নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

১৫ আগস্টকে কেন্দ্র করে জাতীয় নির্বাচনের মতো ষড়যন্ত্র চলছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আব্দুল মঈন খান।
কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সংঘর্ষে আহতদের দেখতে আজ মঙ্গলবার তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যান। সেখানেই তিনি সাংবাদিকদের কাছে এ কথা বলেন।
মঈন খান বলেন, ‘১৫ আগস্ট সামনে। এদিনকে সামনে রেখে জাতীয় নির্বাচনের মতোই ষড়যন্ত্র চলছে। আমাদের বিশ্বাস, জাগ্রত ছাত্র-জনতা সেই ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করবে।’
এ সময় সাধারণ মানুষের ভাষা বুঝে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাজ করা প্রয়োজন বলেও মন্তব্য করেন মঈন খান। তিনি বলেন, ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ছাত্র-জনতার রায়ে দায়িত্ব পেয়েছেন। দেশের ক্রান্তিকালে ছাত্র-জনতার ম্যান্ডেট নিয়েই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়েছে। এ সরকার জনগণের মৌলিক অধিকারের পাশাপাশি গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরিয়ে দিতে কাজ করবে।’
তিনি বলেন, ‘ছাত্র-জনতার পছন্দে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন হয়েছে। ফলে তাঁরা তাঁদের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করবে। ছাত্ররা প্রমাণ করেছে কোনো স্বৈরাচার সরকার নির্যাতন করে ক্ষমতায় থাকতে পারে না। তাঁদের এ সাফল্য বিশ্বের ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।’
এ সময় বিএনপির স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম জানান, আন্দোলনের সময় গুরুতর অবস্থায় ঢাকা মেডিকেলে ৭৬৯ জন ভর্তি হন। বর্তমানে ভর্তি রয়েছেন ১৯০ জন।

১৫ আগস্টকে কেন্দ্র করে জাতীয় নির্বাচনের মতো ষড়যন্ত্র চলছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আব্দুল মঈন খান।
কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সংঘর্ষে আহতদের দেখতে আজ মঙ্গলবার তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যান। সেখানেই তিনি সাংবাদিকদের কাছে এ কথা বলেন।
মঈন খান বলেন, ‘১৫ আগস্ট সামনে। এদিনকে সামনে রেখে জাতীয় নির্বাচনের মতোই ষড়যন্ত্র চলছে। আমাদের বিশ্বাস, জাগ্রত ছাত্র-জনতা সেই ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করবে।’
এ সময় সাধারণ মানুষের ভাষা বুঝে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাজ করা প্রয়োজন বলেও মন্তব্য করেন মঈন খান। তিনি বলেন, ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ছাত্র-জনতার রায়ে দায়িত্ব পেয়েছেন। দেশের ক্রান্তিকালে ছাত্র-জনতার ম্যান্ডেট নিয়েই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়েছে। এ সরকার জনগণের মৌলিক অধিকারের পাশাপাশি গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরিয়ে দিতে কাজ করবে।’
তিনি বলেন, ‘ছাত্র-জনতার পছন্দে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন হয়েছে। ফলে তাঁরা তাঁদের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করবে। ছাত্ররা প্রমাণ করেছে কোনো স্বৈরাচার সরকার নির্যাতন করে ক্ষমতায় থাকতে পারে না। তাঁদের এ সাফল্য বিশ্বের ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।’
এ সময় বিএনপির স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম জানান, আন্দোলনের সময় গুরুতর অবস্থায় ঢাকা মেডিকেলে ৭৬৯ জন ভর্তি হন। বর্তমানে ভর্তি রয়েছেন ১৯০ জন।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে চিকিৎসা নিতে না দিয়ে ‘হত্যা করা হয়েছে’ বলে মন্তব্য করেছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। এ হত্যার দায় থেকে সাবেক ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কখনোই মুক্তি পাবেন না বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
২ ঘণ্টা আগে
মা খালেদা জিয়ার হয়ে তাঁর ঋণ পরিশোধ এবং ক্ষমা প্রার্থনা করে তাঁর জন্য দোয়া চাইলেন তারেক রহমান। আজ বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নামাজে জানাজার আগে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। আজ বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) বেলা ৩টা ২ মিনিটে জানাজা শুরু হয়। শেষ হয় ৩টা সাড়ে ৫ মিনিটে।
৩ ঘণ্টা আগে
পোস্টে বলা হয়, খালেদা জিয়ার ইন্তেকালে গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে শোকবার্তা পাঠিয়েছে প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারত। আজ বুধবার দুপুরে জাতীয় সংসদ ভবনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের হাতে শোকবার্তা হস্তান্তর করেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এস জয়শঙ্কর।
৪ ঘণ্টা আগে
অবিভক্ত ব্রিটিশ ভারতের দিনাজপুরের জলপাইগুড়ি। ঘন সবুজ চা-বাগানে ঘেরা এক জনপদ। সেখানেই জন্ম সেদিনের খালেদা খানমের। ডাকনাম পুতুল। শান্ত, লাজুক সেই কিশোরী বড় হয়ে জনমানুষের নেত্রী তথা স্বাধীন রাষ্ট্রের প্রধান নির্বাহী হবেন—কেই-বা তখন ভাবতে পেরেছিল! কিন্তু নিয়তি তাঁকে সে পথেই ঠেলে দিয়েছিল।
৪ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে চিকিৎসা নিতে না দিয়ে ‘হত্যা করা হয়েছে’ বলে মন্তব্য করেছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। এ হত্যার দায় থেকে সাবেক ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কখনোই মুক্তি পাবেন না বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
আজ বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) বিকাল পৌনে ৩টার দিকে জাতীয় সংসদ ভবন এলাকায় খালেদা জিয়ার জানাজার আগে তাঁর জীবন ও কর্ম তুলে ধরেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। সে সময় এসব কথা বলেন তিনি।
নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘তিনি (খালেদা জিয়া) বলতেন, বিদেশে আমাদের বন্ধু আছে, কোনো প্রভু নেই।’
নজরুল ইসলাম আরও বলেন, ‘ফ্যাসিবাদী হাসিনার ব্যক্তিগত প্রতিহিংসার শিকার হয়ে মিথ্যা মামলায় ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে দুই বছরের বেশি সময় কারাগারে আবদ্ধ ছিলেন খালেদা জিয়া। চিকিৎসার অভাবে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন দেশনেত্রী। সমগ্র দেশবাসী সাক্ষী যে, হেঁটে তিনি কারাগারে প্রবেশ করেছিলেন, কিন্তু নির্জন কারাগার থেকে তিনি বের হলেন চরম অসুস্থতা নিয়ে।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য আরও বলেন, ‘দেশ-বিদেশের চিকিৎসকদের মতে, গৃহবন্দি থাকা চার বছরে তাঁকে বিদেশে নিয়ে উন্নত চিকিৎসা না দেওয়ায় তাঁর অসুস্থতা ক্রমে বেড়েছে। ফলে এভাবে মৃত্যুর কাছে হার মানতে হলো এ অপরাজেয় নেত্রীর। তাই এ মৃত্যুর দায় থেকে ফ্যাসিবাদী হাসিনা কখনো মুক্তি পাবেন না।’
বক্তব্যে খালেদা জিয়ার জন্ম, পারিবারিক পরিস্থিতি, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হওয়া, রাজনীতিতে উঠে আসাসহ বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরেন নজরুল ইসলাম।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে চিকিৎসা নিতে না দিয়ে ‘হত্যা করা হয়েছে’ বলে মন্তব্য করেছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। এ হত্যার দায় থেকে সাবেক ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কখনোই মুক্তি পাবেন না বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
আজ বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) বিকাল পৌনে ৩টার দিকে জাতীয় সংসদ ভবন এলাকায় খালেদা জিয়ার জানাজার আগে তাঁর জীবন ও কর্ম তুলে ধরেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। সে সময় এসব কথা বলেন তিনি।
নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘তিনি (খালেদা জিয়া) বলতেন, বিদেশে আমাদের বন্ধু আছে, কোনো প্রভু নেই।’
নজরুল ইসলাম আরও বলেন, ‘ফ্যাসিবাদী হাসিনার ব্যক্তিগত প্রতিহিংসার শিকার হয়ে মিথ্যা মামলায় ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে দুই বছরের বেশি সময় কারাগারে আবদ্ধ ছিলেন খালেদা জিয়া। চিকিৎসার অভাবে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন দেশনেত্রী। সমগ্র দেশবাসী সাক্ষী যে, হেঁটে তিনি কারাগারে প্রবেশ করেছিলেন, কিন্তু নির্জন কারাগার থেকে তিনি বের হলেন চরম অসুস্থতা নিয়ে।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য আরও বলেন, ‘দেশ-বিদেশের চিকিৎসকদের মতে, গৃহবন্দি থাকা চার বছরে তাঁকে বিদেশে নিয়ে উন্নত চিকিৎসা না দেওয়ায় তাঁর অসুস্থতা ক্রমে বেড়েছে। ফলে এভাবে মৃত্যুর কাছে হার মানতে হলো এ অপরাজেয় নেত্রীর। তাই এ মৃত্যুর দায় থেকে ফ্যাসিবাদী হাসিনা কখনো মুক্তি পাবেন না।’
বক্তব্যে খালেদা জিয়ার জন্ম, পারিবারিক পরিস্থিতি, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হওয়া, রাজনীতিতে উঠে আসাসহ বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরেন নজরুল ইসলাম।

১৫ আগস্টকে কেন্দ্র করে জাতীয় নির্বাচনের মতো ষড়যন্ত্র চলছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আব্দুল মঈন খান
১৩ আগস্ট ২০২৪
মা খালেদা জিয়ার হয়ে তাঁর ঋণ পরিশোধ এবং ক্ষমা প্রার্থনা করে তাঁর জন্য দোয়া চাইলেন তারেক রহমান। আজ বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নামাজে জানাজার আগে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। আজ বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) বেলা ৩টা ২ মিনিটে জানাজা শুরু হয়। শেষ হয় ৩টা সাড়ে ৫ মিনিটে।
৩ ঘণ্টা আগে
পোস্টে বলা হয়, খালেদা জিয়ার ইন্তেকালে গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে শোকবার্তা পাঠিয়েছে প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারত। আজ বুধবার দুপুরে জাতীয় সংসদ ভবনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের হাতে শোকবার্তা হস্তান্তর করেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এস জয়শঙ্কর।
৪ ঘণ্টা আগে
অবিভক্ত ব্রিটিশ ভারতের দিনাজপুরের জলপাইগুড়ি। ঘন সবুজ চা-বাগানে ঘেরা এক জনপদ। সেখানেই জন্ম সেদিনের খালেদা খানমের। ডাকনাম পুতুল। শান্ত, লাজুক সেই কিশোরী বড় হয়ে জনমানুষের নেত্রী তথা স্বাধীন রাষ্ট্রের প্রধান নির্বাহী হবেন—কেই-বা তখন ভাবতে পেরেছিল! কিন্তু নিয়তি তাঁকে সে পথেই ঠেলে দিয়েছিল।
৪ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

মা খালেদা জিয়ার হয়ে তাঁর ঋণ পরিশোধ এবং ক্ষমা প্রার্থনা করে তাঁর জন্য দোয়া চাইলেন তারেক রহমান। আজ বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নামাজে জানাজার আগে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
আজ বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) বেলা ৩টা ২ মিনিটে জানাজা শুরু হয়। শেষ হয় ৩টা সাড়ে ৫ মিনিটে।
পরিবার ও দলের পক্ষে বক্তব্যে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেন, ‘আমি উপস্থিত সকল ভাই-বোনদের বলছি, মরহুমা বেগম খালেদা জিয়া যদি কারও কাছ থেকে কোনো ঋণ নিয়ে থাকেন তাহলে আমাকে জানাবেন, আমি তা পরিশোধ করব। জীবিত থাকতে উনার কথায় কেউ আঘাত পেয়ে থাকলে আমি তাদের কাছে ক্ষমা চাচ্ছি। আল্লাহ তাঁকে বেহেশত দান করুক।’
দুপুর ২টার দিকে জাতীয় সংসদ ভবন এলাকায় নামাজে জানাজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। নামাজে ইমামতি করেন জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের খতিব আব্দুল মালেক।
নামাজে জানাজায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ও তিন বাহিনীর প্রধানেরা উপস্থিত ছিলেন। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জানাজায় অংশ নিতে দলটির বিপুল সংখ্যক নেতা-কর্মী ও সাধারণ মানুষ মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে জড়ো হয়েছেন।
খালেদা জিয়ার জানাজা ও দাফন ঘিরে জাতীয় সংসদ ভবন ও জিয়া উদ্যান এলাকায় নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। পুলিশ, বিজিবি, র্যাব, সেনাবাহিনীসহ গোয়েন্দা সংস্থার কয়েক হাজার সদস্য নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করছেন।

মা খালেদা জিয়ার হয়ে তাঁর ঋণ পরিশোধ এবং ক্ষমা প্রার্থনা করে তাঁর জন্য দোয়া চাইলেন তারেক রহমান। আজ বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নামাজে জানাজার আগে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
আজ বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) বেলা ৩টা ২ মিনিটে জানাজা শুরু হয়। শেষ হয় ৩টা সাড়ে ৫ মিনিটে।
পরিবার ও দলের পক্ষে বক্তব্যে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেন, ‘আমি উপস্থিত সকল ভাই-বোনদের বলছি, মরহুমা বেগম খালেদা জিয়া যদি কারও কাছ থেকে কোনো ঋণ নিয়ে থাকেন তাহলে আমাকে জানাবেন, আমি তা পরিশোধ করব। জীবিত থাকতে উনার কথায় কেউ আঘাত পেয়ে থাকলে আমি তাদের কাছে ক্ষমা চাচ্ছি। আল্লাহ তাঁকে বেহেশত দান করুক।’
দুপুর ২টার দিকে জাতীয় সংসদ ভবন এলাকায় নামাজে জানাজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। নামাজে ইমামতি করেন জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের খতিব আব্দুল মালেক।
নামাজে জানাজায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ও তিন বাহিনীর প্রধানেরা উপস্থিত ছিলেন। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জানাজায় অংশ নিতে দলটির বিপুল সংখ্যক নেতা-কর্মী ও সাধারণ মানুষ মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে জড়ো হয়েছেন।
খালেদা জিয়ার জানাজা ও দাফন ঘিরে জাতীয় সংসদ ভবন ও জিয়া উদ্যান এলাকায় নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। পুলিশ, বিজিবি, র্যাব, সেনাবাহিনীসহ গোয়েন্দা সংস্থার কয়েক হাজার সদস্য নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করছেন।

১৫ আগস্টকে কেন্দ্র করে জাতীয় নির্বাচনের মতো ষড়যন্ত্র চলছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আব্দুল মঈন খান
১৩ আগস্ট ২০২৪
সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে চিকিৎসা নিতে না দিয়ে ‘হত্যা করা হয়েছে’ বলে মন্তব্য করেছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। এ হত্যার দায় থেকে সাবেক ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কখনোই মুক্তি পাবেন না বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
২ ঘণ্টা আগে
পোস্টে বলা হয়, খালেদা জিয়ার ইন্তেকালে গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে শোকবার্তা পাঠিয়েছে প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারত। আজ বুধবার দুপুরে জাতীয় সংসদ ভবনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের হাতে শোকবার্তা হস্তান্তর করেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এস জয়শঙ্কর।
৪ ঘণ্টা আগে
অবিভক্ত ব্রিটিশ ভারতের দিনাজপুরের জলপাইগুড়ি। ঘন সবুজ চা-বাগানে ঘেরা এক জনপদ। সেখানেই জন্ম সেদিনের খালেদা খানমের। ডাকনাম পুতুল। শান্ত, লাজুক সেই কিশোরী বড় হয়ে জনমানুষের নেত্রী তথা স্বাধীন রাষ্ট্রের প্রধান নির্বাহী হবেন—কেই-বা তখন ভাবতে পেরেছিল! কিন্তু নিয়তি তাঁকে সে পথেই ঠেলে দিয়েছিল।
৪ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানাতে ঢাকা এসেছেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। আজ বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ভারতীয় বিমানবাহিনীর বিশেষ একটি ফ্লাইটে ঢাকায় পৌঁছে তিনি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে দেখা করেন এবং ভারতের শোকবার্তা তাঁর হাতে তুলে দেন।
বিএনপির ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে এসব কথা জানানো হয়।
পোস্টে বলা হয়, খালেদা জিয়ার ইন্তেকালে গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে শোকবার্তা পাঠিয়েছে প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারত। আজ বুধবার দুপুরে জাতীয় সংসদ ভবনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের হাতে শোকবার্তা হস্তান্তর করেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এস জয়শঙ্কর।
শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে আজ বিকেলেই ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর নয়াদিল্লির উদ্দেশে ঢাকা ছেড়ে যাওয়ার কথা রয়েছে।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানাতে ঢাকা এসেছেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। আজ বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ভারতীয় বিমানবাহিনীর বিশেষ একটি ফ্লাইটে ঢাকায় পৌঁছে তিনি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে দেখা করেন এবং ভারতের শোকবার্তা তাঁর হাতে তুলে দেন।
বিএনপির ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে এসব কথা জানানো হয়।
পোস্টে বলা হয়, খালেদা জিয়ার ইন্তেকালে গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে শোকবার্তা পাঠিয়েছে প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারত। আজ বুধবার দুপুরে জাতীয় সংসদ ভবনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের হাতে শোকবার্তা হস্তান্তর করেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এস জয়শঙ্কর।
শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে আজ বিকেলেই ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর নয়াদিল্লির উদ্দেশে ঢাকা ছেড়ে যাওয়ার কথা রয়েছে।

১৫ আগস্টকে কেন্দ্র করে জাতীয় নির্বাচনের মতো ষড়যন্ত্র চলছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আব্দুল মঈন খান
১৩ আগস্ট ২০২৪
সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে চিকিৎসা নিতে না দিয়ে ‘হত্যা করা হয়েছে’ বলে মন্তব্য করেছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। এ হত্যার দায় থেকে সাবেক ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কখনোই মুক্তি পাবেন না বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
২ ঘণ্টা আগে
মা খালেদা জিয়ার হয়ে তাঁর ঋণ পরিশোধ এবং ক্ষমা প্রার্থনা করে তাঁর জন্য দোয়া চাইলেন তারেক রহমান। আজ বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নামাজে জানাজার আগে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। আজ বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) বেলা ৩টা ২ মিনিটে জানাজা শুরু হয়। শেষ হয় ৩টা সাড়ে ৫ মিনিটে।
৩ ঘণ্টা আগে
অবিভক্ত ব্রিটিশ ভারতের দিনাজপুরের জলপাইগুড়ি। ঘন সবুজ চা-বাগানে ঘেরা এক জনপদ। সেখানেই জন্ম সেদিনের খালেদা খানমের। ডাকনাম পুতুল। শান্ত, লাজুক সেই কিশোরী বড় হয়ে জনমানুষের নেত্রী তথা স্বাধীন রাষ্ট্রের প্রধান নির্বাহী হবেন—কেই-বা তখন ভাবতে পেরেছিল! কিন্তু নিয়তি তাঁকে সে পথেই ঠেলে দিয়েছিল।
৪ ঘণ্টা আগেরেজা করিম, ঢাকা

অবিভক্ত ব্রিটিশ ভারতের দিনাজপুরের জলপাইগুড়ি। ঘন সবুজ চা-বাগানে ঘেরা এক জনপদ। সেখানেই জন্ম সেদিনের খালেদা খানমের। ডাকনাম পুতুল। শান্ত, লাজুক সেই কিশোরী বড় হয়ে জনমানুষের নেত্রী তথা স্বাধীন রাষ্ট্রের প্রধান নির্বাহী হবেন—কেই-বা তখন ভাবতে পেরেছিল! কিন্তু নিয়তি তাঁকে সে পথেই ঠেলে দিয়েছিল।
সময়ের প্রয়োজনে সংসারে মগ্ন গৃহবধূ থেকে খালেদা জিয়া নেমেছিলেন রাজনীতি নামের অচেনা-অজানা এক জটিল, বন্ধুর পথে। উত্থানপতন আর অনমনীয় সংগ্রামে ঘেরা চার দশকের দীর্ঘ যাত্রায় সেই একদা-অচেনা পথই তাঁকে বসিয়েছিল ‘আপসহীন’ নেত্রীর আসনে। গৃহবধূ খালেদা খানম হয়ে ওঠেন বাংলাদেশের রাজনীতির সবচেয়ে প্রভাবশালী নেতাদের একজন। তিনবারের প্রধানমন্ত্রী।
খালেদা জিয়ার জন্ম ১৯৪৬ সালের ১৫ আগস্ট। কৈশোর ও যৌবনের খালেদা খানম ১৯৬০ সালে তৎকালীন তরুণ সেনা কর্মকর্তা জিয়াউর রহমানের সঙ্গে বিয়ের পর হলেন খালেদা জিয়া। তখনো গৃহকোণেই সীমিত ছিল এই নামের বিচরণ। ১৯৭৫ সালের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর অনিশ্চয়তায় ঘেরা পরিবেশে সেনাবাহিনীর উপপ্রধান জিয়াউর রহমান পর্যায়ক্রমে হলেন রাষ্ট্রপতি। তখন থেকে রাষ্ট্রীয় সফর, সামাজিক কর্মকাণ্ড এবং আনুষ্ঠানিক দায়িত্ব পালনের মধ্য দিয়ে ধীরে ধীরে রাষ্ট্রীয় ও রাজনৈতিক পরিবেশের সঙ্গে পরিচিত হতে থাকেন খালেদা জিয়া। ১৯৮১ সালে স্বামী জিয়াউর রহমানের নির্মম হত্যাকাণ্ড তাঁর জীবনের মোড় একেবারেই ঘুরিয়ে দেয়। জিয়ার হাতে গড়া বিএনপি তখন আকস্মিকভাবে নেতৃত্বের সংকটে পড়ে দিশাহীন। এই অবস্থায় ১৯৮২ সালের ৩ জানুয়ারি দলের নেতা-কর্মীদের ঐকান্তিক আহ্বানে বিএনপিতে যোগ দেন খালেদা জিয়া। সময়ের প্রয়োজনে এভাবে তিনি প্রায় হঠাৎ করে চলে আসেন জাতীয় রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দুতে।
১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ তৎকালীন সেনাপ্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ বিএনপিদলীয় রাষ্ট্রপতি বিচারপতি আব্দুস সাত্তারকে ক্ষমতাচ্যুত করে ক্ষমতা দখল করেন। এরশাদের অবশ্য দাবি ছিল দুর্নীতি, নাজুক অর্থনীতিসহ সার্বিক অবস্থা সামলাতে তাঁকেই দায়িত্ব নিতে বলেছিলেন বয়োবৃদ্ধ সাত্তার। খালেদা জিয়া শুরুতে এরশাদের এই ভূমিকার বিরোধিতায় সোচ্চার হয়েছিলেন। দল ক্রমেই তাঁর ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ে। ১৯৮৩ সালের মার্চ মাসে তিনি বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান হন। সে বছরেরই ১ এপ্রিল দলের বর্ধিত সভায় প্রথম বক্তব্য দেন। বিচারপতি সাত্তার অসুস্থ হয়ে পড়লে খালেদা জিয়া দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮৪ সালের ১০ মে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় দলের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। প্রসঙ্গত, জেন্ডার-সচেতন ‘চেয়ারপারসন’ প্রত্যয়টি এ দেশে চালু হয় আরও অনেক পরে। ১৯৮৪ সালের মে থেকে খালেদা জিয়ার সুদৃঢ় নেতৃত্বেই বিএনপি ক্রমে সংগঠিত হয়ে পরিপূর্ণভাবে বিকশিত হয়।
গৃহবধূর দায়িত্ব থেকে রাজনীতির কঠিন পথে চলার কাজটা সহজ ছিল না খালেদা জিয়ার জন্য। কিন্তু অভিজ্ঞতা না থাকলেও ধৈর্য, পরিশ্রম এবং সহজাত সাংগঠনিক দক্ষতা পুঁজি করে দলকে এগিয়ে নিতে থাকেন। তুলনামূলকভাবে নিতান্ত নবীন দল বিএনপিকে ধীরে ধীরে জেলা ও থানা পর্যায়ে পুনর্গঠন করেন। দলের তৃণমূলকে সক্রিয় করা এবং নারী ভোটারদের রাজনীতিতে সম্পৃক্ত করার ক্ষেত্রে তাঁর ভূমিকা ছিল উল্লেখযোগ্য। সামরিক শাসক এরশাদের বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনার আন্দোলনে তিনি হয়ে ওঠেন অন্যতম প্রধান মুখ। এরশাদের স্বৈরাচারী শাসনের বিরুদ্ধে গণ-আন্দোলনে তাঁর আপসহীন নেতৃত্বে বিএনপি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। ১৯৯০ সালে এরশাদের পতনের পরের বছর অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচনে বিজয়ের মাধ্যমে তিনি হন দেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী। সংসদীয় গণতন্ত্র পুনঃপ্রবর্তনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় তাঁর শাসনামল। এরপর ১৯৯৬, ২০০১ সালসহ মোট তিন দফায় প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি।
১৯৯৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত ষষ্ঠ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়ী হয়ে সরকার গঠন করেছিল বিএনপি। তবে সেবারের নির্বাচন বেশির ভাগ দল বর্জন করে। বিএনপির সেই সরকারের মেয়াদ ছিল খুব কম। ’৯৬-এর জুনে অনুষ্ঠিত সপ্তম সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসে আওয়ামী লীগ। তবে ২০০১ সালে জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে চারদলীয় জোট সরকার গঠন করে বড়সড় সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ক্ষমতায় ফেরেন খালেদা জিয়া। এ সময় অবকাঠামো উন্নয়ন, বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বিস্তারসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে অগ্রগতি হয়। প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থাপনা এগিয়ে নিতে ২০০৩ সালে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় গঠন করে তাঁর সরকার। প্রাথমিক শিক্ষায় বৃত্তি ও উপবৃত্তিও চালু হয় সে বছর। পাশাপাশি এই সময় রাজনৈতিক সংঘাতও চলমান ছিল। নানা দিকে সাফল্যের পাশাপাশি দুর্নীতির অভিযোগ, উগ্রবাদের উত্থানসহ কিছু বিতর্কিত বিষয়ও তাঁর শাসনামলের অংশ হয়ে ওঠে; যা বাংলাদেশের রাজনীতির চিরাচরিত বাস্তবতারই প্রতিফলন।
খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক ছিল গণ-অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের প্রধান শেখ হাসিনার সঙ্গে তাঁর দীর্ঘদিনের দ্বন্দ্ব। একসময় পাশাপাশি এরশাদের সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে লড়লেও পরবর্তী সময়ে এই দুই নারীর নেতৃত্বেই বাংলাদেশের রাজনীতি তীব্রভাবে দুই মেরুতে আলাদা হয়। কয়েক দশক ধরে তাঁদের নেতৃত্বাধীন দুই দল পর্যায়ক্রমে দেশের রাজনীতি নিয়ন্ত্রণ করেছে ক্ষমতায় ও বিরোধী দলে থেকে।
খালেদা জিয়ার তৃতীয় দফা প্রধানমন্ত্রিত্বের শেষ দিকে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গন অস্থির হয়ে ওঠে। পরিণতিতে ২০০৭ সালে ক্ষমতায় আসে সেনা-সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার। রাজনৈতিক আবহে এই পরিবর্তন প্রায় সব রাজনৈতিক নেতার জন্যই সংকট ডেকে আনে। খালেদা জিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়, এমনকি রাজনীতি থেকে স্থায়ীভাবে তাঁকে দূরে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলে। গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয় তাঁর বড় ছেলে তারেক রহমানকে। কিন্তু কারাবাস, মামলাসহ নানা চাপের মধ্যেও খালেদা জিয়া নতি স্বীকার করেননি। দেশের রাজনীতিতে ‘ওয়ান-ইলেভেন’ হিসেবে পরিচিত এই পর্বে রাজনীতিক হিসেবে তাঁর দৃঢ়তার বিষয়টি নতুন করে সামনে আসে।
২০০৮ সালের ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট প্রায় ২৬০টি আসন পেয়ে বিশাল জয় পায়। বড় সংখ্যাগরিষ্ঠতার সুবাদে মহাজোট সরকার ক্রমেই চরম কর্তৃত্বপরায়ণ হয়ে ওঠে। সে আমলে নানা যুক্তি দেখিয়ে খালেদা জিয়াকে তাঁর দীর্ঘ ২৮ বছরের আবাসস্থল সেনাসদর এলাকার মইনুল রোডের বাসা থেকে উচ্ছেদ করা হয়। ২০১৪ সালের বিতর্কিত নির্বাচন বর্জনের পর মৃত্যু পর্যন্ত আর সংসদে ফেরা হয়নি বিএনপি নেতার। এর মধ্যে বড় ছেলে তারেক রহমান কারামুক্ত হয়ে চিকিৎসার জন্য দেশ ছেড়ে লন্ডনে যান। শুরু হয় তাঁর নির্বাসিত জীবন। অন্যদিকে ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকো মারা যান। একের পর এক ধাক্কার মধ্যে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি দুর্নীতির মামলায় কারাগারে যেতে হয় খালেদা জিয়াকে। ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে দুই বছরের বন্দিজীবনের পর ২০২০ সালের মার্চে নির্বাহী আদেশে শর্ত সাপেক্ষে বাড়িতে থাকার অনুমতি পান বিএনপির চেয়ারপারসন। তবে কারাগার থেকে বাড়িতে এলেও আগের মতো আর রাজনীতিতে সক্রিয় হয়ে ওঠা হয়নি তাঁর। হৃদ্রোগ, ডায়াবেটিস, লিভার সিরোসিস, কিডনি জটিলতাসহ নানা গুরুতর শারীরিক সমস্যা জটিল আকার ধারণ করে। মাঝে মাঝেই হাসপাতালে যেতে হচ্ছিল তাঁকে। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে বিদেশে নিতে পরামর্শ দিয়েছিলেন চিকিৎসকেরা। কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকারের অনুমোদন না পাওয়ায় তা সম্ভব হয়নি। অবশেষে চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকারের নির্বাহী আদেশে দ্রুত কারামুক্ত হন খালেদা জিয়া। পরে একে একে সব মামলা থেকে খালাস পান তিনি। মুক্ত হওয়ার পর নয়াপল্টনে বিএনপির জনসভায় দীর্ঘদিন পর ভিডিও বার্তায় বক্তব্য দেন খালেদা জিয়া। সেই বক্তৃতায় অহিংস থেকে নতুন বাংলাদেশ গড়ার আহ্বান জানান তিনি। উন্নত চিকিৎসার জন্য চলতি বছরের শুরুতে লন্ডনে যান খালেদা জিয়া। সেখান থেকে কয়েক মাস পর অনেকটাই সুস্থ হয়ে দেশে ফেরেন। তবে অসুস্থতা পিছু ছাড়েনি তাঁর। তখন থেকে প্রায়ই তাঁকে হাসপাতালে যেতে হয়েছে।
খালেদা জিয়ার বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের মূল্যায়ন করতে গিয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বাংলাদেশের রাজনীতিতে তিনি এমন এক ব্যক্তিত্বে পরিণত হয়েছিলেন, যাঁকে নিয়ে কোনো বিতর্ক নেই। দেশপ্রেম, গণতন্ত্রের জন্য ত্যাগ ও সংগ্রামে তিনি অনন্য রাজনীতিবিদ হিসেবে থাকবেন। রাজনীতির জন্য তিনি নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন। তাঁকে বিদেশে চিকিৎসা করাতে দেওয়া হয়নি। আন্দোলন-সংগ্রামে দৃঢ়তা দেখিয়ে দেশের মানুষের মাঝে গণতান্ত্রিক স্পৃহা জাগিয়ে রাখার চেষ্টা করেছিলেন তিনি।’
৩৭ মামলা মোকাবিলা
এক-এগারোর তত্ত্বাবধায়ক সরকার ও রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ শেখ হাসিনার শাসনামলে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি মামলা হয়েছিল। ফখরুদ্দীন আহমদের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে তাঁর বিরুদ্ধে করা হয় পাঁচটি দুর্নীতির মামলা। পরবর্তী সময়ে আওয়ামী লীগ সরকারের টানা দেড় দশকের শাসনে করা হয় আরও ৩২টি। শেষ পর্যন্ত এসব মামলার সব কটি থেকে নিষ্কৃতি পেয়েছেন খালেদা জিয়া। কিছু মামলায় বেকসুর খালাস আর কিছু মামলা থেকে অব্যাহতি পান তিনি। সর্বশেষ চলতি বছরের ১৯ ফেব্রুয়ারি নাইকো দুর্নীতি মামলা থেকে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ তাঁকে খালাস দেন।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে খালেদা জিয়াকে প্রায় দুই বছর কারাভোগ করতে হয়। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সাজাপ্রাপ্ত ওই দুই মামলায় রাষ্ট্রপতি তাঁকে ক্ষমা করেন; কিন্তু খালেদা জিয়া আইনি লড়াই চালিয়ে যান। সর্বশেষ উচ্চ আদালত থেকে তিনি ওই দুই মামলায় খালাস পান।

অবিভক্ত ব্রিটিশ ভারতের দিনাজপুরের জলপাইগুড়ি। ঘন সবুজ চা-বাগানে ঘেরা এক জনপদ। সেখানেই জন্ম সেদিনের খালেদা খানমের। ডাকনাম পুতুল। শান্ত, লাজুক সেই কিশোরী বড় হয়ে জনমানুষের নেত্রী তথা স্বাধীন রাষ্ট্রের প্রধান নির্বাহী হবেন—কেই-বা তখন ভাবতে পেরেছিল! কিন্তু নিয়তি তাঁকে সে পথেই ঠেলে দিয়েছিল।
সময়ের প্রয়োজনে সংসারে মগ্ন গৃহবধূ থেকে খালেদা জিয়া নেমেছিলেন রাজনীতি নামের অচেনা-অজানা এক জটিল, বন্ধুর পথে। উত্থানপতন আর অনমনীয় সংগ্রামে ঘেরা চার দশকের দীর্ঘ যাত্রায় সেই একদা-অচেনা পথই তাঁকে বসিয়েছিল ‘আপসহীন’ নেত্রীর আসনে। গৃহবধূ খালেদা খানম হয়ে ওঠেন বাংলাদেশের রাজনীতির সবচেয়ে প্রভাবশালী নেতাদের একজন। তিনবারের প্রধানমন্ত্রী।
খালেদা জিয়ার জন্ম ১৯৪৬ সালের ১৫ আগস্ট। কৈশোর ও যৌবনের খালেদা খানম ১৯৬০ সালে তৎকালীন তরুণ সেনা কর্মকর্তা জিয়াউর রহমানের সঙ্গে বিয়ের পর হলেন খালেদা জিয়া। তখনো গৃহকোণেই সীমিত ছিল এই নামের বিচরণ। ১৯৭৫ সালের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর অনিশ্চয়তায় ঘেরা পরিবেশে সেনাবাহিনীর উপপ্রধান জিয়াউর রহমান পর্যায়ক্রমে হলেন রাষ্ট্রপতি। তখন থেকে রাষ্ট্রীয় সফর, সামাজিক কর্মকাণ্ড এবং আনুষ্ঠানিক দায়িত্ব পালনের মধ্য দিয়ে ধীরে ধীরে রাষ্ট্রীয় ও রাজনৈতিক পরিবেশের সঙ্গে পরিচিত হতে থাকেন খালেদা জিয়া। ১৯৮১ সালে স্বামী জিয়াউর রহমানের নির্মম হত্যাকাণ্ড তাঁর জীবনের মোড় একেবারেই ঘুরিয়ে দেয়। জিয়ার হাতে গড়া বিএনপি তখন আকস্মিকভাবে নেতৃত্বের সংকটে পড়ে দিশাহীন। এই অবস্থায় ১৯৮২ সালের ৩ জানুয়ারি দলের নেতা-কর্মীদের ঐকান্তিক আহ্বানে বিএনপিতে যোগ দেন খালেদা জিয়া। সময়ের প্রয়োজনে এভাবে তিনি প্রায় হঠাৎ করে চলে আসেন জাতীয় রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দুতে।
১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ তৎকালীন সেনাপ্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ বিএনপিদলীয় রাষ্ট্রপতি বিচারপতি আব্দুস সাত্তারকে ক্ষমতাচ্যুত করে ক্ষমতা দখল করেন। এরশাদের অবশ্য দাবি ছিল দুর্নীতি, নাজুক অর্থনীতিসহ সার্বিক অবস্থা সামলাতে তাঁকেই দায়িত্ব নিতে বলেছিলেন বয়োবৃদ্ধ সাত্তার। খালেদা জিয়া শুরুতে এরশাদের এই ভূমিকার বিরোধিতায় সোচ্চার হয়েছিলেন। দল ক্রমেই তাঁর ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ে। ১৯৮৩ সালের মার্চ মাসে তিনি বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান হন। সে বছরেরই ১ এপ্রিল দলের বর্ধিত সভায় প্রথম বক্তব্য দেন। বিচারপতি সাত্তার অসুস্থ হয়ে পড়লে খালেদা জিয়া দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮৪ সালের ১০ মে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় দলের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। প্রসঙ্গত, জেন্ডার-সচেতন ‘চেয়ারপারসন’ প্রত্যয়টি এ দেশে চালু হয় আরও অনেক পরে। ১৯৮৪ সালের মে থেকে খালেদা জিয়ার সুদৃঢ় নেতৃত্বেই বিএনপি ক্রমে সংগঠিত হয়ে পরিপূর্ণভাবে বিকশিত হয়।
গৃহবধূর দায়িত্ব থেকে রাজনীতির কঠিন পথে চলার কাজটা সহজ ছিল না খালেদা জিয়ার জন্য। কিন্তু অভিজ্ঞতা না থাকলেও ধৈর্য, পরিশ্রম এবং সহজাত সাংগঠনিক দক্ষতা পুঁজি করে দলকে এগিয়ে নিতে থাকেন। তুলনামূলকভাবে নিতান্ত নবীন দল বিএনপিকে ধীরে ধীরে জেলা ও থানা পর্যায়ে পুনর্গঠন করেন। দলের তৃণমূলকে সক্রিয় করা এবং নারী ভোটারদের রাজনীতিতে সম্পৃক্ত করার ক্ষেত্রে তাঁর ভূমিকা ছিল উল্লেখযোগ্য। সামরিক শাসক এরশাদের বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনার আন্দোলনে তিনি হয়ে ওঠেন অন্যতম প্রধান মুখ। এরশাদের স্বৈরাচারী শাসনের বিরুদ্ধে গণ-আন্দোলনে তাঁর আপসহীন নেতৃত্বে বিএনপি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। ১৯৯০ সালে এরশাদের পতনের পরের বছর অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচনে বিজয়ের মাধ্যমে তিনি হন দেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী। সংসদীয় গণতন্ত্র পুনঃপ্রবর্তনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় তাঁর শাসনামল। এরপর ১৯৯৬, ২০০১ সালসহ মোট তিন দফায় প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি।
১৯৯৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত ষষ্ঠ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়ী হয়ে সরকার গঠন করেছিল বিএনপি। তবে সেবারের নির্বাচন বেশির ভাগ দল বর্জন করে। বিএনপির সেই সরকারের মেয়াদ ছিল খুব কম। ’৯৬-এর জুনে অনুষ্ঠিত সপ্তম সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসে আওয়ামী লীগ। তবে ২০০১ সালে জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে চারদলীয় জোট সরকার গঠন করে বড়সড় সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ক্ষমতায় ফেরেন খালেদা জিয়া। এ সময় অবকাঠামো উন্নয়ন, বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বিস্তারসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে অগ্রগতি হয়। প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থাপনা এগিয়ে নিতে ২০০৩ সালে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় গঠন করে তাঁর সরকার। প্রাথমিক শিক্ষায় বৃত্তি ও উপবৃত্তিও চালু হয় সে বছর। পাশাপাশি এই সময় রাজনৈতিক সংঘাতও চলমান ছিল। নানা দিকে সাফল্যের পাশাপাশি দুর্নীতির অভিযোগ, উগ্রবাদের উত্থানসহ কিছু বিতর্কিত বিষয়ও তাঁর শাসনামলের অংশ হয়ে ওঠে; যা বাংলাদেশের রাজনীতির চিরাচরিত বাস্তবতারই প্রতিফলন।
খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক ছিল গণ-অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের প্রধান শেখ হাসিনার সঙ্গে তাঁর দীর্ঘদিনের দ্বন্দ্ব। একসময় পাশাপাশি এরশাদের সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে লড়লেও পরবর্তী সময়ে এই দুই নারীর নেতৃত্বেই বাংলাদেশের রাজনীতি তীব্রভাবে দুই মেরুতে আলাদা হয়। কয়েক দশক ধরে তাঁদের নেতৃত্বাধীন দুই দল পর্যায়ক্রমে দেশের রাজনীতি নিয়ন্ত্রণ করেছে ক্ষমতায় ও বিরোধী দলে থেকে।
খালেদা জিয়ার তৃতীয় দফা প্রধানমন্ত্রিত্বের শেষ দিকে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গন অস্থির হয়ে ওঠে। পরিণতিতে ২০০৭ সালে ক্ষমতায় আসে সেনা-সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার। রাজনৈতিক আবহে এই পরিবর্তন প্রায় সব রাজনৈতিক নেতার জন্যই সংকট ডেকে আনে। খালেদা জিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়, এমনকি রাজনীতি থেকে স্থায়ীভাবে তাঁকে দূরে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলে। গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয় তাঁর বড় ছেলে তারেক রহমানকে। কিন্তু কারাবাস, মামলাসহ নানা চাপের মধ্যেও খালেদা জিয়া নতি স্বীকার করেননি। দেশের রাজনীতিতে ‘ওয়ান-ইলেভেন’ হিসেবে পরিচিত এই পর্বে রাজনীতিক হিসেবে তাঁর দৃঢ়তার বিষয়টি নতুন করে সামনে আসে।
২০০৮ সালের ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট প্রায় ২৬০টি আসন পেয়ে বিশাল জয় পায়। বড় সংখ্যাগরিষ্ঠতার সুবাদে মহাজোট সরকার ক্রমেই চরম কর্তৃত্বপরায়ণ হয়ে ওঠে। সে আমলে নানা যুক্তি দেখিয়ে খালেদা জিয়াকে তাঁর দীর্ঘ ২৮ বছরের আবাসস্থল সেনাসদর এলাকার মইনুল রোডের বাসা থেকে উচ্ছেদ করা হয়। ২০১৪ সালের বিতর্কিত নির্বাচন বর্জনের পর মৃত্যু পর্যন্ত আর সংসদে ফেরা হয়নি বিএনপি নেতার। এর মধ্যে বড় ছেলে তারেক রহমান কারামুক্ত হয়ে চিকিৎসার জন্য দেশ ছেড়ে লন্ডনে যান। শুরু হয় তাঁর নির্বাসিত জীবন। অন্যদিকে ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকো মারা যান। একের পর এক ধাক্কার মধ্যে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি দুর্নীতির মামলায় কারাগারে যেতে হয় খালেদা জিয়াকে। ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে দুই বছরের বন্দিজীবনের পর ২০২০ সালের মার্চে নির্বাহী আদেশে শর্ত সাপেক্ষে বাড়িতে থাকার অনুমতি পান বিএনপির চেয়ারপারসন। তবে কারাগার থেকে বাড়িতে এলেও আগের মতো আর রাজনীতিতে সক্রিয় হয়ে ওঠা হয়নি তাঁর। হৃদ্রোগ, ডায়াবেটিস, লিভার সিরোসিস, কিডনি জটিলতাসহ নানা গুরুতর শারীরিক সমস্যা জটিল আকার ধারণ করে। মাঝে মাঝেই হাসপাতালে যেতে হচ্ছিল তাঁকে। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে বিদেশে নিতে পরামর্শ দিয়েছিলেন চিকিৎসকেরা। কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকারের অনুমোদন না পাওয়ায় তা সম্ভব হয়নি। অবশেষে চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকারের নির্বাহী আদেশে দ্রুত কারামুক্ত হন খালেদা জিয়া। পরে একে একে সব মামলা থেকে খালাস পান তিনি। মুক্ত হওয়ার পর নয়াপল্টনে বিএনপির জনসভায় দীর্ঘদিন পর ভিডিও বার্তায় বক্তব্য দেন খালেদা জিয়া। সেই বক্তৃতায় অহিংস থেকে নতুন বাংলাদেশ গড়ার আহ্বান জানান তিনি। উন্নত চিকিৎসার জন্য চলতি বছরের শুরুতে লন্ডনে যান খালেদা জিয়া। সেখান থেকে কয়েক মাস পর অনেকটাই সুস্থ হয়ে দেশে ফেরেন। তবে অসুস্থতা পিছু ছাড়েনি তাঁর। তখন থেকে প্রায়ই তাঁকে হাসপাতালে যেতে হয়েছে।
খালেদা জিয়ার বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের মূল্যায়ন করতে গিয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বাংলাদেশের রাজনীতিতে তিনি এমন এক ব্যক্তিত্বে পরিণত হয়েছিলেন, যাঁকে নিয়ে কোনো বিতর্ক নেই। দেশপ্রেম, গণতন্ত্রের জন্য ত্যাগ ও সংগ্রামে তিনি অনন্য রাজনীতিবিদ হিসেবে থাকবেন। রাজনীতির জন্য তিনি নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন। তাঁকে বিদেশে চিকিৎসা করাতে দেওয়া হয়নি। আন্দোলন-সংগ্রামে দৃঢ়তা দেখিয়ে দেশের মানুষের মাঝে গণতান্ত্রিক স্পৃহা জাগিয়ে রাখার চেষ্টা করেছিলেন তিনি।’
৩৭ মামলা মোকাবিলা
এক-এগারোর তত্ত্বাবধায়ক সরকার ও রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ শেখ হাসিনার শাসনামলে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি মামলা হয়েছিল। ফখরুদ্দীন আহমদের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে তাঁর বিরুদ্ধে করা হয় পাঁচটি দুর্নীতির মামলা। পরবর্তী সময়ে আওয়ামী লীগ সরকারের টানা দেড় দশকের শাসনে করা হয় আরও ৩২টি। শেষ পর্যন্ত এসব মামলার সব কটি থেকে নিষ্কৃতি পেয়েছেন খালেদা জিয়া। কিছু মামলায় বেকসুর খালাস আর কিছু মামলা থেকে অব্যাহতি পান তিনি। সর্বশেষ চলতি বছরের ১৯ ফেব্রুয়ারি নাইকো দুর্নীতি মামলা থেকে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ তাঁকে খালাস দেন।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে খালেদা জিয়াকে প্রায় দুই বছর কারাভোগ করতে হয়। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সাজাপ্রাপ্ত ওই দুই মামলায় রাষ্ট্রপতি তাঁকে ক্ষমা করেন; কিন্তু খালেদা জিয়া আইনি লড়াই চালিয়ে যান। সর্বশেষ উচ্চ আদালত থেকে তিনি ওই দুই মামলায় খালাস পান।

১৫ আগস্টকে কেন্দ্র করে জাতীয় নির্বাচনের মতো ষড়যন্ত্র চলছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আব্দুল মঈন খান
১৩ আগস্ট ২০২৪
সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে চিকিৎসা নিতে না দিয়ে ‘হত্যা করা হয়েছে’ বলে মন্তব্য করেছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। এ হত্যার দায় থেকে সাবেক ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কখনোই মুক্তি পাবেন না বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
২ ঘণ্টা আগে
মা খালেদা জিয়ার হয়ে তাঁর ঋণ পরিশোধ এবং ক্ষমা প্রার্থনা করে তাঁর জন্য দোয়া চাইলেন তারেক রহমান। আজ বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নামাজে জানাজার আগে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। আজ বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) বেলা ৩টা ২ মিনিটে জানাজা শুরু হয়। শেষ হয় ৩টা সাড়ে ৫ মিনিটে।
৩ ঘণ্টা আগে
পোস্টে বলা হয়, খালেদা জিয়ার ইন্তেকালে গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে শোকবার্তা পাঠিয়েছে প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারত। আজ বুধবার দুপুরে জাতীয় সংসদ ভবনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের হাতে শোকবার্তা হস্তান্তর করেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এস জয়শঙ্কর।
৪ ঘণ্টা আগে