
হাবিবা সারাবি ছিলেন আফগানিস্তানের ইতিহাসে প্রথম নারী গভর্নর। দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাই প্রশাসনে মহিলাবিষয়ক মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। হাবিবা সে সময় আফগান সরকারে তালেবানদের সঙ্গে শান্তি আলোচনার জন্য আলোচনাকারী দলের সদস্য ছিলেন। আফগানিস্তানে নারীদের নিয়ে কাজ করা যুক্তরাজ্যভিত্তিক অনলাইন সংবাদ সংস্থা রুখশানা মিডিয়া সম্প্রতি বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেছিল হাবিবার সঙ্গে। ১৮ মে প্রকাশিত হয়েছিল সাক্ষাৎকারটি। অনুবাদ করেছেন কাশফিয়া আলম ঝিলিক।
প্রশ্ন: তালেবান কেন নারীর অধিকারকে সম্মান করার অঙ্গীকার বজায় রাখতে ব্যর্থ হয়েছে?
উত্তর: তালেবানের কখনোই আফগানিস্তানের নারী, জনগণ, গণতন্ত্র, মানবাধিকার এবং এ বিষয়গুলোর প্রতি কোনো অঙ্গীকার ছিল না, এখনো নেই। শান্তি আলোচনাকে দুই ভাগে ভাগ করা যাক। আমেরিকানদের সঙ্গে তালেবানের যে আলোচনা হয়েছিল, তাতে তাদের মাত্র চারটি প্রতিশ্রুতি ছিল। প্রতিশ্রুতিগুলো হলো—বিদেশি বাহিনী প্রত্যাহার, আন্তআফগান সংলাপ শুরু করা এবং আফগানিস্তান যাতে আবার সন্ত্রাসবাদের জায়গা না হয়ে যায়, তা নিশ্চিত করার বিষয়গুলো। এর বাইরেও যদি কিছু থেকে থাকে, তাহলে তা আফগান জনগণের কথা বিবেচনায় রেখে গোপন রাখা হয়েছে। তারা এ বিষয়ে একটি চুক্তিতে পৌঁছেছে এবং মার্কিন দূত মি খলিলজাদ ও তালেবানের মোল্লা বারাদারের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে। এরপর চুক্তির বিষয়ে আলোচনা শুরু করার চেষ্টা করা হয়েছিল। আলোচনা শুরুও হয়েছিল। তারপর এক বছর চলে গেল, কিন্তু আমরা কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছাইনি। পদ্ধতিগত বিষয়ে অনেক সময় ব্যয় করেছি। আমরা যখন শুরু করেছি, তখন নারীর অধিকার ছিল অ্যাজেন্ডার একটি অংশ। যা-ই হোক, আমরা এটি নিয়ে আলোচনা শুরু করিনি।
প্রশ্ন: এসব বিষয়ে আলোচনা হয়নি কেন? কারণটা কি সময়ের অভাব নাকি আগ্রহের কমতি?
উত্তর: যেকোনো আলোচনায় অনেক সময় লাগে। আমরা এজেন্ডায় বিভিন্ন বিষয় তৈরি করেছি। উভয় পক্ষের অনেক এজেন্ডা ছিল। অন্যান্য আলোচনার মধ্যে এ বিষয়ক এজেন্ডা নিয়ে কথা হয়নি। অন্যদিকে, তালেবানরা আলোচনায় আগ্রহী ছিল না। তারা বেশির ভাগই কৌশলগত আলোচনা নিয়ে ব্যস্ত ছিল। রিপাবলিক দলের জন্য আলোচনাটি ছিল দায়িত্বের অংশ ও একটি মিশন। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত, তালেবানদের জন্য আলোচনাটি মিশন বা দায়িত্ব কোনোটিই ছিল না। তাদের পরিবার দোহায় ছিল, সেখানে তাদের চাকরি ও ব্যবসা ছিল। কোনো কাজ না থাকলে তারা আলোচনার জন্য আসত এবং বিভিন্ন অজুহাত ও কৌশল অবলম্বন করত। তারপর আফগানিস্তানে ঘটতে থাকা ঘটনাগুলোর সঙ্গে এজেন্ডা আইটেমগুলোতে আলোচনার কোনো সুযোগ ছিল না।
প্রশ্ন: আপনি আফগানিস্তানের ইতিহাসে প্রথম নারী গভর্নর ছিলেন। কিছুদিনের জন্য মহিলা বিষয়ক মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তালেবানের সঙ্গে ইসলামিক রিপাবলিক অব আফগানিস্তানের আলোচনাকারী দলের সদস্য ছিলেন। আপনি নারী অধিকার রক্ষা করতে গিয়েছিলেন, কিন্তু তা হয়নি। কেন তালেবানদের কাছ থেকে নারী অধিকারের বিষয়গুলো নিশ্চিত করা হয়নি?
উত্তর: এটি এমন একটি বিষয়, যা আমি মনে করি, শুধু আমার জন্যই নয়। আফগানিস্তানের জনগণের জন্যও বেদনাদায়ক। নিশ্চয়তা পাওয়া যায়নি। কারণ, কখনোই আলোচনা হয়নি। আমি বলতে চাইছি, যে প্রক্রিয়াটি শুরু হয়েছিল, তা ফলপ্রসূ হয়নি। কোনো নিশ্চয়তা ছিল না। তবে তালেবানের সঙ্গে আমেরিকার যে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে, সেখানে কিছু থাকতে পারে।
প্রশ্ন: আফগানিস্তান প্রজাতন্ত্রের পতনের পর দুই বছরেরও বেশি সময় পার হয়েছে। তালেবানরা জনসাধারণের সব জায়গা থেকে সম্পূর্ণভাবে নারীদের সরিয়ে দিয়েছে। এখন, নারীর দৃষ্টিকোণ থেকে, আলোচনার সময় নারীর অধিকার রক্ষার জন্য সঠিক কৌশল কী হতে পারে বলে আপনি মনে করেন?
উত্তর: আফগান সংবিধান বিবেচনা করা উচিত। বিশেষ করে সংবিধানের দ্বিতীয় অংশ যেখানে নাগরিকত্বের অধিকার নির্ধারণ করা হয়েছে। নাগরিক অধিকার একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। নারীসহ আফগানিস্তানের সব জাতিগোষ্ঠীকে আফগানিস্তানের নাগরিক হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এটি অত্যন্ত গুরুতর বিষয় কিন্তু স্বাক্ষরিত হয়নি। এটি চুক্তিতে অন্তর্ভুক্ত করা উচিত ছিল। দুর্ভাগ্যবশত, না চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে আর না এই বিষয়ে কোনো আশ্বাস পাওয়া গেছে।
প্রশ্ন: নারী অধিকার কর্মী, মানবাধিকার কর্মী এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় কেন তালেবানের অধীনে থাকা নারীদের দুর্দশার অচলাবস্থা ভাঙতে পারছে না?
উত্তর: বিশেষ করে আফগানিস্তানের ভেতরে যে নারীরা থাকে তারা তাদের সাহস দেখিয়েছে এবং নিজেদের মর্যাদা রক্ষা করেছে। তাদের পক্ষ থেকে তারা নিজেদের সংগ্রাম অব্যাহত রেখেছে। সিদ্ধান্ত গ্রহণকারীদের মধ্যে হোক বা জাতিসংঘ এবং নিরাপত্তা পরিষদের মধ্যে হোক, আফগানিস্তানের বাইরের লোকেরাও তাদের প্রচেষ্টা চালিয়েছে এবং এখনো বিভিন্ন স্তরে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। পাঁচ সদস্যের একটি দল আমরা সব সময় নিরাপত্তা পরিষদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি এবং গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করছি। তবে আফগান নারীদের এমন অচলাবস্থার কারণ হলো, তালেবানদের অনমনীয় মানসিকতা। এই মানসিকতা নিয়ে তারা কোনোভাবেই অন্যদের সঙ্গে আলোচনায় জড়াতে ইচ্ছুক নয়, তা সে আফগান নারী হোক, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় হোক বা তালেবান চক্রের বাইরের কেউ হোক। আরেকটি বড় সমস্যা হলো, অন্যান্য অনেক ইস্যুর কারণে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মনোযোগ আফগানিস্তান থেকে সরে গেছে। যেমন, ইউক্রেন যুদ্ধ। পাশাপাশি আমরা গাজার ইস্যুও দেখছি। তাই আফগানিস্তান এখন আর আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে সেই অগ্রাধিকার পাচ্ছে না। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সরকার, নিরাপত্তা পরিষদ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের সিদ্ধান্ত গ্রহণকারীদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে আমরা বুঝতে পেরেছি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আর আফগানিস্তানে সামরিক পদক্ষেপ নিতে চায় না। অন্যদিকে, তালেবানও সংলাপ ও আলোচনায় আগ্রহী নয়। বিশ্বের সঙ্গে যোগাযোগ না রেখে তারা মধ্যযুগীয় চিন্তাভাবনা ও মানসিকতা নিয়ে এগিয়ে যেতে চায়।
প্রশ্ন: আফগানিস্তানে নারীদের অবস্থাকে আপনি কীভাবে বর্ণনা করবেন?
উত্তর: আফগানিস্তানে নারীরা বর্তমানে স্পষ্টতই লৈঙ্গিক ও বর্ণবৈষম্যের শিকার। শহুরে ও গ্রামীণ অর্থনৈতিক, সামাজিক কিংবা সাংস্কৃতিক জীবনের সব ক্ষেত্রে নারীদের বাদ দেওয়া হয়েছে। নারীদের সমাজ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে এবং নিয়মতান্ত্রিক বৈষম্য প্রবল। এটা তালেবানদের মানসিকতার ফল।
প্রশ্ন: একজন নারী হিসেবে আপনি অনেক আলোচনায় তালেবান নেতাদের মুখোমুখি হয়েছেন। সে সময় আপনার প্রতি তাদের আচরণ বিবেচনা করে, আপনি কি কখনো ভেবেছিলেন যে তারা এমন মিসজিনিস্ট রাজনৈতিক অবস্থান গ্রহণ করবে? অথবা আপনি কি ভেবেছেন যে সম্ভবত তালেবান কিছুটা পরিবর্তন হয়েছে?
উত্তর: ’৯০ এর দশকে তালেবানেরা দেখিয়েছিল যে তারা মিসজিনিস্টিক মতাদর্শ মেনে চলে। ২০১৯ সালে আন্তঃআফগান সংলাপে অংশ নিয়েছিলাম আমিসহ কিছু নারী। সেটা প্রথমবারের মতো কাতারের দোহায় মি. খলিলজাদ এবং অন্যান্য দেশের কিছু রাজনীতিবিদদের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। তাদের পরিকল্পনা ছিল, জনগণকে দেখানো যে তালেবানেরা বদলে গেছে। যখন আমি তালেবানদের দেখেছি এবং তাদের সম্পর্ক, মানসিকতা ও কর্মকাণ্ড পর্যবেক্ষণ করেছি, আমি বুঝতে পেরেছিলাম তালেবানেরা বদলায়নি। আলোচনার সময় তাদের আচরণে আমি এর প্রমাণও পেয়েছি। তাদের মতাদর্শ, দৃষ্টিভঙ্গি এবং মানসিকতা প্রমাণ করে তারা কতটা মিসজিনিস্টিক। তারা দেখানোর চেষ্টা করছিল যে তাদের মানসিকতা পরিবর্তিত হয়েছে। বোঝাতে চেয়েছিল যে তারা স্পষ্টতই নারী শিক্ষায় বিশ্বাস করে। কিন্তু শেষমেশ আমি প্রমাণ পেয়েছি তালেবানেরা বদলায়নি।
প্রশ্ন: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় দাবি করে যে, তালেবানের সঙ্গে আলোচনার অন্যতম প্রধান বিষয় নারীর অধিকার। এই কথার কোনো বাস্তবায়ন দেখছেন?
উত্তর: সরকারের অন্তর্ভুক্তি সংক্রান্ত কূটনৈতিক বৈঠকে আলোচনায় আমরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সামনে নারীর অধিকার ও মানবাধিকারের বিষয়গুলো তুলে ধরি। তারা বলে, আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তবে তারা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ কি না সেটা সময়ই বলে দেবে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নিজস্ব এজেন্ডা আছে। তারা সে অনুযায়ী কাজ করার চেষ্টা করে। তারা যে তালেবানকে এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেয়নি এটা একটা ইতিবাচক লক্ষণ। কিছু দেশ দূতাবাস, কনস্যুলেট বা বাণিজ্য সম্পর্কের নামে এক ধরনের কূটনৈতিক সম্পর্কের সূচনা করেছে। এটি ইঙ্গিত দেয় যে তাদের নারী অধিকারের প্রতি কোনো অঙ্গীকার নেই। তাদের ক্ষেত্রে শুধু নিজেদের এজেন্ডা প্রতিষ্ঠা করাই মুখ্য।
প্রশ্ন: তালেবান শাসন শুরুর পর থেকে দেশের ভেতরে অনেক নারী এই গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু তাদের কঠোরভাবে দমন করা হয়েছে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, শান্তিপূর্ণভাবে তাদের অধিকার হরণের প্রতিবাদ করার জন্য নারীরা তালেবান কারাগারে রয়েছে। আফগানিস্তানের বাইরে, নারী অধিকার কর্মীদের কাছ থেকে তেমন প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা যায়নি। এর কারণ কী হতে পারে বলে আপনি মনে করেন?
উত্তর: আফগানিস্তানের ভেতরে যুদ্ধরত সব নারীরা সত্যিই কঠিন পরিস্থিতিতে বসবাস করছে এবং তাদের সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে। যেসব নারী আফগানিস্তানের বাইরে রয়েছে এবং বিশ্বের কাছে নারীদের কণ্ঠস্বর পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করছে, আমি তাদের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাই। কারণ এটা সহজ কাজ নয়। যারা দেশ ছেড়েছে তারাও পশ্চিমে কোনোভাবেই সুখী নয়। আমাদের জন্য পশ্চিমে বাস করা জাহান্নামের মতো। অভিবাসীরা অস্থিতিস্থাপক জীবন যাপন করে। জাতিসংঘ এখনো তালেবানকে বৈধতা দেয়নি এবং তালেবান এখনো সরকারিভাবে স্বীকৃত নয়। একে আমরা নারীদের আন্দোলনের ফলাফল বলতে পারি। তবে এখনো পরিপূর্ণভাবে আমরা সফল হতে পারিনি। কারণ আফগানিস্তানের ভেতরের ও বাইরের লোকদের মধ্যে এখনো অবিশ্বাস রয়েছে। এটি স্বাভাবিক। কারণ দেশের ভেতরে নারীরা যে পরিস্থিতির সম্মুখীন হচ্ছে তা আফগানিস্তানের বাইরের নারীদের অবস্থার থেকে একেবারেই আলাদা। অভ্যন্তরীণ নারীরা মনে করে, আমরা যারা দেশের বাইরে আছি তারা তাদের পরিত্যাগ করেছি। তাদের সত্যিকার অর্থে সেরকম ভাবার অধিকার আছে। অন্যদিকে, প্রত্যেকেরই ব্যক্তিগত জীবন আছে। প্রত্যেকেই একটি কারণে আফগানিস্তান ছেড়েছে। এটা আফগানিস্তানের ভেতরে থাকা নারীদের কাছে গ্রহণযোগ্য নাও হতে পারে। কিন্তু আস্থা থাকলে ভালো হয়। কারণ দেশের নারীদের কণ্ঠস্বর রুদ্ধ হলে অভিবাসী নারীরা তাদের কণ্ঠস্বর প্রসারিত করবে, যতক্ষণ না তাদের দাবি রাজনীতিবিদ, নিরাপত্তা পরিষদ এবং জাতিসংঘের কানে পৌঁছায়। আমরা সম্পূর্ণ সাফল্য অর্জন করতে পারিনি, এটি এই অবিশ্বাসের একটি কারণ হতে পারে। কিন্তু এই পরিস্থিতির পরিবর্তন হচ্ছে। যত বেশি সংলাপ হবে, আফগানিস্তানের অভ্যন্তরে থাকা লোকদের সঙ্গে আমাদের তত বেশি যোগাযোগ হবে এবং বৃহত্তর আস্থার পরিবেশ তৈরি হবে।
প্রশ্ন: আপনি কি মনে করেন, আফগান নারীদের জন্য উল্লেখযোগ্য কোনো প্রচেষ্টা নেওয়া হয়নি? তালেবান নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে আফগানিস্তানের বাইরে কী করা যেতে পারে?
উত্তর: ধারাবাহিকভাবে বারবার চেষ্টা করা হয়েছে। এমন কিছু প্রতিষ্ঠান আছে যারা আফগান নারীদের একত্রিত করার চেষ্টা করেছে। গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, আফগানিস্তানের বাইরে যারা আছেন তাঁদের একে অপরের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা না করা। আসুন, আমরা নারীদের ইস্যুকে প্রতিযোগিতায় পরিণত না করি। আসুন, আমরা প্রত্যেকে একটি ব্যানার ধরি যা আফগান নারীদের প্রতিনিধিত্ব করে। আসুন, আমরা প্রত্যেকে নিজ নিজ জায়গায় আমাদের সামর্থ্য অনুযায়ী লড়াই করি। প্রতিটি ব্যক্তির ক্ষমতার প্রশংসা করা উচিত। আসুন একে অপরকে সমর্থন করি। এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ যে, এক গোষ্ঠীর মধ্যে যে শূন্যতা রয়েছে তা অন্যদের পূরণ করা উচিত। যাতে আমরা এক শক্তি হয়ে তালেবানের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে পারি।
প্রশ্ন: আপনি যখন নারীদের ওপর তালেবানের নতুন বিধিনিষেধ সম্পর্কে খবরের আপডেট শুনতে পান, রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ বাদে ব্যক্তিগতভাবে তখন আপনার অনুভূতি কেমন হয়?
উত্তর: নারী সমস্যা রাজনীতি থেকে দূরে নয়। দুর্ভাগ্যক্রমে, এটি একটি রাজনৈতিক বিষয় যাকে তালেবানরা আরও রাজনৈতিক করে তুলেছে। তালেবানরা নারী ইস্যু থেকে সবচেয়ে বেশি রাজনৈতিক সুবিধা লাভ করে। আফগানিস্তানের ভেতর থেকে আমরা যে খবর শুনি, তা শুধু নারীদেরই নয়, যুবক, সামরিক কর্মী, সংখ্যালঘু, শিয়া মসজিদে বোমা হামলা, শিক্ষাকেন্দ্র ধ্বংসের খবর আমাদের হৃদয়ে ছুরি মারার মতো। এর বেশি খবর সামনে আসছে না যা খুবই দুঃখজনক।
প্রশ্ন: আপনি কি এখনো আফগানিস্তানের নারীদের সঙ্গে, বিশেষ করে তরুণীদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন? তারা আপনাকে কী বলে?
উত্তর: হ্যাঁ, আমি যোগাযোগ করছি। মাঝে মাঝে আমাদের কথা হয়। তারা কী বলে, তা বলা কঠিন। তারা সব সময় কষ্ট, বঞ্চনা, বৈষম্য নিয়ে কথা বলে। সমাজ থেকে বহিষ্কৃত হওয়ার কথা, সেই কষ্টের কথা তারা উল্লেখ করে। কারাগারে যারা ছিল, তারা কী সহ্য করেছিল, সে কথাও হয়। এটা খুব দুঃখজনক। কিন্তু আমাদের এটা সহ্য করতে হচ্ছে।
প্রশ্ন: আপনি বামিয়ানকে কতটা মিস করেন? তাদের সঙ্গে কথা বলে আপনি কি বুঝতে পারছেন যে তারা আরও বঞ্চনা ও দারিদ্র্যের শিকার?
উত্তর: আজকাল আমি বামিয়ান সম্পর্কে রিচার্ড হাল নামে এক মার্কিন সেনা কর্মকর্তার লেখা একটি বই পড়ছি। তিনি সেখানে কাটানো ছয় মাসের প্রায় প্রতিটি ঘটনা তাঁর বইয়ে উল্লেখ রয়েছে। যখন আমি এই বইটি পড়ি, এটি আমাকে বামিয়ানে নিয়ে যায়। বইটির এক অংশে বর্ণনায় বামিয়ানের একটি প্রত্যন্ত অঞ্চলে একটি অনুষ্ঠান সম্পর্কে বলা হয়েছে। যেখানে একজন নারী এগিয়ে এসে তাঁকে ইংরেজিতে স্বাগত জানিয়ে নিজের পরিচয় দেন। যখন আমার পরিবার বামিয়ানে ছিল না, আমার ছুটির দিনগুলিতে আমি বামিয়ানের বিভিন্ন এলাকায় ভ্রমণ করে সেখানকার মানুষদের সম্পর্কে জানার চেষ্টা করেছি। বিভিন্ন গ্রাম ঘুরেছি। একবার আমি ব্যান্ড-ই আমিরের কাছে গিয়েছিলাম।সেখানে একদল যুবতী আমার চারপাশে জড়ো হয়েছিল। তারা বেশ উচ্ছল ছিল। আমি লক্ষ্য করেছি, তাঁদের এই দৃশ্যটি দূর থেকে কিছু দাড়ি ওয়ালা পুরুষ পর্যবেক্ষণ করেছিল। নারীরা বলেছিলেন, ‘আমাদের গভর্নরের সঙ্গে দাঁড়ানোর এবং ছবি তোলার অধিকার আছে, যা আগে ছিল না।’ বামিয়ানের ওয়ারাস জেলায় ভ্রমণকালে একজন নারী আমাদের স্বাগত জানাতে এসেছিলেন। খুশিতে কেঁদে ফেলে তিনি বলেছিলেন, ‘আপনি আমাদের জীবন দিয়েছেন।’ একজন নারীকে নেতৃত্ব দিতে দেখে তিনি খুশি হন। তখন তাঁরা মনে করতেন, নারীরাও নেতৃত্ব দিতে পারে।
হাবিবা সারাবি ছিলেন আফগানিস্তানের ইতিহাসে প্রথম নারী গভর্নর। দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাই প্রশাসনে মহিলাবিষয়ক মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। হাবিবা সে সময় আফগান সরকারে তালেবানদের সঙ্গে শান্তি আলোচনার জন্য আলোচনাকারী দলের সদস্য ছিলেন। আফগানিস্তানে নারীদের নিয়ে কাজ করা যুক্তরাজ্যভিত্তিক অনলাইন সংবাদ সংস্থা রুখশানা মিডিয়া সম্প্রতি বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেছিল হাবিবার সঙ্গে। ১৮ মে প্রকাশিত হয়েছিল সাক্ষাৎকারটি। অনুবাদ করেছেন কাশফিয়া আলম ঝিলিক।
প্রশ্ন: তালেবান কেন নারীর অধিকারকে সম্মান করার অঙ্গীকার বজায় রাখতে ব্যর্থ হয়েছে?
উত্তর: তালেবানের কখনোই আফগানিস্তানের নারী, জনগণ, গণতন্ত্র, মানবাধিকার এবং এ বিষয়গুলোর প্রতি কোনো অঙ্গীকার ছিল না, এখনো নেই। শান্তি আলোচনাকে দুই ভাগে ভাগ করা যাক। আমেরিকানদের সঙ্গে তালেবানের যে আলোচনা হয়েছিল, তাতে তাদের মাত্র চারটি প্রতিশ্রুতি ছিল। প্রতিশ্রুতিগুলো হলো—বিদেশি বাহিনী প্রত্যাহার, আন্তআফগান সংলাপ শুরু করা এবং আফগানিস্তান যাতে আবার সন্ত্রাসবাদের জায়গা না হয়ে যায়, তা নিশ্চিত করার বিষয়গুলো। এর বাইরেও যদি কিছু থেকে থাকে, তাহলে তা আফগান জনগণের কথা বিবেচনায় রেখে গোপন রাখা হয়েছে। তারা এ বিষয়ে একটি চুক্তিতে পৌঁছেছে এবং মার্কিন দূত মি খলিলজাদ ও তালেবানের মোল্লা বারাদারের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে। এরপর চুক্তির বিষয়ে আলোচনা শুরু করার চেষ্টা করা হয়েছিল। আলোচনা শুরুও হয়েছিল। তারপর এক বছর চলে গেল, কিন্তু আমরা কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছাইনি। পদ্ধতিগত বিষয়ে অনেক সময় ব্যয় করেছি। আমরা যখন শুরু করেছি, তখন নারীর অধিকার ছিল অ্যাজেন্ডার একটি অংশ। যা-ই হোক, আমরা এটি নিয়ে আলোচনা শুরু করিনি।
প্রশ্ন: এসব বিষয়ে আলোচনা হয়নি কেন? কারণটা কি সময়ের অভাব নাকি আগ্রহের কমতি?
উত্তর: যেকোনো আলোচনায় অনেক সময় লাগে। আমরা এজেন্ডায় বিভিন্ন বিষয় তৈরি করেছি। উভয় পক্ষের অনেক এজেন্ডা ছিল। অন্যান্য আলোচনার মধ্যে এ বিষয়ক এজেন্ডা নিয়ে কথা হয়নি। অন্যদিকে, তালেবানরা আলোচনায় আগ্রহী ছিল না। তারা বেশির ভাগই কৌশলগত আলোচনা নিয়ে ব্যস্ত ছিল। রিপাবলিক দলের জন্য আলোচনাটি ছিল দায়িত্বের অংশ ও একটি মিশন। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত, তালেবানদের জন্য আলোচনাটি মিশন বা দায়িত্ব কোনোটিই ছিল না। তাদের পরিবার দোহায় ছিল, সেখানে তাদের চাকরি ও ব্যবসা ছিল। কোনো কাজ না থাকলে তারা আলোচনার জন্য আসত এবং বিভিন্ন অজুহাত ও কৌশল অবলম্বন করত। তারপর আফগানিস্তানে ঘটতে থাকা ঘটনাগুলোর সঙ্গে এজেন্ডা আইটেমগুলোতে আলোচনার কোনো সুযোগ ছিল না।
প্রশ্ন: আপনি আফগানিস্তানের ইতিহাসে প্রথম নারী গভর্নর ছিলেন। কিছুদিনের জন্য মহিলা বিষয়ক মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তালেবানের সঙ্গে ইসলামিক রিপাবলিক অব আফগানিস্তানের আলোচনাকারী দলের সদস্য ছিলেন। আপনি নারী অধিকার রক্ষা করতে গিয়েছিলেন, কিন্তু তা হয়নি। কেন তালেবানদের কাছ থেকে নারী অধিকারের বিষয়গুলো নিশ্চিত করা হয়নি?
উত্তর: এটি এমন একটি বিষয়, যা আমি মনে করি, শুধু আমার জন্যই নয়। আফগানিস্তানের জনগণের জন্যও বেদনাদায়ক। নিশ্চয়তা পাওয়া যায়নি। কারণ, কখনোই আলোচনা হয়নি। আমি বলতে চাইছি, যে প্রক্রিয়াটি শুরু হয়েছিল, তা ফলপ্রসূ হয়নি। কোনো নিশ্চয়তা ছিল না। তবে তালেবানের সঙ্গে আমেরিকার যে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে, সেখানে কিছু থাকতে পারে।
প্রশ্ন: আফগানিস্তান প্রজাতন্ত্রের পতনের পর দুই বছরেরও বেশি সময় পার হয়েছে। তালেবানরা জনসাধারণের সব জায়গা থেকে সম্পূর্ণভাবে নারীদের সরিয়ে দিয়েছে। এখন, নারীর দৃষ্টিকোণ থেকে, আলোচনার সময় নারীর অধিকার রক্ষার জন্য সঠিক কৌশল কী হতে পারে বলে আপনি মনে করেন?
উত্তর: আফগান সংবিধান বিবেচনা করা উচিত। বিশেষ করে সংবিধানের দ্বিতীয় অংশ যেখানে নাগরিকত্বের অধিকার নির্ধারণ করা হয়েছে। নাগরিক অধিকার একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। নারীসহ আফগানিস্তানের সব জাতিগোষ্ঠীকে আফগানিস্তানের নাগরিক হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এটি অত্যন্ত গুরুতর বিষয় কিন্তু স্বাক্ষরিত হয়নি। এটি চুক্তিতে অন্তর্ভুক্ত করা উচিত ছিল। দুর্ভাগ্যবশত, না চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে আর না এই বিষয়ে কোনো আশ্বাস পাওয়া গেছে।
প্রশ্ন: নারী অধিকার কর্মী, মানবাধিকার কর্মী এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় কেন তালেবানের অধীনে থাকা নারীদের দুর্দশার অচলাবস্থা ভাঙতে পারছে না?
উত্তর: বিশেষ করে আফগানিস্তানের ভেতরে যে নারীরা থাকে তারা তাদের সাহস দেখিয়েছে এবং নিজেদের মর্যাদা রক্ষা করেছে। তাদের পক্ষ থেকে তারা নিজেদের সংগ্রাম অব্যাহত রেখেছে। সিদ্ধান্ত গ্রহণকারীদের মধ্যে হোক বা জাতিসংঘ এবং নিরাপত্তা পরিষদের মধ্যে হোক, আফগানিস্তানের বাইরের লোকেরাও তাদের প্রচেষ্টা চালিয়েছে এবং এখনো বিভিন্ন স্তরে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। পাঁচ সদস্যের একটি দল আমরা সব সময় নিরাপত্তা পরিষদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি এবং গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করছি। তবে আফগান নারীদের এমন অচলাবস্থার কারণ হলো, তালেবানদের অনমনীয় মানসিকতা। এই মানসিকতা নিয়ে তারা কোনোভাবেই অন্যদের সঙ্গে আলোচনায় জড়াতে ইচ্ছুক নয়, তা সে আফগান নারী হোক, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় হোক বা তালেবান চক্রের বাইরের কেউ হোক। আরেকটি বড় সমস্যা হলো, অন্যান্য অনেক ইস্যুর কারণে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মনোযোগ আফগানিস্তান থেকে সরে গেছে। যেমন, ইউক্রেন যুদ্ধ। পাশাপাশি আমরা গাজার ইস্যুও দেখছি। তাই আফগানিস্তান এখন আর আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে সেই অগ্রাধিকার পাচ্ছে না। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সরকার, নিরাপত্তা পরিষদ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের সিদ্ধান্ত গ্রহণকারীদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে আমরা বুঝতে পেরেছি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আর আফগানিস্তানে সামরিক পদক্ষেপ নিতে চায় না। অন্যদিকে, তালেবানও সংলাপ ও আলোচনায় আগ্রহী নয়। বিশ্বের সঙ্গে যোগাযোগ না রেখে তারা মধ্যযুগীয় চিন্তাভাবনা ও মানসিকতা নিয়ে এগিয়ে যেতে চায়।
প্রশ্ন: আফগানিস্তানে নারীদের অবস্থাকে আপনি কীভাবে বর্ণনা করবেন?
উত্তর: আফগানিস্তানে নারীরা বর্তমানে স্পষ্টতই লৈঙ্গিক ও বর্ণবৈষম্যের শিকার। শহুরে ও গ্রামীণ অর্থনৈতিক, সামাজিক কিংবা সাংস্কৃতিক জীবনের সব ক্ষেত্রে নারীদের বাদ দেওয়া হয়েছে। নারীদের সমাজ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে এবং নিয়মতান্ত্রিক বৈষম্য প্রবল। এটা তালেবানদের মানসিকতার ফল।
প্রশ্ন: একজন নারী হিসেবে আপনি অনেক আলোচনায় তালেবান নেতাদের মুখোমুখি হয়েছেন। সে সময় আপনার প্রতি তাদের আচরণ বিবেচনা করে, আপনি কি কখনো ভেবেছিলেন যে তারা এমন মিসজিনিস্ট রাজনৈতিক অবস্থান গ্রহণ করবে? অথবা আপনি কি ভেবেছেন যে সম্ভবত তালেবান কিছুটা পরিবর্তন হয়েছে?
উত্তর: ’৯০ এর দশকে তালেবানেরা দেখিয়েছিল যে তারা মিসজিনিস্টিক মতাদর্শ মেনে চলে। ২০১৯ সালে আন্তঃআফগান সংলাপে অংশ নিয়েছিলাম আমিসহ কিছু নারী। সেটা প্রথমবারের মতো কাতারের দোহায় মি. খলিলজাদ এবং অন্যান্য দেশের কিছু রাজনীতিবিদদের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। তাদের পরিকল্পনা ছিল, জনগণকে দেখানো যে তালেবানেরা বদলে গেছে। যখন আমি তালেবানদের দেখেছি এবং তাদের সম্পর্ক, মানসিকতা ও কর্মকাণ্ড পর্যবেক্ষণ করেছি, আমি বুঝতে পেরেছিলাম তালেবানেরা বদলায়নি। আলোচনার সময় তাদের আচরণে আমি এর প্রমাণও পেয়েছি। তাদের মতাদর্শ, দৃষ্টিভঙ্গি এবং মানসিকতা প্রমাণ করে তারা কতটা মিসজিনিস্টিক। তারা দেখানোর চেষ্টা করছিল যে তাদের মানসিকতা পরিবর্তিত হয়েছে। বোঝাতে চেয়েছিল যে তারা স্পষ্টতই নারী শিক্ষায় বিশ্বাস করে। কিন্তু শেষমেশ আমি প্রমাণ পেয়েছি তালেবানেরা বদলায়নি।
প্রশ্ন: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় দাবি করে যে, তালেবানের সঙ্গে আলোচনার অন্যতম প্রধান বিষয় নারীর অধিকার। এই কথার কোনো বাস্তবায়ন দেখছেন?
উত্তর: সরকারের অন্তর্ভুক্তি সংক্রান্ত কূটনৈতিক বৈঠকে আলোচনায় আমরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সামনে নারীর অধিকার ও মানবাধিকারের বিষয়গুলো তুলে ধরি। তারা বলে, আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তবে তারা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ কি না সেটা সময়ই বলে দেবে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নিজস্ব এজেন্ডা আছে। তারা সে অনুযায়ী কাজ করার চেষ্টা করে। তারা যে তালেবানকে এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেয়নি এটা একটা ইতিবাচক লক্ষণ। কিছু দেশ দূতাবাস, কনস্যুলেট বা বাণিজ্য সম্পর্কের নামে এক ধরনের কূটনৈতিক সম্পর্কের সূচনা করেছে। এটি ইঙ্গিত দেয় যে তাদের নারী অধিকারের প্রতি কোনো অঙ্গীকার নেই। তাদের ক্ষেত্রে শুধু নিজেদের এজেন্ডা প্রতিষ্ঠা করাই মুখ্য।
প্রশ্ন: তালেবান শাসন শুরুর পর থেকে দেশের ভেতরে অনেক নারী এই গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু তাদের কঠোরভাবে দমন করা হয়েছে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, শান্তিপূর্ণভাবে তাদের অধিকার হরণের প্রতিবাদ করার জন্য নারীরা তালেবান কারাগারে রয়েছে। আফগানিস্তানের বাইরে, নারী অধিকার কর্মীদের কাছ থেকে তেমন প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা যায়নি। এর কারণ কী হতে পারে বলে আপনি মনে করেন?
উত্তর: আফগানিস্তানের ভেতরে যুদ্ধরত সব নারীরা সত্যিই কঠিন পরিস্থিতিতে বসবাস করছে এবং তাদের সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে। যেসব নারী আফগানিস্তানের বাইরে রয়েছে এবং বিশ্বের কাছে নারীদের কণ্ঠস্বর পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করছে, আমি তাদের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাই। কারণ এটা সহজ কাজ নয়। যারা দেশ ছেড়েছে তারাও পশ্চিমে কোনোভাবেই সুখী নয়। আমাদের জন্য পশ্চিমে বাস করা জাহান্নামের মতো। অভিবাসীরা অস্থিতিস্থাপক জীবন যাপন করে। জাতিসংঘ এখনো তালেবানকে বৈধতা দেয়নি এবং তালেবান এখনো সরকারিভাবে স্বীকৃত নয়। একে আমরা নারীদের আন্দোলনের ফলাফল বলতে পারি। তবে এখনো পরিপূর্ণভাবে আমরা সফল হতে পারিনি। কারণ আফগানিস্তানের ভেতরের ও বাইরের লোকদের মধ্যে এখনো অবিশ্বাস রয়েছে। এটি স্বাভাবিক। কারণ দেশের ভেতরে নারীরা যে পরিস্থিতির সম্মুখীন হচ্ছে তা আফগানিস্তানের বাইরের নারীদের অবস্থার থেকে একেবারেই আলাদা। অভ্যন্তরীণ নারীরা মনে করে, আমরা যারা দেশের বাইরে আছি তারা তাদের পরিত্যাগ করেছি। তাদের সত্যিকার অর্থে সেরকম ভাবার অধিকার আছে। অন্যদিকে, প্রত্যেকেরই ব্যক্তিগত জীবন আছে। প্রত্যেকেই একটি কারণে আফগানিস্তান ছেড়েছে। এটা আফগানিস্তানের ভেতরে থাকা নারীদের কাছে গ্রহণযোগ্য নাও হতে পারে। কিন্তু আস্থা থাকলে ভালো হয়। কারণ দেশের নারীদের কণ্ঠস্বর রুদ্ধ হলে অভিবাসী নারীরা তাদের কণ্ঠস্বর প্রসারিত করবে, যতক্ষণ না তাদের দাবি রাজনীতিবিদ, নিরাপত্তা পরিষদ এবং জাতিসংঘের কানে পৌঁছায়। আমরা সম্পূর্ণ সাফল্য অর্জন করতে পারিনি, এটি এই অবিশ্বাসের একটি কারণ হতে পারে। কিন্তু এই পরিস্থিতির পরিবর্তন হচ্ছে। যত বেশি সংলাপ হবে, আফগানিস্তানের অভ্যন্তরে থাকা লোকদের সঙ্গে আমাদের তত বেশি যোগাযোগ হবে এবং বৃহত্তর আস্থার পরিবেশ তৈরি হবে।
প্রশ্ন: আপনি কি মনে করেন, আফগান নারীদের জন্য উল্লেখযোগ্য কোনো প্রচেষ্টা নেওয়া হয়নি? তালেবান নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে আফগানিস্তানের বাইরে কী করা যেতে পারে?
উত্তর: ধারাবাহিকভাবে বারবার চেষ্টা করা হয়েছে। এমন কিছু প্রতিষ্ঠান আছে যারা আফগান নারীদের একত্রিত করার চেষ্টা করেছে। গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, আফগানিস্তানের বাইরে যারা আছেন তাঁদের একে অপরের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা না করা। আসুন, আমরা নারীদের ইস্যুকে প্রতিযোগিতায় পরিণত না করি। আসুন, আমরা প্রত্যেকে একটি ব্যানার ধরি যা আফগান নারীদের প্রতিনিধিত্ব করে। আসুন, আমরা প্রত্যেকে নিজ নিজ জায়গায় আমাদের সামর্থ্য অনুযায়ী লড়াই করি। প্রতিটি ব্যক্তির ক্ষমতার প্রশংসা করা উচিত। আসুন একে অপরকে সমর্থন করি। এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ যে, এক গোষ্ঠীর মধ্যে যে শূন্যতা রয়েছে তা অন্যদের পূরণ করা উচিত। যাতে আমরা এক শক্তি হয়ে তালেবানের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে পারি।
প্রশ্ন: আপনি যখন নারীদের ওপর তালেবানের নতুন বিধিনিষেধ সম্পর্কে খবরের আপডেট শুনতে পান, রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ বাদে ব্যক্তিগতভাবে তখন আপনার অনুভূতি কেমন হয়?
উত্তর: নারী সমস্যা রাজনীতি থেকে দূরে নয়। দুর্ভাগ্যক্রমে, এটি একটি রাজনৈতিক বিষয় যাকে তালেবানরা আরও রাজনৈতিক করে তুলেছে। তালেবানরা নারী ইস্যু থেকে সবচেয়ে বেশি রাজনৈতিক সুবিধা লাভ করে। আফগানিস্তানের ভেতর থেকে আমরা যে খবর শুনি, তা শুধু নারীদেরই নয়, যুবক, সামরিক কর্মী, সংখ্যালঘু, শিয়া মসজিদে বোমা হামলা, শিক্ষাকেন্দ্র ধ্বংসের খবর আমাদের হৃদয়ে ছুরি মারার মতো। এর বেশি খবর সামনে আসছে না যা খুবই দুঃখজনক।
প্রশ্ন: আপনি কি এখনো আফগানিস্তানের নারীদের সঙ্গে, বিশেষ করে তরুণীদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন? তারা আপনাকে কী বলে?
উত্তর: হ্যাঁ, আমি যোগাযোগ করছি। মাঝে মাঝে আমাদের কথা হয়। তারা কী বলে, তা বলা কঠিন। তারা সব সময় কষ্ট, বঞ্চনা, বৈষম্য নিয়ে কথা বলে। সমাজ থেকে বহিষ্কৃত হওয়ার কথা, সেই কষ্টের কথা তারা উল্লেখ করে। কারাগারে যারা ছিল, তারা কী সহ্য করেছিল, সে কথাও হয়। এটা খুব দুঃখজনক। কিন্তু আমাদের এটা সহ্য করতে হচ্ছে।
প্রশ্ন: আপনি বামিয়ানকে কতটা মিস করেন? তাদের সঙ্গে কথা বলে আপনি কি বুঝতে পারছেন যে তারা আরও বঞ্চনা ও দারিদ্র্যের শিকার?
উত্তর: আজকাল আমি বামিয়ান সম্পর্কে রিচার্ড হাল নামে এক মার্কিন সেনা কর্মকর্তার লেখা একটি বই পড়ছি। তিনি সেখানে কাটানো ছয় মাসের প্রায় প্রতিটি ঘটনা তাঁর বইয়ে উল্লেখ রয়েছে। যখন আমি এই বইটি পড়ি, এটি আমাকে বামিয়ানে নিয়ে যায়। বইটির এক অংশে বর্ণনায় বামিয়ানের একটি প্রত্যন্ত অঞ্চলে একটি অনুষ্ঠান সম্পর্কে বলা হয়েছে। যেখানে একজন নারী এগিয়ে এসে তাঁকে ইংরেজিতে স্বাগত জানিয়ে নিজের পরিচয় দেন। যখন আমার পরিবার বামিয়ানে ছিল না, আমার ছুটির দিনগুলিতে আমি বামিয়ানের বিভিন্ন এলাকায় ভ্রমণ করে সেখানকার মানুষদের সম্পর্কে জানার চেষ্টা করেছি। বিভিন্ন গ্রাম ঘুরেছি। একবার আমি ব্যান্ড-ই আমিরের কাছে গিয়েছিলাম।সেখানে একদল যুবতী আমার চারপাশে জড়ো হয়েছিল। তারা বেশ উচ্ছল ছিল। আমি লক্ষ্য করেছি, তাঁদের এই দৃশ্যটি দূর থেকে কিছু দাড়ি ওয়ালা পুরুষ পর্যবেক্ষণ করেছিল। নারীরা বলেছিলেন, ‘আমাদের গভর্নরের সঙ্গে দাঁড়ানোর এবং ছবি তোলার অধিকার আছে, যা আগে ছিল না।’ বামিয়ানের ওয়ারাস জেলায় ভ্রমণকালে একজন নারী আমাদের স্বাগত জানাতে এসেছিলেন। খুশিতে কেঁদে ফেলে তিনি বলেছিলেন, ‘আপনি আমাদের জীবন দিয়েছেন।’ একজন নারীকে নেতৃত্ব দিতে দেখে তিনি খুশি হন। তখন তাঁরা মনে করতেন, নারীরাও নেতৃত্ব দিতে পারে।

নারী জাগরণের অগ্রদূত রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনকে নিয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকের বিদ্বেষমূলক মন্তব্যের নিন্দা জানিয়েছে আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক), বাংলাদেশ মহিলা পরিষদসহ বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন ও সংস্থা। আজ বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) আলাদা বিবৃতিতে এই নিন্দা জানায় সংগঠনগুলো।
২ দিন আগে
বিশ্বজুড়ে এক শ কোটির বেশি মানুষ যাদের বয়স ১৫ বছর কিংবা এর বেশি; তারা শৈশবে কোনো না কোনোভাবে যৌন সহিংসতার শিকার হয়েছে। এ ছাড়া ৬০ কোটির বেশি নারী তাঁর সঙ্গীর দ্বারা সহিসংতার শিকার হয়েছেন ২০২৩ সালে। দক্ষিণ এশিয়া ও আফ্রিকার সাব-সাহারা অঞ্চলে এমন নির্যাতনের হার সবচেয়ে বেশি।
৩ দিন আগে
মাহমুদা পারভীন। নামটি এখনো খুব পরিচিত নয়। সরকারি বাঙলা কলেজ থেকে অনার্স ও মাস্টার্স সম্পন্ন করেছেন তিনি। তবে তাঁর আরেকটি পরিচয় আরও উজ্জ্বল; তিনি একজন মুহূর্ত-শিকারি, ফটোগ্রাফার। কোনো প্রশিক্ষণ নেই, কোনো প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তির কাছে গ্রুমিংও নয়; নিজের ভালোবাসা আর অনুভূতির টানে তিনি ধরে রাখতে শুরু করেছ
৪ দিন আগে
প্রশ্ন: বিয়ের পর থেকে আমি নানা জুলুমের শিকার। বলতে গেলে, সব ধরনের জুলুম হয়েছে ১৪ বছর ধরে। আমাদের ৮ বছরের একটি সন্তান আছে। ইশারা-ইঙ্গিতে সাহায্য চায়। অর্থাৎ যৌতুক। সেটা পায় না বলে নানা কারণে রাগ প্রকাশ করে এবং চাপ দেয়। এর থেকে রক্ষা পেতে আমি কী করতে পারি?
৪ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

নারী জাগরণের অগ্রদূত রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনকে নিয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকের বিদ্বেষমূলক মন্তব্যের নিন্দা জানিয়েছে আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক), বাংলাদেশ মহিলা পরিষদসহ বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন ও সংস্থা। আজ বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) আলাদা বিবৃতিতে এই নিন্দা জানায় সংগঠনগুলো। উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক হয়ে বেগম রোকেয়াকে নিয়ে ঘৃণা প্রচারমূলক ও নারীবিদ্বেষী বক্তব্য রাষ্ট্রীয় আইন এবং পেশাগত নীতিবোধের চরম লঙ্ঘন বলে মনে করে সংগঠনগুলো।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মাহমুদুল হাসান ৯ ডিসেম্বর রোকেয়া দিবসে তাঁর ব্যক্তিগত ফেসবুক অ্যাকাউন্টে সমাজ সংস্কারক মহীয়সী নারী বেগম রোকেয়াকে ‘মুরতাদ-কাফির’ আখ্যায়িত করে পোস্ট দেন। এর নিন্দা জানিয়ে বেসরকারি সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) তাদের বিবৃতিতে বলেছে, ‘বাংলা ও বাঙালি নারী জাগরণের পথিকৃৎ বেগম রোকেয়া, যাঁর অবদান আমাদের শিক্ষা, সমাজচিন্তা ও মনন গঠনের ভিত্তি। তাঁকে নিয়ে এমন বিদ্বেষপূর্ণ ও উসকানিমূলক মন্তব্য কেবল নিন্দনীয়ই নয়, এটি নারীর মর্যাদার ওপর সরাসরি আক্রমণ। একজন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক, যিনি নিজেদের পেশার নৈতিকতা, শালীনতা এবং প্রগতিশীল চেতনার প্রতীক হওয়ার কথা, তাঁর কাছ থেকে এ ধরনের বক্তব্য একেবারেই অগ্রহণযোগ্য। উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক হিসেবে দায়িত্বজ্ঞানহীন, ঘৃণা প্রচারমূলক ও নারীবিদ্বেষী বক্তব্য পেশাগত নীতিবোধের চরম লঙ্ঘন।’
আসক মনে করে, ‘এ ধরনের মন্তব্য ব্যক্তিগত দায়িত্বহীনতার সীমা ছাড়িয়ে সমাজে বিভাজন, নারীবিদ্বেষী ও ঘৃণামূলক বক্তব্যকে উসকে দেয়। যা মানবাধিকার মানদণ্ড, রাষ্ট্রীয় আইন এবং একাডেমিক নৈতিকতার সরাসরি লঙ্ঘন। বেগম রোকেয়া শুধুই একজন ঐতিহাসিক ব্যক্তিত্ব নন, তিনি বাঙালি নারীর মুক্তি আন্দোলনের ভিত্তি। তাঁকে অবমাননা করা মানে বাঙালির সামষ্টিক অগ্রযাত্রাকে আঘাত করা।’
নারী অধিকার ও মানবাধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ তাদের বিবৃতিতে অনতিবিলম্বে ওই শিক্ষকের অপসারণের দাবি জানিয়েছে। সংগঠনের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম ও সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘যারা ধর্মের অপব্যাখ্যার ওপর ভর করে নারীদের সামনের দিকে অগ্রসর হওয়ার পথে বাধা সৃষ্টি করছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই শিক্ষক তাদেরই একজন। রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন ১৫০ বছর আগে নারী মুক্তির যে স্বপ্ন দেখিয়ে গেছেন, তাঁর আদর্শ এখনো প্রাসঙ্গিক হওয়ায় নারী প্রগতিবিরোধী একটি গোষ্ঠী তাঁকে ভয় পায়। রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের স্বপ্নকে বুকে ধারণ করে যখন দেশের মেয়েরা সকল ক্ষেত্রে অগ্রসর হওয়ার আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে, ঠিক তখন শিক্ষক নামধারী একজন ব্যক্তির এই অপপ্রচার, তার শিক্ষকতার যোগ্যতা নিয়ে ভাবতে বাধ্য করে।’
মহিলা পরিষদ মনে করে, ‘যখন রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে রোকেয়া দিবস পালন করা হচ্ছে, রোকেয়া পদকের প্রবর্তন করা হয়েছে, তখন এ ধরনের অপপ্রচার রাষ্ট্রীয় নীতিবিরোধী কাজ। এ ধরনের অপচেষ্টা স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশে নারীর অগ্রযাত্রা প্রতিহত করার একটি ষড়যন্ত্র এবং দেশের উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করার একটি অপতৎপরতা। এই অপপ্রচার সুস্থ সমাজ গঠনে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করবে। সমাজের মধ্যে বসবাসকারী নারীবিদ্বেষী গোষ্ঠীর এ ধরনের সমাজবিরোধী কর্মকাণ্ড সম্মিলিতভাবে এখনই প্রতিহত করা দরকার।’
নারী অধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠন নারীপক্ষের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘বেগম রোকেয়া কখনোই ধর্মবিদ্বেষী ছিলেন না। বরং তিনি আজীবন অন্ধ কুসংস্কার, বৈষম্য ও অজ্ঞতার বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন। ধর্মের ব্যবহার করে নারীকে অসম্মান-অপদস্থ করা, নারীর অধিকার খর্ব করা এবং নারীকে চার দেয়ালের অন্ধকারে আবদ্ধ করে রাখার বিরুদ্ধে স্পষ্ট অবস্থান নিয়েছেন।’
নারীপক্ষের বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘কাউকে অসম্মান ও হেয়প্রতিপন্ন করার উদ্দেশ্যে ধর্মীয় শব্দ-বাক্য ব্যবহার করা অন্যায় এবং সংকীর্ণ মানসিকতার পরিচয়। রোকেয়াসহ নারী-পুরুষ নির্বিশেষে কোনো মানুষের প্রতিই এমন বক্তব্য ও আচরণের তীব্র নিন্দা এবং প্রতিবাদ জানায় নারীপক্ষ।’

নারী জাগরণের অগ্রদূত রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনকে নিয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকের বিদ্বেষমূলক মন্তব্যের নিন্দা জানিয়েছে আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক), বাংলাদেশ মহিলা পরিষদসহ বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন ও সংস্থা। আজ বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) আলাদা বিবৃতিতে এই নিন্দা জানায় সংগঠনগুলো। উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক হয়ে বেগম রোকেয়াকে নিয়ে ঘৃণা প্রচারমূলক ও নারীবিদ্বেষী বক্তব্য রাষ্ট্রীয় আইন এবং পেশাগত নীতিবোধের চরম লঙ্ঘন বলে মনে করে সংগঠনগুলো।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মাহমুদুল হাসান ৯ ডিসেম্বর রোকেয়া দিবসে তাঁর ব্যক্তিগত ফেসবুক অ্যাকাউন্টে সমাজ সংস্কারক মহীয়সী নারী বেগম রোকেয়াকে ‘মুরতাদ-কাফির’ আখ্যায়িত করে পোস্ট দেন। এর নিন্দা জানিয়ে বেসরকারি সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) তাদের বিবৃতিতে বলেছে, ‘বাংলা ও বাঙালি নারী জাগরণের পথিকৃৎ বেগম রোকেয়া, যাঁর অবদান আমাদের শিক্ষা, সমাজচিন্তা ও মনন গঠনের ভিত্তি। তাঁকে নিয়ে এমন বিদ্বেষপূর্ণ ও উসকানিমূলক মন্তব্য কেবল নিন্দনীয়ই নয়, এটি নারীর মর্যাদার ওপর সরাসরি আক্রমণ। একজন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক, যিনি নিজেদের পেশার নৈতিকতা, শালীনতা এবং প্রগতিশীল চেতনার প্রতীক হওয়ার কথা, তাঁর কাছ থেকে এ ধরনের বক্তব্য একেবারেই অগ্রহণযোগ্য। উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক হিসেবে দায়িত্বজ্ঞানহীন, ঘৃণা প্রচারমূলক ও নারীবিদ্বেষী বক্তব্য পেশাগত নীতিবোধের চরম লঙ্ঘন।’
আসক মনে করে, ‘এ ধরনের মন্তব্য ব্যক্তিগত দায়িত্বহীনতার সীমা ছাড়িয়ে সমাজে বিভাজন, নারীবিদ্বেষী ও ঘৃণামূলক বক্তব্যকে উসকে দেয়। যা মানবাধিকার মানদণ্ড, রাষ্ট্রীয় আইন এবং একাডেমিক নৈতিকতার সরাসরি লঙ্ঘন। বেগম রোকেয়া শুধুই একজন ঐতিহাসিক ব্যক্তিত্ব নন, তিনি বাঙালি নারীর মুক্তি আন্দোলনের ভিত্তি। তাঁকে অবমাননা করা মানে বাঙালির সামষ্টিক অগ্রযাত্রাকে আঘাত করা।’
নারী অধিকার ও মানবাধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ তাদের বিবৃতিতে অনতিবিলম্বে ওই শিক্ষকের অপসারণের দাবি জানিয়েছে। সংগঠনের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম ও সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘যারা ধর্মের অপব্যাখ্যার ওপর ভর করে নারীদের সামনের দিকে অগ্রসর হওয়ার পথে বাধা সৃষ্টি করছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই শিক্ষক তাদেরই একজন। রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন ১৫০ বছর আগে নারী মুক্তির যে স্বপ্ন দেখিয়ে গেছেন, তাঁর আদর্শ এখনো প্রাসঙ্গিক হওয়ায় নারী প্রগতিবিরোধী একটি গোষ্ঠী তাঁকে ভয় পায়। রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের স্বপ্নকে বুকে ধারণ করে যখন দেশের মেয়েরা সকল ক্ষেত্রে অগ্রসর হওয়ার আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে, ঠিক তখন শিক্ষক নামধারী একজন ব্যক্তির এই অপপ্রচার, তার শিক্ষকতার যোগ্যতা নিয়ে ভাবতে বাধ্য করে।’
মহিলা পরিষদ মনে করে, ‘যখন রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে রোকেয়া দিবস পালন করা হচ্ছে, রোকেয়া পদকের প্রবর্তন করা হয়েছে, তখন এ ধরনের অপপ্রচার রাষ্ট্রীয় নীতিবিরোধী কাজ। এ ধরনের অপচেষ্টা স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশে নারীর অগ্রযাত্রা প্রতিহত করার একটি ষড়যন্ত্র এবং দেশের উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করার একটি অপতৎপরতা। এই অপপ্রচার সুস্থ সমাজ গঠনে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করবে। সমাজের মধ্যে বসবাসকারী নারীবিদ্বেষী গোষ্ঠীর এ ধরনের সমাজবিরোধী কর্মকাণ্ড সম্মিলিতভাবে এখনই প্রতিহত করা দরকার।’
নারী অধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠন নারীপক্ষের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘বেগম রোকেয়া কখনোই ধর্মবিদ্বেষী ছিলেন না। বরং তিনি আজীবন অন্ধ কুসংস্কার, বৈষম্য ও অজ্ঞতার বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন। ধর্মের ব্যবহার করে নারীকে অসম্মান-অপদস্থ করা, নারীর অধিকার খর্ব করা এবং নারীকে চার দেয়ালের অন্ধকারে আবদ্ধ করে রাখার বিরুদ্ধে স্পষ্ট অবস্থান নিয়েছেন।’
নারীপক্ষের বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘কাউকে অসম্মান ও হেয়প্রতিপন্ন করার উদ্দেশ্যে ধর্মীয় শব্দ-বাক্য ব্যবহার করা অন্যায় এবং সংকীর্ণ মানসিকতার পরিচয়। রোকেয়াসহ নারী-পুরুষ নির্বিশেষে কোনো মানুষের প্রতিই এমন বক্তব্য ও আচরণের তীব্র নিন্দা এবং প্রতিবাদ জানায় নারীপক্ষ।’

হাবিবা সারাবি ছিলেন আফগানিস্তানের ইতিহাসে প্রথম নারী গভর্নর। দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাই প্রশাসনে মহিলাবিষয়ক মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। হাবিবা সে সময় আফগান সরকারে তালেবানদের সঙ্গে শান্তি আলোচনার জন্য আলোচনাকারী দলের সদস্য ছিলেন। আফগানিস্তানে নারীদের নিয়ে কাজ করা যুক্তরাজ্যভ
২২ মে ২০২৪
বিশ্বজুড়ে এক শ কোটির বেশি মানুষ যাদের বয়স ১৫ বছর কিংবা এর বেশি; তারা শৈশবে কোনো না কোনোভাবে যৌন সহিংসতার শিকার হয়েছে। এ ছাড়া ৬০ কোটির বেশি নারী তাঁর সঙ্গীর দ্বারা সহিসংতার শিকার হয়েছেন ২০২৩ সালে। দক্ষিণ এশিয়া ও আফ্রিকার সাব-সাহারা অঞ্চলে এমন নির্যাতনের হার সবচেয়ে বেশি।
৩ দিন আগে
মাহমুদা পারভীন। নামটি এখনো খুব পরিচিত নয়। সরকারি বাঙলা কলেজ থেকে অনার্স ও মাস্টার্স সম্পন্ন করেছেন তিনি। তবে তাঁর আরেকটি পরিচয় আরও উজ্জ্বল; তিনি একজন মুহূর্ত-শিকারি, ফটোগ্রাফার। কোনো প্রশিক্ষণ নেই, কোনো প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তির কাছে গ্রুমিংও নয়; নিজের ভালোবাসা আর অনুভূতির টানে তিনি ধরে রাখতে শুরু করেছ
৪ দিন আগে
প্রশ্ন: বিয়ের পর থেকে আমি নানা জুলুমের শিকার। বলতে গেলে, সব ধরনের জুলুম হয়েছে ১৪ বছর ধরে। আমাদের ৮ বছরের একটি সন্তান আছে। ইশারা-ইঙ্গিতে সাহায্য চায়। অর্থাৎ যৌতুক। সেটা পায় না বলে নানা কারণে রাগ প্রকাশ করে এবং চাপ দেয়। এর থেকে রক্ষা পেতে আমি কী করতে পারি?
৪ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

বিশ্বজুড়ে এক শ কোটির বেশি মানুষ যাদের বয়স ১৫ বছর কিংবা এর বেশি; তারা শৈশবে কোনো না কোনোভাবে যৌন সহিংসতার শিকার হয়েছে। এ ছাড়া ৬০ কোটির বেশি নারী তাঁর সঙ্গীর দ্বারা সহিসংতার শিকার হয়েছেন ২০২৩ সালে। দক্ষিণ এশিয়া ও আফ্রিকার সাব-সাহারা অঞ্চলে এমন নির্যাতনের হার সবচেয়ে বেশি। বিখ্যাত চিকিৎসাবিষয়ক সাময়িকী ল্যানসেটে প্রকাশিত গবেষণায় এ চিত্র উঠে এসেছে।
গত মঙ্গলবার গবেষণাটি প্রকাশ করা হয়েছে। ২০৪টি দেশ ও অঞ্চলের তথ্য নিয়ে এ গবেষণা করা হয়েছে। গবেষণায় আরও বলা হয়েছে, এমন সহিংসতার কারণে দক্ষিণ এশিয়া ও আফ্রিকার সাব-সাহারা অঞ্চলে এইডস এবং অন্যান্য ক্রনিক রোগের সংক্রমণের হারও বেশি।
এই গবেষণার জন্য ২০২৩ সালের ‘গ্লোবাল বার্ডেন ডিজিজের’ (জিবিডি) তথ্য নেওয়া হয়েছে। গবেষণায় যুক্ত ছিল যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব ওয়াশিংটনসহ ৬০০টির বেশি প্রতিষ্ঠান। ল্যানসেটের ওই গবেষণায় বলা হচ্ছে, জীবনসঙ্গীর ওপর চালানো নির্যাতন ও শিশুদের সঙ্গে ঘটে যাওয়া যৌন সহিংসতা মানবাধিকার লঙ্ঘনের অন্যতম একটি উপায়। এটি সমাজে এবং ভুক্তভোগীদের ওপর দীর্ঘ মেয়াদে প্রভাব ফেলছে। এর স্বাস্থ্যগত প্রভাব ভয়ংকর।
তবে এটি জানার পরও বিষয়টিকে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় নিয়ে প্রতিকারে যথেষ্ট পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না।
এই নিয়ে ভারতের গণমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের খবরে বলা হয়েছে, এমন সহিসংতার কারণে ভুক্তভোগীরা যে স্বাস্থ্যগত ক্ষতি ও প্রতিবন্ধিতার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, এর চিত্র উঠে এসেছে গবেষণায়। নারীরা যে প্রতিবন্ধী হয়ে পড়েছেন এর অন্যতম আটটি কারণ রয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম কারণ বিষণ্নতা ও উদ্বেগজনিত রোগ। সহিংসতার শিকার নারীরা এসব রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। ফলে তাদের অনেকে প্রতিবন্ধিতা বরণ করতে বাধ্য হচ্ছেন। এ ছাড়া শিশুরা যারা এমন যৌন সহিংসতার শিকার হচ্ছে, তারা মানসিক এবং এইডস, ডায়াবেটিসসহ ক্রনিক বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।
এদিকে জীবনসঙ্গীর নির্যাতনের শিকার হয়ে বিশ্বজুড়ে ২০২৩ সালে মারা গেছে ১ লাখ ৪৫ হাজার মানুষ। এর মধ্যে অনেকে হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছে। অনেকে আত্মহত্যা করেছে। আবার নির্যাতনের কারণে এইডসসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে কেউ কেউ। ল্যানসেট বলছে, ২০২৩ সালে ৩০ হাজার নারীকে হত্যা করেছেন তাঁর সঙ্গী। ২০২৩ সালে যৌন সহিংসতার কারণে মারা গেছে ২ লাখ ৯০ হাজার শিশু। এর একটি বড় অংশ আত্মহত্যা করেছে। এ ছাড়া এইডস, ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে অনেকে। এসব রোগে আক্রান্ত হওয়ার কারণও ছিল যৌন সহিংসতা।
দক্ষিণ এশিয়ায় এখন যাঁরা প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ, যারা শৈশবে যৌন সহিংসতার শিকার হয়েছেন, তাঁদের অনেকের মধ্যে আত্মঘাতী প্রবণতা দেখা দিয়েছে। অনেকে সিজোফ্রেনিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন। আর নারীরা যাঁরা কিনা শৈশবে যৌন সহিংসতার শিকার হয়েছেন, তাঁদের মধ্যে দুশ্চিন্তাজনিত রোগ বেড়েছে।
ল্যানসেটের এই গবেষণার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন ইউনিভার্সিটি অব ওয়াশিংটনের সহকারী অধ্যাপক লুইসা সোরিও ফ্লোর। তিনি বলেন, শিশুদের বিরুদ্ধে যৌন সহিংসতা ও নারীদের বিরুদ্ধে সহিংসতাকে দীর্ঘ সময় ধরে যেভাবে সমাজ দেখে আসছে, নতুন এই গবেষণা সেটাকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিয়েছে। এমন ভুক্তভোগীদের স্বাস্থ্যগত অবস্থা কী, সেটাও সামনে এনেছে।

বিশ্বজুড়ে এক শ কোটির বেশি মানুষ যাদের বয়স ১৫ বছর কিংবা এর বেশি; তারা শৈশবে কোনো না কোনোভাবে যৌন সহিংসতার শিকার হয়েছে। এ ছাড়া ৬০ কোটির বেশি নারী তাঁর সঙ্গীর দ্বারা সহিসংতার শিকার হয়েছেন ২০২৩ সালে। দক্ষিণ এশিয়া ও আফ্রিকার সাব-সাহারা অঞ্চলে এমন নির্যাতনের হার সবচেয়ে বেশি। বিখ্যাত চিকিৎসাবিষয়ক সাময়িকী ল্যানসেটে প্রকাশিত গবেষণায় এ চিত্র উঠে এসেছে।
গত মঙ্গলবার গবেষণাটি প্রকাশ করা হয়েছে। ২০৪টি দেশ ও অঞ্চলের তথ্য নিয়ে এ গবেষণা করা হয়েছে। গবেষণায় আরও বলা হয়েছে, এমন সহিংসতার কারণে দক্ষিণ এশিয়া ও আফ্রিকার সাব-সাহারা অঞ্চলে এইডস এবং অন্যান্য ক্রনিক রোগের সংক্রমণের হারও বেশি।
এই গবেষণার জন্য ২০২৩ সালের ‘গ্লোবাল বার্ডেন ডিজিজের’ (জিবিডি) তথ্য নেওয়া হয়েছে। গবেষণায় যুক্ত ছিল যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব ওয়াশিংটনসহ ৬০০টির বেশি প্রতিষ্ঠান। ল্যানসেটের ওই গবেষণায় বলা হচ্ছে, জীবনসঙ্গীর ওপর চালানো নির্যাতন ও শিশুদের সঙ্গে ঘটে যাওয়া যৌন সহিংসতা মানবাধিকার লঙ্ঘনের অন্যতম একটি উপায়। এটি সমাজে এবং ভুক্তভোগীদের ওপর দীর্ঘ মেয়াদে প্রভাব ফেলছে। এর স্বাস্থ্যগত প্রভাব ভয়ংকর।
তবে এটি জানার পরও বিষয়টিকে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় নিয়ে প্রতিকারে যথেষ্ট পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না।
এই নিয়ে ভারতের গণমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের খবরে বলা হয়েছে, এমন সহিসংতার কারণে ভুক্তভোগীরা যে স্বাস্থ্যগত ক্ষতি ও প্রতিবন্ধিতার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, এর চিত্র উঠে এসেছে গবেষণায়। নারীরা যে প্রতিবন্ধী হয়ে পড়েছেন এর অন্যতম আটটি কারণ রয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম কারণ বিষণ্নতা ও উদ্বেগজনিত রোগ। সহিংসতার শিকার নারীরা এসব রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। ফলে তাদের অনেকে প্রতিবন্ধিতা বরণ করতে বাধ্য হচ্ছেন। এ ছাড়া শিশুরা যারা এমন যৌন সহিংসতার শিকার হচ্ছে, তারা মানসিক এবং এইডস, ডায়াবেটিসসহ ক্রনিক বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।
এদিকে জীবনসঙ্গীর নির্যাতনের শিকার হয়ে বিশ্বজুড়ে ২০২৩ সালে মারা গেছে ১ লাখ ৪৫ হাজার মানুষ। এর মধ্যে অনেকে হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছে। অনেকে আত্মহত্যা করেছে। আবার নির্যাতনের কারণে এইডসসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে কেউ কেউ। ল্যানসেট বলছে, ২০২৩ সালে ৩০ হাজার নারীকে হত্যা করেছেন তাঁর সঙ্গী। ২০২৩ সালে যৌন সহিংসতার কারণে মারা গেছে ২ লাখ ৯০ হাজার শিশু। এর একটি বড় অংশ আত্মহত্যা করেছে। এ ছাড়া এইডস, ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে অনেকে। এসব রোগে আক্রান্ত হওয়ার কারণও ছিল যৌন সহিংসতা।
দক্ষিণ এশিয়ায় এখন যাঁরা প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ, যারা শৈশবে যৌন সহিংসতার শিকার হয়েছেন, তাঁদের অনেকের মধ্যে আত্মঘাতী প্রবণতা দেখা দিয়েছে। অনেকে সিজোফ্রেনিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন। আর নারীরা যাঁরা কিনা শৈশবে যৌন সহিংসতার শিকার হয়েছেন, তাঁদের মধ্যে দুশ্চিন্তাজনিত রোগ বেড়েছে।
ল্যানসেটের এই গবেষণার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন ইউনিভার্সিটি অব ওয়াশিংটনের সহকারী অধ্যাপক লুইসা সোরিও ফ্লোর। তিনি বলেন, শিশুদের বিরুদ্ধে যৌন সহিংসতা ও নারীদের বিরুদ্ধে সহিংসতাকে দীর্ঘ সময় ধরে যেভাবে সমাজ দেখে আসছে, নতুন এই গবেষণা সেটাকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিয়েছে। এমন ভুক্তভোগীদের স্বাস্থ্যগত অবস্থা কী, সেটাও সামনে এনেছে।

হাবিবা সারাবি ছিলেন আফগানিস্তানের ইতিহাসে প্রথম নারী গভর্নর। দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাই প্রশাসনে মহিলাবিষয়ক মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। হাবিবা সে সময় আফগান সরকারে তালেবানদের সঙ্গে শান্তি আলোচনার জন্য আলোচনাকারী দলের সদস্য ছিলেন। আফগানিস্তানে নারীদের নিয়ে কাজ করা যুক্তরাজ্যভ
২২ মে ২০২৪
নারী জাগরণের অগ্রদূত রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনকে নিয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকের বিদ্বেষমূলক মন্তব্যের নিন্দা জানিয়েছে আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক), বাংলাদেশ মহিলা পরিষদসহ বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন ও সংস্থা। আজ বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) আলাদা বিবৃতিতে এই নিন্দা জানায় সংগঠনগুলো।
২ দিন আগে
মাহমুদা পারভীন। নামটি এখনো খুব পরিচিত নয়। সরকারি বাঙলা কলেজ থেকে অনার্স ও মাস্টার্স সম্পন্ন করেছেন তিনি। তবে তাঁর আরেকটি পরিচয় আরও উজ্জ্বল; তিনি একজন মুহূর্ত-শিকারি, ফটোগ্রাফার। কোনো প্রশিক্ষণ নেই, কোনো প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তির কাছে গ্রুমিংও নয়; নিজের ভালোবাসা আর অনুভূতির টানে তিনি ধরে রাখতে শুরু করেছ
৪ দিন আগে
প্রশ্ন: বিয়ের পর থেকে আমি নানা জুলুমের শিকার। বলতে গেলে, সব ধরনের জুলুম হয়েছে ১৪ বছর ধরে। আমাদের ৮ বছরের একটি সন্তান আছে। ইশারা-ইঙ্গিতে সাহায্য চায়। অর্থাৎ যৌতুক। সেটা পায় না বলে নানা কারণে রাগ প্রকাশ করে এবং চাপ দেয়। এর থেকে রক্ষা পেতে আমি কী করতে পারি?
৪ দিন আগেমুহাম্মদ শফিকুর রহমান

মাহমুদা পারভীন। নামটি এখনো খুব পরিচিত নয়। সরকারি বাঙলা কলেজ থেকে অনার্স ও মাস্টার্স সম্পন্ন করেছেন তিনি। তবে তাঁর আরেকটি পরিচয় আরও উজ্জ্বল; তিনি একজন মুহূর্ত-শিকারি, ফটোগ্রাফার। কোনো প্রশিক্ষণ নেই, কোনো প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তির কাছে গ্রুমিংও নয়; নিজের ভালোবাসা আর অনুভূতির টানে তিনি ধরে রাখতে শুরু করেছিলেন প্রিয় মুহূর্তগুলো।
মা, বাবা, ভাই, ভাবি এবং তাঁদের সন্তানদের নিয়ে মাহমুদার পরিবার। সেখানে আর কেউ ছবি তোলে না; তাই ফটোগ্রাফি নিয়ে তাঁর যে জগৎ, সেটি পুরোপুরি নিজের হাতে গড়া। একাকী এই পথচলাই যেন তাঁকে আরও বিশেষ মনোযোগী করে তুলেছে, আরও অনুপ্রাণিত করেছে।
শুরুটা খুব সাধারণ, তারপরও বিশেষ
‘সুন্দর মুহূর্ত ধরে রাখতে ভালো লাগে’—এমনই এক সাধারণ অনুভূতি থেকে মাহমুদা ছবি তুলতে শুরু করেন। সময়কে কেউ থামাতে পারে না। কিন্তু ছবি সেই সময়ের ছাপকে ধরে রাখতে পারে। এই টান থেকে তাঁর ফটোগ্রাফির যাত্রা।
প্রথম ক্যামেরা? ক্যামেরা বলা যাবে না। কারণ, এখন পর্যন্ত তিনি মোবাইল ফোন দিয়েই ছবি তোলেন। এই মোবাইল যেন তাঁর হাতে এক জাদুর বাক্স।

স্বীকৃতির প্রথম ধাপ
মোবাইল ফোন দিয়ে তোলা তাঁর ছবি প্রথমবার জায়গা করে নেয় ‘তরুণেরাই পরিবর্তনের প্রভাবক’ আলোকচিত্র প্রদর্শনীতে। জাতিসংঘের ৮০তম বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত হয়েছিল প্রদর্শনী। সেখান থেকে তিনি পেয়েছেন একটি সার্টিফিকেট। এটি তাঁর কাছে শুধু একটি কাগজ নয়, নিজেকে আরও একধাপ এগিয়ে নেওয়ার সাহস।
অনলাইন প্রতিযোগিতায় তাঁর সাফল্য রয়েছে। ‘প্রাণোচ্ছ্বাস আত্মসেবা নয়, মানবসেবা’-এর ১৭ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত ফটোগ্রাফি কনটেস্টে তিনি দ্বিতীয় হয়েছেন।

যেসব ছবি ছুঁয়ে যায়
প্রিয় ছবির কথা উঠলে তিনি স্মরণ করেন এই নভেম্বরের এক ভোরের স্মৃতি। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কুয়াশাঘেরা পথে হাঁটতে হাঁটতে দেখেছিলেন, একটি ছেলে এবং একটি মেয়ে সাইকেল চালিয়ে যাচ্ছে। চারদিকে কুয়াশা, ভোরের ঠান্ডা, নিস্তব্ধতা আর দুই বন্ধুর পথচলার মিষ্টি স্মৃতি। তিনি মোবাইল ফোনে মুহূর্তটাকে বন্দী করেছিলেন।
ভয়ের দিক
যে কাজ মানুষকে আনন্দ দেয়, সেটির পেছনেও ভয় থাকে। মাহমুদার ভয় খুব সাধারণ, কিন্তু বাস্তব। তা হলো, সব সময় অনুমতি নিয়ে ছবি তোলা যায় না। কেউ যদি বিরক্ত হয়! কেউ রাগ করলে? এসব মাঝে মাঝে তাঁকে থামিয়ে দেয়।

নারী ফটোগ্রাফার হওয়ার বাড়তি চ্যালেঞ্জ
বাইরের মানুষ বাজে কথা না বললেও অনেক জায়গায় শুনতে হয়, মেয়ে হয়ে ছবি তুলছেন? বিষয়টি সবাই ভালো চোখে দেখে না। তার ওপর বিশেষ চ্যালেঞ্জ হলো, বাড়ির লোকজন এখনো জানেই না, তিনি ছবি তোলেন! তাই নিজের ভালোবাসার কাজটুকু তাঁকে চুপিচুপি, নিজের মতো করে করতে হয়।
পাখির ছবি, প্রকৃতির ছবি
মাহমুদার ভালো লাগে ল্যান্ডস্কেপ, স্ট্রিট ফটোগ্রাফি ও পোর্ট্রেট। বারান্দায় এসে ডেকে ওঠা শালিক পাখিগুলো তাঁর ছবি তোলার নিয়মিত বিষয়। খেলা করতে করতে শালিকদের যে স্বচ্ছন্দ ভঙ্গি, সেগুলো তিনি ক্যামেরায় ধরে রাখার চেষ্টা করেন।

অভাববোধ করেন একজন গাইডের
মাহমুদার বড় আফসোস, কেউ নেই যিনি বলে দেবেন, কোন ছবি ভালো, কোনটা নয়, কোথায় ভুল, কীভাবে আরও ভালো হওয়া যায়। একজন অভিজ্ঞ মানুষের কাছ থেকে পথনির্দেশনা পেলে তিনি বিশ্বাস করেন, গল্প আরও গভীরভাবে বলতে পারবেন।
স্বপ্ন এখনো চলমান
একদিন চাকরি হবে, ব্যস্ততা তখন নিশ্চয় বাড়বে। কিন্তু ছবি তোলার নেশা কখনো হারিয়ে যাবে না। সুযোগ পেলে নিজের একটি ক্যামেরা কিনবেন; তখন আরও দক্ষভাবে, আরও গল্পময় ছবি তুলবেন। নতুন নতুন গল্পের সন্ধানে পথচলা অব্যাহত থাকবে— মাহমুদার স্বপ্ন আপাতত এতটুকুই।

মাহমুদা পারভীন। নামটি এখনো খুব পরিচিত নয়। সরকারি বাঙলা কলেজ থেকে অনার্স ও মাস্টার্স সম্পন্ন করেছেন তিনি। তবে তাঁর আরেকটি পরিচয় আরও উজ্জ্বল; তিনি একজন মুহূর্ত-শিকারি, ফটোগ্রাফার। কোনো প্রশিক্ষণ নেই, কোনো প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তির কাছে গ্রুমিংও নয়; নিজের ভালোবাসা আর অনুভূতির টানে তিনি ধরে রাখতে শুরু করেছিলেন প্রিয় মুহূর্তগুলো।
মা, বাবা, ভাই, ভাবি এবং তাঁদের সন্তানদের নিয়ে মাহমুদার পরিবার। সেখানে আর কেউ ছবি তোলে না; তাই ফটোগ্রাফি নিয়ে তাঁর যে জগৎ, সেটি পুরোপুরি নিজের হাতে গড়া। একাকী এই পথচলাই যেন তাঁকে আরও বিশেষ মনোযোগী করে তুলেছে, আরও অনুপ্রাণিত করেছে।
শুরুটা খুব সাধারণ, তারপরও বিশেষ
‘সুন্দর মুহূর্ত ধরে রাখতে ভালো লাগে’—এমনই এক সাধারণ অনুভূতি থেকে মাহমুদা ছবি তুলতে শুরু করেন। সময়কে কেউ থামাতে পারে না। কিন্তু ছবি সেই সময়ের ছাপকে ধরে রাখতে পারে। এই টান থেকে তাঁর ফটোগ্রাফির যাত্রা।
প্রথম ক্যামেরা? ক্যামেরা বলা যাবে না। কারণ, এখন পর্যন্ত তিনি মোবাইল ফোন দিয়েই ছবি তোলেন। এই মোবাইল যেন তাঁর হাতে এক জাদুর বাক্স।

স্বীকৃতির প্রথম ধাপ
মোবাইল ফোন দিয়ে তোলা তাঁর ছবি প্রথমবার জায়গা করে নেয় ‘তরুণেরাই পরিবর্তনের প্রভাবক’ আলোকচিত্র প্রদর্শনীতে। জাতিসংঘের ৮০তম বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত হয়েছিল প্রদর্শনী। সেখান থেকে তিনি পেয়েছেন একটি সার্টিফিকেট। এটি তাঁর কাছে শুধু একটি কাগজ নয়, নিজেকে আরও একধাপ এগিয়ে নেওয়ার সাহস।
অনলাইন প্রতিযোগিতায় তাঁর সাফল্য রয়েছে। ‘প্রাণোচ্ছ্বাস আত্মসেবা নয়, মানবসেবা’-এর ১৭ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত ফটোগ্রাফি কনটেস্টে তিনি দ্বিতীয় হয়েছেন।

যেসব ছবি ছুঁয়ে যায়
প্রিয় ছবির কথা উঠলে তিনি স্মরণ করেন এই নভেম্বরের এক ভোরের স্মৃতি। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কুয়াশাঘেরা পথে হাঁটতে হাঁটতে দেখেছিলেন, একটি ছেলে এবং একটি মেয়ে সাইকেল চালিয়ে যাচ্ছে। চারদিকে কুয়াশা, ভোরের ঠান্ডা, নিস্তব্ধতা আর দুই বন্ধুর পথচলার মিষ্টি স্মৃতি। তিনি মোবাইল ফোনে মুহূর্তটাকে বন্দী করেছিলেন।
ভয়ের দিক
যে কাজ মানুষকে আনন্দ দেয়, সেটির পেছনেও ভয় থাকে। মাহমুদার ভয় খুব সাধারণ, কিন্তু বাস্তব। তা হলো, সব সময় অনুমতি নিয়ে ছবি তোলা যায় না। কেউ যদি বিরক্ত হয়! কেউ রাগ করলে? এসব মাঝে মাঝে তাঁকে থামিয়ে দেয়।

নারী ফটোগ্রাফার হওয়ার বাড়তি চ্যালেঞ্জ
বাইরের মানুষ বাজে কথা না বললেও অনেক জায়গায় শুনতে হয়, মেয়ে হয়ে ছবি তুলছেন? বিষয়টি সবাই ভালো চোখে দেখে না। তার ওপর বিশেষ চ্যালেঞ্জ হলো, বাড়ির লোকজন এখনো জানেই না, তিনি ছবি তোলেন! তাই নিজের ভালোবাসার কাজটুকু তাঁকে চুপিচুপি, নিজের মতো করে করতে হয়।
পাখির ছবি, প্রকৃতির ছবি
মাহমুদার ভালো লাগে ল্যান্ডস্কেপ, স্ট্রিট ফটোগ্রাফি ও পোর্ট্রেট। বারান্দায় এসে ডেকে ওঠা শালিক পাখিগুলো তাঁর ছবি তোলার নিয়মিত বিষয়। খেলা করতে করতে শালিকদের যে স্বচ্ছন্দ ভঙ্গি, সেগুলো তিনি ক্যামেরায় ধরে রাখার চেষ্টা করেন।

অভাববোধ করেন একজন গাইডের
মাহমুদার বড় আফসোস, কেউ নেই যিনি বলে দেবেন, কোন ছবি ভালো, কোনটা নয়, কোথায় ভুল, কীভাবে আরও ভালো হওয়া যায়। একজন অভিজ্ঞ মানুষের কাছ থেকে পথনির্দেশনা পেলে তিনি বিশ্বাস করেন, গল্প আরও গভীরভাবে বলতে পারবেন।
স্বপ্ন এখনো চলমান
একদিন চাকরি হবে, ব্যস্ততা তখন নিশ্চয় বাড়বে। কিন্তু ছবি তোলার নেশা কখনো হারিয়ে যাবে না। সুযোগ পেলে নিজের একটি ক্যামেরা কিনবেন; তখন আরও দক্ষভাবে, আরও গল্পময় ছবি তুলবেন। নতুন নতুন গল্পের সন্ধানে পথচলা অব্যাহত থাকবে— মাহমুদার স্বপ্ন আপাতত এতটুকুই।

হাবিবা সারাবি ছিলেন আফগানিস্তানের ইতিহাসে প্রথম নারী গভর্নর। দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাই প্রশাসনে মহিলাবিষয়ক মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। হাবিবা সে সময় আফগান সরকারে তালেবানদের সঙ্গে শান্তি আলোচনার জন্য আলোচনাকারী দলের সদস্য ছিলেন। আফগানিস্তানে নারীদের নিয়ে কাজ করা যুক্তরাজ্যভ
২২ মে ২০২৪
নারী জাগরণের অগ্রদূত রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনকে নিয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকের বিদ্বেষমূলক মন্তব্যের নিন্দা জানিয়েছে আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক), বাংলাদেশ মহিলা পরিষদসহ বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন ও সংস্থা। আজ বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) আলাদা বিবৃতিতে এই নিন্দা জানায় সংগঠনগুলো।
২ দিন আগে
বিশ্বজুড়ে এক শ কোটির বেশি মানুষ যাদের বয়স ১৫ বছর কিংবা এর বেশি; তারা শৈশবে কোনো না কোনোভাবে যৌন সহিংসতার শিকার হয়েছে। এ ছাড়া ৬০ কোটির বেশি নারী তাঁর সঙ্গীর দ্বারা সহিসংতার শিকার হয়েছেন ২০২৩ সালে। দক্ষিণ এশিয়া ও আফ্রিকার সাব-সাহারা অঞ্চলে এমন নির্যাতনের হার সবচেয়ে বেশি।
৩ দিন আগে
প্রশ্ন: বিয়ের পর থেকে আমি নানা জুলুমের শিকার। বলতে গেলে, সব ধরনের জুলুম হয়েছে ১৪ বছর ধরে। আমাদের ৮ বছরের একটি সন্তান আছে। ইশারা-ইঙ্গিতে সাহায্য চায়। অর্থাৎ যৌতুক। সেটা পায় না বলে নানা কারণে রাগ প্রকাশ করে এবং চাপ দেয়। এর থেকে রক্ষা পেতে আমি কী করতে পারি?
৪ দিন আগেব্যারিস্টার ইফফাত গিয়াস আরেফিন

প্রশ্ন: বিয়ের পর থেকে আমি নানা জুলুমের শিকার। বলতে গেলে, সব ধরনের জুলুম হয়েছে ১৪ বছর ধরে। আমাদের ৮ বছরের একটি সন্তান আছে। ইশারা-ইঙ্গিতে সাহায্য চায়। অর্থাৎ যৌতুক। সেটা পায় না বলে নানা কারণে রাগ প্রকাশ করে এবং চাপ দেয়। এর থেকে রক্ষা পেতে আমি কী করতে পারি?
নুসরাত জিনিয়া, মুন্সিগঞ্জ
উত্তর: দীর্ঘ ১৪ বছরের মানসিক-শারীরিক নির্যাতন, অর্থনৈতিক চাপ এবং ইঙ্গিতে যৌতুক দাবি করা—এ সবই আইনের চোখে অপরাধ।
যৌতুক নিরোধ আইন, ২০১৮ অনুযায়ী
এ ক্ষেত্রে যা করতে পারেন, তা হলো:
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করার সুযোগ যদি শারীরিক বা মানসিক নির্যাতন থাকে—
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০-এ শাস্তির বিধান আছে।
যৌতুক মামলা করতে চাইলে কী হয়
যৌতুক মামলায় অভিযোগ করলে পুলিশ তদন্ত করবে এবং প্রমাণ পেলে মামলাটি আদালতে যাবে।
সে ক্ষেত্রে আপনার জন্য সুবিধা
ভরণপোষণ ও সন্তানের হেফাজতের অধিকার
আপনি পারিবারিক আদালতে ভরণপোষণ মামলা এবং সন্তানের হেফাজত মামলা করতে পারবেন। ৮ বছর বয়সী সন্তানের হেফাজত সাধারণত মায়ের পক্ষেই যায়, যদিও পরিস্থিতি অনুযায়ী বিচারক সিদ্ধান্ত নেন।
মামলা করা একটি বড় সিদ্ধান্ত। আপনার ভাববার বিষয়, নিজের ও সন্তানের নিরাপত্তা, স্বামীর সঙ্গে থাকা কি বাস্তবে সম্ভব, নাকি ক্ষতির ঝুঁকি বাড়ছে? আপনার কাছে পর্যাপ্ত প্রমাণ আছে কি না? তবে সম্পূর্ণ প্রমাণ না থাকলেও প্রাথমিক তথ্য দিয়ে মামলা করা যায়।
নিরাপদ আশ্রয় বা জরুরি সহায়তা যদি আপনি বিপদের মুখে থাকেন—
তবে মামলা করা একটি বড় সিদ্ধান্ত। আপনার ভাববার বিষয় নিজের ও সন্তানের নিরাপত্তা, স্বামীর সঙ্গে থাকা কি বাস্তবে সম্ভব, নাকি ক্ষতির ঝুঁকি বাড়ছে? আপনার কাছে পর্যাপ্ত তথ্যপ্রমাণ আছে কি না?
তবে সম্পূর্ণ প্রমাণ না থাকলেও প্রাথমিক তথ্য দিয়ে মামলা করা যায়।
পরিস্থিতি অনুযায়ী মামলা করা আপনার প্রতি চলমান নির্যাতন এবং যৌতুকের চাপ থেকে মুক্তির উপায় হতে পারে। তবে এ ধরনের সমস্যার সমাধানের জন্য একজন বিজ্ঞ আইনজীবীর পরামর্শ নিন।

প্রশ্ন: বিয়ের পর থেকে আমি নানা জুলুমের শিকার। বলতে গেলে, সব ধরনের জুলুম হয়েছে ১৪ বছর ধরে। আমাদের ৮ বছরের একটি সন্তান আছে। ইশারা-ইঙ্গিতে সাহায্য চায়। অর্থাৎ যৌতুক। সেটা পায় না বলে নানা কারণে রাগ প্রকাশ করে এবং চাপ দেয়। এর থেকে রক্ষা পেতে আমি কী করতে পারি?
নুসরাত জিনিয়া, মুন্সিগঞ্জ
উত্তর: দীর্ঘ ১৪ বছরের মানসিক-শারীরিক নির্যাতন, অর্থনৈতিক চাপ এবং ইঙ্গিতে যৌতুক দাবি করা—এ সবই আইনের চোখে অপরাধ।
যৌতুক নিরোধ আইন, ২০১৮ অনুযায়ী
এ ক্ষেত্রে যা করতে পারেন, তা হলো:
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করার সুযোগ যদি শারীরিক বা মানসিক নির্যাতন থাকে—
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০-এ শাস্তির বিধান আছে।
যৌতুক মামলা করতে চাইলে কী হয়
যৌতুক মামলায় অভিযোগ করলে পুলিশ তদন্ত করবে এবং প্রমাণ পেলে মামলাটি আদালতে যাবে।
সে ক্ষেত্রে আপনার জন্য সুবিধা
ভরণপোষণ ও সন্তানের হেফাজতের অধিকার
আপনি পারিবারিক আদালতে ভরণপোষণ মামলা এবং সন্তানের হেফাজত মামলা করতে পারবেন। ৮ বছর বয়সী সন্তানের হেফাজত সাধারণত মায়ের পক্ষেই যায়, যদিও পরিস্থিতি অনুযায়ী বিচারক সিদ্ধান্ত নেন।
মামলা করা একটি বড় সিদ্ধান্ত। আপনার ভাববার বিষয়, নিজের ও সন্তানের নিরাপত্তা, স্বামীর সঙ্গে থাকা কি বাস্তবে সম্ভব, নাকি ক্ষতির ঝুঁকি বাড়ছে? আপনার কাছে পর্যাপ্ত প্রমাণ আছে কি না? তবে সম্পূর্ণ প্রমাণ না থাকলেও প্রাথমিক তথ্য দিয়ে মামলা করা যায়।
নিরাপদ আশ্রয় বা জরুরি সহায়তা যদি আপনি বিপদের মুখে থাকেন—
তবে মামলা করা একটি বড় সিদ্ধান্ত। আপনার ভাববার বিষয় নিজের ও সন্তানের নিরাপত্তা, স্বামীর সঙ্গে থাকা কি বাস্তবে সম্ভব, নাকি ক্ষতির ঝুঁকি বাড়ছে? আপনার কাছে পর্যাপ্ত তথ্যপ্রমাণ আছে কি না?
তবে সম্পূর্ণ প্রমাণ না থাকলেও প্রাথমিক তথ্য দিয়ে মামলা করা যায়।
পরিস্থিতি অনুযায়ী মামলা করা আপনার প্রতি চলমান নির্যাতন এবং যৌতুকের চাপ থেকে মুক্তির উপায় হতে পারে। তবে এ ধরনের সমস্যার সমাধানের জন্য একজন বিজ্ঞ আইনজীবীর পরামর্শ নিন।

হাবিবা সারাবি ছিলেন আফগানিস্তানের ইতিহাসে প্রথম নারী গভর্নর। দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাই প্রশাসনে মহিলাবিষয়ক মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। হাবিবা সে সময় আফগান সরকারে তালেবানদের সঙ্গে শান্তি আলোচনার জন্য আলোচনাকারী দলের সদস্য ছিলেন। আফগানিস্তানে নারীদের নিয়ে কাজ করা যুক্তরাজ্যভ
২২ মে ২০২৪
নারী জাগরণের অগ্রদূত রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনকে নিয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকের বিদ্বেষমূলক মন্তব্যের নিন্দা জানিয়েছে আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক), বাংলাদেশ মহিলা পরিষদসহ বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন ও সংস্থা। আজ বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) আলাদা বিবৃতিতে এই নিন্দা জানায় সংগঠনগুলো।
২ দিন আগে
বিশ্বজুড়ে এক শ কোটির বেশি মানুষ যাদের বয়স ১৫ বছর কিংবা এর বেশি; তারা শৈশবে কোনো না কোনোভাবে যৌন সহিংসতার শিকার হয়েছে। এ ছাড়া ৬০ কোটির বেশি নারী তাঁর সঙ্গীর দ্বারা সহিসংতার শিকার হয়েছেন ২০২৩ সালে। দক্ষিণ এশিয়া ও আফ্রিকার সাব-সাহারা অঞ্চলে এমন নির্যাতনের হার সবচেয়ে বেশি।
৩ দিন আগে
মাহমুদা পারভীন। নামটি এখনো খুব পরিচিত নয়। সরকারি বাঙলা কলেজ থেকে অনার্স ও মাস্টার্স সম্পন্ন করেছেন তিনি। তবে তাঁর আরেকটি পরিচয় আরও উজ্জ্বল; তিনি একজন মুহূর্ত-শিকারি, ফটোগ্রাফার। কোনো প্রশিক্ষণ নেই, কোনো প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তির কাছে গ্রুমিংও নয়; নিজের ভালোবাসা আর অনুভূতির টানে তিনি ধরে রাখতে শুরু করেছ
৪ দিন আগে