Ajker Patrika

...আমি বোবা হয়ে গেছি!

রানা আব্বাস
আপডেট : ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১২: ১০
...আমি বোবা হয়ে গেছি!

১২ ম্যাচে ৪৫.৭৫ গড়ে ৩৬৬ রান, ৬.৮১ ইকোনমিতে ১৬ উইকেট—পরিসংখ্যানই বলছে, এবারের বিপিএলে নাসির হোসেন কতটা দুর্দান্ত ছিলেন। ব্যক্তিগত পারফরম্যান্স অসাধারণ হলেও তাঁর দল ঢাকা ডমিনেটরস পারেনি প্লে অফে উঠতে। তবু এই বিপিএল বিশেষ স্মরণীয় হয়ে থাকছে নাসিরের কাছে। গতকাল সন্ধ্যায় আজকের পত্রিকাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ঢাকা অধিনায়ক বললেন নিজের ফেরা, দলের ব্যর্থতাসহ অনেক কিছুই। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন রানা আব্বাস

প্রশ্ন: যত বিপিএল খেলেছেন, এটাই কি আপনার সেরা? 
নাসির হোসেন: বিপিএল খেলছি আট-নয় বছর, একটা কি দুটো মিস গেছে। সব মিলিয়ে বলব, এমন মৌসুম আগে কখনো যায়নি। এটার কারণও আছে। সব সময় তো খেলেছি ভালো ভালো দলে। এর মধ্যে চ্যাম্পিয়ন, রানার্সআপ হওয়ার অভিজ্ঞতাও আছে। যখন আপনি চ্যাম্পিয়ন দলে খেলবেন, তখন ওই সুযোগটা কম আসে। এবার একটা চ্যাম্পিয়ন দলে খেললে হয়তো ছয়-সাতে ব্যাটিং করতাম। সাতে ব্যাটিং করলে আমি কী পারফর্ম করতাম? বোলিংয়েও একই বিষয় হতো। মূল বোলাররা থাকে, বোলিংয়ের সুযোগও ওভাবে আসত না। এ বছর আমাদের দল ওভাবে ভালো করতে পারেনি বা সেভাবে বোলারও ছিল না। খেয়াল করবেন, অফ স্পিনার বলতে শুধু আমিই ছিলাম। এ কারণে সুযোগ বেশি এসেছে, আমি শুধু সেটি কাজে লাগিয়েছি। এমন নয় যে আমি দিন-রাত অনুশীলন করে খেলেছি, এমন নয়। আগে একটু সুযোগ কম পেয়েছি, কাজে ওভাবে লাগত না। 

প্রশ্ন: আপনার একটা লম্বা বিরতি পড়েছিল। আপনি কি চ্যালেঞ্জ অনুভব করেছিলেন যে দুর্দান্তভাবে আপনাকে ফিরতে হবে? 
নাসির: অনেক দিন পর বিপিএলে ফিরেছি, আমার মধ্যে একটা রোমাঞ্চ কাজ করছিল। এমন কিছুই ছিল না যে পারফর্ম করে ফাটায়ে ফেলব—সেটা ব্যাটিং কিংবা বোলিংয়ে। যদি প্রস্তুতির কথা বলেন, এ বছর প্রস্তুতি সবচেয়ে খারাপ ছিল। আমরা চার দিনের ম্যাচ খেলার কদিন পরই খেলেছি বিপিএল। বিপিএলে শুরুতে নেটে এমনও হয়েছে, অফ স্টাম্পের বাইরের বল ব্যাট এমনিই ছেড়ে দেওয়ার ভঙ্গিতে চলে যাচ্ছে! আমরা যারা চার দিনের ম্যাচ খেলে বিপিএল শুরু করেছি, তাদের প্রস্তুতি ভালো ছিল না। একজন পেশাদার ক্রিকেটার হিসেবে এটাকে অজুহাত হিসেবে দেখলে চলবে না। আপনাকে মানসিক প্রস্তুতি থাকতে হবে ভালো খেলার। 

প্রশ্ন: আপনি দুর্দান্ত খেললেও আপনার দলের পারফরম্যান্স বলার মতো নয়। একজন অধিনায়ককে তো দিন শেষে দলের পারফরম্যান্স দিয়েই মূল্যায়ন করা হয়। এটা নিয়ে কি একটু আফসোস কাজ করছে? 
নাসির: ক্রিকেট তো গলফ, টেনিস, অ্যাথলেটিকসের মতো একক খেলোয়াড়ের খেলা নয়। এটা দলীয় খেলা, মানে অনেকটা পরিবারের মতো। খেলোয়াড়দের জেলিং (মিশ্রণ) যত ভালো থাকবে, নিজেদের মধ্যে যত ভালো বোঝাপোড়া থাকবে, ফল তত ভালো হবে। মাঠের পারফরম্যান্স পরের কথা। দলটা তাঁরা (স্বত্বাধিকারী) শেষের দিকে করেছেন। এতে হয়েছে কী, যদি আমাকে অধিনায়ক হিসেবে আগেই চিন্তা করতেন এবং সেভাবে আলোচনা করতেন, কেমন দেশি-বিদেশি খেলোয়াড় নেব। তাসকিন-সৌম্য ছিল। এরকম সিনিয়র খেলোয়াড়দের যদি কথাও বলত, তাহলে আমরা কিছু ভালো পরামর্শ বা দিকনির্দেশনা দিতে পারতাম। কিন্তু এরকম হয়নি। ওনারা যেটা মনে করেছেন, সেটাই করেছেন। যেহেতু তাঁরা প্রথমবারের মতো এসেছেন, কিছু জায়গায় ভুল হয়েছে। 

এবারের বিপিএলে ১২ ম্যাচে ৩৬৬ রানের সঙ্গে বোলিংয়ে ১৬ উইকেট নিয়েছেন নাসির হোসেনপ্রশ্ন: টুর্নামেন্ট চলার সময় ঢাকাকে ঘিরে অনেক আলোচনাই হয়েছে। বিশেষ করে পারিশ্রমিকের ইস্যু নিয়ে। এসব কি নিজেদের স্বাভাবিক খেলাটা খেলতে বাধাগ্রস্ত করেছে? 
নাসির: এসব কোনো ডিস্টার্বই না। আপনি যখন মাঠে বা ২২ গজে যাবেন, তখন কে টাকা পেয়েছে বা কী হয়েছে, এসব কিছুই মাথায় থাকে না। তখন সব মনোযোগ বলটার দিকেই থাকে। কেউ যদি বলে, পারিশ্রমিক পাইনি—এসব কিছুই তখন গুরুত্বপূর্ণ নয়। আপনি যখন মাঠে নেমে যাবেন, তখন আর কিছুই আপনার মাথায় আসে না। খারাপ খেললে তখন এসব অজুহাত হিসেবেই আসে। কেউ যদি বলে খেলব নাকি টাকার চিন্তা করব, এসব তখন অজুহাত। যখন বল হাতে নিই বা ব্যাটিংয়ে নামি তখন দুনিয়ার কিছুই মনে থাকে না। 

প্রশ্ন: এবারের বিপিএলে অধিনায়ক হিসেবে কোন কাজটা সবচেয়ে কঠিন মনে হয়েছে? 
নাসির: দল তো ভালো করেনি। দল ভালো করলে সত্যি খুব ভালো লাগত। যদি আমরা সেমিফাইনালও (প্লে অফ) খেলতাম, ভালো হতো। চ্যালেঞ্জিং তো ছিলই, চেষ্টা করেছি জিততে। তবে অবশ্যই উপভোগ করেছি। দল তো অনেকটা পরিবারের মতো। যদি মন মরা হয়ে থাকেন, উপভোগ করা বন্ধ করে দেন, তাহলে তো ওভাবে ভালো খেলতে পারবেন না। প্রতিটি মানুষ একেকভাবে জীবন উপভোগ করে। আমরা একসঙ্গে প্রায় দেড় মাস ছিলাম। উপভোগের বিষয়গুলো বন্ধ করে দিলে তখন দেড় মাস দেড় বছরের মতো মনে হবে। খেলা আর ভালো লাগবে না। 

প্রশ্ন: মাঝে একটা আপনার বিরতি ছিল, এটাই কি ক্যারিয়ারের সবচেয়ে কঠিন সময় মনে হয়েছে? 
নাসির: কঠিন সময় তো অবশ্যই ছিল। গত বছর আমি বিপিএল খেলিনি। চোটে পড়েছিলাম। অনেকে হাবিজাবিও ভেবেছে আমাকে নিয়ে। পারিবারিকভাবেও কিছু সমস্যা ছিল। সব মিলিয়ে আমার কঠিন সময়ই গেছে। কিন্তু এটা বলার সুযোগ নেই যে এসব কারণে ভালো খেলতে পারছি না। তাহলে মিথ্যা বলা হবে। মাঠে যখন নামি, তখন এসব কিছুই মাথায় থাকে না। 

প্রশ্ন: এই কঠিন সময়ে নিজেকে উদ্বুদ্ধ বা তৈরি করেছেন কীভাবে? 
নাসির: এখানে ভালো খেললে জাতীয় দলে সুযোগ পাব, এটা ভেবে কখনোই ক্রিকেট খেলিনি। এবার চেয়েছি অধিনায়ক হিসেবে ভালো খেলতে, যেন দলের উপকার হয়, দল যেন জেতে। বলেকয়ে ভালো করতে পারবেন না। যখন কিছুর আশায় ভালো করতে চাইবেন, তখনই কাজটা কঠিন হয়ে যাবে। এখানে ভালো করলে জাতীয় দলে সুযোগ পাবেন, ওখানে ডাক পাবেন—যখন এটা মাথায় ঢুকিয়ে ফেলবেন, কাজ কঠিন হয়ে যাবে। 

আবারো জাতীয় দলে ফেরার আশা দেখেন নাসির হোসেন।প্রশ্ন: তবু যদি জিজ্ঞেস করি, বিপিএলে দুর্দান্ত অলরাউন্ড পারফরম্যান্সের পর বাংলাদেশ দলে ফেরার একটা আশা কি তৈরি হয়েছে মনে? 
নাসির: সব খেলোয়াড়েরই এই আশা, স্বপ্ন থাকেই। এমন নয়, আমার আশা বা ইচ্ছা নেই (জাতীয় দলে ফেরার)। কিন্তু এটা আমার হাতে নেই। আমার হাতে যেটা ছিল সে চেষ্টাই করেছি। আমার হাতে ১২টা ম্যাচ ছিল, ১২টিতেই চেষ্টা করেছি ভালো করার। কোনো ম্যাচে হয়েছে, কোনো ম্যাচে হয়নি। শতভাগ এফোর্ট দিয়ে ভালো করার বিষয়টি আমার হাতে। তবে জাতীয় দলে ফেরার বিষয়টি আমার হাতে নেই। ওটা নিয়ে এত চিন্তাও করতে চাই না। চিন্তা করা মানে সময় নষ্ট। 

প্রশ্ন: গত দুই-তিন বছরে আপনার জীবনে বেশ কিছু পরিবর্তন এসেছে। ব্যক্তিগত জীবনের এই পরিবর্তনের প্রভাব খেলায় কতটা পড়েছে? 
নাসির: বিষয়টা হচ্ছে, একটা সময় মানুষ আমাকে নিয়ে বলেছে, ও কত রিল্যাক্স, মাঠে শিস বাজায়, গান গায়, কত এনজয় করে খেলে বলেই পারফর্ম করে। আবার যখন ভালো খেলতে পারিনি, তখন বলেছে, ও খেলবে কী, মাঠেই তো সিরিয়াস না! গান গেয়ে বেড়ায়। হাসাহাসি, ফাজলামো করে বেড়ায়। আমি আসলে আগে যেমন ছিলাম, এখনো তেমনই আছি। 

প্রশ্ন: জীবনে কিছু পরিবর্তন তো এসেছেই, আপনি এখন সন্তানের বাবা...
নাসির: সে তো বটেই। এই যে আমার শরীর খারাপ, তবু সকালে টিম হোটেল থেকে বাসায় এসেছি শুধু বাচ্চাটাকে দেখতে। ওর সঙ্গে সময় কাটালাম, খেললাম। এখন (সন্ধ্যায়) যাচ্ছি রংপুরে। পরিবর্তন এতটুকুই। 

প্রশ্ন: আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের শুরুর তিন-চার বছর পরে আপনার এত উত্থান-পতন, এটা নিয়ে আফসোস কাজ করে না? 
নাসির: গাছে যেমন পানি দেবেন, যেমন পরিচর্যা করবেন, সেটা তেমনই ফল দেবে। গাছে সার-পানি দেবেন না, অথচ কচুগাছে খুঁজছেন আপেল! তাহলে তো সমস্যা। 

প্রশ্ন: জাতীয় দলের বাইরে পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা না পাওয়াটাই কি তবে মূল কারণ? 
নাসির: সুযোগ-সুবিধা আবার কী? এসবের কিছুই পাইনি। পাইনি বলতে, আমাদেরও কিছু সমস্যা আছে। ব্যক্তিগত কোচ নেই, এটা-ওটা নেই। জাতীয় দলের বাইরে চলে গেলে বিষয়টা পুরোই অন্যরকম হয়ে যায়। এমনই টিম বয়ের কথাই বলি, জাতীয় দলে থাকলে ওরা একভাবে দেখবে, না থাকলে আরেকভাবে। আর বাকি সব তো বাদই দিলাম। 

প্রশ্ন: চন্ডিকা হাথুরুসিংহে আসছেন, কী মনে হচ্ছে এবার, কেমন হতে পারেন তিনি? 
নাসির: তাঁর সময়েই আমি বাদ পড়েছি। তবে তাঁকে নিয়ে কোনো মন্তব্য নেই। বোবার কোনো শত্রু নেই। আমি বোবা হয়ে গেছি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

দক্ষিণ আফ্রিকাকে উড়িয়ে এগিয়ে গেল ভারত

ক্রীড়া ডেস্ক    
আপডেট : ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ০০: ৫৬
অভিষেক শর্মা ও শুবমান গিলের উদ্বোধনী জুটিতেই দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে জয়ের পথে অনেকটা এগিয়ে যায় ভারত। ছবি: ক্রিকইনফো
অভিষেক শর্মা ও শুবমান গিলের উদ্বোধনী জুটিতেই দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে জয়ের পথে অনেকটা এগিয়ে যায় ভারত। ছবি: ক্রিকইনফো

যেখানে শুরুর কথা বলার আগেই শেষ—ধর্মশালায় আজ ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকা তৃতীয় টি-টোয়েন্টি দেখে অনেকের এই গান মনে আসতেই পারে। দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটিং লাইনআপ তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ায় সেখানেই ম্যাচের ফল সম্পর্কে অনেকটা ধারণা পাওয়া যায়। ভারত ম্যাচটা এরপর জিতে গেল হেসেখেলেই।

ভারত, দক্ষিণ আফ্রিকা, ভারত—টি-টোয়েন্টি সিরিজে ম্যাচগুলোতে এভাবেই পর্যায়ক্রমে আসছে ফল। সমানে সমানে লড়াই হলেও ম্যাচগুলো হচ্ছে একপেশে। ৯ ডিসেম্বর সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ১০১ রানে হারিয়েছে ভারত। প্রোটিয়াদের ঘুরে দাঁড়াতেও বেশি সময় লাগেনি। ১১ ডিসেম্বর নিউ চন্ডীগড়ে ভারতকে ৫১ রানে হারিয়ে সমতায় ফেরেন প্রোটিয়ারা। আজ ধর্মশালার হিমাচল প্রদেশ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন স্টেডিয়ামে প্রোটিয়াদের বিপক্ষে ২৫ বল হাতে রেখে ৭ উইকেটের সহজ জয় পেয়েছে ভারত।

১১৮ রানের লক্ষ্যে নেমে শুরু থেকেই মারমুখী ব্যাটিং করতে থাকে ভারত। ৩২ বলে ৬০ রানের উদ্বোধনী জুটি গড়তে অবদান রাখেন শুবমান গিল ও অভিষেক শর্মা। ষষ্ঠ ওভারের দ্বিতীয় বলে অভিষেককে ফিরিয়ে বিস্ফোরক এই জুটি ভাঙেন করবিন বশ। ১৮ বলে তিনটি করে চার ও ছক্কায় ৩৫ রান করেন অভিষেক। বিস্ফোরক এই ওপেনার ফেরার পরও ভারতের জয় নিয়ে কোনো সংশয় তৈরি হয়নি। দ্বিতীয় উইকেটে ৩৮ বলে ৩২ রানের জুটি গড়েন গিল ও তিলক ভার্মা। ১২তম ওভারের চতুর্থ বলে গিলকে (২৮) বোল্ড করে জুটি ভাঙেন মার্কো ইয়ানসেন।

গিলের বিদায়ের পর অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদব ম্যাচটা প্রায় শেষ করেই এসেছিলেন। তবে ভারতের জয়ের জন্য যখন ৯ রান প্রয়োজন, তখন লুঙ্গি এনগিদির বলে ফেরেন সূর্যকুমার (১২)। তাতে ভারতের স্কোর হয়ে যায় ১৪.৪ ওভারে ৩ উইকেটে ১০৯ রান। তুলির শেষ আঁচড় এরপর দিয়েছেন শিবম দুবে। ১৬তম ওভারের চতুর্থ ও পঞ্চম বলে ওটনিল বার্টম্যানকে ছক্কা ও চার মেরে ভারতকে ৭ উইকেটের জয় এনে দেন দুবে।

টস হেরে আগে ব্যাটিং পাওয়া দক্ষিণ আফ্রিকা পুরো ২০ ওভার খেলে ১১৭ রানে গুটিয়ে গেছে। অধিনায়ক এইডেন মার্করামের ৪৬ বলে ৬১ রানের ইনিংস ছাড়া বলার মতো কিছু নেই প্রোটিয়াদের ইনিংসে। ভারতের আর্শদীপ সিং, হারশিত রানা, বরুণ চক্রবর্তী ও কুলদীপ যাদব নিয়েছেন দুটি করে উইকেট। একটি করে উইকেট পেয়েছেন শিবম দুবে ও হার্দিক পান্ডিয়া। ৪ ওভারে ১৩ রানে ২ উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরা হয়েছেন আর্শদীপ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

স্ত্রী, পড়াশোনা, বেতনসহ গুগলে শান্তকে নিয়ে মানুষ যা জানতে চান

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ০০: ৩৬
নাজমুল হোসেন শান্ত ও তাঁর স্ত্রী সাবরিনা রত্না। ছবি: ফেসবুক
নাজমুল হোসেন শান্ত ও তাঁর স্ত্রী সাবরিনা রত্না। ছবি: ফেসবুক

গুগল যেন আলাদিনের চেরাগ! যেখানে মুহূর্তে মেলে সব কিছুর উত্তর। গুগল সার্চ ইঞ্জিনে নিয়মিত তারকাদের কত কিছুই জানতে চান ব্যবহারকারীরা। ২০২৫ সালে গুগলে ভারতীয়দের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সার্চ করা হয়েছে কাকে, জানেন? ১৪ বছর বয়সী বৈভব সূর্যবংশী। তিনি পেছনে ফেলেছেন বিরাট কোহলির মতো বড় তারকাকে। বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনের তারকাদের নিয়েও গুগলে কত কিছু ‘সার্চ’ করা হয়।

‘নাজমুল হোসেন শান্ত’ লিখে ‘সার্চ’ করলে সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশনে (এসইও) কী কী সাজেস্ট করে, এরকম কিছু বিষয়ে আজকের পত্রিকাকে মজার উত্তর দিলেন বাংলাদেশ টেস্ট অধিনায়ক। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) আগে আর কোনো ম্যাচ না থাকায় শান্ত সপরিবারে ঘুরে এসেছেন মালয়েশিয়ায়। ঘোরাঘুরি করতে শান্তর কাছে সবচেয়ে পছন্দের মালদ্বীপ। ঘুরতে পছন্দ করেন নিজের শহর রাজশাহীতেও। খেতে পছন্দ করেন রাজশাহীর যেকোনো স্ট্রিট ফুড।

গুগল সার্চে তাঁর স্ত্রীকে নিয়ে মানুষের আগ্রহের প্রসঙ্গ আসতেই একটু যেন লাজুক হয়ে গেলেন। বাংলাদেশ টেস্ট অধিনায়ক বলেন, ‘আমার স্ত্রী রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী। পরিসংখ্যান বিভাগে পড়াশোনা করেন। আমরা প্রেম করে বিয়ে করেছি। আমাদের প্রায় সাড়ে চার-পাঁচ বছরের সম্পর্ক ছিল। এখন প্রায় চার-পাঁচ বছর সংসার করছি।’

শান্তর শিক্ষাগত যোগ্যতা লিখেও সার্চ করা হয়। এটির উত্তরে বাংলাদেশ টেস্ট অধিনায়ক বললেন, ‘রাজশাহী আদর্শ ডিগ্রি কলেজ থেকে আমি পড়াশোনা করছি। এখন আমি বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটির একজন স্টুডেন্ট। এখনো গ্রাজুয়েশন কমপ্লিট হয়নি। পড়ছি মার্কেটিং নিয়ে।’

শান্তর বেতন নিয়েও গুগলে সার্চ করা হয় নিয়মিত। এ বিষয়ে তাঁর উত্তর, ‘বিসিবি যখন প্রতিবছর সেন্ট্রাল কন্ট্র্যাক্টের তালিকা প্রকাশ করে, তখন তো এটা উন্মুক্ত হয়ে যায়। এটা তো সবার জানার কথা।’ একবার সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ হয়েছিল শান্তর বেতন ১০ লাখ টাকা ছাড়িয়ে গেছে। সেটি নিয়ে শান্তর রসাত্মক জবাব, ‘না, একরকম চলে যাচ্ছে। সংসার আলহামদুলিল্লাহ ভালোমতোই চলে যাচ্ছে।’

সেঞ্চুরির পর হেলমেটটা খুলে শূন্যে একটা লাফ দেন শান্ত। লাফ দেওয়ার পর ডাগআউটের উদ্দেশে চুমু ছুড়ে মারেন তিনি। কার উদ্দেশে তাঁর এই চুমু, সে উত্তরে বাংলাদেশ টেস্ট অধিনায়ক বলেন, ‘কাউকে উৎসর্গ করা না। এটা শুধু সে সময় চলে এসেছিল। প্রথম আমার মনে হয় যখন ওয়ানডে সেঞ্চুরি করেছিলাম, তখন এটা আপনাআপনি হয়ে গিয়েছিল। ড্রেসিংরুমে যাঁরা ছিলেন, প্রত্যেক ক্রিকেটার, সাপোর্টিং স্টাফ সবাই যেভাবে সহায়তা করেছিলেন, এটা ড্রেসিংরুমের উদ্দেশেই আসলে করা। আলাদা কোনো পরিকল্পনা করে করা ছিল না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মেসিকে পাওয়া পুরো ভারতের জন্য স্মরণীয় এক মুহূর্ত: শচীন

ক্রীড়া ডেস্ক    
আপডেট : ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ২২: ২৯
মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়ে অনুষ্ঠানে লিওনেল মেসির বরণ অনুষ্ঠানে ছিলেন শচীন টেন্ডুলকার। ছবি: সংগৃহীত
মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়ে অনুষ্ঠানে লিওনেল মেসির বরণ অনুষ্ঠানে ছিলেন শচীন টেন্ডুলকার। ছবি: সংগৃহীত

মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামের আজকের সন্ধ্যাটা ক্রীড়াপ্রেমীদের জন্য মনে রাখার মতোই। সুনীল ছেত্রী, শচীন টেন্ডুলকার, লিওনেল মেসি—এই তিন কিংবদন্তিকে একসঙ্গে দেখতে পেরেছেন ক্রীড়াপ্রেমীরা। আর্জেন্টাইন তারকা ফুটবলার মাঠে ঢুকতেই ‘মেসি, মেসি’ শ্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে পুরো ওয়াংখেড়ে।

মেসিকে আজ উৎসবমুখর পরিবেশে শচীন তাঁর ১০ নম্বর জার্সি উপহার দিয়েছেন। খেলোয়াড়ি জীবনে শচীন এই ১০ নম্বর জার্সি পড়ে খেলেছেন। মেসিও তাঁর ক্যারিয়ারে বার্সেলোনা, আর্জেন্টিনা, ইন্টার মায়ামির হয়ে ১০ নম্বর জার্সি পড়ে খেলেছেন। দুই ‘নাম্বার টেনে’র এই জার্সি বিনিময়ের ছবি সামাজিকমাধ্যমে এরই মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে। আর্জেন্টাইন বিশ্বজয়ী ফরোয়ার্ডকে নিয়ে শচীন বলেন, ‘আজ তিন জনকে এক সঙ্গে পাওয়া মুম্বাইবাসী ও পুরো ভারতবাসীর জন্য সত্যিকার অর্থেই এক স্বর্ণালী মুহূর্ত। আপনারা সবাই যেভাবে তিন গ্রেটকে বরণ করলেন, সত্যিই অসাধারণ।’

ক্যারিয়ারে কত যে পুরস্কার জিতেছেন, সেটা মেসি গুনে হয়তো শেষ করতে পারবেন না। এমএলএস কাপ জিতে ক্যারিয়ারে ৪৭তম শিরোপা জিতেছেন তিনি। ব্যালন ডি’অর জিতেছেন আটবার। ২০২২ সালে কাতার বিশ্বকাপ জিতে আজন্মলালিত স্বপ্ন পূরণ হয়েছে তাঁর। মেসির সম্পর্কে বলতে গিয়ে শচীন যেন ভাষা হারিয়ে ফেলেছেন। ভারতীয় ব্যাটিং কিংবদন্তি বলেন, ‘লিওর প্রসঙ্গ এলে যদি তার খেলা সম্পর্কে বলি, এটা সঠিক প্ল্যাটফর্ম নয়। তার সম্পর্কে কী বলার আছে? সে সবকিছু অর্জন করেছে। তার আত্মনিবেদন ও খেলার প্রতি দৃঢ় মানসিকতার ব্যাপারটাকে সত্যি আমরা অনেক প্রশংসা করি।’

২০১১ সালে এই ওয়াংখেড়েতেই শচীন জিতেছিলেন পরম আরাধ্য বিশ্বকাপ। শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে ওয়ানডে বিশ্বকাপ জয়ের আনন্দ শুধু মুম্বাইয়েই নয়, ছড়িয়ে পড়েছিল পুরো ভারতজুড়েই। শচীনকে কাঁধে তুলে ওয়াংখেড়ে ঘুরেছিলেন বিরাট কোহলি-মহেন্দ্র সিং ধোনিরা। আজ মেসিবরণ অনুষ্ঠানে শচীন স্মরণ করেছেন ১৪ বছর আগের সেই পুরোনো স্মৃতি। ভারতীয় ব্যাটিং কিংবদন্তি বলেন, ‘আমার এখানে মনে রাখার মতো অনেক মুহূর্ত রয়েছে। মুম্বাইকে আমরা স্বপ্নের শহর বলি। এই ভেন্যুতে অনেকের স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। আপনাদের সমর্থন ছাড়া ২০১১ সালে এমন স্বর্ণালী মুহূর্ত আমরা পেতাম না।’

কলকাতায় গতকাল নিজের ৭০ ফুট উচ্চতার ভাস্কর্য উন্মোচন করেছেন তিনি। তবে সল্টলেকের যুবভারতী স্টেডিয়ামে আয়োজন করতে গিয়ে হ-য-ব-র-ল অবস্থা হয়ে গেছে। রাগে-ক্ষোভে চেয়ার ছুড়ে মেরেছেন ভক্ত-সমর্থকেরা। কলকাতার বাজে অভিজ্ঞতা সঙ্গে করে গতকাল দুপুরে হায়দরাবাদের বিমানে চড়েন মেসি। একটি প্রদর্শনী ম্যাচ শেষে মাঠে নামেন মেসি এবং তাঁর দুই সতীর্থ রদ্রিগো দি পল ও লুইস সুয়ারেজ। সঙ্গে ছিলেন তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী রেবন্ত রেড্ডি। মেসিকে পেয়ে উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়ে গোটা গ্যালারি। হাত নেড়ে ভক্তদের অভিবাদনের জবাব দেন এই ফরোয়ার্ড। মাঠে রেবন্ত এবং শিশুদের সঙ্গে পাসিং খেলার সময় মেসি কয়েকবার বল গ্যালারিতে পাঠান। দর্শকদের আনন্দ সেটা অনেকগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। আজ তাঁকে রাজকীয়ভাবে বরণ করা হয়েছে ওয়াংখেড়েতে। মেসির সঙ্গে ছিলেন রদ্রিগো দি পল ও লুইস সুয়ারেজ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

পাকিস্তানকে উড়িয়ে সবার আগে সেমিফাইনালে ভারত

ক্রীড়া ডেস্ক    
পাকিস্তানকে ৯০ রানে হারিয়ে সেমিফাইনালে ভারত। ছবি: ক্রিকইনফো
পাকিস্তানকে ৯০ রানে হারিয়ে সেমিফাইনালে ভারত। ছবি: ক্রিকইনফো

এশিয়া কাপ, নারী ওয়ানডে বিশ্বকাপ, রাইজিং স্টার্স এশিয়া কাপ, অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপ—এ বছর মেজর টুর্নামেন্টগুলোতে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচগুলোতে একটা দৃশ্য খুবই পরিচিত। টসের সময় কোনো অধিনায়কই অপরজনের সঙ্গে করমর্দন করবেন না। এমনকি ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ নিয়ে যে ‘হাইপ’ থাকে, মাঠে ছিটেফোঁটাও দেখা যায় না।

বাংলাদেশ সময় আজ নির্ধারিত সকাল ১১টায় শুরু হওয়ার কথা থাকলেও বৃষ্টির বাগড়ায় ভারত-পাকিস্তান অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপের ম্যাচ এক ঘণ্টা দেরিতে শুরু হয়েছে। ম্যাচের দৈর্ঘ্য ১ ওভার কমানো হয়েছে। দুবাইয়ে আইসিসি ক্রিকেট একাডেমি মাঠে ৪৯ ওভারের ম্যাচে ভারত ৯০ রানের উড়ন্ত জয় পেয়েছে। টানা দুই জয়ে যুব এশিয়া কাপের সেমিফাইনাল নিশ্চিত করেছে দলটি।

৪৯ ওভারে ২৪১ রানের লক্ষ্যে নেমে ১৩.১ ওভারে ৪ উইকেটে ৩০ রানে পরিণত হয় পাকিস্তান। পঞ্চম উইকেটে ৬৫ বলে ৪৭ রানের জুটি গড়তে অবদান রাখেন ফারহান ইউসাফ ও হুজাইফা হাসান। পাকিস্তানের ইনিংসে এটাই সর্বোচ্চ রানের জুটি। ২৪তম ওভারের শেষ বলে অধিনায়ক ফারহানকে (২৩) ফিরিয়ে জুটি ভাঙেন বৈভব সূর্যবংশী।

একপ্রান্ত আগলে রাখা হুজাইফা সতীর্থদের কাছ থেকে কোনো সমর্থন পাননি। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকা পাকিস্তান ৪১.২ ওভারে ১৫০ রানে গুটিয়ে গেছে। ইনিংস সর্বোচ্চ ৭০ রান করেছেন হুজাইফা। ৮৩ বলের ইনিংসে ৯ চার ও ২ ছক্কা মেরেছেন। ১২ রানে পাকিস্তান হারিয়েছে শেষ ৩ উইকেট। ৪২তম ওভারের দ্বিতীয় বলে আলী রাজাকে (৬) ফিরিয়ে পাকিস্তানের ইনিংসের ইতি টানেন কিশান সিং। কিশান পেয়েছেন ২ উইকেট। তিনটি করে উইকেট নিয়েছেন দীপেশ দেবেন্দ্রন ও কনিষ্ক চৌহান।

টস হেরে আগে ব্যাটিং পেলেও ভারত ৪৯ ওভার খেলতে পারেনি। ৪৬.১ ওভারে ২৪০ রানে গুটিয়ে গেছে। ইনিংস সর্বোচ্চ ৮৫ রান করেন অ্যারন জর্জ। ৮৮ বলের ইনিংসে মেরেছেন ১২ চার ও ১ ছক্কা। অলরাউন্ড পারফরম্যান্সে ম্যাচসেরা হয়েছেন চৌহান। ৪৬ বলে ২ চার ও ৩ ছক্কায় করেছেন ৪৬ রান। বোলিংয়ে ১০ ওভারে ৩৩ রানে নিয়েছেন ৩ উইকেট।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত