রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) ছাত্রলীগের কর্মসূচিতে না যাওয়ায় শাফায়েত নামের এক শিক্ষার্থীকে মারধরের ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করেছে হল প্রশাসন। আজ শনিবার হলের আবাসিক শিক্ষক শাহ মো. শাহান শাহরিয়ারকে আহ্বায়ক করে চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিকে আগামী সাত কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হক হল প্রাধ্যক্ষ মো. হাবিবুর রহমান বলেন, ‘ঘটনা তদন্ত করার জন্য হলের আবাসিক শিক্ষক শাহ মো. শাহান শাহরিয়ারকে আহ্বায়ক করে চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। কমিটিকে আগামী সাত কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।’
প্রাধ্যক্ষ আরও বলেন, ‘ঘটনার সময় আমি হলেই ছিলাম। কিন্তু কেউ আমাকে জানায়নি। হলের ঘটনা আমাকে আগে না জানিয়ে তারা ছাত্র উপদেষ্টা বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। পরে সন্ধ্যায় আমাকে লিখিত অভিযোগ জমা দেয়। আমার দায়িত্বের জায়গা থেকে প্রাথমিকভাবে আমি ওই ছাত্রের চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাই। সে এখন ভালো আছে।’
গতকাল শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হক হলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে কর্মসূচিতে যাওয়ার জন্য শাফায়েতকে ডাকতে যান ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। তবে সে কর্মসূচিতে যেতে রাজি না হওয়ায় বিষয়টি নিয়ে তাঁদের মধ্যে তর্ক হয়। ধাক্কাধাক্কিও হয়। পরে কর্মসূচি শেষ করে আল আমিন, রিয়ানসহ কয়েকজন এসে ওই শিক্ষার্থীকে মারধর করেন।
আহত অবস্থায় শাফায়েতকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। পরে হাতের সমস্যা বেশি হওয়ায় তাঁকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ৩১ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা ও হল প্রাধ্যক্ষ বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী।
ভুক্তভোগী শাফায়েত হোসেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকর্ম বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি শেরেবাংলা হলের ২২১ নম্বর কক্ষে থাকেন। যাঁদের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ উঠেছে, তাঁরা হলেন মতিহার হলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হাসান, ছাত্রলীগ কর্মী আল আমিন এবং তাঁদের অনুসারী কয়েকজন। আল আমিন ও নাজমুল হাসান দুজনেই ওই হলে থাকেন। তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদের অনুসারী।
ভুক্তভোগী শাফায়েতে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ব্যথা। হাত ফেটে গেছে। হাতে ফ্র্যাকচার হওয়ায় ব্যান্ডেজ করা হয়েছে। ছাত্র উপদেষ্টার সহায়তায় হাসপাতালের ৩১ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি হয়েছিলাম। পরে হল প্রাধ্যক্ষের তত্ত্বাবধানে রাতে হলে থেকেছি। আজ শনিবার সকালে আবার হাসপাতালে গেছি।’
শাফায়েত আরও বলেন, ‘আমি চাই সুষ্ঠু তদন্ত হোক। অবশ্যই দোষীদের শাস্তি দাবি করছি। নাজমুল হাসান এই হলের নন। অন্য হল থেকে এসে আবাসিক শিক্ষার্থীদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করবে—এটা মেনে নেওয়া যায় না।’
মন্তব্য
ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে