উপসম্পাদকীয়

আমরা কয়েকজন বন্ধু মাঝেমধ্যে আড্ডায় বসি এবং অযথা নানা বিষয়ে তর্কবিতর্ক করি, রাজা-উজির মারি। আমাদের আড্ডার মধ্যমণি অবশ্যই আমাদের সাংবাদিক বন্ধু মাহবুব কামাল। তিনি তর্ক করতে পছন্দ করেন এবং নানা উদাহরণ দিয়ে নিজের মতের পক্ষে দৃঢ় অবস্থান নেন। অবশ্য অন্য কেউ নিজের বক্তব্য বা মতের পক্ষে যুক্তির জোর প্রমাণ করতে পারলে তিনি তা মেনে নিতে দ্বিধা করেন না।
এই যেমন কোরবানির ঈদের পর আমরা আড্ডায় বসার পর স্বাভাবিকভাবেই সামনে এল লোডশেডিং, শ্রীলঙ্কায় অভূতপূর্ব জনজাগরণ, প্রেসিডেন্ট প্রাসাদ দখল এবং গোতাবায়ার পলায়ন ইত্যাদি। আমাদের মধ্যে বিএনপিদলীয় কেউ না থাকলেও একজন ছিলেন, যিনি বিএনপির সঙ্গে জোটে থাকা একটি ছোট দলের বড় নেতা। তাঁর নাম উল্লেখ করতে পারলে ভালো হতো, কিন্তু তাঁকে উদ্ধৃত করে কিছু লিখতে তাঁর আপত্তি আছে। তিনি যেহেতু একটি রাজনৈতিক দলের সদস্য, সেহেতু তাঁর বয়ানে এমন কিছু যদি লেখা হয়, যা তাঁর দলের অবস্থানের বিরুদ্ধে যায়, তাহলে নিজ দলের মধ্যেই তাঁকে প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হবে। আমাদের দেশে যাঁরা প্রকাশ্যে গণতন্ত্রের জন্য কথা বলেন, ব্যক্তিগত জীবনে তাঁদের অনেকেই নিয়ন্ত্রিত গণতন্ত্র পছন্দ করেন।
রাজনৈতিক নেতাদের কেউ কেউ ব্যক্তিগত আলাপচারিতায় খোলামেলাভাবে যা বলেন, তা দলীয় ফোরামের ফরমাল আলাপে বলবেন না। বিএনপির সঙ্গে জোটে থাকা আমাদের বন্ধুস্থানীয় ওই নেতা দলের সভায় বলেছেন, শেখ হাসিনার সরকারের পতন অনিবার্য এবং সেটা আগামী নির্বাচনের আগেই।
আমরা যখন আড্ডায় তাঁকে চেপে ধরলাম, ভাই, কী কী লক্ষণ দেখে আপনার মনে হয়েছে যে আগামী নির্বাচনের আগেই শেখ হাসিনার সরকারের পতন হবে?
জবাবে প্রথমে তিনি একটু রহস্যের হাসি হাসলেন। তারপর বললেন, এটা সিক্রেট, বলা যাবে না।
আমরা উপস্থিত সবাই যখন বললাম, যে কথা আপনি দলীয় সভায় বলছেন, গণমাধ্যমে যা ছাপা হচ্ছে, তা সিক্রেট বা গোপন হয় কীভাবে?
এবারও ওই উদীয়মান নেতা বললেন, ‘আরে আমি পতনের কথা বলেছি, কীভাবে পতন হবে, সে কৌশল তো বলিনি! আমরা সরকারবিরোধী সব দলকে এক জায়গায় আনার চেষ্টা করছি, বৃহত্তর ঐক্যের একটা ছাতা তৈরি হলে তারপর সবাই বসে কৌশল ঠিক করব।’
আমাদের এক বন্ধু ওই নেতার কাছে জানতে চাইলেন, আপনারা বৃহত্তর ঐক্য করবেন, সরকার পতনের কৌশল ঠিক করবেন, আর সরকারপক্ষ বসে বসে ডাঙগুলি খেলবে? তারা পাল্টা ব্যবস্থা নেবে না?
এবার নেতা একটু নড়েচড়ে বসে বললেন, সরকারের কৌশলগুলো ভোঁতা হয়ে গেছে, ওগুলো আর কাজ করবে না।
পাল্টা প্রশ্ন ওঠে, আপনাদের কৌশল যে খুব ধারালো, সেটা পরীক্ষা হলো কোন ল্যাবরেটরিতে?
নেতা বন্ধু জবাব দেওয়ার আগেই মুখ খুললেন মাহবুব কামাল। প্রশ্ন করলেন, রাজনীতি থেকে নীতি বাদ দিয়ে আপনারা কি এখন কৌশলের খেলা খেলবেন?
নেতা বললেন, রাজনীতি তো এক অর্থে কৌশলেরই খেলা।
মাহবুব কামাল আবারও বললেন, তা ঠিক। একটা গল্প বললেন তিনি। রিকশায় যাচ্ছিলেন। একসময় রিকশাচালকের কাছে জানতে চাইলেন, দেশের অবস্থা কেমন বুঝছেন?
রিকশাচালক একবার মুখ ফিরিয়ে তাঁকে দেখলেন কিন্তু প্রশ্নের কোনো জবাব দিলেন না। মাহবুব কামাল ভাবলেন, গড়পড়তা বাঙালির মতো এই রিকশাচালকের রাজনীতির প্রতি আগ্রহ নেই। তবু জানতে চান, আপনি কি হাসিনা-খালেদার নাম শোনেননি?
এবার পেছনে না তাকিয়ে চালকের জবাব, শুনব না ক্যান? একজন শ্যাখ সাহেবের মাইয়া, আরেকজন জিয়ার বউ।
- আমার আগের প্রশ্নের উত্তর দিলেন না যে!
- আমরা গরিব মানুষ, রাজনীতির কী বুঝি? তারপর একটু দম নিয়ে বললেন, রাজনীতি বড় পলিট্রিকস।
রিকশাচালকের এই জবাবে কিছুটা অবাক হয়েছিলেন মাহবুব কামাল।
রাজনীতি ও পলিটিকস—অর্থ এক হলেও লোকমুখে রাজনীতি প্রসঙ্গে পলিটিকস শব্দটি শুনতে শুনতে এই রিকশাচালকের কাছে এর অর্থ হয়ে গেছে চতুরতা কিংবা বলা যেতে পারে ধূর্তামি।
মাহবুব কামাল বলতে থাকেন, আসলে আমাদের দেশের দুই বড় দল রাজনীতি বা পলিটিকস না করে করছে পলিট্রিকস । সুপার পলিট্রিকস দিয়ে কে কাকে সুপারসিড বা ওভারটেক বা অতিক্রম করতে পারবে, চলছে সেই প্রতিযোগিতা। উদাহরণ দিয়ে তিনি বললেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থায় ভালোই চলছিল আমাদের নির্বাচনী রাজনীতি। কিন্তু রাজনীতিটা ভালো চললে তো হবে না, নিজের ভালোটা দেখতে হবে আগে। শুরু হলো পলিট্রিকস। ব্যবস্থাটাকে সরাসরি বাতিল করলে মানুষ খেপে যাবে, তাই একে ম্যানিপুলেট করতে হবে। খালেদা জিয়া দেখলেন, ইমিডিয়েট পাস্ট প্রধান বিচারপতি ভালো মানুষ, অতিশয় নিরপেক্ষ। তিনি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান হলে তাঁকে দিয়ে খেলানো যাবে না, তাই এমন একজনকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারপ্রধান করতে হবে, যিনি আমাদের স্বার্থ দেখভাল করবেন। বুদ্ধিটা সম্ভবত মওদুদ সাহেবই দিয়েছিলেন, বিচারপতিদের অবসরের বয়স দুই বছর বাড়িয়ে দিলে ইমিডিয়েট পাস্ট প্রধান বিচারপতি হবেন কে এম হাসান, যিনি একসময় বিএনপির নেতা ছিলেন। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান হিসেবে ‘আমাদের লোক’ বেছে নেওয়ার পরিণতি কী হলো, তা নিশ্চয়ই সবার মনে আছে।
বিএনপির এই পলিট্রিকসের পাল্টা হিসেবে আওয়ামী লীগ সুপার পলিট্রিকস করল। এবার আর ম্যানিপুলেশন নয়, উধাও করে দিতে হবে ব্যবস্থাটা। কিন্তু পাবলিককে একটা না একটা যুক্তি তো দেখাতে হবে। তারা চাইল একটা যুক্তি, পেয়ে গেল দুইটা।
এক. তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা থাকলে আবারও এক-এগারো ঘটার আশঙ্কা। দুই. আদালতের রায়। নাই হয়ে গেল তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা।
এখন বিএনপি যতই তত্ত্বাবধায়ক বা নির্বাচনকালীন সরকারের কথা বলে, সরকার ও আওয়ামী লীগ ততই বলে, ওই অসাংবিধানিক ব্যবস্থায় আর নয়।
বিএনপির অনেক না-কে আওয়ামী লীগ হ্যাঁ করিয়েছে। যেমন বিএনপির সরকার পতনের আন্দোলন বালুর ট্রাকে আটকে দেওয়া। ২০১৮ সালের নির্বাচনে বিএনপি ও মিত্ররা অংশ নিয়ে ফলাফলে চোখে সরষে ফুল দেখেছে।
বিএনপি বলছে, আওয়ামী লীগ কথা রাখেনি। আগের রাতে ভোট করেছে। ওটা কোনো নির্বাচনই হয়নি। ইত্যাদি ইত্যাদি। আওয়ামী লীগ ওসব কানেও তুলছে না। তারা দিব্যি চালিয়ে যাচ্ছে।
প্রশ্ন উঠতে পারে, তাহলে কি এভাবেই চলবে? না, তা কেন? মাহবুব কামাল বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগও ভারসাম্যহীন থাকে না। দিনভর বৃষ্টি হয়, কারণ জলাবদ্ধতা মানুষের সহনশীলতার মধ্যেই থাকে। দিনভর ভূমিকম্প হয় না, ওটা সহনশীলতার মধ্যে থাকে না। ভারসাম্যহীন সমাজও বেশি দিন একইভাবে থাকতে পারে না। নির্বাচন তো একটা হতেই হবে।
কিন্তু সেই নির্বাচনেও বিএনপির ক্ষমতায় ফেরার সম্ভাবনা কম এই কারণে যে, দেশে চলছে ভয়াবহ মূল্যবোধের সংকট। দেশের উন্নয়ন-অগ্রগতি নিয়ে সরকারকে বারবার চ্যালেঞ্জ না করে বিএনপি যদি মূল্যবোধের প্রশ্নে সরকারকে চ্যালেঞ্জ করতে পারত, তাহলে সুফল হয়তো পেতে পারত। কিন্তু খালেদা জিয়াসহ বিএনপির নেতারা দল পুনর্গঠন করতে চান, পুনর্গঠন করতে চান না মূল্যবোধের। মূল্যবোধ পুনর্গঠনের আগে বিএনপি হাজার চেষ্টা করেও নির্বাচনের দাবিতে সরকারের ওপর কার্যকর চাপ সৃষ্টি করতে পারবে বলে মনে হয় না।
খালেদা জিয়া ১৫ আগস্ট জন্মদিন পালন করবেন, তাঁর গুণমুগ্ধরা সাজানো গৃহ-কামরার এক কোণে নেত্রীর জন্মদিনের কেক কাটবেন আর শেখ হাসিনাকে স্বৈরাচার বলবেন—এই মুখ ভ্যাংচানোর নিম্নরুচির রাজনৈতিক সংস্কৃতির অবসান না হলে শেখ হাসিনার কাছে সদয় আচরণ আশা করা বাতুলতা নয় কি? শাসক নয়, শেখ হাসিনাকে একজন মানুষ হিসেবে কল্পনা করতে শিখতে হবে। পিতৃশোকাগ্রস্ত কাউকে সমবেদনা না জানিয়ে কেউ যদি তাঁকে ভেংচি কাটে, তিনি তো জীবন থাকতে তাঁর সঙ্গে আপস করবেন না। এ দেশের রাজনীতির যত সংকট, তার প্রায় সবই সংস্কৃতির সংকট থেকে সৃষ্ট। রাজনৈতিক সংস্কৃতিটা উন্নত না হলে কোনো ফর্মুলাই কাজে আসবে না।
গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের বিচারে বর্তমান সরকারকে মেনে নিতে যাঁদের আপত্তি, তাঁদের কাছে প্রশ্ন, এই যে সরকার ক্রমান্বয়েই অধিকতর কৰ্তৃত্ববাদী হয়ে উঠছে, তা রোখা যাবে কীভাবে? বিএনপি-জামায়াতের সমন্বয়ে? এই দল দুটিও কি কর্তৃত্ববাদী নয়? আওয়ামী লীগ মূলত একটি গণতান্ত্রিক দল, সময়ের ফেরে এটি কর্তৃত্ববাদী হয়ে উঠেছে। কিন্তু জামায়াত-বিএনপি-জঙ্গিবাদ সর্বকালেই কর্তৃত্ববাদী। আইএস দ্বারা দখলকৃত অঞ্চলগুলোর মানুষ বুঝতে পারছে জঙ্গি কত নিষ্ঠুর কর্তৃত্ববাদী হতে পারে আর এ দেশে জামায়াত যদি অন্যদের ঘাড়ে সওয়ার হয়ে ক্ষমতায় বসতে পারে, তাহলে দেশে ভিন্নমত বলে কিছু থাকবে না। আফগানিস্তানের দিকে তাকালে তা অনেকটাই পরিষ্কার বোঝা যায়।
জামায়াত, মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু, প্রতিশোধের রাজনীতি ইত্যাদি বিষয়ের বিশ্বাসযোগ্য নিষ্পত্তি না করে সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবি আদায়ে মানুষকে রাস্তায় নামানো সহজ হবে বলে মনে হয় না।
লেখক: সহকারী সম্পাদক, আজকের পত্রিকা

আমরা কয়েকজন বন্ধু মাঝেমধ্যে আড্ডায় বসি এবং অযথা নানা বিষয়ে তর্কবিতর্ক করি, রাজা-উজির মারি। আমাদের আড্ডার মধ্যমণি অবশ্যই আমাদের সাংবাদিক বন্ধু মাহবুব কামাল। তিনি তর্ক করতে পছন্দ করেন এবং নানা উদাহরণ দিয়ে নিজের মতের পক্ষে দৃঢ় অবস্থান নেন। অবশ্য অন্য কেউ নিজের বক্তব্য বা মতের পক্ষে যুক্তির জোর প্রমাণ করতে পারলে তিনি তা মেনে নিতে দ্বিধা করেন না।
এই যেমন কোরবানির ঈদের পর আমরা আড্ডায় বসার পর স্বাভাবিকভাবেই সামনে এল লোডশেডিং, শ্রীলঙ্কায় অভূতপূর্ব জনজাগরণ, প্রেসিডেন্ট প্রাসাদ দখল এবং গোতাবায়ার পলায়ন ইত্যাদি। আমাদের মধ্যে বিএনপিদলীয় কেউ না থাকলেও একজন ছিলেন, যিনি বিএনপির সঙ্গে জোটে থাকা একটি ছোট দলের বড় নেতা। তাঁর নাম উল্লেখ করতে পারলে ভালো হতো, কিন্তু তাঁকে উদ্ধৃত করে কিছু লিখতে তাঁর আপত্তি আছে। তিনি যেহেতু একটি রাজনৈতিক দলের সদস্য, সেহেতু তাঁর বয়ানে এমন কিছু যদি লেখা হয়, যা তাঁর দলের অবস্থানের বিরুদ্ধে যায়, তাহলে নিজ দলের মধ্যেই তাঁকে প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হবে। আমাদের দেশে যাঁরা প্রকাশ্যে গণতন্ত্রের জন্য কথা বলেন, ব্যক্তিগত জীবনে তাঁদের অনেকেই নিয়ন্ত্রিত গণতন্ত্র পছন্দ করেন।
রাজনৈতিক নেতাদের কেউ কেউ ব্যক্তিগত আলাপচারিতায় খোলামেলাভাবে যা বলেন, তা দলীয় ফোরামের ফরমাল আলাপে বলবেন না। বিএনপির সঙ্গে জোটে থাকা আমাদের বন্ধুস্থানীয় ওই নেতা দলের সভায় বলেছেন, শেখ হাসিনার সরকারের পতন অনিবার্য এবং সেটা আগামী নির্বাচনের আগেই।
আমরা যখন আড্ডায় তাঁকে চেপে ধরলাম, ভাই, কী কী লক্ষণ দেখে আপনার মনে হয়েছে যে আগামী নির্বাচনের আগেই শেখ হাসিনার সরকারের পতন হবে?
জবাবে প্রথমে তিনি একটু রহস্যের হাসি হাসলেন। তারপর বললেন, এটা সিক্রেট, বলা যাবে না।
আমরা উপস্থিত সবাই যখন বললাম, যে কথা আপনি দলীয় সভায় বলছেন, গণমাধ্যমে যা ছাপা হচ্ছে, তা সিক্রেট বা গোপন হয় কীভাবে?
এবারও ওই উদীয়মান নেতা বললেন, ‘আরে আমি পতনের কথা বলেছি, কীভাবে পতন হবে, সে কৌশল তো বলিনি! আমরা সরকারবিরোধী সব দলকে এক জায়গায় আনার চেষ্টা করছি, বৃহত্তর ঐক্যের একটা ছাতা তৈরি হলে তারপর সবাই বসে কৌশল ঠিক করব।’
আমাদের এক বন্ধু ওই নেতার কাছে জানতে চাইলেন, আপনারা বৃহত্তর ঐক্য করবেন, সরকার পতনের কৌশল ঠিক করবেন, আর সরকারপক্ষ বসে বসে ডাঙগুলি খেলবে? তারা পাল্টা ব্যবস্থা নেবে না?
এবার নেতা একটু নড়েচড়ে বসে বললেন, সরকারের কৌশলগুলো ভোঁতা হয়ে গেছে, ওগুলো আর কাজ করবে না।
পাল্টা প্রশ্ন ওঠে, আপনাদের কৌশল যে খুব ধারালো, সেটা পরীক্ষা হলো কোন ল্যাবরেটরিতে?
নেতা বন্ধু জবাব দেওয়ার আগেই মুখ খুললেন মাহবুব কামাল। প্রশ্ন করলেন, রাজনীতি থেকে নীতি বাদ দিয়ে আপনারা কি এখন কৌশলের খেলা খেলবেন?
নেতা বললেন, রাজনীতি তো এক অর্থে কৌশলেরই খেলা।
মাহবুব কামাল আবারও বললেন, তা ঠিক। একটা গল্প বললেন তিনি। রিকশায় যাচ্ছিলেন। একসময় রিকশাচালকের কাছে জানতে চাইলেন, দেশের অবস্থা কেমন বুঝছেন?
রিকশাচালক একবার মুখ ফিরিয়ে তাঁকে দেখলেন কিন্তু প্রশ্নের কোনো জবাব দিলেন না। মাহবুব কামাল ভাবলেন, গড়পড়তা বাঙালির মতো এই রিকশাচালকের রাজনীতির প্রতি আগ্রহ নেই। তবু জানতে চান, আপনি কি হাসিনা-খালেদার নাম শোনেননি?
এবার পেছনে না তাকিয়ে চালকের জবাব, শুনব না ক্যান? একজন শ্যাখ সাহেবের মাইয়া, আরেকজন জিয়ার বউ।
- আমার আগের প্রশ্নের উত্তর দিলেন না যে!
- আমরা গরিব মানুষ, রাজনীতির কী বুঝি? তারপর একটু দম নিয়ে বললেন, রাজনীতি বড় পলিট্রিকস।
রিকশাচালকের এই জবাবে কিছুটা অবাক হয়েছিলেন মাহবুব কামাল।
রাজনীতি ও পলিটিকস—অর্থ এক হলেও লোকমুখে রাজনীতি প্রসঙ্গে পলিটিকস শব্দটি শুনতে শুনতে এই রিকশাচালকের কাছে এর অর্থ হয়ে গেছে চতুরতা কিংবা বলা যেতে পারে ধূর্তামি।
মাহবুব কামাল বলতে থাকেন, আসলে আমাদের দেশের দুই বড় দল রাজনীতি বা পলিটিকস না করে করছে পলিট্রিকস । সুপার পলিট্রিকস দিয়ে কে কাকে সুপারসিড বা ওভারটেক বা অতিক্রম করতে পারবে, চলছে সেই প্রতিযোগিতা। উদাহরণ দিয়ে তিনি বললেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থায় ভালোই চলছিল আমাদের নির্বাচনী রাজনীতি। কিন্তু রাজনীতিটা ভালো চললে তো হবে না, নিজের ভালোটা দেখতে হবে আগে। শুরু হলো পলিট্রিকস। ব্যবস্থাটাকে সরাসরি বাতিল করলে মানুষ খেপে যাবে, তাই একে ম্যানিপুলেট করতে হবে। খালেদা জিয়া দেখলেন, ইমিডিয়েট পাস্ট প্রধান বিচারপতি ভালো মানুষ, অতিশয় নিরপেক্ষ। তিনি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান হলে তাঁকে দিয়ে খেলানো যাবে না, তাই এমন একজনকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারপ্রধান করতে হবে, যিনি আমাদের স্বার্থ দেখভাল করবেন। বুদ্ধিটা সম্ভবত মওদুদ সাহেবই দিয়েছিলেন, বিচারপতিদের অবসরের বয়স দুই বছর বাড়িয়ে দিলে ইমিডিয়েট পাস্ট প্রধান বিচারপতি হবেন কে এম হাসান, যিনি একসময় বিএনপির নেতা ছিলেন। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান হিসেবে ‘আমাদের লোক’ বেছে নেওয়ার পরিণতি কী হলো, তা নিশ্চয়ই সবার মনে আছে।
বিএনপির এই পলিট্রিকসের পাল্টা হিসেবে আওয়ামী লীগ সুপার পলিট্রিকস করল। এবার আর ম্যানিপুলেশন নয়, উধাও করে দিতে হবে ব্যবস্থাটা। কিন্তু পাবলিককে একটা না একটা যুক্তি তো দেখাতে হবে। তারা চাইল একটা যুক্তি, পেয়ে গেল দুইটা।
এক. তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা থাকলে আবারও এক-এগারো ঘটার আশঙ্কা। দুই. আদালতের রায়। নাই হয়ে গেল তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা।
এখন বিএনপি যতই তত্ত্বাবধায়ক বা নির্বাচনকালীন সরকারের কথা বলে, সরকার ও আওয়ামী লীগ ততই বলে, ওই অসাংবিধানিক ব্যবস্থায় আর নয়।
বিএনপির অনেক না-কে আওয়ামী লীগ হ্যাঁ করিয়েছে। যেমন বিএনপির সরকার পতনের আন্দোলন বালুর ট্রাকে আটকে দেওয়া। ২০১৮ সালের নির্বাচনে বিএনপি ও মিত্ররা অংশ নিয়ে ফলাফলে চোখে সরষে ফুল দেখেছে।
বিএনপি বলছে, আওয়ামী লীগ কথা রাখেনি। আগের রাতে ভোট করেছে। ওটা কোনো নির্বাচনই হয়নি। ইত্যাদি ইত্যাদি। আওয়ামী লীগ ওসব কানেও তুলছে না। তারা দিব্যি চালিয়ে যাচ্ছে।
প্রশ্ন উঠতে পারে, তাহলে কি এভাবেই চলবে? না, তা কেন? মাহবুব কামাল বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগও ভারসাম্যহীন থাকে না। দিনভর বৃষ্টি হয়, কারণ জলাবদ্ধতা মানুষের সহনশীলতার মধ্যেই থাকে। দিনভর ভূমিকম্প হয় না, ওটা সহনশীলতার মধ্যে থাকে না। ভারসাম্যহীন সমাজও বেশি দিন একইভাবে থাকতে পারে না। নির্বাচন তো একটা হতেই হবে।
কিন্তু সেই নির্বাচনেও বিএনপির ক্ষমতায় ফেরার সম্ভাবনা কম এই কারণে যে, দেশে চলছে ভয়াবহ মূল্যবোধের সংকট। দেশের উন্নয়ন-অগ্রগতি নিয়ে সরকারকে বারবার চ্যালেঞ্জ না করে বিএনপি যদি মূল্যবোধের প্রশ্নে সরকারকে চ্যালেঞ্জ করতে পারত, তাহলে সুফল হয়তো পেতে পারত। কিন্তু খালেদা জিয়াসহ বিএনপির নেতারা দল পুনর্গঠন করতে চান, পুনর্গঠন করতে চান না মূল্যবোধের। মূল্যবোধ পুনর্গঠনের আগে বিএনপি হাজার চেষ্টা করেও নির্বাচনের দাবিতে সরকারের ওপর কার্যকর চাপ সৃষ্টি করতে পারবে বলে মনে হয় না।
খালেদা জিয়া ১৫ আগস্ট জন্মদিন পালন করবেন, তাঁর গুণমুগ্ধরা সাজানো গৃহ-কামরার এক কোণে নেত্রীর জন্মদিনের কেক কাটবেন আর শেখ হাসিনাকে স্বৈরাচার বলবেন—এই মুখ ভ্যাংচানোর নিম্নরুচির রাজনৈতিক সংস্কৃতির অবসান না হলে শেখ হাসিনার কাছে সদয় আচরণ আশা করা বাতুলতা নয় কি? শাসক নয়, শেখ হাসিনাকে একজন মানুষ হিসেবে কল্পনা করতে শিখতে হবে। পিতৃশোকাগ্রস্ত কাউকে সমবেদনা না জানিয়ে কেউ যদি তাঁকে ভেংচি কাটে, তিনি তো জীবন থাকতে তাঁর সঙ্গে আপস করবেন না। এ দেশের রাজনীতির যত সংকট, তার প্রায় সবই সংস্কৃতির সংকট থেকে সৃষ্ট। রাজনৈতিক সংস্কৃতিটা উন্নত না হলে কোনো ফর্মুলাই কাজে আসবে না।
গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের বিচারে বর্তমান সরকারকে মেনে নিতে যাঁদের আপত্তি, তাঁদের কাছে প্রশ্ন, এই যে সরকার ক্রমান্বয়েই অধিকতর কৰ্তৃত্ববাদী হয়ে উঠছে, তা রোখা যাবে কীভাবে? বিএনপি-জামায়াতের সমন্বয়ে? এই দল দুটিও কি কর্তৃত্ববাদী নয়? আওয়ামী লীগ মূলত একটি গণতান্ত্রিক দল, সময়ের ফেরে এটি কর্তৃত্ববাদী হয়ে উঠেছে। কিন্তু জামায়াত-বিএনপি-জঙ্গিবাদ সর্বকালেই কর্তৃত্ববাদী। আইএস দ্বারা দখলকৃত অঞ্চলগুলোর মানুষ বুঝতে পারছে জঙ্গি কত নিষ্ঠুর কর্তৃত্ববাদী হতে পারে আর এ দেশে জামায়াত যদি অন্যদের ঘাড়ে সওয়ার হয়ে ক্ষমতায় বসতে পারে, তাহলে দেশে ভিন্নমত বলে কিছু থাকবে না। আফগানিস্তানের দিকে তাকালে তা অনেকটাই পরিষ্কার বোঝা যায়।
জামায়াত, মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু, প্রতিশোধের রাজনীতি ইত্যাদি বিষয়ের বিশ্বাসযোগ্য নিষ্পত্তি না করে সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবি আদায়ে মানুষকে রাস্তায় নামানো সহজ হবে বলে মনে হয় না।
লেখক: সহকারী সম্পাদক, আজকের পত্রিকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

আমরা কয়েকজন বন্ধু মাঝেমধ্যে আড্ডায় বসি এবং অযথা নানা বিষয়ে তর্কবিতর্ক করি, রাজা-উজির মারি। আমাদের আড্ডার মধ্যমণি অবশ্যই আমাদের সাংবাদিক বন্ধু মাহবুব কামাল। তিনি তর্ক করতে পছন্দ করেন এবং নানা উদাহরণ দিয়ে নিজের মতের পক্ষে দৃঢ় অবস্থান নেন। অবশ্য অন্য কেউ নিজের বক্তব্য বা মতের পক্ষে যুক্তির জোর প্রমাণ ক
২৬ জুলাই ২০২২
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

আমরা কয়েকজন বন্ধু মাঝেমধ্যে আড্ডায় বসি এবং অযথা নানা বিষয়ে তর্কবিতর্ক করি, রাজা-উজির মারি। আমাদের আড্ডার মধ্যমণি অবশ্যই আমাদের সাংবাদিক বন্ধু মাহবুব কামাল। তিনি তর্ক করতে পছন্দ করেন এবং নানা উদাহরণ দিয়ে নিজের মতের পক্ষে দৃঢ় অবস্থান নেন। অবশ্য অন্য কেউ নিজের বক্তব্য বা মতের পক্ষে যুক্তির জোর প্রমাণ ক
২৬ জুলাই ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

আমরা কয়েকজন বন্ধু মাঝেমধ্যে আড্ডায় বসি এবং অযথা নানা বিষয়ে তর্কবিতর্ক করি, রাজা-উজির মারি। আমাদের আড্ডার মধ্যমণি অবশ্যই আমাদের সাংবাদিক বন্ধু মাহবুব কামাল। তিনি তর্ক করতে পছন্দ করেন এবং নানা উদাহরণ দিয়ে নিজের মতের পক্ষে দৃঢ় অবস্থান নেন। অবশ্য অন্য কেউ নিজের বক্তব্য বা মতের পক্ষে যুক্তির জোর প্রমাণ ক
২৬ জুলাই ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আমরা কয়েকজন বন্ধু মাঝেমধ্যে আড্ডায় বসি এবং অযথা নানা বিষয়ে তর্কবিতর্ক করি, রাজা-উজির মারি। আমাদের আড্ডার মধ্যমণি অবশ্যই আমাদের সাংবাদিক বন্ধু মাহবুব কামাল। তিনি তর্ক করতে পছন্দ করেন এবং নানা উদাহরণ দিয়ে নিজের মতের পক্ষে দৃঢ় অবস্থান নেন। অবশ্য অন্য কেউ নিজের বক্তব্য বা মতের পক্ষে যুক্তির জোর প্রমাণ ক
২৬ জুলাই ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫