কাশফিয়া আলম ঝিলিক, ঢাকা

কিছু মানুষের নাম শুনলেই মনের কোণে ভেসে ওঠে নানান গল্প। কারণ, সেই সব মানুষের গল্প এতবার এতভাবে পড়া হয়েছে যে সেগুলো এখন জীবন্ত হয়ে গেছে। কিন্তু বহুশ্রুত সেই সব গল্পও যদি চরিত্রটির মুখ থেকে শোনার সুযোগ আসে, নিজেকে ধন্য মনে হয়। এবার তেমনই একটি সুযোগ এলে হৃৎকম্প বেড়ে গেল। ধমনির রক্তস্রোতের শব্দ শুনতে শুনতে মোবাইল ফোনের নম্বর টিপেই ফেললাম। অপর প্রান্ত থেকে ভেসে এল, ‘হ্যালো।’ বুঝলাম, বাংলাদেশের ওয়ান অ্যান্ড অনলি রাণী হামিদ অপরিচিত নম্বর থেকে ফোন গেলেও সেটা রিসিভ করেন। নিজের কথা সবিস্তারে বললাম তাঁকে। বললাম নিজের ইচ্ছার কথাও। খুব বিনয়ের সঙ্গে বললেন, ‘ফোনে কথা বললে হয় না? এখন আর সাক্ষাৎকার দিতে ভালো লাগে না যে!’ কথা যেভাবেই হোক, বললেই চলবে। আমি রাজি হয়ে গেলাম। তিনি নামাজের জন্য কিছু সময় চেয়ে নিলেন।
মধ্যবর্তী এই সময়গুলোতে মনে মনে তাঁকে করার মতো কিছু প্রশ্ন খুঁজতে থাকলাম। কিন্তু হাতি, ঘোড়া মেরে, মন্ত্রী-সান্ত্রি উড়িয়ে রাজার সঙ্গে টক্কর দিয়ে যিনি কিস্তিমাত করেছেন, তাঁকে কুপোকাত করার মতো কোনো প্রশ্ন যে আমার কাছে নেই, সেটা ভেবে স্বস্তির নিশ্বাস ছাড়লাম। ‘যাক বাবা’ বলে সময়মতো আবারও তাঁর মোবাইল ফোনে কল দিলাম। ধরেই বললেন, ‘হ্যাঁ, এবার বলো!’ অর্বাচীনের মতো জানতে চাইলাম, ‘কেন দাবা খেলা বেছে নিয়েছিলেন?’ খুবই সাবলীল হাসি হেসে বললেন, ‘জানি না তো! ছোটবেলায় আমার বাবাকে দেখতাম অনেক খেলাধুলা করতেন। পুলিশ ছিলেন তো। অনেক ধরনের খেলাধুলার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। পাশাপাশি দাবা খেলতেন। বাবাকে খুব প্রশ্ন করতাম তখন। এটা কীভাবে হয়, ওই চালটা কেমন। অবসরে ভাইবোনদের সঙ্গে খেলতাম। এভাবেই দাবার প্রতি ভালোবাসা তৈরি হয় ছোটবেলা থেকে। কিন্তু তখন কেউ দাবা খেলত না। স্কুলে অবশ্য আমি দৌড়ে চ্যাম্পিয়ন ছিলাম।’ জানতে চাইলাম, ‘তাহলে ছোটবেলা থেকেই…।’ কথার পিঠেই বলে উঠলেন, ‘না না! আমি যে আমলের কথা বলছি, তখন মেয়েদের দাবা খেলার প্রচলনই ছিল না এ দেশে। আমি খেলা শুরু করেছি বিয়ের পর।’
এরপর খুব উৎফুল্ল কণ্ঠে রাণী হামিদ বলে গেলেন তাঁর গৃহিণী থেকে দাবার রাণী হয়ে ওঠার গল্প। বলে গেলেন দাবার চৌষট্টি খোপের বোর্ডটাকে জীবনের সঙ্গে একেবারে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে নিয়ে কীভাবে হয়ে উঠলেন দাবার রানি। মজা করে বলেন, ‘আমি তো নির্ভেজাল একজন হাউস ওয়াইফ ছিলাম, যার মাথায় সারাক্ষণ সংসার আর বাচ্চা ছিল। দাবা যে খেলব, এটার কোনো চিন্তাই ছিল না মাথায়।’
১৮ বছর বয়সে বিয়ে হওয়ার পর স্বামী আর চার সন্তান নিয়ে ছিল রাণীর নিজের ভুবন। একবার মেয়ে স্কুল থেকে ফিরে জানাল, তার বান্ধবীর বাবা অনেক বড় দাবাড়ু। রাণী শুনে হাসির ছলেই মেয়েকে বলেছিলেন, ‘একদিন আমার সঙ্গে খেলতে বলিস, দেখব কত ভালো দাবাড়ু।’ সেই বান্ধবীর বাবা ছিলেন ওই সময়ের বিখ্যাত দাবাড়ু ড. আকমল হোসেন। তাঁর সঙ্গে এক দান খেলে রাণী বুঝেছিলেন, দাবার অনেক কিছুই আরও বুঝতে হবে তাঁকে। এরপর আকমল হোসেনের কাছেই দাবা শিখতে শুরু করেন। ১৯৭৭ সালে নবদিগন্ত সংসদ নামের একটি ক্লাবের দাবা প্রতিযোগিতায় হয়ে যান চ্যাম্পিয়ন। সেখান থেকে নতুন জীবন শুরু হয় এক সাধারণ গৃহিণীর।
কথার মাঝে জানতে চাইলাম, ‘নির্ভেজাল গৃহিণী ছিলেন, তাহলে দাবার মতো একটা খেলা খেলবেন বলে ভাবলেন কেন?’ খুব সাদামাটা উত্তর এল, ‘অনেকেই বলেন, দাবা বুদ্ধির খেলা, ধৈর্যের খেলা। কিন্তু আমার কাছে দাবা একটা মজার খেলা। এটা খেলে আমি আনন্দ পাই। অনেক কিছু করে ফেলব ভেবে খেলা শুরু করিনি। খেলতে খেলতে খেলাটা শিখে নিয়েছি। দাবার প্রতি ভালোবাসা বাবার খেলা দেখে। তাই উত্তরাধিকারসূত্রে বাবার কিছু নেওয়ার বেলায় তাঁর রেখে যাওয়া দাবার বোর্ডটাই দখল করেছিলাম আমি।’ আবার একটু হেসে নিলেন আপন মনে। তাঁর স্বচ্ছ আর নিপাট কথাবার্তা আমাকে অনেক বেশি সহজ করে ফেলেছিল ততক্ষণে। জানতে চাইলাম, ‘সেই ১৯৭৭ সাল থেকে খেলছেন, কত বড় বড় রেকর্ড করেছেন ব্যক্তিগতভাবে। দেশের হয়ে অনেকবার খেলেছেন, সম্মান বয়ে এনেছেন। এসব ভাবলে কী মনে হয়?’ এবার নরম, তবে কিছুটা হতাশামাখা কণ্ঠে উত্তর এল, ‘আমি যখন খেলা শুরু করলাম, তখন জানতামই না, বই পড়ে দাবা খেলতে হয়। মেয়েদের দেখতাম হাতে করে বই নিয়ে আসত। তখন তাদের দেখে আমিও পড়তাম ওই বইগুলো। ধীরে ধীরে নিজেকে গড়লাম। সংসার, বাচ্চা সামলিয়ে খেলাটাই ছিল ধ্যানজ্ঞান। যা অর্জন করেছি, সব অবশ্যই গর্বের। এত কিছু ভেবে করিনি।’
দেশে নারীদের দাবা খেলার পথিকৃৎ হিসেবে রাণী হামিদের নাম উচ্চারিত হয়। জানতে চাইলাম, তাঁর ক্যারিয়ারের শুরুতে খেলার পরিবেশ আর এখনকার পরিবেশের ভিন্নতা কোথায়। প্রশ্ন শুনে একটু সময় নিলেন। বললেন, দেখো, পরিবেশ তো বদলেছেই। আগের দিনে দাবা খেলার পাশাপাশি খেলোয়াড়দের মধ্যে যে আড্ডাটা হতো, তা এখন অনেকটাই হয়ে ওঠে না। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম আর মোবাইল ফোনই আড্ডার ক্ষেত্রটা দখল করে নিয়েছে। তবে আগের চেয়ে সুযোগ অনেক বেড়েছে এখন। আমরা খুব কম ট্রেনিংয়ে অংশ নেওয়ার সুযোগ পেয়েছি। আজকালকার বাচ্চারা এই সুযোগগুলো পাচ্ছে, স্পনসর পাচ্ছে। খেলতে বাইরে যাচ্ছে। সুযোগগুলো কাজে লাগাতে পারলেই ভালো করা সম্ভব।’
এবার উল্টো প্রশ্ন ভেসে এল, ‘আর কিছু জানতে চাও?’ তাঁর এমন প্রশ্ন আমাকে মনে করিয়ে দিল, আমি এবার বোধ হয় বেশি সময় নিয়ে নিচ্ছি। ঝটপট বলে ফেললাম নিজের আবেগের কথা। একজন মানুষ যিনি ৩৩ বছর বয়স থেকে দাবার ঘুঁটির সঙ্গে ঘর বেঁধেছেন, তাঁর সঙ্গে সরাসরি দেখা করতে পারা আমার জন্য অনেক আনন্দের হতো। এ কথা বলায় আবারও নিপাট হাসি হেসে রাণী হামিদ বললেন, ‘সামনে সেপ্টেম্বরেই একটা টুর্নামেন্ট আছে। চলে এসো, সেখানে দেখা করব। চলে এসো!’ একটা সরল আহ্বান আবারও বুঝিয়ে দিল, দাবা আসলেই মজার খেলা। চালের মারপ্যাঁচ থাকলেও তা কারও অভিব্যক্তি কিংবা ব্যক্তিগত জীবনকে প্রভাবিত করতে পারে না। এত অর্জনের পরেও রাণী হামিদ একজন সরল মানুষ। যিনি স্বপ্ন দেখেন, আরও খেলবেন। বলছিলেন, ‘বয়সের কারণে অনেক ওষুধ খেতে হয়। একেক ওষুধের একেক পাওয়ার। তবে যত দিন মস্তিষ্ক সচল থাকবে, আমি খেলে যাব।’

কিছু মানুষের নাম শুনলেই মনের কোণে ভেসে ওঠে নানান গল্প। কারণ, সেই সব মানুষের গল্প এতবার এতভাবে পড়া হয়েছে যে সেগুলো এখন জীবন্ত হয়ে গেছে। কিন্তু বহুশ্রুত সেই সব গল্পও যদি চরিত্রটির মুখ থেকে শোনার সুযোগ আসে, নিজেকে ধন্য মনে হয়। এবার তেমনই একটি সুযোগ এলে হৃৎকম্প বেড়ে গেল। ধমনির রক্তস্রোতের শব্দ শুনতে শুনতে মোবাইল ফোনের নম্বর টিপেই ফেললাম। অপর প্রান্ত থেকে ভেসে এল, ‘হ্যালো।’ বুঝলাম, বাংলাদেশের ওয়ান অ্যান্ড অনলি রাণী হামিদ অপরিচিত নম্বর থেকে ফোন গেলেও সেটা রিসিভ করেন। নিজের কথা সবিস্তারে বললাম তাঁকে। বললাম নিজের ইচ্ছার কথাও। খুব বিনয়ের সঙ্গে বললেন, ‘ফোনে কথা বললে হয় না? এখন আর সাক্ষাৎকার দিতে ভালো লাগে না যে!’ কথা যেভাবেই হোক, বললেই চলবে। আমি রাজি হয়ে গেলাম। তিনি নামাজের জন্য কিছু সময় চেয়ে নিলেন।
মধ্যবর্তী এই সময়গুলোতে মনে মনে তাঁকে করার মতো কিছু প্রশ্ন খুঁজতে থাকলাম। কিন্তু হাতি, ঘোড়া মেরে, মন্ত্রী-সান্ত্রি উড়িয়ে রাজার সঙ্গে টক্কর দিয়ে যিনি কিস্তিমাত করেছেন, তাঁকে কুপোকাত করার মতো কোনো প্রশ্ন যে আমার কাছে নেই, সেটা ভেবে স্বস্তির নিশ্বাস ছাড়লাম। ‘যাক বাবা’ বলে সময়মতো আবারও তাঁর মোবাইল ফোনে কল দিলাম। ধরেই বললেন, ‘হ্যাঁ, এবার বলো!’ অর্বাচীনের মতো জানতে চাইলাম, ‘কেন দাবা খেলা বেছে নিয়েছিলেন?’ খুবই সাবলীল হাসি হেসে বললেন, ‘জানি না তো! ছোটবেলায় আমার বাবাকে দেখতাম অনেক খেলাধুলা করতেন। পুলিশ ছিলেন তো। অনেক ধরনের খেলাধুলার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। পাশাপাশি দাবা খেলতেন। বাবাকে খুব প্রশ্ন করতাম তখন। এটা কীভাবে হয়, ওই চালটা কেমন। অবসরে ভাইবোনদের সঙ্গে খেলতাম। এভাবেই দাবার প্রতি ভালোবাসা তৈরি হয় ছোটবেলা থেকে। কিন্তু তখন কেউ দাবা খেলত না। স্কুলে অবশ্য আমি দৌড়ে চ্যাম্পিয়ন ছিলাম।’ জানতে চাইলাম, ‘তাহলে ছোটবেলা থেকেই…।’ কথার পিঠেই বলে উঠলেন, ‘না না! আমি যে আমলের কথা বলছি, তখন মেয়েদের দাবা খেলার প্রচলনই ছিল না এ দেশে। আমি খেলা শুরু করেছি বিয়ের পর।’
এরপর খুব উৎফুল্ল কণ্ঠে রাণী হামিদ বলে গেলেন তাঁর গৃহিণী থেকে দাবার রাণী হয়ে ওঠার গল্প। বলে গেলেন দাবার চৌষট্টি খোপের বোর্ডটাকে জীবনের সঙ্গে একেবারে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে নিয়ে কীভাবে হয়ে উঠলেন দাবার রানি। মজা করে বলেন, ‘আমি তো নির্ভেজাল একজন হাউস ওয়াইফ ছিলাম, যার মাথায় সারাক্ষণ সংসার আর বাচ্চা ছিল। দাবা যে খেলব, এটার কোনো চিন্তাই ছিল না মাথায়।’
১৮ বছর বয়সে বিয়ে হওয়ার পর স্বামী আর চার সন্তান নিয়ে ছিল রাণীর নিজের ভুবন। একবার মেয়ে স্কুল থেকে ফিরে জানাল, তার বান্ধবীর বাবা অনেক বড় দাবাড়ু। রাণী শুনে হাসির ছলেই মেয়েকে বলেছিলেন, ‘একদিন আমার সঙ্গে খেলতে বলিস, দেখব কত ভালো দাবাড়ু।’ সেই বান্ধবীর বাবা ছিলেন ওই সময়ের বিখ্যাত দাবাড়ু ড. আকমল হোসেন। তাঁর সঙ্গে এক দান খেলে রাণী বুঝেছিলেন, দাবার অনেক কিছুই আরও বুঝতে হবে তাঁকে। এরপর আকমল হোসেনের কাছেই দাবা শিখতে শুরু করেন। ১৯৭৭ সালে নবদিগন্ত সংসদ নামের একটি ক্লাবের দাবা প্রতিযোগিতায় হয়ে যান চ্যাম্পিয়ন। সেখান থেকে নতুন জীবন শুরু হয় এক সাধারণ গৃহিণীর।
কথার মাঝে জানতে চাইলাম, ‘নির্ভেজাল গৃহিণী ছিলেন, তাহলে দাবার মতো একটা খেলা খেলবেন বলে ভাবলেন কেন?’ খুব সাদামাটা উত্তর এল, ‘অনেকেই বলেন, দাবা বুদ্ধির খেলা, ধৈর্যের খেলা। কিন্তু আমার কাছে দাবা একটা মজার খেলা। এটা খেলে আমি আনন্দ পাই। অনেক কিছু করে ফেলব ভেবে খেলা শুরু করিনি। খেলতে খেলতে খেলাটা শিখে নিয়েছি। দাবার প্রতি ভালোবাসা বাবার খেলা দেখে। তাই উত্তরাধিকারসূত্রে বাবার কিছু নেওয়ার বেলায় তাঁর রেখে যাওয়া দাবার বোর্ডটাই দখল করেছিলাম আমি।’ আবার একটু হেসে নিলেন আপন মনে। তাঁর স্বচ্ছ আর নিপাট কথাবার্তা আমাকে অনেক বেশি সহজ করে ফেলেছিল ততক্ষণে। জানতে চাইলাম, ‘সেই ১৯৭৭ সাল থেকে খেলছেন, কত বড় বড় রেকর্ড করেছেন ব্যক্তিগতভাবে। দেশের হয়ে অনেকবার খেলেছেন, সম্মান বয়ে এনেছেন। এসব ভাবলে কী মনে হয়?’ এবার নরম, তবে কিছুটা হতাশামাখা কণ্ঠে উত্তর এল, ‘আমি যখন খেলা শুরু করলাম, তখন জানতামই না, বই পড়ে দাবা খেলতে হয়। মেয়েদের দেখতাম হাতে করে বই নিয়ে আসত। তখন তাদের দেখে আমিও পড়তাম ওই বইগুলো। ধীরে ধীরে নিজেকে গড়লাম। সংসার, বাচ্চা সামলিয়ে খেলাটাই ছিল ধ্যানজ্ঞান। যা অর্জন করেছি, সব অবশ্যই গর্বের। এত কিছু ভেবে করিনি।’
দেশে নারীদের দাবা খেলার পথিকৃৎ হিসেবে রাণী হামিদের নাম উচ্চারিত হয়। জানতে চাইলাম, তাঁর ক্যারিয়ারের শুরুতে খেলার পরিবেশ আর এখনকার পরিবেশের ভিন্নতা কোথায়। প্রশ্ন শুনে একটু সময় নিলেন। বললেন, দেখো, পরিবেশ তো বদলেছেই। আগের দিনে দাবা খেলার পাশাপাশি খেলোয়াড়দের মধ্যে যে আড্ডাটা হতো, তা এখন অনেকটাই হয়ে ওঠে না। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম আর মোবাইল ফোনই আড্ডার ক্ষেত্রটা দখল করে নিয়েছে। তবে আগের চেয়ে সুযোগ অনেক বেড়েছে এখন। আমরা খুব কম ট্রেনিংয়ে অংশ নেওয়ার সুযোগ পেয়েছি। আজকালকার বাচ্চারা এই সুযোগগুলো পাচ্ছে, স্পনসর পাচ্ছে। খেলতে বাইরে যাচ্ছে। সুযোগগুলো কাজে লাগাতে পারলেই ভালো করা সম্ভব।’
এবার উল্টো প্রশ্ন ভেসে এল, ‘আর কিছু জানতে চাও?’ তাঁর এমন প্রশ্ন আমাকে মনে করিয়ে দিল, আমি এবার বোধ হয় বেশি সময় নিয়ে নিচ্ছি। ঝটপট বলে ফেললাম নিজের আবেগের কথা। একজন মানুষ যিনি ৩৩ বছর বয়স থেকে দাবার ঘুঁটির সঙ্গে ঘর বেঁধেছেন, তাঁর সঙ্গে সরাসরি দেখা করতে পারা আমার জন্য অনেক আনন্দের হতো। এ কথা বলায় আবারও নিপাট হাসি হেসে রাণী হামিদ বললেন, ‘সামনে সেপ্টেম্বরেই একটা টুর্নামেন্ট আছে। চলে এসো, সেখানে দেখা করব। চলে এসো!’ একটা সরল আহ্বান আবারও বুঝিয়ে দিল, দাবা আসলেই মজার খেলা। চালের মারপ্যাঁচ থাকলেও তা কারও অভিব্যক্তি কিংবা ব্যক্তিগত জীবনকে প্রভাবিত করতে পারে না। এত অর্জনের পরেও রাণী হামিদ একজন সরল মানুষ। যিনি স্বপ্ন দেখেন, আরও খেলবেন। বলছিলেন, ‘বয়সের কারণে অনেক ওষুধ খেতে হয়। একেক ওষুধের একেক পাওয়ার। তবে যত দিন মস্তিষ্ক সচল থাকবে, আমি খেলে যাব।’
কাশফিয়া আলম ঝিলিক, ঢাকা

কিছু মানুষের নাম শুনলেই মনের কোণে ভেসে ওঠে নানান গল্প। কারণ, সেই সব মানুষের গল্প এতবার এতভাবে পড়া হয়েছে যে সেগুলো এখন জীবন্ত হয়ে গেছে। কিন্তু বহুশ্রুত সেই সব গল্পও যদি চরিত্রটির মুখ থেকে শোনার সুযোগ আসে, নিজেকে ধন্য মনে হয়। এবার তেমনই একটি সুযোগ এলে হৃৎকম্প বেড়ে গেল। ধমনির রক্তস্রোতের শব্দ শুনতে শুনতে মোবাইল ফোনের নম্বর টিপেই ফেললাম। অপর প্রান্ত থেকে ভেসে এল, ‘হ্যালো।’ বুঝলাম, বাংলাদেশের ওয়ান অ্যান্ড অনলি রাণী হামিদ অপরিচিত নম্বর থেকে ফোন গেলেও সেটা রিসিভ করেন। নিজের কথা সবিস্তারে বললাম তাঁকে। বললাম নিজের ইচ্ছার কথাও। খুব বিনয়ের সঙ্গে বললেন, ‘ফোনে কথা বললে হয় না? এখন আর সাক্ষাৎকার দিতে ভালো লাগে না যে!’ কথা যেভাবেই হোক, বললেই চলবে। আমি রাজি হয়ে গেলাম। তিনি নামাজের জন্য কিছু সময় চেয়ে নিলেন।
মধ্যবর্তী এই সময়গুলোতে মনে মনে তাঁকে করার মতো কিছু প্রশ্ন খুঁজতে থাকলাম। কিন্তু হাতি, ঘোড়া মেরে, মন্ত্রী-সান্ত্রি উড়িয়ে রাজার সঙ্গে টক্কর দিয়ে যিনি কিস্তিমাত করেছেন, তাঁকে কুপোকাত করার মতো কোনো প্রশ্ন যে আমার কাছে নেই, সেটা ভেবে স্বস্তির নিশ্বাস ছাড়লাম। ‘যাক বাবা’ বলে সময়মতো আবারও তাঁর মোবাইল ফোনে কল দিলাম। ধরেই বললেন, ‘হ্যাঁ, এবার বলো!’ অর্বাচীনের মতো জানতে চাইলাম, ‘কেন দাবা খেলা বেছে নিয়েছিলেন?’ খুবই সাবলীল হাসি হেসে বললেন, ‘জানি না তো! ছোটবেলায় আমার বাবাকে দেখতাম অনেক খেলাধুলা করতেন। পুলিশ ছিলেন তো। অনেক ধরনের খেলাধুলার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। পাশাপাশি দাবা খেলতেন। বাবাকে খুব প্রশ্ন করতাম তখন। এটা কীভাবে হয়, ওই চালটা কেমন। অবসরে ভাইবোনদের সঙ্গে খেলতাম। এভাবেই দাবার প্রতি ভালোবাসা তৈরি হয় ছোটবেলা থেকে। কিন্তু তখন কেউ দাবা খেলত না। স্কুলে অবশ্য আমি দৌড়ে চ্যাম্পিয়ন ছিলাম।’ জানতে চাইলাম, ‘তাহলে ছোটবেলা থেকেই…।’ কথার পিঠেই বলে উঠলেন, ‘না না! আমি যে আমলের কথা বলছি, তখন মেয়েদের দাবা খেলার প্রচলনই ছিল না এ দেশে। আমি খেলা শুরু করেছি বিয়ের পর।’
এরপর খুব উৎফুল্ল কণ্ঠে রাণী হামিদ বলে গেলেন তাঁর গৃহিণী থেকে দাবার রাণী হয়ে ওঠার গল্প। বলে গেলেন দাবার চৌষট্টি খোপের বোর্ডটাকে জীবনের সঙ্গে একেবারে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে নিয়ে কীভাবে হয়ে উঠলেন দাবার রানি। মজা করে বলেন, ‘আমি তো নির্ভেজাল একজন হাউস ওয়াইফ ছিলাম, যার মাথায় সারাক্ষণ সংসার আর বাচ্চা ছিল। দাবা যে খেলব, এটার কোনো চিন্তাই ছিল না মাথায়।’
১৮ বছর বয়সে বিয়ে হওয়ার পর স্বামী আর চার সন্তান নিয়ে ছিল রাণীর নিজের ভুবন। একবার মেয়ে স্কুল থেকে ফিরে জানাল, তার বান্ধবীর বাবা অনেক বড় দাবাড়ু। রাণী শুনে হাসির ছলেই মেয়েকে বলেছিলেন, ‘একদিন আমার সঙ্গে খেলতে বলিস, দেখব কত ভালো দাবাড়ু।’ সেই বান্ধবীর বাবা ছিলেন ওই সময়ের বিখ্যাত দাবাড়ু ড. আকমল হোসেন। তাঁর সঙ্গে এক দান খেলে রাণী বুঝেছিলেন, দাবার অনেক কিছুই আরও বুঝতে হবে তাঁকে। এরপর আকমল হোসেনের কাছেই দাবা শিখতে শুরু করেন। ১৯৭৭ সালে নবদিগন্ত সংসদ নামের একটি ক্লাবের দাবা প্রতিযোগিতায় হয়ে যান চ্যাম্পিয়ন। সেখান থেকে নতুন জীবন শুরু হয় এক সাধারণ গৃহিণীর।
কথার মাঝে জানতে চাইলাম, ‘নির্ভেজাল গৃহিণী ছিলেন, তাহলে দাবার মতো একটা খেলা খেলবেন বলে ভাবলেন কেন?’ খুব সাদামাটা উত্তর এল, ‘অনেকেই বলেন, দাবা বুদ্ধির খেলা, ধৈর্যের খেলা। কিন্তু আমার কাছে দাবা একটা মজার খেলা। এটা খেলে আমি আনন্দ পাই। অনেক কিছু করে ফেলব ভেবে খেলা শুরু করিনি। খেলতে খেলতে খেলাটা শিখে নিয়েছি। দাবার প্রতি ভালোবাসা বাবার খেলা দেখে। তাই উত্তরাধিকারসূত্রে বাবার কিছু নেওয়ার বেলায় তাঁর রেখে যাওয়া দাবার বোর্ডটাই দখল করেছিলাম আমি।’ আবার একটু হেসে নিলেন আপন মনে। তাঁর স্বচ্ছ আর নিপাট কথাবার্তা আমাকে অনেক বেশি সহজ করে ফেলেছিল ততক্ষণে। জানতে চাইলাম, ‘সেই ১৯৭৭ সাল থেকে খেলছেন, কত বড় বড় রেকর্ড করেছেন ব্যক্তিগতভাবে। দেশের হয়ে অনেকবার খেলেছেন, সম্মান বয়ে এনেছেন। এসব ভাবলে কী মনে হয়?’ এবার নরম, তবে কিছুটা হতাশামাখা কণ্ঠে উত্তর এল, ‘আমি যখন খেলা শুরু করলাম, তখন জানতামই না, বই পড়ে দাবা খেলতে হয়। মেয়েদের দেখতাম হাতে করে বই নিয়ে আসত। তখন তাদের দেখে আমিও পড়তাম ওই বইগুলো। ধীরে ধীরে নিজেকে গড়লাম। সংসার, বাচ্চা সামলিয়ে খেলাটাই ছিল ধ্যানজ্ঞান। যা অর্জন করেছি, সব অবশ্যই গর্বের। এত কিছু ভেবে করিনি।’
দেশে নারীদের দাবা খেলার পথিকৃৎ হিসেবে রাণী হামিদের নাম উচ্চারিত হয়। জানতে চাইলাম, তাঁর ক্যারিয়ারের শুরুতে খেলার পরিবেশ আর এখনকার পরিবেশের ভিন্নতা কোথায়। প্রশ্ন শুনে একটু সময় নিলেন। বললেন, দেখো, পরিবেশ তো বদলেছেই। আগের দিনে দাবা খেলার পাশাপাশি খেলোয়াড়দের মধ্যে যে আড্ডাটা হতো, তা এখন অনেকটাই হয়ে ওঠে না। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম আর মোবাইল ফোনই আড্ডার ক্ষেত্রটা দখল করে নিয়েছে। তবে আগের চেয়ে সুযোগ অনেক বেড়েছে এখন। আমরা খুব কম ট্রেনিংয়ে অংশ নেওয়ার সুযোগ পেয়েছি। আজকালকার বাচ্চারা এই সুযোগগুলো পাচ্ছে, স্পনসর পাচ্ছে। খেলতে বাইরে যাচ্ছে। সুযোগগুলো কাজে লাগাতে পারলেই ভালো করা সম্ভব।’
এবার উল্টো প্রশ্ন ভেসে এল, ‘আর কিছু জানতে চাও?’ তাঁর এমন প্রশ্ন আমাকে মনে করিয়ে দিল, আমি এবার বোধ হয় বেশি সময় নিয়ে নিচ্ছি। ঝটপট বলে ফেললাম নিজের আবেগের কথা। একজন মানুষ যিনি ৩৩ বছর বয়স থেকে দাবার ঘুঁটির সঙ্গে ঘর বেঁধেছেন, তাঁর সঙ্গে সরাসরি দেখা করতে পারা আমার জন্য অনেক আনন্দের হতো। এ কথা বলায় আবারও নিপাট হাসি হেসে রাণী হামিদ বললেন, ‘সামনে সেপ্টেম্বরেই একটা টুর্নামেন্ট আছে। চলে এসো, সেখানে দেখা করব। চলে এসো!’ একটা সরল আহ্বান আবারও বুঝিয়ে দিল, দাবা আসলেই মজার খেলা। চালের মারপ্যাঁচ থাকলেও তা কারও অভিব্যক্তি কিংবা ব্যক্তিগত জীবনকে প্রভাবিত করতে পারে না। এত অর্জনের পরেও রাণী হামিদ একজন সরল মানুষ। যিনি স্বপ্ন দেখেন, আরও খেলবেন। বলছিলেন, ‘বয়সের কারণে অনেক ওষুধ খেতে হয়। একেক ওষুধের একেক পাওয়ার। তবে যত দিন মস্তিষ্ক সচল থাকবে, আমি খেলে যাব।’

কিছু মানুষের নাম শুনলেই মনের কোণে ভেসে ওঠে নানান গল্প। কারণ, সেই সব মানুষের গল্প এতবার এতভাবে পড়া হয়েছে যে সেগুলো এখন জীবন্ত হয়ে গেছে। কিন্তু বহুশ্রুত সেই সব গল্পও যদি চরিত্রটির মুখ থেকে শোনার সুযোগ আসে, নিজেকে ধন্য মনে হয়। এবার তেমনই একটি সুযোগ এলে হৃৎকম্প বেড়ে গেল। ধমনির রক্তস্রোতের শব্দ শুনতে শুনতে মোবাইল ফোনের নম্বর টিপেই ফেললাম। অপর প্রান্ত থেকে ভেসে এল, ‘হ্যালো।’ বুঝলাম, বাংলাদেশের ওয়ান অ্যান্ড অনলি রাণী হামিদ অপরিচিত নম্বর থেকে ফোন গেলেও সেটা রিসিভ করেন। নিজের কথা সবিস্তারে বললাম তাঁকে। বললাম নিজের ইচ্ছার কথাও। খুব বিনয়ের সঙ্গে বললেন, ‘ফোনে কথা বললে হয় না? এখন আর সাক্ষাৎকার দিতে ভালো লাগে না যে!’ কথা যেভাবেই হোক, বললেই চলবে। আমি রাজি হয়ে গেলাম। তিনি নামাজের জন্য কিছু সময় চেয়ে নিলেন।
মধ্যবর্তী এই সময়গুলোতে মনে মনে তাঁকে করার মতো কিছু প্রশ্ন খুঁজতে থাকলাম। কিন্তু হাতি, ঘোড়া মেরে, মন্ত্রী-সান্ত্রি উড়িয়ে রাজার সঙ্গে টক্কর দিয়ে যিনি কিস্তিমাত করেছেন, তাঁকে কুপোকাত করার মতো কোনো প্রশ্ন যে আমার কাছে নেই, সেটা ভেবে স্বস্তির নিশ্বাস ছাড়লাম। ‘যাক বাবা’ বলে সময়মতো আবারও তাঁর মোবাইল ফোনে কল দিলাম। ধরেই বললেন, ‘হ্যাঁ, এবার বলো!’ অর্বাচীনের মতো জানতে চাইলাম, ‘কেন দাবা খেলা বেছে নিয়েছিলেন?’ খুবই সাবলীল হাসি হেসে বললেন, ‘জানি না তো! ছোটবেলায় আমার বাবাকে দেখতাম অনেক খেলাধুলা করতেন। পুলিশ ছিলেন তো। অনেক ধরনের খেলাধুলার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। পাশাপাশি দাবা খেলতেন। বাবাকে খুব প্রশ্ন করতাম তখন। এটা কীভাবে হয়, ওই চালটা কেমন। অবসরে ভাইবোনদের সঙ্গে খেলতাম। এভাবেই দাবার প্রতি ভালোবাসা তৈরি হয় ছোটবেলা থেকে। কিন্তু তখন কেউ দাবা খেলত না। স্কুলে অবশ্য আমি দৌড়ে চ্যাম্পিয়ন ছিলাম।’ জানতে চাইলাম, ‘তাহলে ছোটবেলা থেকেই…।’ কথার পিঠেই বলে উঠলেন, ‘না না! আমি যে আমলের কথা বলছি, তখন মেয়েদের দাবা খেলার প্রচলনই ছিল না এ দেশে। আমি খেলা শুরু করেছি বিয়ের পর।’
এরপর খুব উৎফুল্ল কণ্ঠে রাণী হামিদ বলে গেলেন তাঁর গৃহিণী থেকে দাবার রাণী হয়ে ওঠার গল্প। বলে গেলেন দাবার চৌষট্টি খোপের বোর্ডটাকে জীবনের সঙ্গে একেবারে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে নিয়ে কীভাবে হয়ে উঠলেন দাবার রানি। মজা করে বলেন, ‘আমি তো নির্ভেজাল একজন হাউস ওয়াইফ ছিলাম, যার মাথায় সারাক্ষণ সংসার আর বাচ্চা ছিল। দাবা যে খেলব, এটার কোনো চিন্তাই ছিল না মাথায়।’
১৮ বছর বয়সে বিয়ে হওয়ার পর স্বামী আর চার সন্তান নিয়ে ছিল রাণীর নিজের ভুবন। একবার মেয়ে স্কুল থেকে ফিরে জানাল, তার বান্ধবীর বাবা অনেক বড় দাবাড়ু। রাণী শুনে হাসির ছলেই মেয়েকে বলেছিলেন, ‘একদিন আমার সঙ্গে খেলতে বলিস, দেখব কত ভালো দাবাড়ু।’ সেই বান্ধবীর বাবা ছিলেন ওই সময়ের বিখ্যাত দাবাড়ু ড. আকমল হোসেন। তাঁর সঙ্গে এক দান খেলে রাণী বুঝেছিলেন, দাবার অনেক কিছুই আরও বুঝতে হবে তাঁকে। এরপর আকমল হোসেনের কাছেই দাবা শিখতে শুরু করেন। ১৯৭৭ সালে নবদিগন্ত সংসদ নামের একটি ক্লাবের দাবা প্রতিযোগিতায় হয়ে যান চ্যাম্পিয়ন। সেখান থেকে নতুন জীবন শুরু হয় এক সাধারণ গৃহিণীর।
কথার মাঝে জানতে চাইলাম, ‘নির্ভেজাল গৃহিণী ছিলেন, তাহলে দাবার মতো একটা খেলা খেলবেন বলে ভাবলেন কেন?’ খুব সাদামাটা উত্তর এল, ‘অনেকেই বলেন, দাবা বুদ্ধির খেলা, ধৈর্যের খেলা। কিন্তু আমার কাছে দাবা একটা মজার খেলা। এটা খেলে আমি আনন্দ পাই। অনেক কিছু করে ফেলব ভেবে খেলা শুরু করিনি। খেলতে খেলতে খেলাটা শিখে নিয়েছি। দাবার প্রতি ভালোবাসা বাবার খেলা দেখে। তাই উত্তরাধিকারসূত্রে বাবার কিছু নেওয়ার বেলায় তাঁর রেখে যাওয়া দাবার বোর্ডটাই দখল করেছিলাম আমি।’ আবার একটু হেসে নিলেন আপন মনে। তাঁর স্বচ্ছ আর নিপাট কথাবার্তা আমাকে অনেক বেশি সহজ করে ফেলেছিল ততক্ষণে। জানতে চাইলাম, ‘সেই ১৯৭৭ সাল থেকে খেলছেন, কত বড় বড় রেকর্ড করেছেন ব্যক্তিগতভাবে। দেশের হয়ে অনেকবার খেলেছেন, সম্মান বয়ে এনেছেন। এসব ভাবলে কী মনে হয়?’ এবার নরম, তবে কিছুটা হতাশামাখা কণ্ঠে উত্তর এল, ‘আমি যখন খেলা শুরু করলাম, তখন জানতামই না, বই পড়ে দাবা খেলতে হয়। মেয়েদের দেখতাম হাতে করে বই নিয়ে আসত। তখন তাদের দেখে আমিও পড়তাম ওই বইগুলো। ধীরে ধীরে নিজেকে গড়লাম। সংসার, বাচ্চা সামলিয়ে খেলাটাই ছিল ধ্যানজ্ঞান। যা অর্জন করেছি, সব অবশ্যই গর্বের। এত কিছু ভেবে করিনি।’
দেশে নারীদের দাবা খেলার পথিকৃৎ হিসেবে রাণী হামিদের নাম উচ্চারিত হয়। জানতে চাইলাম, তাঁর ক্যারিয়ারের শুরুতে খেলার পরিবেশ আর এখনকার পরিবেশের ভিন্নতা কোথায়। প্রশ্ন শুনে একটু সময় নিলেন। বললেন, দেখো, পরিবেশ তো বদলেছেই। আগের দিনে দাবা খেলার পাশাপাশি খেলোয়াড়দের মধ্যে যে আড্ডাটা হতো, তা এখন অনেকটাই হয়ে ওঠে না। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম আর মোবাইল ফোনই আড্ডার ক্ষেত্রটা দখল করে নিয়েছে। তবে আগের চেয়ে সুযোগ অনেক বেড়েছে এখন। আমরা খুব কম ট্রেনিংয়ে অংশ নেওয়ার সুযোগ পেয়েছি। আজকালকার বাচ্চারা এই সুযোগগুলো পাচ্ছে, স্পনসর পাচ্ছে। খেলতে বাইরে যাচ্ছে। সুযোগগুলো কাজে লাগাতে পারলেই ভালো করা সম্ভব।’
এবার উল্টো প্রশ্ন ভেসে এল, ‘আর কিছু জানতে চাও?’ তাঁর এমন প্রশ্ন আমাকে মনে করিয়ে দিল, আমি এবার বোধ হয় বেশি সময় নিয়ে নিচ্ছি। ঝটপট বলে ফেললাম নিজের আবেগের কথা। একজন মানুষ যিনি ৩৩ বছর বয়স থেকে দাবার ঘুঁটির সঙ্গে ঘর বেঁধেছেন, তাঁর সঙ্গে সরাসরি দেখা করতে পারা আমার জন্য অনেক আনন্দের হতো। এ কথা বলায় আবারও নিপাট হাসি হেসে রাণী হামিদ বললেন, ‘সামনে সেপ্টেম্বরেই একটা টুর্নামেন্ট আছে। চলে এসো, সেখানে দেখা করব। চলে এসো!’ একটা সরল আহ্বান আবারও বুঝিয়ে দিল, দাবা আসলেই মজার খেলা। চালের মারপ্যাঁচ থাকলেও তা কারও অভিব্যক্তি কিংবা ব্যক্তিগত জীবনকে প্রভাবিত করতে পারে না। এত অর্জনের পরেও রাণী হামিদ একজন সরল মানুষ। যিনি স্বপ্ন দেখেন, আরও খেলবেন। বলছিলেন, ‘বয়সের কারণে অনেক ওষুধ খেতে হয়। একেক ওষুধের একেক পাওয়ার। তবে যত দিন মস্তিষ্ক সচল থাকবে, আমি খেলে যাব।’

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্মে অভিযোগ জানানোর প্রক্রিয়া অনেক জটিল। কয়েকটি প্ল্যাটফর্মে অভিযোগ জানানোর সুযোগও নেই। এ ছাড়া বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই প্রযুক্তি সহায়তা নীতিমালা ইংরেজিনির্ভর হয়ে থাকে। এসব কারণে বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্মে নারীরা নানাভাবে হয়রানির শিকার...
১১ ঘণ্টা আগে
বাংলার ইতিহাস পড়ে এবং বয়োজ্যেষ্ঠদের কাছে শুনে বড় হয়েছেন মেহেরুন নেছা শাহেলী। তাঁদের কথা শুনলেই মনে হতো, বাংলার প্রকৃতিতে এখনো সাগর, নদী, আকাশ, পাখি আর সবুজ আছে। কিন্তু হারিয়ে যাচ্ছে আদি শস্য ও প্রাকৃতিক খাদ্যের আবেদন। সেই অভাব তাঁকে ভাবায়, জাগায় পুনরুদ্ধারের আকাঙ্ক্ষা।
১ দিন আগে
২০২৪ সালের অভ্যুত্থানের পর দেশের সাধারণ মানুষ এবং নারী অধিকারকর্মীরা নতুন করে নারীর সুরক্ষা ও নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখেছিলেন। ধারণা করা হয়েছিল, রাষ্ট্রের কাঠামোগত পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে নারী ও কন্যাশিশুর প্রতি সহিংসতা রোধে সরকার আরও কঠোর ও দায়িত্বশীল ভূমিকা নেবে। কিন্তু ২০২৫ সালের শেষ প্রান্ত
১ দিন আগে
আমার স্বামী ডিভোর্স লেটার দিয়েছে ১ মাস আগে। সেখানে ‘তিন তালাক এ বাইন’ লেখা ছিল। এতে আইন অনুযায়ী কি আমাদের তালাক হয়ে গেছে? নাকি ৯০ দিন পরই হবে? ৯০ দিন পর যদি আমরা আবার সংসার করতে চাই, তাহলে কি হিল্লা করাতে হবে? নাকি স্বাভাবিকভাবে বিয়ে করলেই হবে?
১ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্মে অভিযোগ জানানোর প্রক্রিয়া অনেক জটিল। কয়েকটি প্ল্যাটফর্মে অভিযোগ জানানোর সুযোগও নেই। এ ছাড়া বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই প্রযুক্তি সহায়তা নীতিমালা ইংরেজিনির্ভর হয়ে থাকে। এসব কারণে বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্মে নারীরা নানাভাবে হয়রানির শিকার হয়েও অভিযোগ (রিপোর্ট) জানাতে পারেন না।
আজ বুধবার রাজধানীর ডেইলি স্টার ভবনে আজিমুর রহমান কনফারেন্স হলে ‘নারী ও প্রযুক্তি: অনলাইন সহিংসতা নিরসন ও আইনি সুরক্ষায় করণীয়’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।
নারী ও শিশুদের অনলাইন নিরাপত্তা প্ল্যাটফর্ম সাইবার সাপোর্ট ফর উইমেন অ্যান্ড চিলড্রেন (সিএসডব্লিউসি) এ সভার আয়োজন করে।
সভায় বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্টের (ব্লাস্ট) জ্যেষ্ঠ গবেষণা কর্মকর্তা এবং সিএসডব্লিউসির ফোকাল মনীষা বিশ্বাস মূল নিবন্ধ তুলে ধরেন। তিনি বলেন, অনলাইন প্ল্যাটফর্ম—ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, হোয়াটসঅ্যাপ, গুগল ইত্যাদির রিপোর্টিং (অভিযোগ করা) ও প্রযুক্তি সহায়তা প্রক্রিয়া জটিল ও ইংরেজিনির্ভর। অনেক ক্ষেত্রে প্রেক্ষাপট ভিন্ন থাকার কারণে রিপোর্ট ‘পলিসি ভায়োলেশন (নীতিভঙ্গ) নয়’ বলে বাতিল হয়। অনেক ক্ষেত্রে ভুক্তভোগী সরাসরি কীভাবে রিপোর্ট করতে হয়, তা জানেন না৷
মূল নিবন্ধে অতীতের কিছু গবেষণার তথ্য তুলে ধরে বলা হয়, ৮৮ শতাংশ নারী অনলাইনে হয়রানির শিকার হয়েও অভিযোগ করেন না৷ আরও বলা হয়, এআই জেনারেটেড ছবি, ডিপফেক কনটেন্ট—এগুলো শনাক্ত ও মোকাবিলায় স্থানীয় পর্যায়ে প্রযুক্তি সহায়তা সক্ষমতা সীমিত। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী প্রযুক্তি উদ্ভূত লিঙ্গভিত্তিক যৌন সহিংসতা-সংক্রান্ত কনটেন্ট রিপোর্ট করতে পারলেও তা খুব সীমিত। এ ছাড়া ইমো, লাইকির মতো প্ল্যাটফর্মগুলোতে রিপোর্ট করার সুবিধা না থাকায় অপরাধীরা এ ধরনের প্ল্যাটফর্ম বেছে নেয়।
২০২৪ সালের জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন থানা থেকে পাওয়া নারী ও শিশুর প্রতি সাইবার সহিংসতার তথ্য বিশ্লেষণ করে মনীষা বিশ্বাস জানান, থানায় ভুক্তভোগীরা পরামর্শ নেওয়ার পরে মামলা করতে উৎসাহিত না হওয়ায় অভিযোগ নেওয়া হয় না। কিছু ক্ষেত্রে অভিযুক্ত ব্যক্তি থানায় এসে উপাত্ত সরানোর মাধ্যমে পারস্পরিক মীমাংসারও পদক্ষেপ নেওয়া হয়।
সভায় নর্থসাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক নোভা আহমেদ বলেন, ‘সাইবার সহিংসতার কথা যখন বলি, তখন প্রথমে মাথায় আসে, কেন এটা নিয়ে এত চিন্তা করছি। তার একটা কারণ হলো, এটি দ্রুত ছড়িয়ে যায় এবং একে কখনো মুছে ফেলা যায় না। আমাদের দেশে সাইবার সহিংসতার ক্ষেত্রে নারীদের চরিত্রকে প্রশ্নবিদ্ধ করার প্রবণতা এখনো গভীরভাবে বিদ্যমান। ‘মি টু’ আন্দোলনে বাংলাদেশি নারীদের অংশগ্রহণ তুলনামূলকভাবে কম হওয়ার পেছনেও এই ভয় কাজ করেছে যে, কথা বললেই তাঁদের চরিত্র নিয়ে প্রশ্ন তোলা হবে। বাস্তব জীবনে যেভাবে নারীদের দোষারোপ করা হয়, সেই একই চিত্র ডিজিটাল জগতেও প্রতিফলিত হচ্ছে। এর ফলে নারীরা নিরাপদভাবে অনলাইন পরিসরে বিচরণ করতে পারছেন না।
বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের অ্যাডভোকেট ব্যারিস্টার হামিদুল মেজবাহ বলেন, ‘ফরেনসিক সাক্ষ্য সংরক্ষণের জন্য থানায় মোবাইল ফোন বা ব্যক্তিগত ডিভাইস জমা দিতে হয়, যা ভুক্তভোগীকে আরও নিরুৎসাহিত করে মামলা করার ক্ষেত্রে। সেই সঙ্গে আমাদের যথাযথ ডেটা নেই যে কতজন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করেন এবং কতজন নারী পুলিশ কর্মকর্তা আছেন, যাঁরা প্রযুক্তি সম্পর্কে সচেতন।’
নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধে জাতীয় হেল্পলাইন সেন্টারের হেল্পলাইন ইনচার্জ রাইসুল ইসলাম জানান, নারীর প্রতি সহিংসতার জন্য সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার মধ্যে সমন্বয়ের গুরুত্ব অনেক বেশি। বর্তমানে ১০৯-এর জরুরি হেল্পলাইন সেবায় ভুক্তভোগীদের চাহিদার ধরনগুলো পরিবর্তন হচ্ছে এবং এখন সাইবারসংক্রান্ত অভিযোগ বেশি আসছে।
ঢাকা ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারের উপপুলিশ কমিশনার মোছা. মাকসুদা আক্তার বলেন, সাইবারসংক্রান্ত মামলার ভুক্তভোগীদের জন্য মনোসামাজিক সেবা দরকার। যদি পুলিশের কাছে আসতে ভুক্তভোগীরা ভয় পান, তাহলে কিশোর-কিশোরীদের জন্য প্রতিটি বিদ্যালয়ে হেল্পডেস্ক স্থাপন করা দরকার।
সভার সমাপনী বক্তব্যে ইনস্টিটিউট অব ইনফরমেটিকস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (আইআইডি) নির্বাহী পরিচালক সাইদ আহমেদ বলেন, সব সরকারি-বেসরকারি সংস্থার মধ্যে সমন্বয় বৃদ্ধি করা এবং একে প্রান্তিক নারীবান্ধব করা প্রয়োজন। আইনবিদদের সঙ্গে প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞদের একসঙ্গে বসা খুব জরুরি।
সভায় নারী ও শিশুর প্রতি সাইবার সহিংসতা প্রতিরোধে কিছু সুপারিশ করা হয়। সুপারিশে বলা হয়, পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১২-কে সংশোধন করে ডিজিটাল শিশু যৌন নিপীড়ন-সংক্রান্ত উপাদান এবং ডিজিটাল অসম্মতিপূর্ণ পর্নোগ্রাফিকে অপরাধ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা জরুরি। ই-এফআইআর ব্যবস্থা চালু করতে হবে। যার ফলে ভুক্তভোগীকে ব্যক্তিগতভাবে পুলিশ স্টেশনে যেতে হবে না, যা হয়রানি ও মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করবে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্মে অভিযোগ জানানোর প্রক্রিয়া অনেক জটিল। কয়েকটি প্ল্যাটফর্মে অভিযোগ জানানোর সুযোগও নেই। এ ছাড়া বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই প্রযুক্তি সহায়তা নীতিমালা ইংরেজিনির্ভর হয়ে থাকে। এসব কারণে বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্মে নারীরা নানাভাবে হয়রানির শিকার হয়েও অভিযোগ (রিপোর্ট) জানাতে পারেন না।
আজ বুধবার রাজধানীর ডেইলি স্টার ভবনে আজিমুর রহমান কনফারেন্স হলে ‘নারী ও প্রযুক্তি: অনলাইন সহিংসতা নিরসন ও আইনি সুরক্ষায় করণীয়’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।
নারী ও শিশুদের অনলাইন নিরাপত্তা প্ল্যাটফর্ম সাইবার সাপোর্ট ফর উইমেন অ্যান্ড চিলড্রেন (সিএসডব্লিউসি) এ সভার আয়োজন করে।
সভায় বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্টের (ব্লাস্ট) জ্যেষ্ঠ গবেষণা কর্মকর্তা এবং সিএসডব্লিউসির ফোকাল মনীষা বিশ্বাস মূল নিবন্ধ তুলে ধরেন। তিনি বলেন, অনলাইন প্ল্যাটফর্ম—ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, হোয়াটসঅ্যাপ, গুগল ইত্যাদির রিপোর্টিং (অভিযোগ করা) ও প্রযুক্তি সহায়তা প্রক্রিয়া জটিল ও ইংরেজিনির্ভর। অনেক ক্ষেত্রে প্রেক্ষাপট ভিন্ন থাকার কারণে রিপোর্ট ‘পলিসি ভায়োলেশন (নীতিভঙ্গ) নয়’ বলে বাতিল হয়। অনেক ক্ষেত্রে ভুক্তভোগী সরাসরি কীভাবে রিপোর্ট করতে হয়, তা জানেন না৷
মূল নিবন্ধে অতীতের কিছু গবেষণার তথ্য তুলে ধরে বলা হয়, ৮৮ শতাংশ নারী অনলাইনে হয়রানির শিকার হয়েও অভিযোগ করেন না৷ আরও বলা হয়, এআই জেনারেটেড ছবি, ডিপফেক কনটেন্ট—এগুলো শনাক্ত ও মোকাবিলায় স্থানীয় পর্যায়ে প্রযুক্তি সহায়তা সক্ষমতা সীমিত। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী প্রযুক্তি উদ্ভূত লিঙ্গভিত্তিক যৌন সহিংসতা-সংক্রান্ত কনটেন্ট রিপোর্ট করতে পারলেও তা খুব সীমিত। এ ছাড়া ইমো, লাইকির মতো প্ল্যাটফর্মগুলোতে রিপোর্ট করার সুবিধা না থাকায় অপরাধীরা এ ধরনের প্ল্যাটফর্ম বেছে নেয়।
২০২৪ সালের জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন থানা থেকে পাওয়া নারী ও শিশুর প্রতি সাইবার সহিংসতার তথ্য বিশ্লেষণ করে মনীষা বিশ্বাস জানান, থানায় ভুক্তভোগীরা পরামর্শ নেওয়ার পরে মামলা করতে উৎসাহিত না হওয়ায় অভিযোগ নেওয়া হয় না। কিছু ক্ষেত্রে অভিযুক্ত ব্যক্তি থানায় এসে উপাত্ত সরানোর মাধ্যমে পারস্পরিক মীমাংসারও পদক্ষেপ নেওয়া হয়।
সভায় নর্থসাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক নোভা আহমেদ বলেন, ‘সাইবার সহিংসতার কথা যখন বলি, তখন প্রথমে মাথায় আসে, কেন এটা নিয়ে এত চিন্তা করছি। তার একটা কারণ হলো, এটি দ্রুত ছড়িয়ে যায় এবং একে কখনো মুছে ফেলা যায় না। আমাদের দেশে সাইবার সহিংসতার ক্ষেত্রে নারীদের চরিত্রকে প্রশ্নবিদ্ধ করার প্রবণতা এখনো গভীরভাবে বিদ্যমান। ‘মি টু’ আন্দোলনে বাংলাদেশি নারীদের অংশগ্রহণ তুলনামূলকভাবে কম হওয়ার পেছনেও এই ভয় কাজ করেছে যে, কথা বললেই তাঁদের চরিত্র নিয়ে প্রশ্ন তোলা হবে। বাস্তব জীবনে যেভাবে নারীদের দোষারোপ করা হয়, সেই একই চিত্র ডিজিটাল জগতেও প্রতিফলিত হচ্ছে। এর ফলে নারীরা নিরাপদভাবে অনলাইন পরিসরে বিচরণ করতে পারছেন না।
বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের অ্যাডভোকেট ব্যারিস্টার হামিদুল মেজবাহ বলেন, ‘ফরেনসিক সাক্ষ্য সংরক্ষণের জন্য থানায় মোবাইল ফোন বা ব্যক্তিগত ডিভাইস জমা দিতে হয়, যা ভুক্তভোগীকে আরও নিরুৎসাহিত করে মামলা করার ক্ষেত্রে। সেই সঙ্গে আমাদের যথাযথ ডেটা নেই যে কতজন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করেন এবং কতজন নারী পুলিশ কর্মকর্তা আছেন, যাঁরা প্রযুক্তি সম্পর্কে সচেতন।’
নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধে জাতীয় হেল্পলাইন সেন্টারের হেল্পলাইন ইনচার্জ রাইসুল ইসলাম জানান, নারীর প্রতি সহিংসতার জন্য সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার মধ্যে সমন্বয়ের গুরুত্ব অনেক বেশি। বর্তমানে ১০৯-এর জরুরি হেল্পলাইন সেবায় ভুক্তভোগীদের চাহিদার ধরনগুলো পরিবর্তন হচ্ছে এবং এখন সাইবারসংক্রান্ত অভিযোগ বেশি আসছে।
ঢাকা ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারের উপপুলিশ কমিশনার মোছা. মাকসুদা আক্তার বলেন, সাইবারসংক্রান্ত মামলার ভুক্তভোগীদের জন্য মনোসামাজিক সেবা দরকার। যদি পুলিশের কাছে আসতে ভুক্তভোগীরা ভয় পান, তাহলে কিশোর-কিশোরীদের জন্য প্রতিটি বিদ্যালয়ে হেল্পডেস্ক স্থাপন করা দরকার।
সভার সমাপনী বক্তব্যে ইনস্টিটিউট অব ইনফরমেটিকস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (আইআইডি) নির্বাহী পরিচালক সাইদ আহমেদ বলেন, সব সরকারি-বেসরকারি সংস্থার মধ্যে সমন্বয় বৃদ্ধি করা এবং একে প্রান্তিক নারীবান্ধব করা প্রয়োজন। আইনবিদদের সঙ্গে প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞদের একসঙ্গে বসা খুব জরুরি।
সভায় নারী ও শিশুর প্রতি সাইবার সহিংসতা প্রতিরোধে কিছু সুপারিশ করা হয়। সুপারিশে বলা হয়, পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১২-কে সংশোধন করে ডিজিটাল শিশু যৌন নিপীড়ন-সংক্রান্ত উপাদান এবং ডিজিটাল অসম্মতিপূর্ণ পর্নোগ্রাফিকে অপরাধ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা জরুরি। ই-এফআইআর ব্যবস্থা চালু করতে হবে। যার ফলে ভুক্তভোগীকে ব্যক্তিগতভাবে পুলিশ স্টেশনে যেতে হবে না, যা হয়রানি ও মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করবে।

কিছু মানুষের নাম শুনলেই মনের কোণে ভেসে ওঠে নানান গল্প। কারণ, সেই সব মানুষের গল্প এতবার এতভাবে পড়া হয়েছে যে সেগুলো এখন জীবন্ত হয়ে গেছে। কিন্তু বহুশ্রুত সেই সব গল্পও যদি চরিত্রটির মুখ থেকে শোনার সুযোগ আসে, নিজেকে ধন্য মনে হয়। এবার তেমনই একটি সুযোগ এলে হৃৎকম্প বেড়ে গেল। ধমনির রক্তস্রোতের শব্দ শুনতে শুন
২৬ জুলাই ২০২৩
বাংলার ইতিহাস পড়ে এবং বয়োজ্যেষ্ঠদের কাছে শুনে বড় হয়েছেন মেহেরুন নেছা শাহেলী। তাঁদের কথা শুনলেই মনে হতো, বাংলার প্রকৃতিতে এখনো সাগর, নদী, আকাশ, পাখি আর সবুজ আছে। কিন্তু হারিয়ে যাচ্ছে আদি শস্য ও প্রাকৃতিক খাদ্যের আবেদন। সেই অভাব তাঁকে ভাবায়, জাগায় পুনরুদ্ধারের আকাঙ্ক্ষা।
১ দিন আগে
২০২৪ সালের অভ্যুত্থানের পর দেশের সাধারণ মানুষ এবং নারী অধিকারকর্মীরা নতুন করে নারীর সুরক্ষা ও নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখেছিলেন। ধারণা করা হয়েছিল, রাষ্ট্রের কাঠামোগত পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে নারী ও কন্যাশিশুর প্রতি সহিংসতা রোধে সরকার আরও কঠোর ও দায়িত্বশীল ভূমিকা নেবে। কিন্তু ২০২৫ সালের শেষ প্রান্ত
১ দিন আগে
আমার স্বামী ডিভোর্স লেটার দিয়েছে ১ মাস আগে। সেখানে ‘তিন তালাক এ বাইন’ লেখা ছিল। এতে আইন অনুযায়ী কি আমাদের তালাক হয়ে গেছে? নাকি ৯০ দিন পরই হবে? ৯০ দিন পর যদি আমরা আবার সংসার করতে চাই, তাহলে কি হিল্লা করাতে হবে? নাকি স্বাভাবিকভাবে বিয়ে করলেই হবে?
১ দিন আগেমুহাম্মদ শফিকুর রহমান

বাংলার ইতিহাস পড়ে এবং বয়োজ্যেষ্ঠদের কাছে শুনে বড় হয়েছেন মেহেরুন নেছা শাহেলী। তাঁদের কথা শুনলেই মনে হতো, বাংলার প্রকৃতিতে এখনো সাগর, নদী, আকাশ, পাখি আর সবুজ আছে। কিন্তু হারিয়ে যাচ্ছে আদি শস্য ও প্রাকৃতিক খাদ্যের আবেদন। সেই অভাব তাঁকে ভাবায়, জাগায় পুনরুদ্ধারের আকাঙ্ক্ষা। আর সেখান থেকে শুরু তাঁর উদ্যোগ—বাংলার আদি খাদ্য ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টা। এটি শুধু ব্যবসা নয়, দেশের জন্য কিছু করার দায়বদ্ধতা। সংসার সামলে একজন সফল নারী উদ্যোক্তা হিসেবে দাঁড়িয়েছেন শাহেলী। ‘আহরণ’ নামের ফেসবুক পেজের কান্ডারি তিনি।
পরিবার
স্বামী এবং এক সন্তানকে নিয়ে শাহেলীর পরিবার। থাকেন ঢাকার মোহাম্মদপুর এলাকায়। চট্টগ্রাম ইন্টারন্যাশনাল ইসলামিক ইউনিভার্সিটি থেকে ইংরেজি বিষয়ে অনার্স ও মাস্টার্স করেছেন তিনি। উদ্যোক্তা হতে গিয়ে শাহেলী স্বামীর সহযোগিতা পেয়েছেন সব সময়।

শুরুর গল্প
বছর সাতেক আগে শাহেলী ব্যবসায় নেমে পড়েন। প্রথম দিকে টুকটাক সমস্যা হলেও বুদ্ধি করে সব সামলে নেন। শাহেলীর পেজ আহরণে অনুসারীর সংখ্যা প্রায় ২৬ হাজার। সাত বছর আগে খোলা এই পেজ তাঁর বিক্রির মাধ্যম। অবশ্য অফলাইনেও তিনি পণ্য বিক্রি করেন।
কেন উদ্যোক্তা হলেন
পড়াশোনা করে যে চাকরিই করতে হবে, এমন নয়। শাহেলী মনে করেন, উদ্যোক্তা হওয়ার মতো মেধা আর দক্ষতা থাকলে চাকরি না করে নিজে কিছু করে অন্যের জন্য কর্মসংস্থান তৈরি করা উচিত। কাজ করতে করতেই উদ্যোক্তা হয়ে উঠেছেন শাহেলী; যাকে বলে ঠেকে ঠেকে শেখা।

মাসে আয় আড়াই লাখ টাকা
শুরুতে তাঁর পুঁজি ছিল মাত্র ২০ হাজার টাকা। পরিশ্রম ও দক্ষতায় এখন তাঁর মাসিক বিক্রি পাঁচ থেকে ছয় লাখ টাকায় ওঠানামা করে। প্রতি মাসে গড়ে প্রায় আড়াই লাখ টাকা আয় করেন তিনি। বর্তমানে তাঁর কাজে সহকারী হিসেবে যুক্ত আছেন ১৪ জন।
যা বিক্রি করেন
শাহেলীর পেজ আহরণে পাওয়া যাবে মধু, বিভিন্ন ঐতিহ্যবাহী খাবার, খেজুরের গুড়, শুঁটকি, বিভিন্ন প্রজাতির চাল ইত্যাদি।

কাঁচামাল সংগ্রহ
শাহেলী কাঁচামাল পেতে ছুটে বেড়ান কৃষকের দোরগোড়ায়। নিজে উপস্থিত থেকে পণ্যের সব ধরনের কাজ সম্পন্ন করেন। মানের বেলায় তিনি বিন্দুমাত্র ছাড় দেন না। এ কারণে অনেক ক্রেতা বিভিন্ন জায়গায় প্রতারিত হয়ে তাঁর কাছে এসে স্বস্তি খুঁজে পান।
আনন্দ
উদ্যোক্তা হিসেবে শাহেলী এরই মধ্যে উল্লেখযোগ্য পরিচিতি গড়ে তুলেছেন। তাই ভিড়ের মধ্যে একদম অচেনা কেউ এগিয়ে এসে যখন বলেন, ‘আপনি মেহেরুন না? আপনার পণ্যের গুণগত মান সত্যিই অসাধারণ’—সেই প্রশংসা শাহেলীর মন ভরিয়ে দেয়। অচেনা মানুষের এমন আন্তরিক সাড়া তাঁকে আরও অনুপ্রাণিত করে এগিয়ে যেতে।
চ্যালেঞ্জ
একজন নারী সফল উদ্যোক্তা হয়ে দেশের নানান জায়গায় ছুটে বেড়াবে—এটা অনেকে সহজে মেনে নিতে পারে না। শাহেলীর ভাষায়, ‘একজন নারীও পুরুষের মতো মাঠপর্যায়ে কাজ করার সাহস ও সক্ষমতা রাখে। কিন্তু অনেকে নানা অপ্রয়োজনীয় মন্তব্য করে। এতে আমার কাজে ব্যাঘাত ঘটানোর চেষ্টা করা হয়।’
তবে শাহেলী জানান, তিনি শুরু থেকে সাহসী। তাই এসব মন্তব্য বা চ্যালেঞ্জ তিনি খুব সহজে সামলে নিতে পারেন। প্রতিটি চ্যালেঞ্জ তাঁর আগামীর পথ আরও দৃঢ় করে।

আফটার সেলস সার্ভিস
নানা কারণে কুরিয়ারে পণ্য নষ্ট হয়ে যেতে পারে। তাহলে কি ক্রেতা ক্ষতি মেনে নেবে? মোটেই না।
পণ্য নষ্ট হয়ে গেলে গ্রাহক যেভাবে ক্ষতিপূরণ চায়, সেভাবে ক্ষতিপূরণ দেন শাহেলী। আর যারা পণ্য নিতে চায়, পেজে বার্তা পাঠালেই তা ক্রেতার হাতে পৌঁছে দেওয়া হয়।
ভবিষ্যৎ
একটা গ্রাম হবে। সেই গ্রামে একজন মানুষ যখন প্রবেশ করবে, দেখবে ঢেঁকিতে ধান ভানা হচ্ছে, নারীরা পাটায় সর পিষছে, ঘানিতে সরিষা ভাঙিয়ে তেল বের হচ্ছে। মোটামুটি বাংলার আদি চিত্র দেখা যাবে সেই গ্রামে। এমন স্বপ্ন শাহেলীর। এ ধরনের একটি গ্রাম প্রতিষ্ঠার ইচ্ছা তাঁর।

বাংলার ইতিহাস পড়ে এবং বয়োজ্যেষ্ঠদের কাছে শুনে বড় হয়েছেন মেহেরুন নেছা শাহেলী। তাঁদের কথা শুনলেই মনে হতো, বাংলার প্রকৃতিতে এখনো সাগর, নদী, আকাশ, পাখি আর সবুজ আছে। কিন্তু হারিয়ে যাচ্ছে আদি শস্য ও প্রাকৃতিক খাদ্যের আবেদন। সেই অভাব তাঁকে ভাবায়, জাগায় পুনরুদ্ধারের আকাঙ্ক্ষা। আর সেখান থেকে শুরু তাঁর উদ্যোগ—বাংলার আদি খাদ্য ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টা। এটি শুধু ব্যবসা নয়, দেশের জন্য কিছু করার দায়বদ্ধতা। সংসার সামলে একজন সফল নারী উদ্যোক্তা হিসেবে দাঁড়িয়েছেন শাহেলী। ‘আহরণ’ নামের ফেসবুক পেজের কান্ডারি তিনি।
পরিবার
স্বামী এবং এক সন্তানকে নিয়ে শাহেলীর পরিবার। থাকেন ঢাকার মোহাম্মদপুর এলাকায়। চট্টগ্রাম ইন্টারন্যাশনাল ইসলামিক ইউনিভার্সিটি থেকে ইংরেজি বিষয়ে অনার্স ও মাস্টার্স করেছেন তিনি। উদ্যোক্তা হতে গিয়ে শাহেলী স্বামীর সহযোগিতা পেয়েছেন সব সময়।

শুরুর গল্প
বছর সাতেক আগে শাহেলী ব্যবসায় নেমে পড়েন। প্রথম দিকে টুকটাক সমস্যা হলেও বুদ্ধি করে সব সামলে নেন। শাহেলীর পেজ আহরণে অনুসারীর সংখ্যা প্রায় ২৬ হাজার। সাত বছর আগে খোলা এই পেজ তাঁর বিক্রির মাধ্যম। অবশ্য অফলাইনেও তিনি পণ্য বিক্রি করেন।
কেন উদ্যোক্তা হলেন
পড়াশোনা করে যে চাকরিই করতে হবে, এমন নয়। শাহেলী মনে করেন, উদ্যোক্তা হওয়ার মতো মেধা আর দক্ষতা থাকলে চাকরি না করে নিজে কিছু করে অন্যের জন্য কর্মসংস্থান তৈরি করা উচিত। কাজ করতে করতেই উদ্যোক্তা হয়ে উঠেছেন শাহেলী; যাকে বলে ঠেকে ঠেকে শেখা।

মাসে আয় আড়াই লাখ টাকা
শুরুতে তাঁর পুঁজি ছিল মাত্র ২০ হাজার টাকা। পরিশ্রম ও দক্ষতায় এখন তাঁর মাসিক বিক্রি পাঁচ থেকে ছয় লাখ টাকায় ওঠানামা করে। প্রতি মাসে গড়ে প্রায় আড়াই লাখ টাকা আয় করেন তিনি। বর্তমানে তাঁর কাজে সহকারী হিসেবে যুক্ত আছেন ১৪ জন।
যা বিক্রি করেন
শাহেলীর পেজ আহরণে পাওয়া যাবে মধু, বিভিন্ন ঐতিহ্যবাহী খাবার, খেজুরের গুড়, শুঁটকি, বিভিন্ন প্রজাতির চাল ইত্যাদি।

কাঁচামাল সংগ্রহ
শাহেলী কাঁচামাল পেতে ছুটে বেড়ান কৃষকের দোরগোড়ায়। নিজে উপস্থিত থেকে পণ্যের সব ধরনের কাজ সম্পন্ন করেন। মানের বেলায় তিনি বিন্দুমাত্র ছাড় দেন না। এ কারণে অনেক ক্রেতা বিভিন্ন জায়গায় প্রতারিত হয়ে তাঁর কাছে এসে স্বস্তি খুঁজে পান।
আনন্দ
উদ্যোক্তা হিসেবে শাহেলী এরই মধ্যে উল্লেখযোগ্য পরিচিতি গড়ে তুলেছেন। তাই ভিড়ের মধ্যে একদম অচেনা কেউ এগিয়ে এসে যখন বলেন, ‘আপনি মেহেরুন না? আপনার পণ্যের গুণগত মান সত্যিই অসাধারণ’—সেই প্রশংসা শাহেলীর মন ভরিয়ে দেয়। অচেনা মানুষের এমন আন্তরিক সাড়া তাঁকে আরও অনুপ্রাণিত করে এগিয়ে যেতে।
চ্যালেঞ্জ
একজন নারী সফল উদ্যোক্তা হয়ে দেশের নানান জায়গায় ছুটে বেড়াবে—এটা অনেকে সহজে মেনে নিতে পারে না। শাহেলীর ভাষায়, ‘একজন নারীও পুরুষের মতো মাঠপর্যায়ে কাজ করার সাহস ও সক্ষমতা রাখে। কিন্তু অনেকে নানা অপ্রয়োজনীয় মন্তব্য করে। এতে আমার কাজে ব্যাঘাত ঘটানোর চেষ্টা করা হয়।’
তবে শাহেলী জানান, তিনি শুরু থেকে সাহসী। তাই এসব মন্তব্য বা চ্যালেঞ্জ তিনি খুব সহজে সামলে নিতে পারেন। প্রতিটি চ্যালেঞ্জ তাঁর আগামীর পথ আরও দৃঢ় করে।

আফটার সেলস সার্ভিস
নানা কারণে কুরিয়ারে পণ্য নষ্ট হয়ে যেতে পারে। তাহলে কি ক্রেতা ক্ষতি মেনে নেবে? মোটেই না।
পণ্য নষ্ট হয়ে গেলে গ্রাহক যেভাবে ক্ষতিপূরণ চায়, সেভাবে ক্ষতিপূরণ দেন শাহেলী। আর যারা পণ্য নিতে চায়, পেজে বার্তা পাঠালেই তা ক্রেতার হাতে পৌঁছে দেওয়া হয়।
ভবিষ্যৎ
একটা গ্রাম হবে। সেই গ্রামে একজন মানুষ যখন প্রবেশ করবে, দেখবে ঢেঁকিতে ধান ভানা হচ্ছে, নারীরা পাটায় সর পিষছে, ঘানিতে সরিষা ভাঙিয়ে তেল বের হচ্ছে। মোটামুটি বাংলার আদি চিত্র দেখা যাবে সেই গ্রামে। এমন স্বপ্ন শাহেলীর। এ ধরনের একটি গ্রাম প্রতিষ্ঠার ইচ্ছা তাঁর।

কিছু মানুষের নাম শুনলেই মনের কোণে ভেসে ওঠে নানান গল্প। কারণ, সেই সব মানুষের গল্প এতবার এতভাবে পড়া হয়েছে যে সেগুলো এখন জীবন্ত হয়ে গেছে। কিন্তু বহুশ্রুত সেই সব গল্পও যদি চরিত্রটির মুখ থেকে শোনার সুযোগ আসে, নিজেকে ধন্য মনে হয়। এবার তেমনই একটি সুযোগ এলে হৃৎকম্প বেড়ে গেল। ধমনির রক্তস্রোতের শব্দ শুনতে শুন
২৬ জুলাই ২০২৩
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্মে অভিযোগ জানানোর প্রক্রিয়া অনেক জটিল। কয়েকটি প্ল্যাটফর্মে অভিযোগ জানানোর সুযোগও নেই। এ ছাড়া বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই প্রযুক্তি সহায়তা নীতিমালা ইংরেজিনির্ভর হয়ে থাকে। এসব কারণে বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্মে নারীরা নানাভাবে হয়রানির শিকার...
১১ ঘণ্টা আগে
২০২৪ সালের অভ্যুত্থানের পর দেশের সাধারণ মানুষ এবং নারী অধিকারকর্মীরা নতুন করে নারীর সুরক্ষা ও নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখেছিলেন। ধারণা করা হয়েছিল, রাষ্ট্রের কাঠামোগত পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে নারী ও কন্যাশিশুর প্রতি সহিংসতা রোধে সরকার আরও কঠোর ও দায়িত্বশীল ভূমিকা নেবে। কিন্তু ২০২৫ সালের শেষ প্রান্ত
১ দিন আগে
আমার স্বামী ডিভোর্স লেটার দিয়েছে ১ মাস আগে। সেখানে ‘তিন তালাক এ বাইন’ লেখা ছিল। এতে আইন অনুযায়ী কি আমাদের তালাক হয়ে গেছে? নাকি ৯০ দিন পরই হবে? ৯০ দিন পর যদি আমরা আবার সংসার করতে চাই, তাহলে কি হিল্লা করাতে হবে? নাকি স্বাভাবিকভাবে বিয়ে করলেই হবে?
১ দিন আগেবাড়ছে আতঙ্ক
ফিচার ডেস্ক

২০২৪ সালের অভ্যুত্থানের পর দেশের সাধারণ মানুষ এবং নারী অধিকারকর্মীরা নতুন করে নারীর সুরক্ষা ও নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখেছিলেন। ধারণা করা হয়েছিল, রাষ্ট্রের কাঠামোগত পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে নারী ও কন্যাশিশুর প্রতি সহিংসতা রোধে সরকার আরও কঠোর ও দায়িত্বশীল ভূমিকা নেবে। কিন্তু ২০২৫ সালের শেষ প্রান্তে এসেও সেই স্বপ্ন অধরা। বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের প্রকাশিত বার্ষিক প্রতিবেদন থেকে পাওয়া তথ্য বলছে, ২০২৫ সালের ১১ মাসে সারা দেশে নির্যাতনের শিকার হয়েছে ২ হাজার ৫৪৯ নারী ও কন্যাশিশু। এই পরিসংখ্যান শুধু সংখ্যা নয়, বরং এটি নতুন করে আশা জাগানো রাষ্ট্রব্যবস্থার প্রতি একটি গভীর প্রশ্ন ছুড়ে দেয়।
চব্বিশের জুলাইয়ের পর মানুষ স্বপ্ন দেখেছিল, নারীর অধিকার ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার যে পারিবারিক ও রাষ্ট্রীয় দায় রয়েছে, তা নতুন সরকার দৃঢ়তার সঙ্গে পালন করবে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নত হবে, ধর্ষণ ও নির্যাতনের মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি হবে এবং অপরাধীরা দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি পাবে। কিন্তু পরিসংখ্যান দেখাচ্ছে বাস্তবতার ভিন্ন রূপ। ১১ মাসে মোট নির্যাতিতের সংখ্যা ২ হাজার ৫৪৯ জন; এর মধ্যে রয়েছে ১ হাজার ১৭৪ কন্যাশিশু ও কিশোরী। অর্থাৎ মোট নির্যাতিতের প্রায় অর্ধেকই কন্যাশিশু ও কিশোরী। এই জরিপে বিভিন্ন নির্যাতনের কথা বলা হয়েছে।
কন্যা ও শিশুদের প্রতি নির্যাতনের এ সংখ্যা প্রমাণ করে, পরিবার বা সমাজের কোনো স্তরেই মেয়েদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায়নি। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে কর্মক্ষেত্র, এমনকি সবচেয়ে নিরাপদ আশ্রয় হিসেবে পরিচিত পরিবারেও নারীরা নিরাপদ নয়।
পরিসংখ্যান বলছে, গত ১১ মাসে ৫৯৩ নারী ও কন্যাশিশুকে হত্যা করা হয়েছে। তাদের মধ্যে কন্যাশিশু ও কিশোরী ১০১ জন। নিপীড়নের শিকার হয় ৯৫ জন; এর মধ্যে কন্যাশিশু ও কিশোরী ৬১ জন। ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছে ১৮১ জনকে, যাদের মধ্যে ১৪১ জন কন্যাশিশু ও কিশোরী। ধর্ষণ ও দলগত ধর্ষণের শিকার হয়েছে ৭২৪ নারী ও কন্যাশিশু। এদের মধ্যে ৫০০ জন কন্যাশিশু ও কিশোরী। অর্থাৎ ধর্ষণ ও দলগত ধর্ষণের শিকার হওয়া নারী ও কন্যাশিশুদের মধ্যে অর্ধেকের বেশি ছিল কন্যাশিশু ও কিশোরী। ধর্ষণ ও হত্যার শিকার হয়েছে ২৯ নারী ও কন্যশিশু। তাদের মধ্যে ১৬ জনের বয়স ১৮ বছরের মধ্যে।
প্রতিবেদনটির উদ্বেগজনক দিক হলো, গত ১১ মাসের এই পরিসংখ্যান ২০২৪ সালের সারা বছরের মোট নির্যাতনের সংখ্যা ছাড়িয়ে গেছে। গত বছর ২ হাজার ২২৫ নারী ও কন্যাশিশু নির্যাতনের শিকার হয়েছিল।
এটি দেশের নাগরিকদের জন্য এক চরম হতাশার বার্তা। এরই মধ্যে গঠন করা হয় নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন। যাদের কাজ আইনি, সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক কাঠামোয় নারীদের প্রতি বিদ্যমান বৈষম্য পর্যালোচনা করে প্রাসঙ্গিক সংস্কার প্রস্তাব করা। সে প্রস্তাব করাও হয়ে গেছে। কিন্তু পরিসংখ্যান বলছে, গত ১১ মাসের নারী ও শিশু নির্যাতনের সংখ্যা গত বছরের সংখ্যা ছাড়িয়ে গেছে।

২০২৪ সালের অভ্যুত্থানের পর দেশের সাধারণ মানুষ এবং নারী অধিকারকর্মীরা নতুন করে নারীর সুরক্ষা ও নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখেছিলেন। ধারণা করা হয়েছিল, রাষ্ট্রের কাঠামোগত পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে নারী ও কন্যাশিশুর প্রতি সহিংসতা রোধে সরকার আরও কঠোর ও দায়িত্বশীল ভূমিকা নেবে। কিন্তু ২০২৫ সালের শেষ প্রান্তে এসেও সেই স্বপ্ন অধরা। বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের প্রকাশিত বার্ষিক প্রতিবেদন থেকে পাওয়া তথ্য বলছে, ২০২৫ সালের ১১ মাসে সারা দেশে নির্যাতনের শিকার হয়েছে ২ হাজার ৫৪৯ নারী ও কন্যাশিশু। এই পরিসংখ্যান শুধু সংখ্যা নয়, বরং এটি নতুন করে আশা জাগানো রাষ্ট্রব্যবস্থার প্রতি একটি গভীর প্রশ্ন ছুড়ে দেয়।
চব্বিশের জুলাইয়ের পর মানুষ স্বপ্ন দেখেছিল, নারীর অধিকার ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার যে পারিবারিক ও রাষ্ট্রীয় দায় রয়েছে, তা নতুন সরকার দৃঢ়তার সঙ্গে পালন করবে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নত হবে, ধর্ষণ ও নির্যাতনের মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি হবে এবং অপরাধীরা দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি পাবে। কিন্তু পরিসংখ্যান দেখাচ্ছে বাস্তবতার ভিন্ন রূপ। ১১ মাসে মোট নির্যাতিতের সংখ্যা ২ হাজার ৫৪৯ জন; এর মধ্যে রয়েছে ১ হাজার ১৭৪ কন্যাশিশু ও কিশোরী। অর্থাৎ মোট নির্যাতিতের প্রায় অর্ধেকই কন্যাশিশু ও কিশোরী। এই জরিপে বিভিন্ন নির্যাতনের কথা বলা হয়েছে।
কন্যা ও শিশুদের প্রতি নির্যাতনের এ সংখ্যা প্রমাণ করে, পরিবার বা সমাজের কোনো স্তরেই মেয়েদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায়নি। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে কর্মক্ষেত্র, এমনকি সবচেয়ে নিরাপদ আশ্রয় হিসেবে পরিচিত পরিবারেও নারীরা নিরাপদ নয়।
পরিসংখ্যান বলছে, গত ১১ মাসে ৫৯৩ নারী ও কন্যাশিশুকে হত্যা করা হয়েছে। তাদের মধ্যে কন্যাশিশু ও কিশোরী ১০১ জন। নিপীড়নের শিকার হয় ৯৫ জন; এর মধ্যে কন্যাশিশু ও কিশোরী ৬১ জন। ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছে ১৮১ জনকে, যাদের মধ্যে ১৪১ জন কন্যাশিশু ও কিশোরী। ধর্ষণ ও দলগত ধর্ষণের শিকার হয়েছে ৭২৪ নারী ও কন্যাশিশু। এদের মধ্যে ৫০০ জন কন্যাশিশু ও কিশোরী। অর্থাৎ ধর্ষণ ও দলগত ধর্ষণের শিকার হওয়া নারী ও কন্যাশিশুদের মধ্যে অর্ধেকের বেশি ছিল কন্যাশিশু ও কিশোরী। ধর্ষণ ও হত্যার শিকার হয়েছে ২৯ নারী ও কন্যশিশু। তাদের মধ্যে ১৬ জনের বয়স ১৮ বছরের মধ্যে।
প্রতিবেদনটির উদ্বেগজনক দিক হলো, গত ১১ মাসের এই পরিসংখ্যান ২০২৪ সালের সারা বছরের মোট নির্যাতনের সংখ্যা ছাড়িয়ে গেছে। গত বছর ২ হাজার ২২৫ নারী ও কন্যাশিশু নির্যাতনের শিকার হয়েছিল।
এটি দেশের নাগরিকদের জন্য এক চরম হতাশার বার্তা। এরই মধ্যে গঠন করা হয় নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন। যাদের কাজ আইনি, সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক কাঠামোয় নারীদের প্রতি বিদ্যমান বৈষম্য পর্যালোচনা করে প্রাসঙ্গিক সংস্কার প্রস্তাব করা। সে প্রস্তাব করাও হয়ে গেছে। কিন্তু পরিসংখ্যান বলছে, গত ১১ মাসের নারী ও শিশু নির্যাতনের সংখ্যা গত বছরের সংখ্যা ছাড়িয়ে গেছে।

কিছু মানুষের নাম শুনলেই মনের কোণে ভেসে ওঠে নানান গল্প। কারণ, সেই সব মানুষের গল্প এতবার এতভাবে পড়া হয়েছে যে সেগুলো এখন জীবন্ত হয়ে গেছে। কিন্তু বহুশ্রুত সেই সব গল্পও যদি চরিত্রটির মুখ থেকে শোনার সুযোগ আসে, নিজেকে ধন্য মনে হয়। এবার তেমনই একটি সুযোগ এলে হৃৎকম্প বেড়ে গেল। ধমনির রক্তস্রোতের শব্দ শুনতে শুন
২৬ জুলাই ২০২৩
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্মে অভিযোগ জানানোর প্রক্রিয়া অনেক জটিল। কয়েকটি প্ল্যাটফর্মে অভিযোগ জানানোর সুযোগও নেই। এ ছাড়া বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই প্রযুক্তি সহায়তা নীতিমালা ইংরেজিনির্ভর হয়ে থাকে। এসব কারণে বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্মে নারীরা নানাভাবে হয়রানির শিকার...
১১ ঘণ্টা আগে
বাংলার ইতিহাস পড়ে এবং বয়োজ্যেষ্ঠদের কাছে শুনে বড় হয়েছেন মেহেরুন নেছা শাহেলী। তাঁদের কথা শুনলেই মনে হতো, বাংলার প্রকৃতিতে এখনো সাগর, নদী, আকাশ, পাখি আর সবুজ আছে। কিন্তু হারিয়ে যাচ্ছে আদি শস্য ও প্রাকৃতিক খাদ্যের আবেদন। সেই অভাব তাঁকে ভাবায়, জাগায় পুনরুদ্ধারের আকাঙ্ক্ষা।
১ দিন আগে
আমার স্বামী ডিভোর্স লেটার দিয়েছে ১ মাস আগে। সেখানে ‘তিন তালাক এ বাইন’ লেখা ছিল। এতে আইন অনুযায়ী কি আমাদের তালাক হয়ে গেছে? নাকি ৯০ দিন পরই হবে? ৯০ দিন পর যদি আমরা আবার সংসার করতে চাই, তাহলে কি হিল্লা করাতে হবে? নাকি স্বাভাবিকভাবে বিয়ে করলেই হবে?
১ দিন আগেব্যারিস্টার ইফফাত গিয়াস আরেফিন

আমার স্বামী ডিভোর্স লেটার দিয়েছে ১ মাস আগে। সেখানে ‘তিন তালাক এ বাইন’ লেখা ছিল। এতে আইন অনুযায়ী কি আমাদের তালাক হয়ে গেছে? নাকি ৯০ দিন পরই হবে? ৯০ দিন পর যদি আমরা আবার সংসার করতে চাই, তাহলে কি হিল্লা করাতে হবে? নাকি স্বাভাবিকভাবে বিয়ে করলেই হবে?
মুন্তাহা মিতু, যশোর
আপনার স্বামী যে ‘তিন তালাক এ বাইন’ লিখেছেন, এর আইনগত অবস্থা হলো এই যে, আইন অনুযায়ী এখনই চূড়ান্তভাবে তালাক হয়নি। বাংলাদেশের আইনে—
» শুধু চিঠিতে লিখে দিলেই তালাক সম্পূর্ণ হয় না।
» স্বামীকে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে লিখিত নোটিশ দিতে হয়।
» নোটিশ দেওয়ার তারিখ থেকে ৯০ দিন সময় থাকে। এটিই আইনি ইদ্দত ও মীমাংসার সময়।
» যদি চেয়ারম্যানকে নোটিশ না দেওয়া হয়ে থাকে, তাহলে আইনগতভাবে তালাক এখনো কার্যকর হয়নি।
দ্বিতীয়ত, ৯০ দিন পর তালাক কার্যকর হবে কি না। হবে যদি—
» চেয়ারম্যানকে নোটিশ দেওয়া হয়ে থাকে।
» এই ৯০ দিনের মধ্যে স্বামী-স্ত্রী আবার সংসারে না ফেরেন।
» তাহলে ৯০ দিন শেষে তালাক কার্যকর হবে।
তৃতীয়ত, হিল্লা। ৯০ দিন পর যদি আপনারা আবার সংসার করতে চান, তাহলে হিল্লা লাগবে না। কারণ—
» বাংলাদেশের আইনে একসঙ্গে লেখা ‘তিন তালাক’-কে এক তালাক হিসেবেই গণ্য করা হয়।
» এটা তালাক-এ-বাইন কুবরা বা চূড়ান্ত তিন তালাক নয়।
হিল্লা লাগে শুধু তখন, যখন—
» স্বামী-স্ত্রী আলাদা আলাদা সময়ে ৩ বার তালাক সম্পন্ন করেছেন।
» প্রতিবারই ইদ্দত শেষ হয়েছে।
» আপনার ক্ষেত্রে সেটি হয়নি।
আর স্বাভাবিকভাবে বিয়ের বিষয়ে বলব, এটা আসলে নির্ভর করছে কখন ফিরতে চান, তার ওপর। যদি ৯০ দিনের ভেতরে অর্থাৎ ইদ্দতের সময় ফিরতে চান, তাহলে নতুন বিয়ে লাগবে না। স্বামী চাইলে মুখে বা কাজে সংসারে ফেরালেই হবে। তবে যদি ৯০ দিন শেষ হয়ে যায়, তখন নতুন করে নিকাহ করতে হবে, নতুন দেনমোহর ও সাক্ষী লাগবে, হিল্লা লাগবে না।
পরামর্শ দিয়েছেন
ব্যারিস্টার ইফফাত গিয়াস আরেফিন
অ্যাডভোকেট, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট

আমার স্বামী ডিভোর্স লেটার দিয়েছে ১ মাস আগে। সেখানে ‘তিন তালাক এ বাইন’ লেখা ছিল। এতে আইন অনুযায়ী কি আমাদের তালাক হয়ে গেছে? নাকি ৯০ দিন পরই হবে? ৯০ দিন পর যদি আমরা আবার সংসার করতে চাই, তাহলে কি হিল্লা করাতে হবে? নাকি স্বাভাবিকভাবে বিয়ে করলেই হবে?
মুন্তাহা মিতু, যশোর
আপনার স্বামী যে ‘তিন তালাক এ বাইন’ লিখেছেন, এর আইনগত অবস্থা হলো এই যে, আইন অনুযায়ী এখনই চূড়ান্তভাবে তালাক হয়নি। বাংলাদেশের আইনে—
» শুধু চিঠিতে লিখে দিলেই তালাক সম্পূর্ণ হয় না।
» স্বামীকে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে লিখিত নোটিশ দিতে হয়।
» নোটিশ দেওয়ার তারিখ থেকে ৯০ দিন সময় থাকে। এটিই আইনি ইদ্দত ও মীমাংসার সময়।
» যদি চেয়ারম্যানকে নোটিশ না দেওয়া হয়ে থাকে, তাহলে আইনগতভাবে তালাক এখনো কার্যকর হয়নি।
দ্বিতীয়ত, ৯০ দিন পর তালাক কার্যকর হবে কি না। হবে যদি—
» চেয়ারম্যানকে নোটিশ দেওয়া হয়ে থাকে।
» এই ৯০ দিনের মধ্যে স্বামী-স্ত্রী আবার সংসারে না ফেরেন।
» তাহলে ৯০ দিন শেষে তালাক কার্যকর হবে।
তৃতীয়ত, হিল্লা। ৯০ দিন পর যদি আপনারা আবার সংসার করতে চান, তাহলে হিল্লা লাগবে না। কারণ—
» বাংলাদেশের আইনে একসঙ্গে লেখা ‘তিন তালাক’-কে এক তালাক হিসেবেই গণ্য করা হয়।
» এটা তালাক-এ-বাইন কুবরা বা চূড়ান্ত তিন তালাক নয়।
হিল্লা লাগে শুধু তখন, যখন—
» স্বামী-স্ত্রী আলাদা আলাদা সময়ে ৩ বার তালাক সম্পন্ন করেছেন।
» প্রতিবারই ইদ্দত শেষ হয়েছে।
» আপনার ক্ষেত্রে সেটি হয়নি।
আর স্বাভাবিকভাবে বিয়ের বিষয়ে বলব, এটা আসলে নির্ভর করছে কখন ফিরতে চান, তার ওপর। যদি ৯০ দিনের ভেতরে অর্থাৎ ইদ্দতের সময় ফিরতে চান, তাহলে নতুন বিয়ে লাগবে না। স্বামী চাইলে মুখে বা কাজে সংসারে ফেরালেই হবে। তবে যদি ৯০ দিন শেষ হয়ে যায়, তখন নতুন করে নিকাহ করতে হবে, নতুন দেনমোহর ও সাক্ষী লাগবে, হিল্লা লাগবে না।
পরামর্শ দিয়েছেন
ব্যারিস্টার ইফফাত গিয়াস আরেফিন
অ্যাডভোকেট, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট

কিছু মানুষের নাম শুনলেই মনের কোণে ভেসে ওঠে নানান গল্প। কারণ, সেই সব মানুষের গল্প এতবার এতভাবে পড়া হয়েছে যে সেগুলো এখন জীবন্ত হয়ে গেছে। কিন্তু বহুশ্রুত সেই সব গল্পও যদি চরিত্রটির মুখ থেকে শোনার সুযোগ আসে, নিজেকে ধন্য মনে হয়। এবার তেমনই একটি সুযোগ এলে হৃৎকম্প বেড়ে গেল। ধমনির রক্তস্রোতের শব্দ শুনতে শুন
২৬ জুলাই ২০২৩
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্মে অভিযোগ জানানোর প্রক্রিয়া অনেক জটিল। কয়েকটি প্ল্যাটফর্মে অভিযোগ জানানোর সুযোগও নেই। এ ছাড়া বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই প্রযুক্তি সহায়তা নীতিমালা ইংরেজিনির্ভর হয়ে থাকে। এসব কারণে বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্মে নারীরা নানাভাবে হয়রানির শিকার...
১১ ঘণ্টা আগে
বাংলার ইতিহাস পড়ে এবং বয়োজ্যেষ্ঠদের কাছে শুনে বড় হয়েছেন মেহেরুন নেছা শাহেলী। তাঁদের কথা শুনলেই মনে হতো, বাংলার প্রকৃতিতে এখনো সাগর, নদী, আকাশ, পাখি আর সবুজ আছে। কিন্তু হারিয়ে যাচ্ছে আদি শস্য ও প্রাকৃতিক খাদ্যের আবেদন। সেই অভাব তাঁকে ভাবায়, জাগায় পুনরুদ্ধারের আকাঙ্ক্ষা।
১ দিন আগে
২০২৪ সালের অভ্যুত্থানের পর দেশের সাধারণ মানুষ এবং নারী অধিকারকর্মীরা নতুন করে নারীর সুরক্ষা ও নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখেছিলেন। ধারণা করা হয়েছিল, রাষ্ট্রের কাঠামোগত পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে নারী ও কন্যাশিশুর প্রতি সহিংসতা রোধে সরকার আরও কঠোর ও দায়িত্বশীল ভূমিকা নেবে। কিন্তু ২০২৫ সালের শেষ প্রান্ত
১ দিন আগে