Ajker Patrika

লেবাননে পেজার–ওয়াকিটকি বিস্ফোরণে বহু হতাহত, আপনার ফোন কি নিরাপদ

আপডেট : ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২: ২৪
লেবাননে পেজার–ওয়াকিটকি বিস্ফোরণে বহু হতাহত, আপনার ফোন কি নিরাপদ

লেবাননে দেশটির সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর সদস্যদের যোগাযোগের জন্য ব্যবহৃত পেজার এবং ওয়াকিটকি বিস্ফোরণ সারা দুনিয়াতেই ভীতি ছড়িয়েছে। লেবাননজুড়ে একযোগে হাজারখানেক পেজার এবং ওয়াকিটকি বিস্ফোরিত হয়েছে। এতে প্রায় ২০ জনের প্রাণহানি এবং কয়েক হাজার আহত হয়েছেন। অনেকে বলছেন, ডিভাইসগুলো হ্যাক করা হয়েছে। ফলে এই ধরনের ইলেকট্রনিক ডিভাইসের নিরাপত্তা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। এটি কি তাহলে নতুন সাইবার যুদ্ধের আলামত— এমন প্রশ্নও উঠছে।

একটি ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, একজন পুরুষ একটি মুদি দোকানে কেনাকাটা করছেন, তখন তাঁর কোমরে থাকা পেজার হঠাৎ বিস্ফোরিত হয় এবং তিনি মাটিতে ছিটকে পড়েন। চারপাশের লোকজন আতঙ্কে এদিক–সেদিক ছুটতে থাকে। 

হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে পেজার বা ওয়াকিটকির ব্যাটারির তাপমাত্রা বাড়িয়ে এই বিস্ফোরক ঘটানো হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। এটি স্মার্টফোনের ক্ষেত্রেও ঘটতে পারে কিনা সেটি নিয়ে উদ্বেগ জোরালো হচ্ছে।

লেবাননে পেজার ও ওয়াকিটকি বিস্ফোরণগুলো নিয়ে ইলেকট্রনিক ডিভাইসে বহুল ব্যবহৃত লিথিয়াম–আয়ন ব্যাটারির নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। কারণ এই ব্যাটারি স্মার্টফোনেও ব্যবহার করা হয়।

উল্লেখ্য, পেজার হলো একটি ক্ষুদ্র ইলেকট্রনিক ডিভাইস, যেটি স্থানীয় যোগাযোগে ব্যবহার করা হয়। এই ডিভাইস পকেটে রাখা যায়। আর কম দূরত্বে যোগাযোগের জন্য ওয়াকিটকির ব্যবহার সম্পর্কে প্রায় সবারই জানা থাকার কথা।

হ্যাকারেরা স্মার্টফোন বিস্ফোরণ ঘটাতে পারবে কিনা
স্মার্টফোনের বিস্তৃত ব্যবহার এবং লিথিয়াম–আয়ন ব্যাটারির ওপর নির্ভরতা বিবেচনা করলে ডিভাইসগুলো ব্যবহার করে একই ধরনের আক্রমণের সম্ভাবনাকে উড়িয়ে দেওয়া যায় না। যদিও স্মার্টফোনে এই ধরনের ঘটনা ঘটানো বেশ কঠিন বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

মূলত ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থার নজরদারি নিয়ে উদ্বেগের কারণে স্মার্টফোনের তুলনায় পেজারকে বেশি সুরক্ষিত মনে করেছিল হিজবুল্লাহ। পেজারের বিশেষ হার্ডওয়্যারের কারণে এগুলো ট্র্যাক করা কঠিন এবং স্মার্টফোনের তুলনায় ডিজিটাল হ্যাকিংয়ের সুযোগ কম। তবে পেজার ও স্মার্টফোনে একই মৌলিক প্রযুক্তি—লিথিয়াম–আয়ন ব্যাটারি ব্যবহৃত হয়। আর এই প্রযুক্তি ব্যবহারে বেশ কিছু ঝুঁকি রয়েছে। 

লিথিয়াম–আয়ন ব্যাটারি বেশি পরিমাণ বিদ্যুৎ শক্তি সঞ্চয় করে এবং দ্রুত রিচার্জ করার ক্ষমতার জন্য স্মার্টফোনে ব্যাপকভাবে এটি ব্যবহৃত হয়। তবে এর ব্যবহার সম্পূর্ণ নিরাপদ নয়। অতিরিক্ত তাপ, ওভারচার্জিং বা বাহ্যিক আঘাত ব্যাটারিগুলোকে অতিরিক্ত গরম করতে পারে এবং কিছু ক্ষেত্রে বিস্ফোরিত হতে পারে। উৎপাদন এবং নকশার ত্রুটির কারণে এই ঝুঁকি বেড়ে যায়। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিশেষ করে স্যামসাং স্মার্টফোনের একটি মডেলের ক্ষেত্রে এ ধরনের ঘটনা দেখা গেছে।

সাধারণত স্মার্টফোন বিস্ফোরিত হয় না। তবে দীর্ঘ সময় ব্যবহার, বাহ্যিক আঘাত ও ত্রুটিপূর্ণ হার্ডওয়্যারের কারণে স্মার্টফোন বিস্ফোরণ ঘটতে পারে। যদিও এগুলো বিচ্ছিন্ন ঘটনা। 

হিজবুল্লাহর পেজার বিস্ফোরণের ঘটনাগুলো আরও জটিল বিষয়। সম্ভবত উৎপাদনের সময়ই সেগুলোতে পরিবর্তন আনা হয়েছিল এবং আগে থেকেই বিস্ফোরক উপাদান যুক্ত করা ছিল।

নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, তাইওয়ানের প্রতিষ্ঠান গোল্ড অ্যাপোলো থেকে অর্ডার করা পেজারের একটি ব্যাচে বিস্ফোরক লুকিয়ে রেখেছিল ইসরায়েল। যদিও গোল্ড অ্যাপোলো এসব প্রতিবেদন অস্বীকার করেছে। 

প্রতিবেদন অনুযায়ী, দূর থেকে বিস্ফোরণ ঘটানোর জন্য একটি সুইচ এতে যুক্ত করা হয়েছিল। স্মার্টফোনগুলোতে একই কৌশল ব্যবহার করতে হলে উৎপাদনের সময় এগুলোতে পরিবর্তন বা বিস্ফোরণ ঘটানোর জন্য সমন্বিত রেডিও সিগন্যাল বা একটি ইলেকট্রনিক পালসের মতো দূরবর্তী নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতির প্রয়োজন। 

তাত্ত্বিকভাবে এই ধারণা স্মার্টফোনগুলোতে প্রয়োগ করা যেতে পারে। স্মার্টফোনগুলোর জটিল সফটওয়্যার এবং নেটওয়ার্ক সংযোগের কারণে এগুলো দূর থেকে নিয়ন্ত্রণের জন্য আরও সুযোগ পাওয়া যায়। বিশেষ করে যদি ডিভাইসের ফার্মওয়্যারে কোনো ত্রুটি থাকে। তবে এত বড় পরিসরে হামলা চালানো বেশ চ্যালেঞ্জিং। কারণ স্মার্টফোনের ব্র্যান্ড, মডেল এবং সফটওয়্যার সিস্টেমগুলো অনেক ভিন্ন। আধুনিক স্মার্টফোনগুলোর বৈচিত্র্যময় সুরক্ষা ব্যবস্থা একটি অতিরিক্ত নিরাপত্তা স্তর যোগ করে, যা এই ধরনের হামলা চালানো কঠিন করে তোলে।

স্মার্টফোন নিজে থেকেই বিস্ফোরিত হয় না। যদি হ্যাকারেরা ব্যাটারির তাপমাত্রা বাড়ানোর জন্য বিদ্যুৎ প্রবাহে পরিবর্তন করতে সক্ষম হয়, তবুও একসঙ্গে অনেক ফোন বিস্ফোরিত হবে না; একটি বা দুটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া। এর কারণ হলো—ফোনগুলোর মধ্যে এমন একটি সার্কিট রয়েছে যা তাপের অতিরিক্ত সরবরাহ হলে স্মার্টফোনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা চালু হয়। উদাহরণস্বরূপ: গরম আবহাওয়ায় বেশি তাপে আইফোন গরম হতে শুরু করলে এর চার্জিং ব্যবস্থা স্বয়ংক্রিয়ভাবে বন্ধ হয়ে যায়। 

এ ছাড়া বর্তমানের অনেক স্মার্টফোনে উন্নত কুলিং চেম্বার ব্যবহার করা হয়, যা ডিভাইসে তৈরি হওয়া তাপকে দূর করতে সাহায্য করে। আধুনিক স্মার্টফোনগুলোতে প্রায়শই বাষ্প চেম্বার এবং গ্রাফাইট কুলিং সিস্টেম ব্যবহার করা হয়। এসব প্রযুক্তি তাপকে সমানভাবে ছড়িয়ে দিতে সাহায্য করে। এতে তরল বাষ্পীভূত এবং পুনরায় ঘনীভূত হয়ে স্মার্টফোনের তাপ কমায়। গ্রাফাইট স্তরগুলো স্মার্টফোনের প্রসেসরের মতো গুরুত্বপূর্ণ উপাদানগুলো থেকে তাপ দূর করতে সাহায্য করে। 

স্মার্টফোন যদি অত্যধিক তাপের সম্মুখীন হয়, তাহলে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ফোনটি বিস্ফোরিত হওয়ার পরিবর্তে কিছুটা গলতে পারে, যা ব্যাটারির ফুলে ওঠা বা ফুটো হওয়ার কারণ হয়। খুব কম ক্ষেত্রেই ফোন বিস্ফোরিত হয়। এমনকি যখন কারও ফোন বিস্ফোরণের খবর গণমাধ্যমে দেখা যায় সেখানে আসলে এই ধরনের পরিস্থিতিতে সামান্য আগুন ধরতে পারে, কিন্তু বিস্ফোরিত হয় না। 

একজন প্রাক্তন ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর বোমা নিষ্ক্রিয়কারী কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা এপিকে বলেন, বিস্ফোরক ডিভাইসগুলোতে পাঁচটি প্রধান উপাদান থাকে—একটি কনটেইনার, ব্যাটারি, ট্রিগারিং ডিভাইস, ডেটোনেটর এবং বিস্ফোরক চার্জ। আর একটি পেজারে এর মধ্যে তিনটি উপাদানই উপস্থিত। বিস্ফোরক ডিভাইস তৈরির জন্য শুধু ডেটোনেটর এবং চার্জ যুক্ত করতে হবে। 

অর্থাৎ স্মার্টফোনগুলো বিস্ফোরণের ঝুঁকিতে নেই, যতক্ষণ না সেগুলোর হার্ডওয়্যার ও নিরাপত্তা ব্যবস্থায় ব্যাপকভাবে পরিবর্তন করা হয় বা বিস্ফোরক উপাদান যুক্ত করা হয়। 

পেজার কী 
পেজারের অপর একটি নাম হলো—বিপার। এটি বেশ ছোট, সহজে বহনযোগ্য টেলিযোগাযোগ যন্ত্র, যা রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি সিগন্যালের মাধ্যমে সংক্ষিপ্ত লিখিত বার্তা, সংখ্যাসূচক বা আলফানিউমেরিক বার্তা আদান–প্রদানে ব্যবহৃত হয়। সেলফোন জনপ্রিয় হওয়ার আগে নব্বই দশকে পেজার ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হতো। সে সময় যোগাযোগের একটি গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার ছিল এটি। বিশেষ করে চিকিৎসক, সাংবাদিক, প্রযুক্তিবিদ এবং সিনেমা পরিচালকদের মতো পেশাদারদের কাছে এটি ব্যাপক জনপ্রিয় ছিল। এটির জন্য আলাদা কোনো নেটওয়ার্ক অবকাঠামোর প্রয়োজন হয় না। 

পেজার দিয়ে খুব সহজেই যোগাযোগ করা যায়। তবে এর জন্য ব্যবহারকারীকে অবশ্য কিছুটা দক্ষ হতে হয়। এই যন্ত্রে রেডিও তরঙ্গের মাধ্যমে একটি বার্তা পাঠানো হয়। পরে অপর প্রান্তে থাকা ব্যবহারকারী ডিভাইসটি থেকে আসা একটি স্বতন্ত্র বিপের মাধ্যমে বার্তা গ্রহণ করেন। কিন্তু বার্তায় কী বলা হয়েছে তা জানার জন্য ব্যবহারকারীকে অবশ্যই নিকটস্থ ল্যান্ডফোন সংযোগের সঙ্গে যুক্ত করতে হবে। 

তথ্যসূত্র: ইন্ডিয়া টুডে ও দ্য ইকোনমিক টাইমস

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জাতীয় সোর্স কোড নীতিমালার খসড়া প্রকাশ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
জাতীয় সোর্স কোড নীতিমালার খসড়া প্রকাশ

জাতীয় সোর্স কোড নীতিমালা ২০২৫-এর খসড়া প্রকাশ করেছে সরকার। সরকারি অর্থায়নে নির্মিত সফটওয়্যারকে ‘জাতীয় সম্পদ’ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া এবং জনগণের অর্থে নির্মিত সফটওয়্যারের ওপর জনস্বার্থভিত্তিক মালিকানা, নিরাপত্তা, স্বচ্ছতা ও পুনর্ব্যবহারযোগ্যতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে এই খসড়া তৈরি করা হয়েছে।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের ওয়েবসাইটে (ictd.gov.bd) খসড়াটি প্রকাশ করা হয়েছে। যার ট্যাগলাইন ‘পাবলিক মানি, পাবলিক কোড’।

আজ বৃহস্পতিবার ডাক টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ সব কথা জানিয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, নীতিমালাটি সরকারিভাবে উন্নয়ন/অধিগৃহীত সফটওয়্যার সিস্টেম, অ্যাপ্লিকেশন, অ্যাপ, এপিআই (অ্যাপ্লিকেশন প্রোগ্রামিং ইন্টারফেস) ও ডিজিটাল সেবার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য; যা জাতীয় বাজেট, বৈদেশিক ঋণ বা সরকারের অধীন বাস্তবায়িত উন্নয়ন সহযোগী অর্থায়নে পরিচালিত। এটি সকল মন্ত্রণালয়/বিভাগ/অধিদপ্তর/সংবিধিবদ্ধ, স্বায়ত্তশাসিত ও আধা স্বায়ত্তশাসিত সংস্থার জন্য বাধ্যতামূলক।

নীতিমালার প্রধান বিধানসমূহ—

১. কেন্দ্রীয় জাতীয় সোর্স কোড রিপোজিটরি বাধ্যতামূলক: সরকারি অর্থায়নে তৈরি সব সফটওয়্যারের সোর্স কোড, ডকুমেন্টেড ও সংশ্লিষ্ট সফটওয়্যার উপাদান যথাযথ কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল দ্বারা পরিচালিত জাতীয় সোর্স কোড রিপোজিটরিতে সংরক্ষণ করতে হবে এবং সংশ্লিষ্ট সোর্স কোড রিপোজিটরিতে সংরক্ষণ না হওয়া পর্যন্ত অনির্ভরযোগ্য কোনো সফটওয়্যার প্রোডাকশনে ডেপ্লয় করা যাবে না। রিপোজিটরিতে বিস্তারিত ট্রেসেবিলিটি ও নিরীক্ষাযোগ্যতা নিশ্চিত করার নির্দেশনা রয়েছে। প্রয়োজনে এসক্রো ব্যবস্থা স্থাপনের নির্দেশনা রয়েছে।

২) পুনর্ব্যবহারে অগ্রাধিকার নীতি: নতুন সফটওয়্যার উন্নয়ন শুরুর আগেই সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে ‘রিইউজ ফার্স্ট’ পদ্ধতি গ্রহণ করতে হবে; বাধ্যতামূলকভাবে বিদ্যমান কাছাকাছি সমাধান পুনর্ব্যবহার এবং পুনর্ব্যবহার না করলে তার যৌক্তিকতা লিখিতভাবে কর্তৃপক্ষকে অবহিত করার বিধান রাখা হয়েছে।

৩) ‘পাবলিক মানি, পাবলিক কোড’ বাধ্যতামূলক সোর্স কোড উন্মুক্তকরণ ও নির্দিষ্ট শর্তে অব্যাহতি: নীতিমালার মূলনীতি হিসেবে ‘পাবলিক মানি, পাবলিক কোড’; অব্যাহতি না দেওয়া পর্যন্ত সরকারের মালিকানাধীন সোর্স কোড সাধারণভাবে উন্মুক্ত বলে গণ্য হবে।

জাতীয় নিরাপত্তা/প্রতিরক্ষা, গোপনীয়তা বা বিশেষ ক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষ ওই নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে উন্মুক্তকরণ থেকে অব্যাহতি দিতে পারে। তবে রেপোজিটরির মাধ্যমে রক্ষণাবেক্ষণ থেকে অব্যাহতি থাকবে না; অব্যাহতিপ্রাপ্ত সিস্টেমের জন্য লিখিত যুক্তি, নিবন্ধন, পাবলিক কোড রেজিস্ট্রি এবং পর্যায়ক্রমিক পর্যালোচনার বিধান রাখা হয়েছে। সোর্স কোড উন্মুক্ত করার ক্ষেত্রে অনুমোদিত লাইসেন্স ব্যবহারের নীতি নির্ধারণ করা হয়েছে।

৪) নিরাপদ উন্নয়ন, CI/CD (সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্টের একটি প্রক্রিয়া) বাধ্যতামূলক এবং অ্যাকসেস কন্ট্রোল: নিরাপদ কোডিং নির্দেশিকা প্রণয়ন ও তদারকির জন্য ‘স্ট্যান্ডার্ড কোডিং গাইডলাইন কমিটি’ভিত্তিক কাঠামো প্রস্তাব করা হয়েছে। সফটওয়্যার স্থাপনায় অনুমোদিত CI/CD পাইপলাইন অনুসরণ বাধ্যতামূলক—স্বয়ংক্রিয় পরীক্ষা, দুর্বলতা স্ক্যানিং, লাইসেন্স যাচাই এবং প্রোডাকশনে প্রকাশের আগে ম্যানুয়াল অনুমোদনসহ।

রিপোজিটরি ‘রোল বেজড অ্যাকসেস কন্ট্রোল’-এর অধীনে পরিচালিত হবে এবং কন্ট্রিবিউটর/মেইনটেইনার/অনুমোদনকারী/নিরীক্ষকদের প্রবেশাধিকারের আগে সরকার অনুমোদিত এনডিএ (অপ্রকাশ চুক্তি) স্বাক্ষরের বিধান রয়েছে।

৫) ডেটাসেট ব্যবস্থাপনা ও জাতীয় ডেটা ক্যাটালগে নিবন্ধন: সরকারি সফটওয়্যারের সঙ্গে সম্পর্কিত ডেটাসেটকে উন্মুক্ত, সীমাবদ্ধ ও নিয়ন্ত্রিত—এই তিন শ্রেণিতে শ্রেণিবদ্ধ করে প্রয়োজনীয় মেটাডেটাসহ জাতীয় ডেটা ক্যাটালগে নিবন্ধনের নির্দেশনা রয়েছে। মেশিন লার্নিং/এপিআইভিত্তিক সিস্টেমের ক্ষেত্রে ইনপুট-আউটপুট কাঠামো, ডেটাসেট উৎস ও ইউজ কেস ডকুমেন্টেশন রিপোজিটরিতে সংরক্ষণ এবং সীমাবদ্ধ/নিয়ন্ত্রিত ডেটাসেট ব্যবহারে এনডিএ বাধ্যতামূলক করার বিধান আছে।

৬) বাস্তবায়ন, তদারকি ও সম্মতিসংক্রান্ত বিধান: নীতিমালা প্রয়োগ, ব্যাখ্যা ও ছাড়পত্র প্রদানে কর্তৃপক্ষ দায়িত্বপ্রাপ্ত এবং রিপোজিটরি ব্যবস্থাপনা, CI/CD অবকাঠামো ও নিরাপদ অ্যাকসেস নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল পরিচালন সংস্থা হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে।

নীতিমালা যথাযথভাবে অনুসরণে ব্যর্থ হলে ব্যবস্থা গ্রহণের বিধান রাখা হয়েছে।

নীতিমালাটি প্রতি তিন বছর অন্তর (বা প্রয়োজন অনুযায়ী তার আগেই) পর্যালোচনা ও হালনাগাদের বিধান রয়েছে।

খসড়া নীতিমালাটি অংশীজনের মতামতের জন্য আইসিটি ডিভিশন ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে। খসড়াটির ওপর দেশে বা বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশের যেকোনো নাগরিক লিখিত মতামত বা সুপারিশ পাঠাতে পারবেন।

মতামত পাঠানোর ঠিকানা: [email protected]

অথবা ডাকযোগে,

সচিব

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ

আইসিটি টাওয়ার (চতুর্থ তলা)

আগারগাঁও, ঢাকা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

প্রবাসীরা ৬০ দিনের বেশি দেশে থাকলে মোবাইল ফোন নিবন্ধন করতে হবে

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ০৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৮: ৩১
প্রবাসীরা ৬০ দিনের বেশি দেশে থাকলে মোবাইল ফোন নিবন্ধন করতে হবে

প্রবাসীরা ছুটি কাটাতে দেশে এসে ৬০ দিনের বেশি অবস্থান করলে মোবাইল ফোন নিবন্ধন করতে হবে। এ ছাড়া প্রবাসীদের যাঁদের জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) নিবন্ধন কার্ড আছে, তাঁরা দেশে আসার সময় ট্যাক্স (কর) ছাড়াই তিনটি ফোন সঙ্গে আনতে পারবেন। অর্থাৎ নিজের ব্যবহারের হ্যান্ডসেটের অতিরিক্ত দুটি নতুন ফোন সঙ্গে নিয়ে আসতে পারবেন।

আবার যাঁদের বিএমইটি কার্ড নেই, তাঁরা নিজের ব্যবহারের ফোনের পাশাপাশি অতিরিক্ত একটি ফোন ট্যাক্স দিয়ে আনতে পারবেন।

ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেনটিটি রেজিস্টার (এনইআইআর) কার্যকর করা এবং বৈধভাবে মোবাইল ফোন আমদানির শুল্কহার কমাতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর), বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ এবং বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) সভায় এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

গত সোমবার (১ ডিসেম্বর) প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যবের সচিবালয়ের কার্যালয়ে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় আজ বুধবার এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানিয়েছে।

সভায় এনইআইআর কার্যকর-সম্পর্কিত বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এর মধ্যে রয়েছে—স্মার্টফোনের বৈধ আমদানি শুল্ক উল্লেখযোগ্য হারে কমিয়ে আনা। সে সঙ্গে দেশের কারখানায় উৎপাদিত ফোনের ভ্যাট-ট্যাক্স কমিয়ে আনা।

সভাসূত্রে জানা যায়, বিটিআরসির পক্ষ থেকে স্মার্টফোনের বৈধ আমদানি শুল্ক উল্লেখযোগ্য হারে কমিয়ে আনার বিষয়ে বলা হয়। বিটিআরসি মনে করে, শুল্ক কমালে বৈধভাবে আমদানি করা মোবাইল ফোনের দাম কমে আসবে। বর্তমানে বৈধ পথে মোবাইল আমদানির শুল্ক প্রায় ৬১ শতাংশ। এই শুল্কহার উল্লেখযোগ্য হারে কমাতে সরকার কাজ শুরু করেছে বলে জানিয়েছে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়।

সভায় নীতিনির্ধারণী পর্যায় থেকে বলা হয়, আমদানি শুল্ক কমালে বাংলাদেশের ১৩-১৪টি ফ্যাক্টরিতে উৎপাদন করা মোবাইলের শুল্ক ও ভ্যাট কমাতে হবে। অন্যথায় কোম্পানিগুলোর বিদেশি বিনিয়োগ চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। আমদানি ও অভ্যন্তরীণ উৎপাদনের শুল্ক কমানো ও তা সমন্বয় নিয়ে বিটিআরসি এবং এনবিআর যৌথভাবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে একাধিকবার বসেছে এবং দ্রুততার সঙ্গে কাজ শুরু করেছে। আলোচনার ফলাফল দেশের ডিভাইস ইন্ডাস্ট্রির অনুকূলে আসবে বলে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় বিশ্বাস করে।

মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বিদেশ থেকে মোবাইল ফোন দেশে আনার ক্ষেত্রে মোবাইল কেনার বৈধ কাগজপত্র নিজের সঙ্গে রাখতে হবে। কেননা, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর কিংবা মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন বিমানবন্দরে চোরাচালানিরা সাধারণ প্রবাসীদের চাপাচাপি করে সোনা, দামি মোবাইল ফোন ইত্যাদির শুল্কহীন পাচারে লিপ্ত আছে। চোরাচালানিদের এই অপচেষ্টা রোধ করার জন্যই কেনা মোবাইলের কাগজ সঙ্গে রাখতে হবে।

ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, দেশে বিদেশের পুরোনো ফোনের ডাম্পিং বন্ধ করা হবে। কেসিং পরিবর্তন করে এসব ইলেকট্রনিক বর্জ্য দেশে ঢুকিয়ে যে রমরমা চোরাকারবারি ব্যবসা শুরু করা হয়েছে, সেটা বন্ধ করা হবে। বিমানবন্দর ও স্থলবন্দরগুলোতে ভারত, থাইল্যান্ড, চীন থেকে আসা ফ্লাইটগুলো শনাক্ত করা হচ্ছে, দ্রুতই কাস্টমস থেকে অভিযান চালানো হবে। বাংলাদেশে ক্লোন মোবাইল, চুরি ও ছিনতাই করা ফোন এবং রিফারবিশড মোবাইল ফোন আমদানি বন্ধ করা হবে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ১৬ ডিসেম্বরের আগে বাজারে অবৈধভাবে আমদানি করা মজুত ফোনগুলোর মধ্যে যেগুলোর বৈধ আইএমইআই (শনাক্তকরণ নম্বর) আছে, সেই তালিকা বিটিআরসিতে জমা দিয়ে হ্রাসকৃত শুল্কে সেগুলোকে বৈধ করার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এ নিয়ে এনবিআরের সঙ্গে আলোচনা চলছে। তবে ক্লোন ও রিফারবিশড ফোনের ক্ষেত্রে এই সুবিধা দেওয়া হবে না। এনইআইআর চালু হলে ১৬ ডিসেম্বরের আগে সচল করা কোনো হ্যান্ডসেট বন্ধ হবে না। এ-সংক্রান্ত গুজব থেকে সচেতন থাকতে অনুরোধ জানিয়েছে মন্ত্রণালয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

৭০০০ এমএএইচ ব্যাটারির ফোন এনেছে অপো

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬: ১১
৭০০০ এমএএইচ ব্যাটারির ফোন এনেছে অপো

অপো বাজারে আনল তাদের নতুন স্মার্টফোন অপো এ৬। বর্তমানে চলমান ‘ও’ ফ্যানস ফেস্টিভ্যাল ২০২৫-এর উৎসবের মধ্যেই ৭০০০ মিলি অ্যাম্পিয়ারের আলট্রা-লার্জ ব্যাটারি, আইপি ৬৯ আলটিমেট ওয়াটার অ্যান্ড ডাস্ট রেসিজট্যান্স এবং নিরবচ্ছিন্ন পারফরম্যান্সের জন্য সুপারকুল ভিসি সিস্টেম সহ এই শক্তিশালী ডিভাইসটি উন্মোচিত হলো।

আগামী ১০ ডিসেম্বর থেকে দেশব্যাপী সব অফিশিয়াল অপো স্টোর এবং অনুমোদিত ডিলারদের কাছে অপো এ৬ পাওয়া যাবে।

অপো এ৬ স্মার্টফোনের ৭০০০ মিলি অ্যাম্পিয়ার ব্যাটারি ২৯.৭৩ ঘণ্টা পর্যন্ত একটানা ইউটিউব প্লেব্যাক এবং ২৪ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে হোয়াটসঅ্যাপ বা ইমো ভয়েস কলের নিশ্চয়তা দেয়। পাঁচ বছর স্বাভাবিক ব্যবহারের পরেও এর ব্যাটারি ৮০ শতাংশেরও বেশি সক্ষম থাকবে।

তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে ডিভাইসটিতে রয়েছে ৩৯০০ বর্গমিলিমিটারের ভ্যাপর চেম্বার দিয়ে সজ্জিত সুপারকুল ভিসি সিস্টেম, যা কার্যকর তাপ নিঃসরণ নিশ্চিত করে।

এই স্মার্টফোনটির আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হলো এর আইপি ৬৯ রেটিং। অর্থাৎ অপো এ৬ উচ্চচাপের পানির জেট, পানিতে ডোবা, গরম পানি এবং ধুলোবালি থেকেও সম্পূর্ণ সুরক্ষিত থাকবে।

এছাড়াও, অপো এ৬-এ অপটিমাইজড টাচ চিপ অ্যালগরিদম ও স্প্ল্যাশ টাচ মোড থাকায়, স্ক্রিনে পানি বা হালকা তেল লেগে থাকলেও এর টাচ অপারেশন স্মুথ থাকে।

ফটোগ্রাফির জন্য অপো এ৬-এ রয়েছে ৫০ মেগাপিক্সেল রেয়ার এবং ফ্রন্ট ক্যামেরা। এতে যুক্ত করা হয়েছে এআই ইরেজার ২.০-এর মতো সর্বাধুনিক এআইজিসি (এআই জেনারেটিভ কনটেন্ট) ফিচার, যার মাধ্যমে ছবির অবাঞ্ছিত বস্তু সহজেই মুছে ফেলা যায়।

দুর্বল নেটওয়ার্ক এলাকায় নিরবচ্ছিন্ন সংযোগ নিশ্চিত করতে ডিভাইসটিতে কিউওই এআই স্মার্ট নেটওয়ার্ক সিলেকশন ফিচারও দেওয়া হয়েছে।

অপো এ৬ অরোরা গোল্ড ও স্যাফায়ার ব্লু এই দুটি অনন্য রঙে বাজারে এসেছে। ডিভাইসটি দুইটি ভিন্ন দামে পাওয়া যাচ্ছে:

অপো এ৬ (৬ জিবি + ১২৮ জিবি) : মূল্য ২৪,৯৯০ টাকা।

অপো এ৬ (৮ জিবি + ১২৮ জিবি) : মূল্য ২৬,৯৯০ টাকা।

যেসব ক্রেতা অপো এ৬ প্রি-অর্ডার করছেন, তাঁরা ‘ও’ ফ্যানস ফেস্টিভাল লটারি অফারে অংশগ্রহণের সুযোগ পাবেন। এই অফারে মিলিয়ন টাকা ড্রিম ট্রিপ, বাই ওয়ান গেট ওয়ান, অপো এনকো বাডস ৩ প্রো, অপো ওয়াচ এক্স ২, রুম হিটার সহ নানান আকর্ষণীয় পুরস্কার এবং প্রত্যেক অংশগ্রহণকারীর জন্য নিশ্চিত উপহার হিসেবে উইন্টার হুডি জেতার সুযোগ রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কর্মীদের ফোনের টেক্সট মেসেজ দেখতে পারবেন বস, গুগলের নতুন ফিচার

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
গুগলের এই নতুন ফিচারটি প্রতিষ্ঠানে ব্যবহৃত ডিভাইসগুলোর জন্য। ছবি: গুগল ব্লগ
গুগলের এই নতুন ফিচারটি প্রতিষ্ঠানে ব্যবহৃত ডিভাইসগুলোর জন্য। ছবি: গুগল ব্লগ

গুগল সম্প্রতি নতুন একটি ফিচার এনেছে যার মাধ্যমে কর্মীকে দেওয়া অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইসে আদান-প্রদান করা সব ধরনের টেক্সট বার্তা (এসএমএস ও আরসিএস) সংরক্ষণ ও পর্যালোচনা করতে পারবেন নিয়োগদাতা প্রতিষ্ঠান। এ তথ্য জানিয়েছে অ্যান্ড্রয়েড অথরিটি।

‘অ্যান্ড্রয়েড আরসিএস আর্কাইভাল’ নামে এই নতুন ফিচারের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের কর্মস্থলের জন্য ব্যবহৃত ডিভাইসগুলোতে গুগল মেসেজেসেথার্ড-পার্টি আর্কাইভিং অ্যাপ্লিকেশন যুক্ত করতে পারবে।

গুগলের সিনিয়র প্রোডাক্ট ম্যানেজার ইয়ান মারসানাই এক ব্লগপোস্টে লিখেছেন, ‘আমাদের নতুন সমাধানটি থার্ড-পার্টি আর্কাইভাল অ্যাপগুলোকে কর্মস্থলের ডিভাইসে থাকা গুগল মেসেজেসের সঙ্গে সরাসরি সংযুক্ত হওয়ার সুযোগ দিচ্ছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘যখন কোনো ডিভাইস পুরোপুরি প্রতিষ্ঠান-নিয়ন্ত্রিত থাকে এবং আইটি টিম সেই ডিভাইসটি কনফিগার করে, তখন প্রতিটি আরসিএস বার্তা ডিভাইসে পৌঁছানোর সঙ্গে সঙ্গে আর্কাইভিং অ্যাপকে জানিয়ে দেওয়া হয়। শুধু বার্তা পাঠানো বা গ্রহণের সময়ই নয়, কোনো বার্তা সম্পাদনা করা হলে বা মুছে ফেললেও। এরপর আর্কাইভিং অ্যাপ সেই বার্তার তথ্য পড়ে এবং তা আপনার প্রতিষ্ঠানের আইটি বিভাগকে সরবরাহ করে।’

অর্থাৎ, নিয়োগকর্তারা এখন থেকে কর্মীদের টেক্সট মেসেজগুলো, এমনকি যেগুলো সম্পাদনা বা মুছে ফেলা হয়েছে, সেগুলোও আইনগত বাধ্যবাধকতা এবং নিয়ন্ত্রক হিসেবে সংরক্ষণ করে রাখতে পারবেন।

তবে এই ফিচারটি শুধুমাত্র প্রতিষ্ঠান-পরিচালিত ডিভাইসগুলোর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে। এটি ব্যক্তিগত ফোন বা আলাদা ওয়ার্ক প্রোফাইল যুক্ত ডিভাইসগুলোর ওপর কোনো প্রভাব ফেলবে না।

কর্মীরা সাধারণত টেক্সট মেসেজিংকে ইমেইল আদান-প্রদানের চেয়ে ভিন্ন মনে করেন। এন্ড-টু-এন্ড এনক্রিপশনের ধারণা থেকে তারা মনে করতেন, কর্মস্থলের ফোনেও তাদের টেক্সট মেসেজগুলো নিরাপদ।

সেক্ষেত্রে এখন তাদের জানা প্রয়োজন, অফিসের ফোনে পাঠানো তাদের টেক্সট বার্তা আর ব্যক্তিগত থাকছে না। নিয়োগকর্তারা এসব বার্তায় প্রবেশাধিকার পাচ্ছেন, যার মধ্যে ব্যক্তিগত কথোপকথন বা সংবেদনশীল তথ্যও থাকতে পারে।

গুগল জানিয়েছে, নতুন এই আপডেট মূলত ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলোকে নিয়মকানুন মেনে চলা এবং আইনি তদন্তসংক্রান্ত অনুরোধের সাড়া দিতে সহায়তা করার জন্য তৈরি করা হয়েছে। অর্থ ও স্বাস্থ্যসেবা খাতের মতো কিছু শিল্পে কর্মীদের যোগাযোগের রেকর্ড সংরক্ষণ বাধ্যতামূলক।

গুগলের ভাষ্যমতে, এই আপডেট একটি নির্ভরযোগ্য, অ্যান্ড্রয়েড-সমর্থিত বার্তা-সংরক্ষণ সমাধান, যা এসএমএস ও এমএমএস বার্তার সঙ্গেও কাজ করবে। আর্কাইভাল সুবিধাটি সক্রিয় থাকলে কর্মীরা তাদের ডিভাইসে একটি স্পষ্ট নোটিফিকেশন দেখতে পাবেন।

এছাড়া আরও বলা হয়েছে, গুগল পিক্সেল ও অন্যান্য সামঞ্জস্যপূর্ণ অ্যান্ড্রয়েড এন্টারপ্রাইজ ডিভাইসগুলোতে পাওয়া এই নতুন সুবিধাটি কর্মীদের আরসিএস-এর সব সুবিধা—যেমন, টাইপিং ইন্ডিকেটর, রিড রিসিট এবং অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইসগুলোর মধ্যে এন্ড-টু-এন্ড এনক্রিপশন ব্যবহারের সুযোগ দিচ্ছে, সেই সঙ্গে প্রতিষ্ঠানকে নিয়ন্ত্রক বিধিনিষেধ পূরণ করতেও নিশ্চিত করছে।

হোয়াটসঅ্যাপ বা টেলিগ্রামের মতো অন্যান্য মেসেজিং অ্যাপ এই আপডেটের আওতায় পড়ছে না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত