Ajker Patrika

বাঘ-সিংহ নয়, মানুষের জন্য সবচেয়ে বিপজ্জনক প্রাণী মশা

আপডেট : ১৬ জুলাই ২০২৩, ২১: ৪৪
বাঘ-সিংহ নয়, মানুষের জন্য সবচেয়ে বিপজ্জনক প্রাণী মশা

আচ্ছা, কোন প্রাণীর আক্রমণে কিংবা এর কারণে সবচেয়ে বেশি মানুষ মারা যায়, বলুন তো? আপনি নিশ্চয় সিংহ, কুমির, বাঘ, হাতি, সাপ কিংবা বাঘের কথা ভেবে বসে আছেন। স্বাভাবিক; কারণ, এদের আক্রমণে কেউ মারা গেলে আমাদের চোখে পড়ে বেশি। যেমন শেরপুর-জামালপুর অঞ্চলে হাতির আক্রমণে মানুষ মারা যাওয়ার খবর আসছে (অবশ্য হাতিরও প্রাণ যাচ্ছে)। হলিউডের সিনেমাগুলোতেও আমরা বড় শত্রু হিসেবে দেখি হাঙর কিংবা অ্যানাকোন্ডার মতো প্রাণীগুলোকে।

কিন্তু শুনে অবাক হবেন, আপাতদৃষ্টে যাদের ভয়ংকর প্রাণী হিসেবে ভাবি আমরা, এদের অনেকগুলোর অবস্থান তালিকার নিচের দিকেই। আবার বাঘ কিংবা হাঙরের এই তালিকায় স্থানই হয়নি; কারণ, এদের আক্রমণে প্রাণ হারানো মানুষের সংখ্যা আদপে খুব একটি বেশি নয়। এ ক্ষেত্রে সবার ওপরে থাকা প্রাণীটি মোটেই এমন বিশাল কিছু নয়। সে হলো আমাদের অতি পরিচিত পুঁচকে মশা। এখন তাহলে কোন প্রাণীর কারণে কেমনসংখ্যক মানুষ মারা যায়, তা জেনে নেওয়া যাক। তবে আমরা তালিকাটি করেছি উল্টো দিক থেকে। 

ছবি: এএফপিসিংহ
অনেকের হয়তো ধারণা ছিল, তালিকায় একেবারে ওপরের দিকে থাকবে আফ্রিকার বিভিন্ন দেশ ও ভারতের জঙ্গলে বিচরণ করা প্রাণীটি। বিশেষ করে এর গর্জন শুনলে যে কারও অন্তরাত্মা কেঁপে উঠতে বাধ্য। সাভোর মানুষখেকোসহ কুখ্যাত কিছু মানুষখেকো সিংহের কথা শোনা গেলেও সিংহের আক্রমণে মানুষ মারা যাওয়ার সংখ্যা খুব বেশি নয়। বিবিসি সায়েন্স ফোকাসের হিসেবে বছরে সংখ্যাটি ২০০-এর আশপাশে। কোনো কোনো সূত্রের দাবি, সংখ্যাটি আরও অনেক কম। 

এদের নখ খুব ধারালো। কামড়ে হাড় চূর্ণবিচূর্ণ করে ফেলা থেকে শুরু করে খুলি গুঁড়িয়ে দেওয়া সম্ভব। সাধারণত ছোট দলে ভাগ হয়ে শিকার করে এরা। কোনো দলের কাছাকাছি চলে গেলে আক্রমণ করতে পারে। সঙ্গে বাচ্চা থাকলে এরা খুব বিপজ্জনক হয়ে ওঠে। 

ছবি: এএফপিজলহস্তী
জলহস্তীর আক্রমণে প্রতিবছর মারা যাওয়া মানুষের সংখ্যাটা একেবারে কম নয়, শ পাঁচেক মানুষকে প্রাণ হারাতে হয় এদের হাতে। একেকটি পুরুষ জলহস্তীর ওজন হতে পারে ১৫০০ কেজি। প্রায় আধা মিটার লম্বা ধারালো শ্বদন্তের একটি কামড়ে একজন মানুষের শরীর দুই টুকরো হয়ে যেতে পারে। বলা হয় একটি জলহস্তীর কামড়ের শক্তি সিংহের কামড়ের তিন গুণ। 

জলহস্তীর এলাকায় কোনো মানুষ চলে এলে আক্রমণ করে বসা এদের জন্য খুব স্বাভাবিক। কখনো কখনো অন্য কোনো প্রাণী ভেবে নৌকা আক্রমণ ও উল্টে দেওয়ার অভ্যাস আছে এদের। 

ছবি: এএফপিহাতি
হাতির আক্রমণে মৃত্যু হওয়া মানুষের সংখ্যা ৫০০ থেকে ৬০০। পা দিয়ে মাড়িয়ে, শুঁড় দিয়ে পেঁচিয়ে আছাড় মেরে কিংবা দাঁত দিয়ে খুঁচিয়ে মানুষ মারার রেকর্ড আছে হাতিদের। তেমনি মানুষের কারণে প্রাণ যায় হাতিদেরও। বুনো হাতির দেখা পাওয়া যায় আফ্রিকা ও এশিয়া মহাদেশের বিভিন্ন দেশে। 

হাতি-মানুষ সংঘাতে দায় আছে মানুষেরও। হাতির বিচরণের জায়গাগুলোয় মানুষের বসতি ও চাষবাদের জন্য ব্যবহৃত হওয়ায় মানুষের সঙ্গে সংঘাত বাড়ছে এদের। 

ছবি: এএফপিকুমির
প্রতিবছর কুমিরের আক্রমণে মারা যাওয়া মানুষের সংখ্যা নেহাতই কম নয়, হাজারের মতো। এদের দাঁতগুলোই জানিয়ে দেয়, কতটা বিপজ্জনক হতে পারে সরীসৃপটি। নীল ক্রোকোডাইলের কামড়কে ধরা হয় পৃথিবীর তাবৎ প্রাণীর মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী কামড় হিসেবে। তেমনি লোনাপানির কুমিরের কামড়ও প্রচণ্ড শক্তিশালী। 

ছবি: উইকিপিডিয়াএসকারিস রাউন্ডওয়র্ম
এই গুবরে পোকারা সরাসরি মানুষ মারে না। তবে বহু মানুষের মৃত্যুর জন্য এরাই দায়ী। এটি অন্য প্রাণীর দেহে বাস করে তার ক্ষতি করে। কোনো মানুষ দুর্ঘটনাবশত তাদের ডিম খেয়ে ফেললে মানুষের শরীরের প্রবেশের সুযোগ পায়। এটি মানুষের শরীরের খাদ্যনালির নিচের অংশে অবস্থান করে খাবার খায় এবং নতুন প্রাণীর জন্ম দেয়। এতে যে রোগের সৃষ্টি হয়, তার নাম এসকারিয়াসিস। এই রোগে প্রতিবছর প্রায় আড়াই হাজার মানুষ মারা যান। 

ছবি: এএফপিমাকড়সা
লেজ দিয়ে হুল ফুটিয়ে শিকারের শরীরে বিষ ঢুকিয়ে দেয় মাকড়সারা। অবশ্য এদের সবাই এমন ক্ষতিকর নয়। ২৬০০ প্রজাতির মাকড়সার মধ্যে কেবল ২৫ জাতের মাকড়সা মানুষকে মারার মতো বিষ থাকে। এদের মধ্যে সবচেয়ে ভয়ংকর বলা চলে ডেথস্টকারকে। উত্তর আমেরিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের মরু এলাকায় মৃত্যুর বার্তাবাহী এই হলুদ প্রাণীর দেখা মেলে। এদের শরীরে যে পরিমাণ বিষ থাকে, তা শিশু, বৃদ্ধ কিংবা শারীরিক জটিলতায় ভোগা মানুষদের মারার জন্য যথেষ্ট। প্রাপ্তবয়স্ক একজন মানুষও এদের হুলে মারা যেতে পারেন, তবে আশঙ্কা কম। মাকড়ার কামড়ে প্রতিবছর মারা যাওয়া মানুষের সংখ্যা ২৬০০ থেকে ৩৩০০। 

ছবি: উইকিপিডিয়াগুপ্তঘাতক বাগ
অ্যাসাসিন বাগ বা গুপ্তঘাতক ছারপোকা ছাগাস রোগ ছড়ানোর জন্য দায়ী। রক্তচোষা এই কীট মধ্য ও দক্ষিণ আমেরিকায় বড় বিপদের কারণ। এ ধরনের পোকার কামড়ে কিংবা এদের দ্বারা সংক্রামিত কোনো খাবার খেলে এ রোগ হয়। প্যান আমেরিকান হেলথ অর্গানাইজেশনের দেওয়া তথ্যে জানা যায়, এ রোগে হার্ট, পরিপাকতন্ত্র ও স্নায়ুতন্ত্র আক্রান্ত হয়। ভয়ংকর ব্যাপার হলো, এ রোগ মাতৃগর্ভে মা থেকে শিশুর শরীরে সংক্রমিত হতে পারে। এ রোগে বছরে ১০ হাজারের মতো মানুষ মারা যান। 

ছবি: ব্রিটানিকাকুকুর
কুকুর মানুষের বড় বন্ধু হিসেবে পরিচিত। তবে এরা কখনো কখনো বড় শত্রুও হয়ে উঠতে পারে। সেটি র‍্যাবিস বা জলাতঙ্ক রোগ ছড়ানোর মাধ্যমে। এমনিতে সরাসরি কুকুরের আক্রমণে কারও মৃত্যুর খবর শোনা যায় না বললেই চলে, তবে কুকুরের কামড়ে হওয়া জলাতঙ্ক রোগে মারা যাওয়া মানুষের সংখ্যা কম নয়। সাধারণত এশিয়া ও আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে জলাতঙ্কজনিত মৃত্যুর হার বেশি। প্রতিবছর জলাতঙ্কে মৃত্যুর সংখ্যা ৫৯ হাজারের মতো। 

ওয়ার্ল্ড হেথ অর্গানাইজেশনের দেওয়া তথ্যে জানা যায়, জলাতঙ্কের কারণে যত মানুষ মারা যান, তার বেশির ভাগই কুকুরের কারণে। মোট জলাতঙ্ক রোগের ৯৯ শতাংশ হয় কুকুরের কামড়ে। 

ছবি: উইকিপিডিয়াসাপ
এই বিষধর সরীসৃপদের প্রতি ইন্ডিয়ানা জোনসের যে ভীতি ছিল, তা একেবারে অমূলক নয়। বিপজ্জনক সব সাপ আছে পৃথিবীর নানা প্রান্তে। বিভিন্নভাবে সাপের আক্রমণে মারা যেতে পারে মানুষ। উদাহরণ হিসেবে ব্ল্যাক মামবা এক কামড়ে শরীরে দুই ফোঁটা বিষ ঢুকিয়ে মারতে পারে মানুষকে, আবার খুব বড় আকারের অজগরের পক্ষে এমনকি প্রাপ্তবয়স্ক মানুষকে পর্যন্ত গিলে ফেলা সম্ভব। বছরে সাপের আক্রমণে মৃত্যু হওয়া মানুষের সংখ্যা ১ লাখ ৩৮ হাজার। এদের বেশির ভাগ মারা যায় বিষধর সাপের কামড়ে। 

ছবি: উইকিপিডিয়াস্বাদুপানির শামুক
সিসটোসোমায়োসিস সিসটোসোমা ধরনের পরজীবী কৃমি দ্বারা সৃষ্টি রোগ। এটি স্নেইল ফিভাব নামেও পরিচিত। এটি মূত্রনালি অথবা অন্ত্রগুলোকে আক্রান্ত করতে পারে। পেটে ব্যথা, ডায়রিয়া, রক্ত পায়খানা অথবা মূত্রে রক্ত চিহ্ন অথবা উপসর্গ হিসেবে দেখা দিতে পারে। দীর্ঘ সময় ধরে সংক্রমিতরা যকৃতের ক্ষতি, কিডনি অকার্যকর, বন্ধ্যত্ব, মূত্রাশয় ক্যানসারে আক্রান্ত হতে পারে। সংক্রমিত মিঠাপানির শামুক দ্বারা এই পরজীবীগুলো ছড়ায়। ওয়ার্ল্ড হেথ অর্গানাইজেশনের দেওয়া তথ্যে জানা যায়, প্রতিবছর দুই লাখ মানুষ এর আক্রমণে মারা যায়। 

ছবি: এএফপিমশা
মশাকে কারও পছন্দ করার কারণ নেই। মশা নানা ধরনের রোগ ছড়ায়, এটাও সত্যি। তবে আমরা যেটা কল্পনাও করতে পারি না, কোনো প্রাণী যদি আমাদের জন্য সবচেয়ে ক্ষতিকর হয়, সেটি মশা। খুদে এই উড়ুক্কু প্রাণী বছরজুড়ে সাড়ে সাত লাখ মানুষের মৃত্যুর জন্য দায়ী। আর এই মৃত্যুগুলোর বড় একটি অংশ আসে ম্যালেরিয়ার কারণে। এটির প্রভাব সবচেয়ে বেশি আফ্রিকায়। পৃথিবীর মোট ম্যালেরিয়া সংক্রমণের ৯৫ শতাংশ ও মৃত্যুর ৯৬ শতাংশ আফ্রিকায়। আরও যেসব বড় রোগের বাহক ছোট্ট এই প্রাণী, এর মধ্যে আছে ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, জিকা, ওয়েস্ট নাইল ভাইরাস ইত্যাদি। তবে সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে বড় বিপদের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে ডেঙ্গু। এ বছর ইতিমধ্যে এডিস মশার কারণে সৃষ্টি হওয়া ডেঙ্গু জ্বরে বাংলাদেশে মারা যাওয়া মানুষের সংখ্যা ১০০-তে পৌঁছেছে। 

সূত্র: বিবিসি সায়েন্স ফোকাস, বিবিসি ওয়াইল্ডলাইফ ম্যাগাজিন

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তাসনিম জারাকে দেওয়া টাকা ফেরত চান? উপায় বলে দিলেন জারা নিজেই

তাসনিম জারার পদত্যাগের পর সামান্তা শারমিনের রহস্যময় পোস্ট

এনসিপি থেকে বেরিয়ে স্বতন্ত্র নির্বাচন করার ঘোষণা তাসনিম জারার

মারা গেছেন ঢাকা ক্যাপিটালসের কোচ, শোকাচ্ছন্ন বিপিএল

কোন স্বার্থে মুসলিমপ্রধান সোমালিল্যান্ডকে সবার আগে স্বীকৃতি দিল ইসরায়েল

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

চীনের গ্রামে লিভ টুগেদার ও গর্ভধারণ নিয়ে ‘অদ্ভুত’ আইন জারি, সমালোচনার ঝড়

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৫: ৩৭
গ্রাম মাতবরদের এই নতুন আইন নিয়ে সারা দেশে সমালোচনার ঝড় বইছে। ছবি: সংগৃহীত
গ্রাম মাতবরদের এই নতুন আইন নিয়ে সারা দেশে সমালোচনার ঝড় বইছে। ছবি: সংগৃহীত

বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক থেকে শুরু করে স্বামী-স্ত্রীর ব্যক্তিগত ঝগড়া—সবকিছুতেই এখন থেকে গুনতে হবে মোটা অঙ্কের জরিমানা। চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় ইউনান প্রদেশের লিংক্যাং গ্রামের কমিটি এমন নিয়ম জারি করেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘গ্রামের নিয়মাবলি: সবাই সমান’ শিরোনামের একটি নোটিশ ভাইরাল হওয়ার পর শুরু হয়েছে তীব্র সমালোচনা ও বিতর্ক।

সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গ্রামের শৃঙ্খলা বজায় রাখার নামে ব্যক্তিগত স্বাধীনতার ওপর একাধিক বিধিনিষেধ আরোপ করেছে স্থানীয় গ্রাম কমিটি। ভাইরাল হওয়া ছবির ভিত্তিতে জরিমানার তালিকাটি নিচে দেওয়া হলো:

প্রাদেশিক বৈষম্য: ইউনান প্রদেশের বাইরের কাউকে বিয়ে করলে দম্পতিকে ১ হাজার ৫০০ ইউয়ান (প্রায় ২৩,০০০ টাকা) জরিমানা দিতে হবে।

বিয়ের আগে গর্ভধারণ: কোনো নারী বিয়ের আগে গর্ভবতী হলে তাঁকে ৩ হাজার ইউয়ান জরিমানার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

লিভ ইন রিলেশন: বিয়ে ছাড়াই কোনো যুগল একত্রে বসবাস করলে প্রতিবছর ৫০০ ইউয়ান জরিমানা দিতে হবে।

সন্তান জন্মের সময়: বিয়ের মাত্র ১০ মাসের মধ্যে কোনো দম্পতি সন্তান জন্ম দিলে তাঁকে ‘অকাল গর্ভধারণ’ হিসেবে গণ্য করে ৩ হাজার ইউয়ান জরিমানা করা হবে।

পারিবারিক কলহ: স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হলে এবং তা মেটাতে গ্রাম কর্তাদের ডাকলে উভয় পক্ষকে ৫০০ ইউয়ান করে জরিমানা দিতে হবে।

সামাজিক আচরণ: মদ্যপ অবস্থায় বিশৃঙ্খলা করলে ৩ হাজার থেকে ৫ হাজার ইউয়ান এবং গুজব ছড়ালে ১ হাজার ইউয়ান পর্যন্ত জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে।

চীনের জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘উইবো’-তে এই নোটিশ শেয়ার হওয়ার পর নেটিজেনরা ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন। অনেক ব্যবহারকারী মন্তব্য করেছেন, ‘গ্রাম কমিটি কি এখন মানুষের শোবার ঘরের পাহারাদার হতে চায়?’ কেউ কেউ এটিকে মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন বলে অভিহিত করেছেন। সমালোচকদের মতে, আধুনিক চীনের আইনি কাঠামোয় এ ধরনের নিয়মাবলি সম্পূর্ণ অবৈধ এবং মধ্যযুগীয় বর্বরতার শামিল।

বিতর্ক তুঙ্গে উঠলে স্থানীয় মেংডিং টাউন সরকার দ্রুত পদক্ষেপ নেয়। ১৬ ডিসেম্বর রেড স্টার নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে প্রশাসনের একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা জানান, নোটিশটি গ্রাম কমিটির নিজস্ব উদ্যোগে টাঙানো হয়েছিল। তিনি বলেন, ‘এই নিয়মগুলো অত্যন্ত অস্বাভাবিক এবং ইউনিয়ন বা টাউন সরকারের কাছ থেকে কোনো প্রকার পূর্বানুমতি নেওয়া হয়নি। আমরা ইতিমধ্যেই নোটিশটি সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দিয়েছি এবং এটি এখন কার্যকর নেই।’

লিংক্যাং গ্রামটির জনসংখ্যা বা বর্তমান অর্থনৈতিক অবস্থা সম্পর্কে সঠিক তথ্য পাওয়া না গেলেও বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, চীনের অনেক প্রত্যন্ত অঞ্চলে গ্রাম কমিটিগুলো নিজেদের ছোটখাটো ‘রাজা’ মনে করে এ ধরনের অবৈধ নিয়ম জারি করে থাকে। এই ঘটনাটি চীনের গ্রামীণ স্বায়ত্তশাসনের সীমাবদ্ধতা এবং সাধারণ মানুষের আইনি অধিকার রক্ষার প্রয়োজনীয়তাকে আবারও সামনে নিয়ে এসেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তাসনিম জারাকে দেওয়া টাকা ফেরত চান? উপায় বলে দিলেন জারা নিজেই

তাসনিম জারার পদত্যাগের পর সামান্তা শারমিনের রহস্যময় পোস্ট

এনসিপি থেকে বেরিয়ে স্বতন্ত্র নির্বাচন করার ঘোষণা তাসনিম জারার

মারা গেছেন ঢাকা ক্যাপিটালসের কোচ, শোকাচ্ছন্ন বিপিএল

কোন স্বার্থে মুসলিমপ্রধান সোমালিল্যান্ডকে সবার আগে স্বীকৃতি দিল ইসরায়েল

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

৩০ বছর পর প্রথম শিশুর জন্মে খুশিতে মাতোয়ারা ইতালির এক গ্রাম

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
মা-বাবার কোলে লারা বুসি ত্রাবুক্কো। ছবি: দ্য গার্ডিয়ানের সৌজন্যে
মা-বাবার কোলে লারা বুসি ত্রাবুক্কো। ছবি: দ্য গার্ডিয়ানের সৌজন্যে

ইতালির আব্রুজ্জো অঞ্চলের মাউন্ট জিরিফালকোর পাদদেশে অবস্থিত এক প্রাচীন গ্রাম পালিয়ারা দে মার্সি। জনশূন্য এই গ্রামে মানুষের চেয়ে বিড়ালের সংখ্যাই বেশি। গত কয়েক দশক ধরে গ্রামটি নিস্তব্ধতায় ডুবে ছিল, কিন্তু গত মার্চ মাস থেকে সেখানে বইছে খুশির জোয়ার। কারণ, দীর্ঘ ৩০ বছর পর এই গ্রামে প্রথম কোনো শিশুর জন্ম হয়েছে।

লারা বুসি ত্রাবুক্কো নামের এই শিশুটির আগমনে গ্রামের জনসংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২০ জনে। তার খ্রিষ্টধর্মে দীক্ষাদান অনুষ্ঠানে পুরো গ্রাম ভেঙে পড়েছিল। এমনকি ৯ মাস বয়সী লারা এখন ওই অঞ্চলের প্রধান পর্যটন আকর্ষণে পরিণত হয়েছে। লারার মা সিনজিয়া ত্রাবুক্কো বলেন, ‘যারা আগে এই গ্রামের নামও জানত না, তারাও এখন লারাকে দেখতে আসছে।’

লারার জন্ম এক দিকে যেমন আশার প্রতীক, অন্য দিকে এটি ইতালির ভয়াবহ জনসংখ্যা হ্রাসের চিত্রকেও ফুটিয়ে তুলেছে।

ব্রিটিশ দৈনিক দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালে ইতালিতে জন্মহার সর্বকালের সর্বনিম্ন পর্যায়ে পৌঁছেছে (৩,৬৯,৯৪৪ জন)। প্রজনন হার প্রতি নারী পিছু মাত্র ১.১৮, যা ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে অন্যতম সর্বনিম্ন।

২০২৫ সালের প্রথম সাত মাসের উপাত্ত অনুযায়ী, আব্রুজ্জো অঞ্চলে জন্মহার গত বছরের তুলনায় আরও ১০.২ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে।

বিশেষজ্ঞ ও স্থানীয় বাসিন্দারা এই পরিস্থিতির জন্য একাধিক কারণকে দায়ী করেছেন। এরমধ্যে রয়েছে—তরুণ প্রজন্মের মধ্যে কর্মসংস্থানের অভাব ও দেশত্যাগের প্রবণতা। কর্মজীবী মায়েদের জন্য ডে-কেয়ার বা নার্সারির অভাব। অনেক নারী মা হওয়ার পর আর কর্মক্ষেত্রে ফিরতে পারেন না। পুরুষদের মধ্যে ক্রমবর্ধমান বন্ধ্যাত্ব এবং অনেকের সন্তান না নেওয়ার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। ট্যাক্স বেশি হলেও সেই অনুযায়ী সামাজিক সেবা বা উন্নত জীবনযাত্রার অভাব।

জর্জিয়া মেলোনির সরকার এই পরিস্থিতিকে ‘জনসংখ্যার শীতকাল’ (Demographic Winter) হিসেবে অভিহিত করেছে। সংকট মোকাবিলায় ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে প্রতিটি শিশুর জন্মের পর এককালীন ১ হাজার ইউরো ‘বেবি বোনাস’ এবং প্রতি মাসে প্রায় ৩৭০ ইউরো শিশু ভাতা দেওয়ার নিয়ম চালু করা হয়েছে। তবে লারার মায়ের মতে, শুধু অর্থ দিয়ে এই সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়; পুরো ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন প্রয়োজন।

এদিকে, জনসংখ্যা কমে যাওয়ায় অনেক শহরে প্রসূতি বিভাগ (Maternity Unit) বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। পালিয়ারা দে মার্সি থেকে এক ঘণ্টার দূরত্বে অবস্থিত সুলমোনা শহরের হাসপাতালটি এখন বন্ধের ঝুঁকিতে। নিয়ম অনুযায়ী বছরে অন্তত ৫০০ শিশুর জন্ম না হলে সেই ইউনিট চালু রাখা কঠিন। ২০২৪ সালে সেখানে মাত্র ১২০টি শিশুর জন্ম হয়েছে। এটি বন্ধ হয়ে গেলে গর্ভবতী নারীদের দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে অন্য শহরে যেতে হবে, যা জরুরি অবস্থায় অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ।

গ্রামের মেয়র জিউসেপিনা পেরোজি আশা প্রকাশ করেন, লারার জন্ম অন্যদেরও পরিবার গঠনে অনুপ্রাণিত করবে। কিন্তু লারার ভবিষ্যৎ শিক্ষা নিয়ে দুশ্চিন্তা রয়েই গেছে। গ্রামটিতে কয়েক দশক ধরে কোনো শিক্ষক নেই, এবং পার্শ্ববর্তী গ্রামের স্কুলগুলোও শিক্ষার্থীর অভাবে বন্ধ হওয়ার পথে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তাসনিম জারাকে দেওয়া টাকা ফেরত চান? উপায় বলে দিলেন জারা নিজেই

তাসনিম জারার পদত্যাগের পর সামান্তা শারমিনের রহস্যময় পোস্ট

এনসিপি থেকে বেরিয়ে স্বতন্ত্র নির্বাচন করার ঘোষণা তাসনিম জারার

মারা গেছেন ঢাকা ক্যাপিটালসের কোচ, শোকাচ্ছন্ন বিপিএল

কোন স্বার্থে মুসলিমপ্রধান সোমালিল্যান্ডকে সবার আগে স্বীকৃতি দিল ইসরায়েল

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

জরায়ুর বাইরে বেড়ে উঠল শিশু, অলৌকিক জন্ম দেখল ক্যালিফোর্নিয়া

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ০১: ১১
২০২৫ সালের আগস্টে লস অ্যাঞ্জেলেসের সিডারস-সিনাই হাসপাতালে সুজ লোপেজের মেয়ে কাইলা সুজ, তাঁর কোলে রিউ ও অ্যান্ড্রু লোপেজ (ছবিতে বাম দিক থেকে)। ছবি: এপির সৌজন্যে
২০২৫ সালের আগস্টে লস অ্যাঞ্জেলেসের সিডারস-সিনাই হাসপাতালে সুজ লোপেজের মেয়ে কাইলা সুজ, তাঁর কোলে রিউ ও অ্যান্ড্রু লোপেজ (ছবিতে বাম দিক থেকে)। ছবি: এপির সৌজন্যে

ক্যালিফোর্নিয়ার সুজ লোপেজ যখন তাঁর ছোট ছেলে রিউকে কোলে নিয়ে বসেন, তখন এক অলৌকিক বিস্ময়ে স্তব্ধ হয়ে যান। কারণ, ছোট্ট রিউ তাঁর মায়ের জরায়ুর ভেতরে নয়, বেড়ে উঠেছিল পেটের ভেতরে একটি বিশাল আকৃতির ওভারিয়ান সিস্টের আড়ালে। চিকিৎসাবিজ্ঞানে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ এবং বিরল এই ঘটনাকে ‘মিরাকল’ বা অলৌকিক বলছেন চিকিৎসকেরা।

লস অ্যাঞ্জেলেসের সিডারস-সিনাই মেডিকেল সেন্টারের প্রসূতি ও প্রসব বিভাগের মেডিকেল ডিরেক্টর ড. জন ওজিমেক এপিকে বলেন, ‘প্রতি ৩০ হাজার গর্ভাবস্থার মধ্যে মাত্র একটি জরায়ুর বাইরে পেটের ভেতরে (Abdominal Pregnancy) ঘটে। আর পূর্ণ মেয়াদে সুস্থ শিশু জন্ম দেওয়ার ঘটনা ১ কোটিতে একজনের ক্ষেত্রেও দেখা যায় না। এটি সত্যিই অবিশ্বাস্য।’

৪১ বছর বয়সী সুজ লোপেজ পেশায় একজন নার্স। আশ্চর্যের বিষয় হলো, সন্তান জন্ম দেওয়ার মাত্র কয়েক দিন আগ পর্যন্ত তিনি জানতেনই না যে তিনি অন্তঃসত্ত্বা।

সুজ দীর্ঘদিন ধরে ওভারিয়ান সিস্টের সমস্যায় ভুগছিলেন। যখন তাঁর পেট বড় হতে শুরু করে, তিনি ভেবেছিলেন, এটি ২১ পাউন্ড ওজনের সেই সিস্টেরই বৃদ্ধি।

সাধারণ গর্ভাবস্থার কোনো লক্ষণ; যেমন সকালবেলায় অসুস্থতা বোধ করা (Morning Sickness) বা শিশুর নড়াচড়া—কিছুই তিনি অনুভব করেননি। অনিয়মিত পিরিয়ডের কারণে ঋতুস্রাব বন্ধ হওয়াকেও তিনি স্বাভাবিক ধরে নিয়েছিলেন।

অবশেষে পেটে অসহ্য ব্যথা শুরু হলে তিনি সিস্ট অপসারণের জন্য চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন। সেখানে সিটি স্ক্যান করার আগে বাধ্যতামূলক গর্ভাবস্থা পরীক্ষায় ফল ‘পজিটিভ’ আসে।

হাসপাতালে আলট্রাসাউন্ড এবং এমআরআই স্ক্যানে দেখা যায়, সুজের জরায়ু সম্পূর্ণ খালি। অথচ একটি পূর্ণাঙ্গ ভ্রূণ তাঁর লিভারের কাছে পেটের এক কোণে অ্যামনিওটিক থ্যাকের ভেতরে বেড়ে উঠছে। ড. ওজিমেক জানান, ভ্রূণটি লিভারের মতো গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গকে সরাসরি আক্রান্ত করেনি, বরং পেলভিসের পাশের দেয়ালে গেঁথে ছিল। এটি অত্যন্ত বিপজ্জনক হলেও লিভারের তুলনায় কিছুটা নিয়ন্ত্রণযোগ্য ছিল।

গত ১৮ আগস্ট এক জটিল অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে ৮ পাউন্ড (৩.৬ কেজি) ওজনের রিউকে পৃথিবীতে আনা হয়। অস্ত্রোপচারের সময় সুজের সেই বিশাল সিস্টটিও অপসারণ করা হয়। অত্যধিক রক্তক্ষরণ হলেও চিকিৎসকদের দক্ষতায় সুজ এবং তাঁর সন্তান দুজনেই সুস্থভাবে ফিরে আসেন।

সুজের স্বামী অ্যান্ড্রু লোপেজ বলেন, ‘বাইরে শান্ত থাকলেও আমি ভেতরে-ভেতরে প্রার্থনা করছিলাম। যেকোনো মুহূর্তে স্ত্রী বা সন্তানকে হারানোর ভয় আমাকে তাড়া করছিল।’

বর্তমানে রিউ সম্পূর্ণ সুস্থ এবং প্রাণচঞ্চল। নিজের ১৮ বছর বয়সী বড় বোন কাইলার সঙ্গে তার খুনসুটি লেগেই থাকে। সামনেই রিউয়ের প্রথম বড়দিন। সুজ লোপেজ আবেগাপ্লুত হয়ে বলেন, ‘আমি এখন অলৌকিক ঘটনায় বিশ্বাস করি। ঈশ্বর আমাদের জীবনের সেরা উপহারটি দিয়েছেন।’

চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, এই কেস এতই বিরল যে তাঁরা এটি একটি মেডিকেল জার্নালে প্রকাশের পরিকল্পনা করছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তাসনিম জারাকে দেওয়া টাকা ফেরত চান? উপায় বলে দিলেন জারা নিজেই

তাসনিম জারার পদত্যাগের পর সামান্তা শারমিনের রহস্যময় পোস্ট

এনসিপি থেকে বেরিয়ে স্বতন্ত্র নির্বাচন করার ঘোষণা তাসনিম জারার

মারা গেছেন ঢাকা ক্যাপিটালসের কোচ, শোকাচ্ছন্ন বিপিএল

কোন স্বার্থে মুসলিমপ্রধান সোমালিল্যান্ডকে সবার আগে স্বীকৃতি দিল ইসরায়েল

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

অন্য নারীর ছবিতে লাইক দেওয়া বৈবাহিক বিশ্বাসভঙ্গের শামিল: তুরস্কের আদালত

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২: ৫৭
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

তুরস্কের একটি আদালত এক চাঞ্চল্যকর রায়ে জানিয়েছেন, স্ত্রী ছাড়া অন্য নারীদের অনলাইন পোস্টে স্বামীর বারবার ‘লাইক’ দেওয়া বৈবাহিক বিশ্বাস নষ্ট করতে পারে এবং তা বিবাহবিচ্ছেদের ভিত্তি হিসেবে গণ্য হতে পারে। মধ্যতুরস্কের কায়সেরি শহরের একটি মামলায় এই যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত এসেছে।

স্থানীয় সংবাদমাধ্যম হাবারলারের বরাত দিয়ে হংকং থেকে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এইচবি নামে এক নারী তাঁর স্বামীর বিরুদ্ধে মৌখিক অপমান এবং আর্থিক ভরণপোষণ না দেওয়ার অভিযোগ আনেন। ওই নারী আরও উল্লেখ করেন, তাঁর স্বামী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচুর সময় কাটাতেন এবং সেখানে নিয়মিত অন্য নারীদের ছবিতে, এমনকি প্রলুব্ধকর ছবিতেও ‘লাইক’ দিতেন। মাঝেমধ্যে তিনি ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্যও করতেন।

এইচবি যুক্তি দেন, এই আচরণ তাঁর স্বামীর দাম্পত্য আনুগত্যের পরিপন্থী। তিনি বিবাহবিচ্ছেদের পাশাপাশি খোরপোশ ও ক্ষতিপূরণ দাবি করে মামলা করেন। স্বামী এসবি অবশ্য সব অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনিও পাল্টা বিবাহবিচ্ছেদের আবেদন করেন এবং দাবি করেন, তাঁর স্ত্রী তাঁর বাবাকে অপমান করেছেন এবং অতিরিক্ত ঈর্ষাপরায়ণ। স্ত্রীর এসব অভিযোগ তাঁর সুনাম ক্ষুণ্ন করেছে বলেও তিনি অভিযোগ করেন।

আদালত এই মামলায় স্বামীকেই বেশি দোষী সাব্যস্ত করে রায় দেন। তাঁকে প্রতি মাসে ৭৫০ লিরা বা ২০ মার্কিন ডলার খোরপোশ এবং ৮০ হাজার লিরা ২ হাজার মার্কিন ডলার ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। এসবি এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে দাবি করেন, এই পরিমাণ অনেক বেশি। কিন্তু আদালত তাঁর সেই আবেদন নাকচ করে দেন।

বিচারকেরা জানান, অন্য নারীদের ছবিতে ওই ব্যক্তির ‘লাইক’ দেওয়ার বিষয়টি বৈবাহিক বিশ্বাস ভেঙে দিয়েছে। তাঁরা মন্তব্য করেন, ‘অনলাইনে এই আপাত নিরীহ মিথস্ক্রিয়াগুলো মূলত মানসিক নিরাপত্তাহীনতা বাড়িয়ে তুলতে পারে এবং সম্পর্কের ভারসাম্য নষ্ট করে দিতে পারে।’

তুর্কি আইনজীবী ইমামোগ্লু স্থানীয় গণমাধ্যমকে বলেন, এই রায় একটি দৃষ্টান্ত হয়ে থাকল যে অনলাইন কর্মকাণ্ড এখন বিবাহবিচ্ছেদের মামলায় শক্তিশালী প্রমাণ হিসেবে গণ্য হবে। তিনি বলেন, ‘এখন থেকে স্ক্রিনশট, মেসেজ এবং সব ধরনের ডিজিটাল কার্যক্রম উভয় পক্ষের দোষ নির্ধারণে বিবেচনায় নেওয়া হবে। নাগরিকদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারের সময় বিষয়টি মাথায় রাখার পরামর্শ দিচ্ছি।’

এই মামলা অনলাইনে ব্যাপক বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। এক নেটিজেন লিখেছেন, ‘যদি একটি লাইক আপনার সম্পর্ক ধ্বংস করতে পারে, তবে আপনাদের বিয়ে কখনোই মজবুত ছিল না।’ অন্য একজন মন্তব্য করেছেন, ‘এখন পরিচয় লুকিয়ে লাইক দেওয়ার ফিচার চালু করার সময় এসেছে।’ তবে তৃতীয় একজন ভিন্নমত পোষণ করে বলেন, ‘যদি অনলাইনে প্রতিটি লাইক বা ভিউকে অবিশ্বস্ততা হিসেবে দেখা হয়, তবে মানুষ সারাক্ষণ ভয়ে থাকবে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম হওয়া উচিত মতপ্রকাশের মুক্ত জায়গা।’

তুরস্কের আদালতে অদ্ভুত কারণে বিবাহবিচ্ছেদের রায় দেওয়ার ঘটনা এটিই প্রথম নয়। এর আগে এক ব্যক্তিকে তাঁর সাবেক স্ত্রীকে ফোনের কন্টাক্ট লিস্টে ‘মোটু’ নামে সেভ করার জন্য ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল, যা অসম্মানজনক হিসেবে বিবেচিত হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তাসনিম জারাকে দেওয়া টাকা ফেরত চান? উপায় বলে দিলেন জারা নিজেই

তাসনিম জারার পদত্যাগের পর সামান্তা শারমিনের রহস্যময় পোস্ট

এনসিপি থেকে বেরিয়ে স্বতন্ত্র নির্বাচন করার ঘোষণা তাসনিম জারার

মারা গেছেন ঢাকা ক্যাপিটালসের কোচ, শোকাচ্ছন্ন বিপিএল

কোন স্বার্থে মুসলিমপ্রধান সোমালিল্যান্ডকে সবার আগে স্বীকৃতি দিল ইসরায়েল

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত