ইশতিয়াক হাসান

আশ্চর্য সুন্দর পাহাড়, ঝিরঝির করে বয়ে চলা শীতল জলের নদী, পাহাড়চূড়ার বৌদ্ধমন্দির—সবকিছু মিলিয়ে দক্ষিণ এশিয়ার দেশ ভুটানের মতো চমৎকার ভ্রমণ গন্তব্য আছে কমই।
ভুটানি রীতির বাড়ি-ঘরগুলোও নজর কাড়ে পর্যটকদের। লাল-সাদা রঙের কাঠের সামনের অংশ, ছোট জানালা, ঢালু ছাদ প্রতিটি বাড়ির। তেমনি মৌসুমে আপেল, কমলাসহ নানা ধরনের বাগানের সৌন্দর্যও উপভোগ করতে পারবেন। হরেক জাতের বন্যপ্রাণীর আবাসও দেশটিতে। আবহাওয়াও খুব আরামদায়ক। হবে না-ই বা কেন? এটি যে কার্বন নেগেটিভ কান্ট্রি (যে পরিমাণ কার্বন ছাড়ে, তার চেয়ে শোষণক্ষমতা বেশি)। ভুটানে অসাধারণ সুন্দর সব জায়গার মধ্যে আপাতত ১০টিকে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছি।
১. থিম্পু
ভুটানের রাজধানী শহরটিতে দেখার মতো অনেক কিছুই আছে। পাহাড়চূড়ার বুদ্ধ পয়েন্টের বড় আকর্ষণ গৌতম বুদ্ধের বিশাল এক সোনালি মূর্তি। ২০০৬ সালে কাজ শুরু হলেও ১৬৯ ফুট উঁচু বুদ্ধ ভাস্কর্য এবং অন্যান্য মূর্তিসহ গোটা কমপ্লেক্সের উদ্বোধন হয় ২০১৫। কয়েকটা সিঁড়ি পেরিয়ে ভেতরে গিয়ে ছোট ছোট আরও অনেক বুদ্ধমূর্তির দেখা পাবেন।
বিভিন্ন তাকে সাজিয়ে রাখা। সঙ্গের গাইড যখন জানাবেন আট ইঞ্চি দৈর্ঘ্যের এক লাখ এবং ১২ ইঞ্চি দৈর্ঘ্যের ২৫ হাজার ব্রোঞ্জের বুদ্ধ স্ট্যাচু আছে এখানে, তখন রীতিমতো চমকাবেন।
বিশাল চত্বর থেকে উপভোগ করবেন চারপাশের তুষারের টুপি পরা উঁচু সব পর্বতের রূপ। চত্বরে বেশ কিছু মাঝারি আকারের মূর্তি আছে। বুদ্ধ পয়েন্ট এখন থিম্পুর অঘোষিত প্রতীকে পরিণত হয়েছে।
শহরের ভেতর দিয়ে এঁকেবেঁকে বয়ে চলা পাহাড়ি নদী চু মুগ্ধ করবে আপনাকে। শহর থেকে গাড়িতে চেপে মিনিট পনেরো-কুড়ি গেলে পৌঁছে যাবেন ‘জিগমে দরজি ন্যাশনাল পার্কে’। এই বনের আয়তন কম নয়, ৪ হাজার ৩১৬ বর্গকিলোমিটার। গোটা ভুটানের প্রায় ৯ ভাগের এক ভাগ। মোটামুটি ১ হাজার ৬০০ থেকে ৭ হাজার ১০০ মিটার উচ্চতার এলাকা আছে এর আওতায়। ট্র্যাকারদের স্বর্গরাজ্য জিগমে দর্জি জাতীয় উদ্যান, বিশেষ করে ইউরোপ-আমেরিকার প্রচুর ট্র্যাকার এই জঙ্গলে ঘুরে বেড়ান। বনে বাঘ ছাড়া মিলবে মেঘলা চিতা, মাস্ক ডিয়ার, বন্য কুকুর, হিমালয়ান কালো ভালুক, লাল পান্ডার মতো প্রাণীদের। হিমালয়ের তুষারছাওয়া উঁচু সব শৃঙ্গও পড়েছে এর সীমানায়। ভুটানের জাতীয় প্রাণী টাকিনও সবচেয়ে বেশি পাওয়া যায় এই জঙ্গলে। আধা গরু-আধা ছাগল বলতে পারেন এই জন্তুটিকে। অবশ্য এই প্রাণীকে সহজে দেখতে চাইলে যেতে পারেন থিম্পুর টাকিন রিজার্ভে।
২. পারো
পারোর কথা বলতে গেলে প্রথমেই বলতে হয় এর আশ্চর্য সুন্দর বিমানবন্দরটির কথা। প্লেন থেকে নামার সঙ্গে সঙ্গে আরামদায়ক, শীতল এক বাতাস আপনার শরীর জুড়িয়ে দেবে। রানওয়ের পরেই পাহাড়সারি মনটা ভালো করে দেবে। নেট ঘেঁটে যতটা জানতে পেরেছি, পারো শহরটা গড়ে উঠেছে বেশি দিন হয়নি, ১৯৮৫ সালে একটা মূল সড়ক দিয়ে এর শুরু। তখন এর দুই পাশে ছিল কেবল বর্ণিল সব দোকান। ধীরে ধীরে আরও দালানকোঠা হয়।
ভুটানের জাতীয় জাদুঘর পারোতেই। পাহাড়ের ওপরে। মূল ভবনটি গোল, ঐতিহ্যবাহী লাল-সাদা এক দালান। তা জং নামে পরিচিত বহু পুরোনো এই বিল্ডিংটাকে ভুটানের তৃতীয় রাজা জিগমে দর্জি ওয়ানচুকের নির্দেশে ১৯৬৮ সালে সংস্কার করে জাদুঘরে রূপান্তর করা হয়। তা জং মানে হলো ওয়াচ টাওয়ার। সত্যি এখানে দাঁড়ালে নিচের পারো উপত্যকা নিমেষে চোখের সামনে চলে আসবে। তবে প্রথমে নজর যাবে দুটি জংয়ের দিকে। বেশি মশহুর রিনপাং জং। এটা একই সঙ্গে দুর্গ এবং বৌদ্ধমন্দির বা গুম্ফা। এখন পারোর প্রশাসনিক সদর দপ্তর। এখান থেকে সবুজ পারো উপত্যকায়, মাঝে মাঝে বর্ণিল সব ভুটানি বাড়ি-ঘর, ফসলের খেত চোখ জুড়িয়ে দেবে।
শহরের বাইরের দিকটা কেমন মায়া মাখানো। বড় জায়গা নিয়ে কয়েকটা রিসোর্ট, ভুটানিদের ছোট ফার্ম হাউস, চাষ করা জমিগুলো দৃষ্টি আকর্ষণ করবে। পারো শহর কেটে চলে গেছে ভুটানের বড় নদীগুলোর একটি পা চু।
৩. টাইগার নেস্ট
ভুটানের নাম শুনলে কোন দৃশ্যটা সবার আগে মনের পর্দায় ভাসতে থাকে, বলুন তো? আমিই বলে দিচ্ছি, উঁচু পাহাড়ের চাতালে ঝুলতে থাকা অনিন্দ্যসুন্দর এক মনাস্ট্রি বা গুম্ফা। কথাটা আমার নিজের বেলায়ও খাটে। প্রথম যখন ভুটান ভ্রমণের কথা ভাবছিলাম, মাথায় ঘুরছিল টাইগার নেস্ট বা পারো টেকটসাংয়ের ছবিই। পারো শহর থেকে টাইগার নেস্টের নিচের পার্ক মতো জায়গাটিতে পৌঁছাতে মিনিট ২৫-৩০ লাগবে। ঢংঢং শব্দে কয়েকটা সেতু পেরোবেন পথে। এর মধ্যে একটা বেশ বড়। টাইগার নেস্ট বা ‘বাঘের বাসা’র মূল প্রবেশপথের বাইরে হরেক জাতের স্যুভেনির নিয়ে বসেন বিক্রেতারা। কতক দূর যেতেই মোটামুটি খোলামেলা, তবে একটু এবড়োখেবড়ো এক জমিতে অনেকগুলো ঘোড়া চড়তে দেখবেন। যাঁরা পাহাড় বাইতে সাহস করেন না, তাঁদের চূড়ায় পৌঁছে দেবে এই ঘোড়া।
গাছপালাময় এক জায়গা থেকেই ট্রেকিং আর হাইকিংয়ের পথের শুরু। কয়েকটি বোর্ডে এই ট্রেইলে কী ধরনের পাখির দেখা মিলতে পারে তা ছবিসহ চিহ্নিত করা হয়েছে। টাইগার নেস্টে উঠতে হয় ঘোরানো-প্যাঁচানো অনেকটা পথ পেরিয়ে। গুম্ফাটা সাগর সমতল থেকে ৩১০০ মিটার উচ্চতায়!
আপনার নিশ্চয় জানতে ইচ্ছা করছে এর নাম টাইগার নেস্ট কেন? বাঘের বাসা আছে কি? ১৬৯২ সালে প্রথম তৈরি হয় এটি। কথিত আছে গুরু রিনপোচ একটা বাঘিনীর পিঠে চড়ে বৌদ্ধ ধর্ম বিস্তারের জন্য তিব্বত থেকে এখানে এসেছিলেন। তাই এমন নামকরণ। অপর একটি কিংবদন্তি বলছে, গুরু তাঁর এক অভিজাত ভক্তের পীড়াপীড়িতে তাঁকে বাঘিনী বানিয়ে পিঠে সওয়ার হয়ে ওঠেন উঁচু পাহাড়টিতে। ওই বাঘিনী নাকি উড়ে পেরিয়েছিল দূরত্বটা।
৪. চেলালা পাস
গাড়িতে করে যাওয়া যায় ভুটানের এমন সবচেয়ে উঁচু জায়গা চেলালা পাস। উচ্চতা ৩ হাজার ৯৮৮ মিটার। পাহাড়ি রাস্তাটা ভয়ানক আঁকাবাঁকা, বিপজ্জনক। অবশ্য ভুটানের চালকেরা সাধারণত গাড়ি চালান সতর্কতার সঙ্গে। কখনো কখনো দূরে পাহাড়ের গায়ে টাইগার নেস্টটের চেহারাও দেখবেন চেলালা পাসে যাওয়ার পথে। উচ্চতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভূপ্রকৃতিতে বৈচিত্র্য নজর কাড়বে। নতুন নতুন প্রজাতির গাছের সঙ্গে পরিচিত হবেন। শীতও বাড়বে। এখানে শীতে এত্তো বরফ পড়ে যে অনেক সময় এই পথ বন্ধ হয়ে যায়। রেসকিউ পার্টি এসে বরফ পরিষ্কার করলেই তবে গাড়ি চলে। এদিকে রাস্তা সরু। উল্টো পাশ থেকে গাড়ি আসে কি না, বুঝতে সতর্ক থাকতে হয়।
চেলালায় পৌঁছে গাড়ি থেকে নামলেই মনে হবে ঠান্ডায় জমে যাচ্ছেন। পাহাড়ের ওপরের দোকান থেকে গরম-গরম পাকোরা, বেসনে চুবানো ফুলকপি খেয়ে উষ্ণতা খুঁজতে পারেন।
পাহাড়ে কিনারে দাঁড়াতেই হিমালয়ের তুষারঢাকা পর্বতমালাগুলো নজর কাড়বে। নিচে এক পাশে পারো ভ্যালি, আরেক পাশে হা ভ্যালি। ওপর থেকে এই উপত্যকার দৃশ্য দেখে চোখ জুড়াবে।
৫. দোচুলা পাস
থিম্পু থেকে পুনাখা যাওয়ার পথে পড়ে দোচুলা পাস। সাগর সমতল থেকে প্রায় ৩ হাজার ১০০ মিটার উচ্চতায় এটি। এখান থেকে হিমালয়ের উঁচু উঁচু বরফঢাকা চূড়াগুলো দেখা যায়। তবে শর্ত আছে একটা, আকাশ থাকতে হবে পরিষ্কার। এদের মধ্যে আছে ভুটানের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মাউন্ট মাসানগাংও। দোচুলা পাসের মূল আকর্ষণ এখানকার স্তুপাগুলো। সাদা-লালে মেশানো এখানকার ১০৮ স্তুপা দেখে চোখ জুড়াবে। বৌদ্ধভিক্ষুদের ধ্যানের জায়গা স্তুপা। এই স্তুপাগুলো বানানো হয় কুইন মাদার আসি দরজি ওয়াংমো ওয়ানচুকের নির্দেশে, ২০০৪ সালে। একটা গুম্ফাও আছে দোচুলায়। অবশ্য ভুটানে দেখা বিভিন্ন প্রাচীন, পুরোনো গুম্ফাগুলোর তুলনায় এটা নেহাত ছোট।
জায়গাটি পড়েছে ভুটানের জাতীয় উদ্ভিদ উদ্যানের সীমানায়। চারপাশে তাই লম্বা লম্বা গাছের রাজত্ব। আশপাশে সাইপ্রেস, ওক ও বার্চ গাছের রাজত্ব। পার্কের সীমানায় হেঁটে বেড়ানোর কয়েকটি ট্রেইল আছে, বিশেষ করে রডোডেনড্রন ট্রেইলটা অনেক সুন্দর। ইন্টারনেট ঘেঁটে জানা, ভুটানের বড় দুটি জঙ্গল জিগমে দর্জি ও জিগমে সিঙ্গির মাঝে প্রাকৃতিক করিডর এই উদ্যান। তাই এখানে বাঘ, চিতা বাঘ আর লাল পান্ডার মতো দুর্লভ বন্য জন্তুর দেখা পাওয়া সম্ভব। তবে এর জন্য সময় ও ধৈর্য দুটোই চাই।
৬. পুনাখা
দোচুলা পাসের পর পুনাখা যাওয়ার পথটা ভারি সুন্দর। ডান পাশে গা ঘেঁষেই উঠে গেছে পাহাড়। তাই তাকিয়ে বেশি কিছু দেখতে পাবেন না। তবে বাঁয়ে তাকালেই চোখ জুড়াবে। একটু দূরে গাছপালায় ঢাকা সবুজ পাহাড়, এখানে-সেখানে দৃষ্টিনন্দন সব বাড়িঘর। কিছুক্ষণ পর বেশ উঁচুতে কয়েকটা স্থাপনা দেখবেন, ওটা নানারি। নারী ভিক্ষুরা ওখানে প্রশিক্ষণ নেন, ধ্যান করেন। বাঁয়ে নদীও চলবে।
পুনাখায় ঢুকে ভেতরের একটা রাস্তা ধরে কিছু দূর গেলে ডান পাশে পাবেন অপরূপ এক নদী। পাথরের ওপর দিয়ে ঝিরঝির করে বয়ে চলেছে জল। ওপরে সেতু। দূরে দেখা দিল পুনাখা জং। একই সঙ্গে দুর্গ আর ধর্মীয় কাঠামো বলতে পারেন এই জংকে। পুনাখা জং তৈরি হয়েছে সেই ১৬৩৭-৩৮ সালে। এখন পুনাখা জেলার প্রশাসনিক সদর দপ্তর। ভুটানি স্থাপত্যরীতিতে তৈরি দালানটি মুগ্ধ করবে আপনাকে। পুনাখা জংয়ের সীমানায় ঢুকতে হয় নদীর ওপর একটা সেতু পেরিয়ে। পুনাখা উপত্যকার দুই নদীর মাঝখানে জংটি। আদপে পো চু হলো নদ, মো চু নদী। পো চোর উৎপত্তি পুনাখার পাহাড়ের হিমবাহের বরফগলা পানিতে হলেও মো চু এসেছে সেই তিব্বতের লাসা থেকে। কাঠের ব্রিজের ওপর থেকে নিচে নদীর স্বচ্ছ জলে মাছ দেখা যায়।
জংয়ের পেছনের গেট পেরিয়ে রওনা দেবেন ঝুলন্ত সেতুর দিকে। প্রথমে দুই পশে গাছপালার গার্ড দেওয়া পাকা সড়ক, তারপর পাহাড়ের পাশ দিয়ে চলে যাওয়া মেঠোপথে। ৫০০ ফুটের বেশি লম্বা ঝুলন্ত সেতুটা সাং চু নদীর ওপর। দুই পাশে সিমেন্টের ব্লকের মাঝখানে শক্ত তার দিয়ে তৈরি। হাঁটার সময় সেতুর সঙ্গে দুলতে থাকবেন আপনিও। সেতুর গায়ে অনেক রঙিন পতাকা, সব সময়ই নাকি এই সেতুতে এমন অজস্র পতাকা ঝোলে অশুভ আত্মাদের দূরে রাখতে। ঝুলন্ত সেতু থেকে নিচের নদীটা ধরা দেবে আরও মোহনীয় চেহারায়। রাফটিং করতে দেখবেন মানুষকে। ওপাশে পাহাড়, সমতলে ধানখেত—সবকিছুই দারুণ! এই সেতুর ওপর দিয়ে মানুষ তো বটেই; বিভিন্ন গবাদিপশুও চলাচল করে।
৭. বুমথাং উপত্যকা
ভুটানিদের কাছে ধর্মীয় দিক থেকে অনেক গুরুত্বপূর্ণ জায়গা এটি। প্রায় ২ হাজার ৬০০ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত বুমথামে অনেক পুরোনো বৌদ্ধমন্দির আছে।
পর্যটকদের, বিশেষ করে বিদেশি পর্যটকদের কাছে খুব প্রিয় এক গন্তব্য এটি। এখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য মুগ্ধ করে তাঁদের। পুনাখা থেকে বুমথাং যাওয়ার পথে খাড়া পাহাড়ের ওপর মেঘের রাজ্যে ট্রংসা জংও পর্যটকদের কাছে বড় আকর্ষণ। ওই পথেই বেশ কয়েকটি ঝর্ণাও চোখে পড়ে। এগুলোর জল অবশ্য শীতে জমে বরফ হয়ে থাকে। প্রচুর আপেল বাগানেরও দেখা মেলে এই উপত্যকায়। অনেক পর্যটকই একে আদর করে ডাকেন ‘পুবের সুইজারল্যান্ড’। নানা ধরনের উৎসবের জন্যও বিখ্যাত জায়গাটি।
৮. হা ভ্যালি
হা ভ্যালি বা হা উপত্যকা ইদানীং ভুটানে বেড়াতে আসা পর্যটকদের খুব প্রিয় এক গন্তব্যে পরিণত হয়েছে। উপত্যকাটি বিখ্যাত এখানকার অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য। এর পাশাপাশি দৃষ্টিনন্দন কয়েকটি দুর্গ ও বৌদ্ধমন্দির আছে। এগুলোর মধ্যে অন্যতম লাখাং কারপো (সাদা মন্দির) ও লাখাং নাগপো (কালো মন্দির), ১০০ বছরের পুরোনো মন্দির তাগচু গোয়েম্বা। দবিজ জং নামে পাহাড়চূড়ার পাঁচতলা দুর্গটিও এখানকার বিখ্যাত গন্তব্যগুলোর একটি। পারো থেকে দূরত্ব বেশি না হওয়ায় অনায়াসে সেখানে একটি কিংবা দুটি দিন কাটাতে পারেন।
৯. ফুন্টসলিং
বিশেষ করে যেসব বাংলাদেশি পর্যটক ভারত হয়ে ভুটানে ঢোকেন, তাঁদের কাছে বেশ পরিচিত ফুন্টসলিং। ছোট্ট এই শহরে আছে কুমির প্রজননকেন্দ্র, ভুটান গেট, মনাস্ট্রি। ফুন্টসলিংয়ের উঁচুনিচু রাস্তা ধরে হেঁটে বেড়ানোর মজাই আলাদা। রাস্তার পাশেই ছোট-বড় শপিংমল, হোটেল-রেস্তোরাঁ, বাহারি ফুলের দোকান পাবেন। বাজারে আশপাশের পাহাড়ে উৎপাদিত নানা ফল পাবেন। মোটের ওপর নীরব, শান্তিময় প্রাকৃতিক পরিবেশে যাঁরা দুটি দিন কাটাতে চান, তাঁরা ভুটান ভ্রমণের সময় শহরটির জন্য দুটি দিন রাখতে পারেন।
১০. ওয়াংদুয়ে ফোদরাং
ভুটানের আর একটি বিখ্যাত গন্তব্য। পুনাখার দক্ষিণে অবস্থিত ওয়াংদুয়ে ফোদরাং সেন্ট্রাল হাইওয়ে ধরে মধ্য ভুটানে পৌঁছার আগে সর্বশেষ শহর। ওয়াংদুয়ে ফোদরাং উপত্যকার ওপরের অংশ পশু চারণভূমি হিসেবে খুব বিখ্যাত। বাঁশের নানা সামগ্রী এবং স্লেট ও নানান পাথর কুঁদে তৈরি বিভিন্ন জিনিসের জন্যও আলাদা নাম আছে জায়গাটির।
পুনাখা চু ও তাং চু নদীর সংযোগস্থলে এক পাহাড়ের ওপর অবস্থিত ওয়াংদুয়ে ফোদরাং জংও আকৃষ্ট করে পর্যটকদের।
সূত্র. হিমালয়ান গ্লেসিয়ার. কম, থ্রিলো ফিলিয়া ডট কম, উইকিপিডিয়া
ভ্রমণ সম্পর্কিত আরও পড়ুন:

আশ্চর্য সুন্দর পাহাড়, ঝিরঝির করে বয়ে চলা শীতল জলের নদী, পাহাড়চূড়ার বৌদ্ধমন্দির—সবকিছু মিলিয়ে দক্ষিণ এশিয়ার দেশ ভুটানের মতো চমৎকার ভ্রমণ গন্তব্য আছে কমই।
ভুটানি রীতির বাড়ি-ঘরগুলোও নজর কাড়ে পর্যটকদের। লাল-সাদা রঙের কাঠের সামনের অংশ, ছোট জানালা, ঢালু ছাদ প্রতিটি বাড়ির। তেমনি মৌসুমে আপেল, কমলাসহ নানা ধরনের বাগানের সৌন্দর্যও উপভোগ করতে পারবেন। হরেক জাতের বন্যপ্রাণীর আবাসও দেশটিতে। আবহাওয়াও খুব আরামদায়ক। হবে না-ই বা কেন? এটি যে কার্বন নেগেটিভ কান্ট্রি (যে পরিমাণ কার্বন ছাড়ে, তার চেয়ে শোষণক্ষমতা বেশি)। ভুটানে অসাধারণ সুন্দর সব জায়গার মধ্যে আপাতত ১০টিকে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছি।
১. থিম্পু
ভুটানের রাজধানী শহরটিতে দেখার মতো অনেক কিছুই আছে। পাহাড়চূড়ার বুদ্ধ পয়েন্টের বড় আকর্ষণ গৌতম বুদ্ধের বিশাল এক সোনালি মূর্তি। ২০০৬ সালে কাজ শুরু হলেও ১৬৯ ফুট উঁচু বুদ্ধ ভাস্কর্য এবং অন্যান্য মূর্তিসহ গোটা কমপ্লেক্সের উদ্বোধন হয় ২০১৫। কয়েকটা সিঁড়ি পেরিয়ে ভেতরে গিয়ে ছোট ছোট আরও অনেক বুদ্ধমূর্তির দেখা পাবেন।
বিভিন্ন তাকে সাজিয়ে রাখা। সঙ্গের গাইড যখন জানাবেন আট ইঞ্চি দৈর্ঘ্যের এক লাখ এবং ১২ ইঞ্চি দৈর্ঘ্যের ২৫ হাজার ব্রোঞ্জের বুদ্ধ স্ট্যাচু আছে এখানে, তখন রীতিমতো চমকাবেন।
বিশাল চত্বর থেকে উপভোগ করবেন চারপাশের তুষারের টুপি পরা উঁচু সব পর্বতের রূপ। চত্বরে বেশ কিছু মাঝারি আকারের মূর্তি আছে। বুদ্ধ পয়েন্ট এখন থিম্পুর অঘোষিত প্রতীকে পরিণত হয়েছে।
শহরের ভেতর দিয়ে এঁকেবেঁকে বয়ে চলা পাহাড়ি নদী চু মুগ্ধ করবে আপনাকে। শহর থেকে গাড়িতে চেপে মিনিট পনেরো-কুড়ি গেলে পৌঁছে যাবেন ‘জিগমে দরজি ন্যাশনাল পার্কে’। এই বনের আয়তন কম নয়, ৪ হাজার ৩১৬ বর্গকিলোমিটার। গোটা ভুটানের প্রায় ৯ ভাগের এক ভাগ। মোটামুটি ১ হাজার ৬০০ থেকে ৭ হাজার ১০০ মিটার উচ্চতার এলাকা আছে এর আওতায়। ট্র্যাকারদের স্বর্গরাজ্য জিগমে দর্জি জাতীয় উদ্যান, বিশেষ করে ইউরোপ-আমেরিকার প্রচুর ট্র্যাকার এই জঙ্গলে ঘুরে বেড়ান। বনে বাঘ ছাড়া মিলবে মেঘলা চিতা, মাস্ক ডিয়ার, বন্য কুকুর, হিমালয়ান কালো ভালুক, লাল পান্ডার মতো প্রাণীদের। হিমালয়ের তুষারছাওয়া উঁচু সব শৃঙ্গও পড়েছে এর সীমানায়। ভুটানের জাতীয় প্রাণী টাকিনও সবচেয়ে বেশি পাওয়া যায় এই জঙ্গলে। আধা গরু-আধা ছাগল বলতে পারেন এই জন্তুটিকে। অবশ্য এই প্রাণীকে সহজে দেখতে চাইলে যেতে পারেন থিম্পুর টাকিন রিজার্ভে।
২. পারো
পারোর কথা বলতে গেলে প্রথমেই বলতে হয় এর আশ্চর্য সুন্দর বিমানবন্দরটির কথা। প্লেন থেকে নামার সঙ্গে সঙ্গে আরামদায়ক, শীতল এক বাতাস আপনার শরীর জুড়িয়ে দেবে। রানওয়ের পরেই পাহাড়সারি মনটা ভালো করে দেবে। নেট ঘেঁটে যতটা জানতে পেরেছি, পারো শহরটা গড়ে উঠেছে বেশি দিন হয়নি, ১৯৮৫ সালে একটা মূল সড়ক দিয়ে এর শুরু। তখন এর দুই পাশে ছিল কেবল বর্ণিল সব দোকান। ধীরে ধীরে আরও দালানকোঠা হয়।
ভুটানের জাতীয় জাদুঘর পারোতেই। পাহাড়ের ওপরে। মূল ভবনটি গোল, ঐতিহ্যবাহী লাল-সাদা এক দালান। তা জং নামে পরিচিত বহু পুরোনো এই বিল্ডিংটাকে ভুটানের তৃতীয় রাজা জিগমে দর্জি ওয়ানচুকের নির্দেশে ১৯৬৮ সালে সংস্কার করে জাদুঘরে রূপান্তর করা হয়। তা জং মানে হলো ওয়াচ টাওয়ার। সত্যি এখানে দাঁড়ালে নিচের পারো উপত্যকা নিমেষে চোখের সামনে চলে আসবে। তবে প্রথমে নজর যাবে দুটি জংয়ের দিকে। বেশি মশহুর রিনপাং জং। এটা একই সঙ্গে দুর্গ এবং বৌদ্ধমন্দির বা গুম্ফা। এখন পারোর প্রশাসনিক সদর দপ্তর। এখান থেকে সবুজ পারো উপত্যকায়, মাঝে মাঝে বর্ণিল সব ভুটানি বাড়ি-ঘর, ফসলের খেত চোখ জুড়িয়ে দেবে।
শহরের বাইরের দিকটা কেমন মায়া মাখানো। বড় জায়গা নিয়ে কয়েকটা রিসোর্ট, ভুটানিদের ছোট ফার্ম হাউস, চাষ করা জমিগুলো দৃষ্টি আকর্ষণ করবে। পারো শহর কেটে চলে গেছে ভুটানের বড় নদীগুলোর একটি পা চু।
৩. টাইগার নেস্ট
ভুটানের নাম শুনলে কোন দৃশ্যটা সবার আগে মনের পর্দায় ভাসতে থাকে, বলুন তো? আমিই বলে দিচ্ছি, উঁচু পাহাড়ের চাতালে ঝুলতে থাকা অনিন্দ্যসুন্দর এক মনাস্ট্রি বা গুম্ফা। কথাটা আমার নিজের বেলায়ও খাটে। প্রথম যখন ভুটান ভ্রমণের কথা ভাবছিলাম, মাথায় ঘুরছিল টাইগার নেস্ট বা পারো টেকটসাংয়ের ছবিই। পারো শহর থেকে টাইগার নেস্টের নিচের পার্ক মতো জায়গাটিতে পৌঁছাতে মিনিট ২৫-৩০ লাগবে। ঢংঢং শব্দে কয়েকটা সেতু পেরোবেন পথে। এর মধ্যে একটা বেশ বড়। টাইগার নেস্ট বা ‘বাঘের বাসা’র মূল প্রবেশপথের বাইরে হরেক জাতের স্যুভেনির নিয়ে বসেন বিক্রেতারা। কতক দূর যেতেই মোটামুটি খোলামেলা, তবে একটু এবড়োখেবড়ো এক জমিতে অনেকগুলো ঘোড়া চড়তে দেখবেন। যাঁরা পাহাড় বাইতে সাহস করেন না, তাঁদের চূড়ায় পৌঁছে দেবে এই ঘোড়া।
গাছপালাময় এক জায়গা থেকেই ট্রেকিং আর হাইকিংয়ের পথের শুরু। কয়েকটি বোর্ডে এই ট্রেইলে কী ধরনের পাখির দেখা মিলতে পারে তা ছবিসহ চিহ্নিত করা হয়েছে। টাইগার নেস্টে উঠতে হয় ঘোরানো-প্যাঁচানো অনেকটা পথ পেরিয়ে। গুম্ফাটা সাগর সমতল থেকে ৩১০০ মিটার উচ্চতায়!
আপনার নিশ্চয় জানতে ইচ্ছা করছে এর নাম টাইগার নেস্ট কেন? বাঘের বাসা আছে কি? ১৬৯২ সালে প্রথম তৈরি হয় এটি। কথিত আছে গুরু রিনপোচ একটা বাঘিনীর পিঠে চড়ে বৌদ্ধ ধর্ম বিস্তারের জন্য তিব্বত থেকে এখানে এসেছিলেন। তাই এমন নামকরণ। অপর একটি কিংবদন্তি বলছে, গুরু তাঁর এক অভিজাত ভক্তের পীড়াপীড়িতে তাঁকে বাঘিনী বানিয়ে পিঠে সওয়ার হয়ে ওঠেন উঁচু পাহাড়টিতে। ওই বাঘিনী নাকি উড়ে পেরিয়েছিল দূরত্বটা।
৪. চেলালা পাস
গাড়িতে করে যাওয়া যায় ভুটানের এমন সবচেয়ে উঁচু জায়গা চেলালা পাস। উচ্চতা ৩ হাজার ৯৮৮ মিটার। পাহাড়ি রাস্তাটা ভয়ানক আঁকাবাঁকা, বিপজ্জনক। অবশ্য ভুটানের চালকেরা সাধারণত গাড়ি চালান সতর্কতার সঙ্গে। কখনো কখনো দূরে পাহাড়ের গায়ে টাইগার নেস্টটের চেহারাও দেখবেন চেলালা পাসে যাওয়ার পথে। উচ্চতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভূপ্রকৃতিতে বৈচিত্র্য নজর কাড়বে। নতুন নতুন প্রজাতির গাছের সঙ্গে পরিচিত হবেন। শীতও বাড়বে। এখানে শীতে এত্তো বরফ পড়ে যে অনেক সময় এই পথ বন্ধ হয়ে যায়। রেসকিউ পার্টি এসে বরফ পরিষ্কার করলেই তবে গাড়ি চলে। এদিকে রাস্তা সরু। উল্টো পাশ থেকে গাড়ি আসে কি না, বুঝতে সতর্ক থাকতে হয়।
চেলালায় পৌঁছে গাড়ি থেকে নামলেই মনে হবে ঠান্ডায় জমে যাচ্ছেন। পাহাড়ের ওপরের দোকান থেকে গরম-গরম পাকোরা, বেসনে চুবানো ফুলকপি খেয়ে উষ্ণতা খুঁজতে পারেন।
পাহাড়ে কিনারে দাঁড়াতেই হিমালয়ের তুষারঢাকা পর্বতমালাগুলো নজর কাড়বে। নিচে এক পাশে পারো ভ্যালি, আরেক পাশে হা ভ্যালি। ওপর থেকে এই উপত্যকার দৃশ্য দেখে চোখ জুড়াবে।
৫. দোচুলা পাস
থিম্পু থেকে পুনাখা যাওয়ার পথে পড়ে দোচুলা পাস। সাগর সমতল থেকে প্রায় ৩ হাজার ১০০ মিটার উচ্চতায় এটি। এখান থেকে হিমালয়ের উঁচু উঁচু বরফঢাকা চূড়াগুলো দেখা যায়। তবে শর্ত আছে একটা, আকাশ থাকতে হবে পরিষ্কার। এদের মধ্যে আছে ভুটানের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মাউন্ট মাসানগাংও। দোচুলা পাসের মূল আকর্ষণ এখানকার স্তুপাগুলো। সাদা-লালে মেশানো এখানকার ১০৮ স্তুপা দেখে চোখ জুড়াবে। বৌদ্ধভিক্ষুদের ধ্যানের জায়গা স্তুপা। এই স্তুপাগুলো বানানো হয় কুইন মাদার আসি দরজি ওয়াংমো ওয়ানচুকের নির্দেশে, ২০০৪ সালে। একটা গুম্ফাও আছে দোচুলায়। অবশ্য ভুটানে দেখা বিভিন্ন প্রাচীন, পুরোনো গুম্ফাগুলোর তুলনায় এটা নেহাত ছোট।
জায়গাটি পড়েছে ভুটানের জাতীয় উদ্ভিদ উদ্যানের সীমানায়। চারপাশে তাই লম্বা লম্বা গাছের রাজত্ব। আশপাশে সাইপ্রেস, ওক ও বার্চ গাছের রাজত্ব। পার্কের সীমানায় হেঁটে বেড়ানোর কয়েকটি ট্রেইল আছে, বিশেষ করে রডোডেনড্রন ট্রেইলটা অনেক সুন্দর। ইন্টারনেট ঘেঁটে জানা, ভুটানের বড় দুটি জঙ্গল জিগমে দর্জি ও জিগমে সিঙ্গির মাঝে প্রাকৃতিক করিডর এই উদ্যান। তাই এখানে বাঘ, চিতা বাঘ আর লাল পান্ডার মতো দুর্লভ বন্য জন্তুর দেখা পাওয়া সম্ভব। তবে এর জন্য সময় ও ধৈর্য দুটোই চাই।
৬. পুনাখা
দোচুলা পাসের পর পুনাখা যাওয়ার পথটা ভারি সুন্দর। ডান পাশে গা ঘেঁষেই উঠে গেছে পাহাড়। তাই তাকিয়ে বেশি কিছু দেখতে পাবেন না। তবে বাঁয়ে তাকালেই চোখ জুড়াবে। একটু দূরে গাছপালায় ঢাকা সবুজ পাহাড়, এখানে-সেখানে দৃষ্টিনন্দন সব বাড়িঘর। কিছুক্ষণ পর বেশ উঁচুতে কয়েকটা স্থাপনা দেখবেন, ওটা নানারি। নারী ভিক্ষুরা ওখানে প্রশিক্ষণ নেন, ধ্যান করেন। বাঁয়ে নদীও চলবে।
পুনাখায় ঢুকে ভেতরের একটা রাস্তা ধরে কিছু দূর গেলে ডান পাশে পাবেন অপরূপ এক নদী। পাথরের ওপর দিয়ে ঝিরঝির করে বয়ে চলেছে জল। ওপরে সেতু। দূরে দেখা দিল পুনাখা জং। একই সঙ্গে দুর্গ আর ধর্মীয় কাঠামো বলতে পারেন এই জংকে। পুনাখা জং তৈরি হয়েছে সেই ১৬৩৭-৩৮ সালে। এখন পুনাখা জেলার প্রশাসনিক সদর দপ্তর। ভুটানি স্থাপত্যরীতিতে তৈরি দালানটি মুগ্ধ করবে আপনাকে। পুনাখা জংয়ের সীমানায় ঢুকতে হয় নদীর ওপর একটা সেতু পেরিয়ে। পুনাখা উপত্যকার দুই নদীর মাঝখানে জংটি। আদপে পো চু হলো নদ, মো চু নদী। পো চোর উৎপত্তি পুনাখার পাহাড়ের হিমবাহের বরফগলা পানিতে হলেও মো চু এসেছে সেই তিব্বতের লাসা থেকে। কাঠের ব্রিজের ওপর থেকে নিচে নদীর স্বচ্ছ জলে মাছ দেখা যায়।
জংয়ের পেছনের গেট পেরিয়ে রওনা দেবেন ঝুলন্ত সেতুর দিকে। প্রথমে দুই পশে গাছপালার গার্ড দেওয়া পাকা সড়ক, তারপর পাহাড়ের পাশ দিয়ে চলে যাওয়া মেঠোপথে। ৫০০ ফুটের বেশি লম্বা ঝুলন্ত সেতুটা সাং চু নদীর ওপর। দুই পাশে সিমেন্টের ব্লকের মাঝখানে শক্ত তার দিয়ে তৈরি। হাঁটার সময় সেতুর সঙ্গে দুলতে থাকবেন আপনিও। সেতুর গায়ে অনেক রঙিন পতাকা, সব সময়ই নাকি এই সেতুতে এমন অজস্র পতাকা ঝোলে অশুভ আত্মাদের দূরে রাখতে। ঝুলন্ত সেতু থেকে নিচের নদীটা ধরা দেবে আরও মোহনীয় চেহারায়। রাফটিং করতে দেখবেন মানুষকে। ওপাশে পাহাড়, সমতলে ধানখেত—সবকিছুই দারুণ! এই সেতুর ওপর দিয়ে মানুষ তো বটেই; বিভিন্ন গবাদিপশুও চলাচল করে।
৭. বুমথাং উপত্যকা
ভুটানিদের কাছে ধর্মীয় দিক থেকে অনেক গুরুত্বপূর্ণ জায়গা এটি। প্রায় ২ হাজার ৬০০ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত বুমথামে অনেক পুরোনো বৌদ্ধমন্দির আছে।
পর্যটকদের, বিশেষ করে বিদেশি পর্যটকদের কাছে খুব প্রিয় এক গন্তব্য এটি। এখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য মুগ্ধ করে তাঁদের। পুনাখা থেকে বুমথাং যাওয়ার পথে খাড়া পাহাড়ের ওপর মেঘের রাজ্যে ট্রংসা জংও পর্যটকদের কাছে বড় আকর্ষণ। ওই পথেই বেশ কয়েকটি ঝর্ণাও চোখে পড়ে। এগুলোর জল অবশ্য শীতে জমে বরফ হয়ে থাকে। প্রচুর আপেল বাগানেরও দেখা মেলে এই উপত্যকায়। অনেক পর্যটকই একে আদর করে ডাকেন ‘পুবের সুইজারল্যান্ড’। নানা ধরনের উৎসবের জন্যও বিখ্যাত জায়গাটি।
৮. হা ভ্যালি
হা ভ্যালি বা হা উপত্যকা ইদানীং ভুটানে বেড়াতে আসা পর্যটকদের খুব প্রিয় এক গন্তব্যে পরিণত হয়েছে। উপত্যকাটি বিখ্যাত এখানকার অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য। এর পাশাপাশি দৃষ্টিনন্দন কয়েকটি দুর্গ ও বৌদ্ধমন্দির আছে। এগুলোর মধ্যে অন্যতম লাখাং কারপো (সাদা মন্দির) ও লাখাং নাগপো (কালো মন্দির), ১০০ বছরের পুরোনো মন্দির তাগচু গোয়েম্বা। দবিজ জং নামে পাহাড়চূড়ার পাঁচতলা দুর্গটিও এখানকার বিখ্যাত গন্তব্যগুলোর একটি। পারো থেকে দূরত্ব বেশি না হওয়ায় অনায়াসে সেখানে একটি কিংবা দুটি দিন কাটাতে পারেন।
৯. ফুন্টসলিং
বিশেষ করে যেসব বাংলাদেশি পর্যটক ভারত হয়ে ভুটানে ঢোকেন, তাঁদের কাছে বেশ পরিচিত ফুন্টসলিং। ছোট্ট এই শহরে আছে কুমির প্রজননকেন্দ্র, ভুটান গেট, মনাস্ট্রি। ফুন্টসলিংয়ের উঁচুনিচু রাস্তা ধরে হেঁটে বেড়ানোর মজাই আলাদা। রাস্তার পাশেই ছোট-বড় শপিংমল, হোটেল-রেস্তোরাঁ, বাহারি ফুলের দোকান পাবেন। বাজারে আশপাশের পাহাড়ে উৎপাদিত নানা ফল পাবেন। মোটের ওপর নীরব, শান্তিময় প্রাকৃতিক পরিবেশে যাঁরা দুটি দিন কাটাতে চান, তাঁরা ভুটান ভ্রমণের সময় শহরটির জন্য দুটি দিন রাখতে পারেন।
১০. ওয়াংদুয়ে ফোদরাং
ভুটানের আর একটি বিখ্যাত গন্তব্য। পুনাখার দক্ষিণে অবস্থিত ওয়াংদুয়ে ফোদরাং সেন্ট্রাল হাইওয়ে ধরে মধ্য ভুটানে পৌঁছার আগে সর্বশেষ শহর। ওয়াংদুয়ে ফোদরাং উপত্যকার ওপরের অংশ পশু চারণভূমি হিসেবে খুব বিখ্যাত। বাঁশের নানা সামগ্রী এবং স্লেট ও নানান পাথর কুঁদে তৈরি বিভিন্ন জিনিসের জন্যও আলাদা নাম আছে জায়গাটির।
পুনাখা চু ও তাং চু নদীর সংযোগস্থলে এক পাহাড়ের ওপর অবস্থিত ওয়াংদুয়ে ফোদরাং জংও আকৃষ্ট করে পর্যটকদের।
সূত্র. হিমালয়ান গ্লেসিয়ার. কম, থ্রিলো ফিলিয়া ডট কম, উইকিপিডিয়া
ভ্রমণ সম্পর্কিত আরও পড়ুন:
ইশতিয়াক হাসান

আশ্চর্য সুন্দর পাহাড়, ঝিরঝির করে বয়ে চলা শীতল জলের নদী, পাহাড়চূড়ার বৌদ্ধমন্দির—সবকিছু মিলিয়ে দক্ষিণ এশিয়ার দেশ ভুটানের মতো চমৎকার ভ্রমণ গন্তব্য আছে কমই।
ভুটানি রীতির বাড়ি-ঘরগুলোও নজর কাড়ে পর্যটকদের। লাল-সাদা রঙের কাঠের সামনের অংশ, ছোট জানালা, ঢালু ছাদ প্রতিটি বাড়ির। তেমনি মৌসুমে আপেল, কমলাসহ নানা ধরনের বাগানের সৌন্দর্যও উপভোগ করতে পারবেন। হরেক জাতের বন্যপ্রাণীর আবাসও দেশটিতে। আবহাওয়াও খুব আরামদায়ক। হবে না-ই বা কেন? এটি যে কার্বন নেগেটিভ কান্ট্রি (যে পরিমাণ কার্বন ছাড়ে, তার চেয়ে শোষণক্ষমতা বেশি)। ভুটানে অসাধারণ সুন্দর সব জায়গার মধ্যে আপাতত ১০টিকে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছি।
১. থিম্পু
ভুটানের রাজধানী শহরটিতে দেখার মতো অনেক কিছুই আছে। পাহাড়চূড়ার বুদ্ধ পয়েন্টের বড় আকর্ষণ গৌতম বুদ্ধের বিশাল এক সোনালি মূর্তি। ২০০৬ সালে কাজ শুরু হলেও ১৬৯ ফুট উঁচু বুদ্ধ ভাস্কর্য এবং অন্যান্য মূর্তিসহ গোটা কমপ্লেক্সের উদ্বোধন হয় ২০১৫। কয়েকটা সিঁড়ি পেরিয়ে ভেতরে গিয়ে ছোট ছোট আরও অনেক বুদ্ধমূর্তির দেখা পাবেন।
বিভিন্ন তাকে সাজিয়ে রাখা। সঙ্গের গাইড যখন জানাবেন আট ইঞ্চি দৈর্ঘ্যের এক লাখ এবং ১২ ইঞ্চি দৈর্ঘ্যের ২৫ হাজার ব্রোঞ্জের বুদ্ধ স্ট্যাচু আছে এখানে, তখন রীতিমতো চমকাবেন।
বিশাল চত্বর থেকে উপভোগ করবেন চারপাশের তুষারের টুপি পরা উঁচু সব পর্বতের রূপ। চত্বরে বেশ কিছু মাঝারি আকারের মূর্তি আছে। বুদ্ধ পয়েন্ট এখন থিম্পুর অঘোষিত প্রতীকে পরিণত হয়েছে।
শহরের ভেতর দিয়ে এঁকেবেঁকে বয়ে চলা পাহাড়ি নদী চু মুগ্ধ করবে আপনাকে। শহর থেকে গাড়িতে চেপে মিনিট পনেরো-কুড়ি গেলে পৌঁছে যাবেন ‘জিগমে দরজি ন্যাশনাল পার্কে’। এই বনের আয়তন কম নয়, ৪ হাজার ৩১৬ বর্গকিলোমিটার। গোটা ভুটানের প্রায় ৯ ভাগের এক ভাগ। মোটামুটি ১ হাজার ৬০০ থেকে ৭ হাজার ১০০ মিটার উচ্চতার এলাকা আছে এর আওতায়। ট্র্যাকারদের স্বর্গরাজ্য জিগমে দর্জি জাতীয় উদ্যান, বিশেষ করে ইউরোপ-আমেরিকার প্রচুর ট্র্যাকার এই জঙ্গলে ঘুরে বেড়ান। বনে বাঘ ছাড়া মিলবে মেঘলা চিতা, মাস্ক ডিয়ার, বন্য কুকুর, হিমালয়ান কালো ভালুক, লাল পান্ডার মতো প্রাণীদের। হিমালয়ের তুষারছাওয়া উঁচু সব শৃঙ্গও পড়েছে এর সীমানায়। ভুটানের জাতীয় প্রাণী টাকিনও সবচেয়ে বেশি পাওয়া যায় এই জঙ্গলে। আধা গরু-আধা ছাগল বলতে পারেন এই জন্তুটিকে। অবশ্য এই প্রাণীকে সহজে দেখতে চাইলে যেতে পারেন থিম্পুর টাকিন রিজার্ভে।
২. পারো
পারোর কথা বলতে গেলে প্রথমেই বলতে হয় এর আশ্চর্য সুন্দর বিমানবন্দরটির কথা। প্লেন থেকে নামার সঙ্গে সঙ্গে আরামদায়ক, শীতল এক বাতাস আপনার শরীর জুড়িয়ে দেবে। রানওয়ের পরেই পাহাড়সারি মনটা ভালো করে দেবে। নেট ঘেঁটে যতটা জানতে পেরেছি, পারো শহরটা গড়ে উঠেছে বেশি দিন হয়নি, ১৯৮৫ সালে একটা মূল সড়ক দিয়ে এর শুরু। তখন এর দুই পাশে ছিল কেবল বর্ণিল সব দোকান। ধীরে ধীরে আরও দালানকোঠা হয়।
ভুটানের জাতীয় জাদুঘর পারোতেই। পাহাড়ের ওপরে। মূল ভবনটি গোল, ঐতিহ্যবাহী লাল-সাদা এক দালান। তা জং নামে পরিচিত বহু পুরোনো এই বিল্ডিংটাকে ভুটানের তৃতীয় রাজা জিগমে দর্জি ওয়ানচুকের নির্দেশে ১৯৬৮ সালে সংস্কার করে জাদুঘরে রূপান্তর করা হয়। তা জং মানে হলো ওয়াচ টাওয়ার। সত্যি এখানে দাঁড়ালে নিচের পারো উপত্যকা নিমেষে চোখের সামনে চলে আসবে। তবে প্রথমে নজর যাবে দুটি জংয়ের দিকে। বেশি মশহুর রিনপাং জং। এটা একই সঙ্গে দুর্গ এবং বৌদ্ধমন্দির বা গুম্ফা। এখন পারোর প্রশাসনিক সদর দপ্তর। এখান থেকে সবুজ পারো উপত্যকায়, মাঝে মাঝে বর্ণিল সব ভুটানি বাড়ি-ঘর, ফসলের খেত চোখ জুড়িয়ে দেবে।
শহরের বাইরের দিকটা কেমন মায়া মাখানো। বড় জায়গা নিয়ে কয়েকটা রিসোর্ট, ভুটানিদের ছোট ফার্ম হাউস, চাষ করা জমিগুলো দৃষ্টি আকর্ষণ করবে। পারো শহর কেটে চলে গেছে ভুটানের বড় নদীগুলোর একটি পা চু।
৩. টাইগার নেস্ট
ভুটানের নাম শুনলে কোন দৃশ্যটা সবার আগে মনের পর্দায় ভাসতে থাকে, বলুন তো? আমিই বলে দিচ্ছি, উঁচু পাহাড়ের চাতালে ঝুলতে থাকা অনিন্দ্যসুন্দর এক মনাস্ট্রি বা গুম্ফা। কথাটা আমার নিজের বেলায়ও খাটে। প্রথম যখন ভুটান ভ্রমণের কথা ভাবছিলাম, মাথায় ঘুরছিল টাইগার নেস্ট বা পারো টেকটসাংয়ের ছবিই। পারো শহর থেকে টাইগার নেস্টের নিচের পার্ক মতো জায়গাটিতে পৌঁছাতে মিনিট ২৫-৩০ লাগবে। ঢংঢং শব্দে কয়েকটা সেতু পেরোবেন পথে। এর মধ্যে একটা বেশ বড়। টাইগার নেস্ট বা ‘বাঘের বাসা’র মূল প্রবেশপথের বাইরে হরেক জাতের স্যুভেনির নিয়ে বসেন বিক্রেতারা। কতক দূর যেতেই মোটামুটি খোলামেলা, তবে একটু এবড়োখেবড়ো এক জমিতে অনেকগুলো ঘোড়া চড়তে দেখবেন। যাঁরা পাহাড় বাইতে সাহস করেন না, তাঁদের চূড়ায় পৌঁছে দেবে এই ঘোড়া।
গাছপালাময় এক জায়গা থেকেই ট্রেকিং আর হাইকিংয়ের পথের শুরু। কয়েকটি বোর্ডে এই ট্রেইলে কী ধরনের পাখির দেখা মিলতে পারে তা ছবিসহ চিহ্নিত করা হয়েছে। টাইগার নেস্টে উঠতে হয় ঘোরানো-প্যাঁচানো অনেকটা পথ পেরিয়ে। গুম্ফাটা সাগর সমতল থেকে ৩১০০ মিটার উচ্চতায়!
আপনার নিশ্চয় জানতে ইচ্ছা করছে এর নাম টাইগার নেস্ট কেন? বাঘের বাসা আছে কি? ১৬৯২ সালে প্রথম তৈরি হয় এটি। কথিত আছে গুরু রিনপোচ একটা বাঘিনীর পিঠে চড়ে বৌদ্ধ ধর্ম বিস্তারের জন্য তিব্বত থেকে এখানে এসেছিলেন। তাই এমন নামকরণ। অপর একটি কিংবদন্তি বলছে, গুরু তাঁর এক অভিজাত ভক্তের পীড়াপীড়িতে তাঁকে বাঘিনী বানিয়ে পিঠে সওয়ার হয়ে ওঠেন উঁচু পাহাড়টিতে। ওই বাঘিনী নাকি উড়ে পেরিয়েছিল দূরত্বটা।
৪. চেলালা পাস
গাড়িতে করে যাওয়া যায় ভুটানের এমন সবচেয়ে উঁচু জায়গা চেলালা পাস। উচ্চতা ৩ হাজার ৯৮৮ মিটার। পাহাড়ি রাস্তাটা ভয়ানক আঁকাবাঁকা, বিপজ্জনক। অবশ্য ভুটানের চালকেরা সাধারণত গাড়ি চালান সতর্কতার সঙ্গে। কখনো কখনো দূরে পাহাড়ের গায়ে টাইগার নেস্টটের চেহারাও দেখবেন চেলালা পাসে যাওয়ার পথে। উচ্চতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভূপ্রকৃতিতে বৈচিত্র্য নজর কাড়বে। নতুন নতুন প্রজাতির গাছের সঙ্গে পরিচিত হবেন। শীতও বাড়বে। এখানে শীতে এত্তো বরফ পড়ে যে অনেক সময় এই পথ বন্ধ হয়ে যায়। রেসকিউ পার্টি এসে বরফ পরিষ্কার করলেই তবে গাড়ি চলে। এদিকে রাস্তা সরু। উল্টো পাশ থেকে গাড়ি আসে কি না, বুঝতে সতর্ক থাকতে হয়।
চেলালায় পৌঁছে গাড়ি থেকে নামলেই মনে হবে ঠান্ডায় জমে যাচ্ছেন। পাহাড়ের ওপরের দোকান থেকে গরম-গরম পাকোরা, বেসনে চুবানো ফুলকপি খেয়ে উষ্ণতা খুঁজতে পারেন।
পাহাড়ে কিনারে দাঁড়াতেই হিমালয়ের তুষারঢাকা পর্বতমালাগুলো নজর কাড়বে। নিচে এক পাশে পারো ভ্যালি, আরেক পাশে হা ভ্যালি। ওপর থেকে এই উপত্যকার দৃশ্য দেখে চোখ জুড়াবে।
৫. দোচুলা পাস
থিম্পু থেকে পুনাখা যাওয়ার পথে পড়ে দোচুলা পাস। সাগর সমতল থেকে প্রায় ৩ হাজার ১০০ মিটার উচ্চতায় এটি। এখান থেকে হিমালয়ের উঁচু উঁচু বরফঢাকা চূড়াগুলো দেখা যায়। তবে শর্ত আছে একটা, আকাশ থাকতে হবে পরিষ্কার। এদের মধ্যে আছে ভুটানের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মাউন্ট মাসানগাংও। দোচুলা পাসের মূল আকর্ষণ এখানকার স্তুপাগুলো। সাদা-লালে মেশানো এখানকার ১০৮ স্তুপা দেখে চোখ জুড়াবে। বৌদ্ধভিক্ষুদের ধ্যানের জায়গা স্তুপা। এই স্তুপাগুলো বানানো হয় কুইন মাদার আসি দরজি ওয়াংমো ওয়ানচুকের নির্দেশে, ২০০৪ সালে। একটা গুম্ফাও আছে দোচুলায়। অবশ্য ভুটানে দেখা বিভিন্ন প্রাচীন, পুরোনো গুম্ফাগুলোর তুলনায় এটা নেহাত ছোট।
জায়গাটি পড়েছে ভুটানের জাতীয় উদ্ভিদ উদ্যানের সীমানায়। চারপাশে তাই লম্বা লম্বা গাছের রাজত্ব। আশপাশে সাইপ্রেস, ওক ও বার্চ গাছের রাজত্ব। পার্কের সীমানায় হেঁটে বেড়ানোর কয়েকটি ট্রেইল আছে, বিশেষ করে রডোডেনড্রন ট্রেইলটা অনেক সুন্দর। ইন্টারনেট ঘেঁটে জানা, ভুটানের বড় দুটি জঙ্গল জিগমে দর্জি ও জিগমে সিঙ্গির মাঝে প্রাকৃতিক করিডর এই উদ্যান। তাই এখানে বাঘ, চিতা বাঘ আর লাল পান্ডার মতো দুর্লভ বন্য জন্তুর দেখা পাওয়া সম্ভব। তবে এর জন্য সময় ও ধৈর্য দুটোই চাই।
৬. পুনাখা
দোচুলা পাসের পর পুনাখা যাওয়ার পথটা ভারি সুন্দর। ডান পাশে গা ঘেঁষেই উঠে গেছে পাহাড়। তাই তাকিয়ে বেশি কিছু দেখতে পাবেন না। তবে বাঁয়ে তাকালেই চোখ জুড়াবে। একটু দূরে গাছপালায় ঢাকা সবুজ পাহাড়, এখানে-সেখানে দৃষ্টিনন্দন সব বাড়িঘর। কিছুক্ষণ পর বেশ উঁচুতে কয়েকটা স্থাপনা দেখবেন, ওটা নানারি। নারী ভিক্ষুরা ওখানে প্রশিক্ষণ নেন, ধ্যান করেন। বাঁয়ে নদীও চলবে।
পুনাখায় ঢুকে ভেতরের একটা রাস্তা ধরে কিছু দূর গেলে ডান পাশে পাবেন অপরূপ এক নদী। পাথরের ওপর দিয়ে ঝিরঝির করে বয়ে চলেছে জল। ওপরে সেতু। দূরে দেখা দিল পুনাখা জং। একই সঙ্গে দুর্গ আর ধর্মীয় কাঠামো বলতে পারেন এই জংকে। পুনাখা জং তৈরি হয়েছে সেই ১৬৩৭-৩৮ সালে। এখন পুনাখা জেলার প্রশাসনিক সদর দপ্তর। ভুটানি স্থাপত্যরীতিতে তৈরি দালানটি মুগ্ধ করবে আপনাকে। পুনাখা জংয়ের সীমানায় ঢুকতে হয় নদীর ওপর একটা সেতু পেরিয়ে। পুনাখা উপত্যকার দুই নদীর মাঝখানে জংটি। আদপে পো চু হলো নদ, মো চু নদী। পো চোর উৎপত্তি পুনাখার পাহাড়ের হিমবাহের বরফগলা পানিতে হলেও মো চু এসেছে সেই তিব্বতের লাসা থেকে। কাঠের ব্রিজের ওপর থেকে নিচে নদীর স্বচ্ছ জলে মাছ দেখা যায়।
জংয়ের পেছনের গেট পেরিয়ে রওনা দেবেন ঝুলন্ত সেতুর দিকে। প্রথমে দুই পশে গাছপালার গার্ড দেওয়া পাকা সড়ক, তারপর পাহাড়ের পাশ দিয়ে চলে যাওয়া মেঠোপথে। ৫০০ ফুটের বেশি লম্বা ঝুলন্ত সেতুটা সাং চু নদীর ওপর। দুই পাশে সিমেন্টের ব্লকের মাঝখানে শক্ত তার দিয়ে তৈরি। হাঁটার সময় সেতুর সঙ্গে দুলতে থাকবেন আপনিও। সেতুর গায়ে অনেক রঙিন পতাকা, সব সময়ই নাকি এই সেতুতে এমন অজস্র পতাকা ঝোলে অশুভ আত্মাদের দূরে রাখতে। ঝুলন্ত সেতু থেকে নিচের নদীটা ধরা দেবে আরও মোহনীয় চেহারায়। রাফটিং করতে দেখবেন মানুষকে। ওপাশে পাহাড়, সমতলে ধানখেত—সবকিছুই দারুণ! এই সেতুর ওপর দিয়ে মানুষ তো বটেই; বিভিন্ন গবাদিপশুও চলাচল করে।
৭. বুমথাং উপত্যকা
ভুটানিদের কাছে ধর্মীয় দিক থেকে অনেক গুরুত্বপূর্ণ জায়গা এটি। প্রায় ২ হাজার ৬০০ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত বুমথামে অনেক পুরোনো বৌদ্ধমন্দির আছে।
পর্যটকদের, বিশেষ করে বিদেশি পর্যটকদের কাছে খুব প্রিয় এক গন্তব্য এটি। এখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য মুগ্ধ করে তাঁদের। পুনাখা থেকে বুমথাং যাওয়ার পথে খাড়া পাহাড়ের ওপর মেঘের রাজ্যে ট্রংসা জংও পর্যটকদের কাছে বড় আকর্ষণ। ওই পথেই বেশ কয়েকটি ঝর্ণাও চোখে পড়ে। এগুলোর জল অবশ্য শীতে জমে বরফ হয়ে থাকে। প্রচুর আপেল বাগানেরও দেখা মেলে এই উপত্যকায়। অনেক পর্যটকই একে আদর করে ডাকেন ‘পুবের সুইজারল্যান্ড’। নানা ধরনের উৎসবের জন্যও বিখ্যাত জায়গাটি।
৮. হা ভ্যালি
হা ভ্যালি বা হা উপত্যকা ইদানীং ভুটানে বেড়াতে আসা পর্যটকদের খুব প্রিয় এক গন্তব্যে পরিণত হয়েছে। উপত্যকাটি বিখ্যাত এখানকার অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য। এর পাশাপাশি দৃষ্টিনন্দন কয়েকটি দুর্গ ও বৌদ্ধমন্দির আছে। এগুলোর মধ্যে অন্যতম লাখাং কারপো (সাদা মন্দির) ও লাখাং নাগপো (কালো মন্দির), ১০০ বছরের পুরোনো মন্দির তাগচু গোয়েম্বা। দবিজ জং নামে পাহাড়চূড়ার পাঁচতলা দুর্গটিও এখানকার বিখ্যাত গন্তব্যগুলোর একটি। পারো থেকে দূরত্ব বেশি না হওয়ায় অনায়াসে সেখানে একটি কিংবা দুটি দিন কাটাতে পারেন।
৯. ফুন্টসলিং
বিশেষ করে যেসব বাংলাদেশি পর্যটক ভারত হয়ে ভুটানে ঢোকেন, তাঁদের কাছে বেশ পরিচিত ফুন্টসলিং। ছোট্ট এই শহরে আছে কুমির প্রজননকেন্দ্র, ভুটান গেট, মনাস্ট্রি। ফুন্টসলিংয়ের উঁচুনিচু রাস্তা ধরে হেঁটে বেড়ানোর মজাই আলাদা। রাস্তার পাশেই ছোট-বড় শপিংমল, হোটেল-রেস্তোরাঁ, বাহারি ফুলের দোকান পাবেন। বাজারে আশপাশের পাহাড়ে উৎপাদিত নানা ফল পাবেন। মোটের ওপর নীরব, শান্তিময় প্রাকৃতিক পরিবেশে যাঁরা দুটি দিন কাটাতে চান, তাঁরা ভুটান ভ্রমণের সময় শহরটির জন্য দুটি দিন রাখতে পারেন।
১০. ওয়াংদুয়ে ফোদরাং
ভুটানের আর একটি বিখ্যাত গন্তব্য। পুনাখার দক্ষিণে অবস্থিত ওয়াংদুয়ে ফোদরাং সেন্ট্রাল হাইওয়ে ধরে মধ্য ভুটানে পৌঁছার আগে সর্বশেষ শহর। ওয়াংদুয়ে ফোদরাং উপত্যকার ওপরের অংশ পশু চারণভূমি হিসেবে খুব বিখ্যাত। বাঁশের নানা সামগ্রী এবং স্লেট ও নানান পাথর কুঁদে তৈরি বিভিন্ন জিনিসের জন্যও আলাদা নাম আছে জায়গাটির।
পুনাখা চু ও তাং চু নদীর সংযোগস্থলে এক পাহাড়ের ওপর অবস্থিত ওয়াংদুয়ে ফোদরাং জংও আকৃষ্ট করে পর্যটকদের।
সূত্র. হিমালয়ান গ্লেসিয়ার. কম, থ্রিলো ফিলিয়া ডট কম, উইকিপিডিয়া
ভ্রমণ সম্পর্কিত আরও পড়ুন:

আশ্চর্য সুন্দর পাহাড়, ঝিরঝির করে বয়ে চলা শীতল জলের নদী, পাহাড়চূড়ার বৌদ্ধমন্দির—সবকিছু মিলিয়ে দক্ষিণ এশিয়ার দেশ ভুটানের মতো চমৎকার ভ্রমণ গন্তব্য আছে কমই।
ভুটানি রীতির বাড়ি-ঘরগুলোও নজর কাড়ে পর্যটকদের। লাল-সাদা রঙের কাঠের সামনের অংশ, ছোট জানালা, ঢালু ছাদ প্রতিটি বাড়ির। তেমনি মৌসুমে আপেল, কমলাসহ নানা ধরনের বাগানের সৌন্দর্যও উপভোগ করতে পারবেন। হরেক জাতের বন্যপ্রাণীর আবাসও দেশটিতে। আবহাওয়াও খুব আরামদায়ক। হবে না-ই বা কেন? এটি যে কার্বন নেগেটিভ কান্ট্রি (যে পরিমাণ কার্বন ছাড়ে, তার চেয়ে শোষণক্ষমতা বেশি)। ভুটানে অসাধারণ সুন্দর সব জায়গার মধ্যে আপাতত ১০টিকে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছি।
১. থিম্পু
ভুটানের রাজধানী শহরটিতে দেখার মতো অনেক কিছুই আছে। পাহাড়চূড়ার বুদ্ধ পয়েন্টের বড় আকর্ষণ গৌতম বুদ্ধের বিশাল এক সোনালি মূর্তি। ২০০৬ সালে কাজ শুরু হলেও ১৬৯ ফুট উঁচু বুদ্ধ ভাস্কর্য এবং অন্যান্য মূর্তিসহ গোটা কমপ্লেক্সের উদ্বোধন হয় ২০১৫। কয়েকটা সিঁড়ি পেরিয়ে ভেতরে গিয়ে ছোট ছোট আরও অনেক বুদ্ধমূর্তির দেখা পাবেন।
বিভিন্ন তাকে সাজিয়ে রাখা। সঙ্গের গাইড যখন জানাবেন আট ইঞ্চি দৈর্ঘ্যের এক লাখ এবং ১২ ইঞ্চি দৈর্ঘ্যের ২৫ হাজার ব্রোঞ্জের বুদ্ধ স্ট্যাচু আছে এখানে, তখন রীতিমতো চমকাবেন।
বিশাল চত্বর থেকে উপভোগ করবেন চারপাশের তুষারের টুপি পরা উঁচু সব পর্বতের রূপ। চত্বরে বেশ কিছু মাঝারি আকারের মূর্তি আছে। বুদ্ধ পয়েন্ট এখন থিম্পুর অঘোষিত প্রতীকে পরিণত হয়েছে।
শহরের ভেতর দিয়ে এঁকেবেঁকে বয়ে চলা পাহাড়ি নদী চু মুগ্ধ করবে আপনাকে। শহর থেকে গাড়িতে চেপে মিনিট পনেরো-কুড়ি গেলে পৌঁছে যাবেন ‘জিগমে দরজি ন্যাশনাল পার্কে’। এই বনের আয়তন কম নয়, ৪ হাজার ৩১৬ বর্গকিলোমিটার। গোটা ভুটানের প্রায় ৯ ভাগের এক ভাগ। মোটামুটি ১ হাজার ৬০০ থেকে ৭ হাজার ১০০ মিটার উচ্চতার এলাকা আছে এর আওতায়। ট্র্যাকারদের স্বর্গরাজ্য জিগমে দর্জি জাতীয় উদ্যান, বিশেষ করে ইউরোপ-আমেরিকার প্রচুর ট্র্যাকার এই জঙ্গলে ঘুরে বেড়ান। বনে বাঘ ছাড়া মিলবে মেঘলা চিতা, মাস্ক ডিয়ার, বন্য কুকুর, হিমালয়ান কালো ভালুক, লাল পান্ডার মতো প্রাণীদের। হিমালয়ের তুষারছাওয়া উঁচু সব শৃঙ্গও পড়েছে এর সীমানায়। ভুটানের জাতীয় প্রাণী টাকিনও সবচেয়ে বেশি পাওয়া যায় এই জঙ্গলে। আধা গরু-আধা ছাগল বলতে পারেন এই জন্তুটিকে। অবশ্য এই প্রাণীকে সহজে দেখতে চাইলে যেতে পারেন থিম্পুর টাকিন রিজার্ভে।
২. পারো
পারোর কথা বলতে গেলে প্রথমেই বলতে হয় এর আশ্চর্য সুন্দর বিমানবন্দরটির কথা। প্লেন থেকে নামার সঙ্গে সঙ্গে আরামদায়ক, শীতল এক বাতাস আপনার শরীর জুড়িয়ে দেবে। রানওয়ের পরেই পাহাড়সারি মনটা ভালো করে দেবে। নেট ঘেঁটে যতটা জানতে পেরেছি, পারো শহরটা গড়ে উঠেছে বেশি দিন হয়নি, ১৯৮৫ সালে একটা মূল সড়ক দিয়ে এর শুরু। তখন এর দুই পাশে ছিল কেবল বর্ণিল সব দোকান। ধীরে ধীরে আরও দালানকোঠা হয়।
ভুটানের জাতীয় জাদুঘর পারোতেই। পাহাড়ের ওপরে। মূল ভবনটি গোল, ঐতিহ্যবাহী লাল-সাদা এক দালান। তা জং নামে পরিচিত বহু পুরোনো এই বিল্ডিংটাকে ভুটানের তৃতীয় রাজা জিগমে দর্জি ওয়ানচুকের নির্দেশে ১৯৬৮ সালে সংস্কার করে জাদুঘরে রূপান্তর করা হয়। তা জং মানে হলো ওয়াচ টাওয়ার। সত্যি এখানে দাঁড়ালে নিচের পারো উপত্যকা নিমেষে চোখের সামনে চলে আসবে। তবে প্রথমে নজর যাবে দুটি জংয়ের দিকে। বেশি মশহুর রিনপাং জং। এটা একই সঙ্গে দুর্গ এবং বৌদ্ধমন্দির বা গুম্ফা। এখন পারোর প্রশাসনিক সদর দপ্তর। এখান থেকে সবুজ পারো উপত্যকায়, মাঝে মাঝে বর্ণিল সব ভুটানি বাড়ি-ঘর, ফসলের খেত চোখ জুড়িয়ে দেবে।
শহরের বাইরের দিকটা কেমন মায়া মাখানো। বড় জায়গা নিয়ে কয়েকটা রিসোর্ট, ভুটানিদের ছোট ফার্ম হাউস, চাষ করা জমিগুলো দৃষ্টি আকর্ষণ করবে। পারো শহর কেটে চলে গেছে ভুটানের বড় নদীগুলোর একটি পা চু।
৩. টাইগার নেস্ট
ভুটানের নাম শুনলে কোন দৃশ্যটা সবার আগে মনের পর্দায় ভাসতে থাকে, বলুন তো? আমিই বলে দিচ্ছি, উঁচু পাহাড়ের চাতালে ঝুলতে থাকা অনিন্দ্যসুন্দর এক মনাস্ট্রি বা গুম্ফা। কথাটা আমার নিজের বেলায়ও খাটে। প্রথম যখন ভুটান ভ্রমণের কথা ভাবছিলাম, মাথায় ঘুরছিল টাইগার নেস্ট বা পারো টেকটসাংয়ের ছবিই। পারো শহর থেকে টাইগার নেস্টের নিচের পার্ক মতো জায়গাটিতে পৌঁছাতে মিনিট ২৫-৩০ লাগবে। ঢংঢং শব্দে কয়েকটা সেতু পেরোবেন পথে। এর মধ্যে একটা বেশ বড়। টাইগার নেস্ট বা ‘বাঘের বাসা’র মূল প্রবেশপথের বাইরে হরেক জাতের স্যুভেনির নিয়ে বসেন বিক্রেতারা। কতক দূর যেতেই মোটামুটি খোলামেলা, তবে একটু এবড়োখেবড়ো এক জমিতে অনেকগুলো ঘোড়া চড়তে দেখবেন। যাঁরা পাহাড় বাইতে সাহস করেন না, তাঁদের চূড়ায় পৌঁছে দেবে এই ঘোড়া।
গাছপালাময় এক জায়গা থেকেই ট্রেকিং আর হাইকিংয়ের পথের শুরু। কয়েকটি বোর্ডে এই ট্রেইলে কী ধরনের পাখির দেখা মিলতে পারে তা ছবিসহ চিহ্নিত করা হয়েছে। টাইগার নেস্টে উঠতে হয় ঘোরানো-প্যাঁচানো অনেকটা পথ পেরিয়ে। গুম্ফাটা সাগর সমতল থেকে ৩১০০ মিটার উচ্চতায়!
আপনার নিশ্চয় জানতে ইচ্ছা করছে এর নাম টাইগার নেস্ট কেন? বাঘের বাসা আছে কি? ১৬৯২ সালে প্রথম তৈরি হয় এটি। কথিত আছে গুরু রিনপোচ একটা বাঘিনীর পিঠে চড়ে বৌদ্ধ ধর্ম বিস্তারের জন্য তিব্বত থেকে এখানে এসেছিলেন। তাই এমন নামকরণ। অপর একটি কিংবদন্তি বলছে, গুরু তাঁর এক অভিজাত ভক্তের পীড়াপীড়িতে তাঁকে বাঘিনী বানিয়ে পিঠে সওয়ার হয়ে ওঠেন উঁচু পাহাড়টিতে। ওই বাঘিনী নাকি উড়ে পেরিয়েছিল দূরত্বটা।
৪. চেলালা পাস
গাড়িতে করে যাওয়া যায় ভুটানের এমন সবচেয়ে উঁচু জায়গা চেলালা পাস। উচ্চতা ৩ হাজার ৯৮৮ মিটার। পাহাড়ি রাস্তাটা ভয়ানক আঁকাবাঁকা, বিপজ্জনক। অবশ্য ভুটানের চালকেরা সাধারণত গাড়ি চালান সতর্কতার সঙ্গে। কখনো কখনো দূরে পাহাড়ের গায়ে টাইগার নেস্টটের চেহারাও দেখবেন চেলালা পাসে যাওয়ার পথে। উচ্চতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভূপ্রকৃতিতে বৈচিত্র্য নজর কাড়বে। নতুন নতুন প্রজাতির গাছের সঙ্গে পরিচিত হবেন। শীতও বাড়বে। এখানে শীতে এত্তো বরফ পড়ে যে অনেক সময় এই পথ বন্ধ হয়ে যায়। রেসকিউ পার্টি এসে বরফ পরিষ্কার করলেই তবে গাড়ি চলে। এদিকে রাস্তা সরু। উল্টো পাশ থেকে গাড়ি আসে কি না, বুঝতে সতর্ক থাকতে হয়।
চেলালায় পৌঁছে গাড়ি থেকে নামলেই মনে হবে ঠান্ডায় জমে যাচ্ছেন। পাহাড়ের ওপরের দোকান থেকে গরম-গরম পাকোরা, বেসনে চুবানো ফুলকপি খেয়ে উষ্ণতা খুঁজতে পারেন।
পাহাড়ে কিনারে দাঁড়াতেই হিমালয়ের তুষারঢাকা পর্বতমালাগুলো নজর কাড়বে। নিচে এক পাশে পারো ভ্যালি, আরেক পাশে হা ভ্যালি। ওপর থেকে এই উপত্যকার দৃশ্য দেখে চোখ জুড়াবে।
৫. দোচুলা পাস
থিম্পু থেকে পুনাখা যাওয়ার পথে পড়ে দোচুলা পাস। সাগর সমতল থেকে প্রায় ৩ হাজার ১০০ মিটার উচ্চতায় এটি। এখান থেকে হিমালয়ের উঁচু উঁচু বরফঢাকা চূড়াগুলো দেখা যায়। তবে শর্ত আছে একটা, আকাশ থাকতে হবে পরিষ্কার। এদের মধ্যে আছে ভুটানের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মাউন্ট মাসানগাংও। দোচুলা পাসের মূল আকর্ষণ এখানকার স্তুপাগুলো। সাদা-লালে মেশানো এখানকার ১০৮ স্তুপা দেখে চোখ জুড়াবে। বৌদ্ধভিক্ষুদের ধ্যানের জায়গা স্তুপা। এই স্তুপাগুলো বানানো হয় কুইন মাদার আসি দরজি ওয়াংমো ওয়ানচুকের নির্দেশে, ২০০৪ সালে। একটা গুম্ফাও আছে দোচুলায়। অবশ্য ভুটানে দেখা বিভিন্ন প্রাচীন, পুরোনো গুম্ফাগুলোর তুলনায় এটা নেহাত ছোট।
জায়গাটি পড়েছে ভুটানের জাতীয় উদ্ভিদ উদ্যানের সীমানায়। চারপাশে তাই লম্বা লম্বা গাছের রাজত্ব। আশপাশে সাইপ্রেস, ওক ও বার্চ গাছের রাজত্ব। পার্কের সীমানায় হেঁটে বেড়ানোর কয়েকটি ট্রেইল আছে, বিশেষ করে রডোডেনড্রন ট্রেইলটা অনেক সুন্দর। ইন্টারনেট ঘেঁটে জানা, ভুটানের বড় দুটি জঙ্গল জিগমে দর্জি ও জিগমে সিঙ্গির মাঝে প্রাকৃতিক করিডর এই উদ্যান। তাই এখানে বাঘ, চিতা বাঘ আর লাল পান্ডার মতো দুর্লভ বন্য জন্তুর দেখা পাওয়া সম্ভব। তবে এর জন্য সময় ও ধৈর্য দুটোই চাই।
৬. পুনাখা
দোচুলা পাসের পর পুনাখা যাওয়ার পথটা ভারি সুন্দর। ডান পাশে গা ঘেঁষেই উঠে গেছে পাহাড়। তাই তাকিয়ে বেশি কিছু দেখতে পাবেন না। তবে বাঁয়ে তাকালেই চোখ জুড়াবে। একটু দূরে গাছপালায় ঢাকা সবুজ পাহাড়, এখানে-সেখানে দৃষ্টিনন্দন সব বাড়িঘর। কিছুক্ষণ পর বেশ উঁচুতে কয়েকটা স্থাপনা দেখবেন, ওটা নানারি। নারী ভিক্ষুরা ওখানে প্রশিক্ষণ নেন, ধ্যান করেন। বাঁয়ে নদীও চলবে।
পুনাখায় ঢুকে ভেতরের একটা রাস্তা ধরে কিছু দূর গেলে ডান পাশে পাবেন অপরূপ এক নদী। পাথরের ওপর দিয়ে ঝিরঝির করে বয়ে চলেছে জল। ওপরে সেতু। দূরে দেখা দিল পুনাখা জং। একই সঙ্গে দুর্গ আর ধর্মীয় কাঠামো বলতে পারেন এই জংকে। পুনাখা জং তৈরি হয়েছে সেই ১৬৩৭-৩৮ সালে। এখন পুনাখা জেলার প্রশাসনিক সদর দপ্তর। ভুটানি স্থাপত্যরীতিতে তৈরি দালানটি মুগ্ধ করবে আপনাকে। পুনাখা জংয়ের সীমানায় ঢুকতে হয় নদীর ওপর একটা সেতু পেরিয়ে। পুনাখা উপত্যকার দুই নদীর মাঝখানে জংটি। আদপে পো চু হলো নদ, মো চু নদী। পো চোর উৎপত্তি পুনাখার পাহাড়ের হিমবাহের বরফগলা পানিতে হলেও মো চু এসেছে সেই তিব্বতের লাসা থেকে। কাঠের ব্রিজের ওপর থেকে নিচে নদীর স্বচ্ছ জলে মাছ দেখা যায়।
জংয়ের পেছনের গেট পেরিয়ে রওনা দেবেন ঝুলন্ত সেতুর দিকে। প্রথমে দুই পশে গাছপালার গার্ড দেওয়া পাকা সড়ক, তারপর পাহাড়ের পাশ দিয়ে চলে যাওয়া মেঠোপথে। ৫০০ ফুটের বেশি লম্বা ঝুলন্ত সেতুটা সাং চু নদীর ওপর। দুই পাশে সিমেন্টের ব্লকের মাঝখানে শক্ত তার দিয়ে তৈরি। হাঁটার সময় সেতুর সঙ্গে দুলতে থাকবেন আপনিও। সেতুর গায়ে অনেক রঙিন পতাকা, সব সময়ই নাকি এই সেতুতে এমন অজস্র পতাকা ঝোলে অশুভ আত্মাদের দূরে রাখতে। ঝুলন্ত সেতু থেকে নিচের নদীটা ধরা দেবে আরও মোহনীয় চেহারায়। রাফটিং করতে দেখবেন মানুষকে। ওপাশে পাহাড়, সমতলে ধানখেত—সবকিছুই দারুণ! এই সেতুর ওপর দিয়ে মানুষ তো বটেই; বিভিন্ন গবাদিপশুও চলাচল করে।
৭. বুমথাং উপত্যকা
ভুটানিদের কাছে ধর্মীয় দিক থেকে অনেক গুরুত্বপূর্ণ জায়গা এটি। প্রায় ২ হাজার ৬০০ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত বুমথামে অনেক পুরোনো বৌদ্ধমন্দির আছে।
পর্যটকদের, বিশেষ করে বিদেশি পর্যটকদের কাছে খুব প্রিয় এক গন্তব্য এটি। এখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য মুগ্ধ করে তাঁদের। পুনাখা থেকে বুমথাং যাওয়ার পথে খাড়া পাহাড়ের ওপর মেঘের রাজ্যে ট্রংসা জংও পর্যটকদের কাছে বড় আকর্ষণ। ওই পথেই বেশ কয়েকটি ঝর্ণাও চোখে পড়ে। এগুলোর জল অবশ্য শীতে জমে বরফ হয়ে থাকে। প্রচুর আপেল বাগানেরও দেখা মেলে এই উপত্যকায়। অনেক পর্যটকই একে আদর করে ডাকেন ‘পুবের সুইজারল্যান্ড’। নানা ধরনের উৎসবের জন্যও বিখ্যাত জায়গাটি।
৮. হা ভ্যালি
হা ভ্যালি বা হা উপত্যকা ইদানীং ভুটানে বেড়াতে আসা পর্যটকদের খুব প্রিয় এক গন্তব্যে পরিণত হয়েছে। উপত্যকাটি বিখ্যাত এখানকার অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য। এর পাশাপাশি দৃষ্টিনন্দন কয়েকটি দুর্গ ও বৌদ্ধমন্দির আছে। এগুলোর মধ্যে অন্যতম লাখাং কারপো (সাদা মন্দির) ও লাখাং নাগপো (কালো মন্দির), ১০০ বছরের পুরোনো মন্দির তাগচু গোয়েম্বা। দবিজ জং নামে পাহাড়চূড়ার পাঁচতলা দুর্গটিও এখানকার বিখ্যাত গন্তব্যগুলোর একটি। পারো থেকে দূরত্ব বেশি না হওয়ায় অনায়াসে সেখানে একটি কিংবা দুটি দিন কাটাতে পারেন।
৯. ফুন্টসলিং
বিশেষ করে যেসব বাংলাদেশি পর্যটক ভারত হয়ে ভুটানে ঢোকেন, তাঁদের কাছে বেশ পরিচিত ফুন্টসলিং। ছোট্ট এই শহরে আছে কুমির প্রজননকেন্দ্র, ভুটান গেট, মনাস্ট্রি। ফুন্টসলিংয়ের উঁচুনিচু রাস্তা ধরে হেঁটে বেড়ানোর মজাই আলাদা। রাস্তার পাশেই ছোট-বড় শপিংমল, হোটেল-রেস্তোরাঁ, বাহারি ফুলের দোকান পাবেন। বাজারে আশপাশের পাহাড়ে উৎপাদিত নানা ফল পাবেন। মোটের ওপর নীরব, শান্তিময় প্রাকৃতিক পরিবেশে যাঁরা দুটি দিন কাটাতে চান, তাঁরা ভুটান ভ্রমণের সময় শহরটির জন্য দুটি দিন রাখতে পারেন।
১০. ওয়াংদুয়ে ফোদরাং
ভুটানের আর একটি বিখ্যাত গন্তব্য। পুনাখার দক্ষিণে অবস্থিত ওয়াংদুয়ে ফোদরাং সেন্ট্রাল হাইওয়ে ধরে মধ্য ভুটানে পৌঁছার আগে সর্বশেষ শহর। ওয়াংদুয়ে ফোদরাং উপত্যকার ওপরের অংশ পশু চারণভূমি হিসেবে খুব বিখ্যাত। বাঁশের নানা সামগ্রী এবং স্লেট ও নানান পাথর কুঁদে তৈরি বিভিন্ন জিনিসের জন্যও আলাদা নাম আছে জায়গাটির।
পুনাখা চু ও তাং চু নদীর সংযোগস্থলে এক পাহাড়ের ওপর অবস্থিত ওয়াংদুয়ে ফোদরাং জংও আকৃষ্ট করে পর্যটকদের।
সূত্র. হিমালয়ান গ্লেসিয়ার. কম, থ্রিলো ফিলিয়া ডট কম, উইকিপিডিয়া
ভ্রমণ সম্পর্কিত আরও পড়ুন:

সুস্থ, সচেতন ও সক্রিয় নগরজীবন গঠনের বিভিন্ন আন্দোলন আছে ঢাকা শহরে। আছে তাদের নিয়মিত ইভেন্ট। এ ইতিহাসে যুক্ত হলো ‘ঢাকা ড্যাশ ৩০-কে’ ম্যারাথন। এর আয়োজক ছিল ক্রীড়া প্রতিষ্ঠান ট্রায়াথলন ড্রিমার্স। আয়োজক সূত্রে জানা গেছে, এটি ছিল ঢাকায় অনুষ্ঠিত দেশের প্রথম এআইএমএস সার্টিফায়েড ৩০ কিলোমিটার ম্যারাথন।...
৬ ঘণ্টা আগে
আমাদের শরীর ও মন পরস্পর ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত। আমরা যখন দুশ্চিন্তা করি বা মানসিক চাপে থাকি, তখন শরীরে এর প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়; যা আমাদের স্নায়ুতন্ত্রকে প্রভাবিত করে এবং এর ফলে অনেক সময় শরীরে চুলকানি বা জ্বালাপোড়ার মতো হতে পারে। এই অবস্থাকেই বলে ‘অ্যাংজাইটি ইচিং’ বা উদ্বেগজনিত চুলকানি।...
৮ ঘণ্টা আগে
বিলাসিতা কেমন হতে পারে? এর উত্তর খুঁজতে গেলে আমাদের চোখ চলে যায় পৃথিবীর সেই সব বিরল উপাদানের দিকে, যেগুলোর মূল্য প্রায় আকাশছোঁয়া। এই উপাদানগুলোর দুর্লভতা এবং অনন্যতাই তাদের করে তুলেছে বিশেষ। যারা জীবনের সেরা জিনিসগুলোর খোঁজ করেন তাদের জন্য এই ধরনের খাবার উপভোগ করতে পারা একটি বিশেষ চাহিদা হতে পারে।
১৪ ঘণ্টা আগে
আপনি যদি ২৫ সালের শেষে এসে বারবার ভাবেন, "সময় কোথায় গেল? " তবে জেনে রাখুন, এই অনুভূতি কেবল আপনার একার নয়। সময় মুহূর্তের মধ্যে ফুরিয়ে যায় নদীর স্রোতের মতন। দেখতে দেখতে আমরা আরও একটি বছরের প্রায় শেষ প্রান্তে পৌঁছে গেছি। তবে চিন্তার কিছু নেই, কারণ নতুন বছর আমাদের জন্য নতুন করে ঘুরে দেখার আর
১৬ ঘণ্টা আগেফিচার ডেস্ক, ঢাকা

সুস্থ, সচেতন ও সক্রিয় নগরজীবন গঠনের বিভিন্ন আন্দোলন আছে ঢাকা শহরে। আছে তাদের নিয়মিত ইভেন্ট। এ ইতিহাসে যুক্ত হলো ‘ঢাকা ড্যাশ ৩০-কে’ ম্যারাথন। এর আয়োজক ছিল ক্রীড়া প্রতিষ্ঠান ট্রায়াথলন ড্রিমার্স। আয়োজক সূত্রে জানা গেছে, এটি ছিল ঢাকায় অনুষ্ঠিত দেশের প্রথম এআইএমএস সার্টিফায়েড ৩০ কিলোমিটার ম্যারাথন।
গতকাল ১২ ডিসেম্বর রাজধানীর হাতিরঝিলে অনুষ্ঠিত হয়েছে ঢাকা ড্যাশ ৩০-কে নামের এই ম্যারাথনটি। ‘এক শহর, এক দৌড়, এক ইতিহাস’ স্লোগানে আয়োজিত এ আন্তর্জাতিক রোড রেসে অংশ নেন হাজারো দৌড়বিদ। এদের মধ্যে ছিলেন দেশ-বিদেশের অভিজ্ঞ রানার ও শৌখিন অ্যাথলেটরা।

ঢাকার হাতিরঝিল অ্যাম্ফিথিয়েটার থেকে ভোর ৪টা ৩০ মিনিটে ৩০ কিলোমিটার ক্যাটাগির এ ম্যারাথনের উদ্বোধন করা হয়। এ ছাড়া ১৫ এবং ৭ দশমিক ৫ কিলোমিটার রেসের উদ্বোধন হয় ভোর ৫টা। অংশগ্রহণকারী দৌড়বিদেরা হাতিরঝিলের চারপাশে বিস্তৃত একটি চ্যালেঞ্জিং ও মনোরম ট্র্যাকে তাঁদের দৌড় সম্পন্ন করেন।
আয়োজকেরা জানিয়েছেন, এ ইভেন্টে অন্তর্ভুক্ত ছিল চারটি প্রতিযোগিতা ক্যাটাগরি। এগুলো হলো,
৩০ কিলোমিটার ম্যারাথনে ছেলেদের মধ্যে চ্যাম্পিয়ন হন মামুন আহম্মেদ। দৌড়ের পথ শেষ করতে তিনি সময় নেন ১ ঘণ্টা ৫৩ মিনিট ৪৭ সেকেন্ড। একই ইভেন্টে মেয়েদের মধ্যে চ্যাম্পিয়ন হন হামিদা আক্তার জেবা। তিনি শেষ করতে সময় নিয়েছে ২ ঘণ্টা ৪৪ মিনিট ৫৩ সেকেন্ড।
এদিকে ১৫ কিলোমিটার ম্যারাথনে ছেলেদের মধ্যে চ্যাম্পিয়ন হন পলাশ শেখ। এ পথ শেষ করতে তিনি সময় নেন ৫৩ মিনিট ৩৭ সেকেন্ড। একই ইভেন্টে মেয়েদের মধ্যে চ্যাম্পিয়ন হন সাজিয়া হেপ্পি। তিনি দৌড় শেষ করতে সময় নেন ১ ঘণ্টা ২১ মিনিট ৭ সেকেন্ড।

৭ দশমিক ৫ কিলোমিটার ম্যারাথনে ছেলেদের মধ্যে চ্যাম্পিয়ন হন মোস্তাক আহমেদ আভিন। দৌড় শেষ করতে তিনি সময় নেন ২৬ মিনিট ৫৭ সেকেন্ড। একই ইভেন্টে মেয়েদের মধ্যে চ্যাম্পিয়ন হন সাবরিনা আক্তার স্বর্ণা। তিনি ৭ দশমিক ৫ কিলোমিটার দৌড় শেষ করতে সময় নিয়েছেন ৪৩ মিনিট ৫৩ সেকেন্ড।
এ ছাড়া এক কিলোমিটার ওভারল চ্যাম্পিয়ন হয় সাইফান ওময়ের।
দৌড়বিদদের সুবিধার্থে ইভেন্ট এরিয়ায় স্থাপন করা হয়েছিল মেডিকেল সাপোর্ট সিস্টেম, একাধিক হাইড্রেশন ও কুলিং জোন, লাইভ টাইমিং সুবিধা। ইভেন্ট নিরাপদ করতে ছিল শক্তিশালী নিরাপত্তা ব্যবস্থা। এ ইভেন্টে কাজ করেন শতাধিক প্রশিক্ষিত স্বেচ্ছাসেবক। পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিবিড় সহযোগিতায় ইভেন্ট ব্যবস্থাপনা ছিল অত্যন্ত সমন্বিত।

ঢাকা ড্যাশ ৩০-কে ম্যারাথন রেস ডিরেক্টর মো. আল-আমীন বলেন, ‘ঢাকা ড্যাশ ৩০-কে শুধু একটি রেস নয়, এটি একটি সুস্থ, সচেতন ও সক্রিয় নগরজীবন গঠনের আন্দোলন। আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে, দৌড়ের পাশাপাশি আমরা চাই ঢাকাকে একটি প্রাণবন্ত ও ইতিবাচক শহরে রূপান্তরিত করতে।’
আন্তর্জাতিক সার্টিফিকেশন, বিশাল অংশগ্রহণ, পেশাদার ব্যবস্থাপনা এবং নিরাপদ আয়োজন, সব মিলিয়ে ঢাকা ড্যাশ ৩০-কে আজ বাংলাদেশের দৌড় ইতিহাসে নতুন অধ্যায়ের সূচনা করল।

সুস্থ, সচেতন ও সক্রিয় নগরজীবন গঠনের বিভিন্ন আন্দোলন আছে ঢাকা শহরে। আছে তাদের নিয়মিত ইভেন্ট। এ ইতিহাসে যুক্ত হলো ‘ঢাকা ড্যাশ ৩০-কে’ ম্যারাথন। এর আয়োজক ছিল ক্রীড়া প্রতিষ্ঠান ট্রায়াথলন ড্রিমার্স। আয়োজক সূত্রে জানা গেছে, এটি ছিল ঢাকায় অনুষ্ঠিত দেশের প্রথম এআইএমএস সার্টিফায়েড ৩০ কিলোমিটার ম্যারাথন।
গতকাল ১২ ডিসেম্বর রাজধানীর হাতিরঝিলে অনুষ্ঠিত হয়েছে ঢাকা ড্যাশ ৩০-কে নামের এই ম্যারাথনটি। ‘এক শহর, এক দৌড়, এক ইতিহাস’ স্লোগানে আয়োজিত এ আন্তর্জাতিক রোড রেসে অংশ নেন হাজারো দৌড়বিদ। এদের মধ্যে ছিলেন দেশ-বিদেশের অভিজ্ঞ রানার ও শৌখিন অ্যাথলেটরা।

ঢাকার হাতিরঝিল অ্যাম্ফিথিয়েটার থেকে ভোর ৪টা ৩০ মিনিটে ৩০ কিলোমিটার ক্যাটাগির এ ম্যারাথনের উদ্বোধন করা হয়। এ ছাড়া ১৫ এবং ৭ দশমিক ৫ কিলোমিটার রেসের উদ্বোধন হয় ভোর ৫টা। অংশগ্রহণকারী দৌড়বিদেরা হাতিরঝিলের চারপাশে বিস্তৃত একটি চ্যালেঞ্জিং ও মনোরম ট্র্যাকে তাঁদের দৌড় সম্পন্ন করেন।
আয়োজকেরা জানিয়েছেন, এ ইভেন্টে অন্তর্ভুক্ত ছিল চারটি প্রতিযোগিতা ক্যাটাগরি। এগুলো হলো,
৩০ কিলোমিটার ম্যারাথনে ছেলেদের মধ্যে চ্যাম্পিয়ন হন মামুন আহম্মেদ। দৌড়ের পথ শেষ করতে তিনি সময় নেন ১ ঘণ্টা ৫৩ মিনিট ৪৭ সেকেন্ড। একই ইভেন্টে মেয়েদের মধ্যে চ্যাম্পিয়ন হন হামিদা আক্তার জেবা। তিনি শেষ করতে সময় নিয়েছে ২ ঘণ্টা ৪৪ মিনিট ৫৩ সেকেন্ড।
এদিকে ১৫ কিলোমিটার ম্যারাথনে ছেলেদের মধ্যে চ্যাম্পিয়ন হন পলাশ শেখ। এ পথ শেষ করতে তিনি সময় নেন ৫৩ মিনিট ৩৭ সেকেন্ড। একই ইভেন্টে মেয়েদের মধ্যে চ্যাম্পিয়ন হন সাজিয়া হেপ্পি। তিনি দৌড় শেষ করতে সময় নেন ১ ঘণ্টা ২১ মিনিট ৭ সেকেন্ড।

৭ দশমিক ৫ কিলোমিটার ম্যারাথনে ছেলেদের মধ্যে চ্যাম্পিয়ন হন মোস্তাক আহমেদ আভিন। দৌড় শেষ করতে তিনি সময় নেন ২৬ মিনিট ৫৭ সেকেন্ড। একই ইভেন্টে মেয়েদের মধ্যে চ্যাম্পিয়ন হন সাবরিনা আক্তার স্বর্ণা। তিনি ৭ দশমিক ৫ কিলোমিটার দৌড় শেষ করতে সময় নিয়েছেন ৪৩ মিনিট ৫৩ সেকেন্ড।
এ ছাড়া এক কিলোমিটার ওভারল চ্যাম্পিয়ন হয় সাইফান ওময়ের।
দৌড়বিদদের সুবিধার্থে ইভেন্ট এরিয়ায় স্থাপন করা হয়েছিল মেডিকেল সাপোর্ট সিস্টেম, একাধিক হাইড্রেশন ও কুলিং জোন, লাইভ টাইমিং সুবিধা। ইভেন্ট নিরাপদ করতে ছিল শক্তিশালী নিরাপত্তা ব্যবস্থা। এ ইভেন্টে কাজ করেন শতাধিক প্রশিক্ষিত স্বেচ্ছাসেবক। পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিবিড় সহযোগিতায় ইভেন্ট ব্যবস্থাপনা ছিল অত্যন্ত সমন্বিত।

ঢাকা ড্যাশ ৩০-কে ম্যারাথন রেস ডিরেক্টর মো. আল-আমীন বলেন, ‘ঢাকা ড্যাশ ৩০-কে শুধু একটি রেস নয়, এটি একটি সুস্থ, সচেতন ও সক্রিয় নগরজীবন গঠনের আন্দোলন। আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে, দৌড়ের পাশাপাশি আমরা চাই ঢাকাকে একটি প্রাণবন্ত ও ইতিবাচক শহরে রূপান্তরিত করতে।’
আন্তর্জাতিক সার্টিফিকেশন, বিশাল অংশগ্রহণ, পেশাদার ব্যবস্থাপনা এবং নিরাপদ আয়োজন, সব মিলিয়ে ঢাকা ড্যাশ ৩০-কে আজ বাংলাদেশের দৌড় ইতিহাসে নতুন অধ্যায়ের সূচনা করল।

আশ্চর্য সুন্দর পাহাড়, ঝিরঝির করে বয়ে চলা শীতল জলের নদী, পাহাড়চূড়ার বৌদ্ধমন্দির—সবকিছু মিলিয়ে দক্ষিণ এশিয়ার দেশ ভুটানের মতো চমৎকার ভ্রমণ গন্তব্য আছে কমই। ভুটানি রীতির বাড়ি-ঘরগুলোও নজর কাড়ে পর্যটকদের। লাল-সাদা রঙের কাঠের সামনের অংশ, ছোট জানালা, ঢালু ছাদ প্রতিটি বাড়ির। তেমনি মৌসুমে আপেল, কমলাসহ নানা ধর
২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
আমাদের শরীর ও মন পরস্পর ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত। আমরা যখন দুশ্চিন্তা করি বা মানসিক চাপে থাকি, তখন শরীরে এর প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়; যা আমাদের স্নায়ুতন্ত্রকে প্রভাবিত করে এবং এর ফলে অনেক সময় শরীরে চুলকানি বা জ্বালাপোড়ার মতো হতে পারে। এই অবস্থাকেই বলে ‘অ্যাংজাইটি ইচিং’ বা উদ্বেগজনিত চুলকানি।...
৮ ঘণ্টা আগে
বিলাসিতা কেমন হতে পারে? এর উত্তর খুঁজতে গেলে আমাদের চোখ চলে যায় পৃথিবীর সেই সব বিরল উপাদানের দিকে, যেগুলোর মূল্য প্রায় আকাশছোঁয়া। এই উপাদানগুলোর দুর্লভতা এবং অনন্যতাই তাদের করে তুলেছে বিশেষ। যারা জীবনের সেরা জিনিসগুলোর খোঁজ করেন তাদের জন্য এই ধরনের খাবার উপভোগ করতে পারা একটি বিশেষ চাহিদা হতে পারে।
১৪ ঘণ্টা আগে
আপনি যদি ২৫ সালের শেষে এসে বারবার ভাবেন, "সময় কোথায় গেল? " তবে জেনে রাখুন, এই অনুভূতি কেবল আপনার একার নয়। সময় মুহূর্তের মধ্যে ফুরিয়ে যায় নদীর স্রোতের মতন। দেখতে দেখতে আমরা আরও একটি বছরের প্রায় শেষ প্রান্তে পৌঁছে গেছি। তবে চিন্তার কিছু নেই, কারণ নতুন বছর আমাদের জন্য নতুন করে ঘুরে দেখার আর
১৬ ঘণ্টা আগেফারিয়া রহমান খান

আমাদের শরীর ও মন পরস্পর ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত। আমরা যখন দুশ্চিন্তা করি বা মানসিক চাপে থাকি, তখন শরীরে এর প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়; যা আমাদের স্নায়ুতন্ত্রকে প্রভাবিত করে এবং এর ফলে অনেক সময় শরীরে চুলকানি বা জ্বালাপোড়ার মতো হতে পারে। এই অবস্থাকেই বলে ‘অ্যাংজাইটি ইচিং’ বা উদ্বেগজনিত চুলকানি।
অতিরিক্ত উদ্বেগ থেকে হওয়া ‘সোমাটিক সিম্পটম’ বা শারীরিক প্রতিক্রিয়াগুলোর মধ্যে একটি হলো অ্যাংজাইটি ইচিং বা সাইকোজেনিক চুলকানি। উদ্বিগ্নতার তীব্রতা বেশি হলে করটিসল হরমোনের মাত্রা বেড়ে যায়। এর কারণে ত্বকে প্রদাহ সৃষ্টি হয়। পাশাপাশি সেরোটোনিন বা ডোপামিনের মতো নিউরোট্রান্সমিটারের ভারসাম্যহীনতার ফলেও অনেক সময় চুলকানি শুরু হয়। এই সমস্যা সাধারণত মাথার তালু, মুখ বা পিঠের উপরিভাগে বেশি দেখা যায়। তাই মানসিক চাপের কারণ খুঁজে বের করে চিকিৎসকের সহায়তা নিয়ে তা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। তা ছাড়া মেডিটেশন বা ইয়োগা করা যেতে পারে; পাশাপাশি চুলকানি কমাতে ভালো মানের ময়শ্চরাইজার ব্যবহার করতে হবে, পর্যাপ্ত পানি পান করাসহ অতিরিক্ত ঠান্ডা বা গরম পানি দিয়ে গোসল এড়াতে হবে। ডা. তাহরিয়াত আহমেদ শরীফ, সহকারী রেজিস্ট্রার, মেডিসিন বিভাগ, কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতাল, ঢাকা
মানসিক চাপের কারণে চুলকানি কেন হয়
উদ্বেগ ও চুলকানি আপাতদৃষ্টে সম্পর্কহীন মনে হলেও এই দুটি একে অপরের সঙ্গে বেশ কিছু বিষয়ে জড়িত। মানসিক চাপের প্রভাবে শরীরে কিছু সমস্যা দেখা দেয়, যেগুলোর ফলে চুলকানি হয়। যেমন—
স্ট্রেস হাইভস: মানসিক চাপের কারণে অনেক সময় শরীরের রোগ প্রতিরোধব্যবস্থার প্রতিক্রিয়া দেখাতে পারে। ফলে শরীরে চুলকানিযুক্ত ফুসকুড়ি দেখা দেয়।
ঘামাচি বা র্যাশ: উদ্বেগের ফলে ঘাম বেড়ে যায়। ফলে শরীরে ঘামাচি বা র্যাশ দেখা দেয়। এগুলো খুবই চুলকায় এবং ২ সপ্তাহ পর্যন্ত স্থায়ী হয়।
বিদ্যমান রোগ বাড়িয়ে দেওয়া: যাদের আগে থেকে একজিমা বা সোরিয়াসিসের মতো ত্বকের সমস্যা আছে, মানসিক চাপ ও উদ্বেগ তাদের এই রোগগুলো আরও বাড়িয়ে দেয়। ফলে চুলকানির মাত্রা বেড়ে যায়।
চুলকানির তীব্রতা বৃদ্ধি: মানসিক চাপ ও উদ্বেগ সামান্য চুলকানির তীব্রতাও বহুগুণে বাড়িয়ে দেয়, যা রোগীর কাছে অসহনীয় মনে হতে পারে।
অ্যাংজাইটি ইচিং নিয়ন্ত্রণের কিছু উপায়
অ্যাংজাইটি ইচিং নিয়ন্ত্রণ করতে হলে প্রথমে মানসিক চাপের কারণ বের করে তার সমাধান করতে হবে। পাশাপাশি কিছু পদ্ধতি অবলম্বন করলে আরাম পাওয়া যেতে পারে। সেগুলো হলো—
কীভাবে অ্যাংজাইটি ইচিং নির্ণয় করা হয়
প্রথমে চিকিৎসক চুলকানির শারীরিক কারণ; যেমন পোকামাকড়ের কামড়, ত্বকের শুষ্কতা, একজিমা বা অ্যালার্জি আছে কি না, তা নির্ণয় করা হয়। তারপর ডায়াবেটিস, অ্যানিমিয়া বা থাইরয়েডের মতো রোগগুলোও খতিয়ে দেখা হয়। সঠিক সিদ্ধান্তে আসার জন্য রোগীর মানসিক স্বাস্থ্যসহ সম্পূর্ণ রোগের সব তথ্য চিকিৎসককে জানাতে হবে। এর ওপর ভিত্তি করে চিকিৎসক নিশ্চিত হবেন, চুলকানি মানসিক চাপের জন্য হচ্ছে, নাকি অন্য কোনো কারণে। মানসিক চাপের জন্য চুলকানি হচ্ছে নিশ্চিত হলে সেই অনুযায়ী চিকিৎসক উপযুক্ত চিকিৎসার ব্যবস্থা করবেন।
কখন চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন
কারণ ছাড়া অতিরিক্ত চুলকানি অনেক সময় কোনো অভ্যন্তরীণ স্বাস্থ্য সমস্যার কারণেও হতে পারে। মূল কারণ জানা এবং সঠিক চিকিৎসার জন্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। অ্যাংজাইটি ইচিং যদি আপনার দৈনন্দিন জীবনযাত্রা ব্যাহত করে, ত্বকে সংক্রমণ বা গুরুতর ক্ষতি করে বা দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে ঘরোয়া চিকিৎসায়ও না কমে, তবে দ্রুত চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে। এ ছাড়া চুলকানির সঙ্গে জ্বর, রাতে ঘাম হওয়া বা অস্বাভাবিক হারে ওজন কমার মতো লক্ষণ থাকলেও দেরি না করে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। মনে রাখবেন, সঠিক সময়ে সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমেই অ্যাংজাইটি ইচিংয়ের মতো সমস্যা কার্যকরভাবে মোকাবিলা করা সম্ভব।
সূত্র: স্টাইলক্রেজ ও অন্যান্য

আমাদের শরীর ও মন পরস্পর ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত। আমরা যখন দুশ্চিন্তা করি বা মানসিক চাপে থাকি, তখন শরীরে এর প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়; যা আমাদের স্নায়ুতন্ত্রকে প্রভাবিত করে এবং এর ফলে অনেক সময় শরীরে চুলকানি বা জ্বালাপোড়ার মতো হতে পারে। এই অবস্থাকেই বলে ‘অ্যাংজাইটি ইচিং’ বা উদ্বেগজনিত চুলকানি।
অতিরিক্ত উদ্বেগ থেকে হওয়া ‘সোমাটিক সিম্পটম’ বা শারীরিক প্রতিক্রিয়াগুলোর মধ্যে একটি হলো অ্যাংজাইটি ইচিং বা সাইকোজেনিক চুলকানি। উদ্বিগ্নতার তীব্রতা বেশি হলে করটিসল হরমোনের মাত্রা বেড়ে যায়। এর কারণে ত্বকে প্রদাহ সৃষ্টি হয়। পাশাপাশি সেরোটোনিন বা ডোপামিনের মতো নিউরোট্রান্সমিটারের ভারসাম্যহীনতার ফলেও অনেক সময় চুলকানি শুরু হয়। এই সমস্যা সাধারণত মাথার তালু, মুখ বা পিঠের উপরিভাগে বেশি দেখা যায়। তাই মানসিক চাপের কারণ খুঁজে বের করে চিকিৎসকের সহায়তা নিয়ে তা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। তা ছাড়া মেডিটেশন বা ইয়োগা করা যেতে পারে; পাশাপাশি চুলকানি কমাতে ভালো মানের ময়শ্চরাইজার ব্যবহার করতে হবে, পর্যাপ্ত পানি পান করাসহ অতিরিক্ত ঠান্ডা বা গরম পানি দিয়ে গোসল এড়াতে হবে। ডা. তাহরিয়াত আহমেদ শরীফ, সহকারী রেজিস্ট্রার, মেডিসিন বিভাগ, কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতাল, ঢাকা
মানসিক চাপের কারণে চুলকানি কেন হয়
উদ্বেগ ও চুলকানি আপাতদৃষ্টে সম্পর্কহীন মনে হলেও এই দুটি একে অপরের সঙ্গে বেশ কিছু বিষয়ে জড়িত। মানসিক চাপের প্রভাবে শরীরে কিছু সমস্যা দেখা দেয়, যেগুলোর ফলে চুলকানি হয়। যেমন—
স্ট্রেস হাইভস: মানসিক চাপের কারণে অনেক সময় শরীরের রোগ প্রতিরোধব্যবস্থার প্রতিক্রিয়া দেখাতে পারে। ফলে শরীরে চুলকানিযুক্ত ফুসকুড়ি দেখা দেয়।
ঘামাচি বা র্যাশ: উদ্বেগের ফলে ঘাম বেড়ে যায়। ফলে শরীরে ঘামাচি বা র্যাশ দেখা দেয়। এগুলো খুবই চুলকায় এবং ২ সপ্তাহ পর্যন্ত স্থায়ী হয়।
বিদ্যমান রোগ বাড়িয়ে দেওয়া: যাদের আগে থেকে একজিমা বা সোরিয়াসিসের মতো ত্বকের সমস্যা আছে, মানসিক চাপ ও উদ্বেগ তাদের এই রোগগুলো আরও বাড়িয়ে দেয়। ফলে চুলকানির মাত্রা বেড়ে যায়।
চুলকানির তীব্রতা বৃদ্ধি: মানসিক চাপ ও উদ্বেগ সামান্য চুলকানির তীব্রতাও বহুগুণে বাড়িয়ে দেয়, যা রোগীর কাছে অসহনীয় মনে হতে পারে।
অ্যাংজাইটি ইচিং নিয়ন্ত্রণের কিছু উপায়
অ্যাংজাইটি ইচিং নিয়ন্ত্রণ করতে হলে প্রথমে মানসিক চাপের কারণ বের করে তার সমাধান করতে হবে। পাশাপাশি কিছু পদ্ধতি অবলম্বন করলে আরাম পাওয়া যেতে পারে। সেগুলো হলো—
কীভাবে অ্যাংজাইটি ইচিং নির্ণয় করা হয়
প্রথমে চিকিৎসক চুলকানির শারীরিক কারণ; যেমন পোকামাকড়ের কামড়, ত্বকের শুষ্কতা, একজিমা বা অ্যালার্জি আছে কি না, তা নির্ণয় করা হয়। তারপর ডায়াবেটিস, অ্যানিমিয়া বা থাইরয়েডের মতো রোগগুলোও খতিয়ে দেখা হয়। সঠিক সিদ্ধান্তে আসার জন্য রোগীর মানসিক স্বাস্থ্যসহ সম্পূর্ণ রোগের সব তথ্য চিকিৎসককে জানাতে হবে। এর ওপর ভিত্তি করে চিকিৎসক নিশ্চিত হবেন, চুলকানি মানসিক চাপের জন্য হচ্ছে, নাকি অন্য কোনো কারণে। মানসিক চাপের জন্য চুলকানি হচ্ছে নিশ্চিত হলে সেই অনুযায়ী চিকিৎসক উপযুক্ত চিকিৎসার ব্যবস্থা করবেন।
কখন চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন
কারণ ছাড়া অতিরিক্ত চুলকানি অনেক সময় কোনো অভ্যন্তরীণ স্বাস্থ্য সমস্যার কারণেও হতে পারে। মূল কারণ জানা এবং সঠিক চিকিৎসার জন্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। অ্যাংজাইটি ইচিং যদি আপনার দৈনন্দিন জীবনযাত্রা ব্যাহত করে, ত্বকে সংক্রমণ বা গুরুতর ক্ষতি করে বা দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে ঘরোয়া চিকিৎসায়ও না কমে, তবে দ্রুত চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে। এ ছাড়া চুলকানির সঙ্গে জ্বর, রাতে ঘাম হওয়া বা অস্বাভাবিক হারে ওজন কমার মতো লক্ষণ থাকলেও দেরি না করে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। মনে রাখবেন, সঠিক সময়ে সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমেই অ্যাংজাইটি ইচিংয়ের মতো সমস্যা কার্যকরভাবে মোকাবিলা করা সম্ভব।
সূত্র: স্টাইলক্রেজ ও অন্যান্য

আশ্চর্য সুন্দর পাহাড়, ঝিরঝির করে বয়ে চলা শীতল জলের নদী, পাহাড়চূড়ার বৌদ্ধমন্দির—সবকিছু মিলিয়ে দক্ষিণ এশিয়ার দেশ ভুটানের মতো চমৎকার ভ্রমণ গন্তব্য আছে কমই। ভুটানি রীতির বাড়ি-ঘরগুলোও নজর কাড়ে পর্যটকদের। লাল-সাদা রঙের কাঠের সামনের অংশ, ছোট জানালা, ঢালু ছাদ প্রতিটি বাড়ির। তেমনি মৌসুমে আপেল, কমলাসহ নানা ধর
২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
সুস্থ, সচেতন ও সক্রিয় নগরজীবন গঠনের বিভিন্ন আন্দোলন আছে ঢাকা শহরে। আছে তাদের নিয়মিত ইভেন্ট। এ ইতিহাসে যুক্ত হলো ‘ঢাকা ড্যাশ ৩০-কে’ ম্যারাথন। এর আয়োজক ছিল ক্রীড়া প্রতিষ্ঠান ট্রায়াথলন ড্রিমার্স। আয়োজক সূত্রে জানা গেছে, এটি ছিল ঢাকায় অনুষ্ঠিত দেশের প্রথম এআইএমএস সার্টিফায়েড ৩০ কিলোমিটার ম্যারাথন।...
৬ ঘণ্টা আগে
বিলাসিতা কেমন হতে পারে? এর উত্তর খুঁজতে গেলে আমাদের চোখ চলে যায় পৃথিবীর সেই সব বিরল উপাদানের দিকে, যেগুলোর মূল্য প্রায় আকাশছোঁয়া। এই উপাদানগুলোর দুর্লভতা এবং অনন্যতাই তাদের করে তুলেছে বিশেষ। যারা জীবনের সেরা জিনিসগুলোর খোঁজ করেন তাদের জন্য এই ধরনের খাবার উপভোগ করতে পারা একটি বিশেষ চাহিদা হতে পারে।
১৪ ঘণ্টা আগে
আপনি যদি ২৫ সালের শেষে এসে বারবার ভাবেন, "সময় কোথায় গেল? " তবে জেনে রাখুন, এই অনুভূতি কেবল আপনার একার নয়। সময় মুহূর্তের মধ্যে ফুরিয়ে যায় নদীর স্রোতের মতন। দেখতে দেখতে আমরা আরও একটি বছরের প্রায় শেষ প্রান্তে পৌঁছে গেছি। তবে চিন্তার কিছু নেই, কারণ নতুন বছর আমাদের জন্য নতুন করে ঘুরে দেখার আর
১৬ ঘণ্টা আগেফিচার ডেস্ক

বিলাসিতা কেমন হতে পারে? এর উত্তর খুঁজতে গেলে আমাদের চোখ চলে যায় পৃথিবীর সেই সব বিরল উপাদানের দিকে, যেগুলোর মূল্য প্রায় আকাশছোঁয়া। এই উপাদানগুলোর দুর্লভতা এবং অনন্যতাই তাদের করে তুলেছে বিশেষ। যারা জীবনের সেরা জিনিসগুলোর খোঁজ করেন তাদের জন্য এই ধরনের খাবার উপভোগ করতে পারা একটি বিশেষ চাহিদা হতে পারে। এই খাবারগুলো কেবল খাদ্য নয় বরং শিল্পের এক একটি অংশ হয়ে উঠেছে। আর তাই এরা তাদের ক্রেতাদের কাছে ক্ষমতা, প্রাচুর্য এবং এক বিশেষ জীবনযাত্রার প্রতীক।
সবচেয়ে দামি খাবারের তালিকায় প্রথমে আসে সেই মাটির নিচের রহস্য। যা সোনার চেয়েও মূল্যবান। ইতালির পিডমন্ট অঞ্চলের স্থানীয় সাদা ট্রাফল এমনই এক ছত্রাক, যা অত্যন্ত দুর্লভ ও ব্যয়বহুল। একবার চীনের ম্যাকাও-এর এক ক্যাসিনো মালিক প্রায় দেড় কেজি ওজনের একটি ট্রাফল ৩,৩০, ০০০ ডলারে কিনেছিলেন। টাকায় হিসাব করলে যার দাম হয় ৪ কোটি ১ লাখ ৯৩ হাজার ৪০০ টাকা। অন্যদিকে, মসলার জগতে রাজা হলো জাফরান। যাকে ডাকা হয় ’লাল সোনা’ নামে। এক কেজি জাফরান তৈরি করতে হাজার হাজার ফুল লাগে। এ জন্য এর দাম পৃথিবীর সবচেয়ে দামি মসলার স্থানে নিয়ে গেছে। ফরাসি দ্বীপ নুয়ারমুতিয়ে-তে জন্মানো লা বোনোটে আলুর ক্ষেত্রেও সেই বিরলতা দেখা যায়। বিশেষ পরিবেশে ও শৈবালের কারণে এদের প্রতি কেজির দাম প্রায় ৬০০ ডলার বা ৭৩,১৭৮ টাকা।
মাংস এবং সামুদ্রিক খাবারের জগতেও রয়েছে মহাযজ্ঞের ছোঁয়া। জাপানের ওয়াগিউ বিফ কেবল সুস্বাদুই নয়, এর পেছনের প্রক্রিয়াটিও রাজকীয়। এই গরুগুলোকে বিশেষ খাবার দেওয়া হয়। এমনকি প্রতিদিন মালিশও করা হয়। যার ফলস্বরূপ এর ১০০ গ্রাম মাংসের দাম প্রায় ৫০ ডলার। অর্থাৎ ৬০৯৯ টাকা। আরও একধাপ এগিয়ে, ২০১৯ সালে জাপানে একটি স্নো ক্র্যাব। যা নিলামে বিক্রি হয়েছিল প্রায় ৪৬,০০০ ডলারে। তবে সামুদ্রিক খাবারের মুকুট হলো অ্যালমাস ক্যাভিয়ার। এই বিরল বেলুগা ক্যাভিয়ার প্রতি কেজি ৩৪,৫০০ ডলারে বিক্রি হয়ে থাকে। যার বাংলাদেশি মূল্য দাঁড়ায় ৪২,০৮৩১০ টাকা। যা সত্যিকারের বিলাসিতার প্রতিচ্ছবি। অন্যদিকে, স্পেনের ঐতিহ্যবাহী ইবেরিকো হ্যাম-এর এক পা বা লেগ ৪,৫০০ ডলারের মতো দামে বিক্রি হওয়ার বিশ্ব রেকর্ড গড়েছে।

রেস্টুরেন্টে গেলে ৮০০ টাকা থাকে শুরু করে ৩০০০ টাকায় পিৎজা পাওয়া যায়। তবে ১২,০০০ ডলার বা ১,৪৬৩, ৭৬০ টাকার পিৎজা কখনো শুনেছেন? আপনি না শুনে থাকলেও পৃথিবীতে তা আছে। পিৎজা নির্মাতা রেনাটো ভায়োলা তৈরি করেছিলেন লিউস XIII পিৎজা। যার উপাদানগুলোর মধ্যে ছিল তিন ধরনের ক্যাভিয়ার। আবার স্কটল্যান্ডের ডোমিনিকো ক্রলা-এর তৈরি পিৎজা রয়্যাল ০০৭ বিকোয় ৪,২০০ ডলারে। যেখানে কগনাক-এ ম্যারিনেট করা লবস্টার ও শ্যাম্পেনে ভেজানো ক্যাভিয়ার ব্যবহার করা হয়েছিল। মেক্সিকোর গ্র্যান্ড ভেলাস রিসোর্টে পাওয়া গ্র্যান্ড ভেলাস লস কাবোস টাকো। যার মূল্য ২৫,০০০ ডলার, যেখানে ছিল কোবে বিফ এবং সোনা-মিশ্রিত টর্টিলা। এমনকি নিউ ইয়র্কের একটি সাধারণ গ্রিলড চিজ স্যান্ডউইচও যখন শ্যাম্পেনে ভেজানো রুটি আর সোনার ফ্লেক্সের সঙ্গে আসে, তখন সেই কুইন্টেসেনশিয়াল গ্রিলড চিজ-এর দাম দাঁড়ায় ২১৪ ডলার।
মিষ্টি এবং পানীয়ের ক্ষেত্রেও বিলাসিতা তার ছাপ ফেলেছে। পেস্ট্রি শেফ জেওং হং-ইয়ংটো এক মাস সময় নিয়ে একটি ক্রিসমাস কেক তৈরি করেছিলেন, যাতে ছিল ২২৩টি হিরা, আর এর দাম ছিল অবিশ্বাস্য ১.৭ মিলিয়ন ডলার। অন্যদিকে, জাপানি ফলগুলোর মধ্যেও রয়েছে রাজকীয়তা। একটি ডেনসুকে ওয়াটারমেলন নিলামে ৬,১০০ ডলারে বিক্রি হয়েছিল এবং দুটি ইউবারি কিং মেলন ৪৫,০০০ ডলারের বেশি দামে বিক্রি হয়েছিল। পানীয়ের ক্ষেত্রে, ১৯৫২ সালের বিরল টুলিবার্ডিন হুইস্কির একটি বোতলের দাম ৪১,০০০ ডলার পর্যন্ত পৌঁছেছিল। তবে প্রকৃতির অদ্ভুত খেয়ালের ফল হলো কপি লুয়াক কফি। সিভেট ক্যাট বা গন্ধগোকুলের হজম প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তৈরি এই কফি প্রতি কেজি প্রায় ৭০০ ডলারে বিক্রি হয়।
সূত্র: স্টার্স ইনসাইডার

বিলাসিতা কেমন হতে পারে? এর উত্তর খুঁজতে গেলে আমাদের চোখ চলে যায় পৃথিবীর সেই সব বিরল উপাদানের দিকে, যেগুলোর মূল্য প্রায় আকাশছোঁয়া। এই উপাদানগুলোর দুর্লভতা এবং অনন্যতাই তাদের করে তুলেছে বিশেষ। যারা জীবনের সেরা জিনিসগুলোর খোঁজ করেন তাদের জন্য এই ধরনের খাবার উপভোগ করতে পারা একটি বিশেষ চাহিদা হতে পারে। এই খাবারগুলো কেবল খাদ্য নয় বরং শিল্পের এক একটি অংশ হয়ে উঠেছে। আর তাই এরা তাদের ক্রেতাদের কাছে ক্ষমতা, প্রাচুর্য এবং এক বিশেষ জীবনযাত্রার প্রতীক।
সবচেয়ে দামি খাবারের তালিকায় প্রথমে আসে সেই মাটির নিচের রহস্য। যা সোনার চেয়েও মূল্যবান। ইতালির পিডমন্ট অঞ্চলের স্থানীয় সাদা ট্রাফল এমনই এক ছত্রাক, যা অত্যন্ত দুর্লভ ও ব্যয়বহুল। একবার চীনের ম্যাকাও-এর এক ক্যাসিনো মালিক প্রায় দেড় কেজি ওজনের একটি ট্রাফল ৩,৩০, ০০০ ডলারে কিনেছিলেন। টাকায় হিসাব করলে যার দাম হয় ৪ কোটি ১ লাখ ৯৩ হাজার ৪০০ টাকা। অন্যদিকে, মসলার জগতে রাজা হলো জাফরান। যাকে ডাকা হয় ’লাল সোনা’ নামে। এক কেজি জাফরান তৈরি করতে হাজার হাজার ফুল লাগে। এ জন্য এর দাম পৃথিবীর সবচেয়ে দামি মসলার স্থানে নিয়ে গেছে। ফরাসি দ্বীপ নুয়ারমুতিয়ে-তে জন্মানো লা বোনোটে আলুর ক্ষেত্রেও সেই বিরলতা দেখা যায়। বিশেষ পরিবেশে ও শৈবালের কারণে এদের প্রতি কেজির দাম প্রায় ৬০০ ডলার বা ৭৩,১৭৮ টাকা।
মাংস এবং সামুদ্রিক খাবারের জগতেও রয়েছে মহাযজ্ঞের ছোঁয়া। জাপানের ওয়াগিউ বিফ কেবল সুস্বাদুই নয়, এর পেছনের প্রক্রিয়াটিও রাজকীয়। এই গরুগুলোকে বিশেষ খাবার দেওয়া হয়। এমনকি প্রতিদিন মালিশও করা হয়। যার ফলস্বরূপ এর ১০০ গ্রাম মাংসের দাম প্রায় ৫০ ডলার। অর্থাৎ ৬০৯৯ টাকা। আরও একধাপ এগিয়ে, ২০১৯ সালে জাপানে একটি স্নো ক্র্যাব। যা নিলামে বিক্রি হয়েছিল প্রায় ৪৬,০০০ ডলারে। তবে সামুদ্রিক খাবারের মুকুট হলো অ্যালমাস ক্যাভিয়ার। এই বিরল বেলুগা ক্যাভিয়ার প্রতি কেজি ৩৪,৫০০ ডলারে বিক্রি হয়ে থাকে। যার বাংলাদেশি মূল্য দাঁড়ায় ৪২,০৮৩১০ টাকা। যা সত্যিকারের বিলাসিতার প্রতিচ্ছবি। অন্যদিকে, স্পেনের ঐতিহ্যবাহী ইবেরিকো হ্যাম-এর এক পা বা লেগ ৪,৫০০ ডলারের মতো দামে বিক্রি হওয়ার বিশ্ব রেকর্ড গড়েছে।

রেস্টুরেন্টে গেলে ৮০০ টাকা থাকে শুরু করে ৩০০০ টাকায় পিৎজা পাওয়া যায়। তবে ১২,০০০ ডলার বা ১,৪৬৩, ৭৬০ টাকার পিৎজা কখনো শুনেছেন? আপনি না শুনে থাকলেও পৃথিবীতে তা আছে। পিৎজা নির্মাতা রেনাটো ভায়োলা তৈরি করেছিলেন লিউস XIII পিৎজা। যার উপাদানগুলোর মধ্যে ছিল তিন ধরনের ক্যাভিয়ার। আবার স্কটল্যান্ডের ডোমিনিকো ক্রলা-এর তৈরি পিৎজা রয়্যাল ০০৭ বিকোয় ৪,২০০ ডলারে। যেখানে কগনাক-এ ম্যারিনেট করা লবস্টার ও শ্যাম্পেনে ভেজানো ক্যাভিয়ার ব্যবহার করা হয়েছিল। মেক্সিকোর গ্র্যান্ড ভেলাস রিসোর্টে পাওয়া গ্র্যান্ড ভেলাস লস কাবোস টাকো। যার মূল্য ২৫,০০০ ডলার, যেখানে ছিল কোবে বিফ এবং সোনা-মিশ্রিত টর্টিলা। এমনকি নিউ ইয়র্কের একটি সাধারণ গ্রিলড চিজ স্যান্ডউইচও যখন শ্যাম্পেনে ভেজানো রুটি আর সোনার ফ্লেক্সের সঙ্গে আসে, তখন সেই কুইন্টেসেনশিয়াল গ্রিলড চিজ-এর দাম দাঁড়ায় ২১৪ ডলার।
মিষ্টি এবং পানীয়ের ক্ষেত্রেও বিলাসিতা তার ছাপ ফেলেছে। পেস্ট্রি শেফ জেওং হং-ইয়ংটো এক মাস সময় নিয়ে একটি ক্রিসমাস কেক তৈরি করেছিলেন, যাতে ছিল ২২৩টি হিরা, আর এর দাম ছিল অবিশ্বাস্য ১.৭ মিলিয়ন ডলার। অন্যদিকে, জাপানি ফলগুলোর মধ্যেও রয়েছে রাজকীয়তা। একটি ডেনসুকে ওয়াটারমেলন নিলামে ৬,১০০ ডলারে বিক্রি হয়েছিল এবং দুটি ইউবারি কিং মেলন ৪৫,০০০ ডলারের বেশি দামে বিক্রি হয়েছিল। পানীয়ের ক্ষেত্রে, ১৯৫২ সালের বিরল টুলিবার্ডিন হুইস্কির একটি বোতলের দাম ৪১,০০০ ডলার পর্যন্ত পৌঁছেছিল। তবে প্রকৃতির অদ্ভুত খেয়ালের ফল হলো কপি লুয়াক কফি। সিভেট ক্যাট বা গন্ধগোকুলের হজম প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তৈরি এই কফি প্রতি কেজি প্রায় ৭০০ ডলারে বিক্রি হয়।
সূত্র: স্টার্স ইনসাইডার

আশ্চর্য সুন্দর পাহাড়, ঝিরঝির করে বয়ে চলা শীতল জলের নদী, পাহাড়চূড়ার বৌদ্ধমন্দির—সবকিছু মিলিয়ে দক্ষিণ এশিয়ার দেশ ভুটানের মতো চমৎকার ভ্রমণ গন্তব্য আছে কমই। ভুটানি রীতির বাড়ি-ঘরগুলোও নজর কাড়ে পর্যটকদের। লাল-সাদা রঙের কাঠের সামনের অংশ, ছোট জানালা, ঢালু ছাদ প্রতিটি বাড়ির। তেমনি মৌসুমে আপেল, কমলাসহ নানা ধর
২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
সুস্থ, সচেতন ও সক্রিয় নগরজীবন গঠনের বিভিন্ন আন্দোলন আছে ঢাকা শহরে। আছে তাদের নিয়মিত ইভেন্ট। এ ইতিহাসে যুক্ত হলো ‘ঢাকা ড্যাশ ৩০-কে’ ম্যারাথন। এর আয়োজক ছিল ক্রীড়া প্রতিষ্ঠান ট্রায়াথলন ড্রিমার্স। আয়োজক সূত্রে জানা গেছে, এটি ছিল ঢাকায় অনুষ্ঠিত দেশের প্রথম এআইএমএস সার্টিফায়েড ৩০ কিলোমিটার ম্যারাথন।...
৬ ঘণ্টা আগে
আমাদের শরীর ও মন পরস্পর ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত। আমরা যখন দুশ্চিন্তা করি বা মানসিক চাপে থাকি, তখন শরীরে এর প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়; যা আমাদের স্নায়ুতন্ত্রকে প্রভাবিত করে এবং এর ফলে অনেক সময় শরীরে চুলকানি বা জ্বালাপোড়ার মতো হতে পারে। এই অবস্থাকেই বলে ‘অ্যাংজাইটি ইচিং’ বা উদ্বেগজনিত চুলকানি।...
৮ ঘণ্টা আগে
আপনি যদি ২৫ সালের শেষে এসে বারবার ভাবেন, "সময় কোথায় গেল? " তবে জেনে রাখুন, এই অনুভূতি কেবল আপনার একার নয়। সময় মুহূর্তের মধ্যে ফুরিয়ে যায় নদীর স্রোতের মতন। দেখতে দেখতে আমরা আরও একটি বছরের প্রায় শেষ প্রান্তে পৌঁছে গেছি। তবে চিন্তার কিছু নেই, কারণ নতুন বছর আমাদের জন্য নতুন করে ঘুরে দেখার আর
১৬ ঘণ্টা আগেফিচার ডেস্ক

আপনি যদি ২৫ সালের শেষে এসে বারবার ভাবেন, "সময় কোথায় গেল? " তবে জেনে রাখুন, এই অনুভূতি কেবল আপনার একার নয়। সময় মুহূর্তের মধ্যে ফুরিয়ে যায় নদীর স্রোতের মতন। দেখতে দেখতে আমরা আরও একটি বছরের প্রায় শেষ প্রান্তে পৌঁছে গেছি। তবে চিন্তার কিছু নেই, কারণ নতুন বছর আমাদের জন্য নতুন করে ঘুরে দেখার আর অ্যাডভেঞ্চারের সুযোগ নিয়ে আসছে। আর এই সুযোগগুলো কাজে লাগাতে সাহায্য করার জন্য এয়ারবিএনবি প্রকাশ করেছে ২০২৬ সালের জন্য তাদের ভ্রমণ প্রবণতা পূর্বাভাস।
এই হোম-শেয়ারিং প্ল্যাটফর্মটির বিশ্লেষণ অনুযায়ী, আগামী বছর ভ্রমণকারীরা তাদের ছুটি থেকে সর্বোচ্চ সুবিধা নিতে চাইবেন। যা হবে অভিজ্ঞতার কেন্দ্রিক। তাদের রিপোর্টে বেশ কয়েকটি মূল বিষয় উঠে এসেছে। যা আপনাকেও বিশ্ব ভ্রমণের ক্ষেত্রে এগিয়ে থাকতে সাহায্য করতে পারে। এখানে উল্লিখিত পূর্বাভাসগুলো ইঙ্গিত দেয় যে ২০২৬ সালে ভ্রমণ হবে আরও সংক্ষিপ্ত, প্রকৃতির কাছাকাছি, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে ভরপুর এবং অবশ্যই খাদ্য-কেন্দ্রিক। আপনিও আপনার পরবর্তী ভ্রমণের জন্য এই নতুন ধারাগুলো বিবেচনা করতে পারেন।

জেনও জিদের আলট্রা-শর্ট আন্তর্জাতিক ট্রিপ
২০২৬ সালে ভ্রমণের সংজ্ঞাই পাল্টে দিচ্ছে জেনারেশন জি বা জেন জি। বিশাল, বহু-সপ্তাহব্যাপী ভ্রমণের পরিকল্পনাকে ভুলে যান। জেন জি আমাদের শেখাচ্ছে কীভাবে ৪৮ ঘণ্টা বা তারও কম সময়ে যেকোনো স্থানে উড়ে যাওয়া যায়। এয়ারবিএনবি-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, জেন জি রা ’কুইক ট্রিপ’-এর ধারণাটি নতুন করে সংজ্ঞায়িত করছে। দীর্ঘ অবকাশের তুলনায় তাদের ১-২ দিনের আন্তর্জাতিক যাত্রা দ্রুত গতিতে বৃদ্ধি পাচ্ছে। টিকটক-এর ভাইরাল ডে-ট্রিপ ট্রেন্ড দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে, এই তরুণ প্রজন্ম সংস্কৃতি-সমৃদ্ধ, উচ্চ-শক্তির অভিজ্ঞতার জন্য মহাদেশ পাড়ি দিচ্ছে। এয়ারবিএনবি বলছে, জেন জি রা কর্মবিরতি সর্বাধিক ভাবে ব্যবহার করার এক নতুন কৌশল দেখাচ্ছে। তারা শান্ত সমুদ্র সৈকতের বদলে বেছে নিচ্ছে সংগীত, নৃত্য, ঐতিহাসিক স্থান এবং খাঁটি খাবারে পূর্ণ প্রাণবন্ত শহুরে অভিজ্ঞতা। এই প্রজন্মের পছন্দের গন্তব্যগুলোর মধ্যে রয়েছে বুয়েনোস আইরেস (আর্জেন্টিনা), বুসান (দক্ষিণ কোরিয়া), কো সামুই (থাইল্যান্ড), মারাকেশ (মরক্কো), মেক্সিকো সিটি (মেক্সিকো), সান জুয়ান (পুয়ের্তো রিকো) এবং স্টকহোম (সুইডেন)।
প্রকৃতির সঙ্গে আরও বেশি সময় কাটানো
প্রকৃতির সান্নিধ্য লাভ করা ২০২৫ সালেও একটি জনপ্রিয় প্রবণতা ছিল। আর ২০২৬ সালে এটি আরও বেগবান হবে। এয়ারবিএনবি জানিয়েছে যে বিশ্বজুড়ে জাতীয় উদ্যানগুলির প্রতি অনুসন্ধান এবং আগ্রহ উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। রিপোর্ট অনুযায়ী, একটি জাতীয় উদ্যানের কাছাকাছি থাকার জায়গা খোঁজার হার আগামী বছরের জন্য ৩৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষ করে গ্রেট স্মোকি মাউন্টেনস, শেনানডোহ এবং গ্র্যান্ড টেটনের মতো মার্কিন পার্কগুলোর শতবর্ষ উদ্যাপনের কারণে সেগুলোর প্রতি আগ্রহ আরও বাড়ছে। বৈশ্বিক গন্তব্যগুলোর মধ্যে স্যামারিয়া জর্জ ন্যাশনাল পার্কের কাছাকাছি গ্রিসের ক্রিট, ভিয়েনা, ইন্ডিয়ার গোয়া এবং ইতালির সার্ডিনিয়ার মতো স্থানগুলো ভ্রমণকারীদের নজরে রয়েছে।

বড় ইভেন্টগুলোর টানে ভিড় জমছে
২০২৬ সালে ভ্রমণকারীরা বড় ধরনের সাংস্কৃতিক, খেলাধুলা এবং সংগীত অনুষ্ঠানগুলোকে ঘিরে তাদের যাত্রা পরিকল্পনা করছেন। এয়ারবিএনবি-এর তথ্য অনুযায়ী, আগামী বছরের জন্য শীর্ষ-অনুসন্ধান করা তারিখ এবং শহরগুলোর ৬৫ শতাংশই প্রধান ইভেন্টগুলোর সঙ্গে মিলে যায়। যেমন ফিফা বিশ্বকাপ, কার্নিভাল বা কোচেলা। ভ্রমণকারীরা এই অভিজ্ঞতাগুলোকে অগ্রাধিকার দিচ্ছেন, যেন টিকিটই তাদের পাসপোর্টে পরিণত হচ্ছে। কার্নিভালের জন্য রিউ দে জানেরো, কোচেলার জন্য ইন্ডিয়ো, মার্ডি গ্রাস-এর জন্য নিউ অর্লিন্স এবং ২০২৬ অলিম্পিক উইন্টার গেমসের জন্য ইতালির মিলান শীর্ষ অনুসন্ধান তালিকায় রয়েছে।
একক ভ্রমণের পুনরুত্থান
একাকী ভ্রমণ বা সোল ট্রাভেল আবার তার কৃতিত্ব ফিরে পাচ্ছে। স্ব-আবিষ্কারের অনলাইন আলোচনায় উৎসাহিত হয়ে, একক ভ্রমণকারীরা এখন কেবল পুরোনো জায়গায় ফিরে যাচ্ছেন না বরং নতুন হটস্পট আবিষ্কার করছেন। ক্যালিফোর্নিয়ার ইডিল্ডওয়াইল্ড, ডোমিনিকান রিপাবলিকের লা আলতাগ্রেসিয়া এবং নরওয়ের ট্রোমসো-এর মতো জায়গাগুলোতে অনুসন্ধান তিন অঙ্কের বৃদ্ধি দেখছে। অন্যান্য জনপ্রিয় একক ভ্রমণের গন্তব্যের মধ্যে রয়েছে পর্তুগালের আলগার্ভ অঞ্চল, স্পেনের কোস্টা দেল সল, ফ্লোরিডা কিস এবং স্কটল্যান্ডের ইনভারনেস।
রন্ধনশিল্পের প্রতি আকর্ষণ
২০২৬ সালের জন্য খাবার ও পানীয় সম্পর্কিত ভ্রমণ যেন একেবারে আগুন ঝরাচ্ছে। যেখানে বেকারি ক্লাস এবং ওয়াইন অঞ্চলগুলো শীর্ষে রয়েছে। প্যারিসে ক্রোসঁ তৈরির ক্লাস বা টোকিওতে মোচি বানানো শেখার মতন হাতে-কলমে অভিজ্ঞতার দিকে ভ্রমণকারীরা ঝুঁকছেন। ভাইরাল হওয়া টিকটক ফুড ভিডিওগুলো বিশ্বজুড়ে বেকারি এবং রান্নার ক্লাসের প্রতি আগ্রহ তৈরি করছে। ওয়াইন-প্রেমীরা বেঙ্গালুরু (ভারত), ফিঙ্গার লেকস (নিউ ইয়র্ক), মেলবোর্ন (অস্ট্রেলিয়া)-এর মতো উঠতি ওয়াইন অঞ্চলগুলিতে যাচ্ছেন। বেকারি-হটস্পটগুলোর মধ্যে ইস্তাম্বুল, লিসবন, প্যারিস, তাইপে এবং টোকিও বিশেষ জনপ্রিয়তা লাভ করেছে।
সূত্র: ট্রাভেল+লিজার

আপনি যদি ২৫ সালের শেষে এসে বারবার ভাবেন, "সময় কোথায় গেল? " তবে জেনে রাখুন, এই অনুভূতি কেবল আপনার একার নয়। সময় মুহূর্তের মধ্যে ফুরিয়ে যায় নদীর স্রোতের মতন। দেখতে দেখতে আমরা আরও একটি বছরের প্রায় শেষ প্রান্তে পৌঁছে গেছি। তবে চিন্তার কিছু নেই, কারণ নতুন বছর আমাদের জন্য নতুন করে ঘুরে দেখার আর অ্যাডভেঞ্চারের সুযোগ নিয়ে আসছে। আর এই সুযোগগুলো কাজে লাগাতে সাহায্য করার জন্য এয়ারবিএনবি প্রকাশ করেছে ২০২৬ সালের জন্য তাদের ভ্রমণ প্রবণতা পূর্বাভাস।
এই হোম-শেয়ারিং প্ল্যাটফর্মটির বিশ্লেষণ অনুযায়ী, আগামী বছর ভ্রমণকারীরা তাদের ছুটি থেকে সর্বোচ্চ সুবিধা নিতে চাইবেন। যা হবে অভিজ্ঞতার কেন্দ্রিক। তাদের রিপোর্টে বেশ কয়েকটি মূল বিষয় উঠে এসেছে। যা আপনাকেও বিশ্ব ভ্রমণের ক্ষেত্রে এগিয়ে থাকতে সাহায্য করতে পারে। এখানে উল্লিখিত পূর্বাভাসগুলো ইঙ্গিত দেয় যে ২০২৬ সালে ভ্রমণ হবে আরও সংক্ষিপ্ত, প্রকৃতির কাছাকাছি, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে ভরপুর এবং অবশ্যই খাদ্য-কেন্দ্রিক। আপনিও আপনার পরবর্তী ভ্রমণের জন্য এই নতুন ধারাগুলো বিবেচনা করতে পারেন।

জেনও জিদের আলট্রা-শর্ট আন্তর্জাতিক ট্রিপ
২০২৬ সালে ভ্রমণের সংজ্ঞাই পাল্টে দিচ্ছে জেনারেশন জি বা জেন জি। বিশাল, বহু-সপ্তাহব্যাপী ভ্রমণের পরিকল্পনাকে ভুলে যান। জেন জি আমাদের শেখাচ্ছে কীভাবে ৪৮ ঘণ্টা বা তারও কম সময়ে যেকোনো স্থানে উড়ে যাওয়া যায়। এয়ারবিএনবি-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, জেন জি রা ’কুইক ট্রিপ’-এর ধারণাটি নতুন করে সংজ্ঞায়িত করছে। দীর্ঘ অবকাশের তুলনায় তাদের ১-২ দিনের আন্তর্জাতিক যাত্রা দ্রুত গতিতে বৃদ্ধি পাচ্ছে। টিকটক-এর ভাইরাল ডে-ট্রিপ ট্রেন্ড দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে, এই তরুণ প্রজন্ম সংস্কৃতি-সমৃদ্ধ, উচ্চ-শক্তির অভিজ্ঞতার জন্য মহাদেশ পাড়ি দিচ্ছে। এয়ারবিএনবি বলছে, জেন জি রা কর্মবিরতি সর্বাধিক ভাবে ব্যবহার করার এক নতুন কৌশল দেখাচ্ছে। তারা শান্ত সমুদ্র সৈকতের বদলে বেছে নিচ্ছে সংগীত, নৃত্য, ঐতিহাসিক স্থান এবং খাঁটি খাবারে পূর্ণ প্রাণবন্ত শহুরে অভিজ্ঞতা। এই প্রজন্মের পছন্দের গন্তব্যগুলোর মধ্যে রয়েছে বুয়েনোস আইরেস (আর্জেন্টিনা), বুসান (দক্ষিণ কোরিয়া), কো সামুই (থাইল্যান্ড), মারাকেশ (মরক্কো), মেক্সিকো সিটি (মেক্সিকো), সান জুয়ান (পুয়ের্তো রিকো) এবং স্টকহোম (সুইডেন)।
প্রকৃতির সঙ্গে আরও বেশি সময় কাটানো
প্রকৃতির সান্নিধ্য লাভ করা ২০২৫ সালেও একটি জনপ্রিয় প্রবণতা ছিল। আর ২০২৬ সালে এটি আরও বেগবান হবে। এয়ারবিএনবি জানিয়েছে যে বিশ্বজুড়ে জাতীয় উদ্যানগুলির প্রতি অনুসন্ধান এবং আগ্রহ উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। রিপোর্ট অনুযায়ী, একটি জাতীয় উদ্যানের কাছাকাছি থাকার জায়গা খোঁজার হার আগামী বছরের জন্য ৩৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষ করে গ্রেট স্মোকি মাউন্টেনস, শেনানডোহ এবং গ্র্যান্ড টেটনের মতো মার্কিন পার্কগুলোর শতবর্ষ উদ্যাপনের কারণে সেগুলোর প্রতি আগ্রহ আরও বাড়ছে। বৈশ্বিক গন্তব্যগুলোর মধ্যে স্যামারিয়া জর্জ ন্যাশনাল পার্কের কাছাকাছি গ্রিসের ক্রিট, ভিয়েনা, ইন্ডিয়ার গোয়া এবং ইতালির সার্ডিনিয়ার মতো স্থানগুলো ভ্রমণকারীদের নজরে রয়েছে।

বড় ইভেন্টগুলোর টানে ভিড় জমছে
২০২৬ সালে ভ্রমণকারীরা বড় ধরনের সাংস্কৃতিক, খেলাধুলা এবং সংগীত অনুষ্ঠানগুলোকে ঘিরে তাদের যাত্রা পরিকল্পনা করছেন। এয়ারবিএনবি-এর তথ্য অনুযায়ী, আগামী বছরের জন্য শীর্ষ-অনুসন্ধান করা তারিখ এবং শহরগুলোর ৬৫ শতাংশই প্রধান ইভেন্টগুলোর সঙ্গে মিলে যায়। যেমন ফিফা বিশ্বকাপ, কার্নিভাল বা কোচেলা। ভ্রমণকারীরা এই অভিজ্ঞতাগুলোকে অগ্রাধিকার দিচ্ছেন, যেন টিকিটই তাদের পাসপোর্টে পরিণত হচ্ছে। কার্নিভালের জন্য রিউ দে জানেরো, কোচেলার জন্য ইন্ডিয়ো, মার্ডি গ্রাস-এর জন্য নিউ অর্লিন্স এবং ২০২৬ অলিম্পিক উইন্টার গেমসের জন্য ইতালির মিলান শীর্ষ অনুসন্ধান তালিকায় রয়েছে।
একক ভ্রমণের পুনরুত্থান
একাকী ভ্রমণ বা সোল ট্রাভেল আবার তার কৃতিত্ব ফিরে পাচ্ছে। স্ব-আবিষ্কারের অনলাইন আলোচনায় উৎসাহিত হয়ে, একক ভ্রমণকারীরা এখন কেবল পুরোনো জায়গায় ফিরে যাচ্ছেন না বরং নতুন হটস্পট আবিষ্কার করছেন। ক্যালিফোর্নিয়ার ইডিল্ডওয়াইল্ড, ডোমিনিকান রিপাবলিকের লা আলতাগ্রেসিয়া এবং নরওয়ের ট্রোমসো-এর মতো জায়গাগুলোতে অনুসন্ধান তিন অঙ্কের বৃদ্ধি দেখছে। অন্যান্য জনপ্রিয় একক ভ্রমণের গন্তব্যের মধ্যে রয়েছে পর্তুগালের আলগার্ভ অঞ্চল, স্পেনের কোস্টা দেল সল, ফ্লোরিডা কিস এবং স্কটল্যান্ডের ইনভারনেস।
রন্ধনশিল্পের প্রতি আকর্ষণ
২০২৬ সালের জন্য খাবার ও পানীয় সম্পর্কিত ভ্রমণ যেন একেবারে আগুন ঝরাচ্ছে। যেখানে বেকারি ক্লাস এবং ওয়াইন অঞ্চলগুলো শীর্ষে রয়েছে। প্যারিসে ক্রোসঁ তৈরির ক্লাস বা টোকিওতে মোচি বানানো শেখার মতন হাতে-কলমে অভিজ্ঞতার দিকে ভ্রমণকারীরা ঝুঁকছেন। ভাইরাল হওয়া টিকটক ফুড ভিডিওগুলো বিশ্বজুড়ে বেকারি এবং রান্নার ক্লাসের প্রতি আগ্রহ তৈরি করছে। ওয়াইন-প্রেমীরা বেঙ্গালুরু (ভারত), ফিঙ্গার লেকস (নিউ ইয়র্ক), মেলবোর্ন (অস্ট্রেলিয়া)-এর মতো উঠতি ওয়াইন অঞ্চলগুলিতে যাচ্ছেন। বেকারি-হটস্পটগুলোর মধ্যে ইস্তাম্বুল, লিসবন, প্যারিস, তাইপে এবং টোকিও বিশেষ জনপ্রিয়তা লাভ করেছে।
সূত্র: ট্রাভেল+লিজার

আশ্চর্য সুন্দর পাহাড়, ঝিরঝির করে বয়ে চলা শীতল জলের নদী, পাহাড়চূড়ার বৌদ্ধমন্দির—সবকিছু মিলিয়ে দক্ষিণ এশিয়ার দেশ ভুটানের মতো চমৎকার ভ্রমণ গন্তব্য আছে কমই। ভুটানি রীতির বাড়ি-ঘরগুলোও নজর কাড়ে পর্যটকদের। লাল-সাদা রঙের কাঠের সামনের অংশ, ছোট জানালা, ঢালু ছাদ প্রতিটি বাড়ির। তেমনি মৌসুমে আপেল, কমলাসহ নানা ধর
২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
সুস্থ, সচেতন ও সক্রিয় নগরজীবন গঠনের বিভিন্ন আন্দোলন আছে ঢাকা শহরে। আছে তাদের নিয়মিত ইভেন্ট। এ ইতিহাসে যুক্ত হলো ‘ঢাকা ড্যাশ ৩০-কে’ ম্যারাথন। এর আয়োজক ছিল ক্রীড়া প্রতিষ্ঠান ট্রায়াথলন ড্রিমার্স। আয়োজক সূত্রে জানা গেছে, এটি ছিল ঢাকায় অনুষ্ঠিত দেশের প্রথম এআইএমএস সার্টিফায়েড ৩০ কিলোমিটার ম্যারাথন।...
৬ ঘণ্টা আগে
আমাদের শরীর ও মন পরস্পর ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত। আমরা যখন দুশ্চিন্তা করি বা মানসিক চাপে থাকি, তখন শরীরে এর প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়; যা আমাদের স্নায়ুতন্ত্রকে প্রভাবিত করে এবং এর ফলে অনেক সময় শরীরে চুলকানি বা জ্বালাপোড়ার মতো হতে পারে। এই অবস্থাকেই বলে ‘অ্যাংজাইটি ইচিং’ বা উদ্বেগজনিত চুলকানি।...
৮ ঘণ্টা আগে
বিলাসিতা কেমন হতে পারে? এর উত্তর খুঁজতে গেলে আমাদের চোখ চলে যায় পৃথিবীর সেই সব বিরল উপাদানের দিকে, যেগুলোর মূল্য প্রায় আকাশছোঁয়া। এই উপাদানগুলোর দুর্লভতা এবং অনন্যতাই তাদের করে তুলেছে বিশেষ। যারা জীবনের সেরা জিনিসগুলোর খোঁজ করেন তাদের জন্য এই ধরনের খাবার উপভোগ করতে পারা একটি বিশেষ চাহিদা হতে পারে।
১৪ ঘণ্টা আগে