লোকশ্রুতি আছে, প্রায় ৭০০ বছর আগে পাল বংশের রাজা আদিত্য পালের ছেলে কর্ণক পাল তাঁদের হাতি-ঘোড়া এবং সিপাহিদের গোসলসহ অন্যান্য কাজের জন্য খনন করেন ৫৫ বিঘার বিশাল একটি দিঘি। বড় দিঘি নামে পরিচিত পাল রাজাদের স্মৃতিবিজড়িত এই দিঘি গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার গোসিংগা ইউনিয়নের কর্ণপুর গ্রামে। আদিত্য পালের ছেলে কর্ণক পালের নাম অনুযায়ী এই গ্রামের নাম হয় কর্ণপুর।
রাজা আদিত্য পাল এবং পরে তাঁর ছেলে কর্ণক পাল কর্ণপুর গ্রামে বসতি স্থাপন করেন। যার স্মৃতিচিহ্ন আজও রয়েছে দিঘির শানবাঁধানো ঘাটে। কর্ণপুর বড় দিঘির পাড়ে এখনো কর্ণক পালের জমিদারবাড়ির ধ্বংসাবশেষ বিচ্ছিন্নভাবে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে। ইতিহাসের পাতায় পাল রাজাদের দিঘিটি তেমনভাবে স্থান করতে না পারলেও প্রতিদিন শত শত দর্শনার্থী এই দিঘি পরিদর্শনের জন্য আসেন। তাঁরা জমিদারবাড়ির ধ্বংসাবশেষের দিকে তাকিয়ে ফিরে যান অতীতে। রাজাদের নানা গল্পও মুখে মুখে ফেরে।
দেখা গেছে, বিশাল দিঘির পশ্চিম পাশে বিশাল শানবাঁধানো ঘাট। দিঘির পশ্চিম পাশের কোনো একটি স্থানে ছিল কর্ণক পালের বসতবাড়ি। যার স্মৃতিচিহ্ন ছোট ছোট পাথর এখনো মাটির নিচে রয়েছে। দিঘির চারপাশে রয়েছে ভূমিহীনদের ঘর। দিঘির পশ্চিম পাশে ইট সলিং সড়ক, সড়ক ঘেঁষে ঘরবাড়ি। পূর্ব পাশে ঘনবসতি, দক্ষিণ পাশে একটি পাকা সড়ক ঘেঁষে প্রাথমিক বিদ্যালয়। আর উত্তর পাশে উপজেলার সংযোগ সড়ক। দিঘির চারপাশে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের গাছ।বর্তমানে দিঘিটি একটি সমবায় সমিতির কাছে ইজারা দেওয়া রয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে গোসিংগা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান শাহীন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘শীতলক্ষ্যা নদীর তীরসংলগ্ন পাল বংশের কর্ণপুর বড় দিঘি সব সময় পর্যটকদের জন্য এক বিশেষ আকর্ষণ। সরকারি সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার বিষয়টি আরও বাড়ানো হলে পাল বংশের মূল্যবান নিদর্শনটি ইতিহাসের পাতায় স্থান করে নেবে।’
জানতে চাইলে ইউএনও মো. তরিকুল ইসলাম বলেন, পাল বংশের বড় দিঘিটি সরকারি সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার মধ্য দিয়ে পরিচালিত হচ্ছে। আরও বেশি তদারকির মাধ্যমে পাল বংশের মূল্যবান নিদর্শন আরও বেশি উজ্জীবিত করতে কাজ করা হবে।
মন্তব্য
ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে