Ajker Patrika

চবিতে মধ্যরাতে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিয়ে হামলা, নেপথ্যে দখল বাণিজ্য

চবি সংবাদদাতা
চবিতে মধ্যরাতে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিয়ে হামলা, নেপথ্যে দখল বাণিজ্য

মধ্যরাতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) জিরো পয়েন্ট এলাকায় অতর্কিত হামলা চালায় স্থানীয় যুবলীগের এক নেতা ও তাঁর অনুসারীরা। রেলস্টেশনের একটি দোকানে ব্যাপক ভাঙচুর চালায় ও দেশীয় অস্ত্র হাতে মহড়া দেয় তারা। এ ঘটনায় ৫ জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। 

গতকাল রোববার (২০ অক্টোবর) দিবাগত রাত সাড়ে ৩টার দিকে স্থানীয় যুবলীগ নেতা মোহাম্মদ হানিফের নেতৃত্বে এ হামলা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন শিক্ষার্থীরা। 

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, রাত সাড়ে ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের রেলস্টেশন এলাকায় নির্মাণাধীন আপ্যায়ন নামক একটি হোটেল দখল করার উদ্দেশ্যে ভাঙচুর চালায় স্থানীয় যুবলীগ নেতা হানিফের অনুসারীরা। এ সময় তারা কয়েক রাউন্ড গুলি ছোড়ে ও ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। এতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়লে সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে রেলগেট এলাকায় যায়। 

এ সময় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা যুবলীগের ওই নেতার ছোট ভাইয়ের একটি দোকান ভাঙচুর করে। পরে যুবলীগের নেতা ও তাঁর অনুসারীরা ‘শিক্ষার্থীদের সঙ্গে এলাকাবাসীর সংঘর্ষ হয়েছে’ বলে মসজিদের মাইকে ঘোষণা দেয়। এরপর শিক্ষার্থীরা রেলগেট অবস্থান শেষ করে ফিরে আসার সময় স্থানীয়রা পেছন থেকে লাঠিসোঁটা ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা করে। এতে ৫ জন শিক্ষার্থী আহত হয় বলে চবি মেডিকেল সেন্টার থেকে নিশ্চিত করা হয়েছে। আহত একজনকে গুরুতর অবস্থায় পার্কভিউ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় এখনো ক্যাম্পাসে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। 

ওই হামলার পর ক্যাম্পাসে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে না পারার অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক বন্ধ করে দেয় শিক্ষার্থীরা। পরে প্রশাসনের আশ্বাসে ফটক খুলে দেওয়া হয়। 

প্রত্যক্ষদর্শী ও ভুক্তভোগী দোকানি মাহদী হাসান বলেন, আমি রেলওয়ের জায়গা ইজারা নিয়ে দোকান করেছি। তারা আমার দোকান দখলের উদ্দেশ্যে হামলা চালিয়েছে। কেননা আশপাশের কয়েকটি দোকান জবরদখল করে হানিফ ও তাঁর ছোটভাই ইকবাল পরিচালনা করেন। রাত সাড়ে ৩টার পর কিছু লোক ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিয়ে আমার দোকানে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। তারা সশস্ত্র ছিল। তাদের কাছে গুলি, বোমা ও ককটেল ছিল। হামলার শব্দে আশপাশের শিক্ষার্থী ও স্থানীয় লোকজন বের হয়ে আসে। তারা একশ থেকে দেড় শ রাউন্ড গুলি ছুড়েছে। এর আগে তারা আমাকে হুমকি দিয়েছে। আমরা কোন দেশে বাস করছি! তারা ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ স্লোগান দিয়ে আবারও সন্ত্রাসী হামলা করছে! 

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ আলি বলেন, রেল স্টেশন সংলগ্ন ‘আপ্যায়ন ঘর’ নামে একটি দোকান পরিচালনা করেন স্থানীয় মাহদী হাসান। বাবা, বড় ভাই ও মাহদী মিলে দোকানটি চালান। গত রাত সাড়ে ৩টার দিকে এই দোকানটি দখল করতে আসে যুবলীগের নেতা–কর্মীরা। এ সময়ে তারা শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করে। এতে ৫ জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। আমরা সকালে রেল ক্রসিংয়ের দিকে মিছিল নিয়ে গেলে তারা আবার আমাদের ওপর হামলা চালায়। এ সময় আমরা পুলিশকে বারবার ফোন করেছি, কিন্তু তারা আসেনি। আমরা বিস্তারিত প্রক্টর স্যারকে জানিয়েছি। এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থার দাবি জানাচ্ছি। 

শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দফায় দফায় হামলকারীদের সংঘর্ষ হয়এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. তানভীর মোহাম্মদ হায়দার আরিফ বলেন, স্থানীয় একজনের দোকানে সন্ত্রাসীরা ভাঙচুর চালালে ঘটনার সূত্রপাত হয়। ভোর ৪টায় এখানে প্রচুর ককটেল ফাটানো হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে সকালে শিক্ষার্থীরা জড়ো হলে সন্ত্রাসীরা গুজব রটিয়ে দেয় যে, এলাকাবাসীর সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ হয়েছে। 

প্রক্টর বলেন, এর পর সকালে আমরাসহ শিক্ষার্থীরা রেলগেট এলাকায় যাই। সেখানে স্থানীয়দের সাথে কথা হয়েছে। দুপুর ২টায় একটি মিটিং হবে, যেখানে এলাকার গণ্যমান্য তিন জন ব্যক্তি, ছাত্র প্রতিনিধি ও আমরা প্রক্টরিয়াল বডি থাকব। মিটিং থেকে একটি সমন্বয় কমিটি করা হবে যাতে ভবিষ্যতে এমন সমস্যা হলে দ্রুত সমাধান করা যায়। 

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ বিষয়ে হাটহাজারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাবিবুর রহমান বলেন, শিক্ষার্থীরা যে অসহযোগিতার অভিযোগ করছে সেটা সঠিক নয়। আমরা সকাল ৬টা ১৮ মিনিটে খবর পেয়েছি এবং ৬টা ২৬ মিনিটে রেল ক্রসিংয়ের উপস্থিত হয়েছি। স্থানীয়রা উত্তেজিত হয়েছিল, তাদের শান্ত করার চেষ্টা করেছি, যাতে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে তাদের কোনো ঝামেলা না হয়। আর আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম স্বাভাবিক করার জন্য সব রকম সহযোগিতা করছি। 

উল্লেখ্য, গত ৫ আগস্ট রাতে রেলক্রসিং এলাকায় শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করেছিলেন যুবলীগ নেতা হানিফ ও তাঁর অনুসারীরা। সেসময় দর্শন বিভাগের শিক্ষক মোজাম্মেল হকের গাড়িতেও হামলা করে তারা। 

অভিযোগ রয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের রেল স্টেশনের জায়গা দখল করে সবগুলো দোকানের ভাড়া দেন হানিফ। এ ছাড়া তাঁর ছোটভাই ছাত্রলীগ নেতা মো. ইকবাল পুরো ক্যাম্পাস ও আশপাশের এলাকায় ডিশ লাইন এবং ইন্টারনেটের ব্যবসা করেন। অন্য কাউকে এখানে ইন্টারনেট ব্যবসা করতে দেন না। শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ করলে হুমকি–ধামকি দেয় হানিফ বাহিনী। 

মধ্যরাতে দোকানে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকাখোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মোহাম্মদ হানিফ ফতেপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সদস্য ও নিজেকে স্থানীয় যুবলীগের নেতা হিসেবে পরিচয় দেন। তাঁর ছোটভাই ইকবাল চট্টগ্রাম জেলা (উত্তর) ছাত্রলীগের যুগ্ম–সাধারণ সম্পাদক। সম্প্রতি ছাত্র–জনতার আন্দোলনে নগরীর বহদ্দারহাট এলাকায় শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার আসামি তিনি। 

হামলার অভিযোগের বিষয়ে জানতে ইকবালের ফোন নম্বরে একাধিকবার কল করলেও সাড়া পাওয়া যায়নি। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. তানভীর মোহাম্মদ হায়দার আরিফ জানিয়েছেন, হামলাকারী হানিফের বিরুদ্ধে থানায় একটি মামলা রয়েছে। পুলিশ তাঁকে খুঁজছে। তিনি জেনেছেন, হানিফ দিনের বেলা এলাকায় থাকেন না। রাতে আসেন। রাতে কেন পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করতে পারছে না তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন প্রক্টর।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ওসমান হাদির জানাজা: ১০০০ বডি ওর্ন ক্যামেরা পরবেন পুলিশ সদস্যরা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ওসমান হাদির জানাজা: ১০০০ বডি ওর্ন ক্যামেরা পরবেন পুলিশ সদস্যরা

ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান বিন হাদির নামাজে জানাজা আজ শনিবার বেলা ২টায় অনুষ্ঠিত হবে। জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় আয়োজিত এই জানাজাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)।

গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টা ২০ মিনিটে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, জানাজার সময় আধা ঘণ্টা এগিয়ে আনা হয়েছে। এর আগে বেলা আড়াইটায় জানাজা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তা আজ দুপুর ২টায় নির্ধারিত হয়েছে।

জানাজা উপলক্ষে সংসদ ভবন ও আশপাশ এলাকায় পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। ডিএমপির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, নিরাপত্তার স্বার্থে জানাজায় দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা ১ হাজারটি বডি ওর্ন ক্যামেরা ব্যবহার করবেন। পুরো এলাকা সিসিটিভি ও গোয়েন্দা নজরদারির আওতায় আনা হয়েছে।

জানাজায় অংশগ্রহণকারীদের জন্য পুলিশের পক্ষ থেকে বিশেষ কিছু নির্দেশনা জারি করা হয়েছে:

ব্যাগ বহন নিষেধ: জানাজায় আসা মুসল্লিদের কোনো প্রকার ব্যাগ বা ভারী বস্তু বহন না করার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ জানানো হয়েছে।

ড্রোন ওড়ানো নিষিদ্ধ: নিরাপত্তাঝুঁকি এড়াতে সংসদ ভবন ও এর সংলগ্ন এলাকায় যেকোনো ধরনের ড্রোন ওড়ানো সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

ওসমান হাদির জানাজায় বিপুলসংখ্যক মানুষের সমাগম হতে পারে বিবেচনা করে ট্রাফিক বিভাগ থেকেও যাতায়াতের ক্ষেত্রে বিশেষ সতর্কতা ও শৃঙ্খলা বজায় রাখার আহ্বান জানানো হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ময়মনসিংহে পিটিয়ে হত্যা: র‍্যাবের অভিযানে আটক ৭

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১: ১৪
দিপু চন্দ্র দাস। ছবি: সংগৃহীত
দিপু চন্দ্র দাস। ছবি: সংগৃহীত

ময়মনসিংহের ভালুকায় ধর্ম অবমাননার অভিযোগে এক হিন্দু ধর্মাবলম্বী যুবককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় প্রধান অভিযুক্তসহ সাতজনকে আটক করেছে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব-১৪)।

আজ শনিবার ময়মনসিংহের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে জানানো হয়েছে, আটক ব্যক্তিরা এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সরাসরি জড়িত বলে প্রাথমিকভাবে সন্দেহ করা হচ্ছে। আটককৃতরা হলেন: মো. লিমন সরকার (১৯), মো. তারেক হোসেন (১৯), মো. মানিক মিয়া (২০), এরশাদ আলী (৩৯), নিজুম উদ্দিন (২০), আলমগীর হোসেন (৩৮), মো. মিরাজ হোসেন আকন (৪৬)।

জানা গেছে, হত্যাকাণ্ডের পর থেকেই অভিযুক্তরা এলাকা ছেড়ে আত্মগোপন করেছিল। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে র‍্যাবের একাধিক টিম ময়মনসিংহ জেলার বিভিন্ন স্থানে ঝটিকা অভিযান চালায়। অভিযানে হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে এই সাতজনকে আটক করা সম্ভব হয়।

উল্লেখ্য, কয়েক দিন আগে ভালুকায় ধর্ম অবমাননার অভিযোগে ওই হিন্দু যুবককে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। এই ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছিল এবং স্থানীয়রা দ্রুত বিচারের দাবি জানিয়ে আসছিলেন। পুলিশ ও র‍্যাব যৌথভাবে তদন্ত শুরু করার পর আজ কয়েকজন অভিযুক্তকে আটক করা হলো।

র‍্যাব কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আটককৃতদের সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করার প্রক্রিয়া চলছে। অধিকতর তদন্তের জন্য রিমান্ডের আবেদন করা হতে পারে। এলাকায় শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আনিসুল ইসলামের গ্রামের বাড়িতে হামলা-অগ্নিসংযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্টের (এনডিএফ) সভাপতি ও জাতীয় পার্টির একাংশের চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদের বাড়িতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাতে উপজেলার গুমানমর্দন এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্র জানায়, রাত ১২টার দিকে ৫০ থেকে ৬০ জনের একটি দল প্রাইভেট কার ও মাইক্রোবাসে করে ঘটনাস্থলে আসে। তারা আনিসুল ইসলাম মাহমুদের বাড়িতে প্রবেশ করে ব্যাপক ভাঙচুর চালায়। ঘটনার সময় আনিসুল ইসলাম কিংবা তাঁর পরিবারের কোনো সদস্য বাড়িতে ছিলেন না।

হামলাকারীদের হাতে আগ্নেয়াস্ত্র, লাঠিসোঁটা ছিল এবং অধিকাংশের মুখে মাস্ক পরা ছিল। তারা ঘরের আসবাব তছনছ করে একপর্যায়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে বাড়ির সামনে থাকা একটি প্রাইভেট কার পুড়ে যায়। হামলাকারীরা চলে যাওয়ার পর স্থানীয় লোকজন আগুন নেভানোর চেষ্টা করে। পরে ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এই ঘটনায় এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। ঘটনার পর থেকে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

এ বিষয়ে হাটহাজারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনজুর কাদের ভূঁইয়া বলেন, আনিসুল ইসলাম মাহমুদের বাড়িতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে এবং ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের শনাক্তে কাজ চলছে। হামলার কারণ তাৎক্ষণিকভাবে জানা না গেলেও পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার পেছনের উদ্দেশ্য ও জড়িত ব্যক্তিদের শনাক্তে সব দিক বিবেচনায় নিয়ে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মাগুরায় বিটিভির মহাপরিচালক ও ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর জোহার বাড়িতে অগ্নিসংযোগ

মাগুরা প্রতিনিধি 
আপডেট : ২০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১: ০৪
মাগুরা থানা। ছবি: আজকের পত্রিকা
মাগুরা থানা। ছবি: আজকের পত্রিকা

মাগুরায় বাংলাদেশ টেলিভিশনের (বিটিভি) মহাপরিচালক মাহবুবুল আলম এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর তানভীর হাসান জোহার বাসভবনে অগ্নিসংযোগ করেছে দুর্বৃত্তরা।

গত বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) রাতে জেলা জজ আদালত-সংলগ্ন ডক্টরস মেডিকেল কলেজ ছাত্রাবাসের পাশে দোতলা ‘জোহা ভবনে’ এই আগুন লাগানোর ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় পুলিশ এখন পর্যন্ত কাউকে আটক করতে পারেনি।

জোহার ভবন-সংলগ্ন একটি চায়ের দোকানের মালিক প্রদীপ মণ্ডল এবং ডেকোরেটর ব্যবসায়ীরা জানান, বৃহস্পতিবার রাত ১০টার পর কয়েকজন দুই লিটারের অকটেনের বোতল সিমেন্টের ব্যাগের ভেতর ভরে ভবনের পেছন দিক দিয়ে প্রবেশ করে। পরে তারা মূল ফটক ও জানালার অংশে আগুন ধরিয়ে দিয়ে দ্রুত পালিয়ে যায়। আগুনের শিখা দেখতে পেয়ে আশপাশের লোকজন ছুটে এসে পানি ছিটিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে ভবনটির সব সময় জানালা-দরজা লাগানো থাকে বলে আগুন বেশি দূর ছড়াতে পারেনি। তাঁরা জানান, এই ভবনে একমাত্র কেয়ারটেকার ইনজার আলী বিশ্বাস থাকেন।

এ বিষয়ে কেয়ারটেকার ইনজার আলী জানান, তিনি ঘটনার সময় বাইরে ওষুধ কিনতে গিয়েছিলেন। বাড়িতে এসে দেখেন প্রতিবেশীরা আগুন নেভাচ্ছেন।

মাগুরা সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) তপন কুমার বলেন, এখন পর্যন্ত কাউকে আটক করা যায়নি। তদন্ত চলছে। কারা এই ঘটনায় জড়িত, তা খুঁজে দেখা হবে।

এদিকে আজ শনিবার সকালে মাগুরার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মিরাজুল ইসলাম জানান, পুলিশ ওই রাতেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে তেলের বোতল, মশালের টুকরাসহ কিছু আলামত সংগ্রহ করেছে। তিনি বলেন, কারা এই নাশকতার সঙ্গে জড়িত, তা শনাক্তে পুলিশের একটি দল কাজ করে যাচ্ছে। তবে এ বিষয়ে ভুক্তভোগী ব্যক্তিদের পক্ষ থেকে কোনো লিখিত অভিযোগ করা হয়নি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত