শনিবার, ১০ জুন ২০২৩

সেকশন

 

বিশেষজ্ঞ মত

মানুষ মারার লাইসেন্স দিচ্ছি চালককে

আপডেট : ২৫ মার্চ ২০২৩, ১০:২১

দাঁড়িয়ে থাকা ডাম্প ট্রাকের সঙ্গে ধাক্কা লাগে ক্রাউন সিমেন্টবাহী একটি ট্রাকের। এতে ঘটনাস্থলেই নিহত হন ক্রাউন সিমেন্টবাহী ট্রাকের চালক। গতকাল বাগেরহাটের টাউন-নওয়াপাড়া এলাকায়। ছবি: আজকের পত্রিকা মহাসড়কে যদি পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নিজেদের দায়িত্ব পালন করত, তাহলে চালকেরা এত বেপরোয়া হতো না। কারণ, আমি যদি প্রতিযোগিতার আয়োজন করি, কিন্তু রাস্তায় দ্রুতগতিতে সুশৃঙ্খলভাবে চলার জন্য আইন থাকে, বাস্তবায়নের জন্য নিবিড় নজরদারি থাকে; তাহলে এত আনফিট গাড়ি, আনফিট চালক কীভাবে থাকে?

দুর্ঘটনা ঘটনার পরে প্রথম আউটকামটা হয়—চালকের যোগ্যতা নেই, ভারী গাড়ি চালানোর লাইসেন্স নেই, গাড়ির ফিটনেস নেই; কিন্তু সেটা চলছে।

রমিজউদ্দিনের দুর্ঘটনা থেকে শুরু করে মিশুক মুনীর, আবার ৪৪টা শিশু মারা গেল। সব বড় দুর্ঘটনায় দেখা যায়, হেলপার চালাচ্ছেন, কিংবা যে চালক চালাচ্ছেন, তাঁর এবং গাড়ির যোগ্যতা নেই। এই স্যাম্পল থেকেই বোঝা যায়, দুর্ঘটনা ঘটলে যখন দেখছি নেই, তাহলে যেগুলো চলছে সেগুলোতেও নেই। চলছে তাহলে কীভাবে? নজরদারিটা নেই। আর এটা ম্যানেজেবল। চালকেরা জানে, ধরা পড়লে ম্যানেজ করে ফেলতে পারবেন। এটা আরেকটা বড় কারণ দুর্ঘটনার। আমি যদি বেপরোয়া হতে চাই, বছরের পর বছর চালাতে পারি। সুযোগটা নিয়ন্ত্রক কর্তারাই করে দিচ্ছে।

বিআরটিএ করে কী? চালককে যোগ্যতা যাচাই করে চালানোর ছাড়পত্র দেয়। সে যদি বিআরটিএর কম্পাউন্ডের ভেতরে জিগজ্যাগ করে, বাস্তব চ্যালেঞ্জে যেটার সম্মুখীন হবে, সেই রাস্তায় যেখানে চালাবে সেখানে কোনো পরীক্ষা না করে লাইসেন্স দিয়ে দেয়; তার মানে চালকের ভুলত্রুটির দায় বিআরটিএ এড়াতে পারে না। আইনে বলা আছে, রাস্তায় আধাঘণ্টা চালাতে হবে। কিন্তু সাইন এবং মার্কিং পড়তে পারে কি না, যাচাই না করে নিজের আঙিনায় চেক করে লাইসেন্স দিচ্ছে। এখানে বিরাট একটা ভুল হয়ে যাচ্ছে। আমরা চালককে যে লাইসেন্স দিচ্ছি, সেটা মানুষ মারার লাইসেন্স। কারণ, তাঁর আসল যোগ্যতা যাচাই করলাম না।

ফিটনেস যেটা দেয়, চোখে দেখে কম সময়ের মধ্যে দিয়ে দেয়। বিআরটিএ টাকাটা পায় এটাই শেষ। আনফিট গাড়িও পার হয়ে যাচ্ছে। ঢাকার মধ্যে দেখেন, চোখের সামনে চলছে, হেডলাইট নেই, আয়না নেই, বডি ভাঙাচোরা, ইঞ্জিন থেকে ধোঁয়া বেরোচ্ছে। লেগুনাগুলো ১০-১২ বছরের বাচ্চারা চালাচ্ছে। রাজধানীতেই এই অবস্থা, দেশের অবস্থা বুঝে নেওয়া সহজ।

আনফিট গাড়ি ও চালকেরা যখন-তখন রাস্তায় নামছে। যতই রাস্তায় বিনিয়োগ করি না কেন, জন্মটা হচ্ছে ঝুঁকিপূর্ণ। বিজ্ঞান বলে ৫ ঘণ্টার বেশি একটানা চালানো উচিত নয়। তাহলে একেকটা বাণিজ্যিক গাড়িতে দুজন করে চালক দরকার। বিআরটিএর কাছে নিবন্ধিত ভারী গাড়ির সংখ্যাও আছে, কত চালকের সংকট সেটাও আছে। ৫ ঘণ্টার জন্য যেখানে দুজন চালক থাকার কথা। একজন হিসাবেও সংকট। কিন্তু আমি ভারী গাড়ির রেজিস্ট্রেশন দিয়ে দিচ্ছি। তার মানে সে নিজেই বলে দিচ্ছে, যেহেতু চালক নেই, তাহলে আপনারা চালান। তাহলে সব জেনেও যখন ভারী গাড়ির রেজিস্ট্রেশন হচ্ছে এবং দুর্ঘটনা হচ্ছে, এটার দায় কিন্তু বিআরটিএ এড়াতে পারে না।

ড. মো. শামসুল হক, পরিচালক দুর্ঘটনা গবেষণা কেন্দ্র, বুয়েট

মন্তব্য

আপনার পরিচয় গোপন রাখতে
আমি নীতিমালা মেনে মন্তব্য করছি।
Show
 
    সব মন্তব্য

    ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে

    পঠিতসর্বশেষ

    এলাকার খবর

     
     
    ইসলাম

    সময়মতো নামাজ পড়ার গুরুত্ব

    ভোটের মাঠে

    কক্সবাজার-৩: ভোটের লড়াই আত্মীয়ে-আত্মীয়ে

    বিজেপির অখণ্ড ভারত গঠনের স্বপ্ন পূরণ হবে কি

    বরিশাল সিটি নির্বাচনে হাতপাখার বড় মিছিল বাইরের মানুষে!

    জ্বালানি-সংকট: সাময়িক সমস্যা দীর্ঘস্থায়ী ক্ষত

    কয়েক ছত্র

    অলস দুপুরে কৃষকের আড্ডায়

    শ্যামপুর থেকে মাদক মামলার সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি আটক

    সিটি নির্বাচন

    রাজশাহীতে কাউন্সিলর প্রার্থীর নির্বাচনী ক্যাম্পে আগুন দেওয়ার অভিযোগ

    খুলনা সিটি নির্বাচন: আ.লীগের বিরুদ্ধে মধুর অভিযোগ মুখে মুখে, বলছে প্রতিপক্ষরা 

    ইন্টারনেট ব্যবহারই ৮৬ শতাংশ তরুণ শিক্ষার্থীর মানসিক সমস্যার কারণ: সমীক্ষা

    ভাত দেওয়ার নাম নাই, কিল মারার গোঁসাই: পরিকল্পনামন্ত্রী

    রায়পুরে ছাত্রলীগের এক পক্ষের আনন্দ মিছিলে আরেক পক্ষের হামলার অভিযোগ