Ajker Patrika

আখাউড়া থেকে আগরতলার উদ্দেশে ছেড়ে গেল বাংলাদেশের ট্রেন

আখাউড়া প্রতিনিধি
আপডেট : ৩০ অক্টোবর ২০২৩, ১৪: ৫৫
আখাউড়া থেকে আগরতলার উদ্দেশে ছেড়ে গেল বাংলাদেশের ট্রেন

আখাউড়া-আগরতলা ডুয়েলগেজ রেলপথে প্রথমবারের মতো ভারতের আগরতলার উদ্দেশে ছেড়ে গেছে বাংলাদেশের ট্রেন। আজ সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বাংলাদেশের রেলওয়ের ৬ জন স্টাফ নিয়ে আখাউড়ার গঙ্গাসাগরে নবনির্মিত রেলওয়ে স্টেশন থেকে পাঁচ বগির ট্রায়াল ট্রেনটি ভারতের আগরতলা নিশ্চিন্তপুর রেলওয়ে স্টেশনের উদ্দেশে ছেড়ে যায়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আখাউড়া-আগরতলা ডুয়েলগেজ রেলপথের বাংলাদেশ অংশের প্রকল্প পরিচালক আবু জাফর মিয়া। 

এর আগে ১৪ সেপ্টেম্বর প্রথম পরীক্ষামূলক ট্রেন চলে বহুল কাঙ্ক্ষিত আখাউড়া-আগরতলা ডুয়েলগেজ রেলপথে। 

প্রকল্প পরিচালক আবু জাফর মিয়া বলেন, এখন উদ্বোধনের জন্য প্রস্তুত আছে রেলপথটি। দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর মাধ্যমে এই মেগা প্রকল্পটি উদ্বোধনের কথা রয়েছে। পরীক্ষামূলক ট্রেন চলাচল সফল হওয়ায় আগামী পয়লা নভেম্বর বুধবার রেলপথটি উদ্বোধন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। উদ্বোধনের পর প্রথম দিকে পণ্যবাহী ট্রেন এবং পরবর্তী সময়ে যাত্রীবাহী ট্রেনও চালানো হবে এই রুটে। 

প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের ট্রেন নিয়ে ভারতের আগরতলায় যাওয়ায় আবেগাপ্লুত ট্রেনচালক মো. মাফুজুর রহমান বলেন, ‘একজন চালক হিসেবে প্রথমবারের মতো আমাদের ৬ জন স্টাফ নিয়ে আগরতলায় প্রবেশ করছি।’ 

প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানান, ২০১৮ সালের জুলাইয়ে ভারতের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান টেক্সমেকো রেল অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড আখাউড়া-আগরতলা রেলপথের নির্মাণকাজ শুরু করে। ১২ দশমিক ২৪ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের রেলপথের বাংলাদেশ অংশ ৬ দশমিক ৭৮ কিলোমিটার। করোনা মহামারিসহ নানা সংকটে দেড় বছর মেয়াদি এই প্রকল্পের কাজ শেষ করতে সময় লেগেছে পাঁচ বছরেরও বেশি। 

টেক্সমেকো রেল অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেডের কান্ট্রি ম্যানেজার শরৎ শর্মা জানান, প্রকল্প, কাস্টমস ও ইমিগ্রেশন ভবনের কাজ প্রায় শেষের দিকে। উদ্বোধনের জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত আছে রেলপথ। এই রেলপথে ৭৯ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চালানো যাবে। 

আখাউড়া গঙ্গাসাগর রেলস্টেশনের ইমিগ্রেশন ইনচার্জ আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘আজকে আমার প্রথম কর্ম দিবস। প্রথম কর্ম দিবস হিসেবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানাই, আমাকে এখানে দায়িত্ব দেওয়ার জন্য। আজকে প্রথম ৬ জন স্টাফের ইমিগ্রেশন কাজ করেছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বাগেরহাটের চিতলমারী: অবৈধ বালু উত্তোলনে বিলীন হচ্ছে ফসলি জমি ও রাস্তাঘাট

  • মধুমতী নদী থেকে বালু উত্তোলন
  • ঝুঁকিতে চিতলমারীর একাধিক গ্রাম
  • অভিযোগ স্থানীয় প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে
বাগেরহাট ও চিতলমারী প্রতিনিধি
ড্রেজার মেশিন দিয়ে মধুমতী নদী থেকে প্রতিদিন উত্তোলন করা হচ্ছে হাজার হাজার ফুট বালু। প্রতিকার চেয়ে ভূমি মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট একাধিক সরকারি দপ্তরে অভিযোগ দিয়েছেন স্থানীয় পরিবেশবাদীরা। সম্প্রতি তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা
ড্রেজার মেশিন দিয়ে মধুমতী নদী থেকে প্রতিদিন উত্তোলন করা হচ্ছে হাজার হাজার ফুট বালু। প্রতিকার চেয়ে ভূমি মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট একাধিক সরকারি দপ্তরে অভিযোগ দিয়েছেন স্থানীয় পরিবেশবাদীরা। সম্প্রতি তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা

বাগেরহাটের চিতলমারীতে মধুমতী নদী থেকে অবৈধভাবে বিপুল বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। ড্রেজার মেশিন দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার ফুট বালু উত্তোলন করায় নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে ফসলি জমি ও রাস্তাঘাট।

অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধের দাবিতে ভূমি মন্ত্রণালয়ে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন স্থানীয় পরিবেশবাদীরা। সংশ্লিষ্ট হওয়ায় বাগেরহাট, পিরোজপুর ও গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসকের দপ্তরেও অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।

বালুমহাল ইজারায় একটি নির্দিষ্ট সীমানা বা এলাকা নির্ধারণ করা থাকে। নাজিরপুর উপজেলার বালুমহালের বা বালু উত্তোলনের সীমানা ২৪ দশমিক ২১ একর। কিন্তু চিতলমারীর অতুলনগর, কুনিয়া ও শৈলদাহ গ্রামসংলগ্ন মধুমতী নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে বিক্রি করা হচ্ছে। এই কাজে যুক্ত পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার মাটিভাঙ্গা ও বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলার শৈলদাহ এলাকার প্রভাবশালী কয়েক ব্যক্তি।

অভিযুক্ত ব্যক্তিদের একজন কলাতলা ইউনিয়ন বিএনপির সহ-সভাপতি মো. কামাল শেখ ওরফে কামাল মেম্বার। মূল ইজারাদারের কাছ থেকে কয়েকজনকে নিয়ে এই কাজ নিয়েছেন তিনি। তবে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের সীমানা থেকে বালু উত্তোলন করছি।’ যাঁর নামে সরকারি ইজারা আনা হয়েছে, তাঁর নাম অবশ্য জানাতে পারেননি কামাল মেম্বার। তিনি দাবি করেন, ওই ব্যক্তির নাম তাঁর মনে নেই।

চিতলমারীর শৈলদাহ এলাকার মো. ফরিদ শেখ, বিপুল বৈদ্য, আল-আমিন খান ও তুহিন শেখ জানান, কলাতলা ইউনিয়নের মধুমতী নদীর অতুলনগর, কুনিয়া ও শৈলদাহ এলাকায় ৩-৪টি বলগেট ও ড্রেজার মেশিন দিয়ে প্রতিদিন শতাধিক ট্রলার বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। এতে ফসলি জমি, গাছপালা ও রাস্তাঘাট নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। সংকীর্ণ হয়ে পড়ছে উপজেলার মানচিত্র। হুমকির মুখে পড়েছে কয়েক শ একর জমি ও বসতবাড়ি। এ ছাড়া প্রায় হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত মাটিভাঙ্গা সেতুও এখন ঝুঁকির মুখে।

পরিবেশ রক্ষা আন্দোলন চিতলমারী উপজেলার প্রধান সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট ফজলুল হক বলেন, এভাবে বালু উত্তোলনে পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে। উপজেলার মানচিত্র ছোট হয়ে যাচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে এরই মধ্যে সংশ্লিষ্ট একাধিক সরকারি দপ্তরে অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।

চিতলমারীর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ‘পিরোজপুর থেকে ওরা বালুমহাল ইজারা নিয়েছে। রাতের আঁধারে এসে চিতলমারীর সীমানা থেকে বালু উত্তোলন করে। আমরা বেশ কয়েকবার অভিযানে গিয়েছি। কিন্তু অভিযানের খবর শুনে ওরা আগে থেকেই চলে যায়। পিরোজপুরের জেলা প্রশাসকের সঙ্গে যোগাযোগ করে, ওরা যাতে সীমানায় না আসে সে জন্য কাজ করছি। অবৈধ বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে প্রশাসন “জিরো টলারেন্স” নীতিতে কাজ করছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

পটুয়াখালীর দুমকী: পানির স্তর নেমে গেছে তীব্র সংকটে মানুষ

  • উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নের মধ্যে চারটির বাসিন্দারা চরম পানিসংকটে ভুগছে
  • প্রায় দুই বছর ধরে এ সংকট দেখা দিয়েছে; গভীর নলকূপে পানি মিলছে না
দুমকী (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি 
পটুয়াখালীর দুমকী: পানির স্তর নেমে গেছে তীব্র সংকটে মানুষ

পটুয়াখালীর দুমকী উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নের মধ্যে চারটির বাসিন্দারা চরম পানিসংকটে ভুগছে। তারা জানিয়েছে, প্রায় দুই বছর ধরে এ সংকট দেখা দিয়েছে। শুকনো মৌসুমে গভীর নলকূপের পানি ব্যবহার করতে পারছে না এলাকাবাসী।

সরেজমিন দেখা গেছে, উপজেলার পাংগাশিয়া ইউনিয়নের আলগীসহ কয়েকটি গ্রাম, লেবুখালী ইউনিয়নের লেবুখালীসহ উত্তর এলাকা, আংগারিয়া ইউনিয়নের পশ্চিম আংগারিয়াসহ পশ্চিম এলাকা, শ্রীরামপুর ইউনিয়নের পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশের দুমকী, শ্রীরামপুর, উত্তর দুমকী এলাকায় দুই বছর ধরে শুকনো মৌসুমে হস্তচালিত গভীর নলকূপে পানির সমস্যা দেখা দিয়েছে।

এসব এলাকার ভুক্তভোগী লোকজন জানায়, এ বিষয়ে উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরে অভিযোগ জানালে কর্তৃপক্ষের লোকজন গিয়ে দেখে জানিয়েছেন পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ার কারণে গভীর নলকূপে পানি উঠছে না।

এ বিষয়ে কথা হয় শাহজাহান খান নামের এক ভুক্তভোগীর সঙ্গে। শাহজাহান আজকের পত্রিকাকে বলেন, শুকনো মৌসুমে এলাকার খালগুলো শুকিয়ে যাওয়ায় পানির সংকট দেখা দেয়। অন্যদিকে পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশের পীরতলা জামলা ও আংগারিয়া খালটিতে ময়লা-আবর্জনায় ভরে যাওয়ায় পানির প্রবাহ ব্যাহত ও খালের পানি ব্যবহার অনুপযোগী হওয়ায় লোকজন পানি ব্যবহার করতে পারছে না। এ অবস্থায় শুকনো মৌসুমে টিউবওয়েলের পানির অভাবে অনেকে ব্যবহার অনুপযোগী পানি পান করে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হতে পারে।

জামাল হোসেন নামের এক শিক্ষক বলেন, শুকনো মৌসুম এলেই কলেজশিক্ষক, কর্মচারী ও শিক্ষার্থীরা পানির সমস্যায় ভোগেন। এ সময় উপায় না পেয়ে পার্শ্ববর্তী এলাকা থেকে পানি সংগ্রহ করে ব্যবহার করতে হয়।

পশ্চিম আংগারিয়ার বাসিন্দা রিনা বেগম বলেন, গভীর নলকূপ বসিয়েও পানির সংকটে ভুগতে হচ্ছে। শুকনো মৌসুম শুরু হলেই পানি পাওয়া যায় না।

অনুসন্ধানে জানা যায়, এসব এলাকায় ৮০০ থেকে ১ হাজার ফুট গভীরে টিউবওয়েল বসানো হয়েছে। কিন্তু সম্প্রতি পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় শুকনো মৌসুমে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় পানি পাওয়া যাচ্ছে না।

দুমকী উপজেলায় সরকারিভাবে ১ হাজার ৫৩০টি টিউবওয়েল এবং বেসরকারিভাবে ১ হাজার টিউবওয়েল বসানো হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে জানা গেছে। এ ছাড়া এলাকাবাসী ব্যক্তিগত খরচে নিজ নিজ বাসায় টিউবওয়েল বসিয়ে মোটর যুক্ত করেও পানি তুলতে পারছে না।

পানিসংকটের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী নিপা আক্তার। এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ইতিমধ্যে হস্তচালিত নলকূপের পরিবর্তে সাবমারসিবল পাম্প বসানোর জন্য এলাকাবাসীর স্বার্থে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়: চিকিৎসায় শিক্ষার্থীপ্রতি বরাদ্দ মাত্র ১২৫ টাকা

  • স্বাস্থ্যসেবায় বরাদ্দ বাজেটের ০.০৮৪ শতাংশ
  • ২০ হাজার শিক্ষার্থীর জন্য চিকিৎসক মাত্র দুজন
  • প্রতিদিন গড়ে ৪৫০ জন চিকিৎসা নেন
সোহানুর রহমান, জবি
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীদের চিকিৎসা ব্যবস্থার চিত্র উদ্বেগজনক। শিক্ষার্থীদের প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবায় বার্ষিক বাজেট মাত্র ২৫ লাখ টাকা। এ বছর মাথাপিছু চিকিৎসায় বরাদ্দ মাত্র ১২৫ টাকা; যা অপ্রতুল বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

পুরান ঢাকার সদরঘাট এলাকায় মাত্র সাত একর জায়গায় জবি ক্যাম্পাস। আটটি ভবনে চলছে ৩৮টি বিভাগ ও দুটি ইনস্টিটিউটের একাডেমিক কার্যক্রম। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে শিক্ষার্থী প্রায় ২০ হাজার। কিন্তু প্রতিষ্ঠার দুই দশক পরও নানা সংকটে রয়েছে জবি। এর মধ্যে শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যসেবার বিষয়টি উল্লেখযোগ্য।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৫-২৬ অর্থবছরে মোট বাজেট ধরা হয়েছে ২৯৭ কোটি ৮২ লাখ ৫০ হাজার টাকা। প্রায় ২০ হাজার শিক্ষার্থীর জন্য প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবায় বার্ষিক বাজেট মাত্র ২৫ লাখ টাকা, যা মোট বাজেটের প্রায় শূন্য দশমিক শূন্য ৮৪ শতাংশ। এ বছর মাথাপিছু চিকিৎসায় বরাদ্দ ১২৫ টাকা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থ ও হিসাব দপ্তরের পরিচালক অধ্যাপক ড. রফিকুল ইসলাম বলেন, চিকিৎসাসেবার বাজেট বাড়ানোর জন্য আমরা ইউজিসির সঙ্গে বারবার যোগাযোগ করেছি, কিন্তু সীমাবদ্ধতার কারণে তারা বৃদ্ধি করছে না। তাই একটি বিশেষ ফান্ডের আবেদন করা হয়েছে এবং আশা করা হচ্ছে আগামী বছরে এর ব্যবস্থা হবে।

অব্যবস্থাপনায় মেডিকেল সেন্টার

জবির বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থীর চিকিৎসাসেবার দায়িত্বে থাকা মেডিকেল সেন্টারে পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা ও লোকবল নেই। প্রতিদিন গড়ে ৪৫০ শিক্ষার্থী চিকিৎসা নিলেও সেখানে কর্মরত আছেন মাত্র দুজন চিকিৎসক, তিনজন মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট, একজন নার্স, দুজন অফিস সহকারী ও একজন ক্লিনার। রয়েছে একটি মাত্র অ্যাম্বুলেন্স।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, যেকোনো অসুখের চিকিৎসায় মেডিকেল সেন্টার থেকে দেওয়া হয় শুধু প্যারাসিটামল। অনেক সময় প্যারাসিটামলও পাওয়া যায় না।

গণযোগাযোগ বিভাগের শিক্ষার্থী রিফাত হোসেন বলেন, চিকিৎসকেরা রোগীর কথা শুনতে চান না। শুধু নাপা, প্যারাসিটামল বা স্যালাইন দিয়েই দায়িত্ব সারেন।

দর্শন বিভাগের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মোছা. রাতিয়া খাতুন বলেন, ‘আমার সমস্যা অনুযায়ী সঠিক ওষুধ দেওয়া হয়নি। শুধু প্যারাসিটামল ও স্যালাইনই মেলে মেডিকেল সেন্টারে।’

ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন বিভাগের ২৩-২৪ সেশনের শিক্ষার্থী মো. কামরুল হাসান বলেন, রক্তস্বল্পতার ইনজেকশন দেওয়ার সময় নার্সের অদক্ষতার কারণে তা মাংসে প্রবেশ করে। ফলে ক্ষত তৈরি হয়, যা পাঁচ মাসেও সারেনি।

এ বিষয়ে মেডিকেল সেন্টারের উপপ্রধান চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. মিতা শবনম বলেন, ‘আমরা অল্পসংখ্যক জনবল নিয়ে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। আমাদের মেডিকেল সেন্টারে প্রায় ৪০ ধরনের ওষুধ রয়েছে, যা রোগীদের প্রয়োজন অনুযায়ী সরবরাহ করা হয়। অধিকাংশ শিক্ষার্থী জ্বর, মাথাব্যথা ও ঠান্ডাজনিত সমস্যা নিয়ে আসে, তাই সাধারণত প্যারাসিটামল দেওয়া হয়।’

ট্রেজারার অধ্যাপক ড. সাবিনা শরমীন বলেন, ‘চিকিৎসা বাজেট এত কম কেন, এটি আমাদেরও প্রশ্ন। দীর্ঘদিন ধরে এমন পরিস্থিতি চলছে। তবে বর্তমান প্রশাসন উদ্যোগ নিয়ে বাজেট বাড়ানোর চেষ্টা করছে এবং কিছুটা বৃদ্ধি এরই মধ্যে হয়েছে। ইউজিসির অনেক সীমাবদ্ধতার কারণে তারা সবই দিতে পারছে না। তবুও আশা করছি, শিগগির এ বিষয়ে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হবে।’

উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল করিম বলেন, স্বাস্থ্যসেবার উন্নয়নে ইতিমধ্যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে এবং দুটি পদে চিকিৎসক নিয়োগের জন্য বাজেট অনুমোদন পাওয়া গেছে। আশা রাখছি আগামী অর্থবছরে এ খাতে ভালো বাজেট বরাদ্দ পাওয়া যাবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কুষ্টিয়ার দৌলতপুর: গ্রাম আদালতে অতিরিক্ত ফি

দৌলতপুর (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি 
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

গ্রাম আদালতে সরকারি নামমাত্র ফি আদায়ের নিয়ম থাকলেও কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে ভুক্তভোগী ব্যক্তিদের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগী ব্যক্তিদের দাবি, উপজেলার হোগলবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের গ্রাম আদালতে বিচার চাইতে বাড়তি অর্থ গুনতে হচ্ছে তাঁদের। ইতিমধ্যে ইউনিয়ন পরিষদটির হিসাবরক্ষক কাম কম্পিউটার অপারেটর আবু সুফিয়ানের বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন নান্টু আলী নামের এক ব্যক্তি। অভিযোগের সপক্ষে ভিডিও প্রমাণও দাখিল করা হয়েছে।

স্থানীয় সরকার বিভাগের নির্দেশনা অনুযায়ী, গ্রাম আদালতে দেওয়ানি মামলার ফি ২০ টাকা এবং ফৌজদারি মামলার ফি ১০ টাকা। অথচ ভুক্তভোগী ব্যক্তিদের দাবি, এখানে মামলা দায়ের থেকে শুরু করে হাজিরা পর্যন্ত ৩০০ থেকে ১ হাজার টাকা পর্যন্ত দিতে হচ্ছে।

ভুক্তভোগী ব্যক্তিরা জানান, স্বল্প সময়ে ও কম খরচে বিচার পাওয়ার আশায় তাঁরা গ্রাম আদালতে আসেন। কিন্তু এখানে এসেও তাঁদের অনেক টাকা খরচ হচ্ছে।

আল্লাহর দরগা বাজার এলাকার এক ঝালমুড়ি ও ফুচকা বিক্রেতা জানান, পারিবারিক কলহ-সংক্রান্ত মামলায় তাঁর কাছ থেকে ধাপে ধাপে ১ হাজার টাকা নেওয়া হয়েছে। মুন্না নামের অন্য এক ভুক্তভোগী জানান, একটি সাধারণ অভিযোগ দায়ের করতে তাঁকে ৪০০ টাকা দিতে হয়েছে।

অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের বিষয়টি স্বীকার করে হিসাবরক্ষক আবু সুফিয়ান জানান, যোগদানের পর থেকে তিনি এমনভাবে টাকা নিয়ে আসছেন।

এদিকে ইউনিয়ন পরিষদের সচিব ও চেয়ারম্যান উভয়ে অতিরিক্ত ফি আদায়ের ব্যাপারে অবগত নন বলে দাবি করেছেন।

দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অনিন্দ্য গুহ বলেন, অভিযোগের বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে এবং সত্যতা পাওয়া গেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত