অসুস্থ ছিল কাকের বাচ্চাটি। তারেক বিন সুলতান কাকের বাচ্চাটাকে উদ্ধার করেন, সেবা করেন, তারপর সুস্থ হলে ছেড়ে দেন। ঘটনাটি বাগেরহাটের মোংলায়। সে প্রায় এক বছর আগের কথা। এরপরই ঘটেছিল অপ্রত্যাশিত ঘটনাটি! নিজের মতো ঘুরে বেড়ানো কাকের ওই বাচ্চা কিন্তু ফিরে আসে তারেকের বাড়িতে। বন্ধু করে নেয় তারেককে। তখন থেকেই তারেকের সঙ্গেই রয়েছে কাকটি।
তারেক বিন সুলতান বাগেরহাটের মোংলা পৌর শহরের জয়বাংলা সড়কের বাসিন্দা মো. সুলতানের ছেলে। সম্প্রতি কাকের সঙ্গে তাঁর বন্ধুত্বের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। সেই সূত্র ধরে আজকের পত্রিকার কথা হয় তারেকের সঙ্গে।
প্রচলিত আছে—কাক আলাদা আলাদা মানুষের মুখের আকৃতি মনে রাখতে পারে। কাক সাধারণত সারা জীবন একই সঙ্গীর সঙ্গে থাকে। তবে খুব সহজে পোষ না মানা কাকই এবার মানুষের বন্ধু হয়ে গেল।
তারেক বিন সুলতান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘প্রায় এক বছর আগে একটি কাকের বাচ্চাকে আমাদের গাছের নিচে দেখতে পাই। কাছে গিয়ে দেখি, বাচ্চা কাকটি খুবই আহত অবস্থায় পড়ে আছে। এরপর বাসায় নিয়ে এসে চিকিৎসা দিই। প্রায় ১৫ দিনের মধ্যে পাখিটি সুস্থ হয়ে ওঠে।’
তারেক আরও বলেন, ‘মানবিক দায়িত্ব থেকে আহত কাকটিকে চিকিৎসা দিই। তবে বন্ধুত্বের ব্যাপারে ভাবিনি। কাকটি প্রায় এক বছর ধরে আমার সঙ্গেই আছে। আমি তাকে সিদ্ধ ডিম, মাছ ও মাংস খেতে দিই। সারা দিন আকাশে ঘুরে বেড়িয়ে ও আবার আমার বাসায় চলে আসে।’
কাকের সঙ্গে তারেকের বন্ধুত্বের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওতে দেখা যায়, তারেক মুখে কোনো খাবার নিয়ে কাকটিকে খেতে দিলে, সে তাঁর মুখ থেকে সেই খাবার খাচ্ছে। এমনকি তারেক কোথাও গেলে কাক পাখিটি তাঁকে অনুসরণ করে।
তারেক বলেন, ‘আমি পাখিটাকে আটকে রাখতে চাই না। বরং উড়ে যাওয়ার জন্য পাখিটাকে পূর্ণ স্বাধীনতা দিয়েছি। আমি বিশ্বাস করি স্বাধীনতার মধ্যেই প্রকৃত বন্ধুত্ব খুঁজে পাওয়া যায়।’
এ বিষয়ে পূর্ব সুন্দরবনের করমজল পর্যটন ও বন্য প্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাওলাদার আজাদ কবির আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘যেকোনো বন্য প্রাণী সব সময় তার নিরাপত্তা এবং খাদ্য চায়। এটা যদি সঠিকভাবে করা হয়, তাহলে তারা মানুষের সঙ্গে বন্ধুত্ব করতে চায়।’
হাওলাদার আজাদ কবির আরও বলেন, ‘কাক একটি স্মার্ট পাখি। তারা বিপদে পড়লে অন্য কাকের সঙ্গে যোগাযোগ করে এবং মিলিত হয়ে প্রতিবাদ জানায়।’
মন্তব্য
ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে