Ajker Patrika

১০০ কিলোমিটার ওপর থেকে মানুষের চেহারা শনাক্ত করবে চীনের গোয়েন্দা স্যাটেলাইট

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ১২ মার্চ ২০২৫, ১৬: ৪০
এই স্যাটেলাইটে ব্যবহৃত হচ্ছে—সিনথেটিক অ্যাপারচার লাইডার (এসএএল) প্রযুক্তি। ছবি: প্রতীকি ছবি
এই স্যাটেলাইটে ব্যবহৃত হচ্ছে—সিনথেটিক অ্যাপারচার লাইডার (এসএএল) প্রযুক্তি। ছবি: প্রতীকি ছবি

শক্তিশালী গোয়েন্দা স্যাটেলাইট তৈরি করেছে চীনের বিজ্ঞানীরা। এটি লেজার ইমেজিং প্রযুক্তির মাধ্যমে ১০০ কিলোমিটার (৬০ মাইল) ওপর থেকে মানুষের চেহারার বিস্তারিত ছবি তুলতে পারে। চীনের সংবাদমাধ্যম সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই প্রযুক্তি বর্তমানের শীর্ষস্থানীয় স্যাটেলাইট ক্যামেরা এবং গোয়েন্দা টেলিস্কোপের তুলনায় ১০০ গুণ বা তারও বেশি শক্তিশালী।

এই স্যাটেলাইটের প্রযুক্তি একাধিক কাজে ব্যবহার করতে পারে চীন। যার মধ্যে একটি হলো বিদেশি স্যাটেলাইটের ওপর নজরদারি। এর মাধ্যমে নতুন স্তরের বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করতে পারবে চীন, যা এর আগে সম্ভব ছিল না।

এই স্যাটেলাইট তৈরি করেছেন চীনের একাডেমি অব সায়েন্সেসের অ্যারোস্পেস ইনফরমেশন রিসার্চ ইনস্টিটিউটের গবেষকেরা এবং তাদের গবেষণার ফলাফল চীনা জার্নাল অব লেজার্স (ইস্যু ৫২, ভলিউম ৩)-এ প্রকাশিত হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশটির উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত ‘কিংহাই হ্রদ’ এলাকায় একটি নতুন সিস্টেমের মাধ্যমে পরীক্ষা চালান বিজ্ঞানীরা, যা সিনথেটিক। অ্যাপারচার লাইডার (এসএএল) নামক একধরনের লেজার রাডার প্রযুক্তির ওপর ভিত্তি করে স্যাটেলাইটটি তৈরি। এই প্রযুক্তি দ্বিমাত্রিক বা ত্রিমাত্রিক ছবি তুলতে পারে।

নতুন স্যাটেলাইট প্রযুক্তি কাজ করে যেভাবে

এই স্যাটেলাইটে ব্যবহৃত হচ্ছে সিনথেটিক অ্যাপারচার লাইডার (এসএএল) প্রযুক্তি, যা একধরনের লেজার রাডার। এটি চলমান বস্তুর (যেমন: স্যাটেলাইট) গতির সাহায্যে ছবি তুলতে সক্ষম, যা অন্যান্য সিস্টেমের তুলনায় অনেক বেশি স্পষ্ট ছবি ধারণ করতে পারে। আগের স্যাটেলাইট রাডার সিস্টেমগুলোয় (এসএআর) মাইক্রোওয়েভ রশ্মি ব্যবহার করত, যার কারণে সেগুলোর রেজল্যুশন তুলনামূলকভাবে কম ছিল। তবে এই নতুন সিস্টেম অপটিক্যাল তরঙ্গদৈর্ঘ্য ব্যবহার করে, যা মাইক্রোওয়েভের চেয়ে অনেক ছোট এবং এর মাধ্যমে অনেক বেশি স্পষ্ট ছবি পাওয়া যায়।

গবেষণার পরীক্ষাটি চীনের কিংহাই হ্রদের কাছাকাছি একটি এলাকা থেকে পরিচালিত হয়, যেখানে সিস্টেমটি ১০১ দশমিক ৮ কিলোমিটার (৬৩ দশমিক ৩ মাইল) দূরত্বে প্রতিফলিত প্রিজমের ওপর নজরদারি করে। পরীক্ষায় সিস্টেমটি ১ দশমিক ৭ মিলিমিটার (দশমিক শূন্য ৭ ইঞ্চি) পর্যন্ত ছোট বস্তুর বিস্তারিত তথ্য দেখতে সক্ষম ছিল এবং ১৫ দশমিক ৬ মিমি (দশমিক ৬১ ইঞ্চি) পর্যন্ত নির্ভুলভাবে দূরত্ব পরিমাপ করে।

এই প্রযুক্তি পূর্বের যেকোনো প্রযুক্তির তুলনায় অনেক বেশি উন্নত। উদাহরণস্বরূপ, ২০১১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানি লকহিড মার্টিন একটি পরীক্ষায় মাত্র ১ দশমিক ৬ কিলোমিটার (১ মাইল) দূর থেকে ২ সেন্টিমিটার (দশমিক ৭৯ ইঞ্চি) রেজল্যুশনের ছবি তুলতে পরেছিল। যেখানে চীনের ২০১০ সালের পরীক্ষায় ৬ দশমিক ৯ কিলোমিটার (৪ দশমিক ৩ মাইল) দূরত্ব থেকে ৫ সেন্টিমিটার (১ দশমিক ৯৭ ইঞ্চি) রেজল্যুশনের ছবি পাওয়া গিয়েছিল।

সর্বশেষ অগ্রগতি অর্জন করতে লেজার রশ্মিকে ৪ x ৪ মাইক্রো-লেন্স অ্যারেতে (একাধিক ছোট ছোট অংশে) ভাগ করে দিয়েছিল চীনের দলটি। এর ফলে সিস্টেমের অপটিক্যাল অ্যাপারচার—অর্থাৎ ক্যামেরা সিস্টেমে আলো প্রবাহিত হওয়ার পরিসর দশমিক ৬৮ ইঞ্চি (১৭ দশমিক ২ মিলিমিটার) থেকে ২ দশমিক ৭১ ইঞ্চি (৬৮ দশমিক ৮ মিলিমিটার) পর্যন্ত বাড়ে।

চীনের এই পরীক্ষা নিখুঁত আবহাওয়া ও বায়ুমণ্ডলীয় শর্তে পরিচালনা করা হয়, যেখানে বাতাস ছিল শান্ত এবং মেঘ কম ছিল। তবে, খারাপ আবহাওয়ায় বা কোনো বাধা এলে সিস্টেমটির ছবির স্পষ্টতা এবং নির্ভরযোগ্যতায় প্রভাব পড়তে পারে।

আরও খবর পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

চূড়ান্ত হচ্ছে সাত কলেজের নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম, শিগগির ঘোষণা

প্রবাসীর স্ত্রীর ঘরে ধরা পড়া সেই নেতাকে বহিষ্কার করল ছাত্রশিবির

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ডিজির অপসারণের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন

ফ্রিতে নৌকা না পেয়ে ভূমি অফিস সহকারীকে মারধর এসপির

এশিয়ার ১০টিসহ ৪৩ দেশের বিরুদ্ধে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা দিচ্ছেন ট্রাম্প

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত