Ajker Patrika

টিটিতে ভালো ভবিষ্যৎ চান তাঁরা

আনোয়ার সোহাগ, ঢাকা
পতাকা হাতে ইসলামিক সলিডারিটি গেমসে রুপাজয়ী জাভেদ ও খই খই সাই মারমা। ছবি: টিটি ফেডারেশন
পতাকা হাতে ইসলামিক সলিডারিটি গেমসে রুপাজয়ী জাভেদ ও খই খই সাই মারমা। ছবি: টিটি ফেডারেশন

ইসলামিক সলিডারিটি গেমসে এবার পদক জেতার মতো প্রত্যাশা করার লোক খুব কম ছিল। আর্চারি ও শুটিং ছিল না এবারের গেমসে। তাই সৌদি আরবের রিয়াদে যাওয়ার আগে কেউ জোর দিয়ে বলতে পারেনি অন্য কোনো ফেডারেশন। সেখানে চমক হিসেবে ধরা দিলেন দুই টেবিল টেনিস খেলোয়াড় খই খই সাই মারমা ও জাভেদ আহমেদ। মিশ্র দলগত ইভেন্টে রুপা পেয়েছেন তাঁরা। আগে অবশ্য ভারোত্তোলনে ৫৩ কেজি ওজন শ্রেণিতে তিনটি ব্রোঞ্জ জেতেন মারজিয়া আক্তার ইকরা।

খই খই-জাভেদের অর্জনটা বিশেষ এ কারণে যে টেবিল টেনিসে এটাই বাংলাদেশের সর্বোচ্চ সাফল্য হিসেবে ধরা হচ্ছে। দক্ষিণ এশিয়ার গণ্ডি পেরিয়ে এবারই প্রথম পদক এল। সেই সাফল্য এনে দিতে পেরে আবেগে ভাসছেন জাভেদ। আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘খুবই ভালো লাগছে, এত বড় একটা আসরে পদক জিততে পেরেছি। অনুভূতি তো আসলে ভাষায় ওইভাবে প্রকাশ করা যায় না। ভবিষ্যতে আরও ভালো কিছু করার ইচ্ছা জেগেছে, এটা জেতার পরে।’

মিশ্র দলীয় ইভেন্টে বাংলাদেশের যাত্রা শুরু হয় শেষ ষোলো রাউন্ডে গায়ানাকে ৩-২ সেটে হারিয়ে। কোয়ার্টার ফাইনালে মালদ্বীপকে ৩-০ সেটে উড়িয়ে দেওয়ার পর সেমিফাইনালে বাহরাইনকে ৩-১ সেটে হারিয়ে রুপা নিশ্চিত করেন খই খই-জাভেদ। তবে ফাইনালে তুরস্কের কাছে হেরে যান ৩-০ সেটে।

দুজনে এর আগে কখনো জুটি বেঁধে খেলেননি। তবু নিজেদের মধ্যে বোঝাপড়ায় ঘাটতি ছিল না তাঁদের। খই খই বলেন, ‘আমরা তেমন উচ্চাশা করিনি। কারণ জাভেদ ভাইয়ের সঙ্গে প্রথমবার জুটি বেঁধেছি। তবুও আমরা দুজনই নিজেদের সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করেছি। যেহেতু ডাবলস হচ্ছে একটা বোঝাপড়ার খেলা, কথা বলে দুজনকেই খেলতে হয়, বোঝাপড়া করে খেলতে হয়। তাই আমরা কথা বলে, খেলে, সব নিজেদের সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করেছি।’

যুব পর্যায়ে খই খই সাফল্যের দেখা পেয়েছেন বেশ কয়েকবার। তবে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে এবারই প্রথম। অংশও নিয়েছেন প্রথম। গতকালই দেশে ফিরতে হয়েছে তাঁকে, ‘যখনই আমি কোনো গেমসে যাই, তারা (পরিবার) সব সময় জিজ্ঞাসা করে যে কোনো মেডেল পেয়েছি কি না। এবার প্রথম এত বড় গেমসে গিয়েছি। আর মেডেল পেয়েছি বলে অনেক জায়গায় দেখানো হচ্ছে। তাই পরিবার আরও বেশি খুশি। প্রথম গেমসে প্রথম পদক।’

জাভেদ সাফ গেমসে পদক জিতেছেন দুবার। সেই দুই পদকের চেয়ে এবারের পদকটি এগিয়ে রাখছেন। সাফল্যের পাশাপাশি শোনালেন খানিকটা আক্ষেপের গল্পও, ‘টেবিল টেনিসের একটা ভালো ভবিষ্যৎ হোক, এটা সবারই চাওয়া। উঠতি খেলোয়াড় যারা আছে, সবাই যেন টেবিল টেনিস খেলতে আসে এগুলো দেখে। কিন্তু একটা জিনিসই চাওয়া যে প্লেয়ারদের লাইফ সেটেলমেন্ট না করলে কেউই একটা পর্যায়ে গিয়ে খেলতে পারবে না।’

রাঙামাটি থেকে উঠে আসা খই খইয়ের পাড়ি দিতে হয়েছে দুর্গম পথ। তাঁর মতো খেলোয়াড় বের করার জন্য টুর্নামেন্ট আয়োজন বাড়াতে হবে বলে মনে করেন তিনি, ‘রাঙামাটিতে আমার বাড়িটা একেবারে প্রত্যন্ত অঞ্চলে। সেখানে এখনো বিদ্যুৎ পৌঁছায়নি। রাস্তাঘাটও খারাপ, বর্ষাকালে গাড়িতে যাওয়া যায় না। হেঁটে যেতে এখনো এক ঘণ্টার বেশি সময় লাগে। তাই আমার মনে হয়, ফেডারেশন যদি রাঙামাটিতে আরও বেশি বেশি ইভেন্টের আয়োজন করে খেলোয়াড় বের করার জন্য, প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোতেও আগ্রহ বাড়বে।’

খই খই-জাভেদের এই রুপা শুধু ব্যক্তিগত সাফল্যই নয়, টিটিতে বাংলাদেশের নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বিএনপির আপত্তি তোলা দুই অধ্যাদেশে উপদেষ্টা পরিষদের অনুমোদন

লন্ডনে চিকিৎসা যাত্রায় খালেদা জিয়ার সফরসঙ্গী ১৪ জন, তালিকায় ছয় চিকিৎসক ও দুই এসএসএফ

ভারতে পা রাখলেন পুতিন, নিয়ম ভেঙে ‘কোলাকুলি’ করলেন মোদি

ঢাকার তিনটিসহ আরও ২৮ আসনে বিএনপির প্রার্থী ঘোষণা বাকি থাকল

মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা—জনসংখ্যার তীব্র সংকটে ইউক্রেন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ