আজকের পত্রিকা ডেস্ক

প্রাকৃতিক দুর্যোগের অন্যতম মারাত্মক রূপ সুনামি। পৃথিবীর বিভিন্ন উপকূলীয় অঞ্চলে ব্যাপক ক্ষতিসাধন করে এই দুর্যোগ। সমুদ্র থেকে উঠে আসা বিশাল ঢেউগুলোর কারণে উপকূলবর্তী এলাকায় প্রাণহানিসহ অর্থনৈতিক ও সামাজিক ক্ষয়ক্ষতি হয়। সুনামির পূর্বাভাস ও সতর্কতার মাধ্যমে ক্ষয়ক্ষতি কমানোর চেষ্টা করা হয়। তবে একে সামাল দেওয়া অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং।
সুনামি কী
সুনামি হলো সমুদ্রের ঢেউয়ের একটি সিরিজ। সাধারণত সমুদ্রের তলদেশে ভূমিকম্প, আগ্নেয়গিরির বিস্ফোরণ বা ভূমিধসের কারণে আকস্মিকভাবে বিশাল মাত্রার জলরাশির বিশৃঙ্খলার ফলে সুনামি সৃষ্ট হয়। বিশাল শক্তি এবং দীর্ঘ তরঙ্গদৈর্ঘ্যের বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন সুনামির ঢেউগুলো প্রতি ঘণ্টায় প্রায় ৫০০ মাইল (প্রতি ঘণ্টায় প্রায় ৮০০ কিলোমিটার) গতি নিয়ে মহাসাগর পার হতে পারে, যা একটি জেট বিমান চলাচলের গতির সমান।
যখন সুনামি উপকূলে পৌঁছে, তখন এই বিধ্বংসী ঢেউগুলো সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১০০ ফুট (৩০ মিটার) পর্যন্ত উচ্চতায় পৌঁছাতে পারে। তবে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ উচ্চতার রেকর্ডকৃত সুনামি হলো—১৯৫৮ সালে আলাস্কার লিটুয়া বে-তে সৃষ্ট মেগাসুনামি। এই সুনামির উচ্চতা ছিল ১ হাজার ৭১৯ ফুট (৫২৪ মিটার)।
‘সুনামি’ শব্দটি জাপানি ভাষা থেকে এসেছে। জাপানি ‘সু’ অর্থ ‘বন্দর’ বা ‘পোতাশ্রয়’ এবং ‘নামি’ অর্থ ‘ঢেউ’। সাধারণ সমুদ্রের ঢেউ বাতাসের কারণে হয় না। চাঁদ ও সূর্যের মহাকর্ষীয় আকর্ষণের ফলে সৃষ্ট জোয়ার-ভাটার কারণে হয়। তবে সুনামির ঢেউ ভিন্ন রকম। সুনামি সাধারণত প্রচুর পানির স্থানান্তরের ফলে সৃষ্টি হয় এবং এর তরঙ্গদৈর্ঘ্য অনেক বেশি হয়।
সুনামির প্রধান কারণসমূহ তুলে ধরা হলো—
সমুদ্রের তলদেশে ভূমিকম্প: সবচেয়ে সাধারণ কারণ হলো সমুদ্রের তলদেশে টেকটোনিক প্লেটের হঠাৎ স্থানান্তর। এই ক্রিয়াকলাপের ফলে সমুদ্রের বিশাল জলরাশি স্থানচ্যুত হয়ে দ্রুতগতির ঢেউ সৃষ্টি হয়, যা মহাসাগর পেরিয়ে উপকূলে আঘাত হানে। এর অন্যতম উদাহরণ হলো—২০০৪ সালের ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরের ভূমিকম্প। ইতিহাসের অন্যতম প্রাণঘাতী প্রাকৃতিক দুর্যোগে পরিণত হয়েছিল এই সুনামি এবং ভারত মহাসাগরের অনেক দেশকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করেছিল।
আগ্নেয়গিরির বিস্ফোরণ: সমুদ্রপৃষ্ঠের কাছাকাছি বা এর নিচে আগ্নেয়গিরির বিস্ফোরণ বা ধসের ফলে সুনামি সৃষ্টি হতে পারে। ১৮৮৩ সালে ক্রাকাতোয়া আগ্নেয়গিরির বিস্ফোরণ এবং ২০১৮ সালে অনাক ক্রাকাতোয়া ধসের কারণে ইন্দোনেশিয়ায় শক্তিশালী সুনামি তৈরি হয়েছিল।
সমুদ্রের তলদেশে ভূমিধস: ভূমিকম্প বা আগ্নেয়গিরির বিস্ফোরণের কারণে সমুদ্রের তলদেশে ভূমিধস হতে পারে। বিষয়টি কোনো বড় পাথর জলাশয়ে ফেলার মতো। উদাহরণস্বরূপ, ১৯৯৮ সালে পাপুয়া নিউ গিনিতে ভূমিকম্পের কারণে সমুদ্রের তলদেশে ভূমিধস হয়। এর ফলে সৃষ্ট সুনামি উপকূলবর্তী জনবসতির ব্যাপক ক্ষতি করে।
মহাকাশ থেকে আসা বস্তু ও অন্যান্য বিরল কারণ
বড় কোনো মহাজাগতিক বস্তু মহাসাগরে এসে পড়লে তাৎক্ষণিকভাবে বিপুল পানি স্থানচ্যুত হয়। এর ফলে সমুদ্রে বিশাল ঢেউ তৈরি হতে পারে, যা সুনামিতে রূপ নেয়। এই ঢেউগুলো শুধু আশপাশের অঞ্চলেই নয়, মহাসাগর পেরিয়ে অনেক দূরের উপকূলেও ভয়াবহ প্রভাব ফেলতে পারে।
এ ছাড়া মানবসৃষ্ট কারণে সমুদ্রের তলদেশে কোনো বড় বিস্ফোরণ ঘটালে সুনামি হতে পারে। যেমন: কোনো পরীক্ষামূলক বোমার বিস্ফোরণ ঘটালে।
সুনামির পদার্থবিজ্ঞান
সুনামির গতির এত বেশি হয় যে একটি পুরো মহাসাগর অতিক্রম করতে তাদের এক দিনের কম সময় লাগে। এগুলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্য (একটি ঢেউয়ের চূড়া থেকে পরবর্তী চূড়া পর্যন্ত দূরত্ব) সাধারণত অনেক বড় হয়। সুনামির তরঙ্গদৈর্ঘ্য ২০০ কিলোমিটার (প্রায় ১২৫ মাইল) পর্যন্ত হতে পারে। ভূমিকম্প বা আগ্নেয়গিরির বিস্ফোরণের কারণে পৃথিবীর ভূত্বক উদ্ভূত শক্তি থেকে সরাসরি পানিতে স্থানান্তরিত হয়। তাই সুনামি এত গতি পায়।
গভীর পানিতে
মহাসাগরের মাঝখানে সুনামি ঢেউগুলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্য অনেক দীর্ঘ হয় এবং ঢেউয়ের উচ্চতা এক মিটার বা তারও কম থাকে। এ কারণে এই ঢেউগুলো জাহাজের নিচ দিয়ে সহজে চলে যায় এবং আকাশ থেকেও সহজে দেখা যায় না। গভীর পানিতে সুনামির গতি নির্ধারিত হয় √gd সূত্র অনুসারে, যেখানে g হলো মাধ্যাকর্ষণ বল এবং d হলো পানির গভীরতা। এই সূত্র অনুযায়ী, যত গভীর পানি, ঢেউয়ের গতি তত বেশি।
অগভীর পানিতে
যখন সুনামি উপকূলের দিকে আসে এবং অগভীর পানিতে প্রবেশ করে, তখন সাগরের তলদেশের সঙ্গে ঘর্ষণের কারণে ঢেউয়ের গতি কমে যায়। এর বিপরীতে, তরঙ্গদৈর্ঘ্য কমে গিয়ে ঢেউয়ের উচ্চতা অনেক বেড়ে যায়। এই পরিবর্তনের ফলে উপকূলে বিশাল ও ধ্বংসাত্মক ঢেউ উপকূলে আঘাত হানে।
উপকূলে সুনামির প্রভাব
গভীর পানিতে সুনামি ঢেউগুলো সাধারণত খুবই দীর্ঘ ও নিম্ন উচ্চতার হয়, তাই সাগরে এগুলো অনেক সময় চোখে পড়ে না। তবে উপকূলের কাছাকাছি এলে, সমুদ্রের তলদেশ ক্রমে উঁচু হওয়ায় ঢেউগুলো ধীরে ধীরে গতি হারায় এবং সংকুচিত হয়ে ওঠে। ফলে ঢেউয়ের উচ্চতা হঠাৎ অনেক বেড়ে যায় এবং তা বিশাল প্রাচীরের মতো উপকূলে আঘাত হানে, যা ব্যাপক প্লাবন ও ধ্বংসযজ্ঞ সৃষ্টি করে।
ভূপ্রকৃতি ও অবকাঠামোর উপর প্রভাব
সুনামি উপকূলে আঘাত হানলে তা ব্যাপক ভূমিক্ষয় ঘটাতে পারে, উপকূলীয় জীববৈচিত্র্য ধ্বংস করে এবং স্থায়ীভাবে ভৌগলিক দৃশ্যপট পরিবর্তন করে দেয়। এই ঢেউয়ের কারণে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাস ভবন, সেতু, রাস্তা ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো ধ্বংস করে ফেলে। এ ছাড়া সুনামি সমুদ্র তলদেশ থেকে মাটি, ধ্বংসাবশেষ ও লবণাক্ত পানি তুলে এনে জমিতে ছড়িয়ে দেয়, যা সুপেয় পানির উৎস ও কৃষিজমিকে দূষিত করে তোলে।
ইতিহাসের ভয়াবহ কিছু সুনামি
২০০৪ সালের ভারত মহাসাগরের সুনামি: সমুদ্রের তলদেশে ইতিহাসের অন্যতম বড় ভূমিকম্পের ফলে সৃষ্টি হওয়া এই সুনামি ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা, ভারতসহ বহু দেশে আঘাত হানে। এতে ২ লাখ ৩০ হাজারের বেশি মানুষ মারা যায় এবং ঢেউয়ের উচ্চতা ছিল প্রায় ৩০ মিটার।
২০১১ সালের জাপানের তোহোকু ভূমিকম্প ও সুনামি: ৯ মাত্রার ভূমিকম্পের ফলে সৃষ্টি হওয়া সুনামি কিছু এলাকায় ৪০ মিটার উচ্চতায় পৌঁছায়। এটি ব্যাপক প্রাণহানি ঘটায় এবং ফুকুশিমা পারমাণবিক দুর্ঘটনার সূচনা করে।
১৭৫৫ সালের লিসবন ভূমিকম্প ও সুনামি: ৮ দশমিক ৫-৯ মাত্রার ভূমিকম্পের পর সৃষ্ট সুনামি পর্তুগাল, উত্তর আফ্রিকা ও ক্যারিবিয়ান অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে। এতে লিসবনের বিশাল অংশ ধ্বংস হয়ে যায়।
তথ্যসূত্র: ইন্টারেস্টিং ইঞ্জিনিয়ারিং

প্রাকৃতিক দুর্যোগের অন্যতম মারাত্মক রূপ সুনামি। পৃথিবীর বিভিন্ন উপকূলীয় অঞ্চলে ব্যাপক ক্ষতিসাধন করে এই দুর্যোগ। সমুদ্র থেকে উঠে আসা বিশাল ঢেউগুলোর কারণে উপকূলবর্তী এলাকায় প্রাণহানিসহ অর্থনৈতিক ও সামাজিক ক্ষয়ক্ষতি হয়। সুনামির পূর্বাভাস ও সতর্কতার মাধ্যমে ক্ষয়ক্ষতি কমানোর চেষ্টা করা হয়। তবে একে সামাল দেওয়া অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং।
সুনামি কী
সুনামি হলো সমুদ্রের ঢেউয়ের একটি সিরিজ। সাধারণত সমুদ্রের তলদেশে ভূমিকম্প, আগ্নেয়গিরির বিস্ফোরণ বা ভূমিধসের কারণে আকস্মিকভাবে বিশাল মাত্রার জলরাশির বিশৃঙ্খলার ফলে সুনামি সৃষ্ট হয়। বিশাল শক্তি এবং দীর্ঘ তরঙ্গদৈর্ঘ্যের বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন সুনামির ঢেউগুলো প্রতি ঘণ্টায় প্রায় ৫০০ মাইল (প্রতি ঘণ্টায় প্রায় ৮০০ কিলোমিটার) গতি নিয়ে মহাসাগর পার হতে পারে, যা একটি জেট বিমান চলাচলের গতির সমান।
যখন সুনামি উপকূলে পৌঁছে, তখন এই বিধ্বংসী ঢেউগুলো সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১০০ ফুট (৩০ মিটার) পর্যন্ত উচ্চতায় পৌঁছাতে পারে। তবে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ উচ্চতার রেকর্ডকৃত সুনামি হলো—১৯৫৮ সালে আলাস্কার লিটুয়া বে-তে সৃষ্ট মেগাসুনামি। এই সুনামির উচ্চতা ছিল ১ হাজার ৭১৯ ফুট (৫২৪ মিটার)।
‘সুনামি’ শব্দটি জাপানি ভাষা থেকে এসেছে। জাপানি ‘সু’ অর্থ ‘বন্দর’ বা ‘পোতাশ্রয়’ এবং ‘নামি’ অর্থ ‘ঢেউ’। সাধারণ সমুদ্রের ঢেউ বাতাসের কারণে হয় না। চাঁদ ও সূর্যের মহাকর্ষীয় আকর্ষণের ফলে সৃষ্ট জোয়ার-ভাটার কারণে হয়। তবে সুনামির ঢেউ ভিন্ন রকম। সুনামি সাধারণত প্রচুর পানির স্থানান্তরের ফলে সৃষ্টি হয় এবং এর তরঙ্গদৈর্ঘ্য অনেক বেশি হয়।
সুনামির প্রধান কারণসমূহ তুলে ধরা হলো—
সমুদ্রের তলদেশে ভূমিকম্প: সবচেয়ে সাধারণ কারণ হলো সমুদ্রের তলদেশে টেকটোনিক প্লেটের হঠাৎ স্থানান্তর। এই ক্রিয়াকলাপের ফলে সমুদ্রের বিশাল জলরাশি স্থানচ্যুত হয়ে দ্রুতগতির ঢেউ সৃষ্টি হয়, যা মহাসাগর পেরিয়ে উপকূলে আঘাত হানে। এর অন্যতম উদাহরণ হলো—২০০৪ সালের ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরের ভূমিকম্প। ইতিহাসের অন্যতম প্রাণঘাতী প্রাকৃতিক দুর্যোগে পরিণত হয়েছিল এই সুনামি এবং ভারত মহাসাগরের অনেক দেশকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করেছিল।
আগ্নেয়গিরির বিস্ফোরণ: সমুদ্রপৃষ্ঠের কাছাকাছি বা এর নিচে আগ্নেয়গিরির বিস্ফোরণ বা ধসের ফলে সুনামি সৃষ্টি হতে পারে। ১৮৮৩ সালে ক্রাকাতোয়া আগ্নেয়গিরির বিস্ফোরণ এবং ২০১৮ সালে অনাক ক্রাকাতোয়া ধসের কারণে ইন্দোনেশিয়ায় শক্তিশালী সুনামি তৈরি হয়েছিল।
সমুদ্রের তলদেশে ভূমিধস: ভূমিকম্প বা আগ্নেয়গিরির বিস্ফোরণের কারণে সমুদ্রের তলদেশে ভূমিধস হতে পারে। বিষয়টি কোনো বড় পাথর জলাশয়ে ফেলার মতো। উদাহরণস্বরূপ, ১৯৯৮ সালে পাপুয়া নিউ গিনিতে ভূমিকম্পের কারণে সমুদ্রের তলদেশে ভূমিধস হয়। এর ফলে সৃষ্ট সুনামি উপকূলবর্তী জনবসতির ব্যাপক ক্ষতি করে।
মহাকাশ থেকে আসা বস্তু ও অন্যান্য বিরল কারণ
বড় কোনো মহাজাগতিক বস্তু মহাসাগরে এসে পড়লে তাৎক্ষণিকভাবে বিপুল পানি স্থানচ্যুত হয়। এর ফলে সমুদ্রে বিশাল ঢেউ তৈরি হতে পারে, যা সুনামিতে রূপ নেয়। এই ঢেউগুলো শুধু আশপাশের অঞ্চলেই নয়, মহাসাগর পেরিয়ে অনেক দূরের উপকূলেও ভয়াবহ প্রভাব ফেলতে পারে।
এ ছাড়া মানবসৃষ্ট কারণে সমুদ্রের তলদেশে কোনো বড় বিস্ফোরণ ঘটালে সুনামি হতে পারে। যেমন: কোনো পরীক্ষামূলক বোমার বিস্ফোরণ ঘটালে।
সুনামির পদার্থবিজ্ঞান
সুনামির গতির এত বেশি হয় যে একটি পুরো মহাসাগর অতিক্রম করতে তাদের এক দিনের কম সময় লাগে। এগুলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্য (একটি ঢেউয়ের চূড়া থেকে পরবর্তী চূড়া পর্যন্ত দূরত্ব) সাধারণত অনেক বড় হয়। সুনামির তরঙ্গদৈর্ঘ্য ২০০ কিলোমিটার (প্রায় ১২৫ মাইল) পর্যন্ত হতে পারে। ভূমিকম্প বা আগ্নেয়গিরির বিস্ফোরণের কারণে পৃথিবীর ভূত্বক উদ্ভূত শক্তি থেকে সরাসরি পানিতে স্থানান্তরিত হয়। তাই সুনামি এত গতি পায়।
গভীর পানিতে
মহাসাগরের মাঝখানে সুনামি ঢেউগুলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্য অনেক দীর্ঘ হয় এবং ঢেউয়ের উচ্চতা এক মিটার বা তারও কম থাকে। এ কারণে এই ঢেউগুলো জাহাজের নিচ দিয়ে সহজে চলে যায় এবং আকাশ থেকেও সহজে দেখা যায় না। গভীর পানিতে সুনামির গতি নির্ধারিত হয় √gd সূত্র অনুসারে, যেখানে g হলো মাধ্যাকর্ষণ বল এবং d হলো পানির গভীরতা। এই সূত্র অনুযায়ী, যত গভীর পানি, ঢেউয়ের গতি তত বেশি।
অগভীর পানিতে
যখন সুনামি উপকূলের দিকে আসে এবং অগভীর পানিতে প্রবেশ করে, তখন সাগরের তলদেশের সঙ্গে ঘর্ষণের কারণে ঢেউয়ের গতি কমে যায়। এর বিপরীতে, তরঙ্গদৈর্ঘ্য কমে গিয়ে ঢেউয়ের উচ্চতা অনেক বেড়ে যায়। এই পরিবর্তনের ফলে উপকূলে বিশাল ও ধ্বংসাত্মক ঢেউ উপকূলে আঘাত হানে।
উপকূলে সুনামির প্রভাব
গভীর পানিতে সুনামি ঢেউগুলো সাধারণত খুবই দীর্ঘ ও নিম্ন উচ্চতার হয়, তাই সাগরে এগুলো অনেক সময় চোখে পড়ে না। তবে উপকূলের কাছাকাছি এলে, সমুদ্রের তলদেশ ক্রমে উঁচু হওয়ায় ঢেউগুলো ধীরে ধীরে গতি হারায় এবং সংকুচিত হয়ে ওঠে। ফলে ঢেউয়ের উচ্চতা হঠাৎ অনেক বেড়ে যায় এবং তা বিশাল প্রাচীরের মতো উপকূলে আঘাত হানে, যা ব্যাপক প্লাবন ও ধ্বংসযজ্ঞ সৃষ্টি করে।
ভূপ্রকৃতি ও অবকাঠামোর উপর প্রভাব
সুনামি উপকূলে আঘাত হানলে তা ব্যাপক ভূমিক্ষয় ঘটাতে পারে, উপকূলীয় জীববৈচিত্র্য ধ্বংস করে এবং স্থায়ীভাবে ভৌগলিক দৃশ্যপট পরিবর্তন করে দেয়। এই ঢেউয়ের কারণে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাস ভবন, সেতু, রাস্তা ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো ধ্বংস করে ফেলে। এ ছাড়া সুনামি সমুদ্র তলদেশ থেকে মাটি, ধ্বংসাবশেষ ও লবণাক্ত পানি তুলে এনে জমিতে ছড়িয়ে দেয়, যা সুপেয় পানির উৎস ও কৃষিজমিকে দূষিত করে তোলে।
ইতিহাসের ভয়াবহ কিছু সুনামি
২০০৪ সালের ভারত মহাসাগরের সুনামি: সমুদ্রের তলদেশে ইতিহাসের অন্যতম বড় ভূমিকম্পের ফলে সৃষ্টি হওয়া এই সুনামি ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা, ভারতসহ বহু দেশে আঘাত হানে। এতে ২ লাখ ৩০ হাজারের বেশি মানুষ মারা যায় এবং ঢেউয়ের উচ্চতা ছিল প্রায় ৩০ মিটার।
২০১১ সালের জাপানের তোহোকু ভূমিকম্প ও সুনামি: ৯ মাত্রার ভূমিকম্পের ফলে সৃষ্টি হওয়া সুনামি কিছু এলাকায় ৪০ মিটার উচ্চতায় পৌঁছায়। এটি ব্যাপক প্রাণহানি ঘটায় এবং ফুকুশিমা পারমাণবিক দুর্ঘটনার সূচনা করে।
১৭৫৫ সালের লিসবন ভূমিকম্প ও সুনামি: ৮ দশমিক ৫-৯ মাত্রার ভূমিকম্পের পর সৃষ্ট সুনামি পর্তুগাল, উত্তর আফ্রিকা ও ক্যারিবিয়ান অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে। এতে লিসবনের বিশাল অংশ ধ্বংস হয়ে যায়।
তথ্যসূত্র: ইন্টারেস্টিং ইঞ্জিনিয়ারিং

২০২১ সালে নাসার পাঠানো পারসিভিয়ারেন্স রোভার মঙ্গল গ্রহের জেজেরো ক্রেটারে অবতরণ করে। জীবনের সম্ভাব্য চিহ্ন অনুসন্ধানের পাশাপাশি গত চার বছর ধরে মঙ্গল গ্রহের পরিবেশগত বৈশিষ্ট্যও পরীক্ষা করছে এই রোভার। এটিতে সংযুক্ত সুপারক্যাম যন্ত্রের অডিও ও ইলেকট্রোম্যাগনেটিক রেকর্ডিং...
৬ দিন আগে
নতুন এক গবেষণায় উঠে এসেছে, মানুষের মস্তিষ্ক মোট পাঁচটি স্বতন্ত্র পর্ব অতিক্রম করে। এর মধ্যে কিশোর বয়স বা ‘অ্যাডোলেসেন্স’ আমাদের টেনে নিয়ে যায় ত্রিশের কোঠায়। যুক্তরাজ্যের কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, মানুষের মস্তিষ্কের গঠন ও কার্যকারিতার প্রধান চারটি মোড় আসে পর্যায়ক্রমে
১০ দিন আগে
সব ভূমিকম্পের সঙ্গেই যে ফোরশক হবে, এমনটা নয়। অনেক ক্ষেত্রেই কোনো ফোরশক ছাড়াই একটিমাত্র শক্তিশালী কম্পন (মেইনশক) দেখা যায়। এই কারণেই, ফোরশকগুলো মেইনশকের আগে ঘটলেও, বিজ্ঞানীরা এটিকে নির্ভরযোগ্য পূর্বাভাস হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন না।
১২ দিন আগে
মানুষ থেকে শিম্পাঞ্জি, এমনকি মেরু ভালুক বা নেকড়ে পর্যন্ত—চুম্বন এক সর্বজনীন আচরণ। কিন্তু এই ঘনিষ্ঠ আচরণের জন্ম কবে? অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের একটি নতুন গবেষণা এই প্রশ্নের উত্তর দিয়েছে।
১৬ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

মঙ্গল গ্রহে প্রথমবারের মতো বজ্রপাত শনাক্ত করার দাবি করেছেন বিজ্ঞানীরা। তাঁদের মতে, লাল গ্রহটির বায়ুমণ্ডলে বৈদ্যুতিক ক্রিয়াকলাপ ধরা পড়েছে, যা ইঙ্গিত দেয়—মঙ্গলেও পৃথিবীর মতো বজ্রপাত হতে পারে।
২০২১ সালে নাসার পাঠানো পারসিভিয়ারেন্স রোভার মঙ্গল গ্রহের জেজেরো ক্রেটারে অবতরণ করে। জীবনের সম্ভাব্য চিহ্ন অনুসন্ধানের পাশাপাশি গত চার বছর ধরে মঙ্গল গ্রহের পরিবেশগত বৈশিষ্ট্যও পরীক্ষা করছে এই রোভার। এটিতে সংযুক্ত সুপারক্যাম যন্ত্রের অডিও ও ইলেকট্রোম্যাগনেটিক রেকর্ডিং থেকে বিজ্ঞানীরা এবার বৈদ্যুতিক ঝলক শনাক্ত করেছেন।
শুক্রবার (২৮ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে বিবিসি জানিয়েছে, ফ্রান্সের একদল গবেষক নাসা রোভারের সংগৃহীত দুই মঙ্গল বছর—অর্থাৎ পৃথিবীর হিসেবে ১ হাজার ৩৭৪ দিনের মোট ২৮ ঘণ্টার অডিও রেকর্ডিং বিশ্লেষণ করেছেন। তাঁরা দেখেছেন, এই বিদ্যুৎ চমক সাধারণত মঙ্গলের ডাস্ট ডেভিল বা ধুলিঝড়ের সামনের অংশে দেখা যায়। ডাস্ট ডেভিল মূলত উত্তপ্ত বায়ু ওপরে উঠতে উঠতে ছোট ঘূর্ণিবাতাস তৈরি করে, যার অভ্যন্তরীণ ঘর্ষণ বৈদ্যুতিক চার্জ সৃষ্টি করতে পারে।
বৈজ্ঞানিক দলটির প্রধান লেখক ড. ব্যাপ্টিস্ট চিদে সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, এই বিচ্ছুরণগুলো একটি বড় ধরনের আবিষ্কার, যা মঙ্গলের বায়ুমণ্ডল, জলবায়ু, সম্ভাব্য বাসযোগ্যতা এবং ভবিষ্যতের রোবটিক ও মানব অনুসন্ধানের ওপর সরাসরি প্রভাব ফেলবে। তাঁর বক্তব্য অনুযায়ী—এই আবিষ্কারের মাধ্যমে পৃথিবী, শনি ও বৃহস্পতির সঙ্গে মঙ্গল গ্রহ সেই তালিকায় যুক্ত হলো—যেসব গ্রহে ইতিমধ্যেই বায়ুমণ্ডলীয় বজ্রপাতের কার্যকলাপ নিশ্চিত হওয়া গেছে।
তবে সন্দেহের জায়গাও রয়েছে। পার্টিকল ফিজিসিস্ট ড. ড্যানিয়েল প্রিটচার্ড নেচার সাময়িকীতে লিখেছেন—অডিও রেকর্ডিংগুলো ধুলোর ঘর্ষণে সৃষ্টি হওয়া বিচ্ছুরণের বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ দিলেও দৃশ্যমান প্রমাণ না থাকায় কিছু প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। তাঁর মতে, এ ক্ষেত্রের দীর্ঘ ইতিহাস বিবেচনায় বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক আরও কিছুদিন চলবে।
এর আগে, চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে মঙ্গল গ্রহের কিছু শিলায় অদ্ভুত দাগ আবিষ্কার করেন বিজ্ঞানীরা। ‘লেপার্ড স্পট’ ও ‘পপি সিড’ নাম দেওয়া এসব দাগে এমন কিছু খনিজ পাওয়া গেছে, যা রাসায়নিক বিক্রিয়ায় তৈরি এবং এই কার্যকলাপ প্রাচীন জীবাণুর উপস্থিতিরও ইঙ্গিত দিতে পারে। তবে সেগুলো সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক ভূপ্রক্রিয়ায়ও জন্ম নিতে পারে। যদিও নাসা বলছে—এগুলো এখন পর্যন্ত মঙ্গল গ্রহে জীবনের সবচেয়ে জোরালো সম্ভাব্য চিহ্ন।
বর্তমানে মঙ্গল গ্রহ শীতল ও শুষ্ক মরুভূমি। কিন্তু বিলিয়ন বছর আগে গ্রহটিতে ঘন বাতাস, নদী-নালা ও হ্রদের অস্তিত্বের প্রমাণ মিলেছে। সেই কারণেই মঙ্গলের জেজেরো ক্রেটারে পারসিভিয়ারেন্সের অনুসন্ধান বিজ্ঞানীদের কাছে বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।

মঙ্গল গ্রহে প্রথমবারের মতো বজ্রপাত শনাক্ত করার দাবি করেছেন বিজ্ঞানীরা। তাঁদের মতে, লাল গ্রহটির বায়ুমণ্ডলে বৈদ্যুতিক ক্রিয়াকলাপ ধরা পড়েছে, যা ইঙ্গিত দেয়—মঙ্গলেও পৃথিবীর মতো বজ্রপাত হতে পারে।
২০২১ সালে নাসার পাঠানো পারসিভিয়ারেন্স রোভার মঙ্গল গ্রহের জেজেরো ক্রেটারে অবতরণ করে। জীবনের সম্ভাব্য চিহ্ন অনুসন্ধানের পাশাপাশি গত চার বছর ধরে মঙ্গল গ্রহের পরিবেশগত বৈশিষ্ট্যও পরীক্ষা করছে এই রোভার। এটিতে সংযুক্ত সুপারক্যাম যন্ত্রের অডিও ও ইলেকট্রোম্যাগনেটিক রেকর্ডিং থেকে বিজ্ঞানীরা এবার বৈদ্যুতিক ঝলক শনাক্ত করেছেন।
শুক্রবার (২৮ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে বিবিসি জানিয়েছে, ফ্রান্সের একদল গবেষক নাসা রোভারের সংগৃহীত দুই মঙ্গল বছর—অর্থাৎ পৃথিবীর হিসেবে ১ হাজার ৩৭৪ দিনের মোট ২৮ ঘণ্টার অডিও রেকর্ডিং বিশ্লেষণ করেছেন। তাঁরা দেখেছেন, এই বিদ্যুৎ চমক সাধারণত মঙ্গলের ডাস্ট ডেভিল বা ধুলিঝড়ের সামনের অংশে দেখা যায়। ডাস্ট ডেভিল মূলত উত্তপ্ত বায়ু ওপরে উঠতে উঠতে ছোট ঘূর্ণিবাতাস তৈরি করে, যার অভ্যন্তরীণ ঘর্ষণ বৈদ্যুতিক চার্জ সৃষ্টি করতে পারে।
বৈজ্ঞানিক দলটির প্রধান লেখক ড. ব্যাপ্টিস্ট চিদে সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, এই বিচ্ছুরণগুলো একটি বড় ধরনের আবিষ্কার, যা মঙ্গলের বায়ুমণ্ডল, জলবায়ু, সম্ভাব্য বাসযোগ্যতা এবং ভবিষ্যতের রোবটিক ও মানব অনুসন্ধানের ওপর সরাসরি প্রভাব ফেলবে। তাঁর বক্তব্য অনুযায়ী—এই আবিষ্কারের মাধ্যমে পৃথিবী, শনি ও বৃহস্পতির সঙ্গে মঙ্গল গ্রহ সেই তালিকায় যুক্ত হলো—যেসব গ্রহে ইতিমধ্যেই বায়ুমণ্ডলীয় বজ্রপাতের কার্যকলাপ নিশ্চিত হওয়া গেছে।
তবে সন্দেহের জায়গাও রয়েছে। পার্টিকল ফিজিসিস্ট ড. ড্যানিয়েল প্রিটচার্ড নেচার সাময়িকীতে লিখেছেন—অডিও রেকর্ডিংগুলো ধুলোর ঘর্ষণে সৃষ্টি হওয়া বিচ্ছুরণের বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ দিলেও দৃশ্যমান প্রমাণ না থাকায় কিছু প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। তাঁর মতে, এ ক্ষেত্রের দীর্ঘ ইতিহাস বিবেচনায় বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক আরও কিছুদিন চলবে।
এর আগে, চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে মঙ্গল গ্রহের কিছু শিলায় অদ্ভুত দাগ আবিষ্কার করেন বিজ্ঞানীরা। ‘লেপার্ড স্পট’ ও ‘পপি সিড’ নাম দেওয়া এসব দাগে এমন কিছু খনিজ পাওয়া গেছে, যা রাসায়নিক বিক্রিয়ায় তৈরি এবং এই কার্যকলাপ প্রাচীন জীবাণুর উপস্থিতিরও ইঙ্গিত দিতে পারে। তবে সেগুলো সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক ভূপ্রক্রিয়ায়ও জন্ম নিতে পারে। যদিও নাসা বলছে—এগুলো এখন পর্যন্ত মঙ্গল গ্রহে জীবনের সবচেয়ে জোরালো সম্ভাব্য চিহ্ন।
বর্তমানে মঙ্গল গ্রহ শীতল ও শুষ্ক মরুভূমি। কিন্তু বিলিয়ন বছর আগে গ্রহটিতে ঘন বাতাস, নদী-নালা ও হ্রদের অস্তিত্বের প্রমাণ মিলেছে। সেই কারণেই মঙ্গলের জেজেরো ক্রেটারে পারসিভিয়ারেন্সের অনুসন্ধান বিজ্ঞানীদের কাছে বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।

প্রাকৃতিক দুর্যোগের অন্যতম মারাত্মক রূপ সুনামি। পৃথিবীর বিভিন্ন উপকূলীয় অঞ্চলে ব্যাপক ক্ষতিসাধন করে এই দুর্যোগ। সমুদ্র থেকে উঠে আসা বিশাল ঢেউগুলোর কারণে উপকূলবর্তী এলাকায় প্রাণহানিসহ অর্থনৈতিক ও সামাজিক ক্ষয়ক্ষতি হয়। সুনামির পূর্বাভাস ও সতর্কতার মাধ্যমে ক্ষয়ক্ষতি কমানোর চেষ্টা করা হয়। তবে একে...
৩০ জুলাই ২০২৫
নতুন এক গবেষণায় উঠে এসেছে, মানুষের মস্তিষ্ক মোট পাঁচটি স্বতন্ত্র পর্ব অতিক্রম করে। এর মধ্যে কিশোর বয়স বা ‘অ্যাডোলেসেন্স’ আমাদের টেনে নিয়ে যায় ত্রিশের কোঠায়। যুক্তরাজ্যের কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, মানুষের মস্তিষ্কের গঠন ও কার্যকারিতার প্রধান চারটি মোড় আসে পর্যায়ক্রমে
১০ দিন আগে
সব ভূমিকম্পের সঙ্গেই যে ফোরশক হবে, এমনটা নয়। অনেক ক্ষেত্রেই কোনো ফোরশক ছাড়াই একটিমাত্র শক্তিশালী কম্পন (মেইনশক) দেখা যায়। এই কারণেই, ফোরশকগুলো মেইনশকের আগে ঘটলেও, বিজ্ঞানীরা এটিকে নির্ভরযোগ্য পূর্বাভাস হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন না।
১২ দিন আগে
মানুষ থেকে শিম্পাঞ্জি, এমনকি মেরু ভালুক বা নেকড়ে পর্যন্ত—চুম্বন এক সর্বজনীন আচরণ। কিন্তু এই ঘনিষ্ঠ আচরণের জন্ম কবে? অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের একটি নতুন গবেষণা এই প্রশ্নের উত্তর দিয়েছে।
১৬ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

নতুন এক গবেষণায় উঠে এসেছে, মানুষের মস্তিষ্ক মোট পাঁচটি স্বতন্ত্র পর্ব অতিক্রম করে। এর মধ্যে কিশোর বয়স বা ‘অ্যাডোলেসেন্স’ আমাদের টেনে নিয়ে যায় ত্রিশের কোঠায়। যুক্তরাজ্যের কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, মানুষের মস্তিষ্কের গঠন ও কার্যকারিতার প্রধান চারটি মোড় আসে পর্যায়ক্রমে ৯, ৩২, ৬৬ ও ৮৩ বছর বয়সে।
এ বিষয়ে আজ মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গবেষণাটিতে ৪ হাজার মানুষের ৯০ বছর বয়স পর্যন্ত মস্তিষ্কের স্ক্যান বিশ্লেষণ করা হয়েছে। এতে দেখা গেছে, মস্তিষ্ক আজীবন পরিবর্তনশীল হলেও এই পরিবর্তন কোনো সরলরেখার মতো ঘটে না, বরং আলাদা আলাদা পাঁচটি ‘মস্তিষ্ক-পর্বে’ তা রূপ নেয়।
গবেষণায় চিহ্নিত পাঁচটি পর্ব হলো—১. জন্ম থেকে ৯ বছর বয়স পর্যন্ত ‘শৈশব’। ২. বয়স ৯ থেকে ৩২ বছর পর্যন্ত ‘কৈশোর’। ৩. বয়স ৩২ থেকে ৬৬ বছর পর্যন্ত ‘প্রাপ্তবয়স্ক’। ৪. বয়স ৬৬ থেকে ৮৩ বছর পর্যন্ত বার্ধক্যের প্রাথমিক পর্যায়। ৫. বয়স ৮৩ থেকে পরবর্তী যেকোনো সময় বার্ধক্যের শেষ পর্যায়।
এর মধ্যে শৈশবে তথা জন্ম থেকে ৯ বছর বয়স পর্যন্ত মানুষের মস্তিষ্কের আকার দ্রুত বাড়ে। পাশাপাশি জীবনের শুরুতে যেসব অতিরিক্ত ‘সিন্যাপস’ বা মস্তিষ্কে বার্তা আদান-প্রদানের সেতু তৈরি হয়েছিল, সেগুলো ছাঁটাই হওয়া শুরু করে। ফলে মস্তিষ্ক অনেকটা এলোমেলোভাবে কাজ করে—ঠিক যেমন একটি শিশু পার্কে হাঁটতে হাঁটতে দিক হারিয়ে ফেলে।
কৈশোর যখন শুরু হয়, অর্থাৎ ৯ বছর বয়স থেকে হঠাৎ করে মস্তিষ্কের সংযোগগুলো অতি দক্ষ হয়ে ওঠে। গবেষকদের মতে, মানুষের জীবনে এটিই সবচেয়ে বড় পরিবর্তন। এ সময় তাই মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যার ঝুঁকি সর্বোচ্চ পর্যায়ে থাকে।
দীর্ঘদিন ধরে মনে করা হতো, কিশোর বয়স শুধু ১৮-১৯ বছর বয়স পর্যন্ত। কিন্তু পরে বোঝা যায়, এই বয়স ২০–এর কোঠায়ও থাকে। নতুন গবেষণাটি বলছে, মস্তিষ্কের অ্যাডোলেসেন্স বা কৈশোর পর্যায় শেষ হয় ৩২ বছরের কাছাকাছি সময়ে। এ সময়ে মস্তিষ্কের দক্ষতা শীর্ষে পৌঁছায়।
৩২ থেকে ৬৬ বছর পর্যন্ত মস্তিষ্ক তুলনামূলক স্থিতিশীল থাকে। পরিবর্তনের গতি ধীর হয়ে আসে। এ সময়কে গবেষকেরা বুদ্ধিমত্তা ও ব্যক্তিত্বের স্থিতিশীলতার সঙ্গে যুক্ত করেছেন।
৬৬ বছর বয়সের পর মানুষের মস্তিষ্কের কাজের ধরন একসঙ্গে সমন্বিত থাকার বদলে আলাদা আলাদা অঞ্চলে ভাগ হয়ে যায়। যেন একটি ব্যান্ডের সদস্যরা নিজেদের একক ক্যারিয়ার শুরু করেছে। এই বয়স থেকেই উচ্চ রক্তচাপ ও ডিমেনশিয়ার প্রাথমিক ঝুঁকি দেখা দিতে থাকে।
৮৩ বছরের পরের পর্যায় সম্পর্কে তুলনামূলক কম ডেটা সংগ্রহ করতে পেরেছেন বিজ্ঞানীরা। তবে দেখা গেছে, এ সময়ে মস্তিষ্কের বিভক্তি আরও স্পষ্ট হয় এবং সংযোগগুলো আরও দুর্বল হতে থাকে।
গবেষণা দলের সদস্য ড. অ্যালেক্সা মাউজলি বলেন, মস্তিষ্ক জীবনের প্রতিটি ধাপে নিজের সংযোগগুলো বদলে নেয়। এভাবে কখনো তা শক্তিশালী, কখনো তা দুর্বল হয়। কিন্তু এই পরিবর্তন একরকম নয়; এটির স্পষ্ট কিছু পর্ব রয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই গবেষণা মানসিক রোগ, স্নায়বিক ব্যাধি ও বার্ধক্যজনিত সমস্যাগুলো আরও ভালোভাবে বোঝার নতুন পথ খুলে দিতে পারে। স্ক্যানের বিশাল পরিসরই প্রথমবারের মতো মস্তিষ্কের এই পাঁচটি স্পষ্ট পর্বকে সামনে এনেছে।

নতুন এক গবেষণায় উঠে এসেছে, মানুষের মস্তিষ্ক মোট পাঁচটি স্বতন্ত্র পর্ব অতিক্রম করে। এর মধ্যে কিশোর বয়স বা ‘অ্যাডোলেসেন্স’ আমাদের টেনে নিয়ে যায় ত্রিশের কোঠায়। যুক্তরাজ্যের কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, মানুষের মস্তিষ্কের গঠন ও কার্যকারিতার প্রধান চারটি মোড় আসে পর্যায়ক্রমে ৯, ৩২, ৬৬ ও ৮৩ বছর বয়সে।
এ বিষয়ে আজ মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গবেষণাটিতে ৪ হাজার মানুষের ৯০ বছর বয়স পর্যন্ত মস্তিষ্কের স্ক্যান বিশ্লেষণ করা হয়েছে। এতে দেখা গেছে, মস্তিষ্ক আজীবন পরিবর্তনশীল হলেও এই পরিবর্তন কোনো সরলরেখার মতো ঘটে না, বরং আলাদা আলাদা পাঁচটি ‘মস্তিষ্ক-পর্বে’ তা রূপ নেয়।
গবেষণায় চিহ্নিত পাঁচটি পর্ব হলো—১. জন্ম থেকে ৯ বছর বয়স পর্যন্ত ‘শৈশব’। ২. বয়স ৯ থেকে ৩২ বছর পর্যন্ত ‘কৈশোর’। ৩. বয়স ৩২ থেকে ৬৬ বছর পর্যন্ত ‘প্রাপ্তবয়স্ক’। ৪. বয়স ৬৬ থেকে ৮৩ বছর পর্যন্ত বার্ধক্যের প্রাথমিক পর্যায়। ৫. বয়স ৮৩ থেকে পরবর্তী যেকোনো সময় বার্ধক্যের শেষ পর্যায়।
এর মধ্যে শৈশবে তথা জন্ম থেকে ৯ বছর বয়স পর্যন্ত মানুষের মস্তিষ্কের আকার দ্রুত বাড়ে। পাশাপাশি জীবনের শুরুতে যেসব অতিরিক্ত ‘সিন্যাপস’ বা মস্তিষ্কে বার্তা আদান-প্রদানের সেতু তৈরি হয়েছিল, সেগুলো ছাঁটাই হওয়া শুরু করে। ফলে মস্তিষ্ক অনেকটা এলোমেলোভাবে কাজ করে—ঠিক যেমন একটি শিশু পার্কে হাঁটতে হাঁটতে দিক হারিয়ে ফেলে।
কৈশোর যখন শুরু হয়, অর্থাৎ ৯ বছর বয়স থেকে হঠাৎ করে মস্তিষ্কের সংযোগগুলো অতি দক্ষ হয়ে ওঠে। গবেষকদের মতে, মানুষের জীবনে এটিই সবচেয়ে বড় পরিবর্তন। এ সময় তাই মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যার ঝুঁকি সর্বোচ্চ পর্যায়ে থাকে।
দীর্ঘদিন ধরে মনে করা হতো, কিশোর বয়স শুধু ১৮-১৯ বছর বয়স পর্যন্ত। কিন্তু পরে বোঝা যায়, এই বয়স ২০–এর কোঠায়ও থাকে। নতুন গবেষণাটি বলছে, মস্তিষ্কের অ্যাডোলেসেন্স বা কৈশোর পর্যায় শেষ হয় ৩২ বছরের কাছাকাছি সময়ে। এ সময়ে মস্তিষ্কের দক্ষতা শীর্ষে পৌঁছায়।
৩২ থেকে ৬৬ বছর পর্যন্ত মস্তিষ্ক তুলনামূলক স্থিতিশীল থাকে। পরিবর্তনের গতি ধীর হয়ে আসে। এ সময়কে গবেষকেরা বুদ্ধিমত্তা ও ব্যক্তিত্বের স্থিতিশীলতার সঙ্গে যুক্ত করেছেন।
৬৬ বছর বয়সের পর মানুষের মস্তিষ্কের কাজের ধরন একসঙ্গে সমন্বিত থাকার বদলে আলাদা আলাদা অঞ্চলে ভাগ হয়ে যায়। যেন একটি ব্যান্ডের সদস্যরা নিজেদের একক ক্যারিয়ার শুরু করেছে। এই বয়স থেকেই উচ্চ রক্তচাপ ও ডিমেনশিয়ার প্রাথমিক ঝুঁকি দেখা দিতে থাকে।
৮৩ বছরের পরের পর্যায় সম্পর্কে তুলনামূলক কম ডেটা সংগ্রহ করতে পেরেছেন বিজ্ঞানীরা। তবে দেখা গেছে, এ সময়ে মস্তিষ্কের বিভক্তি আরও স্পষ্ট হয় এবং সংযোগগুলো আরও দুর্বল হতে থাকে।
গবেষণা দলের সদস্য ড. অ্যালেক্সা মাউজলি বলেন, মস্তিষ্ক জীবনের প্রতিটি ধাপে নিজের সংযোগগুলো বদলে নেয়। এভাবে কখনো তা শক্তিশালী, কখনো তা দুর্বল হয়। কিন্তু এই পরিবর্তন একরকম নয়; এটির স্পষ্ট কিছু পর্ব রয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই গবেষণা মানসিক রোগ, স্নায়বিক ব্যাধি ও বার্ধক্যজনিত সমস্যাগুলো আরও ভালোভাবে বোঝার নতুন পথ খুলে দিতে পারে। স্ক্যানের বিশাল পরিসরই প্রথমবারের মতো মস্তিষ্কের এই পাঁচটি স্পষ্ট পর্বকে সামনে এনেছে।

প্রাকৃতিক দুর্যোগের অন্যতম মারাত্মক রূপ সুনামি। পৃথিবীর বিভিন্ন উপকূলীয় অঞ্চলে ব্যাপক ক্ষতিসাধন করে এই দুর্যোগ। সমুদ্র থেকে উঠে আসা বিশাল ঢেউগুলোর কারণে উপকূলবর্তী এলাকায় প্রাণহানিসহ অর্থনৈতিক ও সামাজিক ক্ষয়ক্ষতি হয়। সুনামির পূর্বাভাস ও সতর্কতার মাধ্যমে ক্ষয়ক্ষতি কমানোর চেষ্টা করা হয়। তবে একে...
৩০ জুলাই ২০২৫
২০২১ সালে নাসার পাঠানো পারসিভিয়ারেন্স রোভার মঙ্গল গ্রহের জেজেরো ক্রেটারে অবতরণ করে। জীবনের সম্ভাব্য চিহ্ন অনুসন্ধানের পাশাপাশি গত চার বছর ধরে মঙ্গল গ্রহের পরিবেশগত বৈশিষ্ট্যও পরীক্ষা করছে এই রোভার। এটিতে সংযুক্ত সুপারক্যাম যন্ত্রের অডিও ও ইলেকট্রোম্যাগনেটিক রেকর্ডিং...
৬ দিন আগে
সব ভূমিকম্পের সঙ্গেই যে ফোরশক হবে, এমনটা নয়। অনেক ক্ষেত্রেই কোনো ফোরশক ছাড়াই একটিমাত্র শক্তিশালী কম্পন (মেইনশক) দেখা যায়। এই কারণেই, ফোরশকগুলো মেইনশকের আগে ঘটলেও, বিজ্ঞানীরা এটিকে নির্ভরযোগ্য পূর্বাভাস হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন না।
১২ দিন আগে
মানুষ থেকে শিম্পাঞ্জি, এমনকি মেরু ভালুক বা নেকড়ে পর্যন্ত—চুম্বন এক সর্বজনীন আচরণ। কিন্তু এই ঘনিষ্ঠ আচরণের জন্ম কবে? অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের একটি নতুন গবেষণা এই প্রশ্নের উত্তর দিয়েছে।
১৬ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

ভূমিকম্প হলো পৃথিবীর ভূত্বকের অভ্যন্তরে হঠাৎ শক্তি নির্গমনের ফল, এটিই ভূপৃষ্ঠে কম্পন সৃষ্টি করে। সাধারণত একটি ভূমিকম্পের ঘটনাকে তিনটি পর্যায়ক্রমিক কম্পনের একটি সিরিজ হিসেবে দেখা হয়: ফোরশক, মেইনশক এবং আফটারশক। এই তিনটি পর্যায় একসঙ্গে একটি সম্পূর্ণ ভূমিকম্পের প্রক্রিয়াকে সংজ্ঞায়িত করে।
ফোরশক হলো এমন ভূমিকম্প যা একই স্থানে একটি বৃহত্তর ভূমিকম্পের আগে ঘটে থাকে। একটি ভূমিকম্পকে ফোরশক হিসেবে চিহ্নিত করা যায় না যতক্ষণ না একই এলাকায় এর পরে একটি বৃহত্তর ভূমিকম্প আঘাত হানে।
আফটারশক হলো অপেক্ষাকৃত ছোট ভূমিকম্প, যা একটি বৃহত্তর ঘটনা বা ‘মেইনশক’-এর পরে একই অঞ্চলে কয়েক দিন থেকে কয়েক বছর ধরে চলতে থাকে। এগুলো সাধারণত ফাটলের (ফল্ট লাইন) ১-২টি দৈর্ঘ্যের মধ্যেই ঘটে। স্বাভাবিক পটভূমি স্তরে ফিরে আসার আগে পর্যন্ত এটি চলতে থাকে।
একটি সাধারণ নিয়ম হিসেবে, আফটারশকগুলো মেইনশকের সময় স্থানচ্যুত হওয়া ফাটলের অংশ বরাবর সামান্য পুনঃসামঞ্জস্যকে বোঝায়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই আফটারশকগুলোর পুনঘটন কমতে থাকে।
ঐতিহাসিকভাবে, অগভীর ভূমিকম্পের তুলনায় গভীর ভূমিকম্পের (৩০ কিমির বেশি) পরে আফটারশক হওয়ার সম্ভাবনা অনেক কম থাকে। নিচে এই তিনটি পর্যায় সংক্ষেপে বর্ণনা করা হলো:

১. ফোরশক বা প্রাথমিক কম্পন
ভূমিকম্পের প্রধান কম্পন (মেইনশক) আঘাত হানার আগে যে ছোট ছোট কম্পন অনুভূত হয়, সেগুলোকে ফোরশক বলা হয়। এগুলো মেইনশকের আগে ভূ-ত্বকে চাপ তৈরি হওয়ার কারণে সৃষ্টি হয়।
ফোরশকের বৈশিষ্ট্য:
কোনো একটি নির্দিষ্ট ফাটল অঞ্চলে শক্তি জমা হওয়ার ফলে মেইনশক শুরু হওয়ার আগে যে মৃদু কম্পনগুলো হয়ে থাকে, তা-ই হলো ফোরশক। এই কম্পনগুলো প্রধান প্লেট (টেকটোনিক) বরাবর চাপ মুক্ত করতে শুরু করে এবং মেইনশকের জন্য অঞ্চলটিকে প্রস্তুত করে তোলে।
ফোরশকগুলোর মাত্রা সাধারণত মেইনশকের চেয়ে উল্লেখযোগ্যভাবে কম হয়। এই কম্পনগুলোর তীব্রতা তুলনামূলকভাবে কম হওয়ার কারণে অনেক সময় সাধারণ মানুষ তা অনুভবও করতে পারে না।
ফোরশকগুলো মেইনশকের কয়েক ঘণ্টা থেকে কয়েক সপ্তাহ আগে পর্যন্ত ঘটতে পারে।
ভূতত্ত্ববিদদের জন্য ফোরশকগুলো গুরুত্বপূর্ণ ইঙ্গিত হতে পারে, যদিও এগুলো নির্ভরযোগ্যভাবে ভবিষ্যদ্বাণী করার জন্য যথেষ্ট নয়। বিজ্ঞানীরা কেবল মেইনশক হওয়ার পরেই নিশ্চিতভাবে বলতে পারেন যে, আগের কম্পনটি ফোরশক ছিল। যদি এই কম্পনগুলো শনাক্ত করা যায়, তবে এটি বড় ভূমিকম্পের সতর্কতা হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে।
২. মেইনশক বা প্রধান কম্পন
ভূমিকম্পের সম্পূর্ণ প্রক্রিয়া বা পর্যায় ক্রমে সবচেয়ে তীব্র এবং শক্তিশালী কম্পনটিকে মেইনশক বলা হয়। এই কম্পনটিই স্থিতিশক্তির চূড়ান্ত মুক্তি ঘটায় এবং সাধারণত সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতি করে ও জনজীবনের ওপর প্রভাব ফেলে।
মেইনশকের বৈশিষ্ট্য:
এটি একটি নির্দিষ্ট ভূমিকম্পের ঘটনার সবচেয়ে বড় মাত্রার কম্পনের ঘটনা। এর মাত্রা অন্য ফোরশক বা আফটারশকগুলোর চেয়ে বেশি হয়। মেইনশকের সময় জমে থাকা অধিকাংশ স্থিতিশক্তি হঠাৎ গতিশক্তিতে রূপান্তরিত হয়ে তরঙ্গাকারে নির্গত হয়।
যেহেতু এর মাত্রা এবং তীব্রতা সবচেয়ে বেশি, তাই ভবন, পরিকাঠামো এবং ভূ-প্রকৃতির ওপর এর প্রভাব সবচেয়ে ধ্বংসাত্মক হয়।
মেইনশকের উৎপত্তিস্থানকে হাইপোসেন্টার বা ফোকাস এবং তার ঠিক ওপরের ভূ-পৃষ্ঠের স্থানকে এপিসেন্টার বলা হয়।
৩. আফটারশক বা পরবর্তী কম্পন
মেইনশক আঘাত হানার পরে একই অঞ্চলে যে ক্ষুদ্র কম্পনগুলো বারবার অনুভূত হতে থাকে, সেগুলোকে আফটারশক বলা হয়। এই কম্পনগুলো মেইনশকের পরে প্রধান ফাটল অঞ্চলে চাপের পুনঃসামঞ্জস্যের কারণে সৃষ্টি হয়।
আফটারশকের বৈশিষ্ট্য:
মেইনশকের আঘাতের ফলে ভূ-ত্বকের যে অংশ স্থানচ্যুত হয়েছে, সেখানে চাপ পুনরায় সামঞ্জস্য করার কারণে এই কম্পনগুলো সৃষ্টি হয়। এই চাপ কমার প্রক্রিয়া যতদিন চলে, ততদিন আফটারশক অনুভূত হতে থাকে।
আফটারশকগুলোর মাত্রা সব সময় মেইনশকের চেয়ে কম হয়, তবে প্রথম দিকের আফটারশকগুলো যথেষ্ট শক্তিশালী হতে পারে এবং মেইনশকের কারণে দুর্বল হয়ে যাওয়া কাঠামোর আরও ক্ষতি করতে পারে। মেইনশকে দুর্বল হয়ে যাওয়া বাড়ি বা পরিকাঠামোর চূড়ান্ত পতন সাধারণত আফটারশকের ফলেই ঘটে থাকে।
মেইনশকের পর থেকে আফটারশকগুলো কয়েক দিন, কয়েক সপ্তাহ বা এমনকি কয়েক মাস ধরে চলতে পারে। বড় ভূমিকম্পের ক্ষেত্রে আফটারশক এক বছর বা তারও বেশি সময় ধরেও চলতে পারে।
আফটারশকের পুনঘটন সময়ের সঙ্গে সঙ্গে কমে। এই নিয়মটি ওমোরি’স ল নামে পরিচিত। এর অর্থ হলো, মেইনশকের ঠিক পরের দিনগুলোতে আফটারশক যত ঘন ঘন হয়, সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে এর সংখ্যা কমতে থাকে।
মনে রাখা প্রয়োজন, সব ভূমিকম্পের সঙ্গেই যে ফোরশক হবে, এমনটা নয়। অনেক ক্ষেত্রেই কোনো ফোরশক ছাড়াই একটিমাত্র শক্তিশালী কম্পন (মেইনশক) দেখা যায়। এই কারণেই, ফোরশকগুলো মেইনশকের আগে ঘটলেও, বিজ্ঞানীরা এটিকে নির্ভরযোগ্য পূর্বাভাস হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন না। এই পর্যায়গুলো ভূমিকম্পের সম্পূর্ণ প্রক্রিয়া এবং ফাটল অঞ্চলের স্থিতিশীল হওয়ার প্রক্রিয়াকে বোঝাতে সাহায্য করে।

ভূমিকম্প হলো পৃথিবীর ভূত্বকের অভ্যন্তরে হঠাৎ শক্তি নির্গমনের ফল, এটিই ভূপৃষ্ঠে কম্পন সৃষ্টি করে। সাধারণত একটি ভূমিকম্পের ঘটনাকে তিনটি পর্যায়ক্রমিক কম্পনের একটি সিরিজ হিসেবে দেখা হয়: ফোরশক, মেইনশক এবং আফটারশক। এই তিনটি পর্যায় একসঙ্গে একটি সম্পূর্ণ ভূমিকম্পের প্রক্রিয়াকে সংজ্ঞায়িত করে।
ফোরশক হলো এমন ভূমিকম্প যা একই স্থানে একটি বৃহত্তর ভূমিকম্পের আগে ঘটে থাকে। একটি ভূমিকম্পকে ফোরশক হিসেবে চিহ্নিত করা যায় না যতক্ষণ না একই এলাকায় এর পরে একটি বৃহত্তর ভূমিকম্প আঘাত হানে।
আফটারশক হলো অপেক্ষাকৃত ছোট ভূমিকম্প, যা একটি বৃহত্তর ঘটনা বা ‘মেইনশক’-এর পরে একই অঞ্চলে কয়েক দিন থেকে কয়েক বছর ধরে চলতে থাকে। এগুলো সাধারণত ফাটলের (ফল্ট লাইন) ১-২টি দৈর্ঘ্যের মধ্যেই ঘটে। স্বাভাবিক পটভূমি স্তরে ফিরে আসার আগে পর্যন্ত এটি চলতে থাকে।
একটি সাধারণ নিয়ম হিসেবে, আফটারশকগুলো মেইনশকের সময় স্থানচ্যুত হওয়া ফাটলের অংশ বরাবর সামান্য পুনঃসামঞ্জস্যকে বোঝায়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই আফটারশকগুলোর পুনঘটন কমতে থাকে।
ঐতিহাসিকভাবে, অগভীর ভূমিকম্পের তুলনায় গভীর ভূমিকম্পের (৩০ কিমির বেশি) পরে আফটারশক হওয়ার সম্ভাবনা অনেক কম থাকে। নিচে এই তিনটি পর্যায় সংক্ষেপে বর্ণনা করা হলো:

১. ফোরশক বা প্রাথমিক কম্পন
ভূমিকম্পের প্রধান কম্পন (মেইনশক) আঘাত হানার আগে যে ছোট ছোট কম্পন অনুভূত হয়, সেগুলোকে ফোরশক বলা হয়। এগুলো মেইনশকের আগে ভূ-ত্বকে চাপ তৈরি হওয়ার কারণে সৃষ্টি হয়।
ফোরশকের বৈশিষ্ট্য:
কোনো একটি নির্দিষ্ট ফাটল অঞ্চলে শক্তি জমা হওয়ার ফলে মেইনশক শুরু হওয়ার আগে যে মৃদু কম্পনগুলো হয়ে থাকে, তা-ই হলো ফোরশক। এই কম্পনগুলো প্রধান প্লেট (টেকটোনিক) বরাবর চাপ মুক্ত করতে শুরু করে এবং মেইনশকের জন্য অঞ্চলটিকে প্রস্তুত করে তোলে।
ফোরশকগুলোর মাত্রা সাধারণত মেইনশকের চেয়ে উল্লেখযোগ্যভাবে কম হয়। এই কম্পনগুলোর তীব্রতা তুলনামূলকভাবে কম হওয়ার কারণে অনেক সময় সাধারণ মানুষ তা অনুভবও করতে পারে না।
ফোরশকগুলো মেইনশকের কয়েক ঘণ্টা থেকে কয়েক সপ্তাহ আগে পর্যন্ত ঘটতে পারে।
ভূতত্ত্ববিদদের জন্য ফোরশকগুলো গুরুত্বপূর্ণ ইঙ্গিত হতে পারে, যদিও এগুলো নির্ভরযোগ্যভাবে ভবিষ্যদ্বাণী করার জন্য যথেষ্ট নয়। বিজ্ঞানীরা কেবল মেইনশক হওয়ার পরেই নিশ্চিতভাবে বলতে পারেন যে, আগের কম্পনটি ফোরশক ছিল। যদি এই কম্পনগুলো শনাক্ত করা যায়, তবে এটি বড় ভূমিকম্পের সতর্কতা হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে।
২. মেইনশক বা প্রধান কম্পন
ভূমিকম্পের সম্পূর্ণ প্রক্রিয়া বা পর্যায় ক্রমে সবচেয়ে তীব্র এবং শক্তিশালী কম্পনটিকে মেইনশক বলা হয়। এই কম্পনটিই স্থিতিশক্তির চূড়ান্ত মুক্তি ঘটায় এবং সাধারণত সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতি করে ও জনজীবনের ওপর প্রভাব ফেলে।
মেইনশকের বৈশিষ্ট্য:
এটি একটি নির্দিষ্ট ভূমিকম্পের ঘটনার সবচেয়ে বড় মাত্রার কম্পনের ঘটনা। এর মাত্রা অন্য ফোরশক বা আফটারশকগুলোর চেয়ে বেশি হয়। মেইনশকের সময় জমে থাকা অধিকাংশ স্থিতিশক্তি হঠাৎ গতিশক্তিতে রূপান্তরিত হয়ে তরঙ্গাকারে নির্গত হয়।
যেহেতু এর মাত্রা এবং তীব্রতা সবচেয়ে বেশি, তাই ভবন, পরিকাঠামো এবং ভূ-প্রকৃতির ওপর এর প্রভাব সবচেয়ে ধ্বংসাত্মক হয়।
মেইনশকের উৎপত্তিস্থানকে হাইপোসেন্টার বা ফোকাস এবং তার ঠিক ওপরের ভূ-পৃষ্ঠের স্থানকে এপিসেন্টার বলা হয়।
৩. আফটারশক বা পরবর্তী কম্পন
মেইনশক আঘাত হানার পরে একই অঞ্চলে যে ক্ষুদ্র কম্পনগুলো বারবার অনুভূত হতে থাকে, সেগুলোকে আফটারশক বলা হয়। এই কম্পনগুলো মেইনশকের পরে প্রধান ফাটল অঞ্চলে চাপের পুনঃসামঞ্জস্যের কারণে সৃষ্টি হয়।
আফটারশকের বৈশিষ্ট্য:
মেইনশকের আঘাতের ফলে ভূ-ত্বকের যে অংশ স্থানচ্যুত হয়েছে, সেখানে চাপ পুনরায় সামঞ্জস্য করার কারণে এই কম্পনগুলো সৃষ্টি হয়। এই চাপ কমার প্রক্রিয়া যতদিন চলে, ততদিন আফটারশক অনুভূত হতে থাকে।
আফটারশকগুলোর মাত্রা সব সময় মেইনশকের চেয়ে কম হয়, তবে প্রথম দিকের আফটারশকগুলো যথেষ্ট শক্তিশালী হতে পারে এবং মেইনশকের কারণে দুর্বল হয়ে যাওয়া কাঠামোর আরও ক্ষতি করতে পারে। মেইনশকে দুর্বল হয়ে যাওয়া বাড়ি বা পরিকাঠামোর চূড়ান্ত পতন সাধারণত আফটারশকের ফলেই ঘটে থাকে।
মেইনশকের পর থেকে আফটারশকগুলো কয়েক দিন, কয়েক সপ্তাহ বা এমনকি কয়েক মাস ধরে চলতে পারে। বড় ভূমিকম্পের ক্ষেত্রে আফটারশক এক বছর বা তারও বেশি সময় ধরেও চলতে পারে।
আফটারশকের পুনঘটন সময়ের সঙ্গে সঙ্গে কমে। এই নিয়মটি ওমোরি’স ল নামে পরিচিত। এর অর্থ হলো, মেইনশকের ঠিক পরের দিনগুলোতে আফটারশক যত ঘন ঘন হয়, সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে এর সংখ্যা কমতে থাকে।
মনে রাখা প্রয়োজন, সব ভূমিকম্পের সঙ্গেই যে ফোরশক হবে, এমনটা নয়। অনেক ক্ষেত্রেই কোনো ফোরশক ছাড়াই একটিমাত্র শক্তিশালী কম্পন (মেইনশক) দেখা যায়। এই কারণেই, ফোরশকগুলো মেইনশকের আগে ঘটলেও, বিজ্ঞানীরা এটিকে নির্ভরযোগ্য পূর্বাভাস হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন না। এই পর্যায়গুলো ভূমিকম্পের সম্পূর্ণ প্রক্রিয়া এবং ফাটল অঞ্চলের স্থিতিশীল হওয়ার প্রক্রিয়াকে বোঝাতে সাহায্য করে।

প্রাকৃতিক দুর্যোগের অন্যতম মারাত্মক রূপ সুনামি। পৃথিবীর বিভিন্ন উপকূলীয় অঞ্চলে ব্যাপক ক্ষতিসাধন করে এই দুর্যোগ। সমুদ্র থেকে উঠে আসা বিশাল ঢেউগুলোর কারণে উপকূলবর্তী এলাকায় প্রাণহানিসহ অর্থনৈতিক ও সামাজিক ক্ষয়ক্ষতি হয়। সুনামির পূর্বাভাস ও সতর্কতার মাধ্যমে ক্ষয়ক্ষতি কমানোর চেষ্টা করা হয়। তবে একে...
৩০ জুলাই ২০২৫
২০২১ সালে নাসার পাঠানো পারসিভিয়ারেন্স রোভার মঙ্গল গ্রহের জেজেরো ক্রেটারে অবতরণ করে। জীবনের সম্ভাব্য চিহ্ন অনুসন্ধানের পাশাপাশি গত চার বছর ধরে মঙ্গল গ্রহের পরিবেশগত বৈশিষ্ট্যও পরীক্ষা করছে এই রোভার। এটিতে সংযুক্ত সুপারক্যাম যন্ত্রের অডিও ও ইলেকট্রোম্যাগনেটিক রেকর্ডিং...
৬ দিন আগে
নতুন এক গবেষণায় উঠে এসেছে, মানুষের মস্তিষ্ক মোট পাঁচটি স্বতন্ত্র পর্ব অতিক্রম করে। এর মধ্যে কিশোর বয়স বা ‘অ্যাডোলেসেন্স’ আমাদের টেনে নিয়ে যায় ত্রিশের কোঠায়। যুক্তরাজ্যের কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, মানুষের মস্তিষ্কের গঠন ও কার্যকারিতার প্রধান চারটি মোড় আসে পর্যায়ক্রমে
১০ দিন আগে
মানুষ থেকে শিম্পাঞ্জি, এমনকি মেরু ভালুক বা নেকড়ে পর্যন্ত—চুম্বন এক সর্বজনীন আচরণ। কিন্তু এই ঘনিষ্ঠ আচরণের জন্ম কবে? অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের একটি নতুন গবেষণা এই প্রশ্নের উত্তর দিয়েছে।
১৬ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

মানুষ থেকে শিম্পাঞ্জি, এমনকি মেরু ভালুক বা নেকড়ে পর্যন্ত—চুম্বন এক সর্বজনীন আচরণ। কিন্তু এই ঘনিষ্ঠ আচরণের জন্ম কবে? অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের একটি নতুন গবেষণা এই প্রশ্নের উত্তর দিয়েছে। তাঁদের গবেষণা অনুযায়ী, মুখ দিয়ে মুখ স্পর্শ করার এই আচরণটি প্রায় ২১ মিলিয়ন (২ কোটি ১০ লাখ) বছর আগে বিবর্তিত হয়েছিল। ধারণা করা হচ্ছে, মানুষ এবং অন্যান্য গ্রেট এপস বা বৃহৎ বানর প্রজাতির সাধারণ পূর্বপুরুষেরা সম্ভবত চুমুতে অভ্যস্ত ছিল।
গবেষকেরা মনে করছেন, এই গবেষণা প্রমাণ করে, চুম্বন মানব সমাজের নিজস্ব কোনো উদ্ভাবন নয়, বরং এটি সমগ্র প্রাণিজগতে বহু আগে থেকেই বিদ্যমান একটি বিবর্তনগত আচরণ।
চুম্বনের মতো একটি আবেগময় আচরণের উৎস বোঝার জন্য বিজ্ঞানীরা প্রথমে এর একটি সুনির্দিষ্ট বৈজ্ঞানিক সংজ্ঞা তৈরি করেন। ‘ইভোলিউশন অ্যান্ড হিউম্যান বিহেভিয়র’ জার্নালে প্রকাশিত এই গবেষণায় বিজ্ঞানীরা চুম্বনকে একটি ‘অ-আক্রমণাত্মক, নির্দেশিত মৌখিক-মৌখিক যোগাযোগ’ হিসেবে সংজ্ঞায়িত করেছেন, যেখানে ঠোঁট বা মুখের পারস্পরিক স্পর্শ ও ঘষাঘষি থাকবে, কিন্তু কোনো খাদ্য আদান-প্রদান হবে না।
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবর্তনীয় জীববিজ্ঞানী এবং প্রধান গবেষক ড. মাটিল্ডা ব্রিন্ডল ব্যাখ্যা করেন, ‘মানুষ, শিম্পাঞ্জি এবং বোনোবো—সবাই চুম্বন করে। তাই এটি সম্ভবত তাদের সবচেয়ে সাম্প্রতিক সাধারণ পূর্বপুরুষের মধ্যেও বিদ্যমান ছিল। আমাদের ধারণা, চুম্বন প্রায় ২ কোটি ১৫ লাখ বছর আগে গ্রেট এপসদের মধ্যে বিবর্তিত হয়েছিল।’
গবেষকেরা মানুষের নিকটতম প্রাচীন আত্মীয়, নিয়ান্ডারথালদের মধ্যেও চুম্বনের প্রমাণ পেয়েছেন, যারা প্রায় ৪০ হাজার বছর আগে বিলুপ্ত হয়ে যায়। ড. ব্রিন্ডল জানান, নিয়ান্ডারথালদের ডিএনএ নিয়ে একটি পূর্ববর্তী গবেষণায় দেখা গিয়েছিল, আধুনিক মানুষ এবং নিয়ান্ডারথালরা মুখগহ্বরের একই ধরনের জীবাণু ভাগ করে নিত।
ড. ব্রিন্ডল বলেন, ‘এর অর্থ হলো, দুটি প্রজাতি বিভক্ত হওয়ার পরও কয়েক লাখ বছর ধরে তাদের মধ্যে লালা বিনিময় হয়েছিল।’ এর থেকেই স্পষ্ট হয়, মানব এবং নিয়ান্ডারথালদের মধ্যে সম্ভবত ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ বা ‘স্মুচিং’ ঘটেছিল।
বিবর্তনগত ফ্যামিলি ট্রি তৈরি করার জন্য বিজ্ঞানীরা বিভিন্ন প্রাণীর মধ্যে চুম্বনের অনুরূপ আচরণ খুঁজে বের করেছেন। গবেষণায় নেকড়ে, প্রেইরি ডগ, এমনকি পোলার বিয়ার (মেরু ভালুক) এবং অ্যালবাট্রস পাখির মধ্যেও চুম্বনের বৈজ্ঞানিক সংজ্ঞার সঙ্গে মিলে যাওয়া আচরণের প্রমাণ মিলেছে।
যদিও এই গবেষণাটি চুম্বন কখন বিকশিত হয়েছে তা চিহ্নিত করে। তবে কেন এমন আচরণ বিকশিত হলো—এই বিবর্তনীয় ধাঁধার উত্তর দিতে পারেননি বিজ্ঞানীরা। এ নিয়ে একাধিক তত্ত্ব প্রচলিত রয়েছে। কেউ কেউ মনে করেন, এটি এপসদের মধ্যে ‘গ্রুমিং’ বা ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতার আচরণ থেকে এসেছে। আবার কারও মতে, এটি সঙ্গীর স্বাস্থ্য এবং উপযুক্ততা মূল্যায়ন করার একটি ঘনিষ্ঠ ও অন্তরঙ্গ উপায় হতে পারে।
ড. ব্রিন্ডল আশা করেন, এই গবেষণাটি ‘কেন’ প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে নতুন পথ খুলে দেবে। তিনি বলেন, ‘আমাদের বোঝা উচিত যে এটি এমন একটি আচরণ, যা আমরা আমাদের অ-মানব আত্মীয়দের সঙ্গে ভাগ করে নিই। এটিকে কেবল মানুষের রোমান্টিক আচরণ বলে উড়িয়ে না দিয়ে, এর উৎস নিয়ে আমাদের আরও গবেষণা করা উচিত।’

মানুষ থেকে শিম্পাঞ্জি, এমনকি মেরু ভালুক বা নেকড়ে পর্যন্ত—চুম্বন এক সর্বজনীন আচরণ। কিন্তু এই ঘনিষ্ঠ আচরণের জন্ম কবে? অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের একটি নতুন গবেষণা এই প্রশ্নের উত্তর দিয়েছে। তাঁদের গবেষণা অনুযায়ী, মুখ দিয়ে মুখ স্পর্শ করার এই আচরণটি প্রায় ২১ মিলিয়ন (২ কোটি ১০ লাখ) বছর আগে বিবর্তিত হয়েছিল। ধারণা করা হচ্ছে, মানুষ এবং অন্যান্য গ্রেট এপস বা বৃহৎ বানর প্রজাতির সাধারণ পূর্বপুরুষেরা সম্ভবত চুমুতে অভ্যস্ত ছিল।
গবেষকেরা মনে করছেন, এই গবেষণা প্রমাণ করে, চুম্বন মানব সমাজের নিজস্ব কোনো উদ্ভাবন নয়, বরং এটি সমগ্র প্রাণিজগতে বহু আগে থেকেই বিদ্যমান একটি বিবর্তনগত আচরণ।
চুম্বনের মতো একটি আবেগময় আচরণের উৎস বোঝার জন্য বিজ্ঞানীরা প্রথমে এর একটি সুনির্দিষ্ট বৈজ্ঞানিক সংজ্ঞা তৈরি করেন। ‘ইভোলিউশন অ্যান্ড হিউম্যান বিহেভিয়র’ জার্নালে প্রকাশিত এই গবেষণায় বিজ্ঞানীরা চুম্বনকে একটি ‘অ-আক্রমণাত্মক, নির্দেশিত মৌখিক-মৌখিক যোগাযোগ’ হিসেবে সংজ্ঞায়িত করেছেন, যেখানে ঠোঁট বা মুখের পারস্পরিক স্পর্শ ও ঘষাঘষি থাকবে, কিন্তু কোনো খাদ্য আদান-প্রদান হবে না।
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবর্তনীয় জীববিজ্ঞানী এবং প্রধান গবেষক ড. মাটিল্ডা ব্রিন্ডল ব্যাখ্যা করেন, ‘মানুষ, শিম্পাঞ্জি এবং বোনোবো—সবাই চুম্বন করে। তাই এটি সম্ভবত তাদের সবচেয়ে সাম্প্রতিক সাধারণ পূর্বপুরুষের মধ্যেও বিদ্যমান ছিল। আমাদের ধারণা, চুম্বন প্রায় ২ কোটি ১৫ লাখ বছর আগে গ্রেট এপসদের মধ্যে বিবর্তিত হয়েছিল।’
গবেষকেরা মানুষের নিকটতম প্রাচীন আত্মীয়, নিয়ান্ডারথালদের মধ্যেও চুম্বনের প্রমাণ পেয়েছেন, যারা প্রায় ৪০ হাজার বছর আগে বিলুপ্ত হয়ে যায়। ড. ব্রিন্ডল জানান, নিয়ান্ডারথালদের ডিএনএ নিয়ে একটি পূর্ববর্তী গবেষণায় দেখা গিয়েছিল, আধুনিক মানুষ এবং নিয়ান্ডারথালরা মুখগহ্বরের একই ধরনের জীবাণু ভাগ করে নিত।
ড. ব্রিন্ডল বলেন, ‘এর অর্থ হলো, দুটি প্রজাতি বিভক্ত হওয়ার পরও কয়েক লাখ বছর ধরে তাদের মধ্যে লালা বিনিময় হয়েছিল।’ এর থেকেই স্পষ্ট হয়, মানব এবং নিয়ান্ডারথালদের মধ্যে সম্ভবত ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ বা ‘স্মুচিং’ ঘটেছিল।
বিবর্তনগত ফ্যামিলি ট্রি তৈরি করার জন্য বিজ্ঞানীরা বিভিন্ন প্রাণীর মধ্যে চুম্বনের অনুরূপ আচরণ খুঁজে বের করেছেন। গবেষণায় নেকড়ে, প্রেইরি ডগ, এমনকি পোলার বিয়ার (মেরু ভালুক) এবং অ্যালবাট্রস পাখির মধ্যেও চুম্বনের বৈজ্ঞানিক সংজ্ঞার সঙ্গে মিলে যাওয়া আচরণের প্রমাণ মিলেছে।
যদিও এই গবেষণাটি চুম্বন কখন বিকশিত হয়েছে তা চিহ্নিত করে। তবে কেন এমন আচরণ বিকশিত হলো—এই বিবর্তনীয় ধাঁধার উত্তর দিতে পারেননি বিজ্ঞানীরা। এ নিয়ে একাধিক তত্ত্ব প্রচলিত রয়েছে। কেউ কেউ মনে করেন, এটি এপসদের মধ্যে ‘গ্রুমিং’ বা ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতার আচরণ থেকে এসেছে। আবার কারও মতে, এটি সঙ্গীর স্বাস্থ্য এবং উপযুক্ততা মূল্যায়ন করার একটি ঘনিষ্ঠ ও অন্তরঙ্গ উপায় হতে পারে।
ড. ব্রিন্ডল আশা করেন, এই গবেষণাটি ‘কেন’ প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে নতুন পথ খুলে দেবে। তিনি বলেন, ‘আমাদের বোঝা উচিত যে এটি এমন একটি আচরণ, যা আমরা আমাদের অ-মানব আত্মীয়দের সঙ্গে ভাগ করে নিই। এটিকে কেবল মানুষের রোমান্টিক আচরণ বলে উড়িয়ে না দিয়ে, এর উৎস নিয়ে আমাদের আরও গবেষণা করা উচিত।’

প্রাকৃতিক দুর্যোগের অন্যতম মারাত্মক রূপ সুনামি। পৃথিবীর বিভিন্ন উপকূলীয় অঞ্চলে ব্যাপক ক্ষতিসাধন করে এই দুর্যোগ। সমুদ্র থেকে উঠে আসা বিশাল ঢেউগুলোর কারণে উপকূলবর্তী এলাকায় প্রাণহানিসহ অর্থনৈতিক ও সামাজিক ক্ষয়ক্ষতি হয়। সুনামির পূর্বাভাস ও সতর্কতার মাধ্যমে ক্ষয়ক্ষতি কমানোর চেষ্টা করা হয়। তবে একে...
৩০ জুলাই ২০২৫
২০২১ সালে নাসার পাঠানো পারসিভিয়ারেন্স রোভার মঙ্গল গ্রহের জেজেরো ক্রেটারে অবতরণ করে। জীবনের সম্ভাব্য চিহ্ন অনুসন্ধানের পাশাপাশি গত চার বছর ধরে মঙ্গল গ্রহের পরিবেশগত বৈশিষ্ট্যও পরীক্ষা করছে এই রোভার। এটিতে সংযুক্ত সুপারক্যাম যন্ত্রের অডিও ও ইলেকট্রোম্যাগনেটিক রেকর্ডিং...
৬ দিন আগে
নতুন এক গবেষণায় উঠে এসেছে, মানুষের মস্তিষ্ক মোট পাঁচটি স্বতন্ত্র পর্ব অতিক্রম করে। এর মধ্যে কিশোর বয়স বা ‘অ্যাডোলেসেন্স’ আমাদের টেনে নিয়ে যায় ত্রিশের কোঠায়। যুক্তরাজ্যের কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, মানুষের মস্তিষ্কের গঠন ও কার্যকারিতার প্রধান চারটি মোড় আসে পর্যায়ক্রমে
১০ দিন আগে
সব ভূমিকম্পের সঙ্গেই যে ফোরশক হবে, এমনটা নয়। অনেক ক্ষেত্রেই কোনো ফোরশক ছাড়াই একটিমাত্র শক্তিশালী কম্পন (মেইনশক) দেখা যায়। এই কারণেই, ফোরশকগুলো মেইনশকের আগে ঘটলেও, বিজ্ঞানীরা এটিকে নির্ভরযোগ্য পূর্বাভাস হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন না।
১২ দিন আগে