Ajker Patrika

সীতাকুণ্ডের ঘটনায় নিরপেক্ষ তদন্ত ও ক্ষতিপূরণের দাবি বিএনপির

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ০৬ জুন ২০২২, ১৬: ২৯
সীতাকুণ্ডের ঘটনায় নিরপেক্ষ তদন্ত ও ক্ষতিপূরণের দাবি বিএনপির

সীতাকুণ্ডের দুর্ঘটনার জন্য সরকারকে দায়ী করে ঘটনার তদন্তে নিরপেক্ষ তদন্ত কমিশন গঠনের দাবি জানিয়েছে বিএনপি। একই সঙ্গে দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের পরিবারকে যথাযথ ক্ষতিপূরণ দেওয়ারও দাবি জানিয়েছে দলটি। আজ সোমবার দুপুরে গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই দাবি জানান। 

সীতাকুণ্ডের দুর্ঘটনায় শোক জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সীতাকুণ্ডের যে ঘটনা, আবারও আমাদের গোটা জাতির বিবেককে নাড়া দিয়ে গেল। এটা একটা মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। এই ঘটনার ব্যাপারে শোক প্রকাশের ভাষাই আমাদের জানা নেই।’ 

সরকারের যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে ফখরুল বলেন, ‘কতটা দায়িত্বজ্ঞানহীন (সরকার) হলে, কতটা অযোগ্যতা থাকলে এই ধরনের একটা দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। এই সরকার, জনগণের কাছে যাদের কোনো জবাবদিহি নেই, কোনো কর্তব্যবোধ নেই, কোনো দায়িত্ববোধও নেই। সোজা কথায় একটা দায়িত্বহীন সরকার। জনগণের প্রতি যে ন্যূনতম একটা দায়িত্ববোধ, একদমই নেই, একেবারেই নেই।’ 

বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘বর্তমান সরকারের সক্ষমতা একটা জায়গায়, জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করা, মিথ্যা কথা বলা, ভাবের জগতে বাস করা। যখন দেশের ৪২ শতাংশ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করে, তখন তাদের মন্ত্রীরা বলেন যে, দেশ ইউরোপ-আমেরিকার মতো হয়ে যাচ্ছে। এখানে মানুষের অভাব নেই, মানুষ মোটা চাল খায় না, সরু চাল খায়। তারা যে কতটা দায়িত্বজ্ঞানহীন হয়ে গেছে, মূল বিষয়টা থেকে দূরে সরে গেছে, আলাদা জগতে বাস করছে, যেটার সঙ্গে বাস্তবতার কোনো মিল নেই।’ 

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি বাংলাদেশের অবকাঠামো কিছু তারা (সরকার) তৈরি করেছে। কিন্তু সেই সঙ্গে যে বিষয়গুলো সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন, সেটা নেই। তথাকথিত অবকাঠামো নির্মাণের নামে নিজেদের পকেট ভারী করা, দুর্নীতি করা, এগুলোই তাদের মূল লক্ষ্য। জনগণের নিরাপত্তার জন্য, তাদের ভালো রাখার জন্য এই সরকারের কোনো দায়বদ্ধতা নেই।’ 

রাজনীতি সম্পর্কিত পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ভোর থেকে তারেক রহমানের গণসংবর্ধনাস্থলের দিকে জনস্রোত, ৩০০ ফিট লোকারণ্য

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০: ০৬
ভোর থেকে তারেক রহমানের গণসংবর্ধনাস্থলের দিকে জনস্রোত, ৩০০ ফিট লোকারণ্য

দীর্ঘ ১৭ বছরের নির্বাসিত জীবনের অবসান ঘটিয়ে আজ স্বদেশে ফিরছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তাঁর এই ঐতিহাসিক প্রত্যাবর্তনকে কেন্দ্র করে রাজধানী ঢাকার পূর্বাচল সংলগ্ন ‘জুলাই ৩৬ এক্সপ্রেসওয়ে’ (৩০০ ফিট এলাকা) এখন এক জনসমুদ্রে পরিণত হয়েছে। সকাল থেকেই ব্যানার, ফেস্টুন আর স্লোগানে মুখরিত হয়ে উঠেছে গোটা এলাকা।

ভোরের আলো ফোটার সাথে সাথেই খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে নেতা-কর্মীরা গণসংবর্ধনাস্থলে জড়ো হতে শুরু করেন। কুড়িল বিশ্বরোড থেকে শুরু করে ৩০০ ফিট সড়কের দুই পাশ এখন লোকে লোকারণ্য। হাতে জাতীয় পতাকা এবং দলীয় পতাকার পাশাপাশি তারেক রহমানের ছবি সম্বলিত ফেস্টুন নিয়ে কর্মীরা স্লোগান দিচ্ছেন—‘মা-মাটি ডাকছে, তারেক রহমান আসছে’, ‘তারেক রহমান আসছে, বাংলাদেশ হাসছে’।

WhatsApp-Image-2025-12-25-at-9.24২৪৫

সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের জন্য সড়কের উত্তর অংশে দক্ষিণমুখী করে ৪৮ ফুট দৈর্ঘ্য ও ৩৬ ফুট প্রস্থের একটি বিশাল মঞ্চ তৈরি করা হয়েছে। মঞ্চে উপস্থিত থাকবেন দলের জ্যেষ্ঠ নেতৃবৃন্দ। বিশাল এই জমায়েতে আসা মানুষের সুবিধার্থে জুলাই ৩৬ এক্সপ্রেসওয়ের বিভিন্ন স্থানে বড় স্ক্রিন বসানো হয়েছে। এ ছাড়া রাস্তার ল্যাম্পপোস্টগুলোতে লাগানো হয়েছে শতাধিক মাইক, যাতে দূর-দূরান্তের কর্মীরাও বক্তব্য শুনতে পারেন।

WhatsApp-Image-2025-12-25-at-9.24৪৪

ঐতিহাসিক এই মুহূর্তকে ঘিরে কড়া নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলা হয়েছে। পুলিশ, র‍্যাব ও বিজিবির পাশাপাশি সাদা পোশাকে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। এছাড়াও শৃঙ্খলারক্ষায় কাজ করছেন বিএনপির নিজস্ব নিরাপত্তা বাহিনী সিএসএফ-এর সদস্যরা। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সুবিধার্থে মঞ্চের দুই পাশে অস্থায়ী তাঁবু স্থাপন করা হয়েছে।

WhatsApp-Image-2025-12-25-at-9.24-৫ি৬

নির্ধারিত সময়সূচি অনুযায়ী, আজ বেলা ১১টা ৫৫ মিনিটে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তারেক রহমানকে বহনকারী বিমানটির অবতরণের কথা রয়েছে। বিমানবন্দর থেকে নেতা-কর্মীদের অভিবাদন গ্রহণ করে তিনি সরাসরি পূর্বাচলের গণসংবর্ধনা মঞ্চে আসবেন। সেখান থেকে তিনি তাঁর মা, এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে দেখতে যাওয়ার কথা রয়েছে।

উল্লেখ্য, ২০০৭ সালে ওয়ান-ইলেভেনের পটপরিবর্তনের পর গ্রেপ্তার হন তারেক রহমান। ২০০৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর মুক্তি পাওয়ার পর চিকিৎসার জন্য সপরিবারে যুক্তরাজ্যে পাড়ি জমান তিনি। দীর্ঘ ১৭ বছর পর আজ তিনি আবার বাংলার মাটিতে পা রাখছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

‘দীর্ঘ ৬ হাজার ৩১৪ দিন পর বাংলাদেশের আকাশে!’

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
দীর্ঘ ১৭ বছর পর দেশের আকাশে তারেক রহমান। ছবি: ফেসবুক
দীর্ঘ ১৭ বছর পর দেশের আকাশে তারেক রহমান। ছবি: ফেসবুক

‘দীর্ঘ ৬ হাজার ৩শ ১৪ দিন পর বাংলাদেশের আকাশে!’ বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের বিজি-২০২ ফ্লাইটটি বাংলাদেশের আকাশে প্রবেশের পরপরই ফেসবুকে এই স্ট্যাটাসটি দেন তারেক রহমান। উড়োজাহাজের জানালা দিয়ে বাইরের আকাশ দেখতে থাকার একটি ছবি পোস্ট করে ক্যাপশনে এটি লেখেন তিনি।

এর কিছুক্ষণ আগেই উড়োজাহাজের ভেতরে নির্দিষ্ট আসনে বসা তারেক রহমান বিমানের টিকিট হাতে নিয়ে একটি ছবি পোস্ট করে লেখেন— ফেরা।

দীর্ঘ ১৭ বছর পর দেশে ফিরছেন তারেক রহমান। ছবি: ফেসবুক
দীর্ঘ ১৭ বছর পর দেশে ফিরছেন তারেক রহমান। ছবি: ফেসবুক

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস সূত্র জানায়, বাংলাদেশ সময় বুধবার দিবাগত রাত ১২টা ১৫ মিনিটে লন্ডনের হিথরো বিমানবন্দর থেকে বিমানের বিজি-২০২ ফ্লাইটে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দিয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা ৪৫ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছাবেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। স্ত্রী জুবাইদা রহমান ও একমাত্র কন্যা জাইমা রহমানও তাঁর সঙ্গে আসছেন।

এক-এগারোর সময় প্রায় ১৮ মাস কারান্তরীণ থাকার পর ২০০৮ সালের ৩ সেপ্টেম্বর মুক্তি পান বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ওই বছরের ১১ সেপ্টেম্বর তিনি উন্নত চিকিৎসার জন্য সপরিবারে যুক্তরাজ্যে যান। এরপর আর ফিরতে পারেননি। দীর্ঘ ১৭ বছরের নির্বাসিত জীবন শেষে আজ দেশে ফিরছেন তিনি।

তারেক রহমানের এই প্রত্যাবর্তন ঘিরে দল ও দলের বাইরে প্রবল আগ্রহ ও উদ্দীপনা বিরাজ করছে। তাঁকে সংবর্ধনা দিতে ঢাকার ৩০০ ফুট এলাকায় ৪৮ ফুট বাই ৩৬ ফুটের মঞ্চ প্রস্তুত করা হয়েছে। গতকাল বুধবার সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা যায়, কুড়িল থেকে সংবর্ধনা মঞ্চ পর্যন্ত রাস্তাজুড়ে তারেক রহমানকে স্বাগত জানিয়ে বিভিন্ন রঙের ব্যানার ও ফেস্টুন লাগানো হয়েছে। মঞ্চের দুই পাশে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তাঁবু স্থাপন করা হয়েছে। রাস্তার ল্যাম্পপোস্টে লাগানো হয়েছে মাইক।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

তারেক আসছেন আজ, অপেক্ষায় নেতা-কর্মীরা

  • আজ ৩০০ ফুটে সংবর্ধনা নেবেন ও খালেদা জিয়াকে দেখতে যাবেন।
  • কাল জিয়ার কবর ও জাতীয় স্মৃতিসৌধে যাবেন।
  • শনিবার ভোটার হবেন, হাদির কবর জিয়ারত করবেন।
‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৬: ৪০
প্রায় দেড় যুগ পর যুক্তরাজ্য থেকে ফিরছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। সব ঠিক থাকলে আজ বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটে দেশে এসে পৌঁছাবেন তিনি। গতকাল উড়োজাহাজে ওঠার আগমুহূর্তে যুক্তরাজ্যের লন্ডনের হিথরো বিমানবন্দরে। ছবি: বিএনপির মিডিয়া সেল
প্রায় দেড় যুগ পর যুক্তরাজ্য থেকে ফিরছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। সব ঠিক থাকলে আজ বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটে দেশে এসে পৌঁছাবেন তিনি। গতকাল উড়োজাহাজে ওঠার আগমুহূর্তে যুক্তরাজ্যের লন্ডনের হিথরো বিমানবন্দরে। ছবি: বিএনপির মিডিয়া সেল

সব জল্পনাকল্পনার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে দেশে ফিরছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। সব ঠিক থাকলে আজ বৃহস্পতিবার দুপুরেই বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটে দেশে এসে পৌঁছাবেন তিনি। তাঁর দেশে ফেরা উপলক্ষে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতির পাশাপাশি রাজধানীজুড়ে নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। নেতাকে বরণ করতে এরই মধ্যে সারা দেশ থেকে ঢাকায় এসেছেন দলের নেতা-কর্মীরা, অনেকেই এখনো ঢাকামুখী।

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস সূত্র জানায়, বাংলাদেশ সময় বুধবার দিবাগত রাত ১২টা ১৫ মিনিটে লন্ডনের হিথরো বিমানবন্দর থেকে বিমানের বিজি-২০২ ফ্লাইটে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হয়ে আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা ৪৫ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছাবেন তারেক রহমান। স্ত্রী জুবাইদা রহমান ও একমাত্র কন্যা জাইমা রহমানও তাঁর সঙ্গে আসছেন।

ঢাকায় পৌঁছানোর পর তারেক রহমানকে বিমানবন্দরে অভ্যর্থনা জানাবেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যরা। এরপর দলের পক্ষ থেকে ৩০০ ফুট এলাকায় সংবর্ধনা দেওয়া হবে তারেক রহমানকে। সেখান থেকে অসুস্থ মা বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে দেখতে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে যাবেন তারেক। এরপর গুলশানের বাসভবনে ফেরার কথা আছে তাঁর।

এক-এগারোর সময় প্রায় ১৮ মাস কারান্তরীণ থাকার পর ২০০৮ সালের ৩ সেপ্টেম্বর মুক্তি পান বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ওই বছরের ১১ সেপ্টেম্বর তিনি উন্নত চিকিৎসার জন্য সপরিবারে যুক্তরাজ্যে যান। এরপর আর ফিরতে পারেননি। দীর্ঘ ১৭ বছরের নির্বাসিত জীবন শেষে আজ দেশে ফিরছেন তিনি।

তারেক রহমানের এই প্রত্যাবর্তন ঘিরে দল ও দলের বাইরে প্রবল আগ্রহ ও উদ্দীপনা বিরাজ করছে। তাঁকে সংবর্ধনা দিতে ঢাকার ৩০০ ফুট এলাকায় ৪৮ ফুট বাই ৩৬ ফুটের মঞ্চ প্রস্তুত করা হয়েছে। গতকাল বুধবার সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা যায়, কুড়িল থেকে সংবর্ধনা মঞ্চ পর্যন্ত রাস্তাজুড়ে তারেক রহমানকে স্বাগত জানিয়ে বিভিন্ন রঙের ব্যানার ও ফেস্টুন লাগানো হয়েছে। মঞ্চের দুই পাশে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তাঁবু স্থাপন করা হয়েছে। রাস্তার ল্যাম্পপোস্টে লাগানো হয়েছে মাইক।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে স্বাগত জানিয়ে ব্যানার-বিলবোর্ডে ছেয়ে গেছে রাজধানী। নেতা-কর্মীরা নগরীর প্রধান সড়ক, অলিগলি ও গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে ঝুলিয়েছেন ব্যানার, ফেস্টুন, পোস্টার ও বিলবোর্ড। এতে বড় অক্ষরে লেখা—‘লিডার আসছে’, ‘হে বিজয়ী বীর, তোমাকে স্বাগত’ ইত্যাদি।

এদিকে তারেক রহমানের আগমন উপলক্ষে বিভিন্ন জেলা থেকে বিপুলসংখ্যক নেতা-কর্মী এরই মধ্যে ঢাকায় এসে পৌঁছেছেন। দলীয় কর্মসূচিতে অংশ নিতে তাঁরা নিজ উদ্যোগে বাস, ট্রাক ও মাইক্রোবাস ভাড়া করে আসছেন। গতকাল বিকেল থেকেই সংবর্ধনা মঞ্চের সামনে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা বিপুলসংখ্যক নেতা-কর্মীর উপস্থিতি দেখা গেছে। তাঁদের কেউ কেউ মঞ্চের সামনে দাঁড়িয়ে ফেসবুক লাইভ করছেন। সেখানে দায়িত্ব পালন করতে দেখা গেছে পুলিশ সদস্যদের। এ ছাড়া সেখানে বিএনপির চেয়ারপারসন সিকিউরিটি ফোর্সের (সিএসএফ) সদস্যরাও আছেন।

গতকাল গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনে অভ্যর্থনা কমিটি। সেখানে কমিটির আহ্বায়ক ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, বিমানবন্দর থেকে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে দেখতে এভারকেয়ার হাসপাতালে যাবেন তারেক রহমান। পথে অত্যন্ত সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য ৩০০ ফুটের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। তারেক রহমানের সংবর্ধনায় তিনি ছাড়া দ্বিতীয় কোনো বক্তা থাকছেন না বলেও জানান সালাহউদ্দিন।

৩০০ ফুটের অনুষ্ঠানটি কোনো জনসভা নয় উল্লেখ করে সালাহউদ্দিন বলেন, ‘আমরা এই আয়োজনের কলেবর যত ছোটই রাখতে চাই না কেন, ১৭ বছর ধরে অপেক্ষমাণ দেশের সব প্রান্ত থেকে আসা নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের বাঁধভাঙা স্রোত নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা আমাদের নেই।’

এ সময় ঢাকাবাসীর কাছে সম্ভাব্য সৃষ্ট জনভোগান্তির জন্য আগাম দুঃখ প্রকাশ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘তারেক রহমান এমন কোনো কর্মসূচিকে সমর্থন করেন না, যা জনদুর্ভোগের কারণ হতে পারে। তারপরও জনদুর্ভোগের জন্য আমরা অগ্রিম ক্ষমা ও দুঃখ প্রকাশ করছি।’

সংবর্ধনার পর এভারকেয়ারে মাকে দেখে গুলশানের বাসায় যাবেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। দেশে ফেরার পর তারেক রহমানের পরবর্তী দুই দিনের কর্মসূচির কথাও জানান সালাহউদ্দিন। তিনি জানান, দেশে ফেরার পরদিন শুক্রবার বাদ জুমা দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের সমাধিতে যাবেন তারেক রহমান। সেখানে পিতার কবর জিয়ারত করে যাবেন জাতীয় স্মৃতিসৌধে। এরপর শনিবার তারেক রহমান নিজে ভোটার হতে যা করতে হয়, সেই কাজগুলো করবেন। একই দিনে জুলাই যোদ্ধা শরিফ ওসমান হাদির কবর জিয়ারত ও পঙ্গু হাসপাতালে জুলাই অভ্যুত্থানে আহতদের দেখতে যাবেন।

বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা এ কে এম সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের যে দলগত নিরাপত্তাব্যবস্থা, সেটা সর্বোচ্চ ব্যবহার করা হবে। এর মধ্যে ক্ষুদ্র একটা অংশ হলো সিএসএফ। আমাদের দলীয় নেতা-কর্মী এবং সর্বোপরি বাংলাদেশে আপামর জনসাধারণ, এটা হলো আমাদের নিরাপত্তার মূল ভিত্তি। সরকারের তরফ থেকে আমাদের সর্বোচ্চ সহায়তা দিচ্ছে।’

এদিকে তারেক রহমানের ফ্লাইটটির ওপর বিশেষ নজরদারি আরোপ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিমানের কর্মকর্তারা। তাঁরা বলছেন, ফ্লাইট অপারেশন কন্ট্রোল, কেবিন সার্ভিস, গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং এবং বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সমন্বয়ের মাধ্যমে পুরো অপারেশন পরিচালিত হচ্ছে। শেষ মুহূর্তে কেবিন ক্রু ডিপ্লয়মেন্টেও প্রয়োজনীয় সমন্বয় সম্পন্ন করা হয়েছে।

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন এস এম রাগিব সামাদ জানিয়েছেন, বিশেষ অপারেশনাল ও নিরাপত্তা বিবেচনায় ২৪ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৬টা থেকে ২৫ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত যাত্রী ব্যতীত দর্শনার্থী ও স্বজনদের টার্মিনালে প্রবেশে সাময়িক নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। যাত্রীসেবা, টার্মিনাল শৃঙ্খলা এবং এয়ারসাইড কার্যক্রম নির্বিঘ্ন রাখতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এদিকে সম্ভাব্য সড়ক যানজটের কথা বিবেচনায় রেখে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস ও ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনস ২৫ ডিসেম্বর ভ্রমণকারী দেশি-বিদেশি যাত্রীদের নির্ধারিত সময়ের অনেক আগেই বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পরামর্শ দিয়েছে।

নিরাপত্তাব্যবস্থা

তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনকে কেন্দ্র করে রাজধানী ঢাকাজুড়ে বিশেষ নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। দুই হাজারের বেশি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য ছাড়াও তারেক রহমানের নিরাপত্তায় চেয়ারপারসন সিকিউরিটি ফোর্স (সিএসএফ) রয়েছে। তাদের একাধিক টিম দায়িত্ব পালন করছে। তারেক রহমানের গাড়িবহরের সঙ্গে থাকবে পুলিশ প্রোটেকশন। পাশাপাশি সোয়াট, এপিবিএন, কাউন্টার টেররিজম ইউনিট (সিটিটিসি), বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট, র‍্যাব, বিজিবি ও গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা কাজ করছেন।

আজ সকাল ৮টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ সড়কে যান চলাচলে বিধিনিষেধ আরোপ করেছে ডিএমপি। গতকাল ডিএমপির এক গণবিজ্ঞপ্তিতে বিমানবন্দর থেকে কুড়িল হয়ে পূর্বাচল এক্সপ্রেসওয়ে চলাচল পরিহার করতে বলা হয়েছে। বিকল্প রুট হিসেবে আবদুল্লাহপুর, গাবতলী, উত্তরা, মিরপুর, গুলশান ও বনানী এলাকার সড়ক ব্যবহার করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

রাত ১২টার সময়ই কানায় কানায় পূর্ণ সংবর্ধনাস্থল

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
রাত ১২টার সময় এমন দৃশ্য দেখা গেছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
রাত ১২টার সময় এমন দৃশ্য দেখা গেছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দীর্ঘ ১৭ বছর পর বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) লন্ডন থেকে দেশে ফিরে আসছেন। এ উপলক্ষে দলের পক্ষ থেকে রাজধানীর ৩০০ ফিট এলাকায় এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। তবে আগের রাত (বুধবার) ১২টার সময়ই সংবর্ধনাস্থল ও এর আশপাশে বিপুলসংখ্যক মানুষের উপস্থিতি দেখা গেছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, ৩০০ ফিট সড়কের সঙ্গে সংযুক্ত সবগুলো রাস্তায় মাঝরাতেও অসংখ্য নেতা-কর্মী ও সমর্থকেরা অবস্থান নিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা দেখা গেছে।

আরও দেখা গেছে, সমাবেশস্থলের আশপাশে অনেকেই কাঁথা-কম্বল মুড়ি দিয়ে ঘুমানোর আয়োজন করছেন। তাঁদেরই একজন মহসিন মিয়া। তিনি এসেছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে। কোনো পদ-পদবি না থাকলেও বিএনপিকে তিনি ভালোবাসেন। মহসিন বলেন, ‘ঘুম আসবে কি না জানি না। না ঘুমালেও চলবে। নেতার জন্য একদিন না ঘুমালে কিছুই হবে না।’

এদিকে সারা রাত না ঘুমিয়েই তারেক রহমানের জন্য অপেক্ষা করবেন বলে জানালেন নওগা জেলা যুবদলের সদস্য জাহাঙ্গীর আলম লিটন। সংবর্ধনার মঞ্চ থেকে তিনি প্রায় ১ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছিলেন। ঘুমের বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, ‘১৭ বছর ঘুমাইনি। একরাতে কিছু হবে না।’

নওগা থেকে বিপুলসংখ্যক নেতা-কর্মী ও সমর্থক এখনো পৌঁছায়নি বলেও জানালেন লিটন। এই জেলার কয়েক হাজার নেতা কর্মী তখনো যাত্রাপথে অবস্থান করছিলেন।

শেফালি আক্তার নামে জামালপুর জেলা থেকে আসা এক নারী জানালেন, তিনিও ঘুমাবেন না। এলাকার নেতা-কর্মীদের সঙ্গে সারা রাত মিছিল স্লোগানেই কাটিয়ে দেবেন। তিনি বলেন, ‘অনুষ্ঠান শেষ করে বাড়ি ফেরার সময় বাসের সিটে বসে ঘুমাব।’

উল্লেখ্য, বাংলাদেশ সময় রাত সোয়া ১২টায় (স্থানীয় সময় সন্ধ্যা সোয়া ৬টা) লন্ডন থেকে ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ফ্লাইট BG-202–এ চড়েছেন। এই ফ্লাইটটি লন্ডন–সিলেট–ঢাকা রুটে পরিচালিত হচ্ছে।

সূত্রমতে, ফ্লাইটটি বোয়িং ড্রিমলাইনার ৭৮৭-৯০০ উড়োজাহাজে পরিচালিত হচ্ছে। উচ্চপর্যায়ের যাত্রী থাকায় ফ্লাইট পরিচালনায় অতিরিক্ত অপারেশনাল সমন্বয় ও বিশেষ প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। উড়োজাহাজে তারেক রহমানকে সামনের সারির A1 নম্বর আসনে বসানো হয়েছে।

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস সূত্র জানিয়েছে, বোয়িং উড়োজাহাজে পরিচালিত এই ফ্লাইটটি বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা ৫৫ মিনিটে সিলেটের ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করার কথা রয়েছে। সেখানে এক ঘণ্টার গ্রাউন্ড টার্ন অ্যারাউন্ড শেষে সকাল ১০টা ৫৫ মিনিটে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হবে এবং ১১টা ৪৫ মিনিটে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছানোর সূচি নির্ধারিত রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত