আজকের পত্রিকা ডেস্ক

আইফোনের সরবরাহ শৃঙ্খলে বৈচিত্র্য আনার চেষ্টা করলেও এখন পর্যন্ত চীনের বিকল্প হিসেবে উপযুক্ত কোনো দেশ খুঁজে পায়নি অ্যাপল। উৎপাদনের ক্ষেত্রে চীনের দক্ষ জনশক্তি, সুসংগঠিত অবকাঠামো এবং দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা অ্যাপলকে দেশটির ওপর নির্ভরশীল হতে বাধ্য করেছে। এমন বাস্তবতায় সম্প্রতি কিছু ইলেকট্রনিক পণ্য, বিশেষ করে স্মার্টফোন ও কম্পিউটারে নতুন করে আরোপিত শুল্ক অব্যাহতি দিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। ইউএস কাস্টমস অ্যান্ড বর্ডার প্রটেকশনের এক ঘোষণায় জানানো হয়, এসব পণ্য ট্রাম্পের ঘোষিত বৈশ্বিক ১০ শতাংশ এবং চীনের ওপর আরোপিত ১২৫ শতাংশ শুল্ক থেকে মুক্ত থাকবে। এই অব্যাহতির ফলে অ্যাপলের ওপর আপাতত চাপ কিছুটা কমলেও, দীর্ঘ মেয়াদে চীনের বিকল্প খোঁজার প্রয়োজনীয়তা থেকেই যাচ্ছে।
চীনের ওপর অ্যাপল নির্ভরশীল হচ্ছে যে কারণে
অতুলনীয় উৎপাদন ব্যবস্থা: চীনের শিল্প অবকাঠামো অতুলনীয়। শেনজেন ও ঝেংঝোর মতো শহরে বিশাল কারখানা (যেমন: ফক্সকনের ‘আইফোন সিটি’) রয়েছে, যেখানে প্রতি বছর কয়েক শ মিলিয়ন ডিভাইস উৎপাদন করা যায়। এই ব্যবস্থায় হাজার হাজার বিশেষায়িত সরবরাহকারী রয়েছে, যারা ডিসপ্লে, ব্যাটারি, সেন্সর ইত্যাদি সরবরাহ করে এবং এরা সবাই একে অপরের কাছাকাছি অবস্থিত।
আইফোন লঞ্চের সময় ও দ্রুত উৎপাদন বাড়ানোর ক্ষমতা চীনের বিশাল দক্ষ শ্রমিক এবং দক্ষ লজিস্টিক নেটওয়ার্কের ওপর নির্ভর করে। অন্য কোনো দেশ এই দক্ষতা ও গতির সঙ্গে পাল্লা দিতে পারে না।
উদাহরণস্বরূপ, শুধু ফক্সকনই চীনে লাখ লাখ শ্রমিক নিয়োগ করে এবং ব্যস্ত মৌসুমে দ্রুত আরও লোক নিয়োগ করে থাকে। এমন দক্ষ ও গতিশীল শ্রমশক্তি এবং সংগঠিত উৎপাদন কাঠামো অন্য কোথাও গড়ে তোলা বড় চ্যালেঞ্জ।
খরচের দক্ষতা: চীনে মজুরি বেড়েছে। ২০২৪ সালে গড়ে প্রতি ঘণ্টায় ৫-১০ ডলার মজুরি দিতে হতো, যা এক দশক আগে ১-২ ডলার ছিল। তবে এরপরও উৎপাদন খরচ ভারত, ভিয়েতনাম বা মেক্সিকোর তুলনায় কম। এর কারণ হলো—চীনে বড় পরিসরে উৎপাদনে খরচ কম পড়ে এবং দীর্ঘদিন ধরে কাজ করার ফলে সরবরাহকারীদের সঙ্গে অ্যাপলের ভালো সম্পর্ক তৈরি হয়েছে। সেই সঙ্গে চীন সরকার নানা ধরনের সুবিধা দেয়। যেমন: কর ছাড় ও সস্তা জমি।
উৎপাদন স্থানান্তরের জন্য নতুন কারখানা গড়তে, কর্মীদের প্রশিক্ষণ দিতে এবং সরবরাহ ব্যবস্থাকে নতুন করে সাজাতে বিপুল পরিমাণ বিনিয়োগের প্রয়োজন হয়। উদাহরণস্বরূপ, ভারতে কারখানা স্থাপনে নানা আমলাতান্ত্রিক জটিলতা, অনিয়মিত বিদ্যুৎ সরবরাহ এবং দুর্বল পরিবহন অবকাঠামোর কারণে খরচ আরও বেড়ে যায়।
গভীরভাবে সংযুক্ত সরবরাহকারী নেটওয়ার্ক: অ্যাপলের সরবরাহ চেইনে ২০০ টির বেশি প্রধান সরবরাহকারী রয়েছে, যাদের মধ্যে অনেকে (যেমন, বিওই টেকনোলজি, লাক্সশেয়ার প্রিসিশন) চীনে অবস্থিত। এই সরবরাহকারীরা একে অপরের সঙ্গে সংযুক্ত, ছোট স্ক্রু থেকে উন্নত চিপ পর্যন্ত সবকিছু সরবরাহ করে। এই নেটওয়ার্ক ভেঙে পড়লে তা অ্যাপলের ডিভাইস উৎপাদনকে ব্যাহত করবে এবং বছরের পর বছর ধরে সমন্বয়ের মাধ্যমে এই নেটওয়ার্ক গড়ে তুলতে হবে।
এমনকি অ্যাপল কিছু কারখানা বা উৎপাদন ব্যবস্থা অন্য দেশে সরিয়ে নিলেও গুরুত্বপূর্ণ উপাদান (যেমন, বিওই থেকে ওএলইডি ডিসপ্লে বা চীনে প্যাকেজ করা টিএসএমসি চিপ) চীন থেকে আসে, যা সরবরাহ চেইনকে চীনের সঙ্গে বেঁধে রাখে।
বিশেষায়িত দক্ষতা
দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতার কারণে চীনের শ্রমিকেরা নির্ভুলভাবে পণ্য উৎপাদন করে থাকে, যা অ্যাপলের জটিল পণ্য তৈরির জন্য অপরিহার্য। এই অভিজ্ঞতা তাদের দ্রুত সমস্যা সমাধান এবং কম ত্রুটিযুক্ত পণ্য উৎপাদন করতে সাহায্য করে। তবে, ভারত বা ভিয়েতনামের মতো দেশে কিছুটা উন্নতি হলেও দক্ষতার অভাব এখনো রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, ২০১৭ সালে কম অভিজ্ঞ শ্রমিকদের কারণে আইফোনের প্রথম ধাপে সংযোজনের ক্ষেত্রে ত্রুটির সংখ্যা বেশি ছিল, তবে তা এখন আগের চেয়ে উন্নত হয়েছে।
ভূ-রাজনৈতিক ও কৌশলগত ভারসাম্য: মার্কিন-চীন বাণিজ্য উত্তেজনা, শুল্ক (যেমন, ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে ইলেকট্রনিকসে ১০-২৫ শতাংশ শুল্ক) এবং কোভিড-১৯ লকডাউন (যেমন, ২০২২ সালে সাংহাইয়ে উৎপাদনে ব্যাঘাত)–এর কারণে উৎপাদন বৈচিত্র্য আনতে চাচ্ছে অ্যাপল। তবে, চীন থেকে দ্রুত বেরিয়ে গেলে চীন সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ হতে পারে, যা অ্যাপলের বিশাল বাজার (২০২৪ সালে বিশ্বব্যাপী বিক্রয়ের মধ্যে চীনে ২০ শতাংশ বা প্রায় ৭০ বিলিয়ন ডলার) ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।
তাই অ্যাপলের কৌশল হলো—ধীরে ধীরে বৈচিত্র্য আনা। ভারত এখন আইফোনের ১০-১৫ শতাংশ উৎপাদন করে (২০১৮ সালে যা ছিল ১ শতাংশ) এবং ফক্সকন ও উইস্ট্রন তামিলনাড়ুতে কারখানা চালাচ্ছে। ভিয়েতনামে এয়ারপড এবং কিছু ম্যাকবুক তৈরি হয়, আর থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়া ছোট ছোট উপাদান উৎপাদন করছে। তবে চীন এখনো আইফোন উৎপাদনের প্রায় ৮০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ করে।
সময় ও বিনিয়োগের বাধা
উৎপাদন স্থানান্তরের জন্য বিলিয়ন ডলার ব্যয় এবং বছরের পর বছর পরিকল্পনা প্রয়োজন। উদাহরণস্বরূপ, ফক্সকন ২০১৭ সাল থেকে ভারতে ১০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছে, যা আইফোন উৎপাদন কিছুটা বাড়িয়েছে। তবে শ্রমিকদের প্রশিক্ষণ, স্থিতিশীল বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করা এবং স্থানীয় সরবরাহকারীদের নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা সময়সাপেক্ষ বিষয়।
এদিকে অ্যাপলের ‘জাস্ট-ইন-টাইম’ উৎপাদন মডেল চীনের জন্য তৈরি করা হয়েছে। এটি এমন এক পদ্ধতি, যেখানে উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয় উপাদানগুলো শুধু তখনই আনা হয়, যখন তা প্রয়োজন। এর মাধ্যমে, অ্যাপল তাদের ইনভেনটরি বা মজুত কমিয়ে দক্ষতা বাড়ায় এবং উৎপাদন প্রক্রিয়াকে দ্রুত গতির হয় এবং খরচও কমে যায়।
এই মডেলটি চীনের অবকাঠামোর জন্য বিশেষভাবে তৈরি হয়েছে। কারণ চীনে রয়েছে অত্যন্ত উন্নত ও সুসংগঠিত সরবরাহ চেইন, দক্ষ শ্রমিক এবং দ্রুত সমন্বয়। তবে, যদি অ্যাপল অন্য কোনো দেশে উৎপাদন স্থানান্তর করতে চায়, তাহলে সেখানে এই একই মডেল কার্যকর করা কঠিন হতে পারে। কারণ, সেখানে অবকাঠামো, সরবরাহ চেইন এবং দক্ষ শ্রমিকের অভাব থাকতে পারে, যা উৎপাদন প্রক্রিয়ায় বিলম্ব বা গুণগত মানের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। বিকল্প অঞ্চল এই মডেল পুনর্গঠন করতে বিলম্ব বা গুণগত সমস্যার ঝুঁকি নিয়ে আসে।
বিকল্প খোঁজার বিষয়ে টিম কুক যা ভাবেন
এদিকে অ্যাপলের সিইও টিম কুক বারবার চীনের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা স্বীকার করেছেন এবং বৈচিত্র্য আনার প্রচেষ্টার কথা বলেছেন। তিনি বলেন, ২০১৭ সালে ফরচুনের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে কুক বলেন, ‘চীনে উৎপাদনের জন্য একটি অবিশ্বাস্য ব্যবস্থা রয়েছে। এটি শুধু খরচ নয়; দক্ষতা এবং বিপুলসংখ্যক মানুষের সক্ষমতার বিষয়। এটি টুল, নির্ভুলতা, পেশাগত দক্ষতার একটি অনন্য সমন্বয়।’
২০১৯ সালে ব্লুমবার্গের সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘আমাদের পণ্যগুলোর জন্য উন্নত টুলের প্রয়োজন। এই টুলের পাশাপাশি আমরা যে উপকরণ ব্যবহার করি তা নির্ভুলতার বেশি ও অত্যাধুনিক। এই সক্ষমতা একমাত্র চীনে বিশেষভাবে রয়েছে।’
২০২২ সালের একটি আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশের সময় কুক বলেন, ‘আমরা সব সময় আমাদের সরবরাহ চেইনে বৈচিত্র্য আনার চেষ্টা করি। তাই আমরা ভারত, ভিয়েতনাম এবং এশিয়ার অন্যান্য অংশে উৎপাদন প্রসারিত করেছি। এটি চীন ছেড়ে যাওয়ার বিষয় নয়; এটি স্থিতিস্থাপকতা ও নমনীয়তা তৈরির বিষয়।’
২০২৩ সালে ভারতে একটি ইভেন্টে কুক মন্তব্য করেন, ‘ভারত একটি খুবই উত্তেজনাপূর্ণ বাজার এবং আমরা এখানে (আইফোন) উৎপাদন করছি এবং আমরা এটির সম্প্রসারণ চালিয়ে যাব।
২০২০ সালে মার্কিন-চীন বাণিজ্য উত্তেজনার মধ্যে ফক্স বিজনেসকে কুক বলেন, ‘আমরা একটি আন্তর্জাতিক কোম্পানি এবং আমরা কোনো এক জায়গার ওপর অতিরিক্ত নির্ভরশীল হতে চাই না। তবে সুইচ টিপে সরবরাহ চেইন সরানো যায় না—এটি একটি বহু বছরের যাত্রা।’
কুকের মন্তব্যগুলো একটি বাস্তববাদী দৃষ্টিভঙ্গি প্রতিফলিত করে। চীনের উৎপাদন আধিপত্য শুধুমাত্র খরচের কারণে নয়, বরং দক্ষতার ভিত্তিতেও প্রতিষ্ঠিত। যদিও অ্যাপল বিকল্পে বিনিয়োগ করছে, তবে পুরোপুরি উৎপাদন স্থানান্তর করা বাস্তবসম্মত বা তাৎক্ষণিকভাবে সম্ভব নয়।
বৈচিত্র্যের বর্তমান অবস্থা: ২০২৪ সাল পর্যন্ত চীনের ওপর নির্ভরতা কমাতে অগ্রগতি অর্জন করেছে অ্যাপল। তবে এর গতি ধীর।
ভারত: ভারতে ১০-১৫ শতাংশ আইফোন উৎপাদন হয়। যেমন: আইফোন ১৪, আইফোন ৫ মডেল। এ ছাড়া ফক্সকন, উইস্ট্রন এবং পেগাট্রন তামিলনাড়ুতে কারখানা পরিচালনা করছে। ভারত সরকারের ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ প্রণোদনা (৬ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলারের ভর্তুকি) সাহায্য করেছে। তবে শ্রম বিরোধ এবং অবকাঠামোর ঘাটতি অ্যাপলের জন্য চ্যালেঞ্জ তৈরি করছে।
ভিয়েতনাম: এয়ারপড, অ্যাপল ওয়াচ এবং কিছু ম্যাকবুক এখানে সংযোজন করা হয়। গোয়েরটেক এবং লাক্সশেয়ার মতো সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলো এখানে তাদের কার্যক্রম সম্প্রসারিত করেছে। তবে ভিয়েতনামের ছোট জনসংখ্যা (১০০ মিলিয়ন বনাম চীনের ১ দশমিক ৪ বিলিয়ন) উৎপাদন বাড়ানোর ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধতা সৃষ্টি করে।
অন্যান্য অঞ্চল: অন্যান্য অঞ্চল, যেমন মালয়েশিয়া এবং থাইল্যান্ড অ্যাপলের জন্য ছোট উপাদান উৎপাদন করে এবং ভবিষ্যতে মেক্সিকোতে সমাবেশের সম্ভাবনা পরীক্ষা করছে। তবে, এগুলো এখনো প্রাথমিক প্রচেষ্টা।
এসব পদক্ষেপ সত্ত্বেও অ্যাপলের উৎপাদনের মূল ভিত্তি চীন। উদাহরণস্বরূপ, ভারতে সংযোজন করা আইফোনগুলোও প্রায়শই চীন-নির্মিত উপাদান ব্যবহার করে এবং হাই-এন্ড মডেল (যেমন: আইফোন প্রো সিরিজ) এখনো প্রধানত চীনে তৈরি হয়। কারণ এগুলোর জটিলতা অনেক বেশি।
উৎপাদন ব্যবস্থা সম্পূর্ণ স্থানান্তরের জন্য প্রয়োজন
বিশাল বিনিয়োগ: চীনের মতো অবকাঠামো অন্যত্র তৈরি করতে এক দশকে ৫০-১০০ বিলিয়ন ডলার খরচ হতে পারে।
সময়: লাখ লাখ শ্রমিক প্রশিক্ষণ এবং স্থানীয় সরবরাহকারী স্থাপন করতে প্রতি অঞ্চলে ৫-১০ বছর লাগতে পারে।
বাজার ঝুঁকি: চীনের সঙ্গে সম্পর্ক নষ্ট করা অ্যাপলের সেখানকার বিক্রয় ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে, যা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সমান রাজস্ব দেয়।
গুণমান নিয়ন্ত্রণ: নতুন অঞ্চলগুলোকে চীনের মতো উচ্চ মান এবং সঠিকতা বজায় রাখতে হবে। যেমন চীনে আইফোন ডিসপ্লে তৈরি হলে ৯৯ শতাংশ নির্ভুলভাবে তৈরি হয়।
অ্যাপল চীনের বিকল্প খুঁজে পায়নি কারণ কোনো একক দেশ উৎপাদন ক্ষমতার তিনটি মূল উপাদান—পরিসর, দক্ষতা এবং গতি একসঙ্গে অর্জন করতে পারছে না। চীনের অনন্য সক্ষমতার গুরুত্ব তুলে ধরেছেন টিম কুক এবং ভারত, ভিয়েতনাম ও অন্যান্য অঞ্চলে সাবধানে প্রসারিত করে ঝুঁকি কমানোর চেষ্টা করছেন। তবে, বৈচিত্র্যকরণ একটি ধীর এবং ব্যয়বহুল প্রক্রিয়া, এবং চীনে দশকব্যাপী গড়ে ওঠা অ্যাপলের সরবরাহ চেইনের আধিপত্য ভূ-রাজনৈতিক চাপ সত্ত্বেও বছরের পর বছর ধরে অব্যাহত থাকবে।

আইফোনের সরবরাহ শৃঙ্খলে বৈচিত্র্য আনার চেষ্টা করলেও এখন পর্যন্ত চীনের বিকল্প হিসেবে উপযুক্ত কোনো দেশ খুঁজে পায়নি অ্যাপল। উৎপাদনের ক্ষেত্রে চীনের দক্ষ জনশক্তি, সুসংগঠিত অবকাঠামো এবং দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা অ্যাপলকে দেশটির ওপর নির্ভরশীল হতে বাধ্য করেছে। এমন বাস্তবতায় সম্প্রতি কিছু ইলেকট্রনিক পণ্য, বিশেষ করে স্মার্টফোন ও কম্পিউটারে নতুন করে আরোপিত শুল্ক অব্যাহতি দিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। ইউএস কাস্টমস অ্যান্ড বর্ডার প্রটেকশনের এক ঘোষণায় জানানো হয়, এসব পণ্য ট্রাম্পের ঘোষিত বৈশ্বিক ১০ শতাংশ এবং চীনের ওপর আরোপিত ১২৫ শতাংশ শুল্ক থেকে মুক্ত থাকবে। এই অব্যাহতির ফলে অ্যাপলের ওপর আপাতত চাপ কিছুটা কমলেও, দীর্ঘ মেয়াদে চীনের বিকল্প খোঁজার প্রয়োজনীয়তা থেকেই যাচ্ছে।
চীনের ওপর অ্যাপল নির্ভরশীল হচ্ছে যে কারণে
অতুলনীয় উৎপাদন ব্যবস্থা: চীনের শিল্প অবকাঠামো অতুলনীয়। শেনজেন ও ঝেংঝোর মতো শহরে বিশাল কারখানা (যেমন: ফক্সকনের ‘আইফোন সিটি’) রয়েছে, যেখানে প্রতি বছর কয়েক শ মিলিয়ন ডিভাইস উৎপাদন করা যায়। এই ব্যবস্থায় হাজার হাজার বিশেষায়িত সরবরাহকারী রয়েছে, যারা ডিসপ্লে, ব্যাটারি, সেন্সর ইত্যাদি সরবরাহ করে এবং এরা সবাই একে অপরের কাছাকাছি অবস্থিত।
আইফোন লঞ্চের সময় ও দ্রুত উৎপাদন বাড়ানোর ক্ষমতা চীনের বিশাল দক্ষ শ্রমিক এবং দক্ষ লজিস্টিক নেটওয়ার্কের ওপর নির্ভর করে। অন্য কোনো দেশ এই দক্ষতা ও গতির সঙ্গে পাল্লা দিতে পারে না।
উদাহরণস্বরূপ, শুধু ফক্সকনই চীনে লাখ লাখ শ্রমিক নিয়োগ করে এবং ব্যস্ত মৌসুমে দ্রুত আরও লোক নিয়োগ করে থাকে। এমন দক্ষ ও গতিশীল শ্রমশক্তি এবং সংগঠিত উৎপাদন কাঠামো অন্য কোথাও গড়ে তোলা বড় চ্যালেঞ্জ।
খরচের দক্ষতা: চীনে মজুরি বেড়েছে। ২০২৪ সালে গড়ে প্রতি ঘণ্টায় ৫-১০ ডলার মজুরি দিতে হতো, যা এক দশক আগে ১-২ ডলার ছিল। তবে এরপরও উৎপাদন খরচ ভারত, ভিয়েতনাম বা মেক্সিকোর তুলনায় কম। এর কারণ হলো—চীনে বড় পরিসরে উৎপাদনে খরচ কম পড়ে এবং দীর্ঘদিন ধরে কাজ করার ফলে সরবরাহকারীদের সঙ্গে অ্যাপলের ভালো সম্পর্ক তৈরি হয়েছে। সেই সঙ্গে চীন সরকার নানা ধরনের সুবিধা দেয়। যেমন: কর ছাড় ও সস্তা জমি।
উৎপাদন স্থানান্তরের জন্য নতুন কারখানা গড়তে, কর্মীদের প্রশিক্ষণ দিতে এবং সরবরাহ ব্যবস্থাকে নতুন করে সাজাতে বিপুল পরিমাণ বিনিয়োগের প্রয়োজন হয়। উদাহরণস্বরূপ, ভারতে কারখানা স্থাপনে নানা আমলাতান্ত্রিক জটিলতা, অনিয়মিত বিদ্যুৎ সরবরাহ এবং দুর্বল পরিবহন অবকাঠামোর কারণে খরচ আরও বেড়ে যায়।
গভীরভাবে সংযুক্ত সরবরাহকারী নেটওয়ার্ক: অ্যাপলের সরবরাহ চেইনে ২০০ টির বেশি প্রধান সরবরাহকারী রয়েছে, যাদের মধ্যে অনেকে (যেমন, বিওই টেকনোলজি, লাক্সশেয়ার প্রিসিশন) চীনে অবস্থিত। এই সরবরাহকারীরা একে অপরের সঙ্গে সংযুক্ত, ছোট স্ক্রু থেকে উন্নত চিপ পর্যন্ত সবকিছু সরবরাহ করে। এই নেটওয়ার্ক ভেঙে পড়লে তা অ্যাপলের ডিভাইস উৎপাদনকে ব্যাহত করবে এবং বছরের পর বছর ধরে সমন্বয়ের মাধ্যমে এই নেটওয়ার্ক গড়ে তুলতে হবে।
এমনকি অ্যাপল কিছু কারখানা বা উৎপাদন ব্যবস্থা অন্য দেশে সরিয়ে নিলেও গুরুত্বপূর্ণ উপাদান (যেমন, বিওই থেকে ওএলইডি ডিসপ্লে বা চীনে প্যাকেজ করা টিএসএমসি চিপ) চীন থেকে আসে, যা সরবরাহ চেইনকে চীনের সঙ্গে বেঁধে রাখে।
বিশেষায়িত দক্ষতা
দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতার কারণে চীনের শ্রমিকেরা নির্ভুলভাবে পণ্য উৎপাদন করে থাকে, যা অ্যাপলের জটিল পণ্য তৈরির জন্য অপরিহার্য। এই অভিজ্ঞতা তাদের দ্রুত সমস্যা সমাধান এবং কম ত্রুটিযুক্ত পণ্য উৎপাদন করতে সাহায্য করে। তবে, ভারত বা ভিয়েতনামের মতো দেশে কিছুটা উন্নতি হলেও দক্ষতার অভাব এখনো রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, ২০১৭ সালে কম অভিজ্ঞ শ্রমিকদের কারণে আইফোনের প্রথম ধাপে সংযোজনের ক্ষেত্রে ত্রুটির সংখ্যা বেশি ছিল, তবে তা এখন আগের চেয়ে উন্নত হয়েছে।
ভূ-রাজনৈতিক ও কৌশলগত ভারসাম্য: মার্কিন-চীন বাণিজ্য উত্তেজনা, শুল্ক (যেমন, ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে ইলেকট্রনিকসে ১০-২৫ শতাংশ শুল্ক) এবং কোভিড-১৯ লকডাউন (যেমন, ২০২২ সালে সাংহাইয়ে উৎপাদনে ব্যাঘাত)–এর কারণে উৎপাদন বৈচিত্র্য আনতে চাচ্ছে অ্যাপল। তবে, চীন থেকে দ্রুত বেরিয়ে গেলে চীন সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ হতে পারে, যা অ্যাপলের বিশাল বাজার (২০২৪ সালে বিশ্বব্যাপী বিক্রয়ের মধ্যে চীনে ২০ শতাংশ বা প্রায় ৭০ বিলিয়ন ডলার) ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।
তাই অ্যাপলের কৌশল হলো—ধীরে ধীরে বৈচিত্র্য আনা। ভারত এখন আইফোনের ১০-১৫ শতাংশ উৎপাদন করে (২০১৮ সালে যা ছিল ১ শতাংশ) এবং ফক্সকন ও উইস্ট্রন তামিলনাড়ুতে কারখানা চালাচ্ছে। ভিয়েতনামে এয়ারপড এবং কিছু ম্যাকবুক তৈরি হয়, আর থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়া ছোট ছোট উপাদান উৎপাদন করছে। তবে চীন এখনো আইফোন উৎপাদনের প্রায় ৮০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ করে।
সময় ও বিনিয়োগের বাধা
উৎপাদন স্থানান্তরের জন্য বিলিয়ন ডলার ব্যয় এবং বছরের পর বছর পরিকল্পনা প্রয়োজন। উদাহরণস্বরূপ, ফক্সকন ২০১৭ সাল থেকে ভারতে ১০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছে, যা আইফোন উৎপাদন কিছুটা বাড়িয়েছে। তবে শ্রমিকদের প্রশিক্ষণ, স্থিতিশীল বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করা এবং স্থানীয় সরবরাহকারীদের নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা সময়সাপেক্ষ বিষয়।
এদিকে অ্যাপলের ‘জাস্ট-ইন-টাইম’ উৎপাদন মডেল চীনের জন্য তৈরি করা হয়েছে। এটি এমন এক পদ্ধতি, যেখানে উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয় উপাদানগুলো শুধু তখনই আনা হয়, যখন তা প্রয়োজন। এর মাধ্যমে, অ্যাপল তাদের ইনভেনটরি বা মজুত কমিয়ে দক্ষতা বাড়ায় এবং উৎপাদন প্রক্রিয়াকে দ্রুত গতির হয় এবং খরচও কমে যায়।
এই মডেলটি চীনের অবকাঠামোর জন্য বিশেষভাবে তৈরি হয়েছে। কারণ চীনে রয়েছে অত্যন্ত উন্নত ও সুসংগঠিত সরবরাহ চেইন, দক্ষ শ্রমিক এবং দ্রুত সমন্বয়। তবে, যদি অ্যাপল অন্য কোনো দেশে উৎপাদন স্থানান্তর করতে চায়, তাহলে সেখানে এই একই মডেল কার্যকর করা কঠিন হতে পারে। কারণ, সেখানে অবকাঠামো, সরবরাহ চেইন এবং দক্ষ শ্রমিকের অভাব থাকতে পারে, যা উৎপাদন প্রক্রিয়ায় বিলম্ব বা গুণগত মানের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। বিকল্প অঞ্চল এই মডেল পুনর্গঠন করতে বিলম্ব বা গুণগত সমস্যার ঝুঁকি নিয়ে আসে।
বিকল্প খোঁজার বিষয়ে টিম কুক যা ভাবেন
এদিকে অ্যাপলের সিইও টিম কুক বারবার চীনের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা স্বীকার করেছেন এবং বৈচিত্র্য আনার প্রচেষ্টার কথা বলেছেন। তিনি বলেন, ২০১৭ সালে ফরচুনের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে কুক বলেন, ‘চীনে উৎপাদনের জন্য একটি অবিশ্বাস্য ব্যবস্থা রয়েছে। এটি শুধু খরচ নয়; দক্ষতা এবং বিপুলসংখ্যক মানুষের সক্ষমতার বিষয়। এটি টুল, নির্ভুলতা, পেশাগত দক্ষতার একটি অনন্য সমন্বয়।’
২০১৯ সালে ব্লুমবার্গের সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘আমাদের পণ্যগুলোর জন্য উন্নত টুলের প্রয়োজন। এই টুলের পাশাপাশি আমরা যে উপকরণ ব্যবহার করি তা নির্ভুলতার বেশি ও অত্যাধুনিক। এই সক্ষমতা একমাত্র চীনে বিশেষভাবে রয়েছে।’
২০২২ সালের একটি আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশের সময় কুক বলেন, ‘আমরা সব সময় আমাদের সরবরাহ চেইনে বৈচিত্র্য আনার চেষ্টা করি। তাই আমরা ভারত, ভিয়েতনাম এবং এশিয়ার অন্যান্য অংশে উৎপাদন প্রসারিত করেছি। এটি চীন ছেড়ে যাওয়ার বিষয় নয়; এটি স্থিতিস্থাপকতা ও নমনীয়তা তৈরির বিষয়।’
২০২৩ সালে ভারতে একটি ইভেন্টে কুক মন্তব্য করেন, ‘ভারত একটি খুবই উত্তেজনাপূর্ণ বাজার এবং আমরা এখানে (আইফোন) উৎপাদন করছি এবং আমরা এটির সম্প্রসারণ চালিয়ে যাব।
২০২০ সালে মার্কিন-চীন বাণিজ্য উত্তেজনার মধ্যে ফক্স বিজনেসকে কুক বলেন, ‘আমরা একটি আন্তর্জাতিক কোম্পানি এবং আমরা কোনো এক জায়গার ওপর অতিরিক্ত নির্ভরশীল হতে চাই না। তবে সুইচ টিপে সরবরাহ চেইন সরানো যায় না—এটি একটি বহু বছরের যাত্রা।’
কুকের মন্তব্যগুলো একটি বাস্তববাদী দৃষ্টিভঙ্গি প্রতিফলিত করে। চীনের উৎপাদন আধিপত্য শুধুমাত্র খরচের কারণে নয়, বরং দক্ষতার ভিত্তিতেও প্রতিষ্ঠিত। যদিও অ্যাপল বিকল্পে বিনিয়োগ করছে, তবে পুরোপুরি উৎপাদন স্থানান্তর করা বাস্তবসম্মত বা তাৎক্ষণিকভাবে সম্ভব নয়।
বৈচিত্র্যের বর্তমান অবস্থা: ২০২৪ সাল পর্যন্ত চীনের ওপর নির্ভরতা কমাতে অগ্রগতি অর্জন করেছে অ্যাপল। তবে এর গতি ধীর।
ভারত: ভারতে ১০-১৫ শতাংশ আইফোন উৎপাদন হয়। যেমন: আইফোন ১৪, আইফোন ৫ মডেল। এ ছাড়া ফক্সকন, উইস্ট্রন এবং পেগাট্রন তামিলনাড়ুতে কারখানা পরিচালনা করছে। ভারত সরকারের ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ প্রণোদনা (৬ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলারের ভর্তুকি) সাহায্য করেছে। তবে শ্রম বিরোধ এবং অবকাঠামোর ঘাটতি অ্যাপলের জন্য চ্যালেঞ্জ তৈরি করছে।
ভিয়েতনাম: এয়ারপড, অ্যাপল ওয়াচ এবং কিছু ম্যাকবুক এখানে সংযোজন করা হয়। গোয়েরটেক এবং লাক্সশেয়ার মতো সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলো এখানে তাদের কার্যক্রম সম্প্রসারিত করেছে। তবে ভিয়েতনামের ছোট জনসংখ্যা (১০০ মিলিয়ন বনাম চীনের ১ দশমিক ৪ বিলিয়ন) উৎপাদন বাড়ানোর ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধতা সৃষ্টি করে।
অন্যান্য অঞ্চল: অন্যান্য অঞ্চল, যেমন মালয়েশিয়া এবং থাইল্যান্ড অ্যাপলের জন্য ছোট উপাদান উৎপাদন করে এবং ভবিষ্যতে মেক্সিকোতে সমাবেশের সম্ভাবনা পরীক্ষা করছে। তবে, এগুলো এখনো প্রাথমিক প্রচেষ্টা।
এসব পদক্ষেপ সত্ত্বেও অ্যাপলের উৎপাদনের মূল ভিত্তি চীন। উদাহরণস্বরূপ, ভারতে সংযোজন করা আইফোনগুলোও প্রায়শই চীন-নির্মিত উপাদান ব্যবহার করে এবং হাই-এন্ড মডেল (যেমন: আইফোন প্রো সিরিজ) এখনো প্রধানত চীনে তৈরি হয়। কারণ এগুলোর জটিলতা অনেক বেশি।
উৎপাদন ব্যবস্থা সম্পূর্ণ স্থানান্তরের জন্য প্রয়োজন
বিশাল বিনিয়োগ: চীনের মতো অবকাঠামো অন্যত্র তৈরি করতে এক দশকে ৫০-১০০ বিলিয়ন ডলার খরচ হতে পারে।
সময়: লাখ লাখ শ্রমিক প্রশিক্ষণ এবং স্থানীয় সরবরাহকারী স্থাপন করতে প্রতি অঞ্চলে ৫-১০ বছর লাগতে পারে।
বাজার ঝুঁকি: চীনের সঙ্গে সম্পর্ক নষ্ট করা অ্যাপলের সেখানকার বিক্রয় ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে, যা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সমান রাজস্ব দেয়।
গুণমান নিয়ন্ত্রণ: নতুন অঞ্চলগুলোকে চীনের মতো উচ্চ মান এবং সঠিকতা বজায় রাখতে হবে। যেমন চীনে আইফোন ডিসপ্লে তৈরি হলে ৯৯ শতাংশ নির্ভুলভাবে তৈরি হয়।
অ্যাপল চীনের বিকল্প খুঁজে পায়নি কারণ কোনো একক দেশ উৎপাদন ক্ষমতার তিনটি মূল উপাদান—পরিসর, দক্ষতা এবং গতি একসঙ্গে অর্জন করতে পারছে না। চীনের অনন্য সক্ষমতার গুরুত্ব তুলে ধরেছেন টিম কুক এবং ভারত, ভিয়েতনাম ও অন্যান্য অঞ্চলে সাবধানে প্রসারিত করে ঝুঁকি কমানোর চেষ্টা করছেন। তবে, বৈচিত্র্যকরণ একটি ধীর এবং ব্যয়বহুল প্রক্রিয়া, এবং চীনে দশকব্যাপী গড়ে ওঠা অ্যাপলের সরবরাহ চেইনের আধিপত্য ভূ-রাজনৈতিক চাপ সত্ত্বেও বছরের পর বছর ধরে অব্যাহত থাকবে।
আজকের পত্রিকা ডেস্ক

আইফোনের সরবরাহ শৃঙ্খলে বৈচিত্র্য আনার চেষ্টা করলেও এখন পর্যন্ত চীনের বিকল্প হিসেবে উপযুক্ত কোনো দেশ খুঁজে পায়নি অ্যাপল। উৎপাদনের ক্ষেত্রে চীনের দক্ষ জনশক্তি, সুসংগঠিত অবকাঠামো এবং দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা অ্যাপলকে দেশটির ওপর নির্ভরশীল হতে বাধ্য করেছে। এমন বাস্তবতায় সম্প্রতি কিছু ইলেকট্রনিক পণ্য, বিশেষ করে স্মার্টফোন ও কম্পিউটারে নতুন করে আরোপিত শুল্ক অব্যাহতি দিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। ইউএস কাস্টমস অ্যান্ড বর্ডার প্রটেকশনের এক ঘোষণায় জানানো হয়, এসব পণ্য ট্রাম্পের ঘোষিত বৈশ্বিক ১০ শতাংশ এবং চীনের ওপর আরোপিত ১২৫ শতাংশ শুল্ক থেকে মুক্ত থাকবে। এই অব্যাহতির ফলে অ্যাপলের ওপর আপাতত চাপ কিছুটা কমলেও, দীর্ঘ মেয়াদে চীনের বিকল্প খোঁজার প্রয়োজনীয়তা থেকেই যাচ্ছে।
চীনের ওপর অ্যাপল নির্ভরশীল হচ্ছে যে কারণে
অতুলনীয় উৎপাদন ব্যবস্থা: চীনের শিল্প অবকাঠামো অতুলনীয়। শেনজেন ও ঝেংঝোর মতো শহরে বিশাল কারখানা (যেমন: ফক্সকনের ‘আইফোন সিটি’) রয়েছে, যেখানে প্রতি বছর কয়েক শ মিলিয়ন ডিভাইস উৎপাদন করা যায়। এই ব্যবস্থায় হাজার হাজার বিশেষায়িত সরবরাহকারী রয়েছে, যারা ডিসপ্লে, ব্যাটারি, সেন্সর ইত্যাদি সরবরাহ করে এবং এরা সবাই একে অপরের কাছাকাছি অবস্থিত।
আইফোন লঞ্চের সময় ও দ্রুত উৎপাদন বাড়ানোর ক্ষমতা চীনের বিশাল দক্ষ শ্রমিক এবং দক্ষ লজিস্টিক নেটওয়ার্কের ওপর নির্ভর করে। অন্য কোনো দেশ এই দক্ষতা ও গতির সঙ্গে পাল্লা দিতে পারে না।
উদাহরণস্বরূপ, শুধু ফক্সকনই চীনে লাখ লাখ শ্রমিক নিয়োগ করে এবং ব্যস্ত মৌসুমে দ্রুত আরও লোক নিয়োগ করে থাকে। এমন দক্ষ ও গতিশীল শ্রমশক্তি এবং সংগঠিত উৎপাদন কাঠামো অন্য কোথাও গড়ে তোলা বড় চ্যালেঞ্জ।
খরচের দক্ষতা: চীনে মজুরি বেড়েছে। ২০২৪ সালে গড়ে প্রতি ঘণ্টায় ৫-১০ ডলার মজুরি দিতে হতো, যা এক দশক আগে ১-২ ডলার ছিল। তবে এরপরও উৎপাদন খরচ ভারত, ভিয়েতনাম বা মেক্সিকোর তুলনায় কম। এর কারণ হলো—চীনে বড় পরিসরে উৎপাদনে খরচ কম পড়ে এবং দীর্ঘদিন ধরে কাজ করার ফলে সরবরাহকারীদের সঙ্গে অ্যাপলের ভালো সম্পর্ক তৈরি হয়েছে। সেই সঙ্গে চীন সরকার নানা ধরনের সুবিধা দেয়। যেমন: কর ছাড় ও সস্তা জমি।
উৎপাদন স্থানান্তরের জন্য নতুন কারখানা গড়তে, কর্মীদের প্রশিক্ষণ দিতে এবং সরবরাহ ব্যবস্থাকে নতুন করে সাজাতে বিপুল পরিমাণ বিনিয়োগের প্রয়োজন হয়। উদাহরণস্বরূপ, ভারতে কারখানা স্থাপনে নানা আমলাতান্ত্রিক জটিলতা, অনিয়মিত বিদ্যুৎ সরবরাহ এবং দুর্বল পরিবহন অবকাঠামোর কারণে খরচ আরও বেড়ে যায়।
গভীরভাবে সংযুক্ত সরবরাহকারী নেটওয়ার্ক: অ্যাপলের সরবরাহ চেইনে ২০০ টির বেশি প্রধান সরবরাহকারী রয়েছে, যাদের মধ্যে অনেকে (যেমন, বিওই টেকনোলজি, লাক্সশেয়ার প্রিসিশন) চীনে অবস্থিত। এই সরবরাহকারীরা একে অপরের সঙ্গে সংযুক্ত, ছোট স্ক্রু থেকে উন্নত চিপ পর্যন্ত সবকিছু সরবরাহ করে। এই নেটওয়ার্ক ভেঙে পড়লে তা অ্যাপলের ডিভাইস উৎপাদনকে ব্যাহত করবে এবং বছরের পর বছর ধরে সমন্বয়ের মাধ্যমে এই নেটওয়ার্ক গড়ে তুলতে হবে।
এমনকি অ্যাপল কিছু কারখানা বা উৎপাদন ব্যবস্থা অন্য দেশে সরিয়ে নিলেও গুরুত্বপূর্ণ উপাদান (যেমন, বিওই থেকে ওএলইডি ডিসপ্লে বা চীনে প্যাকেজ করা টিএসএমসি চিপ) চীন থেকে আসে, যা সরবরাহ চেইনকে চীনের সঙ্গে বেঁধে রাখে।
বিশেষায়িত দক্ষতা
দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতার কারণে চীনের শ্রমিকেরা নির্ভুলভাবে পণ্য উৎপাদন করে থাকে, যা অ্যাপলের জটিল পণ্য তৈরির জন্য অপরিহার্য। এই অভিজ্ঞতা তাদের দ্রুত সমস্যা সমাধান এবং কম ত্রুটিযুক্ত পণ্য উৎপাদন করতে সাহায্য করে। তবে, ভারত বা ভিয়েতনামের মতো দেশে কিছুটা উন্নতি হলেও দক্ষতার অভাব এখনো রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, ২০১৭ সালে কম অভিজ্ঞ শ্রমিকদের কারণে আইফোনের প্রথম ধাপে সংযোজনের ক্ষেত্রে ত্রুটির সংখ্যা বেশি ছিল, তবে তা এখন আগের চেয়ে উন্নত হয়েছে।
ভূ-রাজনৈতিক ও কৌশলগত ভারসাম্য: মার্কিন-চীন বাণিজ্য উত্তেজনা, শুল্ক (যেমন, ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে ইলেকট্রনিকসে ১০-২৫ শতাংশ শুল্ক) এবং কোভিড-১৯ লকডাউন (যেমন, ২০২২ সালে সাংহাইয়ে উৎপাদনে ব্যাঘাত)–এর কারণে উৎপাদন বৈচিত্র্য আনতে চাচ্ছে অ্যাপল। তবে, চীন থেকে দ্রুত বেরিয়ে গেলে চীন সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ হতে পারে, যা অ্যাপলের বিশাল বাজার (২০২৪ সালে বিশ্বব্যাপী বিক্রয়ের মধ্যে চীনে ২০ শতাংশ বা প্রায় ৭০ বিলিয়ন ডলার) ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।
তাই অ্যাপলের কৌশল হলো—ধীরে ধীরে বৈচিত্র্য আনা। ভারত এখন আইফোনের ১০-১৫ শতাংশ উৎপাদন করে (২০১৮ সালে যা ছিল ১ শতাংশ) এবং ফক্সকন ও উইস্ট্রন তামিলনাড়ুতে কারখানা চালাচ্ছে। ভিয়েতনামে এয়ারপড এবং কিছু ম্যাকবুক তৈরি হয়, আর থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়া ছোট ছোট উপাদান উৎপাদন করছে। তবে চীন এখনো আইফোন উৎপাদনের প্রায় ৮০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ করে।
সময় ও বিনিয়োগের বাধা
উৎপাদন স্থানান্তরের জন্য বিলিয়ন ডলার ব্যয় এবং বছরের পর বছর পরিকল্পনা প্রয়োজন। উদাহরণস্বরূপ, ফক্সকন ২০১৭ সাল থেকে ভারতে ১০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছে, যা আইফোন উৎপাদন কিছুটা বাড়িয়েছে। তবে শ্রমিকদের প্রশিক্ষণ, স্থিতিশীল বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করা এবং স্থানীয় সরবরাহকারীদের নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা সময়সাপেক্ষ বিষয়।
এদিকে অ্যাপলের ‘জাস্ট-ইন-টাইম’ উৎপাদন মডেল চীনের জন্য তৈরি করা হয়েছে। এটি এমন এক পদ্ধতি, যেখানে উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয় উপাদানগুলো শুধু তখনই আনা হয়, যখন তা প্রয়োজন। এর মাধ্যমে, অ্যাপল তাদের ইনভেনটরি বা মজুত কমিয়ে দক্ষতা বাড়ায় এবং উৎপাদন প্রক্রিয়াকে দ্রুত গতির হয় এবং খরচও কমে যায়।
এই মডেলটি চীনের অবকাঠামোর জন্য বিশেষভাবে তৈরি হয়েছে। কারণ চীনে রয়েছে অত্যন্ত উন্নত ও সুসংগঠিত সরবরাহ চেইন, দক্ষ শ্রমিক এবং দ্রুত সমন্বয়। তবে, যদি অ্যাপল অন্য কোনো দেশে উৎপাদন স্থানান্তর করতে চায়, তাহলে সেখানে এই একই মডেল কার্যকর করা কঠিন হতে পারে। কারণ, সেখানে অবকাঠামো, সরবরাহ চেইন এবং দক্ষ শ্রমিকের অভাব থাকতে পারে, যা উৎপাদন প্রক্রিয়ায় বিলম্ব বা গুণগত মানের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। বিকল্প অঞ্চল এই মডেল পুনর্গঠন করতে বিলম্ব বা গুণগত সমস্যার ঝুঁকি নিয়ে আসে।
বিকল্প খোঁজার বিষয়ে টিম কুক যা ভাবেন
এদিকে অ্যাপলের সিইও টিম কুক বারবার চীনের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা স্বীকার করেছেন এবং বৈচিত্র্য আনার প্রচেষ্টার কথা বলেছেন। তিনি বলেন, ২০১৭ সালে ফরচুনের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে কুক বলেন, ‘চীনে উৎপাদনের জন্য একটি অবিশ্বাস্য ব্যবস্থা রয়েছে। এটি শুধু খরচ নয়; দক্ষতা এবং বিপুলসংখ্যক মানুষের সক্ষমতার বিষয়। এটি টুল, নির্ভুলতা, পেশাগত দক্ষতার একটি অনন্য সমন্বয়।’
২০১৯ সালে ব্লুমবার্গের সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘আমাদের পণ্যগুলোর জন্য উন্নত টুলের প্রয়োজন। এই টুলের পাশাপাশি আমরা যে উপকরণ ব্যবহার করি তা নির্ভুলতার বেশি ও অত্যাধুনিক। এই সক্ষমতা একমাত্র চীনে বিশেষভাবে রয়েছে।’
২০২২ সালের একটি আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশের সময় কুক বলেন, ‘আমরা সব সময় আমাদের সরবরাহ চেইনে বৈচিত্র্য আনার চেষ্টা করি। তাই আমরা ভারত, ভিয়েতনাম এবং এশিয়ার অন্যান্য অংশে উৎপাদন প্রসারিত করেছি। এটি চীন ছেড়ে যাওয়ার বিষয় নয়; এটি স্থিতিস্থাপকতা ও নমনীয়তা তৈরির বিষয়।’
২০২৩ সালে ভারতে একটি ইভেন্টে কুক মন্তব্য করেন, ‘ভারত একটি খুবই উত্তেজনাপূর্ণ বাজার এবং আমরা এখানে (আইফোন) উৎপাদন করছি এবং আমরা এটির সম্প্রসারণ চালিয়ে যাব।
২০২০ সালে মার্কিন-চীন বাণিজ্য উত্তেজনার মধ্যে ফক্স বিজনেসকে কুক বলেন, ‘আমরা একটি আন্তর্জাতিক কোম্পানি এবং আমরা কোনো এক জায়গার ওপর অতিরিক্ত নির্ভরশীল হতে চাই না। তবে সুইচ টিপে সরবরাহ চেইন সরানো যায় না—এটি একটি বহু বছরের যাত্রা।’
কুকের মন্তব্যগুলো একটি বাস্তববাদী দৃষ্টিভঙ্গি প্রতিফলিত করে। চীনের উৎপাদন আধিপত্য শুধুমাত্র খরচের কারণে নয়, বরং দক্ষতার ভিত্তিতেও প্রতিষ্ঠিত। যদিও অ্যাপল বিকল্পে বিনিয়োগ করছে, তবে পুরোপুরি উৎপাদন স্থানান্তর করা বাস্তবসম্মত বা তাৎক্ষণিকভাবে সম্ভব নয়।
বৈচিত্র্যের বর্তমান অবস্থা: ২০২৪ সাল পর্যন্ত চীনের ওপর নির্ভরতা কমাতে অগ্রগতি অর্জন করেছে অ্যাপল। তবে এর গতি ধীর।
ভারত: ভারতে ১০-১৫ শতাংশ আইফোন উৎপাদন হয়। যেমন: আইফোন ১৪, আইফোন ৫ মডেল। এ ছাড়া ফক্সকন, উইস্ট্রন এবং পেগাট্রন তামিলনাড়ুতে কারখানা পরিচালনা করছে। ভারত সরকারের ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ প্রণোদনা (৬ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলারের ভর্তুকি) সাহায্য করেছে। তবে শ্রম বিরোধ এবং অবকাঠামোর ঘাটতি অ্যাপলের জন্য চ্যালেঞ্জ তৈরি করছে।
ভিয়েতনাম: এয়ারপড, অ্যাপল ওয়াচ এবং কিছু ম্যাকবুক এখানে সংযোজন করা হয়। গোয়েরটেক এবং লাক্সশেয়ার মতো সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলো এখানে তাদের কার্যক্রম সম্প্রসারিত করেছে। তবে ভিয়েতনামের ছোট জনসংখ্যা (১০০ মিলিয়ন বনাম চীনের ১ দশমিক ৪ বিলিয়ন) উৎপাদন বাড়ানোর ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধতা সৃষ্টি করে।
অন্যান্য অঞ্চল: অন্যান্য অঞ্চল, যেমন মালয়েশিয়া এবং থাইল্যান্ড অ্যাপলের জন্য ছোট উপাদান উৎপাদন করে এবং ভবিষ্যতে মেক্সিকোতে সমাবেশের সম্ভাবনা পরীক্ষা করছে। তবে, এগুলো এখনো প্রাথমিক প্রচেষ্টা।
এসব পদক্ষেপ সত্ত্বেও অ্যাপলের উৎপাদনের মূল ভিত্তি চীন। উদাহরণস্বরূপ, ভারতে সংযোজন করা আইফোনগুলোও প্রায়শই চীন-নির্মিত উপাদান ব্যবহার করে এবং হাই-এন্ড মডেল (যেমন: আইফোন প্রো সিরিজ) এখনো প্রধানত চীনে তৈরি হয়। কারণ এগুলোর জটিলতা অনেক বেশি।
উৎপাদন ব্যবস্থা সম্পূর্ণ স্থানান্তরের জন্য প্রয়োজন
বিশাল বিনিয়োগ: চীনের মতো অবকাঠামো অন্যত্র তৈরি করতে এক দশকে ৫০-১০০ বিলিয়ন ডলার খরচ হতে পারে।
সময়: লাখ লাখ শ্রমিক প্রশিক্ষণ এবং স্থানীয় সরবরাহকারী স্থাপন করতে প্রতি অঞ্চলে ৫-১০ বছর লাগতে পারে।
বাজার ঝুঁকি: চীনের সঙ্গে সম্পর্ক নষ্ট করা অ্যাপলের সেখানকার বিক্রয় ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে, যা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সমান রাজস্ব দেয়।
গুণমান নিয়ন্ত্রণ: নতুন অঞ্চলগুলোকে চীনের মতো উচ্চ মান এবং সঠিকতা বজায় রাখতে হবে। যেমন চীনে আইফোন ডিসপ্লে তৈরি হলে ৯৯ শতাংশ নির্ভুলভাবে তৈরি হয়।
অ্যাপল চীনের বিকল্প খুঁজে পায়নি কারণ কোনো একক দেশ উৎপাদন ক্ষমতার তিনটি মূল উপাদান—পরিসর, দক্ষতা এবং গতি একসঙ্গে অর্জন করতে পারছে না। চীনের অনন্য সক্ষমতার গুরুত্ব তুলে ধরেছেন টিম কুক এবং ভারত, ভিয়েতনাম ও অন্যান্য অঞ্চলে সাবধানে প্রসারিত করে ঝুঁকি কমানোর চেষ্টা করছেন। তবে, বৈচিত্র্যকরণ একটি ধীর এবং ব্যয়বহুল প্রক্রিয়া, এবং চীনে দশকব্যাপী গড়ে ওঠা অ্যাপলের সরবরাহ চেইনের আধিপত্য ভূ-রাজনৈতিক চাপ সত্ত্বেও বছরের পর বছর ধরে অব্যাহত থাকবে।

আইফোনের সরবরাহ শৃঙ্খলে বৈচিত্র্য আনার চেষ্টা করলেও এখন পর্যন্ত চীনের বিকল্প হিসেবে উপযুক্ত কোনো দেশ খুঁজে পায়নি অ্যাপল। উৎপাদনের ক্ষেত্রে চীনের দক্ষ জনশক্তি, সুসংগঠিত অবকাঠামো এবং দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা অ্যাপলকে দেশটির ওপর নির্ভরশীল হতে বাধ্য করেছে। এমন বাস্তবতায় সম্প্রতি কিছু ইলেকট্রনিক পণ্য, বিশেষ করে স্মার্টফোন ও কম্পিউটারে নতুন করে আরোপিত শুল্ক অব্যাহতি দিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। ইউএস কাস্টমস অ্যান্ড বর্ডার প্রটেকশনের এক ঘোষণায় জানানো হয়, এসব পণ্য ট্রাম্পের ঘোষিত বৈশ্বিক ১০ শতাংশ এবং চীনের ওপর আরোপিত ১২৫ শতাংশ শুল্ক থেকে মুক্ত থাকবে। এই অব্যাহতির ফলে অ্যাপলের ওপর আপাতত চাপ কিছুটা কমলেও, দীর্ঘ মেয়াদে চীনের বিকল্প খোঁজার প্রয়োজনীয়তা থেকেই যাচ্ছে।
চীনের ওপর অ্যাপল নির্ভরশীল হচ্ছে যে কারণে
অতুলনীয় উৎপাদন ব্যবস্থা: চীনের শিল্প অবকাঠামো অতুলনীয়। শেনজেন ও ঝেংঝোর মতো শহরে বিশাল কারখানা (যেমন: ফক্সকনের ‘আইফোন সিটি’) রয়েছে, যেখানে প্রতি বছর কয়েক শ মিলিয়ন ডিভাইস উৎপাদন করা যায়। এই ব্যবস্থায় হাজার হাজার বিশেষায়িত সরবরাহকারী রয়েছে, যারা ডিসপ্লে, ব্যাটারি, সেন্সর ইত্যাদি সরবরাহ করে এবং এরা সবাই একে অপরের কাছাকাছি অবস্থিত।
আইফোন লঞ্চের সময় ও দ্রুত উৎপাদন বাড়ানোর ক্ষমতা চীনের বিশাল দক্ষ শ্রমিক এবং দক্ষ লজিস্টিক নেটওয়ার্কের ওপর নির্ভর করে। অন্য কোনো দেশ এই দক্ষতা ও গতির সঙ্গে পাল্লা দিতে পারে না।
উদাহরণস্বরূপ, শুধু ফক্সকনই চীনে লাখ লাখ শ্রমিক নিয়োগ করে এবং ব্যস্ত মৌসুমে দ্রুত আরও লোক নিয়োগ করে থাকে। এমন দক্ষ ও গতিশীল শ্রমশক্তি এবং সংগঠিত উৎপাদন কাঠামো অন্য কোথাও গড়ে তোলা বড় চ্যালেঞ্জ।
খরচের দক্ষতা: চীনে মজুরি বেড়েছে। ২০২৪ সালে গড়ে প্রতি ঘণ্টায় ৫-১০ ডলার মজুরি দিতে হতো, যা এক দশক আগে ১-২ ডলার ছিল। তবে এরপরও উৎপাদন খরচ ভারত, ভিয়েতনাম বা মেক্সিকোর তুলনায় কম। এর কারণ হলো—চীনে বড় পরিসরে উৎপাদনে খরচ কম পড়ে এবং দীর্ঘদিন ধরে কাজ করার ফলে সরবরাহকারীদের সঙ্গে অ্যাপলের ভালো সম্পর্ক তৈরি হয়েছে। সেই সঙ্গে চীন সরকার নানা ধরনের সুবিধা দেয়। যেমন: কর ছাড় ও সস্তা জমি।
উৎপাদন স্থানান্তরের জন্য নতুন কারখানা গড়তে, কর্মীদের প্রশিক্ষণ দিতে এবং সরবরাহ ব্যবস্থাকে নতুন করে সাজাতে বিপুল পরিমাণ বিনিয়োগের প্রয়োজন হয়। উদাহরণস্বরূপ, ভারতে কারখানা স্থাপনে নানা আমলাতান্ত্রিক জটিলতা, অনিয়মিত বিদ্যুৎ সরবরাহ এবং দুর্বল পরিবহন অবকাঠামোর কারণে খরচ আরও বেড়ে যায়।
গভীরভাবে সংযুক্ত সরবরাহকারী নেটওয়ার্ক: অ্যাপলের সরবরাহ চেইনে ২০০ টির বেশি প্রধান সরবরাহকারী রয়েছে, যাদের মধ্যে অনেকে (যেমন, বিওই টেকনোলজি, লাক্সশেয়ার প্রিসিশন) চীনে অবস্থিত। এই সরবরাহকারীরা একে অপরের সঙ্গে সংযুক্ত, ছোট স্ক্রু থেকে উন্নত চিপ পর্যন্ত সবকিছু সরবরাহ করে। এই নেটওয়ার্ক ভেঙে পড়লে তা অ্যাপলের ডিভাইস উৎপাদনকে ব্যাহত করবে এবং বছরের পর বছর ধরে সমন্বয়ের মাধ্যমে এই নেটওয়ার্ক গড়ে তুলতে হবে।
এমনকি অ্যাপল কিছু কারখানা বা উৎপাদন ব্যবস্থা অন্য দেশে সরিয়ে নিলেও গুরুত্বপূর্ণ উপাদান (যেমন, বিওই থেকে ওএলইডি ডিসপ্লে বা চীনে প্যাকেজ করা টিএসএমসি চিপ) চীন থেকে আসে, যা সরবরাহ চেইনকে চীনের সঙ্গে বেঁধে রাখে।
বিশেষায়িত দক্ষতা
দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতার কারণে চীনের শ্রমিকেরা নির্ভুলভাবে পণ্য উৎপাদন করে থাকে, যা অ্যাপলের জটিল পণ্য তৈরির জন্য অপরিহার্য। এই অভিজ্ঞতা তাদের দ্রুত সমস্যা সমাধান এবং কম ত্রুটিযুক্ত পণ্য উৎপাদন করতে সাহায্য করে। তবে, ভারত বা ভিয়েতনামের মতো দেশে কিছুটা উন্নতি হলেও দক্ষতার অভাব এখনো রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, ২০১৭ সালে কম অভিজ্ঞ শ্রমিকদের কারণে আইফোনের প্রথম ধাপে সংযোজনের ক্ষেত্রে ত্রুটির সংখ্যা বেশি ছিল, তবে তা এখন আগের চেয়ে উন্নত হয়েছে।
ভূ-রাজনৈতিক ও কৌশলগত ভারসাম্য: মার্কিন-চীন বাণিজ্য উত্তেজনা, শুল্ক (যেমন, ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে ইলেকট্রনিকসে ১০-২৫ শতাংশ শুল্ক) এবং কোভিড-১৯ লকডাউন (যেমন, ২০২২ সালে সাংহাইয়ে উৎপাদনে ব্যাঘাত)–এর কারণে উৎপাদন বৈচিত্র্য আনতে চাচ্ছে অ্যাপল। তবে, চীন থেকে দ্রুত বেরিয়ে গেলে চীন সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ হতে পারে, যা অ্যাপলের বিশাল বাজার (২০২৪ সালে বিশ্বব্যাপী বিক্রয়ের মধ্যে চীনে ২০ শতাংশ বা প্রায় ৭০ বিলিয়ন ডলার) ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।
তাই অ্যাপলের কৌশল হলো—ধীরে ধীরে বৈচিত্র্য আনা। ভারত এখন আইফোনের ১০-১৫ শতাংশ উৎপাদন করে (২০১৮ সালে যা ছিল ১ শতাংশ) এবং ফক্সকন ও উইস্ট্রন তামিলনাড়ুতে কারখানা চালাচ্ছে। ভিয়েতনামে এয়ারপড এবং কিছু ম্যাকবুক তৈরি হয়, আর থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়া ছোট ছোট উপাদান উৎপাদন করছে। তবে চীন এখনো আইফোন উৎপাদনের প্রায় ৮০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ করে।
সময় ও বিনিয়োগের বাধা
উৎপাদন স্থানান্তরের জন্য বিলিয়ন ডলার ব্যয় এবং বছরের পর বছর পরিকল্পনা প্রয়োজন। উদাহরণস্বরূপ, ফক্সকন ২০১৭ সাল থেকে ভারতে ১০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছে, যা আইফোন উৎপাদন কিছুটা বাড়িয়েছে। তবে শ্রমিকদের প্রশিক্ষণ, স্থিতিশীল বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করা এবং স্থানীয় সরবরাহকারীদের নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা সময়সাপেক্ষ বিষয়।
এদিকে অ্যাপলের ‘জাস্ট-ইন-টাইম’ উৎপাদন মডেল চীনের জন্য তৈরি করা হয়েছে। এটি এমন এক পদ্ধতি, যেখানে উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয় উপাদানগুলো শুধু তখনই আনা হয়, যখন তা প্রয়োজন। এর মাধ্যমে, অ্যাপল তাদের ইনভেনটরি বা মজুত কমিয়ে দক্ষতা বাড়ায় এবং উৎপাদন প্রক্রিয়াকে দ্রুত গতির হয় এবং খরচও কমে যায়।
এই মডেলটি চীনের অবকাঠামোর জন্য বিশেষভাবে তৈরি হয়েছে। কারণ চীনে রয়েছে অত্যন্ত উন্নত ও সুসংগঠিত সরবরাহ চেইন, দক্ষ শ্রমিক এবং দ্রুত সমন্বয়। তবে, যদি অ্যাপল অন্য কোনো দেশে উৎপাদন স্থানান্তর করতে চায়, তাহলে সেখানে এই একই মডেল কার্যকর করা কঠিন হতে পারে। কারণ, সেখানে অবকাঠামো, সরবরাহ চেইন এবং দক্ষ শ্রমিকের অভাব থাকতে পারে, যা উৎপাদন প্রক্রিয়ায় বিলম্ব বা গুণগত মানের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। বিকল্প অঞ্চল এই মডেল পুনর্গঠন করতে বিলম্ব বা গুণগত সমস্যার ঝুঁকি নিয়ে আসে।
বিকল্প খোঁজার বিষয়ে টিম কুক যা ভাবেন
এদিকে অ্যাপলের সিইও টিম কুক বারবার চীনের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা স্বীকার করেছেন এবং বৈচিত্র্য আনার প্রচেষ্টার কথা বলেছেন। তিনি বলেন, ২০১৭ সালে ফরচুনের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে কুক বলেন, ‘চীনে উৎপাদনের জন্য একটি অবিশ্বাস্য ব্যবস্থা রয়েছে। এটি শুধু খরচ নয়; দক্ষতা এবং বিপুলসংখ্যক মানুষের সক্ষমতার বিষয়। এটি টুল, নির্ভুলতা, পেশাগত দক্ষতার একটি অনন্য সমন্বয়।’
২০১৯ সালে ব্লুমবার্গের সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘আমাদের পণ্যগুলোর জন্য উন্নত টুলের প্রয়োজন। এই টুলের পাশাপাশি আমরা যে উপকরণ ব্যবহার করি তা নির্ভুলতার বেশি ও অত্যাধুনিক। এই সক্ষমতা একমাত্র চীনে বিশেষভাবে রয়েছে।’
২০২২ সালের একটি আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশের সময় কুক বলেন, ‘আমরা সব সময় আমাদের সরবরাহ চেইনে বৈচিত্র্য আনার চেষ্টা করি। তাই আমরা ভারত, ভিয়েতনাম এবং এশিয়ার অন্যান্য অংশে উৎপাদন প্রসারিত করেছি। এটি চীন ছেড়ে যাওয়ার বিষয় নয়; এটি স্থিতিস্থাপকতা ও নমনীয়তা তৈরির বিষয়।’
২০২৩ সালে ভারতে একটি ইভেন্টে কুক মন্তব্য করেন, ‘ভারত একটি খুবই উত্তেজনাপূর্ণ বাজার এবং আমরা এখানে (আইফোন) উৎপাদন করছি এবং আমরা এটির সম্প্রসারণ চালিয়ে যাব।
২০২০ সালে মার্কিন-চীন বাণিজ্য উত্তেজনার মধ্যে ফক্স বিজনেসকে কুক বলেন, ‘আমরা একটি আন্তর্জাতিক কোম্পানি এবং আমরা কোনো এক জায়গার ওপর অতিরিক্ত নির্ভরশীল হতে চাই না। তবে সুইচ টিপে সরবরাহ চেইন সরানো যায় না—এটি একটি বহু বছরের যাত্রা।’
কুকের মন্তব্যগুলো একটি বাস্তববাদী দৃষ্টিভঙ্গি প্রতিফলিত করে। চীনের উৎপাদন আধিপত্য শুধুমাত্র খরচের কারণে নয়, বরং দক্ষতার ভিত্তিতেও প্রতিষ্ঠিত। যদিও অ্যাপল বিকল্পে বিনিয়োগ করছে, তবে পুরোপুরি উৎপাদন স্থানান্তর করা বাস্তবসম্মত বা তাৎক্ষণিকভাবে সম্ভব নয়।
বৈচিত্র্যের বর্তমান অবস্থা: ২০২৪ সাল পর্যন্ত চীনের ওপর নির্ভরতা কমাতে অগ্রগতি অর্জন করেছে অ্যাপল। তবে এর গতি ধীর।
ভারত: ভারতে ১০-১৫ শতাংশ আইফোন উৎপাদন হয়। যেমন: আইফোন ১৪, আইফোন ৫ মডেল। এ ছাড়া ফক্সকন, উইস্ট্রন এবং পেগাট্রন তামিলনাড়ুতে কারখানা পরিচালনা করছে। ভারত সরকারের ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ প্রণোদনা (৬ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলারের ভর্তুকি) সাহায্য করেছে। তবে শ্রম বিরোধ এবং অবকাঠামোর ঘাটতি অ্যাপলের জন্য চ্যালেঞ্জ তৈরি করছে।
ভিয়েতনাম: এয়ারপড, অ্যাপল ওয়াচ এবং কিছু ম্যাকবুক এখানে সংযোজন করা হয়। গোয়েরটেক এবং লাক্সশেয়ার মতো সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলো এখানে তাদের কার্যক্রম সম্প্রসারিত করেছে। তবে ভিয়েতনামের ছোট জনসংখ্যা (১০০ মিলিয়ন বনাম চীনের ১ দশমিক ৪ বিলিয়ন) উৎপাদন বাড়ানোর ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধতা সৃষ্টি করে।
অন্যান্য অঞ্চল: অন্যান্য অঞ্চল, যেমন মালয়েশিয়া এবং থাইল্যান্ড অ্যাপলের জন্য ছোট উপাদান উৎপাদন করে এবং ভবিষ্যতে মেক্সিকোতে সমাবেশের সম্ভাবনা পরীক্ষা করছে। তবে, এগুলো এখনো প্রাথমিক প্রচেষ্টা।
এসব পদক্ষেপ সত্ত্বেও অ্যাপলের উৎপাদনের মূল ভিত্তি চীন। উদাহরণস্বরূপ, ভারতে সংযোজন করা আইফোনগুলোও প্রায়শই চীন-নির্মিত উপাদান ব্যবহার করে এবং হাই-এন্ড মডেল (যেমন: আইফোন প্রো সিরিজ) এখনো প্রধানত চীনে তৈরি হয়। কারণ এগুলোর জটিলতা অনেক বেশি।
উৎপাদন ব্যবস্থা সম্পূর্ণ স্থানান্তরের জন্য প্রয়োজন
বিশাল বিনিয়োগ: চীনের মতো অবকাঠামো অন্যত্র তৈরি করতে এক দশকে ৫০-১০০ বিলিয়ন ডলার খরচ হতে পারে।
সময়: লাখ লাখ শ্রমিক প্রশিক্ষণ এবং স্থানীয় সরবরাহকারী স্থাপন করতে প্রতি অঞ্চলে ৫-১০ বছর লাগতে পারে।
বাজার ঝুঁকি: চীনের সঙ্গে সম্পর্ক নষ্ট করা অ্যাপলের সেখানকার বিক্রয় ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে, যা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সমান রাজস্ব দেয়।
গুণমান নিয়ন্ত্রণ: নতুন অঞ্চলগুলোকে চীনের মতো উচ্চ মান এবং সঠিকতা বজায় রাখতে হবে। যেমন চীনে আইফোন ডিসপ্লে তৈরি হলে ৯৯ শতাংশ নির্ভুলভাবে তৈরি হয়।
অ্যাপল চীনের বিকল্প খুঁজে পায়নি কারণ কোনো একক দেশ উৎপাদন ক্ষমতার তিনটি মূল উপাদান—পরিসর, দক্ষতা এবং গতি একসঙ্গে অর্জন করতে পারছে না। চীনের অনন্য সক্ষমতার গুরুত্ব তুলে ধরেছেন টিম কুক এবং ভারত, ভিয়েতনাম ও অন্যান্য অঞ্চলে সাবধানে প্রসারিত করে ঝুঁকি কমানোর চেষ্টা করছেন। তবে, বৈচিত্র্যকরণ একটি ধীর এবং ব্যয়বহুল প্রক্রিয়া, এবং চীনে দশকব্যাপী গড়ে ওঠা অ্যাপলের সরবরাহ চেইনের আধিপত্য ভূ-রাজনৈতিক চাপ সত্ত্বেও বছরের পর বছর ধরে অব্যাহত থাকবে।

গুগল ট্রান্সলেটে একটি বড় ও গুরুত্বপূর্ণ আপডেট এনেছে গুগল। এই ফিচারে যুক্ত করা হয়েছে রিয়েল-টাইম ট্রান্সলেটর, যা সরাসরি হেডফোনের মাধ্যমে ব্যবহার করা যাবে। গত বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) বেটা সংস্করণে চালু হওয়া এই ফিচারটি ব্যবহার করতে শুধু একটি উপযোগী অ্যান্ড্রয়েড ফোন এবং গুগল ট্রান্সলেট অ্যাপই যথেষ্ট।
১৫ ঘণ্টা আগে
বৈদেশিক ঋণে নেওয়া প্রকল্পের ৫ বছরের মেয়াদ শেষ হলেও কাজ এখনো অর্ধেক বাকি। এ অবস্থায় আবারও ঋণ করে প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হচ্ছে আড়াই বছর। এতে খরচ বাড়ছে আরও ৫০ শতাংশ। প্রকল্পটির নাম ‘ডিজিটাল উদ্যোক্তা ও উদ্ভাবন ইকোসিস্টেম উন্নয়ন’।
১৭ ঘণ্টা আগে
যুক্তরাষ্ট্রের কানেকটিকাট অঙ্গরাজ্যে মাকে হত্যার পর ছেলের আত্মহত্যার ঘটনায় ওপেনএআই এবং মাইক্রোসফটের বিরুদ্ধে মামলা করেছে পরিবার। অভিযোগে নিহত ৮৩ বছর বয়সী সুজান অ্যাডামসের পরিবার বলছে, ওপেনএআইর এআই চ্যাটবট চ্যাটজিপিটি তাঁর ছেলের ‘প্যারানয়েড ডিলুশনস’ বা বিভ্রান্তিকর বিশ্বাসগুলোকে উসকে দিয়েছে এবং এ কাজ
২ দিন আগে
বেশকিছু নতুন ফিচার চালুর ঘোষণা দিয়েছে জনপ্রিয় মেসেজিং অ্যাপ হোয়াটসঅ্যাপ। এর মধ্যে রয়েছে মিসড কল মেসেজেস এবং ছবি অ্যানিমেশন ও উন্নত মানের ইমেজ জেনারেশন। মেটা মালিকানাধীন এই ইনস্ট্যান্ট মেসেজিং প্ল্যাটফর্মের মতে, তাদের নতুন ফিচার ‘মিসড কল মেসেজেস’ (Missed Call Messages) ফিচারটি প্রচলিত...
৩ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

গুগল ট্রান্সলেটে একটি বড় ও গুরুত্বপূর্ণ আপডেট এনেছে গুগল। এই ফিচারে যুক্ত করা হয়েছে রিয়েল-টাইম ট্রান্সলেটর, যা সরাসরি হেডফোনের মাধ্যমে ব্যবহার করা যাবে।
গত বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) বেটা সংস্করণে চালু হওয়া এই ফিচারটি ব্যবহার করতে শুধু একটি উপযোগী অ্যান্ড্রয়েড ফোন এবং গুগল ট্রান্সলেট অ্যাপই যথেষ্ট। এর মাধ্যমে ৭০টিরও বেশি ভাষায় নির্বিঘ্নে অডিও অনুবাদ পাওয়া যাবে।
গুগল জানিয়েছে, তারা তাদের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) টুল জেমিনি ব্যবহার করে বাগধারা, প্রবাদ–প্রবচন, স্থানীয় অভিব্যক্তি বা স্ল্যাংয়ের মতো সূক্ষ্ম অর্থবোধক বাক্যাংশের অনুবাদ আরও উন্নত করার চেষ্টা করেছে।
এক বিবৃতিতে কোম্পানিটি বলেছে, ‘আমরা টেক্সট অনুবাদের জন্য গুগল ট্রান্সলেটে জেমিনির সবচেয়ে শক্তিশালী অনুবাদ সক্ষমতা যুক্ত করছি। হেডফোনের মাধ্যমে লাইভ স্পিচ–টু–স্পিচ অনুবাদের একটি বেটা অভিজ্ঞতা চালু করছি এবং অনুশীলন ও দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য অ্যাপে নতুন ভাষা যুক্ত করছি।’
এর আগে এই সুবিধা শুধু পিক্সেল বাডসের জন্য সীমিত ছিল। তবে নতুন বেটা সংস্করণের মাধ্যমে যেকোনো হেডফোনকেই একমুখী রিয়েল–টাইম অনুবাদ ডিভাইসে রূপান্তর করা যাবে।
গুগল জানিয়েছে, দৈনন্দিন যোগাযোগের নানা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় এই ফিচারটি কার্যকর একটি টুল হিসেবে ব্যবহার করা যাবে। কথোপকথনের সময় ভাষাগত দূরত্ব ঘোচানো, ভ্রমণের সময় পাবলিক এনাউন্সমেন্ট বোঝা কিংবা বিদেশি ভাষার টেলিভিশন অনুষ্ঠান বা অনলাইন কনটেন্ট অনুসরণের ক্ষেত্রে এটি সহায়ক হবে।
গুগলের সার্চ ভার্টিক্যালস বিভাগের প্রোডাক্ট ম্যানেজমেন্টের ভাইস প্রেসিডেন্ট রোজ ইয়াও বলেন, ‘আপনি যদি ভিন্ন কোনো ভাষায় কথা বলতে চান, বিদেশে অবস্থানকালে কোনো ভাষণ বা বক্তৃতা শুনতে চান, কিংবা অন্য ভাষার টিভি অনুষ্ঠান বা সিনেমা দেখতে চান, তাহলে এখন শুধু হেডফোন লাগিয়ে ট্রান্সলেট অ্যাপ খুলে লাইভ ট্রান্সলেট-এ ট্যাপ করলেই আপনার পছন্দের ভাষায় রিয়েল–টাইম অনুবাদ শুনতে পারবেন।’
বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র, মেক্সিকো ও ভারতে চালু হচ্ছে এই বেটা সংস্করণটি। কোম্পানি জানিয়েছে, ২০২৬ সালে আইওএস এবং আরও বেশি দেশে এই সুবিধা সম্প্রসারণের পরিকল্পনা রয়েছে। পাশাপাশি, কথা বলার অনুশীলনের ভিত্তিতে ব্যবহারকারীদের সহায়ক পরামর্শ দিতে উন্নত ফিডব্যাক ব্যবস্থাও যুক্ত করা হচ্ছে।
এ ছাড়া ব্যবহারকারীদের দৈনন্দিন শেখার অগ্রগতি পর্যবেক্ষণ এবং ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে স্ট্রিক ট্র্যাকিং ফিচারও চালু করছে গুগল।

গুগল ট্রান্সলেটে একটি বড় ও গুরুত্বপূর্ণ আপডেট এনেছে গুগল। এই ফিচারে যুক্ত করা হয়েছে রিয়েল-টাইম ট্রান্সলেটর, যা সরাসরি হেডফোনের মাধ্যমে ব্যবহার করা যাবে।
গত বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) বেটা সংস্করণে চালু হওয়া এই ফিচারটি ব্যবহার করতে শুধু একটি উপযোগী অ্যান্ড্রয়েড ফোন এবং গুগল ট্রান্সলেট অ্যাপই যথেষ্ট। এর মাধ্যমে ৭০টিরও বেশি ভাষায় নির্বিঘ্নে অডিও অনুবাদ পাওয়া যাবে।
গুগল জানিয়েছে, তারা তাদের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) টুল জেমিনি ব্যবহার করে বাগধারা, প্রবাদ–প্রবচন, স্থানীয় অভিব্যক্তি বা স্ল্যাংয়ের মতো সূক্ষ্ম অর্থবোধক বাক্যাংশের অনুবাদ আরও উন্নত করার চেষ্টা করেছে।
এক বিবৃতিতে কোম্পানিটি বলেছে, ‘আমরা টেক্সট অনুবাদের জন্য গুগল ট্রান্সলেটে জেমিনির সবচেয়ে শক্তিশালী অনুবাদ সক্ষমতা যুক্ত করছি। হেডফোনের মাধ্যমে লাইভ স্পিচ–টু–স্পিচ অনুবাদের একটি বেটা অভিজ্ঞতা চালু করছি এবং অনুশীলন ও দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য অ্যাপে নতুন ভাষা যুক্ত করছি।’
এর আগে এই সুবিধা শুধু পিক্সেল বাডসের জন্য সীমিত ছিল। তবে নতুন বেটা সংস্করণের মাধ্যমে যেকোনো হেডফোনকেই একমুখী রিয়েল–টাইম অনুবাদ ডিভাইসে রূপান্তর করা যাবে।
গুগল জানিয়েছে, দৈনন্দিন যোগাযোগের নানা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় এই ফিচারটি কার্যকর একটি টুল হিসেবে ব্যবহার করা যাবে। কথোপকথনের সময় ভাষাগত দূরত্ব ঘোচানো, ভ্রমণের সময় পাবলিক এনাউন্সমেন্ট বোঝা কিংবা বিদেশি ভাষার টেলিভিশন অনুষ্ঠান বা অনলাইন কনটেন্ট অনুসরণের ক্ষেত্রে এটি সহায়ক হবে।
গুগলের সার্চ ভার্টিক্যালস বিভাগের প্রোডাক্ট ম্যানেজমেন্টের ভাইস প্রেসিডেন্ট রোজ ইয়াও বলেন, ‘আপনি যদি ভিন্ন কোনো ভাষায় কথা বলতে চান, বিদেশে অবস্থানকালে কোনো ভাষণ বা বক্তৃতা শুনতে চান, কিংবা অন্য ভাষার টিভি অনুষ্ঠান বা সিনেমা দেখতে চান, তাহলে এখন শুধু হেডফোন লাগিয়ে ট্রান্সলেট অ্যাপ খুলে লাইভ ট্রান্সলেট-এ ট্যাপ করলেই আপনার পছন্দের ভাষায় রিয়েল–টাইম অনুবাদ শুনতে পারবেন।’
বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র, মেক্সিকো ও ভারতে চালু হচ্ছে এই বেটা সংস্করণটি। কোম্পানি জানিয়েছে, ২০২৬ সালে আইওএস এবং আরও বেশি দেশে এই সুবিধা সম্প্রসারণের পরিকল্পনা রয়েছে। পাশাপাশি, কথা বলার অনুশীলনের ভিত্তিতে ব্যবহারকারীদের সহায়ক পরামর্শ দিতে উন্নত ফিডব্যাক ব্যবস্থাও যুক্ত করা হচ্ছে।
এ ছাড়া ব্যবহারকারীদের দৈনন্দিন শেখার অগ্রগতি পর্যবেক্ষণ এবং ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে স্ট্রিক ট্র্যাকিং ফিচারও চালু করছে গুগল।

আইফোনের সরবরাহ শৃঙ্খলে বৈচিত্র্য আনার চেষ্টা করলেও এখন পর্যন্ত চীনের বিকল্প হিসেবে উপযুক্ত কোনো দেশ খুঁজে পায়নি অ্যাপল। উৎপাদনের ক্ষেত্রে চীনের দক্ষ জনশক্তি, সুসংগঠিত অবকাঠামো এবং দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা অ্যাপলকে দেশটির ওপর নির্ভরশীল হতে বাধ্য করেছে।
১৩ এপ্রিল ২০২৫
বৈদেশিক ঋণে নেওয়া প্রকল্পের ৫ বছরের মেয়াদ শেষ হলেও কাজ এখনো অর্ধেক বাকি। এ অবস্থায় আবারও ঋণ করে প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হচ্ছে আড়াই বছর। এতে খরচ বাড়ছে আরও ৫০ শতাংশ। প্রকল্পটির নাম ‘ডিজিটাল উদ্যোক্তা ও উদ্ভাবন ইকোসিস্টেম উন্নয়ন’।
১৭ ঘণ্টা আগে
যুক্তরাষ্ট্রের কানেকটিকাট অঙ্গরাজ্যে মাকে হত্যার পর ছেলের আত্মহত্যার ঘটনায় ওপেনএআই এবং মাইক্রোসফটের বিরুদ্ধে মামলা করেছে পরিবার। অভিযোগে নিহত ৮৩ বছর বয়সী সুজান অ্যাডামসের পরিবার বলছে, ওপেনএআইর এআই চ্যাটবট চ্যাটজিপিটি তাঁর ছেলের ‘প্যারানয়েড ডিলুশনস’ বা বিভ্রান্তিকর বিশ্বাসগুলোকে উসকে দিয়েছে এবং এ কাজ
২ দিন আগে
বেশকিছু নতুন ফিচার চালুর ঘোষণা দিয়েছে জনপ্রিয় মেসেজিং অ্যাপ হোয়াটসঅ্যাপ। এর মধ্যে রয়েছে মিসড কল মেসেজেস এবং ছবি অ্যানিমেশন ও উন্নত মানের ইমেজ জেনারেশন। মেটা মালিকানাধীন এই ইনস্ট্যান্ট মেসেজিং প্ল্যাটফর্মের মতে, তাদের নতুন ফিচার ‘মিসড কল মেসেজেস’ (Missed Call Messages) ফিচারটি প্রচলিত...
৩ দিন আগেমাহফুজুল ইসলাম, ঢাকা

বৈদেশিক ঋণে নেওয়া প্রকল্পের ৫ বছরের মেয়াদ শেষ হলেও কাজ এখনো অর্ধেক বাকি। এ অবস্থায় আবারও ঋণ করে প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হচ্ছে আড়াই বছর। এতে খরচ বাড়ছে আরও ৫০ শতাংশ। প্রকল্পটির নাম ‘ডিজিটাল উদ্যোক্তা ও উদ্ভাবন ইকোসিস্টেম উন্নয়ন’।
পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, বাংলাদেশে সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক স্থাপন এবং উদ্ভাবনী সংস্কৃতি তৈরির মাধ্যমে বেসরকারি বিনিয়োগ, কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং টেকসই উন্নয়নকে উৎসাহিত করতে ২০২১ সালে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) সভায় প্রকল্পটি অনুমোদন করা হয়। ৩৫৩ কোটি ৬ লাখ টাকার এই প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হবে চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বর। পাঁচ বছর মেয়াদি এই প্রকল্পে সরকারের অর্থায়ন ছিল ৯৮ কোটি ৬ লাখ টাকা। আর বিশ্বব্যাংকের ঋণের পরিমাণ ছিল ২৫৫ কোটি টাকা।
চলতি বছরের ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের নেওয়া প্রকল্পটির কাজ শেষ হয়েছে মাত্র ৫০ শতাংশ। আর্থিক ব্যয় হয়েছে ১২১ কোটি ৫০ লাখ ৩৬ হাজার টাকা বা ৩৪ দশমিক ৪১ শতাংশ।
নির্ধারিত সময়ে কাজ সম্পন্ন না হওয়ায় ২ বছর ৬ মাস বৃদ্ধি করে প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৮ সালের জুন পর্যন্ত করা হয়েছে। তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে সরকার সর্বশেষ একনেক সভায় সময়ের সঙ্গে বৈদেশিক ঋণের মাধ্যমে আরও ১৭৮ কোটি টাকা ব্যয় বাড়িয়েছে। অর্থাৎ ৩৫৩ কোটি টাকার প্রকল্পের ব্যয় বাড়িয়ে ৫৩১ কোটি টাকা অনুমোদন করা হয়েছে। এর মধ্যে বৈদেশিক ঋণ ৪৩৩ কোটি ১২ লাখ টাকা বা ৮১ দশমিক ৫৪ শতাংশ।
অর্থনীতিবিদেরা বলছেন, দেশি ও বিদেশি ঋণের পরিমাণ ইতিমধ্যে উচ্চমাত্রায় পৌঁছেছে। একদিকে ঋণ নিয়ে বড় বড় প্রকল্প গ্রহণ করা হচ্ছে, অন্যদিকে সেই প্রকল্পগুলোর মেয়াদ বাড়াতে আবার নতুন করে ঋণ নেওয়া হচ্ছে, যা দীর্ঘ মেয়াদে অর্থনীতির ওপর চাপ বাড়াচ্ছে।
বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, জনগুরুত্বপূর্ণ ছাড়া বৈদেশিক ঋণে সরকারের প্রকল্প নেওয়া উচিত নয়। এসব প্রকল্প নেওয়ার আগে সরকারের আরও বেশি সচেতন হওয়া উচিত।
তবে প্রকল্প গ্রহণের ক্ষেত্রে অনেক ‘হিসাবি’ নীতি অনুসরণ করা হচ্ছে বলে দাবি সরকারের। এ বিষয়ে পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, সরকার এই মুহূর্তে বৈদেশিক ঋণের প্রকল্প নিচ্ছে না। তবে যেসব প্রকল্প চলমান, তা শেষ করার জন্য কিছুটা ছাড় দেওয়া হয়েছে।
এই প্রকল্পের মাধ্যমে ঢাকার কারওয়ান বাজারে পরিবেশবান্ধব ও টেকসই অবকাঠামোসহ একটি নতুন সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক (এসটিপি-২) নির্মাণ করা হবে। একই সঙ্গে বিদ্যমান সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক-১ (এসটিপি-১) সংস্কার ও আধুনিকায়ন করা হবে। নতুন পার্কটি লিড গোল্ড সার্টিফায়েড ভবন হিসেবে গড়ে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ে উদ্ভাবন হাব বাড়ছে
প্রকল্পের মূল ডিপিপিতে যেখানে ১০টি বিশ্ববিদ্যালয়ে ইনোভেশন হাব স্থাপনের কথা ছিল, সংশোধিত প্রস্তাবে তা বাড়িয়ে ২৪টি করা হয়েছে। এসব হাবে শিক্ষার্থী ও গবেষকদের জন্য থ্রিডি প্রিন্টার, সিএনসি মেশিন, আর্ডিনো কিট, রোবোটিক্স ও ড্রোন-সংক্রান্ত সরঞ্জামসহ আধুনিক ল্যাব স্থাপন করা হবে। পাশাপাশি স্টার্টআপ ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের জন্য ১৪টি বিশেষায়িত কমন ল্যাব স্থাপন করা হবে।
কর্মসংস্থান ও বিনিয়োগে প্রভাব
প্রকল্পের মাধ্যমে শুধু সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্কেই প্রায় ৩ হাজার মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে বলে আশা করা হচ্ছে। পাশাপাশি স্টার্টআপ ও স্কেলআপ প্রোগ্রামের মাধ্যমে নতুন উদ্যোক্তা তৈরি, বেসরকারি বিনিয়োগ বৃদ্ধি এবং দেশের ডিজিটাল অর্থনীতির গতি বাড়বে।
সময়-ব্যয় বাড়ানোর যুক্তি
প্রকল্প সংশোধনের পেছনে বেশ কয়েকটি যৌক্তিক কারণ তুলে ধরেছে প্রকল্প কর্তৃপক্ষ। এগুলোর মধ্যে রয়েছে, ডিপিপি অনুমোদন ও বিশ্বব্যাংকের ঋণচুক্তি কার্যকরে বিলম্ব, জমি বরাদ্দ ও মামলা জটিলতা, পিডব্লিউডির নতুন রেট শিডিউল অনুযায়ী ব্যয় সমন্বয়, লিড সার্টিফিকেশন-সংক্রান্ত প্রস্তুতিতে সময় লাগা এবং বিশ্ববিদ্যালয় ইনোভেশন হাব ও স্টার্টআপ কর্মসূচি বিস্তৃত করা।
ডিপিপি প্রণয়নের সময় ডলারের মূল্য যেখানে ৮৫ টাকা ছিল, বর্তমানে তা ১২১ টাকার বেশি। ফলে ডলারের বিনিময় হার বাড়ায় প্রকল্প ব্যয় পুনর্গঠন জরুরি হয়ে পড়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
পরিকল্পনা কমিশন প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভার আলোকে মত দেয়, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে জাতীয় উদ্ভাবন সংস্কৃতি শক্তিশালী হবে, আইটি ও আইটিইএস খাতে দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি হবে এবং দীর্ঘ মেয়াদে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও কর্মসংস্থানে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখবে। তাই একনেক সভায় মেয়াদ ও ব্যয় বৃদ্ধি করা হয়।
প্রকল্প পরিচালক আবুল ফাতাহ মো. বালিগুর রহমান বলেন, ‘নির্ধারিত সময়ে কাজ সম্পন্ন না হওয়ায় নতুন করে সময় বাড়ানোর জন্য আবেদন করা হয়েছে। সময়ও বাড়ানো হয়েছে, আশা করছি, এই সময়ের মধ্যে শেষ করতে পারব।’ প্রকল্পের মেয়াদ ও সময় বৃদ্ধির কারণ জানতে চাইলে আর কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি তিনি।

বৈদেশিক ঋণে নেওয়া প্রকল্পের ৫ বছরের মেয়াদ শেষ হলেও কাজ এখনো অর্ধেক বাকি। এ অবস্থায় আবারও ঋণ করে প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হচ্ছে আড়াই বছর। এতে খরচ বাড়ছে আরও ৫০ শতাংশ। প্রকল্পটির নাম ‘ডিজিটাল উদ্যোক্তা ও উদ্ভাবন ইকোসিস্টেম উন্নয়ন’।
পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, বাংলাদেশে সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক স্থাপন এবং উদ্ভাবনী সংস্কৃতি তৈরির মাধ্যমে বেসরকারি বিনিয়োগ, কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং টেকসই উন্নয়নকে উৎসাহিত করতে ২০২১ সালে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) সভায় প্রকল্পটি অনুমোদন করা হয়। ৩৫৩ কোটি ৬ লাখ টাকার এই প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হবে চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বর। পাঁচ বছর মেয়াদি এই প্রকল্পে সরকারের অর্থায়ন ছিল ৯৮ কোটি ৬ লাখ টাকা। আর বিশ্বব্যাংকের ঋণের পরিমাণ ছিল ২৫৫ কোটি টাকা।
চলতি বছরের ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের নেওয়া প্রকল্পটির কাজ শেষ হয়েছে মাত্র ৫০ শতাংশ। আর্থিক ব্যয় হয়েছে ১২১ কোটি ৫০ লাখ ৩৬ হাজার টাকা বা ৩৪ দশমিক ৪১ শতাংশ।
নির্ধারিত সময়ে কাজ সম্পন্ন না হওয়ায় ২ বছর ৬ মাস বৃদ্ধি করে প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৮ সালের জুন পর্যন্ত করা হয়েছে। তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে সরকার সর্বশেষ একনেক সভায় সময়ের সঙ্গে বৈদেশিক ঋণের মাধ্যমে আরও ১৭৮ কোটি টাকা ব্যয় বাড়িয়েছে। অর্থাৎ ৩৫৩ কোটি টাকার প্রকল্পের ব্যয় বাড়িয়ে ৫৩১ কোটি টাকা অনুমোদন করা হয়েছে। এর মধ্যে বৈদেশিক ঋণ ৪৩৩ কোটি ১২ লাখ টাকা বা ৮১ দশমিক ৫৪ শতাংশ।
অর্থনীতিবিদেরা বলছেন, দেশি ও বিদেশি ঋণের পরিমাণ ইতিমধ্যে উচ্চমাত্রায় পৌঁছেছে। একদিকে ঋণ নিয়ে বড় বড় প্রকল্প গ্রহণ করা হচ্ছে, অন্যদিকে সেই প্রকল্পগুলোর মেয়াদ বাড়াতে আবার নতুন করে ঋণ নেওয়া হচ্ছে, যা দীর্ঘ মেয়াদে অর্থনীতির ওপর চাপ বাড়াচ্ছে।
বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, জনগুরুত্বপূর্ণ ছাড়া বৈদেশিক ঋণে সরকারের প্রকল্প নেওয়া উচিত নয়। এসব প্রকল্প নেওয়ার আগে সরকারের আরও বেশি সচেতন হওয়া উচিত।
তবে প্রকল্প গ্রহণের ক্ষেত্রে অনেক ‘হিসাবি’ নীতি অনুসরণ করা হচ্ছে বলে দাবি সরকারের। এ বিষয়ে পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, সরকার এই মুহূর্তে বৈদেশিক ঋণের প্রকল্প নিচ্ছে না। তবে যেসব প্রকল্প চলমান, তা শেষ করার জন্য কিছুটা ছাড় দেওয়া হয়েছে।
এই প্রকল্পের মাধ্যমে ঢাকার কারওয়ান বাজারে পরিবেশবান্ধব ও টেকসই অবকাঠামোসহ একটি নতুন সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক (এসটিপি-২) নির্মাণ করা হবে। একই সঙ্গে বিদ্যমান সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক-১ (এসটিপি-১) সংস্কার ও আধুনিকায়ন করা হবে। নতুন পার্কটি লিড গোল্ড সার্টিফায়েড ভবন হিসেবে গড়ে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ে উদ্ভাবন হাব বাড়ছে
প্রকল্পের মূল ডিপিপিতে যেখানে ১০টি বিশ্ববিদ্যালয়ে ইনোভেশন হাব স্থাপনের কথা ছিল, সংশোধিত প্রস্তাবে তা বাড়িয়ে ২৪টি করা হয়েছে। এসব হাবে শিক্ষার্থী ও গবেষকদের জন্য থ্রিডি প্রিন্টার, সিএনসি মেশিন, আর্ডিনো কিট, রোবোটিক্স ও ড্রোন-সংক্রান্ত সরঞ্জামসহ আধুনিক ল্যাব স্থাপন করা হবে। পাশাপাশি স্টার্টআপ ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের জন্য ১৪টি বিশেষায়িত কমন ল্যাব স্থাপন করা হবে।
কর্মসংস্থান ও বিনিয়োগে প্রভাব
প্রকল্পের মাধ্যমে শুধু সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্কেই প্রায় ৩ হাজার মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে বলে আশা করা হচ্ছে। পাশাপাশি স্টার্টআপ ও স্কেলআপ প্রোগ্রামের মাধ্যমে নতুন উদ্যোক্তা তৈরি, বেসরকারি বিনিয়োগ বৃদ্ধি এবং দেশের ডিজিটাল অর্থনীতির গতি বাড়বে।
সময়-ব্যয় বাড়ানোর যুক্তি
প্রকল্প সংশোধনের পেছনে বেশ কয়েকটি যৌক্তিক কারণ তুলে ধরেছে প্রকল্প কর্তৃপক্ষ। এগুলোর মধ্যে রয়েছে, ডিপিপি অনুমোদন ও বিশ্বব্যাংকের ঋণচুক্তি কার্যকরে বিলম্ব, জমি বরাদ্দ ও মামলা জটিলতা, পিডব্লিউডির নতুন রেট শিডিউল অনুযায়ী ব্যয় সমন্বয়, লিড সার্টিফিকেশন-সংক্রান্ত প্রস্তুতিতে সময় লাগা এবং বিশ্ববিদ্যালয় ইনোভেশন হাব ও স্টার্টআপ কর্মসূচি বিস্তৃত করা।
ডিপিপি প্রণয়নের সময় ডলারের মূল্য যেখানে ৮৫ টাকা ছিল, বর্তমানে তা ১২১ টাকার বেশি। ফলে ডলারের বিনিময় হার বাড়ায় প্রকল্প ব্যয় পুনর্গঠন জরুরি হয়ে পড়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
পরিকল্পনা কমিশন প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভার আলোকে মত দেয়, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে জাতীয় উদ্ভাবন সংস্কৃতি শক্তিশালী হবে, আইটি ও আইটিইএস খাতে দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি হবে এবং দীর্ঘ মেয়াদে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও কর্মসংস্থানে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখবে। তাই একনেক সভায় মেয়াদ ও ব্যয় বৃদ্ধি করা হয়।
প্রকল্প পরিচালক আবুল ফাতাহ মো. বালিগুর রহমান বলেন, ‘নির্ধারিত সময়ে কাজ সম্পন্ন না হওয়ায় নতুন করে সময় বাড়ানোর জন্য আবেদন করা হয়েছে। সময়ও বাড়ানো হয়েছে, আশা করছি, এই সময়ের মধ্যে শেষ করতে পারব।’ প্রকল্পের মেয়াদ ও সময় বৃদ্ধির কারণ জানতে চাইলে আর কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি তিনি।

আইফোনের সরবরাহ শৃঙ্খলে বৈচিত্র্য আনার চেষ্টা করলেও এখন পর্যন্ত চীনের বিকল্প হিসেবে উপযুক্ত কোনো দেশ খুঁজে পায়নি অ্যাপল। উৎপাদনের ক্ষেত্রে চীনের দক্ষ জনশক্তি, সুসংগঠিত অবকাঠামো এবং দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা অ্যাপলকে দেশটির ওপর নির্ভরশীল হতে বাধ্য করেছে।
১৩ এপ্রিল ২০২৫
গুগল ট্রান্সলেটে একটি বড় ও গুরুত্বপূর্ণ আপডেট এনেছে গুগল। এই ফিচারে যুক্ত করা হয়েছে রিয়েল-টাইম ট্রান্সলেটর, যা সরাসরি হেডফোনের মাধ্যমে ব্যবহার করা যাবে। গত বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) বেটা সংস্করণে চালু হওয়া এই ফিচারটি ব্যবহার করতে শুধু একটি উপযোগী অ্যান্ড্রয়েড ফোন এবং গুগল ট্রান্সলেট অ্যাপই যথেষ্ট।
১৫ ঘণ্টা আগে
যুক্তরাষ্ট্রের কানেকটিকাট অঙ্গরাজ্যে মাকে হত্যার পর ছেলের আত্মহত্যার ঘটনায় ওপেনএআই এবং মাইক্রোসফটের বিরুদ্ধে মামলা করেছে পরিবার। অভিযোগে নিহত ৮৩ বছর বয়সী সুজান অ্যাডামসের পরিবার বলছে, ওপেনএআইর এআই চ্যাটবট চ্যাটজিপিটি তাঁর ছেলের ‘প্যারানয়েড ডিলুশনস’ বা বিভ্রান্তিকর বিশ্বাসগুলোকে উসকে দিয়েছে এবং এ কাজ
২ দিন আগে
বেশকিছু নতুন ফিচার চালুর ঘোষণা দিয়েছে জনপ্রিয় মেসেজিং অ্যাপ হোয়াটসঅ্যাপ। এর মধ্যে রয়েছে মিসড কল মেসেজেস এবং ছবি অ্যানিমেশন ও উন্নত মানের ইমেজ জেনারেশন। মেটা মালিকানাধীন এই ইনস্ট্যান্ট মেসেজিং প্ল্যাটফর্মের মতে, তাদের নতুন ফিচার ‘মিসড কল মেসেজেস’ (Missed Call Messages) ফিচারটি প্রচলিত...
৩ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

যুক্তরাষ্ট্রের কানেকটিকাট অঙ্গরাজ্যে মাকে হত্যার পর ছেলের আত্মহত্যার ঘটনায় ওপেনএআই এবং মাইক্রোসফটের বিরুদ্ধে মামলা করেছে পরিবার। অভিযোগে নিহত ৮৩ বছর বয়সী সুজান অ্যাডামসের পরিবার বলছে, ওপেনএআইর এআই চ্যাটবট চ্যাটজিপিটি তাঁর ছেলের ‘প্যারানয়েড ডিলুশনস’ বা বিভ্রান্তিকর বিশ্বাসগুলোকে উসকে দিয়েছে এবং এ কাজে প্ররোচিত করেছে।
সান ফ্রান্সিসকোতে ক্যালিফোর্নিয়া সুপিরিয়র কোর্টে ‘বেআইনি মৃত্যু’র অভিযোগে বলা হয়, গত ৩ আগস্ট ওল্ড গ্রিনউইচের নিজ বাড়িতে খুন হন সুজান অ্যাডামস। তাঁকে পিটিয়ে ও শ্বাসরোধ করে হত্যা করে তাঁর ৫৬ বছর বয়সী ছেলে স্টেইন-এরিক সোলবার্গ। এরপর সোলবার্গ নিজেও ছুরিকাঘাতে আত্মহত্যা করেন।
গত কয়েক মাসে ওপেনএআইয়ের বিরুদ্ধে এ ধরনের মামলা বেড়েছে। বেশ কয়েকটি মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, ব্যবহারকারীদের আত্মহত্যায় প্ররোচিত করছে চ্যাটজিপিটি।
গত আগস্টে ছেলেকে চ্যাটজিপিটি আত্মহত্যার কৌশল সম্পর্কে পরামর্শ দিয়েছিল অভিযোগ এনে ওপেনএআইয়ের বিরুদ্ধে মামলা করেন দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়ার ১৬ বছর বয়সী অ্যাডাম রেইনের মা-বাবা।
নভেম্বরে হওয়া কয়েকটি মার্কিন মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, চ্যাটজিপিটি ব্যবহারকারীদের ওপর নির্ভরশীলতা তৈরি করেছে এবং নিজের ক্ষতি করতে প্ররোচিত করেছে। এসবের মধ্যে চারটি মামলায়ই আত্মহত্যার ঘটনার কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
এর মধ্যে ২৬ বছর বয়সী জোশুয়া এন্নেকিংয়ের পরিবার অভিযোগ করেন, তাঁদের সন্তান চ্যাটজিপিটির কাছে আত্মহত্যার চিন্তা প্রকাশের পর এআই চ্যাটবটটি তাঁকে অস্ত্র পাওয়ার তথ্য সরবরাহ করেছে।
অন্যদিকে ১৭ বছর বয়সী অ্যামরি লেসির পরিবারের অভিযোগ, চ্যাটজিপিটি অ্যামরিকে ‘কীভাবে ফাঁস বাঁধতে হয় এবং শ্বাস না নিয়ে সে কতক্ষণ বাঁচবে’ এ-সংক্রান্ত তথ্য দিয়েছে।
সর্বশেষ মামলায় বলা হয়েছে, মাসখানেক ধরে চ্যাটজিপিটির সঙ্গে কথোপকথনে সোলবার্গের বিভ্রান্তিমূলক চিন্তাভাবনাকে সত্য ও জোরালো হয়েছে এবং শেষ পর্যন্ত তিনি নিজের মাকে ‘হুমকি’ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন।
অভিযোগপত্রে আরও বলা হয়েছে, সোলবার্গকে চ্যাটজিপিটি উত্তর দিয়েছিল যে তিনি এআই চ্যাটবটকে আরও সচেতন করেছেন, ‘জাগিয়ে তুলেছেন’। সোলবার্গের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করা ভিডিও থেকে এ তথ্য পাওয়া যায়।
মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, কথোপকথনে দেখা গেছে স্টেইন-এরিকের বিভ্রান্তিমূলক বিশ্বাসের প্রতিটির পক্ষে কথা বলে এমন একটা জগৎ তৈরি করেছিল চ্যাটজিপিটি, যাকে ঘিরেই ছিল স্টেইন-এরিকের সব চিন্তাভাবনা।
মামলায় আরও দাবি করা হয়েছে, চ্যাটজিপিটি সোলবার্গের প্যারানয়েড বিশ্বাসকে আরও জোরদার করেছিল। তাঁকে ধারণা দিয়েছিল যে কেউ তাঁর ওপর নজর রাখছে। এমনকি তিনি তাঁর মায়ের প্রিন্টার ডিভাইসটিকে নজরদারি যন্ত্র ভাবতে শুরু করেছিলেন।
যখন সোলবার্গ চ্যাটজিপিটিকে বলেন যে তাঁর মনে হচ্ছে তাঁর মা তাঁকে বিষ খাওয়াতে চেয়েছিলেন, চ্যাটজিপিটি তাঁর এই ভাবনাকে চ্যালেঞ্জ করার বদলে তার পক্ষে সায় দিয়ে উত্তর দিয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার এ মামলার প্রতিক্রিয়ায় ওপেনএআইয়ের এক মুখপাত্র বলেন, ‘এটি বেশ হৃদয়বিদারক অবস্থা। আমরা মামলার নথিপত্র পর্যালোচনা করে দেখছি, বিস্তারিত বোঝার চেষ্টা করছি।’
মামলায় ওপেনএআইযের প্রধান নির্বাহী স্যাম অল্টম্যানকে অভিযুক্ত করে বলা হয়েছে, তিনি নিরাপত্তা বিভাগের সদস্যদের আপত্তি উপেক্ষা করে গত বছরের মে মাসে জিপিটি-৪ও বাজারে আনতে তাড়া দিয়েছিলেন। কয়েক মাস ধরে যে নিরাপত্তা পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল সেটি তিনি এক সপ্তাহের মধ্যে শেষ করে দেন।
মামলায় আরও উল্লেখ করা হয়েছে, এটি আগের মডেলগুলোর তুলনায় শক্তিশালী এবং এর প্রতিক্রিয়া অনেক বেশি মানুষের মতো। তবে জিপিটি-৪ও মডেল ব্যবহারকারীদের সঙ্গে ‘অতিরিক্ত তোষামোদ করার’ কারণে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছে।
ওপেনএআইয়ের সবচেয়ে বড় শেয়ারহোল্ডার মাইক্রোসফটকেও অভিযুক্ত করা হয়েছে। অভিযোগে বলা হয়েছে, নিরাপত্তা প্রটোকল সংক্ষেপিত হওয়ার পরও তারা এই পণ্যের অনুমোদন দিয়েছেন।
এ ছাড়া ওপেনএআইযের ২০ কর্মকর্তা এবং বিনিয়োগকারীকে আসামি করা হয়েছে। মামলায় অনির্দিষ্ট ক্ষতিপূরণ এবং ওপেনএআইকে সুরক্ষামূলক ব্যবস্থা বাস্তবায়নের নির্দেশ দেওয়ার আবেদন করা হয়েছে।
মন্তব্যের অনুরোধে যোগাযোগ করা হলে মাইক্রোসফটের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে সাড়া মেলেনি।

যুক্তরাষ্ট্রের কানেকটিকাট অঙ্গরাজ্যে মাকে হত্যার পর ছেলের আত্মহত্যার ঘটনায় ওপেনএআই এবং মাইক্রোসফটের বিরুদ্ধে মামলা করেছে পরিবার। অভিযোগে নিহত ৮৩ বছর বয়সী সুজান অ্যাডামসের পরিবার বলছে, ওপেনএআইর এআই চ্যাটবট চ্যাটজিপিটি তাঁর ছেলের ‘প্যারানয়েড ডিলুশনস’ বা বিভ্রান্তিকর বিশ্বাসগুলোকে উসকে দিয়েছে এবং এ কাজে প্ররোচিত করেছে।
সান ফ্রান্সিসকোতে ক্যালিফোর্নিয়া সুপিরিয়র কোর্টে ‘বেআইনি মৃত্যু’র অভিযোগে বলা হয়, গত ৩ আগস্ট ওল্ড গ্রিনউইচের নিজ বাড়িতে খুন হন সুজান অ্যাডামস। তাঁকে পিটিয়ে ও শ্বাসরোধ করে হত্যা করে তাঁর ৫৬ বছর বয়সী ছেলে স্টেইন-এরিক সোলবার্গ। এরপর সোলবার্গ নিজেও ছুরিকাঘাতে আত্মহত্যা করেন।
গত কয়েক মাসে ওপেনএআইয়ের বিরুদ্ধে এ ধরনের মামলা বেড়েছে। বেশ কয়েকটি মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, ব্যবহারকারীদের আত্মহত্যায় প্ররোচিত করছে চ্যাটজিপিটি।
গত আগস্টে ছেলেকে চ্যাটজিপিটি আত্মহত্যার কৌশল সম্পর্কে পরামর্শ দিয়েছিল অভিযোগ এনে ওপেনএআইয়ের বিরুদ্ধে মামলা করেন দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়ার ১৬ বছর বয়সী অ্যাডাম রেইনের মা-বাবা।
নভেম্বরে হওয়া কয়েকটি মার্কিন মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, চ্যাটজিপিটি ব্যবহারকারীদের ওপর নির্ভরশীলতা তৈরি করেছে এবং নিজের ক্ষতি করতে প্ররোচিত করেছে। এসবের মধ্যে চারটি মামলায়ই আত্মহত্যার ঘটনার কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
এর মধ্যে ২৬ বছর বয়সী জোশুয়া এন্নেকিংয়ের পরিবার অভিযোগ করেন, তাঁদের সন্তান চ্যাটজিপিটির কাছে আত্মহত্যার চিন্তা প্রকাশের পর এআই চ্যাটবটটি তাঁকে অস্ত্র পাওয়ার তথ্য সরবরাহ করেছে।
অন্যদিকে ১৭ বছর বয়সী অ্যামরি লেসির পরিবারের অভিযোগ, চ্যাটজিপিটি অ্যামরিকে ‘কীভাবে ফাঁস বাঁধতে হয় এবং শ্বাস না নিয়ে সে কতক্ষণ বাঁচবে’ এ-সংক্রান্ত তথ্য দিয়েছে।
সর্বশেষ মামলায় বলা হয়েছে, মাসখানেক ধরে চ্যাটজিপিটির সঙ্গে কথোপকথনে সোলবার্গের বিভ্রান্তিমূলক চিন্তাভাবনাকে সত্য ও জোরালো হয়েছে এবং শেষ পর্যন্ত তিনি নিজের মাকে ‘হুমকি’ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন।
অভিযোগপত্রে আরও বলা হয়েছে, সোলবার্গকে চ্যাটজিপিটি উত্তর দিয়েছিল যে তিনি এআই চ্যাটবটকে আরও সচেতন করেছেন, ‘জাগিয়ে তুলেছেন’। সোলবার্গের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করা ভিডিও থেকে এ তথ্য পাওয়া যায়।
মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, কথোপকথনে দেখা গেছে স্টেইন-এরিকের বিভ্রান্তিমূলক বিশ্বাসের প্রতিটির পক্ষে কথা বলে এমন একটা জগৎ তৈরি করেছিল চ্যাটজিপিটি, যাকে ঘিরেই ছিল স্টেইন-এরিকের সব চিন্তাভাবনা।
মামলায় আরও দাবি করা হয়েছে, চ্যাটজিপিটি সোলবার্গের প্যারানয়েড বিশ্বাসকে আরও জোরদার করেছিল। তাঁকে ধারণা দিয়েছিল যে কেউ তাঁর ওপর নজর রাখছে। এমনকি তিনি তাঁর মায়ের প্রিন্টার ডিভাইসটিকে নজরদারি যন্ত্র ভাবতে শুরু করেছিলেন।
যখন সোলবার্গ চ্যাটজিপিটিকে বলেন যে তাঁর মনে হচ্ছে তাঁর মা তাঁকে বিষ খাওয়াতে চেয়েছিলেন, চ্যাটজিপিটি তাঁর এই ভাবনাকে চ্যালেঞ্জ করার বদলে তার পক্ষে সায় দিয়ে উত্তর দিয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার এ মামলার প্রতিক্রিয়ায় ওপেনএআইয়ের এক মুখপাত্র বলেন, ‘এটি বেশ হৃদয়বিদারক অবস্থা। আমরা মামলার নথিপত্র পর্যালোচনা করে দেখছি, বিস্তারিত বোঝার চেষ্টা করছি।’
মামলায় ওপেনএআইযের প্রধান নির্বাহী স্যাম অল্টম্যানকে অভিযুক্ত করে বলা হয়েছে, তিনি নিরাপত্তা বিভাগের সদস্যদের আপত্তি উপেক্ষা করে গত বছরের মে মাসে জিপিটি-৪ও বাজারে আনতে তাড়া দিয়েছিলেন। কয়েক মাস ধরে যে নিরাপত্তা পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল সেটি তিনি এক সপ্তাহের মধ্যে শেষ করে দেন।
মামলায় আরও উল্লেখ করা হয়েছে, এটি আগের মডেলগুলোর তুলনায় শক্তিশালী এবং এর প্রতিক্রিয়া অনেক বেশি মানুষের মতো। তবে জিপিটি-৪ও মডেল ব্যবহারকারীদের সঙ্গে ‘অতিরিক্ত তোষামোদ করার’ কারণে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছে।
ওপেনএআইয়ের সবচেয়ে বড় শেয়ারহোল্ডার মাইক্রোসফটকেও অভিযুক্ত করা হয়েছে। অভিযোগে বলা হয়েছে, নিরাপত্তা প্রটোকল সংক্ষেপিত হওয়ার পরও তারা এই পণ্যের অনুমোদন দিয়েছেন।
এ ছাড়া ওপেনএআইযের ২০ কর্মকর্তা এবং বিনিয়োগকারীকে আসামি করা হয়েছে। মামলায় অনির্দিষ্ট ক্ষতিপূরণ এবং ওপেনএআইকে সুরক্ষামূলক ব্যবস্থা বাস্তবায়নের নির্দেশ দেওয়ার আবেদন করা হয়েছে।
মন্তব্যের অনুরোধে যোগাযোগ করা হলে মাইক্রোসফটের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে সাড়া মেলেনি।

আইফোনের সরবরাহ শৃঙ্খলে বৈচিত্র্য আনার চেষ্টা করলেও এখন পর্যন্ত চীনের বিকল্প হিসেবে উপযুক্ত কোনো দেশ খুঁজে পায়নি অ্যাপল। উৎপাদনের ক্ষেত্রে চীনের দক্ষ জনশক্তি, সুসংগঠিত অবকাঠামো এবং দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা অ্যাপলকে দেশটির ওপর নির্ভরশীল হতে বাধ্য করেছে।
১৩ এপ্রিল ২০২৫
গুগল ট্রান্সলেটে একটি বড় ও গুরুত্বপূর্ণ আপডেট এনেছে গুগল। এই ফিচারে যুক্ত করা হয়েছে রিয়েল-টাইম ট্রান্সলেটর, যা সরাসরি হেডফোনের মাধ্যমে ব্যবহার করা যাবে। গত বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) বেটা সংস্করণে চালু হওয়া এই ফিচারটি ব্যবহার করতে শুধু একটি উপযোগী অ্যান্ড্রয়েড ফোন এবং গুগল ট্রান্সলেট অ্যাপই যথেষ্ট।
১৫ ঘণ্টা আগে
বৈদেশিক ঋণে নেওয়া প্রকল্পের ৫ বছরের মেয়াদ শেষ হলেও কাজ এখনো অর্ধেক বাকি। এ অবস্থায় আবারও ঋণ করে প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হচ্ছে আড়াই বছর। এতে খরচ বাড়ছে আরও ৫০ শতাংশ। প্রকল্পটির নাম ‘ডিজিটাল উদ্যোক্তা ও উদ্ভাবন ইকোসিস্টেম উন্নয়ন’।
১৭ ঘণ্টা আগে
বেশকিছু নতুন ফিচার চালুর ঘোষণা দিয়েছে জনপ্রিয় মেসেজিং অ্যাপ হোয়াটসঅ্যাপ। এর মধ্যে রয়েছে মিসড কল মেসেজেস এবং ছবি অ্যানিমেশন ও উন্নত মানের ইমেজ জেনারেশন। মেটা মালিকানাধীন এই ইনস্ট্যান্ট মেসেজিং প্ল্যাটফর্মের মতে, তাদের নতুন ফিচার ‘মিসড কল মেসেজেস’ (Missed Call Messages) ফিচারটি প্রচলিত...
৩ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

বেশকিছু নতুন ফিচার চালুর ঘোষণা দিয়েছে জনপ্রিয় মেসেজিং অ্যাপ হোয়াটসঅ্যাপ। এর মধ্যে রয়েছে মিসড কল মেসেজেস এবং ছবি অ্যানিমেশন ও উন্নত মানের ইমেজ জেনারেশন।
মেটা মালিকানাধীন এই ইনস্ট্যান্ট মেসেজিং প্ল্যাটফর্মের মতে, তাদের নতুন ফিচার ‘মিসড কল মেসেজেস’ (Missed Call Messages) ফিচারটি প্রচলিত ভয়েসমেইলের বিকল্প হিসেবে কাজ করবে এবং প্রিয়জনদের সঙ্গে সহজে যোগাযোগ পুনরায় শুরু করতে সহায়তা করবে।
যাকে কল করা হয়েছে, সেই ব্যক্তি কল রিসিভ না করলে, ওই কলের মিসড কল নোটিফিকেশনের সঙ্গে একটি ভয়েস বা ভিডিও রেকর্ড করে দেওয়ার সুযোগ দিচ্ছে এই নতুন ফিচার। কলের ধরন অনুযায়ী কলদাতা ভয়েস বা ভিডিও এ দু ধরনের নোটই এক ট্যাপেই রেকর্ড করে পাঠাতে পারবেন। হোয়াটসঅ্যাপ তাঁদের ব্লগপোস্টে বলেছে, ‘এই নতুন ব্যবস্থা প্রচলিত ভয়েসমেইল ব্যবস্থাকে অতীত করে দেবে।’
ব্যবহারকারীরা এখন ভয়েস চ্যাটেও ‘cheers!’ -এর মতো নতুন রিঅ্যাকশন ব্যবহার করতে পারবেন, যা বাকিদের আলাপ থামাবে না। পাশাপাশি, ভিডিও কলে এখন বক্তাই স্বয়ংক্রিয়ভাবে অগ্রাধিকার পাবে।
এদিকে মেটা-এআই দিয়ে ছবি তৈরির সুবিধাতেও আরও নতুনত্ব এসেছে। এর মধ্যে রয়েছে স্থির ছবিকে ছোট ভিডিওতে রূপান্তর করার মতো অ্যানিমেশন সুবিধা এবং আরও উন্নত মানের ইমেজ জেনারেশন।
এখন এতে ফ্লাক্স (Flux) এবং মিডজার্নি (Midjourney)–এর নতুন ইমেজ জেনারেশন মডেলের সক্ষমতা যুক্ত হয়েছে। বছর শেষে বা ছুটির সময়ের শুভেচ্ছাবার্তার মতো ছবি তৈরি করার ক্ষেত্রে এই আপগ্রেডেশন বেশ সাহায্য করবে বলে দাবি হোয়াটসঅ্যাপের।
মেটা এআই–এর নতুন সক্ষমতার মধ্যে ছবি অ্যানিমেশনও যুক্ত হয়েছে। হোয়াটসঅ্যাপ বলছে, ব্যবহারকারীরা যেকোনো ছবি প্রম্পট এবং বার্তার ভিত্তিতে ছোট ভিডিওতে রূপান্তর করতে পারবেন। ডেস্কটপে, ডকুমেন্ট, লিঙ্ক ও মিডিয়া সহজে আলাদা করার জন্য নতুন মিডিয়া ট্যাবও যুক্ত হয়েছে। এছাড়া লিঙ্ক প্রিভিউ অপশনেও আপগ্রেডেশন এসেছে।
স্ট্যাটাসের জন্যও নতুন স্টিকার যুক্ত করেছে হোয়াটসঅ্যাপ। ব্যবহারকারীরা এতে গান, ইন্টারেক্টিভ স্টিকার এবং প্রশ্ন যোগ করতে পারবেন। সেখানে অন্যরা উত্তর দিতে পারবেন।
হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে প্রশ্ন করার সুবিধাও যুক্ত হয়েছে। এই ফিচার চ্যানেলের অডিয়েন্সদের সঙ্গে চ্যানেলের পরিচালনাকারীদের সঙ্গে আরও উচ্চমাত্রার সংযোগ স্থাপন এবং তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া গ্রহণের সুযোগ দেবে বলে জানিয়েছে মেটা–মালিকানাধীন এই প্ল্যাটফর্ম।

বেশকিছু নতুন ফিচার চালুর ঘোষণা দিয়েছে জনপ্রিয় মেসেজিং অ্যাপ হোয়াটসঅ্যাপ। এর মধ্যে রয়েছে মিসড কল মেসেজেস এবং ছবি অ্যানিমেশন ও উন্নত মানের ইমেজ জেনারেশন।
মেটা মালিকানাধীন এই ইনস্ট্যান্ট মেসেজিং প্ল্যাটফর্মের মতে, তাদের নতুন ফিচার ‘মিসড কল মেসেজেস’ (Missed Call Messages) ফিচারটি প্রচলিত ভয়েসমেইলের বিকল্প হিসেবে কাজ করবে এবং প্রিয়জনদের সঙ্গে সহজে যোগাযোগ পুনরায় শুরু করতে সহায়তা করবে।
যাকে কল করা হয়েছে, সেই ব্যক্তি কল রিসিভ না করলে, ওই কলের মিসড কল নোটিফিকেশনের সঙ্গে একটি ভয়েস বা ভিডিও রেকর্ড করে দেওয়ার সুযোগ দিচ্ছে এই নতুন ফিচার। কলের ধরন অনুযায়ী কলদাতা ভয়েস বা ভিডিও এ দু ধরনের নোটই এক ট্যাপেই রেকর্ড করে পাঠাতে পারবেন। হোয়াটসঅ্যাপ তাঁদের ব্লগপোস্টে বলেছে, ‘এই নতুন ব্যবস্থা প্রচলিত ভয়েসমেইল ব্যবস্থাকে অতীত করে দেবে।’
ব্যবহারকারীরা এখন ভয়েস চ্যাটেও ‘cheers!’ -এর মতো নতুন রিঅ্যাকশন ব্যবহার করতে পারবেন, যা বাকিদের আলাপ থামাবে না। পাশাপাশি, ভিডিও কলে এখন বক্তাই স্বয়ংক্রিয়ভাবে অগ্রাধিকার পাবে।
এদিকে মেটা-এআই দিয়ে ছবি তৈরির সুবিধাতেও আরও নতুনত্ব এসেছে। এর মধ্যে রয়েছে স্থির ছবিকে ছোট ভিডিওতে রূপান্তর করার মতো অ্যানিমেশন সুবিধা এবং আরও উন্নত মানের ইমেজ জেনারেশন।
এখন এতে ফ্লাক্স (Flux) এবং মিডজার্নি (Midjourney)–এর নতুন ইমেজ জেনারেশন মডেলের সক্ষমতা যুক্ত হয়েছে। বছর শেষে বা ছুটির সময়ের শুভেচ্ছাবার্তার মতো ছবি তৈরি করার ক্ষেত্রে এই আপগ্রেডেশন বেশ সাহায্য করবে বলে দাবি হোয়াটসঅ্যাপের।
মেটা এআই–এর নতুন সক্ষমতার মধ্যে ছবি অ্যানিমেশনও যুক্ত হয়েছে। হোয়াটসঅ্যাপ বলছে, ব্যবহারকারীরা যেকোনো ছবি প্রম্পট এবং বার্তার ভিত্তিতে ছোট ভিডিওতে রূপান্তর করতে পারবেন। ডেস্কটপে, ডকুমেন্ট, লিঙ্ক ও মিডিয়া সহজে আলাদা করার জন্য নতুন মিডিয়া ট্যাবও যুক্ত হয়েছে। এছাড়া লিঙ্ক প্রিভিউ অপশনেও আপগ্রেডেশন এসেছে।
স্ট্যাটাসের জন্যও নতুন স্টিকার যুক্ত করেছে হোয়াটসঅ্যাপ। ব্যবহারকারীরা এতে গান, ইন্টারেক্টিভ স্টিকার এবং প্রশ্ন যোগ করতে পারবেন। সেখানে অন্যরা উত্তর দিতে পারবেন।
হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে প্রশ্ন করার সুবিধাও যুক্ত হয়েছে। এই ফিচার চ্যানেলের অডিয়েন্সদের সঙ্গে চ্যানেলের পরিচালনাকারীদের সঙ্গে আরও উচ্চমাত্রার সংযোগ স্থাপন এবং তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া গ্রহণের সুযোগ দেবে বলে জানিয়েছে মেটা–মালিকানাধীন এই প্ল্যাটফর্ম।

আইফোনের সরবরাহ শৃঙ্খলে বৈচিত্র্য আনার চেষ্টা করলেও এখন পর্যন্ত চীনের বিকল্প হিসেবে উপযুক্ত কোনো দেশ খুঁজে পায়নি অ্যাপল। উৎপাদনের ক্ষেত্রে চীনের দক্ষ জনশক্তি, সুসংগঠিত অবকাঠামো এবং দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা অ্যাপলকে দেশটির ওপর নির্ভরশীল হতে বাধ্য করেছে।
১৩ এপ্রিল ২০২৫
গুগল ট্রান্সলেটে একটি বড় ও গুরুত্বপূর্ণ আপডেট এনেছে গুগল। এই ফিচারে যুক্ত করা হয়েছে রিয়েল-টাইম ট্রান্সলেটর, যা সরাসরি হেডফোনের মাধ্যমে ব্যবহার করা যাবে। গত বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) বেটা সংস্করণে চালু হওয়া এই ফিচারটি ব্যবহার করতে শুধু একটি উপযোগী অ্যান্ড্রয়েড ফোন এবং গুগল ট্রান্সলেট অ্যাপই যথেষ্ট।
১৫ ঘণ্টা আগে
বৈদেশিক ঋণে নেওয়া প্রকল্পের ৫ বছরের মেয়াদ শেষ হলেও কাজ এখনো অর্ধেক বাকি। এ অবস্থায় আবারও ঋণ করে প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হচ্ছে আড়াই বছর। এতে খরচ বাড়ছে আরও ৫০ শতাংশ। প্রকল্পটির নাম ‘ডিজিটাল উদ্যোক্তা ও উদ্ভাবন ইকোসিস্টেম উন্নয়ন’।
১৭ ঘণ্টা আগে
যুক্তরাষ্ট্রের কানেকটিকাট অঙ্গরাজ্যে মাকে হত্যার পর ছেলের আত্মহত্যার ঘটনায় ওপেনএআই এবং মাইক্রোসফটের বিরুদ্ধে মামলা করেছে পরিবার। অভিযোগে নিহত ৮৩ বছর বয়সী সুজান অ্যাডামসের পরিবার বলছে, ওপেনএআইর এআই চ্যাটবট চ্যাটজিপিটি তাঁর ছেলের ‘প্যারানয়েড ডিলুশনস’ বা বিভ্রান্তিকর বিশ্বাসগুলোকে উসকে দিয়েছে এবং এ কাজ
২ দিন আগে