পার্থ এস ঘোষ

মাত্র পাঁচ মাস আগেও ভারত–বাংলাদেশ সম্পর্ক যে এমন তলানি পৌঁছাবে সেটি কল্পনা করাও ছিল অসম্ভব। সমস্যার মূলে ভারতের সেই সিদ্ধান্ত, যেখানে বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে কেবল থাকতেই দেওয়া হয়নি, বরং পরোক্ষভাবে তাঁকে বাংলাদেশের রাজনীতির বিতর্কিত বিষয়গুলো নিয়ে মতামত দেওয়ার সুযোগও দেওয়া হয়েছে। শেখ হাসিনা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে বাংলাদেশ সরকারকে দেশের ক্রমবর্ধমান সাম্প্রদায়িক সংকটের জন্য দায়ী করেছেন এবং তাঁর মতে, এটি হিন্দুদের ওপর ‘গণহত্যার’ সমতুল্য।
শেখ হাসিনার এ ধরনের মন্তব্য যে, বাংলাদেশ সরকারের জন্য বিরক্তিকর তা সহজেই অনুমেয়। ২০২৪ সালের ৯ ডিসেম্বর ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রির ঢাকা সফরের সময়, ড. ইউনূস এই বিষয়টি ভারতের প্রতিনিধির কাছে উল্লেখ করতে কুণ্ঠা করেননি। স্বভাবজাত ভদ্রতায় ড. ইউনূস শুধু বলেন, ‘আমাদের জনগণ চিন্তিত, কারণ তিনি (শেখ হাসিনা) সেখান (নয়াদিল্লি) থেকে অনেক মন্তব্য করছেন। এতে উত্তেজনা তৈরি হচ্ছে।’
বাংলাদেশে হিন্দু–বিদ্বেষী ঘটনাগুলো যে ভারতীয় হিন্দুদের অনুভূতিকে উসকে দেবে, তা অনুমেয়। ভারতের সর্বদা প্রস্তুত হিন্দুত্ববাদী শক্তি—বিজেপি, আরএসএস এবং আরও অনেক গোষ্ঠী প্রতিশোধের দাবিতে সোচ্চার। উত্তর প্রদেশ রাজ্যে বিজেপির মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ তো বাংলাদেশে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলোর সঙ্গে তাঁর রাজ্যের সাম্ভালে ঘটে যাওয়া মসজিদ সংক্রান্ত সংঘাতের যোগসূত্র খুঁজে পেয়েছেন। সাম্ভালের ঘটনায় চার জন মুসলমান প্রাণ হারিয়েছেন।
চলতি বছরের ৫ ডিসেম্বর অযোধ্যায় রামায়ণ মেলার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে (আর ৬ ডিসেম্বর বাবরি মসজিদ ভাঙার বার্ষিকী) আদিত্যনাথ বলেন, ‘৫০০ বছর আগে বাবরের এক সেনাপতি অযোধ্যায় যা করেছিলেন, সাম্ভালেও সেই একই ঘটনা ঘটেছে এবং বাংলাদেশেও তাই ঘটছে।’
এমনকি পশ্চিমবঙ্গেও—যেটি সাধারণত সাম্প্রদায়িকভাবে শান্তিপূর্ণ রাজ্য—বাংলাদেশের রাজনীতির উত্তাপ অনুভূত হচ্ছে। হাসিনা বা আদিত্যনাথ কারও চেয়ে পিছিয়ে না থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেছেন, জাতিসংঘের উচিত বাংলাদেশের ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করা।
এদিকে, মমতার এই উচ্চকিত বক্তব্যের জবাব দিতে গিয়ে পশ্চিমবঙ্গের বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী মমতার ‘মুসলিম তোষণের’ রাজনীতির বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণ করেছেন। বাংলাদেশের রাজনীতি এবং পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিকে নাটকীয়ভাবে একসূত্রে গেঁথে শুভেন্দু ড. ইউনূসের উত্থানের পেছনের শক্তিগুলোর বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন। তিনি হুমকি দিয়ে বলেছেন, যদি ভারতের হিন্দুরা এবং বাংলাদেশের ‘রাজাকার বিরোধী’ (মুক্তিযুদ্ধপন্থী) শক্তি এক হয় তবে তৎক্ষণাৎ মুহাম্মদ ইউনূসের ‘চামড়া তুলে’ নেওয়া সম্ভব।
অধিকাংশ ভারতীয়ই হয়তো খেয়াল করেননি যে, ভারতের সাম্প্রদায়িক পরিস্থিতি বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থার চেয়ে খুব একটা ভিন্ন নয়। হিন্দু জাতীয়তাবাদী বিজেপি মনে করে, ভারত অত্যন্ত শক্তিশালী—মূলত এই অঞ্চলের জনসংখ্যার তিন–পঞ্চমাংশ, জিডিপি এবং সামরিক শক্তির কারণে—তাই মুসলিম ঘৃণার ওপর তাদের একচেটিয়া অধিকার আছে। মুসলিম ও বৌদ্ধ সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলো যদি কোনোভাবে হিন্দুবিরোধী মনোভাব প্রকাশ করে, তবে তা নিন্দনীয়। অথচ ভারতের ২০ কোটি মুসলমান (জনসংখ্যার ১৫ শতাংশ) নিজেদের দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক হিসেবে মনে করে দুঃখ প্রকাশ করলেও বিজেপি বা আরএসএস একটুও বিচলিত হয় না।
কিন্তু বিজেপিকে উপলব্ধি করতে হবে যে, ক্ষমতার সঙ্গে দায়িত্বও আসে। অনেক বছর আগে, শ্রীলঙ্কায় এক শিক্ষাবিষয়ক সেমিনারে চায়ের বিরতির সময়—যেখানে সিংহল–তামিল জাতিগত সংঘাত নিয়ে আলোচনা হচ্ছিল—এক জ্যেষ্ঠ শ্রীলঙ্কান তামিল অধ্যাপক আমাকে বলেছিলেন, ‘ভারত এই অঞ্চলের প্রাকৃতিক অভিভাবক, যার মূল কেন্দ্রবিন্দু হলো তার ধর্মনিরপেক্ষ আদর্শ। যেদিন তারা সেই প্রতিশ্রুতি লঙ্ঘন করবে, সেদিন পৃথিবীর কোনো শক্তিই আঞ্চলিক শান্তি নিশ্চিত করতে পারবে না।’
বাংলাদেশি হিন্দুরা প্রকৃতপক্ষে কতটা সহিংসতার শিকার হয়েছে, তা নিশ্চিতভাবে জানা কঠিন। এই সোশ্যাল মিডিয়া এবং ভুয়া খবরের যুগে প্রতিটি খবরকেই সন্দেহের চোখে দেখা উচিত। ‘গণহত্যা’ শব্দটি অবশ্যই অত্যন্ত শক্তিশালী একটি দাবি। বাংলাদেশের রাজনীতি নিয়ে অধ্যয়নকারী হিসেবে আমি বলতে পারি যে, ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে যা পড়ি, তা অতিরঞ্জিত এবং বর্তমান হিন্দুত্ববাদী শাসনকে তুষ্ট করার জন্য উদ্দেশ্যমূলক। শেখ হাসিনা অবশ্যই তাঁর ভারতীয় আশ্রয়দাতাদের সন্তুষ্ট করার জন্য রাজনীতি করছেন, যা মানুষের একটি স্বাভাবিক আত্মরক্ষামূলক প্রবৃত্তি।
এটা সত্য যে, বাংলাদেশে ইসলামপন্থী শক্তিগুলো ঐতিহ্যগতভাবে শক্তিশালী। বাংলাদেশের দুই প্রধান রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ এবং বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) বিশেষ করে নির্বাচনের সময় তাদের সমর্থন নেয়। তবে ইসলামি দলগুলো, বিশেষত জামায়াতে ইসলামী, নিজেরাও স্বীকার করে যে—তারা রাজনৈতিক ক্ষমতায় যেতে পারবে না। পাকিস্তানের ক্ষেত্রেও এটি সত্য।
কিন্তু ভারতের গল্পটি বেশি জটিল। ভারতে জামায়াতে ইসলামীর কোনো হিন্দু প্রতিপক্ষ নেই। ‘হিন্দু’ শব্দটি ধারণ করে কেবল একটি দল—হিন্দু মহাসভা, যা এখন ক্ষয়িষ্ণু। বিজেপি–আরএসএস জুটি এটি পুরোপুরি আত্মসাৎ করে নিয়েছে। এই জোটের বহু ‘বি–টিম’ রয়েছে—যেমন: বিশ্ব হিন্দু পরিষদ, রাম সেনা, হিন্দু জনজাগৃতি সমিতি ইত্যাদি। এই বি–টিমগুলো প্রয়োজনমতো সর্বদা মাঠ পর্যায়ের কর্মী সরবরাহে প্রস্তুত। সুতরাং, বিজেপি—যারা দশ বছর ধরে ঘোষিতভাবে মুসলিমবিরোধী রাজনীতির মাধ্যমে ভারত শাসন করছে—যখন কোনো প্রতিবেশী দেশের সংখ্যালঘুদের জন্য মায়াকান্না করে তখন তা হাস্যকর দেখায়।
দক্ষিণ এশিয়ায় আন্তঃসম্প্রদায় সম্পর্কের অবনতি ঘটার প্রেক্ষাপটে একটি আঞ্চলিক উত্তাল পরিস্থিতির ঝুঁকি ব্যাপক—যদি না এই ধারা থামাতে ঐকমত্য না গড়ে ওঠে। ভালো হোক বা মন্দ, দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থা (সার্ক) নামের কিছু একটা ছিল, যেখানে আঞ্চলিক নেতারা অন্তত একত্র হয়ে আলোচনা করতে পারতেন। কিন্তু ২০১৬ সাল থেকে এটি অকার্যকর। ভারত এখন ‘গ্লোবাল সাউথ’–এর অন্যতম নেতা হওয়ার দাবি করছে। কিন্তু তার নিজের প্রতিবেশীদের—যেখানে সবাই গ্লোবাল সাউথের অন্তর্ভুক্ত—আস্থা অর্জনে ব্যর্থ হয়েছে।
প্রচলিত প্রবাদে বলা হয়, সহমর্মিতা নিজ ঘর থেকেই শুরু হওয়া উচিত। কিন্তু ভারতের সাম্প্রদায়িক পরিস্থিতির যেভাবে অবনতি ঘটছে, তাতে আমি দ্বিধায় পড়ে গেছি যে, দ্বিজাতি তত্ত্বের জনক—যেখানে বলা হয়েছিল ভারত আসলে দুটি জাতির সমষ্টি—মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ কী তবে আরও বাস্তববাদী ছিলেন? বিপরীতে, গান্ধী-নেহরু-প্যাটেলের নেতৃত্বে কংগ্রেস কী বেশি রোমান্টিক ছিল? আশা করি, এমন একদিন আসবে যখন আমার এই উদ্বেগ দূর হয়ে যাবে। বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি যা–ই নির্দেশ করুক না কেন, এ সত্য অস্বীকার করা যাবে না যে—পাকিস্তানের ইসলামি মতাদর্শ ১৯৭১ সালে দেশটির বিভক্তি ঠেকাতে পারেনি।
দক্ষিণ এশিয়া এক বিচিত্র ভূখণ্ড। এর আটটি সদস্য রাষ্ট্রের মধ্যে দুটি (ভারত ও নেপাল) হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠ, তবে সাংবিধানিকভাবে ধর্মনিরপেক্ষ, দুটি বৌদ্ধ সংখ্যাগরিষ্ঠ (ভুটান ও শ্রীলঙ্কা) এবং সাংবিধানিকভাবে বৌদ্ধমতের প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ এবং তিনটি পুরোপুরি ইসলামি রাষ্ট্র (আফগানিস্তান, মালদ্বীপ ও পাকিস্তান)। মালদ্বীপের অবস্থান এখানে বিশেষভাবে লক্ষণীয়। কেবল এর ইসলামি চরিত্রই নয়, দেশটি শতভাগ সুন্নি। মালদ্বীপের কোনো নাগরিক বিদেশে অবস্থানকালে যদি অন্য কোনো ধর্মাবলম্বী, এমনকি অন্য কোনো ইসলামি সম্প্রদায়ের (যেমন: শিয়া) কারও সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন, তবে তাঁকে দ্বীপপুঞ্জে প্রবেশ করতে দেওয়া হয় না।
বাংলাদেশের ক্ষেত্রে বিষয়টি কিছুটা ‘লুকোচুরি’ খেলার মতো। ১৯৭১ সালে স্বাধীন হওয়ার পর দেশটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র হিসেবে যাত্রা শুরু করে (১৯৭২ সালে সংবিধান রচনার মধ্য দিয়ে), কিন্তু চার বছরের মধ্যেই ইসলামি রাষ্ট্রে পরিণত হয় এবং এক দশকের মাথায় আবারও বিতর্কিতভাবে ধর্মনিরপেক্ষতার দিকে ফেরার চেষ্টা করে। বর্তমান বাস্তবতা বিবেচনায় ধরে নেওয়া যায় যে, ভবিষ্যতে কোনো সাংবিধানিক সংশোধনী হলে তা ধর্মনিরপেক্ষতার অবশিষ্ট ছাপগুলোও মুছে দেবে।
তাহলে কি এটা ধরে নিতে হবে যে, দক্ষিণ এশিয়ায় কেবল হিন্দুরাই ধর্মনিরপেক্ষ হতে পারে? এই জটিল প্রশ্নটি আপাতত ভবিষ্যতের জন্য তোলা থাক। বর্তমান পরিস্থিতি খুব একটা ইতিবাচক নয়। ভারতের হিন্দুত্ববাদী শক্তিগুলো নিয়মিতভাবে ধর্মনিরপেক্ষতার ধারণাকে ব্যঙ্গ করে এবং ধর্মনিরপেক্ষতাবাদীদের ‘সেক্যুলার’ বলে বিদ্রূপ করে। অন্যদিকে, আরেকটি ধর্মনিরপেক্ষ হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ নেপালে রাজতন্ত্রপন্থীরা এখন দুর্বল হলেও নিশ্চিহ্ন নয়। কোনো অনুকূল পরিস্থিতি পেলে তারা রাজতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করে নেপালকে আবার হিন্দু রাষ্ট্র ঘোষণা করবে। অভিযোগ রয়েছে, এই ধারণার পেছনে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের (আরএসএস) সমর্থন আছে।
বাংলাদেশে যা ঘটছে বা এ অঞ্চলে যেসব ঘটনা নিয়মিত ঘটে থাকে, তা আমাদের নিরাশ করে তোলার কথা নয়। দক্ষিণ এশিয়া নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে পড়াশোনা ও লেখালেখি করার পাশাপাশি এ অঞ্চলের বিভিন্ন ধরনের মানুষের সঙ্গে যোগাযোগের অভিজ্ঞতা থেকে আমি অনুভব করি, এ অঞ্চলে একটি অন্তর্নিহিত সভ্যতাগত সংযোগ রয়েছে।
দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থার (সার্ক—এখন প্রায় অকার্যকর) পরীক্ষাটি এই গুরুত্বপূর্ণ বাস্তবতা উপলব্ধি করতে ব্যর্থ হয়েছিল। কারণ আঞ্চলিক নেতারা আন্তর্জাতিক সম্পর্কের প্রচলিত বোধ থেকে মুক্ত হতে পারেননি। তাঁরা অনুধাবন করতে পারেননি যে, আন্তর্জাতিক সম্পর্কের কাঠামোর বাইরেও একটি জগৎ রয়েছে। দ্বিপক্ষীয় ও বিতর্কিত বিষয় নিয়ে আলোচনা নিষিদ্ধ করে তারা সার্ককে যেন প্রিন্স হ্যামলেট বিবর্জিত এক নাটকে পরিণত করেছিল। ৯ ডিসেম্বর ভারত–বাংলাদেশ সচিব পর্যায়ের বৈঠকে বাংলাদেশ সার্ক পুনরুজ্জীবনের জন্য আহ্বান জানিয়েছিল। ভারতকে অবশ্যই এই প্রস্তাব গ্রহণ করা উচিত।
লেখক: পার্থ এস ঘোষ, দিল্লির জওহরলাল নেহেরু ইউনিভার্সিটির সাউথ এশিয়ান স্টাডিজের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক। তিনি দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতি, ইতিহাস, ধর্ম বিষয়ে একাধিক বই লিখেছেন। তিনি জার্মানির হাইডেলবার্গ ইউনিভার্সিটি ও নিউজিল্যান্ডের ওয়েলিংটনের ভিক্টোরিয়া ইউনিভার্সিটির ভিজিটিং ফেলো ছিলেন। তাঁর বিখ্যাত দুটি বই হলো—‘বিজেপি অ্যান্ড দ্য ইভোলিউশন অব হিন্দু ন্যাশনালিজম’, ‘ইন্ডিয়া-সাউথ এশিয়া ইন্টারফেস’।
ইংরেজি থেকে অনুবাদ করেছেন আব্দুর রহমান

মাত্র পাঁচ মাস আগেও ভারত–বাংলাদেশ সম্পর্ক যে এমন তলানি পৌঁছাবে সেটি কল্পনা করাও ছিল অসম্ভব। সমস্যার মূলে ভারতের সেই সিদ্ধান্ত, যেখানে বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে কেবল থাকতেই দেওয়া হয়নি, বরং পরোক্ষভাবে তাঁকে বাংলাদেশের রাজনীতির বিতর্কিত বিষয়গুলো নিয়ে মতামত দেওয়ার সুযোগও দেওয়া হয়েছে। শেখ হাসিনা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে বাংলাদেশ সরকারকে দেশের ক্রমবর্ধমান সাম্প্রদায়িক সংকটের জন্য দায়ী করেছেন এবং তাঁর মতে, এটি হিন্দুদের ওপর ‘গণহত্যার’ সমতুল্য।
শেখ হাসিনার এ ধরনের মন্তব্য যে, বাংলাদেশ সরকারের জন্য বিরক্তিকর তা সহজেই অনুমেয়। ২০২৪ সালের ৯ ডিসেম্বর ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রির ঢাকা সফরের সময়, ড. ইউনূস এই বিষয়টি ভারতের প্রতিনিধির কাছে উল্লেখ করতে কুণ্ঠা করেননি। স্বভাবজাত ভদ্রতায় ড. ইউনূস শুধু বলেন, ‘আমাদের জনগণ চিন্তিত, কারণ তিনি (শেখ হাসিনা) সেখান (নয়াদিল্লি) থেকে অনেক মন্তব্য করছেন। এতে উত্তেজনা তৈরি হচ্ছে।’
বাংলাদেশে হিন্দু–বিদ্বেষী ঘটনাগুলো যে ভারতীয় হিন্দুদের অনুভূতিকে উসকে দেবে, তা অনুমেয়। ভারতের সর্বদা প্রস্তুত হিন্দুত্ববাদী শক্তি—বিজেপি, আরএসএস এবং আরও অনেক গোষ্ঠী প্রতিশোধের দাবিতে সোচ্চার। উত্তর প্রদেশ রাজ্যে বিজেপির মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ তো বাংলাদেশে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলোর সঙ্গে তাঁর রাজ্যের সাম্ভালে ঘটে যাওয়া মসজিদ সংক্রান্ত সংঘাতের যোগসূত্র খুঁজে পেয়েছেন। সাম্ভালের ঘটনায় চার জন মুসলমান প্রাণ হারিয়েছেন।
চলতি বছরের ৫ ডিসেম্বর অযোধ্যায় রামায়ণ মেলার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে (আর ৬ ডিসেম্বর বাবরি মসজিদ ভাঙার বার্ষিকী) আদিত্যনাথ বলেন, ‘৫০০ বছর আগে বাবরের এক সেনাপতি অযোধ্যায় যা করেছিলেন, সাম্ভালেও সেই একই ঘটনা ঘটেছে এবং বাংলাদেশেও তাই ঘটছে।’
এমনকি পশ্চিমবঙ্গেও—যেটি সাধারণত সাম্প্রদায়িকভাবে শান্তিপূর্ণ রাজ্য—বাংলাদেশের রাজনীতির উত্তাপ অনুভূত হচ্ছে। হাসিনা বা আদিত্যনাথ কারও চেয়ে পিছিয়ে না থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেছেন, জাতিসংঘের উচিত বাংলাদেশের ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করা।
এদিকে, মমতার এই উচ্চকিত বক্তব্যের জবাব দিতে গিয়ে পশ্চিমবঙ্গের বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী মমতার ‘মুসলিম তোষণের’ রাজনীতির বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণ করেছেন। বাংলাদেশের রাজনীতি এবং পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিকে নাটকীয়ভাবে একসূত্রে গেঁথে শুভেন্দু ড. ইউনূসের উত্থানের পেছনের শক্তিগুলোর বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন। তিনি হুমকি দিয়ে বলেছেন, যদি ভারতের হিন্দুরা এবং বাংলাদেশের ‘রাজাকার বিরোধী’ (মুক্তিযুদ্ধপন্থী) শক্তি এক হয় তবে তৎক্ষণাৎ মুহাম্মদ ইউনূসের ‘চামড়া তুলে’ নেওয়া সম্ভব।
অধিকাংশ ভারতীয়ই হয়তো খেয়াল করেননি যে, ভারতের সাম্প্রদায়িক পরিস্থিতি বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থার চেয়ে খুব একটা ভিন্ন নয়। হিন্দু জাতীয়তাবাদী বিজেপি মনে করে, ভারত অত্যন্ত শক্তিশালী—মূলত এই অঞ্চলের জনসংখ্যার তিন–পঞ্চমাংশ, জিডিপি এবং সামরিক শক্তির কারণে—তাই মুসলিম ঘৃণার ওপর তাদের একচেটিয়া অধিকার আছে। মুসলিম ও বৌদ্ধ সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলো যদি কোনোভাবে হিন্দুবিরোধী মনোভাব প্রকাশ করে, তবে তা নিন্দনীয়। অথচ ভারতের ২০ কোটি মুসলমান (জনসংখ্যার ১৫ শতাংশ) নিজেদের দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক হিসেবে মনে করে দুঃখ প্রকাশ করলেও বিজেপি বা আরএসএস একটুও বিচলিত হয় না।
কিন্তু বিজেপিকে উপলব্ধি করতে হবে যে, ক্ষমতার সঙ্গে দায়িত্বও আসে। অনেক বছর আগে, শ্রীলঙ্কায় এক শিক্ষাবিষয়ক সেমিনারে চায়ের বিরতির সময়—যেখানে সিংহল–তামিল জাতিগত সংঘাত নিয়ে আলোচনা হচ্ছিল—এক জ্যেষ্ঠ শ্রীলঙ্কান তামিল অধ্যাপক আমাকে বলেছিলেন, ‘ভারত এই অঞ্চলের প্রাকৃতিক অভিভাবক, যার মূল কেন্দ্রবিন্দু হলো তার ধর্মনিরপেক্ষ আদর্শ। যেদিন তারা সেই প্রতিশ্রুতি লঙ্ঘন করবে, সেদিন পৃথিবীর কোনো শক্তিই আঞ্চলিক শান্তি নিশ্চিত করতে পারবে না।’
বাংলাদেশি হিন্দুরা প্রকৃতপক্ষে কতটা সহিংসতার শিকার হয়েছে, তা নিশ্চিতভাবে জানা কঠিন। এই সোশ্যাল মিডিয়া এবং ভুয়া খবরের যুগে প্রতিটি খবরকেই সন্দেহের চোখে দেখা উচিত। ‘গণহত্যা’ শব্দটি অবশ্যই অত্যন্ত শক্তিশালী একটি দাবি। বাংলাদেশের রাজনীতি নিয়ে অধ্যয়নকারী হিসেবে আমি বলতে পারি যে, ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে যা পড়ি, তা অতিরঞ্জিত এবং বর্তমান হিন্দুত্ববাদী শাসনকে তুষ্ট করার জন্য উদ্দেশ্যমূলক। শেখ হাসিনা অবশ্যই তাঁর ভারতীয় আশ্রয়দাতাদের সন্তুষ্ট করার জন্য রাজনীতি করছেন, যা মানুষের একটি স্বাভাবিক আত্মরক্ষামূলক প্রবৃত্তি।
এটা সত্য যে, বাংলাদেশে ইসলামপন্থী শক্তিগুলো ঐতিহ্যগতভাবে শক্তিশালী। বাংলাদেশের দুই প্রধান রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ এবং বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) বিশেষ করে নির্বাচনের সময় তাদের সমর্থন নেয়। তবে ইসলামি দলগুলো, বিশেষত জামায়াতে ইসলামী, নিজেরাও স্বীকার করে যে—তারা রাজনৈতিক ক্ষমতায় যেতে পারবে না। পাকিস্তানের ক্ষেত্রেও এটি সত্য।
কিন্তু ভারতের গল্পটি বেশি জটিল। ভারতে জামায়াতে ইসলামীর কোনো হিন্দু প্রতিপক্ষ নেই। ‘হিন্দু’ শব্দটি ধারণ করে কেবল একটি দল—হিন্দু মহাসভা, যা এখন ক্ষয়িষ্ণু। বিজেপি–আরএসএস জুটি এটি পুরোপুরি আত্মসাৎ করে নিয়েছে। এই জোটের বহু ‘বি–টিম’ রয়েছে—যেমন: বিশ্ব হিন্দু পরিষদ, রাম সেনা, হিন্দু জনজাগৃতি সমিতি ইত্যাদি। এই বি–টিমগুলো প্রয়োজনমতো সর্বদা মাঠ পর্যায়ের কর্মী সরবরাহে প্রস্তুত। সুতরাং, বিজেপি—যারা দশ বছর ধরে ঘোষিতভাবে মুসলিমবিরোধী রাজনীতির মাধ্যমে ভারত শাসন করছে—যখন কোনো প্রতিবেশী দেশের সংখ্যালঘুদের জন্য মায়াকান্না করে তখন তা হাস্যকর দেখায়।
দক্ষিণ এশিয়ায় আন্তঃসম্প্রদায় সম্পর্কের অবনতি ঘটার প্রেক্ষাপটে একটি আঞ্চলিক উত্তাল পরিস্থিতির ঝুঁকি ব্যাপক—যদি না এই ধারা থামাতে ঐকমত্য না গড়ে ওঠে। ভালো হোক বা মন্দ, দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থা (সার্ক) নামের কিছু একটা ছিল, যেখানে আঞ্চলিক নেতারা অন্তত একত্র হয়ে আলোচনা করতে পারতেন। কিন্তু ২০১৬ সাল থেকে এটি অকার্যকর। ভারত এখন ‘গ্লোবাল সাউথ’–এর অন্যতম নেতা হওয়ার দাবি করছে। কিন্তু তার নিজের প্রতিবেশীদের—যেখানে সবাই গ্লোবাল সাউথের অন্তর্ভুক্ত—আস্থা অর্জনে ব্যর্থ হয়েছে।
প্রচলিত প্রবাদে বলা হয়, সহমর্মিতা নিজ ঘর থেকেই শুরু হওয়া উচিত। কিন্তু ভারতের সাম্প্রদায়িক পরিস্থিতির যেভাবে অবনতি ঘটছে, তাতে আমি দ্বিধায় পড়ে গেছি যে, দ্বিজাতি তত্ত্বের জনক—যেখানে বলা হয়েছিল ভারত আসলে দুটি জাতির সমষ্টি—মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ কী তবে আরও বাস্তববাদী ছিলেন? বিপরীতে, গান্ধী-নেহরু-প্যাটেলের নেতৃত্বে কংগ্রেস কী বেশি রোমান্টিক ছিল? আশা করি, এমন একদিন আসবে যখন আমার এই উদ্বেগ দূর হয়ে যাবে। বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি যা–ই নির্দেশ করুক না কেন, এ সত্য অস্বীকার করা যাবে না যে—পাকিস্তানের ইসলামি মতাদর্শ ১৯৭১ সালে দেশটির বিভক্তি ঠেকাতে পারেনি।
দক্ষিণ এশিয়া এক বিচিত্র ভূখণ্ড। এর আটটি সদস্য রাষ্ট্রের মধ্যে দুটি (ভারত ও নেপাল) হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠ, তবে সাংবিধানিকভাবে ধর্মনিরপেক্ষ, দুটি বৌদ্ধ সংখ্যাগরিষ্ঠ (ভুটান ও শ্রীলঙ্কা) এবং সাংবিধানিকভাবে বৌদ্ধমতের প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ এবং তিনটি পুরোপুরি ইসলামি রাষ্ট্র (আফগানিস্তান, মালদ্বীপ ও পাকিস্তান)। মালদ্বীপের অবস্থান এখানে বিশেষভাবে লক্ষণীয়। কেবল এর ইসলামি চরিত্রই নয়, দেশটি শতভাগ সুন্নি। মালদ্বীপের কোনো নাগরিক বিদেশে অবস্থানকালে যদি অন্য কোনো ধর্মাবলম্বী, এমনকি অন্য কোনো ইসলামি সম্প্রদায়ের (যেমন: শিয়া) কারও সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন, তবে তাঁকে দ্বীপপুঞ্জে প্রবেশ করতে দেওয়া হয় না।
বাংলাদেশের ক্ষেত্রে বিষয়টি কিছুটা ‘লুকোচুরি’ খেলার মতো। ১৯৭১ সালে স্বাধীন হওয়ার পর দেশটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র হিসেবে যাত্রা শুরু করে (১৯৭২ সালে সংবিধান রচনার মধ্য দিয়ে), কিন্তু চার বছরের মধ্যেই ইসলামি রাষ্ট্রে পরিণত হয় এবং এক দশকের মাথায় আবারও বিতর্কিতভাবে ধর্মনিরপেক্ষতার দিকে ফেরার চেষ্টা করে। বর্তমান বাস্তবতা বিবেচনায় ধরে নেওয়া যায় যে, ভবিষ্যতে কোনো সাংবিধানিক সংশোধনী হলে তা ধর্মনিরপেক্ষতার অবশিষ্ট ছাপগুলোও মুছে দেবে।
তাহলে কি এটা ধরে নিতে হবে যে, দক্ষিণ এশিয়ায় কেবল হিন্দুরাই ধর্মনিরপেক্ষ হতে পারে? এই জটিল প্রশ্নটি আপাতত ভবিষ্যতের জন্য তোলা থাক। বর্তমান পরিস্থিতি খুব একটা ইতিবাচক নয়। ভারতের হিন্দুত্ববাদী শক্তিগুলো নিয়মিতভাবে ধর্মনিরপেক্ষতার ধারণাকে ব্যঙ্গ করে এবং ধর্মনিরপেক্ষতাবাদীদের ‘সেক্যুলার’ বলে বিদ্রূপ করে। অন্যদিকে, আরেকটি ধর্মনিরপেক্ষ হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ নেপালে রাজতন্ত্রপন্থীরা এখন দুর্বল হলেও নিশ্চিহ্ন নয়। কোনো অনুকূল পরিস্থিতি পেলে তারা রাজতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করে নেপালকে আবার হিন্দু রাষ্ট্র ঘোষণা করবে। অভিযোগ রয়েছে, এই ধারণার পেছনে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের (আরএসএস) সমর্থন আছে।
বাংলাদেশে যা ঘটছে বা এ অঞ্চলে যেসব ঘটনা নিয়মিত ঘটে থাকে, তা আমাদের নিরাশ করে তোলার কথা নয়। দক্ষিণ এশিয়া নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে পড়াশোনা ও লেখালেখি করার পাশাপাশি এ অঞ্চলের বিভিন্ন ধরনের মানুষের সঙ্গে যোগাযোগের অভিজ্ঞতা থেকে আমি অনুভব করি, এ অঞ্চলে একটি অন্তর্নিহিত সভ্যতাগত সংযোগ রয়েছে।
দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থার (সার্ক—এখন প্রায় অকার্যকর) পরীক্ষাটি এই গুরুত্বপূর্ণ বাস্তবতা উপলব্ধি করতে ব্যর্থ হয়েছিল। কারণ আঞ্চলিক নেতারা আন্তর্জাতিক সম্পর্কের প্রচলিত বোধ থেকে মুক্ত হতে পারেননি। তাঁরা অনুধাবন করতে পারেননি যে, আন্তর্জাতিক সম্পর্কের কাঠামোর বাইরেও একটি জগৎ রয়েছে। দ্বিপক্ষীয় ও বিতর্কিত বিষয় নিয়ে আলোচনা নিষিদ্ধ করে তারা সার্ককে যেন প্রিন্স হ্যামলেট বিবর্জিত এক নাটকে পরিণত করেছিল। ৯ ডিসেম্বর ভারত–বাংলাদেশ সচিব পর্যায়ের বৈঠকে বাংলাদেশ সার্ক পুনরুজ্জীবনের জন্য আহ্বান জানিয়েছিল। ভারতকে অবশ্যই এই প্রস্তাব গ্রহণ করা উচিত।
লেখক: পার্থ এস ঘোষ, দিল্লির জওহরলাল নেহেরু ইউনিভার্সিটির সাউথ এশিয়ান স্টাডিজের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক। তিনি দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতি, ইতিহাস, ধর্ম বিষয়ে একাধিক বই লিখেছেন। তিনি জার্মানির হাইডেলবার্গ ইউনিভার্সিটি ও নিউজিল্যান্ডের ওয়েলিংটনের ভিক্টোরিয়া ইউনিভার্সিটির ভিজিটিং ফেলো ছিলেন। তাঁর বিখ্যাত দুটি বই হলো—‘বিজেপি অ্যান্ড দ্য ইভোলিউশন অব হিন্দু ন্যাশনালিজম’, ‘ইন্ডিয়া-সাউথ এশিয়া ইন্টারফেস’।
ইংরেজি থেকে অনুবাদ করেছেন আব্দুর রহমান

গত ২৬ ডিসেম্বর বিশ্বের প্রথম জাতিসংঘ সদস্য দেশ হিসেবে সোমালিল্যান্ডকে একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিয়েছে ইসরায়েল। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এই সিদ্ধান্তকে ‘আব্রাহাম অ্যাকর্ডস’-এর একটি সাহসী সম্প্রসারণ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
২ দিন আগে
মধ্যপ্রাচ্যের মূল ভূখণ্ড হারানোর পর আইএস এখন মূলত স্বায়ত্তশাসিত বিভিন্ন সেলের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বর্তমানে নাইজেরিয়া, সোমালিয়া, কঙ্গো এবং সাহেল অঞ্চলে আইএস অত্যন্ত শক্তিশালী। নাইজেরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ‘আইএসডব্লিউএপি’ এবং উত্তর-পশ্চিমে বিভিন্ন অনুসারী গোষ্ঠী সক্রিয় রয়েছে।
৩ দিন আগে
নাইজেরিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র। দেশটির জনসংখ্যার প্রায় ৫৩ শতাংশ মুসলমান, ৪৫ শতাংশ খ্রিষ্টান এবং অন্যরা আফ্রিকার ঐতিহ্যগত কিছু ধর্মে বিশ্বাসী। খ্রিষ্টানদের ওপর সহিংসতা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক মনোযোগ পেলেও বহু বিশ্লেষকের মতে, বিষয়টি কেবল ধর্মীয় নিপীড়নের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, এর পেছন
৩ দিন আগে
ভেনেজুয়েলার চলমান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকট ধীরে ধীরে একটি আঞ্চলিক সমস্যা থেকে বৈশ্বিক ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনায় রূপ নিচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের কড়া অবস্থান এবং সম্ভাব্য সামরিক হস্তক্ষেপের ইঙ্গিত এই সংকটকে আরও গভীর করেছে।
৮ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

২৬ ডিসেম্বর বিশ্বের প্রথম জাতিসংঘ সদস্যদেশ হিসেবে সোমালিল্যান্ডকে একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিয়েছে ইসরায়েল। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এই সিদ্ধান্তকে ‘আব্রাহাম অ্যাকর্ডস’-এর একটি সাহসী সম্প্রসারণ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। হর্ন অব আফ্রিকার এই স্বঘোষিত স্বাধীন মুসলিমপ্রধান ভূখণ্ডটির প্রতি ইসরায়েলের এই গভীর আগ্রহ নিছক কোনো কূটনৈতিক সৌজন্য নয়; বরং এর পেছনে রয়েছে কয়েক দশকের সুদূরপ্রসারী কৌশলগত পরিকল্পনা, নিরাপত্তাঝুঁকি ব্যবস্থাপনা এবং বিশাল অর্থনৈতিক সম্ভাবনা।
সোমালিল্যান্ডের অবস্থান এডেন উপসাগরের তীরে, যা সরাসরি ইয়েমেনের উল্টো দিকে এবং বাব আল-মানদেব প্রণালির ঠিক পাশেই অবস্থিত। বিশ্বের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ জলপথের বাণিজ্য এই পথেই পরিচালিত হয়।
২০২৩ সাল থেকে ইরান-সমর্থিত হুতি বিদ্রোহীরা লোহিত সাগরে ইসরায়েলি সংশ্লিষ্ট জাহাজগুলোতে নিয়মিত হামলা চালিয়ে আসছে। সোমালিল্যান্ডের উপকূলরেখা থেকে হুতিদের মূল ঘাঁটি হোদেইদাহর দূরত্ব ৩০০ থেকে ৫০০ কিলোমিটার। ইসরায়েলের জন্য সোমালিল্যান্ড একটি ‘ফরোয়ার্ড ডিফেন্স’ বা সম্মুখ প্রতিরক্ষা ঘাঁটি হিসেবে কাজ করবে।
ইসরায়েলি থিংকট্যাংক (আইএনএসএস)-এর মতে, সোমালিল্যান্ডে গোয়েন্দা ঘাঁটি স্থাপনের মাধ্যমে ইরান থেকে ইয়েমেনে আসা অস্ত্র চোরাচালান এবং হুতিদের গতিবিধির ওপর সার্বক্ষণিক নজর রাখা সম্ভব হবে। এমনকি সংযুক্ত আরব আমিরাতের অর্থায়নে নির্মিত বারবেরা বন্দর ইসরায়েলি নৌ টহল বা ড্রোন অপারেশনের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠতে পারে।
হর্ন অব আফ্রিকায় ইসরায়েলের এই প্রবেশ মূলত তার আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বীদের আধিপত্য কমানোর একটি পাল্টা কৌশল। তুরস্ক ইতিমধ্যে সোমালিয়ার মোগাদিশুতে বিশাল সামরিক ঘাঁটি এবং বন্দরগুলোর নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। ইসরায়েল মনে করে, সোমালিল্যান্ডের সঙ্গে জোরালো মৈত্রী এই অঞ্চলে তুরস্কের একক আধিপত্যে ভারসাম্য বজায় রাখবে।
এ ছাড়া ইসরায়েল সব সময় নিজের সীমানার বাইরে মিত্র দেশগুলোতে নিজের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে চায়। সোমালিল্যান্ডের মতো একটি স্থিতিশীল এবং পশ্চিমাপন্থী প্রশাসনের সঙ্গে বন্ধুত্ব ইসরায়েলকে লোহিত সাগরের নিরাপত্তা বলয়ে একক কর্তৃত্ব দেবে।
অর্থনৈতিক সম্ভাবনা ও প্রাকৃতিক সম্পদের ভান্ডারও আগ্রহের মূলে রয়েছে। বিশ্লেষকদের মতে, সোমালিল্যান্ড কেবল একটি কৌশলগত বন্দর নয়, বরং এটি সম্পদের একটি অব্যবহৃত খনি।
সোমালিল্যান্ডে বিপুল পরিমাণ অপরিশোধিত তেল, গ্যাস এবং বিরল মৃত্তিকা খনিজ মজুত থাকার জোরালো সম্ভাবনা রয়েছে। ইসরায়েলের উচ্চ প্রযুক্তি এবং অস্ত্র তৈরির কারখানায় এই কাঁচামালগুলো অত্যন্ত জরুরি।
ইসরায়েল ইতিমধ্যে কৃষি ক্ষেত্রে লবণাক্ত পানি পরিশোধন, উন্নত সেচব্যবস্থা এবং সাইবার নিরাপত্তা খাতে বড় বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। সোমালিল্যান্ডের জন্য এই অংশীদারত্ব হবে অর্থনৈতিক স্বাধীনতার চাবিকাঠি।
তবে এতে কূটনৈতিক চ্যালেঞ্জও রয়েছে। ইসরায়েলের এই স্বীকৃতি যেমন সোমালিল্যান্ডের জন্য বৈধতার দ্বার উন্মোচন করেছে, তেমনি এটি আঞ্চলিক উত্তেজনারও জন্ম দিয়েছে।
সোমালিয়া এই পদক্ষেপকে তাদের অখণ্ডতার ওপর ‘সরাসরি আক্রমণ’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে। আফ্রিকান ইউনিয়ন (এইউ) এবং আরব লিগ এই স্বীকৃতির তীব্র নিন্দা জানিয়েছে এবং সতর্ক করেছে যে এটি আফ্রিকা মহাদেশে নতুন করে অস্থিতিশীলতা তৈরি করতে পারে।
পশ্চিমা বিশ্বও ইসরায়েলের এই পদক্ষেপে দ্বিধাগ্রস্ত। মার্কিন সিনেটর টেড ক্রুজ সোমালিল্যান্ডকে একটি নির্ভরযোগ্য অংশীদার হিসেবে সমর্থন করলেও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র এখনই এই পথে হাঁটবে না, বরং পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করবে।
সর্বোপরি ইসরায়েলের জন্য সোমালিল্যান্ড একটি স্থিতিশীল এবং দীর্ঘমেয়াদি মিত্র, যারা সন্ত্রাসবাদ দমনে ইসরায়েলের সমমনা বলেই মনে করা হয়। এই স্বীকৃতির মাধ্যমে ইসরায়েল লোহিত সাগরে নিজের নৌ-শক্তির নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চায়। তবে এই পদক্ষেপ যদি ইথিওপিয়া বা সংযুক্ত আরব আমিরাতের মতো দেশগুলোকে সোমালিল্যান্ডকে স্বীকৃতি দিতে উৎসাহিত করবে। তবে এর ফলে হর্ন অব আফ্রিকার মানচিত্র এবং ভূরাজনীতি চিরতরে বদলে যেতে পারে। এটি যেমন একটি নতুন সামরিক ও অর্থনৈতিক অক্ষের সম্ভাবনা তৈরি করেছে, তেমনি আঞ্চলিক সংঘাতের ঝুঁকিও বাড়িয়ে দিয়েছে।
তথ্যসূত্র: সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট, রয়টার্স, আল জাজিরা এবং আটলান্টিক কাউন্সিল।

২৬ ডিসেম্বর বিশ্বের প্রথম জাতিসংঘ সদস্যদেশ হিসেবে সোমালিল্যান্ডকে একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিয়েছে ইসরায়েল। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এই সিদ্ধান্তকে ‘আব্রাহাম অ্যাকর্ডস’-এর একটি সাহসী সম্প্রসারণ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। হর্ন অব আফ্রিকার এই স্বঘোষিত স্বাধীন মুসলিমপ্রধান ভূখণ্ডটির প্রতি ইসরায়েলের এই গভীর আগ্রহ নিছক কোনো কূটনৈতিক সৌজন্য নয়; বরং এর পেছনে রয়েছে কয়েক দশকের সুদূরপ্রসারী কৌশলগত পরিকল্পনা, নিরাপত্তাঝুঁকি ব্যবস্থাপনা এবং বিশাল অর্থনৈতিক সম্ভাবনা।
সোমালিল্যান্ডের অবস্থান এডেন উপসাগরের তীরে, যা সরাসরি ইয়েমেনের উল্টো দিকে এবং বাব আল-মানদেব প্রণালির ঠিক পাশেই অবস্থিত। বিশ্বের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ জলপথের বাণিজ্য এই পথেই পরিচালিত হয়।
২০২৩ সাল থেকে ইরান-সমর্থিত হুতি বিদ্রোহীরা লোহিত সাগরে ইসরায়েলি সংশ্লিষ্ট জাহাজগুলোতে নিয়মিত হামলা চালিয়ে আসছে। সোমালিল্যান্ডের উপকূলরেখা থেকে হুতিদের মূল ঘাঁটি হোদেইদাহর দূরত্ব ৩০০ থেকে ৫০০ কিলোমিটার। ইসরায়েলের জন্য সোমালিল্যান্ড একটি ‘ফরোয়ার্ড ডিফেন্স’ বা সম্মুখ প্রতিরক্ষা ঘাঁটি হিসেবে কাজ করবে।
ইসরায়েলি থিংকট্যাংক (আইএনএসএস)-এর মতে, সোমালিল্যান্ডে গোয়েন্দা ঘাঁটি স্থাপনের মাধ্যমে ইরান থেকে ইয়েমেনে আসা অস্ত্র চোরাচালান এবং হুতিদের গতিবিধির ওপর সার্বক্ষণিক নজর রাখা সম্ভব হবে। এমনকি সংযুক্ত আরব আমিরাতের অর্থায়নে নির্মিত বারবেরা বন্দর ইসরায়েলি নৌ টহল বা ড্রোন অপারেশনের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠতে পারে।
হর্ন অব আফ্রিকায় ইসরায়েলের এই প্রবেশ মূলত তার আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বীদের আধিপত্য কমানোর একটি পাল্টা কৌশল। তুরস্ক ইতিমধ্যে সোমালিয়ার মোগাদিশুতে বিশাল সামরিক ঘাঁটি এবং বন্দরগুলোর নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। ইসরায়েল মনে করে, সোমালিল্যান্ডের সঙ্গে জোরালো মৈত্রী এই অঞ্চলে তুরস্কের একক আধিপত্যে ভারসাম্য বজায় রাখবে।
এ ছাড়া ইসরায়েল সব সময় নিজের সীমানার বাইরে মিত্র দেশগুলোতে নিজের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে চায়। সোমালিল্যান্ডের মতো একটি স্থিতিশীল এবং পশ্চিমাপন্থী প্রশাসনের সঙ্গে বন্ধুত্ব ইসরায়েলকে লোহিত সাগরের নিরাপত্তা বলয়ে একক কর্তৃত্ব দেবে।
অর্থনৈতিক সম্ভাবনা ও প্রাকৃতিক সম্পদের ভান্ডারও আগ্রহের মূলে রয়েছে। বিশ্লেষকদের মতে, সোমালিল্যান্ড কেবল একটি কৌশলগত বন্দর নয়, বরং এটি সম্পদের একটি অব্যবহৃত খনি।
সোমালিল্যান্ডে বিপুল পরিমাণ অপরিশোধিত তেল, গ্যাস এবং বিরল মৃত্তিকা খনিজ মজুত থাকার জোরালো সম্ভাবনা রয়েছে। ইসরায়েলের উচ্চ প্রযুক্তি এবং অস্ত্র তৈরির কারখানায় এই কাঁচামালগুলো অত্যন্ত জরুরি।
ইসরায়েল ইতিমধ্যে কৃষি ক্ষেত্রে লবণাক্ত পানি পরিশোধন, উন্নত সেচব্যবস্থা এবং সাইবার নিরাপত্তা খাতে বড় বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। সোমালিল্যান্ডের জন্য এই অংশীদারত্ব হবে অর্থনৈতিক স্বাধীনতার চাবিকাঠি।
তবে এতে কূটনৈতিক চ্যালেঞ্জও রয়েছে। ইসরায়েলের এই স্বীকৃতি যেমন সোমালিল্যান্ডের জন্য বৈধতার দ্বার উন্মোচন করেছে, তেমনি এটি আঞ্চলিক উত্তেজনারও জন্ম দিয়েছে।
সোমালিয়া এই পদক্ষেপকে তাদের অখণ্ডতার ওপর ‘সরাসরি আক্রমণ’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে। আফ্রিকান ইউনিয়ন (এইউ) এবং আরব লিগ এই স্বীকৃতির তীব্র নিন্দা জানিয়েছে এবং সতর্ক করেছে যে এটি আফ্রিকা মহাদেশে নতুন করে অস্থিতিশীলতা তৈরি করতে পারে।
পশ্চিমা বিশ্বও ইসরায়েলের এই পদক্ষেপে দ্বিধাগ্রস্ত। মার্কিন সিনেটর টেড ক্রুজ সোমালিল্যান্ডকে একটি নির্ভরযোগ্য অংশীদার হিসেবে সমর্থন করলেও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র এখনই এই পথে হাঁটবে না, বরং পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করবে।
সর্বোপরি ইসরায়েলের জন্য সোমালিল্যান্ড একটি স্থিতিশীল এবং দীর্ঘমেয়াদি মিত্র, যারা সন্ত্রাসবাদ দমনে ইসরায়েলের সমমনা বলেই মনে করা হয়। এই স্বীকৃতির মাধ্যমে ইসরায়েল লোহিত সাগরে নিজের নৌ-শক্তির নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চায়। তবে এই পদক্ষেপ যদি ইথিওপিয়া বা সংযুক্ত আরব আমিরাতের মতো দেশগুলোকে সোমালিল্যান্ডকে স্বীকৃতি দিতে উৎসাহিত করবে। তবে এর ফলে হর্ন অব আফ্রিকার মানচিত্র এবং ভূরাজনীতি চিরতরে বদলে যেতে পারে। এটি যেমন একটি নতুন সামরিক ও অর্থনৈতিক অক্ষের সম্ভাবনা তৈরি করেছে, তেমনি আঞ্চলিক সংঘাতের ঝুঁকিও বাড়িয়ে দিয়েছে।
তথ্যসূত্র: সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট, রয়টার্স, আল জাজিরা এবং আটলান্টিক কাউন্সিল।

বাংলাদেশি হিন্দুরা প্রকৃতপক্ষে কতটা সহিংসতার শিকার হয়েছে, তা নিশ্চিতভাবে জানা কঠিন। এই সোশ্যাল মিডিয়া এবং ভুয়া খবরের যুগে প্রতিটি খবরকেই সন্দেহের চোখে দেখা উচিত। ‘গণহত্যা’ শব্দটি অবশ্যই অত্যন্ত শক্তিশালী একটি দাবি। বাংলাদেশের রাজনীতি নিয়ে অধ্যয়নকারী হিসেবে আমি বলতে পারি যে, ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে যা পড়
১৫ ডিসেম্বর ২০২৪
মধ্যপ্রাচ্যের মূল ভূখণ্ড হারানোর পর আইএস এখন মূলত স্বায়ত্তশাসিত বিভিন্ন সেলের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বর্তমানে নাইজেরিয়া, সোমালিয়া, কঙ্গো এবং সাহেল অঞ্চলে আইএস অত্যন্ত শক্তিশালী। নাইজেরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ‘আইএসডব্লিউএপি’ এবং উত্তর-পশ্চিমে বিভিন্ন অনুসারী গোষ্ঠী সক্রিয় রয়েছে।
৩ দিন আগে
নাইজেরিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র। দেশটির জনসংখ্যার প্রায় ৫৩ শতাংশ মুসলমান, ৪৫ শতাংশ খ্রিষ্টান এবং অন্যরা আফ্রিকার ঐতিহ্যগত কিছু ধর্মে বিশ্বাসী। খ্রিষ্টানদের ওপর সহিংসতা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক মনোযোগ পেলেও বহু বিশ্লেষকের মতে, বিষয়টি কেবল ধর্মীয় নিপীড়নের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, এর পেছন
৩ দিন আগে
ভেনেজুয়েলার চলমান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকট ধীরে ধীরে একটি আঞ্চলিক সমস্যা থেকে বৈশ্বিক ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনায় রূপ নিচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের কড়া অবস্থান এবং সম্ভাব্য সামরিক হস্তক্ষেপের ইঙ্গিত এই সংকটকে আরও গভীর করেছে।
৮ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

বড়দিনের রাতে নাইজেরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় সোকোটো রাজ্যে মার্কিন বাহিনীর বিমান হামলা বিশ্বজুড়ে নতুন করে আলোচনায় নিয়ে এসেছে জঙ্গিগোষ্ঠী ‘ইসলামিক স্টেট’ বা আইএসকে। মধ্যপ্রাচ্যে পরাজয়ের পর গোষ্ঠীটি এখন আফ্রিকায় তাদের জাল বিস্তার করছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেছেন, নাইজেরিয়ায় খ্রিষ্টানদের লক্ষ্য করে নৃশংস হত্যাযজ্ঞ চালানোর কারণে তিনি এ হামলার নির্দেশ দিয়েছেন।
ইসলামিক স্টেট কী
ইসলামিক স্টেট (যাকে আইএসআইএস বা দায়েশ নামেও ডাকা হয়) একটি সুন্নি চরমপন্থী গোষ্ঠী। ইরাক ও সিরিয়ায় উত্থান ঘটিয়ে তারা একসময় ‘খিলাফত’ ঘোষণা করেছিল। এরপর ২০১৪ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে ইরাক ও সিরিয়ার বিশাল অংশ তাদের দখলে ছিল। তখন তারা কঠোর শরিয়াহ আইন জারি করে এবং প্রকাশ্যে শিরশ্ছেদ ও নির্যাতনের মতো নৃশংসতা চালিয়ে বিশ্বকে স্তব্ধ করে দেয়।
পরে যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন বহুজাতিক বাহিনীর ক্রমাগত অভিযানের মুখে ইরাকের মসুল ও সিরিয়ার রাক্কায় তাদের পতন ঘটে। তবে সংগঠনটি পুরোপুরি নির্মূল না হয়ে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পড়ে।
বর্তমানে তারা কোথায় সক্রিয়
মধ্যপ্রাচ্যের মূল ভূখণ্ড হারানোর পর আইএস এখন মূলত স্বায়ত্তশাসিত বিভিন্ন সেলের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বর্তমানে নাইজেরিয়া, সোমালিয়া, কঙ্গো এবং সাহেল অঞ্চলে আইএস অত্যন্ত শক্তিশালী। নাইজেরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ‘আইএসডব্লিউএপি’ এবং উত্তর-পশ্চিমে বিভিন্ন অনুসারী গোষ্ঠী সক্রিয় রয়েছে।
এশিয়া মহাদেশের মধ্যে আফগানিস্তান ও পাকিস্তানে ‘আইএস-খোরাসান’ নামে তারা সক্রিয়। এ ছাড়া ফিলিপাইনের মিন্দানাও অঞ্চলেও তাদের অনুসারী রয়েছে। জাতিসংঘ মনে করে, বর্তমানে তাদের অন্তত ১০ হাজার সক্রিয় সদস্য রয়েছে।
লক্ষ্য ও বর্তমান কৌশল
আইএসের মূল লক্ষ্য তাদের চরমপন্থী মতাদর্শ বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে দেওয়া। তবে সরাসরি যুদ্ধের বদলে তারা এখন কিছু নতুন কৌশল নিয়েছে। যেমন, অ্যাফিলিয়েট নেটওয়ার্ক—নিজেরা সরাসরি যুক্ত না হয়ে বিশ্বের বিভিন্ন স্থানীয় জঙ্গিগোষ্ঠীকে নিজেদের ‘শাখা’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে প্রভাব বিস্তার করা। লোন উলফ অ্যাটাক—সংঘবদ্ধ হামলার পরিবর্তে একজন বা দুই ব্যক্তির সমন্বয়ে বড় ধরনের হামলা। সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়ার সিডনির বন্ডাই বিচে ইহুদিদের এক অনুষ্ঠানে বন্দুক হামলার পেছনে আইএসের এই কৌশল ছিল বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। অনলাইন প্রচারণা—টেলিগ্রামের মতো প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে আতঙ্ক ছড়ানো এবং নতুন সদস্য সংগ্রহ করা।
মার্কিন সামরিক বাহিনীর মতে, আইএসের বর্তমান বিশ্ব নেতা হলেন আবদুলকাদির মুমিন। তিনি বর্তমানে আইএসের সোমালিয়া শাখার প্রধান।
আইএসের সাম্প্রতিক কিছু বড় হামলা
কঙ্গোতে চলতি বছরের গত অক্টোবরে একটি গির্জায় নৈশকালীন প্রার্থনার সময় হামলায় ৪৩ জন নিহত হয়, যার দায় স্বীকার করে আইএস। গত ফেব্রুয়ারিতে সোমালিয়ায় একাধিক সামরিক ঘাঁটিতে আত্মঘাতী গাড়িবোমা হামলা চালায় আইএস। চলতি মাসে সিরিয়ায় দুই মার্কিন সেনা ও একজন দোভাষী নিহত হন, যার নেপথ্যে আইএসের হাত রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ ঘটনার পর চলতি সপ্তাহে সিরিয়ায় আইএসের ঘাঁটি লক্ষ্য করে ব্যাপক হামলা চালিয়েছে মার্কিন সামরিক বাহিনী।
নাইজেরিয়ায় মার্কিন হামলা এটাই প্রমাণ করে যে, আইএস এখন আর কেবল মধ্যপ্রাচ্যের সমস্যা নয়। বিশেষ করে, সাহেল ও পশ্চিম আফ্রিকায় তাদের ক্রমবর্ধমান শক্তি বিশ্ব নিরাপত্তার জন্য নতুন এক চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
রয়টার্স থেকে সংক্ষেপে অনূদিত

বড়দিনের রাতে নাইজেরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় সোকোটো রাজ্যে মার্কিন বাহিনীর বিমান হামলা বিশ্বজুড়ে নতুন করে আলোচনায় নিয়ে এসেছে জঙ্গিগোষ্ঠী ‘ইসলামিক স্টেট’ বা আইএসকে। মধ্যপ্রাচ্যে পরাজয়ের পর গোষ্ঠীটি এখন আফ্রিকায় তাদের জাল বিস্তার করছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেছেন, নাইজেরিয়ায় খ্রিষ্টানদের লক্ষ্য করে নৃশংস হত্যাযজ্ঞ চালানোর কারণে তিনি এ হামলার নির্দেশ দিয়েছেন।
ইসলামিক স্টেট কী
ইসলামিক স্টেট (যাকে আইএসআইএস বা দায়েশ নামেও ডাকা হয়) একটি সুন্নি চরমপন্থী গোষ্ঠী। ইরাক ও সিরিয়ায় উত্থান ঘটিয়ে তারা একসময় ‘খিলাফত’ ঘোষণা করেছিল। এরপর ২০১৪ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে ইরাক ও সিরিয়ার বিশাল অংশ তাদের দখলে ছিল। তখন তারা কঠোর শরিয়াহ আইন জারি করে এবং প্রকাশ্যে শিরশ্ছেদ ও নির্যাতনের মতো নৃশংসতা চালিয়ে বিশ্বকে স্তব্ধ করে দেয়।
পরে যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন বহুজাতিক বাহিনীর ক্রমাগত অভিযানের মুখে ইরাকের মসুল ও সিরিয়ার রাক্কায় তাদের পতন ঘটে। তবে সংগঠনটি পুরোপুরি নির্মূল না হয়ে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পড়ে।
বর্তমানে তারা কোথায় সক্রিয়
মধ্যপ্রাচ্যের মূল ভূখণ্ড হারানোর পর আইএস এখন মূলত স্বায়ত্তশাসিত বিভিন্ন সেলের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বর্তমানে নাইজেরিয়া, সোমালিয়া, কঙ্গো এবং সাহেল অঞ্চলে আইএস অত্যন্ত শক্তিশালী। নাইজেরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ‘আইএসডব্লিউএপি’ এবং উত্তর-পশ্চিমে বিভিন্ন অনুসারী গোষ্ঠী সক্রিয় রয়েছে।
এশিয়া মহাদেশের মধ্যে আফগানিস্তান ও পাকিস্তানে ‘আইএস-খোরাসান’ নামে তারা সক্রিয়। এ ছাড়া ফিলিপাইনের মিন্দানাও অঞ্চলেও তাদের অনুসারী রয়েছে। জাতিসংঘ মনে করে, বর্তমানে তাদের অন্তত ১০ হাজার সক্রিয় সদস্য রয়েছে।
লক্ষ্য ও বর্তমান কৌশল
আইএসের মূল লক্ষ্য তাদের চরমপন্থী মতাদর্শ বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে দেওয়া। তবে সরাসরি যুদ্ধের বদলে তারা এখন কিছু নতুন কৌশল নিয়েছে। যেমন, অ্যাফিলিয়েট নেটওয়ার্ক—নিজেরা সরাসরি যুক্ত না হয়ে বিশ্বের বিভিন্ন স্থানীয় জঙ্গিগোষ্ঠীকে নিজেদের ‘শাখা’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে প্রভাব বিস্তার করা। লোন উলফ অ্যাটাক—সংঘবদ্ধ হামলার পরিবর্তে একজন বা দুই ব্যক্তির সমন্বয়ে বড় ধরনের হামলা। সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়ার সিডনির বন্ডাই বিচে ইহুদিদের এক অনুষ্ঠানে বন্দুক হামলার পেছনে আইএসের এই কৌশল ছিল বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। অনলাইন প্রচারণা—টেলিগ্রামের মতো প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে আতঙ্ক ছড়ানো এবং নতুন সদস্য সংগ্রহ করা।
মার্কিন সামরিক বাহিনীর মতে, আইএসের বর্তমান বিশ্ব নেতা হলেন আবদুলকাদির মুমিন। তিনি বর্তমানে আইএসের সোমালিয়া শাখার প্রধান।
আইএসের সাম্প্রতিক কিছু বড় হামলা
কঙ্গোতে চলতি বছরের গত অক্টোবরে একটি গির্জায় নৈশকালীন প্রার্থনার সময় হামলায় ৪৩ জন নিহত হয়, যার দায় স্বীকার করে আইএস। গত ফেব্রুয়ারিতে সোমালিয়ায় একাধিক সামরিক ঘাঁটিতে আত্মঘাতী গাড়িবোমা হামলা চালায় আইএস। চলতি মাসে সিরিয়ায় দুই মার্কিন সেনা ও একজন দোভাষী নিহত হন, যার নেপথ্যে আইএসের হাত রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ ঘটনার পর চলতি সপ্তাহে সিরিয়ায় আইএসের ঘাঁটি লক্ষ্য করে ব্যাপক হামলা চালিয়েছে মার্কিন সামরিক বাহিনী।
নাইজেরিয়ায় মার্কিন হামলা এটাই প্রমাণ করে যে, আইএস এখন আর কেবল মধ্যপ্রাচ্যের সমস্যা নয়। বিশেষ করে, সাহেল ও পশ্চিম আফ্রিকায় তাদের ক্রমবর্ধমান শক্তি বিশ্ব নিরাপত্তার জন্য নতুন এক চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
রয়টার্স থেকে সংক্ষেপে অনূদিত

বাংলাদেশি হিন্দুরা প্রকৃতপক্ষে কতটা সহিংসতার শিকার হয়েছে, তা নিশ্চিতভাবে জানা কঠিন। এই সোশ্যাল মিডিয়া এবং ভুয়া খবরের যুগে প্রতিটি খবরকেই সন্দেহের চোখে দেখা উচিত। ‘গণহত্যা’ শব্দটি অবশ্যই অত্যন্ত শক্তিশালী একটি দাবি। বাংলাদেশের রাজনীতি নিয়ে অধ্যয়নকারী হিসেবে আমি বলতে পারি যে, ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে যা পড়
১৫ ডিসেম্বর ২০২৪
গত ২৬ ডিসেম্বর বিশ্বের প্রথম জাতিসংঘ সদস্য দেশ হিসেবে সোমালিল্যান্ডকে একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিয়েছে ইসরায়েল। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এই সিদ্ধান্তকে ‘আব্রাহাম অ্যাকর্ডস’-এর একটি সাহসী সম্প্রসারণ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
২ দিন আগে
নাইজেরিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র। দেশটির জনসংখ্যার প্রায় ৫৩ শতাংশ মুসলমান, ৪৫ শতাংশ খ্রিষ্টান এবং অন্যরা আফ্রিকার ঐতিহ্যগত কিছু ধর্মে বিশ্বাসী। খ্রিষ্টানদের ওপর সহিংসতা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক মনোযোগ পেলেও বহু বিশ্লেষকের মতে, বিষয়টি কেবল ধর্মীয় নিপীড়নের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, এর পেছন
৩ দিন আগে
ভেনেজুয়েলার চলমান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকট ধীরে ধীরে একটি আঞ্চলিক সমস্যা থেকে বৈশ্বিক ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনায় রূপ নিচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের কড়া অবস্থান এবং সম্ভাব্য সামরিক হস্তক্ষেপের ইঙ্গিত এই সংকটকে আরও গভীর করেছে।
৮ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

নাইজেরিয়ার সরকার খ্রিষ্টানদের ওপর নিপীড়ন ঠেকাতে ব্যর্থ—এমন অভিযোগে কয়েক সপ্তাহ ধরে সমালোচনার পর অবশেষে বড়দিনের রাতে (২৫ ডিসেম্বর) পশ্চিম আফ্রিকার দেশটিতে বিমান হামলা চালিয়েছে মার্কিন বাহিনী। সরাসরি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে নাইজেরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় সোকোটো রাজ্যে এ হামলা চালানো হয়।
ব্রিটিশ দৈনিক দ্য গার্ডিয়ান বলছে, ট্রাম্প প্রশাসন আইএস জঙ্গিদের একাধিক আস্তানা লক্ষ্য করে এসব হামলা চালায়। হামলায় মার্কিন নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ থেকে টমাহক মিসাইল নিক্ষেপ করা হয়েছিল। এসব হামলায় একাধিক আইএস জঙ্গি নিহত ও তাঁদের আস্তানা ধ্বংস হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে, তবে সঠিক সংখ্যা এখনো জানানো হয়নি।
ট্রাম্প প্রশাসনের সাম্প্রতিক বিদেশি সামরিক হস্তক্ষেপগুলোর সর্বশেষ উদাহরণ নাইজেরিয়ায় হামলা। অথচ ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনী প্রচারণায় তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে ‘অন্তহীন যুদ্ধ’ থেকে বের করে আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প দাবি করেছেন, এই হামলার মূল উদ্দেশ্য ছিল নাইজেরিয়ায় বসবাসরত খ্রিষ্টানদের ওপর চলমান হত্যাযজ্ঞ বন্ধ করা। তাঁর মতে, আইএস জঙ্গিরা পরিকল্পিতভাবে খ্রিষ্টানদের লক্ষ্যবস্তু বানাচ্ছে। হামলার ঘোষণা দিয়ে ট্রাম্প তাঁর ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে লিখেছিলেন, ‘আমি আগেই এই সন্ত্রাসীদের সতর্ক করেছিলাম, তারা যদি খ্রিষ্টানদের হত্যা বন্ধ না করে, তবে তাদের চড়ম মূল্য দিতে হবে। আজ রাতে (বড়দিন) ঠিক তা-ই ঘটেছে।’
গত অক্টোবর ও নভেম্বর মাসেও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নাইজেরিয়ার নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে ‘খ্রিষ্টান গণহত্যার’ শামিল বলে অভিহিত করেছিলেন।
মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তরের এক কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা এপিকে জানান, নাইজেরিয়া সরকারের অনুমোদন নিয়ে দেশটির সঙ্গে সমন্বয় করেই এসব হামলা চালানো হয়েছে। নাইজেরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, এই সহযোগিতার মধ্যে গোয়েন্দা তথ্য আদান-প্রদান ও কৌশলগত সমন্বয় ছিল।
কেন নাইজেরিয়ায় হামলা চালাল ট্রাম্প প্রশাসন
অনেক আগে থেকেই যুক্তরাষ্ট্রের ডানপন্থী রাজনীতিক গোষ্ঠীগুলো নাইজেরিয়ায় খ্রিষ্টানদের ওপর নিপীড়নের অভিযোগ তুলছে। গত সেপ্টেম্বরে রিপাবলিকান সিনেটর টেড ক্রুজ কিছু নাইজেরীয় কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞার আহ্বান জানান। তিনি দাবি করেন, যারা ‘ইসলামপন্থী সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর মাধ্যমে খ্রিষ্টান ও অন্য ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে সহিংসতা সহজতর করছে’, তাদের নিষিদ্ধ করা উচিত।
তবে বর্তমানে বিষয়টি মার্কিন ডানপন্থী ও ইভানজেলিক্যাল খ্রিষ্টান মহলে বড় ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে। আবার এই ডানপন্থী ও ইভানজেলিক্যাল খ্রিষ্টানরাই ট্রাম্পের বড় সমর্থক। বিশ্লেষকদের মতে, নিজের সমর্থকদের তুষ্ট করতে এবং বিশ্বজুড়ে ‘খ্রিষ্টানদের রক্ষাকর্তা’ হিসেবে নিজেকে জাহির করতেই ট্রাম্প এই ত্বরিত সামরিক পদক্ষেপ নিয়েছেন।
এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতা আইনের আওতায় নাইজেরিয়াকে ‘বিশেষ উদ্বেগের দেশ’ হিসেবে চিহ্নিত করেন ট্রাম্প। বেশ কিছু মার্কিন আইনপ্রণেতা ও রক্ষণশীল খ্রিষ্টান গোষ্ঠীর লাগাতার লবিংয়ের পর এই সিদ্ধান্ত আসে। এর কিছুদিন পরই তিনি নাইজেরিয়ায় সম্ভাব্য সামরিক অভিযানের পরিকল্পনা করতে পেন্টাগনকে নির্দেশ দেন। সে সময় ট্রাম্প বলেন, নাইজেরিয়া সরকার যদি খ্রিষ্টান হত্যাকাণ্ড বন্ধ না করে, তবে তিনি ‘গানস-এ-ব্লেজিং’ অর্থাৎ পূর্ণ শক্তি নিয়ে হস্তক্ষেপ করতে পারেন।
নাইজেরিয়ায় কি আসলেই খ্রিষ্টানদের ওপর নিপীড়ন চলছে
নাইজেরিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র। দেশটির জনসংখ্যার প্রায় ৫৩ শতাংশ মুসলমান, ৪৫ শতাংশ খ্রিষ্টান এবং অন্যরা আফ্রিকার ঐতিহ্যগত কিছু ধর্মে বিশ্বাসী। খ্রিষ্টানদের ওপর সহিংসতা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক মনোযোগ পেলেও বহু বিশ্লেষকের মতে, বিষয়টি কেবল ধর্মীয় নিপীড়নের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়; এর পেছনে নানা কারণ রয়েছে।
উদাহরণ হিসেবে, যাযাবর মুসলিম পশুপালক ও খ্রিষ্টান কৃষক সম্প্রদায়ের মধ্যে প্রাণঘাতী সংঘর্ষ মূলত চারণভূমি ও পানির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে। তবে ধর্মীয় ও জাতিগত বিভাজন এটিকে আরও জটিল করে তুলেছে। আবার অনেক বিশ্লেষকের মতে, যাজকদের অপহরণের ঘটনা ধর্মীয় বিদ্বেষের চেয়ে অর্থনৈতিক লাভের উদ্দেশ্যেই বেশি ঘটে, কারণ, তাঁরা প্রভাবশালী ব্যক্তি এবং তাঁদের অনুসারী বা প্রতিষ্ঠান দ্রুত মুক্তিপণের টাকা জোগাড় করতে পারে।
নাইজেরিয়া সরকারের অবস্থান
ট্রাম্প প্রশাসনের হামলার পর নাইজেরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আইএস-নিধনে যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতার প্রশংসা করেছে। কিন্তু খ্রিষ্টান নিপীড়নের বিষয়টির সঙ্গে মার্কিন অভিযানের কোনো সম্পর্ক আছে কি না, এ বিষয়ে কিছু বলেনি।
এক বিবৃতিতে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, খ্রিষ্টান, মুসলমান কিংবা অন্য কোনো সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে পরিচালিত সব ধরনের সহিংসতাই নাইজেরিয়ার মূল্যবোধ এবং আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তার প্রতি অবমাননা।
নাইজেরিয়ার বাস্তবতাও আসলে এমন। দীর্ঘদিন ধরে দেশটি নিরাপত্তা পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে। গত কয়েক বছরে দেশটিতে হাজারো মানুষ নিহত এবং শত শত মানুষ অপহৃত হয়েছে।
উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ২০০৯ সাল থেকে বোকো হারাম ও ইসলামিক স্টেট ওয়েস্ট আফ্রিকা প্রভিন্স (আইএসডব্লিউএপি) বিদ্রোহ চালিয়ে যাচ্ছে। এতে কয়েক দশক ধরে কয়েক হাজার মানুষ নিহত এবং লাখো মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে সশস্ত্র অপরাধী চক্র, যাদের সাধারণত ‘ডাকাত’ বলা হয়, তারাও গণ-অপহরণ ও হামলা চালাচ্ছে। এমন পরিস্থিতি মুসলমান ও খ্রিষ্টান উভয় সম্প্রদায়কেই প্রভাবিত করছে।
এর আগে ট্রাম্পের অভিযোগের জবাবে নাইজেরিয়ার সরকার বিষয়টি স্বীকার করে বলেছিল, দেশটিতে কেবল খ্রিষ্টান নয়—বিভিন্ন ধর্মের মানুষই চরমপন্থী গোষ্ঠীগুলোর হাতে নির্যাতনের শিকার হচ্ছে।
গত মাসে নাইজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট বোলা আহমেদ তিনুবু বলেন, নাইজেরিয়াকে ধর্মীয়ভাবে অসহিষ্ণু দেশ হিসেবে চিত্রিত করা বাস্তবতার প্রতিফলন নয়। তিনি বলেন, ‘ধর্মীয় স্বাধীনতা ও সহনশীলতা আমাদের সম্মিলিত পরিচয়ের একটি মূল ভিত্তি এবং এটি সব সময়ই থাকবে। নাইজেরিয়া এমন একটি দেশ, যেখানে সংবিধান সব ধর্মের নাগরিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করে।’
এদিকে, ‘অন্তহীন যুদ্ধ’ বন্ধের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় এলেও নাইজেরিয়ায় ট্রাম্পের নতুন সামরিক হস্তক্ষেপ আফ্রিকার ভূরাজনীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে। অনেকে বলছেন, ‘খ্রিষ্টান নিপীড়ন’ আসলে ট্রাম্পের অজুহাত; তাঁর লক্ষ্য নাইজেরিয়ার তেলের খনি।
দ্য গার্ডিয়ান থেকে অনুবাদ করেছেন জগতপতি বর্মা

নাইজেরিয়ার সরকার খ্রিষ্টানদের ওপর নিপীড়ন ঠেকাতে ব্যর্থ—এমন অভিযোগে কয়েক সপ্তাহ ধরে সমালোচনার পর অবশেষে বড়দিনের রাতে (২৫ ডিসেম্বর) পশ্চিম আফ্রিকার দেশটিতে বিমান হামলা চালিয়েছে মার্কিন বাহিনী। সরাসরি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে নাইজেরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় সোকোটো রাজ্যে এ হামলা চালানো হয়।
ব্রিটিশ দৈনিক দ্য গার্ডিয়ান বলছে, ট্রাম্প প্রশাসন আইএস জঙ্গিদের একাধিক আস্তানা লক্ষ্য করে এসব হামলা চালায়। হামলায় মার্কিন নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ থেকে টমাহক মিসাইল নিক্ষেপ করা হয়েছিল। এসব হামলায় একাধিক আইএস জঙ্গি নিহত ও তাঁদের আস্তানা ধ্বংস হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে, তবে সঠিক সংখ্যা এখনো জানানো হয়নি।
ট্রাম্প প্রশাসনের সাম্প্রতিক বিদেশি সামরিক হস্তক্ষেপগুলোর সর্বশেষ উদাহরণ নাইজেরিয়ায় হামলা। অথচ ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনী প্রচারণায় তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে ‘অন্তহীন যুদ্ধ’ থেকে বের করে আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প দাবি করেছেন, এই হামলার মূল উদ্দেশ্য ছিল নাইজেরিয়ায় বসবাসরত খ্রিষ্টানদের ওপর চলমান হত্যাযজ্ঞ বন্ধ করা। তাঁর মতে, আইএস জঙ্গিরা পরিকল্পিতভাবে খ্রিষ্টানদের লক্ষ্যবস্তু বানাচ্ছে। হামলার ঘোষণা দিয়ে ট্রাম্প তাঁর ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে লিখেছিলেন, ‘আমি আগেই এই সন্ত্রাসীদের সতর্ক করেছিলাম, তারা যদি খ্রিষ্টানদের হত্যা বন্ধ না করে, তবে তাদের চড়ম মূল্য দিতে হবে। আজ রাতে (বড়দিন) ঠিক তা-ই ঘটেছে।’
গত অক্টোবর ও নভেম্বর মাসেও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নাইজেরিয়ার নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে ‘খ্রিষ্টান গণহত্যার’ শামিল বলে অভিহিত করেছিলেন।
মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তরের এক কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা এপিকে জানান, নাইজেরিয়া সরকারের অনুমোদন নিয়ে দেশটির সঙ্গে সমন্বয় করেই এসব হামলা চালানো হয়েছে। নাইজেরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, এই সহযোগিতার মধ্যে গোয়েন্দা তথ্য আদান-প্রদান ও কৌশলগত সমন্বয় ছিল।
কেন নাইজেরিয়ায় হামলা চালাল ট্রাম্প প্রশাসন
অনেক আগে থেকেই যুক্তরাষ্ট্রের ডানপন্থী রাজনীতিক গোষ্ঠীগুলো নাইজেরিয়ায় খ্রিষ্টানদের ওপর নিপীড়নের অভিযোগ তুলছে। গত সেপ্টেম্বরে রিপাবলিকান সিনেটর টেড ক্রুজ কিছু নাইজেরীয় কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞার আহ্বান জানান। তিনি দাবি করেন, যারা ‘ইসলামপন্থী সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর মাধ্যমে খ্রিষ্টান ও অন্য ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে সহিংসতা সহজতর করছে’, তাদের নিষিদ্ধ করা উচিত।
তবে বর্তমানে বিষয়টি মার্কিন ডানপন্থী ও ইভানজেলিক্যাল খ্রিষ্টান মহলে বড় ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে। আবার এই ডানপন্থী ও ইভানজেলিক্যাল খ্রিষ্টানরাই ট্রাম্পের বড় সমর্থক। বিশ্লেষকদের মতে, নিজের সমর্থকদের তুষ্ট করতে এবং বিশ্বজুড়ে ‘খ্রিষ্টানদের রক্ষাকর্তা’ হিসেবে নিজেকে জাহির করতেই ট্রাম্প এই ত্বরিত সামরিক পদক্ষেপ নিয়েছেন।
এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতা আইনের আওতায় নাইজেরিয়াকে ‘বিশেষ উদ্বেগের দেশ’ হিসেবে চিহ্নিত করেন ট্রাম্প। বেশ কিছু মার্কিন আইনপ্রণেতা ও রক্ষণশীল খ্রিষ্টান গোষ্ঠীর লাগাতার লবিংয়ের পর এই সিদ্ধান্ত আসে। এর কিছুদিন পরই তিনি নাইজেরিয়ায় সম্ভাব্য সামরিক অভিযানের পরিকল্পনা করতে পেন্টাগনকে নির্দেশ দেন। সে সময় ট্রাম্প বলেন, নাইজেরিয়া সরকার যদি খ্রিষ্টান হত্যাকাণ্ড বন্ধ না করে, তবে তিনি ‘গানস-এ-ব্লেজিং’ অর্থাৎ পূর্ণ শক্তি নিয়ে হস্তক্ষেপ করতে পারেন।
নাইজেরিয়ায় কি আসলেই খ্রিষ্টানদের ওপর নিপীড়ন চলছে
নাইজেরিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র। দেশটির জনসংখ্যার প্রায় ৫৩ শতাংশ মুসলমান, ৪৫ শতাংশ খ্রিষ্টান এবং অন্যরা আফ্রিকার ঐতিহ্যগত কিছু ধর্মে বিশ্বাসী। খ্রিষ্টানদের ওপর সহিংসতা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক মনোযোগ পেলেও বহু বিশ্লেষকের মতে, বিষয়টি কেবল ধর্মীয় নিপীড়নের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়; এর পেছনে নানা কারণ রয়েছে।
উদাহরণ হিসেবে, যাযাবর মুসলিম পশুপালক ও খ্রিষ্টান কৃষক সম্প্রদায়ের মধ্যে প্রাণঘাতী সংঘর্ষ মূলত চারণভূমি ও পানির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে। তবে ধর্মীয় ও জাতিগত বিভাজন এটিকে আরও জটিল করে তুলেছে। আবার অনেক বিশ্লেষকের মতে, যাজকদের অপহরণের ঘটনা ধর্মীয় বিদ্বেষের চেয়ে অর্থনৈতিক লাভের উদ্দেশ্যেই বেশি ঘটে, কারণ, তাঁরা প্রভাবশালী ব্যক্তি এবং তাঁদের অনুসারী বা প্রতিষ্ঠান দ্রুত মুক্তিপণের টাকা জোগাড় করতে পারে।
নাইজেরিয়া সরকারের অবস্থান
ট্রাম্প প্রশাসনের হামলার পর নাইজেরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আইএস-নিধনে যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতার প্রশংসা করেছে। কিন্তু খ্রিষ্টান নিপীড়নের বিষয়টির সঙ্গে মার্কিন অভিযানের কোনো সম্পর্ক আছে কি না, এ বিষয়ে কিছু বলেনি।
এক বিবৃতিতে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, খ্রিষ্টান, মুসলমান কিংবা অন্য কোনো সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে পরিচালিত সব ধরনের সহিংসতাই নাইজেরিয়ার মূল্যবোধ এবং আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তার প্রতি অবমাননা।
নাইজেরিয়ার বাস্তবতাও আসলে এমন। দীর্ঘদিন ধরে দেশটি নিরাপত্তা পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে। গত কয়েক বছরে দেশটিতে হাজারো মানুষ নিহত এবং শত শত মানুষ অপহৃত হয়েছে।
উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ২০০৯ সাল থেকে বোকো হারাম ও ইসলামিক স্টেট ওয়েস্ট আফ্রিকা প্রভিন্স (আইএসডব্লিউএপি) বিদ্রোহ চালিয়ে যাচ্ছে। এতে কয়েক দশক ধরে কয়েক হাজার মানুষ নিহত এবং লাখো মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে সশস্ত্র অপরাধী চক্র, যাদের সাধারণত ‘ডাকাত’ বলা হয়, তারাও গণ-অপহরণ ও হামলা চালাচ্ছে। এমন পরিস্থিতি মুসলমান ও খ্রিষ্টান উভয় সম্প্রদায়কেই প্রভাবিত করছে।
এর আগে ট্রাম্পের অভিযোগের জবাবে নাইজেরিয়ার সরকার বিষয়টি স্বীকার করে বলেছিল, দেশটিতে কেবল খ্রিষ্টান নয়—বিভিন্ন ধর্মের মানুষই চরমপন্থী গোষ্ঠীগুলোর হাতে নির্যাতনের শিকার হচ্ছে।
গত মাসে নাইজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট বোলা আহমেদ তিনুবু বলেন, নাইজেরিয়াকে ধর্মীয়ভাবে অসহিষ্ণু দেশ হিসেবে চিত্রিত করা বাস্তবতার প্রতিফলন নয়। তিনি বলেন, ‘ধর্মীয় স্বাধীনতা ও সহনশীলতা আমাদের সম্মিলিত পরিচয়ের একটি মূল ভিত্তি এবং এটি সব সময়ই থাকবে। নাইজেরিয়া এমন একটি দেশ, যেখানে সংবিধান সব ধর্মের নাগরিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করে।’
এদিকে, ‘অন্তহীন যুদ্ধ’ বন্ধের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় এলেও নাইজেরিয়ায় ট্রাম্পের নতুন সামরিক হস্তক্ষেপ আফ্রিকার ভূরাজনীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে। অনেকে বলছেন, ‘খ্রিষ্টান নিপীড়ন’ আসলে ট্রাম্পের অজুহাত; তাঁর লক্ষ্য নাইজেরিয়ার তেলের খনি।
দ্য গার্ডিয়ান থেকে অনুবাদ করেছেন জগতপতি বর্মা

বাংলাদেশি হিন্দুরা প্রকৃতপক্ষে কতটা সহিংসতার শিকার হয়েছে, তা নিশ্চিতভাবে জানা কঠিন। এই সোশ্যাল মিডিয়া এবং ভুয়া খবরের যুগে প্রতিটি খবরকেই সন্দেহের চোখে দেখা উচিত। ‘গণহত্যা’ শব্দটি অবশ্যই অত্যন্ত শক্তিশালী একটি দাবি। বাংলাদেশের রাজনীতি নিয়ে অধ্যয়নকারী হিসেবে আমি বলতে পারি যে, ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে যা পড়
১৫ ডিসেম্বর ২০২৪
গত ২৬ ডিসেম্বর বিশ্বের প্রথম জাতিসংঘ সদস্য দেশ হিসেবে সোমালিল্যান্ডকে একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিয়েছে ইসরায়েল। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এই সিদ্ধান্তকে ‘আব্রাহাম অ্যাকর্ডস’-এর একটি সাহসী সম্প্রসারণ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
২ দিন আগে
মধ্যপ্রাচ্যের মূল ভূখণ্ড হারানোর পর আইএস এখন মূলত স্বায়ত্তশাসিত বিভিন্ন সেলের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বর্তমানে নাইজেরিয়া, সোমালিয়া, কঙ্গো এবং সাহেল অঞ্চলে আইএস অত্যন্ত শক্তিশালী। নাইজেরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ‘আইএসডব্লিউএপি’ এবং উত্তর-পশ্চিমে বিভিন্ন অনুসারী গোষ্ঠী সক্রিয় রয়েছে।
৩ দিন আগে
ভেনেজুয়েলার চলমান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকট ধীরে ধীরে একটি আঞ্চলিক সমস্যা থেকে বৈশ্বিক ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনায় রূপ নিচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের কড়া অবস্থান এবং সম্ভাব্য সামরিক হস্তক্ষেপের ইঙ্গিত এই সংকটকে আরও গভীর করেছে।
৮ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

ভেনেজুয়েলার চলমান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকট ধীরে ধীরে একটি আঞ্চলিক সমস্যা থেকে বৈশ্বিক ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনায় রূপ নিচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের কড়া অবস্থান এবং সম্ভাব্য সামরিক হস্তক্ষেপের ইঙ্গিত এই সংকটকে আরও গভীর করেছে। এই প্রেক্ষাপটে ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিয়ো লুলা দা সিলভা ভেনেজুয়েলায় মার্কিন সামরিক হস্তক্ষেপ মানবিক বিপর্যয় ডেকে আনবে বলে সতর্ক করেছেন। তাঁর মতে, এই সতর্কতা শুধু ভেনেজুয়েলাকে ঘিরে নয়—পুরো দক্ষিণ আমেরিকার ভবিষ্যৎ নিরাপত্তার প্রশ্নও তুলে ধরছে।
ভেনেজুয়েলার সংকটের মূল কারণ দেশটির দীর্ঘস্থায়ী রাজনৈতিক অস্থিরতা, বিতর্কিত নির্বাচন, অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনা এবং মানবাধিকার পরিস্থিতি। প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর সরকারকে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের একটি অংশ কর্তৃত্ববাদী ও অগণতান্ত্রিক বলে মনে করে। এর জবাবে ওয়াশিংটন একের পর এক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। এসব নিষেধাজ্ঞার মূল লক্ষ্য ভেনেজুয়েলার তেল রপ্তানি, যা দেশটির আয়ের প্রধান উৎস।
ভেনেজুয়েলা বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ তেল মজুতের অধিকারী। ফলে তাদের তেল শুধু অর্থনীতি নয়, কূটনীতিরও কেন্দ্রে অবস্থান করছে। যুক্তরাষ্ট্র মনে করে, ভেনেজুয়েলার তেল বিক্রির পথ বন্ধ করতে পারলে মাদুরো সরকার দুর্বল হবে। এই লক্ষ্যেই সাম্প্রতিক সময়ে দেশটির নিষেধাজ্ঞাভুক্ত তেল ট্যাংকারগুলোকে অবরোধের মতো কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে মার্কিন বাহিনী। তবে এই পদক্ষেপকে সরাসরি যুদ্ধের দিকে ঠেলে দেওয়ার ঝুঁকি হিসেবে দেখছেন দক্ষিণ আমেরিকার অনেক নেতা।
ব্রাজিল ও মেক্সিকোর মতো লাতিন শক্তিগুলো এই কারণেই যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক হস্তক্ষেপের সম্ভাবনার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন, দক্ষিণ আমেরিকার ইতিহাস বহিঃশক্তির সামরিক হস্তক্ষেপের তিক্ত অভিজ্ঞতায় ভরা। ফকল্যান্ড যুদ্ধের চার দশক পর আবারও কোনো অন্য মহাদেশীয় শক্তির সামরিক উপস্থিতি এই মহাদেশকে অস্থিতিশীল করে তুলতে পারে—এমন আশঙ্কাই তিনি প্রকাশ করেছেন।
এদিকে রাশিয়া ও চীন ভেনেজুয়েলার সরকারের প্রতি সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। রাশিয়ার ক্ষেত্রে এটি যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব মোকাবিলার কৌশল, আর চীনের জন্য এটি তেল ও ঋণনির্ভর অর্থনৈতিক স্বার্থের প্রশ্ন। ফলে ভেনেজুয়েলা ক্রমেই যুক্তরাষ্ট্র বনাম রাশিয়া–চীন প্রভাব বিস্তারের আরেকটি ময়দানে পরিণত হচ্ছে।
‘মার্কোসুর’ সম্মেলনে লাতিন আমেরিকার দেশগুলো যে যৌথ অবস্থান নিয়েছে, তা এই বাস্তবতাকেই প্রতিফলিত করে। তারা ভেনেজুয়েলায় গণতন্ত্র ও মানবাধিকার রক্ষার কথা বলেছে, তবে স্পষ্টভাবে সামরিক পথ প্রত্যাখ্যান করেছে। তাদের মতে, সংকটের সমাধান হতে পারে কেবল সংলাপ ও শান্তিপূর্ণ কূটনীতির মাধ্যমে।
সব মিলিয়ে ভেনেজুয়েলার সংকট এখন আর একটি দেশের অভ্যন্তরীণ সমস্যা নয়। তেল, আদর্শিক দ্বন্দ্ব, আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও বৈশ্বিক ক্ষমতার লড়াই—সবকিছু মিলিয়ে এটি আন্তর্জাতিক রাজনীতির এক স্পর্শকাতর সংঘাতক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে।

ভেনেজুয়েলার চলমান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকট ধীরে ধীরে একটি আঞ্চলিক সমস্যা থেকে বৈশ্বিক ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনায় রূপ নিচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের কড়া অবস্থান এবং সম্ভাব্য সামরিক হস্তক্ষেপের ইঙ্গিত এই সংকটকে আরও গভীর করেছে। এই প্রেক্ষাপটে ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিয়ো লুলা দা সিলভা ভেনেজুয়েলায় মার্কিন সামরিক হস্তক্ষেপ মানবিক বিপর্যয় ডেকে আনবে বলে সতর্ক করেছেন। তাঁর মতে, এই সতর্কতা শুধু ভেনেজুয়েলাকে ঘিরে নয়—পুরো দক্ষিণ আমেরিকার ভবিষ্যৎ নিরাপত্তার প্রশ্নও তুলে ধরছে।
ভেনেজুয়েলার সংকটের মূল কারণ দেশটির দীর্ঘস্থায়ী রাজনৈতিক অস্থিরতা, বিতর্কিত নির্বাচন, অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনা এবং মানবাধিকার পরিস্থিতি। প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর সরকারকে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের একটি অংশ কর্তৃত্ববাদী ও অগণতান্ত্রিক বলে মনে করে। এর জবাবে ওয়াশিংটন একের পর এক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। এসব নিষেধাজ্ঞার মূল লক্ষ্য ভেনেজুয়েলার তেল রপ্তানি, যা দেশটির আয়ের প্রধান উৎস।
ভেনেজুয়েলা বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ তেল মজুতের অধিকারী। ফলে তাদের তেল শুধু অর্থনীতি নয়, কূটনীতিরও কেন্দ্রে অবস্থান করছে। যুক্তরাষ্ট্র মনে করে, ভেনেজুয়েলার তেল বিক্রির পথ বন্ধ করতে পারলে মাদুরো সরকার দুর্বল হবে। এই লক্ষ্যেই সাম্প্রতিক সময়ে দেশটির নিষেধাজ্ঞাভুক্ত তেল ট্যাংকারগুলোকে অবরোধের মতো কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে মার্কিন বাহিনী। তবে এই পদক্ষেপকে সরাসরি যুদ্ধের দিকে ঠেলে দেওয়ার ঝুঁকি হিসেবে দেখছেন দক্ষিণ আমেরিকার অনেক নেতা।
ব্রাজিল ও মেক্সিকোর মতো লাতিন শক্তিগুলো এই কারণেই যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক হস্তক্ষেপের সম্ভাবনার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন, দক্ষিণ আমেরিকার ইতিহাস বহিঃশক্তির সামরিক হস্তক্ষেপের তিক্ত অভিজ্ঞতায় ভরা। ফকল্যান্ড যুদ্ধের চার দশক পর আবারও কোনো অন্য মহাদেশীয় শক্তির সামরিক উপস্থিতি এই মহাদেশকে অস্থিতিশীল করে তুলতে পারে—এমন আশঙ্কাই তিনি প্রকাশ করেছেন।
এদিকে রাশিয়া ও চীন ভেনেজুয়েলার সরকারের প্রতি সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। রাশিয়ার ক্ষেত্রে এটি যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব মোকাবিলার কৌশল, আর চীনের জন্য এটি তেল ও ঋণনির্ভর অর্থনৈতিক স্বার্থের প্রশ্ন। ফলে ভেনেজুয়েলা ক্রমেই যুক্তরাষ্ট্র বনাম রাশিয়া–চীন প্রভাব বিস্তারের আরেকটি ময়দানে পরিণত হচ্ছে।
‘মার্কোসুর’ সম্মেলনে লাতিন আমেরিকার দেশগুলো যে যৌথ অবস্থান নিয়েছে, তা এই বাস্তবতাকেই প্রতিফলিত করে। তারা ভেনেজুয়েলায় গণতন্ত্র ও মানবাধিকার রক্ষার কথা বলেছে, তবে স্পষ্টভাবে সামরিক পথ প্রত্যাখ্যান করেছে। তাদের মতে, সংকটের সমাধান হতে পারে কেবল সংলাপ ও শান্তিপূর্ণ কূটনীতির মাধ্যমে।
সব মিলিয়ে ভেনেজুয়েলার সংকট এখন আর একটি দেশের অভ্যন্তরীণ সমস্যা নয়। তেল, আদর্শিক দ্বন্দ্ব, আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও বৈশ্বিক ক্ষমতার লড়াই—সবকিছু মিলিয়ে এটি আন্তর্জাতিক রাজনীতির এক স্পর্শকাতর সংঘাতক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে।

বাংলাদেশি হিন্দুরা প্রকৃতপক্ষে কতটা সহিংসতার শিকার হয়েছে, তা নিশ্চিতভাবে জানা কঠিন। এই সোশ্যাল মিডিয়া এবং ভুয়া খবরের যুগে প্রতিটি খবরকেই সন্দেহের চোখে দেখা উচিত। ‘গণহত্যা’ শব্দটি অবশ্যই অত্যন্ত শক্তিশালী একটি দাবি। বাংলাদেশের রাজনীতি নিয়ে অধ্যয়নকারী হিসেবে আমি বলতে পারি যে, ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে যা পড়
১৫ ডিসেম্বর ২০২৪
গত ২৬ ডিসেম্বর বিশ্বের প্রথম জাতিসংঘ সদস্য দেশ হিসেবে সোমালিল্যান্ডকে একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিয়েছে ইসরায়েল। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এই সিদ্ধান্তকে ‘আব্রাহাম অ্যাকর্ডস’-এর একটি সাহসী সম্প্রসারণ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
২ দিন আগে
মধ্যপ্রাচ্যের মূল ভূখণ্ড হারানোর পর আইএস এখন মূলত স্বায়ত্তশাসিত বিভিন্ন সেলের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বর্তমানে নাইজেরিয়া, সোমালিয়া, কঙ্গো এবং সাহেল অঞ্চলে আইএস অত্যন্ত শক্তিশালী। নাইজেরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ‘আইএসডব্লিউএপি’ এবং উত্তর-পশ্চিমে বিভিন্ন অনুসারী গোষ্ঠী সক্রিয় রয়েছে।
৩ দিন আগে
নাইজেরিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র। দেশটির জনসংখ্যার প্রায় ৫৩ শতাংশ মুসলমান, ৪৫ শতাংশ খ্রিষ্টান এবং অন্যরা আফ্রিকার ঐতিহ্যগত কিছু ধর্মে বিশ্বাসী। খ্রিষ্টানদের ওপর সহিংসতা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক মনোযোগ পেলেও বহু বিশ্লেষকের মতে, বিষয়টি কেবল ধর্মীয় নিপীড়নের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, এর পেছন
৩ দিন আগে