আমিনুল ইসলাম নাবিল

ঢাকা: গ্রীষ্মের তাপদাহে অতিষ্ঠ নগরবাসী। একে তো রোজার মাস আরেকে তো গ্রীষ্মকাল। এই সময়ে বাজারে তরমুজের চাহিদা অনেক। করোনা পরিস্থিতিতে ভাজাপোড়ার পরিবর্তে অনেকেরই ইফতারে পছন্দের তালিকার শীর্ষে রয়েছে তরমুজ। তবে পাইকারি ও খুচরা সব জায়গাতেই এবার তরমুজের দাম আকাশচুম্বী, যা নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্তের সাধ্যের বাইরে।
তরমুজের এই অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধি নিয়ে পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতারা একে অপরকে দুষছেন। ক্রেতাদের আক্ষেপ শোনার যেন কেউ নেই।
রাজধানীর রায়সাহেব বাজারে তরমুজ কিনতে এসেছিলেন এক সিএনজি অটোরিকশা চালক। তাঁর কাছে মাঝারি আকারের একটি তরমুজের দাম হাঁকানো হয়েছে ৫৫০ টাকা। কিন্তু এত দাম দিয়ে তরমুজ কেনার সামর্থ্য তাঁর নেই। দাম শুনেই তিনি চলে যান। আজকের পত্রিকার প্রতিবেদককে এই সিএনজি অটোরিকশাচালক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, `এই মৌসুমে এখনো তরমুজ কিনতে পারিনি। প্রতিদিনই রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় দাম জিজ্ঞাসা করি, কিন্তু শেষমেশ আর কেনা হয় না।'
একই বাজারে তরমুজ কিনতে এসেছিলেন সদরঘাটের কাপড় ব্যবসায়ী দেলোয়ার হোসেন। তিনি বলেন, ৫০০ টাকা দিয়ে মাঝারি সাইজের একটি তরমুজ কিনলাম। আগে এগুলো ২০০ থেকে ২২০ টাকায় কেনা যেত। সরকারের মনিটরিং বাড়ানো উচিত।
কেজি হিসেবে, নাকি পিস হিসেবে তরমুজ কিনতে সুবিধা—জানতে চাইলে দেলোয়ার বলেন, কেজি দরেই বলেন, আর পিস হিসেবেই বলেন ওই দাম তো বাড়তিই। দিন শেষে ভোক্তাদের জন্য কোনো সুবিধা নেই।
সরেজমিনে আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর পাইকারি ফলের আড়ত বাদামতলীতে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে তরমুজের দাম চড়া। আগের যেকোনো বছরের চেয়ে এ বছর দাম বেশি। মাঝারি আকারের ১০০ তরমুজ বিক্রি হচ্ছে ৩৫ হাজার টাকায়। সেই হিসাবে প্রতি পিস তরমুজের দাম পড়ে ৩৫০ টাকা।
বাদামতলীর ফলের আড়তদার কামাল হোসেন বলেন, এ বছর খরার কারণে তরমুজ উৎপাদন কম হয়েছে। একদিকে উৎপাদন কম, আরেকদিকে চাহিদা বেশি। তাই এবার দাম বেড়েছে তরমুজের। বরিশাল-বরগুনার তরমুজ শেষ বললেই চলে। এখন বাজারে বেশির ভাগ খুলনার তরমুজ।
বাদামতলীর শাহজাদী এন্টারপ্রাইজের মালিক সাব্বির হোসেন বলেন, পাইকারিতে দাম একটু বেশি। তবে খুচরা পর্যায়ে জেনেছি, দাম একদম অসহনীয়। তাঁরা অধিক মুনাফার লোভে এমনটি করছেন।
খুচরা বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ২০০ টাকার নিচে কোনো তরমুজ নেই। মাঝারি আকারের তরমুজ বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকায়। আর বড় আকারের তররমুজ বিক্রি হচ্ছে ৫৫০ থেকে ৭০০ টাকায়।
রাজধানীর নবাবপুর রোডে তরমুজ বিক্রি করেন মো. পাপ্পু। পাইকারি পর্যায়ে পিস হিসেবে তরমুজ কিনলেও তিনি বিক্রি করছেন কেজি হিসেবে। এর কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, `শুধু তো এই বছর না, মেলা বছর ধরেই কেজিতে তরমুজ বিক্রি হচ্ছে। তরমুজের দাম বেশি। একটা ছোট তরমুজ আড়াই শ-তিন শ (টাকা) দাম চাইলে কাস্টমার দৌড় দেয়। তাই বুদ্ধি খাটায়া কেজিতে বেচি। এর মধ্যে পুলিশরে টাকা দেওন লাগে। পরিবহন খরচ আছে, চান্দা আছে, কুলি খরচ, ১০ শতাংশ আড়তদারি খরচ—সব মিলায়া অনেক খরচ। কত তরমুজ পইচ্চা যায়; আমাগো লস হয়। সব হিসাব মিলায়াই ৬০ টাকা কেজিতে বেচতেসি।'
রাজধানীর রায়সাহেব বাজারের তরমুজ ব্যবসায়ী মো. ইয়ামিন বলেন, `কেজিতে কিনলেই কাস্টমার জিতে। কারণ আমি ৬০ টাকা কেজিতে বেচতেসি; পাশের দোকানে কিন্তু ৬৫ টাকায় কেউ বেচতে পারব না। কাস্টমার এহন চালাক আছে। সব দোকানে খোঁজ নিয়াই কিনে। মানুষ ভাবতেসে আমরা খুচরা দোকানদারেরা খুব লাভ করতেসি। কিন্তু আমরাও ভালো নাই। আমরা পাইকারিতে বেশি দামে কিনতেসি। তাই বাধ্য হইয়াই বেশি দামে বেচতেসি। এখানে আমাদের দোষ নাই। পাইকারিওয়ালারাই দাম বাড়ায়া দিসে।'
এবার বেচাবিক্রি কেমন হচ্ছে জানতে চাইলে ইয়ামিন বলেন, বেচাবিক্রি নেই বললেই চলে। এত দাম দিয়ে কেনার সামর্থ্য অনেকেরই নেই। আর শুধু তো তরমুজ না, বাজারে সবকিছুর দামই বেশি।

ঢাকা: গ্রীষ্মের তাপদাহে অতিষ্ঠ নগরবাসী। একে তো রোজার মাস আরেকে তো গ্রীষ্মকাল। এই সময়ে বাজারে তরমুজের চাহিদা অনেক। করোনা পরিস্থিতিতে ভাজাপোড়ার পরিবর্তে অনেকেরই ইফতারে পছন্দের তালিকার শীর্ষে রয়েছে তরমুজ। তবে পাইকারি ও খুচরা সব জায়গাতেই এবার তরমুজের দাম আকাশচুম্বী, যা নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্তের সাধ্যের বাইরে।
তরমুজের এই অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধি নিয়ে পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতারা একে অপরকে দুষছেন। ক্রেতাদের আক্ষেপ শোনার যেন কেউ নেই।
রাজধানীর রায়সাহেব বাজারে তরমুজ কিনতে এসেছিলেন এক সিএনজি অটোরিকশা চালক। তাঁর কাছে মাঝারি আকারের একটি তরমুজের দাম হাঁকানো হয়েছে ৫৫০ টাকা। কিন্তু এত দাম দিয়ে তরমুজ কেনার সামর্থ্য তাঁর নেই। দাম শুনেই তিনি চলে যান। আজকের পত্রিকার প্রতিবেদককে এই সিএনজি অটোরিকশাচালক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, `এই মৌসুমে এখনো তরমুজ কিনতে পারিনি। প্রতিদিনই রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় দাম জিজ্ঞাসা করি, কিন্তু শেষমেশ আর কেনা হয় না।'
একই বাজারে তরমুজ কিনতে এসেছিলেন সদরঘাটের কাপড় ব্যবসায়ী দেলোয়ার হোসেন। তিনি বলেন, ৫০০ টাকা দিয়ে মাঝারি সাইজের একটি তরমুজ কিনলাম। আগে এগুলো ২০০ থেকে ২২০ টাকায় কেনা যেত। সরকারের মনিটরিং বাড়ানো উচিত।
কেজি হিসেবে, নাকি পিস হিসেবে তরমুজ কিনতে সুবিধা—জানতে চাইলে দেলোয়ার বলেন, কেজি দরেই বলেন, আর পিস হিসেবেই বলেন ওই দাম তো বাড়তিই। দিন শেষে ভোক্তাদের জন্য কোনো সুবিধা নেই।
সরেজমিনে আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর পাইকারি ফলের আড়ত বাদামতলীতে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে তরমুজের দাম চড়া। আগের যেকোনো বছরের চেয়ে এ বছর দাম বেশি। মাঝারি আকারের ১০০ তরমুজ বিক্রি হচ্ছে ৩৫ হাজার টাকায়। সেই হিসাবে প্রতি পিস তরমুজের দাম পড়ে ৩৫০ টাকা।
বাদামতলীর ফলের আড়তদার কামাল হোসেন বলেন, এ বছর খরার কারণে তরমুজ উৎপাদন কম হয়েছে। একদিকে উৎপাদন কম, আরেকদিকে চাহিদা বেশি। তাই এবার দাম বেড়েছে তরমুজের। বরিশাল-বরগুনার তরমুজ শেষ বললেই চলে। এখন বাজারে বেশির ভাগ খুলনার তরমুজ।
বাদামতলীর শাহজাদী এন্টারপ্রাইজের মালিক সাব্বির হোসেন বলেন, পাইকারিতে দাম একটু বেশি। তবে খুচরা পর্যায়ে জেনেছি, দাম একদম অসহনীয়। তাঁরা অধিক মুনাফার লোভে এমনটি করছেন।
খুচরা বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ২০০ টাকার নিচে কোনো তরমুজ নেই। মাঝারি আকারের তরমুজ বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকায়। আর বড় আকারের তররমুজ বিক্রি হচ্ছে ৫৫০ থেকে ৭০০ টাকায়।
রাজধানীর নবাবপুর রোডে তরমুজ বিক্রি করেন মো. পাপ্পু। পাইকারি পর্যায়ে পিস হিসেবে তরমুজ কিনলেও তিনি বিক্রি করছেন কেজি হিসেবে। এর কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, `শুধু তো এই বছর না, মেলা বছর ধরেই কেজিতে তরমুজ বিক্রি হচ্ছে। তরমুজের দাম বেশি। একটা ছোট তরমুজ আড়াই শ-তিন শ (টাকা) দাম চাইলে কাস্টমার দৌড় দেয়। তাই বুদ্ধি খাটায়া কেজিতে বেচি। এর মধ্যে পুলিশরে টাকা দেওন লাগে। পরিবহন খরচ আছে, চান্দা আছে, কুলি খরচ, ১০ শতাংশ আড়তদারি খরচ—সব মিলায়া অনেক খরচ। কত তরমুজ পইচ্চা যায়; আমাগো লস হয়। সব হিসাব মিলায়াই ৬০ টাকা কেজিতে বেচতেসি।'
রাজধানীর রায়সাহেব বাজারের তরমুজ ব্যবসায়ী মো. ইয়ামিন বলেন, `কেজিতে কিনলেই কাস্টমার জিতে। কারণ আমি ৬০ টাকা কেজিতে বেচতেসি; পাশের দোকানে কিন্তু ৬৫ টাকায় কেউ বেচতে পারব না। কাস্টমার এহন চালাক আছে। সব দোকানে খোঁজ নিয়াই কিনে। মানুষ ভাবতেসে আমরা খুচরা দোকানদারেরা খুব লাভ করতেসি। কিন্তু আমরাও ভালো নাই। আমরা পাইকারিতে বেশি দামে কিনতেসি। তাই বাধ্য হইয়াই বেশি দামে বেচতেসি। এখানে আমাদের দোষ নাই। পাইকারিওয়ালারাই দাম বাড়ায়া দিসে।'
এবার বেচাবিক্রি কেমন হচ্ছে জানতে চাইলে ইয়ামিন বলেন, বেচাবিক্রি নেই বললেই চলে। এত দাম দিয়ে কেনার সামর্থ্য অনেকেরই নেই। আর শুধু তো তরমুজ না, বাজারে সবকিছুর দামই বেশি।
আমিনুল ইসলাম নাবিল

ঢাকা: গ্রীষ্মের তাপদাহে অতিষ্ঠ নগরবাসী। একে তো রোজার মাস আরেকে তো গ্রীষ্মকাল। এই সময়ে বাজারে তরমুজের চাহিদা অনেক। করোনা পরিস্থিতিতে ভাজাপোড়ার পরিবর্তে অনেকেরই ইফতারে পছন্দের তালিকার শীর্ষে রয়েছে তরমুজ। তবে পাইকারি ও খুচরা সব জায়গাতেই এবার তরমুজের দাম আকাশচুম্বী, যা নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্তের সাধ্যের বাইরে।
তরমুজের এই অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধি নিয়ে পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতারা একে অপরকে দুষছেন। ক্রেতাদের আক্ষেপ শোনার যেন কেউ নেই।
রাজধানীর রায়সাহেব বাজারে তরমুজ কিনতে এসেছিলেন এক সিএনজি অটোরিকশা চালক। তাঁর কাছে মাঝারি আকারের একটি তরমুজের দাম হাঁকানো হয়েছে ৫৫০ টাকা। কিন্তু এত দাম দিয়ে তরমুজ কেনার সামর্থ্য তাঁর নেই। দাম শুনেই তিনি চলে যান। আজকের পত্রিকার প্রতিবেদককে এই সিএনজি অটোরিকশাচালক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, `এই মৌসুমে এখনো তরমুজ কিনতে পারিনি। প্রতিদিনই রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় দাম জিজ্ঞাসা করি, কিন্তু শেষমেশ আর কেনা হয় না।'
একই বাজারে তরমুজ কিনতে এসেছিলেন সদরঘাটের কাপড় ব্যবসায়ী দেলোয়ার হোসেন। তিনি বলেন, ৫০০ টাকা দিয়ে মাঝারি সাইজের একটি তরমুজ কিনলাম। আগে এগুলো ২০০ থেকে ২২০ টাকায় কেনা যেত। সরকারের মনিটরিং বাড়ানো উচিত।
কেজি হিসেবে, নাকি পিস হিসেবে তরমুজ কিনতে সুবিধা—জানতে চাইলে দেলোয়ার বলেন, কেজি দরেই বলেন, আর পিস হিসেবেই বলেন ওই দাম তো বাড়তিই। দিন শেষে ভোক্তাদের জন্য কোনো সুবিধা নেই।
সরেজমিনে আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর পাইকারি ফলের আড়ত বাদামতলীতে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে তরমুজের দাম চড়া। আগের যেকোনো বছরের চেয়ে এ বছর দাম বেশি। মাঝারি আকারের ১০০ তরমুজ বিক্রি হচ্ছে ৩৫ হাজার টাকায়। সেই হিসাবে প্রতি পিস তরমুজের দাম পড়ে ৩৫০ টাকা।
বাদামতলীর ফলের আড়তদার কামাল হোসেন বলেন, এ বছর খরার কারণে তরমুজ উৎপাদন কম হয়েছে। একদিকে উৎপাদন কম, আরেকদিকে চাহিদা বেশি। তাই এবার দাম বেড়েছে তরমুজের। বরিশাল-বরগুনার তরমুজ শেষ বললেই চলে। এখন বাজারে বেশির ভাগ খুলনার তরমুজ।
বাদামতলীর শাহজাদী এন্টারপ্রাইজের মালিক সাব্বির হোসেন বলেন, পাইকারিতে দাম একটু বেশি। তবে খুচরা পর্যায়ে জেনেছি, দাম একদম অসহনীয়। তাঁরা অধিক মুনাফার লোভে এমনটি করছেন।
খুচরা বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ২০০ টাকার নিচে কোনো তরমুজ নেই। মাঝারি আকারের তরমুজ বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকায়। আর বড় আকারের তররমুজ বিক্রি হচ্ছে ৫৫০ থেকে ৭০০ টাকায়।
রাজধানীর নবাবপুর রোডে তরমুজ বিক্রি করেন মো. পাপ্পু। পাইকারি পর্যায়ে পিস হিসেবে তরমুজ কিনলেও তিনি বিক্রি করছেন কেজি হিসেবে। এর কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, `শুধু তো এই বছর না, মেলা বছর ধরেই কেজিতে তরমুজ বিক্রি হচ্ছে। তরমুজের দাম বেশি। একটা ছোট তরমুজ আড়াই শ-তিন শ (টাকা) দাম চাইলে কাস্টমার দৌড় দেয়। তাই বুদ্ধি খাটায়া কেজিতে বেচি। এর মধ্যে পুলিশরে টাকা দেওন লাগে। পরিবহন খরচ আছে, চান্দা আছে, কুলি খরচ, ১০ শতাংশ আড়তদারি খরচ—সব মিলায়া অনেক খরচ। কত তরমুজ পইচ্চা যায়; আমাগো লস হয়। সব হিসাব মিলায়াই ৬০ টাকা কেজিতে বেচতেসি।'
রাজধানীর রায়সাহেব বাজারের তরমুজ ব্যবসায়ী মো. ইয়ামিন বলেন, `কেজিতে কিনলেই কাস্টমার জিতে। কারণ আমি ৬০ টাকা কেজিতে বেচতেসি; পাশের দোকানে কিন্তু ৬৫ টাকায় কেউ বেচতে পারব না। কাস্টমার এহন চালাক আছে। সব দোকানে খোঁজ নিয়াই কিনে। মানুষ ভাবতেসে আমরা খুচরা দোকানদারেরা খুব লাভ করতেসি। কিন্তু আমরাও ভালো নাই। আমরা পাইকারিতে বেশি দামে কিনতেসি। তাই বাধ্য হইয়াই বেশি দামে বেচতেসি। এখানে আমাদের দোষ নাই। পাইকারিওয়ালারাই দাম বাড়ায়া দিসে।'
এবার বেচাবিক্রি কেমন হচ্ছে জানতে চাইলে ইয়ামিন বলেন, বেচাবিক্রি নেই বললেই চলে। এত দাম দিয়ে কেনার সামর্থ্য অনেকেরই নেই। আর শুধু তো তরমুজ না, বাজারে সবকিছুর দামই বেশি।

ঢাকা: গ্রীষ্মের তাপদাহে অতিষ্ঠ নগরবাসী। একে তো রোজার মাস আরেকে তো গ্রীষ্মকাল। এই সময়ে বাজারে তরমুজের চাহিদা অনেক। করোনা পরিস্থিতিতে ভাজাপোড়ার পরিবর্তে অনেকেরই ইফতারে পছন্দের তালিকার শীর্ষে রয়েছে তরমুজ। তবে পাইকারি ও খুচরা সব জায়গাতেই এবার তরমুজের দাম আকাশচুম্বী, যা নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্তের সাধ্যের বাইরে।
তরমুজের এই অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধি নিয়ে পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতারা একে অপরকে দুষছেন। ক্রেতাদের আক্ষেপ শোনার যেন কেউ নেই।
রাজধানীর রায়সাহেব বাজারে তরমুজ কিনতে এসেছিলেন এক সিএনজি অটোরিকশা চালক। তাঁর কাছে মাঝারি আকারের একটি তরমুজের দাম হাঁকানো হয়েছে ৫৫০ টাকা। কিন্তু এত দাম দিয়ে তরমুজ কেনার সামর্থ্য তাঁর নেই। দাম শুনেই তিনি চলে যান। আজকের পত্রিকার প্রতিবেদককে এই সিএনজি অটোরিকশাচালক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, `এই মৌসুমে এখনো তরমুজ কিনতে পারিনি। প্রতিদিনই রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় দাম জিজ্ঞাসা করি, কিন্তু শেষমেশ আর কেনা হয় না।'
একই বাজারে তরমুজ কিনতে এসেছিলেন সদরঘাটের কাপড় ব্যবসায়ী দেলোয়ার হোসেন। তিনি বলেন, ৫০০ টাকা দিয়ে মাঝারি সাইজের একটি তরমুজ কিনলাম। আগে এগুলো ২০০ থেকে ২২০ টাকায় কেনা যেত। সরকারের মনিটরিং বাড়ানো উচিত।
কেজি হিসেবে, নাকি পিস হিসেবে তরমুজ কিনতে সুবিধা—জানতে চাইলে দেলোয়ার বলেন, কেজি দরেই বলেন, আর পিস হিসেবেই বলেন ওই দাম তো বাড়তিই। দিন শেষে ভোক্তাদের জন্য কোনো সুবিধা নেই।
সরেজমিনে আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর পাইকারি ফলের আড়ত বাদামতলীতে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে তরমুজের দাম চড়া। আগের যেকোনো বছরের চেয়ে এ বছর দাম বেশি। মাঝারি আকারের ১০০ তরমুজ বিক্রি হচ্ছে ৩৫ হাজার টাকায়। সেই হিসাবে প্রতি পিস তরমুজের দাম পড়ে ৩৫০ টাকা।
বাদামতলীর ফলের আড়তদার কামাল হোসেন বলেন, এ বছর খরার কারণে তরমুজ উৎপাদন কম হয়েছে। একদিকে উৎপাদন কম, আরেকদিকে চাহিদা বেশি। তাই এবার দাম বেড়েছে তরমুজের। বরিশাল-বরগুনার তরমুজ শেষ বললেই চলে। এখন বাজারে বেশির ভাগ খুলনার তরমুজ।
বাদামতলীর শাহজাদী এন্টারপ্রাইজের মালিক সাব্বির হোসেন বলেন, পাইকারিতে দাম একটু বেশি। তবে খুচরা পর্যায়ে জেনেছি, দাম একদম অসহনীয়। তাঁরা অধিক মুনাফার লোভে এমনটি করছেন।
খুচরা বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ২০০ টাকার নিচে কোনো তরমুজ নেই। মাঝারি আকারের তরমুজ বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকায়। আর বড় আকারের তররমুজ বিক্রি হচ্ছে ৫৫০ থেকে ৭০০ টাকায়।
রাজধানীর নবাবপুর রোডে তরমুজ বিক্রি করেন মো. পাপ্পু। পাইকারি পর্যায়ে পিস হিসেবে তরমুজ কিনলেও তিনি বিক্রি করছেন কেজি হিসেবে। এর কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, `শুধু তো এই বছর না, মেলা বছর ধরেই কেজিতে তরমুজ বিক্রি হচ্ছে। তরমুজের দাম বেশি। একটা ছোট তরমুজ আড়াই শ-তিন শ (টাকা) দাম চাইলে কাস্টমার দৌড় দেয়। তাই বুদ্ধি খাটায়া কেজিতে বেচি। এর মধ্যে পুলিশরে টাকা দেওন লাগে। পরিবহন খরচ আছে, চান্দা আছে, কুলি খরচ, ১০ শতাংশ আড়তদারি খরচ—সব মিলায়া অনেক খরচ। কত তরমুজ পইচ্চা যায়; আমাগো লস হয়। সব হিসাব মিলায়াই ৬০ টাকা কেজিতে বেচতেসি।'
রাজধানীর রায়সাহেব বাজারের তরমুজ ব্যবসায়ী মো. ইয়ামিন বলেন, `কেজিতে কিনলেই কাস্টমার জিতে। কারণ আমি ৬০ টাকা কেজিতে বেচতেসি; পাশের দোকানে কিন্তু ৬৫ টাকায় কেউ বেচতে পারব না। কাস্টমার এহন চালাক আছে। সব দোকানে খোঁজ নিয়াই কিনে। মানুষ ভাবতেসে আমরা খুচরা দোকানদারেরা খুব লাভ করতেসি। কিন্তু আমরাও ভালো নাই। আমরা পাইকারিতে বেশি দামে কিনতেসি। তাই বাধ্য হইয়াই বেশি দামে বেচতেসি। এখানে আমাদের দোষ নাই। পাইকারিওয়ালারাই দাম বাড়ায়া দিসে।'
এবার বেচাবিক্রি কেমন হচ্ছে জানতে চাইলে ইয়ামিন বলেন, বেচাবিক্রি নেই বললেই চলে। এত দাম দিয়ে কেনার সামর্থ্য অনেকেরই নেই। আর শুধু তো তরমুজ না, বাজারে সবকিছুর দামই বেশি।

পার্বত্য জেলা বান্দরবানের থানচি উপজেলায় দুস্থ মহিলা সহায়তা (ভিডব্লিউবি) কর্মসূচির আওতায় ১ হাজার ৬৭৪ জন কার্ডধারী রয়েছেন। তাঁদের প্রতি মাসে ৩০ কেজি করে চাল দিয়ে আসছে মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তর। এসব কার্ডধারীর কাছ থেকে প্রতিবার চাল বিতরণের সময় সুরক্ষা সঞ্চয় বাবদ ২২০ টাকা জমা নেয় সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন...
১ ঘণ্টা আগে
ঋণ নিয়ে ৪০ বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছিলেন নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার আবদুর রাজ্জাক। লাভের আশায় ৮০০ বস্তা আলু কোল্ড স্টোরেজে মজুত রেখেছিলেন তিনি। কিন্তু সম্প্রতি বাজারে দামের ধসে বাধ্য হয়ে প্রতি বস্তা আলুর স্লিপ ১০০ টাকায় বিক্রি করে দিয়েছেন তিনি। এতে তাঁর লোকসান দাঁড়িয়েছে প্রায় ১৬ লাখ টাকা।
১ ঘণ্টা আগে
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক তফসিল ঘোষণার আগে থেকে ঝালকাঠিতে নির্বাচনী উত্তাপ ছড়িয়েছে। নির্বাচনী প্রচারের মাঠে নদীভাঙন, স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা, কর্মসংস্থান এবং সড়ক অবকাঠামো উন্নয়ন প্রধান ইস্যু হিসেবে উঠে এসেছে নদী-খালবেষ্টিত এই জেলায়।
১ ঘণ্টা আগে
দেড় দশকের বেশি সময় ধরে কখনো ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’, আবার কখনো ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ার স্লোগান শুনে আসছে দেশের মানুষ। এ নিয়ে ‘অ্যাকসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই)’ নামে প্রকল্পও আছে সরকারের। বেসরকারি পর্যায়েও রয়েছে নানা উদ্যোগ। তারপরও দেশের ৪৩ দশমিক ৯৮ শতাংশ পরিবার এখনো ইন্টারনেট সেবার আওতার বাইরে রয়ে গেছে।
২ ঘণ্টা আগেমংবোওয়াংচিং মারমা, থানচি (বান্দরবান)

পার্বত্য জেলা বান্দরবানের থানচি উপজেলায় দুস্থ মহিলা সহায়তা (ভিডব্লিউবি) কর্মসূচির আওতায় ১ হাজার ৬৭৪ জন কার্ডধারী রয়েছেন। তাঁদের প্রতি মাসে ৩০ কেজি করে চাল দিয়ে আসছে মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তর। এসব কার্ডধারীর কাছ থেকে প্রতিবার চাল বিতরণের সময় সুরক্ষা সঞ্চয় বাবদ ২২০ টাকা জমা নেয় সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি); যা ব্যাংক হিসাবে জমা রাখার কথা।
দুই বছরের মেয়াদ পূর্ণ হলে সঞ্চয়ের সেই টাকা উপকারভোগীদের ফিরিয়ে দেওয়ার নিয়ম। কিন্তু উপজেলাটিতে ২০২৩ ও ২০২৪ সালের তালিকাভুক্ত ১ হাজার ২০০ জনের বেশি উপকারভোগী সেই সঞ্চয়ের টাকা এক বছরেও ফেরত পাননি। সুরক্ষার জন্য সঞ্চয় করে এখন দরিদ্র এসব নারী মানবেতর জীবন যাপন করছেন এবং কর্মকর্তাদের দ্বারে দ্বারে ঘুরতে হচ্ছে।
মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তরের উপজেলা কার্যালয় ও ইউনিয়ন পরিষদ সূত্রে জানা গেছে, চার ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত উপজেলাটিতে ২০২৩ ও ২০২৪ সালে প্রত্যেক কার্ডধারীর কাছ থেকে ২৪ মাসে সরকারি নিয়ম অনুযায়ী ২২০ টাকা করে সুরক্ষা সঞ্চয় আদায় করা হয়। প্রত্যেকের সঞ্চয় হয় ৫ হাজার ২৮০ টাকা। হিসাব অনুযায়ী, চার ইউপিতে সঞ্চয় জমা হওয়ার কথা মোট ৮৮ লাখ ৩৮ হাজার ৭২০ টাকা। যদিও কার্ডধারী নারীদের অভিযোগ, তাঁদের কাছ থেকে নিয়মবহির্ভূতভাবে ৫০ টাকা বাড়িয়ে ২৭০ টাকা করে আদায় করা হয়।
উপজেলা মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩-২৪ চক্রে রেমাক্রী ইউপিতে ৪২৪ জন, তিন্দুতে ৪৩০, থানচি সদরে ৪২০ ও বলিপাড়া ইউপিতে ৪০০ কার্ডধারী ছিলেন।
সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী, ভিডব্লিউবি কর্মসূচির সঞ্চয় তহবিল সরকারের অনুমোদিত ব্যাংকে উপজেলা কমিটি সভাপতি ও সদস্যসচিবের যৌথ স্বাক্ষরিত কেন্দ্রীয় হিসাবে জমা রাখতে হয়। কিন্তু চার ইউপির কোনোটিতে সেই নীতিমালা মানা হয়নি। ইউপি চেয়ারম্যানরা সঞ্চয়ের টাকা ব্যাংকে জমা না রেখে নিজেদের কাছে রাখেন। যদিও তাঁদের দাবি, মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার পর তাঁরা ওই টাকা উপজেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তার কার্যালয়ের অফিস সহকারী এমরান হোসেনের কাছে জমা রেখেছেন। কিন্তু গত ২০ সেপ্টেম্বর এমরান মারা যান। পরে সঞ্চয় ফেরত দেওয়া অনিশ্চয়তায় পড়ে।
বলিপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান জিয়াঅং মারমা বলেন, ‘২০১৬ সাল থেকে এই কর্মসূচির আওতায় সুরক্ষা সঞ্চয় টাকা আদায়ের পর মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তার পরামর্শে ম্যানুয়ালি (কাগজে লিখে কাছে জমা রাখা) জমা রাখা হয়। ২০২৩ ও ২০২৪ চক্রের মেয়াদ পূর্ণ হলে ৩৫০ জনের প্রতি মাসের ২২০ টাকা হারে মোট ১৮ লাখ ৪৮ হাজার টাকা এমরান হোসেনের হাতে দিই। এ ছাড়া ৪২০ জনের মধ্যে ৬০ জনের মতো কার্ডধারীর টাকা নিজেই ফেরত দিয়েছি। এখন এমরান মারা যাওয়ায় বিপত্তি বেধেছে। তাঁর ওপর অগাধ বিশ্বাস থাকায় সে সময় কোনো প্রমাণপত্র নিইনি।’
রেমাক্রীর ইউপি সচিব উশৈ মারমা বলেন, ‘ভিডব্লিউবি কর্মসূচির উপকারভোগীদের তালিকা চেয়ারম্যান মুইশৈথুই মারমা রনি পকেটে করে নিয়ে যেতেন। আমি কর্মসূচির কমিটিতে সদস্যসচিব হিসেবে থাকলেও তালিকা প্রণয়ন, বিতরণ, সঞ্চয় গ্রহণ, ব্যাংকের জমা করানো, সব কাজ করেন চেয়ারম্যান। তিনি মৌজার হেডম্যান ও আওয়ামী লীগের নেতা হওয়ায় দাপট দেখাতেন। আমাকে নাক গলাতে নিষেধ করেছেন।’
রেমাক্রী ইউপি চেয়ারম্যান মুইশৈথুই মারমা রনি বলেন, ‘আমি বান্দরবানে আছি। থানচিতে এলে এ বিষয়ে সরাসরি বলব। এ বিষয়ে নিউজ করবেন না। আপনাদেরও ভবিষ্যৎ রয়েছে।’ এমন হুমকি দিয়ে তিনি সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।
তিন্দু ইউপি চেয়ারম্যান ভাগ্য চন্দ্র ত্রিপুরা বলেন, ‘আমরা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা ও পুরোনো চেয়ারম্যানদের গুটিচালের (ষড়যন্ত্র) স্বীকার হয়েছি। শিগগির সঞ্চয়ের টাকা ফেরত দেব।’
থানচি সদর ইউপি চেয়ারম্যান অংপ্রু ম্রো বলেন, সব উপকারভোগীর সঞ্চয়ের টাকা ফেরত দেওয়া হয়েছে। যদিও এখনো ৩০ জনের টাকা ফেরত দেওয়া হয়নি বলে জানা গেছে।
উপজেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তার কার্যালয়ের মারা যাওয়া অফিস সহকারী এমরান হোসেনের স্ত্রী রুমা আক্তার বলেন, ‘গত ২২ নভেম্বর মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) আয়েশা আক্তার আমাকে এবং চার ইউপি চেয়ারম্যানকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে যান। এ সময় চেয়ারম্যানরা দাবি করেছেন, আমার স্বামীর কাছে সঞ্চয়ী আমানতের বলিপাড়ার ১৫ লাখ, থানচি সদরে ৫ লাখ, তিন্দুর ১৪ লাখ, রেমাক্রীর ২৪ লাখসহ মোট ৫৮ লাখ টাকা জমা দেওয়া হয়েছে। এর বাইরেও আমার স্বামীর কাছে কিছু টাকা জমা রাখা হয়েছে। সব মিলিয়ে মোট ৭০ লাখ টাকা দিয়েছেন বলে তাঁরা দাবি করছেন।’
সঞ্চয়ের টাকা না পাওয়া বলিপাড়ার উপকারভোগী নুমেউ মারমা, উমেসিং মারমা, মাচাইসিং মারমা, হ্লায়ইনুসহ বেশ কয়েকজনের সঙ্গে কথা হয়। তাঁদের অভিযোগ, ২০২২ সালে কার্ডের তালিকা অন্তর্ভুক্ত করার জন্য তাঁদের কাছ থেকে ৫০০ টাকা সঞ্চয়ের সময় অতিরিক্ত ৫০ টাকা করে আদায় করা হয়।
থানচি উপজেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) আয়েশা আক্তার বলেন, ‘দুস্থ নারীদের সঞ্চয় আমানত গত ২৩ সেপ্টেম্বর ফেরত দেওয়ার সব প্রস্তুতি সম্পন্ন ছিল, কিন্তু এর আগেই সহকর্মী (অফিস সহকারী) এমরান হোসেন মারা যাওয়ায় টাকা ফেরত দিতে বিলম্ব হচ্ছে। ১ জানুয়ারির মধ্যে সঞ্চয়ের টাকা ফেরত দেওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’
থানচির ইউএনও মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ-আল-ফয়সাল বলেন, ‘মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা প্রস্তুতি নিয়েছেন। আগামী ১ জানুয়ারির মধ্য সঞ্চয়ের টাকা ফেরত দেওয়ার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আমি উপস্থিত থেকে বিতরণ করব।’

পার্বত্য জেলা বান্দরবানের থানচি উপজেলায় দুস্থ মহিলা সহায়তা (ভিডব্লিউবি) কর্মসূচির আওতায় ১ হাজার ৬৭৪ জন কার্ডধারী রয়েছেন। তাঁদের প্রতি মাসে ৩০ কেজি করে চাল দিয়ে আসছে মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তর। এসব কার্ডধারীর কাছ থেকে প্রতিবার চাল বিতরণের সময় সুরক্ষা সঞ্চয় বাবদ ২২০ টাকা জমা নেয় সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি); যা ব্যাংক হিসাবে জমা রাখার কথা।
দুই বছরের মেয়াদ পূর্ণ হলে সঞ্চয়ের সেই টাকা উপকারভোগীদের ফিরিয়ে দেওয়ার নিয়ম। কিন্তু উপজেলাটিতে ২০২৩ ও ২০২৪ সালের তালিকাভুক্ত ১ হাজার ২০০ জনের বেশি উপকারভোগী সেই সঞ্চয়ের টাকা এক বছরেও ফেরত পাননি। সুরক্ষার জন্য সঞ্চয় করে এখন দরিদ্র এসব নারী মানবেতর জীবন যাপন করছেন এবং কর্মকর্তাদের দ্বারে দ্বারে ঘুরতে হচ্ছে।
মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তরের উপজেলা কার্যালয় ও ইউনিয়ন পরিষদ সূত্রে জানা গেছে, চার ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত উপজেলাটিতে ২০২৩ ও ২০২৪ সালে প্রত্যেক কার্ডধারীর কাছ থেকে ২৪ মাসে সরকারি নিয়ম অনুযায়ী ২২০ টাকা করে সুরক্ষা সঞ্চয় আদায় করা হয়। প্রত্যেকের সঞ্চয় হয় ৫ হাজার ২৮০ টাকা। হিসাব অনুযায়ী, চার ইউপিতে সঞ্চয় জমা হওয়ার কথা মোট ৮৮ লাখ ৩৮ হাজার ৭২০ টাকা। যদিও কার্ডধারী নারীদের অভিযোগ, তাঁদের কাছ থেকে নিয়মবহির্ভূতভাবে ৫০ টাকা বাড়িয়ে ২৭০ টাকা করে আদায় করা হয়।
উপজেলা মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩-২৪ চক্রে রেমাক্রী ইউপিতে ৪২৪ জন, তিন্দুতে ৪৩০, থানচি সদরে ৪২০ ও বলিপাড়া ইউপিতে ৪০০ কার্ডধারী ছিলেন।
সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী, ভিডব্লিউবি কর্মসূচির সঞ্চয় তহবিল সরকারের অনুমোদিত ব্যাংকে উপজেলা কমিটি সভাপতি ও সদস্যসচিবের যৌথ স্বাক্ষরিত কেন্দ্রীয় হিসাবে জমা রাখতে হয়। কিন্তু চার ইউপির কোনোটিতে সেই নীতিমালা মানা হয়নি। ইউপি চেয়ারম্যানরা সঞ্চয়ের টাকা ব্যাংকে জমা না রেখে নিজেদের কাছে রাখেন। যদিও তাঁদের দাবি, মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার পর তাঁরা ওই টাকা উপজেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তার কার্যালয়ের অফিস সহকারী এমরান হোসেনের কাছে জমা রেখেছেন। কিন্তু গত ২০ সেপ্টেম্বর এমরান মারা যান। পরে সঞ্চয় ফেরত দেওয়া অনিশ্চয়তায় পড়ে।
বলিপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান জিয়াঅং মারমা বলেন, ‘২০১৬ সাল থেকে এই কর্মসূচির আওতায় সুরক্ষা সঞ্চয় টাকা আদায়ের পর মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তার পরামর্শে ম্যানুয়ালি (কাগজে লিখে কাছে জমা রাখা) জমা রাখা হয়। ২০২৩ ও ২০২৪ চক্রের মেয়াদ পূর্ণ হলে ৩৫০ জনের প্রতি মাসের ২২০ টাকা হারে মোট ১৮ লাখ ৪৮ হাজার টাকা এমরান হোসেনের হাতে দিই। এ ছাড়া ৪২০ জনের মধ্যে ৬০ জনের মতো কার্ডধারীর টাকা নিজেই ফেরত দিয়েছি। এখন এমরান মারা যাওয়ায় বিপত্তি বেধেছে। তাঁর ওপর অগাধ বিশ্বাস থাকায় সে সময় কোনো প্রমাণপত্র নিইনি।’
রেমাক্রীর ইউপি সচিব উশৈ মারমা বলেন, ‘ভিডব্লিউবি কর্মসূচির উপকারভোগীদের তালিকা চেয়ারম্যান মুইশৈথুই মারমা রনি পকেটে করে নিয়ে যেতেন। আমি কর্মসূচির কমিটিতে সদস্যসচিব হিসেবে থাকলেও তালিকা প্রণয়ন, বিতরণ, সঞ্চয় গ্রহণ, ব্যাংকের জমা করানো, সব কাজ করেন চেয়ারম্যান। তিনি মৌজার হেডম্যান ও আওয়ামী লীগের নেতা হওয়ায় দাপট দেখাতেন। আমাকে নাক গলাতে নিষেধ করেছেন।’
রেমাক্রী ইউপি চেয়ারম্যান মুইশৈথুই মারমা রনি বলেন, ‘আমি বান্দরবানে আছি। থানচিতে এলে এ বিষয়ে সরাসরি বলব। এ বিষয়ে নিউজ করবেন না। আপনাদেরও ভবিষ্যৎ রয়েছে।’ এমন হুমকি দিয়ে তিনি সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।
তিন্দু ইউপি চেয়ারম্যান ভাগ্য চন্দ্র ত্রিপুরা বলেন, ‘আমরা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা ও পুরোনো চেয়ারম্যানদের গুটিচালের (ষড়যন্ত্র) স্বীকার হয়েছি। শিগগির সঞ্চয়ের টাকা ফেরত দেব।’
থানচি সদর ইউপি চেয়ারম্যান অংপ্রু ম্রো বলেন, সব উপকারভোগীর সঞ্চয়ের টাকা ফেরত দেওয়া হয়েছে। যদিও এখনো ৩০ জনের টাকা ফেরত দেওয়া হয়নি বলে জানা গেছে।
উপজেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তার কার্যালয়ের মারা যাওয়া অফিস সহকারী এমরান হোসেনের স্ত্রী রুমা আক্তার বলেন, ‘গত ২২ নভেম্বর মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) আয়েশা আক্তার আমাকে এবং চার ইউপি চেয়ারম্যানকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে যান। এ সময় চেয়ারম্যানরা দাবি করেছেন, আমার স্বামীর কাছে সঞ্চয়ী আমানতের বলিপাড়ার ১৫ লাখ, থানচি সদরে ৫ লাখ, তিন্দুর ১৪ লাখ, রেমাক্রীর ২৪ লাখসহ মোট ৫৮ লাখ টাকা জমা দেওয়া হয়েছে। এর বাইরেও আমার স্বামীর কাছে কিছু টাকা জমা রাখা হয়েছে। সব মিলিয়ে মোট ৭০ লাখ টাকা দিয়েছেন বলে তাঁরা দাবি করছেন।’
সঞ্চয়ের টাকা না পাওয়া বলিপাড়ার উপকারভোগী নুমেউ মারমা, উমেসিং মারমা, মাচাইসিং মারমা, হ্লায়ইনুসহ বেশ কয়েকজনের সঙ্গে কথা হয়। তাঁদের অভিযোগ, ২০২২ সালে কার্ডের তালিকা অন্তর্ভুক্ত করার জন্য তাঁদের কাছ থেকে ৫০০ টাকা সঞ্চয়ের সময় অতিরিক্ত ৫০ টাকা করে আদায় করা হয়।
থানচি উপজেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) আয়েশা আক্তার বলেন, ‘দুস্থ নারীদের সঞ্চয় আমানত গত ২৩ সেপ্টেম্বর ফেরত দেওয়ার সব প্রস্তুতি সম্পন্ন ছিল, কিন্তু এর আগেই সহকর্মী (অফিস সহকারী) এমরান হোসেন মারা যাওয়ায় টাকা ফেরত দিতে বিলম্ব হচ্ছে। ১ জানুয়ারির মধ্যে সঞ্চয়ের টাকা ফেরত দেওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’
থানচির ইউএনও মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ-আল-ফয়সাল বলেন, ‘মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা প্রস্তুতি নিয়েছেন। আগামী ১ জানুয়ারির মধ্য সঞ্চয়ের টাকা ফেরত দেওয়ার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আমি উপস্থিত থেকে বিতরণ করব।’

গ্রীষ্মের তাপদাহে অতিষ্ঠ নগরবাসী। একে তো রোজার মাস আরেকে তো গ্রীষ্মকাল। এই সময়ে বাজারে তরমুজের চাহিদা অনেক। করোনা পরিস্থিতিতে ভাজাপোড়ার পরিবর্তে অনেকেরই ইফতারে পছন্দের তালিকার শীর্ষে রয়েছে তরমুজ
২৯ এপ্রিল ২০২১
ঋণ নিয়ে ৪০ বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছিলেন নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার আবদুর রাজ্জাক। লাভের আশায় ৮০০ বস্তা আলু কোল্ড স্টোরেজে মজুত রেখেছিলেন তিনি। কিন্তু সম্প্রতি বাজারে দামের ধসে বাধ্য হয়ে প্রতি বস্তা আলুর স্লিপ ১০০ টাকায় বিক্রি করে দিয়েছেন তিনি। এতে তাঁর লোকসান দাঁড়িয়েছে প্রায় ১৬ লাখ টাকা।
১ ঘণ্টা আগে
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক তফসিল ঘোষণার আগে থেকে ঝালকাঠিতে নির্বাচনী উত্তাপ ছড়িয়েছে। নির্বাচনী প্রচারের মাঠে নদীভাঙন, স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা, কর্মসংস্থান এবং সড়ক অবকাঠামো উন্নয়ন প্রধান ইস্যু হিসেবে উঠে এসেছে নদী-খালবেষ্টিত এই জেলায়।
১ ঘণ্টা আগে
দেড় দশকের বেশি সময় ধরে কখনো ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’, আবার কখনো ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ার স্লোগান শুনে আসছে দেশের মানুষ। এ নিয়ে ‘অ্যাকসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই)’ নামে প্রকল্পও আছে সরকারের। বেসরকারি পর্যায়েও রয়েছে নানা উদ্যোগ। তারপরও দেশের ৪৩ দশমিক ৯৮ শতাংশ পরিবার এখনো ইন্টারনেট সেবার আওতার বাইরে রয়ে গেছে।
২ ঘণ্টা আগেডিমলা (নীলফামারী) প্রতিনিধি

ঋণ নিয়ে ৪০ বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছিলেন নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার আবদুর রাজ্জাক। লাভের আশায় ৮০০ বস্তা আলু কোল্ড স্টোরেজে মজুত রেখেছিলেন তিনি। কিন্তু সম্প্রতি বাজারে দামের ধসে বাধ্য হয়ে প্রতি বস্তা আলুর স্লিপ ১০০ টাকায় বিক্রি করে দিয়েছেন তিনি। এতে তাঁর লোকসান দাঁড়িয়েছে প্রায় ১৬ লাখ টাকা। ঋণের চাপে এখন তাঁর পথে বসার দশা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আবদুর রাজ্জাক একা নন। দেশের অন্যতম আলু উৎপাদনকারী জেলা নীলফামারীতে কোল্ড স্টোরেজে মজুত করা আলু নিয়ে সংকটে পড়েছেন অসংখ্য আলুচাষি ও ব্যবসায়ী। তাঁরা বলছেন, বাজারে আলুর দামে বড় ধরনের পতন হওয়ায় উৎপাদন খরচ উঠছে না। অনেক ক্ষেত্রে বস্তার দামও উঠছে না বলে দাবি তাঁদের। লোকসান সামলাতে না পেরে অনেক কৃষক বিপাকে পড়েছেন বলে জানিয়েছেন।
বর্তমানে নীলফামারীর ১১টি কোল্ড স্টোরেজে আলু সংরক্ষণের মোট সক্ষমতা ৯০ হাজার ১০০ টন। সেখানে জমে আছে শুধু আলুর বস্তা নয়, হতাশ কৃষকের স্বপ্নও। দাম স্বাভাবিক না হলে আগামী মৌসুমে আলু চাষে আগ্রহ হারাতে পারেন অনেক কৃষক এমন আশঙ্কাই করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
জেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, গত মৌসুমে নীলফামারীতে প্রায় ৫ লাখ ৫০ হাজার টন আলু উৎপাদন হয়। ভালো দামের প্রত্যাশায় কৃষক ও ব্যবসায়ীরা জেলার বিভিন্ন কোল্ড স্টোরেজে আলু মজুত করেন। মজুত করা ওই আলুর পরিমাণ প্রায় ৭৫ হাজার ৭০০ টন। তবে মৌসুম শেষে বাজারে হঠাৎ করে দাম পড়ে যাওয়ায় সেই আলু বিক্রি করাই এখন বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ডোমার উপজেলার আলুচাষি আবদুল কাদের বলেন, ‘প্রতি বস্তা আলু তুলতেই খরচ পড়েছে ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা। এখন বাজারে পাচ্ছি ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা। এভাবে হলে আলু চাষ করা আর সম্ভব না।’
ডিমলা উপজেলার চাষি নাউতারা এলাকার সাদেকুল ইসলাম বলেন, ‘ব্যাংক ও এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে আলু চাষ করেছি। কোল্ড স্টোরেজের ভাড়া আর পরিবহন খরচ মিলিয়ে চাপ বেড়েই চলেছে।’
কিশোরগঞ্জ উপজেলার চাষি মোস্তাফিজুর রহমান অভিযোগ করেন, বাজার ব্যবস্থাপনা ঠিকমতো না হওয়ায় চাষিরা এমন ক্ষতির মুখে পড়ছেন। তিনি বলেন, প্রতিবছর উৎপাদন বাড়ছে, কিন্তু বাজার ব্যবস্থাপনা নেই। এবার আলু তুললেই লোকসান।
অন্যদিকে শহিদুল হোসেন নামের এক আলু ব্যবসায়ী বলেন, ‘চাষিদের কাছ থেকে আলু কিনে কোল্ড স্টোরেজে রেখেছিলাম। এখন বাজারে যে দাম, তাতে আলু তুললেই ক্ষতি।’ তিনি বলেন, লাভ তো দূরের কথা, প্রতি বস্তায় লোকসান গুনতে হবে আরও ১০০ টাকা।
কোল্ড স্টোরেজসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, চাষি ও ব্যবসায়ীরা লোকসানে থাকায় আলু তোলার গতি কমে গেছে।
স্থানীয় কৃষিবিদ আবু নোমান সায়েম বলেন, আলুর উৎপাদন বাড়লেও রপ্তানি, প্রক্রিয়াজাত শিল্প ও কার্যকর বাজার ব্যবস্থাপনার অভাব রয়েছে। ফলে প্রতিবছর কৃষকেরা ক্ষতির মুখে পড়ছেন।
নীলফামারী কৃষি বিপণন দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এ টি এম এরশাদ আলম খান বলেন, বাজারে আলুর দাম না বাড়া পর্যন্ত কোল্ড স্টোরেজে রাখার সময় বাড়ানো ছাড়া কৃষকের সামনে তেমন বিকল্প নেই।

ঋণ নিয়ে ৪০ বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছিলেন নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার আবদুর রাজ্জাক। লাভের আশায় ৮০০ বস্তা আলু কোল্ড স্টোরেজে মজুত রেখেছিলেন তিনি। কিন্তু সম্প্রতি বাজারে দামের ধসে বাধ্য হয়ে প্রতি বস্তা আলুর স্লিপ ১০০ টাকায় বিক্রি করে দিয়েছেন তিনি। এতে তাঁর লোকসান দাঁড়িয়েছে প্রায় ১৬ লাখ টাকা। ঋণের চাপে এখন তাঁর পথে বসার দশা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আবদুর রাজ্জাক একা নন। দেশের অন্যতম আলু উৎপাদনকারী জেলা নীলফামারীতে কোল্ড স্টোরেজে মজুত করা আলু নিয়ে সংকটে পড়েছেন অসংখ্য আলুচাষি ও ব্যবসায়ী। তাঁরা বলছেন, বাজারে আলুর দামে বড় ধরনের পতন হওয়ায় উৎপাদন খরচ উঠছে না। অনেক ক্ষেত্রে বস্তার দামও উঠছে না বলে দাবি তাঁদের। লোকসান সামলাতে না পেরে অনেক কৃষক বিপাকে পড়েছেন বলে জানিয়েছেন।
বর্তমানে নীলফামারীর ১১টি কোল্ড স্টোরেজে আলু সংরক্ষণের মোট সক্ষমতা ৯০ হাজার ১০০ টন। সেখানে জমে আছে শুধু আলুর বস্তা নয়, হতাশ কৃষকের স্বপ্নও। দাম স্বাভাবিক না হলে আগামী মৌসুমে আলু চাষে আগ্রহ হারাতে পারেন অনেক কৃষক এমন আশঙ্কাই করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
জেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, গত মৌসুমে নীলফামারীতে প্রায় ৫ লাখ ৫০ হাজার টন আলু উৎপাদন হয়। ভালো দামের প্রত্যাশায় কৃষক ও ব্যবসায়ীরা জেলার বিভিন্ন কোল্ড স্টোরেজে আলু মজুত করেন। মজুত করা ওই আলুর পরিমাণ প্রায় ৭৫ হাজার ৭০০ টন। তবে মৌসুম শেষে বাজারে হঠাৎ করে দাম পড়ে যাওয়ায় সেই আলু বিক্রি করাই এখন বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ডোমার উপজেলার আলুচাষি আবদুল কাদের বলেন, ‘প্রতি বস্তা আলু তুলতেই খরচ পড়েছে ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা। এখন বাজারে পাচ্ছি ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা। এভাবে হলে আলু চাষ করা আর সম্ভব না।’
ডিমলা উপজেলার চাষি নাউতারা এলাকার সাদেকুল ইসলাম বলেন, ‘ব্যাংক ও এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে আলু চাষ করেছি। কোল্ড স্টোরেজের ভাড়া আর পরিবহন খরচ মিলিয়ে চাপ বেড়েই চলেছে।’
কিশোরগঞ্জ উপজেলার চাষি মোস্তাফিজুর রহমান অভিযোগ করেন, বাজার ব্যবস্থাপনা ঠিকমতো না হওয়ায় চাষিরা এমন ক্ষতির মুখে পড়ছেন। তিনি বলেন, প্রতিবছর উৎপাদন বাড়ছে, কিন্তু বাজার ব্যবস্থাপনা নেই। এবার আলু তুললেই লোকসান।
অন্যদিকে শহিদুল হোসেন নামের এক আলু ব্যবসায়ী বলেন, ‘চাষিদের কাছ থেকে আলু কিনে কোল্ড স্টোরেজে রেখেছিলাম। এখন বাজারে যে দাম, তাতে আলু তুললেই ক্ষতি।’ তিনি বলেন, লাভ তো দূরের কথা, প্রতি বস্তায় লোকসান গুনতে হবে আরও ১০০ টাকা।
কোল্ড স্টোরেজসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, চাষি ও ব্যবসায়ীরা লোকসানে থাকায় আলু তোলার গতি কমে গেছে।
স্থানীয় কৃষিবিদ আবু নোমান সায়েম বলেন, আলুর উৎপাদন বাড়লেও রপ্তানি, প্রক্রিয়াজাত শিল্প ও কার্যকর বাজার ব্যবস্থাপনার অভাব রয়েছে। ফলে প্রতিবছর কৃষকেরা ক্ষতির মুখে পড়ছেন।
নীলফামারী কৃষি বিপণন দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এ টি এম এরশাদ আলম খান বলেন, বাজারে আলুর দাম না বাড়া পর্যন্ত কোল্ড স্টোরেজে রাখার সময় বাড়ানো ছাড়া কৃষকের সামনে তেমন বিকল্প নেই।

গ্রীষ্মের তাপদাহে অতিষ্ঠ নগরবাসী। একে তো রোজার মাস আরেকে তো গ্রীষ্মকাল। এই সময়ে বাজারে তরমুজের চাহিদা অনেক। করোনা পরিস্থিতিতে ভাজাপোড়ার পরিবর্তে অনেকেরই ইফতারে পছন্দের তালিকার শীর্ষে রয়েছে তরমুজ
২৯ এপ্রিল ২০২১
পার্বত্য জেলা বান্দরবানের থানচি উপজেলায় দুস্থ মহিলা সহায়তা (ভিডব্লিউবি) কর্মসূচির আওতায় ১ হাজার ৬৭৪ জন কার্ডধারী রয়েছেন। তাঁদের প্রতি মাসে ৩০ কেজি করে চাল দিয়ে আসছে মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তর। এসব কার্ডধারীর কাছ থেকে প্রতিবার চাল বিতরণের সময় সুরক্ষা সঞ্চয় বাবদ ২২০ টাকা জমা নেয় সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন...
১ ঘণ্টা আগে
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক তফসিল ঘোষণার আগে থেকে ঝালকাঠিতে নির্বাচনী উত্তাপ ছড়িয়েছে। নির্বাচনী প্রচারের মাঠে নদীভাঙন, স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা, কর্মসংস্থান এবং সড়ক অবকাঠামো উন্নয়ন প্রধান ইস্যু হিসেবে উঠে এসেছে নদী-খালবেষ্টিত এই জেলায়।
১ ঘণ্টা আগে
দেড় দশকের বেশি সময় ধরে কখনো ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’, আবার কখনো ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ার স্লোগান শুনে আসছে দেশের মানুষ। এ নিয়ে ‘অ্যাকসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই)’ নামে প্রকল্পও আছে সরকারের। বেসরকারি পর্যায়েও রয়েছে নানা উদ্যোগ। তারপরও দেশের ৪৩ দশমিক ৯৮ শতাংশ পরিবার এখনো ইন্টারনেট সেবার আওতার বাইরে রয়ে গেছে।
২ ঘণ্টা আগেঝালকাঠির দুটি আসন
আরিফ রহমান, ঝালকাঠি

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক তফসিল ঘোষণার আগে থেকে ঝালকাঠিতে নির্বাচনী উত্তাপ ছড়িয়েছে। নির্বাচনী প্রচারের মাঠে নদীভাঙন, স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা, কর্মসংস্থান এবং সড়ক অবকাঠামো উন্নয়ন প্রধান ইস্যু হিসেবে উঠে এসেছে নদী-খালবেষ্টিত এই জেলায়। জেলার দুই আসনে বিএনপির শক্তিশালী প্রার্থী থাকলেও অভ্যন্তরীণ বিভাজন বড় চ্যালেঞ্জ। অন্যদিকে ইসলামি দলগুলোর সক্রিয়তা ভোটের হিসাব পাল্টে দেবে বলে মনে করছেন ভোটাররা।
ঝালকাঠি-১
রাজাপুর ও কাঠালিয়া উপজেলা নিয়ে গঠিত ঝালকাঠি-১ আসন। ২০০১ সালে এই আসনে বিএনপি জয়ী হলেও ২০০৮ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগ ধারাবাহিকভাবে বিজয়ী হয়। এবার নির্বাচনে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের কোনো প্রার্থী না থাকায় আসনটি পেতে চায় বিএনপি। সে জন্য দল থেকে প্রাথমিক মনোনয়ন দেওয়া হয় দলটির কেন্দ্রীয় কমিটির ধর্মবিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম জামালকে। ইসলামি দলগুলোর মধ্যে জামায়াতে ইসলামী থেকে মনোনয়ন দেওয়া হয় ফয়জুল হককে। তিনি আগে মালয়েশিয়া বিএনপির সহসমাজকল্যাণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
এ ছাড়া ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ থেকে মাওলানা ইব্রাহীম আল হাদি, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস থেকে মুফতি নুরুল্লাহ আশরাফী মাঠে রয়েছেন। এ ছাড়া জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) থেকে ডা. মাহমুদা আলম মিতু, জেএসডি থেকে জেলা জেএসডির সভাপতি সোহরাব হোসেন এবং ন্যাশনাল পিপলস পার্টি থেকে ডা. পি কে মিত্রকে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা দেওয়া হয়।
বিএনপির মনোনয়ন নিয়ে শরিক দল বাংলাদেশ লেবার পার্টির অসন্তোষ প্রকাশ পেয়েছে। দলটির চেয়ারম্যান ড. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান বলেন, এই আসনে জোটগত সমন্বয়ের আলোচনা থাকলেও পরে তা বাতিল হওয়ায় জোটের রাজনীতিতে চাপ তৈরি হয়েছে। তিনি জানান, লেবার পার্টি ইতিমধ্যে ৭৫টি আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেছে। মোস্তাফিজুর রহমান নিজেই এই আসন থেকে দলীয় প্রার্থী হবেন।
এদিকে রফিকুল ইসলাম জামালকে ঘিরে বিএনপির অভ্যন্তরে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। বিএনপি নেতা গোলাম আযম সৈকত বলেন, এই আসনে বিএনপির পক্ষ থেকে প্রাথমিকভাবে রফিকুল ইসলাম জামালকে মনোনয়ন দেওয়া হয়। তবে তিনি আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছেন, যা দলীয় নীতি ও আদর্শের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। বিএনপি থেকে যাঁকে চূড়ান্তভাবে মনোনয়ন দেওয়া হবে, তাঁর পক্ষে সবাই কাজ করবেন।
তবে রফিকুল ইসলাম অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘একটি সামাজিক অনুষ্ঠানে আমাকে ডাকা হয়েছিল। সেখানে কারা উপস্থিত থাকবেন, আগে তা জানানো হয়নি। এ নিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হওয়ায় আমি দুঃখিত। ন্যায়ভিত্তিক সমাজ ও মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠাই আমাদের লক্ষ্য।’
জামায়াতের ফয়জুল হক বলেন, ‘দাঁড়িপাল্লায় মনোনয়ন পেয়েছি। জনগণ এবার সত্য ও দেশপ্রেমের পক্ষে ভোট দেবে। আমি এলাকার সকলের সঙ্গে কাজ করে বিপ্লব ঘটাব।’
বিজয়ী হলে নদীভাঙন, স্বাস্থ্য, বেকারত্ব দূর করাসহ নতুন ঝালকাঠি উপহার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মাওলানা ইব্রাহীম আল হাদি।
এনসিপির প্রার্থী ডা. মাহমুদা আলম মিতু বলেন, ‘রাজাপুর-কাঠালিয়ার উন্নয়ন বঞ্চনার ইতিহাস বদলাতে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করতে চাই। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, নারী ও যুব উন্নয়নকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হবে।’
কাঠালিয়ার তরুণ ভোটার মো. রাসেল হাওলাদার বলেন, ‘তরুণদের জন্য কর্মসংস্থান আর কারিগরি শিক্ষার সুযোগ চাই। শুধু প্রতিশ্রুতি নয়, বাস্তবায়ন দেখতে চাই।’
‘নারীদের নিরাপত্তা আর স্বাস্থ্যসেবা আমাদের কাছে খুব গুরুত্বপূর্ণ’—বলেন অন্য নবীন ভোটার তানিয়া আক্তার।
ঝালকাঠি-২
ঝালকাঠি সদর নলছিটি উপজেলা নিয়ে গঠিত এই আসন। ২০০১ সালে বিএনপি জয়ী হলেও ২০০৮ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত টানা চারবার আওয়ামী লীগের প্রার্থী আমির হোসেন আমু এই আসন থেকে নির্বাচিত হন।
আসনটিতে বিএনপি থেকে মনোনয়ন পেয়েছেন সাবেক সংসদ সদস্য ইসরাত সুলতানা ইলেন ভুট্টো। তবে মনোনয়ন নিয়ে দলের ভেতরে ব্যাপক বিরোধ দেখা দিয়েছে। এ কারণে বিএনপির একাংশ ইলেন ভুট্টোর মনোনয়ন বাতিলের দাবি জানিয়েছিল এবং তারা চাইছিল নান্নু, জিবা বা শাহাদাৎ হোসেনকে প্রার্থী করা হোক। তাই এখন পর্যন্ত এই তিন নেতার সমর্থকেরা ইলেন ভুট্টো কোনো নির্বাচনী প্রচারে অংশ নেয়নি। কিন্তু দলের নেতা-কর্মীরা জানিয়েছেন, তাঁরা ধানের শীষের পক্ষে কাজ করে যাচ্ছেন।
এই আসনে জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ থেকে শেখ নেয়ামুল করিম, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ থেকে ডা. সিরাজুল ইসলাম সিরাজী, আমার বাংলাদেশ পার্টি থেকে শেখ জামাল হোসেন, গণঅধিকার পরিষদ থেকে মাহমুদুল হাসান সাগর, ন্যাশনাল পিপলস পার্টি থেকে ফোরকান হোসেন এবং মো. মারুফ বিল্লাহকে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।
বিএনপির ইলেন ভুট্টো বলেন, ‘আমি কখনো সন্ত্রাস বা চাঁদাবাজির সঙ্গে জড়িত ছিলাম না। জনগণের আস্থাই আমার শক্তি।’
নদীভাঙন রোধ এবং সড়ক উন্নয়নই প্রধান অগ্রাধিকার—বলেন জামায়াতের প্রার্থী শেখ নেয়ামুল করিম।
নাজমুল ইসলাম সাজিদ নামের এক নবীন ভোটার বলেন, ‘প্রথমবার ভোট দেব। চাই এমন একজন প্রতিনিধি, যিনি সংসদে এলাকার কথা বলবেন।’
নির্বাচন ঘিরে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন সচেতন নাগরিক সমাজের (সনাক) প্রতিনিধিরা। সনাকের ঝালকাঠির সভাপতি ও মুক্তিযোদ্ধা সত্যবান সেনগুপ্ত বলেন, ‘নির্বাচনে প্রতিযোগিতা থাকবে, এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু প্রতিহিংসা ও সহিংসতার কোনো জায়গা নেই। আশা করি, সব রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীরা জনগণকে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দেবেন।’

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক তফসিল ঘোষণার আগে থেকে ঝালকাঠিতে নির্বাচনী উত্তাপ ছড়িয়েছে। নির্বাচনী প্রচারের মাঠে নদীভাঙন, স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা, কর্মসংস্থান এবং সড়ক অবকাঠামো উন্নয়ন প্রধান ইস্যু হিসেবে উঠে এসেছে নদী-খালবেষ্টিত এই জেলায়। জেলার দুই আসনে বিএনপির শক্তিশালী প্রার্থী থাকলেও অভ্যন্তরীণ বিভাজন বড় চ্যালেঞ্জ। অন্যদিকে ইসলামি দলগুলোর সক্রিয়তা ভোটের হিসাব পাল্টে দেবে বলে মনে করছেন ভোটাররা।
ঝালকাঠি-১
রাজাপুর ও কাঠালিয়া উপজেলা নিয়ে গঠিত ঝালকাঠি-১ আসন। ২০০১ সালে এই আসনে বিএনপি জয়ী হলেও ২০০৮ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগ ধারাবাহিকভাবে বিজয়ী হয়। এবার নির্বাচনে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের কোনো প্রার্থী না থাকায় আসনটি পেতে চায় বিএনপি। সে জন্য দল থেকে প্রাথমিক মনোনয়ন দেওয়া হয় দলটির কেন্দ্রীয় কমিটির ধর্মবিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম জামালকে। ইসলামি দলগুলোর মধ্যে জামায়াতে ইসলামী থেকে মনোনয়ন দেওয়া হয় ফয়জুল হককে। তিনি আগে মালয়েশিয়া বিএনপির সহসমাজকল্যাণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
এ ছাড়া ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ থেকে মাওলানা ইব্রাহীম আল হাদি, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস থেকে মুফতি নুরুল্লাহ আশরাফী মাঠে রয়েছেন। এ ছাড়া জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) থেকে ডা. মাহমুদা আলম মিতু, জেএসডি থেকে জেলা জেএসডির সভাপতি সোহরাব হোসেন এবং ন্যাশনাল পিপলস পার্টি থেকে ডা. পি কে মিত্রকে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা দেওয়া হয়।
বিএনপির মনোনয়ন নিয়ে শরিক দল বাংলাদেশ লেবার পার্টির অসন্তোষ প্রকাশ পেয়েছে। দলটির চেয়ারম্যান ড. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান বলেন, এই আসনে জোটগত সমন্বয়ের আলোচনা থাকলেও পরে তা বাতিল হওয়ায় জোটের রাজনীতিতে চাপ তৈরি হয়েছে। তিনি জানান, লেবার পার্টি ইতিমধ্যে ৭৫টি আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেছে। মোস্তাফিজুর রহমান নিজেই এই আসন থেকে দলীয় প্রার্থী হবেন।
এদিকে রফিকুল ইসলাম জামালকে ঘিরে বিএনপির অভ্যন্তরে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। বিএনপি নেতা গোলাম আযম সৈকত বলেন, এই আসনে বিএনপির পক্ষ থেকে প্রাথমিকভাবে রফিকুল ইসলাম জামালকে মনোনয়ন দেওয়া হয়। তবে তিনি আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছেন, যা দলীয় নীতি ও আদর্শের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। বিএনপি থেকে যাঁকে চূড়ান্তভাবে মনোনয়ন দেওয়া হবে, তাঁর পক্ষে সবাই কাজ করবেন।
তবে রফিকুল ইসলাম অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘একটি সামাজিক অনুষ্ঠানে আমাকে ডাকা হয়েছিল। সেখানে কারা উপস্থিত থাকবেন, আগে তা জানানো হয়নি। এ নিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হওয়ায় আমি দুঃখিত। ন্যায়ভিত্তিক সমাজ ও মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠাই আমাদের লক্ষ্য।’
জামায়াতের ফয়জুল হক বলেন, ‘দাঁড়িপাল্লায় মনোনয়ন পেয়েছি। জনগণ এবার সত্য ও দেশপ্রেমের পক্ষে ভোট দেবে। আমি এলাকার সকলের সঙ্গে কাজ করে বিপ্লব ঘটাব।’
বিজয়ী হলে নদীভাঙন, স্বাস্থ্য, বেকারত্ব দূর করাসহ নতুন ঝালকাঠি উপহার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মাওলানা ইব্রাহীম আল হাদি।
এনসিপির প্রার্থী ডা. মাহমুদা আলম মিতু বলেন, ‘রাজাপুর-কাঠালিয়ার উন্নয়ন বঞ্চনার ইতিহাস বদলাতে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করতে চাই। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, নারী ও যুব উন্নয়নকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হবে।’
কাঠালিয়ার তরুণ ভোটার মো. রাসেল হাওলাদার বলেন, ‘তরুণদের জন্য কর্মসংস্থান আর কারিগরি শিক্ষার সুযোগ চাই। শুধু প্রতিশ্রুতি নয়, বাস্তবায়ন দেখতে চাই।’
‘নারীদের নিরাপত্তা আর স্বাস্থ্যসেবা আমাদের কাছে খুব গুরুত্বপূর্ণ’—বলেন অন্য নবীন ভোটার তানিয়া আক্তার।
ঝালকাঠি-২
ঝালকাঠি সদর নলছিটি উপজেলা নিয়ে গঠিত এই আসন। ২০০১ সালে বিএনপি জয়ী হলেও ২০০৮ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত টানা চারবার আওয়ামী লীগের প্রার্থী আমির হোসেন আমু এই আসন থেকে নির্বাচিত হন।
আসনটিতে বিএনপি থেকে মনোনয়ন পেয়েছেন সাবেক সংসদ সদস্য ইসরাত সুলতানা ইলেন ভুট্টো। তবে মনোনয়ন নিয়ে দলের ভেতরে ব্যাপক বিরোধ দেখা দিয়েছে। এ কারণে বিএনপির একাংশ ইলেন ভুট্টোর মনোনয়ন বাতিলের দাবি জানিয়েছিল এবং তারা চাইছিল নান্নু, জিবা বা শাহাদাৎ হোসেনকে প্রার্থী করা হোক। তাই এখন পর্যন্ত এই তিন নেতার সমর্থকেরা ইলেন ভুট্টো কোনো নির্বাচনী প্রচারে অংশ নেয়নি। কিন্তু দলের নেতা-কর্মীরা জানিয়েছেন, তাঁরা ধানের শীষের পক্ষে কাজ করে যাচ্ছেন।
এই আসনে জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ থেকে শেখ নেয়ামুল করিম, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ থেকে ডা. সিরাজুল ইসলাম সিরাজী, আমার বাংলাদেশ পার্টি থেকে শেখ জামাল হোসেন, গণঅধিকার পরিষদ থেকে মাহমুদুল হাসান সাগর, ন্যাশনাল পিপলস পার্টি থেকে ফোরকান হোসেন এবং মো. মারুফ বিল্লাহকে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।
বিএনপির ইলেন ভুট্টো বলেন, ‘আমি কখনো সন্ত্রাস বা চাঁদাবাজির সঙ্গে জড়িত ছিলাম না। জনগণের আস্থাই আমার শক্তি।’
নদীভাঙন রোধ এবং সড়ক উন্নয়নই প্রধান অগ্রাধিকার—বলেন জামায়াতের প্রার্থী শেখ নেয়ামুল করিম।
নাজমুল ইসলাম সাজিদ নামের এক নবীন ভোটার বলেন, ‘প্রথমবার ভোট দেব। চাই এমন একজন প্রতিনিধি, যিনি সংসদে এলাকার কথা বলবেন।’
নির্বাচন ঘিরে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন সচেতন নাগরিক সমাজের (সনাক) প্রতিনিধিরা। সনাকের ঝালকাঠির সভাপতি ও মুক্তিযোদ্ধা সত্যবান সেনগুপ্ত বলেন, ‘নির্বাচনে প্রতিযোগিতা থাকবে, এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু প্রতিহিংসা ও সহিংসতার কোনো জায়গা নেই। আশা করি, সব রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীরা জনগণকে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দেবেন।’

গ্রীষ্মের তাপদাহে অতিষ্ঠ নগরবাসী। একে তো রোজার মাস আরেকে তো গ্রীষ্মকাল। এই সময়ে বাজারে তরমুজের চাহিদা অনেক। করোনা পরিস্থিতিতে ভাজাপোড়ার পরিবর্তে অনেকেরই ইফতারে পছন্দের তালিকার শীর্ষে রয়েছে তরমুজ
২৯ এপ্রিল ২০২১
পার্বত্য জেলা বান্দরবানের থানচি উপজেলায় দুস্থ মহিলা সহায়তা (ভিডব্লিউবি) কর্মসূচির আওতায় ১ হাজার ৬৭৪ জন কার্ডধারী রয়েছেন। তাঁদের প্রতি মাসে ৩০ কেজি করে চাল দিয়ে আসছে মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তর। এসব কার্ডধারীর কাছ থেকে প্রতিবার চাল বিতরণের সময় সুরক্ষা সঞ্চয় বাবদ ২২০ টাকা জমা নেয় সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন...
১ ঘণ্টা আগে
ঋণ নিয়ে ৪০ বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছিলেন নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার আবদুর রাজ্জাক। লাভের আশায় ৮০০ বস্তা আলু কোল্ড স্টোরেজে মজুত রেখেছিলেন তিনি। কিন্তু সম্প্রতি বাজারে দামের ধসে বাধ্য হয়ে প্রতি বস্তা আলুর স্লিপ ১০০ টাকায় বিক্রি করে দিয়েছেন তিনি। এতে তাঁর লোকসান দাঁড়িয়েছে প্রায় ১৬ লাখ টাকা।
১ ঘণ্টা আগে
দেড় দশকের বেশি সময় ধরে কখনো ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’, আবার কখনো ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ার স্লোগান শুনে আসছে দেশের মানুষ। এ নিয়ে ‘অ্যাকসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই)’ নামে প্রকল্পও আছে সরকারের। বেসরকারি পর্যায়েও রয়েছে নানা উদ্যোগ। তারপরও দেশের ৪৩ দশমিক ৯৮ শতাংশ পরিবার এখনো ইন্টারনেট সেবার আওতার বাইরে রয়ে গেছে।
২ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

দেড় দশকের বেশি সময় ধরে কখনো ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’, আবার কখনো ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ার স্লোগান শুনে আসছে দেশের মানুষ। এ নিয়ে ‘অ্যাকসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই)’ নামে প্রকল্পও আছে সরকারের। বেসরকারি পর্যায়েও রয়েছে নানা উদ্যোগ। তারপরও দেশের ৪৩ দশমিক ৯৮ শতাংশ পরিবার এখনো ইন্টারনেট সেবার আওতার বাইরে রয়ে গেছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) এক জরিপের তথ্য বলছে, বাংলাদেশে এখন ইন্টারনেট ব্যবহার করে ৫৬ দশমিক ২ শতাংশ পরিবারের মানুষ। এই হার গ্রামাঞ্চলে ৫১ দশমিক ৫ শতাংশ এবং শহরে ৬৪ শতাংশ।
‘ব্যক্তি ও খানা পর্যায়ে জেলাভিত্তিক আইসিটি ব্যবহারের সুযোগ ও প্রয়োগ পরিমাপ’ প্রকল্পের আওতায় পাঁচ বছর ও তদূর্ধ্ব বয়সীদের ওপর এই জরিপ পরিচালনা করে বিবিএস। এতে পরিবারগুলোয় মোবাইল ফোন, ফিক্সড ফোন, টেলিভিশন, রেডিও ও কম্পিউটার ব্যবহারের চিত্রও উঠে আসে।
জরিপের তথ্য অনুযায়ী, দেশে ব্যক্তি ও পারিবারিক পর্যায়ে মোবাইল ফোনের ব্যবহার বেড়েছে। একই সঙ্গে বেড়েছে টেলিভিশন, কম্পিউটার ও ইন্টারনেট ব্যবহারের হারও। তবে কমেছে স্মার্টফোন ও রেডিওর ব্যবহার।
‘আইসিটি প্রয়োগ ও ব্যবহার জরিপ’-এ পাঁচ বছর ও তদূর্ধ্ব বয়সী এবং শহর-পল্লি অঞ্চল অনুযায়ী জাতীয় পর্যায়ে আইসিটির সূচকসমূহ ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে তৈরি করা হয়। সারা দেশে ২ হাজার ৫৬৮টি নির্বাচিত নমুনা এলাকায় দৈবচয়নের ভিত্তিতে ২৪টি করে মোট ৬১ হাজার ৬৩২টি খানায় ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে।
জরিপের বিষয়ে বিবিএসের মহাপরিচালক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, জরিপের খানা ও ব্যক্তি পর্যায়ে আইসিটির সূচকগুলো আন্তর্জাতিক টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়নের (আইটিইউ) আলোকে নেওয়া হয়েছে। জরিপে খানায় রেডিও, টেলিভিশন, কম্পিউটার, মোবাইল ফোন, স্মার্টফোন, ইন্টারনেটের এক্সেস এবং ব্যক্তি পর্যায়ে মোবাইল ফোন, কম্পিউটার, ইন্টারনেটের ব্যবহার, মোবাইল ফোনের মালিকানার ফলাফল প্রস্তুত করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, দেশের অনেক মানুষ ডিজিটাল সেবার বাইরে। এই জরিপে বিকাশ, নগদসহ মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসে (এমএফএস) এর আওতায় আনা হলে পরিসংখ্যান হয়তো পাল্টাবে।
তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ তানভীর হাসান জোহা আজকের পত্রিকাকে বলেন, সচেতনতার অভাবে এখনো অর্ধেক মানুষ ডিজিটাল সিস্টেমের আওতার বাইরে রয়েছে, যাদের বেশির ভাগ গ্রামাঞ্চল এবং পার্বত্য এলাকার। তারা ডিজিটাল সেবাকে ভয় পায়।
জরিপের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে দেশে ৯৮ দশমিক ৯ শতাংশ পরিবারে অন্তত একটি মোবাইল ফোন ব্যবহৃত হচ্ছে। এর মধ্যে ৭২ দশমিক ৪ শতাংশ পরিবারে রয়েছে স্মার্টফোন। স্মার্টফোন ব্যবহারে শহরাঞ্চল এগিয়ে। শহরে ৮০ দশমিক ৮ শতাংশ এবং গ্রামে ৬৮ দশমিক ৮ শতাংশ পরিবার স্মার্টফোন ব্যবহার করে। এ ছাড়া ফিক্সড ফোন ব্যবহার করে শূন্য দশমিক ৮ শতাংশ পরিবার। কম্পিউটার ব্যবহার করে ৯ দশমিক ১ শতাংশ পরিবার। আর ৫৬ দশমিক ২ শতাংশ পরিবার ইন্টারনেট ব্যবহার করে।
অন্যদিকে, ৫৮ দশমিক ৯ শতাংশ পরিবারে টেলিভিশন দেখা হয় এবং ১৫ দশমিক ১ শতাংশ পরিবার রেডিও ব্যবহার করে বলে জরিপে উঠে এসেছে। আর বিদ্যুৎ সুবিধা রয়েছে ৯৮ দশমিক ৯ শতাংশ পরিবারে।
এর আগের বছর ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে দেশের ৯৮ দশমিক ৮ শতাংশ পরিবারের অন্তত একজন মোবাইল ফোন ব্যবহার করেছিল। এর মধ্যে স্মার্টফোন ছিল ৭২ দশমিক ৮ শতাংশ। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে মোবাইল ফোনের ব্যবহার ১ শতাংশ বাড়লেও স্মার্টফোনের ব্যবহার কমেছে দশমিক ৪ শতাংশ।
২০২৪ সালের প্রথম প্রান্তিকে পারিবারিকভাবে কম্পিউটার ব্যবহারকারীদের সংখ্যা ছিল ১৫ দশমিক ৩ শতাংশ। সেখান থেকে এই হার দশমিক ২ শতাংশ কমে ১৫ দশমিক ১ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। গ্রাম-শহরভিত্তিক হিসাবে দেখা যায়, গ্রামাঞ্চলে ১৪ শতাংশ পরিবার রেডিও ব্যবহার করলেও শহরে এই হার ১৭ দশমিক ৭ শতাংশ।
জরিপের ব্যক্তি পর্যায়ের বিশ্লেষণে দেখানো হয়, ২০২৫ সালের জুলাই-সেপ্টেম্বরে ৮০ দশমিক ৬ শতাংশ মানুষ মোবাইল ফোন ব্যবহার করেছে, যা এক বছর আগে ছিল ৭৮ দশমিক ৯ শতাংশ। অর্থাৎ এক বছরে মোবাইল ব্যবহারকারী বেড়েছে ১ দশমিক ৭ শতাংশ। এর মধ্যে পুরুষ ৮০ দশমিক ৯ শতাংশ এবং নারী ৭৮ দশমিক ৮ শতাংশ।
তবে ব্যক্তিমালিকানাধীন মোবাইল ফোনের ব্যবহার কিছুটা কমেছে। ২০২৪ সালে যেখানে এ হার ছিল ৫৭ দশমিক ৫ শতাংশ, ২০২৫ সালে তা কমে দাঁড়িয়েছে ৫৬ দশমিক ৫ শতাংশে। কম্পিউটার ব্যবহারের হারও সামান্য কমে ১০ দশমিক ১ শতাংশ থেকে ১০ শতাংশে নেমেছে। বিপরীতে, ব্যক্তি পর্যায়ে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা বেড়েছে। ২০২৪ সালে ৪৭ দশমিক ৮ শতাংশ থেকে ২০২৫ সালে তা বেড়ে হয়েছে ৪৮ দশমিক ৯ শতাংশ। ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের মধ্যে ৫১ দশমিক ২ শতাংশ পুরুষ এবং ৪৬ দশমিক ৩ শতাংশ নারী।
বিবিএস জানায়, এই জরিপের মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্য জাতীয় উন্নয়ন পরিকল্পনা, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) পরিমাপ এবং আন্তর্জাতিক টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়নের (আইটিইউ) জন্য আইসিটি সূচক সরবরাহে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

দেড় দশকের বেশি সময় ধরে কখনো ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’, আবার কখনো ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ার স্লোগান শুনে আসছে দেশের মানুষ। এ নিয়ে ‘অ্যাকসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই)’ নামে প্রকল্পও আছে সরকারের। বেসরকারি পর্যায়েও রয়েছে নানা উদ্যোগ। তারপরও দেশের ৪৩ দশমিক ৯৮ শতাংশ পরিবার এখনো ইন্টারনেট সেবার আওতার বাইরে রয়ে গেছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) এক জরিপের তথ্য বলছে, বাংলাদেশে এখন ইন্টারনেট ব্যবহার করে ৫৬ দশমিক ২ শতাংশ পরিবারের মানুষ। এই হার গ্রামাঞ্চলে ৫১ দশমিক ৫ শতাংশ এবং শহরে ৬৪ শতাংশ।
‘ব্যক্তি ও খানা পর্যায়ে জেলাভিত্তিক আইসিটি ব্যবহারের সুযোগ ও প্রয়োগ পরিমাপ’ প্রকল্পের আওতায় পাঁচ বছর ও তদূর্ধ্ব বয়সীদের ওপর এই জরিপ পরিচালনা করে বিবিএস। এতে পরিবারগুলোয় মোবাইল ফোন, ফিক্সড ফোন, টেলিভিশন, রেডিও ও কম্পিউটার ব্যবহারের চিত্রও উঠে আসে।
জরিপের তথ্য অনুযায়ী, দেশে ব্যক্তি ও পারিবারিক পর্যায়ে মোবাইল ফোনের ব্যবহার বেড়েছে। একই সঙ্গে বেড়েছে টেলিভিশন, কম্পিউটার ও ইন্টারনেট ব্যবহারের হারও। তবে কমেছে স্মার্টফোন ও রেডিওর ব্যবহার।
‘আইসিটি প্রয়োগ ও ব্যবহার জরিপ’-এ পাঁচ বছর ও তদূর্ধ্ব বয়সী এবং শহর-পল্লি অঞ্চল অনুযায়ী জাতীয় পর্যায়ে আইসিটির সূচকসমূহ ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে তৈরি করা হয়। সারা দেশে ২ হাজার ৫৬৮টি নির্বাচিত নমুনা এলাকায় দৈবচয়নের ভিত্তিতে ২৪টি করে মোট ৬১ হাজার ৬৩২টি খানায় ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে।
জরিপের বিষয়ে বিবিএসের মহাপরিচালক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, জরিপের খানা ও ব্যক্তি পর্যায়ে আইসিটির সূচকগুলো আন্তর্জাতিক টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়নের (আইটিইউ) আলোকে নেওয়া হয়েছে। জরিপে খানায় রেডিও, টেলিভিশন, কম্পিউটার, মোবাইল ফোন, স্মার্টফোন, ইন্টারনেটের এক্সেস এবং ব্যক্তি পর্যায়ে মোবাইল ফোন, কম্পিউটার, ইন্টারনেটের ব্যবহার, মোবাইল ফোনের মালিকানার ফলাফল প্রস্তুত করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, দেশের অনেক মানুষ ডিজিটাল সেবার বাইরে। এই জরিপে বিকাশ, নগদসহ মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসে (এমএফএস) এর আওতায় আনা হলে পরিসংখ্যান হয়তো পাল্টাবে।
তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ তানভীর হাসান জোহা আজকের পত্রিকাকে বলেন, সচেতনতার অভাবে এখনো অর্ধেক মানুষ ডিজিটাল সিস্টেমের আওতার বাইরে রয়েছে, যাদের বেশির ভাগ গ্রামাঞ্চল এবং পার্বত্য এলাকার। তারা ডিজিটাল সেবাকে ভয় পায়।
জরিপের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে দেশে ৯৮ দশমিক ৯ শতাংশ পরিবারে অন্তত একটি মোবাইল ফোন ব্যবহৃত হচ্ছে। এর মধ্যে ৭২ দশমিক ৪ শতাংশ পরিবারে রয়েছে স্মার্টফোন। স্মার্টফোন ব্যবহারে শহরাঞ্চল এগিয়ে। শহরে ৮০ দশমিক ৮ শতাংশ এবং গ্রামে ৬৮ দশমিক ৮ শতাংশ পরিবার স্মার্টফোন ব্যবহার করে। এ ছাড়া ফিক্সড ফোন ব্যবহার করে শূন্য দশমিক ৮ শতাংশ পরিবার। কম্পিউটার ব্যবহার করে ৯ দশমিক ১ শতাংশ পরিবার। আর ৫৬ দশমিক ২ শতাংশ পরিবার ইন্টারনেট ব্যবহার করে।
অন্যদিকে, ৫৮ দশমিক ৯ শতাংশ পরিবারে টেলিভিশন দেখা হয় এবং ১৫ দশমিক ১ শতাংশ পরিবার রেডিও ব্যবহার করে বলে জরিপে উঠে এসেছে। আর বিদ্যুৎ সুবিধা রয়েছে ৯৮ দশমিক ৯ শতাংশ পরিবারে।
এর আগের বছর ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে দেশের ৯৮ দশমিক ৮ শতাংশ পরিবারের অন্তত একজন মোবাইল ফোন ব্যবহার করেছিল। এর মধ্যে স্মার্টফোন ছিল ৭২ দশমিক ৮ শতাংশ। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে মোবাইল ফোনের ব্যবহার ১ শতাংশ বাড়লেও স্মার্টফোনের ব্যবহার কমেছে দশমিক ৪ শতাংশ।
২০২৪ সালের প্রথম প্রান্তিকে পারিবারিকভাবে কম্পিউটার ব্যবহারকারীদের সংখ্যা ছিল ১৫ দশমিক ৩ শতাংশ। সেখান থেকে এই হার দশমিক ২ শতাংশ কমে ১৫ দশমিক ১ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। গ্রাম-শহরভিত্তিক হিসাবে দেখা যায়, গ্রামাঞ্চলে ১৪ শতাংশ পরিবার রেডিও ব্যবহার করলেও শহরে এই হার ১৭ দশমিক ৭ শতাংশ।
জরিপের ব্যক্তি পর্যায়ের বিশ্লেষণে দেখানো হয়, ২০২৫ সালের জুলাই-সেপ্টেম্বরে ৮০ দশমিক ৬ শতাংশ মানুষ মোবাইল ফোন ব্যবহার করেছে, যা এক বছর আগে ছিল ৭৮ দশমিক ৯ শতাংশ। অর্থাৎ এক বছরে মোবাইল ব্যবহারকারী বেড়েছে ১ দশমিক ৭ শতাংশ। এর মধ্যে পুরুষ ৮০ দশমিক ৯ শতাংশ এবং নারী ৭৮ দশমিক ৮ শতাংশ।
তবে ব্যক্তিমালিকানাধীন মোবাইল ফোনের ব্যবহার কিছুটা কমেছে। ২০২৪ সালে যেখানে এ হার ছিল ৫৭ দশমিক ৫ শতাংশ, ২০২৫ সালে তা কমে দাঁড়িয়েছে ৫৬ দশমিক ৫ শতাংশে। কম্পিউটার ব্যবহারের হারও সামান্য কমে ১০ দশমিক ১ শতাংশ থেকে ১০ শতাংশে নেমেছে। বিপরীতে, ব্যক্তি পর্যায়ে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা বেড়েছে। ২০২৪ সালে ৪৭ দশমিক ৮ শতাংশ থেকে ২০২৫ সালে তা বেড়ে হয়েছে ৪৮ দশমিক ৯ শতাংশ। ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের মধ্যে ৫১ দশমিক ২ শতাংশ পুরুষ এবং ৪৬ দশমিক ৩ শতাংশ নারী।
বিবিএস জানায়, এই জরিপের মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্য জাতীয় উন্নয়ন পরিকল্পনা, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) পরিমাপ এবং আন্তর্জাতিক টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়নের (আইটিইউ) জন্য আইসিটি সূচক সরবরাহে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

গ্রীষ্মের তাপদাহে অতিষ্ঠ নগরবাসী। একে তো রোজার মাস আরেকে তো গ্রীষ্মকাল। এই সময়ে বাজারে তরমুজের চাহিদা অনেক। করোনা পরিস্থিতিতে ভাজাপোড়ার পরিবর্তে অনেকেরই ইফতারে পছন্দের তালিকার শীর্ষে রয়েছে তরমুজ
২৯ এপ্রিল ২০২১
পার্বত্য জেলা বান্দরবানের থানচি উপজেলায় দুস্থ মহিলা সহায়তা (ভিডব্লিউবি) কর্মসূচির আওতায় ১ হাজার ৬৭৪ জন কার্ডধারী রয়েছেন। তাঁদের প্রতি মাসে ৩০ কেজি করে চাল দিয়ে আসছে মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তর। এসব কার্ডধারীর কাছ থেকে প্রতিবার চাল বিতরণের সময় সুরক্ষা সঞ্চয় বাবদ ২২০ টাকা জমা নেয় সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন...
১ ঘণ্টা আগে
ঋণ নিয়ে ৪০ বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছিলেন নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার আবদুর রাজ্জাক। লাভের আশায় ৮০০ বস্তা আলু কোল্ড স্টোরেজে মজুত রেখেছিলেন তিনি। কিন্তু সম্প্রতি বাজারে দামের ধসে বাধ্য হয়ে প্রতি বস্তা আলুর স্লিপ ১০০ টাকায় বিক্রি করে দিয়েছেন তিনি। এতে তাঁর লোকসান দাঁড়িয়েছে প্রায় ১৬ লাখ টাকা।
১ ঘণ্টা আগে
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক তফসিল ঘোষণার আগে থেকে ঝালকাঠিতে নির্বাচনী উত্তাপ ছড়িয়েছে। নির্বাচনী প্রচারের মাঠে নদীভাঙন, স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা, কর্মসংস্থান এবং সড়ক অবকাঠামো উন্নয়ন প্রধান ইস্যু হিসেবে উঠে এসেছে নদী-খালবেষ্টিত এই জেলায়।
১ ঘণ্টা আগে