ড. মো. গোলাম রহমান

১৯৪৮ সালে ওবায়েদ উল হক বাংলা ও হিন্দি ভাষায় ছবি তৈরির জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করেছিলেন, কিন্তু সেই সময় মহাত্মা গান্ধী আততায়ীর গুলিতে নিহত হলে সাম্প্রদায়িক অবস্থার অবনতি ঘটে, পরিবেশ উত্তপ্ত হয়, তাঁর আর ছবি করা হয়ে ওঠে না। তাঁর কাহিনি নিয়ে ১৯৫৯ সালে শুরু হয় ‘আযান’ ছায়াছবির কাজ। তিনি ‘দুই দিগন্ত’ নামের একটি ছবি নির্মাণ করেন ১৯৬২ সালে। তাঁর লেখা কাহিনি, চিত্রনাট্য, পরিচালনা ও প্রযোজনায় এই ছায়াছবি নির্মিত হয়েছিল এবং ঢাকার বলাকা সিনেমা হলের ঐতিহাসিক যাত্রা শুরু হয়েছিল ‘দুই দিগন্ত’ ছবি দিয়ে।
ওবায়েদ উল হক আমার কাছে বহুমাত্রিক একজন প্রতিভার নাম। অক্টোবরের ১৩ হচ্ছে তাঁর মৃত্যুদিবস। শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করি তাঁকে।
বিভিন্ন অনুষ্ঠানে তাঁর সঙ্গে দেখা হয়েছে, কথা হয়েছে। তাঁর সম্পর্কে আমি আগ্রহের সঙ্গে পড়েছি এবং যা জেনেছি, তাতে বিস্ময়ভরে ভেবেছি। অবিভক্ত ভারতে সেই সময়ে যখন সাংবাদিকতা, সংস্কৃতি ও চলচ্চিত্র মুখ তুলে তাকানোর প্রতীক্ষায়, সাংবাদিকতা কিছুটা এগিয়েছে। চলচ্চিত্র তখন এই বাংলায় নতুন, সেই সময়ে ওবায়েদ উল হক আবির্ভূত হয়েছিলেন স্বমহিমায়।
ওবায়েদ উল হক স্মৃতিচারণা করে বলেছেন তাঁর সাংবাদিকতা জীবনের কথা। দেশভাগের পর চলচ্চিত্রজগৎ থেকে প্রত্যাবাসনের পর তিনি ফেনীর নিজস্ব বাসভবনে বাস করছিলেন। ১৯৪৬ সালের সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার ভয়াবহতা এবং পরবর্তীকালে তাঁর চলচ্চিত্রের মুক্তি পাওয়া—এসব নিয়ে কিছুদিন কেটেছে তাঁর। পূর্ব বাংলায় সিনেমা নির্মাণের তখনো সুযোগ তৈরি হয়নি। তাই তিনি লেখালেখি করতেন কিন্তু খুব ব্যস্ত থাকার মতো কিছু ছিল না হাতে, বেকার জীবন কেটেছে বলে তিনি নিজে মনে করতেন। ১৯৫১ সালের ২৫ জানুয়ারি সম্পাদকের অনুরোধে তিনি দ্য পাকিস্তান অবজারভারে লিখতেন। তখন অবজারভারের সম্পাদক ছিলেন আব্দুস সালাম। সম্পাদক ২৫ জুলাই তাঁকে সম্পাদকীয় বিভাগে যোগ দিতে বলেন। জনাব হক বিস্ময়ের সঙ্গে বলেন, ‘সম্পূর্ণভাবে বিস্ময়কর, অভাবনীয় ও অবিশ্বাস্য ঘটনা।’ জনাব হক বলেছিলেন, ‘...এ পেশা সম্বন্ধে অনভিজ্ঞতার কারণে তৎক্ষণাৎ উত্তর দেওয়া সম্ভব হয়নি। কিন্তু সালাম সাহেব সিরিয়াস। আমার নীরবতায় তিনি নিরুৎসাহিত হননি। ৭ আগস্টে তাঁর একটা টেলিগ্রাম এল, “প্লিজ, জয়েন ইমিডিয়েটলি।” মা তখন বেঁচে ছিলেন, আমার গড়িমসি দেখে বললেন, “ভদ্রতা বলেও একটা কথা আছে, চাকরিতে যোগ দিতে না চাও অন্তত একটা চিঠি লিখে তোমার জানানো উচিত।”’ (শামীমা চৌধুরী, ওবায়েদ উল হক চলচ্চিত্রকার ও সাংবাদিক, পৃ. ৬৬)। সাংবাদিকতা পেশায় তাঁর প্রবেশ নিজের ইচ্ছায় হয়নি বলে তিনি বলেছেন, ‘বাই চান্স, নট বাই চয়েস।’ সাংবাদিকতায় তাঁর পথচলা ছিল পেশাদারত্বের সঙ্গে গুরুত্ব মেনে চলা। সেই পথ খুব সহজ ছিল না। অনেক বন্ধুর পথ তাঁকে অতিক্রম করতে হয়েছে।
চলচ্চিত্রের সৃজনশীল কাজকর্ম থেকে তাঁকে আসতে হয়েছে দায়িত্বশীল সংবাদপ্রবাহের এক সুকঠিন জগতে। অবজারভারে তিনি সম্পাদকীয়, নিবন্ধ, কলাম ইত্যাদি লিখতেন। অবজারভারের নতুন পথচলা শুরু হয় ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর, বিজয় দিবসে। বাঙালির জীবনে এই স্বর্ণোজ্জ্বল ও গৌরবের দিনে যখন বীর মুক্তিযোদ্ধারা স্লোগান দিয়ে বিজয় উল্লাস করছেন, তখন অবজারভার আর প্রকাশিত হবে কি না, এক সংশয় দেখা দিল। জনাব হক স্মৃতিচারণা করে বলেছেন, ‘এ সময় আমার কর্মস্থল ডেইলি অবজারভার অফিস থেকে বাসায় এলেন সহকারী সম্পাদক (অকালপ্রয়াত)/// নজরুল ইসলাম। বললেন, “স্যার, অফিসে চলেন। অফিসে গন্ডগোল লেগে গেছে।
হামিদুল হক চৌধুরী পালিয়ে পাকিস্তান চলে গেছেন আজই। কাল পত্রিকা বের হবে না।...” তখনই মনে মনে সিদ্ধান্ত নিলাম পত্রিকা প্রকাশিত হবে নতুন নামে।...বাঙালির স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে, পাকিস্তানি হানাদাররা আত্মসমর্পণ করেছে। সেহেতু পত্রিকার নাম আর পাকিস্তান অবজারভার থাকতে পারে না। পাকিস্তান শব্দটি বাদ দিতে হবে।
যে সিদ্ধান্ত সেই কাজ। পত্রিকার প্রধান স্টোরি আমিই লিখলাম। ১৭ই ডিসেম্বর পত্রিকা প্রকাশিত হলো শুধু “দ্য অবজারভার” নাম দিয়ে।’ (শামীমা চৌধুরী, পৃ. ৬৭)। বাঙালি জাতির এই ঐতিহাসিক দিনে তিনি এই মহৎ কাজের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট থাকতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করেছেন। কয়েক দিন এভাবে চলতে থাকার পর পত্রিকাটির নাম হলো দ্য বাংলাদেশ অবজারভার। জনাব নজরুল ইসলাম পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে খণ্ডকালীন শিক্ষক ছিলেন, আমি তাঁকে সহকর্মী হিসেবে পেয়েছি। আওয়ামী রাজনীতির সমর্থক এবং প্রগতিশীল মানুষ হিসেবে পরিচিত ছিলেন। ছাত্রপ্রিয় এই ব্যক্তি ওবায়েদ উল হককে শ্রদ্ধা করতেন। ওবায়েদ উল হক বাঙালি জাতির মহান নায়ক হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বিভিন্ন দিক নিয়ে সিরিজ লিখেছেন। ১৯৭১ সালের পর তিনি বাংলা ও ইংরেজিতে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বের মহিমা ও বাঙালি জাতির জন্য অসাধারণ অবদানের বিষয়ে লেখা শুরু করেন। ইংরেজি ভাষায় লিখিত তাঁর লেখাগুলো উচ্চমানসম্পন্ন এবং আন্তর্জাতিক মহলে বাংলাদেশকে এবং সেই সময়ে বঙ্গবন্ধুর কার্যক্রমকে উপস্থাপন করতে সাহায্য করে। সৈয়দ বদরুল আহসান এ বিষয়ে প্রশস্তি করে ডেইলি স্টারে সুদীর্ঘ প্রবন্ধ লিখেছেন।
১৯৭২ সালে ওবায়েদ উল হক বাংলাদেশ অবজারভারের সম্পাদকের দায়িত্ব নিলেন। ১৯৭২ থেকে ১৯৮৪ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ অবজারভার ট্রাস্ট পরিচালিত জনপ্রিয় পত্রিকা হিসেবে পরিগণিত ছিল। এই সময়ে ওবায়েদ উল হক পত্রিকার সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন যোগ্যতা ও প্রশংসার সঙ্গে। আমরা জানি, আশির দশকে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে পত্রিকার ব্যবস্থাপনায় পরিবর্তন আসে, কিন্তু এই পরিবর্তনের সঙ্গে জনাব হক আপস করতে পারেননি। পত্রিকার মালিক হামিদুল হক বাংলাদেশে ফিরে এসে কোর্ট থেকে পত্রিকা ফিরে পান।
সেই সময় স্বাধীন মত প্রকাশে বাধাবিপত্তি আসার ফলে ওবায়েদ উল হক পত্রিকা ত্যাগ করে চলে যান এবং আরেকটি নতুন ইংরেজি ডেইলি নিউজের সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছিলেন। সেই পত্রিকাটিতে তিনি ১৯৮৪ থেকে ১৯৮৭ সাল পর্যন্ত ছিলেন। সহজ-সরল ভাষা ব্যবহারের জন্য ওবায়েদ উল হকের সুনাম ছিল। তাঁর লেখায় এবং কথায় হাস্যরসের যে পরিচয় আমরা পাই, তা বিশেষভাবে স্মরণ করার মতো। তিনি অত্যন্ত আশাবাদী মানুষ ছিলেন। গণতন্ত্র এবং রাজনীতির ব্যাপারে তাঁর দৃষ্টিভঙ্গি ছিল যথার্থ। তিনি গণতান্ত্রিক চেতনায় বিশ্বাসী ছিলেন এবং সংগত কারণেই পরমতসহিষ্ণু ছিলেন। তিনি ভলতেয়ারের একটি উক্তি স্মরণ করে তার মর্মার্থ বলতেন, ‘তোমার কথা আমি মানব না, কিন্তু জীবন দিয়ে হলেও তোমাকে তোমার কথা বলার অধিকার আমি রক্ষা করব।’
ওবায়েদ উল হক ১৯২৮ সালে প্রথম যখন কলকাতা গেলেন, তখন থেকেই তাঁর বিস্ময়ের শুরু বলে উল্লেখ করেছেন নিজের এক লেখায়। দেশ ছেড়ে বিদেশের মাটিতে যা দেখেন, তা-ই দেখে অবাক হন। ট্রেন থেকে নেমে আলো ঝলমল শহর, টং টং ঘণ্টা বাজানো ট্রাম গাড়িতে চড়ে কলকাতা দেখা অনেক মজার মনে হয়েছে তাঁর। সবচেয়ে বেশি দর্শনীয় ও আকর্ষণীয় মনে হয়েছে ছায়াছবি দেখে। তিনি রাশিয়া, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, জাপান ও আমেরিকার প্রচুর বিনোদনমূলক ও ক্লাসিক্যাল ছবি দেখার সুযোগ গ্রহণ করেছেন। দেখেছেন বিশ্ববরেণ্য অনেক চলচ্চিত্র নির্মাতার কালজয়ী ছায়াছবি।
এসব স্মৃতিকথার রেশ ধরে তিনি তেতাল্লিশের মন্বন্তরের প্রসঙ্গ টেনে বলেছিলেন যে ১৯৪৩-এ অনাহারে মারা গিয়েছিল প্রায় ৫০ লাখ মানুষ। সেই দুর্ভিক্ষ ছিল লোভী মহাজন মজুতদারদের তৈরি কৃত্রিম খাদ্যসংকট। লাশের স্তূপ আর কঙ্কালসদৃশ মানুষের মিছিল। শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের অনেক রেখাচিত্রে সেই মানবিক বিপর্যয়ের কথা মূর্ত হয়ে উঠেছিল। ওবায়েদ উল হক এই বিপর্যয়ের কথা গভীর অনুভূতিতে রেখে ‘দুঃখে যাদের জীবন গড়া’ চিত্রকাহিনি রচনা করেছিলেন। তিনি উল্লেখ করেছিলেন, ‘আটাশ সালের গোপন সম্পর্ক চুয়াল্লিশে বাস্তব রূপ নিল। কলকাতায় অফিস খুললাম। স্ট্যান্ডার্ড ফিল্মস ও ছায়ানট পিকচার্স নামে পরিবেশন ও প্রযোজনা সংস্থা গঠন করে বেঙ্গল মোশন পিকচার অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য হয়েছিলাম কিন্তু ছবি বানাতে গিয়ে পেলাম অনেক বাধা। সে এক দীর্ঘ কাহিনি। শেষ পর্যন্ত অনেক বাধাবিপত্তি পেরিয়ে ছবি যখন সমাপ্তির পথে, তখন লেগে গেল হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গা (দ্য গ্রেট ক্যালকাটা কিলিং)।’
এই দুঃসময় কাটিয়ে উঠে ১৯৪৬ সালের ২০ ডিসেম্বর কলকাতাসহ দেশের অনেক ছবিঘরে এবং বিহার, আসাম ও বার্মায় (মিয়ানমার) ছবিটি মুক্তি পেয়েছিল। জানা যায়, ছবিটি যথেষ্ট জনপ্রিয় হয়েছিল। সিনে ম্যাগাজিন রূপমঞ্চের জরিপে সে বছর সেরা ১০টি ছবির একটি নির্বাচিত হয়েছিল। এই ছবি পরে ঢাকার মানসী সিনেমা হলে প্রদর্শিত হয়েছিল। যতটা ভেবেছিলেন তার চেয়েও বেশি হয়েছিল, এই ভেবে তিনি নিজের সাফল্যে সন্তুষ্ট হয়েছিলেন।
‘দুঃখে যাদের জীবন গড়া’ ছবির পরিচালক নিযুক্ত হয়েছিলেন সুকুমার দাসগুপ্ত। উল্লেখ করা প্রয়োজন, এই ছবির প্রযোজক, কাহিনিকার জনাব হকের সঙ্গে পরিচালকের মতবিরোধ ঘটে এবং সুকুমার গুপ্ত কাজ শেষ না করেই চলে যান। তখন বাকি কাজ ওবায়েদ উল হক নিজেই শেষ করেছিলেন।
আরও জানা যায়, ১৯৪৮ সালে ওবায়েদ উল হক বাংলা ও হিন্দি ভাষায় ছবি তৈরির জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করেছিলেন, কিন্তু সেই সময় মহাত্মা গান্ধী আততায়ীর গুলিতে নিহত হলে সাম্প্রদায়িক অবস্থার অবনতি ঘটে, পরিবেশ উত্তপ্ত হয়, তাঁর আর ছবি করা হয়ে ওঠে না। তাঁর কাহিনি নিয়ে ১৯৫৯ সালে শুরু হয় ‘আযান’ ছায়াছবির কাজ। তিনি ‘দুই দিগন্ত’ নামের একটি ছবি নির্মাণ করেন ১৯৬২ সালে। তাঁর লেখা কাহিনি, চিত্রনাট্য, পরিচালনা ও প্রযোজনায় এই ছায়াছবি নির্মিত হয়েছিল এবং ঢাকার বলাকা সিনেমা হলের ঐতিহাসিক যাত্রা শুরু হয়েছিল ‘দুই দিগন্ত’ ছবি দিয়ে।
বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের সঙ্গে তিনি ব্যাপকভাবে জড়িয়ে পড়েছিলেন। জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার কমিটি, সেন্সর বোর্ড, চলচ্চিত্র অনুদান তহবিল এবং চলচ্চিত্র সংসদ চর্চায় বিশেষ অবদান রাখেন। তাঁর নানাবিধ কাজের অবদান আমাদের নতুন শিক্ষায় আলোকিত করে, আমাদের উজ্জীবিত করে তাঁর আদর্শকে ঊর্ধ্বে তুলে ধরতে। কামনা করি, এই অনন্য সাংবাদিক ও সৃজনশীল চলচ্চিত্রনির্মাতা তাঁর বহুমাত্রিক কাজের জন্য স্মরণীয় হয়ে থাকবেন প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে।

১৯৪৮ সালে ওবায়েদ উল হক বাংলা ও হিন্দি ভাষায় ছবি তৈরির জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করেছিলেন, কিন্তু সেই সময় মহাত্মা গান্ধী আততায়ীর গুলিতে নিহত হলে সাম্প্রদায়িক অবস্থার অবনতি ঘটে, পরিবেশ উত্তপ্ত হয়, তাঁর আর ছবি করা হয়ে ওঠে না। তাঁর কাহিনি নিয়ে ১৯৫৯ সালে শুরু হয় ‘আযান’ ছায়াছবির কাজ। তিনি ‘দুই দিগন্ত’ নামের একটি ছবি নির্মাণ করেন ১৯৬২ সালে। তাঁর লেখা কাহিনি, চিত্রনাট্য, পরিচালনা ও প্রযোজনায় এই ছায়াছবি নির্মিত হয়েছিল এবং ঢাকার বলাকা সিনেমা হলের ঐতিহাসিক যাত্রা শুরু হয়েছিল ‘দুই দিগন্ত’ ছবি দিয়ে।
ওবায়েদ উল হক আমার কাছে বহুমাত্রিক একজন প্রতিভার নাম। অক্টোবরের ১৩ হচ্ছে তাঁর মৃত্যুদিবস। শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করি তাঁকে।
বিভিন্ন অনুষ্ঠানে তাঁর সঙ্গে দেখা হয়েছে, কথা হয়েছে। তাঁর সম্পর্কে আমি আগ্রহের সঙ্গে পড়েছি এবং যা জেনেছি, তাতে বিস্ময়ভরে ভেবেছি। অবিভক্ত ভারতে সেই সময়ে যখন সাংবাদিকতা, সংস্কৃতি ও চলচ্চিত্র মুখ তুলে তাকানোর প্রতীক্ষায়, সাংবাদিকতা কিছুটা এগিয়েছে। চলচ্চিত্র তখন এই বাংলায় নতুন, সেই সময়ে ওবায়েদ উল হক আবির্ভূত হয়েছিলেন স্বমহিমায়।
ওবায়েদ উল হক স্মৃতিচারণা করে বলেছেন তাঁর সাংবাদিকতা জীবনের কথা। দেশভাগের পর চলচ্চিত্রজগৎ থেকে প্রত্যাবাসনের পর তিনি ফেনীর নিজস্ব বাসভবনে বাস করছিলেন। ১৯৪৬ সালের সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার ভয়াবহতা এবং পরবর্তীকালে তাঁর চলচ্চিত্রের মুক্তি পাওয়া—এসব নিয়ে কিছুদিন কেটেছে তাঁর। পূর্ব বাংলায় সিনেমা নির্মাণের তখনো সুযোগ তৈরি হয়নি। তাই তিনি লেখালেখি করতেন কিন্তু খুব ব্যস্ত থাকার মতো কিছু ছিল না হাতে, বেকার জীবন কেটেছে বলে তিনি নিজে মনে করতেন। ১৯৫১ সালের ২৫ জানুয়ারি সম্পাদকের অনুরোধে তিনি দ্য পাকিস্তান অবজারভারে লিখতেন। তখন অবজারভারের সম্পাদক ছিলেন আব্দুস সালাম। সম্পাদক ২৫ জুলাই তাঁকে সম্পাদকীয় বিভাগে যোগ দিতে বলেন। জনাব হক বিস্ময়ের সঙ্গে বলেন, ‘সম্পূর্ণভাবে বিস্ময়কর, অভাবনীয় ও অবিশ্বাস্য ঘটনা।’ জনাব হক বলেছিলেন, ‘...এ পেশা সম্বন্ধে অনভিজ্ঞতার কারণে তৎক্ষণাৎ উত্তর দেওয়া সম্ভব হয়নি। কিন্তু সালাম সাহেব সিরিয়াস। আমার নীরবতায় তিনি নিরুৎসাহিত হননি। ৭ আগস্টে তাঁর একটা টেলিগ্রাম এল, “প্লিজ, জয়েন ইমিডিয়েটলি।” মা তখন বেঁচে ছিলেন, আমার গড়িমসি দেখে বললেন, “ভদ্রতা বলেও একটা কথা আছে, চাকরিতে যোগ দিতে না চাও অন্তত একটা চিঠি লিখে তোমার জানানো উচিত।”’ (শামীমা চৌধুরী, ওবায়েদ উল হক চলচ্চিত্রকার ও সাংবাদিক, পৃ. ৬৬)। সাংবাদিকতা পেশায় তাঁর প্রবেশ নিজের ইচ্ছায় হয়নি বলে তিনি বলেছেন, ‘বাই চান্স, নট বাই চয়েস।’ সাংবাদিকতায় তাঁর পথচলা ছিল পেশাদারত্বের সঙ্গে গুরুত্ব মেনে চলা। সেই পথ খুব সহজ ছিল না। অনেক বন্ধুর পথ তাঁকে অতিক্রম করতে হয়েছে।
চলচ্চিত্রের সৃজনশীল কাজকর্ম থেকে তাঁকে আসতে হয়েছে দায়িত্বশীল সংবাদপ্রবাহের এক সুকঠিন জগতে। অবজারভারে তিনি সম্পাদকীয়, নিবন্ধ, কলাম ইত্যাদি লিখতেন। অবজারভারের নতুন পথচলা শুরু হয় ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর, বিজয় দিবসে। বাঙালির জীবনে এই স্বর্ণোজ্জ্বল ও গৌরবের দিনে যখন বীর মুক্তিযোদ্ধারা স্লোগান দিয়ে বিজয় উল্লাস করছেন, তখন অবজারভার আর প্রকাশিত হবে কি না, এক সংশয় দেখা দিল। জনাব হক স্মৃতিচারণা করে বলেছেন, ‘এ সময় আমার কর্মস্থল ডেইলি অবজারভার অফিস থেকে বাসায় এলেন সহকারী সম্পাদক (অকালপ্রয়াত)/// নজরুল ইসলাম। বললেন, “স্যার, অফিসে চলেন। অফিসে গন্ডগোল লেগে গেছে।
হামিদুল হক চৌধুরী পালিয়ে পাকিস্তান চলে গেছেন আজই। কাল পত্রিকা বের হবে না।...” তখনই মনে মনে সিদ্ধান্ত নিলাম পত্রিকা প্রকাশিত হবে নতুন নামে।...বাঙালির স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে, পাকিস্তানি হানাদাররা আত্মসমর্পণ করেছে। সেহেতু পত্রিকার নাম আর পাকিস্তান অবজারভার থাকতে পারে না। পাকিস্তান শব্দটি বাদ দিতে হবে।
যে সিদ্ধান্ত সেই কাজ। পত্রিকার প্রধান স্টোরি আমিই লিখলাম। ১৭ই ডিসেম্বর পত্রিকা প্রকাশিত হলো শুধু “দ্য অবজারভার” নাম দিয়ে।’ (শামীমা চৌধুরী, পৃ. ৬৭)। বাঙালি জাতির এই ঐতিহাসিক দিনে তিনি এই মহৎ কাজের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট থাকতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করেছেন। কয়েক দিন এভাবে চলতে থাকার পর পত্রিকাটির নাম হলো দ্য বাংলাদেশ অবজারভার। জনাব নজরুল ইসলাম পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে খণ্ডকালীন শিক্ষক ছিলেন, আমি তাঁকে সহকর্মী হিসেবে পেয়েছি। আওয়ামী রাজনীতির সমর্থক এবং প্রগতিশীল মানুষ হিসেবে পরিচিত ছিলেন। ছাত্রপ্রিয় এই ব্যক্তি ওবায়েদ উল হককে শ্রদ্ধা করতেন। ওবায়েদ উল হক বাঙালি জাতির মহান নায়ক হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বিভিন্ন দিক নিয়ে সিরিজ লিখেছেন। ১৯৭১ সালের পর তিনি বাংলা ও ইংরেজিতে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বের মহিমা ও বাঙালি জাতির জন্য অসাধারণ অবদানের বিষয়ে লেখা শুরু করেন। ইংরেজি ভাষায় লিখিত তাঁর লেখাগুলো উচ্চমানসম্পন্ন এবং আন্তর্জাতিক মহলে বাংলাদেশকে এবং সেই সময়ে বঙ্গবন্ধুর কার্যক্রমকে উপস্থাপন করতে সাহায্য করে। সৈয়দ বদরুল আহসান এ বিষয়ে প্রশস্তি করে ডেইলি স্টারে সুদীর্ঘ প্রবন্ধ লিখেছেন।
১৯৭২ সালে ওবায়েদ উল হক বাংলাদেশ অবজারভারের সম্পাদকের দায়িত্ব নিলেন। ১৯৭২ থেকে ১৯৮৪ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ অবজারভার ট্রাস্ট পরিচালিত জনপ্রিয় পত্রিকা হিসেবে পরিগণিত ছিল। এই সময়ে ওবায়েদ উল হক পত্রিকার সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন যোগ্যতা ও প্রশংসার সঙ্গে। আমরা জানি, আশির দশকে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে পত্রিকার ব্যবস্থাপনায় পরিবর্তন আসে, কিন্তু এই পরিবর্তনের সঙ্গে জনাব হক আপস করতে পারেননি। পত্রিকার মালিক হামিদুল হক বাংলাদেশে ফিরে এসে কোর্ট থেকে পত্রিকা ফিরে পান।
সেই সময় স্বাধীন মত প্রকাশে বাধাবিপত্তি আসার ফলে ওবায়েদ উল হক পত্রিকা ত্যাগ করে চলে যান এবং আরেকটি নতুন ইংরেজি ডেইলি নিউজের সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছিলেন। সেই পত্রিকাটিতে তিনি ১৯৮৪ থেকে ১৯৮৭ সাল পর্যন্ত ছিলেন। সহজ-সরল ভাষা ব্যবহারের জন্য ওবায়েদ উল হকের সুনাম ছিল। তাঁর লেখায় এবং কথায় হাস্যরসের যে পরিচয় আমরা পাই, তা বিশেষভাবে স্মরণ করার মতো। তিনি অত্যন্ত আশাবাদী মানুষ ছিলেন। গণতন্ত্র এবং রাজনীতির ব্যাপারে তাঁর দৃষ্টিভঙ্গি ছিল যথার্থ। তিনি গণতান্ত্রিক চেতনায় বিশ্বাসী ছিলেন এবং সংগত কারণেই পরমতসহিষ্ণু ছিলেন। তিনি ভলতেয়ারের একটি উক্তি স্মরণ করে তার মর্মার্থ বলতেন, ‘তোমার কথা আমি মানব না, কিন্তু জীবন দিয়ে হলেও তোমাকে তোমার কথা বলার অধিকার আমি রক্ষা করব।’
ওবায়েদ উল হক ১৯২৮ সালে প্রথম যখন কলকাতা গেলেন, তখন থেকেই তাঁর বিস্ময়ের শুরু বলে উল্লেখ করেছেন নিজের এক লেখায়। দেশ ছেড়ে বিদেশের মাটিতে যা দেখেন, তা-ই দেখে অবাক হন। ট্রেন থেকে নেমে আলো ঝলমল শহর, টং টং ঘণ্টা বাজানো ট্রাম গাড়িতে চড়ে কলকাতা দেখা অনেক মজার মনে হয়েছে তাঁর। সবচেয়ে বেশি দর্শনীয় ও আকর্ষণীয় মনে হয়েছে ছায়াছবি দেখে। তিনি রাশিয়া, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, জাপান ও আমেরিকার প্রচুর বিনোদনমূলক ও ক্লাসিক্যাল ছবি দেখার সুযোগ গ্রহণ করেছেন। দেখেছেন বিশ্ববরেণ্য অনেক চলচ্চিত্র নির্মাতার কালজয়ী ছায়াছবি।
এসব স্মৃতিকথার রেশ ধরে তিনি তেতাল্লিশের মন্বন্তরের প্রসঙ্গ টেনে বলেছিলেন যে ১৯৪৩-এ অনাহারে মারা গিয়েছিল প্রায় ৫০ লাখ মানুষ। সেই দুর্ভিক্ষ ছিল লোভী মহাজন মজুতদারদের তৈরি কৃত্রিম খাদ্যসংকট। লাশের স্তূপ আর কঙ্কালসদৃশ মানুষের মিছিল। শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের অনেক রেখাচিত্রে সেই মানবিক বিপর্যয়ের কথা মূর্ত হয়ে উঠেছিল। ওবায়েদ উল হক এই বিপর্যয়ের কথা গভীর অনুভূতিতে রেখে ‘দুঃখে যাদের জীবন গড়া’ চিত্রকাহিনি রচনা করেছিলেন। তিনি উল্লেখ করেছিলেন, ‘আটাশ সালের গোপন সম্পর্ক চুয়াল্লিশে বাস্তব রূপ নিল। কলকাতায় অফিস খুললাম। স্ট্যান্ডার্ড ফিল্মস ও ছায়ানট পিকচার্স নামে পরিবেশন ও প্রযোজনা সংস্থা গঠন করে বেঙ্গল মোশন পিকচার অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য হয়েছিলাম কিন্তু ছবি বানাতে গিয়ে পেলাম অনেক বাধা। সে এক দীর্ঘ কাহিনি। শেষ পর্যন্ত অনেক বাধাবিপত্তি পেরিয়ে ছবি যখন সমাপ্তির পথে, তখন লেগে গেল হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গা (দ্য গ্রেট ক্যালকাটা কিলিং)।’
এই দুঃসময় কাটিয়ে উঠে ১৯৪৬ সালের ২০ ডিসেম্বর কলকাতাসহ দেশের অনেক ছবিঘরে এবং বিহার, আসাম ও বার্মায় (মিয়ানমার) ছবিটি মুক্তি পেয়েছিল। জানা যায়, ছবিটি যথেষ্ট জনপ্রিয় হয়েছিল। সিনে ম্যাগাজিন রূপমঞ্চের জরিপে সে বছর সেরা ১০টি ছবির একটি নির্বাচিত হয়েছিল। এই ছবি পরে ঢাকার মানসী সিনেমা হলে প্রদর্শিত হয়েছিল। যতটা ভেবেছিলেন তার চেয়েও বেশি হয়েছিল, এই ভেবে তিনি নিজের সাফল্যে সন্তুষ্ট হয়েছিলেন।
‘দুঃখে যাদের জীবন গড়া’ ছবির পরিচালক নিযুক্ত হয়েছিলেন সুকুমার দাসগুপ্ত। উল্লেখ করা প্রয়োজন, এই ছবির প্রযোজক, কাহিনিকার জনাব হকের সঙ্গে পরিচালকের মতবিরোধ ঘটে এবং সুকুমার গুপ্ত কাজ শেষ না করেই চলে যান। তখন বাকি কাজ ওবায়েদ উল হক নিজেই শেষ করেছিলেন।
আরও জানা যায়, ১৯৪৮ সালে ওবায়েদ উল হক বাংলা ও হিন্দি ভাষায় ছবি তৈরির জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করেছিলেন, কিন্তু সেই সময় মহাত্মা গান্ধী আততায়ীর গুলিতে নিহত হলে সাম্প্রদায়িক অবস্থার অবনতি ঘটে, পরিবেশ উত্তপ্ত হয়, তাঁর আর ছবি করা হয়ে ওঠে না। তাঁর কাহিনি নিয়ে ১৯৫৯ সালে শুরু হয় ‘আযান’ ছায়াছবির কাজ। তিনি ‘দুই দিগন্ত’ নামের একটি ছবি নির্মাণ করেন ১৯৬২ সালে। তাঁর লেখা কাহিনি, চিত্রনাট্য, পরিচালনা ও প্রযোজনায় এই ছায়াছবি নির্মিত হয়েছিল এবং ঢাকার বলাকা সিনেমা হলের ঐতিহাসিক যাত্রা শুরু হয়েছিল ‘দুই দিগন্ত’ ছবি দিয়ে।
বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের সঙ্গে তিনি ব্যাপকভাবে জড়িয়ে পড়েছিলেন। জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার কমিটি, সেন্সর বোর্ড, চলচ্চিত্র অনুদান তহবিল এবং চলচ্চিত্র সংসদ চর্চায় বিশেষ অবদান রাখেন। তাঁর নানাবিধ কাজের অবদান আমাদের নতুন শিক্ষায় আলোকিত করে, আমাদের উজ্জীবিত করে তাঁর আদর্শকে ঊর্ধ্বে তুলে ধরতে। কামনা করি, এই অনন্য সাংবাদিক ও সৃজনশীল চলচ্চিত্রনির্মাতা তাঁর বহুমাত্রিক কাজের জন্য স্মরণীয় হয়ে থাকবেন প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

১৯৪৮ সালে ওবায়েদ উল হক বাংলা ও হিন্দি ভাষায় ছবি তৈরির জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করেছিলেন, কিন্তু সেই সময় মহাত্মা গান্ধী আততায়ীর গুলিতে নিহত হলে সাম্প্রদায়িক অবস্থার অবনতি ঘটে, পরিবেশ উত্তপ্ত হয়, তাঁর আর ছবি করা হয়ে ওঠে না। তাঁর কাহিনি নিয়ে ১৯৫৯ সালে শুরু হয় ‘আযান’ ছায়াছবির কাজ।
১৩ অক্টোবর ২০২২
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

১৯৪৮ সালে ওবায়েদ উল হক বাংলা ও হিন্দি ভাষায় ছবি তৈরির জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করেছিলেন, কিন্তু সেই সময় মহাত্মা গান্ধী আততায়ীর গুলিতে নিহত হলে সাম্প্রদায়িক অবস্থার অবনতি ঘটে, পরিবেশ উত্তপ্ত হয়, তাঁর আর ছবি করা হয়ে ওঠে না। তাঁর কাহিনি নিয়ে ১৯৫৯ সালে শুরু হয় ‘আযান’ ছায়াছবির কাজ।
১৩ অক্টোবর ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

১৯৪৮ সালে ওবায়েদ উল হক বাংলা ও হিন্দি ভাষায় ছবি তৈরির জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করেছিলেন, কিন্তু সেই সময় মহাত্মা গান্ধী আততায়ীর গুলিতে নিহত হলে সাম্প্রদায়িক অবস্থার অবনতি ঘটে, পরিবেশ উত্তপ্ত হয়, তাঁর আর ছবি করা হয়ে ওঠে না। তাঁর কাহিনি নিয়ে ১৯৫৯ সালে শুরু হয় ‘আযান’ ছায়াছবির কাজ।
১৩ অক্টোবর ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

১৯৪৮ সালে ওবায়েদ উল হক বাংলা ও হিন্দি ভাষায় ছবি তৈরির জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করেছিলেন, কিন্তু সেই সময় মহাত্মা গান্ধী আততায়ীর গুলিতে নিহত হলে সাম্প্রদায়িক অবস্থার অবনতি ঘটে, পরিবেশ উত্তপ্ত হয়, তাঁর আর ছবি করা হয়ে ওঠে না। তাঁর কাহিনি নিয়ে ১৯৫৯ সালে শুরু হয় ‘আযান’ ছায়াছবির কাজ।
১৩ অক্টোবর ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫