নাটোরের গুরুদাসপুরে দুর্বৃত্তদের হামলায় শ্রমিক হেলাল সরদার নিহতের ঘটনায় মামলা হয়েছে। এই মামলায় গুরুদাসপুর পৌর মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শাহনেওয়াজ আলী মোল্লাকে প্রধান আসামি করে ১৯ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। মেয়রের দাবি, তিনি অপরাজনীতির শিকার।
আজ বুধবার সকালে নিহত হেলালের মা হেনা বেগম বাদী হয়ে এই মামলা করেন।
এদিকে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় এখন পর্যন্ত তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন তোহা জমাদার (১৮), মো. আকাশ (২০) ও মো. তুহিন (১৯)। বুধবার বিকেলে আদালতের মাধ্যমে তাঁদের নাটোর কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
অন্যদিকে ময়নাতদন্ত শেষে বুধবার বিকেল ৫টায় জানাজা শেষে হেলালের মরদেহ খামারনাচকৈড় কেন্দ্রীয় কবরস্থানে দাফন করা হয়। এ ছাড়া গুরুতর আহত হেলালের ভাই শিশির রাজশাহী মেডিকেলে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গতকাল মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে নাটোর জেলা ট্রাক-ট্যাংকলরী ও কাভার্ড ভ্যান পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়ন চাঁচকৈড় শাখা অফিসের সামনে ওই অফিসের শ্রমিক হেলাল সরদারকে প্রকাশ্যে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করা হয়। সঙ্গে থাকা তাঁর ছোট ভাই শিশিরকেও চাইনিজ কুড়াল দিয়ে কুপিয়ে রক্তাক্ত করে সন্ত্রাসীরা। পালানোর সময় তোহা জমাদার নামের একজনকে আটক করে পুলিশে দেন স্থানীয়রা।
হেলাল হত্যার প্রতিবাদে বুধবার বিকেলে যুবলীগ নেতা উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মো. আলাল শেখের নেতৃত্বে গুরুদাসপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে চাঁচকৈড় বাজার পর্যন্ত বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম বিপ্লব ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম সবুজ ফকির, মো. আলমগীর শেখ প্রমুখ।
বিকেলে জানাজা শেষে নিহত হেলালের মা হেনা বেগম বলেন, ‘আমার ছেলেকে মেয়রের লোকজন সবার সামনে কুপিয়ে মেরে ফেলেছে। আমার আরেক সন্তান মৃত্যুপথযাত্রী। আমি আমার সন্তানের হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।’
মামলা প্রসঙ্গে মেয়র শাহনেওয়াজ আলী মোল্লা বলেন, ‘আমি স্থানীয় সংসদ সদস্য আব্দুল কুদ্দুসের অপরাজনীতির শিকার। আমি আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নাটোর-৪ (গুরুদাসপুর-বড়াইগ্রাম) আসন থেকে দলীয় মনোনয়ন চাইব। আমাকে আটকাতেই এমপি কুদ্দুসের এই হত্যা মামলায় আমাকে জড়ালেন।’
মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে গুরুদাসপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুল মতিন বলেন, এখন পর্যন্ত তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা করা হচ্ছে।
মন্তব্য
ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে