আজকের পত্রিকা ডেস্ক

ভারতের মিজোরামকে মিয়ানমারের চিন রাজ্য থেকে আলাদা করেছে তিয়াউ নদী। এই নদীর দুই ধার দুই দেশের মানুষেরই সাধারণ বিনোদনের একটি কেন্দ্র। মিজোরামে মাদক বিক্রি নিষিদ্ধ হওয়ায় ভারতের লোকজন শুকনো মৌসুমে প্রায়ই নদী পাড়ি দিয়ে গাড়িতে গান বাজাতে বাজাতে মিয়ানমারে অ্যালকোহল কিনতে যায়। কেবল মিজোরাম নয়, নাগাল্যান্ডের লংওয়া গ্রামের প্রধানের বাড়িটি দুই দেশের সীমান্তের মাঝ বরাবর।
ভারত-মিয়ানমার সীমান্তে প্রস্তাবিত ১ হাজার মাইল দীর্ঘ বেড়া সেখানকার সাপ্তাহিক আয়োজন, ব্যবসা-বাণিজ্য, অভিবাসন, ঐতিহাসিক ও অন্যান্য সাংস্কৃতিক সম্পর্ক ব্যাহত করার হুমকি দিচ্ছে। এসবই করা হচ্ছে নিরাপত্তার নামে। ভারত সরকার মিয়ানমারের কেন্দ্রীয় সরকারের তেমন কোনো সম্পৃক্ততা ছাড়াই এই পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে। তাদের যুক্তি, এই বেড়া চোরাচালান, বিদ্রোহ এবং অবৈধ অভিবাসন সমস্যা কমাবে। একই অজুহাতে ভারত বাংলাদেশের সঙ্গে ৪ হাজার কিলোমিটারের বেশি দীর্ঘ সীমান্তের বেশির ভাগ অংশেই বেড়া দিয়েছে।
তবে এই সীমান্ত বেড়ার সমস্যা কেবল ভারতেরই নয়, এটি যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো সীমান্ত থেকে শুরু করে ইউরোপ, উত্তর আফ্রিকা এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াজুড়ে বেড়া তৈরির ক্রমবর্ধমান প্রবণতারই প্রতিচ্ছবি। বর্তমানে বিশ্বে সীমান্ত প্রাচীরের বৃহত্তম অংশ এশিয়ায়। বিশ্বের মোট সীমান্ত বেড়ার ৫৬ শতাংশই এই অঞ্চলে। স্নায়ুযুদ্ধ অবসানের পর থেকে বিশ্বব্যাপী সীমান্ত প্রাচীর ও বেড়ার সংখ্যা ছয় গুণ বেড়েছে। ১৯৮০-এর দশকের শেষের দিকে যেখানে মাত্র এক ডজন সীমান্ত প্রাচীর ছিল, সেখানে বর্তমানে এটি অন্তত ৭৪ টিতে দাঁড়িয়েছে।
ইউরোপীয় ইউনিয়নে সীমান্ত বেড়ার মোট দৈর্ঘ্য ২০১৪ সালে ছিল ১৯৫ মাইল। সেখান থেকে ২০২২ সালের মধ্যে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ২০০ মাইলের বেশি। বর্তমানে বিশ্বের প্রতি ১০ জনের মধ্যে ৬ জন এমন দেশে বাস করে, যেখানে তাদের সীমান্তে প্রাচীর তৈরি করা হয়েছে।
ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা, ক্রমবর্ধমান জাতীয়তাবাদ, অভিবাসন নিয়ে উদ্বেগ এবং ৯ / ১১ পরবর্তী সময়ে সীমান্ত সুরক্ষিত করার প্রবণতাই এই বেড়া বৃদ্ধির কারণ। পাশাপাশি এটি এখন অর্থ উপার্জনেরও একটি পথ তৈরি করেছে। নজরদারি প্রযুক্তি, নির্মাণ চুক্তি এবং বেসরকারি নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর পকেটে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার ঢুকে যাচ্ছে স্রেফ সীমান্ত সংক্রান্ত নিরাপত্তা ইস্যুতে দেশগুলোর ব্যয়ের কারণে।
২০২৫ সালের বৈশ্বিক সীমান্ত নিরাপত্তা বাজারের মূল্য ৪৯ দশমিক ৫৫ বিলিয়ন ডলার। ২০২৯ সালের মধ্যে এটি ৬৩ দশমিক ৬১ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। মিয়ানমার সীমান্তে ভারতের বেড়া দেওয়ার উদ্যোগ বৈশ্বিক সীমান্ত অবকাঠামো বৃদ্ধির একটি অংশ। এটি সীমান্ত ব্যবস্থাপনার প্রধান হাতিয়ার হিসেবে সরাসরি প্রতিরোধ ও অপরপক্ষকে আলাদা করে রাখার দিকে বৃহত্তর নীতিগত পরিবর্তের প্রতিফলন।
কিন্তু সীমান্ত বেড়া কি আসলেই কার্যকর? বিশ্বজুড়ে চোরাচালান এবং বেড়া নির্মাণের ওপর গবেষণা, পাশাপাশি ভারত ও মিয়ানমার সীমান্তে বসবাসকারী চোরাকারবারি, নিরাপত্তা বাহিনী এবং সাধারণ মানুষের কাছ থেকে সংগৃহীত তথ্যে দেখা গেছে—এই বেড়ার আসলে নেতিবাচক দিকই বেশি। এগুলো অপরাধের গতিপথ পরিবর্তন করে, সীমান্ত সংলগ্ন জনপদকে অস্থিতিশীল করে তোলে এমনকি আঞ্চলিক বাণিজ্য সম্পর্কের ওপরও সুদূরপ্রসারী প্রভাব ফেলে।
ভারত সরকারের মতে, বেড়া নির্মাণ উত্তর-পূর্বাঞ্চলে নিরাপত্তা জোরদার, অবৈধ কার্যকলাপ দমন এবং অবকাঠামো উন্নয়নের একটি বৃহত্তর প্রচেষ্টার অংশ। এর মাধ্যমে ভারত ও মিয়ানমারের মধ্যে অস্ত্র, মাদক এবং নকল পণ্যের চলাচলও কমবে। মিয়ানমারে চলমান সংঘাতের কারণে সেখানকার মানুষ সহিংসতা থেকে বাঁচতে মিজোরামে চলে আসছে। এই জন-চলাচলের সঙ্গে মিজোরাম-মিয়ানমার সীমান্তে চোরাচালানের অর্থনীতিও ফুলেফেঁপে উঠেছে।
ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী গত দুই বছরে একটি মাত্র সীমান্ত পারাপারে ২৭৭ মিলিয়ন ডলারের বেশি মাদক জব্দ করা হয়েছে। যেগুলোর বেশির ভাগই হেরোইন ও মেথামফেটামিন। তবে তাদের নিজস্ব হিসাব অনুযায়ী, ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনী সীমান্ত পারাপারে এই মাদক পাচারের মাত্র ৫ শতাংশ জব্দ করতে সক্ষম হয়েছে। উত্তর-পূর্ব ভারতের মণিপুর রাজ্য জাতিগত সংঘাতের কবলে থাকায় এবং মিয়ানমার গৃহযুদ্ধে জর্জরিত হওয়ায় অস্ত্র চোরাচালানও বাড়ছে।
অবৈধ পণ্য, মাদক এবং অস্ত্রের এই ব্যাপক প্রবাহের কারণে অনেকেই মনে করেন কাঁটাতারের বেড়া কার্যকর সমাধান। বিশেষ করে, ভারতীয় নিরাপত্তা কর্মীরা এই পাহাড়ি, অরক্ষিত সীমান্তে টহল দিতে ক্লান্ত। ভারত ও মিয়ানমারের মধ্যবর্তী সীমান্ত এলাকায় ভারতীয় আধা-সামরিক বাহিনী বিদ্রোহ দমনের মূল দায়িত্ব পালনের কারণে এমনিতেই চাপে থাকে। চোরাচালান দমনের দায়িত্বকে তারা প্রায়শই বাড়তি বোঝা মনে করে। তবে অনেকেই স্বীকার করেছেন, শুধু অরক্ষিত সীমান্তই নয়, বরং ভারতীয় রাষ্ট্রীয় পর্যায় থেকে দুর্নীতির ব্যাপকতাও এই অবৈধ ব্যবসাকে আরও সহজ করে তুলেছে।
ভারত-মিয়ানমার সীমান্তে রাষ্ট্র বনাম চোরাকারবারির সাধারণ ধারণার বাইরেও একটি জটিল ও প্রায়শই সহজীবী সম্পর্ক বিদ্যমান। এটি বৈধ ও অবৈধ উভয় পণ্যের চাহিদার দ্বারা চালিত। অনেকেই এই পণ্য চলাচলের সুবিধা নিয়ে অর্থোপার্জন করে থাকে। এমনকি কেউ কেউ ঘুষ সংগ্রহের সুবিধার জন্য মোটা অঙ্কের অর্থ ব্যয় করে সরকারি পদও কিনে থাকে। ফলে, সীমান্তে বেড়া দিলেই এই দুর্নীতি দূর হবে না। বরং এর ফলে কারা সুবিধা পাবে আর কারা পাবে না, কেবল সেই সমীকরণ পরিবর্তিত হবে।
বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চলে চোরাচালান নিয়ে গবেষণায় দেখা গেছে, মাদক ও অন্যান্য পণ্যের চোরাচালান প্রায়শই রাষ্ট্রীয় হর্তাকর্তারাই নিয়ন্ত্রণ করে। তবে দেশভেদে এর আনুষ্ঠানিকতা ও প্রয়োগের মাত্রাও ভিন্ন ভিন্ন হতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় কিছু চোরাচালান পথকে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ মৌন অনুমোদন দিয়েছে। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ চোরাচালানকারীদের সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক চুক্তির ওপর নির্ভর করে। এর মাধ্যমে তারা নিজেদের আয় বাড়াতে ও অস্থির অঞ্চলগুলোতে নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখতে চায়।
একইভাবে, উত্তর আফ্রিকায় রাষ্ট্রগুলো প্রায়শই নির্দিষ্ট কিছু চোরাচালান কার্যকলাপ মেনে নিচ্ছে। তারা বিভিন্ন অনানুষ্ঠানিক ব্যবস্থার মাধ্যমে বৃহৎ চোরাচালান অর্থনীতিকে তাদের বৃহত্তর স্বার্থের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করেছে। এই অভিজ্ঞতাগুলো থেকে বোঝা যায় যে, বেড়ার মতো সীমান্ত সুরক্ষা ব্যবস্থা চোরাচালান নেটওয়ার্কগুলোকে ব্যাহত করে না, বরং সেগুলো পুনর্বিন্যাস করে। এর ফলে, আরও সংগঠিত ও সুসংযুক্ত ‘খেলোয়াড়দের’ ক্ষমতা সুসংহত হতে পারে। অন্যদিকে, ছোট ও কম সম্পদশালী অংশগ্রহণকারীরা কোণঠাসা হয়ে পড়ে।
আর হয়তো সে কারণেই (সাক্ষাৎকারে) ভারত-মিয়ানমার সীমান্তের এক সুপ্রতিষ্ঠিত চোরাকারবারিকে বেড়া তাদের বিভিন্ন বড় আকারের কার্যক্রমে কতটা প্রভাব ফেলবে, তা নিয়ে খুব বেশি উদ্বিগ্ন বলে মনে হয়নি। সীমান্ত এলাকায় অভিযান তদারককারী ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর এক সদস্য, ‘কোটি কোটি টাকা উপার্জনকারী বড় চোরাকারবারিদের ক্ষেত্রে কাঁটাতারের বেড়ার মতো তুচ্ছ জিনিস কোনো বাধাই তৈরি করতে পারবে না।’
তবে ছোটখাটো অনানুষ্ঠানিক ব্যবসায়ীদের জন্য এটি ভিন্ন ব্যাপার হতে পারে। ভারত-মিয়ানমার সীমান্তের এক ছোট চোরাকারবারি জোর দিয়ে বলেছেন, ‘ছোট ব্যবসায়ীদের জন্য, বেড়া না থাকা সব সময়ই ভালো।’ অন্য এক স্থানীয় ব্যবসায়ী ব্যাখ্যা করেছেন, ‘স্থানীয়রা সব সময় তাদের ব্যবসা অনানুষ্ঠানিকভাবেই করবে।’ সীমান্ত অঞ্চলে গভীর সাংস্কৃতিক এবং আত্মীয়তার বন্ধনের কথা উল্লেখ করে তিনি আরও বলেছেন, একটি বেড়ার কারণে ‘সামাজিক বন্ধন ভেঙে যাবে। তারপর, অর্থনৈতিকভাবেও।’ ব্যবসায়ীদের মধ্যে যারা বেশি আশাবাদী, তারা সরকারের কাছ থেকে কিছুটা বাস্তববাদিতা আশা করেন। এক সীমান্ত ব্যবসায়ী বলেন, ‘তারা (সরকার) বোঝে যে ছোট ব্যবসায়ীদের টিকে থাকতে হবে’, যা থেকে বোঝা যায় যে, প্রস্তাবিত বেড়া সত্ত্বেও তিনি কিছুটা অস্পষ্টতা, আলোচনা এবং বোঝাপড়া অব্যাহত থাকার আশা করছেন।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিশ্বজুড়ে সীমান্ত অবকাঠামো বাড়ছে। বিভিন্ন দেশ ও সীমান্তের গবেষণা থেকে জানা গেছে, কাঁটাতারের বেড়ার মতো অবকাঠামো চোরাচালানের খরচ বাড়িয়ে দেয়। এই খরচ হয়—পণ্য সামগ্রী বেড়ার ওপার থেকে আনার প্রযুক্তিগত ব্যয়, অথবা নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সম্পর্কের মাধ্যমে এটি পারাপার করার ব্যয়ে।
অস্ত্র বা মাদক ব্যবসায় জড়িত উচ্চ পুঁজির চোরাচালান নেটওয়ার্কগুলোর জন্য এই ব্যয় সামলানো তুলনামূলকভাবে সহজ। এটি তাদের বিশেষীকরণ বা একে অপরের সঙ্গে সহযোগিতার জন্য উৎসাহিত করতে পারে। অন্যদিকে, সীমান্ত অঞ্চলের ছোটখাটো চোরাচালানিরা—যারা সাধারণত বৈধ পণ্য ও খাদ্যদ্রব্যের ব্যবসা করে—তাদের জন্য এই কাঁটাতারের বেড়া এক অসাধ্য বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে।
ঐতিহাসিকভাবে, ভারত ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলো মধ্যে পণ্য, মানুষ এবং ধারণা—যার মধ্যে হিন্দু ও বৌদ্ধধর্মের মতো ধর্মও অন্তর্ভুক্ত—আদান-প্রদান প্রাচীনকাল থেকেই বিদ্যমান। এখন, নরেন্দ্র মোদির সরকারের শুরু করা ‘অ্যাক্ট ইস্ট’ নীতি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদার করতে, কৌশলগত অংশীদারত্ব বাড়াতে এবং সাংস্কৃতিক বিনিময়কে উৎসাহিত করতে চাইছে। এই প্রেক্ষাপটে, কাঁটাতারের বেড়ার ধারণা যা স্থানীয় সম্প্রদায়গুলোকে নানা মাত্রিকভাবে বিভক্ত করে এবং আঞ্চলিক সংহতিকে ক্ষতিগ্রস্ত করে তা বেশ বিভ্রান্তিকর। যুক্তি দেওয়া হচ্ছে যে, বেড়া সীমান্তকে নিরাপদ করবে এবং এর ফলে আরও আনুষ্ঠানিক বা বৈধ বাণিজ্য বৃদ্ধি পাবে।
সীমান্তে বৈধ পণ্যের ব্যবসা করা কিছু ব্যবসায়ী এর সঙ্গে একমত। এক ব্যবসায়ী আশা প্রকাশ করে বলেছেন, ‘আমরা প্রথমে হয়তো ক্ষতিগ্রস্ত হব, কিন্তু দিন শেষে বেড়া বৈধ ব্যবসাকে উৎসাহিত করবে।’ তিনি বিশ্বাস করেন, ‘এই বেড়া মাদক সমস্যা নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করবে এবং একই সঙ্গে বৈধ ব্যবসাকে চলতে দেবে।’ কিন্তু ইতিহাস ও বাস্তবতা তা বলে না।
অনুবাদ করেছেন আজকের পত্রিকার সহসম্পাদক আব্দুর রহমান

ভারতের মিজোরামকে মিয়ানমারের চিন রাজ্য থেকে আলাদা করেছে তিয়াউ নদী। এই নদীর দুই ধার দুই দেশের মানুষেরই সাধারণ বিনোদনের একটি কেন্দ্র। মিজোরামে মাদক বিক্রি নিষিদ্ধ হওয়ায় ভারতের লোকজন শুকনো মৌসুমে প্রায়ই নদী পাড়ি দিয়ে গাড়িতে গান বাজাতে বাজাতে মিয়ানমারে অ্যালকোহল কিনতে যায়। কেবল মিজোরাম নয়, নাগাল্যান্ডের লংওয়া গ্রামের প্রধানের বাড়িটি দুই দেশের সীমান্তের মাঝ বরাবর।
ভারত-মিয়ানমার সীমান্তে প্রস্তাবিত ১ হাজার মাইল দীর্ঘ বেড়া সেখানকার সাপ্তাহিক আয়োজন, ব্যবসা-বাণিজ্য, অভিবাসন, ঐতিহাসিক ও অন্যান্য সাংস্কৃতিক সম্পর্ক ব্যাহত করার হুমকি দিচ্ছে। এসবই করা হচ্ছে নিরাপত্তার নামে। ভারত সরকার মিয়ানমারের কেন্দ্রীয় সরকারের তেমন কোনো সম্পৃক্ততা ছাড়াই এই পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে। তাদের যুক্তি, এই বেড়া চোরাচালান, বিদ্রোহ এবং অবৈধ অভিবাসন সমস্যা কমাবে। একই অজুহাতে ভারত বাংলাদেশের সঙ্গে ৪ হাজার কিলোমিটারের বেশি দীর্ঘ সীমান্তের বেশির ভাগ অংশেই বেড়া দিয়েছে।
তবে এই সীমান্ত বেড়ার সমস্যা কেবল ভারতেরই নয়, এটি যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো সীমান্ত থেকে শুরু করে ইউরোপ, উত্তর আফ্রিকা এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াজুড়ে বেড়া তৈরির ক্রমবর্ধমান প্রবণতারই প্রতিচ্ছবি। বর্তমানে বিশ্বে সীমান্ত প্রাচীরের বৃহত্তম অংশ এশিয়ায়। বিশ্বের মোট সীমান্ত বেড়ার ৫৬ শতাংশই এই অঞ্চলে। স্নায়ুযুদ্ধ অবসানের পর থেকে বিশ্বব্যাপী সীমান্ত প্রাচীর ও বেড়ার সংখ্যা ছয় গুণ বেড়েছে। ১৯৮০-এর দশকের শেষের দিকে যেখানে মাত্র এক ডজন সীমান্ত প্রাচীর ছিল, সেখানে বর্তমানে এটি অন্তত ৭৪ টিতে দাঁড়িয়েছে।
ইউরোপীয় ইউনিয়নে সীমান্ত বেড়ার মোট দৈর্ঘ্য ২০১৪ সালে ছিল ১৯৫ মাইল। সেখান থেকে ২০২২ সালের মধ্যে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ২০০ মাইলের বেশি। বর্তমানে বিশ্বের প্রতি ১০ জনের মধ্যে ৬ জন এমন দেশে বাস করে, যেখানে তাদের সীমান্তে প্রাচীর তৈরি করা হয়েছে।
ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা, ক্রমবর্ধমান জাতীয়তাবাদ, অভিবাসন নিয়ে উদ্বেগ এবং ৯ / ১১ পরবর্তী সময়ে সীমান্ত সুরক্ষিত করার প্রবণতাই এই বেড়া বৃদ্ধির কারণ। পাশাপাশি এটি এখন অর্থ উপার্জনেরও একটি পথ তৈরি করেছে। নজরদারি প্রযুক্তি, নির্মাণ চুক্তি এবং বেসরকারি নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর পকেটে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার ঢুকে যাচ্ছে স্রেফ সীমান্ত সংক্রান্ত নিরাপত্তা ইস্যুতে দেশগুলোর ব্যয়ের কারণে।
২০২৫ সালের বৈশ্বিক সীমান্ত নিরাপত্তা বাজারের মূল্য ৪৯ দশমিক ৫৫ বিলিয়ন ডলার। ২০২৯ সালের মধ্যে এটি ৬৩ দশমিক ৬১ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। মিয়ানমার সীমান্তে ভারতের বেড়া দেওয়ার উদ্যোগ বৈশ্বিক সীমান্ত অবকাঠামো বৃদ্ধির একটি অংশ। এটি সীমান্ত ব্যবস্থাপনার প্রধান হাতিয়ার হিসেবে সরাসরি প্রতিরোধ ও অপরপক্ষকে আলাদা করে রাখার দিকে বৃহত্তর নীতিগত পরিবর্তের প্রতিফলন।
কিন্তু সীমান্ত বেড়া কি আসলেই কার্যকর? বিশ্বজুড়ে চোরাচালান এবং বেড়া নির্মাণের ওপর গবেষণা, পাশাপাশি ভারত ও মিয়ানমার সীমান্তে বসবাসকারী চোরাকারবারি, নিরাপত্তা বাহিনী এবং সাধারণ মানুষের কাছ থেকে সংগৃহীত তথ্যে দেখা গেছে—এই বেড়ার আসলে নেতিবাচক দিকই বেশি। এগুলো অপরাধের গতিপথ পরিবর্তন করে, সীমান্ত সংলগ্ন জনপদকে অস্থিতিশীল করে তোলে এমনকি আঞ্চলিক বাণিজ্য সম্পর্কের ওপরও সুদূরপ্রসারী প্রভাব ফেলে।
ভারত সরকারের মতে, বেড়া নির্মাণ উত্তর-পূর্বাঞ্চলে নিরাপত্তা জোরদার, অবৈধ কার্যকলাপ দমন এবং অবকাঠামো উন্নয়নের একটি বৃহত্তর প্রচেষ্টার অংশ। এর মাধ্যমে ভারত ও মিয়ানমারের মধ্যে অস্ত্র, মাদক এবং নকল পণ্যের চলাচলও কমবে। মিয়ানমারে চলমান সংঘাতের কারণে সেখানকার মানুষ সহিংসতা থেকে বাঁচতে মিজোরামে চলে আসছে। এই জন-চলাচলের সঙ্গে মিজোরাম-মিয়ানমার সীমান্তে চোরাচালানের অর্থনীতিও ফুলেফেঁপে উঠেছে।
ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী গত দুই বছরে একটি মাত্র সীমান্ত পারাপারে ২৭৭ মিলিয়ন ডলারের বেশি মাদক জব্দ করা হয়েছে। যেগুলোর বেশির ভাগই হেরোইন ও মেথামফেটামিন। তবে তাদের নিজস্ব হিসাব অনুযায়ী, ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনী সীমান্ত পারাপারে এই মাদক পাচারের মাত্র ৫ শতাংশ জব্দ করতে সক্ষম হয়েছে। উত্তর-পূর্ব ভারতের মণিপুর রাজ্য জাতিগত সংঘাতের কবলে থাকায় এবং মিয়ানমার গৃহযুদ্ধে জর্জরিত হওয়ায় অস্ত্র চোরাচালানও বাড়ছে।
অবৈধ পণ্য, মাদক এবং অস্ত্রের এই ব্যাপক প্রবাহের কারণে অনেকেই মনে করেন কাঁটাতারের বেড়া কার্যকর সমাধান। বিশেষ করে, ভারতীয় নিরাপত্তা কর্মীরা এই পাহাড়ি, অরক্ষিত সীমান্তে টহল দিতে ক্লান্ত। ভারত ও মিয়ানমারের মধ্যবর্তী সীমান্ত এলাকায় ভারতীয় আধা-সামরিক বাহিনী বিদ্রোহ দমনের মূল দায়িত্ব পালনের কারণে এমনিতেই চাপে থাকে। চোরাচালান দমনের দায়িত্বকে তারা প্রায়শই বাড়তি বোঝা মনে করে। তবে অনেকেই স্বীকার করেছেন, শুধু অরক্ষিত সীমান্তই নয়, বরং ভারতীয় রাষ্ট্রীয় পর্যায় থেকে দুর্নীতির ব্যাপকতাও এই অবৈধ ব্যবসাকে আরও সহজ করে তুলেছে।
ভারত-মিয়ানমার সীমান্তে রাষ্ট্র বনাম চোরাকারবারির সাধারণ ধারণার বাইরেও একটি জটিল ও প্রায়শই সহজীবী সম্পর্ক বিদ্যমান। এটি বৈধ ও অবৈধ উভয় পণ্যের চাহিদার দ্বারা চালিত। অনেকেই এই পণ্য চলাচলের সুবিধা নিয়ে অর্থোপার্জন করে থাকে। এমনকি কেউ কেউ ঘুষ সংগ্রহের সুবিধার জন্য মোটা অঙ্কের অর্থ ব্যয় করে সরকারি পদও কিনে থাকে। ফলে, সীমান্তে বেড়া দিলেই এই দুর্নীতি দূর হবে না। বরং এর ফলে কারা সুবিধা পাবে আর কারা পাবে না, কেবল সেই সমীকরণ পরিবর্তিত হবে।
বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চলে চোরাচালান নিয়ে গবেষণায় দেখা গেছে, মাদক ও অন্যান্য পণ্যের চোরাচালান প্রায়শই রাষ্ট্রীয় হর্তাকর্তারাই নিয়ন্ত্রণ করে। তবে দেশভেদে এর আনুষ্ঠানিকতা ও প্রয়োগের মাত্রাও ভিন্ন ভিন্ন হতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় কিছু চোরাচালান পথকে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ মৌন অনুমোদন দিয়েছে। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ চোরাচালানকারীদের সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক চুক্তির ওপর নির্ভর করে। এর মাধ্যমে তারা নিজেদের আয় বাড়াতে ও অস্থির অঞ্চলগুলোতে নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখতে চায়।
একইভাবে, উত্তর আফ্রিকায় রাষ্ট্রগুলো প্রায়শই নির্দিষ্ট কিছু চোরাচালান কার্যকলাপ মেনে নিচ্ছে। তারা বিভিন্ন অনানুষ্ঠানিক ব্যবস্থার মাধ্যমে বৃহৎ চোরাচালান অর্থনীতিকে তাদের বৃহত্তর স্বার্থের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করেছে। এই অভিজ্ঞতাগুলো থেকে বোঝা যায় যে, বেড়ার মতো সীমান্ত সুরক্ষা ব্যবস্থা চোরাচালান নেটওয়ার্কগুলোকে ব্যাহত করে না, বরং সেগুলো পুনর্বিন্যাস করে। এর ফলে, আরও সংগঠিত ও সুসংযুক্ত ‘খেলোয়াড়দের’ ক্ষমতা সুসংহত হতে পারে। অন্যদিকে, ছোট ও কম সম্পদশালী অংশগ্রহণকারীরা কোণঠাসা হয়ে পড়ে।
আর হয়তো সে কারণেই (সাক্ষাৎকারে) ভারত-মিয়ানমার সীমান্তের এক সুপ্রতিষ্ঠিত চোরাকারবারিকে বেড়া তাদের বিভিন্ন বড় আকারের কার্যক্রমে কতটা প্রভাব ফেলবে, তা নিয়ে খুব বেশি উদ্বিগ্ন বলে মনে হয়নি। সীমান্ত এলাকায় অভিযান তদারককারী ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর এক সদস্য, ‘কোটি কোটি টাকা উপার্জনকারী বড় চোরাকারবারিদের ক্ষেত্রে কাঁটাতারের বেড়ার মতো তুচ্ছ জিনিস কোনো বাধাই তৈরি করতে পারবে না।’
তবে ছোটখাটো অনানুষ্ঠানিক ব্যবসায়ীদের জন্য এটি ভিন্ন ব্যাপার হতে পারে। ভারত-মিয়ানমার সীমান্তের এক ছোট চোরাকারবারি জোর দিয়ে বলেছেন, ‘ছোট ব্যবসায়ীদের জন্য, বেড়া না থাকা সব সময়ই ভালো।’ অন্য এক স্থানীয় ব্যবসায়ী ব্যাখ্যা করেছেন, ‘স্থানীয়রা সব সময় তাদের ব্যবসা অনানুষ্ঠানিকভাবেই করবে।’ সীমান্ত অঞ্চলে গভীর সাংস্কৃতিক এবং আত্মীয়তার বন্ধনের কথা উল্লেখ করে তিনি আরও বলেছেন, একটি বেড়ার কারণে ‘সামাজিক বন্ধন ভেঙে যাবে। তারপর, অর্থনৈতিকভাবেও।’ ব্যবসায়ীদের মধ্যে যারা বেশি আশাবাদী, তারা সরকারের কাছ থেকে কিছুটা বাস্তববাদিতা আশা করেন। এক সীমান্ত ব্যবসায়ী বলেন, ‘তারা (সরকার) বোঝে যে ছোট ব্যবসায়ীদের টিকে থাকতে হবে’, যা থেকে বোঝা যায় যে, প্রস্তাবিত বেড়া সত্ত্বেও তিনি কিছুটা অস্পষ্টতা, আলোচনা এবং বোঝাপড়া অব্যাহত থাকার আশা করছেন।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিশ্বজুড়ে সীমান্ত অবকাঠামো বাড়ছে। বিভিন্ন দেশ ও সীমান্তের গবেষণা থেকে জানা গেছে, কাঁটাতারের বেড়ার মতো অবকাঠামো চোরাচালানের খরচ বাড়িয়ে দেয়। এই খরচ হয়—পণ্য সামগ্রী বেড়ার ওপার থেকে আনার প্রযুক্তিগত ব্যয়, অথবা নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সম্পর্কের মাধ্যমে এটি পারাপার করার ব্যয়ে।
অস্ত্র বা মাদক ব্যবসায় জড়িত উচ্চ পুঁজির চোরাচালান নেটওয়ার্কগুলোর জন্য এই ব্যয় সামলানো তুলনামূলকভাবে সহজ। এটি তাদের বিশেষীকরণ বা একে অপরের সঙ্গে সহযোগিতার জন্য উৎসাহিত করতে পারে। অন্যদিকে, সীমান্ত অঞ্চলের ছোটখাটো চোরাচালানিরা—যারা সাধারণত বৈধ পণ্য ও খাদ্যদ্রব্যের ব্যবসা করে—তাদের জন্য এই কাঁটাতারের বেড়া এক অসাধ্য বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে।
ঐতিহাসিকভাবে, ভারত ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলো মধ্যে পণ্য, মানুষ এবং ধারণা—যার মধ্যে হিন্দু ও বৌদ্ধধর্মের মতো ধর্মও অন্তর্ভুক্ত—আদান-প্রদান প্রাচীনকাল থেকেই বিদ্যমান। এখন, নরেন্দ্র মোদির সরকারের শুরু করা ‘অ্যাক্ট ইস্ট’ নীতি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদার করতে, কৌশলগত অংশীদারত্ব বাড়াতে এবং সাংস্কৃতিক বিনিময়কে উৎসাহিত করতে চাইছে। এই প্রেক্ষাপটে, কাঁটাতারের বেড়ার ধারণা যা স্থানীয় সম্প্রদায়গুলোকে নানা মাত্রিকভাবে বিভক্ত করে এবং আঞ্চলিক সংহতিকে ক্ষতিগ্রস্ত করে তা বেশ বিভ্রান্তিকর। যুক্তি দেওয়া হচ্ছে যে, বেড়া সীমান্তকে নিরাপদ করবে এবং এর ফলে আরও আনুষ্ঠানিক বা বৈধ বাণিজ্য বৃদ্ধি পাবে।
সীমান্তে বৈধ পণ্যের ব্যবসা করা কিছু ব্যবসায়ী এর সঙ্গে একমত। এক ব্যবসায়ী আশা প্রকাশ করে বলেছেন, ‘আমরা প্রথমে হয়তো ক্ষতিগ্রস্ত হব, কিন্তু দিন শেষে বেড়া বৈধ ব্যবসাকে উৎসাহিত করবে।’ তিনি বিশ্বাস করেন, ‘এই বেড়া মাদক সমস্যা নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করবে এবং একই সঙ্গে বৈধ ব্যবসাকে চলতে দেবে।’ কিন্তু ইতিহাস ও বাস্তবতা তা বলে না।
অনুবাদ করেছেন আজকের পত্রিকার সহসম্পাদক আব্দুর রহমান

ভেনেজুয়েলার চলমান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকট ধীরে ধীরে একটি আঞ্চলিক সমস্যা থেকে বৈশ্বিক ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনায় রূপ নিচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের কড়া অবস্থান এবং সম্ভাব্য সামরিক হস্তক্ষেপের ইঙ্গিত এই সংকটকে আরও গভীর করেছে।
২ দিন আগে
বর্তমানে ভেনেজুয়েলার অধিকাংশ তেল মজুত রয়েছে দেশটির পূর্বাঞ্চলের ওরিনোকো বেল্টে। প্রায় ৫৫ হাজার বর্গকিলোমিটার এলাকাজুড়ে বিস্তৃত এই অঞ্চলে বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি তেল মজুত রয়েছে।
৫ দিন আগে
নব্বইয়ের দশকে যখন ইউক্রেন সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে এক নব্য পুঁজিবাদী রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করছিল, তখন তাদের কাছে চীনের চাহিদা ছিল শুধু আকরিক লোহা, শস্য আর সূর্যমুখী তেল। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই সমীকরণ আমূল বদলে গেছে।
৫ দিন আগে
ইমরান খানকে প্রতিদিন ২২ ঘণ্টা একা একটি সেলে রাখা হচ্ছে। সার্বক্ষণিক নজরদারির মধ্যে থাকা ওই কক্ষে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগও নেই। পরিবারের অভিযোগ, পাকিস্তানের সামরিক নেতৃত্ব ইচ্ছাকৃতভাবে ইমরান খানের মনোবল ভেঙে দিতে চাইছে।
৯ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

ভেনেজুয়েলার চলমান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকট ধীরে ধীরে একটি আঞ্চলিক সমস্যা থেকে বৈশ্বিক ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনায় রূপ নিচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের কড়া অবস্থান এবং সম্ভাব্য সামরিক হস্তক্ষেপের ইঙ্গিত এই সংকটকে আরও গভীর করেছে। এই প্রেক্ষাপটে ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিয়ো লুলা দা সিলভা ভেনেজুয়েলায় মার্কিন সামরিক হস্তক্ষেপ মানবিক বিপর্যয় ডেকে আনবে বলে সতর্ক করেছেন। তাঁর মতে, এই সতর্কতা শুধু ভেনেজুয়েলাকে ঘিরে নয়—পুরো দক্ষিণ আমেরিকার ভবিষ্যৎ নিরাপত্তার প্রশ্নও তুলে ধরছে।
ভেনেজুয়েলার সংকটের মূল কারণ দেশটির দীর্ঘস্থায়ী রাজনৈতিক অস্থিরতা, বিতর্কিত নির্বাচন, অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনা এবং মানবাধিকার পরিস্থিতি। প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর সরকারকে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের একটি অংশ কর্তৃত্ববাদী ও অগণতান্ত্রিক বলে মনে করে। এর জবাবে ওয়াশিংটন একের পর এক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। এসব নিষেধাজ্ঞার মূল লক্ষ্য ভেনেজুয়েলার তেল রপ্তানি, যা দেশটির আয়ের প্রধান উৎস।
ভেনেজুয়েলা বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ তেল মজুতের অধিকারী। ফলে তাদের তেল শুধু অর্থনীতি নয়, কূটনীতিরও কেন্দ্রে অবস্থান করছে। যুক্তরাষ্ট্র মনে করে, ভেনেজুয়েলার তেল বিক্রির পথ বন্ধ করতে পারলে মাদুরো সরকার দুর্বল হবে। এই লক্ষ্যেই সাম্প্রতিক সময়ে দেশটির নিষেধাজ্ঞাভুক্ত তেল ট্যাংকারগুলোকে অবরোধের মতো কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে মার্কিন বাহিনী। তবে এই পদক্ষেপকে সরাসরি যুদ্ধের দিকে ঠেলে দেওয়ার ঝুঁকি হিসেবে দেখছেন দক্ষিণ আমেরিকার অনেক নেতা।
ব্রাজিল ও মেক্সিকোর মতো লাতিন শক্তিগুলো এই কারণেই যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক হস্তক্ষেপের সম্ভাবনার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন, দক্ষিণ আমেরিকার ইতিহাস বহিঃশক্তির সামরিক হস্তক্ষেপের তিক্ত অভিজ্ঞতায় ভরা। ফকল্যান্ড যুদ্ধের চার দশক পর আবারও কোনো অন্য মহাদেশীয় শক্তির সামরিক উপস্থিতি এই মহাদেশকে অস্থিতিশীল করে তুলতে পারে—এমন আশঙ্কাই তিনি প্রকাশ করেছেন।
এদিকে রাশিয়া ও চীন ভেনেজুয়েলার সরকারের প্রতি সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। রাশিয়ার ক্ষেত্রে এটি যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব মোকাবিলার কৌশল, আর চীনের জন্য এটি তেল ও ঋণনির্ভর অর্থনৈতিক স্বার্থের প্রশ্ন। ফলে ভেনেজুয়েলা ক্রমেই যুক্তরাষ্ট্র বনাম রাশিয়া–চীন প্রভাব বিস্তারের আরেকটি ময়দানে পরিণত হচ্ছে।
‘মার্কোসুর’ সম্মেলনে লাতিন আমেরিকার দেশগুলো যে যৌথ অবস্থান নিয়েছে, তা এই বাস্তবতাকেই প্রতিফলিত করে। তারা ভেনেজুয়েলায় গণতন্ত্র ও মানবাধিকার রক্ষার কথা বলেছে, তবে স্পষ্টভাবে সামরিক পথ প্রত্যাখ্যান করেছে। তাদের মতে, সংকটের সমাধান হতে পারে কেবল সংলাপ ও শান্তিপূর্ণ কূটনীতির মাধ্যমে।
সব মিলিয়ে ভেনেজুয়েলার সংকট এখন আর একটি দেশের অভ্যন্তরীণ সমস্যা নয়। তেল, আদর্শিক দ্বন্দ্ব, আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও বৈশ্বিক ক্ষমতার লড়াই—সবকিছু মিলিয়ে এটি আন্তর্জাতিক রাজনীতির এক স্পর্শকাতর সংঘাতক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে।

ভেনেজুয়েলার চলমান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকট ধীরে ধীরে একটি আঞ্চলিক সমস্যা থেকে বৈশ্বিক ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনায় রূপ নিচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের কড়া অবস্থান এবং সম্ভাব্য সামরিক হস্তক্ষেপের ইঙ্গিত এই সংকটকে আরও গভীর করেছে। এই প্রেক্ষাপটে ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিয়ো লুলা দা সিলভা ভেনেজুয়েলায় মার্কিন সামরিক হস্তক্ষেপ মানবিক বিপর্যয় ডেকে আনবে বলে সতর্ক করেছেন। তাঁর মতে, এই সতর্কতা শুধু ভেনেজুয়েলাকে ঘিরে নয়—পুরো দক্ষিণ আমেরিকার ভবিষ্যৎ নিরাপত্তার প্রশ্নও তুলে ধরছে।
ভেনেজুয়েলার সংকটের মূল কারণ দেশটির দীর্ঘস্থায়ী রাজনৈতিক অস্থিরতা, বিতর্কিত নির্বাচন, অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনা এবং মানবাধিকার পরিস্থিতি। প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর সরকারকে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের একটি অংশ কর্তৃত্ববাদী ও অগণতান্ত্রিক বলে মনে করে। এর জবাবে ওয়াশিংটন একের পর এক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। এসব নিষেধাজ্ঞার মূল লক্ষ্য ভেনেজুয়েলার তেল রপ্তানি, যা দেশটির আয়ের প্রধান উৎস।
ভেনেজুয়েলা বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ তেল মজুতের অধিকারী। ফলে তাদের তেল শুধু অর্থনীতি নয়, কূটনীতিরও কেন্দ্রে অবস্থান করছে। যুক্তরাষ্ট্র মনে করে, ভেনেজুয়েলার তেল বিক্রির পথ বন্ধ করতে পারলে মাদুরো সরকার দুর্বল হবে। এই লক্ষ্যেই সাম্প্রতিক সময়ে দেশটির নিষেধাজ্ঞাভুক্ত তেল ট্যাংকারগুলোকে অবরোধের মতো কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে মার্কিন বাহিনী। তবে এই পদক্ষেপকে সরাসরি যুদ্ধের দিকে ঠেলে দেওয়ার ঝুঁকি হিসেবে দেখছেন দক্ষিণ আমেরিকার অনেক নেতা।
ব্রাজিল ও মেক্সিকোর মতো লাতিন শক্তিগুলো এই কারণেই যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক হস্তক্ষেপের সম্ভাবনার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন, দক্ষিণ আমেরিকার ইতিহাস বহিঃশক্তির সামরিক হস্তক্ষেপের তিক্ত অভিজ্ঞতায় ভরা। ফকল্যান্ড যুদ্ধের চার দশক পর আবারও কোনো অন্য মহাদেশীয় শক্তির সামরিক উপস্থিতি এই মহাদেশকে অস্থিতিশীল করে তুলতে পারে—এমন আশঙ্কাই তিনি প্রকাশ করেছেন।
এদিকে রাশিয়া ও চীন ভেনেজুয়েলার সরকারের প্রতি সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। রাশিয়ার ক্ষেত্রে এটি যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব মোকাবিলার কৌশল, আর চীনের জন্য এটি তেল ও ঋণনির্ভর অর্থনৈতিক স্বার্থের প্রশ্ন। ফলে ভেনেজুয়েলা ক্রমেই যুক্তরাষ্ট্র বনাম রাশিয়া–চীন প্রভাব বিস্তারের আরেকটি ময়দানে পরিণত হচ্ছে।
‘মার্কোসুর’ সম্মেলনে লাতিন আমেরিকার দেশগুলো যে যৌথ অবস্থান নিয়েছে, তা এই বাস্তবতাকেই প্রতিফলিত করে। তারা ভেনেজুয়েলায় গণতন্ত্র ও মানবাধিকার রক্ষার কথা বলেছে, তবে স্পষ্টভাবে সামরিক পথ প্রত্যাখ্যান করেছে। তাদের মতে, সংকটের সমাধান হতে পারে কেবল সংলাপ ও শান্তিপূর্ণ কূটনীতির মাধ্যমে।
সব মিলিয়ে ভেনেজুয়েলার সংকট এখন আর একটি দেশের অভ্যন্তরীণ সমস্যা নয়। তেল, আদর্শিক দ্বন্দ্ব, আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও বৈশ্বিক ক্ষমতার লড়াই—সবকিছু মিলিয়ে এটি আন্তর্জাতিক রাজনীতির এক স্পর্শকাতর সংঘাতক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে।

ভারত-মিয়ানমার সীমান্তে প্রস্তাবিত ১ হাজার মাইল দীর্ঘ বেড়া সেখানকার সাপ্তাহিক আয়োজন, ব্যবসা-বাণিজ্য, অভিবাসন, ঐতিহাসিক ও অন্যান্য সাংস্কৃতিক সম্পর্ক ব্যাহত করার হুমকি দিচ্ছে। এসবই করা হচ্ছে নিরাপত্তার নামে। ভারত সরকার মিয়ানমারের কেন্দ্রীয় সরকারের তেমন কোনো সম্পৃক্ততা ছাড়াই এই পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে।
০৪ জুন ২০২৫
বর্তমানে ভেনেজুয়েলার অধিকাংশ তেল মজুত রয়েছে দেশটির পূর্বাঞ্চলের ওরিনোকো বেল্টে। প্রায় ৫৫ হাজার বর্গকিলোমিটার এলাকাজুড়ে বিস্তৃত এই অঞ্চলে বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি তেল মজুত রয়েছে।
৫ দিন আগে
নব্বইয়ের দশকে যখন ইউক্রেন সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে এক নব্য পুঁজিবাদী রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করছিল, তখন তাদের কাছে চীনের চাহিদা ছিল শুধু আকরিক লোহা, শস্য আর সূর্যমুখী তেল। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই সমীকরণ আমূল বদলে গেছে।
৫ দিন আগে
ইমরান খানকে প্রতিদিন ২২ ঘণ্টা একা একটি সেলে রাখা হচ্ছে। সার্বক্ষণিক নজরদারির মধ্যে থাকা ওই কক্ষে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগও নেই। পরিবারের অভিযোগ, পাকিস্তানের সামরিক নেতৃত্ব ইচ্ছাকৃতভাবে ইমরান খানের মনোবল ভেঙে দিতে চাইছে।
৯ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

ভেনেজুয়েলার তেল যুক্তরাষ্ট্রের সম্পদ—এমন মন্তব্য করে নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন মার্কিন হোমল্যান্ড সিকিউরিটি অ্যাডভাইজার ও প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ সহযোগী স্টিফেন মিলার।
গতকাল বুধবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে মিলার বলেন, ভেনেজুয়েলার তেলশিল্প গড়ে উঠেছে ‘আমেরিকার শ্রম, উদ্ভাবন ও ঘামের’ ওপর আর সেটা রাষ্ট্রায়ত্ত করে নেওয়াকে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সম্পদের সবচেয়ে বড় ‘চুরি’ বলে অভিহিত করেন। মিলারের এই মন্তব্যের ঠিক এক দিন আগে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে ঘোষণা দেন—ভেনেজুয়েলায় প্রবেশ ও সেখান থেকে বের হওয়া সব তেলবাহী জাহাজের ওপর ‘সম্পূর্ণ ও সর্বাত্মক অবরোধ’ আরোপ করা হচ্ছে।
বর্তমানে ভেনেজুয়েলার উপকূলের কাছাকাছি কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে বড় সামরিক উপস্থিতি গড়ে তুলেছে যুক্তরাষ্ট্র। গত সেপ্টেম্বর থেকে মাদক পাচারের অভিযোগে বেশ কয়েকটি নৌযানে হামলা চালিয়েছে মার্কিন বাহিনী। এতে এখন পর্যন্ত অন্তত ৯০ জন নিহত হয়েছেন। ট্রাম্প প্রশাসন দাবি করছে, এসব নৌকা যুক্তরাষ্ট্রে বিপুল পরিমাণ মাদক পাচার করছিল এবং তা মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি। তবে এই অভিযোগের পক্ষে কোনো প্রমাণ তারা দেয়নি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কোকেনসহ মাদক যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছানোর প্রধান উৎস ভেনেজুয়েলা নয়। ফলে অনেকের মতে, এর পেছনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রকৃত লক্ষ্য ভেনেজুয়েলার তেল নিয়ন্ত্রণ এবং নিকোলাস মাদুরোকে ক্ষমতা থেকে সরানো।
মিলার কী বলেছেন
গতকাল বুধবার এক্সে দেওয়া পোস্টে স্টিফেন মিলার লেখেন, ‘আমেরিকার শ্রম, মেধা ও পরিশ্রমই ভেনেজুয়েলার তেলশিল্প সৃষ্টি করেছে। এই শিল্প জোরপূর্বক রাষ্ট্রায়ত্ত করা ছিল যুক্তরাষ্ট্রের সম্পদ ও সম্পত্তির ইতিহাসের সবচেয়ে বড় চুরি। আর সেই লুণ্ঠিত সম্পদ সন্ত্রাসবাদে অর্থ জোগাতে এবং আমাদের দেশের রাস্তায় খুনি, ভাড়াটে যোদ্ধা ও মাদক ছড়িয়ে দিতে ব্যবহৃত হয়েছে।’
মিলার তাঁর পোস্টে ট্রাম্পের আগের একটি বক্তব্যও যুক্ত করেন, যেখানে ট্রাম্প ভেনেজুয়েলার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের তেল, ভূমি ও অন্যান্য সম্পদ ‘চুরি’ করার অভিযোগ তোলেন। ওই পোস্টে ট্রাম্প ভেনেজুয়েলার সরকারকে ‘বিদেশি সন্ত্রাসী সংগঠন’ ঘোষণা করেন এবং দেশটির তেল ট্যাংকারগুলোর ওপর সম্পূর্ণ অবরোধের নির্দেশ দেন।
মিলার আরও বলেন, ভেনেজুয়েলা থেকে আসা অভিবাসীদের দ্রুত যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফেরত পাঠানো হবে এবং সব ‘চুরি হওয়া সম্পদ’ অবিলম্বে যুক্তরাষ্ট্রকে ফিরিয়ে দিতে হবে।
ভেনেজুয়েলায় কী পরিমাণ তেল রয়েছে
বর্তমানে ভেনেজুয়েলার অধিকাংশ তেল মজুত রয়েছে দেশটির পূর্বাঞ্চলের ওরিনোকো বেল্টে। প্রায় ৫৫ হাজার বর্গকিলোমিটার এলাকাজুড়ে বিস্তৃত এই অঞ্চলেই বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি তেল মজুত রয়েছে।
২০২৩ সালের হিসাবে ভেনেজুয়েলার তেল মজুতের পরিমাণ প্রায় ৩০৩ বিলিয়ন ব্যারেল—যা বিশ্বে সর্বাধিক। তবে উৎপাদন ও রপ্তানি কমে যাওয়ায় দেশটি এখন তেল থেকে আগের মতো আয় করতে পারছে না।
অবজারভেটরি অব ইকোনমিক কমপ্লেক্সের (ওইসি) তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালে ভেনেজুয়েলার অপরিশোধিত তেল রপ্তানির মূল্য ছিল মাত্র ৪ দশমিক শূন্য ৫ বিলিয়ন ডলার। একই সময়ে সৌদি আরব রপ্তানি করেছে ১৮১ বিলিয়ন ডলার, যুক্তরাষ্ট্র ১২৫ বিলিয়ন ডলার ও রাশিয়া ১২২ বিলিয়ন ডলার।
যুক্তরাষ্ট্র কেন ভেনেজুয়েলার তেলের ওপর দাবি করছে
২০ শতকের শুরুর দিকে ভেনেজুয়েলায় তেল অনুসন্ধান শুরু করে মার্কিন কোম্পানিগুলো। ১৯২২ সালে ভেনেজুয়েলার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের মারাকাইবো হ্রদ এলাকায় প্রথম বড় তেলক্ষেত্র আবিষ্কার করে রয়্যাল ডাচ শেল।
এরপর যুক্তরাষ্ট্র ভেনেজুয়েলার তেল উত্তোলন ও উন্নয়নে বড় ধরনের বিনিয়োগ শুরু করে। স্ট্যান্ডার্ড অয়েলের মতো কোম্পানিগুলো চুক্তিভিত্তিকভাবে কাজ করে ভেনেজুয়েলাকে যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ তেল সরবরাহকারীতে পরিণত করে।
১৯৬০ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর ওপেক গঠনের সময় ভেনেজুয়েলা ছিল এর প্রতিষ্ঠাতা সদস্য। তবে ১৯৭৬ সালে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট কার্লোস আন্দ্রেস পেরেজ তেলশিল্প রাষ্ট্রায়ত্ত করেন এবং পেট্রোলিওস দে ভেনেজুয়েলা (পিডিভিএসএ) প্রতিষ্ঠা করেন।
পরে হুগো শাভেজ ক্ষমতায় এসে সব বিদেশি তেলসম্পদ জাতীয়করণ করেন। কিন্তু রাজনৈতিক লক্ষ্যকে অগ্রাধিকার দেওয়া, অব্যবস্থাপনা ও বিনিয়োগের অভাবে তেল উৎপাদন ক্রমেই কমতে থাকে।
কবে থেকে নিষেধাজ্ঞা
২০০৫ সালে যুক্তরাষ্ট্র প্রথম ভেনেজুয়েলার তেলশিল্পের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। পরে নিকোলাস মাদুরোর শাসনামলে ২০১৭ ও ২০১৯ সালে নিষেধাজ্ঞা আরও কঠোর করা হয়। এই নিষেধাজ্ঞার ফলে ভেনেজুয়েলার তেল রপ্তানি প্রায় বন্ধ হয়ে যায় এবং দেশটি চীন, ভারত ও কিউবার দিকে ঝুঁকে পড়ে।
ভেনেজুয়েলার তেল আমাদের সম্পদ—যুক্তরাষ্ট্রের এমন দাবির কি কোনো আইনি ভিত্তি আছে
না, নেই। আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী, একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র তার ভূখণ্ডের প্রাকৃতিক সম্পদের মালিক। এই নীতির নাম ‘স্থায়ী প্রাকৃতিক সম্পদে সার্বভৌম অধিকার’ (Permanent Sovereignty over Natural Resources)।
১৯৬২ সালে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের একটি প্রস্তাবে এই নীতি স্বীকৃতি পায়। সে অনুযায়ী, ভেনেজুয়েলার তেল সম্পূর্ণভাবে ভেনেজুয়েলারই। যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে এ তেলের ওপর দাবি জানানো আন্তর্জাতিক আইনের পরিপন্থী।
তাহলে শেভরন কেন কাজ করছে
যুক্তরাষ্ট্রের কঠোর নিষেধাজ্ঞার মধ্যেও হিউস্টনভিত্তিক তেল কোম্পানি শেভরন ভেনেজুয়েলায় কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। সাধারণত বিদেশি কোম্পানিগুলো ভেনেজুয়েলায় সরাসরি তেলক্ষেত্রের মালিক হতে পারে না। যুক্তরাষ্ট্রের শেভরন পেট্রোলিওস দে ভেনেজুয়েলার (পিডিভিএসএ) সঙ্গে যৌথভাবে তেল উৎপাদন করে এবং উৎপাদিত তেলের একটি অংশ পায়।
২০২২ সালে জো বাইডেন প্রশাসন শেভরনকে বিশেষ লাইসেন্স দেয়, যাতে তারা নিষেধাজ্ঞার বাইরে থেকে কাজ করতে পারে। চলতি বছর ট্রাম্প প্রশাসন সেই নিষেধাজ্ঞা ছাড় নবায়ন করেছে।
শেভরন দীর্ঘদিন ধরে ভেনেজুয়েলায় কার্যক্রম চালাচ্ছে এবং সেখানে তাদের বিপুল সম্পদ রয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি সরে গেলে সেই সম্পদ রাষ্ট্রের হাতে চলে যাওয়ার ঝুঁকি রয়েছে—যা অতীতে এক্সন, কারগিল ও হিলটনের মতো কোম্পানির ক্ষেত্রে ঘটেছে।
ট্রাম্প প্রশাসন মূলত ঐতিহাসিকভাবে মার্কিন কোম্পানিগুলোর করা বিনিয়োগ ও পরে তা বাজেয়াপ্ত হওয়াকে কেন্দ্র করে এই ‘মালিকানা’ দাবি করছে। তবে বর্তমান বিশ্বব্যবস্থায় ও আন্তর্জাতিক আইনে কোনো দেশের সম্পদ অন্য দেশের মালিকানাধীন হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। এটি মূলত ভেনেজুয়েলায় শাসনব্যবস্থা পরিবর্তন ও তেলের ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার একটি ভূরাজনৈতিক কৌশল।
আল-জাজিরা থেকে অনুবাদ করেছেন জগৎপতি বর্মা

ভেনেজুয়েলার তেল যুক্তরাষ্ট্রের সম্পদ—এমন মন্তব্য করে নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন মার্কিন হোমল্যান্ড সিকিউরিটি অ্যাডভাইজার ও প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ সহযোগী স্টিফেন মিলার।
গতকাল বুধবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে মিলার বলেন, ভেনেজুয়েলার তেলশিল্প গড়ে উঠেছে ‘আমেরিকার শ্রম, উদ্ভাবন ও ঘামের’ ওপর আর সেটা রাষ্ট্রায়ত্ত করে নেওয়াকে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সম্পদের সবচেয়ে বড় ‘চুরি’ বলে অভিহিত করেন। মিলারের এই মন্তব্যের ঠিক এক দিন আগে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে ঘোষণা দেন—ভেনেজুয়েলায় প্রবেশ ও সেখান থেকে বের হওয়া সব তেলবাহী জাহাজের ওপর ‘সম্পূর্ণ ও সর্বাত্মক অবরোধ’ আরোপ করা হচ্ছে।
বর্তমানে ভেনেজুয়েলার উপকূলের কাছাকাছি কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে বড় সামরিক উপস্থিতি গড়ে তুলেছে যুক্তরাষ্ট্র। গত সেপ্টেম্বর থেকে মাদক পাচারের অভিযোগে বেশ কয়েকটি নৌযানে হামলা চালিয়েছে মার্কিন বাহিনী। এতে এখন পর্যন্ত অন্তত ৯০ জন নিহত হয়েছেন। ট্রাম্প প্রশাসন দাবি করছে, এসব নৌকা যুক্তরাষ্ট্রে বিপুল পরিমাণ মাদক পাচার করছিল এবং তা মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি। তবে এই অভিযোগের পক্ষে কোনো প্রমাণ তারা দেয়নি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কোকেনসহ মাদক যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছানোর প্রধান উৎস ভেনেজুয়েলা নয়। ফলে অনেকের মতে, এর পেছনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রকৃত লক্ষ্য ভেনেজুয়েলার তেল নিয়ন্ত্রণ এবং নিকোলাস মাদুরোকে ক্ষমতা থেকে সরানো।
মিলার কী বলেছেন
গতকাল বুধবার এক্সে দেওয়া পোস্টে স্টিফেন মিলার লেখেন, ‘আমেরিকার শ্রম, মেধা ও পরিশ্রমই ভেনেজুয়েলার তেলশিল্প সৃষ্টি করেছে। এই শিল্প জোরপূর্বক রাষ্ট্রায়ত্ত করা ছিল যুক্তরাষ্ট্রের সম্পদ ও সম্পত্তির ইতিহাসের সবচেয়ে বড় চুরি। আর সেই লুণ্ঠিত সম্পদ সন্ত্রাসবাদে অর্থ জোগাতে এবং আমাদের দেশের রাস্তায় খুনি, ভাড়াটে যোদ্ধা ও মাদক ছড়িয়ে দিতে ব্যবহৃত হয়েছে।’
মিলার তাঁর পোস্টে ট্রাম্পের আগের একটি বক্তব্যও যুক্ত করেন, যেখানে ট্রাম্প ভেনেজুয়েলার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের তেল, ভূমি ও অন্যান্য সম্পদ ‘চুরি’ করার অভিযোগ তোলেন। ওই পোস্টে ট্রাম্প ভেনেজুয়েলার সরকারকে ‘বিদেশি সন্ত্রাসী সংগঠন’ ঘোষণা করেন এবং দেশটির তেল ট্যাংকারগুলোর ওপর সম্পূর্ণ অবরোধের নির্দেশ দেন।
মিলার আরও বলেন, ভেনেজুয়েলা থেকে আসা অভিবাসীদের দ্রুত যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফেরত পাঠানো হবে এবং সব ‘চুরি হওয়া সম্পদ’ অবিলম্বে যুক্তরাষ্ট্রকে ফিরিয়ে দিতে হবে।
ভেনেজুয়েলায় কী পরিমাণ তেল রয়েছে
বর্তমানে ভেনেজুয়েলার অধিকাংশ তেল মজুত রয়েছে দেশটির পূর্বাঞ্চলের ওরিনোকো বেল্টে। প্রায় ৫৫ হাজার বর্গকিলোমিটার এলাকাজুড়ে বিস্তৃত এই অঞ্চলেই বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি তেল মজুত রয়েছে।
২০২৩ সালের হিসাবে ভেনেজুয়েলার তেল মজুতের পরিমাণ প্রায় ৩০৩ বিলিয়ন ব্যারেল—যা বিশ্বে সর্বাধিক। তবে উৎপাদন ও রপ্তানি কমে যাওয়ায় দেশটি এখন তেল থেকে আগের মতো আয় করতে পারছে না।
অবজারভেটরি অব ইকোনমিক কমপ্লেক্সের (ওইসি) তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালে ভেনেজুয়েলার অপরিশোধিত তেল রপ্তানির মূল্য ছিল মাত্র ৪ দশমিক শূন্য ৫ বিলিয়ন ডলার। একই সময়ে সৌদি আরব রপ্তানি করেছে ১৮১ বিলিয়ন ডলার, যুক্তরাষ্ট্র ১২৫ বিলিয়ন ডলার ও রাশিয়া ১২২ বিলিয়ন ডলার।
যুক্তরাষ্ট্র কেন ভেনেজুয়েলার তেলের ওপর দাবি করছে
২০ শতকের শুরুর দিকে ভেনেজুয়েলায় তেল অনুসন্ধান শুরু করে মার্কিন কোম্পানিগুলো। ১৯২২ সালে ভেনেজুয়েলার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের মারাকাইবো হ্রদ এলাকায় প্রথম বড় তেলক্ষেত্র আবিষ্কার করে রয়্যাল ডাচ শেল।
এরপর যুক্তরাষ্ট্র ভেনেজুয়েলার তেল উত্তোলন ও উন্নয়নে বড় ধরনের বিনিয়োগ শুরু করে। স্ট্যান্ডার্ড অয়েলের মতো কোম্পানিগুলো চুক্তিভিত্তিকভাবে কাজ করে ভেনেজুয়েলাকে যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ তেল সরবরাহকারীতে পরিণত করে।
১৯৬০ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর ওপেক গঠনের সময় ভেনেজুয়েলা ছিল এর প্রতিষ্ঠাতা সদস্য। তবে ১৯৭৬ সালে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট কার্লোস আন্দ্রেস পেরেজ তেলশিল্প রাষ্ট্রায়ত্ত করেন এবং পেট্রোলিওস দে ভেনেজুয়েলা (পিডিভিএসএ) প্রতিষ্ঠা করেন।
পরে হুগো শাভেজ ক্ষমতায় এসে সব বিদেশি তেলসম্পদ জাতীয়করণ করেন। কিন্তু রাজনৈতিক লক্ষ্যকে অগ্রাধিকার দেওয়া, অব্যবস্থাপনা ও বিনিয়োগের অভাবে তেল উৎপাদন ক্রমেই কমতে থাকে।
কবে থেকে নিষেধাজ্ঞা
২০০৫ সালে যুক্তরাষ্ট্র প্রথম ভেনেজুয়েলার তেলশিল্পের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। পরে নিকোলাস মাদুরোর শাসনামলে ২০১৭ ও ২০১৯ সালে নিষেধাজ্ঞা আরও কঠোর করা হয়। এই নিষেধাজ্ঞার ফলে ভেনেজুয়েলার তেল রপ্তানি প্রায় বন্ধ হয়ে যায় এবং দেশটি চীন, ভারত ও কিউবার দিকে ঝুঁকে পড়ে।
ভেনেজুয়েলার তেল আমাদের সম্পদ—যুক্তরাষ্ট্রের এমন দাবির কি কোনো আইনি ভিত্তি আছে
না, নেই। আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী, একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র তার ভূখণ্ডের প্রাকৃতিক সম্পদের মালিক। এই নীতির নাম ‘স্থায়ী প্রাকৃতিক সম্পদে সার্বভৌম অধিকার’ (Permanent Sovereignty over Natural Resources)।
১৯৬২ সালে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের একটি প্রস্তাবে এই নীতি স্বীকৃতি পায়। সে অনুযায়ী, ভেনেজুয়েলার তেল সম্পূর্ণভাবে ভেনেজুয়েলারই। যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে এ তেলের ওপর দাবি জানানো আন্তর্জাতিক আইনের পরিপন্থী।
তাহলে শেভরন কেন কাজ করছে
যুক্তরাষ্ট্রের কঠোর নিষেধাজ্ঞার মধ্যেও হিউস্টনভিত্তিক তেল কোম্পানি শেভরন ভেনেজুয়েলায় কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। সাধারণত বিদেশি কোম্পানিগুলো ভেনেজুয়েলায় সরাসরি তেলক্ষেত্রের মালিক হতে পারে না। যুক্তরাষ্ট্রের শেভরন পেট্রোলিওস দে ভেনেজুয়েলার (পিডিভিএসএ) সঙ্গে যৌথভাবে তেল উৎপাদন করে এবং উৎপাদিত তেলের একটি অংশ পায়।
২০২২ সালে জো বাইডেন প্রশাসন শেভরনকে বিশেষ লাইসেন্স দেয়, যাতে তারা নিষেধাজ্ঞার বাইরে থেকে কাজ করতে পারে। চলতি বছর ট্রাম্প প্রশাসন সেই নিষেধাজ্ঞা ছাড় নবায়ন করেছে।
শেভরন দীর্ঘদিন ধরে ভেনেজুয়েলায় কার্যক্রম চালাচ্ছে এবং সেখানে তাদের বিপুল সম্পদ রয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি সরে গেলে সেই সম্পদ রাষ্ট্রের হাতে চলে যাওয়ার ঝুঁকি রয়েছে—যা অতীতে এক্সন, কারগিল ও হিলটনের মতো কোম্পানির ক্ষেত্রে ঘটেছে।
ট্রাম্প প্রশাসন মূলত ঐতিহাসিকভাবে মার্কিন কোম্পানিগুলোর করা বিনিয়োগ ও পরে তা বাজেয়াপ্ত হওয়াকে কেন্দ্র করে এই ‘মালিকানা’ দাবি করছে। তবে বর্তমান বিশ্বব্যবস্থায় ও আন্তর্জাতিক আইনে কোনো দেশের সম্পদ অন্য দেশের মালিকানাধীন হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। এটি মূলত ভেনেজুয়েলায় শাসনব্যবস্থা পরিবর্তন ও তেলের ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার একটি ভূরাজনৈতিক কৌশল।
আল-জাজিরা থেকে অনুবাদ করেছেন জগৎপতি বর্মা

ভারত-মিয়ানমার সীমান্তে প্রস্তাবিত ১ হাজার মাইল দীর্ঘ বেড়া সেখানকার সাপ্তাহিক আয়োজন, ব্যবসা-বাণিজ্য, অভিবাসন, ঐতিহাসিক ও অন্যান্য সাংস্কৃতিক সম্পর্ক ব্যাহত করার হুমকি দিচ্ছে। এসবই করা হচ্ছে নিরাপত্তার নামে। ভারত সরকার মিয়ানমারের কেন্দ্রীয় সরকারের তেমন কোনো সম্পৃক্ততা ছাড়াই এই পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে।
০৪ জুন ২০২৫
ভেনেজুয়েলার চলমান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকট ধীরে ধীরে একটি আঞ্চলিক সমস্যা থেকে বৈশ্বিক ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনায় রূপ নিচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের কড়া অবস্থান এবং সম্ভাব্য সামরিক হস্তক্ষেপের ইঙ্গিত এই সংকটকে আরও গভীর করেছে।
২ দিন আগে
নব্বইয়ের দশকে যখন ইউক্রেন সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে এক নব্য পুঁজিবাদী রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করছিল, তখন তাদের কাছে চীনের চাহিদা ছিল শুধু আকরিক লোহা, শস্য আর সূর্যমুখী তেল। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই সমীকরণ আমূল বদলে গেছে।
৫ দিন আগে
ইমরান খানকে প্রতিদিন ২২ ঘণ্টা একা একটি সেলে রাখা হচ্ছে। সার্বক্ষণিক নজরদারির মধ্যে থাকা ওই কক্ষে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগও নেই। পরিবারের অভিযোগ, পাকিস্তানের সামরিক নেতৃত্ব ইচ্ছাকৃতভাবে ইমরান খানের মনোবল ভেঙে দিতে চাইছে।
৯ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

নব্বইয়ের দশকে যখন ইউক্রেন সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে এক নব্য পুঁজিবাদী রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করছিল, তখন তাদের কাছে চীনের চাহিদা ছিল শুধু আকরিক লোহা, শস্য আর সূর্যমুখী তেল। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই সমীকরণ আমূল বদলে গেছে। সোভিয়েত আমলের পরিত্যক্ত সমরাস্ত্রের ভান্ডার থেকে শুরু করে আজকের আধুনিক ড্রোনের যুদ্ধক্ষেত্র—এই তিন দশকে ইউক্রেন ও চীনের সম্পর্ক এক অদ্ভুত ও জটিল আবর্তে ঘুরপাক খেয়েছে।
ইউক্রেনের সমরাস্ত্র ইতিহাসের এক অনন্য অধ্যায় হলো ১৯৯৮ সালে চীনের কাছে সোভিয়েত আমলের ‘ভারিয়াগ’ রণতরি বিক্রি। ইউক্রেনের মাইকোলাইভ বন্দরে পড়ে থাকা এই বিশাল জাহাজটি বেইজিং কিনেছিল মাত্র ২০ মিলিয়ন ডলারে। অবশ্য আজকের একটি আধুনিক যুদ্ধজাহাজের মূল্যের তুলনায় এটি অতি নগণ্য। বেইজিং তখন দাবি করেছিল, জাহাজটি একটি ভাসমান ক্যাসিনো ও পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হবে। কিন্তু কয়েক বছর পরই বিশ্ববাসী অবাক হয়ে দেখল, সেই পরিত্যক্ত ভারিয়াগই রূপান্তরিত হয়েছে চীনের প্রথম শক্তিশালী বিমানবাহী রণতরিতে, নাম তার ‘লিয়াওনিং’।
শুধু রণতরিই নয়, চীনের আধুনিক প্রতিরক্ষা শিল্পকে গড়ে তুলতে কিয়েভের কারিগরি সহায়তা ছিল অভাবনীয়। ইউক্রেন থেকে চীনে পাড়ি জমিয়েছে আরও অনেক প্রযুক্তি। এর মধ্যে রয়েছে: হেলিকপ্টার এবং শক্তিশালী ট্যাংক ইঞ্জিনের নকশা ও উৎপাদন প্রযুক্তি; চীনের নৌবাহিনীর গ্যাস টারবাইন এবং বিমানবিধ্বংসী রাডার ব্যবস্থার মূল কারিগরি জ্ঞান।
ইউক্রেন স্বীকার করেছে যে তারা একসময় অবৈধভাবে পারমাণবিক অস্ত্র বহনে সক্ষম ছয়টি ‘কেএইচ-৫৫’ ক্রুজ মিসাইল বেইজিংয়ে পাঠিয়েছিল। এটি চীনের দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র সক্ষমতাকে কয়েক দশক এগিয়ে দেয়।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের বর্তমান প্রেক্ষাপটে সম্পর্কের এই গতিপ্রকৃতি ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে গেছে। আজ ইউক্রেনীয় ড্রোন বিশেষজ্ঞরা সরাসরি স্বীকার করছেন, যুদ্ধের ভাগ্য এখন বেইজিংয়ের হাতে। কিয়েভের ড্রোন যুদ্ধের অগ্রপথিক আন্দ্রেই প্রোনিন আল জাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘চীন চাইলে মাত্র এক দিনে এই রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ বন্ধ করতে পারে। তারা শুধু আমাদের অথবা রুশদের কাছে ড্রোন যন্ত্রাংশ রপ্তানি বন্ধ করে দিলেই হলো।’
ইউক্রেনের আকাশে আজ যে লাখ লাখ ড্রোন উড়ছে, তার প্রতিটি উপাদানে চীনের ছাপ রয়েছে। ড্রোনের ফ্রেম, মোটর, ফ্লাইট কন্ট্রোলার, লিথিয়াম ব্যাটারি এবং নেভিগেশন মডিউল—সবই মূলত চীনা কারখানায় তৈরি।
‘স্নেক আইল্যান্ড’ নামক একটি সামরিক গবেষণা সংস্থার প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইউক্রেনীয় ড্রোন শিল্প এখন পুরোপুরি চীনা আমদানির ওপর নির্ভরশীল। বিশেষ করে নিওডিয়ামিয়াম ম্যাগনেট এবং থার্মাল সেন্সরের মতো জটিল কাঁচামালের ক্ষেত্রে চীনের একচেটিয়া প্রভাব কিয়েভকে এক কঠিন রাজনৈতিক চাপে রেখেছে।
ইউক্রেনীয় নীতিনির্ধারকেরা মনে করেন, যুদ্ধের পর ধ্বংসস্তূপ থেকে দেশ পুনর্গঠনে চীনই হতে পারে সবচেয়ে বড় কৌশলগত অংশীদার। ২০১১ সালে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ভিক্তর ইয়ানুকোভিচের আমলে চীনের সঙ্গে যে ‘কৌশলগত অংশীদারি’ শুরু হয়েছিল, কিয়েভ এখন তার আধুনিক সংস্করণ চাচ্ছে।
এ ছাড়া চীনের উচ্চাভিলাষী বেল্ট অ্যান্ড রোড (বিআরআই) প্রকল্পের জন্য ইউক্রেনের ভৌগোলিক অবস্থান অত্যন্ত আকর্ষণীয়। ইউক্রেনকে উত্তর-পূর্ব চীন থেকে কাজাখস্তান ও ককেশাস হয়ে ইউরোপে পৌঁছানোর প্রধান লজিস্টিক হাব বা ‘সেতুবন্ধনকারী দেশ’ হিসেবে গড়ে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে বেইজিংয়ের।
তবে বিশ্লেষক ইগার তিশকেভিচের মতে, চীনকে ইউরোপীয় বাজারে উন্নততর প্রবেশের সুযোগ দিতে ইউক্রেনকে তার সোভিয়েত আমলের চওড়া রেললাইন বদলে পশ্চিমা মানদণ্ডের ন্যারো গেজ ট্র্যাকে রূপান্তর করতে হবে।
যুদ্ধের মধ্যেও চীন এখনো ইউক্রেনীয় ইস্পাত, ভোজ্যতেল এবং সয়াবিনের প্রধান ক্রেতা। এই বাণিজ্যই বর্তমানে ইউক্রেনের যুদ্ধবিধ্বস্ত অর্থনীতিকে কোনোমতে সচল রেখেছে।
বিশ্লেষক অ্যালেক্সি কুশের মতে, চীনের সঙ্গে সম্পর্ক পুনরুদ্ধার করতে ব্যর্থ হওয়া ইউক্রেনের জন্য একটি ঐতিহাসিক ভুল হতে পারে। তিনি মনে করেন, ইউক্রেনের কূটনীতি কেবল পশ্চিমমুখী হলে চলবে না, বরং চীনসহ পুরো ‘গ্লোবাল সাউথ’-এর সঙ্গে সম্পর্কের ভারসাম্য বজায় রাখতে হবে। সমরাস্ত্রের গোপন অতীত এবং ড্রোনের অনিশ্চিত বর্তমানকে পেছনে ফেলে, কিয়েভ এখন এমন এক ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখছে, যেখানে ইউক্রেন হবে পূর্ব ও পশ্চিমের বাণিজ্যিক মিলনস্থল—যেখানে সীমান্ত দিয়ে বিদেশি সৈন্য নয়, বরং পণ্যবাহী জাহাজ ও ট্রেন চলাচল করবে।

নব্বইয়ের দশকে যখন ইউক্রেন সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে এক নব্য পুঁজিবাদী রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করছিল, তখন তাদের কাছে চীনের চাহিদা ছিল শুধু আকরিক লোহা, শস্য আর সূর্যমুখী তেল। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই সমীকরণ আমূল বদলে গেছে। সোভিয়েত আমলের পরিত্যক্ত সমরাস্ত্রের ভান্ডার থেকে শুরু করে আজকের আধুনিক ড্রোনের যুদ্ধক্ষেত্র—এই তিন দশকে ইউক্রেন ও চীনের সম্পর্ক এক অদ্ভুত ও জটিল আবর্তে ঘুরপাক খেয়েছে।
ইউক্রেনের সমরাস্ত্র ইতিহাসের এক অনন্য অধ্যায় হলো ১৯৯৮ সালে চীনের কাছে সোভিয়েত আমলের ‘ভারিয়াগ’ রণতরি বিক্রি। ইউক্রেনের মাইকোলাইভ বন্দরে পড়ে থাকা এই বিশাল জাহাজটি বেইজিং কিনেছিল মাত্র ২০ মিলিয়ন ডলারে। অবশ্য আজকের একটি আধুনিক যুদ্ধজাহাজের মূল্যের তুলনায় এটি অতি নগণ্য। বেইজিং তখন দাবি করেছিল, জাহাজটি একটি ভাসমান ক্যাসিনো ও পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হবে। কিন্তু কয়েক বছর পরই বিশ্ববাসী অবাক হয়ে দেখল, সেই পরিত্যক্ত ভারিয়াগই রূপান্তরিত হয়েছে চীনের প্রথম শক্তিশালী বিমানবাহী রণতরিতে, নাম তার ‘লিয়াওনিং’।
শুধু রণতরিই নয়, চীনের আধুনিক প্রতিরক্ষা শিল্পকে গড়ে তুলতে কিয়েভের কারিগরি সহায়তা ছিল অভাবনীয়। ইউক্রেন থেকে চীনে পাড়ি জমিয়েছে আরও অনেক প্রযুক্তি। এর মধ্যে রয়েছে: হেলিকপ্টার এবং শক্তিশালী ট্যাংক ইঞ্জিনের নকশা ও উৎপাদন প্রযুক্তি; চীনের নৌবাহিনীর গ্যাস টারবাইন এবং বিমানবিধ্বংসী রাডার ব্যবস্থার মূল কারিগরি জ্ঞান।
ইউক্রেন স্বীকার করেছে যে তারা একসময় অবৈধভাবে পারমাণবিক অস্ত্র বহনে সক্ষম ছয়টি ‘কেএইচ-৫৫’ ক্রুজ মিসাইল বেইজিংয়ে পাঠিয়েছিল। এটি চীনের দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র সক্ষমতাকে কয়েক দশক এগিয়ে দেয়।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের বর্তমান প্রেক্ষাপটে সম্পর্কের এই গতিপ্রকৃতি ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে গেছে। আজ ইউক্রেনীয় ড্রোন বিশেষজ্ঞরা সরাসরি স্বীকার করছেন, যুদ্ধের ভাগ্য এখন বেইজিংয়ের হাতে। কিয়েভের ড্রোন যুদ্ধের অগ্রপথিক আন্দ্রেই প্রোনিন আল জাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘চীন চাইলে মাত্র এক দিনে এই রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ বন্ধ করতে পারে। তারা শুধু আমাদের অথবা রুশদের কাছে ড্রোন যন্ত্রাংশ রপ্তানি বন্ধ করে দিলেই হলো।’
ইউক্রেনের আকাশে আজ যে লাখ লাখ ড্রোন উড়ছে, তার প্রতিটি উপাদানে চীনের ছাপ রয়েছে। ড্রোনের ফ্রেম, মোটর, ফ্লাইট কন্ট্রোলার, লিথিয়াম ব্যাটারি এবং নেভিগেশন মডিউল—সবই মূলত চীনা কারখানায় তৈরি।
‘স্নেক আইল্যান্ড’ নামক একটি সামরিক গবেষণা সংস্থার প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইউক্রেনীয় ড্রোন শিল্প এখন পুরোপুরি চীনা আমদানির ওপর নির্ভরশীল। বিশেষ করে নিওডিয়ামিয়াম ম্যাগনেট এবং থার্মাল সেন্সরের মতো জটিল কাঁচামালের ক্ষেত্রে চীনের একচেটিয়া প্রভাব কিয়েভকে এক কঠিন রাজনৈতিক চাপে রেখেছে।
ইউক্রেনীয় নীতিনির্ধারকেরা মনে করেন, যুদ্ধের পর ধ্বংসস্তূপ থেকে দেশ পুনর্গঠনে চীনই হতে পারে সবচেয়ে বড় কৌশলগত অংশীদার। ২০১১ সালে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ভিক্তর ইয়ানুকোভিচের আমলে চীনের সঙ্গে যে ‘কৌশলগত অংশীদারি’ শুরু হয়েছিল, কিয়েভ এখন তার আধুনিক সংস্করণ চাচ্ছে।
এ ছাড়া চীনের উচ্চাভিলাষী বেল্ট অ্যান্ড রোড (বিআরআই) প্রকল্পের জন্য ইউক্রেনের ভৌগোলিক অবস্থান অত্যন্ত আকর্ষণীয়। ইউক্রেনকে উত্তর-পূর্ব চীন থেকে কাজাখস্তান ও ককেশাস হয়ে ইউরোপে পৌঁছানোর প্রধান লজিস্টিক হাব বা ‘সেতুবন্ধনকারী দেশ’ হিসেবে গড়ে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে বেইজিংয়ের।
তবে বিশ্লেষক ইগার তিশকেভিচের মতে, চীনকে ইউরোপীয় বাজারে উন্নততর প্রবেশের সুযোগ দিতে ইউক্রেনকে তার সোভিয়েত আমলের চওড়া রেললাইন বদলে পশ্চিমা মানদণ্ডের ন্যারো গেজ ট্র্যাকে রূপান্তর করতে হবে।
যুদ্ধের মধ্যেও চীন এখনো ইউক্রেনীয় ইস্পাত, ভোজ্যতেল এবং সয়াবিনের প্রধান ক্রেতা। এই বাণিজ্যই বর্তমানে ইউক্রেনের যুদ্ধবিধ্বস্ত অর্থনীতিকে কোনোমতে সচল রেখেছে।
বিশ্লেষক অ্যালেক্সি কুশের মতে, চীনের সঙ্গে সম্পর্ক পুনরুদ্ধার করতে ব্যর্থ হওয়া ইউক্রেনের জন্য একটি ঐতিহাসিক ভুল হতে পারে। তিনি মনে করেন, ইউক্রেনের কূটনীতি কেবল পশ্চিমমুখী হলে চলবে না, বরং চীনসহ পুরো ‘গ্লোবাল সাউথ’-এর সঙ্গে সম্পর্কের ভারসাম্য বজায় রাখতে হবে। সমরাস্ত্রের গোপন অতীত এবং ড্রোনের অনিশ্চিত বর্তমানকে পেছনে ফেলে, কিয়েভ এখন এমন এক ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখছে, যেখানে ইউক্রেন হবে পূর্ব ও পশ্চিমের বাণিজ্যিক মিলনস্থল—যেখানে সীমান্ত দিয়ে বিদেশি সৈন্য নয়, বরং পণ্যবাহী জাহাজ ও ট্রেন চলাচল করবে।

ভারত-মিয়ানমার সীমান্তে প্রস্তাবিত ১ হাজার মাইল দীর্ঘ বেড়া সেখানকার সাপ্তাহিক আয়োজন, ব্যবসা-বাণিজ্য, অভিবাসন, ঐতিহাসিক ও অন্যান্য সাংস্কৃতিক সম্পর্ক ব্যাহত করার হুমকি দিচ্ছে। এসবই করা হচ্ছে নিরাপত্তার নামে। ভারত সরকার মিয়ানমারের কেন্দ্রীয় সরকারের তেমন কোনো সম্পৃক্ততা ছাড়াই এই পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে।
০৪ জুন ২০২৫
ভেনেজুয়েলার চলমান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকট ধীরে ধীরে একটি আঞ্চলিক সমস্যা থেকে বৈশ্বিক ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনায় রূপ নিচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের কড়া অবস্থান এবং সম্ভাব্য সামরিক হস্তক্ষেপের ইঙ্গিত এই সংকটকে আরও গভীর করেছে।
২ দিন আগে
বর্তমানে ভেনেজুয়েলার অধিকাংশ তেল মজুত রয়েছে দেশটির পূর্বাঞ্চলের ওরিনোকো বেল্টে। প্রায় ৫৫ হাজার বর্গকিলোমিটার এলাকাজুড়ে বিস্তৃত এই অঞ্চলে বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি তেল মজুত রয়েছে।
৫ দিন আগে
ইমরান খানকে প্রতিদিন ২২ ঘণ্টা একা একটি সেলে রাখা হচ্ছে। সার্বক্ষণিক নজরদারির মধ্যে থাকা ওই কক্ষে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগও নেই। পরিবারের অভিযোগ, পাকিস্তানের সামরিক নেতৃত্ব ইচ্ছাকৃতভাবে ইমরান খানের মনোবল ভেঙে দিতে চাইছে।
৯ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

চার বছর আগে যিনি ছিলেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী, সেই ইমরান খান আজ নিজ দেশেই ধুঁকে ধুঁকে মরছেন। ৭৩ বছর বয়সী এই ক্রিকেট কিংবদন্তি বর্তমানে রাওয়ালপিন্ডির আদিয়ালা কারাগারে বন্দী। জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, তাঁকে প্রতিদিন ২২ ঘণ্টা একা একটি সেলে রাখা হচ্ছে। সার্বক্ষণিক নজরদারির মধ্যে থাকা ওই কক্ষে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগও নেই। পরিবারের অভিযোগ, পাকিস্তানের সামরিক নেতৃত্ব ইচ্ছাকৃতভাবে ইমরান খানের মনোবল ভেঙে দিতে চাইছে। ইমরান খানের ছেলে কাসিম বলেন, ‘এটা মানসিক নির্যাতন। তাঁকে মানসিকভাবে দুর্বল করতেই এসব করা হচ্ছে। কিন্তু আমার বাবা শক্ত মানুষ।’
ইমরান খানের প্রথম স্ত্রী জেমিমা গোল্ডস্মিথের দুই ছেলে কাসিম ও সুলাইমান। গত আড়াই বছর ধরে তাঁরা এক দুঃস্বপ্নের মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন। চলতি সপ্তাহে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ আকার নেয়। সেনাপ্রধান আসিম মুনিরকে নিয়ে ইমরান খানের নির্দেশনায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি পোস্ট দেওয়া হয়েছিল। এরপরই সরকার কারাগারে থাকা ইমরান খানের সব সুযোগ-সুবিধা বন্ধ করে দেয়। দুর্নীতির মামলায় দেওয়া ১৪ বছরের সাজার সঙ্গে যুক্ত হতে থাকে একের পর এক নতুন মামলা। ইমরানের পরিবারের আশঙ্কা—এই সংকট সমাধানের কোনো সহজ পথ নেই।
কাসিম বলেন, ‘বাবার বিরুদ্ধে ২০০টির বেশি মামলা আছে। একটি মামলা বাতিল হলে সঙ্গে সঙ্গে দু-তিনটি নতুন মামলা দেওয়া হয়। এটা শুধু সময়ক্ষেপণের কৌশল।’
কারাগারের পরিস্থিতিও ভয়াবহ। সুলাইমান বলেন, ‘বাবাকে যে ছোট কক্ষে রাখা হয়েছে, সেটিকে “ডেথ সেল” বলা হয়। এখানে সাধারণত মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের রাখা হয়। ওই বেশির ভাগ সময়ই বিদ্যুৎ থাকে না। দেওয়া হয় না বই বা পড়ার কোনো উপকরণ।’
কাসিমের ভাষায়, ‘যে পানিতে তিনি গোসল করেন, সেটি খুবই নোংরা। ওই কারাগারে অন্তত এক ডজন বন্দী হেপাটাইটিসে মারা গেছে, আর তাঁরা সবাই ছিলেন পিটিআইয়ের সমর্থক।’
তবে কারা কর্তৃপক্ষ বলছে, সংক্রামক রোগে আক্রান্ত বন্দীদের আলাদা রাখা হয়।
জাতিসংঘের বিশেষ প্রতিবেদক অ্যালিস জিল এডওয়ার্ডসের এক প্রতিবেদনে ইমরান খানের সেলের চিত্র আরও ভয়াবহভাবে উঠে এসেছে। সেখানে বলা হয়েছে, কক্ষটি ছোট, বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা নেই বললেই চলে, প্রাকৃতিক আলোর অভাব রয়েছে এবং চরম তাপমাত্রা ও পোকামাকড়ের উপদ্রবজনিত কারণে তিনি বমি বমি ভাব এবং ওজন হ্রাসের শিকার হচ্ছেন।

কিন্তু ইমরানের খানের মতো একজন মানুষের জীবনে এই পরিস্থিতি কীভাবে তৈরি হলো
পাকিস্তানের ইতিহাসে ইমরান খান শুধু একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রীই নন, তিনি ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডার। ১৯৯২ সালে তাঁর নেতৃত্বেই পাকিস্তান একমাত্র ওয়ানডে বিশ্বকাপ জেতে। সেই আসরে খেলোয়াড়দের তিনি বলেছিলেন, ‘কোণঠাসা বাঘের মতো লড়ো।’ প্রতীক হিসেবে বাঘ আঁকা টি-শার্টও পরেছিলেন তিনি।
মাঠের বাইরে ইমরান খানের জীবনও ছিল আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। নব্বইয়ের দশকে লন্ডনের ট্রাম্পস নাইটক্লাব থেকে শুরু করে গসিপ কলাম—সবখানেই ছিল তাঁর উপস্থিতি। মডেল মারি হেলভিন একবার বলেছিলেন, ‘ইমরানের মতো বিধ্বংসী পুরুষ আর কেউ ছিলেন না।’

১৯৯৫ সালে ২১ বছর বয়সী জেমিমা গোল্ডস্মিথকে বিয়ে করেন ইমরান খান। বয়স ও সংস্কৃতিগত পার্থক্য নিয়ে সমালোচনা থাকলেও জেমিমা তখন বলেছিলেন, ‘আমার জন্য ইমরান পাশ্চাত্যের রাতজাগা ও মদের জীবন ছেড়ে দিতে প্রস্তুত।’
এরপর ২০০৪ সালে তাঁদের বিচ্ছেদ হয়। তবে বিচ্ছেদ হলেও, বন্দী ইমরান খানের জন্য জেমিমার উদ্বেগ আজও রয়ে গেছে। সম্প্রতি তিনি ইলন মাস্ককে চিঠি দিয়ে অভিযোগ করেছেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স ইমরান খান-সংক্রান্ত পোস্ট গোপনে সীমিত করছে।
ইমরানের ছেলে কাসিম বলেন, ‘ছোটবেলা থেকে আমরা বাবার সংস্পর্শে বড় হয়েছি। এখন বাবা নেই, এটা আমাদের জন্য খুব কষ্টের। আমাদের মায়ের জন্যও এটা কষ্টের।’

দুই ভাই আশা করছেন, এ বিষয়গুলো সামনে আনলে আন্তর্জাতিক মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করা যাবে। কিন্তু আসলেই কি ইমরান খানের বিষয়টি আন্তর্জাতিক মহলের নজরে আসবে? এমন প্রশ্ন অবান্তর নয়। কারণ, প্রায় আড়াই বছর থেকে কারাগারে থাকলেও কেউ ইমরান খানের খোঁজ নেয়নি।
অ্যাশেজের মতো বড় আয়োজন চললেও, ক্রিকেট বিশ্ব থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিবাদ নেই। আইসিসি হল অব ফেমে জায়গা পেয়েছেন ইমরান খান, কিন্তু সেখানেও নীরবতা। তবে অনেকেই মনে করেন, কথা বললে সরকার আরও কঠোর হতে পারে। ইমরানের ছেলে কাসিম বলেন, ‘প্রতিবার আমরা কিছু বললে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়।’
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, গত ৫০ বছরে পাকিস্তানের প্রতিটি প্রধানমন্ত্রীকেই কারাবরণ করতে হয়েছে। চ্যাথাম হাউসের গবেষক ফারজানা শেখ মনে করেন, ইমরান খানের সামনে বর্তমানে দুটি পথ—হয় লন্ডনে নির্বাসন অথবা পাকিস্তানে গৃহবন্দিত্ব।
কিন্তু তাঁর ছেলেরা বলছেন, দুটোই অগ্রহণযোগ্য। কাসিমের মতে, ‘লন্ডনে গেলে বাবা মানসিকভাবে ভেঙে পড়বেন।’ আর সুলাইমান বলেন, ‘গৃহবন্দিত্ব মানে রাজনীতি থেকে নির্বাসন—বাবা সেটা মানবেন না।’
ওয়াশিংটনে গিয়ে মার্কিন কংগ্রেস সদস্যদের সঙ্গে বৈঠক করেও তেমন অগ্রগতি হয়নি। সুলাইমান বলেন, ‘সেনাপ্রধান ও ট্রাম্পের সম্পর্ক এখন ভালো। ফলে আমাদের আশার জায়গা কম।’
শেষ বিকল্প হিসেবে পাকিস্তানে যাওয়ার কথাও ভাবছেন তাঁরা। কিন্তু সেটিও ঝুঁকিপূর্ণ। কাসিম বলেন, ‘পাকিস্তানে যাওয়ার পর আমাদের গ্রেপ্তার করা হলে হয়তো সেটাই বাবাকে কোনো সমঝোতায় যেতে বাধ্য করবে। কিন্তু আমরা এ রকম কিছু করতে চাই না। সবচেয়ে ভয়াবহ আশঙ্কা—তিনি ৭৩ বছরের একজন মানুষ। আমরা কি আর কখনো তাঁকে দেখতে পাব?’
ব্রিটিশ দৈনিক দ্য টেলিগ্রাফ থেকে অনূদিত

চার বছর আগে যিনি ছিলেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী, সেই ইমরান খান আজ নিজ দেশেই ধুঁকে ধুঁকে মরছেন। ৭৩ বছর বয়সী এই ক্রিকেট কিংবদন্তি বর্তমানে রাওয়ালপিন্ডির আদিয়ালা কারাগারে বন্দী। জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, তাঁকে প্রতিদিন ২২ ঘণ্টা একা একটি সেলে রাখা হচ্ছে। সার্বক্ষণিক নজরদারির মধ্যে থাকা ওই কক্ষে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগও নেই। পরিবারের অভিযোগ, পাকিস্তানের সামরিক নেতৃত্ব ইচ্ছাকৃতভাবে ইমরান খানের মনোবল ভেঙে দিতে চাইছে। ইমরান খানের ছেলে কাসিম বলেন, ‘এটা মানসিক নির্যাতন। তাঁকে মানসিকভাবে দুর্বল করতেই এসব করা হচ্ছে। কিন্তু আমার বাবা শক্ত মানুষ।’
ইমরান খানের প্রথম স্ত্রী জেমিমা গোল্ডস্মিথের দুই ছেলে কাসিম ও সুলাইমান। গত আড়াই বছর ধরে তাঁরা এক দুঃস্বপ্নের মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন। চলতি সপ্তাহে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ আকার নেয়। সেনাপ্রধান আসিম মুনিরকে নিয়ে ইমরান খানের নির্দেশনায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি পোস্ট দেওয়া হয়েছিল। এরপরই সরকার কারাগারে থাকা ইমরান খানের সব সুযোগ-সুবিধা বন্ধ করে দেয়। দুর্নীতির মামলায় দেওয়া ১৪ বছরের সাজার সঙ্গে যুক্ত হতে থাকে একের পর এক নতুন মামলা। ইমরানের পরিবারের আশঙ্কা—এই সংকট সমাধানের কোনো সহজ পথ নেই।
কাসিম বলেন, ‘বাবার বিরুদ্ধে ২০০টির বেশি মামলা আছে। একটি মামলা বাতিল হলে সঙ্গে সঙ্গে দু-তিনটি নতুন মামলা দেওয়া হয়। এটা শুধু সময়ক্ষেপণের কৌশল।’
কারাগারের পরিস্থিতিও ভয়াবহ। সুলাইমান বলেন, ‘বাবাকে যে ছোট কক্ষে রাখা হয়েছে, সেটিকে “ডেথ সেল” বলা হয়। এখানে সাধারণত মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের রাখা হয়। ওই বেশির ভাগ সময়ই বিদ্যুৎ থাকে না। দেওয়া হয় না বই বা পড়ার কোনো উপকরণ।’
কাসিমের ভাষায়, ‘যে পানিতে তিনি গোসল করেন, সেটি খুবই নোংরা। ওই কারাগারে অন্তত এক ডজন বন্দী হেপাটাইটিসে মারা গেছে, আর তাঁরা সবাই ছিলেন পিটিআইয়ের সমর্থক।’
তবে কারা কর্তৃপক্ষ বলছে, সংক্রামক রোগে আক্রান্ত বন্দীদের আলাদা রাখা হয়।
জাতিসংঘের বিশেষ প্রতিবেদক অ্যালিস জিল এডওয়ার্ডসের এক প্রতিবেদনে ইমরান খানের সেলের চিত্র আরও ভয়াবহভাবে উঠে এসেছে। সেখানে বলা হয়েছে, কক্ষটি ছোট, বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা নেই বললেই চলে, প্রাকৃতিক আলোর অভাব রয়েছে এবং চরম তাপমাত্রা ও পোকামাকড়ের উপদ্রবজনিত কারণে তিনি বমি বমি ভাব এবং ওজন হ্রাসের শিকার হচ্ছেন।

কিন্তু ইমরানের খানের মতো একজন মানুষের জীবনে এই পরিস্থিতি কীভাবে তৈরি হলো
পাকিস্তানের ইতিহাসে ইমরান খান শুধু একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রীই নন, তিনি ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডার। ১৯৯২ সালে তাঁর নেতৃত্বেই পাকিস্তান একমাত্র ওয়ানডে বিশ্বকাপ জেতে। সেই আসরে খেলোয়াড়দের তিনি বলেছিলেন, ‘কোণঠাসা বাঘের মতো লড়ো।’ প্রতীক হিসেবে বাঘ আঁকা টি-শার্টও পরেছিলেন তিনি।
মাঠের বাইরে ইমরান খানের জীবনও ছিল আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। নব্বইয়ের দশকে লন্ডনের ট্রাম্পস নাইটক্লাব থেকে শুরু করে গসিপ কলাম—সবখানেই ছিল তাঁর উপস্থিতি। মডেল মারি হেলভিন একবার বলেছিলেন, ‘ইমরানের মতো বিধ্বংসী পুরুষ আর কেউ ছিলেন না।’

১৯৯৫ সালে ২১ বছর বয়সী জেমিমা গোল্ডস্মিথকে বিয়ে করেন ইমরান খান। বয়স ও সংস্কৃতিগত পার্থক্য নিয়ে সমালোচনা থাকলেও জেমিমা তখন বলেছিলেন, ‘আমার জন্য ইমরান পাশ্চাত্যের রাতজাগা ও মদের জীবন ছেড়ে দিতে প্রস্তুত।’
এরপর ২০০৪ সালে তাঁদের বিচ্ছেদ হয়। তবে বিচ্ছেদ হলেও, বন্দী ইমরান খানের জন্য জেমিমার উদ্বেগ আজও রয়ে গেছে। সম্প্রতি তিনি ইলন মাস্ককে চিঠি দিয়ে অভিযোগ করেছেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স ইমরান খান-সংক্রান্ত পোস্ট গোপনে সীমিত করছে।
ইমরানের ছেলে কাসিম বলেন, ‘ছোটবেলা থেকে আমরা বাবার সংস্পর্শে বড় হয়েছি। এখন বাবা নেই, এটা আমাদের জন্য খুব কষ্টের। আমাদের মায়ের জন্যও এটা কষ্টের।’

দুই ভাই আশা করছেন, এ বিষয়গুলো সামনে আনলে আন্তর্জাতিক মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করা যাবে। কিন্তু আসলেই কি ইমরান খানের বিষয়টি আন্তর্জাতিক মহলের নজরে আসবে? এমন প্রশ্ন অবান্তর নয়। কারণ, প্রায় আড়াই বছর থেকে কারাগারে থাকলেও কেউ ইমরান খানের খোঁজ নেয়নি।
অ্যাশেজের মতো বড় আয়োজন চললেও, ক্রিকেট বিশ্ব থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিবাদ নেই। আইসিসি হল অব ফেমে জায়গা পেয়েছেন ইমরান খান, কিন্তু সেখানেও নীরবতা। তবে অনেকেই মনে করেন, কথা বললে সরকার আরও কঠোর হতে পারে। ইমরানের ছেলে কাসিম বলেন, ‘প্রতিবার আমরা কিছু বললে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়।’
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, গত ৫০ বছরে পাকিস্তানের প্রতিটি প্রধানমন্ত্রীকেই কারাবরণ করতে হয়েছে। চ্যাথাম হাউসের গবেষক ফারজানা শেখ মনে করেন, ইমরান খানের সামনে বর্তমানে দুটি পথ—হয় লন্ডনে নির্বাসন অথবা পাকিস্তানে গৃহবন্দিত্ব।
কিন্তু তাঁর ছেলেরা বলছেন, দুটোই অগ্রহণযোগ্য। কাসিমের মতে, ‘লন্ডনে গেলে বাবা মানসিকভাবে ভেঙে পড়বেন।’ আর সুলাইমান বলেন, ‘গৃহবন্দিত্ব মানে রাজনীতি থেকে নির্বাসন—বাবা সেটা মানবেন না।’
ওয়াশিংটনে গিয়ে মার্কিন কংগ্রেস সদস্যদের সঙ্গে বৈঠক করেও তেমন অগ্রগতি হয়নি। সুলাইমান বলেন, ‘সেনাপ্রধান ও ট্রাম্পের সম্পর্ক এখন ভালো। ফলে আমাদের আশার জায়গা কম।’
শেষ বিকল্প হিসেবে পাকিস্তানে যাওয়ার কথাও ভাবছেন তাঁরা। কিন্তু সেটিও ঝুঁকিপূর্ণ। কাসিম বলেন, ‘পাকিস্তানে যাওয়ার পর আমাদের গ্রেপ্তার করা হলে হয়তো সেটাই বাবাকে কোনো সমঝোতায় যেতে বাধ্য করবে। কিন্তু আমরা এ রকম কিছু করতে চাই না। সবচেয়ে ভয়াবহ আশঙ্কা—তিনি ৭৩ বছরের একজন মানুষ। আমরা কি আর কখনো তাঁকে দেখতে পাব?’
ব্রিটিশ দৈনিক দ্য টেলিগ্রাফ থেকে অনূদিত

ভারত-মিয়ানমার সীমান্তে প্রস্তাবিত ১ হাজার মাইল দীর্ঘ বেড়া সেখানকার সাপ্তাহিক আয়োজন, ব্যবসা-বাণিজ্য, অভিবাসন, ঐতিহাসিক ও অন্যান্য সাংস্কৃতিক সম্পর্ক ব্যাহত করার হুমকি দিচ্ছে। এসবই করা হচ্ছে নিরাপত্তার নামে। ভারত সরকার মিয়ানমারের কেন্দ্রীয় সরকারের তেমন কোনো সম্পৃক্ততা ছাড়াই এই পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে।
০৪ জুন ২০২৫
ভেনেজুয়েলার চলমান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকট ধীরে ধীরে একটি আঞ্চলিক সমস্যা থেকে বৈশ্বিক ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনায় রূপ নিচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের কড়া অবস্থান এবং সম্ভাব্য সামরিক হস্তক্ষেপের ইঙ্গিত এই সংকটকে আরও গভীর করেছে।
২ দিন আগে
বর্তমানে ভেনেজুয়েলার অধিকাংশ তেল মজুত রয়েছে দেশটির পূর্বাঞ্চলের ওরিনোকো বেল্টে। প্রায় ৫৫ হাজার বর্গকিলোমিটার এলাকাজুড়ে বিস্তৃত এই অঞ্চলে বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি তেল মজুত রয়েছে।
৫ দিন আগে
নব্বইয়ের দশকে যখন ইউক্রেন সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে এক নব্য পুঁজিবাদী রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করছিল, তখন তাদের কাছে চীনের চাহিদা ছিল শুধু আকরিক লোহা, শস্য আর সূর্যমুখী তেল। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই সমীকরণ আমূল বদলে গেছে।
৫ দিন আগে