Ajker Patrika

সম্পদের হিসাব দেননি একজনও

শহীদুল ইসলাম, ঢাকা
আপডেট : ০৪ অক্টোবর ২০২১, ০৮: ২৩
সম্পদের হিসাব দেননি একজনও

প্রধানমন্ত্রী তাগাদা দেওয়ার পর সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সম্পদের হিসাব দিতে বলেছিল জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। সেটাও গত ২৪ জুনের কথা। এরপর তিন মাসের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও এখনো কোনো হিসাব জমা পড়েনি। বরং সম্পদের হিসাব বিবরণী কোথায় জমা দিতে হবে, এ নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্ব তৈরি হয়েছে। এ নিয়ে মন্ত্রী-সচিব কেউই পরিষ্কার নন।

কোনো কোনো মন্ত্রণালয় মনে করছে, বিসিএস ক্যাডার কর্মকর্তাদের হিসাব বিবরণী জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে জমা দিতে হবে, অন্যদেরটা জমা থাকবে নিজ মন্ত্রণালয় ও বিভাগে। আবার কোনো কোনো মন্ত্রণালয় মনে করছে, ক্যাডার, নন-ক্যাডার সব কর্মকর্তার হিসাব বিবরণীই বর্তমানে কর্মরত মন্ত্রণালয় বা বিভাগে জমা রাখতে হবে। হিসাব বিবরণী কোথায় জমা দিতে হবে, এ নিয়ে সুস্পষ্ট কোনো নির্দেশনা নেই।

এই বিভ্রান্তি নিয়ে কোনো সুস্পষ্ট উত্তর দিতে পারেননি জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন। তবে তিনি মনে করেন, মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলো নিজেদের অধীন কর্মকর্তা-কর্মচারীর সম্পদের হিসাব বিবরণী রাখবে। প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের পদোন্নতিসহ নানা বিষয় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে হয়। তাই শুধু তাদের সম্পদের হিসাবের কপি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠাতে পারে।

১৯৭৯ সালে জারি হওয়া সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালায় পাঁচ বছর পরপর সরকারি চাকরিজীবীদের সম্পদ বিবরণী দাখিল এবং স্থাবর সম্পত্তি অর্জন বা বিক্রির অনুমতি নেওয়ার নিয়ম করা হয়।

যদিও কেউই তা মানেননি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই বিধিমালার ১১, ১২ ও ১৩ বিধি কর্মকর্তাদের অনুসরণের বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে মন্ত্রণালয়গুলোকে নির্দেশনা দেন। এরপর গত ২৪ জুন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় প্রধানমন্ত্রীর অনুশাসন তুলে ধরে বিধিমালা বাস্তবায়নে মন্ত্রণালয়কে চিঠি পাঠিয়ে এর অগ্রগতিও জানাতে বলে।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, ভূমি মন্ত্রণালয়, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগসহ আরও কয়েকটি মন্ত্রণালয় তাদের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সম্পদের হিসাব চেয়ে নোটিশ দিয়েছে। এসব দপ্তরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এখনো তাঁরা কারও হিসাব বিবরণী পাননি। অনেক মন্ত্রণালয় ও বিভাগ এখনো কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সম্পদের হিসাব নেওয়ার উদ্যোগ নেয়নি।

নোটিশ জারির পর মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সম্পদের হিসাব বিবরণী জমা দিয়েছেন কি না, তা জানাতে পারেননি ভূমি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) মো. আব্বাছ উদ্দিন। তিনি বলেন, ‘আগামীকাল (সোমবার) খোঁজ নিয়ে জানাতে হবে।’ সম্পদ বিবরণীগুলো কোথায় জমা দিতে হবে, সেই প্রশ্ন করলে এই মন্ত্রণালয়ের প্রশাসন-১ শাখার উপসচিবের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন তিনি।

প্রশাসন-১ শাখার উপসচিব সঞ্জীব কুমার দেবনাথ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ক্যাডার কর্মকর্তাদের হিসাব বিবরণী জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়ার কথা, অন্যদেরগুলো আমাদের কাছে থাকবে।’

স্থানীয় সরকার বিভাগের একজন অতিরিক্ত সচিব জানান, ক্যাডার কর্মকর্তাদের হিসাব বিবরণী জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে এবং অন্যদেরটা নিজ বিভাগে জমা রাখা হবে। বিভাগের অধীন দপ্তরগুলোর কর্মকর্তারা দপ্তরপ্রধানের মাধ্যমে বিভাগের সচিবের কাছে তাঁদের হিসাব বিবরণী জমা দেবেন। এই নির্দেশনা কে দিয়েছেন—সেই প্রশ্নে অতিরিক্ত সচিব বলেন, ‘এমনই তো হওয়ার কথা, স্পষ্ট কোনো নির্দেশনা নেই।’

কর্মকর্তাদের সম্পদের হিসাব বিবরণী জমা দিতে নোটিশ জারি করেছিল মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। হিসাব বিবরণী জমা পড়েছে কি না, সেই প্রশ্ন করলে এই বিভাগের অতিরিক্ত সচিব প্রশাসন ও বিধি অনুবিভাগ সোলতান আহ্মদ বলেন, ‘এগুলো তো আমাদের নেওয়ার কথা নয়। এগুলো জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় নেবে।’

মন্ত্রণালয়ের সব কর্মকর্তা-কর্মচারী সম্পদের হিসাব দিয়ে দেবে জানিয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণসচিব মো. মোহসীন বলেন, ‘সম্ভবত ক্যাডার কর্মকর্তাদের জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে আর অন্যদেরটা আমাদের এখানে জমা থাকবে।’

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (শৃঙ্খলা ও তদন্ত অনুবিভাগ) এ এফ এম হায়াতুল্লাহ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলো নিজেদের মতো করে তাদের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সম্পদ বিবরণীর হিসাব নিয়ে সেগুলো সংরক্ষণ করবে।’ হিসাব বিবরণীগুলো কেউ যাচাই করবে কি না, সেই প্রশ্নে তিনি বলেন, বিধিতে যা আছে সে অনুযায়ী হবে।

কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সম্পদের হিসাব বিবরণী কোথায় জমা দিতে হবে, সে বিষয়ে স্পষ্ট করে কিছু বলতে পারেননি জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন। গতকাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমার জানামতে নিজ নিজ মন্ত্রণালয় ও বিভাগ এই হিসাব নিয়ে তাদের কাছে রাখবে। কোনো বিষয়ে প্রশ্ন উঠলে তারা সেগুলো যাচাই করবে। ডিপার্টমেন্ট যদি মনে করে কারও কোনো বিষয়ে কথা উঠছে, তাহলে তারা সেটি দেখবে। প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের পদোন্নতিসহ নানা বিষয়ের সঙ্গে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় জড়িত থাকায় তাদের সম্পদ বিবরণীর একটি কপি চাইলে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে রাখা যেতে পারে। অন্য কর্মকর্তাদের অধীন মন্ত্রণালয় ও বিভাগ সম্পদ বিবরণীর হিসাব নিয়ে সংরক্ষণ করবে।’

এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে জনপ্রশাসন সচিবের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন প্রতিমন্ত্রী। তবে সচিব একটি সভায় থাকায় এ বিষয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘নভেম্বর মাসের মধ্যে সব সরকারি কর্মকর্তার আয়কর দিতে হয়। সেই আয়কর বিবরণী তৈরির সময় অনেকেই সম্পদের হিসাব দাখিল করবেন। হিসাব যেখানেই জমা দেওয়া হোক না কেন, সেগুলো নিয়ে এরপর কী হবে, সে বিষয়ে কেউ কিছু বলতে পারছেন না। এ বিষয়ে বিধিমালায়ও কিছু বলা নেই। সরকার চাইছে সম্পদের হিসাব দেওয়ার সিস্টেমটা চালু হোক, সবাই নিয়ম মানুক। প্রয়োজনে বিধিমালা সংশোধন করা হবে।’

বিধিমালার ১১ বিধিতে সম্পত্তি কেনাবেচা করতে চাইলে সরকারি চাকরিজীবীদের কি করতে হবে, সে বিষয়ে বলা হয়েছে। বিধি ১২ অনুযায়ী, নির্মাণ ব্যয়ের প্রয়োজনীয় অর্থের উৎস উল্লেখ করে সরকারের অনুমোদন না নিয়ে ব্যবসায়িক বা আবাসিক উদ্দেশ্যে কোনো ইমারত নির্মাণ করা যাবে না। আর ১৩ বিধিতে বলা হয়েছে, চাকরিতে প্রবেশের সময় যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে পরিবারের সদস্যদের মালিকানাধীন বা দখলে থাকা শেয়ার, সার্টিফিকেট, সিকিউরিটি, বিমা পলিসি এবং মোট পঞ্চাশ হাজার টাকা বা ততোধিক মূল্যের অলংকারাদিসহ সব স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি সম্পর্কে সরকারের কাছে ঘোষণা দিতে হবে।

ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী ২০১৯ সালে মন্ত্রণালয়ের কর্মচারীদের সম্পদের হিসাব নেওয়ার ঘোষণা দেন। ওই বছরের ১৭ জানুয়ারি ভূমি মন্ত্রণালয় ও এর অধীন সব দপ্তরের তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের সম্পদ বিবরণী জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। তৃতীয়-চতুর্থ শ্রেণির ১৭ হাজার ৫৭৬ জন কর্মচারীর মধ্যে ১৭ হাজার ২০৮ জন সম্পদের হিসাব দেন। সাময়িক বরখাস্ত ও লম্বা ছুটিতে থাকায় ৩৬৮ জন হিসাব দিতে পারেননি। প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির কর্মকর্তাদের নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় হওয়ায় তখন তাঁদের সম্পদের হিসাব নিতে পারেনি ভূমি মন্ত্রণালয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ফরিদপুরে ভবন নির্মাণে পাইলিংয়ের সময় ধসে পড়ল আরেক ভবন

ফরিদপুর প্রতিনিধি
একটি বহুতল ভবন নির্মাণের জন্য পাইলিংয়ের কাজ করার সময় পাশের আরেকটি দ্বিতল ভবনের একাংশ ধসে পড়ে। ছবি: আজকের পত্রিকা
একটি বহুতল ভবন নির্মাণের জন্য পাইলিংয়ের কাজ করার সময় পাশের আরেকটি দ্বিতল ভবনের একাংশ ধসে পড়ে। ছবি: আজকের পত্রিকা

ফরিদপুরে একটি বহুতল ভবন নির্মাণের জন্য পাইলিংয়ের কাজ করার সময় পাশের আরেকটি দ্বিতল ভবনের একাংশ ধসে পড়েছে। এতে ভবনটিসহ ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ভবনে অবস্থিত আরএফএল কোম্পানির বেস্ট বাই শোরুম। তবে প্রাণে বেঁচে গেছেন সেখানে কর্মরতরা। ক্ষতিগ্রস্ত ভবনমালিকের অভিযোগ, নিরাপত্তাব্যবস্থার জন্য নির্মাণাধীন ভবনমালিকদের বলা হলেও কর্ণপাত না করে নিয়মবহির্ভূতভাবে কাজ করে যাচ্ছিলেন। এ ছাড়া সংশ্লিষ্ট পৌর কর্তৃপক্ষের গাফিলতির অভিযোগ করছেন স্থানীয়রা।

আজ শুক্রবার দুপুর পৌনে ১২টার দিকে শহরের প্রাণকেন্দ্র নিলটুলি স্বর্ণকারপট্টির মুজিব সড়ক এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশের একাধিক টিম।

সরেজমিন দেখা গেছে, একটি বহুতল ভবন নির্মাণের জন্য পাইলিংয়ের কাজ চলছিল। নির্মাণাধীন এই ভবনের মালিক স্থানীয় সঞ্জয় কর্মকার, অজয় কর্মকার ও সেলিম নামে আরেক ব্যক্তি। পাইলিংয়ের কাজ করার সময় পার্শ্ববর্তী ভবনসংলগ্ন কোনো নিরাপত্তাব্যবস্থা বা প্যারাসাইলিং ব্যবস্থা ছিল না। এই অবস্থায় পাইলিংয়ের (নিচের অংশ) কাজ চালিয়ে যাচ্ছিলেন নির্মাণশ্রমিকেরা। হঠাৎ করেই ভবনটির একাংশ ধসে পড়ে। তাৎক্ষণিকভাবে সেখান থেকে দৌড়ে সরে পড়েন নির্মাণশ্রমিক ও শোরুমটির কর্মচারীরা।

বেস্ট বাইয়ের কর্মীরা জানান, তারা সকালে এসে ফ্লোরের টাইলসে ফাটল দেখতে পান। ফাটল ধীরে ধীরে বড় হতে থাকলে ক্যাশ কাউন্টার টেবিলটা সরিয়ে ফেলেন, এর মধ্যেই ধসে পড়ে ভবনের এক পাশ।

ধসে পড়া ভবন ও বেস্ট বাই ফ্রাঞ্চাইজের মালিক মনিরা খাতুনের দাবি, এ ঘটনায় তাঁর ১০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে এবং তিনি এর বিচার দাবি করেন। তিনি বলেন, ‘বারবার নির্মাণাধীন ভবনমালিকদের সতর্ক করা হয়েছে এবং নিয়ম মেনে কাজ করতে বলেছি। কিন্তু তাঁরা রাতের আঁধারে আমার ভবনের নিচের মাটি সরিয়ে ফেলেছে, যার কারণে আজকের এই দুর্ঘটনা। পৌরসভার নিয়ম অনুযায়ী ৩ ফুট দূরত্ব রেখে কাজ করার কথা থাকলেও নিয়মের তোয়াক্কা না করেই কাজ চালিয়ে যাচ্ছিলেন। আজ সকালে উল্টো আমার কর্মচারীদের হুমকি-ধমকিও দেওয়া হয়।’

একটি বহুতল ভবন নির্মাণের জন্য পাইলিংয়ের কাজ করার সময় পাশের আরেকটি দ্বিতল ভবনের একাংশ ধসে পড়ে। ছবি: আজকের পত্রিকা
একটি বহুতল ভবন নির্মাণের জন্য পাইলিংয়ের কাজ করার সময় পাশের আরেকটি দ্বিতল ভবনের একাংশ ধসে পড়ে। ছবি: আজকের পত্রিকা

ঘটনাস্থলে ছুটে আসা শহরের বাসিন্দা ও জেলা শ্রমিক দলের সভাপতি মোজাফফর আলী মুসা পৌরসভা কর্তৃপক্ষের গাফিলতি রয়েছে বলে অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, ‘ভবন নির্মাণ করতে হলে পৌরসভার অনুমোদনের প্রয়োজন হয় এবং তা সঠিকভাবে তদারকির দায়িত্ব তাদের। যদি সঠিকভাবে তদারকি হতো তাহলে এমন দুর্ঘটনা না-ও ঘটতে পারত।’

এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত ভবনমালিকদের একজন সঞ্জয় সাহার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাঁর বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

ঘটনাস্থলে আসা কোতোয়ালি থানার উপপরিদর্শক মাসুদ আলম জানান, খবর পেয়ে তাঁরা এখানকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছেন। তবে কোনো অভিযোগ পায়নি পুলিশ। অভিযোগ পেলে সেটা তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এদিকে পৌরসভার প্রশাসক ও ফরিদপুর স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক মো. সোহরাব হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ঘটনাটি আমার জানা নেই, খোঁজ নিয়ে বলা যাবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জাবিতে শেখ পরিবারের নামে থাকা ৪ হলের নাম পরিবর্তন

জাবি প্রতিনিধি 
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) শেখ হাসিনা ও তাঁর স্বজনদের নামে থাকা চারটি আবাসিক হলের নাম পরিবর্তন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। আজ শুক্রবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এ বি এম আজিজুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

আজিজুর রহমান বলেন, ‘গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় শেখ পরিবারের নামে থাকা চারটি হলের নাম পরিবর্তন করে নতুন নামকরণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’

এসব হলের মধ্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের নাম পরিবর্তন করে রাখ হয়েছে ‘শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হক হল’, শেখ রাসেল হলের নাম পরিবর্তন করে রাখা হয়েছে ‘নবাব সলিমুল্লাহ হল’। এ ছাড়া শেখ হাসিনা হলের নাম পরিবর্তন করে ‘জুলাই চব্বিশ জাগরণী হল’ এবং বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের নাম পরিবর্তন করে ‘শহীদ ফেলানী খাতুন হল’ নাম রাখা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

হবিগঞ্জে রত্না বেইলি সেতু ভেঙে ট্রাক আটকা, দুর্ভোগে যাত্রীরা

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি
আজ সকাল ৯টার দিকে রত্না বেইলি সেতুর দুটি পাটাতন ভেঙে পাথরবোঝাই ট্রাক আটকে যায়। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ সকাল ৯টার দিকে রত্না বেইলি সেতুর দুটি পাটাতন ভেঙে পাথরবোঝাই ট্রাক আটকে যায়। ছবি: আজকের পত্রিকা

হবিগঞ্জ-বানিয়াচং আঞ্চলিক সড়কের রত্না বেইলি সেতুর দুটি পাটাতন ভেঙে পাথরবোঝাই ট্রাক আটকে যাওয়ায় বন্ধ হয়ে গেছে ওই পথে সব ধরনের যান চলাচল। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে শতাধিক যাত্রী ও ওই পথে চলাচলকারীরা। শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) সকাল ৯টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় সূত্র জানায়, জাফলং থেকে ছেড়ে আসা বানিয়াচংগামী পাথরবোঝাই একটি ট্রাক ব্রিজের ওপর ওঠামাত্রই ব্রিজের দুটি পাটাতন ভেঙে যায়। মুহূর্তেই ট্রাকের পেছনের দুটি চাকা ধসে পড়ে এবং পুরো ট্রাকটি ব্রিজে আটকে যায়।

এতে দীর্ঘ লাইনে আটকা পড়ে যাত্রীবাহী বাস, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, টমটম, প্রাইভেট কারসহ অসংখ্য যানবাহন। বিপাকে পড়েন সাধারণ মানুষ, শিক্ষার্থী, রোগী এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য ব্যবসায়ীরা।

দুর্ঘটনার পর ব্রিজের একপাশ থেকে অন্যপাশে যাওয়ার জন্য যাত্রীরা ঝুঁকি নিয়ে হেঁটে ভাঙা অংশ অতিক্রম করছে। এতে যেকোনো মুহূর্তে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা প্রকাশ করেছে স্থানীয়রা।

এ বিষয়ে স্থানীয় এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, ‘ট্রাকটি ব্রিজে উঠতেই জোরে শব্দ হয়। একটু পরই দেখি পাটাতন নিচে ধসে গেছে। ভাগ্য ভালো যে ট্রাকটি পুরোপুরি নিচে পড়ে যায়নি। তবে এখন তো ও পথে চলাচলকারীরা আটকা পড়ে আছে।’

যাত্রীরা জানান, রত্না বেইলি ব্রিজটি বহুদিন ধরে জরাজীর্ণ অবস্থায় রয়েছে। ভারী যানবাহনের অতিরিক্ত চাপের কারণে যেকোনো সময় বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে—এমন আশঙ্কা দীর্ঘদিন ধরেই ছিল। এদিকে যাত্রীদের দাবি, এখানে যেন বেইলি ব্রিজের পরিবর্তে দ্রুত স্থায়ী সেতু নির্মাণ করা হয়, যাতে প্রতিদিনের এ দুর্ভোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

এ বিষয়ে হবিগঞ্জ সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী জাকির হোসেন বলেন, ‘ব্রিজটি দ্রুত মেরামত করার কাজ চলছে। পাথরবোঝাই ট্রাকটিতে বেশি লোড থাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটেছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আড়িয়াল খাঁ নদের তীর থেকে অটোরিকশাচালকের রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার

নরসিংদী প্রতিনিধি
ঘটনাস্থলে স্থানীয়দের ভিড়। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঘটনাস্থলে স্থানীয়দের ভিড়। ছবি: আজকের পত্রিকা

নরসিংদীর বেলাব উপজেলার আড়িয়াল খাঁ নদের তীর থেকে আব্দুর রশিদ (৪০) নামের এক অটোরিকশাচালকের রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) সকালে উপজেলার বিন্নাবাইদ ইউনিয়নের ভাওয়ালেরচর এলাকায় নদীর তীর থেকে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ।

আব্দুর রশিদ কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার লোহাজুরী ইউনিয়নের দক্ষিণ লোহাজুরী গ্রামের বাসিন্দা। পেশায় তিনি ছিলেন অটোরিকশাচালক; তবে নিয়মিত আড়িয়াল খাঁ নদে বড়শি দিয়ে মাছ শিকার করা ছিল তাঁর নেশা।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সকাল ৬টার দিকে ভাওয়ালেরচর এলাকায় নদীর পাড়ে রক্তাক্ত লাশ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয় বাসিন্দারা পুলিশে খবর দেন। লাশের পাশেই মোবাইল ফোন ও অটোরিকশাটি ছিল। পরে স্বজনেরা এসে লাশ শনাক্ত করেন। আব্দুর রশিদের মাথা ও শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। প্রাথমিকভাবে পুলিশ মনে করছে, তিনি দুষ্কৃতকারীর হামলার শিকার হয়েছেন।

নিহত ব্যক্তির ভাই কাজল মিয়া বলেন, ‘প্রতিদিন বিকেল থেকে রাত ১১-১২টা পর্যন্ত অটোরিকশা চালিয়ে তারপর নদীর পাড়ে বসে মাছ শিকার করে বাড়ি ফিরত ভাই। কিন্তু গতকাল রাতে আর বাড়ি ফেরেনি। সকালে খবর পেয়ে নদীর পাড়ে এসে ভাইয়ের মরদেহ দেখতে পাই।’

নিহত ব্যক্তির ছেলে হৃদয় বলেন, ‘রাতে বাড়ি না ফেরায় কল দিলে ফোন বন্ধ পাই। সকালে খবর শুনে নদীর পাড়ে এসে বাবার মরদেহ, মোবাইল ও অটোরিকশা পড়ে থাকতে দেখি।’

বেলাব থানার পরিদর্শক (তদন্ত) নাসির উদ্দিন বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য নরসিংদী সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে। বিষয়টি পিবিআইকে জানানো হয়েছে। ঘটনাটি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করা হচ্ছে। আইনগত প্রক্রিয়া চলমান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত