজনৈতিক বিন্যাসে এক ঐতিহাসিক পরিবর্তন আসত।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রথম প্রেসিডেন্ট থাকার সময়, ২০২০ সালে সংযুক্ত আরব আমিরাত ও বাহরাইন ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করে, যা ‘আব্রাহাম অ্যাকর্ডস’ নামে পরিচিত। কিন্তু সৌদি আরবের সঙ্গে এমন চুক্তি হলে সেটা হতো ইসরায়েলের জন্য আরও বড় কূটনৈতিক সাফল্য। কারণ, সৌদি আরব শুধু ইসলামি বিশ্বের শীর্ষ নেতৃত্বের দেশ নয়, বরং বহুদিন ধরে ফিলিস্তিনিদের পক্ষে অবস্থান নিয়ে আসছে।
কিন্তু ৭ অক্টোবরের পর সবকিছু বদলে যায়। যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান বারবার গাজায় ইসরায়েলের ক্ষুব্ধ আক্রমণকে ‘গণহত্যা’ বলে আখ্যা দিয়েছেন। উপসাগরীয় অঞ্চলের কর্মকর্তারা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন, এই ধ্বংসযজ্ঞের ছবি নতুন প্রজন্মকে আরও বেশি উগ্রপন্থার দিকে ঠেলে দেবে। এই যুদ্ধ সৌদি আরবের যুবসমাজের মধ্যে ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার বিষয়টি অত্যন্ত অজনপ্রিয় করে তুলেছে। অথচ যুবসমাজকে কেন্দ্র করেই ক্রাউন প্রিন্স তার অর্থনৈতিক পরিবর্তনের পরিকল্পনা সাজিয়েছেন। তাই তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে হলে যুদ্ধবিরতি এবং ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার দিকে দৃশ্যমান অগ্রগতি থাকতে হবে।
মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে যুদ্ধের উত্তাপ ছড়িয়ে পড়ায় সৌদি আরব ইরানের সঙ্গে সম্পর্ক আরও জোরদার করেছে। সুন্নি-অধ্যুষিত সৌদি আরব ও শিয়া-অধ্যুষিত ইরানের মধ্যে বছরের পর বছর ধরে বৈরিতা বজায় ছিল। ইয়েমেন ও লেবাননের মতো দেশে ইরানের মদদপুষ্ট সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর উপস্থিতিকে সৌদি আরব বরাবরই বড় নিরাপত্তা হুমকি হিসেবে দেখে এসেছে।
কিন্তু ২০১৯ সালে পারস্য উপসাগরের জ্বালানি স্থাপনার ওপর হামলার সময় যুক্তরাষ্ট্রের ‘মিশ্র প্রতিক্রিয়া’ দেখে সৌদি আরব কৌশল বদলানোর সিদ্ধান্ত নেয়। ওই হামলার জন্য তেহরানকে দায়ী করেছিল রিয়াদ। এরপর ২০২৩ সালের মার্চে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক পুনঃস্থাপিত হয়।
এরপর থেকে মোহাম্মদ বিন সালমান এবং ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান নিয়মিত ফোনে কথা বলছেন। অন্য উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তারাও নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন। কারণ, সৌদি আরব আশঙ্কা করছে, বৃহত্তর আঞ্চলিক সংঘাতে তারা জড়িয়ে পড়বে।
ইসরায়েলের আক্রমণের নিন্দা জানিয়েছে সৌদি আরব। দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী প্রিন্স খালিদ বিন সালমান গত রোববার নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত ইরানি সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান আব্দুলরহিম মুসাভির সঙ্গে ফোনে কথা বলেন। তাঁরা ‘নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা রক্ষার প্রচেষ্টা’ নিয়ে আলোচনা করেন। সৌদি আরবের জন্য ইসরায়েলের হাতে ইরান এবং তাদের আঞ্চলিক প্রক্সি গোষ্ঠী; যেমন হিজবুল্লাহ, দুর্বল হলে তেহরান থেকে আসা হুমকি কিছুটা কমে যায়। তবে এ নিয়ে শঙ্কাও আছে। কারণ, এতে ইরান আগের চেয়ে আরও বেশি পরমাণু অস্ত্র অর্জনের চেষ্টা করতে পারে।
ওয়াশিংটনের মধ্যপ্রাচ্য ইনস্টিটিউটের গবেষক গ্রেগরি গাউস বলেন, ‘২০২২ সালের ইরান আর ২০২৫ সালের ইরান এক নয়। ২০২৫ সালের “বিজয়ী ইসরায়েল” এখন আঞ্চলিক রাজনীতির জন্য আরও বেশি অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করছে।’
ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করা সৌদি আরবের জন্য ওয়াশিংটনের রাজনৈতিক আনুকূল্য অর্জনের পথ খুলে দেবে। আর ট্রাম্প আগেই পরিষ্কার করেছেন; তিনি চান, সৌদি আরব আব্রাহাম অ্যাকর্ডসে যোগ দিক। মে মাসে রিয়াদ সফরে গিয়ে তিনি বলেন, ‘এটা হবে একটা বিশেষ ব্যাপার।’
যুদ্ধের পর ফক্স নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট (ট্রাম্প) বলেছেন, তিনি বিশ্বাস করেন, আরও দেশ আব্রাহাম অ্যাকর্ডসে যোগ দিতে পারে। তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি, আমরা এটা নিয়ে এগিয়ে যাব। কারণ, আসল সমস্যা ছিল ইরান।’
তবে ইসরায়েলি কর্মকর্তারা মনে করেন, সৌদি আরবের মতো দেশগুলোর সঙ্গে পূর্ণাঙ্গ সম্পর্ক স্বাভাবিককরণের চেয়ে অপেক্ষাকৃত সহজ এবং দ্রুত বাস্তবায়নযোগ্য পদক্ষেপ হতে পারে একটি সীমিত ‘অসহযোগিতা পরিহার’ বা নিরাপত্তা চুক্তি। এমন চুক্তির লক্ষ্য হতে পারে ইসরায়েলের প্রতিবেশী সিরিয়া, যেখানে আহমেদ আল-শারার নেতৃত্বে নতুন সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
অনেক বিশ্লেষক মনে করেন, ট্রাম্পকে খুশি রাখতে সৌদি আরব ও অন্য উপসাগরীয় দেশগুলো আরেকটি পথ বেছে নিয়েছে—অর্থ। মে মাসে ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য সফরের সময় উপসাগরীয় দেশগুলো বহু ট্রিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। তাদের আশা, এর মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি এবং উন্নত অস্ত্রের প্রবেশাধিকার পাওয়া যাবে।
আল-হাসান বলেন, ‘ট্রাম্পের মতো সৌদি আরবের ওপর এতটা সময়ের চাপ নেই চুক্তি করতে। তাদের কিছু উদ্বেগ থাকলেও তারা এতটাই আরামদায়ক ভূরাজনৈতিক অবস্থানে আছে যে, যা তারা করতে চায় না, সেটা করার জন্য তাদের কোনো চাপ নেই।’
অনুবাদ করেছেন আজকের পত্রিকার সহসম্পাদক আব্দুর রহমান

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দূতদের মধ্যে ইউক্রেন শান্তি চুক্তি নিয়ে আলোচনা হলেও প্রকাশ্যে কোনো উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়নি। পুতিনের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ইউরি উশাকভ, এ প্রসঙ্গে বলেছিলেন যে অমীমাংসিত ‘আঞ্চলিক সমস্যাই’ মূল বাধা। আর এই অঞ্চল আর কোনোটিই নয়, দোনেৎস্ক।
২০ ঘণ্টা আগে
বিশ্বজুড়ে দীর্ঘদিন ধরেই প্রশ্ন উঠে আসছে—‘যদি বিলিয়নিয়ারদের সম্পদ সীমিত করা হয়, অথবা এই শ্রেণিটিকেই সম্পূর্ণ বাতিল করা হয়, তবে কী ঘটবে?’ পশ্চিমা দেশগুলোতে চরম ধনী বা বিলিয়নিয়ারদের সংখ্যা ও প্রভাব বাড়তে থাকায় এখন এই প্রশ্ন আরও জোরালো হয়েছে।
১ দিন আগে
জাপানের ক্ষমতাসীন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পর গত অক্টোবরে দেশটির প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন সানায়ে তাকাইচি। এরপরই তিনি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পরিচিত হন জাপানের নতুন ‘আয়রন লেডি’ বা লৌহমানবী’ হিসেবে।
১ দিন আগে
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বৈঠককে ঘিরে দিল্লিতে শুরু হয়েছে কূটনৈতিক প্রস্তুতি। চলমান ইউক্রেন যুদ্ধ, যুক্তরাষ্ট্রের চাপ এবং জ্বালানির বাজারে অস্থিরতার মধ্যেই এই শীর্ষ সম্মেলন হতে যাচ্ছে। অর্থনীতি, প্রতিরক্ষা এবং জ্বালানি—এই তিনটি খাত আলোচনার...
২ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দূতদের মধ্যে ইউক্রেন শান্তি চুক্তি নিয়ে আলোচনা হলেও প্রকাশ্যে কোনো উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়নি। পুতিনের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ইউরি উশাকভ, এ প্রসঙ্গে বলেছিলেন যে অমীমাংসিত ‘আঞ্চলিক সমস্যাই’ মূল বাধা। আর এই অঞ্চল আর কোনোটিই নয়, দোনেৎস্ক।
উশাকভ মূলত ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় দোনেৎস্কের সম্পূর্ণ এলাকার ওপর রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণ দাবির কথাই বলেছিলেন। পুতিন ইউক্রেনে হাজার হাজার সৈন্য পাঠানোর প্রায় ৪ বছর পরও এবং দোনেৎস্কে রাশিয়া সমর্থিত বিচ্ছিন্নতাবাদী বিদ্রোহের এক দশকেরও বেশি সময় পর অঞ্চলটির কিছু অংশ এখনো ইউক্রেনের হাতে আছে।
প্রায় সব দেশই দোনেৎস্ককে ইউক্রেনের অংশ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। কিন্তু এটি ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলের চারটি অঞ্চলের মধ্যে একটি, যা মস্কো ২০২২ সালে একটি গণভোটের পর সংযুক্ত করার কথা ঘোষণা করে। কিয়েভ ও পশ্চিমা দেশগুলো সেই গণভোটকে ‘প্রহসন’ বলে বাতিল করে। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও ফক্স নিউজকে বলেছিলেন, যুদ্ধটি এখন দোনেৎস্কের সেই ২০ শতাংশ বা ৫ হাজার বর্গকিলোমিটারের এলাকা নিয়ে, যা রাশিয়া নিয়ন্ত্রণ করে না কিন্তু চায়।
পুতিন ২০২২ সালে ইউক্রেনে সৈন্য পাঠানোর সময় বলেছিলেন, তাঁর লক্ষ্য হলো ‘গত আট বছর ধরে যারা ভয়ভীতি ও গণহত্যার শিকার হয়েছেন...সেই মানুষগুলোকে রক্ষা করা।’ ইউক্রেন এবং তার মিত্ররা বলেছিল, পুতিনের এই দাবি ঔপনিবেশিক ধাঁচের এবং এলাকা দখলের জন্য একটি মিথ্যা অজুহাত মাত্র।
পুতিনের এই দাবি মূলত দোনেৎস্ক এবং লুহানস্ক অঞ্চলে রাশিয়া সমর্থিত বিচ্ছিন্নতাবাদীদের বিরুদ্ধে ইউক্রেনের লড়াইয়ের দিকে ইঙ্গিত করে, যারা ২০১৪ সালে ইউক্রেনীয় সরকারি নিয়ন্ত্রণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে কিছু এলাকা দখল করেছিল। পূর্ব ইউক্রেনে এর পরের সংঘর্ষে উভয় পক্ষই শহর ও বেসামরিক নাগরিকদের ওপর গোলাবর্ষণের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করেছিল। মস্কো এই অঞ্চলের বিশাল রুশভাষী জনসংখ্যাকে উদ্ধৃত করে বলেছিল যে,২০২২ সালে হস্তক্ষেপ করা তাদের নৈতিক কর্তব্য।
কিয়েভ বলেছিল, ২০১৪ সালে ইউক্রেনের আঞ্চলিক অখণ্ডতা রক্ষায় শক্তি দিয়ে জবাব দেওয়া ছাড়া তাদের আর কোনো উপায় ছিল না এবং তারাও বিচ্ছিন্নতাবাদী বাহিনীর বিরুদ্ধে শহর ও বেসামরিক নাগরিকদের ওপর গোলাবর্ষণের অভিযোগ এনেছিল। জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী, ২০১৪ সাল থেকে ২০২২ সালের শুরু পর্যন্ত ইউক্রেনীয় সরকারি বাহিনী এবং বিচ্ছিন্নতাবাদীদের মধ্যে সংঘাতে উভয় পক্ষে ৩ হাজার ১০৬ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত এবং ৯ হাজার বেসামরিক নাগরিক আহত হয়েছিলেন।
দোনেৎস্কের বাকি যে অংশটি রাশিয়া চায়, তার মধ্যে রয়েছে স্লোভিয়ানস্ক এবং ক্রামাতোরস্ক—দুটি ‘দুর্গনগরী’ যা ২০১৪ সাল থেকে ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহার করে আসছে। এই শহরগুলো ইউক্রেনের বাকি অঞ্চল রক্ষার জন্য কিয়েভের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ দোনেৎস্কের পশ্চিমের ভূমি অনেকটাই সমতল এবং বিশাল খোলা মাঠ; যা রাশিয়াকে দোনেৎস্কের বাইরে অগ্রসর হতে এবং দিনিপ্রো নদীর পূর্ব তীর পর্যন্ত এলাকা দখল করার পথ সহজ করে দেবে।
শহরগুলো পরিখা, ট্যাংক-বিধ্বংসী বাধা, বাংকার এবং মাইনক্ষেত্রসহ অত্যন্ত সুরক্ষিত প্রতিরক্ষা লাইনের অংশ। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, গণভোট ছাড়া দোনেৎস্কের বাকি অংশ রাশিয়ার হাতে তুলে দেওয়া অবৈধ হবে এবং তা ভবিষ্যতে ইউক্রেনের গভীরে আক্রমণের জন্য রাশিয়াকে একটি পথ খুলে দেবে।
কিয়েভের আশঙ্কা, যদি তারা দোনেৎস্কের বাকি অংশ ছেড়ে দেয়, তবে রাশিয়া আবার অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হবে এবং একসময় দোনেৎস্ক ব্যবহার করে পশ্চিম দিকে আক্রমণ চালাবে।
উভয় পক্ষই দোনেৎস্ককে কেন্দ্র করে যুদ্ধে ভয়াবহ ক্ষয়ক্ষতির মুখোমুখি হয়েছে এবং প্রচুর অর্থ ও সরঞ্জাম ব্যয় করেছে। এর মধ্যে বাখমুত শহরের লড়াইও রয়েছে। যেখানে রাশিয়া হাজার হাজার দণ্ডিত অপরাধীকে ভাড়াটে সৈন্যে পরিণত করে রণক্ষেত্রে নামিয়েছিল। এ কারণে, দোনেৎস্ক উভয় দেশের জনমানসে আরও বেশি গুরুত্ব পেয়েছে। ফলে কারও পক্ষে তাদের অবস্থান পরিবর্তন করা কঠিন।
ইউক্রেন চায় না যে, রাশিয়া যুদ্ধক্ষেত্রে জয় করতে ব্যর্থ হওয়া ভূখণ্ডকে উপহার হিসেবে পাক এবং জেলেনস্কি বলেছেন, যে যুদ্ধ রাশিয়া শুরু করেছে, তার জন্য তাদের পুরস্কৃত করা উচিত নয়। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ইনস্টিটিউট ফর দ্য স্টাডি অব ওয়ার অক্টোবর মাসে বলেছিল, রাশিয়ার অগ্রগতির হার দেখে মনে হয় না যে তারা খুব শিগগিরই দোনেৎস্কের বাকি অংশ দখল করতে চলেছে। তবে ‘রাশিয়ার অগ্রগতির একটি অপরিবর্তনীয় হার ধরে নিলে’ তারা ২০২৭ সালের আগস্টের মধ্যে তা নিতে পারে।
রাশিয়ার কমান্ডাররা অবশ্য আরও বেশি আশাবাদী। জেনারেল স্টাফের প্রধান ভ্যালেরি গেরাসিমভ রোববার পুতিনকে বলেছেন, মস্কোর বাহিনী পুরো ফ্রন্ট লাইন বরাবর অগ্রসর হচ্ছে এবং দনবাসের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার জন্য কাজ করছে।
দোনেৎস্ক বন্দর, রেলপথ এবং অন্যান্য ভারী শিল্পের কেন্দ্র। এটি একসময় ইউক্রেনের কয়লা, পরিশোধিত ইস্পাত, কোক, ঢালাই লোহা এবং ইস্পাত উৎপাদনের অর্ধেকেরও বেশি সরবরাহ করত, তবে যুদ্ধের কারণে অনেক খনি ও কারখানা ধ্বংস হয়ে গেছে। এ ছাড়া, দোনেৎস্কে বিরল মৃত্তিকা, টাইটানিয়াম এবং জিরকোনিয়াম রয়েছে—যা এটিকে নিয়ন্ত্রণকারী পক্ষের জন্য আয়ের উৎস।
দোনেৎস্কের ভাগ্য পুতিন এবং জেলেনস্কি উভয়ের ঐতিহাসিক উত্তরাধিকারকে প্রভাবিত করতে পারে। পুতিন নিজেকে জাতিগত রুশদের রক্ষক হিসেবে তুলে ধরেছেন, তারা যেখানেই থাকুক না কেন। পুরো দোনেৎস্ককে সুরক্ষিত করা এই বক্তব্যের মূল কেন্দ্রবিন্দু। জেলেনস্কি ২০১৯ সালে পূর্ব ইউক্রেনের যুদ্ধ অবসান ঘটানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় এসেছিলেন। ২০২২ সাল থেকে তিনি অনেক বড়, বৈরী প্রতিবেশীর মুখে অস্ত্র এবং সংখ্যায় কম ইউক্রেনের এক দৃঢ় রক্ষক হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেছেন।
লড়াই না করে দোনেৎস্ক ছেড়ে দেওয়া—যেখানে অন্তত আড়াই লাখ ইউক্রেনীয় বাস করে—ইউক্রেনীয়দের কাছে বিশ্বাসঘাতকতা হিসেবে দেখা হতে পারে, যাদের অনেকেই যুদ্ধক্ষেত্রে স্বজন হারিয়েছেন। কিয়েভ ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব সোসিওলজির সাম্প্রতিক এক জরিপ অনুসারে, ইউক্রেনীয়দের একটি সংকীর্ণ সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ এখনো আঞ্চলিক ছাড়ের বিরোধিতা করে।
জেলেনস্কিসহ ইউক্রেনের কর্মকর্তারা যেকোনো শান্তি চুক্তির অধীনে কিয়েভের নিয়ন্ত্রণে থাকা ভূমি ছাড়ার সম্ভাবনা প্রত্যাখ্যান করেছেন। জেলেনস্কি বলেন, তাঁর ভূখণ্ড ছেড়ে দেওয়ার কোনো ম্যান্ডেট নেই এবং রাষ্ট্রের ভূমি ব্যক্তিগত সম্পত্তির মতো কেনা-বেচা করা যায় না। ইউক্রেনের সংবিধান অনুসারে, আঞ্চলিক পরিবর্তন অবশ্যই একটি গণভোটের মাধ্যমে নিষ্পত্তি করতে হবে, যা ইউক্রেনের অন্তত দুই-তৃতীয়াংশ অর্থাৎ, অন্তত ৩০ লাখ ইউক্রেনীয় ভোটারের স্বাক্ষর থাকলে আয়োজন করা যেতে পারে।
তবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই গণভোটের বিষয়টির সমালোচনা করেছেন এবং তিনি বলেছিলেন, ‘কিছু ভূমি অদল-বদল হবে।’ এখন ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের আলোচনা মূলত এই দোনেৎস্কের নিয়ন্ত্রণ কার হাতে যাবে সেটাই নিয়েই থমকে আছে।
রয়টার্স থেকে পরিমার্জিত

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দূতদের মধ্যে ইউক্রেন শান্তি চুক্তি নিয়ে আলোচনা হলেও প্রকাশ্যে কোনো উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়নি। পুতিনের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ইউরি উশাকভ, এ প্রসঙ্গে বলেছিলেন যে অমীমাংসিত ‘আঞ্চলিক সমস্যাই’ মূল বাধা। আর এই অঞ্চল আর কোনোটিই নয়, দোনেৎস্ক।
উশাকভ মূলত ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় দোনেৎস্কের সম্পূর্ণ এলাকার ওপর রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণ দাবির কথাই বলেছিলেন। পুতিন ইউক্রেনে হাজার হাজার সৈন্য পাঠানোর প্রায় ৪ বছর পরও এবং দোনেৎস্কে রাশিয়া সমর্থিত বিচ্ছিন্নতাবাদী বিদ্রোহের এক দশকেরও বেশি সময় পর অঞ্চলটির কিছু অংশ এখনো ইউক্রেনের হাতে আছে।
প্রায় সব দেশই দোনেৎস্ককে ইউক্রেনের অংশ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। কিন্তু এটি ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলের চারটি অঞ্চলের মধ্যে একটি, যা মস্কো ২০২২ সালে একটি গণভোটের পর সংযুক্ত করার কথা ঘোষণা করে। কিয়েভ ও পশ্চিমা দেশগুলো সেই গণভোটকে ‘প্রহসন’ বলে বাতিল করে। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও ফক্স নিউজকে বলেছিলেন, যুদ্ধটি এখন দোনেৎস্কের সেই ২০ শতাংশ বা ৫ হাজার বর্গকিলোমিটারের এলাকা নিয়ে, যা রাশিয়া নিয়ন্ত্রণ করে না কিন্তু চায়।
পুতিন ২০২২ সালে ইউক্রেনে সৈন্য পাঠানোর সময় বলেছিলেন, তাঁর লক্ষ্য হলো ‘গত আট বছর ধরে যারা ভয়ভীতি ও গণহত্যার শিকার হয়েছেন...সেই মানুষগুলোকে রক্ষা করা।’ ইউক্রেন এবং তার মিত্ররা বলেছিল, পুতিনের এই দাবি ঔপনিবেশিক ধাঁচের এবং এলাকা দখলের জন্য একটি মিথ্যা অজুহাত মাত্র।
পুতিনের এই দাবি মূলত দোনেৎস্ক এবং লুহানস্ক অঞ্চলে রাশিয়া সমর্থিত বিচ্ছিন্নতাবাদীদের বিরুদ্ধে ইউক্রেনের লড়াইয়ের দিকে ইঙ্গিত করে, যারা ২০১৪ সালে ইউক্রেনীয় সরকারি নিয়ন্ত্রণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে কিছু এলাকা দখল করেছিল। পূর্ব ইউক্রেনে এর পরের সংঘর্ষে উভয় পক্ষই শহর ও বেসামরিক নাগরিকদের ওপর গোলাবর্ষণের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করেছিল। মস্কো এই অঞ্চলের বিশাল রুশভাষী জনসংখ্যাকে উদ্ধৃত করে বলেছিল যে,২০২২ সালে হস্তক্ষেপ করা তাদের নৈতিক কর্তব্য।
কিয়েভ বলেছিল, ২০১৪ সালে ইউক্রেনের আঞ্চলিক অখণ্ডতা রক্ষায় শক্তি দিয়ে জবাব দেওয়া ছাড়া তাদের আর কোনো উপায় ছিল না এবং তারাও বিচ্ছিন্নতাবাদী বাহিনীর বিরুদ্ধে শহর ও বেসামরিক নাগরিকদের ওপর গোলাবর্ষণের অভিযোগ এনেছিল। জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী, ২০১৪ সাল থেকে ২০২২ সালের শুরু পর্যন্ত ইউক্রেনীয় সরকারি বাহিনী এবং বিচ্ছিন্নতাবাদীদের মধ্যে সংঘাতে উভয় পক্ষে ৩ হাজার ১০৬ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত এবং ৯ হাজার বেসামরিক নাগরিক আহত হয়েছিলেন।
দোনেৎস্কের বাকি যে অংশটি রাশিয়া চায়, তার মধ্যে রয়েছে স্লোভিয়ানস্ক এবং ক্রামাতোরস্ক—দুটি ‘দুর্গনগরী’ যা ২০১৪ সাল থেকে ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহার করে আসছে। এই শহরগুলো ইউক্রেনের বাকি অঞ্চল রক্ষার জন্য কিয়েভের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ দোনেৎস্কের পশ্চিমের ভূমি অনেকটাই সমতল এবং বিশাল খোলা মাঠ; যা রাশিয়াকে দোনেৎস্কের বাইরে অগ্রসর হতে এবং দিনিপ্রো নদীর পূর্ব তীর পর্যন্ত এলাকা দখল করার পথ সহজ করে দেবে।
শহরগুলো পরিখা, ট্যাংক-বিধ্বংসী বাধা, বাংকার এবং মাইনক্ষেত্রসহ অত্যন্ত সুরক্ষিত প্রতিরক্ষা লাইনের অংশ। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, গণভোট ছাড়া দোনেৎস্কের বাকি অংশ রাশিয়ার হাতে তুলে দেওয়া অবৈধ হবে এবং তা ভবিষ্যতে ইউক্রেনের গভীরে আক্রমণের জন্য রাশিয়াকে একটি পথ খুলে দেবে।
কিয়েভের আশঙ্কা, যদি তারা দোনেৎস্কের বাকি অংশ ছেড়ে দেয়, তবে রাশিয়া আবার অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হবে এবং একসময় দোনেৎস্ক ব্যবহার করে পশ্চিম দিকে আক্রমণ চালাবে।
উভয় পক্ষই দোনেৎস্ককে কেন্দ্র করে যুদ্ধে ভয়াবহ ক্ষয়ক্ষতির মুখোমুখি হয়েছে এবং প্রচুর অর্থ ও সরঞ্জাম ব্যয় করেছে। এর মধ্যে বাখমুত শহরের লড়াইও রয়েছে। যেখানে রাশিয়া হাজার হাজার দণ্ডিত অপরাধীকে ভাড়াটে সৈন্যে পরিণত করে রণক্ষেত্রে নামিয়েছিল। এ কারণে, দোনেৎস্ক উভয় দেশের জনমানসে আরও বেশি গুরুত্ব পেয়েছে। ফলে কারও পক্ষে তাদের অবস্থান পরিবর্তন করা কঠিন।
ইউক্রেন চায় না যে, রাশিয়া যুদ্ধক্ষেত্রে জয় করতে ব্যর্থ হওয়া ভূখণ্ডকে উপহার হিসেবে পাক এবং জেলেনস্কি বলেছেন, যে যুদ্ধ রাশিয়া শুরু করেছে, তার জন্য তাদের পুরস্কৃত করা উচিত নয়। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ইনস্টিটিউট ফর দ্য স্টাডি অব ওয়ার অক্টোবর মাসে বলেছিল, রাশিয়ার অগ্রগতির হার দেখে মনে হয় না যে তারা খুব শিগগিরই দোনেৎস্কের বাকি অংশ দখল করতে চলেছে। তবে ‘রাশিয়ার অগ্রগতির একটি অপরিবর্তনীয় হার ধরে নিলে’ তারা ২০২৭ সালের আগস্টের মধ্যে তা নিতে পারে।
রাশিয়ার কমান্ডাররা অবশ্য আরও বেশি আশাবাদী। জেনারেল স্টাফের প্রধান ভ্যালেরি গেরাসিমভ রোববার পুতিনকে বলেছেন, মস্কোর বাহিনী পুরো ফ্রন্ট লাইন বরাবর অগ্রসর হচ্ছে এবং দনবাসের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার জন্য কাজ করছে।
দোনেৎস্ক বন্দর, রেলপথ এবং অন্যান্য ভারী শিল্পের কেন্দ্র। এটি একসময় ইউক্রেনের কয়লা, পরিশোধিত ইস্পাত, কোক, ঢালাই লোহা এবং ইস্পাত উৎপাদনের অর্ধেকেরও বেশি সরবরাহ করত, তবে যুদ্ধের কারণে অনেক খনি ও কারখানা ধ্বংস হয়ে গেছে। এ ছাড়া, দোনেৎস্কে বিরল মৃত্তিকা, টাইটানিয়াম এবং জিরকোনিয়াম রয়েছে—যা এটিকে নিয়ন্ত্রণকারী পক্ষের জন্য আয়ের উৎস।
দোনেৎস্কের ভাগ্য পুতিন এবং জেলেনস্কি উভয়ের ঐতিহাসিক উত্তরাধিকারকে প্রভাবিত করতে পারে। পুতিন নিজেকে জাতিগত রুশদের রক্ষক হিসেবে তুলে ধরেছেন, তারা যেখানেই থাকুক না কেন। পুরো দোনেৎস্ককে সুরক্ষিত করা এই বক্তব্যের মূল কেন্দ্রবিন্দু। জেলেনস্কি ২০১৯ সালে পূর্ব ইউক্রেনের যুদ্ধ অবসান ঘটানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় এসেছিলেন। ২০২২ সাল থেকে তিনি অনেক বড়, বৈরী প্রতিবেশীর মুখে অস্ত্র এবং সংখ্যায় কম ইউক্রেনের এক দৃঢ় রক্ষক হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেছেন।
লড়াই না করে দোনেৎস্ক ছেড়ে দেওয়া—যেখানে অন্তত আড়াই লাখ ইউক্রেনীয় বাস করে—ইউক্রেনীয়দের কাছে বিশ্বাসঘাতকতা হিসেবে দেখা হতে পারে, যাদের অনেকেই যুদ্ধক্ষেত্রে স্বজন হারিয়েছেন। কিয়েভ ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব সোসিওলজির সাম্প্রতিক এক জরিপ অনুসারে, ইউক্রেনীয়দের একটি সংকীর্ণ সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ এখনো আঞ্চলিক ছাড়ের বিরোধিতা করে।
জেলেনস্কিসহ ইউক্রেনের কর্মকর্তারা যেকোনো শান্তি চুক্তির অধীনে কিয়েভের নিয়ন্ত্রণে থাকা ভূমি ছাড়ার সম্ভাবনা প্রত্যাখ্যান করেছেন। জেলেনস্কি বলেন, তাঁর ভূখণ্ড ছেড়ে দেওয়ার কোনো ম্যান্ডেট নেই এবং রাষ্ট্রের ভূমি ব্যক্তিগত সম্পত্তির মতো কেনা-বেচা করা যায় না। ইউক্রেনের সংবিধান অনুসারে, আঞ্চলিক পরিবর্তন অবশ্যই একটি গণভোটের মাধ্যমে নিষ্পত্তি করতে হবে, যা ইউক্রেনের অন্তত দুই-তৃতীয়াংশ অর্থাৎ, অন্তত ৩০ লাখ ইউক্রেনীয় ভোটারের স্বাক্ষর থাকলে আয়োজন করা যেতে পারে।
তবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই গণভোটের বিষয়টির সমালোচনা করেছেন এবং তিনি বলেছিলেন, ‘কিছু ভূমি অদল-বদল হবে।’ এখন ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের আলোচনা মূলত এই দোনেৎস্কের নিয়ন্ত্রণ কার হাতে যাবে সেটাই নিয়েই থমকে আছে।
রয়টার্স থেকে পরিমার্জিত

পর্যবেক্ষকেরা বলছেন, ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের সামরিক পদক্ষেপ সৌদি আরবকে আরও বেশি সতর্ক করে তুলেছে। দেশটি এখন ইসরায়েলকে ক্রমবর্ধমানভাবে যুদ্ধবাজ ও অস্থিতিশীলতা সৃষ্টিকারী শক্তি হিসেবে দেখছে। যুদ্ধ শুরুর পর থেকে সৌদি আরব প্রকাশ্যে তেহরানের সঙ্গে সম্পর্ক দৃঢ় করার পদক্ষেপ নিয়েছে।
০৫ জুলাই ২০২৫
বিশ্বজুড়ে দীর্ঘদিন ধরেই প্রশ্ন উঠে আসছে—‘যদি বিলিয়নিয়ারদের সম্পদ সীমিত করা হয়, অথবা এই শ্রেণিটিকেই সম্পূর্ণ বাতিল করা হয়, তবে কী ঘটবে?’ পশ্চিমা দেশগুলোতে চরম ধনী বা বিলিয়নিয়ারদের সংখ্যা ও প্রভাব বাড়তে থাকায় এখন এই প্রশ্ন আরও জোরালো হয়েছে।
১ দিন আগে
জাপানের ক্ষমতাসীন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পর গত অক্টোবরে দেশটির প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন সানায়ে তাকাইচি। এরপরই তিনি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পরিচিত হন জাপানের নতুন ‘আয়রন লেডি’ বা লৌহমানবী’ হিসেবে।
১ দিন আগে
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বৈঠককে ঘিরে দিল্লিতে শুরু হয়েছে কূটনৈতিক প্রস্তুতি। চলমান ইউক্রেন যুদ্ধ, যুক্তরাষ্ট্রের চাপ এবং জ্বালানির বাজারে অস্থিরতার মধ্যেই এই শীর্ষ সম্মেলন হতে যাচ্ছে। অর্থনীতি, প্রতিরক্ষা এবং জ্বালানি—এই তিনটি খাত আলোচনার...
২ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

বিশ্বজুড়ে দীর্ঘদিন ধরেই প্রশ্ন উঠে আসছে—‘যদি বিলিয়নিয়ারদের সম্পদ সীমিত করা হয়, অথবা এই শ্রেণিটিকেই সম্পূর্ণ বাতিল করা হয়, তবে কী ঘটবে?’ পশ্চিমা দেশগুলোতে চরম ধনী বা বিলিয়নিয়ারদের সংখ্যা ও প্রভাব বাড়তে থাকায় এখন এই প্রশ্ন আরও জোরালো হয়েছে।
সম্প্রতি টেসলার মালিক ইলন মাস্ক গত নভেম্বরে এমন এক পে-অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন, যা তাঁকে একজন ট্রিলিয়ন ডলারের মালিকে পরিণত করতে পারে। তিনি ইতিমধ্যেই বিশ্বের শীর্ষ ধনী। যদি তিনি প্রস্তাবিত পূর্ণ প্যাকেজটি পান, তাহলে তিনি বিশ্বের ইতিহাসে সর্বকালের সেরা ধনী ব্যক্তিতে পরিণত হবেন। ফোর্বসের হিসেবে বর্তমানে বিশ্বের ৩ হাজার ২৮ জন বিলিয়নিয়ার আছেন। তাঁদের মোট সম্পদ প্রায় ১৬.১ ট্রিলিয়ন ডলার। অন্যদিকে পৃথিবীতে এখনো প্রায় ৮৩ কোটি ১০ লাখ মানুষ দৈনিক তিন ডলারের নিচে আয় করে চরম দারিদ্র্যে দিন কাটান।
বিশ্লেষকদের মতে, বিশ্বের এই বিপুল সম্পদ বৈষম্য শুধু অর্থনীতিকে নয়, রাজনীতি, মিডিয়া ও চিন্তাকেও প্রভাবিত করে। অনেকেই মনে করেন, বিলিয়নিয়ারদের সম্পদ ও ক্ষমতা বিশ্বব্যবস্থাকে ‘অতি ধনীদের স্বার্থে’ পুনর্গঠন করছে। আবার অন্য একটি মত বলছে, বিলিয়নিয়ারেরা না থাকলে উদ্ভাবন, প্রযুক্তি ও অগ্রগতি থমকে যাবে। কারণ বৃহৎ বিনিয়োগই গড়ে তোলে নতুন সমাধান।
উদ্ভাবন কি থেমে যাবে
অ্যাডাম স্মিথ ইনস্টিটিউটের ম্যাক্সওয়েল মার্লোর মতে, বিলিয়নিয়ারদের বিলোপ করা হলে পশ্চিমা অর্থনীতি বিপর্যস্ত হবে। তাঁর দাবি, অধিকাংশ বিলিয়নিয়ার তাঁদের সম্পদের মালিক হয়েছেন সমাজের চাহিদামতো পণ্য ও প্রযুক্তি তৈরি করে। তাঁদের সম্পদ মূলত কোম্পানির শেয়ার, মেধাস্বত্ব অথবা সম্পত্তি—যা দিনে দিনে ওঠানামা করে। তাঁর মতে, এই ধনী ব্যক্তিদের প্রণোদনাই উদ্ভাবনে গতি আনে; তা না থাকলে উন্নয়ন থেমে যাবে।
যদি ন্যায্যভাবে সম্পদ বণ্টিত হতো
গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ট্যাক্স জাস্টিসের ডেরেজে আলেমায়েহুর মতে, শুধু বিলিয়নিয়ার কর আরোপ নয়—প্রশ্ন হচ্ছে, সেই কর কোথায় যাবে। দক্ষিণ বিশ্বের শ্রম ও সম্পদ থেকেই যে বিপুল সম্পদ তৈরি হয়, তাই তার ন্যায্য অংশ দক্ষিণেই ফিরে আসা উচিত। তিনি বলেন, বৈষম্য কমাতে শুধু অর্থ হস্তান্তর নয়, বৈশ্বিক আর্থিক কাঠামো পুনর্গঠন জরুরি; নইলে বৈষম্য আরও গভীর হবে।
বিধিনিষেধ কি বদলাতে হবে
ডেনিসন ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ফাদেল কাবুব বলেন, বিলিয়নিয়ারেরা আসলে ব্যর্থ নীতির ফল। সিস্টেম যেভাবে সাজানো, তাতে সম্পদ একদিকে কেন্দ্রীভূত হওয়াই স্বাভাবিক। তাঁর মতে, বিলিয়নিয়ার শ্রেণিকে বিলোপ করতে হলে আধুনিক অ্যান্টি ট্রাস্ট ও কঠোর বাজার নিয়ন্ত্রণ প্রয়োজন।
মিডিয়ার ওপর প্রভাব কমবে
গোল্ডস্মিথস বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ডেস ফ্রিডম্যান মনে করেন, বিলিয়নিয়ারেরা পুরো মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম কিনে ফেলতে সক্ষম হওয়ায় তথ্যপ্রবাহ তাঁদের স্বার্থেই নিয়ন্ত্রিত হয়। যেমন—বেজোস বা ইলন মাস্কের গণমাধ্যম মালিকানা এই অঙ্গনের স্বাধীনতাকে দীর্ঘমেয়াদে প্রশ্নবিদ্ধ করে। তাই বিলিয়নিয়ার প্রভাব সীমিত হলে তথ্যের উৎসও আরও স্বাধীন হতে পারে।
চরম সম্পদ কি সত্যিই বিলোপ করা সম্ভব
বিশ্ব ইনইক্যুয়ালিটি ল্যাবের লুকাস শ্যানসেলের মতে, ইতিহাসে এর নজির আছে। উদাহরণস্বরূপ—রকেফেলারের একচেটিয়া সাম্রাজ্য ভেঙে দেওয়া, কিংবা রুজভেল্টের সময় সর্বোচ্চ করহার ৯৪ শতাংশে উন্নীত করা। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে পানামা পেপারসের মতো ফাঁস যেমন দুর্দান্ত স্বচ্ছতা তৈরি করেছে, তেমনি তা পরিবর্তনের সুযোগও তৈরি করছে। তিনি মনে করেন, ধনীদের ওপর কর আরোপের মতো ধারণা এখন আর ‘যদি’ নয়, বরং ‘কখন’ করা হবে—এ প্রশ্নে এসে দাঁড়িয়েছে।
আল-জাজিরা অবলম্বনে

বিশ্বজুড়ে দীর্ঘদিন ধরেই প্রশ্ন উঠে আসছে—‘যদি বিলিয়নিয়ারদের সম্পদ সীমিত করা হয়, অথবা এই শ্রেণিটিকেই সম্পূর্ণ বাতিল করা হয়, তবে কী ঘটবে?’ পশ্চিমা দেশগুলোতে চরম ধনী বা বিলিয়নিয়ারদের সংখ্যা ও প্রভাব বাড়তে থাকায় এখন এই প্রশ্ন আরও জোরালো হয়েছে।
সম্প্রতি টেসলার মালিক ইলন মাস্ক গত নভেম্বরে এমন এক পে-অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন, যা তাঁকে একজন ট্রিলিয়ন ডলারের মালিকে পরিণত করতে পারে। তিনি ইতিমধ্যেই বিশ্বের শীর্ষ ধনী। যদি তিনি প্রস্তাবিত পূর্ণ প্যাকেজটি পান, তাহলে তিনি বিশ্বের ইতিহাসে সর্বকালের সেরা ধনী ব্যক্তিতে পরিণত হবেন। ফোর্বসের হিসেবে বর্তমানে বিশ্বের ৩ হাজার ২৮ জন বিলিয়নিয়ার আছেন। তাঁদের মোট সম্পদ প্রায় ১৬.১ ট্রিলিয়ন ডলার। অন্যদিকে পৃথিবীতে এখনো প্রায় ৮৩ কোটি ১০ লাখ মানুষ দৈনিক তিন ডলারের নিচে আয় করে চরম দারিদ্র্যে দিন কাটান।
বিশ্লেষকদের মতে, বিশ্বের এই বিপুল সম্পদ বৈষম্য শুধু অর্থনীতিকে নয়, রাজনীতি, মিডিয়া ও চিন্তাকেও প্রভাবিত করে। অনেকেই মনে করেন, বিলিয়নিয়ারদের সম্পদ ও ক্ষমতা বিশ্বব্যবস্থাকে ‘অতি ধনীদের স্বার্থে’ পুনর্গঠন করছে। আবার অন্য একটি মত বলছে, বিলিয়নিয়ারেরা না থাকলে উদ্ভাবন, প্রযুক্তি ও অগ্রগতি থমকে যাবে। কারণ বৃহৎ বিনিয়োগই গড়ে তোলে নতুন সমাধান।
উদ্ভাবন কি থেমে যাবে
অ্যাডাম স্মিথ ইনস্টিটিউটের ম্যাক্সওয়েল মার্লোর মতে, বিলিয়নিয়ারদের বিলোপ করা হলে পশ্চিমা অর্থনীতি বিপর্যস্ত হবে। তাঁর দাবি, অধিকাংশ বিলিয়নিয়ার তাঁদের সম্পদের মালিক হয়েছেন সমাজের চাহিদামতো পণ্য ও প্রযুক্তি তৈরি করে। তাঁদের সম্পদ মূলত কোম্পানির শেয়ার, মেধাস্বত্ব অথবা সম্পত্তি—যা দিনে দিনে ওঠানামা করে। তাঁর মতে, এই ধনী ব্যক্তিদের প্রণোদনাই উদ্ভাবনে গতি আনে; তা না থাকলে উন্নয়ন থেমে যাবে।
যদি ন্যায্যভাবে সম্পদ বণ্টিত হতো
গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ট্যাক্স জাস্টিসের ডেরেজে আলেমায়েহুর মতে, শুধু বিলিয়নিয়ার কর আরোপ নয়—প্রশ্ন হচ্ছে, সেই কর কোথায় যাবে। দক্ষিণ বিশ্বের শ্রম ও সম্পদ থেকেই যে বিপুল সম্পদ তৈরি হয়, তাই তার ন্যায্য অংশ দক্ষিণেই ফিরে আসা উচিত। তিনি বলেন, বৈষম্য কমাতে শুধু অর্থ হস্তান্তর নয়, বৈশ্বিক আর্থিক কাঠামো পুনর্গঠন জরুরি; নইলে বৈষম্য আরও গভীর হবে।
বিধিনিষেধ কি বদলাতে হবে
ডেনিসন ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ফাদেল কাবুব বলেন, বিলিয়নিয়ারেরা আসলে ব্যর্থ নীতির ফল। সিস্টেম যেভাবে সাজানো, তাতে সম্পদ একদিকে কেন্দ্রীভূত হওয়াই স্বাভাবিক। তাঁর মতে, বিলিয়নিয়ার শ্রেণিকে বিলোপ করতে হলে আধুনিক অ্যান্টি ট্রাস্ট ও কঠোর বাজার নিয়ন্ত্রণ প্রয়োজন।
মিডিয়ার ওপর প্রভাব কমবে
গোল্ডস্মিথস বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ডেস ফ্রিডম্যান মনে করেন, বিলিয়নিয়ারেরা পুরো মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম কিনে ফেলতে সক্ষম হওয়ায় তথ্যপ্রবাহ তাঁদের স্বার্থেই নিয়ন্ত্রিত হয়। যেমন—বেজোস বা ইলন মাস্কের গণমাধ্যম মালিকানা এই অঙ্গনের স্বাধীনতাকে দীর্ঘমেয়াদে প্রশ্নবিদ্ধ করে। তাই বিলিয়নিয়ার প্রভাব সীমিত হলে তথ্যের উৎসও আরও স্বাধীন হতে পারে।
চরম সম্পদ কি সত্যিই বিলোপ করা সম্ভব
বিশ্ব ইনইক্যুয়ালিটি ল্যাবের লুকাস শ্যানসেলের মতে, ইতিহাসে এর নজির আছে। উদাহরণস্বরূপ—রকেফেলারের একচেটিয়া সাম্রাজ্য ভেঙে দেওয়া, কিংবা রুজভেল্টের সময় সর্বোচ্চ করহার ৯৪ শতাংশে উন্নীত করা। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে পানামা পেপারসের মতো ফাঁস যেমন দুর্দান্ত স্বচ্ছতা তৈরি করেছে, তেমনি তা পরিবর্তনের সুযোগও তৈরি করছে। তিনি মনে করেন, ধনীদের ওপর কর আরোপের মতো ধারণা এখন আর ‘যদি’ নয়, বরং ‘কখন’ করা হবে—এ প্রশ্নে এসে দাঁড়িয়েছে।
আল-জাজিরা অবলম্বনে

পর্যবেক্ষকেরা বলছেন, ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের সামরিক পদক্ষেপ সৌদি আরবকে আরও বেশি সতর্ক করে তুলেছে। দেশটি এখন ইসরায়েলকে ক্রমবর্ধমানভাবে যুদ্ধবাজ ও অস্থিতিশীলতা সৃষ্টিকারী শক্তি হিসেবে দেখছে। যুদ্ধ শুরুর পর থেকে সৌদি আরব প্রকাশ্যে তেহরানের সঙ্গে সম্পর্ক দৃঢ় করার পদক্ষেপ নিয়েছে।
০৫ জুলাই ২০২৫
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দূতদের মধ্যে ইউক্রেন শান্তি চুক্তি নিয়ে আলোচনা হলেও প্রকাশ্যে কোনো উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়নি। পুতিনের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ইউরি উশাকভ, এ প্রসঙ্গে বলেছিলেন যে অমীমাংসিত ‘আঞ্চলিক সমস্যাই’ মূল বাধা। আর এই অঞ্চল আর কোনোটিই নয়, দোনেৎস্ক।
২০ ঘণ্টা আগে
জাপানের ক্ষমতাসীন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পর গত অক্টোবরে দেশটির প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন সানায়ে তাকাইচি। এরপরই তিনি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পরিচিত হন জাপানের নতুন ‘আয়রন লেডি’ বা লৌহমানবী’ হিসেবে।
১ দিন আগে
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বৈঠককে ঘিরে দিল্লিতে শুরু হয়েছে কূটনৈতিক প্রস্তুতি। চলমান ইউক্রেন যুদ্ধ, যুক্তরাষ্ট্রের চাপ এবং জ্বালানির বাজারে অস্থিরতার মধ্যেই এই শীর্ষ সম্মেলন হতে যাচ্ছে। অর্থনীতি, প্রতিরক্ষা এবং জ্বালানি—এই তিনটি খাত আলোচনার...
২ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

জাপানের ক্ষমতাসীন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পর গত অক্টোবরে দেশটির প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন সানায়ে তাকাইচি। এরপরই তিনি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পরিচিত হন জাপানের নতুন ‘আয়রন লেডি’ বা লৌহমানবী’ হিসেবে। এই পরিচয়টিকে তাকাইচি নিজেও গর্বের সঙ্গে গ্রহণ করেন। মার্গারেট থ্যাচারের অনুরাগী এই রক্ষণশীল নেতা ঘরোয়া অর্থনীতি থেকে শুরু করে পররাষ্ট্র ও নিরাপত্তা—সব ক্ষেত্রেই শক্ত অবস্থানের বার্তা দিয়েছেন।
তাকাইচির রাজনৈতিক পরিচয়ের মূল কেন্দ্রে রয়েছে ‘নিপ্পন কেইগি’ নামে জাপানের সবচেয়ে প্রভাবশালী জাতীয়তাবাদী গোষ্ঠী। এই সংগঠন জাপানের সংবিধানের যুদ্ধবিরোধী ৯ নম্বর অনুচ্ছেদ বাতিল, শক্তিশালী সামরিক বাহিনী গঠন এবং ঐতিহ্যবাদী মূল্যবোধে প্রত্যাবর্তনের পক্ষে। পূর্বসুরী শিনজো আবের মতো তাই তাকাইচিও জাপানকে স্বাভাবিক রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে চান, যেখানে গোয়েন্দা সংস্থা, আধুনিক সেনাবাহিনী এবং কঠোর নিরাপত্তা আইন থাকবে।
অর্থনীতির ক্ষেত্রে তিনি জাতীয় শিল্পকে শক্তিশালী করা, প্রযুক্তিগত সক্ষমতা বাড়ানো এবং রাষ্ট্রের হস্তক্ষেপ বৃদ্ধির পক্ষে। একই সঙ্গে কঠোর অভিবাসন নীতি ও রক্ষণশীল মূল্যবোধের প্রচারও তাঁকে ডানপন্থীদের মধ্যে জনপ্রিয় করেছে। তবে এই অভ্যন্তরীণ রাজনীতি এখন আন্তর্জাতিক উত্তেজনার সঙ্গে গেঁথে গেছে—বিশেষ করে, তাইওয়ান ইস্যুতে তাঁর অবস্থানের কারণে।
তাকাইচি ক্ষমতায় আসার পর থেকেই চীনের প্রতি কঠোর মনোভাব দেখাচ্ছেন। বেইজিংকে তিনি কৌশলগত হুমকি হিসেবে দেখেন এবং প্রতিরোধমূলক সামরিক ও কূটনৈতিক পদক্ষেপের পক্ষে জোর দিচ্ছেন। এরই অংশ হিসেবে অক্টোবরের শেষ দিকে তাঁর ও ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাক্ষাৎ দুই দেশের সম্পর্ককে নতুন সোনালি যুগে প্রবেশ করানোর আভাস দেয়। জাপান প্রতিরক্ষা ব্যয় জিডিপির কমপক্ষে ২ শতাংশে উন্নীত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, আর যুক্তরাষ্ট্র বিরল ধাতুর সরবরাহ নিশ্চিতকরণসহ অর্থনৈতিক সহায়তার ঘোষণা দেয়।
তবে সবচেয়ে আলোচিত বিষয় হলো তাইওয়ানের সঙ্গে তাকাইচির ঘনিষ্ঠতা। তিনি তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট লাই চিং-তের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন, যা চীনের কাছে স্পষ্ট উত্তেজনাকর পদক্ষেপ হিসেবে ধরা পড়েছে। আরও বিতর্ক সৃষ্টি হয় যখন তাকাইচি প্রকাশ্যে বলেন, তাইওয়ানের নিরাপত্তা জাপানের নিরাপত্তার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত। এমনকি তাইওয়ানে চীনা হামলার ক্ষেত্রে জাপানের আত্মরক্ষা বাহিনী হস্তক্ষেপ করতে পারে বলেও ইঙ্গিত দেন তিনি।
এ ক্ষেত্রে চীনের প্রতিক্রিয়াও ছিল কঠোর ও দ্রুত। তারা তাকাইচির বিরুদ্ধে ‘পুরোনো সামরিকতাবাদকে পুনরুজ্জীবিত করার’ অভিযোগ তোলে, রাষ্ট্রদূতকে তলব করে এবং জাতিসংঘে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ পাঠায়। পাশাপাশি সামুদ্রিক এলাকায় কোস্টগার্ডের টহল বাড়ায় চীন, জাপানি সামুদ্রিক পণ্যে সীমাবদ্ধতা আরোপের হুমকি দেয় এবং উত্তেজনাপূর্ণ নানা বিবৃতি দেয়।
এদিকে জাপানও পশ্চিম সীমান্তের ইয়োনাগুনি দ্বীপে বিমান প্রতিরক্ষা ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েনের ঘোষণা দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রও একই দ্বীপে সামরিক অবকাঠামো শক্তিশালী করছে। ফলে পরিস্থিতি আরও জটিল আকার ধারণ করছে।
তবে ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি তাকাইচিকে উত্তেজনা না বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন। কারণ আগামী এপ্রিলে তিনি বেইজিং সফর করতে চান।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তাকাইচির নেতৃত্বে জাপান নতুন ভূ-রাজনৈতিক বাস্তবতায় প্রবেশ করেছে। তাঁর দৃঢ় অবস্থান দেশকে হয় পুনরুত্থানের পথে নেবে—নয়তো চীন–তাইওয়ান উত্তেজনার কেন্দ্রে ঠেলে দেবে। ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে তিনি কোন পথে হাঁটবেন তার ওপর।

জাপানের ক্ষমতাসীন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পর গত অক্টোবরে দেশটির প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন সানায়ে তাকাইচি। এরপরই তিনি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পরিচিত হন জাপানের নতুন ‘আয়রন লেডি’ বা লৌহমানবী’ হিসেবে। এই পরিচয়টিকে তাকাইচি নিজেও গর্বের সঙ্গে গ্রহণ করেন। মার্গারেট থ্যাচারের অনুরাগী এই রক্ষণশীল নেতা ঘরোয়া অর্থনীতি থেকে শুরু করে পররাষ্ট্র ও নিরাপত্তা—সব ক্ষেত্রেই শক্ত অবস্থানের বার্তা দিয়েছেন।
তাকাইচির রাজনৈতিক পরিচয়ের মূল কেন্দ্রে রয়েছে ‘নিপ্পন কেইগি’ নামে জাপানের সবচেয়ে প্রভাবশালী জাতীয়তাবাদী গোষ্ঠী। এই সংগঠন জাপানের সংবিধানের যুদ্ধবিরোধী ৯ নম্বর অনুচ্ছেদ বাতিল, শক্তিশালী সামরিক বাহিনী গঠন এবং ঐতিহ্যবাদী মূল্যবোধে প্রত্যাবর্তনের পক্ষে। পূর্বসুরী শিনজো আবের মতো তাই তাকাইচিও জাপানকে স্বাভাবিক রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে চান, যেখানে গোয়েন্দা সংস্থা, আধুনিক সেনাবাহিনী এবং কঠোর নিরাপত্তা আইন থাকবে।
অর্থনীতির ক্ষেত্রে তিনি জাতীয় শিল্পকে শক্তিশালী করা, প্রযুক্তিগত সক্ষমতা বাড়ানো এবং রাষ্ট্রের হস্তক্ষেপ বৃদ্ধির পক্ষে। একই সঙ্গে কঠোর অভিবাসন নীতি ও রক্ষণশীল মূল্যবোধের প্রচারও তাঁকে ডানপন্থীদের মধ্যে জনপ্রিয় করেছে। তবে এই অভ্যন্তরীণ রাজনীতি এখন আন্তর্জাতিক উত্তেজনার সঙ্গে গেঁথে গেছে—বিশেষ করে, তাইওয়ান ইস্যুতে তাঁর অবস্থানের কারণে।
তাকাইচি ক্ষমতায় আসার পর থেকেই চীনের প্রতি কঠোর মনোভাব দেখাচ্ছেন। বেইজিংকে তিনি কৌশলগত হুমকি হিসেবে দেখেন এবং প্রতিরোধমূলক সামরিক ও কূটনৈতিক পদক্ষেপের পক্ষে জোর দিচ্ছেন। এরই অংশ হিসেবে অক্টোবরের শেষ দিকে তাঁর ও ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাক্ষাৎ দুই দেশের সম্পর্ককে নতুন সোনালি যুগে প্রবেশ করানোর আভাস দেয়। জাপান প্রতিরক্ষা ব্যয় জিডিপির কমপক্ষে ২ শতাংশে উন্নীত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, আর যুক্তরাষ্ট্র বিরল ধাতুর সরবরাহ নিশ্চিতকরণসহ অর্থনৈতিক সহায়তার ঘোষণা দেয়।
তবে সবচেয়ে আলোচিত বিষয় হলো তাইওয়ানের সঙ্গে তাকাইচির ঘনিষ্ঠতা। তিনি তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট লাই চিং-তের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন, যা চীনের কাছে স্পষ্ট উত্তেজনাকর পদক্ষেপ হিসেবে ধরা পড়েছে। আরও বিতর্ক সৃষ্টি হয় যখন তাকাইচি প্রকাশ্যে বলেন, তাইওয়ানের নিরাপত্তা জাপানের নিরাপত্তার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত। এমনকি তাইওয়ানে চীনা হামলার ক্ষেত্রে জাপানের আত্মরক্ষা বাহিনী হস্তক্ষেপ করতে পারে বলেও ইঙ্গিত দেন তিনি।
এ ক্ষেত্রে চীনের প্রতিক্রিয়াও ছিল কঠোর ও দ্রুত। তারা তাকাইচির বিরুদ্ধে ‘পুরোনো সামরিকতাবাদকে পুনরুজ্জীবিত করার’ অভিযোগ তোলে, রাষ্ট্রদূতকে তলব করে এবং জাতিসংঘে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ পাঠায়। পাশাপাশি সামুদ্রিক এলাকায় কোস্টগার্ডের টহল বাড়ায় চীন, জাপানি সামুদ্রিক পণ্যে সীমাবদ্ধতা আরোপের হুমকি দেয় এবং উত্তেজনাপূর্ণ নানা বিবৃতি দেয়।
এদিকে জাপানও পশ্চিম সীমান্তের ইয়োনাগুনি দ্বীপে বিমান প্রতিরক্ষা ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েনের ঘোষণা দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রও একই দ্বীপে সামরিক অবকাঠামো শক্তিশালী করছে। ফলে পরিস্থিতি আরও জটিল আকার ধারণ করছে।
তবে ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি তাকাইচিকে উত্তেজনা না বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন। কারণ আগামী এপ্রিলে তিনি বেইজিং সফর করতে চান।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তাকাইচির নেতৃত্বে জাপান নতুন ভূ-রাজনৈতিক বাস্তবতায় প্রবেশ করেছে। তাঁর দৃঢ় অবস্থান দেশকে হয় পুনরুত্থানের পথে নেবে—নয়তো চীন–তাইওয়ান উত্তেজনার কেন্দ্রে ঠেলে দেবে। ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে তিনি কোন পথে হাঁটবেন তার ওপর।

পর্যবেক্ষকেরা বলছেন, ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের সামরিক পদক্ষেপ সৌদি আরবকে আরও বেশি সতর্ক করে তুলেছে। দেশটি এখন ইসরায়েলকে ক্রমবর্ধমানভাবে যুদ্ধবাজ ও অস্থিতিশীলতা সৃষ্টিকারী শক্তি হিসেবে দেখছে। যুদ্ধ শুরুর পর থেকে সৌদি আরব প্রকাশ্যে তেহরানের সঙ্গে সম্পর্ক দৃঢ় করার পদক্ষেপ নিয়েছে।
০৫ জুলাই ২০২৫
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দূতদের মধ্যে ইউক্রেন শান্তি চুক্তি নিয়ে আলোচনা হলেও প্রকাশ্যে কোনো উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়নি। পুতিনের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ইউরি উশাকভ, এ প্রসঙ্গে বলেছিলেন যে অমীমাংসিত ‘আঞ্চলিক সমস্যাই’ মূল বাধা। আর এই অঞ্চল আর কোনোটিই নয়, দোনেৎস্ক।
২০ ঘণ্টা আগে
বিশ্বজুড়ে দীর্ঘদিন ধরেই প্রশ্ন উঠে আসছে—‘যদি বিলিয়নিয়ারদের সম্পদ সীমিত করা হয়, অথবা এই শ্রেণিটিকেই সম্পূর্ণ বাতিল করা হয়, তবে কী ঘটবে?’ পশ্চিমা দেশগুলোতে চরম ধনী বা বিলিয়নিয়ারদের সংখ্যা ও প্রভাব বাড়তে থাকায় এখন এই প্রশ্ন আরও জোরালো হয়েছে।
১ দিন আগে
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বৈঠককে ঘিরে দিল্লিতে শুরু হয়েছে কূটনৈতিক প্রস্তুতি। চলমান ইউক্রেন যুদ্ধ, যুক্তরাষ্ট্রের চাপ এবং জ্বালানির বাজারে অস্থিরতার মধ্যেই এই শীর্ষ সম্মেলন হতে যাচ্ছে। অর্থনীতি, প্রতিরক্ষা এবং জ্বালানি—এই তিনটি খাত আলোচনার...
২ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বৈঠককে ঘিরে দিল্লিতে শুরু হয়েছে কূটনৈতিক প্রস্তুতি। চলমান ইউক্রেন যুদ্ধ, যুক্তরাষ্ট্রের চাপ এবং জ্বালানির বাজারে অস্থিরতার মধ্যেই এই শীর্ষ সম্মেলন হতে যাচ্ছে। অর্থনীতি, প্রতিরক্ষা এবং জ্বালানি—এই তিনটি খাত আলোচনার কেন্দ্রে থাকবে বলে দুই দেশই নিশ্চিত করেছে।
রাষ্ট্রীয় সফরে বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) ভারতে পৌঁছে পরদিন শুক্রবার মোদির সঙ্গে বৈঠকে বসবেন পুতিন। এই বৈঠকে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের অগ্রগতি পর্যালোচনা ছাড়াও নতুন কয়েকটি আন্তদপ্তর ও বাণিজ্যিক চুক্তি স্বাক্ষরের সম্ভাবনা রয়েছে। রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখা এবং একই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কৌশলগত অংশীদারত্ব ধরে রাখতে ভারতের নীতির জন্য এই বৈঠক একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত হয়ে দাঁড়িয়েছে।
রাশিয়া থেকে ডিসকাউন্টে ভারতের তেল কেনা দীর্ঘদিন ধরেই ওয়াশিংটনকে অসন্তুষ্ট করে আসছে। এই অসন্তুষ্টি থেকেই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি ভারতীয় পণ্যের ওপর অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছেন, যা মোট শুল্ককে ৫০ শতাংশে উন্নীত করেছে। তবে ভারত বলছে, তারা আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার বিরোধী নয়, কিন্তু ১৪০ কোটি মানুষের জ্বালানি চাহিদা মেটাতেই বাধ্য হয়ে রাশিয়া থেকে তেল আমদানি করা হচ্ছে। নতুন মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কারণে ‘রসনেফত’ ও ‘লুকওইল’ এর মতো রাশিয়ার কিছু কোম্পানি থেকে ভারত তেল কিনবে না বলে জানিয়েছে। তবে নিষেধাজ্ঞামুক্ত রুশ সরবরাহকারীদের সঙ্গে বাণিজ্য চালু থাকবে।
পুতিনের এই সফরে দুই দেশের অর্থনৈতিক সহযোগিতার ওপর জোর দেওয়া হবে। ভারত রাশিয়ায় ওষুধ, কৃষিপণ্য ও টেক্সটাইল রপ্তানি বাড়াতে চায় এবং পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে শুল্কমুক্ত সুবিধা প্রদানের অনুরোধ জানাবে। এ ছাড়া সার সরবরাহের দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি এবং রাশিয়ায় ভারতীয় দক্ষ জনশক্তির নিরাপদ ও নিয়মিত অভিবাসন নিয়ে আলোচনা এগোতে পারে। দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য, সমুদ্র পরিবহন, স্বাস্থ্যসেবা ও গণমাধ্যম সহযোগিতা বিষয়ক নথিপত্র চূড়ান্তের কাজও চলছে।
বুধবার এই বিষয়ে যুক্তরাজ্যভিত্তিক ইনডিপেনডেন্টের এক নিবন্ধে দাবি করা হয়েছে, জ্বালানি সহযোগিতাই পুতিন-মোদি আলোচনার বড় অংশ দখল করবে। ভারতের ফার ইস্টে বিনিয়োগ, রাশিয়ার সঙ্গে বেসামরিক পারমাণবিক প্রকল্প এবং কুদানকুলাম প্রকল্পের সম্প্রসারণ নিয়ে অগ্রগতি পর্যালোচনা হবে। স্থানীয়ভাবে যন্ত্রাংশ উৎপাদন এবং তৃতীয় দেশে যৌথ পারমাণবিক প্রকল্প বাস্তবায়নের সম্ভাবনাও খতিয়ে দেখা হবে।
প্রতিরক্ষা সহযোগিতা এই সফরের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। ২০১৮ সালের ৫.৪ বিলিয়ন ডলারের চুক্তির আওতায় ভারতের হাতে ইতিমধ্যে রাশিয়ার তিনটি এস-৪০০ স্কোয়াড্রন এসেছে। যুদ্ধজনিত কারণে বাকিগুলোর সরবরাহে যুদ্ধজনিত বিলম্ব হচ্ছে। ভারত এই সরবরাহ দ্রুত নিশ্চিত করতে চাপ দেবে। পাশাপাশি আরও এস-৪০০ কেনার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া হয়নি, যদিও বৈঠক থেকে কোনো ঘোষণা হওয়ার সম্ভাবনা কম। রুশ নির্মিত এসইউ-৩০ এমকেআই যুদ্ধবিমান আপগ্রেড, অস্ত্র সরবরাহ দ্রুততর করা এবং যৌথ সামরিক মহড়ায় সমন্বয় জোরদার করার বিষয়েও আলোচনা হবে।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ভারত বহুজাতিক অস্ত্র সরবরাহকারীদের দিকে নজর বাড়ালেও রাশিয়া এখনো তাদের সবচেয়ে বড় প্রতিরক্ষা অংশীদার। পুতিনের সফরকে সেই সম্পর্কটি আরও দৃঢ় করার বড় সুযোগ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বৈঠককে ঘিরে দিল্লিতে শুরু হয়েছে কূটনৈতিক প্রস্তুতি। চলমান ইউক্রেন যুদ্ধ, যুক্তরাষ্ট্রের চাপ এবং জ্বালানির বাজারে অস্থিরতার মধ্যেই এই শীর্ষ সম্মেলন হতে যাচ্ছে। অর্থনীতি, প্রতিরক্ষা এবং জ্বালানি—এই তিনটি খাত আলোচনার কেন্দ্রে থাকবে বলে দুই দেশই নিশ্চিত করেছে।
রাষ্ট্রীয় সফরে বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) ভারতে পৌঁছে পরদিন শুক্রবার মোদির সঙ্গে বৈঠকে বসবেন পুতিন। এই বৈঠকে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের অগ্রগতি পর্যালোচনা ছাড়াও নতুন কয়েকটি আন্তদপ্তর ও বাণিজ্যিক চুক্তি স্বাক্ষরের সম্ভাবনা রয়েছে। রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখা এবং একই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কৌশলগত অংশীদারত্ব ধরে রাখতে ভারতের নীতির জন্য এই বৈঠক একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত হয়ে দাঁড়িয়েছে।
রাশিয়া থেকে ডিসকাউন্টে ভারতের তেল কেনা দীর্ঘদিন ধরেই ওয়াশিংটনকে অসন্তুষ্ট করে আসছে। এই অসন্তুষ্টি থেকেই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি ভারতীয় পণ্যের ওপর অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছেন, যা মোট শুল্ককে ৫০ শতাংশে উন্নীত করেছে। তবে ভারত বলছে, তারা আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার বিরোধী নয়, কিন্তু ১৪০ কোটি মানুষের জ্বালানি চাহিদা মেটাতেই বাধ্য হয়ে রাশিয়া থেকে তেল আমদানি করা হচ্ছে। নতুন মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কারণে ‘রসনেফত’ ও ‘লুকওইল’ এর মতো রাশিয়ার কিছু কোম্পানি থেকে ভারত তেল কিনবে না বলে জানিয়েছে। তবে নিষেধাজ্ঞামুক্ত রুশ সরবরাহকারীদের সঙ্গে বাণিজ্য চালু থাকবে।
পুতিনের এই সফরে দুই দেশের অর্থনৈতিক সহযোগিতার ওপর জোর দেওয়া হবে। ভারত রাশিয়ায় ওষুধ, কৃষিপণ্য ও টেক্সটাইল রপ্তানি বাড়াতে চায় এবং পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে শুল্কমুক্ত সুবিধা প্রদানের অনুরোধ জানাবে। এ ছাড়া সার সরবরাহের দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি এবং রাশিয়ায় ভারতীয় দক্ষ জনশক্তির নিরাপদ ও নিয়মিত অভিবাসন নিয়ে আলোচনা এগোতে পারে। দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য, সমুদ্র পরিবহন, স্বাস্থ্যসেবা ও গণমাধ্যম সহযোগিতা বিষয়ক নথিপত্র চূড়ান্তের কাজও চলছে।
বুধবার এই বিষয়ে যুক্তরাজ্যভিত্তিক ইনডিপেনডেন্টের এক নিবন্ধে দাবি করা হয়েছে, জ্বালানি সহযোগিতাই পুতিন-মোদি আলোচনার বড় অংশ দখল করবে। ভারতের ফার ইস্টে বিনিয়োগ, রাশিয়ার সঙ্গে বেসামরিক পারমাণবিক প্রকল্প এবং কুদানকুলাম প্রকল্পের সম্প্রসারণ নিয়ে অগ্রগতি পর্যালোচনা হবে। স্থানীয়ভাবে যন্ত্রাংশ উৎপাদন এবং তৃতীয় দেশে যৌথ পারমাণবিক প্রকল্প বাস্তবায়নের সম্ভাবনাও খতিয়ে দেখা হবে।
প্রতিরক্ষা সহযোগিতা এই সফরের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। ২০১৮ সালের ৫.৪ বিলিয়ন ডলারের চুক্তির আওতায় ভারতের হাতে ইতিমধ্যে রাশিয়ার তিনটি এস-৪০০ স্কোয়াড্রন এসেছে। যুদ্ধজনিত কারণে বাকিগুলোর সরবরাহে যুদ্ধজনিত বিলম্ব হচ্ছে। ভারত এই সরবরাহ দ্রুত নিশ্চিত করতে চাপ দেবে। পাশাপাশি আরও এস-৪০০ কেনার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া হয়নি, যদিও বৈঠক থেকে কোনো ঘোষণা হওয়ার সম্ভাবনা কম। রুশ নির্মিত এসইউ-৩০ এমকেআই যুদ্ধবিমান আপগ্রেড, অস্ত্র সরবরাহ দ্রুততর করা এবং যৌথ সামরিক মহড়ায় সমন্বয় জোরদার করার বিষয়েও আলোচনা হবে।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ভারত বহুজাতিক অস্ত্র সরবরাহকারীদের দিকে নজর বাড়ালেও রাশিয়া এখনো তাদের সবচেয়ে বড় প্রতিরক্ষা অংশীদার। পুতিনের সফরকে সেই সম্পর্কটি আরও দৃঢ় করার বড় সুযোগ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

পর্যবেক্ষকেরা বলছেন, ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের সামরিক পদক্ষেপ সৌদি আরবকে আরও বেশি সতর্ক করে তুলেছে। দেশটি এখন ইসরায়েলকে ক্রমবর্ধমানভাবে যুদ্ধবাজ ও অস্থিতিশীলতা সৃষ্টিকারী শক্তি হিসেবে দেখছে। যুদ্ধ শুরুর পর থেকে সৌদি আরব প্রকাশ্যে তেহরানের সঙ্গে সম্পর্ক দৃঢ় করার পদক্ষেপ নিয়েছে।
০৫ জুলাই ২০২৫
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দূতদের মধ্যে ইউক্রেন শান্তি চুক্তি নিয়ে আলোচনা হলেও প্রকাশ্যে কোনো উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়নি। পুতিনের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ইউরি উশাকভ, এ প্রসঙ্গে বলেছিলেন যে অমীমাংসিত ‘আঞ্চলিক সমস্যাই’ মূল বাধা। আর এই অঞ্চল আর কোনোটিই নয়, দোনেৎস্ক।
২০ ঘণ্টা আগে
বিশ্বজুড়ে দীর্ঘদিন ধরেই প্রশ্ন উঠে আসছে—‘যদি বিলিয়নিয়ারদের সম্পদ সীমিত করা হয়, অথবা এই শ্রেণিটিকেই সম্পূর্ণ বাতিল করা হয়, তবে কী ঘটবে?’ পশ্চিমা দেশগুলোতে চরম ধনী বা বিলিয়নিয়ারদের সংখ্যা ও প্রভাব বাড়তে থাকায় এখন এই প্রশ্ন আরও জোরালো হয়েছে।
১ দিন আগে
জাপানের ক্ষমতাসীন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পর গত অক্টোবরে দেশটির প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন সানায়ে তাকাইচি। এরপরই তিনি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পরিচিত হন জাপানের নতুন ‘আয়রন লেডি’ বা লৌহমানবী’ হিসেবে।
১ দিন আগে