Ajker Patrika

সিলেটে পানিবন্দী ৮ লাখের বেশি মানুষ

লবীব আহমদ, সিলেট
আপডেট : ২০ জুন ২০২৪, ১০: ৩৭
সিলেটে পানিবন্দী ৮ লাখের বেশি মানুষ

টানা বৃষ্টিপাত আর পাহাড়ি ঢলে সিলেটে আট লাখেরও বেশি মানুষ বন্যায় আক্রান্ত হয়েছেন। গত শুক্রবার থেকে মহানগর ও জেলার বিভিন্ন এলাকায় বন্যা পরিস্থিতির দেখা দেয়। এতে ভোগান্তি পোহাচ্ছেন সাধারণ মানুষ।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, নগরীর ২৩টি ওয়ার্ডের ৫০ হাজার মানুষ বন্যায় আক্রান্ত হয়েছেন। আর আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছেন ২ হাজার ৫০০ জন। জেলার ১৩টি উপজেলার ১০৬টি ইউনিয়নে ১ হাজার ৫৪৮টি গ্রামের ৮ লাখ ২৫ হাজার ২৫৬ জন বন্যায় আক্রান্ত হয়েছেন। এখন পর্যন্ত ১৭ হাজার ৪৪৯ জন মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে রয়েছেন। তাদের জন্য প্রস্তুত রয়েছে ৫৭৬টি আশ্রয়কেন্দ্র। 

জেলার গোয়াইনঘাট উপজেলায় সবচেয়ে বেশি মানুষ বন্যায় আক্রান্ত হয়েছেন। উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নের ২২৩টি গ্রামে ১ লাখ ২৩ হাজার ৮০০ জন মানুষ বন্যায় আক্রান্ত হয়েছেন। তার মধ্যে আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছেন ১ হাজার ৪৪০ জন। 

উপজেলার সব সড়কের ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হওয়ায় জেলা শহরের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন আছে। গোয়াইনঘাট-সারিঘাট, গোয়াইনঘাট-রাধানগর-জাফলং, গোয়াইনঘাট-ফতেহপুর-সিলেট সদর ও গোয়াইনঘাট-সালুটিকর সড়কটি বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। 

কোম্পানীগঞ্জে সবচেয়ে বেশি মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছে। উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের ১১৩টি গ্রামের ৯৫ হাজার ৫০০ জন বন্যায় আক্রান্ত হয়েছেন। একই সময় আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছেন ৭ হাজার ৩০৩ জন। উপজেলার বঙ্গবন্ধু মহাসড়ক বাদে বাকি সব সড়ক পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে। ফলে উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকার মানুষজন নৌকা ছাড়া বাড়ি থেকে বের হতে পারছে না। আর জেলার ১৩ উপজেলার মধ্যে বালাগঞ্জ উপজেলায় কম মানুষ বন্যায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং জকিগঞ্জেও কম মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছেন। 

কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুনজিত কুমার চন্দ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘উপজেলার সব এলাকা বন্যায় প্লাবিত। যাদের ঘরবাড়িতে বেশি পানি উঠেছে তারা আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছেন। আমরা বন্যার্তদের মধ্যে ত্রাণসহায়তা দিচ্ছি।’ 

সিলেটে বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে সড়কসিলেট আবহাওয়া অধিদপ্তরের সহকারী আবহাওয়াবিদ শাহ মো. সজীব হোসাইন বলেন, ‘গত ২৪ ঘণ্টায় ভারতের চেরাপুঞ্জিতে (মঙ্গলবার সকাল ৯টা থেকে বুধবার সকাল ৯টা পর্যন্ত) ১১০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। সিলেটে গত ২৪ ঘণ্টায় (মঙ্গলবার সকাল ৬টা থেকে বুধবার সকাল ৬টা পর্যন্ত) ১০০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। আর বুধবার সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ১১০.২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে।’ 

পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা যায়, সিলেটে আজ বুধবার সন্ধ্যা ৬টায় সিলেটের তিনটি নদীর ছয়টি পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আজ সন্ধ্যা ৬টায় সুরমা নদীর কানাইঘাট পয়েন্টে বিপৎসীমার ৯৬ সেমি. ও সিলেট পয়েন্টে ৩৭ সেমি, কুশিয়ারা নদীর আমলশীদ পয়েন্টে ৬২ সেমি., ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে ১০০ সেমি, শেরপুর পয়েন্টে ২১ সেমি. ও সারি-গোয়াইনের গোয়াইনঘাট পয়েন্টে ২ সেমি ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। 

পাউবো সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাস বলেন, ‘বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে। তাই পরিস্থিতির উন্নতি ঘটতে সময় লাগবে। গত পাঁচ দিনে ভারতের চেরাপুঞ্জিতে ১ হাজার ৬০০ মিলিমিটারের ওপরে বৃষ্টিপাত হয়েছে।’ 

সিলেটে বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে সড়কডুবেছে নগরী:
মহানগরীর উপশহর, মেন্দিবাগ, তালতলা, সোবহানীঘাট, মাছিমপুর, ছড়ারপার, যতরপুর, মিরাবাজার, জামতলা, কাজির বাজার, শেখঘাট, বেতের বাজারসহ নিম্নাঞ্চল এখনো বন্যার পানিতে তলিয়ে আছে। এসব এলাকার মানুষের বাসাবাড়িতে কারও হাঁটু সমান পানি আবার কারও বাসায় কোমর সমান পানি। অনেকের বাসায় পানি ওঠাতে চলে গেছেন আশ্রয়কেন্দ্রে। আবার কেউ কেউ আত্মীয়ের বাসাবাড়িতে উঠেছেন। 

তালতলায় থাকা সিলেট ফায়ার সার্ভিস স্টেশন পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে। ঈদের দিন রাতে ঢুকে পড়া পানি এখনো রয়েছে স্টেশনটিতে। সিলেট ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের সিনিয়র স্টেশন অফিসার মো. বেলাল হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘নগরীতে পানি ঢুকলেই আমাদের অফিস ডুবে যায়। এখনো চার ফুট পানির নিচে রয়েছে আমাদের স্টেশন। তবুও আমাদের কার্যক্রম বন্ধ নেই।’ 

আশ্রয়কেন্দ্রে থাকা ও ৫০ বছর বয়সী জায়েদা বেগম জানান, ‘আমি হোটেলে কাজ করি। আমার পরিবারে পাঁচজন সদস্য। স্বামী বয়স্ক ও অসুস্থ। আমি কাজ করে সংসার চালাই। ঈদের দিন রাতের বৃষ্টিতে ঘরে পানি উঠেছে। এখন ঘরে গলা পানি। পরে ওই দিন ফজরের ওয়াক্তে আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছি। এখন এখানে খাবারদাবার নেই।

‘যার কারণে খুবই অসহায় অবস্থায় দিন কাটাচ্ছি। হোটেল বন্ধ থাকায় সেখানেও যেতে পারছি না। একটি পাঁচতলার বাসায় পরিবার নিয়ে উঠেছি। শুনেছি যতরপুরের ওই দিকে একজন ত্রাণ বিতরণ করবে, সেখানে গিয়ে এই চিড়া-মুড়ি চেয়ে আনছি। তবুও তারা দিতে চাচ্ছে না। ঘরের ডেগ-বাসন সব পানির নিচে। কিসের ঈদ করব। ঈদ করছি না। আশ্রয়কেন্দ্রে গ্যাস নেই। এ কারণে রান্নাবান্নাও করতে পারছি না।’ 

নগরীর উপশহরের এইচ ব্লকের বাসিন্দা রাজমিস্ত্রি আমির হোসেন (৩৮) জানান, ‘ঈদের আগের দিন রাতের বৃষ্টিতে বাসায় পানি উঠে। এখন ঘরে কোমর পানি। আমার পরিবারে আটজন সদস্য। বাসায় কোমর পানি হওয়ায় এখন আশ্রয়কেন্দ্রে আছি। উপশহরের প্রতিটি ব্লকেই পানি। যার কারণে যারা নিচতলায় থাকেন, তারা সবাই-ই এই পানিতে আক্রান্ত। 

আগের বারও পানি উঠছিল। এখন বৃষ্টি হলেই মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়ে, বাসাবাড়িতে ঢুকে পড়ে পানি। ঈদের নামাজ গিয়ে পড়তে হয়েছে হাঁটুসমান পানি ভেঙে গিয়ে। ঈদগাহে নামাজ পড়ার কথা থাকলেও প্রায় সব জায়গায়ই মানুষজন মসজিদে পড়ছেন। এবারের ঈদ আর সেই আনন্দ নিয়ে আসে নি। সারা দিন বৃষ্টি আর বাসায় পানি। খুবই আতঙ্কের মধ্যে দিনাতিপাত করছি আমরা। সুরমা নদীও ভরা। পানি যাওয়ার জায়গা নেই আর আমাদেরও বাঁচার উপায় নেই।’ 

সিলেট সিটি করপোরেশনের (সিসিক) জনসংযোগ কর্মকর্তা সাজলু লস্কর আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘নগরীর ৪২টি ওয়ার্ডের মধ্যে ২৮টি ওয়ার্ডের ৮০ হাজার মানুষ পানিবন্দী রয়েছেন। নগরীর ৮০টি আশ্রয়কেন্দ্রের মধ্যে ২২টিতে মানুষ উঠেছে। আশ্রয়কেন্দ্র ও বন্যাকবলিত এলাকায় রান্না খাবার, শুকনা খাবার, বিশুদ্ধ পানি, ওষুধসহ প্রয়োজনীয় সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে। নগরীর বন্যা পরিস্থিতি দেখে তাৎক্ষণিক নগদ ১০ লাখ টাকা, ১০০ মেট্রিক টন চাল ও ২ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার ত্রাণ সহায়তা প্রদান করেন প্রতিমন্ত্রী মো. মহিবুর রহমান।’ 

সিলেটে বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে সড়কহাসপাতালে পানি:
সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ, গোয়াইনঘাট ও ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ঢুকে পড়েছে পানি। তবে সবশেষ বুধবার হাসপাতালের মধ্যে থেকে পানি নেমে যায়। 

এ বিষয়ে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মোহাম্মদ কামরুজ্জামান বলেন, ‘মঙ্গলবারে পানি বাড়ার কারণে হাসপাতালে পানি ঢুকে পড়ে। এতে করে নিচতলায় থাকায় ইমার্জেন্সি বিভাগের সবকিছু ওপর তলায় নিয়ে যাওয়া হয়। পরে বুধবার পানি কমে গেলে তা আবার নিচে নিয়ে আসা হয়। তবে এখনো হাসপাতালের রাস্তায় হাঁটু সমান পানি।’ 

মাছ ধরতে গিয়ে মৃত্যু: 
জকিগঞ্জে বন্যার পানিতে কলাগাছের ভেলা করে মাছ ধরতে গিয়ে আব্দুল হালিম (৫৫) নামে এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। বুধবার উপজেলার বারহাল ইউনিয়নের মুহিদপুর এলাকায় এই ঘটনা ঘটে বলে জানান জকিগঞ্জ থানার ওসি জাবেদ মাসুম। আব্দুল হালিম ওই গ্রামের মৃত রনই মিয়ার ছেলে ও পেশায় পিকআপচালক ছিলেন। 

পর্যটনকেন্দ্র বন্ধ: 
বন্যা পরিস্থিতির অবনতি ঘটায় জেলার সব পর্যটনকেন্দ্র অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার বন্ধের এই ঘোষণা দেন সিলেটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ মোবারক হোসেন। বিভিন্ন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা বন্যা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে সভা করে পর্যটনকেন্দ্রগুলো বন্ধ ঘোষণা করেন। এর আগে গত ৩০ মে সিলেটের সব কটি পর্যটনকেন্দ্র বন্ধ রাখার ঘোষণা দেওয়া দেওয়া হয়েছিল। পরে ৭ জুন খুলে দেওয়া হয়। 

বন্যার্ত এলাকা পরিদর্শনে মন্ত্রী: 
সিলেটে বন্যাদুর্গত এলাকা পরিদর্শন ও ত্রাণ বিতরণ করেছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মো. মুহিবুর রহমান, প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী শফিকুর রহমান চৌধুরী, সিলেট-৪ আসনের সংসদ সদস্য ও প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ইমরান আহমদ এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. কামরুল হাসান। 

সিলেটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ মোবারক হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘মোটামুটি সিলেটের সব জায়গায়ই বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। আমাদের সর্বশেষ রিপোর্টে ৬৫৬টি আশ্রয়কেন্দ্রে ১৯ হাজার ৯৪৯ জন মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে আছেন। সবগুলো আশ্রয়কেন্দ্রেই আমাদের নজরদারি রয়েছে। প্রত্যেক ইউনিয়নেই আমাদের ট্যাগ অফিসার রয়েছেন। 

তিনি বলেন, ‘উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, প্রত্যেক ইউনিয়নের চেয়ারম্যানসহ সবাইকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। বন্যা পরিস্থিতির খুব বেশি উন্নতি হয়নি। পানি অল্প একটু কমলেও আবার বৃষ্টিতে আর কমেনি। গত ২৯ মে থেকে সিলেটে ১ হাজার ৪৯৫ বস্তা শুকনো খাবার, ৬৩১ টন টন জিআর চাল, ২৭ লাখ ৭৫ হাজার নগদ টাকা, ৯ লাখ করে শিশুখাদ্য ও গোখাদ্য উপজেলা পর্যায়ে উপবরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এগুলো ইউএনওরা বণ্টন করছেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ময়মনসিংহে পিটিয়ে হত্যা: র‍্যাবের অভিযানে আটক ৭

বাম, শাহবাগী, ছায়ানট, উদীচীকে তছনছ করে দিতে হবে: জাবি ছাত্রশিবির সেক্রেটারি

ওসমান হাদির জানাজা: ১০০০ বডি ওর্ন ক্যামেরা পরবেন পুলিশ সদস্যরা

বিএনপি নেতার ঘরে তালা মেরে অগ্নিসংযোগের অভিযোগ, ঘুমন্ত শিশুর মৃত্যু, দগ্ধ ৩

মাগুরায় বিটিভির মহাপরিচালক ও ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর জোহার বাড়িতে অগ্নিসংযোগ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

উত্তরায় ট্রাকচাপায় শিশুর মৃত্যু, মা-ভাইসহ আহত ৩

ঢামেক প্রতিবেদক
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

রাজধানীর উত্তরায় ট্রাকচাপায় সোহান শেখ (৮) নামের এক শিশু মারা গেছে। আজ শনিবার (২০ ডিসেম্বর) সকাল ৬টার দিকে উত্তরা বিএনএস সেন্টার ফ্লাইওভারের নিচে ঘটনাটি ঘটে। এই দুর্ঘটনায় শিশুটির মা, নানি ও বড় ভাই আহত হয়েছেন।

আহত অবস্থায় সোহান ও তাঁর মা তহুরুন্নেছাকে (৩৮) ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে বেলা ১১টার দিকে চিকিৎসক শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করেন। মা তহুরুন্নেছা জরুরি বিভাগে চিকিৎসাধীন আছেন। আর আহত নানি আবেজান বেগম (৬৫) ও বড় ভাই মাহমুদুল হাসান রোহানকে (১৩) পঙ্গু হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

হাসপাতালে নিহত সোহানের খালা রুনা বেগম জানান, তাঁদের বাড়ি বাগেরহাট সদর উপজেলার পুলঘাট গ্রামে। দুই ছেলেকে নিয়ে গ্রামের বাড়িতে থাকেন তাঁরা। সোহানের বাবা রওনক হাসান আরেকটি বিয়ে করে অন্যত্র থাকেন। সোহান ও রোহান এলাকায় একটি মাদ্রাসায় পড়ে। তাদের মা অন্যের বাসায় কাজ করে।

রুনা বেগম আরও জানান, গত সোমবার তাঁর মা, বোন ও বোনের দুই ছেলে তুরাগের নয়ানগর এলাকায় তাঁর বাসায় বেড়াতে আসে। শনিবার সকালে গ্রামের বাড়ি যাওয়ার জন্য বের হয়েছিল। উত্তরা বিএনএস সেন্টারের বিপরীত পাশে ফ্লাইওভারের নিচে দাঁড়িয়ে গাড়ির জন্য অপেক্ষা করছিল। এ সময় একটি ট্রাক তাদের চাপা দেয়। আহত অবস্থায় স্বজনেরা তাদের প্রথমে উত্তরার কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখান থেকে পঙ্গু হাসপাতালে নেওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হলে শিশু সোহান ও তার মাকে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে এলে সেখানে শিশুটির মৃত্যু হয়।

ঢাকা মেডিকেল পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (পরিদর্শক) মো. ফারুক মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, শিশুটির মরদেহ জরুরি বিভাগের মর্গে রাখা হয়েছে। বিষয়টি উত্তরা পূর্ব থানায় অবগত করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ময়মনসিংহে পিটিয়ে হত্যা: র‍্যাবের অভিযানে আটক ৭

বাম, শাহবাগী, ছায়ানট, উদীচীকে তছনছ করে দিতে হবে: জাবি ছাত্রশিবির সেক্রেটারি

ওসমান হাদির জানাজা: ১০০০ বডি ওর্ন ক্যামেরা পরবেন পুলিশ সদস্যরা

বিএনপি নেতার ঘরে তালা মেরে অগ্নিসংযোগের অভিযোগ, ঘুমন্ত শিশুর মৃত্যু, দগ্ধ ৩

মাগুরায় বিটিভির মহাপরিচালক ও ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর জোহার বাড়িতে অগ্নিসংযোগ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

হামলা-ভাঙচুরকারীরা হাদির আদর্শের অনুসারী হতে পারে না: কনকচাঁপা

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি  
রুমানা মোর্শেদ কনকচাঁপা। ছবি: সংগৃহীত
রুমানা মোর্শেদ কনকচাঁপা। ছবি: সংগৃহীত

ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান বিন হাদির মৃত্যুর খবরের প্রতিক্রিয়ায় দেশের শিল্প, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনে যারা হামলা, ভাঙচুর, নৈরাজ্য ও অগ্নিসংযোগ করেছে, তারা কখনোই ওসমান হাদির আদর্শের হতে পারে না বলে মন্তব্য করেছেন সংগীতশিল্পী রুমানা মোর্শেদ কনকচাঁপা। আজ শনিবার সকালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এসব কথা বলেন।

কনকচাঁপা জাতীয়তাবাদী সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন (জাসাস) কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক এবং সিরাজগঞ্জ জেলা বিএনপির সদস্য।

ফেসবুক পোস্টে কনকচাঁপা লেখেন, ‘শহীদ ওসমান হাদির মৃত্যুর খবরের প্রতিক্রিয়ায় দেশের শিল্প, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনে যারা হামলা, ভাঙচুর, নৈরাজ্য ও অগ্নিসংযোগ করেছে; তারা কখনোই ওসমান হাদির আদর্শের হতে পারে না। ওসমান হাদি বারবার বলেছেন, “আমি আমার শত্রুর সাথেও ইনসাফ করতে চাই।” তা ছাড়া তিনি সাংস্কৃতিক আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ভালো সংস্কৃতি সৃষ্টি করতে আহ্বান জানাতেন। শিল্প, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানসমূহে ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপ যারা করেছে, তারা কখনো শান্তিপূর্ণ দেশপ্রেমিক হতে পারে না।’

ফেসবুক পোস্টে ময়মনসিংহে সনাতন ধর্মাবলম্বী যুবককে হত্যার বিষয়েও কথা বলেছেন কনকচাঁপা। তিনি লেখেন, ‘ময়মনসিংহের ভালুকায় দিপু দাস নামের একজন সনাতন ভাইকে একটা গোষ্ঠী ধর্ম অবমাননার অভিযোগে নৃশংসভাবে হত্যা করেছে। যদি তিনি সত্যিই এমন কিছু করে থাকেন, তবে দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী তার ন্যায়বিচার হওয়া উচিত ছিল। আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়া কখনো ধার্মিক মানুষের কাজ হতে পারে না। দেশের সর্বস্তরের সকল ধর্ম, মত ও আদর্শের মানুষের প্রতি দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, শৃঙ্খলা ও শান্তি বজায় রাখতে বিনীত অনুরোধ করছি। কোনো ষড়যন্ত্রকারীর উসকানি, গুজব ও ইন্ধনে দেশ ও দেশের মানুষের ক্ষতি করবেন না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ময়মনসিংহে পিটিয়ে হত্যা: র‍্যাবের অভিযানে আটক ৭

বাম, শাহবাগী, ছায়ানট, উদীচীকে তছনছ করে দিতে হবে: জাবি ছাত্রশিবির সেক্রেটারি

ওসমান হাদির জানাজা: ১০০০ বডি ওর্ন ক্যামেরা পরবেন পুলিশ সদস্যরা

বিএনপি নেতার ঘরে তালা মেরে অগ্নিসংযোগের অভিযোগ, ঘুমন্ত শিশুর মৃত্যু, দগ্ধ ৩

মাগুরায় বিটিভির মহাপরিচালক ও ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর জোহার বাড়িতে অগ্নিসংযোগ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

চকরিয়ায় গাছের সঙ্গে ধাক্কা খেল অটোরিকশা, শিশু নিহত

চকরিয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধি 
দুর্ঘটনায় অটোরিকশাটির কিছু অংশ ভেঙে গেছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
দুর্ঘটনায় অটোরিকশাটির কিছু অংশ ভেঙে গেছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

কক্সবাজারের চকরিয়ায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাছের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে উল্টে যাওয়ায় তানিয়া আকতার (১০) নামের এক শিশু নিহত হয়েছে। আহত হয়েছেন আরও দুজন। গতকাল শুক্রবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে উপজেলার পূর্ব বড় ভেওলা ইউনিয়নের ঈদমনি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

নিহত তানিয়া উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের রাস্তার মাথা গ্রামের মনোহর আলমের মেয়ে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, পূর্ব বড় ভেওলার ঈদমনি এলাকায় সড়ক দিয়ে যাওয়ার সময় অটোরিকশাটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের পাশে গাছের সঙ্গে ধাক্কা খায়। এতে অটোরিকশাটি উল্টে যায়। এ সময় স্থানীয় লোকজন অটোরিকশায় থাকা শিশু তানিয়া ও তার মা-বাবাকে উদ্ধার করে চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তানিয়াকে মৃত ঘোষণা করেন।

এ ব্যাপারে চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনির হোসেন বলেন, অটোরিকশা দুর্ঘটনায় এক শিশু নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। মরদেহ তার পরিবার বাড়িতে নিয়ে গেছেন। ওই শিশুর পরিবারের কোনো অভিযোগ নেই।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ময়মনসিংহে পিটিয়ে হত্যা: র‍্যাবের অভিযানে আটক ৭

বাম, শাহবাগী, ছায়ানট, উদীচীকে তছনছ করে দিতে হবে: জাবি ছাত্রশিবির সেক্রেটারি

ওসমান হাদির জানাজা: ১০০০ বডি ওর্ন ক্যামেরা পরবেন পুলিশ সদস্যরা

বিএনপি নেতার ঘরে তালা মেরে অগ্নিসংযোগের অভিযোগ, ঘুমন্ত শিশুর মৃত্যু, দগ্ধ ৩

মাগুরায় বিটিভির মহাপরিচালক ও ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর জোহার বাড়িতে অগ্নিসংযোগ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

প্রতিবেশী দুই ভাইয়ের ঝগড়া থামাতে গিয়ে প্রাণ গেল যুবকের

মুন্সিগঞ্জ প্রতিনিধি
জান্নাত হোসেন। ছবি: সংগৃহীত
জান্নাত হোসেন। ছবি: সংগৃহীত

মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া উপজেলায় প্রতিবেশী দুই ভাইয়ের ঝগড়া থামাতে গিয়ে দায়ের কোপে এক যুবক নিহত হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। আজ শনিবার (২০ ডিসেম্বর) সকাল ১০টার দিকে গজারিয়া ইউনিয়নের নয়ানগর গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।

নিহত যুবকের নাম জান্নাত হোসেন (২৭)। তিনি নয়ানগর গ্রামের আব্দুল হকের ছেলে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নয়ানগর গ্রামের শাহিন রাঢ়ির দুই ছেলে তারেক ও রিয়াদের মধ্যে অনেক দিন ধরে ঝগড়া চলছে। আজ সকালে দুই ভাইয়ের মধ্যে ফের ঝগড়া শুরু হলে তা থামাতে প্রতিবেশী যুবক জান্নাত হোসেন ঘটনাস্থলে যান। এ সময় দুই ভাইয়ের হাতেই ধারালো দা ছিল। একপর্যায়ে রিয়াদ তাঁর ভাই তারেককে লক্ষ্য করে দা দিয়ে কোপ দিতে গেলে তা জান্নাত হোসেনের শরীরে লাগে। গুরুতর আহত অবস্থায় স্থানীয় লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে গজারিয়ার হামদর্দ জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

হামদর্দ জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক মারিয়া মোস্তারি বলেন, ‘বেলা ১১টার দিকে জান্নাত হোসেনকে হাসপাতালে আনা হয়। প্রাথমিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে তাঁকে মৃত ঘোষণা করা হয়। হাসপাতালে আনার আগেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে মৃত্যু হতে পারে বলে ধারণা করছি।’

এদিকে নিহত জান্নাত হোসেনের ভাগনি সুমাইয়া আক্তার বলেন, ‘তারেক ও রিয়াদ নেশাগ্রক্ত। নেশার টাকা জোগাড় করতে তারা চুরি-ছিনতাইসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড করে। পরিকল্পিতভাবেই তারা আমার মামাকে ডেকে নিয়ে হত্যা করেছে। আমরা এই হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু বিচার চাই।’

এ বিষয়ে গজারিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাসান আলী বলেন, খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ময়মনসিংহে পিটিয়ে হত্যা: র‍্যাবের অভিযানে আটক ৭

বাম, শাহবাগী, ছায়ানট, উদীচীকে তছনছ করে দিতে হবে: জাবি ছাত্রশিবির সেক্রেটারি

ওসমান হাদির জানাজা: ১০০০ বডি ওর্ন ক্যামেরা পরবেন পুলিশ সদস্যরা

বিএনপি নেতার ঘরে তালা মেরে অগ্নিসংযোগের অভিযোগ, ঘুমন্ত শিশুর মৃত্যু, দগ্ধ ৩

মাগুরায় বিটিভির মহাপরিচালক ও ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর জোহার বাড়িতে অগ্নিসংযোগ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত