Ajker Patrika
সাক্ষাৎকার

একসঙ্গে এত উন্নতি চাইলে হবে না

একসঙ্গে এত উন্নতি চাইলে হবে না

বয়স তাঁর ২৩। এরই মধ্যে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আট বছর কাটিয়ে দেওয়া নাহিদা আক্তারের ২০২৩ সালটা গেল সোনার ফ্রেমে বাঁধিয়ে রাখার মতো। এ বছরই তিনি হয়েছেন বাংলাদেশ নারী ক্রিকেটে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি। বাংলাদেশের প্রথম নারী ক্রিকেটার হিসেবে নভেম্বরে আইসিসির মাসসেরা হয়েছেন তিনি। কিশোরগঞ্জের নাহিদা যেন গত দুই বছরে বদলে যাওয়া এক গল্প। দলের সহ-অধিনায়ক, সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি, মাসসেরা—সব মিলিয়ে ২০২৩ সালকে কোথায় রাখবেন তিনি, সেই সব গল্পই শোনালেন আজকের পত্রিকাকে। গতকাল তাঁর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন লাইছ ত্বোহা। 

আপডেট : ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৫: ৩৫

প্রশ্ন: ২৩ বছর বয়সেই বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দলের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি, ক্যারিয়ার শেষে কত উইকেট দেখতে চান নিজের নামের পাশে? 

নাহিদা আক্তার: এটা এখন বলা কঠিন। সব সময় চেষ্টা করি দলে অবদান রাখতে। দলের হয়ে খেলতে পারছি, এটা আমার কাছে অনেক গর্বের ব্যাপার। আসলে ২০০-৩০০ উইকেট...এসব নিয়ে চিন্তা করি না। যতটুকু সম্ভব ক্যারিয়ারটা বড় করতে চাই, যেন ভালো খেলে যেতে পারি। দেশের হয়ে খেলার চেয়ে বড় গর্বের কিছু হতে পারে না। 

প্রশ্ন: গত দুই বছরে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি মিলিয়ে নিয়েছেন ৭৪ উইকেট। এই পরিসংখ্যানে আপনার ধারেকাছেও বাংলাদেশের আর কোনো বোলার নেই। অথচ এর আগের ছয় বছরে উইকেট ছিল মাত্র ৬৩টি। নিজের কোথায় বেশি পরিবর্তন করেছেন এই সাফল্যে? 

নাহিদা: আমাদের দল যখন আইসিসির এফটিপিতে ঢুকে যায়, তখন থেকে আমরা অনেক ম্যাচ খেলার সুযোগ পাচ্ছি। আগে এত ম্যাচ খেলার সুযোগ ছিল না। সেদিক থেকে চিন্তা করলে এটার একটা প্রভাব আছে। আর যদি পরিবর্তনের কথা বলেন, সবারই একটা লক্ষ্য থাকে—না, আরও যদি সিরিয়াস হওয়া যায়, বেশি ম্যাচ খেলা যায়, আমার পরিকল্পনা সেরকমই ছিল। নিজের বোলিং লাইন-লেংথ কতটুকু ভালো রাখা যায়, বোলিংয়ে কতটা উন্নতি করা যায়, এসব নিয়ে কাজ করেছি। 

প্রশ্ন: এ বছর বাংলাদেশের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি হয়েছেন এবং বাংলাদেশের প্রথম নারী ক্রিকেটার হিসেবে আইসিসির মাসসেরা হয়েছেন। আপনার ক্যারিয়ারের ২০২৩ সালকে কোথায় রাখবেন? 

নাহিদা: আমাদের অনেক ভালো একটা বছর কেটেছে। ২০২৩ সালটা আমার জন্য অনেক ভালো গেছে, দোয়া করবেন যেন প্রতিটি বছর এভাবে যায় (হাসি)। দেশের হয়ে খেলছি, আমার কাছে এটাই অনেক গর্বের ব্যাপার। আমাকে সিনিয়র ক্রিকেটার সালমা, রুমানা, জাহানারা আপু সব সময় সমর্থন করেছে। তাদের সমর্থনেই আজ এই জায়গায় আসতে পেরেছি। তাঁরা যদি আমাকে ভালো পরামর্শ না দিতেন, এই জায়গায় আসতে পারতাম না। 

প্রশ্ন: এ বছর ধারাবাহিক সাফল্যের রহস্য কী? 

নাহিদা: আপনি যত বেশি ম্যাচ খেলবেন, তত বেশি অভিজ্ঞ হবেন। বললেন না, আমি গত দুই বছর অনেক উইকেট পেয়েছি। কীভাবে? অবশ্যই আমি ম্যাচ বেশি খেলেছি, অভিজ্ঞতা বেড়েছে। ওটাই হচ্ছে, আমরা এখন ম্যাচ খেলছি, অভিজ্ঞতা বাড়ছে। জুনিয়র যারা আছে, তারাও ধীরে ধীরে ভালো করছে। এখান থেকেই আসলে আমদের পরিবর্তন। আরেকটা ব্যাপার, আমরা একজনের সাফল্যে আরেকজন উৎসাহিত হচ্ছি। আমাদের দলের বন্ধন আগের চেয়ে অনেক ভালো। দল হিসেবে পারফরম্যান্স করছে। 

প্রশ্ন: বাংলাদেশ নারী দলের আইসিসির মাসসেরা প্রথম ক্রিকেটার হওয়ার আনন্দটা এখনো কি কাজ করছে মনে? 

নাহিদা: এটা দারুণ অনুভূতি। একটা ভালো অর্জন সবারই ভালো লাগে। এই অর্জনের পেছনে আমার সতীর্থ-কোচদের অবদান আছে। সবার সমর্থনেই আমার এই অর্জন। 

প্রশ্ন: বছরটা দারুণ কেটেছে দলের। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে তাদের মাঠে প্রথমবারের মতো ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি জিতলেন। কিন্তু জয় দিয়ে শুরু করেও সিরিজ জেতা হলো না। কোথায় খেই হারিয়েছিল বাংলাদেশ? 

নাহিদা: আমরা খুব ভালো খেলেছি। বিগত দিনে দেশের বাইরে রেকর্ড আমাদের অত ভালো ছিল না। আমাদের লক্ষ্য ছিল এবার যেন ভালো কিছু করতে পারি। ভালো ছন্দে ছিলাম, পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজ জিতেছি, আমাদের ওই আত্মবিশ্বাস ছিল। কিন্তু দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে দল ভালো একটা অবস্থায় এসেছে। সবাই বলেছে, দলের রান বেশি হচ্ছে না, ফর্মে নেই। কিন্তু আমাদের ব্যাটাররা সেখানে ভালো করেছে, ফর্মে ফিরেছে। পিংকির সেঞ্চুরি, মুরশিদার ৯০ রানের একটা ইনিংস। অধিনায়কেরও ভালো অবদান ছিল। এটাও আমাদের একটা অর্জন। আমরা কিন্তু টি-টোয়েন্টি সিরিজ ১-১ সমতায় শেষ করেছি। প্রথম দুই ওয়ানডে অসাধারণ খেলেছি। শেষ ম্যাচ দ্রুত অলআউট হয়েছি, হতেই পারে। সব মিলিয়ে বলব, আমরা ভালো খেলেছি। 

প্রশ্ন: দ্বিতীয় ওয়ানডেতে আর ২০-৩০ রান বেশি হলেই তো ম্যাচটা অন্যরকম হয়ে যেত। নারী দলের ব্যাটারদের সব সময় কম স্ট্রাইকরেটে ব্যাটিং নিয়ে সমালোচনা হয়। কেউ কেউ বলেন, এটা স্কিলের সমস্যা। এই সমস্যা কাটিয়ে উঠতে কী করণীয়? 

নাহিদা: সবাই এ কথাটা বলে। আগে থেকে অনেক উন্নতি করেছি আমরা এই জায়গায়। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে আমরা প্রথম ওয়ানডে ম্যাচে ২৫০ রান করেছি। তখন কিন্তু এ রকম কথা আসেনি। অনেক সময় উইকেটের আচরণও সেরকম থাকে। সে অনুযায়ী ব্যাটিং করতে হয়। সব সময় যে ২৪০-২৫০ রান হবে, সেটাও না। এসব বিবেচনায় এই সিরিজে আমাদের ব্যাটাররা অনেক ভালো খেলেছে। 

প্রশ্ন: টেস্ট মর্যাদা পাওয়ার তিন বছর হতে চলল। মেয়েদের টেস্ট ক্রিকেট শুরু করতে বিসিবি আরও সময় নেওয়ার পক্ষে। আপনিও তা-ই মনে করেন? 

নাহিদা: সব ক্রিকেটারেরই স্বপ্ন থাকে টেস্ট ক্রিকেট খেলার। কিন্তু টেস্ট খেলার আগে নিজেদের প্রস্তুত করতে হবে। তা না হলে চার দিন খেলতে পারব না। এর জন্য ঘরোয়া লিগে ভালো খেলতে হবে। বিসিবি গত মৌসুমে আমাদের দুই দিনের ম্যাচ দিয়েছে। এভাবেই আমরা এগোচ্ছি। আমরা ফিট হয়ে তারপর টেস্ট খেলব। 

প্রশ্ন: বাংলাদেশ দলে এখনো স্পিনারদেরই দাপট। পুরুষ দলের মতো নারী দলেও কবে দেখা যেতে পারে পেস বিপ্লব? 

নাহিদা: অবশ্যই আমাদের পেসাররা ভালো করছে। একসঙ্গে এত উন্নতি চাইলে হবে না। ধীরে ধীরে আমাদের এগোতে হবে। এখন আগের চেয়ে ভালো ক্রিকেট খেলছি। ব্যাটাররা ভালো করছে, বোলাররা ভালো করছে। আমি বলব, স্পিনারদের সঙ্গে পেসাররা অনেক সাপোর্ট দিচ্ছে। পেসাররা অনেক দিন ধরে খুব ভালো পরিশ্রম করছে। আমি বিশ্বাস করি, আমাদের পেসাররা একদিন বাংলাদেশ ক্রিকেটে রাজত্ব করবে। 

প্রশ্ন: অনেক দেশেই মেয়েদের টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট আছে। ভারতে মেয়েদের আইপিএল যথেষ্ট জমজমাট। টি-টোয়েন্টি সংস্করণে আরও উন্নতি করতে বিপিএল কিংবা এমন টুর্নামেন্টের প্রয়োজন কতটা অনুভব করেন? 

নাহিদা: অবশ্যই এটা নিয়ে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) চিন্তা করছে। ভারতের ক্রিকেটের সঙ্গে আমাদের ক্রিকেটের তুলনা কখনো সম্ভব নয়। তবু বলব, ক্রিকেট বোর্ড যথেষ্ট চেষ্টা করছে, তারা আমাদের আশ্বাস দিয়েছে, সামনে হয়তো এ রকম কোনো টুর্নামেন্ট হতে পারে। আমরা আশাবাদী, আমরা এই টুর্নামেন্টটা খেলতে পারব। আমার বিশ্বাস, আমাদের দল এখন যেভাবে খেলছে, তখন হয়তো আরও ভালো ক্রিকেট খেলব। 

প্রশ্ন: ধারাবাহিক সাফল্যের পরও মাঝে নারী দলের পাঁচ মাসের বেতন আটকে থাকল। এটা কতটা দুঃখজনক? 

নাহিদা: এ ব্যাপারে কিছু বলতে চাই না। বোর্ড তো বেতন দিয়ে দিয়েছে পরে। কোনো না কোনো সমস্যা হয়তো হয়েছিল। 

প্রশ্ন: উইমেন্স চ্যাম্পিয়নশিপে ভালো করে সরাসরি বিশ্বকাপ খেলতে কতটা আত্মবিশ্বাসী? 

নাহিদা: আমাদের লক্ষ্য সরাসরি বিশ্বকাপ খেলতে চাই। ওভাবেই আমরা খেলছি। সবার চিন্তাভাবনা হচ্ছে, বাছাইপর্ব যেন না খেলা লাগে, সরাসরি যেন বিশ্বকাপ খেলতে পারি। আমাদের আরও অনেক সিরিজ আছে, আমরা চেষ্টা করব সিরিজ ধরে ধরে এগোতে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাংলাদেশ প্রসঙ্গে বাজপেয়ির ‘সেই বক্তব্য’ সামনে আনলেন শশী থারুর

সাবেক নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ ও সাবেক মেয়রের বাড়িতে আগুন

ময়মনসিংহে যুবককে পিটিয়ে হত্যা: অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে মামলা

ভারতে তেল দিয়ে ফেরার পথে বিধ্বস্ত রুশ জাহাজ—প্রতিশোধের হুমকি পুতিনের

হাদির মৃত্যু ঘিরে নৈরাজ্য নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র: বিএনপি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ভারত ম্যাচে দেরি করায় বাফুফেকে দেড় লাখ টাকা জরিমানা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
মোরসালিনের গোলে ২২ বছর পর ভারতকে হারায় বাংলাদেশ। ছবি: আজকের পত্রিকা
মোরসালিনের গোলে ২২ বছর পর ভারতকে হারায় বাংলাদেশ। ছবি: আজকের পত্রিকা

এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের ম্যাচ আয়োজন করে আরও একবার জরিমানার মুখে পড়ল বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)। বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধের খেলা ১ মিনিট ৪৩ সেকেন্ড দেরিতে শুরু হওয়ায় বাফুফেকে ১২৫০ ডলার জরিমানা করেছে এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশন (এএফসি)। বাংলাদেশি মুদ্রায় যা প্রায় ১ লাখ ৫৩ হাজার টাকা। গত ১৭ ডিসেম্বর এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে এএফসির শৃঙ্খলা ও নীতি কমিটি।

গত ১৮ নভেম্বর জাতীয় স্টেডিয়ামে ভারতকে ১-০ গোলে হারিয়েছে বাংলাদেশ। এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের ম্যাচটি নিয়মরক্ষার হলেও উন্মাদনার কমতি ছিল না। ২২ বছর পর ভারতকে হারানোর স্বাদ পেয়েছে বাংলাদেশ৷ একমাত্র জয়সূচক গোলটি আসে ম্যাচের প্রথমার্ধে শেখ মোরসালিনের পা থেকে। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে সময়মতো খেলা মাঠে গড়াতে পারেননি রেফারি।

একই কারণে সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনকেও এক হাজার ডলার জরিমানা করা হয়েছে। নির্দিষ্ট সময়ের ভেতর এই অপরাধ দুবার করায় বাংলাদেশের জরিমানার অঙ্ক বেশি ধরা হয়েছে। এর আগে গত জুনে ঘরের মাঠে সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধের খেলা শুরু হতে দুই মিনিট বিলম্ব হওয়ায় দেড় হাজার ডলার জরিমানা করা হয়।

এএফসির শৃঙ্খলা নীতিমালার ১১.৩ ধারা অনুযায়ী, ৩০ দিনের মধ্যে জরিমানার টাকা পরিশোধ করতে হবে দুই ফেডারেশনের। এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে বাংলাদেশের শেষ ম্যাচ ৩১ মার্চ সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে। সিঙ্গাপুর ইতোমধ্যে ১১ পয়েন্ট নিয়ে এশিয়ান কাপে খেলা নিশ্চিত করেছে। ৫ পয়েন্ট নিয়ে চার দলের মধ্যে ‘সি’ গ্রুপে বাংলাদেশের অবস্থান তিনে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাংলাদেশ প্রসঙ্গে বাজপেয়ির ‘সেই বক্তব্য’ সামনে আনলেন শশী থারুর

সাবেক নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ ও সাবেক মেয়রের বাড়িতে আগুন

ময়মনসিংহে যুবককে পিটিয়ে হত্যা: অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে মামলা

ভারতে তেল দিয়ে ফেরার পথে বিধ্বস্ত রুশ জাহাজ—প্রতিশোধের হুমকি পুতিনের

হাদির মৃত্যু ঘিরে নৈরাজ্য নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র: বিএনপি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মোস্তাফিজদের বিপক্ষে খরুচে বোলিংয়ে তাসকিনের ৩ উইকেট

ক্রীড়া ডেস্ক    
মোস্তাফিজুর রহমানের দু্বাই ক্যাপিটালসের বিপক্ষে তাসকিন আহমেদ ৪ ওভারে ৪০ রানে নিয়েছেন ৩ উইকেট। ছবি: ফেসবুক
মোস্তাফিজুর রহমানের দু্বাই ক্যাপিটালসের বিপক্ষে তাসকিন আহমেদ ৪ ওভারে ৪০ রানে নিয়েছেন ৩ উইকেট। ছবি: ফেসবুক

সংযুক্ত আরব আমিরাতের আন্তর্জাতিক লিগ টি-টোয়েন্টি যেন বাংলাদেশ ক্রিকেটারদের মিলনমেলা। সাকিব আল হাসান, মোস্তাফিজুর রহমান, তাসকিন আহমেদ—বাংলাদেশের তিন তারকা ক্রিকেটার খেলছেন এখন আমিরাতের এই লিগে। কদিন আগে সাকিব-মোস্তাফিজের একটি ছবি ‘দ্য বাংলা’ ক্যাপশনে পোস্ট করেছিল সাকিবের দল এমআই এমিরেটস। আজ দুবাই আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হয়েছেন তাসকিন-মোস্তাফিজ।

বাংলাদেশের তিন তারকা সাকিব, তাসকিন, মোস্তাফিজ এবারই প্রথমবারের মতো আইএল টি-টোয়েন্টিতে খেলছেন। এই তিন বাংলাদেশির মধ্যে মোস্তাফিজ নিয়মিত বিরতিতে উইকেট নিচ্ছেন। এদিকে তাসকিন উইকেট তেমন পাচ্ছেন না। উপরন্তু মুক্ত হস্তে রান বিলিয়ে দিচ্ছেন। দুবাইয়ে আজ মোস্তাফিজের দুবাই ক্যাপিটালসের বিপক্ষে তাসকিন ৩ উইকেট হলেও ১০ ইকোনমিতে বোলিং করেছেন।

দুবাই ক্যাপিটালসের বিপক্ষে টস জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন শারজা ওয়ারিয়র্সের অধিনায়ক সিকান্দার রাজা। দলীয় ৩ রানে ভেঙে যায় দুবাই ক্যাপিটালসের উদ্বোধনী জুটি। ইনিংসের পঞ্চম বলে দুবাইয়ের ওপেনার শায়ান জাহাঙ্গীরকে (১) এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলেন রাজা। দ্বিতীয় উইকেটে এরপর ৩১ বলে ৪৭ রানের জুটি গড়েন জর্ডান কক্স ও সেদিকউল্লাহ আতাল। ষষ্ঠ ওভারের শেষ বলে কক্সকে (২৮) ফিরিয়ে জুটি ভাঙেন তাসকিন।

দুবাই ক্যাপিটালসের ইনিংস সর্বোচ্চ ৪৭ রানের জুটি গড়েছেন কক্স ও আতাল। আরেকটি চল্লিশোর্ধ্ব রানের জুটিতেও অবদান রয়েছে আতালের। চতুর্থ উইকেটে আফগানিস্তান দলের সতীর্থ মোহাম্মদ নবির সঙ্গে ২৬ বলে ৪২ রানের জুটি গড়তে অবদান রেখেছেন আতাল। ওপেনিংয়ে নামা আতাল আউট হয়েছেন পঞ্চম ব্যাটার হিসেবে। ১৮তম ওভারের দ্বিতীয় বলে আতালের উইকেট নিয়েছেন তাসকিন। ৪৪ বলে ২ চার ও ৩ ছক্কায় ৬৬ রানের ইনিংস খেলেছেন আফগান এই ব্যাটার। নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেটে ১৮০ রান করে দুবাই ক্যাপিটালস। দুবাইয়ের ইনিংস সর্বোচ্চ ৬৬ রান এসেছে আতালের ব্যাট থেকে।

শারজা ওয়ারিয়র্সের তাসকিন ৪ ওভারে ৪০ রানে নিয়েছেন ৪ উইকেট। যার মধ্যে ইনিংসের শেষ ওভারে ১২ রান খরচ করে পেয়েছেন ১ উইকেট। একটি করে উইকেট পেয়েছেন রাজা, মাথিসা পাতিরানা ও আদিল রশিদ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাংলাদেশ প্রসঙ্গে বাজপেয়ির ‘সেই বক্তব্য’ সামনে আনলেন শশী থারুর

সাবেক নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ ও সাবেক মেয়রের বাড়িতে আগুন

ময়মনসিংহে যুবককে পিটিয়ে হত্যা: অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে মামলা

ভারতে তেল দিয়ে ফেরার পথে বিধ্বস্ত রুশ জাহাজ—প্রতিশোধের হুমকি পুতিনের

হাদির মৃত্যু ঘিরে নৈরাজ্য নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র: বিএনপি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কলম্বিয়ায় ফুটবল ম্যাচে সহিংসতায় আহত ৫৯

ক্রীড়া ডেস্ক    
আপডেট : ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ২২: ৩৭
কোপা কলম্বিয়ার ফাইনালের দ্বিতীয় লেগে সংঘর্ষের ঘটনায় ৫৯ জন আহত হয়েছেন। ছবি: এএফপি
কোপা কলম্বিয়ার ফাইনালের দ্বিতীয় লেগে সংঘর্ষের ঘটনায় ৫৯ জন আহত হয়েছেন। ছবি: এএফপি

লাতিন আমেরিকার ফুটবলে সহিংসতা নতুন কিছু নয়। মহাদেশীয় শ্রেষ্ঠত্বের টুর্নামেন্ট কোপা আমেরিকাতেই ঘটে মারামারির ঘটনা। স্থানীয় টুর্নামেন্টে সহিংসতার কারণে তো প্রায়ই খবরের শিরোনামে আসে লাতিন আমেরিকার ফুটবল। কলম্বিয়ায় এক ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনালে ভয়াবহ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।

কলম্বিয়ার মেডেলিন শহরের আতানাসিও জিরারদোত স্টেডিয়ামে পরশু রাতে কোপা কলম্বিয়ার ফাইনালের দ্বিতীয় লেগে মুখোমুখি হয়েছিল দেপোর্তিভো ইন্দিপেন্দিয়েন্তে-আতলেতিকো ন্যাশনাল। ১-০ গোলে আতলেতিকো ন্যাশনালের জয়ের পরই ভক্ত-সমর্থকেরা মাঠে ঢুকে তাণ্ডব শুরু করেন। আতশবাজি-আগুন নিয়ে এমনভাবে হামলা চালিয়েছিলেন ভক্তরা, যেটা সামাল দিতে দাঙ্গা পুলিশ মোতায়েন করতে হয়েছে। সাত পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। কলম্বিয়ার স্থানীয় পত্রিকা এল কলোম্বিয়ানোর এক প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, মাঠের কিছু অংশে আগুন ধরানো হয়েছে। উপড়ে ফেলা হয়েছে অনেক আসন। গ্যালারিতে আতশবাজির ধোঁয়ার কারণে ম্যাচ শুরু হতেও দেরি হয় ১৪ মিনিট।

মেডেলিনের মেয়র ফেদেরিকো গুতিয়েরেস কোপা কলম্বিয়ার ফাইনালে সহিংস ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। গুতিয়েরেস বলেন, ‘যারা স্টেডিয়ামে হামলা, ধ্বংসযজ্ঞ বা ভীতি ছড়ানোর চেষ্টা করেছে, তাদের প্রত্যেককেই আইনের আওতায় আনা হবে। সবাই মাঠে বসে খেলা উপভোগ করতে পারবেন। হাতে গোনা কয়েকজনের জন্য পরিবেশ নষ্ট হবে, এমনটা তো হতে দেওয়া যাবে না। বছরের পর বছর ধরে আমরা পুরো লাতিন আমেরিকায় শান্তিপূর্ণ ফুটবলের মডেল হিসেবে পরিচিতি পেয়েছি।’ পুলিশ কমান্ডার উইলিয়াম কাস্তানো বলেন, স্টেডিয়ামে দর্শকদের কাছ থেকে অস্ত্র ও আতশবাজি জব্দ করা হয়েছে। ১২০ কেজির বেশি পাইরোটেকনিক (বিস্ফোরণের প্রভাব তৈরির মতো রাসায়নিক বস্তু) ছিল সেখানে।

দেপোর্তিভো ইন্দিপেন্দিয়েন্তে-আতলেতিকো ন্যাশনাল কলম্বিয়া কাপ ফাইনালের প্রথম লেগ গোলশূন্য ড্র হয়েছে। পরশু রাতে দ্বিতীয় লেগটা হয়ে যায় শিরোপা নির্ধারণী। দুই লেগ মিলিয়ে ১-০ গোলে শিরোপা জিতেছে আতলেতিকো ন্যাশনাল। কিন্তু মেডেলিন শহরের আতানাসিও জিরারদোত স্টেডিয়ামে ভয়াবহ সংঘর্ষের ঘটনায় আতলেতিকো ন্যাশনালের ম্যাচপরবর্তী পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান, শিরোপা নিয়ে উদ্‌যাপন—কিছুই করা সম্ভব হয়নি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাংলাদেশ প্রসঙ্গে বাজপেয়ির ‘সেই বক্তব্য’ সামনে আনলেন শশী থারুর

সাবেক নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ ও সাবেক মেয়রের বাড়িতে আগুন

ময়মনসিংহে যুবককে পিটিয়ে হত্যা: অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে মামলা

ভারতে তেল দিয়ে ফেরার পথে বিধ্বস্ত রুশ জাহাজ—প্রতিশোধের হুমকি পুতিনের

হাদির মৃত্যু ঘিরে নৈরাজ্য নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র: বিএনপি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আন্তর্জাতিক ব্যাডমিন্টনে সোনার লড়াইয়ে বাংলাদেশের জুমার-ঊর্মি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
মিশ্র দ্বৈতে ফাইনালে উঠেছেন জুমার-ঊর্মি। ছবি: ব্যাডমিন্টন ফেডারেশন
মিশ্র দ্বৈতে ফাইনালে উঠেছেন জুমার-ঊর্মি। ছবি: ব্যাডমিন্টন ফেডারেশন

ইউনেক্স-সানরাইজ বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল চ্যালেঞ্জ টুর্নামেন্টে মিশ্র দ্বৈত বিভাগে ফাইনালে উঠেছেন বাংলাদেশের আল আমিন জুমার ও ঊর্মি আক্তার। আজ সেমিফাইনালে থাইল্যান্ডের কুনলাপাথ লোথোং ও সারিসা জানপেং জুটিকে হারিয়েছেন ২১-১১ ও ২১-১৪ গেমে। পদক তো নিশ্চিত হয়েছে আগে, জুমার-ঊর্মি এবার দেখাচ্ছেন সোনা জয়ের ঝিলিকও। ফাইনালে কাল মালয়েশিয়ার দাতু আনিফ ইসাক দাতু আসরা ও ক্লারিসা সানের মুখোমুখি হবেন তারা।

পল্টনের শহীদ তাজউদ্দিন ইনডোর স্টেডিয়ামে সকালটাও অন্যরকম ছিল জুমার-ঊর্মির। কোয়ার্টার ফাইনালে ভারতের স্বস্তিক মাথারাসান-কীর্তি মাঞ্চালাকে তিন সেটের লড়াইয়ে হারিয়েছেন ২১-১৬, ১৯-২১ ও ২১-১৮ গেমে। প্রথম সেট খানিকটা সহজে জিতলেও দ্বিতীয় সেটে হারতে হয়। তৃতীয় সেটে দারুণ প্রতিদ্বন্দ্বিতা শেষে নিশ্চিত করেন ব্রোঞ্জ পদক।

রাতে সেমিফাইনালে থাইল্যান্ডের জুটিকে পাত্তাই দিলেন না জুমার-ঊর্মি। প্রথম সেটে একটা সময় অবশ্য পিছিয়ে ছিলেন ৫-৩ পয়েন্টে। সেখান থেকে অনবরত পয়েন্ট তুলতে থাকেন জুমার। শেষ দিকে ঊর্মিও দেখান তাঁর দাপট। দ্বিতীয় সেটে শুরুতেই আধিপত্য দেখাতে থাকে বাংলাদেশের জুটি। নিয়ে নেন বড় ব্যবধানের লিড। যা পরে আর ছোট করতে পারেননি থাইল্যান্ডের শাটলাররা।

ফাইনালে উঠে জুমার বলেন, ‘ফাইনাল নিয়ে প্রত্যাশা অবশ্যই ভালো খেলার চেষ্টা করব। বাকিটা আল্লাহ ভরসা, জানিনা কি হবে। দেখা যাক। আগে যে রেজাল্টগুলো আমরা আশাও করতে পারতাম না, এখন বাংলাদেশ অন্যান্য বারের মতো হচ্ছে না যে মানে বাংলাদেশ আসছে আর হেরে যাচ্ছে—এরকম হচ্ছে না। প্রত্যেকটা টিমই আমাদের লড়াই করে হেরেছে।’

জুমারের সঙ্গে বোঝাপড়া নিয়ে ঊর্মি বলেন, ‘সকালেই আমি বলেছিলাম, আমরা চ্যাম্পিয়ন হতে চাই। সেই লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। ফাইনাল নিশ্চিত করেছি। এবার সোনা জিততে চাই। জুমারের সঙ্গে ছয়-সাত বছর ধরে জুটি বেঁধে খেলছি। যেহেতু অনেকদিন ধরে খেলছি, সেহেতু আমাদের মধ্যে বোঝাপড়াটা ভালো। আমরা এর আগেও আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে পদক জিতেছি।’

এর আগে একক ইভেন্টে কেবল হতাশাই উপহার দিয়েছেন বাংলাদেশের শাটলাররা। দ্বৈতে গতকাল কোয়ার্টার ফাইনালে কেউই জয়ের হাসি হাসতে পারেননি। মিশ্র দ্বৈতে জুমার-ঊর্মি ফুটলেন আশার আলো হয়ে। রুপা নিশ্চিত করে লক্ষ্য এবার সোনার পদক গলায় ঝুলানো।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাংলাদেশ প্রসঙ্গে বাজপেয়ির ‘সেই বক্তব্য’ সামনে আনলেন শশী থারুর

সাবেক নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ ও সাবেক মেয়রের বাড়িতে আগুন

ময়মনসিংহে যুবককে পিটিয়ে হত্যা: অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে মামলা

ভারতে তেল দিয়ে ফেরার পথে বিধ্বস্ত রুশ জাহাজ—প্রতিশোধের হুমকি পুতিনের

হাদির মৃত্যু ঘিরে নৈরাজ্য নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র: বিএনপি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত