Ajker Patrika

রাজাকার-আলবদরদের তালিকা: আশ্বাস আর কমিটিতেই ঘুরপাক

উবায়দুল্লাহ বাদল, ঢাকা
আপডেট : ১৬ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৩: ০৯
রাজাকার-আলবদরদের তালিকা: আশ্বাস আর কমিটিতেই ঘুরপাক

২০১৮ সালের নির্বাচনের পর দায়িত্ব নিয়েই সরকার ঘোষণা দিয়েছিল, একাত্তরের রাজাকার-আলবদরসহ স্বাধীনতাবিরোধীদের তালিকা করা হবে। সে অনুযায়ী ১০ হাজার ৭৮৯ জনের নামের তালিকা প্রকাশ করলেও সমালোচনার মুখে তা প্রত্যাহার করা হয়। নতুন করে তালিকা তৈরি করতে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা) আইন সংশোধন করে এর এখতিয়ার দেওয়া হয়েছে জামুকাকে। প্রায় দেড় বছর আগে আইনগত কর্তৃত্ব পাওয়ার পরও জামুকা কাজ শুরুই করেনি। তারা তাকিয়ে রয়েছে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির দিকে। এই কমিটি আড়াই বছর আগে নিজ দায়িত্বে রাজাকারের তালিকা তৈরির উদ্যোগ নেয়। এ জন্য কমিটির সভাপতি শাজাহান খানের নেতৃত্বে একটি উপকমিটি কাজ করছে। সেই উপকমিটিও তালিকা চূড়ান্ত করতে পারেনি। ফলে সরকারের চলতি মেয়াদে এই তালিকা হচ্ছে না।

সরকারের এই মেয়াদে যে রাজাকারের তালিকা হচ্ছে না, তা স্পষ্ট মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী ও জামুকার চেয়ারম্যান আ ক ম মোজাম্মেল হকের কথায়। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে আমাদের মন্ত্রণালয়সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। কমিটির চেয়ারম্যান সাবেক মন্ত্রী শাজাহান খানের নেতৃত্বে একটি উপকমিটি কাজ করছে। এখনো এ বিষয়ে চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। জাতীয় নির্বাচনের পর এই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে কে আসবেন জানি না; তবে যাঁরাই দায়িত্ব পাবেন, নিশ্চয়ই তাঁরা রাজাকারের তালিকা প্রকাশ করবেন।’

মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, বর্তমান সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পরই মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সব জেলা প্রশাসকের (ডিসি) কাছে একাত্তরে রাষ্ট্রীয় বেতনভুক্ত রাজাকারের তালিকা চাওয়া হয়। এ ছাড়া স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ে দালাল আইনে যাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছিল, তাদের তালিকা চাওয়া হয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও ডিসিদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে প্রথম দফায় ১০ হাজার ৭৮৯ জনের তালিকা প্রকাশ করে। এতে কিছু বীর মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধে শহীদ ব্যক্তির নাম ছিল। আবার কুখ্যাত অনেক রাজাকারের নাম ছিল না। এ ধরনের নানা ভুল ও অসংগতি থাকায় দুই দিনের মাথায় তালিকাটি প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। তখন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী বলেছিলেন, আগামী ২৬ মার্চ রাজাকারের তালিকা প্রকাশ হবেই।

সে সময়সীমাও পার হয়ে গেছে আট মাস আগে; কিন্তু তালিকা হয়নি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সচিব ইসরাত চৌধুরী বলেন, ‘রাজাকারের তালিকার বিষয়টি আমার জানা নেই। আমি সম্প্রতি এই মন্ত্রণালয়ে যোগ দিয়েছি। শুনেছি, রাজাকারের তালিকার বিষয়ে সাবেক মন্ত্রী শাজাহান খানের নেতৃত্বে একটি কমিটি করে দেওয়া হয়েছে। ওনার সঙ্গে কথা বললেই অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে পারবেন।’

জানা যায়, রাজাকারের তালিকা তৈরি করতে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি শাজাহান খানের নেতৃত্বে একটি উপকমিটি গঠন করা হয় ২০২০ সালের ৯ আগস্ট। উপকমিটিতে ছিলেন রফিকুল ইসলাম, রাজিউদ্দিন আহমেদ, এ বি তাজুল ইসলাম, ওয়ারেসাত হোসেন বেলাল ও মোসলেম উদ্দিন আহমেদ। কমিটি কার্যকর না হওয়ায় ২০২২ সালের এপ্রিলে আগের উপকমিটি বাতিল করে শাজাহান খানকে আহ্বায়ক রেখে জাতীয় পার্টির কাজী ফিরোজ রশীদ ও আওয়ামী লীগের এ বি তাজুল ইসলামকে সদস্য করে নতুন উপকমিটি করা হয়। এই কমিটি নতুন করে তালিকা তৈরির কাজ শুরু করে।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে শাজাহান খান বলেন, ‘বিভিন্ন জেলার অন্তত ১৫০ উপজেলার রাজাকারের তালিকা পেয়েছি। যেহেতু বিষয়টি খুবই স্পর্শকাতর, তাই ভালোভাবে যাচাই-বাছাই করে একবারেই তালিকা প্রকাশ করা হবে। সমালোচনা হলে একবারেই হবে, তবে এই মেয়াদে সম্ভব নয়। আগামী জাতীয় নির্বাচনের পর এই তালিকা প্রকাশ করা হবে।’

দলিলপত্র থেকে জানা যায়, ১৯৭১ সালের মে মাসে অনানুষ্ঠানিকভাবে রাজাকার বাহিনী গঠন করা হয় এবং জুন মাসে এসংক্রান্ত অধ্যাদেশ জারি করে কর্তৃপক্ষ। সেপ্টেম্বরে রাজাকার বাহিনীকে পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর অধীনে ন্যস্ত করা হয়। এর আগে এপ্রিলেই জামায়াতে ইসলামী, মুসলিম লীগ, নেজামে ইসলামসহ পাকিস্তানপন্থী কয়েকটি দলের লোক দিয়ে সারা দেশে শান্তি কমিটি গঠন করা হয়েছিল। শান্তি কমিটির নেতা ও ইউনিয়ন কাউন্সিলের চেয়ারম্যানদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল রাজাকার বাহিনীর জন্য লোক সংগ্রহ করতে। শান্তি কমিটির নেতারা রাজাকার বাহিনীর পৃষ্ঠপোষক ছিল। তবে রাজাকার বাহিনী তৈরির পেছনে ছিল পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী। ওই সব বেতনভুক্ত রাজাকার এবং স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ে দালাল আইনের মামলায় যারা আসামি হয়েছিল, তাদের নিয়েই তালিকা চূড়ান্ত করা হবে।

এই তালিকার অগ্রগতির বিষয়ে জানতে চাইলে জামুকার মহাপরিচালক ড. মো. জহুরুল ইসলাম রোহেল বলেন, ‘জামুকা আইন সংশোধন করে রাজাকারের তালিকা করার ক্ষমতা আমাদের দেওয়া হলেও বাস্তবে বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে জামুকার সদস্য শাজাহান খানের নেতৃত্বে সংসদীয় উপকমিটি। তাঁরাই এর অগ্রগতির বিষয়ে সঠিক তথ্য দিতে পারবেন।’

দ্রুত রাজাকারের তালিকা প্রকাশ করার দাবি জানিয়েছেন সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের মহাসচিব ও বীর মুক্তিযোদ্ধা হারুন হাবীব। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস পূর্ণাঙ্গ করতে হলে আলবদর ও রাজাকার যারা একাত্তরে খুন, ধর্ষণ, নির্যাতনের সঙ্গে জড়িত ছিল তাদের তালিকা করা জরুরি। এটি অনেক আগেই করা উচিত ছিল। স্বাধীনতার ৫২ বছর পার হলেও তা আমরা করতে পারিনি। মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ও বীর মুক্তিযোদ্ধার তালিকা যেমন রাষ্ট্রের কাছে থাকা উচিত, তেমনি যারা মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছে, তাদের তালিকাও থাকা জরুরি। আশা করব নির্বাচনে পর মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সরকার গঠিত হবে এবং তারা দ্রুত রাজাকারের একটি নির্ভুল তালিকা প্রকাশ করবে।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

নভেম্বরে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত ১৯৪ জন: রোড সেফটি ফাউন্ডেশন

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

গত নভেম্বর মাসে দেশে ৫৩৪টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৪৮৩ জন নিহত ও ১ হাজার ৩১৭ জন আহত হয়েছে। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে নারী ৬৪ জন (১৩ দশমিক ২৫ শতাংশ) ও শিশু ৭১টি (১৪ দশমিক ৬৯ শতাংশ)। এর মধ্যে ২২৭টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ১৯৪ জন নিহত হয়েছে, যা মোট প্রাণহানির ৪০ দশমিক ১৬ শতাংশ। এ সময়ে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার হার ছিল ৪২ দশমিক ৫০ শতাংশ।

এ ছাড়া দুর্ঘটনায় ১০৬ জন পথচারী নিহত হয়েছে, যা মোট নিহতের ২১ দশমিক ৯৪ শতাংশ। যানবাহনের চালক ও সহকারী নিহত হয়েছেন ৫৭ জন (১১ দশমিক ৮০ শতাংশ)।

আজ বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) সংগঠনটির নির্বাহী পরিচালক সাইদুর রহমান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়। নয়টি জাতীয় দৈনিক, সাতটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল, বিভিন্ন ইলেকট্রনিক মিডিয়া ও নিজস্ব তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে।

দুর্ঘটনার মধ্যে ২৪ দশমিক ৫৩ শতাংশ ঘটেছে জাতীয় মহাসড়কে, ৪৫ দশমিক ৮৮ শতাংশ আঞ্চলিক সড়কে, ১৫ দশমিক ৩৫ শতাংশ গ্রামীণ সড়কে এবং ১৩ দশমিক ২৯ শতাংশ শহরের সড়কে। অধিকাংশ দুর্ঘটনা ঘটেছে যানবাহনের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে (৪৪ দশমিক ৩৮ শতাংশ) ও মুখোমুখি সংঘর্ষে (২২ দশমিক ৮৪ শতাংশ)।

দুর্ঘটনায় সম্পৃক্ত যানবাহনের তালিকায় সবচেয়ে বেশি রয়েছে মোটরসাইকেল (২৭ দশমিক ৬৩ শতাংশ), এরপর ট্রাক ও ভারী যানবাহন (২৫ দশমিক ৯১ শতাংশ) এবং থ্রি-হুইলার (১৭ দশমিক ৫৪ শতাংশ)। সময় বিশ্লেষণে দেখা যায়, সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ঘটেছে সকালে ও সন্ধ্যায়।

রোড সেফটি ফাউন্ডেশন জানিয়েছে, অতিরিক্ত গতি, চালকদের মানসিক চাপ ও পথচারীদের অসচেতনতা দুর্ঘটনার প্রধান কারণ। দুর্ঘটনা কমাতে গতি নিয়ন্ত্রণে প্রযুক্তির ব্যবহার, চালকদের প্রশিক্ষণ ও গণমাধ্যমে ব্যাপক সচেতনতামূলক প্রচারণার ওপর জোর দিয়েছে সংগঠনটি। পাশাপাশি পরিবহনশ্রমিকদের পেশাগত সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত এবং সড়ক পরিবহন খাতে কাঠামোগত সংস্কারের আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে ইসির চিঠি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে নির্দেশনা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। আজ বৃহস্পতিবার ইসির উপসচিব মোহাম্মদ মনির হোসেন নির্দেশনা-সংক্রান্ত চিঠি স্বরাষ্ট্রসচিবকে পাঠিয়েছেন।

এতে বলা হয়েছে, ১১ ডিসেম্বর ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময়সূচি জারি করা হয়েছে।

ইতিমধ্যে নির্বাচন সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে সম্পন্নের লক্ষ্যে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার নিয়োগের প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। রিটার্নিং কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়সমূহের নির্বাচন-সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ নথি, নির্বাচনী মালামাল, যন্ত্রপাতি সংরক্ষিত রয়েছে বিধায় ওই অফিসসমূহে নির্বাচনকালীন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিবেচনায় উক্ত অফিসসমূহে সংরক্ষিত গুরুত্বপূর্ণ নথি, নির্বাচনী মালামালের সুরক্ষাসহ অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা অত্যাবশ্যক মর্মে নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত প্রদান করেছেন।

এ অবস্থায় রিটার্নিং কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার অফিসসমূহের নিরাপত্তা বিধানে প্রয়োজনীয়সংখ্যক পুলিশ ফোর্স মোতায়েনের সদয় নির্দেশনা দেওয়ার জন্য ব্যবস্থা নিতে বলেছে কমিশন।

অপর দিকে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের নির্বাচনী অপরাধ তদন্ত ও সংক্ষিপ্ত বিচার কার্যক্রম পরিচালনার জন্য বিচারকদের নিয়ে গঠিত নির্বাচনী অনুসন্ধান ও বিচারিক কমিটিকে পুলিশি সহায়তার নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ইসির আইন শাখা থেকে নির্দেশনাটি ইতিমধ্যে সব বিভাগীয় কমিশনার ও পুলিশ সুপারদের পাঠানো হয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, নির্বাচনী অনুসন্ধান ও বিচারিক কমিটি নির্বাচনী দায়িত্ব পালনকালে সার্বক্ষণিক নিরাপত্তার স্বার্থে কমিটির কর্মকর্তাদের সহিত পুলিশ বাহিনীর দুজন অস্ত্রধারী সদস্যকে নিয়োগ করার জন্য সব পুলিশ কমিশনার/পুলিশ সুপারকে নির্দেশনা দেওয়া হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

নির্বাচনে অপতথ্য মনিটরিং সেল কাজ করবে ৭ দিন

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ছবি: আজকের পত্রিকা
ছবি: আজকের পত্রিকা

সংসদ ও গণভোটকে কেন্দ্র করে অপতথ্য নিয়ন্ত্রণে ভোটের আগে ও পরে মোট সাত দিন মনিটরিং সেল এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পূর্ণাঙ্গভাবে কাজ করবে। একই সঙ্গে নির্বাচনী দায়িত্বে থাকা বিভিন্ন বাহিনীর করণীয় সম্পর্কে বিস্তারিত নির্দেশনা দিয়েছে ইসি।

আজ বৃহস্পতিবার ইসির উপসচিব মোহাম্মদ মনির হোসেনের স্বাক্ষরিত এ-সংক্রান্ত একটি পরিপত্র জারি করে মাঠ প্রশাসনকে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়।

পরিপত্রে বলা হয়েছে, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনী পরিবেশ নিশ্চিত করতে সব রাজনৈতিক দল ও প্রার্থী যাতে নির্বিঘ্নে কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারেন, ভোটাররা নিরাপদে ভোট দিতে পারেন এবং ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায়—সে লক্ষ্যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মাঠে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিয়ে দায়িত্ব পালন করবে। ভোটকেন্দ্রে প্রিসাইডিং কর্মকর্তা, রিটার্নিং কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের পর্যাপ্ত নিরাপত্তা দেওয়া হবে।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষার কাঠামো অনুযায়ী স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে লিড মন্ত্রণালয় হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। নির্বাচন-পূর্ব, নির্বাচনকালীন ও নির্বাচন-পরবর্তী সময়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, বাহিনী ও সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয় বজায় রেখে কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। মাঠপর্যায়ে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও প্রিসাইডিং কর্মকর্তাদের চাহিদা অনুযায়ী অগ্রাধিকারভিত্তিতে সহায়তা দেওয়া হবে।

পরিপত্রে আরও বলা হয়, নির্বাচনের সময় বাহিনী মোতায়েনের ক্ষেত্রে কেন্দ্রভিত্তিক স্থায়ী মোতায়েন, স্থায়ী ও অস্থায়ী চেকপোস্ট, মোবাইল টহল, আভিযানিক দল এবং স্ট্রাইকিং ফোর্স সক্রিয় থাকবে। নির্বাচনের আগে চার দিন, ভোটের দিন এবং ভোটের পর দুই দিন পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা ও অপতথ্য মনিটরিং সেল পূর্ণাঙ্গভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করবে। এ ছাড়া অবৈধ অস্ত্র ব্যবহার, গুজব ও অপতথ্য রোধে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা হবে। ঝুঁকিপূর্ণ ভোটকেন্দ্রে অতিরিক্ত নিরাপত্তাব্যবস্থা গ্রহণ, সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে কাভারেজ এবং বডি ক্যামেরার মাধ্যমে লাইভ পর্যবেক্ষণ নিশ্চিত করা হবে। ভোটাররা যেন স্বচ্ছ, নিরাপদ ও উৎসবমুখর পরিবেশে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন—সে লক্ষ্যেই এসব প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে বলে জানানো হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আন্তর্জাতিক নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের আবেদন করতে হবে ১৭ জানুয়ারির মধ্যে

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আন্তর্জাতিক নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের আবেদন করতে হবে ১৭ জানুয়ারির মধ্যে

জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট পর্যবেক্ষণে আন্তর্জাতিক নির্বাচন পর্যবেক্ষক এবং বিদেশি গণমাধ্যমকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে ইসি। এ ক্ষেত্রে তাদের আগামী ১৭ জানুয়ারির মধ্যে আবেদন করতে হবে।

আজ বৃহস্পতিবার ইসির সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ স্বাক্ষরিত এ-সংক্রান্ত চিঠি থেকে বিষয়টি জানা যায়।

এতে বলা হয়, আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং গণভোট অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচন কমিশন একটি অবাধ, সুষ্ঠু, বিশ্বাসযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আয়োজনের বিষয়ে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এ লক্ষ্য বাস্তবায়নে নির্বাচন প্রক্রিয়ার সব কার্যক্রম দেশি ও বিদেশি পর্যবেক্ষকদের জন্য উন্মুক্ত রাখা হবে। এই প্রেক্ষাপটে, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের আন্তর্জাতিক নির্বাচন পর্যবেক্ষক, পর্যবেক্ষক সংস্থা এবং বিদেশি গণমাধ্যমকে স্থানীয় পর্যবেক্ষকদের সঙ্গে সমন্বয় করে আসন্ন নির্বাচন ও গণভোট পর্যবেক্ষণের আহ্বান জানানো হয়েছে।

এ চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, আগ্রহী আন্তর্জাতিক নির্বাচন পর্যবেক্ষক/পর্যবেক্ষক সংস্থা এবং বিদেশি গণমাধ্যমকে ‘আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক ও বিদেশি গণমাধ্যম নীতিমালা-২০২৫’ অনুযায়ী আবেদন করতে হবে। আবেদন জমা দেওয়ার শেষ সময় ১৭ জানুয়ারি। এ বিষয়ে কোনো প্রশ্ন বা তথ্যের প্রয়োজন হলে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের জনসংযোগ পরিচালক মো. রুহুল আমিন মল্লিকের সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য বলা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত