Ajker Patrika

পদ্মা সেতুর নিচ দিয়ে ১০ দিনের মধ্যে চলবে ফেরি

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ১৫ জুন ২০২২, ১৯: ৩৪
পদ্মা সেতুর নিচ দিয়ে ১০ দিনের মধ্যে চলবে ফেরি

অতিরিক্ত বৃষ্টি না হলে আগামী ১০ দিনের মধ্যে পদ্মা নদীতে স্রোত কমে আসবে। এরপর থেকে শিমুলিয়া-বাংলাবাজার রুটে আবার ফেরি চলাচল শুরু করা যাবে বলে আশা করছেন নৌপ্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। 

ঢাকায় নিযুক্ত ভারতের ডেপুটি হাইকমিশনার বিনয় জর্জ আজ বুধবার সচিবালয়ে নৌ প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। এরপর প্রতিমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, `মাওয়ায় এখনো ফোর নট কারেন্ট চলছে, এর নিচে এলে তখন আমরা ফেরি চালু করব। এখন পানির প্রবাহ বাড়ছে। এ অবস্থায় হয়তো মাওয়া থেকে বাংলাবাজারে যাওয়ায় অসুবিধা নেই, কিন্তু ফেরাটা খুব সমস্যা। স্রোতের মধ্যে আমরা ঝুঁকি নিতে চাইছি না। অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত যদি না হয়, তবে আমরা ধারণা করছি আগামী ১০ দিনের মধ্যে স্রোত কন্ট্রোল হয়ে যাবে।' 

তীব্র স্রোতের কারণে পদ্মা সেতুর পিলারে চারবার ফেরির ধাক্কা লেগেছে। এ নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার মুখে গত ১৮ আগস্ট থেকে মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া ও মাদারীপুরের বাংলাবাজার রুটে ফেরি চলাচল বন্ধ রয়েছে। এই রুটে চলাচলকারী যানবাহনগুলোকে পাটুরিয়া ও দৌলতদিয়া দিয়ে ফেরি পার হতে হচ্ছে। 

শিমুলিয়া-বাংলাবাজার রুটে গত বছর যখন ফেরি চলেছে, তখন পদ্মা সেতুর স্প্যান বসানো ছিল না জানিয়ে খালিদ মাহমুদ বলেন, এখন একটা সুনির্দিষ্ট পকেটের মধ্য দিয়ে ফেরিগুলো চালাতে হয়। কারণ সব স্প্যান বসে গেছে, পদ্মা সেতু অলমোস্ট রেডি আছে বলা হয়। এমন অবস্থায় যখন ঘূর্ণয়নগুলো শুরু হয়, তখন কিন্তু নিয়ন্ত্রণ করাটা কঠিন হয়ে যায়। যেহেতু কয়েকটা ঘটনা ঘটে গেছে। উদাসীনতা ও কর্তব্যে অবহেলার জন্য ব্যবস্থাও গ্রহণ করেছি। তার পরেও যেহেতু জনগণের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া আমরা দেখেছি, সে কারণে আমরা বলেছি এ ঘটনাগুলো ঘটার মধ্য দিয়ে দেশবাসীকে আর আতঙ্কের মধ্যে রাখতে চাই না। পদ্মা সেতু এমন একটি সেনসিটিভ জায়গায় চলে গেছে, বাংলাদেশের ১৬ কোটি মানুষ সব থেকে আপন স্থাপনা মনে করে এটিকে। নিজের বাড়িঘর থেকেও পদ্মা সেতুকে মনে করে এটি আমার আপন, এটিই বাংলাদেশ। 

শিমুলিয়া-বাংলাবাজার রুটে ফেরি চলাচল বন্ধ থাকায় পাটুরিয়া ও দৌলতদিয়া দিয়ে যানবাহন পার হওয়ায় মানুষের দুর্ভোগ ও কষ্ট হচ্ছে বলে স্বীকার করেন নৌ প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেন, `পানির স্রোত কমে না যাওয়া পর্যন্ত আমরা ফেরি চলাচল বন্ধ রাখব। বিকল্প ফেরিঘাট মাঝিরকান্দিতে তৈরি করেছি। কিন্তু ১৩ নম্বর পিলারের ওখানেও পলি জমে গেছে, বালু জমে গেছে। সেখানে ফেরি চলাচল সম্ভব না। দুইবার ট্রায়াল দিতে গিয়েও সেটি সম্ভব হয়নি, ড্রেজিং করতে হবে। ড্রেজার নিয়ে গিয়েছিলাম, পানির স্রোতের কারণে ড্রেজার টিকতে পারেনি। ড্রেজার নিতে গিয়ে আরেকটা ঝামেলা যদি হয়ে যায়, তাই এই মুহূর্তে আমরা ঝুঁকি নিতে চাচ্ছি না।'

নৌ প্রতিমন্ত্রী বলেন, হরিণা, আলুবাজার, পাটুরিয়া, দৌলতদিয়া, কাজীরহাট ও আরিচা রুটে ফেরি বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। স্রোত যখন আমাদের আয়ত্তের মধ্যে, নিয়ন্ত্রণের মধ্যে আসবে, তখনই আমরা ফেরি চলাচল শুরু করে দেব। কয়েকটা ঘটনা ঘটার কারণে মাস্টার আর সুকানিরাও একটা মানসিক ধাক্কার মধ্যে আছে। তাদের মধ্যেও কিছুটা ভীতির সঞ্চার হয়েছে। 

স্বপ্নের পদ্মা সেতু সম্পর্কে সবশেষ খবর পেতে - এখানে ক্লিক করুন

ভারতের ডেপুটি হাইকমিশনারের সঙ্গে স্থলবন্দরে সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর বিষয়ে আলোচনা হয়েছে জানিয়ে খালিদ মাহমুদ বলেন, `রোডস ও কাস্টমসের বিষয়গুলো নিয়েও আলোচনা হয়েছে, সিদ্ধান্তও হয়ে গেছে। সামনের মাসে হয়তো দুই দেশের সচিব পর্যায়ের বৈঠকে বিষয়গুলোর সমাধান হবে। এবার ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম অর্গনাইজেশনে ‘সি’ ক্যাটাগরিতে আমরা নির্বাচন করব। সে বিষয়টি আমরা অবহিত করেছি। তারা আমাদের সঙ্গে থাকবেন বলে সমর্থন ব্যক্ত করেছেন।' 

পদ্মা সেতু সম্পর্কিত আরও পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

চায়ের দোকানে চলে একটি বাতি-ফ্যান, বিদ্যুৎ বিল এল সাড়ে ৫৫ হাজার টাকা

টঙ্গিবাড়ী (মুন্সিগঞ্জ) প্রতিনিধি 
বিদ্যুৎ বিলের কাগজ হাতে লিটুখান বাজারের দুই দোকানদার। ছবি: আজকের পত্রিকা
বিদ্যুৎ বিলের কাগজ হাতে লিটুখান বাজারের দুই দোকানদার। ছবি: আজকের পত্রিকা

বাজারে ছোট একটি চায়ের দোকান চালান বাদশা ব্যাপারী। দোকানে কেবল একটি বাতি ও একটি ফ্যান চালানো হয়। সাধারণত তাঁর মাসিক বিল ২০০ থেকে ৩০০ টাকার মধ্যে আসে। কিন্তু চলতি মাসে তাঁর হাতে এসেছে ৫৫ হাজার ৫৫০ টাকার বিদ্যুৎ বিল। বিল হাতে পেয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন তিনি।

মুন্সিগঞ্জের টঙ্গিবাড়ী উপজেলার দিঘিরপাড় ইউনিয়নের লিটুখান বাজারের দোকানদার বাদশা ব্যাপারী। বিদ্যুৎ বিলের ব্যাপারে বাদশা বলেন, ‘এটা অসম্ভব। আমার দোকানে এত বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগই নেই। বিলের নম্বরে ফোন করলে শুধু অফিসে যেতে বলে।’

এমন ‘ভুতুড়ে’ বিদ্যুৎ বিল পেয়েছেন লিটুখান বাজারের আরেক দোকানদার শহীদ খান। বাজারে খাবারের দোকান রয়েছে তাঁর। দোকানে দুটি বাতি, একটি ফ্যান ও একটি ছোট ফ্রিজ ব্যবহার করা হয়। প্রতি মাসে যেখানে ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা বিল দিতেন, সেখানে এবার বিল এসেছে ২৪ হাজার ২১৬ টাকা। শহীদ বলেন, ‘বিলটা দেখে দাঁড়াতেই পারছিলাম না। এমন বিল হলে দোকান চালানোই কঠিন হয়ে যাবে।’

বাজারের অন্য ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করে বলেন, কয়েক মাস ধরে এলাকায় এমন অস্বাভাবিক বিল আসছে। তাঁদের ধারণা, মিটার রিডিং অথবা বিলিং পদ্ধতিতে গুরুতর ত্রুটি রয়েছে। দ্রুত তদন্ত করে সঠিক হিসাব ঠিক করার পাশাপাশি দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।

বিল প্রস্তুতকারী কর্মী সুমি রানী দাস বলেন, সংশ্লিষ্ট গ্রাহকদের অফিসে যোগাযোগের পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। তিনি বলেন, ‘তারা অফিসে এলে আমরা সরেজমিন যাচাই করে বিল পুনরায় বিবেচনা করব।’

টঙ্গিবাড়ী পল্লী বিদ্যুৎ জোনাল অফিসের ডিজিএম মো. আব্দুস ছালাম বলেন, ‘মিটার রিডিং বা বিলিং সিস্টেমে ত্রুটি থাকতে পারে। আমরা সরেজমিন যাচাই করে দ্রুত সমাধানের পদক্ষেপ নেব। ভোক্তাদের অফিসে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বাসার বাথরুমে পড়ে ছিল নারী প্রভাষকের লাশ, মাথায় আঘাতের চিহ্ন

বগুড়া প্রতিনিধি
ফাবিয়া তাসনিম সিধি। ছবি: সংগৃহীত
ফাবিয়া তাসনিম সিধি। ছবি: সংগৃহীত

বগুড়ার এক বাসা থেকে ফাবিয়া তাসনিম সিধি (২৯) নামের এক প্রভাষকের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে বগুড়া শহরের চক ফরিদ এলাকায় ভাড়া বাসা থেকে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ।

মৃত ফাবিয়া বগুড়ার সরকারি শাহ সুলতান কলেজের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের প্রভাষক। বছর দেড়েক আগে তিনি কলেজটিতে যোগদান করেন।

এই তথ্য নিশ্চিত করে বগুড়া সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মাহফুজার রহমান জানান, ফাবিয়া অবিবাহিত। তিনি বগুড়া শহরের চক ফরিদ এলাকায় ডা. রাশেদুল হাসানের বাড়ির তিনতলায় ভাড়া বাসায় তাঁর মায়ের সঙ্গে থাকতেন। কয়েক দিন আগে তাঁর মা গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহে যান। গতকাল দুপুরের পর থেকে মেয়েকে ফোনে না পাওয়ায় তাঁর মা রাত ১০টার দিকে বগুড়া আসেন। অনেক ডাকাডাকি করে দরজা না খোলায় পুলিশে খবর দেওয়া হয়। পরে পুলিশ সেখানে গিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের উপস্থিতিতে দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে বাসার বাথরুমে ফাবিয়ার লাশ দেখতে পায়।

পুলিশ জানায়, মৃত ব্যক্তির নাক দিয়ে রক্ত ঝরছিল এবং মাথার পেছনে আঘাতের চিহ্ন ছাড়াও জিবে দাঁত দিয়ে কামড় দেওয়া ছিল। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মাহফুজার রহমান বলেন, ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়া গেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

অটোরিকশাকে চাপা দিল বাস, প্রাণ গেল তিনজনের

ফরিদপুর প্রতিনিধি
বাসচাপায় অটোরিকশাটি ভেঙেচুরে গেছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
বাসচাপায় অটোরিকশাটি ভেঙেচুরে গেছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

ফরিদপুরের ভাঙ্গায় বাসের চাপায় একটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার তিন যাত্রী নিহত হয়েছেন। এই ঘটনায় শিশুসহ আরও চারজন আহত হয়। আজ শুক্রবার বেলা পৌনে ১২টার দিকে ফরিদপুর-ভাঙ্গা-বরিশাল মহাসড়কের কৈডুবী সদরদি রেলক্রসিং এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে। ভাঙ্গা হাইওয়ে থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সোহেল মিয়া এই তথ্য নিশ্চিত করেন।

নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে দুজন নারী ও একজন পুরুষ। তাৎক্ষণিকভাবে তাঁদের পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি।

খবর পেয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধার অভিযান চালান। আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে ভাঙ্গা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়েছে।  

হাইওয়ে থানার এসআই সোহেল মিয়া বলেন, অটোরিকশাটি ভাঙ্গা থেকে টেকেরহাটের উদ্দেশে যাচ্ছিল। কৈডুবী সদরদি রেলক্রসিং এলাকায় পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা নিউ মডার্ন পরিবহনের একটি বাস অটোরিকশাটিকে চাপা দেয়। এই ঘটনায় বাসটি আটক করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

হাতিয়ায় ৫৬০০ কেজি জাটকা ইলিশ জব্দ, এতিমখানায় বিতরণ

­হাতিয়া (নোয়াখালী) প্রতিনিধি
কোস্ট গার্ডের অভিযানে জব্দ জাটকা ইলিশ। ছবি: আজকের পত্রিকা
কোস্ট গার্ডের অভিযানে জব্দ জাটকা ইলিশ। ছবি: আজকের পত্রিকা

নোয়াখালীর হাতিয়ার জাগলার চর এলাকার মেঘনা নদীতে অভিযান চালিয়েছে কোস্ট গার্ড। এ সময় একটি নৌকা থেকে ৫ হাজার ৬০০ কেজি জাটকা ইলিশ জব্দ করা হয়। এই ঘটনায় আটক কয়েকজন মাঝিমাল্লার কাছ থেকে মুচলেকা নিয়ে তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে কোস্ট গার্ড হাতিয়ার একটি দল এই অভিযান চালায়। জব্দ করা জাটকাগুলোর মূল্য প্রায় ২৮ লাখ টাকা।

কোস্ট গার্ড মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট মো. আবুল কাশেম জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মেঘনা নদীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে কোস্ট গার্ড। অভিযানে মেঘনা নদীর জাগলার চর এলাকায় একটি কাঠের নৌকায় তল্লাশি করা হয়। ওই নৌকা থেকে ৫ হাজার ৬০০ কেজি জাটকা জব্দ করা হয়। এ সময় মাঝিদের মুচলেকা নিয়ে নৌকা ছেড়ে দেওয়া হয়। জব্দ মাছগুলো মৎস্য কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে এতিমখানা ও দুস্থ ব্যক্তিদের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে। মৎস্য সম্পদ রক্ষায় কোস্ট গার্ডের এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানান এই কর্মকর্তা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত