ইশতিয়াক হাসান

২০১৭ সালে ৮.১ মাত্রার একটি ভূমিকম্প আঘাত হানে মেক্সিকোতে। এ সময় আকাশে খেলা করা অদ্ভুত সবুজ ও নীল আলোর ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
তেমনি মেক্সিকোর আকাপুলকো শহরের কথা বলা যেতে পারে। উঁচু সব পর্বতমালা, স্বচ্ছ জল, চমৎকার হোটেল-রিসোর্টের জন্য জায়গাটি বিখ্যাত। তবে ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরের ৭ তারিখে এমন একটি ঘটনা ঘটল, যা কোনোভাবেই আকাঙ্ক্ষিত বিষয় ছিল না। ৭ মাত্রার একটি ভূমিকম্প কাঁপিয়ে দিল শহরের বালুময় সৈকত আর সাগরের ধারের উঁচু দালানগুলোকে।
তবে কাঁপতে থাকা দালান আর গাছেদের সঙ্গে অদ্ভুত একটা বিষয়ও নজর কাড়ল অনেকের। সেটি রাতের আকাশে নীল আলোর একটি ঝলক। ফল্ট লাইন বা ভূচ্যুতি বরাবর আকাশেই যেটা ঘটে।
তবে ভূমিকম্পের আগে কিংবা ভূমিকম্পের সময় এমন আলো দেখা যাওয়া নতুন কোনো ঘটনা নয়, বরং একে বলা চলে শত শত বছর ধরে গবেষকদের বিস্মিত করে রাখা বিষয়টিতে একটি পালক যুক্ত হওয়া মাত্র। এ ধরনের আলো আর্থকোয়েক লাইট নামেই পরিচিত। কেউ কেউ অবশ্য এ ধরনের আলোর সঙ্গে ভূমিকম্পের যোগকে উড়িয়ে দেন। যেমন আকাপুলাকোর ঘটনার পর অনেকে দাবি করেন ক্ষতিগ্রস্ত বৈদ্যুতিক লাইন বা ট্রান্সফরমার বিস্ফোরণে এমন আলোর উদ্ভব।
বল বজ্রপাতের মতো ভূমিকম্পের এই আলো মোটামুটি বিরল এক ঘটনা। তবে বিষয়টি যুগ যুগ ধরে ঘটে এলেও বিজ্ঞানীদের বিভ্রান্তি পুরোপুরি কাটেনি একে নিয়ে। ভূমিকম্প ঘিরে এই আলোর খেলা সব সময় একই রকম হয় না। একে নিয়ে ডালপালা মেলেছে নানা তত্ত্ব। এর মধ্যে আছে সাধারণ বিদ্যুৎ-চমক থেকে শুরু করে ইউএফও, এমনকি অতিপ্রাকৃত কিছুর উপস্থিতির গল্প।

‘এই আলো বিভিন্ন আকার ও রঙের হতে পারে।’ ন্যাশনাল জিওগ্রাফিককে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ২০১৪ সালে বলেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সান জোসে স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও নাসার এমস রিসার্চ সেন্টারের গবেষক ফ্রিডম্যান ফ্রয়েড।
ইতিহাসের পাতা থেকে
ফ্রয়েড ও তাঁর সহকর্মীরা ৬৫টি এ ধরনের আলো তৈরির ঘটনা নিয়ে গবেষণা করে ফলাফল সিসমোলজিক্যাল রিসার্চ লেটারসে প্রকাশ করেন। তাঁরা যে ঘটনাগুলো বিবেচনা করেন, সেগুলোর মধ্যে ১৬০০ সালের ‘আর্থকোয়েক লাইটসের’ ঘটনাও আছে।
উদাহরণ হিসেবে ১৯৮৮ সালের ১২ নভেম্বরের কথা বলা যেতে পারে। কানাডার কুইবেকের সেন্ট লরেন্স নদীর কাছে উজ্জ্বল বেগুনি-গোলাপি একটি আলো দেখেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এই আলো দেখা যায় সেখানে বড় একটি ভূমিকম্পের ১১ দিন আগে।
এদিকে পেরুর পিসকোতে, ২০০৭ সালের ৮ মাত্রার এক বড় ভূমিকম্পের আগে আকাশে উজ্জ্বল আলোর ঝলক ধরা পড়ে নিরাপত্তা ক্যামেরার ভিডিওতে। এদিকে ইতালির লাকুইলায় ২০০৯ সালের ভূমিকম্পের আগে পাথুরে এক রাস্তার ওপর চার ইঞ্চির একটি উজ্জ্বল শিখার মতো দেখা যায়।
সত্যি কি এমন আলোর অস্তিত্ব আছে
এ ধরনের আলোর বিষয়ে মতামতে বেশ সতর্ক অবস্থান নিয়েছে ইউএস জিওলজিক্যাল সার্ভে। তাদের ওয়েবসাইটে আর্থকোয়েক লাইট (ইকিউএল) সম্পর্কে বলে, ভূমিকম্প যেখানে সংঘটিত হয়, তার আশপাশের জায়গায় ও কাছাকাছি সময়ে অস্বাভাবিক আলোর যেসব খবর আসে, এগুলো নিয়ে ভূপদার্থবিদদের মধ্যে মতভেদ আছে। কেউ কেউ মনে করেন, যেসব তথ্য মেলে সেগুলো আসলেই ভূমিকম্পের কারণে কি না, তা নিয়ে সন্দেহ আছে। অন্যরা আবার মনে করেন, আলো দেখার যেসব সংবাদ পাওয়া যায়, এগুলোর অন্তত কিছু ইকিউএলের উদাহরণ হতে পারে।
ভূমিকম্পের এই আলোর জন্ম কীভাবে
২০১৪ সালের গবেষণায় ৬৫টি আলো তৈরির ঘটনা নিয়ে কাজ করে ফ্রয়েড ও তাঁর সঙ্গীরা মত প্রকাশ করেন, সিসমিক বা ভূকম্পনের ঘটনায় নির্দিষ্ট ধরনের কিছু পাথর থেকে বৈদ্যুতিক চার্জের সৃষ্টি হয়ে এটি তৈরি হয়।
উদাহরণ হিসেবে ব্যাসাল্ট ও গ্যাবরো পাথরের গঠনে সামান্য ত্রুটির কারণে এরা বাতাসে বৈদ্যুতিক চার্জ ছড়াতে পারে। সে ক্ষেত্রে গোটা পৃথিবীতে যত ভূমিকম্পের জন্ম হয়, এর শূন্য দশমিক ৫ শতাংশের বেলায় কেবল এটা ঘটতে পারে, অনুমান বিজ্ঞানীদের। এ কারণেই ভূমিকম্পে এ ধরনের আলো দেখার হার একেবারে কম বলে ধারণা করা হয়। বিজ্ঞানীরা এটাও জানান, ভূমিকম্পের আগে কিংবা ভূমিকম্পের সময় এ ধরনের আলো দেখার সম্ভাবনা বেশি। ভূমিকম্পের পরে এমন আলো দেখার ঘটনা শোনা যায় কমই।
এদিকে আগের একটি গবেষণায় দেখা যায়, টেকটোনিক প্লেটগুলোর অস্থিরতার সময় কোয়ার্টজ আছে এমন পাথরগুলো শক্তিশালী তড়িৎ ক্ষেত্র তৈরি করে। এর থেকেই উদ্ভব রহস্যময় সেই আলোর। মজার ঘটনা, বিষয়টি নিয়ে কাজ করতে গিয়ে কোনো কোনো বিজ্ঞানী গবেষণাগারে কৃত্রিমভাবে এমন আলো সৃষ্টির চেষ্টাও করেন।
সতর্কসংকেত
এদিকে সম্প্রতি কিছু গবেষক দাবি করছেন, তড়িৎ ক্ষেত্র বা তড়িৎ বিকিরণের কারণে আলোর জন্ম হোক-না হোক, এ সময় সৃষ্টি হওয়া তড়িৎ চুম্বকীয় সংকেত শনাক্ত করা সম্ভব। আর তাঁদের ধারণা সত্যি হলে ভূমিকম্পের মতো বড় বিপর্যয়ের আগেই এর আভাস পাওয়ার সুযোগ তৈরি হচ্ছে।
বাংলাদেশে এমন আলোর কথা শোনা না গেলেও ভারতের দিল্লিতে এ ধরনের আলো দেখার খবর মিলেছে সাম্প্রতিক সময়ে। আফগানিস্তানের কালফগ্রামে উৎপত্তি হওয়া ২১ মার্চের ওই ভূমিকম্প ভারত, তুর্কমিনিস্তান, পাকিস্তান, উজবেকিস্তানসহ আরও কিছু দেশে অনুভূত হয়। টুইটারে এক ব্যক্তি শেয়ার করেন দিল্লিতে আর্থকোয়েক লাইট দেখা যাওয়ার ভিডিও।
মোটের ওপর আর্থকোয়েক লাইট এক ধাঁধা হয়ে আছে এখনো। এটি এমন এক রহস্য, যেটি আলোড়িত করেছে ও করছে সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে বিজ্ঞানীদেরও।
সূত্র: ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক, নিউ সায়েন্টিস্ট, টাইমস অব ইন্ডিয়া

২০১৭ সালে ৮.১ মাত্রার একটি ভূমিকম্প আঘাত হানে মেক্সিকোতে। এ সময় আকাশে খেলা করা অদ্ভুত সবুজ ও নীল আলোর ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
তেমনি মেক্সিকোর আকাপুলকো শহরের কথা বলা যেতে পারে। উঁচু সব পর্বতমালা, স্বচ্ছ জল, চমৎকার হোটেল-রিসোর্টের জন্য জায়গাটি বিখ্যাত। তবে ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরের ৭ তারিখে এমন একটি ঘটনা ঘটল, যা কোনোভাবেই আকাঙ্ক্ষিত বিষয় ছিল না। ৭ মাত্রার একটি ভূমিকম্প কাঁপিয়ে দিল শহরের বালুময় সৈকত আর সাগরের ধারের উঁচু দালানগুলোকে।
তবে কাঁপতে থাকা দালান আর গাছেদের সঙ্গে অদ্ভুত একটা বিষয়ও নজর কাড়ল অনেকের। সেটি রাতের আকাশে নীল আলোর একটি ঝলক। ফল্ট লাইন বা ভূচ্যুতি বরাবর আকাশেই যেটা ঘটে।
তবে ভূমিকম্পের আগে কিংবা ভূমিকম্পের সময় এমন আলো দেখা যাওয়া নতুন কোনো ঘটনা নয়, বরং একে বলা চলে শত শত বছর ধরে গবেষকদের বিস্মিত করে রাখা বিষয়টিতে একটি পালক যুক্ত হওয়া মাত্র। এ ধরনের আলো আর্থকোয়েক লাইট নামেই পরিচিত। কেউ কেউ অবশ্য এ ধরনের আলোর সঙ্গে ভূমিকম্পের যোগকে উড়িয়ে দেন। যেমন আকাপুলাকোর ঘটনার পর অনেকে দাবি করেন ক্ষতিগ্রস্ত বৈদ্যুতিক লাইন বা ট্রান্সফরমার বিস্ফোরণে এমন আলোর উদ্ভব।
বল বজ্রপাতের মতো ভূমিকম্পের এই আলো মোটামুটি বিরল এক ঘটনা। তবে বিষয়টি যুগ যুগ ধরে ঘটে এলেও বিজ্ঞানীদের বিভ্রান্তি পুরোপুরি কাটেনি একে নিয়ে। ভূমিকম্প ঘিরে এই আলোর খেলা সব সময় একই রকম হয় না। একে নিয়ে ডালপালা মেলেছে নানা তত্ত্ব। এর মধ্যে আছে সাধারণ বিদ্যুৎ-চমক থেকে শুরু করে ইউএফও, এমনকি অতিপ্রাকৃত কিছুর উপস্থিতির গল্প।

‘এই আলো বিভিন্ন আকার ও রঙের হতে পারে।’ ন্যাশনাল জিওগ্রাফিককে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ২০১৪ সালে বলেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সান জোসে স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও নাসার এমস রিসার্চ সেন্টারের গবেষক ফ্রিডম্যান ফ্রয়েড।
ইতিহাসের পাতা থেকে
ফ্রয়েড ও তাঁর সহকর্মীরা ৬৫টি এ ধরনের আলো তৈরির ঘটনা নিয়ে গবেষণা করে ফলাফল সিসমোলজিক্যাল রিসার্চ লেটারসে প্রকাশ করেন। তাঁরা যে ঘটনাগুলো বিবেচনা করেন, সেগুলোর মধ্যে ১৬০০ সালের ‘আর্থকোয়েক লাইটসের’ ঘটনাও আছে।
উদাহরণ হিসেবে ১৯৮৮ সালের ১২ নভেম্বরের কথা বলা যেতে পারে। কানাডার কুইবেকের সেন্ট লরেন্স নদীর কাছে উজ্জ্বল বেগুনি-গোলাপি একটি আলো দেখেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এই আলো দেখা যায় সেখানে বড় একটি ভূমিকম্পের ১১ দিন আগে।
এদিকে পেরুর পিসকোতে, ২০০৭ সালের ৮ মাত্রার এক বড় ভূমিকম্পের আগে আকাশে উজ্জ্বল আলোর ঝলক ধরা পড়ে নিরাপত্তা ক্যামেরার ভিডিওতে। এদিকে ইতালির লাকুইলায় ২০০৯ সালের ভূমিকম্পের আগে পাথুরে এক রাস্তার ওপর চার ইঞ্চির একটি উজ্জ্বল শিখার মতো দেখা যায়।
সত্যি কি এমন আলোর অস্তিত্ব আছে
এ ধরনের আলোর বিষয়ে মতামতে বেশ সতর্ক অবস্থান নিয়েছে ইউএস জিওলজিক্যাল সার্ভে। তাদের ওয়েবসাইটে আর্থকোয়েক লাইট (ইকিউএল) সম্পর্কে বলে, ভূমিকম্প যেখানে সংঘটিত হয়, তার আশপাশের জায়গায় ও কাছাকাছি সময়ে অস্বাভাবিক আলোর যেসব খবর আসে, এগুলো নিয়ে ভূপদার্থবিদদের মধ্যে মতভেদ আছে। কেউ কেউ মনে করেন, যেসব তথ্য মেলে সেগুলো আসলেই ভূমিকম্পের কারণে কি না, তা নিয়ে সন্দেহ আছে। অন্যরা আবার মনে করেন, আলো দেখার যেসব সংবাদ পাওয়া যায়, এগুলোর অন্তত কিছু ইকিউএলের উদাহরণ হতে পারে।
ভূমিকম্পের এই আলোর জন্ম কীভাবে
২০১৪ সালের গবেষণায় ৬৫টি আলো তৈরির ঘটনা নিয়ে কাজ করে ফ্রয়েড ও তাঁর সঙ্গীরা মত প্রকাশ করেন, সিসমিক বা ভূকম্পনের ঘটনায় নির্দিষ্ট ধরনের কিছু পাথর থেকে বৈদ্যুতিক চার্জের সৃষ্টি হয়ে এটি তৈরি হয়।
উদাহরণ হিসেবে ব্যাসাল্ট ও গ্যাবরো পাথরের গঠনে সামান্য ত্রুটির কারণে এরা বাতাসে বৈদ্যুতিক চার্জ ছড়াতে পারে। সে ক্ষেত্রে গোটা পৃথিবীতে যত ভূমিকম্পের জন্ম হয়, এর শূন্য দশমিক ৫ শতাংশের বেলায় কেবল এটা ঘটতে পারে, অনুমান বিজ্ঞানীদের। এ কারণেই ভূমিকম্পে এ ধরনের আলো দেখার হার একেবারে কম বলে ধারণা করা হয়। বিজ্ঞানীরা এটাও জানান, ভূমিকম্পের আগে কিংবা ভূমিকম্পের সময় এ ধরনের আলো দেখার সম্ভাবনা বেশি। ভূমিকম্পের পরে এমন আলো দেখার ঘটনা শোনা যায় কমই।
এদিকে আগের একটি গবেষণায় দেখা যায়, টেকটোনিক প্লেটগুলোর অস্থিরতার সময় কোয়ার্টজ আছে এমন পাথরগুলো শক্তিশালী তড়িৎ ক্ষেত্র তৈরি করে। এর থেকেই উদ্ভব রহস্যময় সেই আলোর। মজার ঘটনা, বিষয়টি নিয়ে কাজ করতে গিয়ে কোনো কোনো বিজ্ঞানী গবেষণাগারে কৃত্রিমভাবে এমন আলো সৃষ্টির চেষ্টাও করেন।
সতর্কসংকেত
এদিকে সম্প্রতি কিছু গবেষক দাবি করছেন, তড়িৎ ক্ষেত্র বা তড়িৎ বিকিরণের কারণে আলোর জন্ম হোক-না হোক, এ সময় সৃষ্টি হওয়া তড়িৎ চুম্বকীয় সংকেত শনাক্ত করা সম্ভব। আর তাঁদের ধারণা সত্যি হলে ভূমিকম্পের মতো বড় বিপর্যয়ের আগেই এর আভাস পাওয়ার সুযোগ তৈরি হচ্ছে।
বাংলাদেশে এমন আলোর কথা শোনা না গেলেও ভারতের দিল্লিতে এ ধরনের আলো দেখার খবর মিলেছে সাম্প্রতিক সময়ে। আফগানিস্তানের কালফগ্রামে উৎপত্তি হওয়া ২১ মার্চের ওই ভূমিকম্প ভারত, তুর্কমিনিস্তান, পাকিস্তান, উজবেকিস্তানসহ আরও কিছু দেশে অনুভূত হয়। টুইটারে এক ব্যক্তি শেয়ার করেন দিল্লিতে আর্থকোয়েক লাইট দেখা যাওয়ার ভিডিও।
মোটের ওপর আর্থকোয়েক লাইট এক ধাঁধা হয়ে আছে এখনো। এটি এমন এক রহস্য, যেটি আলোড়িত করেছে ও করছে সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে বিজ্ঞানীদেরও।
সূত্র: ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক, নিউ সায়েন্টিস্ট, টাইমস অব ইন্ডিয়া
ইশতিয়াক হাসান

২০১৭ সালে ৮.১ মাত্রার একটি ভূমিকম্প আঘাত হানে মেক্সিকোতে। এ সময় আকাশে খেলা করা অদ্ভুত সবুজ ও নীল আলোর ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
তেমনি মেক্সিকোর আকাপুলকো শহরের কথা বলা যেতে পারে। উঁচু সব পর্বতমালা, স্বচ্ছ জল, চমৎকার হোটেল-রিসোর্টের জন্য জায়গাটি বিখ্যাত। তবে ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরের ৭ তারিখে এমন একটি ঘটনা ঘটল, যা কোনোভাবেই আকাঙ্ক্ষিত বিষয় ছিল না। ৭ মাত্রার একটি ভূমিকম্প কাঁপিয়ে দিল শহরের বালুময় সৈকত আর সাগরের ধারের উঁচু দালানগুলোকে।
তবে কাঁপতে থাকা দালান আর গাছেদের সঙ্গে অদ্ভুত একটা বিষয়ও নজর কাড়ল অনেকের। সেটি রাতের আকাশে নীল আলোর একটি ঝলক। ফল্ট লাইন বা ভূচ্যুতি বরাবর আকাশেই যেটা ঘটে।
তবে ভূমিকম্পের আগে কিংবা ভূমিকম্পের সময় এমন আলো দেখা যাওয়া নতুন কোনো ঘটনা নয়, বরং একে বলা চলে শত শত বছর ধরে গবেষকদের বিস্মিত করে রাখা বিষয়টিতে একটি পালক যুক্ত হওয়া মাত্র। এ ধরনের আলো আর্থকোয়েক লাইট নামেই পরিচিত। কেউ কেউ অবশ্য এ ধরনের আলোর সঙ্গে ভূমিকম্পের যোগকে উড়িয়ে দেন। যেমন আকাপুলাকোর ঘটনার পর অনেকে দাবি করেন ক্ষতিগ্রস্ত বৈদ্যুতিক লাইন বা ট্রান্সফরমার বিস্ফোরণে এমন আলোর উদ্ভব।
বল বজ্রপাতের মতো ভূমিকম্পের এই আলো মোটামুটি বিরল এক ঘটনা। তবে বিষয়টি যুগ যুগ ধরে ঘটে এলেও বিজ্ঞানীদের বিভ্রান্তি পুরোপুরি কাটেনি একে নিয়ে। ভূমিকম্প ঘিরে এই আলোর খেলা সব সময় একই রকম হয় না। একে নিয়ে ডালপালা মেলেছে নানা তত্ত্ব। এর মধ্যে আছে সাধারণ বিদ্যুৎ-চমক থেকে শুরু করে ইউএফও, এমনকি অতিপ্রাকৃত কিছুর উপস্থিতির গল্প।

‘এই আলো বিভিন্ন আকার ও রঙের হতে পারে।’ ন্যাশনাল জিওগ্রাফিককে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ২০১৪ সালে বলেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সান জোসে স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও নাসার এমস রিসার্চ সেন্টারের গবেষক ফ্রিডম্যান ফ্রয়েড।
ইতিহাসের পাতা থেকে
ফ্রয়েড ও তাঁর সহকর্মীরা ৬৫টি এ ধরনের আলো তৈরির ঘটনা নিয়ে গবেষণা করে ফলাফল সিসমোলজিক্যাল রিসার্চ লেটারসে প্রকাশ করেন। তাঁরা যে ঘটনাগুলো বিবেচনা করেন, সেগুলোর মধ্যে ১৬০০ সালের ‘আর্থকোয়েক লাইটসের’ ঘটনাও আছে।
উদাহরণ হিসেবে ১৯৮৮ সালের ১২ নভেম্বরের কথা বলা যেতে পারে। কানাডার কুইবেকের সেন্ট লরেন্স নদীর কাছে উজ্জ্বল বেগুনি-গোলাপি একটি আলো দেখেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এই আলো দেখা যায় সেখানে বড় একটি ভূমিকম্পের ১১ দিন আগে।
এদিকে পেরুর পিসকোতে, ২০০৭ সালের ৮ মাত্রার এক বড় ভূমিকম্পের আগে আকাশে উজ্জ্বল আলোর ঝলক ধরা পড়ে নিরাপত্তা ক্যামেরার ভিডিওতে। এদিকে ইতালির লাকুইলায় ২০০৯ সালের ভূমিকম্পের আগে পাথুরে এক রাস্তার ওপর চার ইঞ্চির একটি উজ্জ্বল শিখার মতো দেখা যায়।
সত্যি কি এমন আলোর অস্তিত্ব আছে
এ ধরনের আলোর বিষয়ে মতামতে বেশ সতর্ক অবস্থান নিয়েছে ইউএস জিওলজিক্যাল সার্ভে। তাদের ওয়েবসাইটে আর্থকোয়েক লাইট (ইকিউএল) সম্পর্কে বলে, ভূমিকম্প যেখানে সংঘটিত হয়, তার আশপাশের জায়গায় ও কাছাকাছি সময়ে অস্বাভাবিক আলোর যেসব খবর আসে, এগুলো নিয়ে ভূপদার্থবিদদের মধ্যে মতভেদ আছে। কেউ কেউ মনে করেন, যেসব তথ্য মেলে সেগুলো আসলেই ভূমিকম্পের কারণে কি না, তা নিয়ে সন্দেহ আছে। অন্যরা আবার মনে করেন, আলো দেখার যেসব সংবাদ পাওয়া যায়, এগুলোর অন্তত কিছু ইকিউএলের উদাহরণ হতে পারে।
ভূমিকম্পের এই আলোর জন্ম কীভাবে
২০১৪ সালের গবেষণায় ৬৫টি আলো তৈরির ঘটনা নিয়ে কাজ করে ফ্রয়েড ও তাঁর সঙ্গীরা মত প্রকাশ করেন, সিসমিক বা ভূকম্পনের ঘটনায় নির্দিষ্ট ধরনের কিছু পাথর থেকে বৈদ্যুতিক চার্জের সৃষ্টি হয়ে এটি তৈরি হয়।
উদাহরণ হিসেবে ব্যাসাল্ট ও গ্যাবরো পাথরের গঠনে সামান্য ত্রুটির কারণে এরা বাতাসে বৈদ্যুতিক চার্জ ছড়াতে পারে। সে ক্ষেত্রে গোটা পৃথিবীতে যত ভূমিকম্পের জন্ম হয়, এর শূন্য দশমিক ৫ শতাংশের বেলায় কেবল এটা ঘটতে পারে, অনুমান বিজ্ঞানীদের। এ কারণেই ভূমিকম্পে এ ধরনের আলো দেখার হার একেবারে কম বলে ধারণা করা হয়। বিজ্ঞানীরা এটাও জানান, ভূমিকম্পের আগে কিংবা ভূমিকম্পের সময় এ ধরনের আলো দেখার সম্ভাবনা বেশি। ভূমিকম্পের পরে এমন আলো দেখার ঘটনা শোনা যায় কমই।
এদিকে আগের একটি গবেষণায় দেখা যায়, টেকটোনিক প্লেটগুলোর অস্থিরতার সময় কোয়ার্টজ আছে এমন পাথরগুলো শক্তিশালী তড়িৎ ক্ষেত্র তৈরি করে। এর থেকেই উদ্ভব রহস্যময় সেই আলোর। মজার ঘটনা, বিষয়টি নিয়ে কাজ করতে গিয়ে কোনো কোনো বিজ্ঞানী গবেষণাগারে কৃত্রিমভাবে এমন আলো সৃষ্টির চেষ্টাও করেন।
সতর্কসংকেত
এদিকে সম্প্রতি কিছু গবেষক দাবি করছেন, তড়িৎ ক্ষেত্র বা তড়িৎ বিকিরণের কারণে আলোর জন্ম হোক-না হোক, এ সময় সৃষ্টি হওয়া তড়িৎ চুম্বকীয় সংকেত শনাক্ত করা সম্ভব। আর তাঁদের ধারণা সত্যি হলে ভূমিকম্পের মতো বড় বিপর্যয়ের আগেই এর আভাস পাওয়ার সুযোগ তৈরি হচ্ছে।
বাংলাদেশে এমন আলোর কথা শোনা না গেলেও ভারতের দিল্লিতে এ ধরনের আলো দেখার খবর মিলেছে সাম্প্রতিক সময়ে। আফগানিস্তানের কালফগ্রামে উৎপত্তি হওয়া ২১ মার্চের ওই ভূমিকম্প ভারত, তুর্কমিনিস্তান, পাকিস্তান, উজবেকিস্তানসহ আরও কিছু দেশে অনুভূত হয়। টুইটারে এক ব্যক্তি শেয়ার করেন দিল্লিতে আর্থকোয়েক লাইট দেখা যাওয়ার ভিডিও।
মোটের ওপর আর্থকোয়েক লাইট এক ধাঁধা হয়ে আছে এখনো। এটি এমন এক রহস্য, যেটি আলোড়িত করেছে ও করছে সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে বিজ্ঞানীদেরও।
সূত্র: ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক, নিউ সায়েন্টিস্ট, টাইমস অব ইন্ডিয়া

২০১৭ সালে ৮.১ মাত্রার একটি ভূমিকম্প আঘাত হানে মেক্সিকোতে। এ সময় আকাশে খেলা করা অদ্ভুত সবুজ ও নীল আলোর ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
তেমনি মেক্সিকোর আকাপুলকো শহরের কথা বলা যেতে পারে। উঁচু সব পর্বতমালা, স্বচ্ছ জল, চমৎকার হোটেল-রিসোর্টের জন্য জায়গাটি বিখ্যাত। তবে ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরের ৭ তারিখে এমন একটি ঘটনা ঘটল, যা কোনোভাবেই আকাঙ্ক্ষিত বিষয় ছিল না। ৭ মাত্রার একটি ভূমিকম্প কাঁপিয়ে দিল শহরের বালুময় সৈকত আর সাগরের ধারের উঁচু দালানগুলোকে।
তবে কাঁপতে থাকা দালান আর গাছেদের সঙ্গে অদ্ভুত একটা বিষয়ও নজর কাড়ল অনেকের। সেটি রাতের আকাশে নীল আলোর একটি ঝলক। ফল্ট লাইন বা ভূচ্যুতি বরাবর আকাশেই যেটা ঘটে।
তবে ভূমিকম্পের আগে কিংবা ভূমিকম্পের সময় এমন আলো দেখা যাওয়া নতুন কোনো ঘটনা নয়, বরং একে বলা চলে শত শত বছর ধরে গবেষকদের বিস্মিত করে রাখা বিষয়টিতে একটি পালক যুক্ত হওয়া মাত্র। এ ধরনের আলো আর্থকোয়েক লাইট নামেই পরিচিত। কেউ কেউ অবশ্য এ ধরনের আলোর সঙ্গে ভূমিকম্পের যোগকে উড়িয়ে দেন। যেমন আকাপুলাকোর ঘটনার পর অনেকে দাবি করেন ক্ষতিগ্রস্ত বৈদ্যুতিক লাইন বা ট্রান্সফরমার বিস্ফোরণে এমন আলোর উদ্ভব।
বল বজ্রপাতের মতো ভূমিকম্পের এই আলো মোটামুটি বিরল এক ঘটনা। তবে বিষয়টি যুগ যুগ ধরে ঘটে এলেও বিজ্ঞানীদের বিভ্রান্তি পুরোপুরি কাটেনি একে নিয়ে। ভূমিকম্প ঘিরে এই আলোর খেলা সব সময় একই রকম হয় না। একে নিয়ে ডালপালা মেলেছে নানা তত্ত্ব। এর মধ্যে আছে সাধারণ বিদ্যুৎ-চমক থেকে শুরু করে ইউএফও, এমনকি অতিপ্রাকৃত কিছুর উপস্থিতির গল্প।

‘এই আলো বিভিন্ন আকার ও রঙের হতে পারে।’ ন্যাশনাল জিওগ্রাফিককে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ২০১৪ সালে বলেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সান জোসে স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও নাসার এমস রিসার্চ সেন্টারের গবেষক ফ্রিডম্যান ফ্রয়েড।
ইতিহাসের পাতা থেকে
ফ্রয়েড ও তাঁর সহকর্মীরা ৬৫টি এ ধরনের আলো তৈরির ঘটনা নিয়ে গবেষণা করে ফলাফল সিসমোলজিক্যাল রিসার্চ লেটারসে প্রকাশ করেন। তাঁরা যে ঘটনাগুলো বিবেচনা করেন, সেগুলোর মধ্যে ১৬০০ সালের ‘আর্থকোয়েক লাইটসের’ ঘটনাও আছে।
উদাহরণ হিসেবে ১৯৮৮ সালের ১২ নভেম্বরের কথা বলা যেতে পারে। কানাডার কুইবেকের সেন্ট লরেন্স নদীর কাছে উজ্জ্বল বেগুনি-গোলাপি একটি আলো দেখেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এই আলো দেখা যায় সেখানে বড় একটি ভূমিকম্পের ১১ দিন আগে।
এদিকে পেরুর পিসকোতে, ২০০৭ সালের ৮ মাত্রার এক বড় ভূমিকম্পের আগে আকাশে উজ্জ্বল আলোর ঝলক ধরা পড়ে নিরাপত্তা ক্যামেরার ভিডিওতে। এদিকে ইতালির লাকুইলায় ২০০৯ সালের ভূমিকম্পের আগে পাথুরে এক রাস্তার ওপর চার ইঞ্চির একটি উজ্জ্বল শিখার মতো দেখা যায়।
সত্যি কি এমন আলোর অস্তিত্ব আছে
এ ধরনের আলোর বিষয়ে মতামতে বেশ সতর্ক অবস্থান নিয়েছে ইউএস জিওলজিক্যাল সার্ভে। তাদের ওয়েবসাইটে আর্থকোয়েক লাইট (ইকিউএল) সম্পর্কে বলে, ভূমিকম্প যেখানে সংঘটিত হয়, তার আশপাশের জায়গায় ও কাছাকাছি সময়ে অস্বাভাবিক আলোর যেসব খবর আসে, এগুলো নিয়ে ভূপদার্থবিদদের মধ্যে মতভেদ আছে। কেউ কেউ মনে করেন, যেসব তথ্য মেলে সেগুলো আসলেই ভূমিকম্পের কারণে কি না, তা নিয়ে সন্দেহ আছে। অন্যরা আবার মনে করেন, আলো দেখার যেসব সংবাদ পাওয়া যায়, এগুলোর অন্তত কিছু ইকিউএলের উদাহরণ হতে পারে।
ভূমিকম্পের এই আলোর জন্ম কীভাবে
২০১৪ সালের গবেষণায় ৬৫টি আলো তৈরির ঘটনা নিয়ে কাজ করে ফ্রয়েড ও তাঁর সঙ্গীরা মত প্রকাশ করেন, সিসমিক বা ভূকম্পনের ঘটনায় নির্দিষ্ট ধরনের কিছু পাথর থেকে বৈদ্যুতিক চার্জের সৃষ্টি হয়ে এটি তৈরি হয়।
উদাহরণ হিসেবে ব্যাসাল্ট ও গ্যাবরো পাথরের গঠনে সামান্য ত্রুটির কারণে এরা বাতাসে বৈদ্যুতিক চার্জ ছড়াতে পারে। সে ক্ষেত্রে গোটা পৃথিবীতে যত ভূমিকম্পের জন্ম হয়, এর শূন্য দশমিক ৫ শতাংশের বেলায় কেবল এটা ঘটতে পারে, অনুমান বিজ্ঞানীদের। এ কারণেই ভূমিকম্পে এ ধরনের আলো দেখার হার একেবারে কম বলে ধারণা করা হয়। বিজ্ঞানীরা এটাও জানান, ভূমিকম্পের আগে কিংবা ভূমিকম্পের সময় এ ধরনের আলো দেখার সম্ভাবনা বেশি। ভূমিকম্পের পরে এমন আলো দেখার ঘটনা শোনা যায় কমই।
এদিকে আগের একটি গবেষণায় দেখা যায়, টেকটোনিক প্লেটগুলোর অস্থিরতার সময় কোয়ার্টজ আছে এমন পাথরগুলো শক্তিশালী তড়িৎ ক্ষেত্র তৈরি করে। এর থেকেই উদ্ভব রহস্যময় সেই আলোর। মজার ঘটনা, বিষয়টি নিয়ে কাজ করতে গিয়ে কোনো কোনো বিজ্ঞানী গবেষণাগারে কৃত্রিমভাবে এমন আলো সৃষ্টির চেষ্টাও করেন।
সতর্কসংকেত
এদিকে সম্প্রতি কিছু গবেষক দাবি করছেন, তড়িৎ ক্ষেত্র বা তড়িৎ বিকিরণের কারণে আলোর জন্ম হোক-না হোক, এ সময় সৃষ্টি হওয়া তড়িৎ চুম্বকীয় সংকেত শনাক্ত করা সম্ভব। আর তাঁদের ধারণা সত্যি হলে ভূমিকম্পের মতো বড় বিপর্যয়ের আগেই এর আভাস পাওয়ার সুযোগ তৈরি হচ্ছে।
বাংলাদেশে এমন আলোর কথা শোনা না গেলেও ভারতের দিল্লিতে এ ধরনের আলো দেখার খবর মিলেছে সাম্প্রতিক সময়ে। আফগানিস্তানের কালফগ্রামে উৎপত্তি হওয়া ২১ মার্চের ওই ভূমিকম্প ভারত, তুর্কমিনিস্তান, পাকিস্তান, উজবেকিস্তানসহ আরও কিছু দেশে অনুভূত হয়। টুইটারে এক ব্যক্তি শেয়ার করেন দিল্লিতে আর্থকোয়েক লাইট দেখা যাওয়ার ভিডিও।
মোটের ওপর আর্থকোয়েক লাইট এক ধাঁধা হয়ে আছে এখনো। এটি এমন এক রহস্য, যেটি আলোড়িত করেছে ও করছে সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে বিজ্ঞানীদেরও।
সূত্র: ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক, নিউ সায়েন্টিস্ট, টাইমস অব ইন্ডিয়া

কোনো বড় ধরনের সৌরঝড় বা প্রযুক্তিগত বিপর্যয়ের কারণে যদি পৃথিবীর কক্ষপথে থাকা স্যাটেলাইটগুলো হঠাৎ নিজেদের গতিপথ পরিবর্তনের সক্ষমতা হারায়, তবে মাত্র কয়েক দিনের মধ্যেই ভয়াবহ সংঘর্ষ শুরু হতে পারে বলে সতর্ক করেছেন বিজ্ঞানীরা।
২১ ঘণ্টা আগে
উত্তর ইতালির একটি ন্যাশনাল পার্কে ২১ কোটি বছর আগের ডাইনোসরের পায়ের ছাপ পাওয়া গেছে। তাও আবার একটি-দুটি নয়, হাজার হাজার। এই পায়ের ছাপগুলোর কয়েকটির ব্যাস ১৫ ইঞ্চি পর্যন্ত। আর এগুলো সমান্তরাল সারিতে সাজানো। এসবের মধ্যে অনেকগুলোতে আঙুল ও নখের ছাপ স্পষ্ট বোঝা গেছে
১ দিন আগে
ব্রিটিশ কলম্বিয়ার উপকূলে একদিন। স্যামন মাছের ঝাঁক পড়িমড়ি করে ছুটতে দেখা গেল। তাদের পিছেই চোখে পড়ল কিলার হোয়েল নামে পরিচিত অরকা ও হোয়াইট–সাইডেড ডলফিনের দলকে। তাও আবার একসঙ্গে! এই দুই শিকারী প্রাণীকে জোটবেঁধে স্যামন শিকারে ছুটতে দেখে যারপরনাই বিস্মিত বিজ্ঞানীরা।
৪ দিন আগে
ফ্রান্সের ব্রিতানি উপকূলের কাছে সমুদ্রের গভীরে এক বিশাল পাথরের প্রাচীরের সন্ধান মিলেছে। এই প্রাচীন প্রায় ৭ হাজার বছর আগে—অর্থাৎ ৫ হাজার খ্রিষ্টপূর্বাব্দে নির্মিত বলে ধারণা করা হচ্ছে। ফরাসি সামুদ্রিক প্রত্নতাত্ত্বিকেরা ধারণা করছেন, সমুদ্রের জলস্তর বৃদ্ধির কারণে যে প্রস্তর যুগের সমাজ এই এলাকা...
৬ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

কোনো বড় ধরনের সৌরঝড় বা প্রযুক্তিগত বিপর্যয়ের কারণে যদি পৃথিবীর কক্ষপথে থাকা স্যাটেলাইটগুলো হঠাৎ নিজেদের গতিপথ পরিবর্তনের সক্ষমতা হারায়, তবে মাত্র কয়েক দিনের মধ্যেই ভয়াবহ সংঘর্ষ শুরু হতে পারে বলে সতর্ক করেছেন বিজ্ঞানীরা। নতুন এক গবেষণা বলছে, বর্তমান পরিস্থিতিতে সব স্যাটেলাইট একযোগে অচল হয়ে পড়লে প্রথম সংঘর্ষ ঘটতে সময় লাগবে গড়ে মাত্র ২.৮ দিন।
গত সাত বছরে পৃথিবীর কক্ষপথে স্যাটেলাইটের সংখ্যা তিনগুণেরও বেশি বেড়েছে। ২০১৮ সালে যেখানে প্রায় ৪ হাজার স্যাটেলাইট ছিল, এখন সেই সংখ্যা প্রায় ১৪ হাজারে পৌঁছেছে। এই বিস্ফোরণধর্মী বৃদ্ধির পেছনে প্রধান ভূমিকা রেখেছে স্পেসএক্সের স্টারলিংক প্রকল্প। নিম্ন-পৃথিবী কক্ষপথে (৩৪০ থেকে ৫৫০ কিলোমিটার উচ্চতায়) বর্তমানে স্টারলিংকের স্যাটেলাইটই রয়েছে ৯ হাজারের বেশি।
কক্ষপথে এত বেশি স্যাটেলাইট থাকার কারণে নিয়মিত সংঘর্ষ এড়াতে ‘কলিশন অ্যাভয়ডেন্স ম্যানুভার’ বা গতিপথ পরিবর্তনের কৌশল নিতে হয়। স্পেসএক্স জানিয়েছে, ২০২৪ সালের ১ ডিসেম্বর থেকে ২০২৫ সালের ৩১ মে পর্যন্ত মাত্র ছয় মাসে তারা ১ লাখ ৪৪ হাজারেরও বেশি সংঘর্ষ এড়ানোর কৌশল প্রয়োগ করেছে।
গত মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) এই বিষয়ে এক প্রতিবেদনে নিও সায়েন্টিস্ট জানিয়েছে, প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ের সারা থিয়েল ও তাঁর সহকর্মীরা স্যাটেলাইটের অবস্থানসংক্রান্ত উন্মুক্ত তথ্য বিশ্লেষণ করে সংঘর্ষ ঝুঁকি পরিমাপের জন্য নতুন একটি সূচক তৈরি করেছেন। এই সূচকের নাম দেওয়া হয়েছে ‘ক্র্যাশ ক্লক’।
গবেষণায় দেখা গেছে, ২০১৮ সালে যদি সব স্যাটেলাইট হঠাৎ নিয়ন্ত্রণ হারাত, তবে প্রথম সংঘর্ষ হতে সময় লাগত প্রায় ১২১ দিন। কিন্তু বর্তমানে সেই সময় নেমে এসেছে মাত্র ২.৮ দিনে। এই তথ্য বিজ্ঞানীদেরও বিস্মিত করেছে।
সব স্যাটেলাইট একসঙ্গে অচল হয়ে পড়ার সম্ভাবনা কম হলেও ২০২৪ সালের মে মাসে শক্তিশালী সৌরঝড়ে স্টারলিংক স্যাটেলাইটগুলোতে অস্বাভাবিক ঢেউয়ের মতো প্রতিক্রিয়া দেখা গিয়েছিল। ভবিষ্যতে আরও শক্তিশালী সৌরঝড় হলে পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন—আগামী বছরগুলোতে স্পেসএক্স, অ্যামাজন ও চীনের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান আরও হাজার হাজার স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করতে যাচ্ছে। ফলে কক্ষপথে ভিড় আরও বাড়বে, আর ‘ক্র্যাশ ক্লক’-এর সময়সীমা আরও এগিয়ে আসবে। এই পরিস্থিতি মহাকাশ ব্যবস্থাপনা নিয়ে নতুন করে ভাবার প্রয়োজনীয়তা সামনে আনছে।

কোনো বড় ধরনের সৌরঝড় বা প্রযুক্তিগত বিপর্যয়ের কারণে যদি পৃথিবীর কক্ষপথে থাকা স্যাটেলাইটগুলো হঠাৎ নিজেদের গতিপথ পরিবর্তনের সক্ষমতা হারায়, তবে মাত্র কয়েক দিনের মধ্যেই ভয়াবহ সংঘর্ষ শুরু হতে পারে বলে সতর্ক করেছেন বিজ্ঞানীরা। নতুন এক গবেষণা বলছে, বর্তমান পরিস্থিতিতে সব স্যাটেলাইট একযোগে অচল হয়ে পড়লে প্রথম সংঘর্ষ ঘটতে সময় লাগবে গড়ে মাত্র ২.৮ দিন।
গত সাত বছরে পৃথিবীর কক্ষপথে স্যাটেলাইটের সংখ্যা তিনগুণেরও বেশি বেড়েছে। ২০১৮ সালে যেখানে প্রায় ৪ হাজার স্যাটেলাইট ছিল, এখন সেই সংখ্যা প্রায় ১৪ হাজারে পৌঁছেছে। এই বিস্ফোরণধর্মী বৃদ্ধির পেছনে প্রধান ভূমিকা রেখেছে স্পেসএক্সের স্টারলিংক প্রকল্প। নিম্ন-পৃথিবী কক্ষপথে (৩৪০ থেকে ৫৫০ কিলোমিটার উচ্চতায়) বর্তমানে স্টারলিংকের স্যাটেলাইটই রয়েছে ৯ হাজারের বেশি।
কক্ষপথে এত বেশি স্যাটেলাইট থাকার কারণে নিয়মিত সংঘর্ষ এড়াতে ‘কলিশন অ্যাভয়ডেন্স ম্যানুভার’ বা গতিপথ পরিবর্তনের কৌশল নিতে হয়। স্পেসএক্স জানিয়েছে, ২০২৪ সালের ১ ডিসেম্বর থেকে ২০২৫ সালের ৩১ মে পর্যন্ত মাত্র ছয় মাসে তারা ১ লাখ ৪৪ হাজারেরও বেশি সংঘর্ষ এড়ানোর কৌশল প্রয়োগ করেছে।
গত মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) এই বিষয়ে এক প্রতিবেদনে নিও সায়েন্টিস্ট জানিয়েছে, প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ের সারা থিয়েল ও তাঁর সহকর্মীরা স্যাটেলাইটের অবস্থানসংক্রান্ত উন্মুক্ত তথ্য বিশ্লেষণ করে সংঘর্ষ ঝুঁকি পরিমাপের জন্য নতুন একটি সূচক তৈরি করেছেন। এই সূচকের নাম দেওয়া হয়েছে ‘ক্র্যাশ ক্লক’।
গবেষণায় দেখা গেছে, ২০১৮ সালে যদি সব স্যাটেলাইট হঠাৎ নিয়ন্ত্রণ হারাত, তবে প্রথম সংঘর্ষ হতে সময় লাগত প্রায় ১২১ দিন। কিন্তু বর্তমানে সেই সময় নেমে এসেছে মাত্র ২.৮ দিনে। এই তথ্য বিজ্ঞানীদেরও বিস্মিত করেছে।
সব স্যাটেলাইট একসঙ্গে অচল হয়ে পড়ার সম্ভাবনা কম হলেও ২০২৪ সালের মে মাসে শক্তিশালী সৌরঝড়ে স্টারলিংক স্যাটেলাইটগুলোতে অস্বাভাবিক ঢেউয়ের মতো প্রতিক্রিয়া দেখা গিয়েছিল। ভবিষ্যতে আরও শক্তিশালী সৌরঝড় হলে পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন—আগামী বছরগুলোতে স্পেসএক্স, অ্যামাজন ও চীনের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান আরও হাজার হাজার স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করতে যাচ্ছে। ফলে কক্ষপথে ভিড় আরও বাড়বে, আর ‘ক্র্যাশ ক্লক’-এর সময়সীমা আরও এগিয়ে আসবে। এই পরিস্থিতি মহাকাশ ব্যবস্থাপনা নিয়ে নতুন করে ভাবার প্রয়োজনীয়তা সামনে আনছে।

ভূমিকম্পের সময় কিংবা আগে কখনো কখনো দেখা যায় রহস্যময় এক আলো। ২০১৭ সালে মেক্সিকো কিংবা ২০২১ সালে চিলিতে হওয়া ভূমিকম্পের সময়ও এ ধরনের আলোর খেলা দেখা গেছে। শত শত বছর ধরে গবেষকদের বিস্মিত করে রেখেছে বিষয়টি
০৭ মে ২০২৩
উত্তর ইতালির একটি ন্যাশনাল পার্কে ২১ কোটি বছর আগের ডাইনোসরের পায়ের ছাপ পাওয়া গেছে। তাও আবার একটি-দুটি নয়, হাজার হাজার। এই পায়ের ছাপগুলোর কয়েকটির ব্যাস ১৫ ইঞ্চি পর্যন্ত। আর এগুলো সমান্তরাল সারিতে সাজানো। এসবের মধ্যে অনেকগুলোতে আঙুল ও নখের ছাপ স্পষ্ট বোঝা গেছে
১ দিন আগে
ব্রিটিশ কলম্বিয়ার উপকূলে একদিন। স্যামন মাছের ঝাঁক পড়িমড়ি করে ছুটতে দেখা গেল। তাদের পিছেই চোখে পড়ল কিলার হোয়েল নামে পরিচিত অরকা ও হোয়াইট–সাইডেড ডলফিনের দলকে। তাও আবার একসঙ্গে! এই দুই শিকারী প্রাণীকে জোটবেঁধে স্যামন শিকারে ছুটতে দেখে যারপরনাই বিস্মিত বিজ্ঞানীরা।
৪ দিন আগে
ফ্রান্সের ব্রিতানি উপকূলের কাছে সমুদ্রের গভীরে এক বিশাল পাথরের প্রাচীরের সন্ধান মিলেছে। এই প্রাচীন প্রায় ৭ হাজার বছর আগে—অর্থাৎ ৫ হাজার খ্রিষ্টপূর্বাব্দে নির্মিত বলে ধারণা করা হচ্ছে। ফরাসি সামুদ্রিক প্রত্নতাত্ত্বিকেরা ধারণা করছেন, সমুদ্রের জলস্তর বৃদ্ধির কারণে যে প্রস্তর যুগের সমাজ এই এলাকা...
৬ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

উত্তর ইতালির একটি ন্যাশনাল পার্কে ২১ কোটি বছর আগের ডাইনোসরের পায়ের ছাপ পাওয়া গেছে। তাও আবার একটি-দুটি নয়, হাজার হাজার। এই পায়ের ছাপগুলোর কয়েকটির ব্যাস ১৫ ইঞ্চি পর্যন্ত। আর এগুলো সমান্তরাল সারিতে সাজানো। এসবের মধ্যে অনেকগুলোতে আঙুল ও নখের ছাপ স্পষ্ট বোঝা গেছে বলে বিবিসির প্রতিবেদনে জানা গেছে।
ধারণা করা হচ্ছে, এই ডাইনোসরগুলো ছিল ‘প্রোসাওরোপড’ (prosauropod) প্রজাতির। এ প্রজাতির ডাইনোসরের গলা লম্বা ও মাথা ছোট এবং ধারালো নখবিশিষ্ট তৃণভোজী প্রাণী ছিল।
মিলানভিত্তিক জীবাশ্মবিদ ক্রিস্টিয়ানো ডাল সাসো বলেন, ‘কখনো কল্পনাও করিনি, আমি যে অঞ্চলে বাস করি, সেখানেই এমন এক যুগান্তকারী আবিষ্কারের দেখা পাব।’
গত সেপ্টেম্বরে মিলানের উত্তর-পূর্বে অবস্থিত স্টেলভিও ন্যাশনাল পার্কের একটি খাঁড়া পাহাড়ের গায়ে কয়েক শ মিটার পর্যন্ত বিস্তৃত এই পায়ের ছাপগুলো একজন আলোকচিত্রীর চোখে ধরা পড়ে।
বিবিসির প্রতিবেদনে জানা যায়, ২০ থেকে ২৫ কোটি বছর আগে ট্রায়াসিক যুগে এই পাহাড়ের অংশটি ছিল একটি সমুদ্র তীরবর্তী সমতল ভূমি, যা পরে আল্পাইন পর্বতমালায় রূপান্তরিত হয়।
ডাল সাসো আরও বলেন, এই জায়গা ডাইনোসরে পরিপূর্ণ ছিল; এটি একটি বিশাল বৈজ্ঞানিক সম্পদ।
ডাল সাসো আরও যোগ করেন, ডাইনোসরের দলগুলো সুশৃঙ্খলভাবে চলাচল করত এবং সেখানে আরও কিছু চিহ্ন পাওয়া গেছে, যেগুলো থেকে মনে হয়, পশুরা আত্মরক্ষার উদ্দেশ্যে দলবদ্ধ হয়ে বৃত্তাকারে অবস্থান নিত।
আবিষ্কারকেরা বলছেন, প্রোসাওরোপডগুলো ১০ মিটার বা ৩৩ ফুট পর্যন্ত লম্বা হতে পারত। তারা সাধারণত দুই পায়ে হাঁটত, তবে কিছু ক্ষেত্রে পায়ের ছাপের সামনে হাতের ছাপও পাওয়া গেছে। এটি ইঙ্গিত দেয় যে, তারা সম্ভবত মাঝেমধ্যে থেমে বিশ্রাম নেওয়ার সময় তাদের সামনের পা মাটিতে রাখত।
আলোকচিত্রী এলিয়ো ডেলা ফেরেরা এই স্থান আবিষ্কার করেছিলেন। তিনি বলেন, ‘এই আবিষ্কার আমাদের সবার মধ্যে ভাবনার খোরাক জোগাবে এবং আমরা যেখানে বাস করি, আমাদের ঘর, আমাদের পৃথিবী, এই জায়গাগুলো সম্পর্কে আমরা কতটা কম জানি, তা বোঝায়।’
ইতালির সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, এলাকাটি অত্যন্ত দুর্গম এবং যাতায়াতের কোনো পথ নেই। তাই গবেষণার কাজে ড্রোনের পাশাপাশি রিমোট সেন্সিং প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে।
উল্লেখ্য, আগামী বছর ইতালিতে শীতকালীন অলিম্পিক অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। আর ডাইনোসরের পায়ের ছাপ পাওয়া স্টেলভিও ন্যাশনাল পার্কটি সুইজারল্যান্ডের সঙ্গে ইতালির সীমান্তবর্তী ফ্রায়েল উপত্যকায় অবস্থিত। মন্ত্রণালয় জানায়, এটি যেন অনেকটা এমন যে, স্বয়ং ইতিহাসই বিশ্বের সর্ববৃহৎ এই ক্রীড়া ইভেন্টকে শ্রদ্ধা জানাতে চেয়েছে; প্রকৃতি ও ক্রীড়ার মধ্যে এক প্রতীকী সেতুবন্ধনের মাধ্যমে অতীত ও বর্তমানকে এক সুতায় গেঁথেছে।

উত্তর ইতালির একটি ন্যাশনাল পার্কে ২১ কোটি বছর আগের ডাইনোসরের পায়ের ছাপ পাওয়া গেছে। তাও আবার একটি-দুটি নয়, হাজার হাজার। এই পায়ের ছাপগুলোর কয়েকটির ব্যাস ১৫ ইঞ্চি পর্যন্ত। আর এগুলো সমান্তরাল সারিতে সাজানো। এসবের মধ্যে অনেকগুলোতে আঙুল ও নখের ছাপ স্পষ্ট বোঝা গেছে বলে বিবিসির প্রতিবেদনে জানা গেছে।
ধারণা করা হচ্ছে, এই ডাইনোসরগুলো ছিল ‘প্রোসাওরোপড’ (prosauropod) প্রজাতির। এ প্রজাতির ডাইনোসরের গলা লম্বা ও মাথা ছোট এবং ধারালো নখবিশিষ্ট তৃণভোজী প্রাণী ছিল।
মিলানভিত্তিক জীবাশ্মবিদ ক্রিস্টিয়ানো ডাল সাসো বলেন, ‘কখনো কল্পনাও করিনি, আমি যে অঞ্চলে বাস করি, সেখানেই এমন এক যুগান্তকারী আবিষ্কারের দেখা পাব।’
গত সেপ্টেম্বরে মিলানের উত্তর-পূর্বে অবস্থিত স্টেলভিও ন্যাশনাল পার্কের একটি খাঁড়া পাহাড়ের গায়ে কয়েক শ মিটার পর্যন্ত বিস্তৃত এই পায়ের ছাপগুলো একজন আলোকচিত্রীর চোখে ধরা পড়ে।
বিবিসির প্রতিবেদনে জানা যায়, ২০ থেকে ২৫ কোটি বছর আগে ট্রায়াসিক যুগে এই পাহাড়ের অংশটি ছিল একটি সমুদ্র তীরবর্তী সমতল ভূমি, যা পরে আল্পাইন পর্বতমালায় রূপান্তরিত হয়।
ডাল সাসো আরও বলেন, এই জায়গা ডাইনোসরে পরিপূর্ণ ছিল; এটি একটি বিশাল বৈজ্ঞানিক সম্পদ।
ডাল সাসো আরও যোগ করেন, ডাইনোসরের দলগুলো সুশৃঙ্খলভাবে চলাচল করত এবং সেখানে আরও কিছু চিহ্ন পাওয়া গেছে, যেগুলো থেকে মনে হয়, পশুরা আত্মরক্ষার উদ্দেশ্যে দলবদ্ধ হয়ে বৃত্তাকারে অবস্থান নিত।
আবিষ্কারকেরা বলছেন, প্রোসাওরোপডগুলো ১০ মিটার বা ৩৩ ফুট পর্যন্ত লম্বা হতে পারত। তারা সাধারণত দুই পায়ে হাঁটত, তবে কিছু ক্ষেত্রে পায়ের ছাপের সামনে হাতের ছাপও পাওয়া গেছে। এটি ইঙ্গিত দেয় যে, তারা সম্ভবত মাঝেমধ্যে থেমে বিশ্রাম নেওয়ার সময় তাদের সামনের পা মাটিতে রাখত।
আলোকচিত্রী এলিয়ো ডেলা ফেরেরা এই স্থান আবিষ্কার করেছিলেন। তিনি বলেন, ‘এই আবিষ্কার আমাদের সবার মধ্যে ভাবনার খোরাক জোগাবে এবং আমরা যেখানে বাস করি, আমাদের ঘর, আমাদের পৃথিবী, এই জায়গাগুলো সম্পর্কে আমরা কতটা কম জানি, তা বোঝায়।’
ইতালির সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, এলাকাটি অত্যন্ত দুর্গম এবং যাতায়াতের কোনো পথ নেই। তাই গবেষণার কাজে ড্রোনের পাশাপাশি রিমোট সেন্সিং প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে।
উল্লেখ্য, আগামী বছর ইতালিতে শীতকালীন অলিম্পিক অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। আর ডাইনোসরের পায়ের ছাপ পাওয়া স্টেলভিও ন্যাশনাল পার্কটি সুইজারল্যান্ডের সঙ্গে ইতালির সীমান্তবর্তী ফ্রায়েল উপত্যকায় অবস্থিত। মন্ত্রণালয় জানায়, এটি যেন অনেকটা এমন যে, স্বয়ং ইতিহাসই বিশ্বের সর্ববৃহৎ এই ক্রীড়া ইভেন্টকে শ্রদ্ধা জানাতে চেয়েছে; প্রকৃতি ও ক্রীড়ার মধ্যে এক প্রতীকী সেতুবন্ধনের মাধ্যমে অতীত ও বর্তমানকে এক সুতায় গেঁথেছে।

ভূমিকম্পের সময় কিংবা আগে কখনো কখনো দেখা যায় রহস্যময় এক আলো। ২০১৭ সালে মেক্সিকো কিংবা ২০২১ সালে চিলিতে হওয়া ভূমিকম্পের সময়ও এ ধরনের আলোর খেলা দেখা গেছে। শত শত বছর ধরে গবেষকদের বিস্মিত করে রেখেছে বিষয়টি
০৭ মে ২০২৩
কোনো বড় ধরনের সৌরঝড় বা প্রযুক্তিগত বিপর্যয়ের কারণে যদি পৃথিবীর কক্ষপথে থাকা স্যাটেলাইটগুলো হঠাৎ নিজেদের গতিপথ পরিবর্তনের সক্ষমতা হারায়, তবে মাত্র কয়েক দিনের মধ্যেই ভয়াবহ সংঘর্ষ শুরু হতে পারে বলে সতর্ক করেছেন বিজ্ঞানীরা।
২১ ঘণ্টা আগে
ব্রিটিশ কলম্বিয়ার উপকূলে একদিন। স্যামন মাছের ঝাঁক পড়িমড়ি করে ছুটতে দেখা গেল। তাদের পিছেই চোখে পড়ল কিলার হোয়েল নামে পরিচিত অরকা ও হোয়াইট–সাইডেড ডলফিনের দলকে। তাও আবার একসঙ্গে! এই দুই শিকারী প্রাণীকে জোটবেঁধে স্যামন শিকারে ছুটতে দেখে যারপরনাই বিস্মিত বিজ্ঞানীরা।
৪ দিন আগে
ফ্রান্সের ব্রিতানি উপকূলের কাছে সমুদ্রের গভীরে এক বিশাল পাথরের প্রাচীরের সন্ধান মিলেছে। এই প্রাচীন প্রায় ৭ হাজার বছর আগে—অর্থাৎ ৫ হাজার খ্রিষ্টপূর্বাব্দে নির্মিত বলে ধারণা করা হচ্ছে। ফরাসি সামুদ্রিক প্রত্নতাত্ত্বিকেরা ধারণা করছেন, সমুদ্রের জলস্তর বৃদ্ধির কারণে যে প্রস্তর যুগের সমাজ এই এলাকা...
৬ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

ব্রিটিশ কলম্বিয়ার উপকূলে একদিন। স্যামন মাছের ঝাঁক পড়িমড়ি করে ছুটতে দেখা গেল। তাদের পিছেই চোখে পড়ল কিলার হোয়েল নামে পরিচিত অরকা ও হোয়াইট–সাইডেড ডলফিনের দলকে। তাও আবার একসঙ্গে! এই দুই শিকারী প্রাণীকে জোটবেঁধে স্যামন শিকারে ছুটতে দেখে যারপরনাই বিস্মিত বিজ্ঞানীরা। শিকার একই হওয়ায় দুই শিকারী জোট বেঁধেছে বলে মনে করছেন তাঁরা।
এ নিয়ে একটি গবেষণাও প্রকাশিত হয়েছে। সায়েন্টিফিক রিপোর্টস সাময়িকীতে প্রকাশিত ওই গবেষণায় বলা হয়েছে, এই দুই শিকারি প্রাণীর মধ্যে হয়তো একটি সহযোগিতামূলক সম্পর্ক গড়ে উঠেছে।
গবেষকেরা বলছেন, ‘কানাডার ব্রিটিশ কলম্বিয়া উপকূলে প্যাসিফিক হোয়াইট–সাইডেড ডলফিন ও নর্দার্ন রেসিডেন্ট কিলার হোয়েলের মধ্যে এ ধরনের একটি রহস্যজনক সম্পর্ক দেখা যায়, যেখানে এই দুই সিটাসিয়ান প্রজাতিকে প্রায়ই একে অপরের কয়েক মিটারের মধ্যেই দেখা যায়।’
ব্রিটিশ কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়, লাইবনিজ ইনস্টিটিউট ও হাকাই ইনস্টিটিউটের সঙ্গে কাজ করা বিজ্ঞানীরা ড্রোন ভিডিও ও শব্দগত রেকর্ডিং সংগ্রহ করে তার ভিত্তিতে জানান, এই প্রথম অরকা ও ডলফিনের এভাবে খাদ্য চাহিদা পূরণে যৌথভাবে কাজ করতে দেখা গেল।
গবেষণার প্রধান লেখক সারা ফরচুন দ্য গার্ডিয়ানকে বলেন, ‘স্যামন শিকারের পারদর্শিতায় শীর্ষস্থানে রয়েছে এই তিমিগুলো। তারা অত্যন্ত দক্ষ ও বিশেষায়িত শিকারি। মনে হচ্ছিল ডলফিনগুলো তাদের নেতৃত্ব দিচ্ছে। অরকাদের এভাবে ডলফিনের অনুসরণ করতে দেখা ছিল একেবারেই অপ্রত্যাশিত আর ভীষণ রোমাঞ্চকর।’
দুই শিকারির মধ্যে সদ্য গড়ে ওঠা এই সম্পর্কের কারণ নিয়ে বিজ্ঞানীরা এখনো নিশ্চিত নন। একটি সম্ভাবনা হলো ক্লেপ্টোপ্যারাসিটিজম, যেখানে ডলফিনেরা অরকার শিকার ছিনিয়ে নিতে পারে।
আরেকটি ব্যাখ্যা হতে পারে, ডলফিনেরা স্তন্যপায়ীভোজী ট্রানসিয়েন্ট কিলার হোয়েল এবং কিছুটা কম মাত্রায় বড় হাঙরের হাত থেকে সুরক্ষা পেতে এই সম্পর্ক গড়ে তুলছে।
তবে সারা ফরচুনের মতে, যদি ডলফিনেরা পরজীবীর মতো আচরণ করত, তাহলে সদ্য ধরা শিকার নিয়ে সাধারণত অত্যন্ত রক্ষণশীল কিলার হোয়েলেরা এতটা শান্ত থাকত না, যেমনটি পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে। এতে গবেষকদের সামনে সবচেয়ে জোরালো ব্যাখ্যাটি উঠে এসেছে, এই দুই শিকারি আসলে পরস্পরকে সহযোগিতা করছে।
সারা ফরচুন আরও বলেন, ‘অরকাগুলো নিজেদের অবস্থান এমনভাবে নিচ্ছিল, যেন তারা ডলফিনদের অনুসরণ করছে। ফলে ডলফিনদেরই নেতৃত্বের ভূমিকায় দেখা যাচ্ছিল। বিষয়টি আমাদের আরও গভীরভাবে তথ্য বিশ্লেষণ করতে এবং আসলে কী ঘটছে তা বোঝার চেষ্টা করতে আগ্রহী করে তোলে।’
এই সহযোগিতা নিয়ে রহস্য আরও ঘনীভূত হচ্ছে, কারণ নর্দার্ন রেসিডেন্ট অরকারা মূলত স্যামন শিকারে বিশেষজ্ঞ আর হোয়াইট–সাইডেড ডলফিন সাধারণত হেরিং ও অ্যাঙ্কোভির মতো ছোট মাছ খেয়ে থাকে।

ব্রিটিশ কলম্বিয়ার উপকূলে একদিন। স্যামন মাছের ঝাঁক পড়িমড়ি করে ছুটতে দেখা গেল। তাদের পিছেই চোখে পড়ল কিলার হোয়েল নামে পরিচিত অরকা ও হোয়াইট–সাইডেড ডলফিনের দলকে। তাও আবার একসঙ্গে! এই দুই শিকারী প্রাণীকে জোটবেঁধে স্যামন শিকারে ছুটতে দেখে যারপরনাই বিস্মিত বিজ্ঞানীরা। শিকার একই হওয়ায় দুই শিকারী জোট বেঁধেছে বলে মনে করছেন তাঁরা।
এ নিয়ে একটি গবেষণাও প্রকাশিত হয়েছে। সায়েন্টিফিক রিপোর্টস সাময়িকীতে প্রকাশিত ওই গবেষণায় বলা হয়েছে, এই দুই শিকারি প্রাণীর মধ্যে হয়তো একটি সহযোগিতামূলক সম্পর্ক গড়ে উঠেছে।
গবেষকেরা বলছেন, ‘কানাডার ব্রিটিশ কলম্বিয়া উপকূলে প্যাসিফিক হোয়াইট–সাইডেড ডলফিন ও নর্দার্ন রেসিডেন্ট কিলার হোয়েলের মধ্যে এ ধরনের একটি রহস্যজনক সম্পর্ক দেখা যায়, যেখানে এই দুই সিটাসিয়ান প্রজাতিকে প্রায়ই একে অপরের কয়েক মিটারের মধ্যেই দেখা যায়।’
ব্রিটিশ কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়, লাইবনিজ ইনস্টিটিউট ও হাকাই ইনস্টিটিউটের সঙ্গে কাজ করা বিজ্ঞানীরা ড্রোন ভিডিও ও শব্দগত রেকর্ডিং সংগ্রহ করে তার ভিত্তিতে জানান, এই প্রথম অরকা ও ডলফিনের এভাবে খাদ্য চাহিদা পূরণে যৌথভাবে কাজ করতে দেখা গেল।
গবেষণার প্রধান লেখক সারা ফরচুন দ্য গার্ডিয়ানকে বলেন, ‘স্যামন শিকারের পারদর্শিতায় শীর্ষস্থানে রয়েছে এই তিমিগুলো। তারা অত্যন্ত দক্ষ ও বিশেষায়িত শিকারি। মনে হচ্ছিল ডলফিনগুলো তাদের নেতৃত্ব দিচ্ছে। অরকাদের এভাবে ডলফিনের অনুসরণ করতে দেখা ছিল একেবারেই অপ্রত্যাশিত আর ভীষণ রোমাঞ্চকর।’
দুই শিকারির মধ্যে সদ্য গড়ে ওঠা এই সম্পর্কের কারণ নিয়ে বিজ্ঞানীরা এখনো নিশ্চিত নন। একটি সম্ভাবনা হলো ক্লেপ্টোপ্যারাসিটিজম, যেখানে ডলফিনেরা অরকার শিকার ছিনিয়ে নিতে পারে।
আরেকটি ব্যাখ্যা হতে পারে, ডলফিনেরা স্তন্যপায়ীভোজী ট্রানসিয়েন্ট কিলার হোয়েল এবং কিছুটা কম মাত্রায় বড় হাঙরের হাত থেকে সুরক্ষা পেতে এই সম্পর্ক গড়ে তুলছে।
তবে সারা ফরচুনের মতে, যদি ডলফিনেরা পরজীবীর মতো আচরণ করত, তাহলে সদ্য ধরা শিকার নিয়ে সাধারণত অত্যন্ত রক্ষণশীল কিলার হোয়েলেরা এতটা শান্ত থাকত না, যেমনটি পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে। এতে গবেষকদের সামনে সবচেয়ে জোরালো ব্যাখ্যাটি উঠে এসেছে, এই দুই শিকারি আসলে পরস্পরকে সহযোগিতা করছে।
সারা ফরচুন আরও বলেন, ‘অরকাগুলো নিজেদের অবস্থান এমনভাবে নিচ্ছিল, যেন তারা ডলফিনদের অনুসরণ করছে। ফলে ডলফিনদেরই নেতৃত্বের ভূমিকায় দেখা যাচ্ছিল। বিষয়টি আমাদের আরও গভীরভাবে তথ্য বিশ্লেষণ করতে এবং আসলে কী ঘটছে তা বোঝার চেষ্টা করতে আগ্রহী করে তোলে।’
এই সহযোগিতা নিয়ে রহস্য আরও ঘনীভূত হচ্ছে, কারণ নর্দার্ন রেসিডেন্ট অরকারা মূলত স্যামন শিকারে বিশেষজ্ঞ আর হোয়াইট–সাইডেড ডলফিন সাধারণত হেরিং ও অ্যাঙ্কোভির মতো ছোট মাছ খেয়ে থাকে।

ভূমিকম্পের সময় কিংবা আগে কখনো কখনো দেখা যায় রহস্যময় এক আলো। ২০১৭ সালে মেক্সিকো কিংবা ২০২১ সালে চিলিতে হওয়া ভূমিকম্পের সময়ও এ ধরনের আলোর খেলা দেখা গেছে। শত শত বছর ধরে গবেষকদের বিস্মিত করে রেখেছে বিষয়টি
০৭ মে ২০২৩
কোনো বড় ধরনের সৌরঝড় বা প্রযুক্তিগত বিপর্যয়ের কারণে যদি পৃথিবীর কক্ষপথে থাকা স্যাটেলাইটগুলো হঠাৎ নিজেদের গতিপথ পরিবর্তনের সক্ষমতা হারায়, তবে মাত্র কয়েক দিনের মধ্যেই ভয়াবহ সংঘর্ষ শুরু হতে পারে বলে সতর্ক করেছেন বিজ্ঞানীরা।
২১ ঘণ্টা আগে
উত্তর ইতালির একটি ন্যাশনাল পার্কে ২১ কোটি বছর আগের ডাইনোসরের পায়ের ছাপ পাওয়া গেছে। তাও আবার একটি-দুটি নয়, হাজার হাজার। এই পায়ের ছাপগুলোর কয়েকটির ব্যাস ১৫ ইঞ্চি পর্যন্ত। আর এগুলো সমান্তরাল সারিতে সাজানো। এসবের মধ্যে অনেকগুলোতে আঙুল ও নখের ছাপ স্পষ্ট বোঝা গেছে
১ দিন আগে
ফ্রান্সের ব্রিতানি উপকূলের কাছে সমুদ্রের গভীরে এক বিশাল পাথরের প্রাচীরের সন্ধান মিলেছে। এই প্রাচীন প্রায় ৭ হাজার বছর আগে—অর্থাৎ ৫ হাজার খ্রিষ্টপূর্বাব্দে নির্মিত বলে ধারণা করা হচ্ছে। ফরাসি সামুদ্রিক প্রত্নতাত্ত্বিকেরা ধারণা করছেন, সমুদ্রের জলস্তর বৃদ্ধির কারণে যে প্রস্তর যুগের সমাজ এই এলাকা...
৬ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

ফ্রান্সের ব্রিতানি উপকূলের কাছে সমুদ্রের গভীরে এক বিশাল পাথরের প্রাচীরের সন্ধান মিলেছে। এই প্রাচীন প্রায় ৭ হাজার বছর আগে—অর্থাৎ ৫ হাজার খ্রিষ্টপূর্বাব্দে নির্মিত বলে ধারণা করা হচ্ছে। ফরাসি সামুদ্রিক প্রত্নতাত্ত্বিকেরা ধারণা করছেন, সমুদ্রের জলস্তর বৃদ্ধির কারণে যে প্রস্তর যুগের সমাজ এই এলাকা থেকে অদৃশ্য হয়ে গিয়েছিল, এই আবিষ্কার হয়তো সেই সমাজেরই প্রতিনিধিত্ব করছে। সেখানে তলিয়ে যাওয়া শহরের প্রচলিত কিংবদন্তির নিদর্শনও হতে পারে এই প্রাচীর।
১২০ মিটার দীর্ঘ এই প্রাচীর ফ্রান্সের জলসীমায় পাওয়া সমুদ্রতলের সবচেয়ে বড় অবকাঠামো। প্রত্নতাত্ত্বিকদের অনুমান, এটি হয়তো মাছ ধরার জন্য এক ধরনের ফাঁদ হিসেবে ব্যবহৃত হতো, অথবা সমুদ্রের ক্রমবর্ধমান জলস্তর থেকে সুরক্ষা দেওয়ার জন্য বাঁধ হিসেবে নির্মিত হয়েছিল।
প্রাচীরটি ব্রিতানির পশ্চিম প্রান্তে অবস্থিত ইলে দে সঁ-এর উপকূলে আবিষ্কৃত হয়েছে। সমুদ্র সৈকতে জোয়ারের চিহ্ন এখনো বহন করছে এই প্রাচীর। বর্তমানে প্রাচীরটি প্রায় নয় মিটার গভীরে ডুবে আছে। দ্বীপটি আগের আকারের তুলনায় অনেকটাই ছোট হয়ে গেছে, সমুদ্রের পানিস্তর বৃদ্ধির এটি বড় প্রমাণ।
প্রাচীরটির গড় প্রস্থ প্রায় ২০ মিটার এবং উচ্চতা দুই মিটার। নিয়মিত ব্যবধানে ডুবুরিরা এর মধ্যে বড় গ্রানাইট পাথর বা মনোলিথ-এর অস্তিত্ব খুঁজে পেয়েছেন। এগুলো দুটি সমান্তরাল রেখায় প্রাচীরের ওপরে উঁচু হয়ে আছে। মনে করা হচ্ছে, এই মনোলিথগুলোই প্রাচীরের মূল ভিত্তি হিসেবে শিলাস্তরের ওপর স্থাপন করা হয়েছিল এবং পরবর্তীতে স্ল্যাব ও ছোট পাথর দিয়ে তাদের ঘিরে প্রাচীর নির্মাণ করা হয়। যদি মাছ ধরার ফাঁদ হিসেবে ব্যবহারের অনুমানটি সঠিক হয়, তাহলে বলা যায়, মনোলিথগুলোতে জোয়ারের পানি নেমে যাওয়ার সময় মাছ ধরার জাল বেঁধে রাখা হতো।
প্রাচীরটির মোট ভর প্রায় ৩ হাজার ৩০০ টন। প্রত্নতাত্ত্বিক ইভান পাইয়ার বলেন, এই বিশাল নির্মাণ একটি সুসংগঠিত সমাজের কাজ হতে পারে। মূলত শিকারি-সংগ্রাহক (হান্টার গ্যাদারার) জনগোষ্ঠী এটি নির্মাণ করেছে, যারা সম্পদের প্রাচুর্য থাকায় স্থিতিশীল জীবনযাপন শুরু করেছিল। অথবা, এটি ছিল ৫ হাজার খ্রিষ্টপূর্বাব্দে এই অঞ্চলে আসা নব্যপ্রস্তর যুগের জনগোষ্ঠীর নির্মাণ।
পাইয়ারের মতে, মনোলিথগুলো নব্যপ্রস্তর যুগের বিখ্যাত মেনহিরগুলোর চেয়েও প্রাচীন। ফলে এটি পাথর উত্তোলন, কাটা এবং পরিবহনের জ্ঞান তৎকালীন শিকারি-সংগ্রাহক সমাজ থেকে পরবর্তী নব্যপ্রস্তর যুগের কৃষকদের কাছে স্থানান্তরিত হওয়ার ইঙ্গিত দেয়।
ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অব নটিক্যাল আর্কিওলজিতে প্রকাশিত গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, এই আবিষ্কার স্থানীয় ব্রেটোন কিংবদন্তিগুলোর উৎস হতে পারে। যেমন, ব্রিতানির উপকূলে অবস্থিত বে অব দোয়ারনেনেজ-এর আশপাশে ডুবে যাওয়া শহর ইশ (Ys)-এর কিংবদন্তি। গবেষকদের মতে, একটি অত্যন্ত সুসংগঠিত সমাজ দ্বারা গঠিত অঞ্চলের বিলুপ্তি মানুষের স্মৃতিতে গভীরভাবে প্রোথিত হয়েছে। সমুদ্রের জলস্তর দ্রুত বৃদ্ধির ফলে মাছ ধরার কাঠামো, প্রতিরক্ষামূলক কাজ এবং বাস্তুচ্যুতির ঘটনাগুলো সম্ভবত স্থানীয় মানুষের মনে দীর্ঘস্থায়ী ছাপ ফেলেছিল।

ফ্রান্সের ব্রিতানি উপকূলের কাছে সমুদ্রের গভীরে এক বিশাল পাথরের প্রাচীরের সন্ধান মিলেছে। এই প্রাচীন প্রায় ৭ হাজার বছর আগে—অর্থাৎ ৫ হাজার খ্রিষ্টপূর্বাব্দে নির্মিত বলে ধারণা করা হচ্ছে। ফরাসি সামুদ্রিক প্রত্নতাত্ত্বিকেরা ধারণা করছেন, সমুদ্রের জলস্তর বৃদ্ধির কারণে যে প্রস্তর যুগের সমাজ এই এলাকা থেকে অদৃশ্য হয়ে গিয়েছিল, এই আবিষ্কার হয়তো সেই সমাজেরই প্রতিনিধিত্ব করছে। সেখানে তলিয়ে যাওয়া শহরের প্রচলিত কিংবদন্তির নিদর্শনও হতে পারে এই প্রাচীর।
১২০ মিটার দীর্ঘ এই প্রাচীর ফ্রান্সের জলসীমায় পাওয়া সমুদ্রতলের সবচেয়ে বড় অবকাঠামো। প্রত্নতাত্ত্বিকদের অনুমান, এটি হয়তো মাছ ধরার জন্য এক ধরনের ফাঁদ হিসেবে ব্যবহৃত হতো, অথবা সমুদ্রের ক্রমবর্ধমান জলস্তর থেকে সুরক্ষা দেওয়ার জন্য বাঁধ হিসেবে নির্মিত হয়েছিল।
প্রাচীরটি ব্রিতানির পশ্চিম প্রান্তে অবস্থিত ইলে দে সঁ-এর উপকূলে আবিষ্কৃত হয়েছে। সমুদ্র সৈকতে জোয়ারের চিহ্ন এখনো বহন করছে এই প্রাচীর। বর্তমানে প্রাচীরটি প্রায় নয় মিটার গভীরে ডুবে আছে। দ্বীপটি আগের আকারের তুলনায় অনেকটাই ছোট হয়ে গেছে, সমুদ্রের পানিস্তর বৃদ্ধির এটি বড় প্রমাণ।
প্রাচীরটির গড় প্রস্থ প্রায় ২০ মিটার এবং উচ্চতা দুই মিটার। নিয়মিত ব্যবধানে ডুবুরিরা এর মধ্যে বড় গ্রানাইট পাথর বা মনোলিথ-এর অস্তিত্ব খুঁজে পেয়েছেন। এগুলো দুটি সমান্তরাল রেখায় প্রাচীরের ওপরে উঁচু হয়ে আছে। মনে করা হচ্ছে, এই মনোলিথগুলোই প্রাচীরের মূল ভিত্তি হিসেবে শিলাস্তরের ওপর স্থাপন করা হয়েছিল এবং পরবর্তীতে স্ল্যাব ও ছোট পাথর দিয়ে তাদের ঘিরে প্রাচীর নির্মাণ করা হয়। যদি মাছ ধরার ফাঁদ হিসেবে ব্যবহারের অনুমানটি সঠিক হয়, তাহলে বলা যায়, মনোলিথগুলোতে জোয়ারের পানি নেমে যাওয়ার সময় মাছ ধরার জাল বেঁধে রাখা হতো।
প্রাচীরটির মোট ভর প্রায় ৩ হাজার ৩০০ টন। প্রত্নতাত্ত্বিক ইভান পাইয়ার বলেন, এই বিশাল নির্মাণ একটি সুসংগঠিত সমাজের কাজ হতে পারে। মূলত শিকারি-সংগ্রাহক (হান্টার গ্যাদারার) জনগোষ্ঠী এটি নির্মাণ করেছে, যারা সম্পদের প্রাচুর্য থাকায় স্থিতিশীল জীবনযাপন শুরু করেছিল। অথবা, এটি ছিল ৫ হাজার খ্রিষ্টপূর্বাব্দে এই অঞ্চলে আসা নব্যপ্রস্তর যুগের জনগোষ্ঠীর নির্মাণ।
পাইয়ারের মতে, মনোলিথগুলো নব্যপ্রস্তর যুগের বিখ্যাত মেনহিরগুলোর চেয়েও প্রাচীন। ফলে এটি পাথর উত্তোলন, কাটা এবং পরিবহনের জ্ঞান তৎকালীন শিকারি-সংগ্রাহক সমাজ থেকে পরবর্তী নব্যপ্রস্তর যুগের কৃষকদের কাছে স্থানান্তরিত হওয়ার ইঙ্গিত দেয়।
ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অব নটিক্যাল আর্কিওলজিতে প্রকাশিত গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, এই আবিষ্কার স্থানীয় ব্রেটোন কিংবদন্তিগুলোর উৎস হতে পারে। যেমন, ব্রিতানির উপকূলে অবস্থিত বে অব দোয়ারনেনেজ-এর আশপাশে ডুবে যাওয়া শহর ইশ (Ys)-এর কিংবদন্তি। গবেষকদের মতে, একটি অত্যন্ত সুসংগঠিত সমাজ দ্বারা গঠিত অঞ্চলের বিলুপ্তি মানুষের স্মৃতিতে গভীরভাবে প্রোথিত হয়েছে। সমুদ্রের জলস্তর দ্রুত বৃদ্ধির ফলে মাছ ধরার কাঠামো, প্রতিরক্ষামূলক কাজ এবং বাস্তুচ্যুতির ঘটনাগুলো সম্ভবত স্থানীয় মানুষের মনে দীর্ঘস্থায়ী ছাপ ফেলেছিল।

ভূমিকম্পের সময় কিংবা আগে কখনো কখনো দেখা যায় রহস্যময় এক আলো। ২০১৭ সালে মেক্সিকো কিংবা ২০২১ সালে চিলিতে হওয়া ভূমিকম্পের সময়ও এ ধরনের আলোর খেলা দেখা গেছে। শত শত বছর ধরে গবেষকদের বিস্মিত করে রেখেছে বিষয়টি
০৭ মে ২০২৩
কোনো বড় ধরনের সৌরঝড় বা প্রযুক্তিগত বিপর্যয়ের কারণে যদি পৃথিবীর কক্ষপথে থাকা স্যাটেলাইটগুলো হঠাৎ নিজেদের গতিপথ পরিবর্তনের সক্ষমতা হারায়, তবে মাত্র কয়েক দিনের মধ্যেই ভয়াবহ সংঘর্ষ শুরু হতে পারে বলে সতর্ক করেছেন বিজ্ঞানীরা।
২১ ঘণ্টা আগে
উত্তর ইতালির একটি ন্যাশনাল পার্কে ২১ কোটি বছর আগের ডাইনোসরের পায়ের ছাপ পাওয়া গেছে। তাও আবার একটি-দুটি নয়, হাজার হাজার। এই পায়ের ছাপগুলোর কয়েকটির ব্যাস ১৫ ইঞ্চি পর্যন্ত। আর এগুলো সমান্তরাল সারিতে সাজানো। এসবের মধ্যে অনেকগুলোতে আঙুল ও নখের ছাপ স্পষ্ট বোঝা গেছে
১ দিন আগে
ব্রিটিশ কলম্বিয়ার উপকূলে একদিন। স্যামন মাছের ঝাঁক পড়িমড়ি করে ছুটতে দেখা গেল। তাদের পিছেই চোখে পড়ল কিলার হোয়েল নামে পরিচিত অরকা ও হোয়াইট–সাইডেড ডলফিনের দলকে। তাও আবার একসঙ্গে! এই দুই শিকারী প্রাণীকে জোটবেঁধে স্যামন শিকারে ছুটতে দেখে যারপরনাই বিস্মিত বিজ্ঞানীরা।
৪ দিন আগে