সাতক্ষীরা সদরের খেজুরডাঙা আরকে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে গোপনে বসা তিন শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগ বোর্ড বাতিল করেছে প্রশাসন।
গতকাল শুক্রবার সকাল ১০টায় দক্ষিণ কাটিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ নিয়োগ বোর্ড বসে। খবর পেয়ে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা নিয়োগ বোর্ড বাতিল করে দেন।
সরেজমিন দেখা যায়, শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে দক্ষিণ কাটিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ নিয়োগ বোর্ড বসে। সহকারী প্রধান শিক্ষক, নৈশপ্রহরী ও পরিচ্ছন্নতাকর্মী পদে লোক নিয়োগ দেওয়ার জন্য গোপনে এই বোর্ড বসানো হয়। সদর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা জাহিদুর রহমান বোর্ডের তদারকি করেন।
প্রধান শিক্ষক হাবিবুর রহমান বলেন, ‘সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জাহিদুর রহমান নিয়োগ বোর্ডের সবাইকে হাত করেই আগে থেকে প্রহরী ও পরিচ্ছন্নতাকর্মী পদে তাহমিদ ও জাহিদকে নিশ্চয়তা দিয়েই বিশেষ প্রক্রিয়ায় কোরাম পূর্ণ করে এ পরীক্ষার ব্যবস্থা করেছেন।’
গোপীনাথপুরের দেবেন গাইন বলেন, ‘আমাকে সহকারী প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ পেতে প্রধান শিক্ষকের বোন কারিমা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ফারজানা আক্তার ও বাঁশদহা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক তৃপ্তি রানীকে কোরাম পূরণের জন্য আনা হয়েছে।’
খেজুরডাঙা গ্রামের কণ্ঠরাম সরকারের ছেলে প্রবেশ সরকার বলেন, ‘আমাকে প্রহরী পদে নিয়োগ দেওয়ার জন্য দাবি করা আট লাখ টাকার পরিবর্তে ছয় লাখ টাকা নিলেও চাকরির বয়স নেই দেখিয়ে পরীক্ষার কার্ড দেওয়া হয়নি।’
খেজুরডাঙা গ্রামের মোস্তাফিজুর রহমান সাজু বলেন, ‘পাঁচ মাস আগে পাতানো নিয়োগ পরীক্ষার মাধ্যমে একজন প্রহরী নেওয়ার চেষ্টা করলে আমি আদালতের শরণাপন্ন হই। মামলার কারণে ওই সময় পরীক্ষা বন্ধ হয়ে যায়। এখনো প্রধান শিক্ষক শিক্ষা কর্মকর্তাদের সঙ্গে সমঝোতা করে তিনজনের কাছ থেকে কমপক্ষে ৪০ লাখ টাকা নিয়ে ওই পাতানো নিয়োগ বোর্ডের মাধ্যমে নিয়োগ দেওয়ার চেষ্টা করছেন বলে জেনেছি।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন শিক্ষক বলেন, ‘এই পাতানো নিয়োগ বোর্ডের আয়োজনের জন্য উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জাহিদুর রহমান ৫ লাখ টাকা ঘুষ নিয়েছেন।’
সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক কর্মকর্তা জাহিদুর রহমান বলেন, ‘নিয়ম মেনেই নিয়োগ বোর্ড পরিচালনা করা হচ্ছে।’ কেন গোপনে বোর্ড বসানো হয়েছে-এমন প্রশ্নের জবাবে প্রথমে তিনি বলেন, ‘সভাপতি আসতে দেরি করাতে বোর্ড বাতিল হয়েছে।’
তবে ৫ লাখ টাকা ঘুষ নেওয়ার বিষয়টি তিনি অস্বীকার করেন।
সাতক্ষীরা জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘বিষয়টি আমাকে অবহিত করা হয়নি। তবে খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক ওই পাতানো নিয়োগ পরীক্ষা বাতিল করে দেওয়া হয়েছে।’
মন্তব্য
ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে