Alexa
শনিবার, ২৫ মার্চ ২০২৩

সেকশন

epaper
 

ছোট ঘটনার বড় প্রতিক্রিয়া

আপডেট : ১৫ মার্চ ২০২৩, ১৪:১৫

ছোট ঘটনার বড় প্রতিক্রিয়া বাসের ভাড়া নিয়ে চালক ও সহকারীদের সঙ্গে বচসার ঘটনা প্রতিদিনই দেশের কোথাও না কোথাও ঘটছে। এ নিয়ে কিছু বিক্ষোভ ও ভাঙচুরের ঘটনাও ঘটতে দেখা যায়। কিন্তু বাসেরআসন নিয়ে চালক ও কর্মীর সঙ্গে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থীর বচসাকে কেন্দ্র করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় ৩০ ঘণ্টা ধরে আন্দোলনের নামে যে সহিংসতা হয়েছে, তা চরম বাড়াবাড়ি ছাড়া আর কিছু নয়। একটি বাসে একজন শিক্ষার্থীর সঙ্গে যদি অসৌজন্যমূলক আচরণ চালক ও তাঁর সহকারী করেও থাকেন, সে জন্য একটি এলাকাকে রণক্ষেত্রে পরিণত করার দুর্বুদ্ধি শিক্ষার্থীদের হয় কী করে? দোকানপাট ভাঙচুর, জ্বালাও-পোড়াও করা, রেলপথ-সড়কপথ বন্ধ করে দিয়ে অসংখ্য মানুষকে দুর্ভোগ-দুর্বিপাকে ফেলা কোনোভাবেই কাম্য নয়। ছাত্রদের এই বেপরোয়া আন্দোলনের সময় পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে লাঞ্ছিত হয়েছেন সাংবাদিকেরা। ভেঙে ফেলা হয়েছে ক্যামেরা। এমন ঘটনা নিন্দনীয় ও অনাকাঙ্ক্ষিত।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের এমন সহিংস আন্দোলন সমালোচনার মুখে পড়েছে। শিক্ষক, সুধী সমাজের প্রতিনিধি এবং রাজশাহীর সাধারণ মানুষও এর সমালোচনা করেছেন। তবে আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া ছাত্রদের দাবি, তাঁদের আন্দোলন অহিংসই ছিল। আন্দোলনের মাঝে বহিরাগতরা ঢুকে পড়ে আন্দোলনকে সহিংস করে তোলে।

গ্রামের বাড়ি থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ফেরার সময় একজন ছাত্রের সঙ্গে বাসের চালক ও তাঁর সহকারীর কথা-কাটাকাটি হয় ১১ মার্চ শনিবার বিকেলে। ঘটনার সঙ্গে বিনোদপুর বাজারের ব্যবসায়ীরা জড়িয়ে পড়ায় দোকানপাটে পেট্রলবোমা দিয়ে আগুন দেওয়া শুরু হয়। পোড়ানো হয় ১০টি দোকান। ভাঙচুর করা হয় আরও ২০টি। এই ব্যবসায়ীরা নিঃস্ব হয়ে গেছেন। ওই সংঘর্ষে ব্যবসায়ীদের ইটপাটকেল ও পুলিশের ছোড়া রাবার বুলেটে দুই শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন। তাঁদের মধ্যে তিনজনকে চিকিৎসার জন্য ঢাকায় আনতে হয়েছে।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে এ ধরনের ঘটনা এবারই প্রথম ঘটল, তা নয়। গত ৪০ বছরে অন্তত ১০টি এ ধরনের সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। ছাত্র সংসদ নির্বাচন নিয়মিত না হওয়ায় ছাত্রদের পক্ষে কথা বলার কোনো প্রতিনিধি না থাকায় এখন আন্দোলনের নামে নৈরাজ্য করা সহজ হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্রিয়াশীল ছাত্রসংগঠনগুলোর সঙ্গেও সম্ভবত এখন সাধারণ শিক্ষার্থীদের তেমন কার্যকর যোগাযোগ নেই। ছাত্র আন্দোলন বলে সেই অর্থে কিছু নেই। ছাত্রসংগঠনগুলো এখন শিক্ষার্থীদের সমস্যা নিয়ে ভাবে না। আধিপত্য বিস্তারের লড়াই ছাড়া বড় সংগঠনগুলোর আর কোনো কর্মকাণ্ড দৃশ্যমান নয়।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনেরও শিক্ষার্থীদের প্রতি দায়িত্বশীল ভূমিকার ঘাটতি রয়েছে। ভর্তি হওয়ার পর প্রশাসনের পক্ষ থেকে নবীন শিক্ষার্থীদের জন্য ওরিয়েন্টেশনের ব্যবস্থা করে তাঁদের এলাকার পরিবেশ সম্পর্কে ধারণা দেওয়ার পাশাপাশি প্রাথমিকভাবে কিছু আইনকানুন এবং আচার-আচরণ বিষয়েও সচেতন করে তুলতে পারলে অনভিপ্রেত ঘটনা এড়ানো সম্ভব হতে পারে।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীরও গা-ছাড়া ভাব পরিহার করা জরুরি। শিক্ষার্থীদের মধ্যে কোনো কারণে উত্তেজনা দেখা দিলে কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যরা ঠান্ডা মাথায় ত্বরিত ব্যবস্থা নিতে তৎপর হলেও বড় অঘটন ঠেকানো সম্ভব।

মন্তব্য

আপনার পরিচয় গোপন রাখতে
আমি নীতিমালা মেনে মন্তব্য করছি।
Show
 
    সব মন্তব্য

    ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে

    এলাকার খবর

     
     

    সেই এক মার্চ এসেছিল

    বাংলাদেশের জেনোসাইডের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি: কত দূরে

    টুপি-পায়জামা-চাপকান

    পা ও সম্মানবোধ

    একাত্তরের উত্তাল মার্চের স্মৃতি

    স্বাধীনতার কড়চা

    তৃতীয় কন্যার বাবা হলেন মার্ক জাকারবার্গ 

    আমেরিকার নিজের বেলায় এক নীতি অন্যের বেলায় ভিন্ন: মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রী

    চট্টগ্রাম-৮ আসনে উপনির্বাচনে নৌকার প্রার্থী নোমান আল মাহমুদ

    ইফতারের ৫ সুন্নত

    লবণপানিতে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক যেন মরণফাঁদ

    ইন্টেলের সহপ্রতিষ্ঠাতা গর্ডন মুরের মৃত্যু